হাদীস নং ৩৭৩০
ইসহাক ইবনে ইবরাহীম রহ…….কায়েস রা. থেকে বর্ণিত যে, বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবীদের (বাৎসরিক) ভাতা পাঁচ হাজার পাঁচ (দেরহাম) করে নির্ধারিত ছিল। উমর রা. বলেছেন, অবশ্যই আমি বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবীদেরকে পরবর্তী লোকদের চেয়ে অধিক মর্যাদা প্রদান করব।
হাদীস নং ৩৭৩১
ইসহাক ইবনে মানসুর রহ……….যুবাইর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মাগরিবের সালাতে সূরা তুর পড়তে শুনেছি। এ ঘটনা থেকেই সর্বপ্রথম আমার হৃদয়ে ঈমান বদ্ধমূল হয়।
(অপর এক সনদে) যুহরী রহ………….. মুহাম্মদ ইবনে যুবাইর ইবনে মুতঈমের মাধ্যমে তার পিতা যুবাইর ইবনে মুতঈম রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বদরের যুদ্ধবন্দীদের সম্পর্কে সুপারিশ করতেন, তাহলে তার খাতিরে এদেরকে আমি (মুক্তিপণ ব্যতীতই) ছেড়ে দিতাম। লায়স ইয়াহইয়ার সূত্রে সাঈদ ইবনে মুসায়্যাব রহ. থেকে বর্ণনা করেন যে, প্রথম ফিতনা অর্থাৎ উসমানের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হবার পর বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবীদের আর কেউ অবশিষ্ট ছিলেন না। দ্বিতীয় ফিতনা তথা হারবার ঘটনা সংঘটিত হলে পরে হুদায়বিয়ার সন্ধিকালীন সময়ের কোন সাহাবীই আর বাকী ছিলেন না। এরপর তৃতীয় ফিতনা সংঘটিত হওয়ার পর তা কখনো শেষ হয়নি, যতদিন মানুষের মধ্যে আকল ও কল্যাণকামিতা বিদ্যমান ছিল।
হাদীস নং ৩৭৩২
হাজ্জাজ ইবনে মিনহাল রহ………যুহরী রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি উরওয়া ইবনে যুবাইর, সাঈদ ইবনে মুসায়্যাব, আলকামা ইবনে ওয়াক্কাস ও উবায়দুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ রহ. থেকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী আয়েশার (প্রতি আরোপিত) অপবাদের ঘটনা সম্পর্কে শুনেছি। তারা সকলেই হাদীসটির একটি অংশ আমার নিকট বর্ণনা করেছেন, আয়েশা রা. বলেছেন। আমি এবং উম্মে মিসতাহ (প্রাকৃতিক প্রয়োজনে) বের হলাম। তখন উম্মে মিসতাহ চাদরে পেচিয়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল। এতে সে বলল, মিসতাহ এর জন্য ধ্বংস । (আয়েশা রা .বলেন) তখন আমি বললাম, আপনি ভাল বলেন নি। আপনি বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিকে মন্দ বলেছেন। এরপর অপবাদ-এর (ইফক) ঘটনাটি উল্লেখ করলেন।
হাদীস নং ৩৭৩৩
ইবরাহীম ইবনে মুনযির রহ………ইবনে শিহাব রা. থেকে বর্ণিত, (তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জিহাদসমূহের বর্ণনা দেয়ার পর) বলেছেন, এ গুলোই ছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামরিক অভিযান। এরপর তিনি (বদর যুদ্ধের) ঘটনা বর্ণনা করলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (নিহত) কুরাইশ কাফিরদের লাশ কূপে নিক্ষেপ করার সময় (সে গুলোকে সম্বোধন করে) বললেন, তোমাদের রব তোমাদেরকে যে ওয়াদা দিয়েছিলেন তা পেয়েছ তো ? (রাবী) মূসা নাফির মাধ্যমে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণনা করেছেন যে, এ সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীদের থেকে কেউ কেউ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আপনি মৃত লোকদের আহবান করছেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার কথাগুলো তোমরা তাদের থেকে অধিক শুনতে পাচ্ছনা। গনীমতের অংশ লাভ করেছিলেন, এ ধরনের যে সব কুরাইশী সাহাবী বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের সংখ্যা হল একাশি। উরওয়া ইবনে যুবাইর বললেন, যে যুবাইর রা. বলেছেন, (বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী) কুরাইশী সাহাবীদের গনীমতের মালের অংশগুলো বন্টন করা হয়েছিল। তাদের সংখ্যা ছিল সর্বমোট একশ’ আল্লাহই ভাল জানেন।
হাদীস নং ৩৭৩৪
ইবরাহীম ইবনে মূসা রহ………….যুবাইর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, বদরের দিন মুহাজিরদের জন্য (গনীমতের মালের) একশ’ হিসসা দেয়া হয়েছিল।
হাদীস নং ৩৭৩৫
ইসহাক ইবনে নাসর রহ………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, বনু নাযীর ও বনু কুরায়যা গোত্রের ইয়াহূদী সম্প্রদায় (মুসলমানদের বিরুদ্ধে) যুদ্ধ আরম্ভ করলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনু নাযীর গোত্রকে দেশান্তরিত করে দেন এবং বনু কুরায়যা গোতের প্রতি কৃপা প্রদর্শন করে তাদেরকে (তাদের ঘর বাড়ীতেই) থাকতে দেন। কিন্তু (পরবর্তীকালে) বনু কুরায়যা গোত্র (মুসলমানদের বিরুদ্ধে) যুদ্ধে লিপ্ত হলে কিছু সংখ্যক ব্যক্তি যারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দলভূক্ত হবার পর তিনি তাদেরকে নিরাপত্তা দিয়েছিলেন তারা মুসলমান হয়ে গিয়েছিল তারা ব্যতীত অন্য সব পুরুষ লোককে হত্যা করে দেয়া হয় এবং মহিলা, সন্তান-সন্ততি ও সব ধন-সম্পদ মুসলমানদের মাঝে বন্টন করে দেয় হয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনার সকল ইয়াহূদীকে দেশান্তরিত করলেন। আবদুল্লাহ ইবনে সালামের গোত্র বনু কায়নুকা ও বনু হারিসাহ অন্যান্য ইয়াহূদী সম্প্রদায়কেও তিনি দেশান্তরিত করেন।
হাদীস নং ৩৭৩৬
হাসান ইবনে মুদরিক রহ………..সাঈদ ইবনে যুবাইর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ইবনে আব্বাসের নিকট সূরা হাশরকে সূরা হাশর বলে উল্লেখ করলে, তিনি আমাকে বললেন, বরং তুমি বলবে “সূরা নাযীর”। আবু বিশর থেকে হুশাইমও এ বর্ণনায় তার (আবু আওয়ানা) অনুসরণ করেছেন।