না না। বরং ইউ আর আন্ডার স্ক্রুটিনি।
মাউথপিসটা থেকে হাত সরিয়ে সমীরণ বলল, ইনি বলছেন, ঠিক অ্যারেস্ট নয়, আই অ্যাম আন্ডার স্ক্রুটিনি। ব্যাপারটা কী তা আমি জানি না।
কেন, তোমাকে স্ক্রুটিনিই বা করা হচ্ছে কেন? তুমি কী করেছ!
মনে হচ্ছে সেই ইয়ের কেসটা—
কোন কেসটা? কীসের কেস?
একটা মার্ডার কেস।
মাই গড! মার্ডার কেস! মার্ডার কেস! ঠিক শুনছি?
ঠিকই শুনেছেন। ইনি বোধহয় আমাকে থানায় নিয়ে যাবেন। ভার্মার ফাইলটা তাই আমার পক্ষে আনা সম্ভব হচ্ছে না।
হ্যাং ভার্মা। পুলিশ অফিসারকে ফোনটা দে, আমি ওঁর সঙ্গে কথা বলতে চাই।
লোকটাকে কিছু বলতে হল না, নিজেই হাত বাড়িয়ে ফোনটা নিয়ে তার বাবাকে বলল, ঘাবড়াবেন না, আপনার ছেলেকে কয়েকটা প্রশ্ন করতে এসেছি।
বাবার গলা টেলিফোন থেকে দু’হাত দূরে দাঁড়িয়েও শুনতে পেল সমীরণ। বাবা বলল, কার মার্ডার? কীসের মার্ডার?
মিতালি ঘোষ নামে একটি মেয়ের।
তার সঙ্গে আমার ছেলের কী সম্পর্ক?
সম্পর্কটা গোলমেলে। তবে ক্রমশ সব জানা যাবে।
আমার যে প্যালপিটিশন হচ্ছে।
একটা সর্বিট্রেট খেয়ে নিন।
শুনুন অফিসার, আমার এই সেজো ছেলেটা অত্যন্ত ইররেগুলার। বোধহয় লম্পটও এবং একটি মিটমিটে বদমাশ।
আজকাল কে নয়? দি ইয়ং জেনারেশন ইজ টোটালি স্পয়েন্ট। তার জন্য আপনারা অর্থাৎ পেরেন্টসরাই বেশি রেসপনসিল।
ও কে, ও কে। কিন্তু আমার কথাটা শেষ হয়নি। আমি বলছিলাম কী, হি হ্যাজ হিজ ভাইসেস। কিন্তু হি ইজ কমপ্লিটলি ইনক্যাপেবল টু কমিট মার্ডার, হি ইজ নট ব্ৰট আপ দ্যাট ওয়ে।
হু নোজ? তবে আমাদের প্রাইম সাসপেক্ট উনি এখনও নন। ওঁর কাজটা আজ আপনি চালিয়ে নিন।
কিন্তু আপনাদের প্রশ্নোত্তরগুলো। যে আমার জানা দরকার। আই অ্যাম ওরিড।
উপায় কী বলুন? ইন্টেরোগেশনের রানিং কমেন্টরি তো আপনাকে শোনানো যাবে না।
আমি কি আসব?
না। আপাতত ওকে অ্যারেস্ট করা হচ্ছে না। আপনি পরে ওঁর কাছ থেকে শুনে নেবেন। ছাড়ছি।
আচ্ছা, আচ্ছা।
ফোনটা অফ করে লোকটা সমীরণের হাতে সেটা দিয়ে বলল, হ্যাপলেস পেরেন্টস। যান, ওটা চার্জে বসিয়ে আসুন।
পাপ। পাপ! পাপ ছাড়া কি তার জীবনে কিছু নেই? তার জীবন পঞ্চ ম-কারে আকীর্ণ। কিন্তু মার্ডার ম দিয়ে শুরু হলেও বোধহয় পঞ্চ মকারের মধ্যে পড়ে না।
ভিতরের ঘরে এসে কর্ডলেসটা চার্জে বসিয়ে সে কিছুক্ষণ চোখ বুজে চুপ করে দাঁড়িয়ে ধ্যানস্থ হওয়ার চেষ্টা করল। সকালবেলায় তার মাথা এমনিতেই ভাল কাজ করে না। তার ওপর এইসব উলটোপালটা ঘটনায় সে বিভ্রান্ত। এখন দরকার মেডিটেশন। আজকাল স্ট্রেস কালনোর জন্য অনেকেই মেডিটেশন ধরেছে। ব্যাপারটা কেমন তা অবশ্য সে ভাল করে জানে না। যোগ ব্যায়াম, ধ্যান ইত্যাদির কথা সে খুব শুনতে পায় আজকাল। খানিকক্ষণ চোখ বুজে সে নিজেকে জড়ো করার একটা ব্যর্থ চেষ্টা করল মাত্র। তারপর গিয়ে বাথরুমের দরজায় টোকা দিয়ে চাপা জরুরি গলায় ডাকল, জুলেখা! জুলেখা!
