‘এই দুনিয়ায় মালাউন মাইয়াগো জেনা করলে দোষ নাই, গুনাহ নাই, তারা হইল গনিমতের মাল, এই বয়সে তোমাগো ছহবত করনের দরকার, মালাউনগো মাইয়াগো লগে করবা, তাইতে গুনাহ নাই, সোভানাল্লা।’
মালাউনগো দ্যাশ থিকা খ্যাদাই দিতে হইব, মুরতাদগো জান কবজ করতে হইব, তা হইলেই ইছলাম আসব—তাব্বাত ইয়াদা আবি লাহাবিও ওয়া তাব্বা।‘
‘মাইয়ালোকগো, ঘর থিকা বাইর হইতে দেওয়ন যাইব না।’
‘মাইয়ালোক হইল শয়তান, ফিৎনা, গোলমাল, মাইয়ালোক আদমরে গন্দম খাওয়াইছিল, নাইলে আমরা এইখনে ভেস্তে থাকতাম, মাইয়ালোকের জন্যেই আমাগো পতন ঘটছে; এইখন হেরা পরপুরুষ দ্যাকলেই ছহবত করতে চায়, ছহবত ছাড়া তাগো দেহ আর কিছু চায় না, তাগো বিশ্বাস করব না, বোরকা পইর্যা স্বামীর পাশে বইস্যা ফাঁক পাইলেই তারা অন্য পুরুষগো দিকে চায়, দিলের জিন্না করে, আস্তাগফেরুল্লা।’
‘আপগানিস্থানে মাইয়ালোকগো যা করছিলেন মহান তালেবানরা, তা-ই হইল আসল ইছলামি নিয়ম, আমরা সেই নিয়ম করুম; অখনও আমাগো মুরুব্বি পাক সৈদি আরবে মাইয়ালোকগো বোরকা ছাড়া বাইর অইতে দেয় না, গাড়ি চালাইতে দেয় না, ইহাই সাচ্চা ইছলাম, আমরা অই আসল সাচ্চা খাডি ইছলাম কায়েম কারুম। ইছলামে মাইয়ালোক স্বাদিন থাকিব পুরুষের অধীনে থাইক্কা, আলহামদুলিল্লা, আল্লা রাহমানির রাহিম।’
‘এইখন দ্যাশ মাইয়ালোকে চালায়, এক মাইয়ালোক যায়, আবার আরেকটা মাইয়ালোক আসে, নাউজুবিল্লা, মাইয়ালোকের অধীনে থাকা হাবিয়া দোজগে৷ থাকার থিকাও কষ্টের, এইটা হারাম; মাইয়ালোক নিচে থাকিব, ওপরে থাকতে পারব না; তয় মাইয়ালোকের রুল আমরা মাইন্যা নিয়াছি ট্যাক্ট কইর্যা, ট্যাক্ট ছাড়া কাম হয় না, ইছলামের শুরুর সোমও ট্যাক্ট করতে হইছিল ইহুদিগো লগে, পরে আমরা ইহুদিগো কচুকাডা করছিলাম, অগো গদে হালাইয়া মাডি চাপা দিছিলাম, অগো মাইয়া ও মাইয়ালোকগুলিরে বান্দী বানাইছিলাম, অগো ঘরবাড়ি জমিজায়গা দখল করছিলাম, এইখন আমরা সেই রকম ট্যাক্ট করছি; সময় আসলে আমরাই দ্যাশ দখল করুম, দিন দিন দখল করতে আছি, ট্যাক্ট ছাড়া হইব না; একদিন ঘরে ঢুকাই দিমু, তোবা করামু।’
‘মনে রাইখ্য ইছলাম হইতেছে একমাত্র সলিশন, ইছলাম ছাড়া আর সলিশন নাই; আমরা কম্যুনিস্টগো কবর দিছি, ডামোক্ৰেছিরেও কবর দিমু, কবর খোড়তে হইব তোমাগোই। তোমরা হইতেছে তার সিপাহি, তার জেনারেল, তার মুহাম্মদ বিন কাশিম, বকতিয়ার খিলজি, মুসা, তারিক।’
‘এই আন্দোলনটা দিয়া দ্যাশ কাপাই দিতে হইব তোমাগো, ইছলামের দিকে আমরা দশ কদম আগাই যাইব, পাক স্থানের দিকে বিশ কদম আগাইব, আমরা আবর পাক সার জমিন সাদ বাদ গাইতে পারুম। অনেক বছর না গাইতে গাইতে এই মহান গানডার দুই নম্বর লাইনডা আমিও ভুলিয়া গেছি।’
