প্র : যদি বলি পৃথিবীর ভাগ্য আজ একটি সূক্ষ্ম সুতোয় ঝুলছে, তাহলে সেটাকে কি অতিশয়োক্তি বলবেন?
উ : আদৌ নয়। মানুষের ভাগ্য সর্বকালেই অনিশ্চিত..তবে আজকের মতো চরমসঙ্কটের অবস্থা তার কখনো হয়নি।
প্র : আপনি কি মনে করেন যুদ্ধের প্রস্তুতি আর বিশ্ব-সংগঠনের কাজ একযোগে চলতে পারে?
উ : শান্তির প্রয়াস আর যুদ্ধের প্রস্তুতি পরস্পর-বিরোধী প্রচেষ্টা, আজকের দিনে সেটা আরও বেশি সত্য।
প্র : বিশ্বযুদ্ধকে কি আমরা প্রতিহত করতে পারব?
উ : উত্তরটি সহজ ও সরল। যথেষ্ট সাহসিকতার সঙ্গে যদি আমরা কৃতসঙ্কল্প হই, তাহলে বিশ্বশান্তি আমাদের করায়ত্ত হবেই।
প্র : পারমাণবিক শক্তি মানব-সভ্যতায় কী জাতের প্রভাব বিস্তার করবে বলে আপনার ধারণা? ধরুন আগামী দশ-বিশ বছরে?
উ : এখন প্রশ্নটা অপ্রাসঙ্গিক। আমরা আজ পর্যন্ত যে পরিমাণ বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিবিদ্যার আশীর্বাদ লাভ করেছি তা পর্যাপ্ত…অবশ্য যদি তা সুপ্রযুক্ত হয়।
প্র : কোনো কোনো বৈজ্ঞানিক ভবিষ্যদ্বাণী করছেন যে, আমাদের জীবনযাত্রায় প্রভূত পরিবর্তন আসন্ন।…যেমন ধরুন দৈনিক দুই ঘন্টার পরিশ্রমই ভবিষ্যতে যথেষ্ট হয়ে যাবে–এ বিষয়ে আপনার কী অভিমত?
উ : আমরা যা ছিলাম তাই আছি, তাই থাকব। কোনো মৌল পরিবর্তন হয়েছে বলে তো মনে হয় না। দৈনিক কতক্ষণ কাজ করি–দুই না পাঁচ ঘণ্টা-সেটা কোনো বড় কথা নয়। সমস্যাটা সামাজিক এবং অর্থনৈতিক–আন্তর্জাতিক বিচারে।
প্র : ইউনাইটেড নেশা বেতার কর্তৃপক্ষ পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে সাতাশটি ভাষায় প্রচারকার্য চালিয়ে থাকেন। আজ যেহেতু মানবসভ্যতা এক ভয়াবহ সর্বনাশের সম্মুখীন, তাই জানতে চাইছি–বিশ্বমানবকে আপনি আজ কোন্ বাণী শোনাতে চান? উ : সব কিছু বিবেচনা করে আমার মনে হয়েছে, আমার সমকালীন যাবতীয় রাজনৈতিক নেতাদের ভিতর মাত্র একজনের বিশ্লেষণই প্রজ্ঞাদীপ্ত। তিনি হচ্ছেন : গান্ধীজী। তার নৈতিক নির্দেশে পরিচালিত হওয়াই আমাদের কর্তব্য…লক্ষ্যে উপনীত হতে আমরা কিছুতেই হিংসার আশ্রয় নেব না। যা অন্যায়, যা অসত্য তার বিরুদ্ধে অসহযোগ সংগ্রামই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা।