- সূরার নাম: সূরা আনকাবুত
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা আনকাবুত
আয়াতঃ 029.001
আলিফ-লাম-মীম।
AlifLâmMîm. [These letters are one of the miracles of the Qur’ân, and none but Allâh (Alone) knows their meanings.]
الم
Alif-lam-meem
YUSUFALI: A.L.M.
PICKTHAL: Alif. Lam. Mim.
SHAKIR: Alif Lam Mim.
KHALIFA: A. L. M.
০১। আলিফ-লাম-মীম ৩৪২২।
৩৪২২। বাইরের সংগ্রামী পৃথিবীতে মানুষের কর্মপদ্ধতির সাথে অন্তরের চিন্তা ভাবনার যে বৈষম্য তাকেই উপলব্ধি করতে বলা হয়েছে এই সূরাতে এবং আল্লাহ্র সত্যকে প্রতিষ্ঠার জন্য পূণ্যাত্মাদের অতীতের সংগ্রাম থেকে শিক্ষা নিতে বলা হয়েছে। এবং উপলব্ধি করতে বলা হয়েছে যে, পাপের পরিবেশের প্রতিরোধের বিরুদ্ধে তাদের সংগ্রাম করতে এবং চিন্তা করতে বলা হয়েছে Ma’ad সম্বন্ধে। অর্থাৎ মানুষের জীবনের শেষ পরিণতি বা ভবিষ্যত পরিণতি বা পরকাল সম্বন্ধে।
আয়াতঃ 029.002
মানুষ কি মনে করে যে, তারা একথা বলেই অব্যাহতি পেয়ে যাবে যে, আমরা বিশ্বাস করি এবং তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না?
Do people think that they will be left alone because they say: ”We believe,” and will not be tested.
أَحَسِبَ النَّاسُ أَن يُتْرَكُوا أَن يَقُولُوا آمَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُونَ
Ahasiba alnnasu an yutrakoo an yaqooloo amanna wahum la yuftanoona
YUSUFALI: Do men think that they will be left alone on saying, “We believe”, and that they will not be tested?
PICKTHAL: Do men imagine that they will be left (at ease) because they say, We believe, and will not be tested with affliction?
SHAKIR: Do men think that they will be left alone on saying, We believe, and not be tried?
KHALIFA: Do the people think that they will be left to say, “We believe,” without being put to the test?
০২। মানুষ কি মনে করে যে, ” আমরা ঈমান এনেছি ” – এ কথা বললেই তাদের অব্যহতি দেয়া হবে ৩৪২৩। এবং তাদের কোন পরীক্ষা নেয়া হবে না ?
৩৪২৩। ‘Lip profession’ বা শুধু কথার কথা। যে কথার সাথে চিন্তা বা কার্য পদ্ধতির কোনও মিল নাই। যদি কেউ নিজেকে মৌখিক ভাবে ঈমানদার দাবী করে, তবে তাঁর ঈমানের মানদণ্ড আল্লাহ্র নিকট পরীক্ষিত হতে হবে। পৃথিবীর সকল কিছুই সেই সর্বশক্তিমানের নিয়ন্ত্রণে। আল্লাহ্র আইন ভঙ্গ করার ক্ষমতা এই পৃথিবীতে কারও নাই। শুধু মানুষকে আল্লাহ্ “সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি ” দান করেছেন। ইচ্ছা করলে সে ভালোকে গ্রহণ ও মন্দকে বর্জন করতে পারে অথবা মন্দকে গ্রহণ ও ভালোকে বর্জন করতে পারে। এই স্বাধীন ইচ্ছা শক্তিকে সে কিভাবে ব্যবহার করেছে পৃথিবীতে , সৎপথে না বিপথে , তারই হিসাব হবে পরলোকে। মানুষের বিশ্বাস বা ঈমানকেও সর্বশক্তিমান যাচাই করে নেবেন , বিপদ বিপর্যয়ের পরীক্ষার মাধ্যমে। ব্যক্তিগত জীবনে সকল পরিবেশে , সকল অবস্থায় , দুঃখে , সুখে যে শুধুমাত্র আল্লাহ্র উপরে নির্ভর করতে পারে , সেই তো সফলকাম ভাবে উত্তীর্ণ হয়। দুঃখের অমানিশা ,বিপদ , বিপর্যয়ের কালো মেঘ যখন আমাদের সর্ব অস্তিত্বকে ঘিরে ধরে, তখনও যে আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে নিঃশর্ত ভাবে আত্মসমর্পন করে, আল্লাহ্র মঙ্গল ইচ্ছার উপরে নির্ভর করে বিপদ উত্তীর্ণ হওয়ার চেষ্টা করে, আল্লাহকে সবার উপরে স্থান দেয়, সেই তো পারে অবিচলিতভাবে , ধৈর্য্য ও অধ্যাবসায়ের সাথে, বিপদের ঝঞ্জা বিক্ষুব্ধ সমুদ্র পাড়ি দিতে, বিপদকে মোকাবিলা করতে।
বিপর্যয়ের, বিপদের সাগর পাড়ি দিতে আমাদের দুঃখ, ব্যথা ও আত্মত্যাগের প্রয়োজন হয় ঠিকই, কিন্তু এ সবের মাধ্যমে আল্লাহ্ আমাদের আত্মিক ভাবে পরিশুদ্ধ করেন, চরিত্রের গুণাবলীকে উন্নত করেন। বিপদকে অবিচলভাবে মোকাবিলার মাধ্যমে চরিত্রে ধৈর্য্য, সাহস, অধ্যবসায়ের জন্ম নেয়। দুঃখের আগুনে পুড়ে চরিত্র খাঁটি সোনাতে রূপান্তরিত হয় – যেভাবে স্বর্ণকার আগুনে পুড়িয়ে সোনাকে খাঁটি করে।শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক ভাবে ধর্ম পালনের মাধ্যমে মোমেন বান্দা হওয়া যায় না। এই আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেন বিভিন্ন্ ঘটনার প্রেক্ষাপটে বান্দার স্ব-ইচ্ছায় আল্লাহ্র উপরে নির্ভরশীলতাকে পরীক্ষা করা হবে, কে স্ব-ইচ্ছায় আল্লাহ্র কাছে আত্মসমর্পন করে। আল্লাহ্র উপরে নির্ভরশীলতা নির্ভর করে মানুষের ” সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি ” প্রয়োগের উপরে। দেখুন টিকা ৪৮১ ও আয়াত [ ৩ : ১৭৯ ]।
আয়াতঃ 029.003
আমি তাদেরকেও পরীক্ষা করেছি, যারা তাদের পূর্বে ছিল। আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন যারা সত্যবাদী এবং নিশ্চয়ই জেনে নেবেন মিথ্যুকদেরকে।
And We indeed tested those who were before them. And Allâh will certainly make (it) known (the truth of) those who are true, and will certainly make (it) known (the falsehood of) those who are liars, (although Allâh knows all that before putting them to test).
وَلَقَدْ فَتَنَّا الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَلَيَعْلَمَنَّ اللَّهُ الَّذِينَ صَدَقُوا وَلَيَعْلَمَنَّ الْكَاذِبِينَ
Walaqad fatanna allatheena min qablihim falayaAAlamanna Allahu allatheena sadaqoo walayaAAlamanna alkathibeena
YUSUFALI: We did test those before them, and Allah will certainly know those who are true from those who are false.
PICKTHAL: Lo! We tested those who were before you. Thus Allah knoweth those who are sincere, and knoweth those who feign.
SHAKIR: And certainly We tried those before them, so Allah will certainly know those who are true and He will certainly know the liars.
KHALIFA: We have tested those before them, for GOD must distinguish those who are truthful, and He must expose the liars.
০৩। আমি তো এদের পূর্ববর্তীদের পরীক্ষা করেছিলাম এবং অবশ্যই জেনে নেবো কারা সত্যবাদী কারা মিথ্যাবাদী ৩৪২৪।
৩৪২৪। দেখুন টিকা ৪৬৭ ও আয়াত [ ৩ : ১৫৪ ]। আল্লাহ্র পরীক্ষার উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাদের চরিত্রের দোষত্রুটি দূর করে আত্মিক পরিশুদ্ধ করা।
আয়াতঃ 029.004
যারা মন্দ কাজ করে, তারা কি মনে করে যে, তারা আমার হাত থেকে বেঁচে যাবে? তাদের ফয়সালা খুবই মন্দ।
Or those who do evil deeds think that they can outstrip Us (i.e. escape Our Punishment)? Evil is that which they judge!
أَمْ حَسِبَ الَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ أَن يَسْبِقُونَا سَاء مَا يَحْكُمُونَ
Am hasiba allatheena yaAAmaloona alssayyi-ati an yasbiqoona saa ma yahkumoona
YUSUFALI: Do those who practise evil think that they will get the better of Us? Evil is their judgment!
PICKTHAL: Or do those who do ill-deeds imagine that they can outstrip Us? Evil (for them) is that which they decide.
SHAKIR: Or do they who work evil think that they will escape Us? Evil is it that they judge!
KHALIFA: Do those who commit sins think that they can ever fool us? Wrong indeed is their judgment.
০৪। যারা পাপ কাজ করে তারা কি মনে করে যে, তারা আমার আয়ত্বের বাইরে চলে যাবে ? তাদের বিচার বিবেচনা কত মন্দ ৩৪২৫।
৩৪২৫। যারা সত্যের বিরোধিতা করে, মন্দ কর্ম করে, তারা কি মনে করে তারা আল্লাহ্র সত্যকে ধ্বংস করতে পারবে ? এরা নিতান্তই নির্বোধ। অনেক সময়ে তাদের অত্যাচার নির্যাতন বিপরীতভাবে কাজ করে। তাদের কর্মের ফলে মানুষের হৃদয়ের সত্যের প্রতি, ন্যায়ের প্রতি তীব্র আকাঙ্খা জন্মে , এবং অত্যাচারীর প্রতি ঘৃণা জন্মে।
আয়াতঃ 029.005
যে আল্লাহর সাক্ষাত কামনা করে, আল্লাহর সেই নির্ধারিত কাল অবশ্যই আসবে। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।
Whoever hopes for the Meeting with Allâh, then Allâh’s Term is surely coming. and He is the All-Hearer, the All-Knower.
مَن كَانَ يَرْجُو لِقَاء اللَّهِ فَإِنَّ أَجَلَ اللَّهِ لَآتٍ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
Man kana yarjoo liqaa Allahi fa-inna ajala Allahi laatin wahuwa alssameeAAu alAAaleemu
YUSUFALI: For those whose hopes are in the meeting with Allah (in the Hereafter, let them strive); for the term (appointed) by Allah is surely coming and He hears and knows (all things).
PICKTHAL: Whoso looketh forward to the meeting with Allah (let him know that) Allah’s reckoning is surely nigh, and He is the Hearer, the Knower.
SHAKIR: Whoever hopes to meet Allah, the term appointed by Allah will then most surely come; and He is the Hearing, the Knowing.
KHALIFA: Anyone hoping to meet GOD, (should know that) such a meeting with GOD will most assuredly come to pass. He is the Hearer, the Omniscient.
০৫। যাদের আকাঙ্খা [ পরলোকে ] আল্লাহ্র সাথে সাক্ষাত লাভ করা ৩৪২৬, [ তাদের সেজন্য চেষ্টা করতে দাও ]। কেননা আল্লাহ্র [নির্ধারিত ] কাল আসবেই। তিনি সব কিছু শোনেন এবং জানেন ৩৪২৭।
৩৪২৬। মোমেন বান্দার নিকট আল্লাহ্র সান্নিধ্য সর্বোচ্চ স্থান লাভ করে। তাদের আকাঙ্খা হচ্ছে আল্লাহ্কে পাওয়া, তাদের লক্ষ্য হচ্ছে পরকালে আল্লাহ্র দর্শন লাভ। এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সফল করার জন্য এই পৃথিবীতে তারা প্রাণপনে চেষ্টা করেন, আল্লাহ্র কাজে জীবন উৎসর্গ করেন। পৃথিবীর জীবন অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত “শিক্ষানবীশকাল ” পরকালের জন্য। এই ” শিক্ষানবীশকাল ” খুব দ্রুত শেষ হয়ে যায়।
৩৪২৭। ‘Ajal’ শব্দটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে :
১) মৃত্যুর জন্য নির্ধারিত সময়। যে সময়ে পৃথিবীর মেয়াদ বা পরকালের জন্য শিক্ষানবীশকালের মধ্যে সমাপ্তি হয়।
২) জীবনের জন্য যে মেয়াদকে ধার্য করা হয়েছে। এই সময়ে আমরা যেনো পরকালের জন্য প্রস্তুত হতে পারি। কারণ খুব শীঘ্র এই সময় শেষ হয়ে যাবে। উভয় ক্ষেত্রেই শেষ পর্যন্ত অর্থ একই থাকে। এই সংক্ষিপ্ত জীবনে পরলোকের জীবনের সাফল্যের জন্য আমাদের প্রতি মূহুর্তে প্রাণপণে চেষ্টা করে যেতে হবে, ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষা করা চলবে না।
আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। আমাদের সকল প্রার্থনা তিনি শোনেন। আমাদের না বলা কথা অথবা কর্মের নিয়ত বা উদ্দেশ্য , ভালোই হোক বা মন্দই হোক আল্লাহ্র কাছে কিছুই গোপন থাকে না। ব্যক্ত বা অব্যক্ত মনের সকল প্রকাশ ও চিন্তা আমাদের আধ্যাত্মিক পরিবর্তনে সাহায্য করে।
আয়াতঃ 029.006
যে কষ্ট স্বীকার করে, সে তো নিজের জন্যেই কষ্ট স্বীকার করে। আল্লাহ বিশ্ববাসী থেকে বে-পরওয়া।
And whosoever strives, he strives only for himself. Verily, Allâh is free of all wants from the ’Alamîn (mankind, jinns, and all that exists).
وَمَن جَاهَدَ فَإِنَّمَا يُجَاهِدُ لِنَفْسِهِ إِنَّ اللَّهَ لَغَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِينَ
Waman jahada fa-innama yujahidu linafsihi inna Allaha laghaniyyun AAani alAAalameena
YUSUFALI: And if any strive (with might and main), they do so for their own souls: for Allah is free of all needs from all creation.
PICKTHAL: And whosoever striveth, striveth only for himself, for lo! Allah is altogether Independent of (His) creatures.
SHAKIR: And whoever strives hard, he strives only for his own soul; most surely Allah is Self-sufficient, above (need of) the worlds.
KHALIFA: Those who strive, strive for their own good. GOD is in no need of anyone.
০৬। এবং যে [আল্লাহ্র কাজে সর্বশক্তি দিয়ে ] সংগ্রাম করে সে তা নিজের আত্মার [ কল্যাণের ] জন্য করে ৩৪২৮। অবশ্যই আল্লাহ্ সকল সৃষ্ট বস্তু থেকে অভাবমুক্ত।
৩৪২৮। সৎ কাজের সকল চেষ্টা আমাদের নিজেদের আত্মিক উপকারের জন্য। যখন আমরা আল্লাহ্র সেবার জন্য সৎ কাজ করি বা জনসেবামূলক কাজ করি , তাতে আল্লাহ্র কোন উপকার নাই। কারণ আল্লাহ্ অভাবমুক্ত। তাঁর সৃষ্ট পদার্থের তিনি মুখাপেক্ষী নন। উপকার যা তা হচ্ছে আমাদের আধ্যাত্মিক উন্নতি। আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পনের মাধ্যমে আমরা আমাদের নিজেদের আত্মিক কল্যাণের জন্য কাজ করি। যদি আমরা মন্দ কাজে নিজেদের নিয়োজিত করি, তবে তার দ্বারা আমরা আল্লাহ্র কোনও ক্ষতি সাধন করতে পারবো না। আমরা তার দ্বারা শুধু নিজেরই ক্ষতি সাধন করবো।
আয়াতঃ 029.007
আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আমি অবশ্যই তাদের মন্দ কাজ গুলো মিটিয়ে দেব এবং তাদেরকে কর্মের উৎকৃষ্টতর প্রতিদান দেব।
Those who believe [in the Oneness of Allâh (Monotheism) and in Messenger Muhammad SAW , and do not apostate because of the harm they receive from the polytheists], and do righteous good deeds, surely, We shall remit from them their evil deeds and shall reward them according to the best of that which they used to do.
وَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَنُكَفِّرَنَّ عَنْهُمْ سَيِّئَاتِهِمْ وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَحْسَنَ الَّذِي كَانُوا يَعْمَلُونَ
Waallatheena amanoo waAAamiloo alssalihati lanukaffiranna AAanhum sayyi-atihim walanajziyannahum ahsana allathee kanoo yaAAmaloona
YUSUFALI: Those who believe and work righteous deeds,- from them shall We blot out all evil (that may be) in them, and We shall reward them according to the best of their deeds.
PICKTHAL: And as for those who believe and do good works, We shall remit from them their evil deeds and shall repay them the best that they did.
SHAKIR: And (as for) those who believe and do good, We will most certainly do away with their evil deeds and We will most certainly reward them the best of what they did.
KHALIFA: Those who believe and lead a righteous life, we will certainly remit their sins, and will certainly reward them generously for their righteous works.
০৭। যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে , আমি অবশ্যই তাদের থেকে তাদের মন্দ [ দোষগুলি ] দূর করে দেবো ৩৪২৯। আমি অবশ্যই তাদের কাজের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট পুরষ্কার প্রদান করবো।
৩৪২৯। যারা তাদের বিশ্বাস বা ঈমানকেএবং জীবনকে পবিত্র করার মানসে চেষ্টা করে , আল্লাহ্ তাদের অতীতের মন্দ কাজের পরিণতি ক্ষমা করে দেবেন। আমাদের ভবিষ্যতকে সুন্দর ও সাফল্যমন্ডিত করে দেবেন যা আমাদের সীমিত কর্মফলের থেকে বহুগুণ বেশী। আমাদের পাপের জন্য ক্ষমা লাভ করা আল্লাহ্র দয়া ও করুণা। এতে আমাদের নিজেদের কোনও কৃতিত্ব নাই।
আয়াতঃ 029.008
আমি মানুষকে পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার জোর নির্দেশ দিয়েছি। যদি তারা তোমাকে আমার সাথে এমন কিছু শরীক করার জোর প্রচেষ্টা চালায়, যার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তবে তাদের আনুগত্য করো না। আমারই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর আমি তোমাদেরকে বলে দেব যা কিছু তোমরা করতে।
And We have enjoined on man to be good and dutiful to his parents, but if they strive to make you join with Me (in worship) anything (as a partner) of which you have no knowledge, then obey them not. Unto Me is your return, and I shall tell you what you used to do.
وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ حُسْنًا وَإِن جَاهَدَاكَ لِتُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
Wawassayna al-insana biwalidayhi husnan wa-in jahadaka litushrika bee ma laysa laka bihi AAilmun fala tutiAAhuma ilayya marjiAAukum faonabbi-okum bima kuntum taAAmaloona
YUSUFALI: We have enjoined on man kindness to parents: but if they (either of them) strive (to force) thee to join with Me (in worship) anything of which thou hast no knowledge, obey them not. Ye have (all) to return to me, and I will tell you (the truth) of all that ye did.
PICKTHAL: We have enjoined on man kindness to parents; but if they strive to make thee join with Me that of which thou hast no knowledge, then obey them not. Unto Me is your return and I shall tell you what ye used to do.
SHAKIR: And We have enjoined on man goodness to his parents, and if they contend with you that you should associate (others) with Me, of which you have no knowledge, do not obey them, to Me is your return, so I will inform you of what you did.
KHALIFA: We enjoined the human being to honor his parents. But if they try to force you to set up idols beside Me, do not obey them. To Me is your ultimate return, then I will inform you of everything you had done.
০৮। আমি মানুষকে নির্দ্দেশ দিয়েছি তার পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার করতে। কিন্তু যদি তারা [ তাদের প্রত্যেকে ] তোমাকে আমার সাথে [ এবাদতে ] শরীক করার জন্য জিদ্ [ এবং বল ] প্রয়োগ করে , যার সম্বন্ধে তোমার কোন জ্ঞান নাই , তবে তাদের সে কথা মান্য করো না ৩৪৩০। তোমাদের [সকলকে] আমার নিকট ফিরে আসতে হবে, এবং আমি তোমাদের জানিয়ে দেবো তোমরা যা করেছিলে তার [ সত্যতা ] ৩৪৩১।
৩৪৩০। আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনা এবং এক আল্লাহ্র উপাসনার ব্যাপারে পিতামাতার কোনও কর্তৃত্ব নাই। তারা এক আল্লাহ্ এবাদতে অবশ্যই বাধা সৃষ্টি করবে না। যদি করে তবে তা সন্তানেরা মানতে বাধ্য নয়।
৩৪৩১। শেষ বিচারের দিনে যখন সকলে বিচারের জন্য আল্লাহ্র সমীপে নীত হবে, তখন পৃথিবীর বিভিন্ন সম্পর্ক যেমন পিতামাতা ও সন্তান ,স্বামী-স্ত্রী ইত্যাদি কিছুই থাকবে না। প্রতিটি মানব সন্তান শুধুমাত্র তার কর্মের ফলাফলসহ অপেক্ষা করবে। প্রত্যেককেই প্রত্যেকের কাজের জবাবদিহিতার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। পৃথিবীতে একদল লোকের আইনের মাধ্যমে অন্যদলের উপরে প্রভুত্ব থাকতে পারে। যেমন পিতামাতার আছে তাদের সন্তানের উপরে। কিন্তু যদি বিশ্বাস বা ঈমানের ব্যাপারে তাদের মধ্যে মতদ্বৈত ঘটে, তবে সেক্ষেত্রে সন্তান পিতামাতার কর্তৃত্বকে অস্বীকার করতে পারে। পৃথিবীর মতদ্বৈততার কারণ শেষ বিচারের দিনে মিটে যাবে কারণ তখন চোখের সামনে প্রকৃত সত্যের রূপ ভাস্বর হবে।
আয়াতঃ 029.009
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকাজ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করব।
And for those who believe (in the Oneness of Allâh and other items of Faith) and do righteous good deeds, surely, We shall make them enter in (the enterance of) the righteous (i.e. in Paradise).
وَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَنُدْخِلَنَّهُمْ فِي الصَّالِحِينَ
Waallatheena amanoo waAAamiloo alssalihati lanudkhilannahum fee alssaliheena
YUSUFALI: And those who believe and work righteous deeds,- them shall We admit to the company of the Righteous.
PICKTHAL: And as for those who believe and do good works, We verily shall make them enter in among the righteous.
SHAKIR: And (as for) those who believe and do good, We will most surely cause them to enter among the good.
KHALIFA: Those who believe and lead a righteous life, we will certainly admit them with the righteous.
০৯। এবং যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাদের আমি পূণ্যাত্মাদের অর্ন্তভূক্ত করবো ৩৪৩২।
৩৪৩২। পূর্বের আয়াত নং ৭ এবং এই আয়াতের বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে একই ভাবে তবে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। পূর্বের [ ৭ ] আয়াতে বলা হয়েছে যে ঈমান ও সৎকর্ম আল্লাহ্র ক্ষমা ও করুণালাভের পূর্বশর্ত। এখানে বলা হয়েছে ঈমান ও সৎকর্ম পাপীদের পাপমুক্ত হয়ে পূণ্যাত্মাদের অন্তর্ভূক্তির পূর্বশর্ত।
আয়াতঃ 029.010
কতক লোক বলে, আমরা আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছি; কিন্তু আল্লাহর পথে যখন তারা নির্যাতিত হয়, তখন তারা মানুষের নির্যাতনকে আল্লাহর আযাবের মত মনে করে। যখন আপনার পালনকর্তার কাছ থেকে কোন সাহায্য আসে তখন তারা বলতে থাকে, আমরা তো তোমাদের সাথেই ছিলাম। বিশ্ববাসীর অন্তরে যা আছে, আল্লাহ কি তা সম্যক অবগত নন?
Of mankind are some who say: ”We believe in Allâh,” but if they are made to suffer for the sake of Allâh, they consider the trial of mankind as Allâh’s punishment, and if victory comes from your Lord, (the hypocrites) will say: ”Verily! We were with you (helping you).” Is not Allâh Best Aware of what is in the breast of the ’Alamîn (mankind and jinns).
وَمِنَ النَّاسِ مَن يَقُولُ آمَنَّا بِاللَّهِ فَإِذَا أُوذِيَ فِي اللَّهِ جَعَلَ فِتْنَةَ النَّاسِ كَعَذَابِ اللَّهِ وَلَئِن جَاء نَصْرٌ مِّن رَّبِّكَ لَيَقُولُنَّ إِنَّا كُنَّا مَعَكُمْ أَوَلَيْسَ اللَّهُ بِأَعْلَمَ بِمَا فِي صُدُورِ الْعَالَمِينَ
Wamina alnnasi man yaqoolu amanna biAllahi fa-itha oothiya fee Allahi jaAAala fitnata alnnasi kaAAathabi Allahi wala-in jaa nasrun min rabbika layaqoolunna inna kunna maAAakum awa laysa Allahu bi-aAAlama bima fee sudoori alAAalameena
YUSUFALI: Then there are among men such as say, “We believe in Allah”; but when they suffer affliction in (the cause of) Allah, they treat men’s oppression as if it were the Wrath of Allah! And if help comes (to thee) from thy Lord, they are sure to say, “We have (always) been with you!” Does not Allah know best all that is in the hearts of all creation?
PICKTHAL: Of mankind is he who saith: We believe in Allah, but, if he be made to suffer for the sake of Allah, he mistaketh the persecution of mankind for Allah’s punishment; and then, if victory cometh from thy Lord, will say: Lo! we were with you (all the while). Is not Allah Best Aware of what is in the bosoms of (His) creatures?
SHAKIR: And among men is he who says: We believe in Allah; but when he is persecuted in (the way of) Allah he thinks the persecution of men to be as the chastisement of Allah; and if there come assistance from your Lord, they would most certainly say: Surely we were with you. What! is not Allah the best knower of what is in the breasts of mankind.
KHALIFA: Among the people there are those who say, “We believe in GOD,” but as soon as they suffer any hardship because of GOD, they equate the people’s persecution with GOD’s retribution. But if blessings from your Lord come your way, they say, “We were with you.” Is GOD not fully aware of the people’s innermost thoughts?
১০। মানুষের মধ্যে কিছু লোক আছে যারা বলে, ” আমরা আল্লাহতে বিশ্বাস করি।” কিন্তু যখন তারা আল্লাহ্র পথে কষ্ট পায়, তারা মানুষের নিপীড়নকে আল্লাহ্র ক্রোধ রূপে গণ্য করে। যদি তোমার প্রভুর নিকট থেকে কোন সাহায্য আসে তারা নিশ্চয়ই বলবে, ৩৪৩৩” আমরা তো সর্বদা তোমাদের সাথেই ছিলাম”? সকল সৃষ্টির অন্তঃকরণে যা আছে আল্লাহ্ কি তা সম্যক অবগত নন ?
৩৪৩৩। দেখুন [৯ : ৫৬ ] আয়াত এবং এরূপ অন্যান্য আয়াত যেখানে মোনাফেকদের স্বরূপ উদ্ঘাটন করা হয়েছে। যে লোক বিপদ বা বিপর্যয়ে পড়লেই ঈমান বা বিশ্বাস থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, যে বিশ্বাসীদের সাথে বন্ধুত্ব করে শুধুমাত্র লাভের আশায় , এসব মোনাফেক দুভাবে নিন্দনীয়। প্রথমতঃ ঈমান ও সত্যকে প্রত্যাখান করার জন্য। দ্বিতীয়তঃ সে যাদের ঘৃণা করে তাদের একজন রূপে ভান করার জন্য। কিন্তু তারা কি জানে না আল্লাহ্র সকলের অন্তরের খবর অবগত।
আয়াতঃ 029.011
আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং নিশ্চয় জেনে নেবেন যারা মুনাফেক।
Verily, Allâh knows those who believe, and verily, He knows the hypocrites [i.e. Allâh will test the people with good and hard days to discriminate the good from the wicked (although Allâh knows all that before putting them to test)].
وَلَيَعْلَمَنَّ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا وَلَيَعْلَمَنَّ الْمُنَافِقِينَ
WalayaAAlamanna Allahu allatheena amanoo walayaAAlamanna almunafiqeena
YUSUFALI: And Allah most certainly knows those who believe, and as certainly those who are Hypocrites.
PICKTHAL: Verily Allah knoweth those who believe, and verily He knoweth the hypocrites.
SHAKIR: And most certainly Allah will know those who believe and most certainly He will know the hypocrites.
KHALIFA: GOD will most certainly distinguish those who believe, and He will most certainly expose the hypocrites.
