হ্যাঁ। মিতালি মদ খেত না কখনও। আমেরিকাতেও না। আমাকে মাঝে মাঝে চিঠি লিখত। তাতেই প্রায় থাকত ও আমেরিকায় নেশার বিরুদ্ধে একটা আন্দোলন করতে চায়।
তবু সেদিন উনি ড্রিঙ্ক করেছিলেন?
হ্যাঁ, উলটোপালটা খাচ্ছিল। কখনও হুইস্কি, কখনও শেরি, কখনও বিয়ার বা রাম। বোঝা যায় ও ড্রিঙ্ক করতে জানেই না।
তারপর কী হল?
মশাই, মুশকিলে ফেললেন।
কেন?
আমি পাপী-তাপী লোক। মদ আমিও খাই। পার্টি কিছুক্ষণ চলার পর আমি কি আর চৈতন্যে ছিলাম?
আউট হয়ে গিয়েছিলাম?
ঠিক তা না হলেও আই ওয়াজ এক্সট্রিমলি হাই। ডিনার টেবিলে বসেও আমি নাকি কিছু খেতে পারিনি।
তারপর?
ক্ষণিকা আমাকে ফিরিয়ে আনে।
ক্ষণিকা কে? যিনি বাথরুমে আছেন?
না। এ জুলেখা।
আপনার ক’জন?
একজনই। ক্ষণিকা। এ হল স্টপ গ্যাপ।
একে কোথায় পেলেন?
জুটে যায়।
আপনি ভাগ্যবান লোক। আচ্ছা, মিঠু মিত্র আপনাকে কোথায় ক্যারাটে শেখাতেন?
সাদার্ন ক্লাবে। লেক-এর কাছে।
আপনি কতদিন শেখেন?
বেশি নয়। মাস খানেক। ক্যারাটে ইজ এ বোরিং থিং। সিনেমাটিনেমায় দেখতে মন্দ নয়। কিন্তু শেখা ভীষণ একঘেয়ে। এক জিনিস হাজারবার করতে হয়।
ক্ষণিকাদেবী এখন কোথায়?
ক্ষণিকা! ওঃ! সে বাপের বাড়িতে।
উনি কি আপনাকে ছেড়ে গেছেন?
বোধহয় না। টেম্পোরারি মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং।
সেটা কীরকম? জুলেখাদেবীই কি কারণ?
না না। জুলেখা ইজ নো ম্যাচ ফর হার। ব্যাপারটা খুলেই বলি।
বলুন।
ওয়ানস আই ওয়াজ ইন লাভ উইথ মিতালি।
তাই নাকি?
ইট ওয়াজ ন্যাচারাল। মিতালির ডান গালে একটা আঁচিল আছে। আপনি দেখেননি, তাতে ওকে কী সুন্দর দেখাত! ইন ফ্যাক্ট সেভেন্টি পারসেন্ট অফ হার মেল ক্লাসমেটস ওয়্যার ইন লাভ উইথ হার।
তারপর বলুন।
অবশ্য কাফ লাভ। ওসব ভুলে যেতে দেরি হয় না। তারপর মিতালি যখন আমেরিকা থেকে ফিরে এল আই ওয়াজ সেকেন্ড টাইম ইন লাভ উইথ হার। আমেরিকায় গিয়ে ও আরও সুন্দর এবং স্মার্ট হয়েছে। অনেক ম্যাচিয়োর্ডও এইসব কথা আমি ক্ষণিকাকে বলেছিলাম।
বটে?
হ্যাঁ। অ্যান্ড ক্ষণিকা ওয়াজ ক্রস। পার্টি থেকে আমাকে নিয়ে এসে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে সে সোজা বাপের বাড়ি চলে যায়।
কেন, পার্টিতে কিছু হয়েছিল?
আমি নাকি মাতাল অবস্থায় মিতালির প্রতি প্রেম নিবেদন করে ফেলেছিলাম। কিন্তু মাতালের কথা কি ধরতে আছে, বলুন? শি ইজ সো জেলাস!
বেশি জেলাসি থেকে মানুষ খুনও করতে পারে!
আতঙ্কিত সমীরণ বলল, না না! কী যে বলেন! ক্ষণিকা ওরকম মেয়ে নয়।
কীরকম মেয়ে?
কোয়াইট রেসপনসিবল। সোশ্যাল ওয়ার্কও করে।
আপনি কি বলতে পারেন মিতালিদেবীর আমেরিকায় কোনও বয়ফ্রেন্ড আছে কি না!
নেই।
কীভাবে জানলেন যে নেই?
