- সূরার নামঃ সূরা বাকারা
- বিভাগসমূহঃ ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা বাকারা
আয়াতঃ 002.001
আলিফ লাম মীম।
Alif-Lâm-Mîm. [These letters are one of the miracles of the Qur’ân and none but Allâh (Alone) knows their meanings].
الم
Alif-lam-meem
YUSUFALI: A.L.M.
PICKTHAL: Alif. Lam. Mim.
SHAKIR: Alif Lam Mim.
KHALIFA: A.L.M.
২৫। আলিফ্ লাম্ মিম্ -এই তিনটি অক্ষর সূরা বাকারা এবং আরও ৩, ২৯, ৩০, ৩১ এবং ৩২ এই সূরাগুলির (মোট সংখ্যা ৬) প্রারম্ভে স্থাপন করা হয়েছে। সূরা বাকারা এবং সূরা আল-ইমরানে একটা জাতির উত্থান-পতন, ভূত-ভবিষ্যত এবং তাদের সমগ্র ইতিহাস সম্বন্ধে বলা হয়েছে, আবার সেই সাথে নূতন জাগ্রত জাতি মুসলমানদের সামাজিক রীতিনীতি সম্বন্ধেও বলা হয়েছে। সূরা ২৯ এ ঠিক একইরকম যুক্তির অবতারণা করা হয়েছে। তবে এখানে জাতি হিসেবে না বলে প্রতিটি আত্মার জীবন-মৃত্যু, জয়-পরাজয়, অতীত-বর্তমান অর্থাৎ এই পৃথিবীতে মানব-আত্মার অস্তিত্বের পূর্ণ ইতিহাস বর্ণনা করা হয়েছে। সূরা ৩০ আমাদের বলে, আল্লাহ্ সকল শক্তির উৎস। সব কিছু তাঁর থেকে উৎপত্তি আবার তাঁর কাছেই সবকিছু ফিরে যাবে। সূরা ৩১ ও ৩২ শে ঐ কথাকেই পুনরায় সঞ্জিবীত করা হয়েছে।
নূতনভাবে, নূতন ভাষায় প্রকাশ করা হয়েছে যে, এক আল্লাহ্ই হচ্ছেন সবকিছুর স্রষ্টা এবং একমাত্র তিনিই শেষ বিচারের মালিক। সূতরাং সে সব সূরা আলিফ্, লাম্, মিম্ এই তিন অক্ষর দ্বারা শুরু হয়েছে তাদের সবার মধ্যেই অন্তর্নিহিত ভাব এক। আর তা হচ্ছে জীবন ও মৃত্যুর রহস্য, সৃষ্টির আরম্ভ ও শেষের রহস্য এবং সব রহস্যের সমাধান এক স্রষ্টার কাছে বিদ্যমান। তিনিই প্রথম এবং তিনিই শেষ। এই অক্ষর তিনটি সম্বন্ধে অনেক কথা বলা হয়েছে, অনেক আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু এর সবটাই অনুমান নির্ভর। প্রকৃত অর্থ জানেন একমাত্র আল্লাহ্। অনেকে মনে করেন এই অক্ষরগুলি প্রতীকধর্মী। সুতরাং এ সম্বন্ধে যুক্তি তর্কের অবকাশ নাই।
——————————–
সূরা বাকারা – ২
২৮৬ আয়াত, ৪০ রুকু, মাদানী
[দয়াময়,পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে]
ভূমিকা : প্রারম্ভিক সূরা ফাতেহায় ৭টি আয়াতকে কোরআন শরীফের সার সংক্ষেপ বলা যায়, ঠিক সে রকম এই সূরায় ২৮৬টি আয়াতে সমগ্র কোরআন শরীফের শিক্ষাকে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
সার সংক্ষেপ : এই সূরায় –
১-২৯ আয়াতে গূঢ় অর্থসম্পন্ন উপদেশাবলীর মাধ্যমে তিন রকম লোকের কথা বলা হয়েছে এবং কিভাবে এই তিন শ্রেণীর লোক আল্লাহ্র উপদেশাবলী গ্রহণ করে সে সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। যারা আল্লাহ্র কাছে হেদায়েত প্রার্থনা করে অবশ্যই আল্লাহ্র বাণী তাদের পথ প্রদর্শন করে। যারা তাঁর বাণী প্রত্যাখ্যান করে তারা চক্ষুষ্মান হয়েও অন্ধ। তাদের আত্মায় সীল-মোহর দেয়া। মুনাফিকদের জন্য করুণা, কারণ তারা নিজেরাও প্রতারিত এবং অন্যকেও প্রতারিত করতে সর্বদা থাকে সচেষ্ট। সুন্দর উপমার সাহায্যে এই কথাটি প্রকাশ করা হয়েছে। বৃষ্টি ফসলের জমিকে ফুল-ফল-ফসলে ভরিয়ে তোলে। আবার সেই বৃষ্টিই আগাছায় ভর্তি জমিতে কাঁটাগাছের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সেরূপ বিশ্বাসী বা ঈমানদার লোকের জন্য আল্লাহ্র বাণী, তার ঈমানের ভীত আরও মজবুত করে, আবার সেই একই বাণী অবিশ্বাসীদের হৃদয়ের ব্যাধি বৃদ্ধি করে।
আয়াত ৩০-৩৯ এ বলা হয়েছে মানুষের সৃষ্টি সম্বন্ধে, বলা হয়েছে সৃষ্ট জগতে তার উচ্চে অধিষ্ঠান, তার পতন, পৃথিবীতে বিবর্তণের ধারায় তার পথ চলার নির্দেশ সম্বন্ধে।
আয়াত ৪০-৮৬ এ বলা হয়েছে ইসরাইলীদের সম্পর্কে। তাদের কিতাব, তাদের ঐতিহ্য, আল্লাহ্ প্রদত্ত নেয়ামত এবং কিভাবে তারা আল্লাহ্ প্রদত্ত নেয়ামতের প্রতি অকৃতজ্ঞ হয়েছিলো, উপমা ও সাধারণ কাহিনীর মাধ্যমে তা বর্ণনা করা হয়েছে।
আয়াত ৮৭-১২১ হযরত মুসা (আঃ) ও হযরত ঈসা (আঃ) এর সম্পর্কে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, কিভাবে তাঁরা অবাধ্য ও অবিশ্বাসী জনতার সাথে সংগ্রাম করেছিলেন। কিভাবে ঐশী কিতাব প্রাপ্ত লোকেরা তাদের নিজেদের কিতাবের বাণী অস্বীকার করেছিলো। কিভাবে তারা অহংকারের স্ফীত হয়ে হযরত মুহম্মদ (দঃ) কে অস্বীকার করেছিলো; যদিও তারা জানতো যে নবুয়তের ধারাবাহিকতায় তিনিই শেষ নবী।
আয়াত ১২২-১৪১। পিতা ইব্রাহীম (আঃ) এর সম্বন্ধে এখানে বর্ণনা করা হয়েছে। হযরত ইব্রাহীম একজন সতিক্যারের পূণ্যবান ইমাম ছিলেন। তিনি আরবে জন্ম গ্রহণকারী হযরত ইসমাঈলের বংশের পূর্বপুরুষ। আবার ইসরাইল সম্প্রদায়েরও পূর্বপুরুষ ছিলেন তিনি। তিনিই হযরত ইসমাঈল সহযোগে কাবা শরীফ নির্মাণ করেন এবং পরিশুদ্ধ করেন। এভাবেই তিনি সকলের জন্য একই ধর্মের অবতারণা করেন। আর তাঁর এই ধর্মের বিশ্বনন্দিত রূপই হচ্ছে ইসলাম।
আয়াত ১৪২-১৬৭। কা’বা শরীফ এখন বিশ্ব মানবের এবাদতের স্থান এবং বিশ্ব মুসলিম ভ্রাতৃত্বের প্রতীক।
আয়াত ১৬৮-২৪২। এভাবেই বিশ্ব মুসলিম ভ্রাতৃত্বের প্রতিষ্ঠা যার এক নির্দিষ্ট কেন্দ্রবিন্দু ও প্রতীক আছে – আর তা হচ্ছে কা’বা শরীফ। সারা মুসলিম জাহানের জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম কানুনের প্রবর্তন করা হয়েছে। তাদের সামাজিক জীবন, ব্যক্তিগত জীবন, পারিবারিক জীবন সম্পর্কে নিয়ম-নীতি নির্দেশ দান করা হয়েছে। একথা দ্ব্যার্থহীনভাবে ঘোষণা করা হয়েছে যে আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে কোন ধর্ম নাই, কোনও পূণ্য নাই। পূণ্য আছে এক স্রষ্টায় বিশ্বাসে, জীবে দয়ায়, প্রার্থনায়, দানে এবং দুঃখ দুর্দশায় ধৈর্য্য ধারণের মধ্যে। সামাজিক জীবনের বিভিন্ন বিষয়ে যেমন-খাদ্য, পানীয়, উপবাস, বিষয়-সম্পত্তির বন্টন, জিহাদ, মদ, জুয়া, এতিম এবং মেয়েদের প্রতি ব্যবহার সম্পর্কীয় নিয়ম কানুন ইত্যাদি সম্পর্কে নির্দেশ দান করা হয়েছে।
আয়াত ২৪৩-২৫৩। জিহাদকে যেনো ভুল বোঝা না হয়। জিহাদের প্রকৃতরূপকে বোঝানোর জন্য তালুত, গোলিয়াথ ডেভিডের ঘটনার বর্ণনা করা হয়েছে। যুগে-যুগে, কালে-কালে নবী রাসূলদের পৃথিবীকে প্রেরণ করা হয়েছে মিথ্যার বিরুদ্ধে জেহাদ এবং সত্যের প্রতিষ্ঠার জন্য।
আয়াত ২৫৪-২৮৩। এই আয়াতসমূহে বিশেষভাবে বলা হয়েছে যে সত্যিকারের গুণাবলী বা ধর্মাচারণ মুখের কথা নয়। সত্যিকারের ধর্ম নির্ভর করে-দয়া, মায়া, মহত্ব, স্রষ্টার প্রতি প্রগাঢ় ভক্তি ও ভালোবাসার মধ্যে।
আয়াত ২৫৫। এই আয়াতটিতে আল্লাহ্র প্রকৃতি সম্বন্ধে বলা হয়েছে। আয়াতটিকে বলা হয় “আয়তাল কুরশী”। অর্থাৎ তিনি সেই বিশ্ব প্রতিপালক যার আসন ভূলোকে, দ্যুলোকে, সর্বত্র। যার উপস্থিতি বিশ্বব্যাপী।
আয়াত ২৮৪-২৮৬। এই সূরা শেষ করা হয়েছে এক স্রষ্টায় বিশ্বাস (Faith), তাঁর প্রতি আনুগত্য এবং ধর্মের ব্যাপারে ব্যক্তিগত দায় দায়িত্বের উপরে গুরুত্ব আরোপ করে।
কুরআন শরীফে সূরা বাকারা হচ্ছে সর্ববৃহৎ সূরা। ২৮২ নম্বর আয়াতটি হচ্ছে কুরআন শরীফের সর্ববৃহৎ আয়াত যা এই সূরাতে বিদ্যমান। আয়াত ৬৭-৭১ এ দেয়া উপমা অনুসারে গাভী নাম দেয়া হয়েছে। এই উপমায় দেখানো হয়েছে, যখন বিশ্বাসের ভিত থাকে দুর্বল, তখন আনুগত্য প্রকাশ করা হয় কষ্টসাধ্য। যখন বিশ্বাসের ভিতে চির ধরে মানুষ নানা অজুহাতে স্রষ্টার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ থেকে বিরত থাকে। এমন কি যদিও তারা আক্ষরিক অর্থে, আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে স্রষ্টাকে মান্য করতে চেষ্টা করে কিন্তু তা হয় সম্পূর্ণ বাহ্যিক। যে বিশ্বাস, যে আনুগত্য আত্মার অন্তস্থল থেকে উৎসারিত নয় তা স্রষ্টার কাছেও গ্রহণযোগ্য নয়। এসব লোকেরা নিজেদের ধার্মিক বলে প্রচার করলেও এরা আত্মিক দিক থেকে মৃত। এদের আত্মা মমিতে পরিণত হয়ে যায়। তাদের আত্মম্ভরিতা, স্বার্থপরতা, স্বনির্ভরশীলতা তাদের করে তোলে অহংকারী। ফলে তারা বুঝতে অপারগ যে আত্মিক দিক থেকে তারা মৃত। কারণ স্রষ্টার যে করুণা যা বিশ্বজগতকে বেষ্টন করে আছে, যে অমিয়ধারাতে সারা সৃষ্টি অবগাহন করে ধন্য তারা তা বুঝতে অসমর্থ। স্রষ্টার অস্তিত্ব তারা অনুভব করতে অসমর্থ। জীবন বহমান-গতিশীল, কর্মচঞ্চল। হীন, নীচ, কর্দমাক্ত জীবন থেকে উর্ধ্বলোকে আরোহণের চেষ্টাই হচ্ছে জীবনের উদ্দেশ্য। এটাই হচ্ছে এই সূরার মূল ধারা। এ সূরা মদিনায় নাজেল হওয়া সূরাগুলির মধ্যে প্রধান সূরা ।
আয়াতঃ 002.002
এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য,
This is the Book (the Qur’ân), whereof there is no doubt, a guidance to those who are Al-Muttaqûn [the pious and righteous persons who fear Allâh much (abstain from all kinds of sins and evil deeds which He has forbidden) and love Allâh much (perform all kinds of good deeds which He has ordained)].
ذَلِكَ الْكِتَابُ لاَ رَيْبَ فِيهِ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ
Thalika alkitabu la rayba feehi hudan lilmuttaqeena
YUSUFALI: This is the Book; in it is guidance sure, without doubt, to those who fear Allah;
PICKTHAL: This is the Scripture whereof there is no doubt, a guidance unto those who ward off (evil).
SHAKIR: This Book, there is no doubt in it, is a guide to those who guard (against evil).
KHALIFA: This scripture is infallible; a beacon for the righteous;
২৬। ‘আল্লাহ্ ভীরু বা তাকওয়া অবলম্বনকারী’-এ আরবী শব্দটির অর্থ আল্লাহ্ ভীতি। আল্লাহ্ ভীতি অর্থ এই নয় যে অপরাধীরা যেভাবে বিচারককে ভয় পায় সেভাবে শুধুমাত্র শাস্তির ভয়ে ভয় করা। তাকওয়ার মূল ভাব হচ্ছে আল্লাহ্র প্রতি ভালবাসা। আর এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে বিরত থাকা। অর্থাৎ মনের ঐকান্তিক ইচ্ছা আল্লাহ্র আদেশকে মেনে চলার বা যা থেকে আল্লাহ্ বিরত থাকতে বলেছেন তা থেকে স্বেচ্ছায় বিরত থাকা। আল্লাহ্র প্রতি এই ভালবাসাই হচ্ছে সকল কিছুর মূল চালিকাশক্তি। তাকওয়াকে এভাবে প্রকাশ করা যায়। প্রথমতঃ (১) আল্লাহ্কে ভয় করতে হবে ভালবেসে। (২) আল্লাহ্ যা অপছন্দ করেন তা থেকে দূরে থাকতে হবে। অর্থাৎ আল্লাহ্র আইন না ভাঙ্গা, তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে না যাওয়া। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় আল্লাহ্ বারে বারে বলেছেন-মিথ্যা কথা না বলতে, সত্যি কথা বলতে, অন্যকে না ঠকাতে, ন্যায় ও সত্যের পথে চলতে ইত্যাদি মেনে চলাই হচ্ছে আল্লাহ্র আইন মেনে চলা। আল্লাহ্কে ভালবেসে, আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের আশায়, আল্লাহ্র অনুগ্রহের আশায় আমাদের জিহবা (অর্থাৎ কথা বা ভাষা), হাত (অর্থাৎ কাজ, সমাজ ও সংসারের প্রতি),মন ও মেধাকে সংযত করতে হবে। অর্থাৎ নিজেকে কথায়, কাজে, সমস্ত অন্যায় ও অসত্য থেকে শুধুমাত্র আল্লাহ্কে সন্তুষ্টি করার জন্য সংযত রাখতে হবে। (৩) অন্যায়, অসত্য ইত্যাদি থেকে নিজেকে সর্বদা বিরত রাখার ফলে ব্যক্তির চরিত্রে সৎগুণের জন্মলাভ করে, এই গুণাবলীই হচ্ছে ধর্মপরায়ণতার ভিত্তি। এরূপ ব্যক্তি সর্বান্তকরণে অসৎ ও অন্যায় পথ পরিহার করবে এবং নিজের জীবনে ন্যায়, সত্য ও কর্তব্যনিষ্ঠা, ধৈর্য্য প্রভৃতি গুণের প্রতিফলন ঘটাবে। এর জন্য প্রয়োজন সর্বশক্তি দিয়ে আল্লাহ্র পথে জিহাদ-Cause of God is the cause of justice and cause of oppressed। [দেখুন টিকা ৭৪০, আয়াত ৪৭ : ১৭]
আয়াতঃ 002.003
যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে
Who believe in the Ghaib and perform As-Salât (Iqâmat-as-Salât), and spend out of what we have provided for them [i.e. give Zakât , spend on themselves, their parents, their children, their wives, etc., and also give charity to the poor and also in Allâh’s Cause – Jihâd, etc.].
الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ
Allatheena yu/minoona bialghaybi wayuqeemoona alssalata wamimma razaqnahum yunfiqoona
YUSUFALI: Who believe in the Unseen, are steadfast in prayer, and spend out of what We have provided for them;
PICKTHAL: Who believe in the Unseen, and establish worship, and spend of that We have bestowed upon them;
SHAKIR: Those who believe in the unseen and keep up prayer and spend out of what We have given them.
KHALIFA: who believe in the unseen, observe the Contact Prayers (Salat), and from our provisions to them, they give to charity.
২৭। বিশ্বে যা কিছু সুন্দর সবকিছুর মূল চালিকাশক্তি সর্বশক্তিমান এক আল্লাহ্। আল্লাহ্ তাঁর বান্দাকে যা কিছু নেয়ামত দান করেছেন তা থেকে সৎকাজে দান করতে বলা হয়েছে। অনেক তফসীরকারগণ মনে করেন অর্থ এবং ধন-সম্পদই একমাত্র দান করার বিষয়বস্তু। কিন্তু আল্লাহ্র নেয়ামতকে শুধুমাত্র অর্থের নিক্তিতে মাপলে ভুল করা হবে। মানুষকে আল্লাহ্ সৃষ্টির সেরা জীব করেছেন সেটা শুধুমাত্র এজন্য নয় যে, সে আর্থিক সাচ্ছন্দ্য সংগ্রহে সক্ষম। মানুষ ‘আশরাফুল মাখলুকাত’- সৃষ্টির সেরা জীব, কারণ তার চারিত্রিক গুণাবলী। চারিত্রিক গুণাবলীর কারণেই মানুষ কখনও ফেরেশতার সমতুল্য, আবার এর অভাবে পশুর সমান। এই সব চারিত্রিক গুণাবলী, মেধা, মননশক্তি সবই মহান আল্লাহ্র দান। এ সবই আল্লাহ্র নেয়ামত। আল্লাহ্র নেয়ামতকে আমরা তিন ভাগে বিভক্ত করতে পারি।
প্রথমত : বস্তুগত দান, যথা ধন-সম্পদ, খাদ্য, বাসস্থান, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি। অর্থাৎ যা কিছু আমরা পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে অনুভব করতে পারি, এ সব কিছুই এই শ্রেণীর নেয়ামতের অন্তর্গত।
দ্বিতীয়ত : স্পর্শাতীত দান অর্থাৎ যে নেয়ামত পঞ্চ ইন্দ্রিয় দ্বারা অনুভব করা যায় না যথা- উচ্চ মর্যাদা, বংশ মর্যাদা, ক্ষমতা, প্রভাব-প্রতিপক্তি, সুযোগ-সুবিধা, স্বাস্থ্য, প্রতিভা, মেধা, বিদ্যা, বুদ্ধি ইত্যাদি যা ব্যক্তির চরিত্রের প্রকাশ পায় তা সবই আল্লাহ্র নেয়ামত।
তৃতীয়ত : বিবেক (Spiritual gift),জাগ্রত বিবেক আল্লাহ্র সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত। যথা-ভালো-মন্দ বোঝার ক্ষমতা,ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা, অন্তর্দৃষ্টি লাভ করা, মানুষকে তার গুণাবলীর দ্বারা বিচার করার ক্ষমতা, ভালোবাসার ক্ষমতা, গুণাবলীর সনাক্ত করার ক্ষমতা,ইত্যাদি ইত্যাদি।
আল্লাহ্ বিভিন্ন ব্যক্তিকে তার এই নেয়ামতের বিভিন্ন অংশ দান করে থাকেন। কেউ হয়তো অর্থ-সম্পদে সম্পদশীল, আবার কেউ উচ্চ পদ মর্যাদার অধিকারী, কেউ মেধা, বুদ্ধিতে কৃতী। আল্লাহ্ বলেছেন যার মধ্যে এই তিন ধরনের যে কোন ধরনের নেয়ামতের প্রকাশ ঘটুক না কেন তা নিয়ে অহংকার করার কিছুই নাই। এ সবই বান্দার জন্য আল্লাহ্র দান। এ দান কখনও একা ভোগ করতে নাই। আল্লাহ্র সন্তুষ্টি বিধানের জন্য, তার সৃষ্টির সেবার জন্য, মানুষের মঙ্গলার্থে এসব নেয়ামত বা আল্লাহ্র দানকে ব্যবহার করতে হবে। অর্থাৎ যার অর্থ আছে তিনি অর্থ দান করবেন জনহিতকর কাজে। যার মেধা আছে তিনি সেই মেধা, যার প্রভাব প্রতিপত্তি আছে তিনি সেই প্রভাব প্রতিপত্তি ইত্যাদি যে নেয়ামতই বান্দার থাকুক না কেন তিনি সেই নেয়ামত আল্লাহ্র সন্তুষ্টি বিধানের জন্য মানুষের মঙ্গলের জন্য তার সৃষ্টির সেবার জন্য ব্যয় করবেন। অর্থাৎ অর্থ-সম্পদ, ক্ষমতা, মর্যাদা, সুযোগ-সুবিধা, শিক্ষা, সঙ্গীত, শিল্প, সংস্কৃতি, সাহিত্য ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ের যে দক্ষতা বা প্রতিভা যাই-ই থাকুক না কেন তা আল্লাহ্র সৃষ্টির মঙ্গলের জন্য ব্যয় করা হচ্ছে আল্লাহ্র এবাদত করা। ঠিক সেইভাবে যে ব্যক্তি আত্মিক নেয়ামতে ধন্য বা বিবেকবান, তার উচিত তার সেই জ্ঞান ও অন্তর্দৃষ্টি সমাজের বিবেককে জাগ্রত করার কাজে নিবেদন করা। জনসাধারণের বিবেককে জাগ্রত করার জন্য, তারা যাতে ন্যায়কে-অন্যায় থেকে পার্থক্য করতে পারে, ভালকে মন্দ থেকে আলাদা করতে পারে, বিশ্ব মানবতার জন্য তাদের সেই জ্ঞানকে ব্যবহার বা বিতরণ করতে হবে। এর জন্য আমাদের কঠোর তপস্বী হওয়ার প্রয়োজন নাই অথবা অত্যন্ত কৃপণ বা অপচয়ী হওয়ারও প্রয়োজন নাই। এই হচ্ছে দানের সংজ্ঞা।
আয়াতঃ 002.004
এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে সেসব বিষয়ের উপর যা কিছু তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেসব বিষয়ের উপর যা তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে। আর আখেরাতকে যারা নিশ্চিত বলে বিশ্বাস করে।
And who believe in (the Qur’ân and the Sunnah) which has been sent down (revealed) to you (Muhammad Peace be upon him ) and in [the Taurât (Torah) and the Injeel (Gospel), etc.] which were sent down before you and they believe with certainty in the Hereafter. (Resurrection, recompense of their good and bad deeds, Paradise and Hell, etc.).
والَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنزِلَ مِن قَبْلِكَ وَبِالآخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ
Waallatheena yu/minoona bima onzila ilayka wama onzila min qablika wabial-akhirati hum yooqinoona
YUSUFALI: And who believe in the Revelation sent to thee, and sent before thy time, and (in their hearts) have the assurance of the Hereafter.
PICKTHAL: And who believe in that which is revealed unto thee (Muhammad) and that which was revealed before thee, and are certain of the Hereafter.
SHAKIR: And who believe in that which has been revealed to you and that which was revealed before you and they are sure of the hereafter.
KHALIFA: And they believe in what was revealed to you, and in what was revealed before you, and with regard to the Hereafter, they are absolutely certain.
২৮। ঈমান বা আল্লাহ্তে বিশ্বাস শুধুমাত্র একটি মৌখিক স্বীকারোক্তি মাত্র নয়। এটি এমন এক বিশ্বাস যা উৎসারিত হয় গভীর বোধ, অবিচল আস্থা, সেই আস্থা ও বিশ্বাসে পরিপূর্ণ নির্ভরশীলতা থেকে-যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র আদেশ-নির্দেশের প্রতি পরিপূর্ণ আত্মসমর্পনের বাস্তব চর্চা এবং নিঃস্বার্থ মানবসেবার মাধ্যমে।
আয়াতঃ 002.005
তারাই নিজেদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে সুপথ প্রাপ্ত, আর তারাই যথার্থ সফলকাম।
They are on (true) guidance from their Lord, and they are the successful.
أُوْلَـئِكَ عَلَى هُدًى مِّن رَّبِّهِمْ وَأُوْلَـئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
Ola-ika AAala hudan min rabbihim waola-ika humu almuflihoona
YUSUFALI: They are on (true) guidance, from their Lord, and it is these who will prosper.
PICKTHAL: These depend on guidance from their Lord. These are the successful.
SHAKIR: These are on a right course from their Lord and these it is that shall be successful.
KHALIFA: These are guided by their Lord; these are the winners.
২৯। ‘সফলকাম’ হবে বা ‘উন্নতি’ লাভ করবে অর্থাৎ আল্লাহ্র নেয়ামতের অধিকারী হবে। এগুলি সেইসব দুর্লভ চারিত্রিক গুণাবলী যার উল্লেখ পূর্বে করা হয়েছে। অর্থাৎ বান্দা যদি আল্লাহ্র হুকুম বা আল্লাহ্র আইন মেনে চলে (যথা-সত্য কথা বলে, ন্যায়ের জন্য জিহাদ করে, মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করে ইত্যাদি) তবে তার চরিত্রে দুর্লভ গুণাবলীর জন্ম নেবে। বোঝানোর জন্য একটি ছোট উদাহরণ দেয়া গেলো। সত্য কথা বলার অভ্যাস করা আল্লাহ্র হুকুম। আমাদের রাসূল (সাঃ) জীবনে কোনওদিন এমনকি নবুয়তের পূর্বেও একটিও মিথ্যা কথা বলেন নাই। এটাই হচ্ছে আমাদের সর্বপ্রথম এবং প্রধান সুন্নত এবং ফরজ। সত্যবাদীতা এক ধরণের অভ্যাস। এর থেকে যে চারিত্রিক গুণাবলীর জন্ম নেয় তা হচ্ছে সততা, বিশ্বস্ততা, ন্যায়পরায়ণতা ইত্যাদি। আবার মিথ্যা বলাও একধরণের অভ্যাস। এর থেকে চরিত্রে যে সব দোষের সৃষ্টি হয়-তা হচ্ছে দূর্নীতিপরায়ণতা, অবিশ্বস্ততা, স্বার্থপরতা, অন্যকে ঠকানোর প্রবণতা ইত্যাদি। আত্মার উন্নতি লাভই হচ্ছে আধ্যাত্মিক সফলতার মূল কথা। সুতরাং যারা আল্লাহ্র কেতাবে বিশ্বাসী এবং সেই অনুযায়ী জীবন যাপন করেন আল্লাহ্ তাদের আত্মিক উন্নতি দান করেন। এর ফলে যে সমাজ আল্লাহ্র আইন মেনে চলে সে সমাজ শ্রীবৃদ্ধি লাভ করে। কারণ একটি পাপ অপর একটি পাপকে আকর্ষণ করে, অনুরূপভাবে একটি নেকীর (অর্থাৎ চারিত্রিক গুণাবলীর) বদলায় অপর নেকী বা (চারিত্রিক গুণাবলী) সৃষ্ট হয়।
‘নেকী” একটি বিমূর্ত অর্থজ্ঞাপক শব্দ। কিন্তু আমাদের সমাজে নেকী শব্দটিকে বস্তুগতভাবে উপস্থাপন করা হয়। যেমন-কোন কোন মৌলভী সাহেবেরা বলে থাকেন-অমুক কাজটি করলে আল্লাহ্ ৭০টি নেকী দান করবেন। নেকীকে এরকম বস্তুগতভাবে উপস্থাপন করা যায় না। নেকী হচ্ছে আল্লাহ্র সেই বিশেষ নেয়ামত যা আত্মাকে সমৃদ্ধ করে, ফলে আত্মা দুঃখ-কষ্ট ভরা পৃথিবীতে থেকেও দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্তি পায়; আত্মা অপার শান্তির পরশ অনুভব করে। সেই হিসেবে নেকী হচ্ছে চারিত্রিক গুণাবলী কারণ একমাত্র শুদ্ধ চারিত্রিক গুণাবলীই মানব সন্তানকে লোভ-লালসা ভরা পৃথিবীর উর্ধ্বে স্থাপন করতে পারে। আর ব্যক্তি যখন লোভ-লালসা ভরা পৃথিবীতে থেকেও তার উর্ধ্বে অবস্থান করতে পারে, শুধু তখনই সে বেহেশতি শান্তির স্বাদ আস্বাদন করতে পারবে। লোভ-লালসা, হিংসা-দ্বেষ, ঈর্ষা-নীচতা আত্মার ভিতরে যন্ত্রণার সৃষ্টি করে। এই আয়াতে যে তিন শ্রেণীর লোকের কথা বলা হয়েছে, এরা হচ্ছে প্রথম শ্রেণীর।
আয়াতঃ 002.006
নিশ্চিতই যারা কাফের হয়েছে তাদেরকে আপনি ভয় প্রদর্শন করুন আর নাই করুন তাতে কিছুই আসে যায় না, তারা ঈমান আনবে না।
Verily, those who disbelieve, it is the same to them whether you (O Muhammad Peace be upon him ) warn them or do not warn them, they will not believe.
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُواْ سَوَاءٌ عَلَيْهِمْ أَأَنذَرْتَهُمْ أَمْ لَمْ تُنذِرْهُمْ لاَ يُؤْمِنُونَ
Inna allatheena kafaroo sawaon AAalayhim aanthartahum am lam tunthirhum la yu/minoona
YUSUFALI: As to those who reject Faith, it is the same to them whether thou warn them or do not warn them; they will not believe.
PICKTHAL: As for the Disbelievers, Whether thou warn them or thou warn them not it is all one for them; they believe not.
SHAKIR: Surely those who disbelieve, it being alike to them whether you warn them, or do not warn them, will not believe.
KHALIFA: As for those who disbelieve, it is the same for them; whether you warn them, or not warn them, they cannot believe.
