হাদীস নং ৩৭৯৭
ইয়াকুব ইবনে ইবরাহীম রহ…………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, উহুদ যুদ্ধের দিন তিনি (ইবনে উমর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য) নিজেকে পেশ করার পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অনুমতি দেননি। তখন তাঁর বয়স ছিল চৌদ্দ বছর। তবে খন্দক যুদ্ধের দিন তিনি (যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য) নিজেকে পেশ করলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অনুমতি দিলেন। তখন তাঁর বয়স পনের বছর।
হাদীস নং ৩৭৯৮
কুতাইবা রহ………….সাহল ইবনে সাদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, পরিখা খননের কাজে আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছিলাম। তাঁরা পরিখা খনন করেছিলেন আর আমরা কাঁধে করে মাটি বহন করছিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আমাদের জন্য দোয়া করে) বলছিলেন, হে আ
হাদীস নং ৩৭৯৯
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ………..আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হয়ে পরিখা খননের স্থানে উপস্থিত হন। এ সময় মুহাজির এবং আনসারগণ ভোরে তীব্র শীতের মধ্যে পরিখা খনন করছিলাম। তাদের কোন গোলাম ছিল না যারা তাদের পক্ষ হতে এ কাজ আঞ্জাম দিবে। যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের অনাহার ও কষ্ট ক্লেশ দেখতে পান, তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহ ! আখিরাতের শাস্তিই প্রকৃত শাস্তি, তাই আপনি আনসার ও মুহাজিরদেরকে ক্ষমা করে দিন। সাহাবীগণ এর উত্তরে বললেন, “আমরা সে সব লোক, যারা জিহাদে আত্মনিয়োগ করার ব্যাপারে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাতে বায়আত গ্রহণ করেছি, যতদিন আমরা জীবিত থাকি ততদিন পর্যন্ত”।
হাদীস নং ৩৮০০
আবু মামার রহ…………আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আনসার ও মুহাজিরগণ মদীনার চারপাশে পরিখা খনন করছিলেন এবং নিজ নিজ পিঠে মাটি বহন করছিলেন। আর (আনন্দ কণ্ঠে) আবৃত্তি করছিলেন, “আমরা তো সে সব লোক যারা ইসলামের ব্যাপারে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাতে বায়আত গ্রহণ করেছি, যতদিন আমরা জীবিত থাকি ততদিনের জন্য। বর্ণনাকারী বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের এ কথার উত্তরে বলতেন, হে আল্লাহ ! আখিরাতের কল্যাণ ব্যতীত আর কোন কল্যাণ নেই, তাই আনসার ও মুহাজিরদের কাজে বরকত দান করুন। বর্ণনাকারী (আনাস রা.) বর্ণনা করছেন যে, (পরিখা খননের সময়) তাদেরকে এক মুষ্টি ভরে যব দেওয়া হত। তা বাসি, স্বাদবিকৃত চর্বিতে মিশিয়ে খানা পাকিয়ে ক্ষুধার্ত কাওমের সামনে পরিবেশন করা হত। অথচ এ খাদ্য ছিল একেবারে স্বাদহীন ও ভীষণ দুর্গন্ধময়।
হাদীস নং ৩৮০১
খাল্লাদ ইবনে ইয়াহইয়া রহ………….আয়মান রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি জাবির রা.-এর নিকট গেলে তিনি বললেন, খন্দক যুদ্ধের দিন আমরা পরিখা খনন করছিলাম। এ সময় একখণ্ড কঠিন পাথর বেরিয়ে আসলে (যা ভাঙ্গা যাচ্ছিল না) সকলেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছ এসে বললেন, খন্দকের মাঝে একখণ্ড শক্ত পাথর বেরিয়েছে (আমরা তা ভাংতে পারছি না)। এ কথা শুনে তিনি বললেন, আমি নিজে খন্দকে অবতরণ করব। এরপর তিনি দাঁড়ালেন। এ সময় তাঁর পেটে একটি পাথর বাঁধা ছিল। আর আমরাও তিন দিন পর্যন্ত অনাহারী ছিলাম। কোন কিছুর স্বাদও গ্রহণ করিনি। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একখানা কোদাল হাতে নিয়ে প্রস্তরখণ্ডে আঘাত করলেন। ফলে তৎক্ষণাৎ তা চূর্ণ হয়ে বালুকারাশিতে পরিণত হল। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমাকে বাড়ি যাওয়ার জন্য অনুমতি দিন। (তিনি অনুমতি দিলে বাড়ি পৌঁছে) আমি আমার স্ত্রীকে বললাম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মধ্যে আমি এমন কিছু দেখলাম যা আমি সহ্য করতে পারছি না। তোমার নিকট কোন খাবার আছে কি? সে বলল, আমার কাছে কিছু যব ও একটি বকরীর বাচ্চা আছে। তখন বকরীর বাচ্চাটি আমি যবেহ করলাম। এবং সে (আমার স্ত্রী) যব পিষে দিল। এরপর গোশত ডেকচিতে দিয়ে আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আসলাম। এ সময় আটা খামির হচ্ছিল এবং ডেকটি চুলার উপর ছিল ও গোশত প্রায় রান্না হয়ে আসছিল। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমার (বাড়িতে) সামান্য কিছু খাবার আছে। আপনি একজন বা দুইজন সাথে নিয়ে চলুন। তিনি বললেন, কি পরিমাণ খাবার আছে? আমি তার নিকট সব খুলে বললে তিনি বললেন, এ তো অনেক ও উত্তম। এরপর আমাকে বললেন, তুমি তোমার স্ত্রীকে গিয়ে বল, সে যেন আমি না আসা পর্যন্ত উনান থেকে ডেকচি ও রুটি না নামায়। এরপর তিনি বললেন, উঠ ! (জাবির তোমাদেরকে খাবার দাওয়াত দিয়েছে) মুহাজিরগণ উঠলেন (এবং চলতে লাগলেন) জাবির রা. তার স্ত্রীর নিকট গিয়ে বললেন, তোমার সর্বনাশ হোক ! (এখন কি হবে?) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো মুহাজির, আনসার এবং তাদের অন্য সাথীদের নিয়ে চলে আসছেন। (জাবিরের স্ত্রী) বললেন, তিনি কি আপনাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন? আমি বললাম, হ্যাঁ। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (উপস্থিত হয়ে) বললেন, তোমরা সকলেই প্রবেশ কর এবং ভিড় করো না। এ বলে তিনি রুটি টুকরো করে এর উপর গোশত দিয়ে সাহাবীগণের নিকট তা বিতরণ করতে শুরু করলেন। (এগুলো পরিবেশন করার সময়) তিনি ডেকচি এবং উনান ঢেকে রেখেছিলেন। এমনি করে তিনি রুটি টুকরো করে হাত ভরে বিতরণ করতে লাগলেন। এতে সকলে পেচ ভরে খাবার পরেও কিছু বাকী রয়ে গেল। তাই তিনি (জাবিরের স্ত্রীকে) বললেন, এ তুমি খাও এবং অন্যকে হাদিয়া দাও। কেননা লোকদেরও ক্ষুধা পেয়েছে।