হাদীস নং ৩১৪২
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ………..ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (তাবুকের পথে সাহাবাদেরকে) নির্দেশ দিয়েছেন, তোমরা একমাত্র ক্রন্দনরত অবস্থায়ই এমন লোকদের আবাসস্থলে প্রবেশ করবে যারা নিজেরাই নিজেদের উপর জুলুম করেছে। তাদের উপর যে মুসিবত এসেছে তোমাদের উপরও যেন সে মুসিবত না আসে।
হাদীস নং ৩১৪৩
ইসহাক ইবনে মানসুর রহ………..ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সম্মানী ব্যক্তি-যিনি সন্তান সম্মানী ব্যক্তির, যিনি সন্তান সম্মানী ব্যক্তির, যিনি সন্তান সম্মানী ব্যক্তির, তিনি হলেন, ইউসুফ ইবনে ইয়াকুব ইবনে ইসহাক ইবনে ইবরাহীম আ.।
হাদীস নং ৩১৪৪
উবাইদ ইবনে ইসমাঈল রহ………..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, মানুষের মধ্যে সর্বাপেক্ষা সম্মানিত ব্যক্তি কে? তিনি উত্তর দিলেন, তাদের মধ্যে যে আল্লাহকে সবচেয়ে বেশী ভয় করে। তারা বললেন, আমরা আপনাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করিনি। তিনি বললেন, তাহলে মানুষের মধ্যে সর্বাধিক সম্মানিত ব্যক্তি হলেন, আল্লাহর নবী ইউসুফ ইবনে আল্লাহর নবী (ইয়াকুব) ইবনে আল্লাহর নবী (ইসহাক) ইবনে আল্লাহর নবী (ইবরাহীম আ.)। তাঁরা বললেন, আমরা আপনাকে এ বিষয়েও জিজ্ঞাসা করিনি। তখন তিনি বললেন, তাহলে তোমরা আমার কাছে আরবের খনি অর্থাৎ গোত্রগুলোর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছ? (তাহলে শুন) মানুষ খনি বিশেষ, জাহেলিয়াতের যুগে যারা তাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি, যদি তারা ইসলামী জ্ঞান লাভ করে।
হাদীস নং ৩১৪৫
মুহাম্মদ ইবনে সালাম রহ………..আবু হুরায়রা রা. সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদীস নং ৩১৪৬
বাদল ইবনে মুহাব্বার রহ…………আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেছেন, আবু বাকর র.-কে তিনি যেন লোকদের সালাত আদায় করিয়ে দেন। আয়েশা রা. বললেন, তিনি একজন কোমল হৃদয়ের লোক। যখন আপনার জায়গায় তিনি দাঁড়াবেন, তখন বিনম্র অন্তর হয়ে পড়বেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুনরায় তাই বললেন, আয়েশা রা. আবারও সেই উত্তর দিলেন, শোবা রহ. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তৃতীয় অথবা চতুর্থবার বললেন, (হে আয়েশা রা.) তোমরা ইউসুফ আ.-এর ঘটনায় নিন্দুক নারীদের মত। আবু আবু বকরকে বল, (সালাত আদায় করিয়ে দিক)।
হাদীস নং ৩১৪৭
রাবী ইবনে ইয়াহইয়া রহ……….আবু মূসা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লেন, তখন তিনি বললেন, আবু বকরকে বল, তিনি যেন লোকদের সালাত আদায় করিয়ে দেন। তখন আয়েশা রা. বললেন, আবু বকর রা. তো একজন এমন (কোমল হৃদয়ের) লোক। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুরূপ বললেন, তখন আয়েশা রা.ও তদরূপই বললেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আবু বকরকে বল, (যেন সালাত আদায় করিয়ে দেন)। হে আয়েশা! নিশ্চয়ই তোমরা ইউসুফ আ.-এর ঘটনার নিন্দুক নারীদের ন্যায় হয়ে পড়েছ। এরপর আবু বকর রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবনকালে ইমামতী করলেন। রাবী হুসাইন রহ. যায়েদা রহ. থেকে বর্ণনা করেছেন رجل এখানে এর স্থলে رجل رقيق আছে অর্থাৎ তিনি একজন কোমল হৃদয়ের লোক।