আমি বলি, ‘তুনিশানে আজমে আলিশান…’
তিনি বলেন, ‘হ, হ, মাশাল্লা, সোভানাল্লা, তুমি হইলা আসল জিহাদি, এইর লিগাই ত শ্রেইষ্ঠ স্তানের ভার তোমারে দিয়াছি।’
মওলানা নিয়ামত আলি বললেন, ‘দ্যাখ, দ্যাশে আরও অনেক জিহাদি ইছলামি পার্টি আছে, ধরো জঙ্গি আলি খিদমতরা, জঙ্গি জামতুল পার্টি, হিযবুত পার্টি, হিযবুত তৌহিদ পার্টি, ইছলামুন পার্টি, তেলায়াতে আল কুরআন পার্টি, বেরাদারানে ইছলাম পার্টি, এমুন আরও নানা পার্টি আছে, ওইগুলির মইদ্যে দুই চাইরটা ভণ্ড আছে, তয় ওইগুলির অনেকগুলিই আমাগো, নানা নামে আমরা দ্যাশে তাগো ছাইর্যা দিছি, তারা আমাগো কামই করতেছে। সময় আসলে ওইগুলির দুই-তিনডোরে শ্যাষ কইর্যা দিতে হইব, আসল কয়ডারে আমাগো মইদ্যে মার্জ কইর্যা লইতে হইব, যারা আসল জিহাদি।’
করিম আলি ইছলামপুরি বললেন, ‘পাওয়ার আমাগো দখল করতেই হইব। এইখন আমরা পাওয়ারের লগে আছি, মেইন পার্টির সহিত আছি, এক সোম পাওয়ার আমাগো হইব, আমরাই হইব মেইন পার্টি, সবখানে আমরা ঢোকতেছি, ইছলাম হইব, পাকিস্থান হইব, দ্যাশে মুরতাদ থাকিব না, মালাউন থাকব না, মুছলমানের চেহারা লইয়া মালাউন ইহুদি থাকব না, ইনভার্ছিটি থাকব না, ইনভাৰ্ছিটি হইতেছে জিনাখানা, অইখানে পোলা-মাইয়ারা একলগে বসে, হাডে, ফিরে, শয়তান তাগো মাজখানে থাকে, আস্তাগফেরুল্লা।’
তিনি আরো বলেন, ‘তয় ইনভাৰ্ছিটি, ইনজিনিয়ারিং ইনভাৰ্ছিটি, মেডিকেল ইনভাৰ্ছিটি এইসব এইখন আমাদের দখলে, সব জায়গায়ই আমাগো লোক৷’
‘ইনভাৰ্ছিটির দিকে চাইয়া দেখ, কি দেখ–মাইয়ালোকরাও আমাগো লগে, মাসে মাসে ওইখানে বোরখা দিতে হয়, হিজাব দিতে হয়; আগে স্কুল কলেজ ইনভাৰ্ছিটিগুলিতে আমরা বছরে দশ হাজার বোরকা হিজাব দিতাম, মারহাবা, এই বছর দশলাখ বোরকা হিজাব দিছি। বোরকা হিজাবের ডিমান্ড থিকাই আমরা বুজতে পারতেছি আমরা পাক স্তানের দিকে আগাইতে আছি, আলহামদুলিল্লা, সোভানাল্ল।‘
তিনি আরো বলেন, ‘টেলিভিশনেও আমরাই আছি, চাইয়া দেখ, ফজর থিকা এশা পর্যন্ত আমরাই ওয়াজ করতেছি, মাজ রাইতেও ওয়াজ করতেছি, আর মারহাবা, আমাগো বিবিজানরাও, আওরতরাও, কি সোন্দর ওয়াজ শিখছে, মাশাল্লা, হিজাব পইরা ঠোডে রাঙ্গা লিপিসিন্টক মাইখ্যা ভুরু প্যালাক কইর্যা, মারহাবা, মাছকারা মাইখ্যা, দুই চোকে প্যালাসটিকের পাপড়ি লাগাইয়া তারা ইংরাজি বাঙলা আরবি উর্দু মিলাইয়া মিশাইয়া ওয়াজ করতেছে। তাগো ওয়াজ দেইখ্যা শুইন্যা আমিই নতুন কত মছলা শিখতে আছি, সোভানাল্লা।’