ভোর যখন হইল, তখন বিলাস দেখিল, মনিক নাই। শুদ্ধ বিছানায় বিশেষত বালিশে ওলিভ কুঞ্জের রাত্রির ছাপ—পোর্টের মাত্রা আধিক্যে যাহা সে বুঝিতে পারে নাই। ত্বরিতে উঠিয়া সে দক্ষিণের ঘরে গিয়া আয়নার সম্মুখে দাঁড়াইল । তাহার মুখ বহিয়া পুনরায় রক্ত আসিল । এক মুহূৰ্ত্ত সে স্থির থাকিতে পারিল না। একবার চন্দ্রমাধববাবুর সহিত দেখা করার কথা মনে করিতেই ভয়ে সে, বিলাস, আকাশের মত হয় ।
গোলাপ সুন্দরী – ১০ (শেষ)
গোলাপ সুন্দরী – ১০
অনেকদিন পার হইয়াছে ।
স্যানাটেরিয়ামের খাটে এখন সে শুইয়া, এইমাত্র রঙ্গস্বামী চোরা একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া চলিয়া গেলেন। বিলাস আপনার মনকে দৃঢ় করিয়া ফেলিয়াছে, সে ধীরে বালিশের তলা হইতে চেট্টি লিখিত এপিটাপ বাহির করিয়া খুলিতে যাইবে…যে এপিটাপে লেখা ছিল
“চল যাই—পৰ্ব্বতের শৃঙ্গে, যেথা
পার্পাল কবরী বাঁধে,
প্রত্যুষের প্রথম সূৰ্য্য,
তোমাদের শব্দ যেথা বর্ণ হয়ে যায়
সঙ্গীহীন ভালবাসা
হেম অন্ধতায়— “
এমত সময় একটি টাইপ করা চিঠি আসিল, এখন সে চিঠি খুলিল ।
চিঠিতে সনিৰ্ব্বন্ধ অনুরোধ ছিল, এবং গোলাপ সুন্দরীর খবর ছিল, যে তিনি একটি পুত্র রাখিয়া মরিয়াছেন । আঃ মনিক ! একবার বিলাসের মনে হইল, যাঁহাকে সে প্রথমে পবিত্র শুদ্ধ বস্ত্র পরিধান নিমিত্ত দেয়, তিনি বলিয়াছিলেন “আমার মা— পাগল ছিলেন” এবং একথা শ্রবণে তখন সে, বিলাস, বাহিরের মহাপ্রলয় দেখে ।
বিলাসের নিশ্বাস দুৰ্ব্বল হইয়া আসিয়াছিল তথা আর কয়েকটি নিশ্বাস মাত্র সম্বল এ কারণে দীর্ঘ নিশ্বাস তাহার ছিল না। শুধু ইতিমধ্যে, সম্ভবত, মনে হইল মৃত্যুকে অমোঘ করিবার জন্য পুনরায় সে শিশু হইতেছে।
ভালো লাগল।