৩০। এই আয়াতে দ্বিতীয় শ্রেণীর লোকদের কথা আলোচনা করা হয়েছে। কাফের শব্দটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে যারা ইচ্ছাকৃতভাবে সত্যকে অস্বীকার করে এবং আল্লাহ্র আইন অমান্য করে তাদের। আল্লাহ্র সান্নিধ্য বা হেদায়েত পেতে হলে প্রয়োজন ঐকান্তিক বিশ্বাস ও আন্তরিকতা। আন্তরিকভাবে আল্লাহ্র কাছে হেদায়েতের জন্য আকুতি জানাতে হবে। যে আল্লাহ্র কাছে আন্তরিকভাবে হেদায়েত বা সত্যপথে চলার নিশানা অনুসন্ধান করে, আল্লাহ্র অসীম রহমত তাকে বিধৌত করে। সত্য পথে চলার নিশানা তাদের নিকট হয় স্পষ্ট প্রতীয়মান। কিন্তু যদি কেউ অহংকারে স্ফীত হয়ে আল্লাহ্র আইন (God’s Law) লঙ্ঘন করে, তাকে আল্লাহ্ হেদায়েত করেন না। কারণ মানুষই একমাত্র প্রাণী যাকে আল্লাহ্ সীমিত আকারে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি (Limited free will) দান করেছেন। সত্য পথ ও ভুল পথ এর যে কোন একটা পথকে বেছে নেবার স্বাধীনতা একমাত্র মানুষেরই আছে। কারণ মানুষ হচ্ছে ‘সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব’। মানুষের শারীরিক যে চাহিদা তার সাথে প্রাণীকূলের শারীরিক চাহিদারও কোনও পার্থক্য নাই। আরাম-আয়েশ, ভাল খাদ্য, প্রজনন ইত্যাদি জৈবিক ব্যাপারে মানুষ ও প্রাণীকূলের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নাই। পার্থক্য হচ্ছে মানুষ বুদ্ধিমান প্রাণী। নিজের সুখ ও সাচ্ছন্দ্য নিজে সৃষ্টি করে নিতে পারে। নিজের ভাল নিজে বুঝতে পারে। ইচ্ছা করলে সে চরিত্রের মাধুর্যে ফেরেশতার সমকক্ষ হতে পারে আবার ইন্দ্রিয়ের দাসে পরিণত হয়ে পশুর থেকে নিম্নস্তরে শয়তানে পরিণত হতে পারে। মানুষকে আল্লাহ্ খুব ‘সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি’ ( Limited free will ) দান করেছেন। যা সৃষ্টির অন্য কোন প্রাণীকে দান করা হয় নাই।
এই ‘সীমিত স্বাধীনতা’ সর্বপ্রথম হযরত আদম (আঃ) কে দেয়া হয় এবং এই সীমিত স্বাধীনতা প্রয়োগের ক্ষমতাও তাকে দেয়া হয়। নির্দেশ দান করা হয় যে নির্দিষ্ট গাছের নিকটবর্তী যেন তিনি না হন। কিন্তু আমাদের পূর্ব পুরুষ হযরত আদম (আঃ) আল্লাহ্ কর্তৃক দেয়া সীমিত স্বাধীনতার অপব্যবহার করেন ও প্রলোভনের কাছে আত্মসমর্পনণ করেছিলেন ফলে আল্লাহ্র হুকুম অমান্য করেছিলেন। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে অর্থাৎ আল্লাহ্ প্রদত্ত সীমিত স্বাধীনতার অপব্যবহার করে, আল্লাহ্র দেখানো পথকে অস্বীকার করে, আল্লাহ্র আইন লঙ্ঘন করে, আল্লাহ্ তাদের হেদায়েত করেন না। ফলস্বরূপ তাদের আধ্যাত্মিক জগত ধীরে ধীরে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে যায়। শারীরিকভাবে তাদের আল্লাহ্ প্রদত্ত অন্যসব দক্ষতা ও মানসিক শক্তি (Faculty of mind) অটুট থাকে। কর্মময় পৃথিবীতে হয়তো বা তারা হয় অত্যন্ত সফল কিন্তু তাদের আধ্যাত্মিক জগৎ বা বিবেক (Spiritual Faculty) হয় অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং মৃত। ফলে তাদের সত্যকে দেখার ক্ষমতা, অনুধাবন করার ক্ষমতা, বুঝতে পারার ক্ষমতা হয় বিলুপ্ত। ন্যায় ও অন্যায়ের পার্থক্য করার ক্ষমতা হয় দূরীভূত। আরও দেখুন টীকা ৯৩ [২:৮৮]
আয়াতঃ 002.007
আল্লাহ তাদের অন্তকরণ এবং তাদের কানসমূহ বন্ধ করে দিয়েছেন, আর তাদের চোখসমূহ পর্দায় ঢেকে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি।
Allâh has set a seal on their hearts and on their hearings, (i.e. they are closed from accepting Allâh’s Guidance), and on their eyes there is a covering. Theirs will be a great torment.
خَتَمَ اللّهُ عَلَى قُلُوبِهمْ وَعَلَى سَمْعِهِمْ وَعَلَى أَبْصَارِهِمْ غِشَاوَةٌ وَلَهُمْ عَذَابٌ عظِيمٌ
Khatama Allahu AAala quloobihim waAAala samAAihim waAAala absarihim ghishawatun walahum AAathabun AAatheemun
YUSUFALI: Allah hath set a seal on their hearts and on their hearing, and on their eyes is a veil; great is the penalty they (incur).
PICKTHAL: Allah hath sealed their hearing and their hearts, and on their eyes there is a covering. Theirs will be an awful doom.
SHAKIR: Allah has set a seal upon their hearts and upon their hearing and there is a covering over their eyes, and there is a great punishment for them.
KHALIFA: GOD seals their minds and their hearing, and their eyes are veiled. They have incurred severe retribution.
৩১। সমস্ত সত্য ও সুন্দরের উৎস আল্লাহ্। যদি আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে সত্যকে অস্বীকার করি, অন্যায় করি, মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করি, আল্লাহ্র আইন অমান্য করি, তবে আল্লাহ্ আমাদের হৃদয়কে যে পবিত্রভাবে সৃষ্টি করেছেন-অন্তরের সেই পবিত্রতা ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যায়। আমরা আল্লাহ্র অসীম রহমত থেকে বঞ্চিত হতে থাকবো। এর ফলে আমাদের অন্তরে সত্যিকারের ধর্মবোধ জন্মাবে না। আমাদের বিবেক ধীরে ধীরে অন্ধকার নিমজ্জিত হবে। শেষ পর্যন্ত আমাদের বিবেক (Spiritual Faculty) হয়ে যাবে মৃত। এর ফলে আমাদের অন্তরে সত্যকে ধারণ করার ক্ষমতা লোপ পাবে। সত্যকে অসত্য থেকে, ন্যায়কে অন্যায় থেকে পার্থক্য করার ক্ষমতা রহিত হবে। আমাদের সমস্ত ইন্দ্রিয় হবে সত্য বিমুখ, সত্যের আলো এবং ভালোর আলো সেখানে প্রবেশ করতে পারবে না। এটাই হচ্ছে আল্লাহ্ প্রদত্ত শাস্তি। চক্ষুষ্মান ব্যক্তি হয়েও অন্তর্দৃষ্টি বিহীন হবে। শ্রবণশক্তি থাকা সত্ত্বেও সত্য ও ন্যায়ের আহবান তার শ্রবণে পৌঁছাবে না। একেই বলা হয়েছে চক্ষু ও কর্ণে সীল মোহর দ্বারা বন্ধ করে দেওয়া। [দেখুন টিকা ৬৩১]
৩২। পৃথিবীতে আদম সন্তানের অবস্থান হচ্ছে স্বল্পকালীন। এই স্বল্পকালীন সময় হচ্ছে নিজেকে পরকালের জন্য প্রস্তুত করার শিক্ষানবীশকাল (Probationary Period) আত্মার উন্নতি লাভ করাই হচ্ছে এই পৃথিবীতে অবস্থানের একমাত্র লক্ষ্য। আত্মার উন্নতিকে এখানে সমৃদ্ধি এবং আত্মার অধঃপতনকে এখানে শাস্তিরূপে বর্ণনা করা হয়েছে। পাপের পথ পিচ্ছিল ও নিম্নগামী। এই পিচ্ছিল পথে যাত্রা শুরু করলে গতি হয় ক্রমাগত দ্রুত ও ত্বরাণ্বিত। শেষ পর্যন্ত এ পথ থেকে বের হয়ে আসা সম্ভবপর হয় না। কারণ একটি পাপ বহু পাপের জন্ম দেয়, যেমন-একটি পূণ্য আরও পূণ্যকে আকর্ষণ করে।
আয়াতঃ 002.008
আর মানুষের মধ্যে কিছু লোক এমন রয়েছে যারা বলে, আমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান এনেছি অথচ আদৌ তারা ঈমানদার নয়।
And of mankind, there are some (hypocrites) who say: ”We believe in Allâh and the Last Day” while in fact they believe not.
وَمِنَ النَّاسِ مَن يَقُولُ آمَنَّا بِاللّهِ وَبِالْيَوْمِ الآخِرِ وَمَا هُم بِمُؤْمِنِينَ
Wamina alnnasi man yaqoolu amanna biAllahi wabialyawmi al-akhiri wama hum bimu/mineena
YUSUFALI: Of the people there are some who say: “We believe in Allah and the Last Day;” but they do not (really) believe.
PICKTHAL: And of mankind are some who say: We believe in Allah and the Last Day, when they believe not.
SHAKIR: And there are some people who say: We believe in Allah and the last day; and they are not at all believers.
KHALIFA: Then there are those who say, “We believe in GOD and the Last Day,” while they are not believers.
রুকু – ২
৩৩। এবারে আল্লাহ্ তৃতীয় শ্রেণীর লোকদের সম্বন্ধে বলেছেন। এরা হচ্ছে মিথ্যুক অর্থাৎ মুনাফিক। এরা নিজেদের কাছে নিজেরা বিশ্বস্ত নয়। এরা মুখে বলে এক কথা কিন্তু এদের অন্তর বলে অন্য কথা। ফলে এদের অন্তরে জন্ম নেয় দুরারোগ্য ব্যাধি (২ : ১০)। সংসারে ভালো অপেক্ষা মন্দের প্রভাব বা বিস্তার ঘটে অত্যন্ত দ্রুত। মুনাফিকদের অন্তরের ব্যাধি সেইরূপ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। অবিশ্বস্ততা, স্বার্থপরতা, হিংসা-দ্বেষ প্রভৃতি বিভিন্ন রিপু মুনাফিকের অন্তর ছেয়ে ফেলে। এই সকলই মুনাফিকের অন্তরের ব্যাধি। যদি সময়মত সাবধানতা অবলম্বন করা যায় অন্তরের এই অবস্থা (State of mind) থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কিন্তু দীর্ঘদিন যারা মিথ্যার আশ্রয়ে আত্মাকে কলুষিত করে তাদের আত্মার উপরে কঠিন আবরণ পড়ে। অন্তর হয়ে যায় পাথরের ন্যায় শক্ত। সে শক্ত পর্দা ভেদ করে সত্যের আলো তাদের অন্তরে পৌঁছাতে পারে না।
আয়াতঃ 002.009
তারা আল্লাহ এবং ঈমানদারগণকে ধোঁকা দেয়। অথচ এতে তারা নিজেদেরকে ছাড়া অন্য কাউকে ধোঁকা দেয় না অথচ তারা তা অনুভব করতে পারে না।
They (think to) deceive Allâh and those who believe, while they only deceive themselves, and perceive (it) not!
يُخَادِعُونَ اللّهَ وَالَّذِينَ آمَنُوا وَمَا يَخْدَعُونَ إِلاَّ أَنفُسَهُم وَمَا يَشْعُرُونَ
YukhadiAAoona Allaha waallatheena amanoo wama yakhdaAAoona illa anfusahum wama yashAAuroona
YUSUFALI: Fain would they deceive Allah and those who believe, but they only deceive themselves, and realise (it) not!
PICKTHAL: They think to beguile Allah and those who believe, and they beguile none save themselves; but they perceive not.
SHAKIR: They desire to deceive Allah and those who believe, and they deceive only themselves and they do not perceive.
KHALIFA: In trying to deceive GOD and those who believe, they only deceive themselves without perceiving.
০৯। আল্লাহ্ ও বিশ্বাসীদের তারা প্রতারিত করতে চায়, কিন্তু [এর দ্বারা] তার শুধুমাত্র নিজেদের প্রতারিত করে অথচ তারা [তা] বুঝতে পারে না।১০। তাদের অন্তরে রয়েছে ব্যাধি; এবং আল্লাহ্ তাদের ব্যাধি বৃদ্ধি করেছেন ৩৪; তারা [ভোগ করবে] নিদারুণ যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি, কারণ তারা মিথ্যাবাদী।
৩৪। মিথ্যুক বা মুনাফিকেরা সব সময়েই হয় অবিশ্বস্ত (Insincere) এবং নীতিজ্ঞানশূন্য। একজন নীতি জ্ঞানশূন্য লোক হয় লোভী এবং সুবিধাবাদী। সুবিধাবাদীরা সর্বদা মন্দের সাথে ভালোর এবং সত্য ও ন্যায়ের সাথে অন্যায়, অসত্য ও দুর্নীতির সমঝোতা করতে ব্যস্ত থাকে। কপটতাই তাদের ব্যাধি। কারণ এই সমঝোতার ফলে সে তার অবস্থানকে সুবিধাজনক স্থানে নিতে সক্ষম হয়। নিজের অবস্থান ভালো করাই মুনাফিকের একমাত্র উদ্দেশ্য। সুবিধা ভোগ করাই তাদের একমাত্র ধ্যান ধারণা। কোনও ন্যায়-নীতি তাদের চিন্তায় স্থান পায় না। কিন্তু সংসারে কখনও ভাল ও মন্দের, ন্যায় ও অন্যায়ের, সত্য ও মিথ্যার সন্ধি হতে পারে না। যারা তা করতে চায় তার অন্তরে ব্যাধিগ্রস্থ। কারণ তারা তাদের নিজেদের অন্তরের কাছে বিশ্বস্ত নয়। এর ফলে তাদের অন্তর কোন ভাল গ্রহণ করতে পারে না। যদি কোন ভালও তাদের কাছে আসে, তবে তারা তা মন্দে রূপান্তরিত করে ফেলে। এরকম উদাহরণ আমরা অহরহ আমাদের চারপাশে দেখি। এখানে আল্লাহ্ উদাহরণ দিচ্ছেন যে, বৃষ্টি আল্লাহ্র নেয়ামত স্বরূপ। যে বৃষ্টিধারা ধরনীকে ফুল-ফল ও ফসলে ভরিয়ে দেয়। ফুলের সৌরভ ও সৌন্দর্য্যে ধরণীকে করে আমোদিত। সেই বৃষ্টির ফলে আগাছার বৃদ্ধিতে সহায়তা হয়। কাঁটাগাছের কাঁটার বৃদ্ধি ত্বরাণ্বিত হয়। শুধু যে ত্বরাণ্বিত হয় তাই-ই নয় কাঁটাকে করে শক্তিশালী। সেইরূপ মুনাফেকের অন্তরের সংস্পর্শে ‘ভালো’ মন্দরূপ ধারণ করে। মুনাফেকের ব্যাধি তার অন্তরে। ঐ কাঁটা গাছের মত, আল্লাহ্র রহমত এদের জন্য সুফল বয়ে না এনে অন্তরের ব্যাধির ব্যাপ্তি ঘটায়।
আয়াতঃ 002.010
তাদের অন্তঃকরণ ব্যধিগ্রস্ত আর আল্লাহ তাদের ব্যধি আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। বস্তুতঃ তাদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে ভয়াবহ আযাব, তাদের মিথ্যাচারের দরুন।
In their hearts is a disease (of doubt and hypocrisy) and Allâh has increased their disease. A painful torment is theirs because they used to tell lies.
فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ فَزَادَهُمُ اللّهُ مَرَضاً وَلَهُم عَذَابٌ أَلِيمٌ بِمَا كَانُوا يَكْذِبُونَ
Fee quloobihim maradun fazadahumu Allahu maradan walahum AAathabun aleemun bima kanoo yakthiboona
YUSUFALI: In their hearts is a disease; and Allah has increased their disease: And grievous is the penalty they (incur), because they are false (to themselves).
PICKTHAL: In their hearts is a disease, and Allah increaseth their disease. A painful doom is theirs because they lie.
SHAKIR: There is a disease in their hearts, so Allah added to their disease and they shall have a painful chastisement because they
KHALIFA: In their minds there is a disease. Consequently, GOD augments their disease. They have incurred a painful retribution for their lying.
