- সূরার নামঃ সূরা আল ইমরান
- বিভাগসমূহঃ ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা আল ইমরান
আয়াতঃ 003.001
আলিফ লাম মীম।
Alif-Lâm-Mîm. [These letters are one of the miracles of the Qur’ân, and none but Allâh (Alone) knows their meanings].
الم
Alif-lam-meem
YUSUFALI: A. L. M.
PICKTHAL: Alim. Lam. Mim.
SHAKIR: Alif Lam Mim.
KHALIFA: A.L.M.
১। আলিফ, লাম, মিম্ ২৫।
২৫। আলিফ্ লাম্ মিম্ -এই তিনটি অক্ষর সূরা বাকারা এবং আরও ৩, ২৯, ৩০, ৩১ এবং ৩২ এই সূরাগুলির (মোট সংখ্যা ৬) প্রারম্ভে স্থাপন করা হয়েছে। সূরা বাকারা এবং সূরা আল-ইমরানে একটা জাতির উত্থান-পতন, ভূত-ভবিষ্যত এবং তাদের সমগ্র ইতিহাস সম্বন্ধে বলা হয়েছে, আবার সেই সাথে নূতন জাগ্রত জাতি মুসলমানদের সামাজিক রীতিনীতি সম্বন্ধেও বলা হয়েছে। সূরা ২৯ এ ঠিক একইরকম যুক্তির অবতারণা করা হয়েছে। তবে এখানে জাতি হিসেবে না বলে প্রতিটি আত্মার জীবন-মৃত্যু, জয়-পরাজয়, অতীত-বর্তমান অর্থাৎ এই পৃথিবীতে মানব-আত্মার অস্তিত্বের পূর্ণ ইতিহাস বর্ণনা করা হয়েছে। সূরা ৩০ আমাদের বলে, আল্লাহ্ সকল শক্তির উৎস। সব কিছু তাঁর থেকে উৎপত্তি আবার তাঁর কাছেই সবকিছু ফিরে যাবে। সূরা ৩১ ও ৩২ শে ঐ কথাকেই পুনরায় সঞ্জিবীত করা হয়েছে।
নূতনভাবে, নূতন ভাষায় প্রকাশ করা হয়েছে যে, এক আল্লাহ্ই হচ্ছেন সবকিছুর স্রষ্টা এবং একমাত্র তিনিই শেষ বিচারের মালিক। সূতরাং সে সব সূরা আলিফ্, লাম্, মিম্ এই তিন অক্ষর দ্বারা শুরু হয়েছে তাদের সবার মধ্যেই অন্তর্নিহিত ভাব এক। আর তা হচ্ছে জীবন ও মৃত্যুর রহস্য, সৃষ্টির আরম্ভ ও শেষের রহস্য এবং সব রহস্যের সমাধান এক স্রষ্টার কাছে বিদ্যমান। তিনিই প্রথম এবং তিনিই শেষ। এই অক্ষর তিনটি সম্বন্ধে অনেক কথা বলা হয়েছে, অনেক আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু এর সবটাই অনুমান নির্ভর। প্রকৃত অর্থ জানেন একমাত্র আল্লাহ্। অনেকে মনে করেন এই অক্ষরগুলি প্রতীকধর্মী। সুতরাং এ সম্বন্ধে যুক্তি তর্কের অবকাশ নাই।
আয়াতঃ 003.002
আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সবকিছুর ধারক।
Allâh! Lâ ilahâ illa Huwa (none has the right to be worshipped but He), the Ever Living, the One Who sustains and protects all that exists.
اللّهُ لا إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ
Allahu la ilaha illa huwa alhayyu alqayyoomu
YUSUFALI: Allah! There is no god but He,-the Living, the Self-Subsisting, Eternal.
PICKTHAL: Allah! There is no Allah save Him, the Alive, the Eternal.
SHAKIR: Allah, (there is) no god but He, the Everliving, the Self-subsisting by Whom all things subsist
KHALIFA: GOD: there is no god except He; the Living, the Eternal.
০২। এই সেই কিতাব, যাতে কোন সন্দেহ নাই, ইহা আল্লাহ্ ভীরুদের তথা মুত্তাকীদের জন্য পথ প্রদর্শক ২৬।
২৬। ‘আল্লাহ্ ভীরু বা তাকওয়া অবলম্বনকারী’-এ আরবী শব্দটির অর্থ আল্লাহ্ ভীতি। আল্লাহ্ ভীতি অর্থ এই নয় যে অপরাধীরা যেভাবে বিচারককে ভয় পায় সেভাবে শুধুমাত্র শাস্তির ভয়ে ভয় করা। তাকওয়ার মূল ভাব হচ্ছে আল্লাহ্র প্রতি ভালবাসা। আর এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে বিরত থাকা। অর্থাৎ মনের ঐকান্তিক ইচ্ছা আল্লাহ্র আদেশকে মেনে চলার বা যা থেকে আল্লাহ্ বিরত থাকতে বলেছেন তা থেকে স্বেচ্ছায় বিরত থাকা। আল্লাহ্র প্রতি এই ভালবাসাই হচ্ছে সকল কিছুর মূল চালিকাশক্তি। তাকওয়াকে এভাবে প্রকাশ করা যায়। প্রথমতঃ (১) আল্লাহ্কে ভয় করতে হবে ভালবেসে। (২) আল্লাহ্ যা অপছন্দ করেন তা থেকে দূরে থাকতে হবে। অর্থাৎ আল্লাহ্র আইন না ভাঙ্গা, তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে না যাওয়া। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় আল্লাহ্ বারে বারে বলেছেন-মিথ্যা কথা না বলতে, সত্যি কথা বলতে, অন্যকে না ঠকাতে, ন্যায় ও সত্যের পথে চলতে ইত্যাদি মেনে চলাই হচ্ছে আল্লাহ্র আইন মেনে চলা। আল্লাহ্কে ভালবেসে, আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের আশায়, আল্লাহ্র অনুগ্রহের আশায় আমাদের জিহবা (অর্থাৎ কথা বা ভাষা), হাত (অর্থাৎ কাজ, সমাজ ও সংসারের প্রতি),মন ও মেধাকে সংযত করতে হবে। অর্থাৎ নিজেকে কথায়, কাজে, সমস্ত অন্যায় ও অসত্য থেকে শুধুমাত্র আল্লাহ্কে সন্তুষ্টি করার জন্য সংযত রাখতে হবে। (৩) অন্যায়, অসত্য ইত্যাদি থেকে নিজেকে সর্বদা বিরত রাখার ফলে ব্যক্তির চরিত্রে সৎগুণের জন্মলাভ করে, এই গুণাবলীই হচ্ছে ধর্মপরায়ণতার ভিত্তি। এরূপ ব্যক্তি সর্বান্তকরণে অসৎ ও অন্যায় পথ পরিহার করবে এবং নিজের জীবনে ন্যায়, সত্য ও কর্তব্যনিষ্ঠা, ধৈর্য্য প্রভৃতি গুণের প্রতিফলন ঘটাবে। এর জন্য প্রয়োজন সর্বশক্তি দিয়ে আল্লাহ্র পথে জিহাদ-Cause of God is the cause of justice and cause of oppressed। [দেখুন টিকা ৭৪০, আয়াত ৪৭ : ১৭]
আয়াতঃ 003.003
তিনি আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছেন সত্যতার সাথে; যা সত্যায়ন করে পূর্ববর্তী কিতাবসমুহের।
It is He Who has sent down the Book (the Qur’ân) to you (Muhammad SAW) with truth, confirming what came before it. And he sent down the Taurât (Torah) and the Injeel (Gospel).