সেলিনার প্রেমের গভীরতা অনুভব করে বললাম, যারা প্রকৃত প্রেমিক প্রেমিকা তারা একে অন্যের অন্যায়কে প্রেমের এমতেহান মনে করে থাকে। আর প্রত্যেক নারীর উচিৎ পানির ধর্ম অনুসরণ করা। তাহলে স্বামী-স্ত্রীর মধে কোনোদিন মনোমালিন্য হবে না।
পানির ধর্ম কি বুঝিয়ে দাও।
পানির ধর্ম তিনটি। (১) পানি সব সময় নিচের দিকে প্রবাহিত হয়।
(২) পানির নিজস্ব কোনো আকার নেই। তাকে যে পাত্রেই রাখা হোক না কেন, সেই পাত্রের আকার ধারণ করে।
(৩) পানির কোনো রং নেই। সে যে কোন রঙের সঙ্গে মিশে গিয়ে সেই রঙে রঙ্গিন হয়ে যায়।
এখন বুঝতে পারছ কেন আমি নারীকে পানির ধর্ম অনুসরণ করার কথা বললাম।
তুমি দোয়া কর, আমি যেন আমার জীবনকে তোমার জীবনের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে তোমার রঙে রঙ্গিন হয়ে যেতে পারি।
তোমাকে আল্লাহপাক আমার মনের মত করে গড়েছেন। নচেৎ আমার সবকিছু তোমার পছন্দ হবে কেন? আর আমার মনের খবরই বা জানতে পার কি করে?
যে কাপড়গুলো আমি কিনে দিয়েছিলাম সে তার থেকে সালওয়ার কামিজ পরেছিল। তাকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছিল। আমি যখন তাকে কোলে তুলে নিই তখন ওড়নাটা মেঝেতে পড়ে যায়। পলকহীনভাবে আমি তার সৌন্দৰ্য্য সুধা পান করছিলাম।
আমাকে একদৃষ্টে তারদিকে চেয়ে থাকতে দেখে এতক্ষণে খেয়াল হল যে, গায়ে ওড়না নেই। লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি করে যেই ওড়নাটা তুলতে গেল আমি তখন তাকে দুহাতে তুলে নিয়ে খাটে শুইয়ে দিলাম।
সেলিনা উঠে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, ঘুমাবে না?
নিশ্চয়, তবে তুমি আগে ঘুমিয়ে পড়, তারপর।
তা কখন হয় নাকি? তুমি জেগে থাকবে আর আমি ঘুমাব?
তাহলে তুমিও আমার সঙ্গে জেগে থাক, পারবে তো জেগে থাকতে?
কেন পারব না? তুমি পারলে, আমিও পারব।
তুমি তাহলে এখানে বস, আমি ঐ চেয়ারটায় বসব। দেখি কে কতক্ষণ জেগে থাকতে পারি? এই কথা বলে খাট থেকে নেমে গিয়ে চেয়ারে বসে পরপর দুটো সিগারেট খেলাম। সেলিনা সারাক্ষণ আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। তার প্রতি খুব মায়া হল। উঠে গিয়ে তাকে শুইয়ে দিয়ে আমিও পাশে শুয়ে বললাম, আজকের আমার এই ব্যবহারের জন্য আমি খুব দুঃখিত। তবু বলছি তোমাকে ঘুমাতে দেখলৈই আমি ঘুমাব।
সেলিনা ছল ছল নয়নে বলল, তারচেয়ে আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিই তুমি ঘুমাও।
আমি আর কিছু না বলে তার দিকে মুখ করে শুলাম। সেলিনা আমার চুলে বিলি কাটতে লাগল। কখন ঘুমিয়ে গেছি জানি না। ভোরে মোয়াজ্জিনের আযান শুনে ঘুম ভেঙ্গে গেল। দেখলাম, সেলিনা আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে। আমি খুব ধীরে ধীরে তার হাতটা সরিয়ে দিয়ে নিজেকে মুক্ত করে উঠে তার ঠোঁটে আলতো করে চুমো খেলাম। এতেই সে জেগে গেল। ঘুম ঘুম চোখে আমার দিকে তাকাল।
বললাম, উঠে পড়, ফজরের আযান হয়ে গেছে। দুজনে একসঙ্গে নামায পড়ব। আমি বাথরুম থেকে আসার পর সেলিনা ওড়নাটা গায়ে জড়িয়ে বাথরুমে গেল, ফিরে এসে আমার সঙ্গে নামায পড়ল।
নামাযের পর জিজ্ঞেস করলাম, কুরআন শরীফ পড়তে জান?
না, তুমি আমাকে শিখিয়ে দেবে।
তোমাদের বাসার কাছের মসজিদের ঈমাম সাহেবকে ঠিক করে দেব। তিনি তার সময় মতো প্রতিদিন এসে তোমাকে পড়িয়ে যাবেন। এখন আমাকে কিছু খাওয়াতে পার?
সেলিনা ফ্রিজ থেকে চার পাঁচটা বড় মিষ্টি ও কয়েক পিস স্লাইস রুটি বের করে টেবিলের উপর রেখে বলল, তোমার জন্য আনিয়ে রেখেছি।
তোমার বুদ্ধির তারিফ না করে পারছি না। একটু মিষ্টি তার মুখে দিয়ে আমার সঙ্গে খেতে বললাম।
সামান্য খেয়ে বলল, আমাকে হাত ধোয়ার অনুমতি দাও। আমি ভোরে মোটেই কিছু খেতে পারি না।
বললাম, খেতে যখন পারবে না তখন পারমিশান দিলাম।
নাস্তার পাঠ শেষ করে বিছানায় শুয়ে সিগারেট ধরিয়ে বললাম, আমি এখন ঘুমাব, তুমিও ইচ্ছা করলে আমার সঙ্গে ঘুমাতে পার।
মামীমা উঠে পড়েছে, এখন ঘুমাতে লজ্জা করছে। তুমি ঘুমাও, আমি বরং হেঁসেলে মামীমাকে সাহায্য করি গিয়ে। আচ্ছা, শুয়ে চোখ বন্ধ করেই তুমি কী করে ঘুমিয়ে পড়?
ওটা আমার ছেলেবেলা থেকে অভ্যাস হয়ে গেছে। রাত্রে হোক আর দিনে হোক, যে কোনো সময়ে যদি ঘুমাবার ইচ্ছা করি তখনই ঘুমাতে পারি। ঘুমাবার সময় সব চিন্তা দূর করে দিয়ে আল্লাহপাকের জিকির করি, আর তখনই ঘুম ধরে যায়। তবে ইচ্ছা করলে আবার সমস্ত রাত্রি জেগেও থাকতে পারি, তাতে আমার কোনো অসুবিধে হয় না। তুমিও একটু চেষ্টা করলে এইভাবে ঘুমাতে পারবে। এখন আমার সঙ্গে একটু চেষ্টা করে দেখবে নাকি?
সেলিনা হেসে উঠে বলল, এখন নয়, অন্য এক সময় দেখা যাবে।
সিগারেট এ্যাসট্রেতে গুজে দিয়ে চোখ বন্ধ করে বললাম, ঠিক নটার সময় জাগাবে।
সেলিনা আমার পাশে বসে বন্ধ দুচোখে চুমো খেয়ে দ্রুত খাট থেকে নেমে চলে গেল।
আমি কিছু না বলে শুধু একটু হেসে পাশ ফিরে ঘুমিয়ে পড়লাম।
৫. আমার যখন ঘুম ভাঙল
আমার যখন ঘুম ভাঙল তখন পৌঁনে নটা। বাথরুমে সাওয়ারের পানি পড়ার শব্দ পেলাম। আলনায় সেলিনার বিয়ের আগে কিনে দেওয়া লাল শাড়ী, ব্লাউজ ও ব্রা দেখে মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি জাগল। বাথরুমের দিকে মুখ করে ঘুমিয়ে থাকার ভান করে শুয়ে রইলাম।
অল্পক্ষণ পরে সেলিনা দরজা একটু ফাঁক করে আমার দিকে তাকাল। আমাকে ঘুমন্ত মনে করে আস্তে আস্তে বেরিয়ে আনার কাছে গেল। তার গায়ে শুধু একটা বড় তোয়ালে জড়ান ছিল। ঐ অবস্থায় তাকে দারুন লাগছিল। কাপড় পরার সময় তার শরীরের অনেক গোপন অংশ দেখে আমি খুব উত্তেজিত হয়ে পড়ি। কিন্তু সে ভাবটা খুব কঠোর ভাবে দমন করে তার সৌন্দয্য সুধা পান করতে থাকি। তারপর সেলিনা ড্রেসিং টেবিলের কাছে বসে নিজেকে পরিপাটি করে সাজাল। পাশে ড্রইংরুমের ঘড়িতে নটা বাজতে সেলিনা খাটের কাছে এসে ঝুঁকে পড়ে আমার ঠোঁটে চুমো খেয়ে যেই সোজা হতে গেল, ঠিক তখনই আমি তাকে দুহাতে জড়িয়ে ধরে বুকের উপর টেনে নিয়ে বললাম