আয়াতঃ 093.003
আপনার পালনকর্তা আপনাকে ত্যাগ করেনি এবং আপনার প্রতি বিরূপও হননি।
Your Lord (O Muhammad (Peace be upon him)) has neither forsaken you nor hated you.
مَا وَدَّعَكَ رَبُّكَ وَمَا قَلَى
Ma waddaAAaka rabbuka wama qala
YUSUFALI: Thy Guardian-Lord hath not forsaken thee, nor is He displeased.
PICKTHAL: Thy Lord hath not forsaken thee nor doth He hate thee,
SHAKIR: Your Lord has not forsaken you, nor has He become displeased,
KHALIFA: Your Lord never abandoned you, nor did He forget.
৩। তোমার প্রতিপালক প্রভু তোমাকে পরিত্যাগ করেন নাই ৬১৭৭ এবং অসন্তুষ্টও হন নাই। ৬১৭৮
৬১৭৭। কোরাণ শরীফের প্রথা অনুসারে এর উপদেশের পটভূমি থাকে সমসাময়িক ঘটনা যা যুগ কাল উত্তীর্ণ এবং বিশ্বজনীন, পৃথিবীর সকল দেশের সকল মানুষের জন্য প্রযোজ্য। এই আয়াতে আল্লাহ্ রাসুলকে (সা) নির্দ্দিষ্ট বিষয়ের প্রতিশ্রুতি জ্ঞাপন করেছেন যা সার্বজনীন, যুগ কাল উত্তীর্ণ। দেখুন সূরাটির ভূমিকা। কোরাণ অবতরণের প্রথম ভাগে ‘ওহী’ অবতরণে বিলম্ব হয়। সময়ের এই ব্যবধানে হযরতের মনে নিঃসঙ্গতার সৃষ্টি হয়, তিনি চিন্তাযুক্ত হন। আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভের জন্য তিনি ব্যকুল হয়ে পড়েন। তদুপরি মক্কার কোরাইশরা তাঁর প্রতি ঠাট্টা বিদ্রূপের ও ভয় ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে তখন তাকে সান্তনা দিয়ে এই সূরাটি অবতীর্ণ হয়। শুধু রাসুলকেই (সা) নয় সেই সাথে তার অনুসারীদেরও কোরাইশরা অত্যাচার ও নির্যাতন করতে থাকে। কিন্তু কোরাইশাদের কোন বিদ্রূপ বা অত্যাচার রাসুলের (সা) হৃদয়কে সত্যের প্রতি বিশ্বাস থেকে এতটুকু বিচলিত করতে পারে নাই ; যেরূপ অস্থির হয়েছিলো ঈসা নবীর হৃদয়। কারণ তাঁর আবেদন ছিলো এরূপঃ “My God ! why hast thou forsaken me ?” [ Mark xvi 34 ] । কোরাইশরা যত ভাবেই বিদ্রূপাচ্ছলে বলুক না কেন যে, ” আল্লাহ্ রাসুলের (সা) উপরে রাগ করেছেন ” রাসুল (সা) ছিলেন বিশ্বাসে ও নির্ভরশীলতায় অবিচল যা বিশ্ব মানবের জন্য সর্ব কালের উদাহরণ।
উপদেশ : বিপদ ও দুর্যোগে আল্লাহ্র প্রতি নির্ভরশীলতার মাধ্যমে ধৈর্য অবলম্বন করতে হবে।
