আয়াতঃ 070.018
সম্পদ পুঞ্জীভূত করেছিল, অতঃপর আগলিয়ে রেখেছিল।
And collect (wealth) and hide it (from spending it in the Cause of Allâh).
وَجَمَعَ فَأَوْعَى
WajamaAAa faawAAa
YUSUFALI: And collect (wealth) and hide it (from use)!
PICKTHAL: And hoarded (wealth) and withheld it.
SHAKIR: And amasses (wealth) then shuts it up.
KHALIFA: Those who hoarded and counted.
১৭। যারা [ সত্যের প্রতি ] পৃষ্ঠপ্রদর্শন করেছিলো, ৫৬৮৭, এবং মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলো, তাদের [ সকলকে জাহান্নাম ] আমন্ত্রণ জানাবে।
১৮। যারা [ সম্পদ ] পুঞ্জিভূত করেছে এবং [ ব্যবহার না করে ] সংরক্ষিত রেখেছে !
৫৬৮৭। পাপের বিশ্লেষণ করা হয়েছে চারটি প্রধান ভাগে। প্রথম দুটি হচ্ছে মনঃস্তাত্বিক, দ্বিতীয় দুটি হচ্ছে ভোগবিলাসের মাধ্যমে বা কর্মে। ১) মানুষের পাপের প্রথম শুরু হয় সত্যের প্রতি পৃষ্ঠ প্রদর্শনের মাধ্যমে। সত্যকে ন্যায়সম্মত পন্থায় স্বীকৃতি না দেওয়ার মাধ্যমে। অথবা সত্য ও ন্যায়ের প্রতি উদাসিনতা থেকে সৃষ্ট মানসিকতার জন্য অথবা অত্যাচারিত হওয়ার ভয়ে ন্যায় ও সত্য থেকে দূরে সরে থাকার কারণে। ২) মানুষ যখন মনঃস্তাত্বিকভাবে এরূপ বিভ্রান্তিতে আক্রান্ত হয়, তখন বিবেক এবং মানুষের অন্তরের মাঝে সত্যকে সনাক্ত করার যে স্বাভাবিক ক্ষমতা আছে, সেই ক্ষমতা ব্যক্তিকে সত্য পথে, ন্যায়ের পথে ধরে রাখতে প্রয়াস পায় এবং সত্য পথ তাকে সর্বদিক থেকে সৎ পথে, ন্যায়ের পথে ফিরে আসতে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু পুণঃ পুণঃ পাপের ফলে যাদের আত্মার উপরে কঠিন আবরণ পড়েছে তারা ইচ্ছাকৃত ভাবে “মুখ ফিরিয়ে রাখে “, অর্থাৎ ইচছাকৃত ভাবে সত্যকে প্রত্যাখান করে থাকে, সত্যকে অপমানিত করে থাকে। ৩) তাদের এই দ্বিবিধ মনঃস্তাত্বিক কারণে তাদের মনোজগতে যে পরিবর্তন সাধিত হবে তার ফলে তারা লোভ লালসার নিকট আত্মসমর্পনে বাধ্য হবে। তারা সম্পদের লোভে সম্পদের পাহাড় গড়ার কাজে আত্মনিবেদন করবে। পার্থিব যে সব সুযোগ সুবিধা, ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি তার প্রাপ্য নয় সে সব লাভ করার জন্য সে প্রাণাপাত করবে। এ সব লাভ করার জন্য সে ন্যায় অন্যায়ের সীমারেখা মান্য করবে না। সে প্রতারণা, মোনাফেকী এবং অপরাধের আশ্রয় গ্রহণে দ্বিধা বোধ করবে না। ৪) এসবের মাধ্যমে সে যখন পার্থিব সম্পদ, সুযোগ সুবিধা ও প্রভাব প্রতিপত্তি লাভ করে থাকে; তার পরবর্তী পদক্ষেপ হবে, সে এগুলি চিরদিন কুক্ষিগত করে রাখার প্রয়াস চালাবে এবং অন্যকে তা থেকে বঞ্চিত করাই হবে তার একমাত্র উদ্দেশ্য। তাঁর সঞ্চিত অর্থে যাতে অন্যের অধিকার না থাকে, অপরের বিদ্বেষ থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য সে থাকবে সদা সচেষ্ট। তার অর্ন্তজগত এ ভাবেই পার্থিব পাপের চিন্তায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়বে। যার ফলে তার আধ্যাত্মিক জগত সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে।
আয়াতঃ 070.019
মানুষ তো সৃজিত হয়েছে ভীরুরূপে।
Verily, man (disbeliever) was created very impatient;
إِنَّ الْإِنسَانَ خُلِقَ هَلُوعًا
Inna al-insana khuliqa halooAAan
YUSUFALI: Truly man was created very impatient;-
PICKTHAL: Lo! man was created anxious,
SHAKIR: Surely man is created of a hasty temperament
KHALIFA: Indeed, the human being is anxious.
১৯। মানুষকে তো সৃষ্টি করা হয়েছে অতিশয় অস্থির চিত্ত করে ; ৫৬৮৮
৫৬৮৮। সূরা [ ৯৫ : ৪ ] আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে যে, ” আমি তো সৃষ্টি করিয়াছি মানুষকে সুন্দরতম গঠনে। ” মানব সন্তানের জন্য মহত্তর ও উচ্চতর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সে কারণেই তাঁকে দান করা হয়েছে “সীমিত আকারে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি ;” যা আর কোনও প্রাণীকে দান করা হয় নাই। এই ইচ্ছাশক্তির সঠিক ব্যবহারে মানুষ দেবত্বে উন্নীত হয় এবং এর অপব্যবহারে মানুষ পশুতে পরিণত হয়। তার চরিত্র রীপুর দাসে পরিণত হয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে সে হয়ে পড়ে দুর্বল [ ৪ : ২৮ ], ত্বরাপ্রিয় [ ১৭ : ১১ ] ও অস্থির বা অধৈর্য [ ৭০ : ১৯ ] মানুষকে এ ভাবেই সৃষ্টি করা হয়েছে, কারণ আল্লাহ্ এসব দুর্বলতা অতিক্রম করার ক্ষমতা তাঁকে দান করেছেন। মানুষ তাঁর কর্ম দ্বারা এ সব দুর্বলতা অতিক্রম করতে সক্ষম অথবা এ সব দুর্বলতা দ্বারা পশুত্বে উপণীত হতেও সক্ষম।
আয়াতঃ 070.020
যখন তাকে অনিষ্ট স্পর্শ করে, তখন সে হা-হুতাশ করে।
Irritable (discontented) when evil touches him;
إِذَا مَسَّهُ الشَّرُّ جَزُوعًا
Itha massahu alshsharru jazooAAan
YUSUFALI: Fretful when evil touches him;
PICKTHAL: Fretful when evil befalleth him
SHAKIR: Being greatly grieved when evil afflicts him
KHALIFA: If touched by adversity, despondent.
২০। যখন বিপদ তাকে স্পর্শ করে সে হয় হা-হুতাশকারী।
২১। আর যখন কল্যাণ স্পর্শ করে সে হয় অতি কৃপণ ; ৫৬৮৯
৫৬৮৯। যখন মানুষকে বিপদ বিপর্যয় স্পর্শ করে, মানুষের স্বাভাবিক ধর্ম হচ্ছে সে হতাশ হয়ে পড়ে ও সর্বদা আল্লাহ্র বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে থাকে। আবার যখন সম্পদে, ক্ষমতায়, প্রভাবে সে হয় সমৃদ্ধ সে হয়ে পড়ে উদ্ধত, গর্বিত ও অহংকারী। নিজের শক্তিতে তার এতটাই প্রত্যয় জন্মে যে, সে অপর লোকের অধিকারকে তুচ্ছ জ্ঞান করে, অন্যের অধিকারের ব্যাপারে সে হয় অত্যন্ত কৃপণ এবং নিজেকে সকল দোষ ত্রুটির উর্দ্ধে কল্পনা করে থাকে। মানুষের চরিত্রের এই বিশেষ বৈশিষ্ট্য যা সার্বজনীন এবং যুগ কাল অতিক্রান্ত।