হাদীস নং ৩১০৭
মুহাম্মদ ইবনে আরআর রহ…………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমাকে ভোরের বায়ূ (পুবালী বাতাস) দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে। ইবনে কাসীর রহ. আবু সাঈদ রা. থেকে বর্ণিত, আলী রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট কিছু স্বর্ণের টুকরো পাঠালেন। তিনি তা চার ব্যক্তির মাঝে বণ্টন করে দিলেন। (১) আল-আকরা ইবনে হাবেস হানযালী যিনি মাজাশেয়ী গোত্রের ছিলেন। (২) উআইন ইবনে বদর ফাযারী (৩) যায়েদ ত্বায়ী যিনি বনী নাবহান গোত্রের ছিলেন। (৪) আলকামা ইবনে উলাসা আমেরী, যিনি বনী কিলাব গোত্রের ছিলেণ এতে কুরাইশ ও আনসারগণ অসন্তুষ্ট হলেন এবং বলতে লাগলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাজদবাসী নেতৃবৃন্দকে দিচ্ছেন আর আমাদেরকে দিচ্ছেন না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি তা তাদেরকে (ইসলামের দিকে) আকৃষ্ট করার জন্য মনোরঞ্জন করছি। তখন এক ব্যক্তি সামনে এগিয়ে আসল, যার চোখ দুটি কোটরাগত, গণ্ড দ্বয় ঝুলে পড়া কপাল উঁচু, ঘন দাঁড়ি এবং মাথা মোড়ানো ছিল। সে বলল, হে মুহাম্মদ ! আল্লাহকে ভয় করুন। তখন তিনি বললেন, আমিই যদি নাফরমানী করি তাহলে আল্লাহর আনুগত্য করবে কে? আল্লাহ আমাকে পৃথিবীবাসীর উপর আমানতদার বানিয়েছেন আর তোমরা আমাকে আমানতদার মনে করছ না। তখন এক ব্যক্তি তাঁর কাছে তাকে হত্যা করার অনুমতি চাইল। (আবু সাঈদ রা. বলেন) আমি তাকে খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রা. বলে ধারণা করছি। কিন্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে নিষেধ করলেন। তারপর অভিযোগকারী লোকটি যখন ফিরে গেল, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ ব্যক্তির বংশ হতে বা এ ব্যক্তির পরে এমন কিছু সংখ্যক লোক হবে তারা কুরআন পড়বে কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবেনা। দীন থেকে তারা এমনভাবে বেরিয়ে পড়বে যেমনি ধনুক থেকে তীর বেরিয়ে যায়। তারা ইসলামের অনুসারীদিগকে হত্যা করবে আর মূর্তি পূজারীদেরকে হত্যা করা থেকে মুক্তি দেবে।
হাদীস নং ৩১০৮
খালিদ ইবনে ইয়াযীদ রহ………আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে (আদ জাতির ঘটনা বর্ণনায়) فهل من مدكر এ আয়াতটি পড়তে শুনেছি।
হাদীস নং ৩১০৯
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ…………যায়নাব বিনতে জাহাশ রা. থেকে বর্ণিত, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় তাঁর কাছে আসলেন এবং বলতে লাগলেন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ । আরবের লোকদের জন্য সেই অনিষ্টের কারণে ধ্বংস অনিবার্য। যা নিকটবর্তী হয়েছে। আজ ইয়াজুজ ও মাজুজের প্রাচীর এ পরিমাণ খুলে (ছিদ্র হয়ে) গেছে। এ কথার বলার সময় তিনি তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলির অগ্রভাগকে তার সাথের শাহাদাত আঙ্গুলের অগ্রভাগের সাথে মিলিয়ে গোলাকৃতি করে ছিদ্রের পরিমাণ দেখান। যায়নাব বিনতে জাহাশ রা. বলেন, তখন আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমাদের মধ্যে নেক ও পূণ্যবান লোকজন বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও কি আমরা ধ্বংস হয়ে যাব। তিনি বললেন, হ্যাঁ যখন পাপাচার অধিক মাত্রায় বেড়ে যাবে। (তখন অল্প সংখ্যক নেক লোকের বিদ্যমানেই মানুষের ধ্বংস নেমে আসবে)।
হাদীস নং ৩১১০
মুসলিম ইবনে ইবরাহীম রহ……….আবু হুরায়রা র. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ইয়াজুজ ও মাজুজের প্রাচীরে আল্লাহ এ পরিমাণ ছিদ্র করে দিয়েছেন। এই বলে, তিনি তাঁর হাতে নব্বই সংখ্যার আকৃতি ধারণ করে দেখালেন। (অর্থাৎ তিনি নিজ শাহাদাত আঙ্গুলের মাথা বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় লাগিয়ে ছিদ্রের পরিমাণ দেখালেন।
হাদীস নং ৩১১১
ইসহাক ইবনে নাসর রহ……….আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মহান আল্লাহ (হাশরের দিন) ডাকবেন হে আদম আ.! তখন তিনি জবাব দিবেন, আমি হাযির আমি সৌভাগ্যবান এবং সকল কল্যাণ আপনার হাতেই। তখন আল্লাহ বললেন, প্রতি হাজারে নয়শত নিরানব্বই জন। এ সময় (চরম ভয়ের কারণে) ছোটরা বুড়ো হয়ে যাবে। প্রত্যেক গর্ভবতী তার গর্ভপাত করে ফেলবে। মানুষকে দেখবে মাতাল সদৃশ যদিও তারা নেশাগ্রস্ত নয়। বস্তত: আল্লাহর শাস্তি কঠিন (২২:২)। সাহাবাগণ বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! (প্রতি হাজারের মধ্যে একজন) আমাদের মধ্যে সেই একজন কে? তিনি বললেন, তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর। কেননা তোমাদের মধ্য থেকে একজন আর এক হাজারের অবশিষ্ট ইয়াজুজ মাজুজ হবে। তারপর তিনি বললেন, যার হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম ! আমি আশা করি তোমরা (যারা আমার উম্ম) সমস্ত জান্নাতবাসীর এক চতুর্থাংশ হবে। (আবু সাঈদ রা. বলেন) আমরা এ সুসংবাদ শুনে) আল্লাহু আকবার বলে তাকবীর দিলাম। এরপর তিনি আবার বললেন, আমি আশা করি তোমরা সমস্ত জান্নাতীদের এক তৃতীয়াংশ হবে। আমরা পুনরায় আল্লাহু আকবার বলে তাকবীর দিলাম। তিনি আবার বললেন, আমি আশা করি তোমরা সমস্ত জান্নাতীদের অর্ধেক হবে। একথা শুনে আমরা আবারও আল্লাহু আকবার বলে তাকবীর দিলাম। তিনি বললেন, তোমরা তো অন্যান্য মানুষের তুলনায় এমন, যেমন সাদা ষাঁড়ের দেহে কয়েকটি কাল পশম অথবা কালো ষাঁড়ের দেহে কয়েকটি সাদা পশম।