শেষকালে উদ্ধব দাস শেষ শ্লোকে লিখে গেছে–
কোম্পানির রাজ্য হইল, মোগল হইল শেষ।
দমদম-হাউসে’ আইল ইংরেজ নরেশ ॥
কৃষ্ণভজা বৈষ্ণবেরা আতঙ্কেতে মরে।
ব্রাহ্মণ হইয়া হিন্দু যত পইতা ফেলে ডরে ॥
হিন্দু ছিল মুসলিম হইল পরেতে খ্রিস্টান।
এমন দেশেতে বলো থাকে কার মান ॥
কোন দেশেতে ঘর বা তোমার কোন দেশে বা বাড়ি।
মরিয়ম বেগম বলে আমি অভাগিনী নারী।
পতি থাকতে পতি নাই মোর অনাথিনী অতি।
মনের মানুষ যেখানে থাক আমি তারই সতী ॥
তার যদি বা মৃত্যু ঘটে আমি কীসে বাঁচি।
তারে কাছে লইয়া আইস থাকি কাছাকাছি।
এতেক কহিয়া সতী উঠিল চিতায়।
পতিপাশে হাস্যমুখে সুখে নিদ্রা যায় ॥
চিতা জ্বলে দাউদাউ জ্বলুক দহন জ্বলা।
তার চিতাতে আমি জ্বলি, অভাগী অবলা ॥
বসুন্ধরায় কহি মাগো তুমি সর্বসার।
নিবেদন করি তোমায় সতীর হাহাকার
যত ব্যথা পেলাম মাগো বৰ্ষিবারে নারি।
আমার মরণ দিয়া সবার বেদনা নিবারি ॥
নারী হইয়া জন্ম হইল তোমার বুকের পর।
ঘর কইনু বাহির এবে বাহির কইনু ঘর
বেগম মেরী বিশ্বাসের অমৃত কথন।
উদ্ধবচন্দ্র দাস কহে, শোনে সর্বজন ॥