আয়াতঃ 093.008
তিনি আপনাকে পেয়েছেন নিঃস্ব, অতঃপর অভাবমুক্ত করেছেন।
And He found you poor, and made you rich (selfsufficient with selfcontentment, etc.)?
وَوَجَدَكَ عَائِلًا فَأَغْنَى
Wawajadaka AAa-ilan faaghna
YUSUFALI: And He found thee in need, and made thee independent.
PICKTHAL: Did He not find thee destitute and enrich (thee)?
SHAKIR: And find you in want and make you to be free from want?
KHALIFA: He found you poor, and made you rich.
৮। তিনি তোমাকে দরিদ্র অবস্থায় দেখেন এবং তোমাকে [ দারিদ্র ] মুক্ত করেন। ৬১৮৪
৬১৮৪। ৩) মহানবী পৈতৃক সুত্রে খুব বেশী কিছু সম্পদ লাভ করেন নাই। তিনি ছিলেন গরীব। বিবি খাদিজার পবিত্র ভালোবাসা ও প্রকৃত প্রেম তাঁকে যে শুধুমাত্র মহিমান্বিত করেছিলো তাই-ই নয়, পরবর্তী জীবনে তাঁকে পার্থিব সকল অভাব মুক্ত করেছিলো। তার ফলে তিনি তার সময় ও জীবনকে আল্লাহ্র কাজে ব্যপৃত রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। এই মহান উদাহরণের মাধ্যমে আল্লাহ্ আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন যে, পৃথিবীর জীবনে আমরা অনেক সময়েই ভালো কাজে বাঁধা প্রাপ্ত হই বা অর্থের বা লোকবলের অভাব অনুভব করি। কিন্তু যদি আমাদের কাজের উদ্দেশ্য মহৎ হয় এবং আমরা আমাদের কাজের প্রতি আন্তরিক ও বিশ্বস্ত থাকি তবে আল্লাহ্র সাহায্য অবশ্যাম্ভবী। বিশেষ ভাবে যদি সে পথ হয় আধ্যাত্মিক জগতের পথ ; তবে সেই খাড়া বন্ধুর পথে আরোহণ অত্যন্ত দুঃসাধ্য ব্যাপার। যদি কেউ সে পথ খুঁজে পায় এবং দুরূহ পথকে অতিক্রম করতে চায় ধৈর্য্য, অধ্যাবসায় ও পরিশ্রমের মাধ্যমে,তবে তিনি আধ্যাত্মিক জ্ঞান, প্রজ্ঞা, ভালোবাসাতে তাঁর অন্তর পূর্ণ করে দেবেন। আল্লাহ্ তাকে আধ্যাত্মিক ভাবে অভাব মুক্ত করবেন।
আয়াতঃ 093.009
সুতরাং আপনি এতীমের প্রতি কঠোর হবেন না;
Therefore, treat not the orphan with oppression,
فَأَمَّا الْيَتِيمَ فَلَا تَقْهَرْ
Faamma alyateema fala taqhar
YUSUFALI: Therefore, treat not the orphan with harshness,
PICKTHAL: Therefor the orphan oppress not,
SHAKIR: Therefore, as for the orphan, do not oppress (him).
KHALIFA: Therefore, you shall not forsake the orphan.
