হাদীস নং ৩১১৯
কুতাইবা ইবনে সাঈদ রহ…………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নবী ইবরাহীম আ. সূত্রধরদের অস্ত্র দ্বারা নিজের খাতনা করেছিলেন এবং তখন তার বয়স ছিল আশি বছর। আব্দুর রহমান ইবনে ইসহাক রহ. আবু যিনাদ রহ . থেকে হাদীস বর্ণনায় মুগীরা ইবনে আবদুর রাহমান রহ. -এর অনুসরণ করেছন। আজলান রহ. আবু হুরায়রা রা. থেকে হাদীস বর্ণনায় আরজ রহ.-এর অনুসরণ করেছেন। আর মুহাম্মদ ইবনে আমর রহ. আবু সালামা রর. থেকে বর্ণনা করেছেন।
হাদীস নং ৩১২০
সাঈদ ইবনে তালীদ রুআইনী ও মুহাম্মদ ইবনে মাহবুব রহ…………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইবরাহীম আ. তিনবার ব্যতীত কখনও কথাকে ঘুরিয়ে পেচিয়ে বলেননি। তন্মধ্যে দু’বার ছিল আল্লাহ প্রসঙ্গে। তার উক্তি “আমি অসুস্থ” (৩৭:৮৯) এবং তাঁর আবার এক উক্তি “বরং এ কাজ করেছে, এই তো তাদের বড়টি” (২১:৬৩) বর্ণনাকারী বলেন, একদা তিনি (ইবরাহীম আ. এবং তাঁর পত্নী) সারা অত্যাচারী শাসকগণের কোন এক শাসকের এলাকায় এসে পৌঁছলেন। (তা ছিল মিসর) তখন তাকে (শাসককে) সংবাদ দেয়া হল যে, এ এলাকায় এসেছে। তার সাথে একজন সর্বাপেক্ষা সুন্দরী মহিলা রয়েছে। তখন সে (রাজা) তাঁর (ইবরাহীম) কাছে লোক পাঠাল। সে তাকে মহিলাটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল, এ মহিলাটি কে? তিনি উত্তর দিলেন, মহিলাটি আমার বোন। তারপর তিনি সারা কাছে আসলেন এবং বললেন, হে সারা, তুমি আর আমি ছাড়া পৃথিবীর উপর আর কোন মুমিন নেই। এ লোকটি আমাকে তোমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিল। তখন আম তাকে জানিয়েছি যে, তুমি আমার বোন। কাজেই তুমি আমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করো না। এরপর (অত্যাচারী রাজা) সারাকে আনার জন্য লোক পাঠালো। তিনি (সারা) যখন তার (রাজার) কাছে প্রবেশ করলেন এবং রাজা তাঁর দিকে হাত বাড়ালো তখনই সে (আল্লাহর গযবে) পাকড়াও হল। তখন অত্যাচারী রাজা সারাকে বলল, আমার জন্য আল্লাহর নিকট দু’আ কর, আমি তোমার কোন ক্ষতি করব না। তখন সারা আল্লাহর নিকট দু’আ করলেন। ফলে সে মুক্তি পেয়ে গেল। এরপর দ্বিতীয়বার তাকে ধরতে চাইল। এবার সে পূর্বের ন্যায় বা তার চেয়ে কঠিনভাবে (আল্লাহর গযবে) পাকড়াও হল। এবারও সে বলল, আল্লাহর কাছে আমার জন্য দু’আ কর। আমি তোমার কো ক্ষতি করব না। আবারও তিনি দু’আ করলেন, ফলে সে মুক্তি পেয়ে গেল। তারপর রাজা তার কোন এক দারোয়ানকে ডাকল। সে তাকে বলল, তুমি তো আমার কাছে কোন মানুষ আননি। বরং এনেছ এক শয়তান। তারপর রাজা সারার খেদমতের জন্য হাজেরাকে দান করল। এরপর তিনি (সারা) তাঁর (ইবরাহীম) কাছে আসলেন, তিনি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন। তখন তিনি (সালাতরত অবস্থায়) হাত দ্বারা ইশারা করে সারাকে বললেন, কি ঘটেছে? তখন সারা বললেন, আল্লাহ কাফির বা ফাসিকের চক্রান্ত তারই বক্ষে ফিরিয়ে দিয়েছেন। (অর্থাৎ তার চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিয়েছেন)। আর সে (রাজা) হাজেরাকে খেদমতের জন্য দান করেছে। আবু হুরায়রা রা. বলেন, হে আকাশের পানির সন্তানগণ! এ হাজেরাই তোমাদের আদি মাতা।