১১। এবং অবশ্যই আল্লাহ্ নিশ্চয়ই জানেন কারা ঈমান আনে, এবং নিশ্চয়ই জানেন কারা মোনাফেক ৩৪৩৪।
৩৪৩৪। দেখুন উপরের আয়াত [২৯ : ৩ ]। সেখানে “অবশ্যই জেনে নেবো, কারা সত্যবাদী , কারা মিথ্যাবাদী।” কথাটি ছিলো সার্বজনীন অর্থে , এখানে ব্যবহার করা হয়েছে মোনাফেকদের প্রেক্ষাপটে। মোনাফেকেরা বিশ্বাসীদের ঘৃণা করে কিন্তু যখনই কিছু প্রাপ্তির আশা থাকে তখনই তারা বিশ্বাসীদের বন্ধুত্ব কামনা করে , পরের দুটো আয়াতে উপসংহার টানা হয়েছে।
আয়াতঃ 029.012
কাফেররা মুমিনদেরকে বলে, আমাদের পথ অনুসরণ কর। আমরা তোমাদের পাপভার বহন করব। অথচ তারা পাপভার কিছুতেই বহন করবে না। নিশ্চয় তারা মিথ্যাবাদী।
And those who disbelieve say to those who believe: ”Follow our way and we will verily bear your sins,” never will they bear anything of their sins. Surely, they are liars.
وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِلَّذِينَ آمَنُوا اتَّبِعُوا سَبِيلَنَا وَلْنَحْمِلْ خَطَايَاكُمْ وَمَا هُم بِحَامِلِينَ مِنْ خَطَايَاهُم مِّن شَيْءٍ إِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ
Waqala allatheena kafaroo lillatheena amanoo ittabiAAoo sabeelana walnahmil khatayakum wama hum bihamileena min khatayahum min shay-in innahum lakathiboona
YUSUFALI: And the Unbelievers say to those who believe: “Follow our path, and we will bear (the consequences) of your faults.” Never in the least will they bear their faults: in fact they are liars!
PICKTHAL: Those who disbelieve say unto those who believe: Follow our way (of religion) and we verily will bear your sins (for you). They cannot bear aught of their sins. Lo! they verily are liars.
SHAKIR: And those who disbelieve say to those who believe: Follow our path and we will bear your wrongs. And never shall they be the bearers of any of their wrongs; most surely they are liars.
KHALIFA: Those who disbelieved said to those who believed, “If you follow our way, we will be responsible for your sins.” Not true; they cannot bear any of their sins. They are liars.
১২। এবং কাফেররা বিশ্বাসীগণকে বলে, ” আমাদের পথ অনুসরণ কর, আমরা তোমাদের পাপের [পরিণাম] বহন করবো ৩৪৩৫। ” কিন্তু তারা তো তাদের পাপের [ ভার ] বহন করবে না। প্রকৃতপক্ষে তারা হচ্ছে মিথ্যাবাদী।
৩৪৩৫। এই আয়াতে মোনাফেক ব্যতীত অন্য আর এক দল লোকের কথা বলা হয়েছে ; যারা প্রকাশ্যে বিশ্বাসীদের ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করে থাকে। তারা বলে, ” আমাদের মত জীবন যাপন কর, আমরা তোমাদের পাপের ভার গ্রহণ করবো।” যেনো তারা সে ক্ষমতা রাখে। প্রতিটি আত্মাকে তার নিজস্ব কর্মফল ভোগ করতে হবে। প্রত্যেকের নিজের কর্মের দায়িত্ব নিজের। কেউ কারও দায়িত্ব বহন করবে না। এই হচ্ছে ইসলামের নীতি। এমন কি যাজক সম্প্রদায় বা আমাদের মৌলবী সম্প্রদায়ও এর বাইরে নয়। যদি একজন অন্যের পাপের বোঝা বহন করতে পারতো তবে তা হতো অন্যায় ও অবিচার। কিন্তু মহান আল্লাহ্ ন্যায় ও সত্যের প্রতীক।
আয়াতঃ 029.013
তারা নিজেদের পাপভার এবং তার সাথে আরও কিছু পাপভার বহন করবে। অবশ্য তারা যে সব মিথ্যা কথা উদ্ভাবন করে, সে সম্পর্কে কেয়ামতের দিন জিজ্ঞাসিত হবে।
And verily, they shall bear their own loads, and other loads besides their own, and verily, they shall be questioned on the Day of Resurrection about that which they used to fabricate.
وَلَيَحْمِلُنَّ أَثْقَالَهُمْ وَأَثْقَالًا مَّعَ أَثْقَالِهِمْ وَلَيُسْأَلُنَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَمَّا كَانُوا يَفْتَرُونَ
Walayahmilunna athqalahum waathqalan maAAa athqalihim walayus-alunna yawma alqiyamati AAamma kanoo yaftaroona
YUSUFALI: They will bear their own burdens, and (other) burdens along with their own, and on the Day of Judgments they will be called to account for their falsehoods.
PICKTHAL: But they verily will bear their own loads and other loads beside their own, and they verily will be questioned on the Day of Resurrection concerning that which they invented.
SHAKIR: And most certainly they shall carry their own burdens, and other burdens with their own burdens, and most certainly they shall be questioned on the resurrection day as to what they forged.
KHALIFA: In fact, they will carry their own sins, in addition to loads of other people’s sins for which they were responsible. Most certainly, they will be asked on the Day of Resurrection about their false claims.
১৩। তারা তাদের নিজেদের [ পাপের ] বোঝা বহন করবে, এবং নিজেদের সাথে [ অন্যদের ] বোঝাও ৩৪৩৬। এবং শেষ বিচারের দিনে , তাদের [ উদ্ভাবিত ] মিথ্যার হিসাব গ্রহণের জন্য ডাকা হবে।
৩৪৩৬। এ সব লোকেরা নিজেদের পাপের বোঝা বহন করবে এবং সেই সাথে যাদের পথভ্রান্ত করে প্রতারিত করেছে তাদের পাপের বোঝাও তাদের বহন করতে হবে – প্রতারিত করার দরুণ।
আয়াতঃ 029.014
আমি নূহ (আঃ) কে তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছিলাম। তিনি তাদের মধ্যে পঞ্চাশ কম এক হাজার বছর অবস্থান করেছিলেন। অতঃপর তাদেরকে মহাপ্লাবণ গ্রাস করেছিল। তারা ছিল পাপী।
And indeed We sent Nûh (Noah) to his people, and he stayed among them a thousand years less fifty years [inviting them to believe in the Oneness of Allâh (Monotheism), and discard the false gods and other deities], and the Deluge overtook them while they were Zâlimûn (wrong-doers, polytheists, disbelievers, etc.).
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوحًا إِلَى قَوْمِهِ فَلَبِثَ فِيهِمْ أَلْفَ سَنَةٍ إِلَّا خَمْسِينَ عَامًا فَأَخَذَهُمُ الطُّوفَانُ وَهُمْ ظَالِمُونَ
Walaqad arsalna noohan ila qawmihi falabitha feehim alfa sanatin illa khamseena AAaman faakhathahumu alttoofanu wahum thalimoona
YUSUFALI: We (once) sent Noah to his people, and he tarried among them a thousand years less fifty: but the Deluge overwhelmed them while they (persisted in) sin.
PICKTHAL: And verily we sent Noah (as Our messenger) unto his folk, and he continued with them for a thousand years save fifty years; and the flood engulfed them, for they were wrong-doers.
SHAKIR: And certainly We sent Nuh to his people, so he remained among them a thousand years save fifty years. And the deluge overtook them, while they were unjust.
KHALIFA: We sent Noah to his people, and he stayed with them one thousand years, less fifty. Subsequently, they incurred the flood because of their transgressions.
রুকু – ২
১৪। [একদা ] আমি নূহ্ কে তাঁর সম্প্রদায়ের নিকট প্রেরণ করেছিলাম। সে তাদের নিকট অবস্থান করেছিলো পঞ্চাশ কম হাজার বছর। অতঃপর প্লাবন তাদের নিমজ্জিত করেছিলো ,যখন তারা পাপের [মাঝে সর্বদা লিপ্ত ছিলো ] ৩৪৩৭।
৩৪৩৭। এই সূরাতে নূহ্ এর বন্যার কাহিনী বর্ণনা করা হয় নাই। সে কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে অন্য সূরাতে [১১: ২৫ – ৪৮ অথবা ২৬ : ১০৫- ২২]। এখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে, নূহ্ এর সময়কাল ছিলো অত্যন্ত দীর্ঘ তা ছিলো ৯৫০ বৎসর। [ Genix 28 -29 ] -এ উল্লেখ আছে যে নূহ্ জীবিত ছিলেন ৯৫০ বৎসর , তার মধ্যে ৩৫০ বৎসর ছিলো মহাপ্লাবনের পরে। দীর্ঘ সময়ের উল্লেখের কারণ হচ্ছে ,এই সূদীর্ঘ কালেও মন্দরা তাঁর হেদায়েত গ্রহণ করে নাই, তার ফলে তাদের আল্লাহ্ ধ্বংস করে দেন। নূহ্ এবং তাঁর নৌকা ও মহাপ্লাবনের কাহিনী মানুষের জন্য এক অমোঘ সর্তকবাণীর প্রতীক। এই কাহিনীর মাধ্যমে মানুষ জাতিকে সাবধান করা হয়েছে যে দুষ্কৃতিকারীকে আল্লাহ্ ধ্বংস করবেন এবং পূণ্যাত্মাদের আল্লাহ্ রক্ষা করবেন। বিশ্ব জগতের জন্য এ হচ্ছে যুগ কাল অতিক্রান্ত এক নিদর্শন।
আয়াতঃ 029.015
অতঃপর আমি তাঁকে ও নৌকারোহীগণকে রক্ষা করলাম এবং নৌকাকে নিদর্শন করলাম বিশ্ববাসীর জন্যে।
Then We saved him and those with him in the ship, and made it (the ship) as an Ayâh (a lesson, a warning, etc.) for the ’Alamîn (mankind, jinns and all that exists).
فَأَنجَيْنَاهُ وَأَصْحَابَ السَّفِينَةِ وَجَعَلْنَاهَا آيَةً لِّلْعَالَمِينَ
Faanjaynahu waas-haba alssafeenati wajaAAalnaha ayatan lilAAalameena
YUSUFALI: But We saved him and the companions of the Ark, and We made the (Ark) a Sign for all peoples!
PICKTHAL: And We rescued him and those with him in the ship, and made of it a portent for the peoples.
SHAKIR: So We delivered him and the inmates of the ark, and made it a sign to the nations.
KHALIFA: We saved him and those who accompanied him in the ark, and we set it up as a lesson for all the people.
১৫। কিন্তু আমি তাঁকে এবং নৌকায় যারা ছিলো , তাদের উদ্ধার করেছিলাম। এবং আমি বিশ্ববাসীর জন্য ইহাকে [নৌকাকে ] একটি নিদর্শন করেছিলাম।
১৬। এবং [ আমি রক্ষা করেছিলাম ] ইব্রাহীমকে। স্মরণ কর সে তাঁর সম্প্রদায়কে বলেছিলো , ” আল্লাহ্র এবাদত কর এবং তাঁকে ভয় কর। যদি তোমরা বুঝতে পার , তবে তাই-ই হবে সর্বোৎকৃষ্ট ৩৪৩৮।
৩৪৩৮। হযরত ইব্রাহীমের কাহিনী বিভিন্ন সূরাতে বর্ণনা করা হয়েছে। বর্তমান অংশের বর্ণনার সাথে প্রাসঙ্গিক যে সব সূরার অংশ সেগুলি হচ্ছে [ ২১ : ৫১- ৭২ ] ; যেখানে তাঁর আগুনে নিক্ষেপের এবং আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার ঘটনার বর্ণনা আছে। এবং সূরা [ ১৯ : ৪১ – ৪৯ ] আয়াত যেখানে বলা হয়েছে যে, তিনি পিতৃগৃহ থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে মাতৃভূমি ত্যাগ করেন। এই সূরাতে পূর্ববর্তী সূরার কাহিনীর পুণরাবৃত্তি করা হয় নাই, কিন্তু উল্লেখ করা হয়েছে নিম্নলিখিত বিষয়গুলির উপরে গুরুত্ব আরোপ করার জন্য :
১) ইব্রাহীমের সম্প্রদায় হেদায়েতের পরিবর্তে ইব্রাহীমকে পুড়িয়ে মারার জন্য ভীতি প্রদর্শন করে [ ২৯ : ১৬-১৮; ২৪ ]। ]
২) মন্দরা পরস্পর পরস্পরের সহগামী , কিন্তু পরলোকে তাদের নির্মম সত্যের মুখোমুখি হতে হবে [ ২৯ : ২৫ ]।
৩) ভালো সর্বদা ভালোর সহচার্য কামনা করে এবং আল্লাহ্র আশীর্বাদে ধন্য হয় [২৯ : ২৬ – ২৭ ]। লক্ষ্য করুন [ ২৯ : ১৯ – ২৩ ] আয়াতগুলি হযরত ইব্রাহীমের কাহিনী বর্ণনার মাঝে মন্তব্য স্বরূপ , যদি কোনও কোনও তফসীরকার মনে করে যে, এগুলি হযরত ইব্রাহীমের নিজস্ব বক্তব্য।
আয়াতঃ 029.016
স্মরণ কর ইব্রাহীমকে। যখন তিনি তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন; তোমরা আল্লাহর এবাদত কর এবং তাঁকে ভয় কর। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বোঝ।
And (remember) Ibrâhim (Abraham) when he said to his people: ”Worship Allâh (Alone), and fear Him, that is better for you if you did but know.
وَإِبْرَاهِيمَ إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاتَّقُوهُ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
Wa-ibraheema ith qala liqawmihi oAAbudoo Allaha waittaqoohu thalikum khayrun lakum in kuntum taAAlamoona
YUSUFALI: And (We also saved) Abraham: behold, he said to his people, “Serve Allah and fear Him: that will be best for you- If ye understand!
PICKTHAL: And Abraham! (Remember) when he said unto his folk: Serve Allah, and keep your duty unto Him; that is better for you if ye did but know.
SHAKIR: And (We sent) Ibrahim, when he said to his people: Serve Allah and be careful of (your duty to) Him; this is best for you, if you did but know:
KHALIFA: Abraham said to his people, “You shall worship GOD, and reverence Him. This is better for you, if you only knew.
১৫। কিন্তু আমি তাঁকে এবং নৌকায় যারা ছিলো , তাদের উদ্ধার করেছিলাম। এবং আমি বিশ্ববাসীর জন্য ইহাকে [নৌকাকে ] একটি নিদর্শন করেছিলাম।
১৬। এবং [ আমি রক্ষা করেছিলাম ] ইব্রাহীমকে। স্মরণ কর সে তাঁর সম্প্রদায়কে বলেছিলো , ” আল্লাহ্র এবাদত কর এবং তাঁকে ভয় কর। যদি তোমরা বুঝতে পার , তবে তাই-ই হবে সর্বোৎকৃষ্ট ৩৪৩৮।
৩৪৩৮। হযরত ইব্রাহীমের কাহিনী বিভিন্ন সূরাতে বর্ণনা করা হয়েছে। বর্তমান অংশের বর্ণনার সাথে প্রাসঙ্গিক যে সব সূরার অংশ সেগুলি হচ্ছে [ ২১ : ৫১- ৭২ ] ; যেখানে তাঁর আগুনে নিক্ষেপের এবং আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার ঘটনার বর্ণনা আছে। এবং সূরা [ ১৯ : ৪১ – ৪৯ ] আয়াত যেখানে বলা হয়েছে যে, তিনি পিতৃগৃহ থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে মাতৃভূমি ত্যাগ করেন। এই সূরাতে পূর্ববর্তী সূরার কাহিনীর পুণরাবৃত্তি করা হয় নাই, কিন্তু উল্লেখ করা হয়েছে নিম্নলিখিত বিষয়গুলির উপরে গুরুত্ব আরোপ করার জন্য :
১) ইব্রাহীমের সম্প্রদায় হেদায়েতের পরিবর্তে ইব্রাহীমকে পুড়িয়ে মারার জন্য ভীতি প্রদর্শন করে [ ২৯ : ১৬-১৮; ২৪ ]। ]
২) মন্দরা পরস্পর পরস্পরের সহগামী , কিন্তু পরলোকে তাদের নির্মম সত্যের মুখোমুখি হতে হবে [ ২৯ : ২৫ ]।
৩) ভালো সর্বদা ভালোর সহচার্য কামনা করে এবং আল্লাহ্র আশীর্বাদে ধন্য হয় [২৯ : ২৬ – ২৭ ]। লক্ষ্য করুন [ ২৯ : ১৯ – ২৩ ] আয়াতগুলি হযরত ইব্রাহীমের কাহিনী বর্ণনার মাঝে মন্তব্য স্বরূপ , যদি কোনও কোনও তফসীরকার মনে করে যে, এগুলি হযরত ইব্রাহীমের নিজস্ব বক্তব্য।
আয়াতঃ 029.017
তোমরা তো আল্লাহর পরিবর্তে কেবল প্রতিমারই পূজা করছ এবং মিথ্যা উদ্ভাবন করছ। তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের এবাদত করছ, তারা তোমাদের রিযিকের মালিক নয়। কাজেই আল্লাহর কাছে রিযিক তালাশ কর, তাঁর এবাদত কর এবং তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। তাঁরই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।
”You worship besides Allâh only idols, and you only invent falsehood. Verily, those whom you worship besides Allâh have no power to give you provision, so seek your provision from Allâh (Alone), and worship Him (Alone), and be grateful to Him. To Him (Alone) you will be brought back.
إِنَّمَا تَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ أَوْثَانًا وَتَخْلُقُونَ إِفْكًا إِنَّ الَّذِينَ تَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ لَا يَمْلِكُونَ لَكُمْ رِزْقًا فَابْتَغُوا عِندَ اللَّهِ الرِّزْقَ وَاعْبُدُوهُ وَاشْكُرُوا لَهُ إِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
Innama taAAbudoona min dooni Allahi awthanan watakhluqoona ifkan inna allatheena taAAbudoona min dooni Allahi la yamlikoona lakum rizqan faibtaghoo AAinda Allahi alrrizqa waoAAbudoohu waoshkuroo lahu ilayhi turjaAAoona
YUSUFALI: “For ye do worship idols besides Allah, and ye invent falsehood. The things that ye worship besides Allah have no power to give you sustenance: then seek ye sustenance from Allah, serve Him, and be grateful to Him: to Him will be your return.
PICKTHAL: Ye serve instead of Allah only idols, and ye only invent a lie. Lo! those whom ye serve instead of Allah own no provision for you. So seek your provision from Allah, and serve Him, and give thanks unto Him, (for) unto Him ye will be brought back.
SHAKIR: You only worship idols besides Allah and you create a lie surely they whom you serve besides Allah do not control for you any sustenance, therefore seek the sustenance from Allah and serve Him and be grateful to Him; to Him you shall be brought back.
KHALIFA: “What you worship instead of GOD are powerless idols; you have invented a lie.” The idols you worship beside GOD do not possess any provisions for you. Therefore, you shall seek provisions only from GOD. You shall worship Him alone, and be appreciative of Him; to Him is your ultimate return.
১৭। ” তোমরা আল্লাহ্কে ছেড়ে মূর্তি পূঁজা করছো এবং তোমরা মিথ্যার উদ্ভাবন করছো। তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে যাদের পূঁজা করছো , তোমাদের জীবনোপকরণ দেয়ার ব্যাপারে তাদের কোনও ক্ষমতা নাই। সুতারাং তোমরা আল্লাহ্র নিকট জীবনোপকরণ অনুসন্ধান কর ৩৪৩৯। তাঁর এবাদত কর এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হও। তাঁর কাছেই হবে তোমাদের সকলের প্রত্যাবর্তন।
৩৪৩৯। ” জীবনোপকরণ’ শব্দটির আক্ষরিক ও প্রতীকধর্মী অর্থ বিদ্যমান। আল্লাহ্র নিকট জীবনোপকরণ চাইতে বলা হয়েছে। এই জীবনোপকরণ হবে জাগতিক ও আধ্যাত্মিক সকল সমৃদ্ধির উৎস। জাগতিক জীবনোপকরণ জাগতিক সুখ ও সমৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন, আবার আধ্যাত্মিক জীবনোপকরণ পরলোকের সুখ ও শান্তির জন্য প্রয়োজন। ইব্রাহীমের আবেদন নিম্নরূপ : সকল আশা আকাঙ্খা একমাত্র আল্লাহকেই নিবেদন কর, তিনি তোমাকে তোমার সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য যা প্রয়োজন তা দান করবেন। সুতারাং তোমরা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পনই হবে বান্দার কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা।
আয়াতঃ 029.018
তোমরা যদি মিথ্যাবাদী বল, তবে তোমাদের পূর্ববর্তীরাও তো মিথ্যাবাদী বলেছে। স্পষ্টভাবে পয়গাম পৌছে দেয়াই তো রসূলের দায়িত্ব।
”And if you deny, then nations before you have denied (their Messengers). And the duty of the Messenger is only to convey (the Message) plainly.”
وَإِن تُكَذِّبُوا فَقَدْ كَذَّبَ أُمَمٌ مِّن قَبْلِكُمْ وَمَا عَلَى الرَّسُولِ إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ
Wa-in tukaththiboo faqad kaththaba omamun min qablikum wama AAala alrrasooli illa albalaghu almubeenu
YUSUFALI: “And if ye reject (the Message), so did generations before you: and the duty of the messenger is only to preach publicly (and clearly).”
PICKTHAL: But if ye deny, then nations have denied before you. The messenger is only to convey (the message) plainly.
SHAKIR: And if you reject (the truth), nations before you did indeed reject (the truth); and nothing is incumbent on the messenger but a plain delivering (of the message).
KHALIFA: If you disbelieve, generations before you have also disbelieved. The sole function of the messenger is to deliver (the message).
১৮। ” এবং যদি তোমরা [ সত্যধর্মকে ] প্রত্যাখান কর , যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম করেছিলো ; [ তাহলে] রাসুলের কর্তব্য তো শুধু প্রকাশ্যে [ সুস্পষ্টরূপে আল্লাহ্র বাণী ] প্রচার করা।”
১৯। তারা কি দেখে না কি ভাবে আল্লাহ্ সৃষ্টিকে প্রথমে আরম্ভ করেন ; তারপরে তার পুণরাবৃত্তি করেন। আল্লাহ্র পক্ষে সত্যিই তা খুব সহজ ৩৪৪০।
৩৪৪০। অন্তহীন মহাবিশ্বের সৃষ্টি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে অনাদি যুগ থেকে অণু পরামাণুর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে। সৃষ্টির এই প্রক্রিয়া কখনও থেমে নাই। সেই অনন্ত অনাদি কাল থেকে আজও তা সমভাবে চলছে। প্রতি মূহুর্তে প্রতি পলে নূতন জিনিষ সৃষ্টি হচ্ছে। সৃষ্টি প্রক্রিয়া পুণঃ পুণঃ আবর্তিত হয় আল্লাহ্র অমোঘ আইন অনুযায়ী যাকে আমরা প্রাকৃতিক আইন নামে অভিহিত করে থাকি। এই সৃষ্টি প্রক্রিয়া মানুষ সৃষ্টির ক্ষেত্রে সমাপ্তি লাভ করবে ‘Ma’ad’ এ এসে, যখন নূতন পৃথিবী নূতন আঙ্গিকে নূতন আইনের আওতায় সৃষ্টি হবে। বিশ্বব্রহ্মান্ডের সব জিনিষেরই শুরু থাকে আবার শেষও আছে – শুধু সেই সর্বশক্তিমান বিশ্বস্রষ্টা আল্লাহ্ অনাদি ও অনন্ত , চিরঞ্জীব। তাঁর কোনও প্রথম বা শেষ নাই , তিনি অনন্ত কাল ব্যপী বিরাজমান।
আয়াতঃ 029.019
তারা কি দেখে না যে, আল্লাহ কিভাবে সৃষ্টিকর্ম শুরু করেন অতঃপর তাকে পুনরায় সৃষ্টি করবেন? এটা আল্লাহর জন্যে সহজ।
See they not how Allâh originates creation, then repeats it. Verily, that is easy for Allâh.
أَوَلَمْ يَرَوْا كَيْفَ يُبْدِئُ اللَّهُ الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيدُهُ إِنَّ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ
Awa lam yaraw kayfa yubdi-o Allahu alkhalqa thumma yuAAeeduhu inna thalika AAala Allahi yaseerun
YUSUFALI: See they not how Allah originates creation, then repeats it: truly that is easy for Allah.
PICKTHAL: See they not how Allah produceth creation, then reproduceth it? Lo! for Allah that is easy.
SHAKIR: What! do they not consider how Allah originates the creation, then reproduces it? Surely that is easy to Allah.
KHALIFA: Have they not seen how GOD initiates the creation, then repeats it? This is easy for GOD to do.
১৮। ” এবং যদি তোমরা [ সত্যধর্মকে ] প্রত্যাখান কর , যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম করেছিলো ; [ তাহলে] রাসুলের কর্তব্য তো শুধু প্রকাশ্যে [ সুস্পষ্টরূপে আল্লাহ্র বাণী ] প্রচার করা।”
১৯। তারা কি দেখে না কি ভাবে আল্লাহ্ সৃষ্টিকে প্রথমে আরম্ভ করেন ; তারপরে তার পুণরাবৃত্তি করেন। আল্লাহ্র পক্ষে সত্যিই তা খুব সহজ ৩৪৪০।
৩৪৪০। অন্তহীন মহাবিশ্বের সৃষ্টি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে অনাদি যুগ থেকে অণু পরামাণুর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে। সৃষ্টির এই প্রক্রিয়া কখনও থেমে নাই। সেই অনন্ত অনাদি কাল থেকে আজও তা সমভাবে চলছে। প্রতি মূহুর্তে প্রতি পলে নূতন জিনিষ সৃষ্টি হচ্ছে। সৃষ্টি প্রক্রিয়া পুণঃ পুণঃ আবর্তিত হয় আল্লাহ্র অমোঘ আইন অনুযায়ী যাকে আমরা প্রাকৃতিক আইন নামে অভিহিত করে থাকি। এই সৃষ্টি প্রক্রিয়া মানুষ সৃষ্টির ক্ষেত্রে সমাপ্তি লাভ করবে ‘Ma’ad’ এ এসে, যখন নূতন পৃথিবী নূতন আঙ্গিকে নূতন আইনের আওতায় সৃষ্টি হবে। বিশ্বব্রহ্মান্ডের সব জিনিষেরই শুরু থাকে আবার শেষও আছে – শুধু সেই সর্বশক্তিমান বিশ্বস্রষ্টা আল্লাহ্ অনাদি ও অনন্ত , চিরঞ্জীব। তাঁর কোনও প্রথম বা শেষ নাই , তিনি অনন্ত কাল ব্যপী বিরাজমান।
আয়াতঃ 029.020
বলুন, তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর এবং দেখ, কিভাবে তিনি সৃষ্টিকর্ম শুরু করেছেন। অতঃপর আল্লাহ পুর্নবার সৃষ্টি করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু করতে সক্ষম।
Say: ”Travel in the land and see how (Allâh) originated creation, and then Allâh will bring forth (resurrect) the creation of the Hereafter (i.e. resurrection after death). Verily, Allâh is Able to do all things.”
قُلْ سِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَانظُرُوا كَيْفَ بَدَأَ الْخَلْقَ ثُمَّ اللَّهُ يُنشِئُ النَّشْأَةَ الْآخِرَةَ إِنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
Qul seeroo fee al-ardi faonthuroo kayfa badaa alkhalqa thumma Allahu yunshi-o alnnash-ata al-akhirata inna Allaha AAala kulli shay-in qadeerun
YUSUFALI: Say: “Travel through the earth and see how Allah did originate creation; so will Allah produce a later creation: for Allah has power over all things.
PICKTHAL: Say (O Muhammad): Travel in the land and see how He originated creation, then Allah bringeth forth the later growth. Lo! Allah is Able to do all things.
SHAKIR: Say: Travel in the earth and see how He makes the first creation, then Allah creates the latter creation; surely Allah has power over all things.
KHALIFA: Say, “Roam the earth and find out the origin of life.” For GOD will thus initiate the creation in the Hereafter. GOD is Omnipotent.
