হাদীস নং ৩৬৮৭
ফারওয়া রহ…………হিশামের পিতা (উরওয়া) রা. থেকে বর্ণিত যে, যুবাইর রা.-এর তরবারী রূপার কারুকার্য খচিত ছিল। হিশাম রহ. বলেন, উরওয়া রহ-এর তরবারীটিও রূপার কারুকার্য খচিত ছিল।
হাদীস নং ৩৬৮৮
আহমদ ইবনে মুহাম্মদ রহ………..উরওয়া রহ. থেকে বর্ণিত যে, ইয়ারমুকের (যুদ্ধের) দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবাগণ যুবাইর রা. কে বলেন যে, (মুশরিকদের প্রতি) আপনি কি আক্রমণ করবেন না তাহলে আমরাও আপনার সঙ্গে আক্রমণ করব। তখন তিনি বলেন, আমি যদি (তাদের প্রতি) আক্রমণ করি তখন তোমরা পিছে সরে পড়বে। তখন তারা বললেন, আমরা তা করব না। এরপর তিনি তাদের উপর আক্রমণ করলেন। এমনকি শত্রু দের কাতার ভেদ করে সামনে এগিয়ে গেলেন। কিন্তু (এ সময়) তার সঙ্গে আর কেউই ছিলনা। মুখোমুখি হয়ে ফিরে আসার জন্য উদ্যত হলে শত্রু গণ তাঁর ঘোড়ার লাগাম ধরে ফেলে এবং তার কাঁধের উপর দুটি আঘাত করে, যে আঘাত দুটির মাঝেই বিদ্যমান রয়েছে বদর যুদ্ধের আঘাতের চিহ্নটি। উরওয়া রহ. বলেন, আমি যখন ছোট ছিলাম তখন ঐ ক্ষত চিহ্ন গুলোতে আমার সবগুলো আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিয়ে আমি খেলা করতাম। উরওয়া রহ. আরো বলেন, ঐদিন তার সঙ্গে (তার পুত্র) আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর রা. ও শরীক ছিলেন, তখন তার বয়স ছিল দশ বছর। যুবাইর রা. তাকে ঘোড়ার পিঠে উঠিয়ে নিলেন এবং এক ব্যক্তিকে তার তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দিলেন।
হাদীস নং ৩৬৮৯
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ………….আবু তালহা রা. থেকে বর্ণিত যে, বদর যুদ্ধের দিন আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশে চব্বিশজন কুরাইশ সর্দারের লাশ বদর প্রান্তরের একটি কদর্য আবর্জনাপূর্ণ কূপে নিক্ষেপ করা হল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করলে সে স্থানের উপকণ্ঠে তিন দিন অবস্থান করতেন। সে মতে বদর প্রান্তরে অবস্থানের পর তৃতীয় দিন তিনি তাঁর সাওয়ারী প্রস্তুত করার আদেশ দিলেন, সাওয়ারীর জিন কষে বাঁধা হল। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পদব্রজে (কিছু দূর) এগিয়ে গেলেন। সাহাবাগণও তাঁর পেছনে পেছনে চলছেন। তাঁরা বলেন, আমরা মনে করছিলাম। কোন প্রয়োজনে (হয়ত) তিনি কোথাও যাচ্ছেন। অবশেষে তিনি ঐ কূপের কিনারে গিয়ে দাঁড়ালেন এবং কূপে নিক্ষিপ্ত ঐ নিহত ব্যক্তিদের নাম ও তাদের পিতার নাম ধরে এভাবে ডাকতে শুরু করলেন, হে অমুকের পুত্র অমুক হে অমুকের পুত্র অমুক ! তোমরা কি এখন অনুভব করতে পারছ যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য তোমাদের জন্য পরম খুশীর বস্তু ছিল? আমাদের প্রতিপালক আমাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আমরা তো তা সত্য পেয়েছি, তোমাদের প্রতিপালক তোমাদেরকে যা বলেছিলেন তোমরাও তা সত্য পেয়েছ কি? বর্ণনাকারী বলেন, (এ কথা শুনে) উমর রা. বললেন, হে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনি আত্মহীন দেহগুলোকে সম্বোধন করে কি কথা বলছেন? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ঐ মহান সত্তার শপথ, যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ, আমি যা বলছি তা তাদের তুলনায় তোমরা অধিক শ্রবণ করছ না। কাতাদা রা. বলেন, আল্লাহ তাঁর (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা শুনাতে) ধমকি, লাঞ্ছনা, দুঃখ-কষ্ট, আফসোস এবং লজ্জা দেওয়ার জন্য (সাময়িকভাবে) দেহে প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন।
হাদীস নং ৩৬৯০
হুমাইদী রহ……….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি الذين بدلوا نعمة الله كفرا আয়াতাংশ সম্পর্কে বলেছেন, আল্লাহর কসম, এর হল কাফির কুরাইশ সম্প্রদায়। আমর রহ. বলেন, এরপ হচ্ছে কুরাইশ সম্প্রদায় এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হচ্ছেন আল্লাহর নিয়ামত। এবং وأحلو قومهم دار البوار আয়াতাংশের মাঝে বর্ণিত এর البوار অর্থ হচ্ছে النار দোযখ। (অর্থাৎ বদর যুদ্ধের দিন তারা তাদের কাওমকে দোযখে পৌঁছিয়ে দিয়েছে।
হাদীস নং ৩৬৯১
উবাইদ ইবনে ইসমাঈল রহ………..হিশামের পিতা (উরওয়া) রহ . থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মৃত ব্যক্তিকে তার পরিবার পরিজনদের কান্নাকাটি করার কারণে কবরে শাস্তি দেওয়া হয়। ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথাটি আয়েশা রা. -এর নিকট উল্লেখ করা হলে তিনি বললেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো বলেছেন, মৃত ব্যক্তির অপরাধ ও গোনাহর কারণে তাকে (কবরে) শাস্তি দেওয়া হয়। অথচ তখনও তার পরিবারের লোকেরা তার জন্য ক্রন্দন করছে। তিনি রা. বলেন, এ কথাটি ঐ কথাটিরই অনুরূপ যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ কূপের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, যে কূপে বদর যুদ্ধে নিহত মুশরিকদের নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তিনি তাদেরকে যা বলার বললেন (এবং জানালেন) যে, আমি যা বলছি তারা তা সবই শুনতে পাচ্ছে। তিনি বললেন, এখন তারা খুব বুঝতে পারছে যে, আমি তাদেরকে যা বলছিলাম তা ছিল যথার্থ। এরপর আয়েশা রা. إنك لا تسمع الموتى وما أنت بمسمع من في القبور ‘তুমি তো মৃতকে শুনাতে পারবে না) (৩০ রূম ৫২) (এবং তুমি শুনাতে সমর্থ হবেনা তাদেরকে যারা কবরে রয়েছে) (৩৫ ফাতির ২২) আয়াতাংশ দুটো তিলাওয়াত করলেন। উরওয়া রহ. বলেন, (এর অর্থ হল) জাহান্নামে যখন তাঁরা তাদের আসন গ্রহণ করে নেবে।