হাদীস নং ৩৬৬৬
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ……….আবদুল্লাহ ইবনে কাব রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি কাব ইবনে মালিক রা.-কে বলতে শুনেছি যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তন্মধ্যে তাবুকের যুদ্ধ ব্যতীত অন্য সব যুদ্ধে আমি শরীক ছিলাম। তবে বদর যুদ্ধেও আমি শরীক হইনি। কিন্তু বদর যুদ্ধে যারা যোগদান করেননি তাদেরকে কোন প্রকার দোষারূপ করা হয়নি। কারণ প্রকৃতপক্ষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরাইশ কাফেলার পশ্চাদ্বাবন করার উদ্দেশ্যেই যাত্রা করেছিলেন। কিন্তু পূর্বনির্ধারিত সময় ছাড়া আল্লাহ তায়ালা তাদের (মুসলমানদের) সাথে তাদের শত্রু দের মুখামুখী করিয়ে দেন।
হাদীস নং ৩৬৬৭
আবু নুআইম রহ…………ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি মিকদাদ ইবনে আসওয়াদকে এমন একটি ভূমিকায় পেয়েছি যে, সে ভূমিকায় যদি আমি হতাম, তবে যা দুনিয়ার সব কিছুর তুলনায় আমার নিকট প্রিয় হত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে আসলেন, তখন তিনি মুশরিকদের বিরুদ্ধে দু’আ করছিলেন। এতে তিনি (মিকদাদ ইবনে আসওয়াদ) বললেন, মূসা আ. এর কওম যেমন বলেছিল যে, “তুমি (মূসা) আর তোমার প্রতিপালক যাও এবং যুদ্ধ কর”। (আমরা তেমন বলল না, বরং আমরা তো আপনার ডানে, বামে সম্মুখে, পেছনে সর্বদিক থেকে যুদ্ধ করব। ইবনে মাসউদ রা. বলেন, আমি দেখলাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর মুখমণ্ডল উজ্জ্বল হয়ে উঠল এবং (একথা) তাকে খুব আনন্দিত করল।
হাদীস নং ৩৬৬৮
মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে হাওশাব রহ………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বদরের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছিলেন, হে আল্লাহ ! আমি আপনার প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার পূরণ করার জন্য প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ ! আপনি যদি চান (কাফিররা আমাদের উপর জয়লাভ করুক) আপনার ইবাদত করার লোক আর থাকবে না। এমতাবস্থায় আবু বকর রা. তাঁর হাত চেপে বললেন, আপনার জন্য এ যথেষ্ট। তখন তিনি এ আয়াত পড়তে পড়তে বের হলেন। “শত্রু দল শীঘ্রই পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে”। (৫৪ ক্বামার ৪৫)
হাদীস নং ৩৬৬৯
ইবরাহীম ইবনে মূসা রহ…………আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মুমিনদের মধ্যে (যারা অক্ষম) অথচ ঘরে বসে থাকেন তারা সমান নন। অর্থাৎ বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী এবং যারা বদরের যুদ্ধ থেকে বিরত রয়েছেন তারা সমান নন।
হাদীস নং ৩৬৭০
মুসলিম রহ. মাহমূদ রহ………..বারা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বদরের দিন আমাকে ও ইবনে উমরকে ছোট মনে করা হয়েছিল, এ যুদ্ধে মুহাজিরদের সংখ্যা ছিল ষাটের বেশী এবং আনসারদের সংখ্যা ছিল দুইশ চল্লিশেরও কিচু বেশী।
হাদীস নং ৩৬৭১
আমর ইবনে খালিদ রহ………..বারা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যে সব সাহাবী বদরে অংশগ্রহণ করেছেন তারা আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, তাদের সংখ্যা তালুতের যেসব সঙ্গী (জিহাদে শরীক হওয়ার নিমিত্তে তাঁর সাথে) নদী পার হয়েছিলেন তাদের সমান ছিল। তাদের সংখা ছিল তিনশত দশেরও কিছু বেশী। বারা রা. বলেন, আল্লাহর কসম, ঈমানদার ব্যতীত আর কেউই তাঁর সাথে নদী অতিক্রম করেনি।
হাদীস নং ৩৬৭২
আবদুল্লাহ ইবনে রাজা রহ………বারা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবাগণ পরস্পর আলোচনা করতাম যে, বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবীদের সংখ্যা তালুতের সঙ্গে অতিক্রমকারী লোকদের সমানই ছিল এবং তিনশত দশ জনের অধিক ঈমানদার ব্যক্তিই কেবল তাঁর সাথে নদী পার হয়েছিলেন।
হাদীস নং ৩৬৭৩
আবদুল্লাহ ইবনে আবদু শায়বা রহ. ও মুহাম্মদ ইবনে কাসীর রহ……….বারা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা পরস্পর আলোচনা করতাম যে, বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবীদের সংখ্যা তালুতের সঙ্গে অতিক্রমকারী লোকদের সমানই ছিল। আর তিনশত দশ জনের অধিক ঈমানদার ব্যক্তিই কেবল তাঁর সাথে নদী পার হয়েছিলেন।
হাদীস নং ৩৬৭৪
আমর ইবনে খালিদ রহ……….আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাবার দিকে মুখ করে কুরাইশ গোত্রীয় কতিপয় লোক তথা- শায়বা,উতবা, ওয়ালীদ এবং আবু জেহেল ইবনে হিশামের বিরুদ্ধে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দু’আ করেন। (আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন) আমি আল্লাহর নামে সাক্ষ্য দিচ্ছি, অবশ্যই আমি এ সমস্ত লোকদেরকে (বদরের রণাঙ্গনে) নিহত হয়ে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখেছি। রৌদ্রের প্রচণ্ডতা তাদের দেহগুলোকে বিকৃত করে দিয়েছিল। বস্তুতঃ সে দিনটি ছিল প্রচণ্ড গরম।
হাদীস নং ৩৬৭৫
ইবনে নুমাইর রহ……….আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, বদর যুদ্ধের দিন আবু জেহেল যখন মৃত্যুর মুখোমুখি তখন তিনি (আবদুল্লাহ) তার কাছে গেলেন। তখন আবু জেহেল বলল, (আজ) তোমরা তোমাদের এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছ এতে আমি কি আশ্চর্যবোধ করব।
হাদীস নং ৩৬৭৬
আহমদ ইবনে ইউনুস রহ. ও আমর ইবনে খালিদ রহ……..আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, (বদরের দিন) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আবু জেহেলের কি অবস্থা কেউ তা দেখে আসতে পার কি? তখন ইবনে মাসউদ রা. তার খোঁজে বের হলেন এবং দেখতে পেলেন যে, আফরার দুই পুত্র তাকে এমনিভাবে প্রহার করেছে যে, মুমূর্ষু অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে। রাবী বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. তার দাঁড়ি ধরে বললেন, তুমিই কি আবু জেহেল? আবু জেহেল বলল, যাকে (অর্থাৎ আবু জেহেল) তোমরা অথবা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) তার গোত্রের লোকেরা হত্যা করল তার চেয়ে বেশী আর কি? আহমদ ইবনে ইউনুস রহ. বলেন, তুমিই কি আবু জেহেল।