হাদীস নং ৩১৮৪
খালীদ ইবনে মাখলাদ রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সুলাইমান ইবনে দাউদ আ. বলেছিলেন, আজ রাতে আমি আমার সত্তর জন্য স্ত্রীর নিকট যাব। প্রত্যেক স্ত্রী একজন করে অশ্বারোহী যোদ্ধা গর্ভধারণ করবে। এরা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করবে। তখন তাঁর সাথী বললেন, ইনশা আল্লাহ (বলুন)। কিন্তু তিনি মুখে তা বলেননি। এরপর একজন স্ত্রী ব্যতীত কেউ গর্ভধারণ করলেন না। সে যাও এক (পুত্র) সন্তান প্রসব করলেন। তাও তার এক অঙ্গ ছিলনা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তিনি যদি ইনশা আল্লাহ মুখে বলতেন, তাহলে (সবগুলো সন্তানই জন্ম নিত এবং) আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করত। শুআইব এবং ইবনে আবু যিনাদ রহ. এখানে নব্বই জন স্ত্রীর কথা উল্লেখ করেছেন আর এটাই সঠিক বর্ণনা।
হাদীস নং ৩১৮৫
উমর ইবনে হাফস রহ…………আবু যার রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সর্বপ্রথম কোন মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি বললেন, মসজিদে হারাম। আমি বললাম, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, মসজিদে আকসা। আমি বললাম, এ দু’য়ের নির্মাণের মাঝখানে কত ব্যবধান? তিনি বললেন, চল্লিশ (বছরের) (তারপর বললেন,) যেখানেই তোমরা সালাতের সময় হবে, সেখানেই তুমি সালাত আদায় করে নিবে। কেননা, পৃথিবীটাই তোমার জন্য মসজিদ।
হাদীস নং ৩১৮৬
আবুল ইয়ামান রহ…………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন যে, আমার ও অন্যান্য মানুষের উপমা হল এমন যেমন কোন এক ব্যক্তি আগুন জ্বালাল এবং তাতে পতঙ্গ এবং কীটগুলো ঝাঁকে ঝাঁকে পড়তে লাগল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দু’জন মহিলা ছিল। তাদের সঙ্গে দুটি সন্তানও ছিল। হঠাৎ একটি বাঘ এসে তাদের একজনের ছেলেন নিয়ে গেল। সাথের একজন মহিলা বলল, ‘তোমার ছেলেটিই বাঘে নিয়ে গেছে’। অপর মহিলাটি বলল, না, বাঘে তোমার ছেলেটি নিয়ে গেছে। তারপর উভয় মহিলাই দাউদ আ.-এর নিকট এ বিরোধ মিমাংসার জন্য বিচারপ্রার্থী হল। তখন তিনি ছেলেটির বিষয়ে বয়স্কা মহিলাটির পক্ষে রায় দিলেন। তারপর তারা উভয়ে (বিচারালয় থেকে) বেরিয়ে দাউদ আ.-এর পুত্র সুলাইমান আ.-এর কাছ দিয়ে যেতে লাগল এবং তারা উভয়ে তাকে ঘটনাটি জানালেন। তখন তিনি লোকদেরকে বললেন, তোমরা আমার কাছে একখানা ছোরা আনয়ন কর। আমি ছেলেটিকে দু’টুকরা করে তাদের উভয়ের মধ্যে ভাগ করে দেই। এ কথা শুনে অল্প বয়স্কা মহিলাটি বলে উঠল, তা করবেন না, আল্লাহ আপনার উপর করুন। ছেলেটি তারই। (এটা আমি মেনে নিচ্ছি)। তখন তিনি ছেলেটির ব্যাপারে অল্প বয়স্কা মহিলাটির পক্ষেই রায় দিয়ে দিলেন। আবু হুরায়রা রা. বলেন, আল্লাহর কসম! ছোরা অর্থে ‘ছিক্কিন’ শব্দটি আমি ঐ দিনই শুনেছি। আর না হয় আমরা তো ছোরাকে ‘মুদইয়াতুন’ ই বলতাম।
হাদীস নং ৩১৮৭
আবুল ওয়ালীদ রহ………..আবদুল্লাহ (ইবনে মাসউদ) রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন এ আয়াতে কারীমা নাযিল হল : যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে যুলুমের দ্বারা কলুষিত করেনি। (৬ : ৮২) তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবাগণ বললেন, আমাদের মধ্যে কে এমন আছে যে, নিজের ঈমানকে যুলমের দ্বারা কলুষিত করেনি? তখন এ আয়াত নাযিল হয়: আল্লাহর সাথে শরীক করো না। কেননা শিরক হচ্ছে এক মহা যুলুম। (৩১ : ১৮)
হাদীস নং ৩১৮৮
ইসহাক রহ…….আবদুল্লাহ (ইবনে মাসউদ) রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন এ আয়াতে কারীমা নাযিল হল : যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে যুলুমের দ্বারা কলুষিত করেনি। তখন তা মুসলমানদের পক্ষে কঠিন হয়ে গেল। তারা আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের মধ্যে কে এমন আছে যে নিজের উপর যুলুম করেনি? তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এখানে অর্থ তা নয় বরং এখানে যুলুমের অর্থ হল শিরক। তোমরা কি কুরআনে শুননি? লুকমান তাঁর ছেলেকে উপদেশ প্রদানকালে কি বলেছিলেন ? তিনি বলেছিলেন, “হে আমার প্রিয় ছেলে ! তুমি আল্লাহর সাথে শিরক করো না। কেননা, নিশ্চয়ই শিরক এক মহা যুলুম।
হাদীস নং ৩১৮৯
হুদবা ইবনে খালিদ রহ……….মালিক ইবনে সাসাআ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাগণের কাছে মিরাজের রাত্রি সম্পর্কে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, অনন্তর তিনি ( জিবরাঈল) আমাকে নিয়ে উপরে চললেন, এমনকি দ্বিতীয় আকাশে এসে পৌঁছলেন এবং দরজা খুলতে বললেন, জিজ্ঞাসা করা হল কে? উত্তর দিলেন, আমি জিবরাঈল। প্রশ্ন করা হল। আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। জিজ্ঞাসা করা হল। তাকে কি ডেকে পাঠানো হয়েছে? উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, এরপর আমরা যখন সেখানে পৌঁছলাম তখন সেখানে ইয়াহইয়া ও ঈসা আ.-কে দেখলাম। তাঁরা উভয়ে খালাত ভাই ছিলেন। জিবরাঈল বললেন, এরা হলেন, ইয়াহইয়া এবং ঈসা আ.। তাদেরকে সালাম করুন। তখন আমি সালাম করলাম। তাঁরাও সালামের জবাব দিলেন। তারপর তাঁরা বললেন, নেক ভাই এবং নেক নবীর প্রতি মারহাবা।
হাদীস নং ৩১৯০
আবুল ইয়ামান রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি, এমন কোন আদম সন্তান নেই যাকে জন্মের সময় শয়তান স্পর্শ করে না। জন্মের সময় শয়তানের স্পর্শের কারণেই সে চিৎকার করে কাঁদে। তবে মারিয়াম এবং তাঁর ছেলে (ঈসা) আ.-এর ব্যতিক্রম। তারপর আবু হুরায়রা রা. বলেন, (এর কারণ হল মারিয়ামের মায়ের এ দু’আ “হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আম আপনার নিকট তাঁর এবং তাঁর বংশধরদের জন্য বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।