তাই হয়েছিল। পেশোয়ার থেকে আমদানি হিরে ভর্তি পাথরের ডিম গায়েব করেছিল বটে রবি এজেন্সি মারফত কলকাতার মরুদ্যানে, আমার এজেন্সি মারফতই তুলে দিয়েছিল জনহিতৈষী একটা সংস্থায়।
উপসংহারটা নাতিদীর্ঘ হয়ে গেল। সরি। আমি লেখক নই।
কী বলছেন? কল্পনার সঙ্গে আমার এখনকার সম্পর্কটা কি রকম?
মশায় পাঠক-পাঠিকা, আপনারা বড় বেশি জানতে চান। বড় বেশি কৌতূহলী। এ সব যে আমাদের প্রাইভেট ব্যাপার! হ্যাঁ, হ্যাঁ, আমাকে দেখলেই এখনও কল্পনা তার সবুজ চোখ নাচায়, কথায় জলতরঙ্গ বাজায়, দেহ তরঙ্গে মণিপুরী নৃত্য দেখায়, মুক্তো দাঁতে বিদ্যুৎ ঝলসায়। রবি রে, আমার গ্রেট ফ্রেণ্ড রবি রে, তাই দেখে মুচকি মুচকি হাসে আর বলে, ও তোর বিয়ে দেবেই।
কিন্তু সে গুড়ে বালি!
আবার একটু উপসংহার
বেশ বুঝছি, পাঠক-পাঠিকারা উসখুস করছেন একটা বিষয়ের রহস্য কথা শুনতে। দণ্ডপথ হঠাৎ মারা গেলেন কেন?
মশায় পাঠক-পাঠিকা, মনে করে দেখুন, দণ্ডপথের ব্রহ্মতালুর কাছে নাছি উড়তে দেখা গেছিল। কেন জানেন? সেখানে রক্ত জমেছিল। সেই রক্ত এল কোত্থেকে? মাথায় পেরেক পোঁতা হয়েছিল। পেরেক কে পুঁতেছিল?
আমার কথাটি ফুরোল! …কি বলছেন? এখনও ফুরোয়নি? কে ঠুকে ঠুকে পুঁতে দিয়েছিল পেরেক? বড় পয়েন্টে প্রশ্ন করেন তো!
হ্যাঁ, কল্পনাই ঠুকে ঠুকে পুঁতে দিয়ে জান কাবার করে দিয়েছিল মহাত্মা। দণ্ডপথের। যাতে অন্য মেয়েগুলো রেহাই পায়। আমি কিন্তু তাই পই পই করে। বলে দিয়েছি রবিকে-খবরদার, কল্পনার সঙ্গে এক শয্যায় আর নয়। এক ঘরেও নয়। তোর ঔরসজাত পুত্রকে মানুষ করার জন্যেই তুই শুধু সঙ্গ দিবি তার গর্ভধারিণীকে—তার বেশি একদম নয়। নো বডি টাচ, নাথিং কিছু। তিব্বতের মন্ত্র দণ্ডপথের মধ্যে দিয়ে তোর কাছে এসে যেন লুপ্ত না হয়ে যায় ছেলেটাকে দিবি যথা সময়ে। সে বড় হোক, তুই এক বাড়িতে থাক—কিন্তু এক ঘরে নিশিযাপন আর নয়—ওই সবুজনয়না ত্রাটকযোগিনী খুনি ব্র্যাণ্ডেড রমণীর সঙ্গে।
কি বলছেন? পাথরের ডিম ছ’খানা কল্পনা ফিরিয়ে দিয়েছিল রবিকে? দিয়েছে… দিয়েছে… দিয়েছে… গুপ্ত সমিতিও ত্যাগ করেছে… ছেলের জন্যে।
আরও প্রশ্ন আছে? নাইজেলের রূপান্তর আমি জানলাম কী করে?
প্রেমচাঁদের দৌলতে। প্রেমচাঁদই আমাকে জানিয়ে রেখেছিল, সোর্স ইনফরমেশন দিয়ে জেনেছিল, সুবুদ্ধি মুসলিমরা সংঘবদ্ধ হয়ে উগ্রতা আর সন্ত্রাস রোধের চেষ্টা চালাচ্ছে। নির্লোম সুফি এই সুবুদ্ধিদের একজন। নির্লোম কুবুদ্ধি নাইজেলকে সে হাড়ে হাড়ে চেনে। টেররিস্টদের হাত কাটা যাবে নাইজেলকে জেলে ঢোকাতে পারলে। সুফি তাই এসেছিল—প্রেমচাঁদের প্ল্যানে।
আপনাদের কৌতূহল এতক্ষণে নিশ্চয় মিটেছে? এবার তাহলে আমার ছুটি।