হাদীস নং ৩১৯৬
মুহাম্মদ ইবনে কাসীর রহ……….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (মিরাজের রাতে) আমি ঈসা আ., মূসা আ. ও ইবরাহীম আ.-কে দেখেছি। ঈসা আ. গৌর বর্ণ, সোজা চুল এবং প্রশস্ত বক্ষ বিশিষ্ট লোক ছিলেন, মূসা আ. বাদামী রং বিশিষ্ট ছিলেন, তাঁর দেহ ছিল সুঠাম এবং মাথার চুল ছিল কোঁকড়ানো যেন ‘যুত’ গোত্রের একজন লোক।
হাদীস নং ৩১৯৭
ইবরাহীম ইবনে মুনযির রহ……….আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকজনের সামনে মাসীহ দাজ্জালে কথা উল্লেখ করলেন। তিনি বললেন, আল্লাহ টেড়া নন। সাবধান! মাসীহ দাজ্জালের ডাক চোখ টেড়া। তার চোখ যেন ফুলে যাওয়া আঙ্গুলের মত। আমি এক রাতে স্বপ্নে নিজেকে কাবার কাছে দেখলাম। হঠাৎ সেখানে বাদামী রং এর এক ব্যক্তিকে দেখলাম। তোমরা যেমন সুন্দর বাদামী রঙ্গের লোক দেখে থাক তার থেকেও বেশী সুন্দর ছিলেন তিনি। তাঁর মাথার সোজা চুল, তার দু’কাধ পর্যন্ত ঝুলছিল। তার মাথা থেকে পানি ফোঁটা ফোঁটা করে পড়ছিল। তিনি দুজন লোকের কাঁধে হাত রেখে কাবা শরীফ তাওয়াফ করছিলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম ইনি কে? তারা জবাব দিলেন ইনি হলেন, মসীহ ইবনে মারিয়াম। তারপর তাঁর পেছনে আর একজন লোককে দেখলাম। তার মাথায় চুল ছিল বেশ কোঁকড়ানো, ডান চোখ টেড়া, আকৃতিতে সে আমার দেখা মত ইবনে কাতানের অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ। সে একজন লোকেরা দু’কাধে ভর করে কাবার চারদিকে ঘুরছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ লোকটি কে? তারা বললেন, এ হল মাসীহ দাজ্জাল।
হাদীস নং ৩১৯৮
আহমদ ইবনে মুহাম্মদ মাক্কী রহ……….সালিম রা.-এর পিতা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেননি যে ঈসা আ. রক্তিম বর্ণের ছিলেন। বরং বলেছেন, একদা আমি স্বপ্নে কাবা ঘর তাওয়াফ করছিলাম। হঠাৎ সোজা চুল ও বাদামী রং বিশিষ্ট একজন লোক দেখলাম। পানি বেয়ে পড়ছে। আমি বললাম, ইনি কে? তারা বললেন, ইনি মারিয়ামের পুত্র। তখন আমি এদিক সেদিক তাকালাম। হঠাৎ দেখলাম, এক ব্যক্তি তার গায়ের রং লালবর্ণ, খুব মোটা, মাথার চুল কোঁকড়ানো এবং তার ডান চোখ টেড়া। তার চোখ যেন ফুলা আঙ্গুলের ন্যায়। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ লোকটি কে? তারা বললেন, এ হল দাজ্জাল। মানুষের মধ্যে ইবনে কাতানের সাথে তার অধিক সাদৃশ্য রয়েছে। যুহরী রহ. তার বর্ণনায় বলেন, ইবনে কাতান খুযাআ গোত্রের একজন লোক, সে জাহেলী যুগেই মারা গেছে।
হাদীস নং ৩১৯৯
আবুল ইয়ামান রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, আমি মারিয়ামের পুত্র ঈসার বেশী নিকটতম। আর নবীগণ পরস্পর আল্লাতী ভাই অর্থাৎ দীনের মূল বিষয়ে এক এবং বিধানে বিভিন্ন। আমার ও তার (ঈসার) মাঝখানে কোন নবী নেই।
হাদীস নং ৩২০০
মুহাম্মদ ইবনে সিনান রহ………..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি দুনিয়া ও আখিরাতে ঈসা ইবনে মারিয়ামের সবচেয়ে নিকটমত। নবীগণ একে অন্যের আল্লাতী ভাই। তাদের মা ভিন্ন ভিন্ন, অর্থাৎ তাদের বিধান ভিন্ন।(কিন্তু তাদের মূল দীন এক (তাওহীদ)। ইবরাহীম ইবনে তাহমান রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন।
