হাদিস নম্বরঃ ৪৩১৪ | 4314 | ٤۳۱٤
পরিচ্ছদঃ ২৪০২. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ (হে রাসুল) আপনি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন অথবা তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা না করুন, একই কথা, আপনি তাদের জন্য সত্তর বার ক্ষমা প্রার্থনা করলেও আল্লাহ তাদের কখনই ক্ষমা করবেন না (এর কারন, তারা আল্লাহ ও তার রাসুলকে অস্বীকার করেছে। আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না) (৯ঃ ৮০)
৪৩১৪। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন আবদুল্লাহ ইবনু উবায় ইবনু সালুল মারা গেল, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তার জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) পড়বার জন্য আহবান করা হল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন (জানাযার জন্য) উঠে দাঁড়ালে, আমি তাঁর কাছে গিয়ে আরজ করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি ইবনু উবায়ের জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) পড়াবেন? অথচ যে লোক অমুক দিন অমুক অমুক কথা বলেছে। উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বলেন, আমি তার কথাগুলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে এক একটি করে উল্লেখ করেছিলাম। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুচকি হাসি দিয়ে আমাকে বললেন, হে উমর, আমাকে যেতে দাও। আমি বারবার বলাতে তিনি বললেন, আল্লাহর আমাকে ইখতিয়ার দিয়েছেন। আমি তা গ্রহণ করেছি।
আমি যদি বুঝতে পারি যে, সত্তরবারের চেয়েও অধিক ক্ষমা প্রার্থনা করলে তাকে আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করে দিবেন, তবে আমি সত্তরবারের অধিক ক্ষমা প্রার্থনা করবো। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন এবং (জানাযা) থেকে প্রত্যাবর্তন করে আসার পরই সূরা বারাআতের এ আয়াত অবতীর্ণ হয়, “তাদের কেউ মারা গেলে কখনো তার জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে না। এরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি অবিশ্বাস করেছে। এবং পাপাচারী অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। (৯: ৮৪)
উমর (রাঃ) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে আমার এ দুৎসাহসের জন্য পরে আমি চিন্তা করে আশ্চর্যান্বিত হতাম। বস্তুত আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অধিক জ্ঞাত।
হাদিস নম্বরঃ ৪৩১৫ | 4315 | ٤۳۱۵
পরিচ্ছদঃ ২৪০৩. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যদি তাদের (মুনাফিকদের) কেউ মারা যায় আপনি কখনো তাদের জানাযার নামায আদায় করবেন না এবং তাদের কবরের কাছেও দাঁড়াবেন না (৯ঃ ৮৪)
৪৩১৫। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন (মুনাফিক) আবদুল্লাহ ইবনু উবাই মারা গেল, তখন তার ছেলে আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসলেন। তিনি [নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাঁর নিজ জামাটি তাকে দিয়ে দিলেন এবং এর দ্বারা তার পিতার কাফনের ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দিলেন। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করার জন্য উঠে দাঁড়ালেন। তখন ইবনু উমর খাত্তাব (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাপড় ধরে আরজ করলেন, [ইয়া রাসূলাল্লাহ!] আপনি কি তার (আবদুল্লাহ ইবনু উবাই) এর জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবেন? সে তো মুনাফিক, অথচ আল্লাহ তা‘আলা তাদের (মুনাফিকদের) জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে আপনাকে নিষেধ করেছেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (হে উমর!) আল্লাহ আমাকে ইখতিয়ার দিয়েছেন, অথবা বলেছেন, আল্লাহ আমাকে অবহিত করেছেন এবং বলেছেন, ‘‘আপনি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন আর না করেন, আপনি যদি সত্তরবারও ক্ষমা প্রার্থনা করেন, তবুও আল্লাহ কখনো তাদেরকে ক্ষমা করবেন না।’’ (৯: ৮০) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি সত্তরবারের চেয়েও বেশীবার ক্ষমা প্রার্থনা করবো। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। আমরাও তাঁর সাথে জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলাম। এরপর এ আয়াত অবতীর্ণ হল, ‘‘তাদের (মুনাফিকদের) কেউ মারা গেলে আপনি তার জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) কখনো আদায় করবেন না এবং তার কবরের পার্শ্বেও দাঁড়াবেন না। তারা তো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কে অস্বীকার করেছে এবং পাপাচারী অবস্থায়ই মৃত্যু বরণ করেছে। (৯: ৮৪)
হাদিস নম্বরঃ ৪৩১৬ | 4316 | ٤۳۱٦
পরিচ্ছদঃ ২৪০৪. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তোমরা তাদের কাছে ফিরে আসলে তারা আল্লাহর শপথ করবে, যাতে তোমরা তাদেরকে উপেক্ষা কর, সুতরাং তোমরা তাদেরকে উপেক্ষা করবে। তারা অপবিত্র, তাদের কৃতকর্মের ফলস্বরূপ জাহান্নাম তাদের আবাসস্থল (৯ঃ ৯৫)
৪৩১৬। ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু কা‘আব ইবনু মালিক (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি কা‘ব ইবনু মালিক (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, তিনি যখন তাবুকের যুদ্ধে পিছনে রয়ে গেলেন (অংশ গ্রহণ করলেন না), আল্লাহর কসম! তখন আল্লাহ আমাকে এমন এক নিয়ামত দান করেন যা মুসলমান হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত এতবড় নিয়ামত পাইনি। তা হল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সত্য কথা প্রকাশ করা। আমি তাঁর কাছে মিথ্যা বলিনি। যদি মিথ্যা বলতাম, তবে অন্যান্য (মুনাফিক ও) মিথ্যাবাদী ধ্বংস হয়েছে, আমিও সেভাবে ধ্বংস হয়ে যেতাম। যে সময় ওহী নাযিল হল ‘‘তোমরা তাদের নিকট (মদিনায়) ফিরে আসলে তারা আল্লাহর শপথ করবে, আল্লাহ সত্যত্যাগী সম্প্রদায়ের প্রতি তুষ্ট হবেন না।’’ (৯: ৯৫)