২০। বল, ” পৃথিবী ভ্রমণ কর এবং অনুধাবন কর কি ভাবে আল্লাহ্ সৃষ্টিকে প্রথমে আরম্ভ করেছেন। সে ভাবেই আল্লাহ্ পরবর্তী [ দ্বিতীয় ] সৃষ্টিও করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাবান ৩৪৪১।
৩৪৪১। ” পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর ” – বাক্যটির আক্ষরিক ও প্রতীক অর্থ বিদ্যমান। এই বিশাল বিশ্বভূবন আল্লাহ্র সৃষ্টির সৌন্দর্য্যে ভরপুর। পূর্ব , পশ্চিম,উত্তর , দক্ষিণ পৃথিবীর সর্বত্র সৃষ্টির বৈচিত্র লক্ষ্য করা যায়। আমেরিকার গ্রান্ড ক্যানিয়ন , জাপানের ফুজিয়ামা পর্বত, ভারতের হিমালয় পর্বত শ্রেণী, এশিয়ার এলবুজ পর্বতশ্রেণী, মিশরের নীল নদী ও তার জলপ্রপাতসমূহ , নরওয়ের পর্বত বেষ্টিত উপসাগর ও সমুদ্র খাঁড়ি , আইসল্যান্ডের উষ্ণ প্রস্রবন, মধ্যরাতের সূর্যের দেশ, ইত্যাদি অসংখ্য দৃশ্যমান অত্যাশ্চার্য জিনিষ আল্লাহ্ সৃষ্টি করেছেন শুধুমাত্র এই পৃথিবীতেই। দৃশ্যমান নয় এরূপ আরও বহু অত্যাশ্চার্য জিনিষ এই পৃথিবীতে আছে যেমন , ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অণু, পরমাণুর গঠন। অদৃশ্য ক্ষুদ্র এই পরমাণু বিশাল শক্তির আঁধার [Atomic energy], বুদ্ধিহীন প্রাণীকূলের ভিতরে যে সব স্বাভাবিক প্রবণতা [Instinct] দেখা যায় যেমন তারা সন্তান পালন করে, প্রতিকূল অবস্থার বিরুদ্ধে আত্মরক্ষা করতে সমর্থ হয়, এ সবই আল্লাহ্র কুদরত। চিন্তা করলে দেখা যায় সারাটা পৃথিবী আল্লাহ্র সৃষ্টির অত্যাশ্চার্য কলাকৌশলে সমৃদ্ধ। এর কোন সীমা পরিসীমা নাই। প্রতিটি মূহুর্তে , প্রতি পলে , এই সৃষ্টিকর্ম চল্ছে অনাদি অনন্ত কাল থেকে। এর কোনটা মানুষের দৃষ্টি সীমার মধ্যে কোনটা দৃষ্টিসীমার বাইরে ঘটে। সে ভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে মানুষের মন কি আল্লাহ্র এক অত্যাশ্চার্য সৃষ্টি নয় ? কি বিশাল এই মনের ধারণ ক্ষমতা – সে জানা থেকে অজানাকে অনুধাবন করতে সক্ষম, যা শুধু মানুষের পক্ষেই সম্ভব। দৃশ্য থেকে অদৃশ্যে উপলব্ধিতে সক্ষম।
আয়াতঃ 029.021
তিনি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন এবং যার প্রতি ইচ্ছা রহমত করেন। তাঁরই দিকে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।
He punishes whom He will, and shows mercy to whom He will, and to Him you will be returned.
يُعَذِّبُُ مَن يَشَاء وَيَرْحَمُ مَن يَشَاء وَإِلَيْهِ تُقْلَبُونَ
YuAAaththibu man yashao wayarhamu man yashao wa-ilayhi tuqlaboona
YUSUFALI: “He punishes whom He pleases, and He grants Mercy to whom He pleases, and towards Him are ye turned.
PICKTHAL: He punisheth whom He will and showeth mercy unto whom He will, and unto Him ye will be turned.
SHAKIR: He punishes whom He pleases and has mercy on whom He pleases, and to Him you shall be turned back.
KHALIFA: He condemns to retribution whomever He wills, and showers His mercy upon whomever He wills. Ultimately, to Him you will be turned over.
২১। ” তিনি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন এবং তাঁর নিকটেই তোমরা ফিরে যাবে ৩৪৪২।
৩৪৪২। প্রতিটি মানুষের শেষ গন্তব্যস্থল হচ্ছে মৃত্যুর পরে আল্লাহ্র নিকট প্রত্যাবর্তন। আল্লাহ্র অনুগ্রহে মানুষের প্রতিটি প্রয়োজন তৃপ্ত হয়। মানুষ আল্লাহ্র অনুগ্রহের উপরে নির্ভরশীল ও মুখাপেক্ষী। লক্ষ্য করুন পরের আয়াতে [ ২২ ] বলা হয়েছে মানুষ ইচ্ছা করলেই আল্লাহ্র পরিকল্পনা ধূলিসাৎ করতে পারে না। কারণ মানুষকে অত্যন্ত দুর্বল ভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে; একমাত্র আল্লাহ্ই তার রক্ষাকর্তা। মানুষ আল্লাহ্র আনুগত্য করুক বা না করুক তাঁকে আল্লাহ্র নিকট ফিরে যেতেই হবে। আল্লাহ্র পরিকল্পনা নস্যাৎ করার ক্ষমতা মানুষের নাই। আল্লাহ্র বিচক্ষণ পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি কাউকে অঢেল অনুগ্রহ দান করেন, কাউকে দেন না। মেধা, মননশক্তি, সৃজনক্ষমতা, প্রতিভা ইত্যাদি হচ্ছে আল্লাহ্র বিশেষ অনুগ্রহ ও নেয়ামত। এ সব অনুগ্রহ সকলে সমানভাবে লাভ করে না। আল্লাহ্ পৃথিবীকে এক নির্দ্দিষ্ট লক্ষ্যে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন প্রতিভাধর ব্যক্তির জন্ম দেন তার পরিকল্পনা অনুযায়ী যারা পৃথিবীর মানব সভ্যতাকে এক নির্দ্দিষ্ট লক্ষ্যে নিয়ে যেতে সাহায্য করেন।
আয়াতঃ 029.022
তোমরা স্থলে ও অন্তরীক্ষে আল্লাহকে অপারগ করতে পারবে না এবং আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন হিতাকাঙ্খী নেই, সাহায্যকারীও নেই।
And you cannot escape in the earth or in the heaven. And besides Allâh you have neither any Walî (Protector or Guardian) nor any Helper.
وَمَا أَنتُم بِمُعْجِزِينَ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاء وَمَا لَكُم مِّن دُونِ اللَّهِ مِن وَلِيٍّ وَلَا نَصِيرٍ
Wama antum bimuAAjizeena fee al-ardi wala fee alssama-i wama lakum min dooni Allahi min waliyyin wala naseerin
YUSUFALI: “Not on earth nor in heaven will ye be able (fleeing) to frustrate (his Plan), nor have ye, besides Allah, any protector or helper.”
PICKTHAL: Ye cannot escape (from Him) in the earth or in the sky, and beside Allah there is for you no friend or helper.
SHAKIR: And you shall not escape in the earth nor in the heaven, and you have neither a protector nor a helper besides Allah.
KHALIFA: None of you can escape from these facts, on earth or in the heaven, and you have none beside GOD as a Lord and Master.
২২। ” না পৃথিবীতে , না আসমানে ,তোমরা আল্লাহ্র [ পরিকল্পনা ] ব্যর্থ করতে পারবে না। আল্লাহ্ ব্যতীত তোমাদের কোন রক্ষাকর্তা বা সাহায্যকারী নাই। ”
রুকু – ৩
২৩। যারা আল্লাহ্র নিদর্শনকে এবং [পরলোকে ] তাঁর সাথে সাক্ষাৎকে প্রত্যাখান করে; এরাই তারা যারা আমার অনুগ্রহ সম্বন্ধে নিরাশ হয়। এরাই তারা যারা যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি [ ভোগ ] করবে ৩৪৪৩।
৩৪৪৩। ‘ তারা ‘ অর্থাৎ যারা আল্লাহ্র নিদর্শন ও পরকালে তাঁর সাক্ষাৎ অস্বীকার করে তারা। পরলোকে তাদের জন্য আছে শাস্তি ,হতাশা তাদের ঘিরে ধরবে এবং তারা যন্ত্রণাতে পতিত হবে। আল্লাহ্র করুণা ও দয়া সকলের জন্য অবারিত। যারা আল্লাহ্র উপরে ঈমান আনে ,তাদের আত্মা আল্লাহ্র নূরে উদ্ভাসিত হয়, ফলে তারা আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভে ধন্য হয়। অপরপক্ষে , যারা আল্লাহ্কে অস্বীকার করে তাদের আত্মায় আল্লাহ্র নূর পৌঁছাতে পারে না। ফলে অন্ধকারচ্ছন্ন আত্মা আত্মিক যন্ত্রণায় ভোগে।
আয়াতঃ 029.023
যারা আল্লাহর আয়াত সমূহ ও তাঁর সাক্ষাত অস্বীকার করে, তারাই আমার রহমত থেকে নিরাশ হবে এবং তাদের জন্যেই যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
And those who disbelieve in the Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.) of Allâh and the Meeting with Him, it is they who have no hope of My Mercy, and it is they who will (have) a painful torment.
وَالَّذِينَ كَفَرُوا بِآيَاتِ اللَّهِ وَلِقَائِهِ أُوْلَئِكَ يَئِسُوا مِن رَّحْمَتِي وَأُوْلَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
Waallatheena kafaroo bi-ayati Allahi waliqa-ihi ola-ika ya-isoo min rahmatee waola-ika lahum AAathabun aleemun
YUSUFALI: Those who reject the Signs of Allah and the Meeting with Him (in the Hereafter),- it is they who shall despair of My Mercy: it is they who will (suffer) a most grievous Penalty.
PICKTHAL: Those who disbelieve in the revelations of Allah and in (their) Meeting with Him, such have no hope of My mercy. For such there is a painful doom.
SHAKIR: And (as to) those who disbelieve in the communications of Allah and His meeting, they have despaired of My mercy, and these it is that shall have a painful punishment.
KHALIFA: Those who disbelieve in GOD’s revelations, and in meeting Him, have despaired from My mercy. They have incurred a painful retribution.
রুকু – ৩
২৩। যারা আল্লাহ্র নিদর্শনকে এবং [পরলোকে ] তাঁর সাথে সাক্ষাৎকে প্রত্যাখান করে; এরাই তারা যারা আমার অনুগ্রহ সম্বন্ধে নিরাশ হয়। এরাই তারা যারা যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি [ ভোগ ] করবে ৩৪৪৩।
৩৪৪৩। ‘ তারা ‘ অর্থাৎ যারা আল্লাহ্র নিদর্শন ও পরকালে তাঁর সাক্ষাৎ অস্বীকার করে তারা। পরলোকে তাদের জন্য আছে শাস্তি ,হতাশা তাদের ঘিরে ধরবে এবং তারা যন্ত্রণাতে পতিত হবে। আল্লাহ্র করুণা ও দয়া সকলের জন্য অবারিত। যারা আল্লাহ্র উপরে ঈমান আনে ,তাদের আত্মা আল্লাহ্র নূরে উদ্ভাসিত হয়, ফলে তারা আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভে ধন্য হয়। অপরপক্ষে , যারা আল্লাহ্কে অস্বীকার করে তাদের আত্মায় আল্লাহ্র নূর পৌঁছাতে পারে না। ফলে অন্ধকারচ্ছন্ন আত্মা আত্মিক যন্ত্রণায় ভোগে।
আয়াতঃ 029.024
তখন ইব্রাহীমের সম্প্রদায়ের এছাড়া কোন জওয়াব ছিল না যে তারা বলল, তাকে হত্যা কর অথবা অগ্নিদগ্ধ কর। অতঃপর আল্লাহ তাকে অগ্নি থেকে রক্ষা করলেন। নিশ্চয় এতে বিশ্বাসী লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।
So nothing was the answer of [Ibrahîm’s (Abraham)] people except that they said: ”Kill him or burn him.” Then Allâh saved him from the fire. Verily, in this are indeed signs for a people who believe.
فَمَا كَانَ جَوَابَ قَوْمِهِ إِلَّا أَن قَالُوا اقْتُلُوهُ أَوْ حَرِّقُوهُ فَأَنجَاهُ اللَّهُ مِنَ النَّارِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
Fama kana jawaba qawmihi illa an qaloo oqtuloohu aw harriqoohu faanjahu Allahu mina alnnari inna fee thalika laayatin liqawmin yu/minoona
YUSUFALI: So naught was the answer of (Abraham’s) people except that they said: “Slay him or burn him.” But Allah did save him from the Fire. Verily in this are Signs for people who believe.
PICKTHAL: But the answer of his folk was only that they said: “Kill him” or “Burn him.” Then Allah saved him from the Fire. Lo! herein verily are portents for folk who believe.
SHAKIR: So naught was the answer of his people except that they said: Slay him or burn him; then Allah delivered him from the fire; most surely there are signs in this for a people who believe.
KHALIFA: The only response from his people was their saying, “Kill him, or burn him.” But GOD saved him from the fire. This should provide lessons for people who believe.
২৪। [ ইব্রাহীমের ] সম্প্রদায়ের শুধু এই উত্তর ছিলো, ” তাকে হত্যা কর অথবা আগুনে পোড়াও।” কিন্তু আল্লাহ্ তাঁকে আগুন থেকে রক্ষা করেন ৩৪৪৪। যারা বিশ্বাসী এর মাঝে তাদের জন্য রয়েছে নিদর্শন।
৩৪৪৪। দেখুন [ ২১ : ৬৬- ৭০ ] আয়াত। হযরত ইব্রাহীমকে অগ্নিতে নিক্ষেপ করা হলো , কিন্তু আল্লাহ্র অনুগ্রহে অগ্নি তাঁর কোনও ক্ষতি করতে পারলো না। এই উদাহরণের মাধ্যমে আল্লাহ্ আমাদের উপদেশ দিয়েছেন যে, দুষ্টদের ষড়যন্ত্রের দ্বারা পূণ্যাত্মাদের কোনও ক্ষতি হবে না কারণ তাদের রক্ষা করবেন স্বয়ং আল্লাহ্। কিন্তু প্রয়োজনে তাদের পাপের আবাসস্থলকে ত্যাগ করতে হবে, যদি প্রয়োজন হয় নিজ জন্মভূমিও যেমন করেছিলেন হযরত ইব্রাহীম।
আয়াতঃ 029.025
ইব্রাহীম বললেন, পার্থিব জীবনে তোমাদের পারস্পরিক ভালবাসা রক্ষার জন্যে তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে প্রতিমাগুলোকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছ। এরপর কেয়ামতের দিন তোমরা একে অপরকে অস্বীকার করবে এবং একে অপরকে লানত করবে। তোমাদের ঠিকানা জাহান্নাম এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী নেই।
And [Ibrâhim (Abraham)] said: ”You have taken (for worship) idols instead of Allâh, and the love between you is only in the life of this world, but on the Day of Resurrection, you shall disown each other, and curse each other, and your abode will be the Fire, and you shall have no helper.”
وَقَالَ إِنَّمَا اتَّخَذْتُم مِّن دُونِ اللَّهِ أَوْثَانًا مَّوَدَّةَ بَيْنِكُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ثُمَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَكْفُرُ بَعْضُكُم بِبَعْضٍ وَيَلْعَنُ بَعْضُكُم بَعْضًا وَمَأْوَاكُمُ النَّارُ وَمَا لَكُم مِّن نَّاصِرِينَ
Waqala innama ittakhathtum min dooni Allahi awthanan mawaddata baynikum fee alhayati alddunya thumma yawma alqiyamati yakfuru baAAdukum bibaAAdin wayalAAanu baAAdukum baAAdan wama-wakumu alnnaru wama lakum min nasireena
YUSUFALI: And he said: “For you, ye have taken (for worship) idols besides Allah, out of mutual love and regard between yourselves in this life; but on the Day of Judgment ye shall disown each other and curse each other: and your abode will be the Fire, and ye shall have none to help.”
PICKTHAL: He said: Ye have chosen only idols instead of Allah. The love between you is only in the life of the world. Then on the Day of Resurrection ye will deny each other and curse each other, and your abode will be the Fire, and ye will have no helpers.
SHAKIR: And he said: You have only taken for yourselves idols besides Allah by way of friendship between you in this world’s life, then on the resurrection day some of you shall deny others, and some of you shall curse others, and your abode is the fire, and you shall not have any helpers.
KHALIFA: He said, “You worship beside GOD powerless idols due to peer pressure, just to preserve some friendship among you in this worldly life. But then, on the Day of Resurrection, you will disown one another, and curse one another. Your destiny is Hell, wherein you cannot help one another.”
২৫। এবং সে বলেছিলো, ” এই পার্থিব জীবনে পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মানের খাতিরে তোমরা, তোমাদের জন্য আল্লাহ্র পরিবর্তে মূর্তিকে গ্রহণ করেছ [এবাদতের জন্য ] ৩৪৪৫। কিন্তু শেষ বিচারের দিনে তোমরা একে অপরকে অস্বীকার করবে এবং পরস্পর পরস্পরকে অভিসম্পাত করবে। এবং তোমাদের আবাস হবে আগুন এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না।
৩৪৪৫। যারা মন্দলোক , পাপ কাজে তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু , পরস্পর পরস্পরের কাজে পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকে। তারা বন্ধুরূপে পরস্পরের সাথে কৌতুকরস করে এবং বিভিন্ন কাজে পরস্পরকে সমর্থন করে। তারা পরস্পর পরস্পরের মন্দ কাজগুলিকে বাগাড়ম্বর পূর্ণ নামে অভিহিত করে থাকে এবং বলে থাকে এগুলি তাদের পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এবং বন্ধুত্বের বহিঃপ্রকাশ। বাস্তব সত্য হচ্ছে, এরূপ সমর্থন ও পৃষ্টপোষকতা ও কলাকৌশল দ্বারা দুষ্টরা পৃথিবীতে অর্থ-সম্পদ, প্রভাব-প্রতিপত্তি, অর্জন করতে সমর্থ হয়। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে , তারা লাভবান হয় না। তারা নিজেদের প্রতারিত করে এবং পরস্পরকেও প্রতারিত করে। পৃথিবীতে তারা ছিলো বন্ধুরূপে, মৃত্যুর পরে পরলোকে তাদের কি অবস্থা হবে ? পরলোকে তারা পরস্পরের বন্ধুত্ব অস্বীকার করবে, কারণ প্রত্যেককে তখন ব্যক্তিগত দায়দায়িত্ব সম্বন্ধে প্রশ্ন করা হবে। সেখানে তারা পরস্পর পরস্পরকে দোষারোপ করবে বিপথে চালনা করার জন্য। তারা পরস্পর পরস্পরকে অভিসম্পাত দেবে। কিন্তু তখন আর কোনও প্রতিকার থাকবে না। তাদের জন্য নির্ধারিত হবে দোযখের আগুন।
আয়াতঃ 029.026
অতঃপর তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলেন লূত। ইব্রাহীম বললেন, আমি আমার পালনকর্তার উদ্দেশে দেশত্যাগ করছি। নিশ্চয় তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
So Lout (Lot) believed in him [Ibrâhim’s (Abraham) Message of Islâmic Monotheism]. He [Ibrâhim (Abraham)] said: ”I will emigrate for the sake of my Lord. Verily, He is the All-Mighty, the All-Wise.”
فَآمَنَ لَهُ لُوطٌ وَقَالَ إِنِّي مُهَاجِرٌ إِلَى رَبِّي إِنَّهُ هُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
Faamana lahu lootun waqala innee muhajirun ila rabbee innahu huwa alAAazeezu alhakeemu
YUSUFALI: But Lut had faith in Him: He said: “I will leave home for the sake of my Lord: for He is Exalted in Might, and Wise.”
PICKTHAL: And Lot believed him, and said: Lo! I am a fugitive unto my Lord. Lo! He, only He, is the Mighty, the Wise.
SHAKIR: And Lut believed in Him, and he said: I am fleeing to my Lord, surely He is the Mighty, the Wise.
KHALIFA: Lot believed with him and said, “I am emigrating to my Lord. He is the Almighty, the Most Wise.”
২৬। কিন্তু লূতের আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস ছিলো ৩৪৪৬। সে বলেছিলো , ” আমার প্রভুর জন্য আমি আমার দেশ ত্যাগ করবো। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমতায় মহাশক্তিধর এবং প্রজ্ঞাময়। ”
৩৪৪৬। হযরত লূত ছিলেন হযরত ইব্রাহীমের ভাইয়ের পুত্র। তিনি ইব্রাহীমের অনুগত ছিলেন। তিনি ইব্রাহীমের শিক্ষাকে গ্রহণ করেন, আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনেন এবং স্বেচ্ছায় ইব্রাহীমের সাথে নির্বাসনে গমন করেন। হযরত ইব্রাহীম তাঁর পিতৃগৃহ ত্যাগ করে মাতৃভূমি চালদিয়া থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসিত হয়ে সিরিয়া এবং প্যালেস্টাইনে গমন করেন। সেখানে আল্লাহ্ তাঁকে শান্তি ও সমৃদ্ধি দান করেন। তাঁর পরিবার পরিজন বৃদ্ধি পায় এবং তিনি সেখানে আল্লাহ্র একত্বের ধ্বজা উত্তোলন করেন।
আয়াতঃ 029.027
আমি তাকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়াকুব, তাঁর বংশধরদের মধ্যে নবুওয়ত ও কিতাব রাখলাম এবং দুনিয়াতে তাঁকে পুরস্কৃত করলাম। নিশ্চয় পরকালে ও সে সৎলোকদর অন্তর্ভূক্ত হবে।
And We bestowed on him [Ibrâhim (Abraham)], Ishâque (Isaac) and Ya’qûb (Jacob), and ordained among his offspring Prophethood and the Book [i.e. the Taurât (Torah) (to Mûsa Moses), the Injeel (Gospel) (to ’Iesa Jesus), the Qur’ân (to Muhammad SAW), all from the offspring of Ibrâhim (Abraham)], and We granted him his reward in this world, and verily, in the Hereafter he is indeed among the righteous.
وَوَهَبْنَا لَهُ إِسْحَقَ وَيَعْقُوبَ وَجَعَلْنَا فِي ذُرِّيَّتِهِ النُّبُوَّةَ وَالْكِتَابَ وَآتَيْنَاهُ أَجْرَهُ فِي الدُّنْيَا وَإِنَّهُ فِي الْآخِرَةِ لَمِنَ الصَّالِحِينَ
Wawahabna lahu ishaqa wayaAAqooba wajaAAalna fee thurriyyatihi alnnubuwwata waalkitaba waataynahu ajrahu fee alddunya wa-innahu fee al-akhirati lamina alssaliheena
YUSUFALI: And We gave (Abraham) Isaac and Jacob, and ordained among his progeny Prophethood and Revelation, and We granted him his reward in this life; and he was in the Hereafter (of the company) of the Righteous.
PICKTHAL: And We bestowed on him Isaac and Jacob, and We established the prophethood and the Scripture among his seed, and We gave him his reward in the world, and lo! in the Hereafter he verily is among the righteous.
SHAKIR: And We granted him Ishaq and Yaqoub, and caused the t prophethood and the book to remain in his seed, and We gave him his reward in this world, and in the hereafter he will most surely be among the good.
KHALIFA: We granted him Isaac and Jacob, we assigned to his descendants prophethood and the scriptures, we endowed him with his due recompense in this life, and in the Hereafter he will surely be with the righteous.
২৭। এবং আমি [ ইব্রাহীমকে ] দিয়েছিলাম ঈসাহাক, ইয়াকুবকে এবং তার বংশধরদের জন্য স্থির করেছিলাম নবুয়ত ৩৪৪৭ ও প্রত্যাদেশ এবং আমি তাকে এই জীবনেই পুরষ্কার দান করেছিলাম। এবং পরকালে সে পূণ্যাত্মাদের দলভূক্ত হবে ৩৪৪৮।
৩৪৪৭। হযরত ইব্রাহীমের ছিলো দুই পুত্র সন্তান জ্যেষ্ঠ ইসমাঈল এবং কনিষ্ঠ ঈসাহাক। ঈসাহাকের বংশে জন্ম গ্রহণ করেন ইয়াকুব এবং তাঁর মাধ্যমে হযরত মুসা ও ঈসা। আবার ইসমাঈলের বংশে জন্মগ্রহণ করেন শেষ নবী হযরত মুহম্মদ মুস্তফা [ সা ]। ইয়াকুবের নামকরণ করা হয় ইসরাঈল [Gen 32 : 28 ; 35 : 10] এবং সে কারণে তাঁর বংশধরদের উপাধি হচ্ছে ‘ বনী ইসরাঈল ‘ বা ইসরাঈলের সন্তান [Children of Israel]। এ ভাবেই আল্লাহ্ নবুয়তের দুই প্রধান ধারা ইব্রাহীমের দুই পুত্রের মাধ্যমে প্রবাহিত করেন।
৩৪৪৮। দেখুন [ ২৯ : ৯ ] এবং [ ৪ : ৬৯ ] এবং টিকা ৫৮৬।
আয়াতঃ 029.028
আর প্রেরণ করেছি লূতকে। যখন সে তার সম্প্রদায়কে বলল, তোমরা এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে পৃথিবীর কেউ করেনি।
And (remember) Lout (Lot), when he said to his people: ”You commit Al-Fâhishah (sodomy the worst sin) which none has preceded you in (committing) it in the ’Alamîn (mankind and jinns).”
وَلُوطًا إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ إِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ الْفَاحِشَةَ مَا سَبَقَكُم بِهَا مِنْ أَحَدٍ مِّنَ الْعَالَمِينَ
Walootan ith qala liqawmihi innakum lata/toona alfahishata ma sabaqakum biha min ahadin mina alAAalameena
YUSUFALI: And (remember) Lut: behold, he said to his people: “Ye do commit lewdness, such as no people in Creation (ever) committed before you.
PICKTHAL: And Lot! (Remember) when he said unto his folk: Lo! ye commit lewdness such as no creature did before you.
SHAKIR: And (We sent) Lut when he said to his people: Most surely you are guilty of an indecency which none of the nations has ever done before you;
KHALIFA: Lot said to his people, “You commit such an abomination, no one in the world has ever done it before you.
২৮। এবং [ স্মরণ কর ] লূতের কথা। দেখো সে তাঁর সম্প্রদায়কে বলেছিলো, ” তোমরা তো এমন অশ্লীল কাজ করছো , যা তোমাদের পূর্বে বিশ্বে কেহ করে নাই ৩৪৪৯।
৩৪৪৯। দেখুন [ ৭ : ৮০ ]। লূতের সম্প্রদায়ের ঘৃণ্য পাপ যা পৃথিবীতে কেউ কখনও করে নাই তার প্রতি লূতের বক্তব্য ছিলো সুবিবেচনাপূর্ণ উপদেশ।
আয়াতঃ 029.029
তোমরা কি পুংমৈথুনে লিপ্ত আছ, রাহাজানি করছ এবং নিজেদের মজলিসে গর্হিত কর্ম করছ? জওয়াবে তাঁর সম্প্রদায় কেবল একথা বলল, আমাদের উপর আল্লাহর আযাব আন যদি তুমি সত্যবাদী হও।
”Verily, you do sodomy with men, and rob the wayfarer (travellers, etc.)! And practise Al-Munkar (disbelief and polytheism and every kind of evil wicked deed) in your meetings.” But his people gave no answer except, that they said: ”Bring Allâh’s Torment upon us if you are one of the truthful.”
أَئِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ الرِّجَالَ وَتَقْطَعُونَ السَّبِيلَ وَتَأْتُونَ فِي نَادِيكُمُ الْمُنكَرَ فَمَا كَانَ جَوَابَ قَوْمِهِ إِلَّا أَن قَالُوا ائْتِنَا بِعَذَابِ اللَّهِ إِن كُنتَ مِنَ الصَّادِقِينَ
A-innakum lata/toona alrrijala wataqtaAAoona alssabeela wata/toona fee nadeekumu almunkara fama kana jawaba qawmihi illa an qaloo i/tina biAAathabi Allahi in kunta mina alssadiqeena
YUSUFALI: “Do ye indeed approach men, and cut off the highway?- and practise wickedness (even) in your councils?” But his people gave no answer but this: they said: “Bring us the Wrath of Allah if thou tellest the truth.”
PICKTHAL: For come ye not in unto males, and cut ye not the road (for travellers), and commit ye not abomination in your meetings? But the answer of his folk was only that they said: Bring Allah’s doom upon us if thou art a truthteller!
SHAKIR: What! do you come to the males and commit robbery on the highway, and you commit evil deeds in your assemblies? But nothing was the answer of his people except that they said: Bring on us Allah’s punishment, if you are one of the truthful.
KHALIFA: “You practice sex with the men, you commit highway robbery, and you allow all kinds of vice in your society.” The only response from his people was to say, “Bring to us GOD’s retribution, if you are truthful.”
