হাদীস নং ৩৮০৭
আবদা ইবনে আবদুল্লাহ রহ…………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রথম আমি যে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি তা ছিল খন্দকের যুদ্ধ।
হাদীস নং ৩৮০৮
ইবরাহীম ইবনে মূসা রহ…………….ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি হাফসা রা.-এর নিকট গেলাম। সে সময় তাঁর চুলের বেণি থেকে ফোটা ফোটা পানি ঝরছিল। আমি তাকে বললাম, আপনি তে দেখছেন, নেতৃত্বের ব্যাপারে লোকজন কি কাণ্ড করছে। ইমারত ও নেতৃত্বের কিছুই আমাকে দেওয়া হয়নি। তখন তিনি বললেন, আপনি গিয়ে তাদের সাথে যোগ দিন। কেননা তাঁরা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। আপনি তাদের থেকে দূরে সরে থাকার কারণে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি হতে পারে বলে আমি আশংকা করছি। হাফসা রা. তাকে (এ কথা) বলতে থাকেন। (অবশেষে) তিনি (সেখানে) গেলেন। এরপর লোকজন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে মুআবিয়া রা. বক্তৃতা দিয়ে বললেন, ইমারত ও খিলাফতের ব্যাপারে কারো কিছু বলার ইচ্ছা থাকলে সে আমাদের সামনে মাথা উচু করুক। এ ব্যাপারে আমরাই তাঁর ও তাঁর পিতার চাইতে অধিক হকদার। তখন হাবীব ইবনে মাসলামা রহ. তাকে বললেন, আপনি এ কথার জবাব দেননি কেন? তখন আবদুল্লাহ (ইবনে উমর) বললেন, আমি তখন আমার গায়ের চাদর ঠিক করলাম এবং এ কথা বলার ইচ্ছা করলাম যে, এ বিষয়ে ঐ ব্যক্তিই অধিক হকদার যে ইসলামের জন্য আপনার ও আপনার পিতার সাথে লড়াই করেছেন। তবে আমার এ কথায় (মুসলমানদের মাঝে) অনৈক্য সৃষ্টি হবে, অযথা রক্তপাত হবে এবং আমার ও কথার অপব্যাখ্যা করা হবে এ আশংকায় এবং আল্লাহ জান্নাতে যে নিয়ামত তৈরী করে রেখেছেন তার কথা স্মরণ করে আমি উক্ত কথা বলা থেকে বিরত থাকি। তখন হাবীব রহ. বললেন, এভাবেই আপনি (ফিতনা থেকে) রক্ষা পেয়েছেন এবং বেঁচে গিয়েছেন।
হাদীস নং ৩৮০৯
আবু নুআইম রহ………….সুলাইমান ইবনে সুরাদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খন্দক যুদ্ধের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, এখন থেকে আমরাই তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব, তারা আর আমাদের প্রতি আক্রমণ করতে পারবে না।
হাদীস নং ৩৮১০
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ……….সুলাইমান ইবনে সুরাদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আহযাব যুদ্ধের দিন কাফেরদের সম্মিলিত বাহিনী মদীনা ছেড়ে ফিরে যেতে বাধ্য হলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমি বলতে শুনেছি যে, এখন থেকে আমরাই তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। তারা আমাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করতে পারবে না। আর আমরা তাদের এলাকায় গিয়েই আক্রমণ করব।
হাদীস নং ৩৮১১
ইসহাক রহ………….আলী রা. সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে, তিনি খন্দকের যুদ্ধের দিন (কাফের মুশরিকদের প্রতি) বদদোয়া করে বলেছেন, আল্লাহ তাদের ঘরবাড়ি ও কবর আগুন দ্বারা ভরপুর করে দিন। কেননা তারা আমাদেরকে (যুদ্ধে ব্যস্ত করে) মধ্যবর্তী নামায থেকে বিরত রেখেছে, এমনকি সূর্য অস্ত গিয়েছে।
হাদীস নং ৩৮১২
মক্কী ইবনে ইবরাহীম রহ…………জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত যে, খন্দক যুদ্ধের দিন সূর্যাস্তের পর উমর ইবনে খাত্তাব রা. এসে কুরাইশ কাফেরদের গালি দিতে আরম্ভ করলেন এবং বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! (আজ) সূর্যাস্তের পূর্বে আমি (আসর) নামায আদায় করতে পারিনি। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর কসম! আমিও আজ এ নামায আদায় করতে পারিনি। (জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. বলেন) এরপর আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে বুতহান উপত্যকায় গেলাম। এরপর তিনি নামাযের জন্য ওযু করলেন। আমরাও নামাযের জন্য ওযু করলাম। এরপর তিনি সূর্যাস্তের পর প্রথমে আসরের নামায এবং পরে মাগরিবের নামায আদায় করলেন।
হাদীস নং ৩৮১৩
মুহাম্মদ ইবনে কাসীর রহ…………জাবির রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আহযাব যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কুরাইশ কাফেরদের কবর আমাদের নিকট এনে দিতে পারবে কে? যুবাইর রা. বললেন, আমি পারব। তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবার বললেন, কুরাইশদের খবর আমাদের নিকট কে এনে দিতে পারবে? তখনও যুবাইর রা. বললেন, আমি পারব। তিনি পুনরায় বললেন, কুরাইশদের সংবাদ আমাদের নিকট কে এনে দিতে পারবে? এবারও যুবাইর রা. বললেন, আমি পারব। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, প্রত্যেক নবীরই হাওয়ারী (বিশেষ সাহাস্যকারী) ছিল। আমার হাওয়ারী হল যুবাইর।
হাদীস নং ৩৮১৪
কুতাইবা ইবনে সাঈদ রহ………..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (খন্দকের যুদ্ধের সময়) বলতেন, এক আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। তিনিই তাঁর বাহিণীকে মর্যদা দিয়েছেন। তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন এবং তিনি একাই শত্রু দল সম্মিলিত বাহিনীকে পরাজিত করেছেন। তারপর আর কিছুই থাকবে না অথবা এরপর আর ভয়ের কোন কারণ নেই।
হাদীস নং ৩৮১৫
মুহাম্মদ (ইবনে সালাম) রহ………..আবদুল্লাহ ইবনে আবু আওফা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাফেরদের সম্মিলিত বাহিনীর প্রতি বদদোয়া করে বলেছেন, কিতাবে নাযিলকারী ও হিসেব গ্রহণে তৎপর হে আল্লাহ ! আপনি কাফেরদের সম্মিলিত বাহিনীকে পরাজিত করুন। হে আল্লাহ ! তাদেরকে পরাজিত এবং ভীত ও কম্পিত করে দিন।