০৯। আল্লাহ্ ও বিশ্বাসীদের তারা প্রতারিত করতে চায়, কিন্তু [এর দ্বারা] তার শুধুমাত্র নিজেদের প্রতারিত করে অথচ তারা [তা] বুঝতে পারে না।১০। তাদের অন্তরে রয়েছে ব্যাধি; এবং আল্লাহ্ তাদের ব্যাধি বৃদ্ধি করেছেন ৩৪; তারা [ভোগ করবে] নিদারুণ যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি, কারণ তারা মিথ্যাবাদী।
৩৪। মিথ্যুক বা মুনাফিকেরা সব সময়েই হয় অবিশ্বস্ত (Insincere) এবং নীতিজ্ঞানশূন্য। একজন নীতি জ্ঞানশূন্য লোক হয় লোভী এবং সুবিধাবাদী। সুবিধাবাদীরা সর্বদা মন্দের সাথে ভালোর এবং সত্য ও ন্যায়ের সাথে অন্যায়, অসত্য ও দুর্নীতির সমঝোতা করতে ব্যস্ত থাকে। কপটতাই তাদের ব্যাধি। কারণ এই সমঝোতার ফলে সে তার অবস্থানকে সুবিধাজনক স্থানে নিতে সক্ষম হয়। নিজের অবস্থান ভালো করাই মুনাফিকের একমাত্র উদ্দেশ্য। সুবিধা ভোগ করাই তাদের একমাত্র ধ্যান ধারণা। কোনও ন্যায়-নীতি তাদের চিন্তায় স্থান পায় না। কিন্তু সংসারে কখনও ভাল ও মন্দের, ন্যায় ও অন্যায়ের, সত্য ও মিথ্যার সন্ধি হতে পারে না। যারা তা করতে চায় তার অন্তরে ব্যাধিগ্রস্থ। কারণ তারা তাদের নিজেদের অন্তরের কাছে বিশ্বস্ত নয়। এর ফলে তাদের অন্তর কোন ভাল গ্রহণ করতে পারে না। যদি কোন ভালও তাদের কাছে আসে, তবে তারা তা মন্দে রূপান্তরিত করে ফেলে। এরকম উদাহরণ আমরা অহরহ আমাদের চারপাশে দেখি। এখানে আল্লাহ্ উদাহরণ দিচ্ছেন যে, বৃষ্টি আল্লাহ্র নেয়ামত স্বরূপ। যে বৃষ্টিধারা ধরনীকে ফুল-ফল ও ফসলে ভরিয়ে দেয়। ফুলের সৌরভ ও সৌন্দর্য্যে ধরণীকে করে আমোদিত। সেই বৃষ্টির ফলে আগাছার বৃদ্ধিতে সহায়তা হয়। কাঁটাগাছের কাঁটার বৃদ্ধি ত্বরাণ্বিত হয়। শুধু যে ত্বরাণ্বিত হয় তাই-ই নয় কাঁটাকে করে শক্তিশালী। সেইরূপ মুনাফেকের অন্তরের সংস্পর্শে ‘ভালো’ মন্দরূপ ধারণ করে। মুনাফেকের ব্যাধি তার অন্তরে। ঐ কাঁটা গাছের মত, আল্লাহ্র রহমত এদের জন্য সুফল বয়ে না এনে অন্তরের ব্যাধির ব্যাপ্তি ঘটায়।
আয়াতঃ 002.011
আর যখন তাদেরকে বলা হয় যে, দুনিয়ার বুকে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করো না, তখন তারা বলে, আমরা তো মীমাংসার পথ অবলম্বন করেছি।
And when it is said to them: ”Make not mischief on the earth,” they say: ”We are only peacemakers.”
وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ لاَ تُفْسِدُواْ فِي الأَرْضِ قَالُواْ إِنَّمَا نَحْنُ مُصْلِحُونَ
Wa-itha qeela lahum la tufsidoo fee al-ardi qaloo innama nahnu muslihoona
YUSUFALI: When it is said to them: “Make not mischief on the earth,” they say: “Why, we only Want to make peace!”
PICKTHAL: And when it is said unto them: Make not mischief in the earth, they say: We are peacemakers only.
SHAKIR: And when it is said to them, Do not make mischief in the land, they say: We are but peace-makers.
KHALIFA: When they are told, “Do not commit evil,” they say, “But we are righteous!”
১১। যখন তাদের বলা হয়, ‘পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করো না,’ তারা বলে, ‘কেন, আমরা তো কেবলমাত্র শান্তি স্থাপন করতে চাচ্ছি।’১২। নিশ্চয়ই এরাই তারা যারা অশান্তি সৃষ্টি করে, কিন্তু তারা [তা] বুঝতে পারে না ৩৫।
৩৫। যেহেতু মুনাফেকের ব্যাধি তার অন্তরে, তাদের ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা হবে তিরোহিত, ভাল ও মন্দের মধ্যে পার্থক্য করার অন্তর্দৃষ্টির হবে অভাব। ফলে এ রকম লোক যখন দেশের শাসন ব্যবস্থায় আসে অথবা কোনও দায়িত্বপূর্ণ পদ গ্রহণ করে এমন কি সমাজ-জীবনের যে কোন ক্ষু্দ্রতম কাজেও তারা অংশগ্রহণ করে; তখন সামাজিক শান্তি ও শৃঙ্খলা হয় বিঘ্নিত। তারা সমাজ-জীবনকে কলুষিত করে, অশান্তির সৃষ্টি করে। কারণ, আল্লাহ্ প্রদত্ত জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও অন্তর্দৃষ্টি ব্যতীত সমাজ ও সংসারে শান্তি স্থাপন করা সম্ভব নয়। আর আল্লাহ্ প্রদত্ত জ্ঞান ও প্রজ্ঞা মুনাফিকের অন্তরে অনুপস্থিত। কিন্তু মুনাফিকেরা মনে করে তারা শান্তির জন্যই কাজ করছে-কারণ তাদের দূরদৃষ্টির অভাবে প্রকৃত শান্তি ও শৃঙ্খলার রূপ অনুধাবন করতে তারা হয় অপারগ।
আয়াতঃ 002.012
মনে রেখো, তারাই হাঙ্গামা সৃষ্টিকারী, কিন্তু তারা তা উপলব্ধি করে না।
Verily! They are the ones who make mischief, but they perceive not.
أَلا إِنَّهُمْ هُمُ الْمُفْسِدُونَ وَلَـكِن لاَّ يَشْعُرُونَ
Wa-itha qeela lahum aminoo kama amana alnnasu qaloo anu/minu kama amana alssufahao ala innahum humu alssufahao walakin la yaAAlamoona
YUSUFALI: Of a surety, they are the ones who make mischief, but they realise (it) not.
PICKTHAL: Are not they indeed the mischief-makers? But they perceive not.
SHAKIR: Now surely they themselves are the mischief makers, but they do not perceive.
KHALIFA: In fact, they are evildoers, but they do not perceive.
১১। যখন তাদের বলা হয়, ‘পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করো না,’ তারা বলে, ‘কেন, আমরা তো কেবলমাত্র শান্তি স্থাপন করতে চাচ্ছি।’১২। নিশ্চয়ই এরাই তারা যারা অশান্তি সৃষ্টি করে, কিন্তু তারা [তা] বুঝতে পারে না ৩৫।
৩৫। যেহেতু মুনাফেকের ব্যাধি তার অন্তরে, তাদের ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা হবে তিরোহিত, ভাল ও মন্দের মধ্যে পার্থক্য করার অন্তর্দৃষ্টির হবে অভাব। ফলে এ রকম লোক যখন দেশের শাসন ব্যবস্থায় আসে অথবা কোনও দায়িত্বপূর্ণ পদ গ্রহণ করে এমন কি সমাজ-জীবনের যে কোন ক্ষু্দ্রতম কাজেও তারা অংশগ্রহণ করে; তখন সামাজিক শান্তি ও শৃঙ্খলা হয় বিঘ্নিত। তারা সমাজ-জীবনকে কলুষিত করে, অশান্তির সৃষ্টি করে। কারণ, আল্লাহ্ প্রদত্ত জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও অন্তর্দৃষ্টি ব্যতীত সমাজ ও সংসারে শান্তি স্থাপন করা সম্ভব নয়। আর আল্লাহ্ প্রদত্ত জ্ঞান ও প্রজ্ঞা মুনাফিকের অন্তরে অনুপস্থিত। কিন্তু মুনাফিকেরা মনে করে তারা শান্তির জন্যই কাজ করছে-কারণ তাদের দূরদৃষ্টির অভাবে প্রকৃত শান্তি ও শৃঙ্খলার রূপ অনুধাবন করতে তারা হয় অপারগ।
আয়াতঃ 002.013
আর যখন তাদেরকে বলা হয়, অন্যান্যরা যেভাবে ঈমান এনেছে তোমরাও সেভাবে ঈমান আন, তখন তারা বলে, আমরাও কি ঈমান আনব বোকাদেরই মত! মনে রেখো, প্রকৃতপক্ষে তারাই বোকা, কিন্তু তারা তা বোঝে না।
And when it is said to them (hypocrites): ”Believe as the people (followers of Muhammad Peace be upon him , Al-Ansâr and Al-Muhajirûn) have believed,” they say: ”Shall we believe as the fools have believed?” Verily, they are the fools, but they know not.
وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ آمِنُواْ كَمَا آمَنَ النَّاسُ قَالُواْ أَنُؤْمِنُ كَمَا آمَنَ السُّفَهَاء أَلا إِنَّهُمْ هُمُ السُّفَهَاء وَلَـكِن لاَّ يَعْلَمُونَ
Wa-itha qeela lahum aminoo kama amana alnnasu qaloo anu/minu kama amana alssufahao ala innahum humu alssufahao walakin la yaAAlamoona
YUSUFALI: When it is said to them: “Believe as the others believe:” They say: “Shall we believe as the fools believe?” Nay, of a surety they are the fools, but they do not know.
PICKTHAL: And when it is said unto them: believe as the people believe, they say: shall we believe as the foolish believe? are not they indeed the foolish? But they know not.
SHAKIR: And when it is said to them: Believe as the people believe they say: Shall we believe as the fools believe? Now surely they themselves are the fools, but they do not know.
KHALIFA: When they are told, “Believe like the people who believed,” they say, “Shall we believe like the fools who believed?” In fact, it is they who are fools, but they do not know.
৩৬। মুনাফেকের চরিত্রের আর একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এরা নিন্দুক হয়ে থাকে। এদের চরিত্রের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আত্মম্ভরিতা ও অহংকার। নিজেকে সর্বদা সর্বশ্রেষ্ঠ চিন্তা করা। যারা বিশ্বাসী ও ধার্মিক, তারা অবশ্যই আল্লাহ্র আইন মেনে চলবে । তারা হবে সত্য ও ন্যায়ের পূজারী। এটা মুনাফেকের চোখে বোকামীর সামিল কিন্তু তারা জানে না যে আল্লাহ্র চোখে মুনাফেকেরা অত্যন্ত ঘৃণ্য ও বোকা।
আয়াতঃ 002.014
আর তারা যখন ঈমানদারদের সাথে মিশে, তখন বলে, আমরা ঈমান এনেছি। আবার যখন তাদের শয়তানদের সাথে একান্তে সাক্ষাৎ করে, তখন বলে, আমরা তোমাদের সাথে রয়েছি। আমরা তো (মুসলমানদের সাথে) উপহাস করি মাত্রা।
And when they meet those who believe, they say: ”We believe,” but when they are alone with their Shayâtin (devils – polytheists, hypocrites, etc.), they say: ”Truly, we are with you; verily, we were but mocking.”
وَإِذَا لَقُواْ الَّذِينَ آمَنُواْ قَالُواْ آمَنَّا وَإِذَا خَلَوْاْ إِلَى شَيَاطِينِهِمْ قَالُواْ إِنَّا مَعَكْمْ إِنَّمَا نَحْنُ مُسْتَهْزِؤُونَ
Wa-itha laqoo allatheena amanoo qaloo amanna wa-itha khalaw ila shayateenihim qaloo inna maAAakum innama nahnu mustahzi-oona
YUSUFALI: When they meet those who believe, they say: “We believe;” but when they are alone with their evil ones, they say: “We are really with you: We (were) only jesting.”
PICKTHAL: And when they fall in with those who believe, they say: We believe; but when they go apart to their devils they declare: Lo! we are with you; verily we did but mock.
SHAKIR: And when they meet those who believe, they say: We believe; and when they are alone with their Shaitans, they say: Surely we are with you, we were only mocking.
KHALIFA: When they meet the believers, they say, “We believe,” but when alone with their devils, they say, “We are with you; we were only mocking.”
৩৭। মুনাফেকী যখন অন্তরের অন্তঃস্থলে গভীরভাবে তার শিকড় বিস্তার করে, তখন তারা হয়ে উঠে অত্যন্ত কপট ও ভণ্ড। মুখে মধু ঢেলে তারা ধার্মিক লোকদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে যেনো তাদের প্রকৃতরূপ বিশ্ববাসীরা অনুধাবন করতে না পারে। কিন্তু যখন তারা স্বগোত্রে প্রত্যাবর্তন করে তখন নিজমূর্তি ধারণ করে। কিন্তু কপটতা, ভণ্ডামীর পরিণতি কখনও ভালো হয় না। একে আল্লাহ্ তুলনা করেছেন সেই লোকের সাথে যে তার বাণিজ্যে মুনাফা লাভের পরিবর্তে লোকসান দিয়েছে। কারণ এই পৃথিবীতে আমাদের অবস্থান খুবই ক্ষণস্থায়ী। এই ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে আমরা এসেছি বেহেশ্ত লাভের বাণিজ্যে। আত্মা তার মূলধন। এই মূলধনকে যে উন্নত করতে পারবে তারই আছে মুনাফা। অন্যথায় যে আত্মাকে লোভ-লালসা, অন্যায়, অসত্যের কাছে বিক্রি করে সে ঐ ব্যক্তির মত যে বাণিজ্যে লোকসান দেয়।
আয়াতঃ 002.015
বরং আল্লাহই তাদের সাথে উপহাস করেন। আর তাদেরকে তিনি ছেড়ে দিয়েছেন যেন তারা নিজেদের অহংকার ও কুমতলবে হয়রান ও পেরেশান থাকে।
Allâh mocks at them and gives them increase in their wrong-doings to wander blindly.
اللّهُ يَسْتَهْزِىءُ بِهِمْ وَيَمُدُّهُمْ فِي طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُونَ
Allahu yastahzi-o bihim wayamudduhum fee tughyanihim yaAAmahoona
YUSUFALI: Allah will throw back their mockery on them, and give them rope in their trespasses; so they will wander like blind ones (To and fro).
PICKTHAL: Allah (Himself) doth mock them, leaving them to wander blindly on in their contumacy.
SHAKIR: Allah shall pay them back their mockery, and He leaves them alone in their inordinacy, blindly wandering on.
KHALIFA: GOD mocks them, and leads them on in their transgressions, blundering.