হাদীস নং ৩২০১
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ঈসা আ. এক ব্যক্তিকে চুরি করতে দেখলেন, তখন তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি চুরি করেছ? সে বলল, কখনও নয়। সেই সত্তার কসম! যিনি ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই । তখন ঈসা আ. বললেন, আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি আর আমি আমার দু’নয়নকে বাহ্যত সমর্থন করলাম না।
হাদীস নং ৩২০২
হুমাইদী রহ…………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি উমর রা.-কে মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছেন যে, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি, তোমরা আমার প্রশংসা করতে গিয়ে অতিরঞ্জিত কর না, যেমন ঈসা ইবনে মারিয়াম আ. সম্পর্কে খৃষ্টানরা অতিরঞ্জিত করেছিল। আমি তাঁর (আল্লাহর) বান্দা, বরং তোমরা আমার সম্পর্কে বলবে, আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল।
হাদীস নং ৩২০৩
মুহাম্মদ ইবনে মুকাতিল রহ……..আবু মূসা আশআরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন , রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যদি কোন লোক তার দাসীকে আদব-কায়দা শিখায় এবং তা ভালভাবে শিখায় এবং তাকে দীন শিখায় আর তা উত্তমভাবে শিখায় তারপর তাকে আযাদ করে দেয় অতঃপর তাকে বিয়ে করে তবে সে দুটি করে সওয়াব পাবে। আর যদি কেউ ঈসা আ.-এর প্রতি ঈমান আনয়ন করে তারপর আমার প্রতিও ঈমান আনে, তার জন্যও দুটি করে সওয়াব রয়েছে। আর গোলাম যদি তার প্রতিপালককে ভয় করে এবং তার মনীবদেরকে মেনে চলে তার জন্যও দুটি করে সাওয়াব রয়েছে।
হাদীস নং ৩২০৪
মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ রহ……….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা হাশরের মাঠে খালি পা খালি গা এবং খাতনাবিহীন অবস্থায় সমবেত হবে। তারপর তিনি এ আয়াত পাঠ করলেন, যেভাবে আমি প্রথমবার সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব। এটা আমার ওয়াদা। আমি তা অবশ্যই পূর্ণ করব। (২১: ১০৪) এরপর (হাশরে) সর্বপ্রথম যাকে কাপড় পরানো হবে, তিনি হলেন ইবরাহীম আ. তারপর আমার সাহাবীদের কিছু সংখ্যককে ডান দিকে (বেহেশতে) এবং বাম দিকে (দোযখে) নিয়ে যাওয়া হবে। তখন আমি বলব, এরা তো আমার অনুসারী। তখন বলা হবে আপনি তাদের থেকে বিদায় নেয়ার পর তারা মুরতাদ হয়ে গেছে। তখন আমি এমন কথা বলব, যেমন বলেছিল, পূণ্যবান বান্দা ঈসা ইবনে মারিয়াম আ.। তার উক্তিটি হল এ আয়াত: আর আমি যতদিন তাদের মধ্যে ছিলাম ততদিন আমি তাদের উপর সাক্ষী ছিলাম। এরপর আপনি যখন আমাকে উঠিয়ে নিলেন তখন আপনিই তাদের হেফাযতকারী ছিলেন। আর আপনি তো সব কিছুর উপরই সাক্ষী। যদি আপনি তাদেরকে আযাব দেন, তবে এরা তো আপনারই বান্দা। আর যদি আপনি তাদেরকে ক্ষমা করে দেন তবে আপনি নিশ্চয়ই পরাক্রমশীল ও প্রজ্ঞাময়। (৫: ১১৭) কাবীসা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এর হল ঐ সব মুরতাদ যারা আবু বকর রা.-এর খিলাফতকালে মুরতাদ হয়ে গিয়েছিল। তখন আবু বকর রা. তাদের সাথে যুদ্ধ করেছিলেন।