হাদীস নং ৩৬৯২
উসমান রহ…………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বদরে অবস্থিত কূপের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, (হে মুশরিকগণ) তোমাদের রব তোমাদের নিকট যা ওয়াদা করেছিলেন তা তোমরা ঠিক মত পেয়েছ? পরে তিনি বললেন, এ মুহূর্তে তাদেরকে আমি যা বলছি তা সবই শুনতে পাচ্ছে। এ বিষয়টি আয়েশা রা.-এর সামনে উল্লেখ করা হলে তিনি বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন তার অর্থ হল, তারা এখন বুঝতে পারছে যে, আমি তাদেরকে যা বলতাম তাই হক ছিল। এরপর তিনি তিলাওয়াত করলেন إنك لا تسمع الموتى حتى قرأت الاية‘তুমি তো মৃতকে শুনাতে পারবে না) এভাবে আয়াতটি সম্পূর্ণ তিলাওয়াত করলেন।
হাদীস নং ৩৬৯৩
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ…………আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলতেন, হারিসা রা একজন নও জওয়ান লোক ছিলেন। বদর যুদ্ধে তিনি শাহাদাত বরণ করার পর তার আম্মা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হারিসা আমার কত আদরের আপনি তো তা অবশ্যই জানেন। (বলুন) সে যদি জান্নাতী হয় তাহলে আমি ধৈর্যধারণ করব এবং আল্লাহর নিকট সাওয়াবের আশা পোষণ করব। আর যদি এর অন্যথা হয় তাহলে আপনি তো দেখতেই পাচ্ছেন, আমি (তার জন্য) যা করছি। তখন তিনি বললেন, তোমার কি হল, তুমি কি জ্ঞানশূন্য হয়ে গেলে? বেহেশত কি একটি ? (না…….না) বেহেশত অনেকগুলি, সে তো জান্নাতুল ফেরদাউসে অবস্থান করছে।
হাদীস নং ৩৬৯৪
ইসহাক ইবনে ইবরাহীম রহ…………আলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু মারসাদ, যুবাইর ও আমাকে কোথাও পাঠিয়েছিলেন এবং আমরা সকলেই ছিলাম অশ্বারোহী। তিনি আমাদেরকে বললেন, তোমরা যাও। যেতে যেতে তোমরা ‘রাওয়া খাখা’ নামক স্থানে পৌঁছে তথায় একজন স্ত্রীলোক দেখতে পাবে। তার নিকট (মক্কায়) মুশরিকদের কাছে লিখিত হাতিব ইবনে আবু বালতার একখানা পত্র আছে। (সে পত্রখানা ছিনিয়ে আনবে)। আলী রা. বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নির্দেশিত স্থানে গিয়ে তাকে ধরে ফেললাম। সে তখন স্বীয় একটি উটের উপর আরোহণ করে পথ অতিক্রম করছিল। আমরা তাকে বললাম, পত্রখানা আমাদের নিকট অর্পণ কর। সে বলল, আমার নিকট কোন পত্র নেই। আমরা তখন তার উটটিকে বসিয়ে তার তল্লাশী নিলাম। কিন্তু পত্রখানা উদ্ধার করতে পারলাম না। আমরা বললাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিথ্যা বলেনি। তোমাকে পত্রখানা বের করতেই হবে। নতুবা আমরা তোমাকে উলঙ্গ করে ছাড়ব। যখন (আমাদের) কঠোর মনোভাব লক্ষ্য করল তখন স্ত্রীলোকটি তার কোমরের পরিধেয় বস্ত্রের গিটে কাপড়ের পুটুলির মধ্য থেকে পত্রখানা বের করে দিল। আমরা তা নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর দরবারে উপস্থিত হলাম (সব দেখে শুনে) উমর রা. বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! সে তো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এবং মুমিনদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আপনি আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (হাতিব ইবনে আবু বালতা রা. কে ডেকে) বললেন, তোমাকে একাজ করতে কিসে উদ্ধুদ্ধ করল? হাতিব রা. বললেন, আল্লাহর কসম! আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আমি বিশ্বাসী নই, আমি এরূপ নই। বরং (এ কাজ করার পেছনে) আমার মূল উদ্দেশ্য হল (মক্কার শত্রু) কাওমের প্রতি কিছু অনুগ্রহ করা যাতে আল্লাহ এ উসিলায় (তাদের অনিষ্ট থেকে) আমার মাল এবং পরিবার ও পরিজনকে রক্ষা করেন। আর আপনার সাহাবীদের সকলেরই কোন না কোন আত্মীয় সেখানে রয়েছে, যার দ্বারা আল্লাহ তার ধন-সম্পদ ও পরিবারবর্গকে রক্ষা করছেন (এ কথা শুনে) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে সত্যই বলেছে। সুতরাং তার ব্যাপারে ভাল ব্যতীত আর কিছু বলো না। তখন উমর রা. বললেন, সে তো আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুমিনদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। সুতরাং আপনি আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে কি বদরী সাহাবী নয়? নিশ্চয়ই বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদেরকে দেখে শুনেই আল্লাহ বলেছেন : ‘তোমাদের যা ইচ্ছা কর’ তোমাদের জন্য জান্নাত অবধারিত অথব (রাবীর সন্দেহ) আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছি। (এ কথা শুনে) উমর রা. এর দুচোখ তখন অশ্রু সজল হয়ে উঠল। তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই সর্বাধিক জ্ঞাত।
হাদীস নং ৩৬৯৫
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ আল জুফী রহ………..আবু উসাইদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, শত্রু তোমাদের নিকটবর্তী হলে তোমরা তীর নিক্ষেপ করবে এবং তীর ব্যহারে সংযমী হবে।
হাদীস নং ৩৬৯৬
মুহাম্মদ ইবনে আবদুর রাহীম রহ………….আবু উসাইদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, তারা (শত্রুরা) তোমাদের নিকটবর্তী হল তোমরা তাদের প্রতি তীর নিক্ষেপ করবে এবং ব্যবহারে সংযমী হবে।