২৯। ” তোমরা কি পুরুষের সাথে সমকামিতার অভ্যাস করবে এবং বাণিজ্য পথে ডাকাতি করবে ৩৪৫০ ? [এমন কি ] তোমরা তোমাদের সভাঘরেও [ প্রকাশ্যে ] পাপাচার করবে ? ” কিন্তু তার সম্প্রদায়ের শুধু এই উত্তর ছিলো, তারা বললো , ” যদি তুমি সত্য বলে থাক তবে আমাদের উপরে আল্লাহ্র ক্রোধকে আনায়ন কর। ” ৩৪৫১
৩৪৫০। লূতের সম্প্রদায়ের পাপ ছিলো সমকামিতা। [ ৭ : ৮১ ] আয়াত দেখুন। এ ব্যাপারে তারা গোপনীয়তার প্রয়োজন বোধ করতো না। তারা এই ঘৃণ্য কাজ বাণিজ্য পথে হামলা করে সেখানে করতো। প্রকাশ্য রাজপথে করতো, এমনকি তাদের মজলিসেও তারা প্রকাশ্যে এ কাজ করতো। কোন কোন তফসীরকারের মতে রাহাজানি বা ইংরেজীতে যার অনুবাদ হয়েছে “Cut off highway?” – এর অর্থ বাণিজ্য পথে ডাকাতি। সেটাও সম্ভব এবং মজলিসে তাদের অপরাধ ছিলো অন্যায় অবিচার ও ঝগড়াঝাটি। হতে পারে তিন ধরনের পাপেই তারা অভ্যস্ত ছিলো। কিন্তু এই আয়াতটির প্রেক্ষাপট হচ্ছে লূতের সম্প্রদায়ের সমকামিতার জঘন্য অপরাধ। এখানে যে প্রসঙ্গের উপরে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে তা হচ্ছে তারা তাদের পাপের জন্য বিন্দু মাত্র লজ্জিত ছিলো না। এটা যে জঘন্য পাপ সে বোধই তাদের মধ্যে লুপ্ত হয়ে গিয়েছিলো আর এ কারণেই তা প্রকাশ্যে করতেও দ্বিধা বোধ করতো না। এর থেকে নৈতিক অধঃপতন আর কিছু হতে পারে না।
৩৪৫১। সূরা [ ৭ : ৮২ ] আয়াতে লূতের সম্প্রদায়ের ধৃষ্টতাপূর্ণ উক্তি আছে। এই আয়াতে আরও একটি ধৃষ্টতাপূর্ণ উক্তি উল্লেখ করা হয়েছে। দুটি উক্তিই পরস্পরের সম্পূরক। এখানের উক্তিতে যার উপরে তারা গুরুত্ব আরোপ করে তা হচ্ছে , তারা আল্লাহ্র অস্তিত্বে বিশ্বাসী নয় সুতারাং আল্লাহ্র শাস্তির কথা তাদের নিকট হাস্যকর। সে কারণে তারা আল্লাহ্র শাস্তিকে আহ্বানের জন্য সাহসী হয়েছিলো।
আয়াতঃ 029.030
সে বলল, হে আমার পালনকর্তা, দুস্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য কর।
He said: ”My Lord! Give me victory over the people who are Mufsidûn (those who commit great crimes and sins, oppressors, tyrants, mischief-makers, corrupts).
قَالَ رَبِّ انصُرْنِي عَلَى الْقَوْمِ الْمُفْسِدِينَ
Qala rabbi onsurnee AAala alqawmi almufsideena
YUSUFALI: He said: “O my Lord! help Thou me against people who do mischief!”
PICKTHAL: He said: My Lord! Give me victory over folk who work corruption.
SHAKIR: He said: My Lord! help me against the mischievous people.
KHALIFA: He said, “My Lord, grant me victory over these wicked people.”
৩০। সে বলেছিলো, ” হে আমার প্রভু ! অশান্তি সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য কর। ”
রুকু – ৪
৩১। যখন আমার বার্তাবাহক দূত ইব্রাহীমের নিকট সুসংবাদ সহ আগমন করলো ৩৪৫২; তারা বলেছিলো , “আমরা অবশ্যই এই জনপদের অধিবাসীদের ধ্বংস করতে যাচ্ছি ৩৪৫৩। সত্যিই তারা অপরাধে [ আসক্ত]।”
৩৪৫২। দেখুন [ ১১ : ৬৯ – ৭৬ ] আয়াত। ফেরেশতারা লূতের সম্প্রদায়ের ধ্বংসের জন্য পৃথিবীতে এসেছিলেন। কারণ লূতের সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের জঘন্য পাপের দ্বারা পৃথিবীর পরিবেশকে কলুষিত করে তুলেছিলো। পথে ফেরেশতারা ইব্রাহীমকে বৃদ্ধ বয়েসে পুত্র সন্তান লাভের সুসংবাদ দান করেন। ইব্রাহীম জানতেন যে সেখানে তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র লূত অবস্থান করছেন, সুতারাং তিনি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন বোধ করেন। ফেরেশতারা তাঁকে লূতের নিরাপত্তার ব্যাপারে আশ্বাস দেন।
৩৪৫৩। জনপদবাসী বলতে এখানে ‘সদ্ম’ ও ‘গোমরাহ্ ‘ নামক দুটি শহরকে বোঝানো হয়েছে। এই শহর দুটির লোক তাদের ঘৃণ্য কার্যকলাপের দ্বারা সীমা অতিক্রম করেছিলো। সুতারাং তারা আল্লাহ্র করুণা লাভে অসমর্থ হয়েছিলো।
আয়াতঃ 029.031
যখন আমার প্রেরিত ফেরেশতাগণ সুসংবাদ নিয়ে ইব্রাহীমের কাছে আগমন করল, তখন তারা বলল, আমরা এই জনপদের অধিবাসীদেরকে ধ্বংস করব। নিশ্চয় এর অধিবাসীরা জালেম।
And when Our Messengers came to Ibrâhim (Abraham) with the glad tidings they said: ”Verily, we are going to destroy the people of this [Lout’s (Lot’s)] town (i.e. the town of Sodom in Palestine) truly, its people have been Zâlimûn [wrong-doers, polytheists and disobedient to Allâh, and have also belied their Messenger Lout (Lot)].”
وَلَمَّا جَاءتْ رُسُلُنَا إِبْرَاهِيمَ بِالْبُشْرَى قَالُوا إِنَّا مُهْلِكُو أَهْلِ هَذِهِ الْقَرْيَةِ إِنَّ أَهْلَهَا كَانُوا ظَالِمِينَ
Walamma jaat rusuluna ibraheema bialbushra qaloo inna muhlikoo ahli hathihi alqaryati inna ahlaha kanoo thalimeena
YUSUFALI: When Our Messengers came to Abraham with the good news, they said: “We are indeed going to destroy the people of this township: for truly they are (addicted to) crime.”
PICKTHAL: And when Our messengers brought Abraham the good news, they said: Lo! we are about to destroy the people of that township, for its people are wrong-doers.
SHAKIR: And when Our messengers came to Ibrahim with the good news, they said: Surely we are going to destroy the people of this town, for its people are unjust.
KHALIFA: When our messengers went to Abraham with good news (about Isaac’s birth), they also said, “We are on our way to annihilate the people of that town (Sodom), for its people have been wicked.”
৩০। সে বলেছিলো, ” হে আমার প্রভু ! অশান্তি সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য কর। ”
রুকু – ৪
৩১। যখন আমার বার্তাবাহক দূত ইব্রাহীমের নিকট সুসংবাদ সহ আগমন করলো ৩৪৫২; তারা বলেছিলো , “আমরা অবশ্যই এই জনপদের অধিবাসীদের ধ্বংস করতে যাচ্ছি ৩৪৫৩। সত্যিই তারা অপরাধে [ আসক্ত]।”
৩৪৫২। দেখুন [ ১১ : ৬৯ – ৭৬ ] আয়াত। ফেরেশতারা লূতের সম্প্রদায়ের ধ্বংসের জন্য পৃথিবীতে এসেছিলেন। কারণ লূতের সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের জঘন্য পাপের দ্বারা পৃথিবীর পরিবেশকে কলুষিত করে তুলেছিলো। পথে ফেরেশতারা ইব্রাহীমকে বৃদ্ধ বয়েসে পুত্র সন্তান লাভের সুসংবাদ দান করেন। ইব্রাহীম জানতেন যে সেখানে তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র লূত অবস্থান করছেন, সুতারাং তিনি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন বোধ করেন। ফেরেশতারা তাঁকে লূতের নিরাপত্তার ব্যাপারে আশ্বাস দেন।
৩৪৫৩। জনপদবাসী বলতে এখানে ‘সদ্ম’ ও ‘গোমরাহ্ ‘ নামক দুটি শহরকে বোঝানো হয়েছে। এই শহর দুটির লোক তাদের ঘৃণ্য কার্যকলাপের দ্বারা সীমা অতিক্রম করেছিলো। সুতারাং তারা আল্লাহ্র করুণা লাভে অসমর্থ হয়েছিলো।
আয়াতঃ 029.032
সে বলল, এই জনপদে তো লূতও রয়েছে। তারা বলল, সেখানে কে আছে, তা আমরা ভাল জানি। আমরা অবশ্যই তাকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে রক্ষা করব তাঁর স্ত্রী ব্যতীত; সে ধ্বংসপ্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত থাকবে।
Ibrâhim (Abraham) said: ”But there is Lout (Lot) in it.” They said:”We know better who is there, we will verily save him [Lout (Lot)] and his family, except his wife, she will be of those who remain behind (i.e. she will be destroyed along with those who will be destroyed from her folk).”
قَالَ إِنَّ فِيهَا لُوطًا قَالُوا نَحْنُ أَعْلَمُ بِمَن فِيهَا لَنُنَجِّيَنَّهُ وَأَهْلَهُ إِلَّا امْرَأَتَهُ كَانَتْ مِنَ الْغَابِرِينَ
Qala inna feeha lootan qaloo nahnu aAAlamu biman feeha lanunajjiyannahu waahlahu illa imraatahu kanat mina alghabireena
YUSUFALI: He said: “But there is Lut there.” They said: “Well do we know who is there : we will certainly save him and his following,- except his wife: she is of those who lag behind!”
PICKTHAL: He said: Lo! Lot is there. They said: We are best aware of who is there. We are to deliver him and his household, all save his wife, who is of those who stay behind.
SHAKIR: He said: Surely in it is Lut. They said: We know well who is in it; we shall certainly deliver him and his followers, except his wife; she shall be of those who remain behind.
KHALIFA: He said, “But Lot is living there.” They said, “We are fully aware of everyone who lives in it. We will of course save him and his family, except his wife; she is doomed.”
৩২। সে বলেছিলো , ” কিন্তু সেখানে লূত রয়েছে।” তারা বলেছিলো , ” সেখানে কে রয়েছে আমরা তা ভালোভাবে জানি। আমরা অবশ্যই তাঁকে ও তাঁর অনুসারীদের রক্ষা করবো- কিন্তু তার স্ত্রীকে নয়। সে তো পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অর্ন্তভূক্ত।” ৩৪৫৪
৩৪৫৪। লূতের স্ত্রী তার স্বামীর প্রতি অনুগত ছিলো না। প্রথাগতভাবে বলা হয়ে থাকে যে, লূতের স্ত্রী মন্দ লোকদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলো। সুতারাং সে তাদের ত্যাগ করে যেতে অনিচ্ছুক ছিলো। লূতের ধর্মের প্রতি তাঁর স্ত্রীর কোনও বিশ্বাস ছিলো না বা অতিথি হিসেবে আগত ফেরেশতাদের উপরেও তার কোনও বিশ্বাস ছিলো না।
আয়াতঃ 029.033
যখন আমার প্রেরিত ফেরেশতাগণ লূতের কাছে আগমন করল, তখন তাদের কারণে সে বিষন্ন হয়ে পড়ল এবং তার মন সংকীর্ণ হয়ে গেল। তারা বলল, ভয় করবেন না এবং দুঃখ করবেন না। আমরা আপনাকে ও আপনার পরিবারবর্গকে রক্ষা করবই আপনার স্ত্রী ব্যতীত, সে ধ্বংস প্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত থাকবে।
And when Our Messengers came to Lout (Lot), he was grieved because of them, and felt straitened on their account. They said: ”Have no fear, and do not grieve! Truly, we shall save you and your family, except your wife, she will be of those who remain behind (i.e. she will be destroyed along with those who will be destroyed from her folk).
وَلَمَّا أَن جَاءتْ رُسُلُنَا لُوطًا سِيءَ بِهِمْ وَضَاقَ بِهِمْ ذَرْعًا وَقَالُوا لَا تَخَفْ وَلَا تَحْزَنْ إِنَّا مُنَجُّوكَ وَأَهْلَكَ إِلَّا امْرَأَتَكَ كَانَتْ مِنَ الْغَابِرِينَ
Walamma an jaat rusuluna lootan see-a bihim wadaqa bihim tharAAan waqaloo la takhaf wala tahzan inna munajjooka waahlaka illa imraataka kanat mina alghabireena
YUSUFALI: And when Our Messengers came to Lut, he was grieved on their account, and felt himself powerless (to protect) them: but they said: “Fear thou not, nor grieve: we are (here) to save thee and thy following, except thy wife: she is of those who lag behind.
PICKTHAL: And when Our messengers came unto Lot, he was troubled upon their account, for he could not protect them; but they said: Fear not, nor grieve! Lo! we are to deliver thee and thy household, (all) save thy wife, who is of those who stay behind.
SHAKIR: And when Our messengers came to Lut he was grieved on account of them, and he felt powerless (to protect) them; and they said: Fear not, nor grieve; surely we will deliver you and your followers, except your wife; she shall be of those who remain behind.
KHALIFA: When our messengers arrived at Lot’s place, they were mistreated, and he was embarrassed by their presence. But they said, “Have no fear, and do not worry. We will save you and your family, except your wife; she is doomed.
৩৩। আর যখন আমার প্রেরিত দূতগণ লূতের নিকট উপস্থিত হলো, তাদের কারণে সে দুঃখিত হয়ে পড়লো , এবং [ তাদের রক্ষার ব্যাপারে ] নিজেকে অসহায় মনে করলো ৩৪৫৫। কিন্তু তারা বলেছিলো,” তুমি ভয় পেয়ো না , দুঃখও করো না। আমরা [ এখানে ] এসেছি তোমাকে ও তোমার অনুসারীদের রক্ষা করার জন্য [অবশ্য ] তোমার স্ত্রী ব্যতীত। সে তো পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভূক্ত।
৩৪৫৫। লূতের কাহিনীর এই অংশে বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে [ ১১ : ৭৭- ৮৩] আয়াতে।
আয়াতঃ 029.034
আমরা এই জনপদের অধিবাসীদের উপর আকাশ থেকে আযাব নাজিল করব তাদের পাপাচারের কারণে।
Verily, we are about to bring down on the people of this town a great torment from the sky, because they have been rebellious (against Allâh’s Command).”
إِنَّا مُنزِلُونَ عَلَى أَهْلِ هَذِهِ الْقَرْيَةِ رِجْزًا مِّنَ السَّمَاء بِمَا كَانُوا يَفْسُقُونَ
Inna munziloona AAala ahli hathihi alqaryati rijzan mina alssama-i bima kanoo yafsuqoona
YUSUFALI: “For we are going to bring down on the people of this township a Punishment from heaven, because they have been wickedly rebellious.”
PICKTHAL: Lo! We are about to bring down upon the folk of this township a fury from the sky because they are evil-livers.
SHAKIR: Surely We will cause to come down upon the people of this town a punishment from heaven, because they transgressed.
KHALIFA: “We will pour upon the people of this town a disaster from the sky, as a consequence of their wickedness.”
৩৪। ” আমরা এই জনপদের অধিবাসীদের উপরে আকাশ থেকে শাস্তি আনায়ন করতে যাচ্ছি ৩৪৫৬। কারণ তারা পাপাচারে নিমগ্ন। ”
৩৪৫৬। লূতের সম্প্রদায়ের শাস্তি ছিলো : তাদের উপরে আশমান থেকে পাথর বৃষ্টি হয়েছিলো যা সম্পূর্ণ শহরকে ঢেকে দেয়। সম্ভবতঃ তা ছিলো ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির আগ্নেয়পাত।
আয়াতঃ 029.035
আমি বুদ্ধিমান লোকদের জন্যে এতে একটি স্পষ্ট নিদর্শন রেখে দিয়েছি।
And indeed We have left thereof an evident Ayâh (a lesson and a warning and a sign the place where the Dead Sea is now in Palestine) for a folk who understand.
وَلَقَد تَّرَكْنَا مِنْهَا آيَةً بَيِّنَةً لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ
Walaqad tarakna minha ayatan bayyinatan liqawmin yaAAqiloona
YUSUFALI: And We have left thereof an evident Sign, for any people who (care to) understand.
PICKTHAL: And verily of that We have left a clear sign for people who have sense.
SHAKIR: And certainly We have left a clear sign of it for a people who understand.
KHALIFA: We left standing some of their ruins, to serve as a profound lesson for people who understand.
৩৫। যারা অনুধাবন করতে চায়, তাদের জন্য সেখানে আমি স্পষ্ট নিদর্শন রেখেছি ৩৪৫৭।
৩৪৫৭। মরু সাগরের [Dead Sea] পূর্ব পাশের সম্পূর্ণটা জুড়ে ছিলো ‘সদম’ ও গোমরাহ্ ‘ শহরের অবস্থান। এই স্থানটি এখনও গন্ধকের লবণ দ্বারা আবৃত সুতারাং সেখানে কোন বৃক্ষ বা তরুলতা নাই, প্রাণীর জন্য স্থানটি বিপদজনক। মরু সাগরকে আরবীতে বলা হয় ‘Bahr Lut’ [ লূতের সাগর ] ।এই প্রান্তরটি বৃক্ষ তরুলতা বিহীন ,জনপ্রাণী শূন্য ঊষর প্রান্তর। পাপের চরম পরিণতির স্বাক্ষর হিসেবে স্থানটি এখনও বিরাজমান।
আয়াতঃ 029.036
আমি মাদইয়ানবাসীদের প্রতি তাদের ভাই শোআয়বকে প্রেরণ করেছি। সে বলল, হে আমার সম্প্রদায় তোমরা আল্লাহর এবাদত কর, শেষ দিবসের আশা রাখ এবং পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করো না।
And to (the people of) Madyan (Midian), We sent their brother Shu’aib (Shuaib). He said: ”O my people! Worship Allâh, and hope for (the reward of good deeds by worshipping Allâh Alone, on) the last Day, and commit no mischief on the earth as Mufsidûn (those who commit great crimes, oppressors, tyrants, mischief-makers, corrupts).
وَإِلَى مَدْيَنَ أَخَاهُمْ شُعَيْبًا فَقَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَارْجُوا الْيَوْمَ الْآخِرَ وَلَا تَعْثَوْا فِي الْأَرْضِ مُفْسِدِينَ
Wa-ila madyana akhahum shuAAayban faqala ya qawmi oAAbudoo Allaha waorjoo alyawma al-akhira wala taAAthaw fee al-ardi mufsideena
YUSUFALI: To the Madyan (people) (We sent) their brother Shu’aib. Then he said: “O my people! serve Allah, and fear the Last Day: nor commit evil on the earth, with intent to do mischief.”
PICKTHAL: And unto Midian We sent Shu’eyb, their brother. He said: O my people! Serve Allah, and look forward to the Last Day, and do not evil, making mischief, in the earth.
SHAKIR: And to Madyan (We sent) their brother Shuaib, so he said: O my people! serve Allah and fear the latter day and do not act corruptly in the land, making mischief.
KHALIFA: To Midyan we sent their brother Shu`aib. He said, “O my people, you shall worship GOD and seek the Last Day, and do not roam the earth corruptingly.”
৩৬। মাদইয়ান সম্প্রদায়ের জন্য [ আমি ] তাদের ভ্রাতা শোয়েবকে প্রেরণ করেছিলাম। সে তখন বলেছিলো , ” হে আমার সম্প্রদায় ! আল্লাহ্র এবাদত কর এবং শেষ বিচারের দিনকে ভয় কর। পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পাপাচার করো না। ”
৩৭। কিন্তু তারা তাকে প্রত্যাখান করেছিলো। অতঃপর এক শক্তিশালী বিস্ফোরণ তাদের গ্রাস করলো ৩৪৫৮। এবং তারা প্রভাতে নিজ নিজ গৃহে নতজানু অবস্থায় পড়ে থাকলো।
৩৪৫৮। সুয়েব নবী ও মাদ্য়ানবাসীর কাহিনীর উল্লেখমাত্র এখানে করা হয়েছে। মূল কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে [ ১১ : ৮৪ – ৯৫ ] আয়াতে। তাদের পাপ ছিলো মিথ্যা প্রতারণা ও বাণিজ্যে নৈতিকতার অভাব। তাদের শাস্তি ছিলো শক্তিশালী ঝঞ্ঝা ,সম্ভবতঃ আগ্নেয়গিরির আগ্নেয়পাত। এই সূরাতে তাদের উল্লেখের কারণ তারা কাজের দ্বারা পৃথিবীতে বিপর্যয় ঘটাতো এবং সে সম্বন্ধে তাদের কোনও পাপবোধ ছিলো না , কারণ তারা ‘Ma’ad’ বা শেষ দিবসের অস্তিত্বে বিশ্বাস করতো না ; ‘Ma’ad’ বা ‘শেষ দিবস’ বা আল্লাহ্র কাছে প্রত্যাবর্তন যা এই সূরার মর্মার্থ।
এই একই প্রসঙ্গের উপরে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে আদ্ ও সামুদ জাতির উল্লেখের মাধ্যমে আরও উল্লেখ করা হয়েছে কারূণ, ফেরাউন এবং হামানের কথা , যদিও এদের প্রত্যেকের পাপ ছিলো ভিন্ন প্রকৃতির কিন্তু এক বিষয়ে তারা ছিলো অভিন্ন , আর তা ছিলো তারা কেউই “শেষ দিবসের ” বিশ্বাসী ছিলো না।
আয়াতঃ 029.037
কিন্তু তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলল; অতঃপর তারা ভূমিকম্প দ্বারা আক্রান্ত হল এবং নিজেদের গৃহে উপুড় হয়ে পড়ে রইল।
And they belied him [Shu’aib (Shuaib)], so the earthquake seized them, and they lay (dead), prostrate in their dwellings.
فَكَذَّبُوهُ فَأَخَذَتْهُمُ الرَّجْفَةُ فَأَصْبَحُوا فِي دَارِهِمْ جَاثِمِينَ
Fakaththaboohu faakhathat-humu alrrajfatu faasbahoo fee darihim jathimeena
YUSUFALI: But they rejected him: Then the mighty Blast seized them, and they lay prostrate in their homes by the morning.
PICKTHAL: But they denied him, and the dreadful earthquake took them, and morning found them prostrate in their dwelling place.
SHAKIR: But they rejected him, so a severe earthquake overtook them, and they became motionless bodies in their abode.
KHALIFA: They disbelieved him and, consequently, the earthquake annihilated them; they were left dead in their homes by morning.
৩৬। মাদইয়ান সম্প্রদায়ের জন্য [ আমি ] তাদের ভ্রাতা শোয়েবকে প্রেরণ করেছিলাম। সে তখন বলেছিলো , ” হে আমার সম্প্রদায় ! আল্লাহ্র এবাদত কর এবং শেষ বিচারের দিনকে ভয় কর। পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পাপাচার করো না। ”
৩৭। কিন্তু তারা তাকে প্রত্যাখান করেছিলো। অতঃপর এক শক্তিশালী বিস্ফোরণ তাদের গ্রাস করলো ৩৪৫৮। এবং তারা প্রভাতে নিজ নিজ গৃহে নতজানু অবস্থায় পড়ে থাকলো।
৩৪৫৮। সুয়েব নবী ও মাদ্য়ানবাসীর কাহিনীর উল্লেখমাত্র এখানে করা হয়েছে। মূল কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে [ ১১ : ৮৪ – ৯৫ ] আয়াতে। তাদের পাপ ছিলো মিথ্যা প্রতারণা ও বাণিজ্যে নৈতিকতার অভাব। তাদের শাস্তি ছিলো শক্তিশালী ঝঞ্ঝা ,সম্ভবতঃ আগ্নেয়গিরির আগ্নেয়পাত। এই সূরাতে তাদের উল্লেখের কারণ তারা কাজের দ্বারা পৃথিবীতে বিপর্যয় ঘটাতো এবং সে সম্বন্ধে তাদের কোনও পাপবোধ ছিলো না , কারণ তারা ‘Ma’ad’ বা শেষ দিবসের অস্তিত্বে বিশ্বাস করতো না ; ‘Ma’ad’ বা ‘শেষ দিবস’ বা আল্লাহ্র কাছে প্রত্যাবর্তন যা এই সূরার মর্মার্থ।
এই একই প্রসঙ্গের উপরে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে আদ্ ও সামুদ জাতির উল্লেখের মাধ্যমে আরও উল্লেখ করা হয়েছে কারূণ, ফেরাউন এবং হামানের কথা , যদিও এদের প্রত্যেকের পাপ ছিলো ভিন্ন প্রকৃতির কিন্তু এক বিষয়ে তারা ছিলো অভিন্ন , আর তা ছিলো তারা কেউই “শেষ দিবসের ” বিশ্বাসী ছিলো না।
আয়াতঃ 029.038
আমি আ’দ ও সামুদকে ধ্বংস করে দিয়েছি। তাদের বাড়ী-ঘর থেকেই তাদের অবস্থা তোমাদের জানা হয়ে গেছে। শয়তান তাদের কর্মকে তাদের দৃষ্টিতে সুশোভিত করেছিল, অতঃপর তাদেরকে সৎপথ অবলম্বনে বাধা দিয়েছিল এবং তারা ছিল হুশিয়ার।
And ’Ad and Thamûd (people)! And indeed (their destruction) is clearly apparent to you from their (ruined) dwellings. Shaitân (Satan) made their deeds fair-seeming to them, and turned them away from the (Right) Path, though they were intelligent.
وَعَادًا وَثَمُودَ وَقَد تَّبَيَّنَ لَكُم مِّن مَّسَاكِنِهِمْ وَزَيَّنَ لَهُمُ الشَّيْطَانُ أَعْمَالَهُمْ فَصَدَّهُمْ عَنِ السَّبِيلِ وَكَانُوا مُسْتَبْصِرِينَ
WaAAadan wathamooda waqad tabayyana lakum min masakinihim wazayyana lahumu alshshaytanu aAAmalahum fasaddahum AAani alssabeeli wakanoo mustabsireena
YUSUFALI: (Remember also) the ‘Ad and the Thamud (people): clearly will appear to you from (the traces) of their buildings (their fate): the Evil One made their deeds alluring to them, and kept them back from the Path, though they were gifted with intelligence and skill.
PICKTHAL: And (the tribes of) A’ad and Thamud! (Their fate) is manifest unto you from their (ruined and deserted) dwellings. Satan made their deeds seem fair unto them and so debarred them from the Way, though they were keen observers.
SHAKIR: And (We destroyed) Ad and Samood, and from their dwellings (this) is apparent to you indeed; and the Shaitan made their deeds fair-seeming to them, so he kept them back from the path, though they were endowed with intelligence and skill,
KHALIFA: Similarly, ‘Aad and Thamoud (were annihilated). This is made manifest to you through their ruins. The devil had adorned their works in their eyes, and had diverted them from the path, even though they had eyes.
৩৮। [ আরও স্মরণ কর ] আ’দ ও সামুদ [জাতির ] কথা ৩৪৫৯। [ তাদের ভাগ্য ] সুস্পষ্ট রূপে তোমার নিকট প্রতিভাত হবে তাদের প্রাসাদসমূহের [ ধবংসাবশেষ ] থেকে। শয়তান তাদের কাজকে তাদের নিকট মনোমুগ্ধকর করেছিলো ৩৪৬০, এবং তাদের সৎপথ থেকে ফিরিয়ে রেখেছিলো , যদিও তারা ছিলো বুদ্ধি ও দক্ষতায় বিশেষ নেয়ামত প্রাপ্ত।
৩৪৫৯। আদ্ জাতির জন্য দেখুন [ ৭ : ৬৫ – ৭২ ] আয়াত এবং টিকা ১০৪০ এবং সামুদ জাতির জন্য দেখুন [৭ : ৭৩ – ৭৯ ] আয়াত ও টিকা ১০৪৩।
১) তাদের সভ্যতার ধবংসাবশেষ এ কথাই প্রমাণ করে যে, তারা উন্নত সভ্যতার অধিকারী ছিলো এবং তারা ছিলো জাতি হিসেবে বুদ্ধিমান ও সুদক্ষ কারিগর।
২) তারা তাদের পার্থিব সভ্যতাকে সর্বোচ্চ মনে করতো এবং সে জন্য তারা খুব গর্বিত ছিলো।
৩) তাদের ধ্বংস এ কথাই প্রমাণ করে যে, উন্নত প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও সভ্যতাই পৃথিবীতে টিকে থাকার একমাত্র মানদন্ড নয়। যারাই আল্লাহ্র দেয়া নৈতিক নীতিমালাকে লঙ্ঘন করে বা করেছিলো তাদের ধবংস ছিলো অনিবার্য।
৩৪৬০। আদ্ জাতি ছিলো উদ্ধত, অহংকারী ও আত্মতৃপ্ত। তাদের জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিলো পার্থিব জীবনের সুখ সম্ভোগ , জীবনের বৃহত্তর ও মহত্তর উদ্দেশ্যকে তারা অস্বীকার করতো। পার্থিব জীবন শেষে পরলোকের জীবনের প্রতি তারা ছিলো উদাসীন। সুতারাং তারা আল্লাহ্ নির্দ্দেশিত জীবন বিধানকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করতো। তারা নির্বোধ ছিলো না তারা ছিলো বুদ্ধিমান জাতি। সে হিসেবেও তাদের উপলব্ধি করা উচিত ছিলো যে মনুষ্য জাতি অন্যান্য প্রাণী জগতের ন্যায় নয়। মনুষ্য জাতির সৃষ্টি আল্লাহ্র বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ – যারা মৃত্যুর সাথে সাথেই শেষ হয়ে যায় না। বুদ্ধিমত্তা থাকা সত্বেও তারা এই সহজ সত্যকে অনুধাবন করতে পারে নাই , কারণ উদ্ধত , অহংকার ও আত্মতৃপ্তি তাদের সাধারণ চিন্তাধারাকে বিপথে চালিত করে। তাদের পাপ কাজকে তাদের চোখে শোভন মনে হতে থাকে। ফলে বিচক্ষণ হওয়া সত্বেও তারা সৎপথ অবলম্বন করে না, এ সত্য আদ্ জাতির জন্য যেমন ছিলো সত্য, বর্তমানেও তা সমভাবে প্রযোজ্য। যারা উদ্ধত ও অহংকারী তারা সঠিকভাবে প্রকৃত সত্যকে অনুধাবন করতে পারবে না। নিজের অন্যায় কাজকে তাদের চোখে শোভন মনে হবে। কারণ ঔদ্ধত্য ও অহংকার একটি অত্যন্ত খারাপ রীপু।
আয়াতঃ 029.039
আমি কারুন, ফেরাউন ও হামানকে ধ্বংস করেছি। মূসা তাদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে আগমন করেছিল অতঃপর তারা দেশে দম্ভ করেছিল। কিন্তু তারা জিতে যায়নি।
And (We destroyed also) Qârûn (Korah), Fir’aun (Pharaoh), and Hâmân. And indeed Mûsa (Moses) came to them with clear Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.), but they were arrogant in the land, yet they could not outstrip Us (escape Our punishment).
