একরাতে হয় না, রাতের পর রাত আমরা ঠাণ্ডা আগুনে শীতল করতে থাকি মালাউন পাড়াগুলো।
আমার জিহাদিদের ছহবতের শক্তি আমাকে মুগ্ধ করে, অজস্র হুর কেনো দরকার। আমি রাতের পর রাত বুঝতে পারি। আমার মেইন পাটির নেতা বিখ্যাত খিলজি ছৈয়দ ছব্দর আলি বন্টু ঠাণ্ডা আগুনকে গরম আগুনে পরিণত করে, কিন্তু আমি অকাজে গরম হতে চাই না। যা চাই, তা পেলে গরম হওয়ার কী দরকার? আমার জিহাদিরা মালাউন পাড়ায়ই হুর লাভ করে, গফুরুর রাহিম এতো হুর যে জিহাদিদের জন্যে পাঠিয়েছিলেন, তা আমি ভাবতে পারি নি। মালাউনপাড়াগুলো নানা রকম হুরের পল্লী, ওগুলো হুরস্বর্গ। যারা আল্লার কাজ করে, আল্লা তাদের তৌফিক দান করেন; কিন্তু এতো তৌফিক দেবেন, ভাবি নি।
জিহাদিরা ছহবতের পর ছহবত করতে থাকে, কিন্তু একটু টু শব্দও করে না মালাউন হুরগুলো; ওরা জানে জিহাদির সঙ্গে তারা পারবে না। মাঝখান থেকে তাদের ক্ষতি হবে, মুখ দেখাতে পারবে না। এই হুরিগুলো কি সবাই পিল খেয়ে আমার জন্যে প্রস্তুত ছিলো?
টাকা পয়সা সোনারুপায় আমাদের বস্তা ভ’রে ওঠে। এটাই আসল দরকার। আমি অবাক হই হুণ্ডি করে টাকা পাঠানোর পরও ওদের ঘরে এতো টাকা? ঠিক ইহুদিদের মতো, আর কিছু ছিলো না, টাকা ছিলো।
জিহাদি মোঃ হাফিজুদ্দিন এক অপূর্ব প্রস্তাব নিয়ে আসে আমার কাছে।
সে বলে, ‘হুজুর, মালাউন ছহবতে ত গুনাহ্ নাই।’
আমি বলি, ‘না।‘
সে বলে, ‘হুজুর, আমার দিলে একটা খায়েশ আইছে।’
আমি বলি, ‘কী খায়েশ, মোঃ ফাফিজুদ্দিন?’
সে বলে, ‘আমার খায়েশ চাইর বিবির লগে একসঙ্গে ছহবত করুম।’
সে একটি ঘরে মা, দুই মেয়ে, ও এক নববধুকে পেয়েছে; তাদের ঘরে আটকে রেখে এসেছে আমার দোয়া নেয়ার জন্যে। বিজয়ের ওই অপূর্ব সময়ে বাধা দেয়া অমানবিকতা হতো, আমি বাধা দিই না।
আমি বলি, ‘তোমার খায়েশ তুমি পূর্ণ করো, খায়েশ পূর্ণ না হ’লে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে, তোমার এখন সুস্থ থাকা দরকার।’
তার বডিগার্ডরা তাকে পাহারা দেয়, সে একের পর এক মা, দুই মেয়ে, ও নববধুর সঙ্গে ছহবত করে–খায়েশ পূর্ণ করে, ঘণ্টা দুয়েক সময় নেয়, চারজনের জন্যে ১২০ মিনিট বেশি সময় নয়, হয়তো পরম সুখ পেয়ে সে রিপ্লে করে, যেমন এক্সএক্সএক্সের সময় করে; যখন সে বেরিয়ে আসে দেখি সে নওজোয়ান হয়ে গেছে; তবে ওই বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় দেখি বাপটি ও মরদ ছেলেটি গলায় দড়ি দিয়ে আমগাছের ডালে ঝুলছে।
কেউ যদি আমগাছের ডালে ঝুলে সুখ পেতে চায়, তাহলে তার সুখে আমি বাধা দিতে পারি না; সকল প্ৰাণীর সুখে আমি বিশ্বাস করি।
পরে মা, দুই মেয়ে, ও নববধুটি আমগাছের ডালে বুলেছিলো শুনেছিলাম; তা ঝুলুক, শ্রাবণের ঝোলনে ঝোলার অভ্যাস ওদের আছে; শ্যামের সঙ্গে ঝুলে যদি ওরা পুলকিত হয়, আমি কী করতে পারি?