হাদীস নং ৩১২১
উবাইদুল্লাহ ইবনে মূসা অথবা ইবনে সালাম রহ……….উম্মে শারীক রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গিরগিট বা কাকলাশ মেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন এবং তিনি বলেছেন, ইবরাহীম আ. যে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন তাঁতে এ গিরগিট ফুঁ দিয়েছিল।
হাদীস নং ৩১২২
উমর ইবনে হাফস গিয়াস রহ……….আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়: যারা ঈমান এনেছে এবং তারা তাদের ঈমানকে যুলুম দ্বারা কলুষিত করেনি। (৬: ৮২) তখন আমরা বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমাদের মধ্যে কে এমন আছে, যে নিজের উপর যুলুম করেনি ? তিনি বললেন, তোমরা যা বল ব্যাপরটি তা নয়। বরং তাদের ঈমানকে যুলুম অর্থাৎ শিরক দ্বারা কলুষিত করেনি। তোমরা কি লুকমানের কথা শুননি ? তিনি তাঁর পুত্রকে বলেছিলেন হে বৎস! আল্লাহর সাথে কোনরূপ শিরক করো না। নিশ্চয় শিরক একটা চরম যুলুম। (৩১:১৩)।
হাদীস নং ৩১২৩
ইসহাক ইবনে ইবরাহীম ইবনে নাসর রহ…………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে কিছু গোশত আনা হল। তখন তিনি বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ কিয়ামতের দিন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলকে একই সমতল ময়দানে সমবেত করবেন। তখন আহবানকারী তাদের সকলকে তার আহবান সমভাবে শুনাতে পারবে। এবং তাদের সকলের উপর সমভাবে দর্শকের দৃষ্টি পড়বে আর সূর্য তাদের অতি নিকটবর্তী হবে। তারপর তিনি শাফায়াতের হাদীস বর্ণনা করলেন যে, সকল মানুষ ইবরাহীম আ.-এর নিকট আসবে এবং বলবে, পৃথিবীতে আপনি আল্লাহর নবী এবং তাঁর খলীল। অতএব আমাদের জন্য আপনি আপনার রবের নিকট সুপারিশ করুন। তখন তিনি ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বলা উক্তির কথা স্মরণ করে বললেন, নাফসী ! নাফসী ! তোমরা মূসার কাছে যাও। অনুরূপ হাদীস আনাস রা. ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।
হাদীস নং ৩১২৪
আহমদ ইবনে সাঈদ আবু আবদুল্লাহ রহ………….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ইসমাঈলের মায়ের প্রতি আল্লাহ রহম করুন। যদি তিনি তাড়াতাড়ি না করতেন, তবে যমযম একটি প্রবহমান ঝর্ণায় পরিণত হত। আনসারী রহ. ইবনে জুরাইজ রহ. সূত্রে বলেন যে, কাসীর ইবনে কাসীর বলেছেন যে, আমি ও উসমান ইবনে আবু সুলাইমান রহ. সাঈদ ইবনে জুবাইর রহ.-এর নিকট বসা ছিলাম। তিনি বললেন, ইবনে আব্বাস রা. আমাকে এরূপ বলেন নি বরং তিনি বলেছেন, ইবরাহীম আ., ইসমাঈল আ. এবং তাঁর মাকে নিয়ে আসলেন। মা তখন তাকে দুধ পান করাতেন এবং তাঁর সাথে একটি মশক ছিল। এ অংশটি মারফুরূপে বর্ণনা করেননি।