৯। সুতারাং এতিমদের সাথে কখনও দুর্ব্যবহার করো না ৬১৮৫
৬১৮৫। আয়াত [ ৬ – ৮ ] পর্যন্ত রূপক বর্ণনার মাধ্যমে যে উপদেশাবলী প্রেরণ করা হয়েছে, তাকেই আরও সম্প্রসারিত করা হয়েছে [ ৯ – ১১ ] আয়াতে। এতিমদের প্রতি মহানবীর ব্যবহার তাঁর সমসাময়িক লোকদের জন্য, তথা সাড়া বিশ্বের জন্য উদাহরণ স্বরূপ। তাঁর সময়ে সাধারণ লোকেরা এতিমদের সম্পত্তি আত্মসাৎ করতো, তাদের অসহায় অবস্থার সুযোগ গ্রহণ করতো, অবশ্য মানুষের এই মানসিকতা সে সময়ে যেমন বিদ্যমান ছিলো, অদ্যাবধিও তা সমভাবে বিদ্যমান আছে। মানুষ অপরের অসহায়ত্বের সুযোগ গ্রহণে অত্যন্ত তৎপর। এতিম শব্দটিকে রূপক অর্থে ব্যবহার করলে এর দ্বারা তাদেরই বুঝানো হয় যাদের সহায় সম্বল নাই। সেক্ষেত্রে আল্লাহ্র হুকুম হবে অসহায়, যারা অন্যের উপরে নির্ভরশীল, তারা হচ্ছে সম্পদশালী ও প্রভাব প্রতিপত্তিশালীদের জন্য পবিত্র আমানত স্বরূপ। এই অসহায়ত্ব হতে পারে এতিম হওয়ার কারণে বা অন্যের উপরে নির্ভরশীলতার কারণে। নির্ভরশীলতার কারণ বহুবিধ হতে পারে যেমন : বয়েসের দরুণ [ অতিবৃদ্ধ হলে ], লিঙ্গের প্রভেদের দরুণ। [ যেমন মেয়েদের উপর নির্যাতন ], সামাজিক অবস্থানের জন্য; সম্পদের তারতম্যের জন্য এরূপ বহুবিধ কৃত্রিম সামাজিক বাঁধা বিদ্যমান যার দরুণ মানুষ অসহায় হয়ে পড়ে। আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে এই অসহায়দের প্রতি অনুভূতিশীল দয়ার্দ্র হওয়া।
আয়াতঃ 093.010
সওয়ালকারীকে ধমক দেবেন না।
And repulse not the beggar;
وَأَمَّا السَّائِلَ فَلَا تَنْهَرْ
Waamma alssa-ila fala tanhar
YUSUFALI: Nor repulse the petitioner (unheard);
PICKTHAL: Therefor the beggar drive not away,
SHAKIR: And as for him who asks, do not chide (him),
KHALIFA: Nor shall you reprimand the beggar.
১০। প্রার্থীর আবেদন [ না শুনে ] তাড়িয়ে দিও না ; ৬১৮৬
৬১৮৬। মানুষ সামাজিক জীব যে দুর্বল সে সবলের সাহায্য প্রার্থী হয়। প্রার্থী হতে পারে ভিক্ষুক, যে ধনীর নিকট আর্থিক সাহায্য প্রার্থনা করে, অজ্ঞ যে জ্ঞানীর কাছে জ্ঞান লাভের প্রার্থনা করে। অশিক্ষিত শিক্ষার আলোর প্রার্থনা করে, দুর্বল সবলের শক্তি যাঞা করে এরূপ ভাবে সামাজিক অবস্থানে যারা উচ্চে অবস্থান করেন নিম্নে অবস্থানকারীরা তাদের সাহায্য প্রার্থী। এরূপ ক্ষেত্রে মহানবীর উদাহরণের মাধ্যমে বিশ্বস্রষ্টার আদেশ হচ্ছে প্রার্থীর প্রতি দুর্ব্যবহার করা চলবে না। সাধারণ মানুষের ধর্ম হচ্ছে অনুগ্রহ প্রার্থীর সাথে সম্মানের সাথে ব্যবহার করে না; বরং কৃপার সাথে ব্যবহার করে। আবার অনেকে সাহায্য করে সত্য, তবে দুর্ব্যবহারের সাথে। এই মানসিকতাকে এখানে নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে। যে দান অন্তরের স্বতঃস্ফূর্ত সহানুভূতি ও ভালোবাসা থেকে উৎসরিত হয় না, সে দান আল্লাহ্র নিকট গ্রহণযোগ্য নয়। যদি কেউ প্রার্থীর হাত থেকে অব্যহতি পাওয়ার জন্য বা দাতা হিসেবে সুনাম কুড়ানোর জন্য সাহায্য করে তবে সে দানও আল্লাহ্র নিকট গ্রহণযোগ্য নয়। পেশাগত ভিক্ষুককে অনেকেই লোক দেখানোর জন্য বা এদের থেকে অব্যহতি পাওয়ার জন্য ভিক্ষা দিয়ে থাকে। এর দ্বারা সমাজের কোনও উপকার হয় না, বরং সমাজের ক্ষতের সৃষ্টি হয়। কারণ এরা সমাজের পরগাছা। সুতারাং সাহায্য প্রার্থীর প্রতিটি দরখাস্ত তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সহানুভূতি ও দয়ার সাথে বিবেচনা করতে হবে। দেখুন সূরা [ ২ : ৮৩ ] আয়াত ও টিকা ৮৭।