হাদীস নং ৩২৩৫
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ……….আবু হুরায়রা রা. সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, পূর্বযুগে এক ব্যক্তি তার নফসের উপর অনেক যুলুম করেছিল। যখন তার মৃত্যুকাল ঘনিয়ে এল, সে তার পুত্রদেরকে বলল, মৃত্যুর পর আমার দেহ হাড় মাংসসহ পুড়িয়ে দিয়ে ভস্ম করে নিও এবং (ভস্ম) প্রবল বাতাসে উড়িয়ে দিও। আল্লাহর কসম! যদি আল্লাহ আমাকে ধরে ফেলেন, তবে তিনি আমাকে এমন কঠোরতম শাস্তি দিবেন যা অন্য কাউকেও দেননি। যখন তার মৃত্যু হল, তার সাথে সে ভাবেই করা হল। তারপর আল্লাহ যমিনকে আদেশ করলেন, তোমার মাঝে ঐ ব্যক্তির যা আছে একত্রিত করে দাও। (যমীন তৎক্ষণাৎ তা করে দিল) এ ব্যক্তি তখনই (আল্লাহ সম্মুখে) দাঁড়িয়ে গেল। আল্লাহ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কিসে তোমাকে এ কাজ করতে উদ্বদ্ধ করল ? সে বলল, হে প্রতিপালক তোমার ভয়ে, অতঃপর তাকে ক্ষমা করা হল। অন্য রাবী مخافتك স্থলে خشيتك বলেছেন।
হাদীস নং ৩২৩৬
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে আসমা রহ………..আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, একজন মহিলাকে একটি বিড়ালের কারণে আযাব দেয়া হয়েছিল। সে বিড়ালটিকে বেঁধে রেখেছিল। সে অবস্থায় বিড়ালটি মরে যায়। মহিলা ঐ কারণে জাহান্নামে গেল। কেননা, সে বিড়ালটিকে দানা-পানি কিছুই দেয়নি এবং ছেড়েও দেয়নি যাতে সে নিজ খুশিমতো যমীনের পোক-মাকড় খেয়ে বেঁচে থাকত।
হাদীস নং ৩২৩৭
আহমদ ইবনে ইউনুস রহ……….আবু মাসউদ উকবা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আম্বিয়া-এ কিরামের সর্বসম্মত উক্তিসমূহ যা মানব জাতি লাভ করেছে, তন্মধ্যে একটি হল, “যখন তোমার লজ্জা-শরম না তখন তুমি যা ইচ্ছা তাই করতে পার”।
হাদীস নং ৩২৩৮
আদম রহ………..আবু মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রথম যুগের আম্বিয়া-এ কিরামের সর্বসম্মত উক্তিসমূহ যা মানব জাতি লাভ করেছে, তন্মধ্যে একটি হল, “যখন তোমার লজ্জা-শরম না তখন তুমি যা ইচ্ছা তাই করতে পার”।
হাদীস নং ৩২৩৯
বিশর ইবনে মুহাম্মদ রহ………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এক ব্যক্তি গর্ব ও অহংকারের সহিত লুঙ্গী টাখনোর নীচে ঝুলিয়ে পথ চলছিল। এমতাবস্থায় তাকে যমীনে ধ্বসিয়ে দেওয়া হল এবং কিয়ামত পর্যন্ত সে এমনি অবস্থায় নীচের দিকেই যেতে থাকবে। আবদুর রাহমান ইবনে খালিদ রহ. ইমাম যুহরী রহ. থেকে হাদীস বর্ণনায় ইউনুস রহ.-এর অনুসরণ করেছেন।
হাদীস নং ৩২৪০
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, পৃথিবীতে আমাদের আগমন সর্বশেষে হলেও কিয়ামত দিবসে আমরা অগ্রগামী। কিন্তু, অন্যান্য উম্মতগণকে কিতাব দেওয়া হয়েছে আমাদের পূর্বে, আর আমাদিগকে কিতাব দেওয়া হয়েছে তাদের পর। তারপর এ (ইবাদতের) যে সম্পর্ক তারা মতবিরোধ করেছে। তা ইয়াহুদীদের মনোনীত শনিবার, খৃষ্টানদের মনোনীত রবিবার। প্রত্যেক মুসলমানদের উপর সপ্তাহে অন্তত: একদিন (অর্থাৎ শুক্রবার) গোসল করা কর্তব্য।
হাদীস নং ৩২৪১
আদম রহ………….সাঈদ ইবনে মুসাইয়্যাব রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, যখন মুআবিয়া আবু সুফিয়ান রা. মদীনায় সর্বশেষ আগমন করেন, তখন তিনি আমাদের উদ্দেশ্যে খুতবা প্রদানকালে এক গুচ্ছ পরচুলা বের করে বলেন, ইয়াহুদীগণ ব্যতীত অন্য কেউ এর ব্যবহার করে বলে আমার ধারণা ছিল না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কর্মকে মিথ্যা প্রতারণা বলে আখ্যায়িত করেছেন । অর্থাৎ পরচুলা। গুনদর রহ. শুবা রহ. থেকে হাদীস বর্ণনায় আদম রহ.-এর অনুসরণ করেছেন।
হাদীস নং ৩২৪২
খালিদ ইবনে ইয়াযীদ কাহিলী রহ……….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আয়াতে বর্ণিত, الشعوب অর্থ বড় গোত্র এবং القبائل অর্থ ছোট গোত্র।
নৈতিক গুণাবলী অধ্যায় (৩২৪৩-৩৩৮৬)
হাদীস নং ৩২৪৩
মুহাম্মদ ইবনে বাশশার রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! মানুষের মধ্যে সর্বাধিক মর্যাদাবান কে ? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে সর্বাধিক মুত্তাকী সে-ই অধিক সম্মানিত। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল ! আমরা এ ধরণের কথা জিজ্ঞাসা করিনি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে আল্লাহর নবী ইউসুফ আ.।
হাদীস নং ৩২৪৪
কায়স ইবনে হাফস রহ………কুলায়েব ইবনে ওয়ায়েল রহ. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অভিভাবকত্বে পালিত আবু সালমার কন্যা যায়নাকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি বলুন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি মুযার গোত্রের ছিলেন? তিনি বললেন, বনু নযর ইবনে কিনান উদ্ভুত গোত্র মুযার ছাড়া আর কোন গোত্র থেকে হবেন? এবং মুযার গোত্র নাযর ইবনে কিনান গোত্রের একটি শাখা ছিল।
হাদীস নং ৩২৪৫
মূসা রহ……….কুলায়েব বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অভিভাবকত্বে পালিতা কন্যা বলেন, আর আমার ধারণা তিনি হলেন যায়নাব। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুদর বাওশ, সবুজ মাটির পাত্র মুকাইয়ার ও মুযাফফাত (আলকাতরা লাগানো পাত্র বিশেষ) ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। কুলায়েব বলেন, আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, বলেন ত দেখি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন গোত্রের ছিলেন? তিনি কি মুযার গোত্রের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন ? তিনি জবাব দিলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযার গোত্র ছাড়া আর কোন গোত্রের হবেন? আর মুযার নাযর ইবনে কিনানার বংশধর ছিল।