হাদীস নং ৩২০৫
ইসহাক রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কসম সেই সত্তার যার হাতে আমার প্রাণ, অচিরেই তোমদের মাঝে মারিয়ামের পুত্র ঈসা আ. শাসক ও ন্যায় বিচারক হিসেবে অবতরণ করবেন। তিনি ‘ক্রুশ’ ভেঙ্গে ফেলবেন, শূকর মেরে ফেলবেন এবং তিনি যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটাবেন। তখন সম্পদের স্রোত বয়ে চলবে। এমনকি কেউ তা গ্রহণ করতে চাইবে না। তখন আল্লাহকে একটি সিজদা করা সমগ্র দুনিয়া এবং তার মধ্যকার সমস্ত সম্পদ থেকে বেশী মূল্যবান বলে গণ্য হবে। এরপর আবু হুরায়রা রা. বলেন, তোমরা ইচ্ছা করলে এর সমর্থনে এ আয়াতটি পড়তে পার। কিতাবীদের মধ্যে প্রত্যেকে তাঁর (ঈসা আ.-এর মৃত্যুর পূর্বে তাকে বিশ্বাস করবেই এবং কিয়ামতের দিন তিনি তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবেন।
হাদীস নং ৩২০৬
ইবনে বুকাইর রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের অবস্থা কেমন (আনন্দের) হবে যখন তোমাদের মাঝে মারিয়াম তনয় ঈসা আ. অবতরণ করবেন আর তোমাদের ইমাম তোমাদের মধ্য থেকেই হবে।
হাদীস নং ৩২০৭
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ………উকবা ইবনে আমর রা. হুযায়ফা রা.-কে বললেন, আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যা শুনেছেন, তা কি আমাদের কাছে বর্ণনা করবেন না? তিনি জবাব দিলেন, আম তাকে বলতে শুনেছি, যখন দাজ্জাল বের হবে তখন তার সাথে পানি ও আগুন থাকবে। এরপর মানুষ যাকে আগুনের মত দেখবে তা হবে আসলে শীতল পানি। আর যাকে মানুষ শীতল পানি ন্যায় দেখবে, তা হবে প্রকৃতপক্ষে দহনকারী আগুন। তখন তোমাদের মধ্যে যে তার দেখা পাবে, সে যেন অবশ্যই তাঁতে ঝাঁপিয়ে পড়ে, যাকে সে আগুনের ন্যায় দেখতে পাবে। কেননা, প্রকৃতপক্ষে তা সুস্বাদু শীতল পানি। হুযায়ফা রা. বলেন, আমি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে) বলতে শুনেছি, তোমাদের পূর্ববর্তীদের মাঝে একজন লোক ছিল। তার কাছে ফেরেশতা তার জান কবয করার জন্য এসেছিলেন। (তার মৃত্যুর পর) তাকে জিজ্ঞাসা করা হল। তুমি কি কোন ভাল কাজ করেছ? সে জবাব দিল, আমার জন্য নই। তাকে বলা হল, একটু চিন্তা করে দেখ। সে বলল, এ জিনিসটি ব্যতীত আমার আর কিছুই জানা নেই যে, দুনিয়াতে আমি মানুষের সাথে ব্যবসা করতাম। অর্থাৎ ঋণ দিতাম। আর তা আদায়ের জন্য তাদেরকে তাগাদা করতাম। আদায় না করতে পারলে আমি স্বচ্ছল ব্যক্তিকে সময় দিতাম আর অভাবী ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দিতাম। তখন আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করালেন। হুযায়ফা রা. বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে এটাও বলতে শুনেছি যে, কোন এক ব্যক্তির মৃত্যুর সময় এসে হাজির হল। যখন সে জীবন থেকে নিরাশ হয়ে গেল। তখন সে তার পরিজনকে ওসীয়াত করল, আমি যখন মরে যাব। তখন আমার জন্য অনেকগুলো কাঠ একত্র করে তাতে আগুন জ্বালিয়ে দিও। (আর আমাকে তাতে ফেলে দিও) আগুন যখন আমার গোশত খেয়ে ফেলবে এবং আমার হাড় পর্যন্ত পৌঁছে যাবে আর আমার হাড়গুলো বেরিয়ে আসবে, তখন তোমরা তা নিয়ে গুড়ো করে ফেলবে। তারপর যেদিন দেখবে খুব হাওয়া বইছে, তখন সেই ছাইগুলিকে উড়িয়ে দেবে। তার পরিজনেরা তাই করল। তারপর আল্লাহ সে সব একত্র করলেন এবং তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, এ কাজ তুমি কেন করলে? সে জবাব দিল, আপনার ভয়ে । তখন আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিলেন। উকবা ইবনে আমর রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে ঐ ব্যক্তি ছিল কাফন চোর।
হাদীস নং ৩২০৮
বিশর ইবনে মুহাম্মদ রহ………ইবনে আব্বাস রা. ও আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তাঁরা উভয়ে বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইন্তেকালের সময় হাযির হল। তখন তিনি আপন চেহারার উপর তার একখানা চাদর দিয়ে রাখলেন। এরপর যখন খারাপ লাগল, তখন তাঁর চেহারা মোবারক হতে তা সরিয়ে দিলেন এবং তিনি এ অবস্থায়ই বললেন, ইয়াহুদী ও নাসারাদের উপর আল্লাহর লানত। তারা তাদের নবীগণের কবরগুলোকে মসজিদ বানিয়ে রেখেছে। তারা যা করেছে তা থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলমানদেরকে সতর্ক করছেন।
হাদীস নং ৩২০৯
মুহাম্মদ ইবনে বাশশার রহ……….আবু হাযিম রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি পাঁচ বছর যাবত আবু হুরায়রা রা.-এর সাহচর্যে ছিলাম। তখন আমি তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বণী ইসরাঈলের নবীগণ তাদের উম্মতকে শাসন করতেন। যখন কোন একজন নবী ইন্তেকাল করতেন, তখন অন্য একজন নবী তাঁর স্থলাভিসিক্ত হতেন। আর আমার পরে কোন নবী নেই । তবে অনেক খলীফা হবে। সাহাবাগণ আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি আমাদেরকে কি নির্দেশ করছেন? তিনি বললেন, তোমরা একের পর এক করে তাদের বায়আতের হক আদায় করবে। তোমাদের উপর তাদের যে হক রয়েছে তা আদায় করবে। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদেরকে জিজ্ঞাসা করবেন ঐ সকল বিষয় সমন্ধে যে সবের দায়িত্ব তাদের উপর অর্পণ করা হয়েছিল।
হাদীস নং ৩২১০