১৫। তাদের ঠাট্টা-তামাশা আল্লাহ্ তাদের উপরে ছুড়ে দেবেন এবং তাদের সীমালংঘনের জন্য [অবাধ্যতার] রশিকে লম্বা করে দেবেন, যেনো তারা অন্ধের ন্যায় [সামনে পিছনে] পথভ্রষ্ট ভাবে ঘুরে বেড়ায়।১৬। এরাই তারা যারা হেদায়েতের বিনিময়ে ভ্রান্তি কিনে নিয়েছে। কিন্তু তাদের ব্যবসা বাণিজ্য লাভজনক নয়, এবং তারা সত্য পথের নির্দেশ হারিয়ে ফেলেছে।
১৭। তাদের উপমা সেই ব্যক্তির ন্যায় ৩৮, যে আগুন জ্বালালো। যখন তা তার চতুর্দিক আলোকিত করলো, আল্লাহ্ তাদের আলো সরিয়ে নিলেন এবং তাদের ঘোর অন্ধকারে পরিত্যাগ করলেন, যেনো তারা দেখতে না পায়।
১৮। তারা বধির, মূক এবং অন্ধ, তারা [সঠিক পথে] ফিরবে না।
৩৮। মুনাফিকের আত্মা ভণ্ডামী, জুয়াচুরি, অসত্য, অন্যায়ে পরিপূর্ণ। এগুলির সাহায্যে সে খুব সহজেই কোনও কাজে জয়লাভ করে এবং প্রশংসার পাত্রে পরিণত হয়, সেই লোকটির মত যে ক্ষণস্থায়ী আগুন জ্বালাতে সক্ষম হয়ে চারিদিকের গাঢ় অন্ধকার দূর করতে সক্ষম হয়েছিলো এবং সকলের প্রশংসার পাত্রে পরিণত হয়েছিলো। কিন্তু তার জ্বালানো আগুন অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। এক সময় তা নিভে যায়। ফলে চারিদিক আবার গাঢ় অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে যায়। হঠাৎ আলোর ঝলকানির পরে এ গাঢ়তা পূর্বের গাঢ়তার থেকে আরও বেশি প্রতীয়মান হয়। এই উপমার সাহায্যে আল্লাহ বোঝাতে চাচ্ছেন যে, যেসব কাজের ভিত্তি অন্যায়, অসত্য, অবিশ্বাস, ভণ্ডামীর উপর প্রতিষ্ঠিত, তার ফল কখনও স্থায়ী হয় না। ঐ কাজের সাফল্য অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী, আগুণের ক্ষণস্থায়ী আলোর মত। যে আলো অন্ধকারকে চিরতরে দূর করতে অপারগ। মুনাফিকেরা ভণ্ডামীর সাহায্যে জয়ী হতে চায়। ফলে তার কাজের নিয়তে আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস, সত্যের প্রতি বিশ্বস্ততা, প্রতিপালকের রহমতের আশা সবই থাকে অনুপস্থিত। মুনাফিকের কাজের নিয়ত কখনই মহৎ হয় না। কখনই ভালো হয় না। ফলে সময়ের বৃহত্তর পরিসরে মুনাফিকের কাজের নিয়ত বা অন্তরের উদ্দেশ্য সকলের নিকট পরিস্ফুটিত হয়ে যায়। সত্য প্রকাশিত হয়। ফলে কাজের সব পরিণতি হয় বিফল। সত্যের উদ্ভাসিত আলোতে মুনাফিকের অন্তর ভয়ে ত্রাসে আতঙ্কিত হয়ে উঠে। অন্তরের ভয় ত্রাস, মুনাফিকদের সুস্থ চিন্তাধারাকে বাধাগ্রস্থ করে, ফলে তারা সত্যকে জানতে, সত্যকে অনুধাবন করতে, শুনতে বা দেখতে অক্ষম হয়। মুনাফিকের আত্মার চারিদিক প্রাচীর বেষ্টিত হয়ে যায়। প্রাচীর বেষ্টিত স্থান যেমন সূর্যের ঝলমলে আলোর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ঠিক সেইরূপ মুনাফিকের অন্তরের মিথ্যার আবরণ সত্যের আলোর প্রবেশে বাঁধা সৃষ্টি করে। তাদের আত্মা সত্যের আলো বা আল্লাহ্র হেদায়েতের জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে, কিন্তু মিথ্যার আবরণ তাদের আত্মায় সত্যের আলো প্রবেশে বাঁধা দেয়। ফলে তারা অন্ধকারে অন্ধের মত পথ হাতড়ে বেড়ায়। তাদের আত্মা চায় মুক্তির আলো, মুক্তির বাতাস। কিন্তু তারা তা পায় না। তারা মিথ্যার অন্ধকারে অন্ধ ও বধির। সত্যকে খুঁজে নেবার ক্ষমতাও তাদের নাই। সুতরাং তারা আর ফিরবে না। অর্থাৎ তাদের অনুভূতিতে সত্য ও ন্যায় বোঝার মত যোগ্যতা রইল না। কারণ তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঈমানকে প্রতিহত করছে।
আয়াতঃ 002.016
তারা সে সমস্ত লোক, যারা হেদায়েতের বিনিময়ে গোমরাহী খরিদ করে। বস্তুতঃ তারা তাদের এ ব্যবসায় লাভবান হতে পারেনি এবং তারা হেদায়েতও লাভ করতে পারেনি।
These are they who have purchased error for guidance, so their commerce was profitless. And they were not guided.
أُوْلَـئِكَ الَّذِينَ اشْتَرُوُاْ الضَّلاَلَةَ بِالْهُدَى فَمَا رَبِحَت تِّجَارَتُهُمْ وَمَا كَانُواْ مُهْتَدِينَ
Mathaluhum kamathali allathee istawqada naran falamma adaat ma hawlahu thahaba Allahu binoorihim watarakahum fee thulumatin la yubsiroona
YUSUFALI: These are they who have bartered Guidance for error: But their traffic is profitless, and they have lost true direction,
PICKTHAL: These are they who purchase error at the price of guidance, so their commerce doth not prosper, neither are they guided.
SHAKIR: These are they who buy error for the right direction, so their bargain shall bring no gain, nor are they the followers of the right direction.
KHALIFA: It is they who bought the straying, at the expense of guidance. Such trade never prospers, nor do they receive any guidance.
১৫। তাদের ঠাট্টা-তামাশা আল্লাহ্ তাদের উপরে ছুড়ে দেবেন এবং তাদের সীমালংঘনের জন্য [অবাধ্যতার] রশিকে লম্বা করে দেবেন, যেনো তারা অন্ধের ন্যায় [সামনে পিছনে] পথভ্রষ্ট ভাবে ঘুরে বেড়ায়।১৬। এরাই তারা যারা হেদায়েতের বিনিময়ে ভ্রান্তি কিনে নিয়েছে। কিন্তু তাদের ব্যবসা বাণিজ্য লাভজনক নয়, এবং তারা সত্য পথের নির্দেশ হারিয়ে ফেলেছে।
১৭। তাদের উপমা সেই ব্যক্তির ন্যায় ৩৮, যে আগুন জ্বালালো। যখন তা তার চতুর্দিক আলোকিত করলো, আল্লাহ্ তাদের আলো সরিয়ে নিলেন এবং তাদের ঘোর অন্ধকারে পরিত্যাগ করলেন, যেনো তারা দেখতে না পায়।
১৮। তারা বধির, মূক এবং অন্ধ, তারা [সঠিক পথে] ফিরবে না।
৩৮। মুনাফিকের আত্মা ভণ্ডামী, জুয়াচুরি, অসত্য, অন্যায়ে পরিপূর্ণ। এগুলির সাহায্যে সে খুব সহজেই কোনও কাজে জয়লাভ করে এবং প্রশংসার পাত্রে পরিণত হয়, সেই লোকটির মত যে ক্ষণস্থায়ী আগুন জ্বালাতে সক্ষম হয়ে চারিদিকের গাঢ় অন্ধকার দূর করতে সক্ষম হয়েছিলো এবং সকলের প্রশংসার পাত্রে পরিণত হয়েছিলো। কিন্তু তার জ্বালানো আগুন অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। এক সময় তা নিভে যায়। ফলে চারিদিক আবার গাঢ় অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে যায়। হঠাৎ আলোর ঝলকানির পরে এ গাঢ়তা পূর্বের গাঢ়তার থেকে আরও বেশি প্রতীয়মান হয়। এই উপমার সাহায্যে আল্লাহ বোঝাতে চাচ্ছেন যে, যেসব কাজের ভিত্তি অন্যায়, অসত্য, অবিশ্বাস, ভণ্ডামীর উপর প্রতিষ্ঠিত, তার ফল কখনও স্থায়ী হয় না। ঐ কাজের সাফল্য অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী, আগুণের ক্ষণস্থায়ী আলোর মত। যে আলো অন্ধকারকে চিরতরে দূর করতে অপারগ। মুনাফিকেরা ভণ্ডামীর সাহায্যে জয়ী হতে চায়। ফলে তার কাজের নিয়তে আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস, সত্যের প্রতি বিশ্বস্ততা, প্রতিপালকের রহমতের আশা সবই থাকে অনুপস্থিত। মুনাফিকের কাজের নিয়ত কখনই মহৎ হয় না। কখনই ভালো হয় না। ফলে সময়ের বৃহত্তর পরিসরে মুনাফিকের কাজের নিয়ত বা অন্তরের উদ্দেশ্য সকলের নিকট পরিস্ফুটিত হয়ে যায়। সত্য প্রকাশিত হয়। ফলে কাজের সব পরিণতি হয় বিফল। সত্যের উদ্ভাসিত আলোতে মুনাফিকের অন্তর ভয়ে ত্রাসে আতঙ্কিত হয়ে উঠে। অন্তরের ভয় ত্রাস, মুনাফিকদের সুস্থ চিন্তাধারাকে বাধাগ্রস্থ করে, ফলে তারা সত্যকে জানতে, সত্যকে অনুধাবন করতে, শুনতে বা দেখতে অক্ষম হয়। মুনাফিকের আত্মার চারিদিক প্রাচীর বেষ্টিত হয়ে যায়। প্রাচীর বেষ্টিত স্থান যেমন সূর্যের ঝলমলে আলোর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ঠিক সেইরূপ মুনাফিকের অন্তরের মিথ্যার আবরণ সত্যের আলোর প্রবেশে বাঁধা সৃষ্টি করে। তাদের আত্মা সত্যের আলো বা আল্লাহ্র হেদায়েতের জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে, কিন্তু মিথ্যার আবরণ তাদের আত্মায় সত্যের আলো প্রবেশে বাঁধা দেয়। ফলে তারা অন্ধকারে অন্ধের মত পথ হাতড়ে বেড়ায়। তাদের আত্মা চায় মুক্তির আলো, মুক্তির বাতাস। কিন্তু তারা তা পায় না। তারা মিথ্যার অন্ধকারে অন্ধ ও বধির। সত্যকে খুঁজে নেবার ক্ষমতাও তাদের নাই। সুতরাং তারা আর ফিরবে না। অর্থাৎ তাদের অনুভূতিতে সত্য ও ন্যায় বোঝার মত যোগ্যতা রইল না। কারণ তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঈমানকে প্রতিহত করছে।
আয়াতঃ 002.017
তাদের অবস্থা সে ব্যক্তির মত, যে লোক কোথাও আগুন জ্বালালো এবং তার চারদিককার সবকিছুকে যখন আগুন স্পষ্ট করে তুললো, ঠিক এমনি সময় আল্লাহ তার চারদিকের আলোকে উঠিয়ে নিলেন এবং তাদেরকে অন্ধকারে ছেড়ে দিলেন। ফলে, তারা কিছুই দেখতে পায় না।
Their likeness is as the likeness of one who kindled a fire; then, when it lighted all around him, Allâh took away their light and left them in darkness. (So) they could not see.
مَثَلُهُمْ كَمَثَلِ الَّذِي اسْتَوْقَدَ نَاراً فَلَمَّا أَضَاءتْ مَا حَوْلَهُ ذَهَبَ اللّهُ بِنُورِهِمْ وَتَرَكَهُمْ فِي ظُلُمَاتٍ لاَّ يُبْصِرُونَ (17
Mathaluhum kamathali allathee istawqada naran falamma adaat ma hawlahu thahaba Allahu binoorihim watarakahum fee thulumatin la yubsiroona
YUSUFALI: Their similitude is that of a man who kindled a fire; when it lighted all around him, Allah took away their light and left them in utter darkness. So they could not see.
PICKTHAL: Their likeness is as the likeness of one who kindleth fire, and when it sheddeth its light around him Allah taketh away their light and leaveth them in darkness, where they cannot see,
SHAKIR: Their parable is like the parable of one who kindled a fire but when it had illumined all around him, Allah took away their light, and left them in utter darkness– they do not see.
KHALIFA: Their example is like those who start a fire, then, as it begins to shed light around them, GOD takes away their light, leaving them in darkness, unable to see.
১৫। তাদের ঠাট্টা-তামাশা আল্লাহ্ তাদের উপরে ছুড়ে দেবেন এবং তাদের সীমালংঘনের জন্য [অবাধ্যতার] রশিকে লম্বা করে দেবেন, যেনো তারা অন্ধের ন্যায় [সামনে পিছনে] পথভ্রষ্ট ভাবে ঘুরে বেড়ায়।১৬। এরাই তারা যারা হেদায়েতের বিনিময়ে ভ্রান্তি কিনে নিয়েছে। কিন্তু তাদের ব্যবসা বাণিজ্য লাভজনক নয়, এবং তারা সত্য পথের নির্দেশ হারিয়ে ফেলেছে।
১৭। তাদের উপমা সেই ব্যক্তির ন্যায় ৩৮, যে আগুন জ্বালালো। যখন তা তার চতুর্দিক আলোকিত করলো, আল্লাহ্ তাদের আলো সরিয়ে নিলেন এবং তাদের ঘোর অন্ধকারে পরিত্যাগ করলেন, যেনো তারা দেখতে না পায়।
১৮। তারা বধির, মূক এবং অন্ধ, তারা [সঠিক পথে] ফিরবে না।
৩৮। মুনাফিকের আত্মা ভণ্ডামী, জুয়াচুরি, অসত্য, অন্যায়ে পরিপূর্ণ। এগুলির সাহায্যে সে খুব সহজেই কোনও কাজে জয়লাভ করে এবং প্রশংসার পাত্রে পরিণত হয়, সেই লোকটির মত যে ক্ষণস্থায়ী আগুন জ্বালাতে সক্ষম হয়ে চারিদিকের গাঢ় অন্ধকার দূর করতে সক্ষম হয়েছিলো এবং সকলের প্রশংসার পাত্রে পরিণত হয়েছিলো। কিন্তু তার জ্বালানো আগুন অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। এক সময় তা নিভে যায়। ফলে চারিদিক আবার গাঢ় অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে যায়। হঠাৎ আলোর ঝলকানির পরে এ গাঢ়তা পূর্বের গাঢ়তার থেকে আরও বেশি প্রতীয়মান হয়। এই উপমার সাহায্যে আল্লাহ বোঝাতে চাচ্ছেন যে, যেসব কাজের ভিত্তি অন্যায়, অসত্য, অবিশ্বাস, ভণ্ডামীর উপর প্রতিষ্ঠিত, তার ফল কখনও স্থায়ী হয় না। ঐ কাজের সাফল্য অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী, আগুণের ক্ষণস্থায়ী আলোর মত। যে আলো অন্ধকারকে চিরতরে দূর করতে অপারগ। মুনাফিকেরা ভণ্ডামীর সাহায্যে জয়ী হতে চায়। ফলে তার কাজের নিয়তে আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস, সত্যের প্রতি বিশ্বস্ততা, প্রতিপালকের রহমতের আশা সবই থাকে অনুপস্থিত। মুনাফিকের কাজের নিয়ত কখনই মহৎ হয় না। কখনই ভালো হয় না। ফলে সময়ের বৃহত্তর পরিসরে মুনাফিকের কাজের নিয়ত বা অন্তরের উদ্দেশ্য সকলের নিকট পরিস্ফুটিত হয়ে যায়। সত্য প্রকাশিত হয়। ফলে কাজের সব পরিণতি হয় বিফল। সত্যের উদ্ভাসিত আলোতে মুনাফিকের অন্তর ভয়ে ত্রাসে আতঙ্কিত হয়ে উঠে। অন্তরের ভয় ত্রাস, মুনাফিকদের সুস্থ চিন্তাধারাকে বাধাগ্রস্থ করে, ফলে তারা সত্যকে জানতে, সত্যকে অনুধাবন করতে, শুনতে বা দেখতে অক্ষম হয়। মুনাফিকের আত্মার চারিদিক প্রাচীর বেষ্টিত হয়ে যায়। প্রাচীর বেষ্টিত স্থান যেমন সূর্যের ঝলমলে আলোর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ঠিক সেইরূপ মুনাফিকের অন্তরের মিথ্যার আবরণ সত্যের আলোর প্রবেশে বাঁধা সৃষ্টি করে। তাদের আত্মা সত্যের আলো বা আল্লাহ্র হেদায়েতের জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে, কিন্তু মিথ্যার আবরণ তাদের আত্মায় সত্যের আলো প্রবেশে বাঁধা দেয়। ফলে তারা অন্ধকারে অন্ধের মত পথ হাতড়ে বেড়ায়। তাদের আত্মা চায় মুক্তির আলো, মুক্তির বাতাস। কিন্তু তারা তা পায় না। তারা মিথ্যার অন্ধকারে অন্ধ ও বধির। সত্যকে খুঁজে নেবার ক্ষমতাও তাদের নাই। সুতরাং তারা আর ফিরবে না। অর্থাৎ তাদের অনুভূতিতে সত্য ও ন্যায় বোঝার মত যোগ্যতা রইল না। কারণ তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঈমানকে প্রতিহত করছে।
আয়াতঃ 002.018
তারা বধির, মূক ও অন্ধ। সুতরাং তারা ফিরে আসবে না।
They are deaf, dumb, and blind, so they return not (to the Right Path).
صُمٌّ بُكْمٌ عُمْيٌ فَهُمْ لاَ يَرْجِعُونَ (18
Summun bukmun AAumyun fahum la yarjiAAoona
YUSUFALI: Deaf, dumb, and blind, they will not return (to the path).
PICKTHAL: Deaf, dumb and blind; and they return not.
SHAKIR: Deaf, dumb (and) blind, so they will not turn back.
KHALIFA: Deaf, dumb, and blind; they fail to return.
