আমি চুপচাপ বাইরের ঘরে বসে বসে ঝিঝি ডাক শুনতে লাগলাম। অনেক রাতে বাদশা মামা আমাকে ডেকে নিলেন। মৃদু ভর্ৎসনার সুরে বললেন, তোরা সবাই যদি দূরে দূরে থাকিস তাহলে এলাচি কী মনে করবে বল? চল রঞ্জু।
বাদশা মামা আমার হাত ধরলেন।
বহুদিন পর লালমামির ঘরে এসে ঢুকলাম। পালঙ্কে লালমামি আধশোয়া হয়ে আছেন। তার কোলের কাছে কুণ্ডুলি পাকিয়ে বাচ্চা মেয়েটি ঘুমিয়ে। আমি এসে বসতেই লালমামি একটু সরে গেলেন। আমি বললাম, কেমন আছেন মামি?
মামি মাথা নাড়লেন। বাদশা মামা বললেন, মোটেই ভাল না রঞ্জু। দেখ না স্বাস্থ্য কী খারাপ হয়ে গেছে। আমি চুপচাপ বসে রইলাম। বাদশা মামা ব্যস্ত হয়ে পুরোনো গ্রামোফোন খুঁজে বের করলেন।
আমি বললাম–
আজি থাক মামা।
না-না শুনি। আমার শোনার ইচ্ছা হচ্ছে।
লালমামি মৃদু কণ্ঠে বললেন, না-না থাকুক। গান বাজাতে হবে না।
তবু গান বেজে উঠল—
“আমার ভাঙ্গা ঘরে চাঁদের আলো
তোরে আমি কোথায় রাখি বল।”
আমি চলে আসলাম। এই অচিনপুরীতে থাকবার কাল আমার শেষ হয়েছে।