হাদীস নং ৩১৪৮
আবুল ইয়ামান রহ………..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’আ করেছেন, হে আল্লাহ ! আয়্যাশ ইবনে আবু রবীআকে (কাফিরদের অত্যাচার হতে) মুক্তি দিন। হে আল্লাহ ! সালাম ইবনে হিশামকে নাজাত দিন। হে আল্লাহ ! ওয়ালীদ ইবনে ওয়ালীদকে নাজাত দিন। হে আল্লাহ ! দুর্বল মুমিনদেরকেও মুক্তি দিন। হে আল্লাহ ! মুযার গোত্রের উপর আপনার পাকড়াওকে মজবুত করুন। হে আল্লাহ ! এ গোত্রের উপর এমন দুর্ভিক্ষ ও অভাব অনটন নাযিল করুন যেমন দুর্ভিক্ষ ইউসুফ আ.-এর যামানায় হয়েছিল।
হাদীস নং ৩১৪৯
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে আসমা রহ………..আবু হুরায়রা রা.থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ লূত আ.-এর উপর রহম করুন। তিনি একটি সুদৃঢ় খুঁটির আশ্রয় নিয়েছিলেন আর ইউসুফ আ. যত দীর্ঘ সময় জেলখানায় কাটিয়েছেন, আমি যদি অত দীর্ঘ সময় কারাগারে কাটাতাম এবং পরে বাদশাহর দূত (মুক্তির আদেশ নিয়ে) আমার নিকট আসত তবে নিশ্চয়ই আমি তার ডাক সাড়া দিতাম।
হাদীস নং ৩১৫০
মুহাম্মদ ইবনে সালাম রহ……….মাসরূক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আয়েশা রা.-এর মা উম্মে রুমানার নিকট আয়েশার বিষয়ে যে সব মিথ্যা অপবাদের কথা বলাবলি হচ্ছিল সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, আমি আয়েশার সাথে একত্রে বসা ছিলাম। এমন সময় একজন আনসারী মহিলা একথা বলতে বলতে আমাদের নিকট প্রবেশ করল। আল্লাহ অমুককে শাস্তি দিক। আর শাস্তি তো দিয়েছেন একথা শুনে উম্মে রুমানা রা. বললেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম একথা বলার কারণ কি? সে মহিলাটি বলল, ঐ লোকটিই তো কথাটির চর্চা করছে। তখন আয়েশা জিজ্ঞাসা করলেন, কোন কথাটির? এরপর সে আয়েশা রা.-কে বিষয়টি জানিয়ে দিল। আয়েশা রা. জিজ্ঞাসা করলেন, বিষয়টি কি আবু বকর রা. এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও শুনেছেন? সে বলল, হ্যাঁ, এতে আয়েশা রা. বেহুঁশ হয়ে পড়ে গেলেন। পরে তাঁর হুশ ফিরে আসল তবে তাঁর শরীর কাঁপিয়ে জ্বর আসল। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে জিজ্ঞাসা করলেন, তার কি হল? আমি বললাম, তাঁর সম্পর্কে যা কিছু রটেছে তাঁতে সে (মনে) আঘাত পেয়েছে ফলে সে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। এ সময় আয়েশা রা. উঠে বসলেন, আর বলতে লাগলেন, আল্লাহর কসম, আমি যদি কসম খেয়ে বলি তবুও আপনারা আমায় বিশ্বাস করবেন না আর যদি উযর পেশ করি তাও আপনারা আমার উযর শুনবেন না। অতএব এখন আমার ও আপনাদের অবস্থা হল ইয়াকুব আ. এবং তাঁর সন্তাদের মত। আপনারা যা বর্ণনা করেছেন সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহর নিকটেই চাওয়া হল। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে চলে গেলেন এবং আল্লাহ যা নাযিল করার তা নাযিল করলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে আয়েশা রা.-কে এ সংবাদ জানালেন। আয়েশা রা. বললেন, আমি একমাত্র আল্লাহরই প্রশংসা করব, অন্য কারো প্রশংসা নয়।