ছহবত আমারও দরকার, কিন্তু জিহাদিদের মতো, মোঃ হাফিজুদিনের মতো, যাকে তাকে ঘরের মেজেতে চিৎ ক’রে ফেলে দাপাদাপি করে টানাটানি ক’রে ছহবত আমাকে মানায় না।
আমার তেমন রুচিও নেই; আর আমি যদি জিহাদিদের মতো যাকে তাকে ছহবত করি, তাহলে তারা আমাকে মানবে না; আমি নেতা, নেতার মতোই আমার ছহবত করতে হবে। এতে কোনো গুনাহ নেই; আমি জামাঈ জিহাদে যোগ দেয়ার পর অনেক কিতাব পড়েছি, যুদ্ধের পর গনিমতের মাল কীভাবে ভোগ করতে হয়, তা আমি জানি।
এখন সেই মহান যুগও নেই যে মিসর বা সীতারামপুর থেকে কেউ আমাকে একটি দুটি রূপসী দাসী পাঠাবে; তাই আমার রীতিতেই আমি কাজ করি।
গোটাদশোক উৰ্বশী আমার পছন্দ হয়। শ্ৰী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছাহেবের একটি কবিতা পড়ার পর নিহ মাতা নহ কন্যাদের জন্যে আমার স্বপ্ন জেগে উঠেছিলো; চিত্ত আত্মহারা হয়েছিলো, রক্তধারা কেঁপেছিলো, আমি তো পুরুষ।
আমি ওদের দিকে জিহাদিদের হাত বাড়াতে দিই না; এবং তাদের পিতাদের আমি একটি বিশেষ বরকত দিই। উর্বশীদের পিতা হওয়ার জন্যে বিশেষ বরকত তাদের প্রাপ্য, কৃতিত্বের জন্যে সকলেরই বরকত প্ৰাপ্য।
একেকটি উর্বশীকে আমি মেপে মেপে দেখি; ঠোঁট দেখি, মোটা ঠোঁট আমার পছন্দ; জিভ দেখি, মোটা ধারালো চ্যাপ্টটা খসখসে জিভা আমার পছন্দ; স্তন দেখি, মাঝারি স্তন আমার পছন্দ, পানিভরা ব্লাডারের মতো স্তন আমি সহ্য করতে পারি না; উরু দেখি, সরু মাংসল উরু, আমার পছন্দ।
আমার মনে হয় আমি মহারাজ মধ্যযুগের ক্রীতদাসীদের হাঠে গেছি, বেছে বেছে ক্রীতদাসী কিনছিং আমার অবশ্য পয়সা লাগবে না। আমি তাদের দয়াই করি: আমার মেইন পার্টির খিলজি ছৈয়দ মোঃ ছব্দর আলি বন্টু বা আমার দুই নম্বর জিহাদি তা করে না, তাতে একটু গোলমাল হয়। কিন্তু গোলমাল আমাদের জন্যে গানের মতো, আমরা যে-গোলমালই করি না কেনো, সেটা গিয়ে পড়ে। আমাদের আগের মেইন পার্টির ঘাড়ের ওপর।
আমার মেইন পার্টির খিলজি ছৈয়দ মোঃ ছব্দর আলি বন্টু ও তার দলের অসামান্য কৃতিত্বের উপাখ্যান এখানে আমি বলতে চাই না, সেটা খুবই দীর্ঘ ও মহৎ। জিহাদি না হয়েও যে সে ও তারা এতোটা জিহাদ করতে পারে, তাতে আমি বিস্মিত হই। সে পছন্দ করে প্রথমে গুলি করতে, তারপর আগুন লাগাতে, তারপর লুঠ করতে, তারপর ছহবত করতে; এবং তার আদর্শ অন্যান্য খিলজিরাও মেনে চলে। আগের মেইন পাটি বা মালাউনদের দালালদের শিকার করতে সে পছন্দ করে; শিকারে তারা আমাদেরও ছাড়িয়ে যায়। খিলজি ছৈয়দ মোঃ ছব্দর আলি বন্টু ও অন্যান্য খিলজির কাহিনী এখন পুবেপশ্চিমে অনেকেরই জানা। তবে আমাদের লিডাররা মনে করেন, টেলিভিশনে, মঞ্চে, গলা ফাটিয়ে বলেন, ওগুলো অপপ্রচার, প্রপাগ্যান্ডা, আসলে ওগুলো আগের মেইন পার্টির শেখদেরই কাজ। আমাদের লিডাররা সত্যের সেবক।