হাদীস নং ৩২৪৬
ইসহাক ইবনে ইবরাহীম রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা মানুষকে খনির ন্যায় পাবে। জাহিলী যুগের উত্তম ব্যক্তিগণ ইসলাম গ্রহণের পরও তারা উত্তম। যখন তারা দীনী জ্ঞান অর্জন করে আর তোমরা শাসন ও নেতৃত্বের ব্যাপারে লোকদের মধ্যে উত্তম ঐ ব্যক্তিকে পাবে যে এই ব্যাপারে তাদের মধ্যে সবচাইতে অধিক অনাসক্ত। আর মানুষের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ঐ দুমুখী ব্যক্তি যে একদলের সাথে একভাবে কথা বলে অপর দলের সাথে অন্যভাবে কথা বলে।
হাদীস নং ৩২৪৭
কুতাইবা ইবনে সাঈদ রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, খিলাফত ও নেতৃত্বের ব্যাপারে সকলেই কুরাইশের অনুগত থাকবে। মুসলমানগণ তাদের মুসলমানদের এবং কাফেরগণ তাহাদের কাফেরদের অনুগত। আর মানব সমাজ খনির ন্যায় জাহিলী যুগের উত্তম ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণের পরও উত্তম তারা দীনী জ্ঞানার্জন করে। তোমরা নেতৃত্ব ও শাসনের ব্যাপারে ঐ ব্যক্তিকেই সর্বোত্তম পাবে যে এর প্রতি অনাসক্ত, যে পর্যন্ত না সে তা গ্রহণ করে।
হাদীস নং ৩২৪৮
মুসাদ্দাদ রহ………..ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, إلا المودة في القربى এ আয়াতের প্রসঙ্গে রাবী তাউস রহ. বলেন যে, সায়িব ইবনে জুবাইর রা. বলেন, কুরবা শব্দ দ্বারা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিটক আত্মীয়কে বুঝান হয়েছে। তখন ইবনে আব্বাস রা. বলেন, কুরাইশের এমন কোন শাখা-গোত্র নেই যাদের সাথে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আত্মীয়তা ছিল না। আয়াতখানা তখনই নাযিল হয়। অর্থাৎ তোমরা আমার ও তোমাদের মধ্যকার আত্মীয়তার প্রতি দৃষ্টি রাখ।
হাদীস নং ৩২৪৯
আলী ইবনে আব্দুল্লাহ রহ………আবু মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এই পূর্বদিক হতে ফিতনা-ফাসাদের উৎপত্তি হবে। নির্মমতা ও হৃদয়ের কঠোরতা উট ও গরুর লেজের নিকট। পশমী তাঁবুর অধিবাসীরা রাবীআ ও মুযার গোত্রের যারা উট ও গরুর পিছনে চিৎকার করে (হাঁকায়), তাদের মধ্যেই রয়েছে নির্মমতা ও কঠোরতা।
হাদীস নং ৩২৫০
আবুল ইয়ামান রহ………..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমি বলতে শুনেছি যে, গর্ব-অহংকার পশম নির্মিত তাঁবুতে বসবাসকারী যারা (উট গরু হাঁকাতে চিৎকার করে) তাদের মধ্যে। আর শান্তভাবে বকরী পালকদের মধ্যে রয়েছে। ঈমানের দৃষ্টতা এবং হিকমত ইয়ামানবাসীদের মধ্যে রয়েছে। ইমাম বুখারী রহ. বলেন, ইয়ামান নামকরণ করা হয়েছে। যেহেতু ইহা কাবা ঘরের ডানদিকে (দক্ষিণ) অবস্থিত এবং শাম (সিরিয়া) কাবা ঘরের বাম (উত্তর) দিকে অবস্থিত বিধায় তার শাম নামকরণ করা হয়েছে। والمشأمة অর্থ বাম দিক, বাম হাতকে الشؤمى এবং বাম দিককে أشأم বলা হয়েছে।
হাদীস নং ৩২৫১
আবুল ইয়ামান রহ………মুহাম্মদ ইবনে জুবাইর ইবনে মুতঈম রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মুআবিয়া রা.-এর নিকট কুরাইশ প্রতিনিধিদের সহিত তার উপস্থিতিতে সংবাদ পৌঁছালো যে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. বর্ণনা করেন, অচিরেই কাহতান বংশীয় একজন বাদশাহর আবির্ভাব ঘটবে। ইহা শুনে মুআবিয়া রা. ক্রোধান্বিত হয়ে খুতবা দেয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আল্লাহর যথাযোগ্য হামদ ও সানার পর তিনি বললেন, আমি জানতে পেরেছি, তোমাদের মধ্য হতে কিছু সংখ্যক লোক এমন সব কথাবার্তা বলতে শুরু করছে যা আল্লাহর কিতাবে নেই এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেও বর্ণিত হয়নি। এরাই মূর্খ, এদের থেকে সাবধান থাক এবং এরূপ কাল্পনিক ধারণা হতে সতর্ক থাক যা-এর পোষণকারীকে বিপথগামী করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমি বলতে শুনেছি যে, যতদিন তারা দীন কায়েমে নিয়োজিত থাকবে ততদিন খিলাফত ও শাসন ক্ষমতা কুরাইশদের হাতেই থাকবে। এ বিষয়ে যে-ই তাদের সহিত শত্রু তা করবে আল্লাহ তাকে অধোমুখে নিক্ষেপ করবেন (অর্থাৎ লাঞ্ছিত ও অপমানিত করবেন)।
হাদীস নং ৩২৫২
আবুল ওলীদ রহ………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এ বিষয়ে (খিলাফত ও শাসন ক্ষমতা) সর্বদাই কুরাইশদের হাতে ন্যস্ত থাকবে, যতদিন তাদের দু’জন লোকও বেঁচে থাকবে।
হাদীস নং ৩২৫৩
আবু নুআঈম ও ইয়াকুব ইবনে ইবরাহীম রহ…………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কুরাইশ, আনসার, জুহায়না, মুযায়না, আসলাম, আশজা ও গিফার গোত্রগুলো আমার সাহায্যকারী। আল্লাহ তাঁর রাসূল ব্যতীত তাদের সাহায্যকারী আর কেউ নেই।
হাদীস নং ৩২৫৪
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ……….জুবাইর ইবনে মুতঈম রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এবং উসমান ইবনে আফফান রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে হাযির হলাম। উসমান রা. বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আপনি মুত্তালিবের সন্তানগণকে দান করলেন এবং আমাদেরকে বাদ দিলেন। অথচ তারা ও আমরা আপনার বংশগতভাবে সমপর্যয়ের। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বনূ হাশিম ও বনূ মুত্তালিব এক ও অভিন্ন। লায়স………উরওয়া ইবনে জুবাইর থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর রা. বনূ যুহরার কতিপয় লোকের সাথে আয়েশা রা.-এর খেদমতে হাযির হলেন। আয়েশা রা. তাদের প্রতি অত্যন্ত নম্র ও দয়ার্দ্র ছিলেন। কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে তাদের আত্মীয়তা ছিল।