এই বন্ধুরা কি সবাই ওয়েল অফ?
হ্যাঁ স্যার। কারও মানিটারি কোনও প্রবলেম নেই। কিন্তু স্যার, আপনি আমার বন্ধুদের সম্পর্কে জানতে চাইছেন কেন?
এ ম্যান ইজ নোন। বাই দি কম্পপ্যানি হি কিপস।
সে তো ঠিকই। আমরা সবাই ক্যালকাটা বয়েজ-এ পড়তাম। অ্যাকাডেমিক রেকর্ড কারওরই খুব খারাপ নয়। তবে হ্যাঁ, আমাদের সবাই বদমাশ বলে জানত। অ্যান্ড দ্যাটস प्र6।।
এবার বলুন, জুন মাসের পাঁচ তারিখে আপনি এবং আপনার বন্ধুরা রাত বারোটার সময় কোথায় ছিলেন?
বন্ধুরা বলতে সবাই নয়। আমি, রাজু আর শতরূপ জুনের এক তারিখে গাড়ি নিয়ে বেরেই।
গাড়িটা কার?
রাজুর। রাজুর গাড়িরই ব্যাবসা। অন্তত তিনটে বড় বড় কোম্পানিকে ও বছরওয়ারি চুক্তিতে গাড়ি দেয়। সব কোয়ালিটি কার। তাই আমরা যখনই বাইরে যাই তখনই রাজুর কাছ থেকে গাড়ি নিই।
বুঝলাম। এবার বলুন, কোথায় গিয়েছিলেন?
লোধাশুলি।
সেখানে কেন?
শতরূপের ওখানে একটা ফাৰ্মহাউস মতো আছে। হাঁস, মুরগি, শুয়োরের খামার। সেইখানে।
তারপর?
পাঁচ তারিখ রাতেও আমরা শতরূপের ফার্ম হাউসেই ছিলাম স্যার।
ফার্ম হাউসের কর্মচারীরা সাক্ষী দেবে তো?
কেন দেবে না স্যার? তবে রাজু ছিল না। ওর জরুরি কাজ থাকায় দুই তারিখেই ফিরে এসেছিল। আমরা ফিরি ছয় তারিখের সকালে। ফার্ম হাউসের ডেলিভারি ভ্যান-এ।
কলকাতায় কখন পৌছন?
ভোর সাড়ে পাঁচটায়।
তারপর?
শত আমাকে এসপ্ল্যানেডে গ্র্যান্ডের সামনে নামিয়ে দেয়। আমি ট্যাক্সি ধরে বাড়ি চলে আসি। এসব কথা আমি লোকাল পুলিশকে বলেছি স্যার। একাধিকবার বলতে হয়েছে।
জানি। হয়তো আরও কয়েকবার বলতে হবে।
ঠিক আছে। যতবার বলতে বলবেন, বলব। বাড়িতে ফিরে আমি বেল দিই। কেউ দরজা খুলল না। হঠাৎ মনে হল, দরজাটা লক করা নেই, শুধু আধভেজানো আছে। আমি দরজা খুলে ঢুকি। সামনের হলঘরেই নন্দিনী উপুড় হয়ে পড়ে ছিল। লট অফ ব্লাড। ক্লট হয়ে ছিল।
আপনার ফাস্ট রি-অ্যাকশন?
খুব নার্ভাস হয়ে, হাত-পা কেঁপে মেঝেতেই বসে পড়ি। কাউকে ডাকাডাকি করার মতো অবস্থা ছিল না। বোধহয় আরও আধঘণ্টা পর আমি শিবাঙ্গীকে ডাকতে ডাকতে হামাগুড়ি দিয়ে বেডরুমে যাই। অ্যান্ড শি। ওয়াজ লায়িং…
শিবাঙ্গীর সঙ্গে আপনি বাইরে গেলে ফোনে কথাটথা বলতেন না?
না স্যার। আমার হোয়ার আবাউটস সম্পর্কে ওর কোনও ইন্টারেস্ট ছিল না।
আপনার কোনও গার্লফ্রেন্ড আছে?
না স্যার।
কখনও ছিল?
না। আমার অনেক দোষ আছে, কিন্তু উওম্যানাইজার নই।
নারী-পুরুষের আকর্ষণ কোনও দোষের ব্যাপার কি?
আমি তা জানি না স্যার। আমি মরালিস্ট নই। কিন্তু আমার কোনও মেয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল না।
নন্দিনী এ বাড়িতে কী করত? হাউস মেইড? মানে কাজের লোক?
ঠিক তা নয়। নন্দিনীকে এ বাড়িতে এনেছিল শিবাঙ্গী। এ বাড়িতে অনেক কাজের লোক আছে। কুক, ডাস্টিং-এর লোক, ডোমেস্টিক হেল্প মিলিয়ে অন্তত জনা চার-পাঁচ তো হবেই। নন্দিনী হাউসমাদারের মতো ছিল। ওভার অল সুপারভিশন করত। কিন্তু ওর আসল কাজ ছিল শিবাঙ্গীকে সঙ্গ দেওয়া। শিবাঙ্গীর একটা ছোট ব্যাবসা আছে। বিদেশ থেকে নানারকমের সুগন্ধের কনসেনট্ৰেট আনিয়ে তা দিয়ে পারফিউম তৈরি করা। ওর একটা ল্যাবও আছে। লার্জ স্কেলে করত না। লিমিটেড কিছু ক্লায়েন্টের জন্য করত। কিন্তু ব্যাবসাটা খুব ভালই চলত। নন্দিনী ওকে ব্যাবসার কাজেও হেল্প করত।
নন্দিনীকে কি স্যালারি দেওয়া হত?
হ্যাঁ স্যার। আমার ধারণা, মোর দ্যান ফিফটিন থাউস্যান্ড।
নন্দিনীর বয়স পাঁচিশ-ছাবিবশের বেশি ছিল না, কোয়াইট গুড লুকিং। ম্যারেড?
জানি না স্যার। নন্দিনীর সঙ্গে আমার বিশেষ কথাবার্তা হত না। শি ওয়াজ এ প্রাইভেট পারসন, ফোর্থ বেডরুমটায় থাকত। আমার সঙ্গে বিশেষ দেখাও হত না।
তার মানে আপনার সঙ্গে নন্দিনীর কোনও অ্যাফেয়ার ছিল না?
না স্যার। কী বলছেন? নন্দিনীর সঙ্গে অ্যাফেয়ার? আমার তো মনে হয় নন্দিনী আমাকে শিবাঙ্গীর মতোই ঘেন্না করত। আর সেটাই তো স্বাভাবিক।
কী করে বুঝতেন যে নন্দিনী আপনাকে ঘেন্না করত?
আমার তেমন সূক্ষ্ম অনুভূতি নেই। তবু দেখা হলে নন্দিনীর মুখে-চোখে রিপালশনের ভাব লক্ষ করেছি।
রেকর্ডে দেখছি আপনি এক সময়ে খেলাধুলো করতেন।
হ্যাঁ স্যার। আই ওয়াজ এ গুড অ্যাথলিট। স্প্রিন্টার ছিলাম। পরে আই টুক আপ টেনিস।
নেশাভা কবে থেকে শুরু করেন?
পাটিফাটিতে যেতে হত। সেই থেকেই শুরু।
আর বোহেমিয়্যানিজম?
ওটা আগে থেকেই ছিল। স্কুলে পড়ার সময় দু’বার পালিয়ে দেরাদুন আর লাদাখ চলে গিয়েছিলাম। তারপর থেকে মাঝে মাঝে কেমন যেন পাগলাটে ইচ্ছে হয় পালানোর।
আপনি একজন বিচিত্র মানুষ।
হ্যাঁ স্যার। অনেকে বলে, আমি পাগল।
আপনার স্ত্রীকে সেদিন সকালে আপনি কী অবস্থায় দেখেছিলেন?
বিছানায় উপুড় হয়ে শোওয়া। হাফ নেকেড। মাথা থেকে রক্ত পড়ে বিছানা ভেসে যাচ্ছিল। ঘ্যাস্টলি সিন। ভেবেছিলাম মরে গেছে।
আপনার কাজের লোকেরা কোথায় ছিল?
ওরা ফ্ল্যাটের ভিতরে থাকে না। সারভেন্টস কোয়ার্টারে থাকে। কুক। আর একজন সবসময়ের লোক। বাকিরা ঠিকে। অত সকালে কেউ তো আসে না। আটটার আগে কারও আসবার হুকুম নেই।
তখন ক’টা বাজে?
হার্ডলি ছটা বা সোয়া ছ’টা।
কী করলেন?
প্ৰথমে সিকিউরিটিকে ডাকি। তারপর অ্যাম্বুলেন্স আর পুলিশ। কিন্তু সবটাই করেছি একটা ঘোরের মধ্যে। এরকম সাংঘাতিক ঘটনা তো কখনও দেখিনি।