কিছুক্ষণ আগে এসেছি।
বাবার সঙ্গে দেখা হয়েছে?
মা ইতস্তত করে বললেন, না।
যান বাবার কাছে যান। উনি আপনার জন্যে খুব ব্যস্ত হয়ে আছেন।
মা নড়লেন না। বসেই রইলেন।
আমি বললাম, আসুন, আপনাকে বাবার কাছে নিয়ে যাচ্ছি।
বাবার ঘরে ঢোকা মাত্র বাবা তার অভ্যাসমত বললেন, কে, রেনু?
মা দরজার পাশে থমকে দাঁড়াল। বাবা বললেন, ভাল আছ রেনু?
সেই রাতেই বাবার অসুখ বেড়ে গেল। বুকে হাত দিয়ে বহু কষ্টে টেনে টেনে শ্বাস নিতে লাগলেন। কথাবার্তা জড়িয়ে গেল। তবু একটু কোনো শব্দ হতেই মাথা তুলে বলতে লাগলেন, কে, রেনু?
মা তাঁর এত পাশে দাঁড়িয়ে কিন্তু তাকে চিনতে পারলেন না।
আমি চলে এলাম আমার ঘরে। নীলুর বিছানার ওপর দেখি একটি নীল খাম পড়ে আছে। রকিব ভাইয়ের লেখা চিঠি নিশ্চয়ই। নীলু হয়ত আজই পেয়েছে। রেখে দিয়েছে গভীর রাতে একা একা পড়বার জন্যে।
চারদিকে সুনসান নীরবতা। আমি বসে আছি চুপচাপ। আমার পাশেই ভালবাসার একটি নীল চিঠি। আমি হাত বাড়িয়ে চিঠিটি স্পর্শ করলাম। ঠিক তখনি নিচ থেকে একটি তীব্র ও তীক্ষ্ণ কান্নার শব্দ ভেসে এল।
মা কাঁদছেন।