১৫। তাদের ঠাট্টা-তামাশা আল্লাহ্ তাদের উপরে ছুড়ে দেবেন এবং তাদের সীমালংঘনের জন্য [অবাধ্যতার] রশিকে লম্বা করে দেবেন, যেনো তারা অন্ধের ন্যায় [সামনে পিছনে] পথভ্রষ্ট ভাবে ঘুরে বেড়ায়।১৬। এরাই তারা যারা হেদায়েতের বিনিময়ে ভ্রান্তি কিনে নিয়েছে। কিন্তু তাদের ব্যবসা বাণিজ্য লাভজনক নয়, এবং তারা সত্য পথের নির্দেশ হারিয়ে ফেলেছে।
১৭। তাদের উপমা সেই ব্যক্তির ন্যায় ৩৮, যে আগুন জ্বালালো। যখন তা তার চতুর্দিক আলোকিত করলো, আল্লাহ্ তাদের আলো সরিয়ে নিলেন এবং তাদের ঘোর অন্ধকারে পরিত্যাগ করলেন, যেনো তারা দেখতে না পায়।
১৮। তারা বধির, মূক এবং অন্ধ, তারা [সঠিক পথে] ফিরবে না।
৩৮। মুনাফিকের আত্মা ভণ্ডামী, জুয়াচুরি, অসত্য, অন্যায়ে পরিপূর্ণ। এগুলির সাহায্যে সে খুব সহজেই কোনও কাজে জয়লাভ করে এবং প্রশংসার পাত্রে পরিণত হয়, সেই লোকটির মত যে ক্ষণস্থায়ী আগুন জ্বালাতে সক্ষম হয়ে চারিদিকের গাঢ় অন্ধকার দূর করতে সক্ষম হয়েছিলো এবং সকলের প্রশংসার পাত্রে পরিণত হয়েছিলো। কিন্তু তার জ্বালানো আগুন অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। এক সময় তা নিভে যায়। ফলে চারিদিক আবার গাঢ় অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে যায়। হঠাৎ আলোর ঝলকানির পরে এ গাঢ়তা পূর্বের গাঢ়তার থেকে আরও বেশি প্রতীয়মান হয়। এই উপমার সাহায্যে আল্লাহ বোঝাতে চাচ্ছেন যে, যেসব কাজের ভিত্তি অন্যায়, অসত্য, অবিশ্বাস, ভণ্ডামীর উপর প্রতিষ্ঠিত, তার ফল কখনও স্থায়ী হয় না। ঐ কাজের সাফল্য অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী, আগুণের ক্ষণস্থায়ী আলোর মত। যে আলো অন্ধকারকে চিরতরে দূর করতে অপারগ। মুনাফিকেরা ভণ্ডামীর সাহায্যে জয়ী হতে চায়। ফলে তার কাজের নিয়তে আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস, সত্যের প্রতি বিশ্বস্ততা, প্রতিপালকের রহমতের আশা সবই থাকে অনুপস্থিত। মুনাফিকের কাজের নিয়ত কখনই মহৎ হয় না। কখনই ভালো হয় না। ফলে সময়ের বৃহত্তর পরিসরে মুনাফিকের কাজের নিয়ত বা অন্তরের উদ্দেশ্য সকলের নিকট পরিস্ফুটিত হয়ে যায়। সত্য প্রকাশিত হয়। ফলে কাজের সব পরিণতি হয় বিফল। সত্যের উদ্ভাসিত আলোতে মুনাফিকের অন্তর ভয়ে ত্রাসে আতঙ্কিত হয়ে উঠে। অন্তরের ভয় ত্রাস, মুনাফিকদের সুস্থ চিন্তাধারাকে বাধাগ্রস্থ করে, ফলে তারা সত্যকে জানতে, সত্যকে অনুধাবন করতে, শুনতে বা দেখতে অক্ষম হয়। মুনাফিকের আত্মার চারিদিক প্রাচীর বেষ্টিত হয়ে যায়। প্রাচীর বেষ্টিত স্থান যেমন সূর্যের ঝলমলে আলোর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ঠিক সেইরূপ মুনাফিকের অন্তরের মিথ্যার আবরণ সত্যের আলোর প্রবেশে বাঁধা সৃষ্টি করে। তাদের আত্মা সত্যের আলো বা আল্লাহ্র হেদায়েতের জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে, কিন্তু মিথ্যার আবরণ তাদের আত্মায় সত্যের আলো প্রবেশে বাঁধা দেয়। ফলে তারা অন্ধকারে অন্ধের মত পথ হাতড়ে বেড়ায়। তাদের আত্মা চায় মুক্তির আলো, মুক্তির বাতাস। কিন্তু তারা তা পায় না। তারা মিথ্যার অন্ধকারে অন্ধ ও বধির। সত্যকে খুঁজে নেবার ক্ষমতাও তাদের নাই। সুতরাং তারা আর ফিরবে না। অর্থাৎ তাদের অনুভূতিতে সত্য ও ন্যায় বোঝার মত যোগ্যতা রইল না। কারণ তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঈমানকে প্রতিহত করছে।
আয়াতঃ 002.019
আর তাদের উদাহরণ সেসব লোকের মত যারা দুর্যোগপূর্ণ ঝড়ো রাতে পথ চলে, যাতে থাকে আঁধার, গর্জন ও বিদ্যুৎচমক। মৃত্যুর ভয়ে গর্জনের সময় কানে আঙ্গুল দিয়ে রক্ষা পেতে চায়। অথচ সমস্ত কাফেরই আল্লাহ কর্তৃক পরিবেষ্ঠিত।
Or like a rainstorm from the sky, wherein is darkness, thunder, and lightning. They thrust their fingers in their ears to keep out the stunning thunderclap for fear of death. But Allâh ever encompasses the disbelievers (i.e. Allâh will gather them all together).
أَوْ كَصَيِّبٍ مِّنَ السَّمَاء فِيهِ ظُلُمَاتٌ وَرَعْدٌ وَبَرْقٌ يَجْعَلُونَ أَصْابِعَهُمْ فِي آذَانِهِم مِّنَ الصَّوَاعِقِ حَذَرَ الْمَوْتِ واللّهُ مُحِيطٌ بِالْكافِرِينَ
Aw kasayyibin mina alssama-i feehi thulumatun waraAAdun wabarqun yajAAaloona asabiAAahum fee athanihim mina alssawaAAiqi hathara almawti waAllahu muheetun bialkafireena
YUSUFALI: Or (another similitude) is that of a rain-laden cloud from the sky: In it are zones of darkness, and thunder and lightning: They press their fingers in their ears to keep out the stunning thunder-clap, the while they are in terror of death. But Allah is ever round the rejecters of Faith!
PICKTHAL: Or like a rainstorm from the sky, wherein is darkness, thunder and the flash of lightning. They thrust their fingers in their ears by reason of the thunder-claps, for fear of death, Allah encompasseth the disbelievers (in His guidance, His omniscience and His omnipotence).
SHAKIR: Or like abundant rain from the cloud in which is utter darkness and thunder and lightning; they put their fingers into their ears because of the thunder peal, for fear of death, and Allah encompasses the unbelievers.
KHALIFA: Another example: a rainstorm from the sky in which there is darkness, thunder, and lightning. They put their fingers in their ears, to evade death. GOD is fully aware of the disbelievers.
১৯। অথবা [অন্য উপমা হচ্ছে] ৩৯, আকাশের বৃষ্টি ভারাক্রান্ত মেঘ; এতে রয়েছে ঘোর অন্ধকার, বজ্র এবং বিদ্যুৎ। হতবুদ্ধি করা বজ্রের উচ্চ শব্দকে দূরে রাখার জন্য মৃত্যুভয়ে তারা কর্ণে আঙ্গুলি চেপে ধরে। কিন্তু ঈমানকে প্রত্যাখানকারীদের আল্লাহ্ সর্বদিক থেকে ঘিরে থাকেন।২০। বিদ্যুৎ চমক তাদের দৃষ্টি শক্তিকে প্রায় কেড়ে নেয়। প্রতিবার [বিদ্যুতের] আলো যখন তাদের [সাহায্য] করে, তারা [তার সাহায্যে] পথ চলতে থাকে। এবং যখন তাদের উপর অন্ধকার নেমে আসে, তারা থমকে দাঁড়ায়। আল্লাহ্ যদি ইচ্ছা করতেন তবে, তাদের শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নিতে পারতেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্ব বিষয়ের উপরে সর্বশক্তিমান।
৩৯। মুনাফিকদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা অত্যন্ত সুবিধাবাদী। এদের একদল ইসলামের বিজয় দেখে তার প্রতি ধাবিত হয় আবার যখনই স্বার্থে আঘাত লাগে তখনই মত পরিবর্তন করে। এই আয়াতে উপমার সাহায্যে তাদেরই বর্ণনা দেয়া হয়েছে। সাধারণতঃ এরা তাদের অবস্থার প্রেক্ষিতে সুসময়ে আত্মতৃপ্ত ও সন্তুষ্ট কিন্তু যখনই কোনও বিপদ আপতিত হয় তখন তাদের যে অবস্থা হয় সেই অবস্থার বর্ণনা করা হয়েছে। বিদ্যুতের আলো তাদের চোখ ধাঁধিয়ে দেয়, দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেয়। বজ্র তাদের কানে তালা লাগিয়ে দেয়, শ্রবণশক্তি হরণ করে। মৃত্যুভয় তাদের শঙ্কিত করে তোলে। তারা আল্লাহ্র উপর নির্ভরশীলতা হারিয়ে ফেলে। অথচ আল্লাহ্ সবার উপরে শক্তিমান, কাফেররাও তারই ক্ষমতার অন্তর্ভূক্ত। আল্লাহ্ তাদের সময় দেন। ফলে চোখ ধাঁধানো বিদ্যুৎ ও কানে তালা লাগানো বজ্রের গর্জনের ফাঁকে যখন একটু আলোকিত হয়, তখন তারা পথ চলার চেষ্টা করে। আবার যখন অন্ধকার বিরাজ করে তখন দাঁড়িয়ে থাকে। অর্থাৎ উপমার সাহায্যে বুঝাতে চাওয়া হয়েছে যে, মুনাফিকদের অন্ধকারাচ্ছন্ন আত্মায় মাঝে মাঝে সত্যের আলোর, হেদায়েতের আলোর চমক খেলে যায়। অর্থাৎ মাঝে মাঝে তাদের মধ্যে ন্যায় ও সত্য ও বিবেক জাগ্রত হয়-তবে তা হয় অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। সে সময়ে তারা পথ চলতে চেষ্টা করে কিন্তু আবার তারা মিথ্যার অন্ধকারে ডুবে যায়, সম্ভবতঃ ক্ষণস্থায়ী পথ চলার শক্তিতে তারা উজ্জীবিত হয়ে নিজেদের বুদ্ধিমত্তাতে অহংকারে স্ফীত হয়। কিন্তু তা না করে তারা যদি বিনয়ের সাথে আল্লাহ্র অনুগ্রহ কামনা করতো আল্লাহ্র আশ্রয় কামনা করতো তবে অবশ্যই তারা আল্লাহ্র নিরাপদ আশ্রয়ে তাঁর রহমতে ধন্য হত।
আয়াতঃ 002.020
বিদ্যুতালোকে যখন সামান্য আলোকিত হয়, তখন কিছুটা পথ চলে। আবার যখন অন্ধকার হয়ে যায়, তখন ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকে। যদি আল্লাহ ইচ্ছা করেন, তাহলে তাদের শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি ছিনিয়ে নিতে পারেন। আল্লাহ যাবতীয় বিষয়ের উপর সর্বময় ক্ষমতাশীল।
The lightning almost snatches away their sight, whenever it flashes for them, they walk therein, and when darkness covers them, they stand still. And if Allâh willed, He could have taken away their hearing and their sight. Certainly, Allâh has power over all things.
يَكَادُ الْبَرْقُ يَخْطَفُ أَبْصَارَهُمْ كُلَّمَا أَضَاء لَهُم مَّشَوْاْ فِيهِ وَإِذَا أَظْلَمَ عَلَيْهِمْ قَامُواْ وَلَوْ شَاء اللّهُ لَذَهَبَ بِسَمْعِهِمْ وَأَبْصَارِهِمْ إِنَّ اللَّه عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ (20
Yakadu albarqu yakhtafu absarahum kullama adaa lahum mashaw feehi wa-itha athlama AAalayhim qamoo walaw shaa Allahu lathahaba bisamAAihim waabsarihim inna Allaha AAala kulli shay-in qadeerun
YUSUFALI: The lightning all but snatches away their sight; every time the light (Helps) them, they walk therein, and when the darkness grows on them, they stand still. And if Allah willed, He could take away their faculty of hearing and seeing; for Allah hath power over all things.
PICKTHAL: The lightning almost snatcheth away their sight from them. As often as it flasheth forth for them they walk therein, and when it darkeneth against them they stand still. If Allah willed, He could destroy their hearing and their sight. Lo! Allah is able to do all things.
SHAKIR: The lightning almost takes away their sight; whenever it shines on them they walk in it, and when it becomes dark to them they stand still; and if Allah had pleased He would certainly have taken away their hearing and their sight; surely Allah has power over all things.
KHALIFA: The lightning almost snatches away their eyesight. When it lights for them, they move forward, and when it turns dark, they stand still. If GOD wills, He can take away their hearing and their eyesight. GOD is Omnipotent.
১৯। অথবা [অন্য উপমা হচ্ছে] ৩৯, আকাশের বৃষ্টি ভারাক্রান্ত মেঘ; এতে রয়েছে ঘোর অন্ধকার, বজ্র এবং বিদ্যুৎ। হতবুদ্ধি করা বজ্রের উচ্চ শব্দকে দূরে রাখার জন্য মৃত্যুভয়ে তারা কর্ণে আঙ্গুলি চেপে ধরে। কিন্তু ঈমানকে প্রত্যাখানকারীদের আল্লাহ্ সর্বদিক থেকে ঘিরে থাকেন।২০। বিদ্যুৎ চমক তাদের দৃষ্টি শক্তিকে প্রায় কেড়ে নেয়। প্রতিবার [বিদ্যুতের] আলো যখন তাদের [সাহায্য] করে, তারা [তার সাহায্যে] পথ চলতে থাকে। এবং যখন তাদের উপর অন্ধকার নেমে আসে, তারা থমকে দাঁড়ায়। আল্লাহ্ যদি ইচ্ছা করতেন তবে, তাদের শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নিতে পারতেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্ব বিষয়ের উপরে সর্বশক্তিমান।
৩৯। মুনাফিকদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা অত্যন্ত সুবিধাবাদী। এদের একদল ইসলামের বিজয় দেখে তার প্রতি ধাবিত হয় আবার যখনই স্বার্থে আঘাত লাগে তখনই মত পরিবর্তন করে। এই আয়াতে উপমার সাহায্যে তাদেরই বর্ণনা দেয়া হয়েছে। সাধারণতঃ এরা তাদের অবস্থার প্রেক্ষিতে সুসময়ে আত্মতৃপ্ত ও সন্তুষ্ট কিন্তু যখনই কোনও বিপদ আপতিত হয় তখন তাদের যে অবস্থা হয় সেই অবস্থার বর্ণনা করা হয়েছে। বিদ্যুতের আলো তাদের চোখ ধাঁধিয়ে দেয়, দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেয়। বজ্র তাদের কানে তালা লাগিয়ে দেয়, শ্রবণশক্তি হরণ করে। মৃত্যুভয় তাদের শঙ্কিত করে তোলে। তারা আল্লাহ্র উপর নির্ভরশীলতা হারিয়ে ফেলে। অথচ আল্লাহ্ সবার উপরে শক্তিমান, কাফেররাও তারই ক্ষমতার অন্তর্ভূক্ত। আল্লাহ্ তাদের সময় দেন। ফলে চোখ ধাঁধানো বিদ্যুৎ ও কানে তালা লাগানো বজ্রের গর্জনের ফাঁকে যখন একটু আলোকিত হয়, তখন তারা পথ চলার চেষ্টা করে। আবার যখন অন্ধকার বিরাজ করে তখন দাঁড়িয়ে থাকে। অর্থাৎ উপমার সাহায্যে বুঝাতে চাওয়া হয়েছে যে, মুনাফিকদের অন্ধকারাচ্ছন্ন আত্মায় মাঝে মাঝে সত্যের আলোর, হেদায়েতের আলোর চমক খেলে যায়। অর্থাৎ মাঝে মাঝে তাদের মধ্যে ন্যায় ও সত্য ও বিবেক জাগ্রত হয়-তবে তা হয় অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। সে সময়ে তারা পথ চলতে চেষ্টা করে কিন্তু আবার তারা মিথ্যার অন্ধকারে ডুবে যায়, সম্ভবতঃ ক্ষণস্থায়ী পথ চলার শক্তিতে তারা উজ্জীবিত হয়ে নিজেদের বুদ্ধিমত্তাতে অহংকারে স্ফীত হয়। কিন্তু তা না করে তারা যদি বিনয়ের সাথে আল্লাহ্র অনুগ্রহ কামনা করতো আল্লাহ্র আশ্রয় কামনা করতো তবে অবশ্যই তারা আল্লাহ্র নিরাপদ আশ্রয়ে তাঁর রহমতে ধন্য হত।
আয়াতঃ 002.021
হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তার এবাদত কর, যিনি তোমাদিগকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদিগকে সৃষ্টি করেছেন। তাতে আশা করা যায়, তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পারবে।
O mankind! Worship your Lord (Allâh), Who created you and those who were before you so that you may become Al-Muttaqûn (the pious – see V.2:2).