وَقَارُونَ وَفِرْعَوْنَ وَهَامَانَ وَلَقَدْ جَاءهُم مُّوسَى بِالْبَيِّنَاتِ فَاسْتَكْبَرُوا فِي الْأَرْضِ وَمَا كَانُوا سَابِقِينَ
Waqaroona wafirAAawna wahamana walaqad jaahum moosa bialbayyinati faistakbaroo fee al-ardi wama kanoo sabiqeena
YUSUFALI: (Remember also) Qarun, Pharaoh, and Haman: there came to them Moses with Clear Signs, but they behaved with insolence on the earth; yet they could not overreach (Us).
PICKTHAL: And Korah, Pharaoh and Haman! Moses came unto them with clear proofs (of Allah’s Sovereignty), but they were boastful in the land. And they were not winners (in the race).
SHAKIR: And (We destroyed) Qaroun and Firon and Haman; and certainly Musa came to them with clear arguments, but they behaved haughtily in the land; yet they could not outstrip (Us).
KHALIFA: Also Qaaroon, Pharaoh, and Hamaan; Moses went to them with clear signs. But they continued to commit tyranny on earth. Consequently, they could not evade (the retribution).
৩৯। [ আরও স্মরণ কর ] কারূণ , ফেরাউন ও হামানকে ৩৪৬১। মুসা তাদের নিকট স্পষ্ট প্রমাণসহ উপস্থিত হলো , তথাপি পৃথিবীতে তারা ঔদ্ধত্য করে বেড়াতে লাগলো। কিন্তু তারা [ আমাকে ] অতিক্রম করতে পারলো না।
৩৪৬১। কারূণের বিবরণের জন্য দেখুন সূরা [ ২৮ : ৭৬- ৮২ ]। ফেরাউনের কথা কোরাণ শরীফের বহুস্থানে উল্লেখ আছে ; কিন্তু হামানের সাথে উল্লেখ আছে [ ২৮ : ৬ ] আয়াতে এবং এই আয়াতে। তাদের উদ্ধত অহংকারের সাথে খোদাদ্রোহীতার উল্লেখ আছে [২৮ : ৩৮ ] আয়াতে।
আয়াতঃ 029.040
আমি প্রত্যেককেই তার অপরাধের কারণে পাকড়াও করেছি। তাদের কারও প্রতি প্রেরণ করেছি প্রস্তরসহ প্রচন্ড বাতাস, কাউকে পেয়েছে বজ্রপাত, কাউকে আমি বিলীন করেছি ভূগর্ভে এবং কাউকে করেছি নিমজ্জত। আল্লাহ তাদের প্রতি যুলুম করার ছিলেন না; কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলুম করেছে।
So We punished each (of them) for his sins, of them were some on whom We sent Hâsiban (a violent wind with shower of stones) [as the people of Lout (Lot)], and of them were some who were overtaken by AsSaihah [torment awful cry, etc. (as Thamûd or Shu’aib’s people)], and of them were some whom We caused the earth to swallow [as Qârûn (Korah)], and of them were some whom We drowned [as the people of Nûh (Noah), or Fir’aun (Pharaoh) and his people]. It was not Allâh Who wronged them, but they wronged themselves.
فَكُلًّا أَخَذْنَا بِذَنبِهِ فَمِنْهُم مَّنْ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِ حَاصِبًا وَمِنْهُم مَّنْ أَخَذَتْهُ الصَّيْحَةُ وَمِنْهُم مَّنْ خَسَفْنَا بِهِ الْأَرْضَ وَمِنْهُم مَّنْ أَغْرَقْنَا وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيَظْلِمَهُمْ وَلَكِن كَانُوا أَنفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ
Fakullan akhathna bithanbihi faminhum man arsalna AAalayhi hasiban waminhum man akhathat-hu alssayhatu waminhum man khasafna bihi al-arda waminhum man aghraqna wama kana Allahu liyathlimahum walakin kanoo anfusahum yathlimoona
YUSUFALI: Each one of them We seized for his crime: of them, against some We sent a violent tornado (with showers of stones); some were caught by a (mighty) Blast; some We caused the earth to swallow up; and some We drowned (in the waters): It was not Allah Who injured (or oppressed) them:” They injured (and oppressed) their own souls.
PICKTHAL: So We took each one in his sin; of them was he on whom We sent a hurricane, and of them was he who was overtaken by the (Awful) Cry, and of them was he whom We caused the earth to swallow, and of them was he whom We drowned. It was not for Allah to wrong them, but they wronged themselves.
SHAKIR: So each We punished for his sin; of them was he on whom We sent down a violent storm, and of them was he whom the rumbling overtook, and of them was he whom We made to be swallowed up by the earth, and of them was he whom We drowned; and it did not beseem Allah that He should be unjust to them, but they were unjust to their own souls.
KHALIFA: All those disbelievers were doomed as a consequence of their sins. Some of them we annihilated by violent winds, some were annihilated by the quake, some we caused the earth to swallow, and some we drowned. GOD is not the One who wronged them; it is they who wronged their own souls.
৪০। তাদের প্রত্যেককেই আমি তাদের অপরাধের জন্য শাস্তি দিয়েছিলাম। তাদের কারও বিরুদ্ধে প্রেরণ করেছি [ পাথর বর্ষণ সহ ] প্রচন্ড ঝটিকা ৩৪৬২ , কাউকে আঘাত করেছিলো [ প্রচন্ড ] বিস্ফোরণ ৩৪৬৩ ; কাউকে প্রোথিত করেছিলাম ভূগর্ভে ৩৪৬৪, এবং কাউকে করেছিলাম নিমজ্জিত ৩৪৬৫। আল্লাহ্ তাদের ক্ষতি [বা অত্যাচার ] করেন নাই ; তারা নিজেরাই নিজের আত্মার প্রতি ক্ষতি ও অত্যাচার করেছিলো।
৩৪৬২। ‘Hasib’ প্রস্তরসহ প্রচন্ড ঝটিকা ; দেখুন আয়াত [ ১৭ : ৬৮ ] এই শাস্তি দান করা হয়েছিলো লূতের সম্প্রদায়কে [ দেখুন ৫৪ : ৩৪ ] কোন কোন তফসীরকারে মতে এই আয়াতে উল্লেখিত এই শাস্তি দেয়া হয়েছিলো আদ্ জাতিকে। কিন্তু তাদের শাস্তির বিবরণ আছে [ ৪১ : ১৬; ৫৪ : ১৯ এবং ৬৯ : ৬ ] আয়াত সমূহে যা থেকে ধারণা করা যায় যে , আদ্ জাতির উপরে যে ভয়াবহ শাস্তি নেমে এসেছিলো সেখানে প্রস্তর বৃষ্টি ছিলো না। তা ছিলো প্রচন্ড বালির ঝঞ্ঝা। যার ফলে অন্য স্থানের বালি এসে তাদের দেশকে বালির নীচে ডুবিয়ে দেয়।
৩৪৬৩। Saihat মহানাদ বা বিস্ফোরণের প্রচন্ড ধাক্কা। দেখুন বিবরণের জন্য আয়াত [ ১১ : ৬৭ ] এবং টিকা ১৫৬১; আয়াত [ ৭ : ৭৮ ] এবং টিকা ১০৪৭; আয়াত [ ১৫ : ৭৩ ] এবং টিকা ১৯৯৬। এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে নিম্ন লিখিত জাতিসমূহের পরিণতি বর্ণনা করার জন্য।
১) সামুদ জাতি [ ১১ : ৬৭ ] ; মাদিয়ান জাতি [ ১১ : ৯৪ ]; লূতের সম্প্রদায় [ ১৫ : ৭৩ ] ; এবং হিজ্র বা পার্বত্য এলাকার অধিবাসী [ ১৫ : ৮৩ ] যা সামুদ জাতির রাজ্যের অর্ন্তগত ছিলো।
৩৪৬৪। এই শাস্তি ঘটেছিলো কারূণের বেলাতে। দেখুন [ ২৮ : ৮১ ] এবং [ ১৬ : ৪৫ ] আয়াত ও টিকা ২০৭১।
৩৪৬৫। এই শাস্তিটি ছিলো ফেরাউন , তার অনুসারীরা ও হামানের জন্য [ ২৮ : ৪০ ] এবং নূহ্ এর সময়ের দুষ্ট লোকদের ভাগ্যে [ ২৬ : ১২০ ]।
আয়াতঃ 029.041
যারা আল্লাহর পরিবর্তে অপরকে সাহায্যকারীরূপে গ্রহণ করে তাদের উদাহরণ মাকড়সা। সে ঘর বানায়। আর সব ঘরের মধ্যে মাকড়সার ঘরই তো অধিক দুর্বল, যদি তারা জানত।
The likeness of those who take Auliyâ’ (protectors and helpers) other than Allâh is as the likeness of a spider, who builds (for itself) a house, but verily, the frailest (weakest) of houses is the spider’s house; if they but knew.
مَثَلُ الَّذِينَ اتَّخَذُوا مِن دُونِ اللَّهِ أَوْلِيَاء كَمَثَلِ الْعَنكَبُوتِ اتَّخَذَتْ بَيْتًا وَإِنَّ أَوْهَنَ الْبُيُوتِ لَبَيْتُ الْعَنكَبُوتِ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ
Mathalu allatheena ittakhathoo min dooni Allahi awliyaa kamathali alAAankabooti ittakhathat baytan wa-inna awhana albuyooti labaytu alAAankabooti law kanoo yaAAlamoona
YUSUFALI: The parable of those who take protectors other than Allah is that of the spider, who builds (to itself) a house; but truly the flimsiest of houses is the spider’s house;- if they but knew.
PICKTHAL: The likeness of those who choose other patrons than Allah is as the likeness of the spider when she taketh unto herself a house, and lo! the frailest of all houses is the spider’s house, if they but knew.
SHAKIR: The parable of those who take guardians besides Allah is as the parable of the spider that makes for itself a house; and most surely the frailest of the houses is the spider’s house did they but know.
KHALIFA: The allegory of those who accept other masters beside GOD is that of the spider and her home; the flimsiest of all homes is the home of the spider, if they only knew.
৪১। আল্লাহ্ ব্যতীত যারা অন্যকে রক্ষাকর্তারূপে গ্রহণ করেছে, তাদের উপমা হচ্ছে মাকড়সা , যে [ নিজের জন্য ] ঘর তৈরী করে। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে সকল ঘরের মধ্যে মাকড়সার ঘরই সর্বাপেক্ষা দুর্বল ৩৪৬৬, ৩৪৬৭। [অবশ্য ] যদি তারা তা বুঝতে পারতো।
৩৪৬৬। মাকড়সার বাসা আল্লাহ্র সৃষ্টির এক অপূর্ব নিদর্শন। মাকড়সা তার গ্ল্যান্ড থেকে সরু সিল্কের ন্যায় সূতো বের করে বাসা বানায়। পৃথিবীতে বহু ধরণের মাকড়সা আছে, তবে সাধারণতঃ দুই ধরণের বাসা উল্লেখযোগ্য। এক ধরণের হচ্ছে ফাঁপা নলের ন্যায় বাসা বা জালের ন্যায়। এটা তাদের প্রাসাদ বা সুরক্ষিত দুর্গ। এগুলির সাথে থাকে একটি বা দুটি শিকার ধরার ফাঁদ। তবে সাধারণতঃ আমরা যে সব মাকড়সার জাল দেখি সেগুলির একটি মধ্যবিন্দু থাকে। সেই মধ্যবিন্দু কে কেন্দ্র করে চতুর্দ্দিকে কতকগুলি টানা থাকে এবং এই সব টানার সাথে মাকড়সারা তাদের জাল বোনে। এটা তাদের বাসা বা শিকারের জন্য ফাঁদ। মাকড়সার জাল বা বাসা শুধু যে শিল্পনৈপুন্যের উদাহরণ তাই নয় তা হচ্ছে মাকড়সার সম্পদ ও শক্তির নির্দ্দেশক। যদি কোন পতঙ্গ তার জালে আটকে যায়। তাহলে টানা গুলির মাধ্যমে পতঙ্গের নড়াচড়ার তরঙ্গ সর্বদিকে বিস্তারিত হয় এবং তা মাকড়সার নিকট পৌঁছায়। তখন মাকড়সা শিকারকে হত্যা করার জন্য অগ্রসর হয়। কিন্তু যদি শিকার আকারে বড় হয়, তবে মাকড়সা তার শরীরের গ্ল্যান্ড থেকে এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ শিকারের শরীরে প্রবেশ করিয়ে দেয়। ফলে শিকার মৃত্যু বরণ করে। সাধারণতঃ মাকড়সা তার জালের কেন্দ্র বিন্দুতে অবস্থান করে, অথবা পাতার আড়ালে বা ফাটলের আড়ালে লুকিয়ে থাকে , কিন্তু তার হাতে উর্ণনাভের একটি সূতো সব সময়েই থাকে যেনো শিকার জালে পড়ার সাথে সাথে সে সংবাদ পায়। এ যেনো ঠিক টেলিফোনে সংবাদ প্রাপ্তির মত। বিশেষতঃ স্ত্রী মাকড়সা পুরুষ মাকড়সার থেকে বড় হয়। আরবীতে মাকড়সার স্ত্রী বর্গ নাম [Generic gender] হচ্ছে আনকাবুত।
৩৪৬৭। এই আয়াতে ঊর্ণনাভকে ব্যবহার করা হয়েছে রূপক হিসেবে। মাকড়সার অনুপাতে তাঁর জাল অত্যন্ত মজবুত ও কৌশলপূর্ণ সন্দেহ নাই। কিন্তু বাস্তব পৃথিবীতে মাকড়সার জাল অত্যন্ত শক্তিহীন , বিশেষতঃ যখন তা বাতাসে ভেসে বেড়ায়। ঠিক সেরূপ শক্তিহীন, ও দুর্বল মানুষের পার্থিব সহায় সম্পদ, শক্তি তা যতই সুন্দর , মজবুত ও কৌশলপূর্ণ হোক না কেন ; আল্লাহ্র অসীম ক্ষমতার নিকট মানুষের সকল শক্তি, সম্পদ, কলাকৌশল অতি তুচ্ছ। মাকড়সার সুক্ষ কৌশলপূর্ণ স্থাপত্য মানুষের হাতের এক ধাক্কা সহ্য করতে পারে না। ঠিক সেরূপ সেই অসীম শক্তির নিকট মানুষের দম্ভ, অহংকার,সব কিছু মূহুর্তে ধূলিসাৎ হয়ে যায়। কিন্তু মানুষ তা বুঝতে চায় না।
আয়াতঃ 029.042
তারা আল্লাহর পরিবর্তে যা কিছুকে ডাকে, আল্লাহ তা জানেন। তিনি শক্তিশালী, প্রজ্ঞাময়।
Verily, Allâh knows what things they invoke instead of Him. He is the All-Mighty, the All-Wise.
إِنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ مَا يَدْعُونَ مِن دُونِهِ مِن شَيْءٍ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
Inna Allaha yaAAlamu ma yadAAoona min doonihi min shay-in wahuwa alAAazeezu alhakeemu
YUSUFALI: Verily Allah doth know of (every thing) whatever that they call upon besides Him: and He is Exalted (in power), Wise.
PICKTHAL: Lo! Allah knoweth what thing they invoke instead of Him. He is the Mighty, the Wise.
SHAKIR: Surely Allah knows whatever thing they call upon besides Him; and He is the Mighty, the Wise.
KHALIFA: GOD knows full well that whatever they worship beside Him are really nothing. He is the Almighty, the Most Wise.
৪২। আল্লাহ্ ব্যতীত তারা যা কিছুকে ডাকে, অবশ্যই আল্লাহ্ তা জানেন। এবং তিনি [ ক্ষমতায় ] পরাক্রমশালী , প্রজ্ঞাময় ৩৪৬৮।
৩৪৬৮। মানুষের আধ্যাত্মিক জগত যখন অন্ধকারে আচ্ছন্ন থাকে , তখন তারা আল্লাহ্র পরিবর্তে ঊর্ণনাভের মত অবাস্তব ও শক্তিহীন জিনিষে তার নির্ভরতা স্থাপন করে। উর্ণনাভ খুব সামান্য বাতাসে বা প্রাণীর পদচারণায় ধ্বংস হয়ে যায়। মাকড়সার কাছে তার জাল যতই শক্তিশালী ও নিরাপদ মনে হোক না কেন বাস্তবে তা অত্যন্ত হাল্কা ও শক্তিহীন। ঠিক সেরূপ হচ্ছে এ সব লোকের নির্ভরতার পাত্র। যদি তারা নিজেদের মঙ্গল বুঝতে না পারে, তবে তাদের উচিত ছিলো সেই মঙ্গলময় আল্লাহ্র সাহায্যের অন্বেষণ করা। তিনি সব জানেন -মানুষের দুর্বলতা, আশা-আকাঙ্খা,কার্যের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য, মিথ্যা উপাস্য ,যাদের তারা উচ্চ আসনে স্থাপন করে, সত্য ও ন্যায়কে অবহেলা করে সংসারে যারা বিপর্যয় সৃষ্টি করে এবং তাদের যারা পাপের ফাঁদে নিজেকে আবদ্ধ করেছে। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ ,জ্ঞানী এবং তিনি তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে সক্ষম। সকলকেই তাঁর কাছে ফিরে যেতে হবে।
আয়াতঃ 029.043
এ সকল উদাহরণ আমি মানুষের জন্যে দেই; কিন্তু জ্ঞানীরাই তা বোঝে।
And these similitudes We put forward for mankind, but none will understand them except those who have knowledge (of Allâh and His Signs, etc.).
وَتِلْكَ الْأَمْثَالُ نَضْرِبُهَا لِلنَّاسِ وَمَا يَعْقِلُهَا إِلَّا الْعَالِمُونَ
Watilka al-amthalu nadribuha lilnnasi wama yaAAqiluha illa alAAalimoona
YUSUFALI: And such are the Parables We set forth for mankind, but only those understand them who have knowledge.
PICKTHAL: As for these similitudes, We coin them for mankind, but none will grasp their meaning save the wise.
SHAKIR: And (as for) these examples, We set them forth for men, and none understand them but the learned.
KHALIFA: We cite these examples for the people, and none appreciate them except the knowledgeable.
৪৩। এভাবেই আমি মানব সম্প্রদায়ের জন্য উপমা , উপস্থাপন করে থাকি। কিন্তু শুধু তারাই তা বুঝতে পারে যারা জ্ঞানী ৩৪৬৯।
৩৪৬৯। কোরাণ শরীফে যেসব রূপক ব্যবহার করা হয়েছে তা অত্যন্ত সাধারণ , কিন্তু তার অন্তর্নিহিত উপদেশ অত্যন্ত গভীর ও অর্থবহ এবং মানব জীবনের সাথে এর সামঞ্জস্য খুঁজে পাবে শুধু তারাই যারা দিব্যজ্ঞানে সমৃদ্ধ কারণ তাঁরা এ ক্ষমতা লাভ করবেন আল্লাহ্র করুণায় বিধৌত হওয়ার ফলে।
আয়াতঃ 029.044
আল্লাহ যথার্থরূপে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন। এতে নিদর্শন রয়েছে ঈমানদার সম্প্রদায়ের জন্যে।
(Allâh says to His Prophet Muhammad SAW): ”Allâh (Alone) created the heavens and the earth with truth (and none shared Him in their creation).” Verily! Therein is surely a sign for those who believe.
خَلَقَ اللَّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِالْحَقِّ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَةً لِّلْمُؤْمِنِينَ
Khalaqa Allahu alssamawati waal-arda bialhaqqi inna fee thalika laayatan lilmu-mineena
YUSUFALI: Allah created the heavens and the earth in true (proportions): verily in that is a Sign for those who believe.
PICKTHAL: Allah created the heavens and the earth with truth. Lo! therein is indeed a portent for believers.
SHAKIR: Allah created the heavens and the earth with truth; most surely there is a sign in this for the believers.
KHALIFA: GOD created the heavens and the earth, truthfully. This provides a sufficient proof for the believers.
৪৪। আকাশ পৃথিবীকে আল্লাহ্ সুষমরূপে সৃষ্টি করেছেন। যারা বিশ্বাসী এ সবের মধ্যে তাদের জন্য নিদর্শন রয়েছে ৩৪৭০।
৩৪৭০। দেখুন [ ৬ : ৭৩ ] আয়াত ও টিকা ৮৯৬। ‘সুষমরূপে’ এই শব্দটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে। আল্লাহ্র সৃষ্টি কৌশল শুধু যে শিল্প সৌন্দর্যে ভরপুর তাই-ই নয়; তা অত্যন্ত সুসামঞ্জস্যপূর্ণ , সুশৃঙ্খল, কৌশলপূর্ণ এবং নির্দ্দিষ্ট উদ্দেশ্যের প্রতি অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে সমন্বিত করা হয়েছে যেনো তাঁর সৃষ্টির জন্য হয় সর্বোচ্চ মঙ্গল, জীবনোপকরণ এবং নিরাপত্তা। আকাশ , পৃথিবী এই বিশাল বিশ্বভূবন, আল্লাহ্র অসীম জ্ঞানের সাক্ষর বহন করে। অপূর্ব বিচক্ষণতায় সৃষ্ট সৃষ্টিকে তিনি লালন-পালন করে চলেছেন , সকল প্রয়োজন মিটিয়ে চলেছেন। মানুষের সনির্বন্ধ আবেদন তিনি কখনও প্রত্যাখান করেন না। যারা প্রার্থনা করে, আল্লাহ্র আনুগত্যের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে ,ঈমানকে দৃঢ় করার জন্য আল্লাহ্র অনুসন্ধান করে , তাদের জন্য আল্লাহ্র সৃষ্ট এই বিশাল বিশ্বভূবন এক জ্ঞানময় ইঙ্গিত বহন করে।
আয়াতঃ 029.045
আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর।
Recite (O Muhammad SAW) what has been revealed to you of the Book (the Qur’ân), and perform As-Salât (IqamâtasSalât). Verily, As-Salât (the prayer) prevents from Al-Fahshâ’ (i.e. great sins of every kind, unlawful sexual intercourse, etc.) and Al-Munkar (i.e. disbelief, polytheism, and every kind of evil wicked deed, etc.) and the remembering (praising, etc.) of (you by) Allâh (in front of the angels) is greater indeed [than your remembering (praising, etc.) Allâh in prayers, etc.]. And Allâh knows what you do.
اتْلُ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاء وَالْمُنكَرِ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُونَ
Otlu ma oohiya ilayka mina alkitabi waaqimi alssalata inna alssalata tanha AAani alfahsha-i waalmunkari walathikru Allahi akbaru waAllahu yaAAlamu ma tasnaAAoona
YUSUFALI: Recite what is sent of the Book by inspiration to thee, and establish regular Prayer: for Prayer restrains from shameful and unjust deeds; and remembrance of Allah is the greatest (thing in life) without doubt. And Allah knows the (deeds) that ye do.
PICKTHAL: Recite that which hath been inspired in thee of the Scripture, and establish worship. Lo! worship preserveth from lewdness and iniquity, but verily remembrance of Allah is more important. And Allah knoweth what ye do.
SHAKIR: Recite that which has been revealed to you of the Book and keep up prayer; surely prayer keeps (one) away from indecency and evil, and certainly the remembrance of Allah is the greatest, and Allah knows what you do.
KHALIFA: You shall recite what is revealed to you of the scripture, and observe the Contact Prayers (Salat), for the Contact Prayers prohibit evil and vice. But the remembrance of GOD (through Salat) is the most important objective. GOD knows everything you do.
একবিংশতিতম পারা
রুকু – ৫
৪৫। তুমি আবৃত্তি কর কিতাব থেকে যা তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয়েছে ৩৪৭১। এবং নামাজ প্রতিষ্ঠা কর, নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে। এবং নিঃসন্দেহে আল্লাহ্র স্মরণ [ জীবনের জন্য ] সর্বোৎকৃষ্ট কাজ। তোমরা [ যে কাজ ] কর , আল্লাহ্ তা জানেন।
৩৪৭১। ‘Tilawat’ কোরাণ শরীফ আবৃত্তি করার পরিবর্তে এই শব্দটি ব্যবহৃত হয়। এর অর্থ অত্যন্ত ব্যপক। এর দ্বারা যা বুঝানো হয় তা হচ্ছে :
১) উচ্চ কণ্ঠে পুণরাবৃত্তি করা বা আবৃত্তি করা এবং তা পৃথিবীর সম্মুখে প্রকাশ করা,
২) আমাদের নিজেদের আত্মিক উপকারের জন্য পড়া,
৩) এর অর্থকে হৃদয়ঙ্গম করার জন্য অন্তরে অনুভব ও উপলব্ধি করার জন্য অর্থ বুঝে পড়া ও উপলব্ধি করা প্রয়োজন [ ২ : ১২১ ] ,
৪) কোরাণের বক্তব্য আল্লাহ্র বক্তব্য; বাস্তব জীবনে এর প্রয়োগ
সুতারাং শুধু পড়ার এবং বোঝার মাধ্যমেই এর দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। কোরাণের বক্তব্যের উপরে গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করা, যদি কোরাণ শরীফ বুঝে পড়ে তার উপরে চিন্তা ভাবনা ও ধ্যান করি , তাহলেই শুধু আমাদের আধ্যাত্মিক জ্ঞানের দিগন্ত প্রসারিত হতে পারে, আমাদের জীবন ধারণ ও আশা-আকাঙ্খা আল্লাহ্র ইচ্ছার সাথে সমন্বিত হতে পারে। যখন আমরা তা করতে পারি ,তখনই আমাদের প্রার্থনা বা সালাত আমাদের জীবনের সাথে মিশে যায়, আমাদের সকল চাওয়া পাওয়া আল্লাহ্র ইচ্ছার সাথে সমন্বিত হয়ে তার স্বতঃস্ফুর্ত বাহ্যিক প্রকাশ ঘটে। তার ফলে আমাদের আত্মা পরিশুদ্ধ হয়, কারণ আমাদের সকল কাজ, পরিকল্পনা, চিন্তা-ভাবনা, কর্মের উদ্দেশ্য বা নিয়ত ,বক্তব্য অর্থ এক কথায় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র পরিশুদ্ধ হয়ে ওঠে , ফলে সকল অন্যায় অসত্য থেকে আত্মা রক্ষা পায় ও পরিশুদ্ধতা লাভ করে। এভাবে আল্লাহ্র নির্দ্দেশের বা কোরাণের বক্তব্যের চিন্তায় সমগ্র সত্তাকে আপ্লুত করার ফলে বান্দার প্রার্থনা বা সালাত তাঁকে আল্লাহ্র উপস্থিতি তাঁর হৃদয়ের মাঝে উপলব্ধিতে সাহায্য করে ফলে তার তৃতীয় নয়ন বা অন্তর্দৃষ্টি জন্মলাভ ঘটে। হৃদয়ের মাঝে আল্লাহ্র উপস্থিতির অনুভবের মাধ্যমে , অন্তরে স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে আল্লাহ্র প্রতি কৃতজ্ঞতায় মন ভরে ওঠে। আর তাই -ই হচ্ছে প্রকৃত জিক্র [Zikr] বা আল্লাহকে স্মরণ করা। মুখে আল্লাহ কে স্মরণ করে , হৃদয় যদি অন্য কথা বলে বা চিন্তা করে, তা কখনও জিক্র পর্যায়ে পড়ে না। জিকর অর্থ স্মরণ করা। স্মরণ করার অর্থ হচ্ছে যা আমাদের সম্মুখে নাই তার উপস্থিতি হৃদয়ের মাঝে ধারণ করা , মনঃচক্ষে দেখতে পাওয়া। সুতারাং প্রকৃত সালাত ও জিকর আমাদের আল্লাহ্র সান্নিধ্য উপলব্ধিতে সাহায্য করে। আর এর শুরু হচ্ছে কোরাণ পাঠে, আল্লাহ্র নির্দ্দেশের সাথে নিজস্ব চিন্তা চেতনাকে আপ্লুত করার ফলে। পরবর্তীতে চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে কর্মে। নিজেকে উপলব্ধি করা ও নিজের সত্তার মাঝে আল্লাহ্র উপস্থিতি অনুভব করার এক অনন্য পদ্ধতি হচ্ছে কোরাণ তেলাওয়াত। জীবনে এ এক পরম ও চরম পাওয়া। যদিও আল্লাহ্র উপস্থিতি সর্বত্র বিদ্যমান , কিন্তু আমাদের কর্মফলে আমরা হৃদয়ের মাঝে তাঁকে অনুভব করতে পারি না। শুধুমাত্র আল্লাহ্র বাণী বা কোরাণের বক্তব্য উপলব্ধির মাধ্যমে হৃদয়ের এই বন্ধ্যাত্ব দূর হয়।
আয়াতঃ 029.046
তোমরা কিতাবধারীদের সাথে তর্ক-বিতর্ক করবে না, কিন্তু উত্তম পন্থায়; তবে তাদের সাথে নয়, যারা তাদের মধ্যে বে-ইনসাফ। এবং বল, আমাদের প্রতি ও তোমাদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে, তাতে আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমাদের উপাস্য ও তোমাদের উপাস্য একই এবং আমরা তাঁরই আজ্ঞাবহ।
And argue not with the people of the Scripture (Jews and Christians), unless it be in (a way) that is better (with good words and in good manner, inviting them to Islâmic Monotheism with His Verses), except with such of them as do wrong, and say (to them): ”We believe in that which has been revealed to us and revealed to you; our Ilâh (God) and your Ilâh (God) is One (i.e. Allâh), and to Him we have submitted (as Muslims).”
