তীব্র শ্বাসের শব্দ তুলে পাকা গোখরোটা প্রশ্ন চিহ্নের মতো উঠে দাঁড়াল শূন্যে।
মরণের ডান হাতে আধলা ইট। একটু নাচিয়ে নিল সে। তার টিপ অব্যর্থ, কখনও ফসকায় না।
ঢিলটা তুলেও ছিল মরণ। কিন্তু আচমকাই তার মনে পড়ে গেল, শিবঠাকুরের গলায় মালা হয়ে দোলে সাপ। ঠাকুরের জটা জড়িয়ে থাকে। সাপ মারলে শিব ঠাকুর রাগ করবেন না? কয়েকদিন আগেই শঙ্কর মাস্টারমশাই ক্লাসে পড়ানোর সময় বলছিলেন, সাপ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে।
মরণের মনে পড়ল, আজকাল গাঁয়ে আর বেশি সাপ দেখা যায় না তো আগের মতো। মাঠঘাট জুড়ে কত বাড়িঘর হচ্ছে, সাপের থাকার জায়গাই নেই আর বিশেষ।
মরণ চিন্তিতভাবে আধলাটা দোলাল হাতে।
সাপটা যেন করুণ চোখে চেয়ে ছিল মরণের দিকে। যেন প্রাণভিক্ষা চায়।
মরণ হঠাৎ ঢিলটা ফেলে দিয়ে বলল, যাঃ চলে যা। মারব না।
কৃতজ্ঞ সাপটা তার প্রাণ ভিক্ষা পেয়ে মাথা নত করল। তারপর মিলিয়ে গেল তার নিচু অন্ধকার জগতে।
মহৎ একটা কাজ করার পর প্রসন্ন মনে বাড়ি ফিরতে লাগল মরণ।