يَا أَيُّهَا النَّاسُ اعْبُدُواْ رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ وَالَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ (21
Ya ayyuha alnnasu oAAbudoo rabbakumu allathee khalaqakum waallatheena min qablikum laAAallakum tattaqoona
YUSUFALI: O ye people! Adore your Guardian-Lord, who created you and those who came before you, that ye may have the chance to learn righteousness;
PICKTHAL: O mankind! worship your Lord, Who hath created you and those before you, so that ye may ward off (evil).
SHAKIR: O men! serve your Lord Who created you and those before you so that you may guard (against evil).
KHALIFA: O people, worship only your Lord – the One who created you and those before you – that you may be saved.
রুকু – ৩
৪০। ‘তাকওয়া’ এর জন্য দেখুন [২:২ টিকা ২৬]। এবাদত কথাটির অর্থ অনেক ব্যাপক। শুধুমাত্র যান্ত্রিকভাবে নামাজ পড়া, রোযা রাখা, যাকাত দেয়া এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। যে এবাদতের সাথে আত্মার যোগাযোগ নাই তা এবাদতই নয়। এবাদতের পূর্বশর্ত হচ্ছে আল্লাহ্র সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য মনের ঐকান্তিক ইচ্ছা। বিনয়ের সাথে, ভক্তির সাথে, স্রষ্টার প্রতি নিবেদিত প্রতিটি কাজই হচ্ছে এবাদত। সে কাজ যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন, যদি তা নিবেদিত হয় আল্লাহ্র জন্য, আল্লাহ্কে খুশী করার জন্য, তবেই তাই-ই হচ্ছে আসল এবাদত। যখন বান্দার মনের অবস্থা এই পর্যায়ে উন্নীত হয় যে তার সমস্ত ভক্তি, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা সবই স্রষ্টার সন্তুষ্টির জন্য নিবেদিত তখনই বান্দার চরিত্রে মুত্তাকী (Righteousness) হওয়ার মত গুণাবলীর সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ আল্লাহ্র প্রতি ভালবাসাতে, বিনয়ে নিবেদিত আত্মাই হচ্ছে মুত্তাকী। আল্লাহ্ আমাদের তাঁর কাছে আত্মসমর্পনের এই সুযোগ দিয়েছেন। বান্দাকে ‘সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি’ (Limited Free Will) এর মাধ্যমে বান্দাকে পরীক্ষা করেন। বান্দা যেনো স্ব-ইচ্ছায়, মহান সত্তার কাছে আত্মনিবেদন করে। যদি আমরা তা করতে পারি তবে আমাদের ভিতরে যে পরিবর্তন আসবে তা আমাদের কল্পনারও বাইরে। আমাদের সর্বসত্ত্বা আল্লাহ্র রহমতে বিধৌত হয়ে তা সৌন্দর্য মণ্ডিত হয়ে উঠবে। আমরা হব এক সুস্থ শৃঙ্খলায় পরিবর্তিত মানুষ।
আয়াতঃ 002.022
যে পবিত্রসত্তা তোমাদের জন্য ভূমিকে বিছানা এবং আকাশকে ছাদ স্বরূপ স্থাপন করে দিয়েছেন, আর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তোমাদের জন্য ফল-ফসল উৎপাদন করেছেন তোমাদের খাদ্য হিসাবে। অতএব, আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কাকেও সমকক্ষ করো না। বস্তুতঃ এসব তোমরা জান।
Who has made the earth a resting place for you, and the sky as a canopy, and sent down water (rain) from the sky and brought forth therewith fruits as a provision for you. Then do not set up rivals unto Allâh (in worship) while you know (that He Alone has the right to be worshipped).
الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الأَرْضَ فِرَاشاً وَالسَّمَاء بِنَاء وَأَنزَلَ مِنَ السَّمَاء مَاء فَأَخْرَجَ بِهِ مِنَ الثَّمَرَاتِ رِزْقاً لَّكُمْ فَلاَ تَجْعَلُواْ لِلّهِ أَندَاداً وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ
Allathee jaAAala lakumu al-arda firashan waalssamaa binaan waanzala mina alssama-i maan faakhraja bihi mina alththamarati rizqan lakum fala tajAAaloo lillahi andadan waantum taAAlamoona
YUSUFALI: Who has made the earth your couch, and the heavens your canopy; and sent down rain from the heavens; and brought forth therewith Fruits for your sustenance; then set not up rivals unto Allah when ye know (the truth).
PICKTHAL: Who hath appointed the earth a resting-place for you, and the sky a canopy; and causeth water to pour down from the sky, thereby producing fruits as food for you. And do not set up rivals to Allah when ye know (better).
SHAKIR: Who made the earth a resting place for you and the heaven a canopy and (Who) sends down rain from the cloud then brings forth with it subsistence for you of the fruits; therefore do not set up rivals to Allah while you know.
KHALIFA: The One who made the earth habitable for you, and the sky a structure. He sends down from the sky water, to produce all kinds of fruits for your sustenance. You shall not set up idols to rival GOD, now that you know.
২২। যিনি পৃথিবীকে তোমাদের জন্য বিছানা এবং আকাশকে ছাদ করেছেন; এবং আকাশ থেকে বৃষ্টি প্রেরণ করে তা দিয়ে জীবিকার জন্য ফলমূল উৎপন্ন করেছেন। সুতরাং যখন তোমরা [সত্যকে] জানো তখন আল্লাহ্র প্রতিদ্বন্দী দাঁড় করিও না ৪১।
৪১। এই আয়াতে আল্লাহ্র মাহাত্ম্য, তাঁর অপরিসীম করুণার কথা বলা হয়েছে। আমাদের এই দেহ-মন, পার্থিব ও আধ্যাত্মিক জীবন সবই স্রষ্টার দান, তারই উপরে সবই নির্ভরশীল। এই আয়াতে আকাশ ও জমিকে প্রতীক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে জমিকে বিছানা অর্থাৎ পার্থিব আরাম-আয়েশ এবং আকাশকে ছাদ অর্থাৎ আধ্যাত্মিক জীবনের নিরাপত্তা বোঝানো হয়েছে। আকাশ থেকে বৃষ্টি হয়, বৃষ্টি হচ্ছে আল্লাহ্র রহমতের প্রতীক। কারণ বৃষ্টির অভাবে শস্য-শ্যামল ভূমি মরুভূমিতে পরিণত হয়। আবার বৃক্ষলতা বিহীন ভূমি বৃষ্টির পানিতে সজীবতা ধারণ করে। তাই বৃষ্টিকে এখানে প্রতীকধর্মী শব্দ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। পৃথিবীতে যে বৃষ্টি হয় তা পৃথিবীর সজীবতার জন্য প্রয়োজন। সেই রকম আল্লাহ্র রহমতের বৃষ্টি আধ্যাত্মিক জগতের বিকাশ ও অন্তর্দৃষ্টি (Spiritual Insight) লাভের জন্য প্রয়োজন। ইহজগত ও পরজগতের সব কিছুই আল্লাহ্র উপরই নির্ভরশীল। এই সত্য জানার পর কেউ যদি অন্য কিছুকে আল্লাহ্র সমকক্ষ মনে করে তা হবে মহাপাপ। এই সমকক্ষ মনে করার প্রবণতা আমাদের জীবনে অত্যন্ত প্রবল। এই সমকক্ষ মনে করাকেই বলা হচ্ছে আল্লাহ্র সাথে অংশীদার করা। এটা শুধুমাত্র মূর্তি পূজার মধ্যে সীমাবদ্ধ মনে করলে তা হবে ভুল। শুধুমাত্র মূর্তি পূজায় আল্লাহ্র সাথে অংশীদার করা হয় এ ধারণার বশবর্তী আমাদের অনেকেই। কিন্তু মূর্তি পূজা ছাড়াও বহু ক্ষেত্রে আমরা নিজেদের স্রষ্টার সমকক্ষ মনে করতে ভালবাসি। হতে পারে আত্ম-অহংকার, আত্ম-গর্ব, সামাজিক কুসংস্কার ইত্যাদি। একটি ছোট উদাহরণ দ্বারা এটাকে উপস্থাপন করা যায় যেমন, রত্ন পাথর ধারণ করা। বিপদ-আপদ, দুঃখ-দুর্দশা এসবের জন্য সর্বশক্তিমানের আশ্রয় প্রার্থনা না করে রত্ন পাথরের আশ্রয় গ্রহণ করা হচ্ছে সর্বশক্তিমানের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করা। বিশেষ দিনে যাত্রা করা। শুভ-অশুভ দিন ধার্য করা ইত্যাদি। এর থেকে প্রমাণ হয় আমরা সর্বশক্তিমানের উপর নির্ভরশীল নই। আবার আত্মগর্ব, আত্ম-অহংকার নিজের উপর প্রচণ্ড বিশ্বাসে আল্লাহ্র উপরে নির্ভরশীলতা না থাকা ইত্যাদি এসবই আল্লাহ্র সাথে অংশীদারিত্ব কল্পনা করা। আজকে আমরা বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কারে চমৎকৃত, মুগ্ধ। মানুষ ‘জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং’ এর সাফল্যে স্রষ্টার সৃষ্টির রহস্য উদঘাটনে ব্যস্ত। গ্রহ-গ্রহান্তরে তার যাত্রা। বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কারে পৃথিবী ছোট হয়ে আসছে। এসবের ফলে অনেকের মধ্যে এমন অহংবোধের জন্ম হয়েছে যে তারা স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়ার পরিবর্তে তার প্রতি আনুগত্য ফেলছে হারিয়ে। তারা বিজ্ঞানের জ্ঞানকে স্রষ্টার আসনে বসায়। অনেক শিল্পী, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী, চিকিৎসক নিজের সাফল্যে বিমোহিত হয়ে একমাত্র নিজেকেই এই সাফল্যের নিয়ামক মনে করে। তার মেধা বা প্রতিভা যে স্রষ্টার দান, তার সাফল্যের পেছনের এই ছোট্ট অথচ মৌলিক শর্তটি সে ভুলে যায়। প্রতিভা, মেধা, ক্ষমতা, অর্থ-বিত্ত এসব মানুষকে আত্মঅহংকারী করে তোলে। আল্লাহ্র সাথে এও এক ধরণের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ও এক ধরনের শেরেকী করা।
আয়াতঃ 002.023
এতদসম্পর্কে যদি তোমাদের কোন সন্দেহ থাকে যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, তাহলে এর মত একটি সূরা রচনা করে নিয়ে এস। তোমাদের সেসব সাহায্যকারীদেরকে সঙ্গে নাও-এক আল্লাহকে ছাড়া, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো।
And if you (Arab pagans, Jews, and Christians) are in doubt concerning that which We have sent down (i.e. the Qur’ân) to Our slave (Muhammad Peace be upon him ), then produce a Sûrah (chapter) of the like thereof and call your witnesses (supporters and helpers) besides Allâh, if you are truthful.
وَإِن كُنتُمْ فِي رَيْبٍ مِّمَّا نَزَّلْنَا عَلَى عَبْدِنَا فَأْتُواْ بِسُورَةٍ مِّن مِّثْلِهِ وَادْعُواْ شُهَدَاءكُم مِّن دُونِ اللّهِ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ
Wa-in kuntum fee raybin mimma nazzalna AAala AAabdina fa/too bisooratin min mithlihi waodAAoo shuhadaakum min dooni Allahi in kuntum sadiqeena
YUSUFALI: And if ye are in doubt as to what We have revealed from time to time to Our servant, then produce a Sura like thereunto; and call your witnesses or helpers (If there are any) besides Allah, if your (doubts) are true.
PICKTHAL: And if ye are in doubt concerning that which We reveal unto Our slave (Muhammad), then produce a surah of the like thereof, and call your witness beside Allah if ye are truthful.
SHAKIR: And if you are in doubt as to that which We have revealed to Our servant, then produce a chapter like it and call on your witnesses besides Allah if you are truthful.
KHALIFA: If you have any doubt regarding what we revealed to our servant, then produce one sura like these, and call upon your own witnesses against GOD, if you are truthful.
৪২। কুরআনের আয়াত যে আল্লাহ্র বাণী, তার প্রমাণ কি? আল্লাহ্ এখানে উপযুক্ত প্রমাণের উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ্ আমাদের নবীর মাধ্যমে অনেক সূরা নাজিল করেছেন। আল্লাহ্ এখানে বলেছেন, ‘তোমরা কি অনুরূপ একটা সূরাও রচনা করতে পারবে?’ আল্লাহ্র বাণীর মানুষের সুপ্ত আধ্যাত্মিক শক্তিকে জাগরিত করার যে ক্ষমতা সে ক্ষমতা মানুষের তৈরি বাণীতে নাই। থাকা সম্ভবও নয়। মানুষ নিজের কূপমণ্ডুকতা, হঠকারীতা, বিবেকহীনতা, অজ্ঞনতার ফলে এসব কথা বলে যে, আল্লাহ্র বাণী মানুষের সৃষ্টি। কুরআন এক ঐশী গ্রন্থ। কুরআন যে আলোর ভূবন ও আধ্যাত্মিক জগতের সন্ধান দেয়, তার স্থায়িত্ব, অস্তিত্ব ও প্রভাব, যুগ, কাল অতিক্রান্ত।
আয়াতঃ 002.024
আর যদি তা না পার-অবশ্য তা তোমরা কখনও পারবে না, তাহলে সে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা কর, যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর। যা প্রস্তুত করা হয়েছে কাফেরদের জন্য।
But if you do it not, and you can never do it, then fear the Fire (Hell) whose fuel is men and stones, prepared for the disbelievers.
فَإِن لَّمْ تَفْعَلُواْ وَلَن تَفْعَلُواْ فَاتَّقُواْ النَّارَ الَّتِي وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ (24
Fa-in lam tafAAaloo walan tafAAaloo faittaqoo alnnara allatee waqooduha alnnasu waalhijaratu oAAiddat lilkafireena
YUSUFALI: But if ye cannot- and of a surety ye cannot- then fear the Fire whose fuel is men and stones,- which is prepared for those who reject Faith.
PICKTHAL: And if ye do it not – and ye can never do it – then guard yourselves against the Fire prepared for disbelievers, whose fuel is of men and stones.
SHAKIR: But if you do (it) not and never shall you do (it), then be on your guard against the fire of which men and stones are the fuel; it is prepared for the unbelievers.
KHALIFA: If you cannot do this – and you can never do this – then beware of the Hellfire, whose fuel is people and rocks; it awaits the disbelievers.