وَلَا تُجَادِلُوا أَهْلَ الْكِتَابِ إِلَّا بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ إِلَّا الَّذِينَ ظَلَمُوا مِنْهُمْ وَقُولُوا آمَنَّا بِالَّذِي أُنزِلَ إِلَيْنَا وَأُنزِلَ إِلَيْكُمْ وَإِلَهُنَا وَإِلَهُكُمْ وَاحِدٌ وَنَحْنُ لَهُ مُسْلِمُونَ
Wala tujadiloo ahla alkitabi illa biallatee hiya ahsanu illa allatheena thalamoo minhum waqooloo amanna biallathee onzila ilayna waonzila ilaykum wa-ilahuna wa-ilahukum wahidun wanahnu lahu muslimoona
YUSUFALI: And dispute ye not with the People of the Book, except with means better (than mere disputation), unless it be with those of them who inflict wrong (and injury): but say, “We believe in the revelation which has come down to us and in that which came down to you; Our Allah and your Allah is one; and it is to Him we bow (in Islam).”
PICKTHAL: And argue not with the People of the Scripture unless it be in (a way) that is better, save with such of them as do wrong; and say: We believe in that which hath been revealed unto us and revealed unto you; our Allah and your Allah is One, and unto Him we surrender.
SHAKIR: And do not dispute with the followers of the Book except by what is best, except those of them who act unjustly, and say: We believe in that which has been revealed to us and revealed to you, and our Allah and your Allah is One, and to Him do we submit.
KHALIFA: Do not argue with the people of the scripture (Jews, Christians, and Muslims) except in the nicest possible manner – unless they transgress – and say, “We believe in what was revealed to us and in what was revealed to you, and our god and your god is one and the same; to Him we are submitters.”
৪৬। এবং কিতাব প্রাপ্তদের সাথে উত্তম পন্থা ব্যতীত তোমরা [ অযথা ] বির্তকে লিপ্ত হবে না ৩৪৭২। তবে তাদের সাথে করতে পার যারা সীমালংঘন করে ৩৪৭৩। বরং বল, ” আমাদের প্রতি ও তোমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে আমরা বিশ্বাস করি। তোমাদের উপাস্য ও আমাদের উপাস্য একই ; এবং তারই নিকট আমরা আত্মসমর্পন করছি [ ইসলামে ] ৩৪৭৪। ”
৩৪৭২। র্তকের খাতিরে র্তক করা অর্থহীন। এখানে উল্লেখ করা হয়েছে কিতাবীদের সাথে অর্থাৎ পূর্বে যারা আল্লাহ্র কিতাব প্রাপ্ত হয়েছে ; তাদের সাথে মুসলমানদের বিশ্বাসের বা ঈমানের ব্যাপারে সার্বজনীন ভিত্তি আছে। যার কথা এই আয়াতের শেষে উল্লেখ করা হয়েছে। সুতারাং তাদের ধর্মীয় ব্যাপারে কোনও বির্তক উত্তম পন্থা ব্যতীত করা উচিত নয়। উত্তম পন্থা অর্থাৎ সুসভ্য , মার্জিত , ভদ্র , সংবেদশীল ও আন্তরিক ভাবে বোঝাতে হবে। তাদের বক্তব্যে যেনো অপরের মঙ্গলের জন্য চিন্তা, সত্যের প্রকাশকে সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ পায় , নিজের জ্ঞানের জাহির করা বা আত্মপ্রচার বা নিজের কোন স্বার্থ উদ্ধারের জন্য তা করা উচিত নয়।
৩৪৭৩। সীমালঙ্ঘনকারী বা যারা ইচ্ছাকৃতভাবে সত্যকে প্রতিহত করে, এবং অন্যের দুঃখ দুর্দ্দশার কারণ হয়। এদের কথা বলা হয়েছে যে এদের কঠোর ভাবে দমন করার প্রয়োজন আছে। কারণ বিশ্বাসের ক্ষেত্রে এরা বিশ্বাসীদের সাথে একই সমতলে অবস্থান করে না। বিশ্বাসীরা [ কিতাবী জাতিরা ] সকলেই কতকগুলি সাধারণ সত্যে বিশ্বাসী। কিন্তু সীমালঙ্ঘনকারীর আল্লাহ্র প্রতি ঈমান নাই দেখেই তারা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সীমাকে লঙ্ঘন করে ও অপরের দুঃখ দুর্দ্দশার কারণ হয়। সুতারাং তাদের জন্য কোনও সার্বজনীন সত্য নাই , যাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ধৈর্য্য , সংযত ও সংবেদনশীল হতে হবে। এদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে ,যতক্ষণ না তারা অপরের ক্ষতি থেকে বিরত হয়।
৩৪৭৪। এই আয়াতটিতে ইসলাম ধর্মের মর্মার্থের বর্ণনা দেয়া হয়েছে , সমস্ত কিতাবধারীদের ইলাহ্ এক আল্লাহ্। খৃষ্টানরা তাঁকে গড্ বলে ডাকে, ইহুদীরা ডাকে জহুবা বলে। কিন্তু সেতো শুধু ভাষার পার্থক্য। আল্লাহ্ বা গড্ বা জহুবা যাই বলা হোক না কেন তিনি হচ্ছেন সর্বশক্তিমান, সারা পৃথিবীর মালিক , স্রষ্টা ও প্রতিপালক এবং সকল সৃষ্ট জীবের একমাত্র উপাস্য। সকল সৃষ্ট জীব তাঁর ইচ্ছার বা আইনের কাছে আত্মসমর্পন করবে। স্রষ্টার ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পনের অপর নাম ইসলাম। যারা তা করে তারাই মুসলমান।
আয়াতঃ 029.047
এভাবেই আমি আপনার প্রতি কিতাব অবর্তীণ করেছি। অতঃপর যাদের কে আমি কিতাব দিয়েছিলাম, তারা একে মেনে চলে এবং এদেরও (মক্কাবাসীদেরও) কেউ কেউ এতে বিশ্বাস রাখে। কেবল কাফেররাই আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে।
And thus We have sent down the Book (i.e this Qur’an) to you (O Muhammad SAW), and those whom We gave the Scripture [the Taurât (Torah) and the Injeel (Gospel) aforetime] believe therein as also do some of these (who are present with you now like ’Abdullâh bin Salâm) and none but the disbelievers reject Our Ayât [(proofs, signs, verses, lessons, etc., and deny Our Oneness of Lordship and Our Oneness of worship and Our Oneness of Our Names and Qualities: i.e. Islâmic Monotheism)].
وَكَذَلِكَ أَنزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ فَالَّذِينَ آتَيْنَاهُمُ الْكِتَابَ يُؤْمِنُونَ بِهِ وَمِنْ هَؤُلَاء مَن يُؤْمِنُ بِهِ وَمَا يَجْحَدُ بِآيَاتِنَا إِلَّا الْكَافِرُونَ
Wakathalika anzalna ilayka alkitaba faallatheena ataynahumu alkitaba yu/minoona bihi wamin haola-i man yu/minu bihi wama yajhadu bi-ayatina illa alkafiroona
YUSUFALI: And thus (it is) that We have sent down the Book to thee. So the People of the Book believe therein, as also do some of these (pagan Arabs): and none but Unbelievers reject our signs.
PICKTHAL: In like manner We have revealed unto thee the Scripture, and those unto whom We gave the Scripture aforetime will believe therein; and of these (also) there are some who believe therein. And none deny Our revelations save the disbelievers.
SHAKIR: And thus have We revealed the Book to you. So those whom We have given the Book believe in it, and of these there are those who believe in it, and none deny Our communications except the unbelievers.
KHALIFA: We have revealed to you this scripture, and those whom we blessed with the previous scripture will believe in it. Also, some of your people will believe in it. Indeed, those who disregard our revelations are the real disbelievers.
৪৭। এবং এভাবেই ৩৪৭৫ আমি তোমার নিকট কিতাব অবতীর্ণ করেছি। অতএব কিতাব প্রাপ্ত সম্প্রদায় তাতে বিশ্বাস স্থাপন করে ৩৪৭৬, এবং এদেরও [ মুশরিক আরবেরা ] কেউ কেউ আছে যারা এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে ৩৪৭৭। এবং অবিশ্বাসীরা ব্যতীত কেহই আমার নিদর্শন প্রত্যাখান করে না।
৩৪৭৫। উপরে ইসলামের মর্মার্থের যে বর্ণনা দেয়া হয়েছে এই মূলনীতির উপরে ভিত্তি করে যুগে যুগে প্রত্যাদেশ আল্লাহ্র নিকট থেকে আগত। আল্লাহ্ এক এবং অদ্বিতীয়। সুতারাং স্থান ভেদে এবং সময়ের পরিবর্তনে এক আল্লাহ্র বাণী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাসুলের নিকট প্রেরিত হতে পারে , কিন্তু তার মূলনীতির কোনও পরিবর্তন সম্ভব নয়। কারণ বিশ্বস্রষ্টা আল্লাহ্ এক জনই এবং তিনি স্থান, কাল ও পাত্রের উর্দ্ধে। বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে যে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়,তা যুগের দাবীর সাথে সামঞ্জস্য বিধান করে যুগের প্রয়োজনে যুগোপযোগী করা হয়েছে মাত্র।
৩৪৭৬। ধর্মপ্রাণ ইহুদী এবং খৃষ্টানেরা তাদের ধর্মগ্রন্থের বর্ণনা থেকে রসুলকে [ সা ] এবং তাঁর প্রচারিত ধর্মকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলো। সেই প্রেক্ষিতে কোন কোন ইহুদী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মুসলমানে রূপান্তরিত হয়। সূরা [ ২৬ : ১৯৭ ] আয়াতে এবং টিকা ৩২২৭ এ এদের বর্ণনা আছে। খৃষ্টানদের মধ্যেও ইসলামের বাণী প্রসার লাভ করতে থাকে। রাসুল [সা ] ৬ষ্ঠ বা ৭ম হিজরীতে আরবের চর্তুদ্দিকে প্রধান প্রধান দেশগুলিতে রাষ্ট্রদূত প্রেরণ করেনঃ যেমন বাইজানটাইন সাম্রাজ্যে [ কনস্টান্টিনেপ্লস ] , পারস্য সাম্রাজ্যের রাজধানীতে[ মাদাইন] , সাসানিয়ানের [Sasanian] রাজধানীতে, যাকে পশ্চিমা বিশ্ব গ্রীক নাম টেসিফোন [Ctesi phone] নামে চেনে, [ এর অবস্থান বর্তমান বাগদাদের ত্রিশ মাইল দক্ষিণে ] , সিরিয়া , আবেসিনিয়া, এবং মিশর দেশ। পারস্য ব্যতীত অন্য সকল দেশই ছিলো খৃষ্টান ধর্মালম্বী। একই সময়ে আরবের ইয়ামামাতে রাষ্ট্রদূত প্রেরণ করা হয়; যেখানে খৃষ্টধর্মালম্বী বানু হানিফা গোত্র বসবাস করতো। ইয়ামামার অবস্থান হিজাজের পূর্বে। আবেসিনিয়া ব্যতীত অন্য সমস্ত দেশই শেষ পর্যন্ত ইসলাম গ্রহণ করে। আবেসিনিয়াতে বর্তমানে বহু মুসলমান বাস করে। সাধারণ ভাবে এ কথা সত্য যে, ৭ম হিজরীতে খৃষ্টান অধ্যুষিত দেশসমূহ সম্পূর্ণরূপে ইসলামের পতাকাতলে আশ্রয় গ্রহণ করে। খৃষ্টানদের মাঝে অল্প কিছু যারা ইসলাম গ্রহণে বিরত থাকে তারা নূতন দেশে তাদের কার্যকলাপ বিস্তৃত করে। রোমান ক্যাথলিক চার্চ উত্তরের [Germanic] প্যাগানদের ধর্মান্তরিত করে। বাইজেনটাইন চার্চ পূর্বের [Slavonic] প্যাগানদের ধর্মান্তরিত করে। ১৬শ শতাব্দীতে প্রোটেস্টান চার্চ খৃষ্টান ধর্মকে নূতন ভাবে সংস্কার করে যার সাথে ইসলামের রীতিনীতির মিল খুঁজে পাওয়া যায়, যেমন , পৌরহিত্য প্রথার বিলোপ সাধন, ব্যক্তিগত দায়-দায়িত্ব , ধর্মের আনুষ্ঠানিকতা হ্রাসকরণ, জীবনের প্রাত্যহিক কর্তব্য কর্মকে সহজ রূপে রূপান্তরিত করার উপরে গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
৩৪৭৭। আরব প্যাগান বা মুশরেকরা ধীরে ধীরে ইসলামের পতাকাতলে সমবেত হয়। কেউ কেউ বলতে আরব মুশরেকদের বোঝানো হয়েছে।
আয়াতঃ 029.048
আপনি তো এর পূর্বে কোন কিতাব পাঠ করেননি এবং স্বীয় দক্ষিণ হস্ত দ্বারা কোন কিতাব লিখেননি। এরূপ হলে মিথ্যাবাদীরা অবশ্যই সন্দেহ পোষণ করত।
Neither did you (O Muhammad SAW) read any book before it (this Qur’ân), nor did you write any book (whatsoever) with your right hand. In that case, indeed, the followers of falsehood might have doubted.
وَمَا كُنتَ تَتْلُو مِن قَبْلِهِ مِن كِتَابٍ وَلَا تَخُطُّهُ بِيَمِينِكَ إِذًا لَّارْتَابَ الْمُبْطِلُونَ
Wama kunta tatloo min qablihi min kitabin wala takhuttuhu biyameenika ithan lairtaba almubtiloona
YUSUFALI: And thou wast not (able) to recite a Book before this (Book came), nor art thou (able) to transcribe it with thy right hand: In that case, indeed, would the talkers of vanities have doubted.
PICKTHAL: And thou (O Muhammad) wast not a reader of any scripture before it, nor didst thou write it with thy right hand, for then might those have doubted, who follow falsehood.
SHAKIR: And you did not recite before it any book, nor did you transcribe one with your right hand, for then could those who say untrue things have doubted.
KHALIFA: You did not read the previous scriptures, nor did you write them with your hand. In that case, the rejectors would have had reason to harbor doubts.
৪৮। এবং [ এই কিতাবের ] পূর্বে তুমি তো কোন কিতাব পড়তে [ সক্ষম ছিলে না ]। তোমার ডান হাত দ্বারা ইহা নকল করতেও [ সক্ষম ] নও ৩৪৭৮। সেক্ষেত্রেও মিথ্যুক দাম্ভিকেরা [ এতে ] সন্দেহ পোষণ করছে।
৩৪৭৮। নবী করিম ছিলেন অক্ষর জ্ঞানহীন। কোরাণ অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে, তিনি কখনও আল্লাহ্র তরফ থেকে প্রত্যাদেশ পাওয়ার দাবী করেন নাই। তিনি কখনও কোনও সত্য প্রচার করেন নাই। এ অভ্যেস তাঁর কোনও দিনও ছিলো না। তিনি লেখাপড়া জানতেন না। সুতারাং নিজ হাতে কিছু লেখার প্রশ্নই আসে না। যদি তিনি লেখাপড়া জানতেন তবে হট্কারী ব্যক্তিরা এ কথা দাবী করতো যে তিনি কোন প্রত্যাদেশ লাভ করেন নাই ; তিনি যা প্রচার করছেন তা কোন বই থেকে সংগ্রহ করা। অথবা তিনি স্বহস্তে কোরাণের সুন্দর আয়াতগুলি রচয়িতা এবং তিনি তা স্মৃতিতে ধরে রেখে প্রচার করে থাকেন। কিন্তু উম্মী নবীর [ সা ] পক্ষে এর কোনটাই সম্ভব নয়। সুতারাং উম্মী নবীর [ সা ] কাছে কোরাণের মত গ্রন্থ অবতীর্ণ হওয়াই হচ্ছে, আল্লাহ্র প্রত্যাদেশের শ্রেষ্ঠ জ্বলন্ত মোজেজা।
আয়াতঃ 029.049
বরং যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে, তাদের অন্তরে ইহা (কোরআন) তো স্পষ্ট আয়াত। কেবল বে-ইনসাফরাই আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে।
Nay, but they, the clear Ayât [i.e the description and the qualities of Prophet Muhammad SAW written like verses in the Taurât (Torah) and the Injeel (Gospel)] are preserved in the breasts of those who have been given knowledge (from the people of the Scriptures). And none but the Zâlimûn (polytheists and wrongdoers, etc.) deny Our Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.).
بَلْ هُوَ آيَاتٌ بَيِّنَاتٌ فِي صُدُورِ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ وَمَا يَجْحَدُ بِآيَاتِنَا إِلَّا الظَّالِمُونَ
Bal huwa ayatun bayyinatun fee sudoori allatheena ootoo alAAilma wama yajhadu bi-ayatina illa alththalimoona
YUSUFALI: Nay, here are Signs self-evident in the hearts of those endowed with knowledge: and none but the unjust reject Our Signs.
PICKTHAL: But it is clear revelations in the hearts of those who have been given knowledge, and none deny Our revelations save wrong-doers.
SHAKIR: Nay! these are clear communications in the breasts of those who are granted knowledge; and none deny Our communications except the unjust.
KHALIFA: In fact, these revelations are clear in the chests of those who possess knowledge. Only the wicked will disregard our revelations.
৪৯। কিন্তু যাদের জ্ঞান দেয়া হয়েছে , তাদের অন্তরে উহা উজ্জ্বল নিদর্শন স্বরূপ রয়েছে ৩৪৭৯। অন্যায়কারীরা ব্যতীত আর কেহ আমার নিদর্শন প্রত্যাখান করে না ৩৪৮০।
৩৪৭৯। ‘Ilm’ বা জ্ঞান। এই জ্ঞানের অর্থ পাঠ্য বইয়ের জ্ঞান নয়। পাঠ্যবই এর জ্ঞান হচ্ছে অর্থকরী বিদ্যা। অপরপক্ষে এ জ্ঞান হচ্ছে দিব্যজ্ঞান যার সাহায্যে ব্যক্তি প্রকৃত সত্যকে উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়। অবশ্য যারা এই দিব্যজ্ঞানের অধিকারী তারা পার্থিব ও আধ্যাত্মিক সকল ব্যাপারেই অর্ন্তদৃষ্টি সম্পন্ন হয়ে থাকেন। তারা অপরের সাহায্য ব্যতীতই আল্লাহ্র নিদর্শন ও প্রত্যাদেশ উপলব্ধি করতে সক্ষম। তারা তাদের হৃদয়,মন ও উপলব্ধির উপরে এই দায়িত্ব অর্পন করে থাকেন, বাইরের কোনও সাহায্যই তাদের প্রয়োজন হয় না। কারণ স্বয়ং আল্লাহ্ তাদের সেই জ্ঞান দানে ধন্য করেন। ‘Sadr’ অর্থাৎ বুক যার দ্বারা বোঝানো হয়েছে অন্তঃকরণ বা হৃদয় ও মন।
৩৪৮০। [২৯ : ৪৭ ] আয়াতের শেষাংশ দেখুন। সেখানে বলা হয়েছে যে, কাফেররা আল্লাহ্র নিদর্শনাবলীকে অস্বীকার করবে। এই আয়াতে আর এক ধাপ অগ্রসর হয়ে বলা হয়েছে যে, যারা জালিম বা অন্যায়কারী ও অত্যাচারী তারা আল্লাহ্র নিদর্শনকে ইচ্ছাকৃত ভাবে অস্বীকার করবে। যে কোন সৎ মানুষকে আল্লাহ্র যে নিদর্শন দৃঢ় প্রত্যয় উৎপাদন করবে, জালেম ব্যক্তি তা গ্রহণে অস্বীকার করবে। আমাদের চারিপাশে এর বহু উদাহরণ ছড়িয়ে আছে।
আয়াতঃ 029.050
তারা বলে, তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে তার প্রতি কিছু নিদর্শন অবতীর্ণ হল না কেন? বলুন, নিদর্শন তো আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আমি তো একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।
And they say: ”Why are not signs sent down to him from his Lord? Say: ”The signs are only with Allâh, and I am only a plain warner.”
وَقَالُوا لَوْلَا أُنزِلَ عَلَيْهِ آيَاتٌ مِّن رَّبِّهِ قُلْ إِنَّمَا الْآيَاتُ عِندَ اللَّهِ وَإِنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُّبِينٌ
Waqaloo lawla onzila AAalayhi ayatun min rabbihi qul innama al-ayatu AAinda Allahi wa-innama ana natheerun mubeenun
YUSUFALI: Ye they say: “Why are not Signs sent down to him from his Lord?” Say: “The signs are indeed with Allah: and I am indeed a clear Warner.”
PICKTHAL: And they say: Why are not portents sent down upon him from his Lord? Say: Portents are with Allah only, and I am but a plain warner.
SHAKIR: And they say: Why are not signs sent down upon him from his Lord? Say: The signs are only with Allah, and I am only a plain warner.
KHALIFA: They said, “If only miracles could come down to him from his Lord!” Say, “All miracles come only from GOD; I am no more than a manifest warner.”
৫০। তবুও তারা বলে, ” তাঁর প্রভুর নিকট থেকে কেন তাঁর নিকট নিদর্শন সমূহ প্রেরণ করা হয় না ? ” বল, ” নিদর্শন সমূহ আল্লাহ্র অধীনে। আমি তো একজন প্রকাশ্য সর্তককারী মাত্র। ” ৩৪৮১
৩৪৮১। পূর্বের টিকা দেখুন। পূর্বের আয়াতে [২৯ : ৪৯ ] বলা হয়েছে যে, কোরাণ নিজেই হচ্ছে আল্লাহ্র প্রেরিত অত্যাচার্য নিদর্শন। যারা নিজ আত্মাকে পাপমুক্ত রাখতে সক্ষম হয়েছে , কোরাণের বাণী তাদের মনে দৃঢ় বিশ্বাস উৎপন্ন করে। এটাও আল্লাহ্র কুদরত বা অলৌকিক নিদর্শন। এসব দর্শনেও অবিশ্বাসীদের মনে কোনও রেখাপাত করে না। তারা তাদের নির্বোধ মনের মনগড়া অলৌকিক কর্মকান্ড দর্শনে আগ্রহী। অবশ্যই আল্লাহ্ তাদের খেয়াল খুশী চরিতার্থ করতে সক্ষম। কিন্তু আল্লাহ্ তাদের নির্বুদ্ধিতায় ব্যঙ্গ কৌতুক করতে চান না কারণ আল্লাহ্ জানেন যে তারা যে দাবী করে তা তাদের বিশ্বাস বা ঈমানের পূর্বশর্ত নয়, তা হচ্ছে তাদের কপটতা বা ভান মাত্র। আল্লাহ্ তার রাসুল প্রেরণ করেছেন তাঁর নিদর্শন সমূহ পরিষ্কার ভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য এবং আল্লাহ্র হুকুম অমান্যকারীদের পরিণতি সম্বন্ধে সাবধান করার জন্য। এটাই কি যথেষ্ট নয় ?
আয়াতঃ 029.051
এটাকি তাদের জন্যে যথেষ্ট নয় যে, আমি আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছি, যা তাদের কাছে পাঠ করা হয়। এতে অবশ্যই বিশ্বাসী লোকদের জন্যে রহমত ও উপদেশ আছে।
Is it not sufficient for them that We have sent down to you the Book (the Qur’ân) which is recited to them? Verily, herein is mercy and a reminder (or an admonition) for a people who believe.
أَوَلَمْ يَكْفِهِمْ أَنَّا أَنزَلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ يُتْلَى عَلَيْهِمْ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَرَحْمَةً وَذِكْرَى لِقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
Awa lam yakfihim anna anzalna AAalayka alkitaba yutla AAalayhim inna fee thalika larahmatan wathikra liqawmin yu/minoona
YUSUFALI: And is it not enough for them that we have sent down to thee the Book which is rehearsed to them? Verily, in it is Mercy and a Reminder to those who believe.
PICKTHAL: Is it not enough for them that We have sent down unto thee the Scripture which is read unto them? Lo! herein verily is mercy, and a reminder for folk who believe.
SHAKIR: Is it not enough for them that We have revealed to you the Book which is recited to them? Most surely there is mercy in this and a reminder for a people who believe.
KHALIFA: Is it not enough of a miracle that we sent down to you this book, being recited to them? This is indeed a mercy and a reminder for people who believe.
৫১। এবং তাদের জন্য এটাই কি যথেষ্ট নয় যে, আমি তোমার প্রতি কিতাব প্রেরণ করেছি, যা তাদের নিকট পাঠ করা হয়। এতে অবশ্যই অনুগ্রহ ও উপদেশ রয়েছে তাদের জন্য যারা, বিশ্বাস করে ৩৪৮২।
৩৪৮২। আল্-কোরাণ হচ্ছে প্রাঞ্জল কিতাব ; যার বাণী সমূহ আল্লাহ্র রাসুল পরিষ্কার ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। এই কিতাব ও বিশ্ব চরাচরে আল্লাহ্র যে অনুগ্রহ ছড়ানো আছে, যারা মুমিন তাদের মনে দৃঢ় প্রত্যয় উৎপাদনের জন্য তাই-ই যথেষ্ট। আকাশ , বাতাস, বিশ্বচরাচরের সকল প্রাণ তারই অনুগ্রহের ফল। এর পরেও যারা অন্য কোন অলৌকিক নিদর্শনের অন্বেষণ করে , তারা নিজ আত্মার নিকট অবিশ্বস্ত এবং তারা অহমিকা প্রদর্শনের জন্যই তা করে থাকে। আরও দেখুন [ ৬ : ১২৪ ] আয়াত এবং টিকা ৯৪৬।
আয়াতঃ 029.052
বলুন, আমার মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে আল্লাহই সাক্ষীরূপে যথেষ্ট। তিনি জানেন যা কিছু নভোমন্ডলে ও ভূ-মন্ডলে আছে। আর যারা মিথ্যায় বিশ্বাস করে ও আল্লাহকে অস্বীকার করে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।
Say (to them O Muhammad SAW): ”Sufficient is Allâh for a witness between me and you. He knows what is in the heavens and on earth.” And those who believe in Bâtil (all false deities other than Allâh), and disbelieve in Allâh and (in His Oneness), it is they who are the losers.
قُلْ كَفَى بِاللَّهِ بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ شَهِيدًا يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَالَّذِينَ آمَنُوا بِالْبَاطِلِ وَكَفَرُوا بِاللَّهِ أُوْلَئِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ
Qul kafa biAllahi baynee wabaynakum shaheedan yaAAlamu ma fee alssamawati waal-ardi waallatheena amanoo bialbatili wakafaroo biAllahi ola-ika humu alkhasiroona
YUSUFALI: Say: “Enough is Allah for a witness between me and you: He knows what is in the heavens and on earth. And it is those who believe in vanities and reject Allah, that will perish (in the end).
PICKTHAL: Say (unto them, O Muhammad): Allah sufficeth for witness between me and you. He knoweth whatsoever is in the heavens and the earth. And those who believe in vanity and disbelieve in Allah, they it is who are the losers.
SHAKIR: Say: Allah is sufficient as a witness between me and you; He knows what is in the heavens and the earth. And (as for) those who believe in the falsehood and disbelieve in Allah, these it is that are the losers.
KHALIFA: Say, “GOD suffices as a witness between me and you. He knows everything in the heavens and the earth. Surely, those who believe in falsehood and disbelieve in GOD are the real losers.”
