হাদীস নং ৩৭৫০
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ………জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি উহুদ যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললেন, আপনি কি মনে করেন, আমি যদি শহীদ হয়ে যাই তাহলে আমি কোথায় অবস্থান করব? তিনি বললেন, জান্নাতে। তারপর উক্ত ব্যক্তি হাতে খেজুরগুলো ছুড়ে ফেললেন, এরপর তিনি লড়াই করলেন। অবশেষে তিনি শহীদ হয়ে গেলেন।
হাদীস নং ৩৭৫১
আহমদ ইবনে ইউনুস রহ………খাব্বাব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে (মদীনায়) হিজরত করেছিলাম। ফলে আল্লাহর কাছে আমাদের পুরস্কার সাব্যস্ত গিয়েছে। আমাদের কতক দুনিয়াতে পুরস্কার ভোগ না করেই অতীত হয়ে গিয়েছেন অথবা চলে গিয়েছেন। মাসআব ইবনে উমাইর রা. তাদের মধ্যে একজন। তিনি উহুদ যুদ্ধে শাহাদত বরণ করেছেন। তিনি একটি ধারাদার পশমী বস্ত্র ব্যতীত আর কিছুই রেখে যাননি। এ দিয়ে আমরা তার মাথা ঢাকলে পা বরে হয়ে যেত এবং পা ঢাকলে মাথা বের হয়ে যেত। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ কাপড় দিয়ে তার মাথা ঢেকে দাও এবং পায়ের উপর দাও ইযখির অথবা তিনি বলেছেন, ইযখির দ্বারা তার পা আবৃত কর। আমাদের কতক এমনও আছেন, যাদের ফল পেকেছে এবং তিনি এখন তা সংগ্রহ করেছেন।
হাদীস নং ৩৭৫২
হাসসান ইবনে হাসসান রহ……….আনাস রা. থেকে বর্ণিত, (তিনি বলেছেন) তাঁর চাচা (আনাস ইবনে নযর রা.) বদর যুদ্ধে অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি (আনাস ইবনে নাযর রা.) বলেছেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সর্বপ্রথম যুদ্ধে তাঁর সঙ্গে অংশগ্রহণ করতে পারিনি। যদি আল্লাহ তায়ালা আমাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে কোন যুদ্ধে শরীক করেন তাহলে অবশ্যই আল্লাহ দেখবেন, আমি কত প্রাণপণ চেষ্টা করে লড়াই করি। এরপর তিনি উহুদ যুদ্ধের দিন সম্মুখসমরে অবতীর্ণ হওয়ার পর লোকেরা পরাজিত হলে (পরাজিত হয়ে পলায়ন করতে আরম্ভ করলো) তিনি বললেন, হে আল্লাহ ! এ সমস্ত লোক অর্থাৎ মুসলমানগণ যা করলেন, আমি এর জন্য আপনার নিকট ওযরখাহী পেশ করছি এবং মুশরিকগণ যা করল তা থেকে আমি আমার সম্পর্কহীনতা প্রকাশ করছি। এরপর তিনি তলোয়ার নিয়ে অগ্রসর হলেন। এ সময় সাদ ইবনে মুআয রা.-এর সাথে তাঁর সাক্ষাত হল। তিনি বললেন, তুমি কোথায় যাচ্ছ হে সাদ? আমি উহুদের অপর প্রান্ত হতে জান্নাতের সুঘ্রাণ পাচ্ছি। এরপর তিনি (বীর বিক্রমে) যুদ্ধ করে শাহাদত বরণ করলেন। তাকে চেনা যাচ্ছিল না। অবশেষে তাঁর বোন তাঁর শরীরে একটি তিল অথবা অঙ্গুলীর মাথা দেখে তাকে চিনলেন। তাঁর শরীরে আশিটিরও বেশী বর্শা, তরবারি ও তীরের আঘাত ছিল।
হাদীস নং ৩৭৫৩
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ………..যায়েদ ইবনে সাবিত রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা কুরআন মজীদকে গ্রন্থাকারে লিপিবদ্ধ করার সময় সূরা আহযাবের একটি আয়াত আমি হারিয়ে ফেলি, যা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে পাঠ করতে শুনতাম। তাই আমরা উক্ত আয়াতটি অনুসন্ধান করতে লাগলাম। অবশেষে তা পেলাম খুযায়মা ইবনে সাবিত আনসারী রা. -এর কাছে। আয়াতটি হল : “মুমিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করেছে, তাদের কেউ কেউ শাহাদত বরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষায়”। (৩৩: ২৩) এরপর এ আয়াতটিকে আমরা কুরআন মজীদের ঐ সূরাতে (আহযাবে) সংযুক্ত করে নিলাম।
হাদীস নং ৩৭৫৪
আবুল ওয়ালীদ রহ………..যায়েদ ইবনে সাবিত রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উহুদের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হলে যারা তাঁর সঙ্গে বের হয়েছিল, তাদের কিছুসংখ্যক লোক ফিরে এলো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীগণ তাদের সম্পর্কে দুদলে বিভক্ত হয়ে পড়েন। একদল বললেন, আমরা তাদের সাথে লড়াই করব। অপর দল বললেন, আমরা তাদের সাথে লড়াই করব না। এ সময় নাযিল হয় (নিম্নবর্ণিত আয়াতখানা) “তোমাদের কী হল যে, তোমরা মুনাফিকদের সম্বন্ধে দু’দল হয়ে গেলে, যখন তাদের কৃতকর্মের দরুন আল্লাহ তাদেরকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছেন”। (৪: ৮৮) এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ (মদীনা) পবিত্র স্থান। আগুন যেমন রূপার ময়লা দূর করে দেয়, এমনিভাবে মদীনাও গুনাহকে দূর করে দেয়।
হাদীস নং ৩৭৫৫
মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ রহ…………জাবির রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘যখন তোমাদের মধ্যে দুদলের সাহস হারাবার উপক্রম হয়েছিল’ আয়াতটি আমাদের সম্পর্কে তথা বনু সালিমা এবং বনু হারিসা সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। আয়াতটি নাযিল না হোক এ কথা আমি চাইনি। কেননা এ আয়াতেই আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আল্লাহ উভয় দলেরই সহায়ক।
হাদীস নং ৩৭৫৬
কুতাইবা রহ………..জাবির রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে জাবির ! তুমি বিয়ে করেছে কি? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, কেমন, কুমারী না অকুমারী? আমি বললাম, না (কুমারী নয়) অকুমারী। তিনি বললেন, কোন কুমারী মেয়েকে বিয়ে করলে না কেন? সে তো তোমার সাথে আমোদ-প্রমোদ করত। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার আব্বা উহুদের যুদ্ধে শাহাদত বরণ করেছেন। এবং রেখে গেছেন নয়টি মেয়ে। এখন আমার নয় বোন। এ কারণে আমি তাদের সাথে তাদেরই মত একজন অনভিজ্ঞ মেয়েকে এনে একত্রিত করা পছন্দ করলাম না। বরং এমন একটি মহিলাকে (বিয়ে করা পছন্দ করলাম) যে তাদের চুল আঁচড়িয়ে দিতে পারবে এবং তাদের দেখাশোনা করতে পারবে। (এ কথা শুনে) তিনি বললেন, ঠিক করেছ।