৬১৭৮। দেখুন উপরের টিকা সাধারণ উপদেশ একই। প্রভাতের উদীয়মান সূর্যের ক্রমান্বয়ে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাওয়ার ন্যায় হচ্ছে আধ্যাত্মিক জগতের অভিযাত্রা। আত্মার এই যাত্রা অন্ধকার থেকে ধীরে ধীরে আলোর পথে যাত্রা। এরূপ যাত্রীকেই আল্লাহ্ উপদেশ দান করেছেন হতোদ্দম না হতে বা এই দুর্গম পথে একাকীত্ব অনুভব না করতে। এ পথের প্রারম্ভে সংগ্রাম ও পথের কষ্ট অনেক সময়েই আধ্যাত্মিক পথের যাত্রীদের হতাশ ও হতোদ্দম করে। কিন্তু আল্লাহ্ আশ্বাস দান করেছেন যে, এ সব পথের যাত্রীদের অবশ্যই আল্লাহ্ বিজয় মুকুট পরাবেন। আল্লাহ্র কল্যাণ স্পর্শ সর্বদা তাদের ঘিরে থাকে। যদি শত্রুরা তাদের প্রতি ব্যঙ্গ বিদ্রূপ ও অত্যাচার ও নির্যাতনের ঝড় বইয়ে দেয়, তাদের বিশ্বাসের দৃঢ়তাই তাদের এই অসহনীয় অবস্থা থেকে উদ্ধার করবে। আল্লাহ্র প্রতি অবিচল বিশ্বাস এবং এই বিশ্বাসের দৃঢ়তা তাকে পার্থিব থেকে অপার্থিব জগতে উত্তরণ ঘটাবে। বাইরের পৃথিবী যাই-ই বলুক না কেন অন্তরের মাঝে হৃদয় কন্দরে সে জানে আল্লাহ্র কল্যাণ স্পর্শ তাকে ঘিরে আছে ইহজগতে যাই-ই ঘটুক না কেন পরলোকের জীবনে তারা হবেন পুরষ্কৃত।
আয়াতঃ 093.004
আপনার জন্যে পরকাল ইহকাল অপেক্ষা শ্রেয়।
And indeed the Hereafter is better for you than the present (life of this world).
وَلَلْآخِرَةُ خَيْرٌ لَّكَ مِنَ الْأُولَى
Walal-akhiratu khayrun laka mina al-oola
YUSUFALI: And verily the Hereafter will be better for thee than the present.
PICKTHAL: And verily the latter portion will be better for thee than the former,
SHAKIR: And surely what comes after is better for you than that which has gone before.
KHALIFA: The Hereafter is far better for you than this first (life).
৪। নিশ্চয় ইহকাল অপেক্ষা পরকাল তোমার জন্য অধিক মঙ্গলময় হবে। ৬১৭৯
৬১৭৯। আল্লাহ্র প্রতি যে আন্তরিকভাবে অনুগত, আধ্যাত্মিক জগতের দুর্গম পথে তার প্রতিদিনের যাত্রা হবে ক্রমান্বয়ে উর্দ্ধে উত্তরণ। উচ্চ পর্বতে আরোহণের ন্যায় প্রতিটি ধাপে সে পশ্চাতকে অতিক্রম করে উর্দ্ধলোকে আরোহণ করবে। সে কারণেই বলা হয়েছে ” পরকাল ইহকালের সময় অপেক্ষা শ্রেয়।” এই উত্তরণ হবে ইহলোকে এবং পরলোকের জীবনের জন্য। পৃথিবীর পার্থিব মানদন্ডে অনেক সময়ে এ সব পূণ্যাত্মাদের জীবনকে সুউচ্চ বা মাননীয় ও সম্মানীয় মনে হতে না পারে। কিন্তু আধ্যাত্মিক জীবনে হৃদয় ও অন্তর এদের হবে তীব্র প্রশান্তিতে পরিপূর্ণ। এই প্রশান্তির পরিমাণ প্রতিদিন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে – প্রকৃত জ্ঞান ও প্রজ্ঞার আলোকে তার হৃদয় হবে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর।
আয়াতঃ 093.005
আপনার পালনকর্তা সত্বরই আপনাকে দান করবেন, অতঃপর আপনি সন্তুষ্ট হবেন।
And verily, your Lord will give you (all i.e. good) so that you shall be well-pleased.