রাত বাড়ছে। সুরাইয়া বসেই আছেন। মাঝখানে একবার মিতু এসে বলল, ফুপু বসে আছেন কেন? ঘুমুতে যান।
তিনি বলেছেন, যাচ্ছি মা। আমাকে নিয়ে ভেব না। তোমরা গল্প কর। সারা রাত জেগে মজা করে গল্প কর।
মিতু বলল, চা খাবেন ফুপু। ও চা খেতে চাচ্ছে। ওর জন্যে চা বানাব। আপনাকে দেব এক কাপ?
দাও।
বিয়ের পরেও মেয়েটা তাকে ফুপু ডাকছে। আচ্ছা ডাকুক। কিচ্ছু হবে না।
মিতু তাকে চা দিয়ে গেল। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে তাঁর শরীর কেঁপে উঠল। কি আশ্চর্য কান্ড তাদের যখন বাসর হল—তিনিও তো সেই রাতে চা বানিয়ে এনেছিলেন। মানুষটা চা খেতে চাইল। তিনি চা বানালেন। তাঁর শাশুড়ির জন্যে এক কাপ নিয়ে গেলেন। আকলিমা বেগম খুব রাগ করলেন–বাসর ঘর থেকে বের হলে কেন মা? বাসর থেকে বের হবার নিয়ম নেই।
তাইতো, মিতু বের হল কেন? বাসর রাতের মত আশ্চর্য একটা রাতের একটা মুহুৰ্তও নষ্ট করা ঠিক না।
সুরাইয়া চায়ের কাপে চুমুক দিলেন। আহ মেয়েটা ভাল চা বানিয়েছে।তো। খেতে ভাল লাগছে। চা খাবার মাঝখানেই অদ্ভুত ঘটনা ঘটল। কলিং বেল বেজে উঠল। সুরাইয়ার হাত পা জমে গেল। মানুষটা কি এসেছে? না-কি তিনি ভুল শুনছেন।
না ভুলতো না। এইতো আবারো বেল বাজল। এইতো আবার। সুরাইয়া ধরা গলায় ডাকলেন, ইমন ও ইমন। উঠে দাঁড়ানোর শক্তি তার নেই। দরজা খোলার শক্তিও নেই। দরজা খুলে যদি দেখেন— চার দিক ফাঁকা।
কলিং বেল বেজে যাচ্ছে। তিনি তাকিয়ে আছেন উঠোনের দিকে। শুক্লপক্ষ বলে উঠোনে চাঁদের আলো এসে পড়েছে। আচ্ছা তার বিয়ের রাতেও কি শুক্লা পক্ষ ছিল? উঠোনে চাঁদের আলো ছিল? তিনি মনে করতে পারছেন না। তার সব কিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। সর্বনাশী ঘন্টা বেজেই যাচ্ছে।
কে এসেছে? কে?