- সূরার নাম: সূরা কাওসার
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা কাওসার
আয়াতঃ 108.001
নিশ্চয় আমি আপনাকে কাওসার দান করেছি।
Verily, We have granted you (O Muhammad (Peace be upon him)) Al-Kauthar (a river in Paradise);
إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ
Inna aAAtaynaka alkawthara
YUSUFALI: To thee have We granted the Fount (of Abundance).
PICKTHAL: Lo! We have given thee Abundance;
SHAKIR: Surely We have given you Kausar,
KHALIFA: We have blessed you with many a bounty.
================
সূরা কাওছার বা প্রাচুর্য – ১০৮
৩ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা ও সার সংক্ষেপ : এটি একটি ছোট, প্রাথমিক মক্কী সূরা, যার সারমর্ম এক কথায় কাওছার এই শব্দটি দ্বারা বুঝানো হয়েছে। শব্দটি দ্বারা আন্তরিকতা ও আত্মোৎসর্গের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক সমৃদ্ধি অর্জন করা বুঝানো হয়। সূরাটিতে আরও বলা হয়েছে যে ঘৃণা ও বিদ্বেষ আত্মাকে ক্ষয় করে ফেলে এবং ফলে ইহকাল ও পরকালের সকল আশার আলো নির্বাপিত হয়ে যায়।
সূরা কাওছার বা প্রাচুর্য – ১০৮
৩ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
১। নিশ্চয় আমি তোমাকে [প্রাচুর্যের ] ফোয়ারা দান করেছি। ৬২৮৬
৬২৮৬। ‘Al-Kawthar’ – আক্ষরিক অর্থ সব কিছুর আধিক্য, বিশেষ অর্থে “মঙ্গলের প্রাচুর্য।” আল্লাহ্র অফুরন্ত নেয়ামত, যা আল্লাহ্ তার রাসুল হযরত মুহম্মদের (সা) উপরে বর্ষণ করেছিলেন। জান্নাতের একটি বিশেষ প্রস্রবণের নামও হচ্ছে ‘কাওছার ‘। আল্লাহ্ রাসুলকে (সা) সেই বিশেষ প্রস্রবণ দানেরও প্রতিজ্ঞা করছেন। এই স্বর্গীয় প্রস্রবন হচ্ছে আল্লাহ্র সীমাহীন মহিমা, দয়া। আল্লাহ্ নবীকে দান করেছিলেন অফুরন্ত সত্য জ্ঞান, প্রজ্ঞা, আধ্যাত্মিক ক্ষমতা, অন্তর্দৃষ্টি।
মন্তব্য : এই কাওছার অল্প-বিস্তর সকল পূণ্যবান পুরুষ ও নারীকে দান করা হয়, তাদের আল্লাহ্র প্রতি আনুগত্যের তারতম্য অনুযায়ী। যে তা লাভ করে তার আধ্যাত্মিক তৃষ্ণা নিবারিত হয়। আল্লাহ্র কল্যাণ হস্তের পরশে তার পার্থিব সকল আশা -আকাঙ্খার সমাপ্তি ঘটে ও জীবন পরিপূর্ণ হবে উঠে।
আয়াতঃ 108.002
অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কোরবানী করুন।
Therefore turn in prayer to your Lord and sacrifice (to Him only).
فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ
Fasalli lirabbika wainhar
YUSUFALI: Therefore to thy Lord turn in Prayer and Sacrifice.
PICKTHAL: So pray unto thy Lord, and sacrifice.
SHAKIR: Therefore pray to your Lord and make a sacrifice.
KHALIFA: Therefore, you shall pray to your Lord (Salat), and give to charity.
