এতক্ষণ চুপ করে থাকার পর পার্বতী একগাল হেসে বলে, জানো মা, শনি-রবিবার আমি আর বাবা যে কি আনন্দ করি, তা তুমি ভাবতে পারবে না।
পার্বতী, মা, তুমি কোন ক্লাসে পড়ছ?
এবার আমি ক্লাস টেন-এ উঠেছি।
বাঃ! খুব ভাল।
শান্ত বলে, জানো মৌ, পার্বতী সত্যি ভাল ছাত্রী। ও কোন সাবজেক্টে আশির কম নম্বর পায় না।
সঙ্গে সঙ্গে পার্বতী বলে, জানো মা, বাবার কোচিং এত ভাল যে কি বলব! বাবার কোচিং ঠিক মতো ফলো করলে আমার রেজাল্ট আরো ভাল হওয়া উচিত।
তোমার বাবা তো খুব ভাল ছাত্র ছিলেন; সে তো ভাল কোচিং করবেই।
মৌ না থেমেই বলে, রাজধানী এক্সপ্রেসে ব্রেকফাস্ট করার পর আর কিছু খাইনি; আমার বেশ খিদে লেগেছে।
বাবা, চল আমরা ‘কোয়ালিটি’তে যাই।
হ্যাঁ, চল।
শান্ত সঙ্গে সঙ্গে বলে, মৌ, একটু হাঁটতে পারবে তো?
খুব বেশি দূর না তো?
না, না খুব বেশি দূর না।
তাহলে চল, কথাবার্তা বলতে বলতে হেঁটে যাই।
হাঁটতে হাঁটতেই পার্বতী বলে, বাবা, মা আমাদের কাছে থাকে না কেন?
তোমার মা যে কলকাতার কলেজে পড়ায়।
পার্বতী হাসতে হাসতে বলে, বাবা, মাকে দেখে তো মনে হয়, সী ইজ এ কলেজ স্টুডেন্ট!
মৌ একটু হেসে বলে, এই বাঁদর মেয়ে এই বুড়ীকে দেখে তোমার কলেজ স্টুডেন্ট মনে হচ্ছে?
সত্যি বলছি মা, তোমাকে দেখতে এত সুন্দর, এত ইয়াং যে তোমাকে কলেজ স্টুডেন্টই মনে হয়।
মৌ হাসতে হাসতে বলে, পার্বতী, এবার তোমাকে আমি পিটুনি লাগাব।
তুমি যে কি পিটুনি লাগাবে, তা আমার জানা আছে।
কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর পার্বতী বলে, মা, তুমি কী আমাদের ছেড়ে কলকাতা চলে যাবে?
আমি তো তোমাকে ছেড়ে যেতে চাই না কিন্তু তোমার বাবা কী আমাকে থাকতে দেবে?
মা, তুমি ভাল করেই জানো বাবা হ্যাঁজ এ গোল্ডেন হার্ট!
পার্বতী না থেমেই বলে, তুমি কাছে থাকো না বলে বাবা তো তোমার ছবি দিয়ে সারা বাড়ি সাজিয়ে রেখেছে।
রিয়েলী?
হ্যাঁ, মা, সত্যিই তাই। তিনজনেই হাঁটছে; হাঁটতে হাঁটতে পার্বতী ওদের থেকে একটু এগিয়ে যায়।
.
শান্ত মৌ-এর কাছে এসে চাপা গলায় বলে; তোমাকে দেখেই তো আমার মনে ঝড় উঠেছে; কার জন্য যৌবন ধরে রেখেছ?
আমার ডাকাত বরের জন্য।
মৌ ওর চোখের পর চোখ রেখে হাসতে হাসতে বলে।