হাদিস নম্বরঃ ৪৩১৭ | 4317 | ٤۳۱۷
পরিচ্ছদঃ ২৪০৬. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ এবং অপর কতক লোক নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছে, তারা সৎকর্মের সাথে অপর অসৎকর্মের মিশ্রন ঘটিয়েছে। সম্ভবত, আল্লাহ তাদের ক্ষমা করবেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (৯ঃ ১০২)
২৪০৫. অনুচ্ছেদ: আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তারা তোমাদের সামনে কসম করবে যাতে তোমরা তাদের প্রতি রাজি হও। যদি তোমরা তাদের প্রতি রাজি হয়ে যাও তবুও আল্লাহ এসব ফাসিক লোকদের প্রতি রাজি হবেন না। ( ৯: ৯৬)
৪৩১৭। মুয়াম্মিল ইবনু হিশাম (রহঃ) … সামুরা ইবনু জন্দুর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলেছেন, রাতে দু’জন ফেরেশতা এসে আমাকে নিদ্রা থেকে জাগ্রত করলেন। এরপর আমরা এমন এক শহরে পৌছলাম, যা স্বর্ণ ও রৌপ্যের ইট দ্বারা নির্মিত। সেখানে এমন কিছু সংখ্যক লোকের সাথে আমাদের সাক্ষাত ঘটর, যাদের শরীরের অর্ধেক খুবই সুন্দর যা তোমরা কখনো দেখনি। এবং আর এক অর্ধেক এমন কুৎসিত যা তোমরা কখনো দেখনি। ফেরেশতা দু’জন তাদেরকে বললেন, তোমরা ঐ নহরে গিয়ে ডুব দাও। তারা সেখানে গিয়ে ডুব দিয়ে আমাদের নিকট ফিরে এল। তখন তাদের বিশ্রী চেহারা সম্পূর্ণ দূর হয়ে গেল এবং তারা সুন্দর চেহারা লাভ করলো। ফেরেশতাদ্বয় আমাকে বললেন, এটা হল ‘জান্নাতে আদন’ এটাই হল আপনার আসল আরামস্থল। ফেরেশতাদ্বয় (বিস্তারিত বুঝিয়ে) বললেন, (আপনি) যেসব লোকের দেহের অর্ধেক সুন্দর এবং অর্ধেক বিশরী (দেখেছেন), তারা ঐ সকল লোক যারা দুনিয়াতে সৎকর্মের সাথে অসৎকর্ম মিশিয়ে ফেলেছে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন (এবং তারা অতি সুন্দর চেহারা লাভ করেছে)।
হাদিস নম্বরঃ ৪৩১৮ | 4318 | ٤۳۱۸
পরিচ্ছদঃ ২৪০৭. মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নাবী এবং মু’মিনদের জন্য সঙ্গত নয় (৯ঃ ১১৩)
৪৩১৮। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … মূসায়্যাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন আবূ তালিবে মৃত্যুর আলামত দেখা দিল তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কাছে গেলেন। এ সময় আবূ জেহেল এবং আবদুল্লাহ ইবনু আবূ উমাইয়াও সেখানে বসা ছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে চাচা! আপনি পড়ুন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ!। আপনার মুক্তির জন্য আল্লাহর নিকট এ নিয়ে আবেদন পেশ করব এ কথা শুনে আবূ জেহেল ও আবদুল্লাহ ইবনু উমইয়া বলল, হে আবূ তালিব! তুমি কি মৃত্যুর সময় (তোমার পিতা) আবদুল মুত্তালিবের ধর্ম ত্যাগ করতে চাও? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে চাচা! আমি আপনার জন্য আল্লাহর তরফ থেকে যতক্ষণ আমাকে নিষেধ না করা হবে ততক্ষণ ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবো। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ
‘‘আত্মীয়-স্বজন হলেও মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নাবী এবং মু’মিনদের জন্য সঙ্গত নয়, যখন এ কথা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তারা জাহান্নামী।’’ (৯: ১১৩)
হাদিস নম্বরঃ ৪৩১৯ | 4319 | ٤۳۱۹