রুকু – ৬
৫২। বল, ” আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসেবে আল্লাহ্ই যথেষ্ট। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা আছে তা তিনি অবগত ৩৪৮৩। যারা অহংকারে বিশ্বাসী এবং আল্লাহ্কে প্রত্যাখান করে এরাই তারা যারা [ শেষ পর্যন্ত ] ধ্বংস হয়ে যাবে ৩৪৮৪। ”
৩৪৮৩। কোরাণ যে আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ তার জ্বলন্ত প্রমাণ হচ্ছে, রাসুলের [ সা ] জীবন ও তাঁর শিক্ষা। কোন প্রতারণা বা মিথ্যা আল্লাহ্র দুনিয়াতে শেষ পর্যন্ত স্থায়িত্ব লাভ করবে না। এই-ই আল্লাহ্র বিধান। কারণ আকাশ ও পৃথিবীতে যা ঘটে, মানুষের মনের অভ্যন্তরের চিন্তা -ভাবনা সবই তিনি জ্ঞাত আছেন। প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য কিছুই তাঁর অগোচরে থাকে না।
৩৪৮৪। পৃথিবীতে আল্লাহ্র বিধান হচ্ছে শেষ পর্যন্ত সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে এবং মিথ্যা ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু যারা সত্যকে প্রতিহত করে এর দ্বারা সত্যের প্রচার বা প্রসারে কোনও ক্ষতি হয় না। ক্ষতি হয় যারা সত্যকে প্রতিহত করে , কারণ তাদের শেষ পরিণতি ধ্বংস।
আয়াতঃ 029.053
তারা আপনাকে আযাব ত্বরান্বিত করতে বলে। যদি আযাবের সময় নির্ধারিত না থাকত, তবে আযাব তাদের উপর এসে যেত। নিশ্চয়ই আকস্মিকভাবে তাদের কাছে আযাব এসে যাবে, তাদের খবরও থাকবে না।
And they ask you to hasten on the torment (for them), and had it not been for a term appointed, the torment would certainly have come to them. And surely, it will come upon them suddenly while they perceive not!
وَيَسْتَعْجِلُونَكَ بِالْعَذَابِ وَلَوْلَا أَجَلٌ مُّسَمًّى لَجَاءهُمُ الْعَذَابُ وَلَيَأْتِيَنَّهُم بَغْتَةً وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ
WayastaAAjiloonaka bialAAathabi walawla ajalun musamman lajaahumu alAAathabu walaya/tiyannahum baghtatan wahum la yashAAuroona
YUSUFALI: They ask thee to hasten on the Punishment (for them): had it not been for a term (of respite) appointed, the Punishment would certainly have come to them: and it will certainly reach them,- of a sudden, while they perceive not!
PICKTHAL: They bid thee hasten on the doom (of Allah). And if a term had not been appointed, the doom would assuredly have come unto them (ere now). And verily it will come upon them suddenly when they perceive not.
SHAKIR: And they ask you to hasten on the chastisement; and had not a term been appointed, the chastisement would certainly have come to them; and most certainly it will come to them all of a sudden while they will not perceive.
KHALIFA: They challenge you to bring the retribution! If it were not for a predetermined appointment, the retribution would have come to them immediately. Certainly, it will come to them suddenly, when they least expect it.
৫৩। তারা তোমাকে [তাদের জন্য ] শাস্তিকে ত্বরাণ্বিত করতে বলে যদি নির্ধারিত কাল [ অবকাশ ] না থাকতো , তবে ৩৪৮৫ শাস্তি তাদের উপরে অবশ্যই আসতো। তারা কিছু উপলব্ধি করার আগেই , উহাদের উপরে আকস্মিক ভাবে অবশ্যই শাস্তি এসে পড়বে।
৩৪৮৫। দেখুন আয়াত [ ২২ : ৪৭ ] এবং টিকা ২৮২৬। অবিশ্বাসীরা ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করে আল্লাহকে প্রতিদ্বন্দিতায় আহ্বান করে যে, ” যদি পার তবে আল্লাহ্র শাস্তিকে ত্বরান্বিত কর, আমরা দেখি।” কিন্তু এসব মূর্খদের প্রতিদ্বন্দিতায় আল্লাহ্ তাঁর পরিকল্পনার পরিবর্তন করতে পারেন না। পৃথিবী সৃষ্টির আদি লগ্ন থেকে আল্লাহ্র সমস্ত সৃষ্টি এক নির্দ্দিষ্ট উদ্দেশ্যের প্রতি ধাবিত হচ্ছে। আল্লাহ্র এই পরিকল্পনায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই এক “নির্ধারিত কাল” মঞ্জুর করা হয়েছে। অবিশ্বাসীদের ব্যঙ্গ-বিদ্রূপে আল্লাহ্ তাঁর পরিবর্তন করেন না। বরং এটা তাঁর দয়া ও অনুগ্রহ যে, তিনি পাপীদের অবকাশ দেন, অনুতাপের মাধ্যমে আত্মসংশোধনের। যদি তারা অনুতপ্ত হয়ে আত্ম সংশোধন না করে , তবে তাদের শেষ পরিণতি হবে ধ্বংস। তাদের উপরে আপতিত এই শাস্তি আসবে, ‘হঠাৎ করে’ , তারা কিছু বুঝে ওঠার পূর্বেই। সে সময়ে আর অনুতাপ করার সময় থাকবে না।
আয়াতঃ 029.054
তারা আপনাকে আযাব ত্বরান্বিত করতে বলে; অথচ জাহান্নাম কাফেরদেরকে ঘেরাও করছে।
They ask you to hasten on the torment. And verily! Hell, of a surety, will encompass the disbelievers.
يَسْتَعْجِلُونَكَ بِالْعَذَابِ وَإِنَّ جَهَنَّمَ لَمُحِيطَةٌ بِالْكَافِرِينَ
YastaAAjiloonaka bialAAathabi wa-inna jahannama lamuheetatun bialkafireena
YUSUFALI: They ask thee to hasten on the Punishment: but, of a surety, Hell will encompass the Rejecters of Faith!-
PICKTHAL: They bid thee hasten on the doom, when lo! hell verily will encompass the disbelievers
SHAKIR: They ask you to hasten on the chastisement, and most surely hell encompasses the unbelievers;
KHALIFA: They challenge you to bring retribution! Hell already surrounds the disbelievers.
৫৪। তারা তোমাকে শাস্তিকে ত্বরান্বিত করতে বলে ৩৪৮৬। কিন্তু এটা নিশ্চিত যে জাহান্নাম তো কাফেরদের পরিবেষ্টন করবেই।
৩৪৮৬। পাপী ও মন্দদের আল্লাহ্র প্রতি নির্ভিক ও দুঃসাহসিক প্রতিদ্বন্দীতার উত্তর দেয়া হয়েছে পূর্বের আয়াতে। সেখানে শাস্তির ঊল্লেখের সাথে বলা হয়েছে করুণাময় আল্লাহ্র পাপীদের অনুতাপের সুযোগ ও সময় দানের কথা। এই আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে পাপীরা যদি অবকাশের সদ্ব্যবহার না করে, যদি অনুতাপের মাধ্যমে নিজেকে সংশোধন না করে, তবে তাদের জন্য শাস্তি অবশ্যম্ভাবী এবং সে শাস্তি তাদের চতুর্দ্দিক থেকে ঘিরে ধরবে।
আয়াতঃ 029.055
যেদিন আযাব তাদেরকে ঘেরাও করবে মাথার উপর থেকে এবং পায়ের নীচ থেকে। আল্লাহ বললেন, তোমরা যা করতে, তার স্বাদ গ্রহণ কর।
On the Day when the torment (Hell-fire) shall cover them from above them and from underneath their feet, and it will be said: ”Taste what you used to do.”
يَوْمَ يَغْشَاهُمُ الْعَذَابُ مِن فَوْقِهِمْ وَمِن تَحْتِ أَرْجُلِهِمْ وَيَقُولُ ذُوقُوا مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
Yawma yaghshahumu alAAathabu min fawqihim wamin tahti arjulihim wayaqoolu thooqoo ma kuntum taAAmaloona
YUSUFALI: On the Day that the Punishment shall cover them from above them and from below them, and (a Voice) shall say: “Taste ye (the fruits) of your deeds!”
PICKTHAL: On the day when the doom will overwhelm them from above them and from underneath their feet, and He will say: Taste what ye used to do!
SHAKIR: On the day when the chastisement shall cover them from above them, and from beneath their feet; and He shall say: Taste what you did.
KHALIFA: The day will come when the retribution overwhelms them, from above them and from beneath their feet; He will say, “Taste the consequences of your works.”
৫৫। সেই দিন শাস্তি তাদের আচ্ছন্ন করবে তাদের উর্দ্ধ ও অধঃদেশ থেকে ৩৪৮৭ ; এবং [ একটি কণ্ঠস্বর ] বলবে; ” তোমাদের কাজের [ প্রতিফল ] আস্বাদন কর ৩৪৮৮। ”
৩৪৮৭। দেখুন অনুরূপ আয়াত [ ৬ : ৬৫ ]।
৩৪৮৮। নিউটনের সূত্র অনুযায়ী “Every action there is an equal and opposite reaction”। এ কথা শুধু যে পদার্থ বিদ্যায় জড় পর্দাথের বেলাতে প্রযোজ্য তাই নয় , এ কথা জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য, এমনকি আধ্যাত্মিক জীবনের প্রতিও তা প্রযোজ্য। সুতারাং এই আয়াতে ” তোমাদের কাজের প্রতিফল আস্বাদন কর ” বাক্যটি কোনও তীব্র ভৎর্সনা নয়, পাপীদের কর্মফলের উল্লেখ করা হয়েছে। পাপ কাজ তাদের আত্মার স্বচ্ছতাকে ঢেকে দেয় – আত্মা পাপের অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। সুতারাং আত্মার অন্ধত্ব তাদেরই কর্মফল বই আর কিছু নয়। এ ব্যাপারে তারা আর কাউকে দোষারোপ করতে পারবে না। দয়াময় আল্লাহ্ তাদের বারে বারে সুযোগ দান করেছেন , কিন্তু তারা তা গ্রহণ করে নাই, সুতারাং আল্লাহ্র ন্যায় বিচার বা আইন এখন প্রযোজ্য হবেই।
আয়াতঃ 029.056
হে আমার ঈমানদার বান্দাগণ, আমার পৃথিবী প্রশস্ত। অতএব তোমরা আমারই এবাদত কর।
O My slaves who believe! Certainly, spacious is My earth. Therefore worship Me (Alone).”
يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ أَرْضِي وَاسِعَةٌ فَإِيَّايَ فَاعْبُدُونِ
Ya AAibadiya allatheena amanoo inna ardee wasiAAatun fa-iyyaya faoAAbudooni
YUSUFALI: O My servants who believe! truly, spacious is My Earth: therefore serve ye Me – (and Me alone)!
PICKTHAL: O my bondmen who believe! Lo! My earth is spacious. Therefor serve Me only.
SHAKIR: O My servants who believe! surely My earth is vast, therefore Me alone should you serve.
KHALIFA: O My servants who believed, My earth is spacious, so worship Me.
৫৬। হে আমার বিশ্বাসী বান্দাগণ ! সত্যই আমার পৃথিবী প্রশস্ত ৩৪৮৯। সুতারাং তোমরা [ কেবলমাত্র ] আমারই এবাদত কর।
৩৪৮৯। যখন কোন সমাজ পাপে আসক্ত হয় এবং পাপের পঙ্কে পুরো সমাজ ডুবে যায় , অন্যায়, অবিচারে সারাটা দেশ ভরে যায়, সে অবস্থায় একজন মোমেন বান্দার কি করা কর্তব্য সে সম্বন্ধে বলা হয়েছে এখানে। এ কথা বা ওজর আল্লাহ্র নিকট গ্রহণযোগ্য হবে না যে, মন্দ পরিবেশের কারণে বা যে যুগে সে বাস করেছে সেই যুগের প্রভাব তার পক্ষে অতিক্রম করা সম্ভব ছিলো না। যা মন্দ ,যা পাপ তা সব সময়ে সর্ব অবস্থাতেই পরিহার করতে হবে, এবং ভালো এবং পূণ্যের অন্বেষণ করতে হবে। কেউ যদি তা করতে চায় তবে তার জন্য আল্লাহ্র দুনিয়া অত্যন্ত প্রশস্ত। যদি কারও ইচ্ছা , ধৈর্য , একাগ্রতা ও অধ্যাবসায় থাকে তবে অবশ্যই যে কোনও পরিবেশে যে কোনও স্থানে ও সময়ে তার পক্ষে পাপকে ও মন্দকে পরিহার করা সম্ভব। হয়তো পাপকে পরিহার করার জন্য আমাদের স্থান পরিবর্তন [ হিজরত ] করতে হবে : নিজস্ব গ্রাম বা শহর বা দেশ। আবার এমনও ঘটতে পারে যে, প্রতিবেশী বা বন্ধুবান্ধব, অথবা আমাদের বদভ্যাস বা সমাজে আমাদের অবস্থান অথবা সমাজে আমাদের আদান-প্রদানের অভ্যাস ইত্যাদি পরিবর্তনের [ এও একধরণের হিজরত ] মাধ্যমেও আমরা পাপের পথকে পরিহার করতে পারি। যদি প্রয়োজন হয় ধর্মের জন্য, নিজের ঈমানকে সুসংহত সঠিক পথে রাখার জন্য নিজ জন্মভূমি ত্যাগ [ হিজরত ] করার নির্দ্দেশও আছে, যে ভাবে আমাদের প্রিয় নবী [সা ] করেছিলেন। আল্লাহ্ আমাদের প্রত্যেককে তাঁর নেয়ামতের কিছু না কিছু দ্বারা ধন্য করেছেন, যেনো আমরা তাঁর বিধান অনুযায়ী সঠিক পথে জীবনকে পরিচালিত করতে পারি। যদি আমরা তা না পারি তবে তা আমাদেরই অক্ষমতা।
আয়াতঃ 029.057
জীবমাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। অতঃপর তোমরা আমারই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে।
Everyone shall taste the death. Then unto Us you shall be returned.
كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ ثُمَّ إِلَيْنَا تُرْجَعُونَ
Kullu nafsin tha-iqatu almawti thumma ilayna turjaAAoona
YUSUFALI: Every soul shall have a taste of death in the end to Us shall ye be brought back.
PICKTHAL: Every soul will taste of death. Then unto Us ye will be returned.
SHAKIR: Every soul must taste of death, then to Us you shall be brought back.
KHALIFA: Everyone will taste death, then to us you will be ultimately returned.
৫৭। প্রতিটি আত্মাই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে ৩৪৯০। সবশেষে তোমাদের আমার নিকট ফিরিয়ে আনা হবে।
৩৪৯০। দেখুন [ ৩ : ১৮৫ ] আয়াত ও টিকা ৪৯১ এবং আয়াত [ ২১ : ৩৫ ] ও টিকা ২৬৯৭। আত্মা অমর, সে পরমাত্মার অংশ। এই নশ্বর দেহের খাঁচায় তা আবদ্ধ করে এই পৃথিবীতে আমাদের প্রেরণ করা হয়, এক নির্দ্দিষ্ট সময় অতিক্রম করার জন্য। সেই সময় শেষে এই দেহ থেকে আত্মা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং দেহ ধ্বংস হয়ে যাবে। এই হচ্ছে মৃত্যুর সংজ্ঞা – যে কারণে বলা হয়েছে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে, মৃত্যু নয়। অর্থাৎ দৈহিক মৃত্যুর স্বাদ অমর আত্মা লাভ করবে। মৃত্যুর পরে আমাদের আত্মাসমূহ আল্লাহ্র কাছে নীত হবে। উপরের টিকাতে যে বিভিন্ন রকম হিজরতের কথা বলা হয়েছে : দৈহিক বা আধ্যাত্মিক , সে ভাবে বিচার করলে মৃত্যুও এক ধরণের হিজরত বৈকি। এই চেনা পৃথিবী ত্যাগ করে আত্মা অন্য ভূবনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। মৃত্যু অর্থ যদি তাই-ই হয়, তবে পূণ্যাত্মাদের ভয় কিসের ?
আয়াতঃ 029.058
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে জান্নাতের সুউচ্চ প্রাসাদে স্থান দেব, যার তলদেশে প্রস্রবণসমূহ প্রবাহিত। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। কত উত্তম পুরস্কার কর্মীদের।
And those who believe (in the Oneness of Allâh Islâmic Monotheism) and do righteous good deeds, to them We shall surely give lofty dwellings in Paradise, underneath which rivers flow, to live therein forever. Excellent is the reward of the workers.
وَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَنُبَوِّئَنَّهُم مِّنَ الْجَنَّةِ غُرَفًا تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا نِعْمَ أَجْرُ الْعَامِلِينَ
Waallatheena amanoo waAAamiloo alssalihati lanubawwi-annahum mina aljannati ghurafan tajree min tahtiha al-anharu khalideena feeha niAAma ajru alAAamileena
YUSUFALI: But those who believe and work deeds of righteousness – to them shall We give a Home in Heaven,- lofty mansions beneath which flow rivers,- to dwell therein for aye;- an excellent reward for those who do (good)!-
PICKTHAL: Those who believe and do good works, them verily We shall house in lofty dwellings of the Garden underneath which rivers flow. There they will dwell secure. How sweet the guerdon of the toilers,
SHAKIR: And (as for) those who believe and do good, We will certainly give them abode in the high places in gardens beneath which rivers flow, abiding therein; how good the reward of the workers:
KHALIFA: Those who believe and lead a righteous life, we will surely settle them in Paradise, with mansions and flowing streams. Eternally they abide therein. What a beautiful reward for the workers.
৫৮। কিন্তু যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে ,তাদের আমি বেহেশতে বাসস্থান দিব, ৩৪৯১, [ যা হবে ] সুউচ্চ প্রাসাদ যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত – যেখানে তারা চিরদিন থাকবে। যারা [ ভালো ] কাজ করে তাদের জন্য উত্তম পুরষ্কার –
৫৯। যারা [ বিপদে ] ধৈর্য্যের সাথে অধ্যবসায়ী হয় এবং তাদের প্রভু এবং প্রতিপালকের উপরে তাদের আস্থা স্থাপন করে।
৩৪৯১। পরলোকে সুন্দর প্রাসাদের কথা পূর্বেও উল্লেখ করা হয়ছে আয়াত [ ১৬ : ৪১ ]। সেখানে বলা হয়েছে পরলোকের প্রাসাদ উত্তম হবে যা মানুষের কল্পনারও বাইরে। এখানে প্রাসাদ শব্দটি রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। প্রাসাদ শব্দটি বেহেশতের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়েছে। বেহেশত্ হবে ছবির মত মনোরম স্থান। যার প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং মৃদু স্বরে কুলুকুলু ধ্বনি সহযোগে প্রবাহিত ছোট নদী এক মহিমান্বিত অত্যুচ্চ দৃশ্যের অবতারণা করবে। আর সেখানে আত্মার অবস্থান হবে অনন্তকালের জন্য।
আয়াতঃ 029.059
যারা সবর করে এবং তাদের পালনকর্তার উপর ভরসা করে।
Those who are patient, and put their trust (only) in their Lord (Allâh).
الَّذِينَ صَبَرُوا وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ
Allatheena sabaroo waAAala rabbihim yatawakkaloona
YUSUFALI: Those who persevere in patience, and put their trust, in their Lord and Cherisher.
PICKTHAL: Who persevere, and put their trust in their Lord!
SHAKIR: Those who are patient, and on their Lord do they rely.
KHALIFA: They are the ones who steadfastly persevere, and trust in their Lord.
৫৮। কিন্তু যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে ,তাদের আমি বেহেশতে বাসস্থান দিব, ৩৪৯১, [ যা হবে ] সুউচ্চ প্রাসাদ যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত – যেখানে তারা চিরদিন থাকবে। যারা [ ভালো ] কাজ করে তাদের জন্য উত্তম পুরষ্কার –
৫৯। যারা [ বিপদে ] ধৈর্য্যের সাথে অধ্যবসায়ী হয় এবং তাদের প্রভু এবং প্রতিপালকের উপরে তাদের আস্থা স্থাপন করে।
৩৪৯১। পরলোকে সুন্দর প্রাসাদের কথা পূর্বেও উল্লেখ করা হয়ছে আয়াত [ ১৬ : ৪১ ]। সেখানে বলা হয়েছে পরলোকের প্রাসাদ উত্তম হবে যা মানুষের কল্পনারও বাইরে। এখানে প্রাসাদ শব্দটি রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। প্রাসাদ শব্দটি বেহেশতের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়েছে। বেহেশত্ হবে ছবির মত মনোরম স্থান। যার প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং মৃদু স্বরে কুলুকুলু ধ্বনি সহযোগে প্রবাহিত ছোট নদী এক মহিমান্বিত অত্যুচ্চ দৃশ্যের অবতারণা করবে। আর সেখানে আত্মার অবস্থান হবে অনন্তকালের জন্য।
আয়াতঃ 029.060
এমন অনেক জন্তু আছে, যারা তাদের খাদ্য সঞ্চিত রাখে না। আল্লাহই রিযিক দেন তাদেরকে এবং তোমাদেরকেও। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
And so many a moving (living) creature there is, that carries not its own provision! Allâh provides for it and for you. And He is the All-Hearer, the AllKnower.
وَكَأَيِّن مِن دَابَّةٍ لَا تَحْمِلُ رِزْقَهَا اللَّهُ يَرْزُقُهَا وَإِيَّاكُمْ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
Wakaayyin min dabbatin la tahmilu rizqaha Allahu yarzuquha wa-iyyakum wahuwa alssameeAAu alAAaleemu
YUSUFALI: How many are the creatures that carry not their own sustenance? It is Allah who feeds (both) them and you: for He hears and knows (all things).
PICKTHAL: And how many an animal there is that beareth not its own provision! Allah provideth for it and for you. He is the Hearer, the Knower.
SHAKIR: And how many a living creature that does not carry its sustenance: Allah sustains it and yourselves; and He is the Hearing, the Knowing.
KHALIFA: Many a creature that does not carry its provision, GOD provides for it, as well as for you. He is the Hearer, the Omniscient.
৬০। কত রকম প্রাণী [ পৃথিবীতে ] রয়েছে যারা তাদের জীবনোপকরণ [ জমা করে ] রাখে না ৩৪৯২ আল্লাহ্ই তাদের এবং তোমাদের [ উভয়কেই ] আহার দান করেন। নিশ্চয়ই তিনি [ সব কিছু ] শোনেন এবং জানেন।
৩৪৯২। বিহঙ্গকূল যখন প্রভাতে তাদের নীড় ত্যাগ করে আকাশে ডানা মেলে ,সে জানে না তার খাদ্য কোথায় সঞ্চিত আছে। কিন্তু দিন শেষে সে যখন তার নীড়ে ফেরে , তার উদর থাকে পরিপূর্ণ এবং সে থাকে তৃপ্ত। এ কথা আল্লাহ্র সৃষ্ট সকল প্রাণীর জন্য প্রযোজ্য। এমন অনেক প্রাণী আছে যারা প্রকৃত পক্ষেই অসহায় এবং শত্রু দ্বারা পরিবেষ্টিত ; তবুও তারা পৃথিবী থেকে খাদ্য ও আশ্রয়ের অভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় না। আল্লাহ্ তাদের রক্ষা করার জন্য প্রকৃতির বুকে নানা কৌশলের সৃষ্টি করে রেখেছেন। একটু চিন্তা করলে দেখা যায় মানব শিশু পৃথিবীতে সবচেয়ে অসহায় অবস্থায় জন্ম লাভ করে। পূর্ণ বয়স্ক হতে মানব শিশুর অন্তঃত পক্ষে প্রায় বিশ বৎসর প্রয়োজন হয়। এই সুদীর্ঘকাল তার প্রতিপালনের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়ের প্রয়োজন হয়। কি সুকৌশলে স্রষ্টা বিবাহের মাধ্যমে স্নেহশীল পিতামাতার গৃহে মানব শিশুকে প্রতিপালন করেন। এ কথাটিই কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এ ভাবে লিখেছেন,
” পিতার বক্ষে রেখেছ মোরে,
জনম দিয়েছ জননী ক্রোড়ে,
বেধেছ সখার প্রণয়ডোরে
তুমি ধন্য ধন্য হে।
তোমার গৃহে পালিছ স্নেহে
তুমি ধন্য ধন্য হে। ”
সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ বিশ্বচরাচরের সকল প্রাণীর আহার বাসস্থানের ও নিরাপত্তার সুবন্দোবস্ত করে থাকেন। আল্লাহ্ সকলের প্রার্থনা শোনেন, সকলের মনের ইচ্ছা পূরণ করেন, তিনি সকলের প্রয়োজন জানেন এবং তিনি জানেন কি কৌশলে তাদের এই প্রয়োজন মেটাতে হবে।
সুতারাং এত বিরাট বিশাল মহান যে রক্ষাকর্তা তাঁর অধীনে নিজেকে সম্পূর্ণ সমর্পন করে আল্লাহ্র রাস্তায় কাজ করার জন্য নিগৃহীত হতে বা স্বদেশ জন্মভূমি ত্যাগ করে হিজরত করতে ভয় কিসের ? তিনি তো সর্বশ্রোতা , সর্বজ্ঞ।
আয়াতঃ 029.061
যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, কে নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছে, চন্দ্র ও সূর্যকে কর্মে নিয়োজিত করেছে? তবে তারা অবশ্যই বলবে আল্লাহ। তাহলে তারা কোথায় ঘুরে বেড়াচ্ছে?
If you were to ask them: ”Who has created the heavens and the earth and subjected the sun and the moon?” They will surely reply: ”Allâh.” How then are they deviating (as polytheists and disbelievers)?
وَلَئِن سَأَلْتَهُم مَّنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ لَيَقُولُنَّ اللَّهُ فَأَنَّى يُؤْفَكُونَ
Wala-in saaltahum man khalaqa alssamawati waal-arda wasakhkhara alshshamsa waalqamara layaqoolunna Allahu faanna yu/fakoona
YUSUFALI: If indeed thou ask them who has created the heavens and the earth and subjected the sun and the moon (to his Law), they will certainly reply, “Allah”. How are they then deluded away (from the truth)?
PICKTHAL: And if thou wert to ask them: Who created the heavens and the earth, and constrained the sun and the moon (to their appointed work)? they would say: Allah. How then are they turned away?
SHAKIR: And if you ask them, Who created the heavens and the earth and made the sun and the moon subservient, they will certainly say, Allah. Whence are they then turned away?
KHALIFA: If you ask them, “Who created the heavens and the earth, and put the sun and the moon in your service,” they will say, “GOD.” Why then did they deviate?
৬১। যদি তুমি তাদের জিজ্ঞাসা কর, ৩৪৯৩ ” কে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং সূর্য এবং চন্দ্রকে [ তাঁর আইনের ] অধীন করেছেন ?” ৩৪৯৪ তারা অবশ্যই উত্তর দেবে , ” আল্লাহ্ “। তাহলে কিভাবে তারা [ সত্য থেকে ] প্রতারিত হচ্ছে ?
৩৪৯৩। অনুরূপ আয়াত দেখুন [ ২৩ : ৮৪ – ৮৯ ]। এই উভয় সূরার আয়াতে ‘তাদের দ্বারা সেই সব লোককে বোঝানো হয়েছে যারা অসঙ্গত ও আত্মবিরোধী। এরা সৃষ্টির মাঝে আল্লাহ্ ক্ষমতা অনুভব করে সত্য , কিন্তু এদের আল্লাহ্র আইন অমান্য করার প্রবণতা ও আল্লাহ্র নিদর্শনকে অশ্রদ্ধা করার প্রবণতা থাকে, মিথ্যার প্রতি আসক্তির ফলে। মিথ্যার মত খারাপ রীপু আর নাই।
৩৪৯৪। দেখুন আয়াত [ ১৩ : ২ ] এবং [ ২৩ : ৮৫ ] আয়াত সমূহ। নভোমন্ডল ও বিশ্বভূবন আল্লাহ্র আইন অক্ষরে অক্ষরে পালন করে চলে। সূর্য পূর্বে ওঠে পশ্চিমে ডোবে। বছরের নির্দ্দিষ্ট সময়ে নির্দ্দিষ্ট ঋতুর পরিবর্তন ঘটে। এরূপ হাজার হাজার উদাহরণ প্রকৃতিতে আছে যা সাক্ষ্য দেয় যে আল্লাহ্ প্রদত্ত আইন বিশ্ব প্রকৃতি লক্ষ লক্ষ বছর ধরে অক্ষরে অক্ষরে নির্দ্দিষ্টভাবে মেনে আসছে। মানুষকেও আল্লাহ্ সৃষ্টি করেছেন তার বিধানকে মেনে জীবন অতিবাহিত করার জন্য। আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পনের মাধ্যমেই মানুষ পারে বিশ্ব প্রকৃতির মাঝে শান্তি ও শৃঙ্খলার সাথে সমন্বিত হতে। তাহলেই সে আশা করতে পারে তার আত্মিক সমৃদ্ধি।
আয়াতঃ 029.062
আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিযিক প্রশস্ত করে দেন এবং যার জন্য ইচ্ছা হ্রাস করেন। নিশ্চয়, আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত।
Allâh enlarges the provision for whom He wills of His slaves, and straitens it for whom (He wills). Verily, Allâh is the AllKnower of everything.
اللَّهُ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَن يَشَاء مِنْ عِبَادِهِ وَيَقْدِرُ لَهُ إِنَّ اللَّهَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
Allahu yabsutu alrrizqa liman yashao min AAibadihi wayaqdiru lahu inna Allaha bikulli shay-in AAaleemun
YUSUFALI: Allah enlarges the sustenance (which He gives) to whichever of His servants He pleases; and He (similarly) grants by (strict) measure, (as He pleases): for Allah has full knowledge of all things.