২। সুতারাং তুমি তোমার প্রভুর উদ্দেশ্যে নামাজ পড় ও কুরবাণী কর। ৬২৮৭
৬২৮৭। সমস্ত নেয়ামতের মালিক আল্লাহ্। সুতারাং কৃতজ্ঞতা ও ভক্তির সাথে আমাদের শুধুমাত্র আল্লাহ্রই এবাদত করা উচিত। আল্লাহ্র জন্য আমাদের ‘কুরবাণী’ দিতে বলা হয়েছে। ‘Nahr’ শব্দটির অর্থ উৎসর্গ করা যা আনুষ্ঠানিক ভাবে পশু কুরবানীকে বুঝায়। বিশেষ ভাবে [ ২২ : ৩৬ ] আয়াতে এবং টিকা নং ২৮১৩ বর্ণনা করা হয়েছে পশু হিসেবে উটের কথা। তবে একথা মনে রাখতে হবে ধর্মের আনুষ্ঠানিকতা হচ্ছে সামান্য প্রতীক মাত্র কিন্তু তা গভীর অর্থবোধক। কুরবানীর আনুষ্ঠানিকতার গভীরে যে গুঢ় আধ্যাত্মিক ভাবার্থ বিরাজ করে তা অনুধাবন যোগ্য। আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য পশুকে কুরবানী দেয়া হয়, এবং মাংস গরীবদের মাঝে বিতরণ করা হয়। এখানে পশু কোরবানী হচ্ছে আমাদের হৃদয়ের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের প্রতীক যা করা হয় হযরত ইব্রাহীমের নিজ সন্তানকে কোরবানীর অনুসরণে। আল্লাহ্ বলেছেন,” কোরবানীর পশুর রক্ত বা মাংস কিছুই আল্লাহ্র নিকট পৌঁছায় না; আল্লাহ্র নিকট পৌঁছায় তোমাদের মনের তাকওয়া।” [ ২২ : ৩৭]। এটাই হচ্ছে কুরবানীর প্রতীক। যে কোন ব্যাপারেই আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য আত্মত্যাগ ও আত্মোৎসর্গ আল্লাহ্ আমাদের নিকট দাবী করেন।
আয়াতঃ 108.003
যে আপনার শত্রু, সেই তো লেজকাটা, নির্বংশ।
For he who makes you angry (O Muhammad (Peace be upon him)), – he will be cut off (from every good thing in this world and in the Hereafter).
إِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الْأَبْتَرُ
Inna shani-aka huwa al-abtaru
YUSUFALI: For he who hateth thee, he will be cut off (from Future Hope).
PICKTHAL: Lo! it is thy insulter (and not thou) who is without posterity.
SHAKIR: Surely your enemy is the one who shall be without posterity,
KHALIFA: Your opponent will be the loser.
৩। যে তোমার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, নিশ্চয়ই সে [ ভবিষ্যতের আশা থেকে ] নির্মূল হবে। ৬২৮৮
৬২৮৮। ঘৃণা ও বিদ্বেষ কখনও মহৎ কিছুর জন্ম দিতে পারে না। এই আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার পটভূমি হচ্ছে : বিবি খাদিজার গর্ভে জন্ম রাসুলের (সা) দুই শিশু পুত্রের মৃত্যুর পরে ইসলামের শত্রুরা বিশেষভাবে আবু জহল, প্রমুখেরা রাসুলকে (সা ) কষ্ট দেয়ার জন্য ‘লেজ কাটা ‘ বলে ডাকে। তাদের ধারণা হয়েছিলো যে, রাসুলের যেহেতু কোন পুত্র সন্তান রইল না, সুতারাং তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর প্রচারিত দ্বীনও থাকবে না। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে সময়ের পরিক্রমায় ইসলামের আলো আরও উজ্জ্বল ভাবে চতুর্দ্দিকে উদ্ভাসিত করে তুলেছিলো। আবু জহলদের বিষাক্ত ছোবল রাসুলের (সা) কোন ক্ষতিই করতে পারে নাই, বরং তারাই নিজেরা ধ্বংস হয়েছে। এ ভাবেই যারা বিদ্বেষ, ঈর্ষা ও ঘৃণা অন্তরে পোষণ করে তারা নিজেরাই এর দহনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এই হচ্ছে বিশ্ববিধাতার অলিখিত আইন। অর্থাৎ তাদের অন্তরের শান্তি তিরোহিত হয়, ফলে তারা স্বাভাবিক মানুষের ন্যায় কিছু করতে সক্ষম হবে না।