হাদীস নং ৩১১২
মুহাম্মদ ইবনে কাসীর রহ……….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, নিশ্চয়ই তোমাদের হাশর ময়দানে খালি পা, বিবস্ত্র এবং খাতনাবিহীন অবস্থায় উপস্থিত করা হবে। এরপর তিনি (এ কথার সমর্থনে) পবিত্র কুরআনের আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন: যে ভাবে আমি প্রথমে সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম, সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব। এটি আমার প্রতিশ্রুতি।এর বাস্তবায়ন আমি করবই। (২১ : ১০৪) আর কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যাকে কাপড় পরানো হবে। তিনি হবেন ইবরাহীম আ.। আর (সে দিন) আমার অনুসারীদের মধ্য হতে কয়েকজনকে পাকড়াও করে বাম দিকে অর্থাৎ জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। তখন আমি বলব, এরা তো আমার অনুসারী, এরা তো আমার অনুসারী। এ সময় আল্লাহ বললেন, যখন আপনি এদের থেকে বিদায় নেন, তখন তারা পূর্ব ধর্মে ফিরে যায়। কাজেই তারা আপনার সাহাবী নয়। তখন আল্লাহর নেক বান্দা (ঈসা আ.) যেমন বলেছিলেন, তেমন আমি বলব, হে আল্লাহ ! আমি যতদিন তাদের মাঝে ছিলাম, ততদিন আম ছিলাম তাদের অবস্থার পর্যবেক্ষক । আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় (৫ : ১২৭-১২৮)
হাদীস নং ৩১১৩
ইসমাঈল ইবনে আবদুল্লাহ রহ………..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কিয়ামতের দিন ইবরাহীম আ. তার পিতা আযরের দেখা পাবেন। আযরের মুখমণ্ডলে কালিমা এবং ধূলাবালি থাকবে। তখন ইবরাহীম আ. তাকে বললেন, আমি কি পৃথিবীতে আপনাকে বলিনি যে, আমার অবাধ্যতা করবেন না? তখন তাঁর পিতা বলবে, আজ আর তোমার অবাধ্যতা করব না। এরপর ইবরাহীম আ. (আল্লাহর কাছে) আবেদন করবেন, হে আমার রব! আপনি আমার সাথে ওয়াদা করেছিলেন যে, হাশরের দিন আপনি আমাকে লজ্জিত করবেন না। আমার পিতা রহমত থেকে বঞ্চিত হওয়ার চাইতে অধিক অপমান আমার জন্য আর কি হতে পারে। তখন আল্লাহ বললেন, আমি কাফিরদের জন্য জান্নাত হারাম করে দিয়েছি। পুনরায় বলা হবে, হে ইবরাহীম! তোমার পদতলে কি? তখন তিনি নীচের দিকে তাকাবেন। হঠাৎ দেখতে পাবেন তাঁর পিতার স্থানে সর্ব শরীরে রক্তমাখা একটি জানোয়ার পড়ে রয়েছে। এর চার পা বেঁধে জাহান্নামে ছুঁড়ে ফেলা হবে।
হাদীস নং ৩১১৪
ইয়াহইয়া ইবনে সুলাইমান রহ……….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা কাবা ঘরে প্রবেশ করলেন। সেখানে তিনি ইবরাহীম আ. ও মারইয়ামেরে ছবি দেখতে পেলেন। তখন তিনি বললেন, তাদের কি হল? অথচ তারা তো শুনতে পেয়েছে, যে ঘরে প্রাণীর ছবি থাকবে, সে ঘরে (রহমতের) ফেরেশতাগণ প্রবেশ করেন না। এ যে ইবরাহীমের ছবি বানানো হয়েছে, (ভাগ্য নির্ধারক জুয়ার তীর নিক্ষেপরত অবস্থায়) তিনি কেন ভাগ্য নির্ধারক তীর নিক্ষেপ করবেন।
হাদীস নং ৩১১৫
ইবরাহীম ইবনে মূসা রহ………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কাবা ঘরে ছবিসমূহ দেখতে পেলেন, তখন যে পর্যন্ত তাঁর নির্দেশে তা মিটিয়ে ফেলা না হল, সে পর্যন্ত তিনি তাঁতে প্রবেশ করলেন না। আর তিনি দেখতে পেলেন, ইবরাহীম এবং ইসমাঈল আ.-এর হাতে ভাগ্য নির্ধারণের তীর। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ তাদের (কুরাইশদের) উপর লানত বর্ষণ করুক। আল্লাহর কসম, তাঁরা দু’জন কখনও ভাগ্য নির্ধারক তীর নিক্ষেপ করেননি।
হাদীস নং ৩১১৬
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! মানুষের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি কে? তিনি বললেন, তাদের মধ্যে যে সবচেয়ে বেশী মুত্তাকী। তখন তারা বলল, আমরা তো আপনাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করিনি। তিনি বললেন, তাহলে (সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি) আল্লাহর নবী ইউসুফ, যিনি আল্লাহর নবী (ইয়াকুব)-এর পুত্র, আল্লাহর নবী (ইসহাক)-এর পৌত্র, এবং আল্লাহর খলীল (ইবরাহীম)-এর প্রপৌত্র। তারা বলল, আমরা আপনাকে এ সম্বন্ধেও জিজ্ঞাসা করিনি। তিনি বললেন, তাহলে কি তোমরা আরবের মূল্যবান গোত্রসমূহ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করেছ? জাহিলী যুগে তাদের মধ্যে যারা সর্বোত্তম ব্যক্তি ছিলেন, ইসলামেও তাঁরা সর্বোত্তম ব্যক্তি যদি তাঁরা ইসলামী জ্ঞানার্জন করেন। আবু উসামা ও মুতামির রহ……..আবু হুরায়রা রা. সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত।
হাদীস নং ৩১১৭
মুআম্মাল ইবনে হিশাম রহ………..সামুরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আজ রাতে (স্বপ্নে) আমার কাছে দু’জন লোক আসলেন। তারপর আমরা এক দীর্ঘদেহী লোকের কাছে আসলাম। তাঁর দেহ দীর্ঘ হওয়ার কারণে আমি তাঁর মাথা দেখতে পাচ্ছিলাম না। মূলত: তিনি ইবরাহীম আ. ছিলেন।
হাদীস নং ৩১১৮
বায়ান ইবনে আমর রহ…………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত যে, লোকজন তাঁর সামনে দাজ্জালের কথা উল্লেখ করেছেন। তার (দাজ্জালের) দু’ চোখের মাঝখানে অর্থাৎ কপালে লেখা থাকবে কাফির বা কাফ, ফা, রা। ইবনে আব্বাস রা. বলেন, এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে শুনেনি। বরং তিনি বলেছেন, যদি তোমরা ইবরাহীম আ.-কে দেখতে চাও তবে তোমাদের সাথীর (আমার) দিকে তাকাও মূসা আ. তিনি হলেন কুঁকড়ানো চুল, তামাটে রং-এর দেহ বিশিষ্ট। তিনি এমন একটি লাল উটের উপর উপবিষ্ট, যার নাকের রশি হবে খেজুর গাছের ছালের তৈরী। আমি তাকে দেখতে পাচ্ছি, তিনি আল্লাহু আকবার ধ্বনি দিতে দিতে উপত্যকায় অবতরণ করছেন।