PICKTHAL: Allah maketh the provision wide for whom He will of His bondmen, and straiteneth it for whom (He will). Lo! Allah is Aware of all things.
SHAKIR: Allah makes abundant the means of subsistence for whom He pleases of His servants, and straitens them for whom (He pleases) surely Allah is Cognizant of all things.
KHALIFA: GOD is the One who increases the provision for whomever He chooses from among His creatures, and withholds it. GOD is fully aware of all things.
৬২। আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা জীবনোপকরণ বৃদ্ধি করে দেন ৩৪৯৫। [ অনুরূপ ভাবে ] যার জন্য ইচ্ছা উহা সীমিত করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সকল বিষয়ে পূর্ণ জ্ঞান রাখেন।
৩৪৯৫। দেখুন [ ১৩ : ২৬ ]। আল্লাহ্র অনুগ্রহ আল্লাহ্ সকলকে সমভাবে বন্টন করেন না। মানব সভ্যতাকে নির্দ্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে পরিচালিত করার জন্য যুগে যুগে আল্লাহ্ প্রতিভাধর ব্যক্তিদের পৃথিবীতে প্রেরণ করে থাকেন যারা আল্লাহ্র বিশেষ অনুগ্রহ প্রাপ্ত। এ সবই আল্লাহ্র বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ। সুতারাং অসম বণ্টন মানেই বিশৃঙ্খলা বা অন্যায় নয়। সৃষ্টি জগতের পরিচালনার জন্য , বিশ্ব প্রকৃতিতে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য যেখানে যা প্রয়োজন আল্লাহ্ সেভাবেই তার নেয়ামত বিশ্ব প্রকৃতিতে বণ্টন করে থাকেন।
আয়াতঃ 029.063
যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, কে আকাশ থেকে বারি বর্ষণ করে, অতঃপর তা দ্বারা মৃত্তিকাকে উহার মৃত হওয়ার পর সঞ্জীবিত করে? তবে তারা অবশ্যই বলবে, আল্লাহ। বলুন, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই। কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা বোঝে না।
If you were to ask them: ”Who sends down water (rain) from the sky, and gives life therewith to the earth after its death?” They will surely reply: ”Allâh.” Say: ”All the praises and thanks be to Allâh!” Nay! Most of them have no sense.
وَلَئِن سَأَلْتَهُم مَّن نَّزَّلَ مِنَ السَّمَاء مَاء فَأَحْيَا بِهِ الْأَرْضَ مِن بَعْدِ مَوْتِهَا لَيَقُولُنَّ اللَّهُ قُلِ الْحَمْدُ لِلَّهِ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ
Wala-in saaltahum man nazzala mina alssama-i maan faahya bihi al-arda min baAAdi mawtiha layaqoolunna Allahu quli alhamdu lillahi bal aktharuhum la yaAAqiloona
YUSUFALI: And if indeed thou ask them who it is that sends down rain from the sky, and gives life therewith to the earth after its death, they will certainly reply, “Allah!” Say, “Praise be to Allah!” But most of them understand not.
PICKTHAL: And if thou wert to ask them: Who causeth water to come down from the sky, and therewith reviveth the earth after its death? they verily would say: Allah. Say: Praise be to Allah! But most of them have no sense.
SHAKIR: And if you ask them Who is it that sends down water from the clouds, then gives life to the earth with it after its death, they will certainly say, Allah. Say: All praise is due to Allah. Nay, most of them do not understand.
KHALIFA: If you ask them, “Who sends down from the sky water, to revive dead land,” they will say, “GOD.” Say, “Praise GOD.” Most of them do not understand.
৬৩। এবং যদি তুমি তাদের জিজ্ঞাসা কর ৩৪৯৬ আকাশ থেকে কে বৃষ্টি প্রেরণ করে মৃত পৃথিবীকে তা দ্বারা জীবন দান করেন ? তারা নিশ্চয়ই উত্তর দেবে, ” আল্লাহ্ “। বল, “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্রই।” কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা উপলব্ধি করে না।
৩৪৯৬। আয়াত [ ২৯ : ৬১ ] এ একদল লোকের কথা বলা হয়েছে যারা আল্লাহ্র ” ক্ষমতা ” উপলব্ধি করে, কিন্তু তার পরেও মিথ্যা ধারণা ও মিথ্যা উপাস্যের উপাসনা করে থাকে। এই আয়াতে অন্য আর একদল লোকের কথা বলা হয়েছে, যারা আল্লাহ্র “মহত্ব ও মঙ্গলময় ইচ্ছাকে ” উপলব্ধি করে। প্রকৃতিতে বৃষ্টির মত জীবন রক্ষাকারী আল্লাহ্র অনুগ্রহকে তারা সনাক্ত করতে পারে , দিনের পরিবর্তনে, ঋতু চক্রের আবর্তনে প্রকৃতি বিভিন্ন ভাবে আল্লাহ্র মঙ্গল ইচ্ছার প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, মৃত মাটি, মৃত প্রকৃতি আল্লাহ্র অনুগ্রহে পুণরায় জীবন্তরূপ ধারণ করে। সুতারাং আল্লাহ্র অনুগ্রহে পার্থিব বস্তু যেরূপ পূণর্জীবিত হয়, ঠিক সেরূপ আধ্যাত্মিক জগতও পুণর্জীবিত হয়। এই দল লোক এত কিছু উপলব্ধি করার পরও সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে অক্ষম হয়। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সৃষ্টি , সূর্য ও চন্দ্র , উদ্ভিদ উৎপন্ন করার সমস্ত কাজ যে, আল্লাহ্র নিয়ন্ত্রণাধীন একথা স্বীকার করার পরও তারা শেরেক করে। ফলে তারা তাদের জীবনকে সত্য ও সুন্দর পথে পরিচালিত করতে পারে না। সুতারাং যখন পৃথিবীর এই ক্ষণকালের শিক্ষানবীশকাল অতিক্রান্ত হয়ে যায়, মৃত্যুর মাধ্যমে পৃথিবীর জীবন শেষ করে অনন্ত জীবনে প্রবেশ করে তখন সে সুন্দর ভবিষ্যতের আকাঙ্খা করতে পারে না। তারা বিশ্ব প্রকৃতির মাঝে আল্লাহ্র অনুগ্রহ , আল্লাহ্র সর্বময় ক্ষমতাকে উপলব্ধি করার পরও দুঃখের বিষয় , চূড়ান্ত সময়ে তারা সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারে নাই। তাদের উচিত ছিলো এসব উপলব্ধির মাধ্যমে , সেই সর্বশক্তিমানের প্রশংসা করা এবং তার কাছে আত্মসমর্পনের মাধ্যমে তাঁর অনুগ্রহ লাভে আত্মাকে সমৃদ্ধ ও আলোকিত করা। কিন্তু আল্লাহ্র অনুগ্রহের জন্য তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পরিবর্তে তারা তা অনুধাবন করে না। কারণ পার্থিব জীবনের বৈষয়িক চিন্তা ভাবনা , ধ্বংসশীল কামনা-বাসনা তাদেরকে পরকালের চিন্তা থেকে অন্ধ করে রাখে।
আয়াতঃ 029.064
এই পার্থিব জীবন ক্রীড়া-কৌতুক বৈ তো কিছুই নয়। পরকালের গৃহই প্রকৃত জীবন; যদি তারা জানত।
And this life of the world is only amusement and play! Verily, the home of the Hereafter, that is the life indeed (i.e. the eternal life that will never end), if they but knew
وَمَا هَذِهِ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا لَهْوٌ وَلَعِبٌ وَإِنَّ الدَّارَ الْآخِرَةَ لَهِيَ الْحَيَوَانُ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ
Wama hathihi alhayatu alddunya illa lahwun walaAAibun wa-inna alddara al-akhirata lahiya alhayawanu law kanoo yaAAlamoona
YUSUFALI: What is the life of this world but amusement and play? but verily the Home in the Hereafter,- that is life indeed, if they but knew.
PICKTHAL: This life of the world is but a pastime and a game. Lo! the home of the Hereafter – that is Life, if they but knew.
SHAKIR: And this life of the world is nothing but a sport and a play; and as for the next abode, that most surely is the life– did they but know!
KHALIFA: This worldly life is no more than vanity and play, while the abode of the Hereafter is the real life, if they only knew.
রুকু – ৭
৬৪। ক্রীড়া -কৌতুক ব্যতীত এই পার্থিব জীবনে আর কি আছে ? কিন্তু প্রকৃত জীবন হচ্ছে পারলৌকিক জীবন – যদি তারা তা বুঝতে পারতো ৩৪৯৭।
৩৪৯৭। দেখুন আয়াত [ ৬ : ৩২ ]। খেলাধূলা ও আনন্দকে উপভোগ করার প্রয়োজন গুরুত্বপূর্ণ কাজের ফাঁকে ফাঁকে। কারণ তাতে লোকের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। পার্থিব জীবনকে ক্রীড়া কৌতুকের জীবন বলা হয়েছে। উদ্দেশ্য এই যে, ক্রীড়া কৌতুকের যেমন কোনও স্থিতি নাই এবং এর দ্বারা কোন বড় সমস্যার সমাধান হয় না, অল্পক্ষণ পরেই শেষ হয়ে যায়, পার্থিব জীবনের অবস্থাও তদ্রূপ। পৃথিবীর জীবন আমাদের জন্য নাটকের দুই অঙ্কের মধ্যবর্তীকালের অভিনীত ক্ষুদ্র নাটক স্বরূপ। পৃথিবীতে আগমনের পূর্বেও আমাদের আত্মার অস্তিত্ব ছিলো আল্লাহ্র কাছে। মৃত্যুর পরও আমরা আবার তাঁরই কাছে নীত হবো। শুধু মধ্যবর্তী এই পৃথিবীর জীবনকে করে দেয়া হয়েছে শিক্ষানবীশ কাল স্বরূপ , পরকালের জন্য। পরকালের জীবন হচ্ছে অনন্ত জীবন, প্রকৃত জীবন ও স্থায়ী জীবন, আর পৃথিবীর জীবন হচ্ছে এই জীবনের জন্য প্রস্তুতি স্বরূপ। সুতারাং পার্থিব জীবনে সম্পদ, ক্ষমতা, প্রভাব-প্রতিপত্তি ,যেগুলির গর্ব মানুষ সাধারণতঃ করে থাকে, সেগুলি যেনো আমাদের জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত না করে। পৃথিবীর জীবন যাপনের মাধ্যমে আত্মার পরিশুদ্ধতা ও সমৃদ্ধি লাভই হচ্ছে জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য। কারণ পারলৌকিক জীবনে আত্মিক পবিত্রতা ও সমৃদ্ধিই একমাত্র বিচারের বিষয়বস্তু হবে। সুতারাং ” পার্থিব জীবন তো ক্রীড়া কৌতুক ব্যতীত আর কিছুই নহে।”
আয়াতঃ 029.065
তারা যখন জলযানে আরোহণ করে তখন একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে। অতঃপর তিনি যখন স্থলে এনে তাদেরকে উদ্ধার করেন, তখনই তারা শরীক করতে থাকে।
And when they embark on a ship, they invoke Allâh, making their Faith pure for Him only, but when He brings them safely to land, behold, they give a share of their worship to others.
فَإِذَا رَكِبُوا فِي الْفُلْكِ دَعَوُا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ فَلَمَّا نَجَّاهُمْ إِلَى الْبَرِّ إِذَا هُمْ يُشْرِكُونَ
Fa-itha rakiboo fee alfulki daAAawoo Allaha mukhliseena lahu alddeena falamma najjahum ila albarri itha hum yushrikoona
YUSUFALI: Now, if they embark on a boat, they call on Allah, making their devotion sincerely (and exclusively) to Him; but when He has delivered them safely to (dry) land, behold, they give a share (of their worship to others)!-
PICKTHAL: And when they mount upon the ships they pray to Allah, making their faith pure for Him only, but when He bringeth them safe to land, behold! they ascribe partners (unto Him),
SHAKIR: So when they ride in the ships they call upon Allah, being sincerely obedient to Him, but when He brings them safe to the land, lo! they associate others (with Him);
KHALIFA: When they ride on a ship, they implore GOD, devoting their prayers to Him. But as soon as He saves them to the shore, they revert to idolatry.
৬৫। এখন, যদি তারা নৌযানে আরোহণ করে, তারা আল্লাহকে ডাকে একান্তভাবে [ শুধুমাত্র ] তার প্রতি একনিষ্ঠ হয়ে ৩৪৯৮। কিন্তু যখন তিনি তাদের নিরাপদে [ শুকনো ] মাটিতে অবতরণ করান, দেখো তারা [তাদের আনুগত্যের ] অংশীদার করে ,-
৩৪৯৮। পূর্বের আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে যে, পৃথিবীর এই জীবন ক্রীড়া কৌতুক বই আর কিছু নয়; এই জীবনের স্থায়ীত্ব খুবই স্বল্পকাল। স্থায়ী ও অনন্ত জীবন হচ্ছে পরকাল। যারা পরলোকের জীবনকে অনুভব করতে পারে না , এরূপ অদূরদর্শী নির্বোধ লোকদের বর্ণনা করা হয়েছে এই আয়াতে। পৃথিবীর জীবনে বহু বিপদ আপদের মধ্য দিয়ে স্রষ্টা আমাদের তাঁর কাছে টেনে নেন। এখানে উপমা হিসেবে প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে তুলে ধরা হয়েছে। যখন তারা গভীর সমুদ্রে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়, তখন তারা সর্বান্তঃকরণে আল্লাহ্র সাহায্য কামনা করে থাকে। কিন্তু আল্লাহ্ যখন তাদের নিরাপদে তীরে নিয়ে আসেন, তখন তারা আল্লাহ্র নিকট কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের পরিবর্তে , নিজের বুদ্ধিমত্তা বা অন্য কিছুকে বিপদ উদ্ধারের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে ও গর্ব প্রকাশ করে থাকে। এ ভাবেই তারা শিরক করে থাকে। এখানে নৌযানের নিরাপত্তাকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। অদূরদর্শী যারা, তারা বিপদে বিপর্যয়ে বিশুদ্ধ চিত্তে আল্লাহ্র সাহায্য কামনা করে থাকে, কিন্তু বিপদ-বিপর্যয় অতিক্রান্ত হয়ে গেলেই তারা প্রকৃত অবস্থা ভুলে যায়, এবং পৃথিবীর আমোদ-ফূর্তিতে নিমগ্ন হয়ে পড়ে , অস্থায়ী জীবনের বিষয়বস্তুর গর্ব তাদের স্থায়ী জীবনকে ভুলিয়ে দেয়।
আয়াতঃ 029.066
যাতে তারা তাদের প্রতি আমার দান অস্বীকার করে এবং ভোগ-বিলাসে ডুবে থাকে। সত্বরই তারা জানতে পারবে।
So that they become ingrate for that which We have given them, and that they take their enjoyment (as a warning and a threat), but they will come to know.
لِيَكْفُرُوا بِمَا آتَيْنَاهُمْ وَلِيَتَمَتَّعُوا فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ
Liyakfuroo bima ataynahum waliyatamattaAAoo fasawfa yaAAlamoona
YUSUFALI: Disdaining ungratefully Our gifts, and giving themselves up to (worldly) enjoyment! But soon will they know.
PICKTHAL: That they may disbelieve in that which We have given them, and that they may take their ease. But they will come to know.
SHAKIR: Thus they become ungrateful for what We have given them, so that they may enjoy; but they shall soon know.
KHALIFA: Let them disbelieve in what we have given them, and let them enjoy temporarily; they will surely find out.
৬৬। অকৃতজ্ঞ ভাবে আমার দানকে তারা অবজ্ঞা করে এবং [ পার্থিব ] ভোগ বিলাসে মত্ত থাকে ৩৪৯৯। কিন্তু শীঘ্রই তারা জানতে পারবে।
৩৪৯৯। উপরের আয়াত সমূহে মানুষের অদূরদর্শীতা ও নিবুদ্ধিতা বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ্র করুণা ও দয়া যারা আত্মার মাঝে অনুভবে অক্ষম হয় , তারাই এরূপ নির্বোধের ন্যায় ব্যবহার করে থাকে। এরূপ নির্বোধ লোকেরা পার্থিব আনন্দ-ফূর্তি এবং গর্ব অহংকারের মত্ত হয়ে যায়। কিন্তু পৃথিবীর এই অনন্দ-ফূর্তি ও গর্ব অহংকারের জীবন একদিন শেষ হয়ে যাবে। এই ক্ষণস্থায়ী জীবন মানুষকে প্রতারিত করে, এবং পরলোকের জীবনকে উপলব্ধি করতে বাধা দান করে থাকে। কিন্তু তাদের এই বিভ্রান্তি মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে শেষ হয়ে যাবে , কারণ তখন তারা পারলৌকিক জীবনকে উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে।
আয়াতঃ 029.067
তারা কি দেখে না যে, আমি একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল করেছি। অথচ এর চতুপার্শ্বে যারা আছে, তাদের উপর আক্রমণ করা হয়। তবে কি তারা মিথ্যায়ই বিশ্বাস করবে এবং আল্লাহর নেয়ামত অস্বীকার করবে?
Have they not seen that We have made (Makkah) a sanctuary secure, and that men are being snatched away from all around them? Then do they believe in Bâtil (falsehood – polytheism, idols and all deities other than Allâh), and deny (become ingrate for) the Graces of Allâh?
أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّا جَعَلْنَا حَرَمًا آمِنًا وَيُتَخَطَّفُ النَّاسُ مِنْ حَوْلِهِمْ أَفَبِالْبَاطِلِ يُؤْمِنُونَ وَبِنِعْمَةِ اللَّهِ يَكْفُرُونَ
Awa lam yaraw anna jaAAalna haraman aminan wayutakhattafu alnnasu min hawlihim afabialbatili yu/minoona wabiniAAmati Allahi yakfuroona
YUSUFALI: Do they not then see that We have made a sanctuary secure, and that men are being snatched away from all around them? Then, do they believe in that which is vain, and reject the Grace of Allah?
PICKTHAL: Have they not seen that We have appointed a sanctuary immune (from violence), while mankind are ravaged all around them? Do they then believe in falsehood and disbelieve in the bounty of Allah?
SHAKIR: Do they not see that We have made a sacred territory secure, while men are carried off by force from around them? Will they still believe in the falsehood and disbelieve in the favour of Allah?
KHALIFA: Have they not seen that we have established a Sacred Sanctuary that we made secure, while all around them the people are in constant danger? Would they still believe in falsehood, and reject GOD’s blessings?
৬৭। তারা কি দেখে না যে, আমি [ হারামকে ] নিরাপদ স্থান করেছি, যেখানে তার চর্তুপাশ্বের লোকেরা নির্যাতন ভোগ করছে ৩৫০০। তারপরেও কি তারা অসার জিনিষে বিশ্বাস করবে এবং আল্লাহ্র অনুগ্রহকে প্রত্যাখান করবে?
৩৫০০। যারা নির্বোধ তারাই শুধুমাত্র পার্থিব চিন্তা -ভাবনায় নিজেকে ব্যপৃত রাখে, তাদের পক্ষে ইন্দ্রিয়াতীত কোনও কিছু অনুভব করা বা আত্মার মাঝে উপলব্ধি করা অসম্ভব ব্যাপার। এই সব নির্বোধ লোক , যারা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য পার্থিব জিনিষ ব্যতীত অন্য কিছুই অনুভব করতে পারে না, তাদের-কেই আল্লাহ্ সম্বোধন করেছেন। কাবা শরীফের চতুপার্শ্বস্থ নির্ধারিত সীমিত স্থানকে হারাম শরীফ বলা হয়। চারিত্রিক হতাশা, নিরাশা , আশাভঙ্গের বেদনার মাঝে ‘হারাম’ আল্লাহ্ সকলের জন্য জন্য নিরাপদ ও শান্তির স্থান করে দিয়েছেন। আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার কারণ ছিলো কোন কোনও মুশরিক এই অজুহাত পেশ করতো যে, তারা রসুলুল্লাহ্র [সা ] প্রচারিত ধর্মকে সত্য ধর্ম বলে বিশ্বাস করে, কিন্তু প্রাণনাশের ভয়ে তা গ্রহণে অপারগ। কারণ সমগ্র আরব ইসলাম বিরোধী। এর জওয়াবে আল্লাহ্ বলেছেন যে, হারাম শরীফকে তিনি আশ্রয়স্থল করে দিয়েছেন। মুমিন,কাফের নির্বিশেষে আরবের বাসিন্দারা সবাই হারামের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে , এতে খুন-খারাপি হারাম মনে করে। বহিরাগত কেউ হারামে প্রবেশ করলে সে হত্যার কবল থেকে নিরাপদ হয়। প্রকৃত পক্ষে এই নিরাপদ স্থান থেকেই ইসলামের প্রসার ধীরে ধীরে শুরু হয় , যখন হিজরতের পূর্বে হারাম শরীফের চর্তুপাশ্বে বিধর্মী কোরেশদের অবস্থান ছিলো। ইসলামের প্রাথমিক যুগ অতিক্রান্ত হয়েছে বহু পূর্বে কিন্তু হারাম শরীফ অদ্যাবধি বিশ্ব মানবের জন্য অত্যন্ত নিরাপদ স্থান, তার কারণ আল্লাহ্ একে নিরাপদ করেছেন।
আয়াতঃ 029.068
যে আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা কথা গড়ে অথবা তার কাছে সত্য আসার পর তাকে অস্বীকার করে, তার কি স্মরণ রাখা উচিত নয় যে, জাহান্নামই সেসব কাফেরের আশ্রয়স্থল হবে?
And who does more wrong than he who invents a lie against Allâh or denies the truth (Muhammad SAW and his doctrine of Islâmic Monotheism and this Qur’ân), when it comes to him? Is there not a dwelling in Hell for disbelievers (in the Oneness of Allâh and in His Messenger Muhammad SAW)?
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَى عَلَى اللَّهِ كَذِبًا أَوْ كَذَّبَ بِالْحَقِّ لَمَّا جَاءهُ أَلَيْسَ فِي جَهَنَّمَ مَثْوًى لِّلْكَافِرِينَ
Waman athlamu mimmani iftara AAala Allahi kathiban aw kaththaba bialhaqqi lamma jaahu alaysa fee jahannama mathwan lilkafireena
YUSUFALI: And who does more wrong than he who invents a lie against Allah or rejects the Truth when it reaches him? Is there not a home in Hell for those who reject Faith?
PICKTHAL: Who doeth greater wrong than he who inventeth a lie concerning Allah, or denieth the truth when it cometh unto him? Is not there a home in hell for disbelievers?
SHAKIR: And who is more unjust than one who forges a lie against Allah, or gives the lie to the truth when it has come to him? Will not in hell be the abode of the unbelievers?
KHALIFA: Who is more evil than one who fabricates lies and attributes them to GOD, or rejects the truth when it comes to him? Is Hell not a just retribution for the disbelievers?
৬৮। তার অপেক্ষা অধিক পাপ আর কে করে , যে ব্যক্তি আল্লাহ্র বিরুদ্ধে মিথ্যার উদ্ভাবন করে অথবা সত্য তার নিকট পৌঁছানোর পর তা প্রত্যাখান করে ৩৫০১ ? যারা সত্যকে প্রত্যাখান করে তাদের আবাস কি জাহান্নাম নয় ?
৩৫০১। দেখুন [৬ :২১ ] আয়াত। জাগতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে, যারা আল্লাহ্র বিধানকে প্রত্যাখান করে, তারা হতভাগ্য। হতভাগ্য এ কারণে যে, আল্লাহ্র সত্যকে অস্বীকারের ফলে তারা আল্লাহ্র অনুগ্রহ বঞ্চিত হয়। ফলে তাদের আত্মা অন্ধকারে আচ্ছাদিত হয়ে পড়ে , তাদের মাঝে বিবেক, বিচক্ষণতা ও অন্তর্দৃষ্টির উদ্ভব ঘটে না। ফলে তাদের মন থেকে শান্তি অন্তর্হৃত হয়। কিন্তু যারা ইচ্ছাকৃত ভাবে আল্লাহ্র বিরুদ্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করে এবং মিথ্যা উপাস্য তৈরী করে উপাসনার জন্য, তাদের কি শাস্তি কল্পনা করা যায় যে আল্লাহ্র অনুগ্রহ থেকে স্থায়ী ভাবে বঞ্চিত হওয়া এবং দোযখের অধিবাসী হওয়া ব্যতীত ?
আয়াতঃ 029.069
যারা আমার পথে সাধনায় আত্মনিয়োগ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথে পরিচালিত করব। নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদের সাথে আছেন।
As for those who strive hard in Us (Our Cause), We will surely guide them to Our Paths (i.e. Allâh’s Religion – Islâmic Monotheism). And verily, Allâh is with the Muhsinûn (good doers).”
وَالَّذِينَ جَاهَدُوا فِينَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا وَإِنَّ اللَّهَ لَمَعَ الْمُحْسِنِينَ
Waallatheena jahadoo feena lanahdiyannahum subulana wa-inna Allaha lamaAAa almuhsineena
YUSUFALI: And those who strive in Our (cause),- We will certainly guide them to our Paths: For verily Allah is with those who do right.
PICKTHAL: As for those who strive in Us, We surely guide them to Our paths, and lo! Allah is with the good.
SHAKIR: And (as for) those who strive hard for Us, We will most certainly guide them in Our ways; and Allah is most surely with the doers of good.
KHALIFA: As for those who strive in our cause, we will surely guide them in our paths. Most assuredly, GOD is with the pious.
৬৯। যারা আমার [ কারণে ] সংগ্রাম করে ৩৫০২ – আমি অবশ্যই তাদের আমার পথে পরিচালিত করবো ৩৫০৩। যারা ন্যায়বান আল্লাহ্ তাদের সাথে থাকেন।
৩৫০২। “যারা আমার [ কারণে ] সংগ্রাম করে ” সফলতা-ই শেষ কথা নয়। মূল কথা হচ্ছে আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে সংগ্রাম। যখন কেউ সর্বশক্তি দিয়ে, ধৈর্য্য , অধ্যাবসায় , দৃঢ়তা ও একাগ্রতার সাথে আল্লাহ্র সত্যকে প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহ্র রাস্তায় সংগ্রাম করে, সে সফলতা লাভ করুক বা না করুক তখন তার মাঝে এক অপূর্ব শক্তির উদ্ভব ঘটে। কারণ আল্লাহ্র অনুগ্রহ তখন তার উপরে বর্ষিত হতে থাকে, ফলে তার আত্মা স্বর্গীয় আলোতে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। এর ফলে তার চরিত্রের সকল অপূর্ণতা পূর্ণতা প্রাপ্ত হয়, সকল ত্রুটি বিচ্যুতি দূরীভূত হয়, নিজেকে সকল ক্ষুদ্রতা , দীনতা, হীনতার উর্দ্ধে স্থাপন করতে সক্ষম হয়। সিরাত-উল-মুস্তাকিম্ বা সরল পথের ঠিকানা তার নিকট হয় উদ্ভাসিত।
৩৫০৩। ” আল্লাহ্র পথ ” [Sirat-ul-Mustaqin] বা সরল পথ। অর্থাৎ পৃথিবীতে চলার যে পথ বা জীবন ধারণের যে বিধি ব্যবস্থা তা অত্যন্ত সহজ ও সরল। আমাদের নবী করিমের জীবন তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। কিন্তু মানুষ সর্বদা সেই সহজ সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে বিপথে চলে যায়। আমাদের নশ্বর দেহের অভ্যন্তরে আত্মার অবস্থান, সৃষ্টির আদিতে যা থাকে পূত এবং পবিত্র। আত্মার মূল রূপ পূত পবিত্র, কিন্তু জাগতিক কলুষতা ধীরে ধীরে তা কালিমালিপ্ত করে থাকে। আল্লাহ্র পথে জীবন ধারণ আত্মার পবিত্রতাকে বজায় রাখে। বিভিন্ন উপায়ে আমরা আল্লাহ্র পথে ফিরে যেতে পারি। আর সে জন্য প্রয়োজন আল্লাহ্র দয়া ও অনুগ্রহ। বহু পথ তাদের সম্মুখে উন্মুক্ত থাকে আল্লাহ্র পথে পৌঁছানোর জন্য। কেউ যদি সবান্তঃকরণে আল্লাহ্র পথে যেতে চায় তবে তারা একাগ্রভাবে জেহাদের মানসিকতা নিয়ে তাদের সমস্ত মন প্রাণ এবং সম্পদ দিয়ে ন্যায়ের পথে চেষ্টা করে যাবে। তাহলেই তারা পৃথিবীর মায়া জাল, যাকে আল্লাহ্ উর্ণনাভের সাথে তুলনা করেছেন তা ছিন্ন করতে সক্ষম হবে। কারণ পার্থিব মায়াজাল মাকড়সার জালের মতই ভঙ্গুর ও নশ্বর। যদি কেউ আল্লাহ্র পথে চলার ক্ষমতা লাভ করে তবে তাঁর জীবন সার্থক। সে লাভ করবে পরম শান্তি এবং সে তার চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবে।