হাদীস নং ৩২২৮
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ……….নবী সহধর্মিণী আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্লেগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে, উত্তরে তিনি বলেন, তা একটি আযাব বিশেষ। আল্লাহ তা’আলা তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাদের ইচ্ছা করেন তাদের উপর তা প্রেরণ করেন। আর আল্লাহ তা’আলা তাঁর মুমিন বান্দাগণের উপর তা (আযাবের সুরতে) রহমত স্বরূপ করে দিয়েছেন। কোন ব্যক্তি যখন প্লেগক্রান্ত স্থানে সাওয়াবের আশায় ধৈর্য ধরে অবস্থান করে এবং তার অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস থাকে যে, আল্লাহ তাকদীরে যা লিখে রেখেছেন তাই হবে। তবে সে একজন শহীদের সমান সওয়াব পাবে।
হাদীস নং ৩২২৯
কুতাইবা ইবনে সাঈদ রহ………..আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, মাখযূম গোত্রের জনৈকা চোর মহিলার ঘটনা কুরাইশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন করে তুলল। এ অবস্থায় তারা (পরস্পর) বলাবলি করতে লাগল এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে কে আলাপ আলোচনা (সুপারিশ) করতে পারে? তারা বলল, একমাত্র রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রিয়তম ব্যক্তি ওসামা ইবনে যায়েদ রা. এ জটিল ব্যাপারে আলোচনা করার সাহস করতে পারেন। (নবীজীর খেদমতে তাকে পাঠান হল তিনি প্রসঙ্গ উত্থাপন করে) ক্ষমা করেও দেয়ার সুপারিশ করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি আল্লাহর নির্ধারিত সীমা লংঘনকারীণীর সাজা (হাত কাটা) মাওকুফের সুপারিশ করছ? তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে খুতবায় বললেন, তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিসমূহকে এ কাজই ধ্বংস করেছে যে, যখন তাদের মধ্যে কোন সম্ভ্রান্ত লোক চুরি করত, তখন তারা বিনা সাজায় তাকে ছেড়ে দিত। অপরদিকে যখন কোন সহায়হীন দরিদ্র সাধারণ লোক চুরি করত, তখন তার উপর হদ (হাতকাটা দণ্ডবিধি) প্রয়োগ করত। আল্লাহর কসম, যদি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কন্যা ফাতিমা চুরি করত (আল্লাহ তাকে হিফাযত করুন) তবে আমি তার হাত অবশ্যই কেটে ফেলতাম।
হাদীস নং ৩২৩০
আদম রহ……… ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এক ব্যক্তিকে কুরআনের একটি আয়াত (এমনভাবে) পড়তে শুনলাম যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমার শ্রুত তিলাওয়াতের বিপরীত। আমি তাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে ঘটনাটি বললাম তখন তাঁর চেহারায় অসন্তোষের ভাব লক্ষ্য করলাম। তিনি বললেন, তোমরা উভয়ই ভাল ও সুন্দর পড়েছ। তবে তোমরা ইখতিলাফ (মতবিরোধ) করো না। তোমাদের পূর্ববর্তীগণ ইখতিলাফ ও মতবিরোধের কারণেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।
হাদীস নং ৩২৩১
উমর ইবনে হাফস রহ……….আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি যেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখছি যখন তিনি একজন নবী আ.-এর অবস্থা বর্ণনা করছিলেন যে, তাঁর স্বজাতিরা তাকে প্রহার করে রক্তাক্ত করে দিয়েছে আর তিনি তাঁর চেহারা থেকে মুছে ফেলছেন এবং বলছেন, হে আল্লাহ ! আমার জাতিকে ক্ষমা করে দাও, যেহেতু তারা অজ্ঞ।
হাদীস নং ৩২৩২
আবুল ওয়ালীদ রহ………..আবু সাঈদ রা. সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তোমাদের পূর্ববর্তী যুগে এক ব্যক্তি, আল্লাহ তা’আলা তাকে প্রচুর ধন-সম্পদ দান করেছিলেন। যখন তার মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এল তখন সে তার ছেলেদেরকে একত্রিত করে জিজ্ঞাসা করল। আমি তোমাদের কেমন পিতা ছিলাম? তারা উত্তর দিল আপনি আমাদের উত্তম পিতা ছিলেন। সে বলল, আমি জীবনে কখনও কোন নেক আমল করতে পারিনি। আমি যখন মারা যাব তখন তোমরা আমার লাশকে জ্বালিয়ে ভস্ম করে রেখে দিও এবং প্রচণ্ড ঝড়ের দিন ঐ ভস্ম বাতাসে উড়িয়ে দিও। সে মারা গেল। ছেলেরা ওসিয়াত অনুযায়ী কাজ করল। আল্লাহ তা’আলা তার ভস্ম একত্রিত করে জিজ্ঞাসা করলেন, এমন অদ্ভুত ওসিয়াত করতে কে তোমাকে উদ্বুদ্ধ করল? সে জবাব দিল হে, আল্লাহ! তোমার শাস্তির ভয়। ফলে আল্লাহ রহমত তাকে ঢেকে নিল। মুআয রহ…….আবু সাঈদ রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন।
হাদীস নং ৩২৩৩
মুসাদ্দাদ রহ……….হুযায়ফা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, এক ব্যক্তির যখন মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এল এবং সে জীবন থেকে নিরাশ হয়ে গেল। তখন সে তার পরিবার পরিজনকে ওসিয়াত করল, যখন আমি মরে যাব তখন তোমরা আমার জন্য অনেক লাকড়ি জমা করে (তার ভিতরে আমাকে রেখে) আগুন জ্বালিয়ে দিও। আগুন যখন আমার গোস্ত জ্বালিয়ে পুড়িয়ে হাঁড় পর্যন্ত পৌঁছে যাবে তখন (অদগ্ধ) হাড়গুলি পিষে ছাই করে নিও। তারপর সে ছাই গরমের দিন কিংবা প্রচণ্ড বাতাসের দিনে সাগরে ভাসিয়ে দিও। (তারা তাই করল) আল্লাহ তা’আলা (তার ভস্মীভূত দেহ একত্রিত করে) জিজ্ঞাসা করলেন, এমন কেন করলে? সে বলল, আপনার ভয়ে। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিলেন। উকবা রহ. বলেন, আর আমিও তাকে (হুযায়ফা রা.-কে বলতে শুনেছি।
হাদীস নং ৩২৩৪
আবদুল আযীয ইবনে আবদুল্লাহ রহ………আবু হুরায়রা রা. সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পূর্বযুগে কোন এক ব্যক্তি ছিল, যে, মানুষকে ঋণ প্রদান করত। সে তার কর্মচারীকে বলে দিত, তুমি যখন কোন অভাবীর নিকট টাকা আদায় করতে যাও, তখন তাকে মাফ করে দিও। হয়ত আল্লাহ তা’আলা এ কারণে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, (মৃত্যুর পর) যখন সে আল্লাহ তা’আলার সাক্ষাৎ লাভ করল, তখন আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিলেন।