ভগীরথ গঙ্গা সমভিব্যাহারে বহু দেশ বহু জনপদ অতিক্রম করে কপিলের আশ্রম অভিমুখে চললেন। স্বর্গ হতে দেব-দেবীগণ তাকে আশীর্বাদ করলেন। মর্তবাসী আভূমি প্রণত হল। কল্পনাতীত এ-দৃশ্য যে কেউ দেখল না তাদের মনে পরিতাপ উপস্থিত হল। বহু অশ্বের দ্রুতগামী রথে ভগীরথ আরোহণ করেছেন। তাঁর দক্ষিণ হস্তের বৃহৎ শঙ্খ হতে নাদ নির্গত হয়ে চলেছে। সফেন, সজলা ভগীরথনন্দিনী তার অনুগমন করছেন। ফেনরাশি উপচে উঠছে। জল ও ভূমির সংঘর্ষে শব্দ জাগরূক। প্রস্তর টুটিয়ে, কঠিন ভূখণ্ড ফাটিয়ে এক অপরূপা জলবতী গতিশালিনী চললেন। দশদিশি ওঁকারে ভরে উঠল। দেবগণ ভগীরথ ও তৎদুহিতা ভাগীরথীকে ধন্য ধন্য করলেন। গঙ্গা উপচে, উছলে, উচ্ছাসে সকল পাপ বিমোচন করতে করতে সগররাজার সৃষ্টি সহস্র পুত্রের ভস্ম ধারণ করে কপিলের আশ্রমপ্রান্তে উপনীত হলে কপিল গঙ্গাকে প্রণাম করে বললেন মাতঃ! তুমি আমার আশ্রমকে চিরপবিত্র করিলে। পুণ্য করিলে। এক্ষণে তুমি সাগরে প্রসারিত হও।।
গঙ্গা সাগরের ভস্মরাজি ইতোমধ্যে ধারণ করেছিলেন। এখন সকল বারিরাশিসমেত সাগরের উপকণ্ঠে লগ্না হলে শুষ্ক সমুদ্র প্রাণে স্ফুরিত হয়ে শতফেনশীর্ষ জলরাশি দ্বারা গঙ্গাকে আলিঙ্গন করলেন। অন্তরীক্ষে সানাই বাজল। বৃক্ষসকল ফলে-পুষ্পে-পত্রে ভরে উঠল। ধরিত্রী বিমোহিত হলেন।