ভিতরে শাওয়ার চলছে। জুলেখা শুনতে পেল না।
টেবিল থেকে চাবিটা তুলে এনে সেইটে দিয়ে দরজায় নক করল সে।
শাওয়ার বন্ধ হল, জুলেখা বলল, কে?
আমি। একটু তাড়াতাড়ি করো।
কেন? উইল ইউ গো টু দি পি? আর-একটা বাথরুম তো রয়েছে।
নো, আই ওন্ট গো টু দি পি। বাট দেয়ার ইজ অ্যানাদার পি হিয়ার। পুলিশ।
পুলিশ? যাঃ, তুমি ইয়ারকি করছ।
মাইরি না।
পুলিশ কী চায়?
ইন্টেরোগেট করতে এসেছে।
আমাকে? আমাকে কেন?
তোমাকেও। আমার সম্পর্কে হয়তো জানতে চাইবে।
ডোন্ট ওরি। আই শ্যাল পেইন্ট ইউ ইন পিঙ্ক।
ইয়ারকি নয়। সিরিয়াস ব্যাপার। আই মে বি আন্ডার অ্যারেস্ট।
কেন, তুমি কী করেছ?
পাপ! বিস্তর পাপ করেছি। কিন্তু পুলিশ যে পাপটার কথা বলছে সেটা আমি করিনি।
ভেবো না। আমি পুলিশের মেয়ে, পুলিশের নাতনি। আই ওয়াজ বর্ন অ্যান্ড ব্ৰট আপ ইন এ পুলিশ কোয়ার্টার। পুলিশের কোলে চড়েই বড় হয়েছি।
চমৎকৃত হয়ে সমীরণ বলল, এসব আগে বলতে হয়। আই অ্যাম ইমপ্রেস্ট, ইউ আর অ্যান অ্যাসেট।
পুলিশ কেন এসেছে বলো তো! হ্যাভ ইউ কমিটেড এনি ক্রাইম?
আমার এক বান্ধবী সম্প্রতি খুন হয়েছে।
বান্ধবী?
ইট ওয়াজ অল ইন দি নিউজপেপার্স। মিতালি ঘোষ।
আমি খবরের কাগজ পড়িই না। ঠিক আছে, তুমি গিয়ে কথা বলো। আমি আসছি।
এই শীতেও কি একটু ঘাম হচ্ছে তার? কে জানে কেন, ছোটখাটো, আনইমপ্রেসিভ চেহারার পুলিশ অফিসারটির সামনে তার কিছু অস্বস্তি হচ্ছে। সে ঘরে ঢুকতেই অফিসারটি কান থেকে একটা ছোট্ট যন্ত্র খুলে তার গুটিয়ে পকেটে রাখতে রাখতে বলল, ওয়েল ডান।
তার মানে?
আমি এতক্ষণ আপনাদের ডায়ালগ শুনছিলাম।
কীভাবে শুনছিলেন? এনি ইলেকট্রনিক ডিভাইস? আজকাল যে কত কিম্ভুত যন্ত্রপাতি বেরিয়েছে, একটুও শান্তি বা সেলুশন থাকছে না।
এটা একটা ইমপ্রোভাইজড হিয়ারিং এইড। খুব সফিস্টিকেটেড কিছু নয়, তবু ভাল কাজ দেয়। বসুন।
সমীরণ বসল।
মিতালিদেবী কি আপনার বাল্যবান্ধবী?
আমরা স্কুলে একসঙ্গে পড়তাম।
তিনি কেমন মেয়ে ছিলেন?
ব্রাইট। মেরিটোরিয়াস।
সেটা আমরা জানি। আদার সাইডস?
খুব মিশুকে ছিল। একটু রোমান্টিক।
ডাক্তারি পড়ার সময়ে ওঁর বিয়ে হয়ে যায়, তাই না?
হ্যাঁ হ্যাঁ।
এত আরলি এজে বিয়ে হয়েছিল কেন, জানেন?