থাকলে আমাকে জানাত।
উজ্জ্বল সেন বলে কারও নাম শুনেছেন?
শুনেছি। উজ্জ্বল ওর বন্ধু ঠিকই, কিন্তু যাকে বয়ফ্রেন্ড বলে তা নয়।
উজ্জ্বল কী করেন?
আমেরিকায় ওর ব্যাবসা আছে।
কীসের ব্যাবসা?
বোধহয় সফটওয়্যার।
বোধহয় বলছেন কেন?
সেইরকমই শুনেছিলাম যেন।
ওঁদের মধ্যে কোনও অ্যাফেয়ার ছিল না বলছেন!
না না থাকলে মিতালি আমাকে জানাত।
বরুণ ঘোষের সঙ্গে আপনার আলাপ ছিল?
সামান্য।
কীরকম লোক ছিলেন?
লোনলি। আপনমনে থাকতেন।
আপনার ব্লাডপ্রেশার কত?
প্রেশার? তা তো জানি না। কেন বলুন তো?
মাঝে মাঝে চেক করানো ভাল। আপনার ফোন বাজছে। বোধহয় আপনার বাবা। গিয়ে ফোনটা ধরুন।
বাবাই। ফোন ধরেই কানের কাছ থেকে যন্ত্রটাকে তফাত করতে হল। বাবা চেঁচাচ্ছিল, কী হল? কী হয়েছে? বলবি তো।
কিছু হয়নি। আমরা অ্যামিকেবলি কথা বলছি।
অ্যারেস্ট করেনি তো!
না বাবা।
তেমন বুঝলে আমাদের বিরজা উকিলকে খবর দিতে পারি।
এখনই দরকার নেই।
কে খুন হয়েছে বলছিলি?
আমার এক বান্ধবী।
কুলাঙ্গার কোথাকার!
বাবা ফোন রেখে দেওয়ায় হাফ ছেড়ে বাঁচল সমীরণ।
সামনের ঘরে ঢুকতেই দেখল, লোকটা আবার তার হিয়ারিং এইডটা কান থেকে খুলে পকেটে রাখল। তারপর বলল, আপনার বান্ধবী বাথরুমে একটু বেশি সময় নিচ্ছেন।
আজ্ঞে হ্যাঁ, বাথরুম ওর খুবই প্রিয় জায়গা, ডাকব কি?
ডাকুন।
সমীরণ গিয়ে বাথরুমের দরজায় টোকা দিয়ে বলল, হয়েছে জুলেখা? যাচ্ছি।
আরও মিনিট পাঁচেক পর জুলেখা সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে সামনের ঘরে এল। হেসে বলল, হাই। আমি জুলেখা।
অফিসার বলল, আমি শবর দাশগুপ্ত। গোয়েন্দা।
হাউ থ্রিলিং!
আপনি একজন পুলিশ অফিসারের মেয়ে?
হ্যাঁ। আমার বাবার নাম বিজয় শর্মা। ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ। রিটায়ার্ড।
সমীরণবাবুর সঙ্গে আপনার কত দিনের পরিচয়?
জাস্ট বারো দিন।
কীভাবে?
উই ওয়্যার টু লোনলি পিপল। উই মেট সামহোয়ার। অ্যান্ড দ্যাটস দ্যাট।
আপনি চাকরি করেন?
হ্যাঁ, মেরিজ স্কুলে ফিজিক্যাল ইনস্ট্রাক্টর।
ম্যারিটাল স্ট্যাটাস?
সিঙ্গল।
একা থাকেন না বাবা-মা’র সঙ্গে?
একা। বাবা-মা আমার লাইফ স্টাইল পছন্দ করেন না।
সমীরণবাবুর সঙ্গে আপনার দেখা হওয়াটা কি অ্যাক্সিডেন্টাল?
হ্যাঁ।
কোথায় দেখা হল?
একটা বার-এ।
বার-এ? আপনি কি ড্রিঙ্ক করেন?
অকেশনালি। যখন বোরিং বা লোনলি ফিল করি।
আর ইউ ইন লাভ?
হিঃ হিঃ। ডোন্ট নো।
আপনি কি জানেন যে, ওঁর আর একজন গার্ল ফ্রেন্ড আছেন?
জানব না কেন?
আপনি মিতালি ঘোষের কথা শুনেছেন?
না।
হাউ ডিড ইউ ফল ফর হিম?
জুলেখা মুচকি হাসল, উইল ইউ বিলিভ?
হোয়াই নট?
হি টোন্ড মি দ্যাট হি ওয়াজ স্কেয়ারড অফ গোস্টস।