হাদীস নং ৩২৫৫
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ…………উরওয়া ইবনে জুবাইর রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবু বকর রা.-এর পর আয়েশা রা.-এর নিকট সকল লোকদের মধ্যে সর্বাধিক প্রিয়পাত্র ছিলেন এবং তিনি সকল লোকদের মধ্যে আয়েশা রা.-এর সবচেয়ে বেশী সদাচারী ছিলেন। আয়েশা রা.-এর নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে রিযিক স্বরূপ যা কিছু আসত তা জমা না রেখে সাদকা করে দিতেন। এত আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর রা. বললেন, অধিক দান খায়রাত করা থেকে তাকে বারণ করা উচিত। তখন আয়েশা রা. বললেন, আমাকে দান করা থেকে বারণ করা হবে? আমি যদি তার সাথে কথা বলি, তাহলে আমাকে কাফফারা দিতে হবে এবং আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর রা. তাঁর নিকট কুরাইশের কতিপয় লোক, বিশেষ করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাতৃবংশের কিছু লোক দ্বারা সুপারিশ করালেন। তবুও তিনি তাঁর সাথে কথা বলা থেকে বিরত থাকলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাতৃবংশ বনী যুহরার কতিপয় বিশিষ্ট লোক যাদের মধ্যে আবদুর রাহমান ইবনে আসওয়াদ এবং মিসওয়ার ইবনে মাখরামা রা. ছিলেন তারা বললেন, আমরা যখন আয়েশা রা.-এর গৃহে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা করব তখন তুমি পর্দার ভিতরে ঢুকে পড়বে। তিনি তাই করলেন। পরে ইবনে জুবাইর রা. কাফফারা আদায়ের জন্য তার কাছে দশটি ক্রীতদাস পাঠিয়ে দিলেন। আয়েশা রা. তাদের সবাইকে আযাদ করে দিলেন। এরপর তিনি বরাবর আযাদ করতে লাগলেন। এমনকি তার সংখ্যা চল্লিশে পৌঁছে। আয়েশা রা. বললেন, আমি যখন কোন কাজ করার শপথ করি, তখন আমার সংকল্প থাকে যে আমি যেন সে কাজটা করে দায়িত্ব মুক্ত হয়ে যাই এবং তিনি আরো বলেন, আমি যখন কোন কাজ সম্পাদনের শপথ করি উহা যথাযথ পূরণের ইচ্ছা রাখি।
হাদীস নং ৩২৫৬
আবদুল আযীয ইবনে আবদুল্লাহ রহ………আনাস রা. থেকে বর্ণিত, উসমান রা. যায়েদ ইবনে সাবিত রা., আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর রা., সাঈদ ইবনে আস রা. আবদুর রাহমান ইবনে হারিস রা.-কে ডেকে পাঠালেন। তাঁরা (হাফসা রা.-এর নিকট) সংরক্ষিত কুরআনকে সমবেতভাবে লিপিবদ্ধ করার কাজ আরম্ভ করলেন। উসমান রা. কুরাইশ বংশীয় তিন জনকে বললেন, যদি যায়েদ ইবনে সাবিত রা. এবং তোমাদের মধ্যে কোন শব্দে (উচ্চরণ ও লিখন পদ্ধতি সম্পর্কে) মতবিরোধ দেখা দেয় তবে কুরাইশের ভাষায় তা লিপিবদ্ধ কর। যেহেতু কুরআন শরীফ তাদের ভাষায় অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তাঁরা তা-ই করলেন।
হাদীস নং ৩২৫৭
মুসাদ্দাদ রহ……….সালামা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আসলাম গোত্রের কিছু সঙখ্যক লোক বাজারের নিকটে প্রতিযোগিতামূলক তীর নিক্ষেপের অনুশীলন করছিল। এমন সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হলেন এবং তাদেরকে দেখে বললেন, হে ইসমাঈল আ.-এর বংশধর। তোমরা তীর নিক্ষেপ কর। কেননা তোমাদের পিতাও তীর নিক্ষেপে পারদর্শী ছিলেন এবং আমি তোমাদের অমুক দলের পক্ষে রয়েছি। তখন একটি পক্ষ তাদের হাত গুটিয়ে নিল। বর্ণনাকারী বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের কি হল? তারা বলল, আপনি অমুক পক্ষে থাকলে আমরা কি করে তীর নিক্ষেপ করতে পারি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা তীর নিক্ষেপ কর। আমি তোমাদের উভয় দলের সঙ্গে রয়েছি।
হাদীস নং ৩২৫৮
আবু মামার রহ………..আবু যার রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন, কোন ব্যক্তি যদি নিজ পিতা সম্পর্কে জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও অন্য কাউকে পিতা বলে দাবী করে তবে সে আল্লাহর (নিয়ামতের) কুফরী করল এবং যে ব্যক্তি নিজকে এমন বংশের সাথে নসবী সম্পৃক্ততার দাবী করল যে বংশের সাথে তার কোন নসবী সম্পর্ক নেই, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে তৈরী করে নেয়।
হাদীস নং ৩২৫৯
আলী ইবনে আইয়্যাশ রহ…………ওয়াসিলা ইবনে আসকা রা. বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিঃসন্দেহে ইহা বড় মিথ্যা যে, কোন ব্যক্তি এমন লোককে পিতা বলে দাবি করা যে তার পিতা নয় এবং বাস্তবে যা দেখে নাই তা দেখা দাবি করা এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেননি তা তাঁর প্রতি মিথ্যারোপ করা।
হাদীস নং ৩২৬০
মুসাদ্দাদ রহ…………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন আবদুল কায়স গোত্রের এক প্রতিনিধি দল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে আরয করল, হে আল্লাহর রাসূল ! (আমাদের) এ গোত্রটি বাবীআ বংশের। আমাদের এবং আপনার মধ্যে মুযার গোত্রের কাফেরগন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রেখেছে। আমরা আশহুরে হারাম ব্যতীত অন্য সময় আপনার খেদমতে হাযির হতে পারি না। খুবই ভাল হত যদি আপনি আমাদিগকে এমন কিছু নির্দেশ দিয়ে দিতেন যা আপনার কাছ থেকে গ্রহণ করে আমাদের পিছনে অবস্থিত লোকদেরকে পৌঁছে দিতাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি তোমাদেরকে চারটি কাজের আদেশ এবং চারটি কাজের নিষেধাজ্ঞা প্রদান করছি। (এক) আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা এবং এ সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই, (দুই) সালাত কায়েম করা, (তিন) যাকাত আদায় করা, (চার) গনীমতের যে মাল তোমরা লাভ কর তার পঞ্চমাংশ আল্লাহর জন্য বায়তুল মালে দান করা। আর আমি তোমাদেরকে দুব্বা (কদু পাত্র), হান্তম (সবুজ রং এর ঘড়া), নাকীর (খেজুর বৃক্ষের মূল খোদাই করে তৈরী পাত্র), মুযাফফাত (আলকাতরা লাগানো মাটির পাত্র, এই চারটি পাত্রের) ব্যবহার নিষেধ করছি।