পরিচ্ছদঃ ২৪০৮. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ অবশ্যই আল্লাহ অনুগ্রহপরায়ণ হলেন নবীর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতি, যারা সংকটকালে তার অনুগমন করেছিল। এমনকি তাদের একদলের অন্তর বাঁকা হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল, পরে আল্লাহ তাদের ক্ষমা করলেন, নিশ্চয়ই তিনি তাদের প্রতি দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু (৯ঃ ১১৭)
৪৩১৯। আহমদ ইবনু সালিহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু কা‘আব (রহঃ) থেকে বর্ণিত, কা‘আব (রাঃ) যখন দৃষ্টিহীন হয়ে পড়লেন, তখন তাঁর ছেলেদের মধ্যে যার সাহায্যে তিনি চলাফেরা করতেন, তিনি বলেন, আমি (আমার পিতা) কা‘আব ইবনু মালিক (রাঃ) এর কাছে তার ঘটনা বর্ণনায় وَعَلَى الثَّلاَثَةِ الَّذِينَ خُلِّفُوا এ আয়াত এর তাফসীর সম্পর্কে বলতে শুনেছি। তিনি তার ঘটনার সর্বশেষে বলতেন, আমি আমার তওবা কবুল হওয়ার খুশিতে আমার সকল মাল আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পথে দান করতে চেয়েছছিলাম। কিন্তু নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (সকল মাল সাদকা করো না) কিচু সাদকা করো এবং কিছু নিজের জন্য রেখে দাও। এটাই তোমার জন্য কল্যাণকর হবে।
পরিচ্ছদঃ ২৪০৯. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ এবং তিনি সে তিনজনকে ক্ষমা করলেন যাদের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত মুলতবী রাখা হয়েছিল, যে পর্যন্ত না পৃথিবী বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও তাদের জন্য অতি সংকুচিত হয়েছিল এবং তাদের জীবন তাদের জন্য দুর্বিষহ হয়েছিল এবং তারা উপলব্ধি করতে পেরেছিল যে, আল্লাহ ছাড়া কোন আশ্রয়স্থল নেই, পরে তিনি তাদের প্রতি মেহেরবান হলেন, যাতে তারা তাওবা করে, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (৯ঃ ১১৮)
৪৩২০ মুহাম্মদ (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু কা‘আব ইবনু মালিক (রাঃ) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি আমার পিতা কা‘আব মালিক (রাঃ) থেকে শুনেছি, যে তিনজনের তওবা কবূল হয়েছিল, তার মধ্যে তিনি একজন। তিনি বদরের যুদ্ধ ও তাবুকের যুদ্ধ এ দুটি ছাড়া অন্য কোন যুদ্ধে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে পশ্চাতে থাকেন নি। কা‘আব ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবুক যুদ্ধ হতে সূর্যোদয়ের সময় মদিনায় প্রত্যাবর্তন করলে আমি (মিথ্যা আযুহাতের পরিবর্তে) সত্যপ্রকাশের দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করলাম। তিনি [রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] যে কোন সফর হতে সাধারণত সূর্যোদয়ের সময়ই ফিরে আসতেন। এবং সর্বপ্রথম মসজিদে গিয়ে দু’রাকাআত নফল সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। (তাবুকের যুদ্ধ থেকে এসে) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার সাথে এবং আমার সঙ্গীদের সাথে কথা বলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেন, অথচ আমাদের ছাড়া অন্য যারা যুদ্ধে যাওয়া থেকে বিরত ছিল, তাদের সাথে কথা বলায় কোন প্রকার বাধা প্রদান করলেন না। সুতরাং লোকেরা আমাদের সাথে কথা বলা থেকে বিরত থাকতে লাগলেন।