৪৩। কুরআনের বাণীর সৌন্দর্য্য, ভাষা, গাম্ভীর্য, নিগূঢ় অর্থ, সর্বোপরি আধ্যাত্মিক জগত ও মনোজগতের উপরে এর যা প্রভাব, তার সমকক্ষ কিছু রচনা করা কোনও মানুষের পক্ষেই সম্ভব নয়। তবুও কেউ যদি একগুয়ে অবাধ্যভাবে সত্যকে অস্বীকার করে, আল্লাহ্র বাণীকে ঐশী বাণী হিসেবে গ্রহণে অস্বীকার করে, তবে অবশ্যই অস্বীকারকারীর অন্তরে যন্ত্রণার উদ্ভব হয়। সেই যন্ত্রণার আগুনে তার আজীবন লালিত মিথ্যা উপাস্যগুলিই [এটা হতে পারে আত্মগর্ব, আত্মপ্রচার, আত্ম-প্রতিষ্ঠা, ক্ষমতা ও অর্থের প্রতিপত্তি, বিজ্ঞান ইত্যাদি] শুধু শেষ হয়ে যায় না, তার অন্তরের অন্তঃস্থলে সেই আগুন তার লেলিহান শিখা বিস্তার লাভ করে। এরপরেও কি তাদের জ্ঞান ফিরবে না? আত্মার এই যন্ত্রণা তার সমস্ত অনুভূতি, সমস্ত সত্তাকে অন্তরের অন্তঃস্থলকে তীব্রভাবে দহন করে। এ যন্ত্রণা শারীরিক নয়। এক ভয়াবহ শূন্যতা, ভয়ানক যন্ত্রণা তার আত্মাকে দহন করবে। সংসারের কোন সুখ, অর্থ-বিত্ত, ক্ষমতা-প্রতিপত্তি কিছুই তাকে সেই জ্বালা ভুলাতে সাহায্য করবে না। অনেকে হয়তো বা মনে করতে পারে যে সে সব যন্ত্রণার উর্ধ্বে, নির্বিকার। কিন্তু আত্মার এ আগুন সেই লৌহ কঠিন আত্মাকেও দহন করবে। এ কথাটাকে কুরআন শরীফে এভাবে প্রকাশ করা হয়েছে যে দোযখের জ্বালানী হবে পাপিষ্ঠ আত্মা। পাথরের ন্যায় শক্ত আত্মার জন্য দেখুন। [২:২৪, ৭৪, ২৬৪ আয়াত]
আয়াতঃ 002.025
আর হে নবী (সাঃ), যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজসমূহ করেছে, আপনি তাদেরকে এমন বেহেশতের সুসংবাদ দিন, যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহমান থাকবে। যখনই তারা খাবার হিসেবে কোন ফল প্রাপ্ত হবে, তখনই তারা বলবে, এতো অবিকল সে ফলই যা আমরা ইতিপূর্বেও লাভ করেছিলাম। বস্তুতঃ তাদেরকে একই প্রকৃতির ফল প্রদান করা হবে। এবং সেখানে তাদের জন্য শুদ্ধচারিনী রমণীকূল থাকবে। আর সেখানে তারা অনন্তকাল অবস্থান করবে।
And give glad tidings to those who believe and do righteous good deeds, that for them will be Gardens under which rivers flow (Paradise). Every time they will be provided with a fruit therefrom, they will say: ”This is what we were provided with before,” and they will be given things in resemblance (i.e. in the same form but different in taste) and they shall have therein Azwâjun Mutahharatun (purified mates or wives), (having no menses, stools, urine, etc.) and they will abide therein forever.
وَبَشِّرِ الَّذِين آمَنُواْ وَعَمِلُواْ الصَّالِحَاتِ أَنَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الأَنْهَارُ كُلَّمَا رُزِقُواْ مِنْهَا مِن ثَمَرَةٍ رِّزْقاً قَالُواْ هَـذَا الَّذِي رُزِقْنَا مِن قَبْلُ وَأُتُواْ بِهِ مُتَشَابِهاً وَلَهُمْ فِيهَا أَزْوَاجٌ مُّطَهَّرَةٌ وَهُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
Wabashshiri allatheena amanoo waAAamiloo alssalihati anna lahum jannatin tajree min tahtiha al-anharu kullama ruziqoo minha min thamaratin rizqan qaloo hatha allathee ruziqna min qablu waotoo bihi mutashabihan walahum feeha azwajun mutahharatun wahum feeha khalidoona
YUSUFALI: But give glad tidings to those who believe and work righteousness, that their portion is Gardens, beneath which rivers flow. Every time they are fed with fruits therefrom, they say: “Why, this is what we were fed with before,” for they are given things in similitude; and they have therein companions pure (and holy); and they abide therein (for ever).
PICKTHAL: And give glad tidings (O Muhammad) unto those who believe and do good works; that theirs are Gardens underneath which rivers flow; as often as they are regaled with food of the fruit thereof, they say: this is what was given us aforetime; and it is given to them in resemblance. There for them are pure companions; there for ever they abide.
SHAKIR: And convey good news to those who believe and do good deeds, that they shall have gardens in which rivers flow; whenever they shall be given a portion of the fruit thereof, they shall say: This is what was given to us before; and they shall be given the like of it, and they shall have pure mates in them, and in them, they shall abide.
KHALIFA: Give good news to those who believe and lead a righteous life that they will have gardens with flowing streams. When provided with a provision of fruits therein, they will say, “This is what was provided for us previously.” Thus, they are given allegorical descriptions. They will have pure spouses therein, and they abide therein forever.
৪৪। এই আয়াতটি উপরের আয়াতের বিপরীত ভাব প্রকাশ করে। দোযখের শাস্তির প্রতীক হচ্ছে আগুন, বেহেশ্তের শান্তির প্রতীক হচ্ছে বাগান। এখানে প্রতীক ব্যবহার করা হয়েছে কারণ বেহেশ্তের শান্তি ও দোযখের শাস্তি এই পৃথিবীতে বসে কল্পনা করাও সম্ভব নয়। যখন কল্পনা বাস্তবকে অতিক্রম করে যায় তখন তা প্রকাশের ভাষা হয় একমাত্র প্রতীক। ছবির মত প্রাকৃতিক পরিবেশে বিচরণ, অবস্থান, উপভোগ সবই অত্যন্ত আরামদায়ক, শান্তিদায়ক। সেই কারণে বেহেশ্তের বর্ণনায় প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলীর ও সৌন্দর্য্যরে অবতারণা করা হয়েছে। এটা এমন একটা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের আঁধার যা ভাষায় বর্ণনা করা দুঃসাধ্য। স্বচ্ছ সলিল ধারণ করে স্রোতস্বিনী ছোট নদী বয়ে যাচ্ছে একপাশ দিয়ে। তার পানি স্ফটিকের মত স্বচ্ছ যা সূর্য ও চন্দ্রালোককে প্রতিফলিত করে। সাজানো ফুল ও ফলের বাগান। বনতল ফুলে ফুলে ছাওয়া। ফলভারে গাছ অবনত। আর এসব ফল হবে প্রত্যেকের পছন্দের প্রতীক। এখানে ফল কথাটি প্রতীকধর্মী। পার্থিব জীবনে এই পৃথিবীতে আমরা যেসব ফল খাই, তার স্বাদ আমাদের করে তৃপ্ত। বিভিন্ন ফলের বিভিন্ন স্বাদ, বিভিন্ন গন্ধ। বেহেশ্তী ফলকে এখানে প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। আত্মত্যাগ ও ভাল কাজের পরে আমাদের আত্মায় এক স্বর্গীয় অনুভূতি বিরাজ করে। যে কাজ যত বেশি নিঃস্বার্থ ও আল্লাহ্র প্রতি নিবেদিত, তার অনুভূতি তত তীব্র শান্তিদায়ক। পৃথিবীর গাছের ফলের যেরূপ স্বাদের, গন্ধের ও রূপের তারতম্য আছে, আল্লাহ্র প্রতি নিবেদিত নিঃস্বার্থ মহৎ কাজের পরে আত্মার ভিতরের অনুভূতিরও সেরূপ তারতম্য ঘটে। এই তারতম্য ঘটে কাজের তারতম্য অনুযায়ী। ভাল কাজের পর আমরা আমাদের আত্মায় যে সুখ ও শান্তির অনুভূতি লাভ করি একেই বেহেশ্তি ‘ফলের’ প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। তার ফলে বেহেশ্তে যে ‘ফল’ আমরা ভোগ করবো তার রূপ, রস, গন্ধ, অনুভূতি সবই হবে পৃথিবীতে [নিঃস্বার্থ, আল্লাহ্র প্রতি নিবেদিত ভাল কাজের ফল] ভোগ করা সুখ-শান্তির অনুভূতি ফলেরই অনুরূপ। মনে হবে এ ফল তো আমরা আগেও ভোগ করেছি। অর্থাৎ ভাল কাজের পর যে স্বর্গীয় অনুভূতি সেই অনুভূতিরই অনুভব। তবে তার তীব্রতা হবে আরও গভীর, আরও সুন্দর। আত্মার অন্তঃস্থল তার পরশে হবে পুলকিত, শিহরিত, শান্ত। আত্মায় লাভ করবে অপার শান্তি। এর কারণ পূর্বেই পৃথিবীতে আমাদের সেই অভিজ্ঞতা লাভ হয়েছে।
মৃত্যুর সাথে সাথে আমাদের এই মরদেহের বিনাশ ঘটে, কিন্তু এই দেহের মাধ্যমে পৃথিবীতে আমরা যে অভিজ্ঞতা লাভ করি, মৃত্যুর পরেও আত্মা সেই অভিজ্ঞতা বহন করে পরকালের যাত্রা শুরু করে। অর্থাৎ ভাল কাজের শেষে যে স্বর্গীয় অনুভূতি বা শান্তি আর মন্দ কাজের শেষে আত্মার যন্ত্রণা বা অস্থিরতা এই অভিজ্ঞতা মৃত্যুর পরেও আমরা বহন করে নিয়ে যাব পরলোকে। পৃথিবীর অভিজ্ঞতা পরকালে বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। এই অভিজ্ঞতাকেই ‘ফলের’ প্রতীকের সাহায্যে প্রকাশ করা হয়েছে।
বেহেশ্তের বর্ণনায় এর পরে এসেছে সঙ্গীর কথা। অনেকেই এই কথাটাকে স্থুলভাবে যৌনসঙ্গী রূপে প্রকাশ করেছেন। কিন্তু এখানে ‘মুতাহ্হারাতুন’ শব্দটির দ্বারা বুঝানো হয়েছে সেই সব সঙ্গী যারা পূত ও পবিত্র। এই শব্দটির দ্বারা যে পবিত্রতা বুঝাতে চাওয়া হয়েছে তা হবে সর্বোচ্চ। অনেকে এভাবে তফসীর করেছেন যে তারা হবে পবিত্র কারণ তারা মল-মূত্র ত্যাগ করবে না বা তাদের মাসিক হবে না। অর্থাৎ মাসিক কথাটির দ্বারা তারা বুঝাতে চাচ্ছেন সে সঙ্গীরা সবাই স্ত্রী ধর্মী। কিন্তু সঙ্গী অর্থ শুধু মেয়ে নয়। এখানে সঙ্গী কথাটি দ্বারা ‘আত্মার সঙ্গী’ এ কথাটাকেই বোঝানো হয়েছে। নশ্বর দেহ-মিলনে যে সঙ্গ-সুখ তা ক্ষণস্থায়ী, তা স্থুল, তা জৈব। এই স্থুল সঙ্গ-সুখ পেতে হলে লিঙ্গের প্রয়োজন। যৌন সঙ্গীর প্রয়োজন। কিন্তু মরদেহ ত্যাগ করে যে অবিনশ্বর ও চিরঞ্জীব আত্মা থাকে তার কোনও লিঙ্গ নাই। সে পুরুষও নয়, মেয়েও নয়। পুত-পবিত্র আত্মারা হবে পরস্পরের সঙ্গী। এই প্রেম হবে দেহাতীত। পৃথিবীর প্রেমের যে অনুভূতি তার থেকে এর অনুভূতি হবে বহুগুণ তীব্র। এর যে শান্তি তা হবে স্থায়ী। পৃথিবীর মত তা ক্ষণস্থায়ী হবে না।
আয়াতঃ002.027
(বিপথগামী ওরাই) যারা আল্লাহর সঙ্গে অঙ্গীকারাবদ্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গ করে এবং আল্লাহ পাক যা অবিচ্ছিন্ন রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন, তা ছিন্ন করে, আর পৃথিবীর বুকে অশান্তি সৃষ্টি করে। ওরা যথার্থই ক্ষতিগ্রস্ত।
Those who break Allâh’s Covenant after ratifying it, and sever what Allâh has ordered to be joined (as regards Allâh’s Religion of Islâmic Monotheism, and to practise its legal laws on the earth and also as regards keeping good relations with kith and kin ), and do mischief on earth, it is they who are the losers.
الَّذِينَ يَنقُضُونَ عَهْدَ اللَّهِ مِن بَعْدِ مِيثَاقِهِ وَيَقْطَعُونَ مَا أَمَرَ اللَّهُ بِهِ أَن يُوصَلَ وَيُفْسِدُونَ فِي الأَرْضِ أُولَـئِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ
Allatheena yanqudoona AAahda Allahi min baAAdi meethaqihi wayaqtaAAoona ma amara Allahu bihi an yoosala wayufsidoona fee al-ardi ola-ika humu alkhasiroona
YUSUFALI: Those who break Allah’s Covenant after it is ratified, and who sunder what Allah Has ordered to be joined, and do mischief on earth: These cause loss (only) to themselves.
PICKTHAL: Those who break the covenant of Allah after ratifying it, and sever that which Allah ordered to be joined, and (who) make mischief in the earth: Those are they who are the losers.
SHAKIR: Who break the covenant of Allah after its confirmation and cut asunder what Allah has ordered to be joined, and make mischief in the land; these it is that are the losers.
KHALIFA: who violate GOD’s covenant after pledging to uphold it, sever what GOD has commanded to be joined, and commit evil. These are the losers.
২৬। আল্লাহ্ মশা কিংবা তার চাইতে হীন কোন বস্তুর উপমা দিতে অবজ্ঞা প্রকাশ করেন না, ৪৫। যারা ঈমান এনেছে তারা জানে যে, এই সত্য তার প্রভুর নিকট থেকে আগত। কিন্তু যারা ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে তারা বলে, ‘এই উপমার দ্বারা আল্লাহ্ কি বোঝাতে চান?’ এর দ্বারা তিনি অনেককে বিপথে চালিত করেন এবং অনেককে সৎপথে পরিচালিত করেন। বস্তুতঃ যারা [সত্য পথ] পরিত্যাগ করেছে তারা ব্যতীত অন্য কাউকে তিনি বিভ্রান্ত করেন না।
২৭। যারা অনুমোদন করার পরে আল্লাহ্র সাথে কৃত অঙ্গীকার ভঙ্গ করে এবং আল্লাহ্ যা সংযুক্ত রাখতে আদেশ দিয়েছেন তা ভঙ্গ করে এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়ায়, এগুলি [শুধুমাত্র] তাদেরই নিজের ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে।
৪৫। আরবী শব্দের প্রতিশব্দ ‘অতিক্ষুদ্র’ কথাটির দ্বারা যা বুঝাতে চাওয়া হয়েছে তার অর্থ হচ্ছে দুর্বলতম প্রাণী। এটা শুধু যে আয়তনে তাই-ই নয়, সর্ব ব্যাপারেই যে প্রাণী অত্যন্ত নগন্য। সূরা ২৯ : ৪১ তে উপমার জন্য মাকড়সাকে ব্যবহার করা হয়েছে। অনুরূপভাবে সূরা ২২ : ৭৩ তে মাছিকে উপমা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। আবার উপমার জন্য প্রাকৃতিক, অতি-প্রাকৃতিক শক্তিকেও ব্যবহার করা হয়েছে যেমন ২ : ১৯ তে বজ্র এবং বিদ্যুৎকে উপমা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। আল্লাহ্র কাছে তার প্রতিটি সৃষ্টিই গুরুত্বপূর্ণ ও অর্থবহ। তাই আমাদের কাছে যা অত্যন্ত নগণ্য ও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আল্লাহ্ তাকেও উপমা হিসেবে ব্যবহার করতে দ্বিধাবোধ করেন না। আল্লাহ্র সৃষ্টিতে বিশাল সিন্ধু, পর্বত, মহীরুহ, বিশাল প্রাণী ইত্যাদি এ সবে যে সৃষ্টি নৈপুণ্য বা কৌশল বিদ্যমান, ক্ষুদ্র মশা, মাছি বা পিপঁড়া বা মাকড়সাতে সেই পরিমাণ সৃষ্টি কৌশল বিদ্যমান। বিজ্ঞান বলে প্রতিটি ক্ষুদ্র প্রাণী বা বস্তু, তাদের যে ধর্ম ও সৃষ্টি কৌশল তা সবই আল্লাহ্র অসীম জ্ঞান ও প্রজ্ঞারই স্বাক্ষর। এমনকি অনুজীব যাদের অনুবীক্ষণ যন্ত্র ব্যতীত দেখা সম্ভব নয়, তাদেরও অবজ্ঞা করার ক্ষমতা আমাদের নাই। কারণ আমরা জানি এরা আমাদের চর্মচক্ষুর অগোচরে থেকেও মানুষের মত শ্রেষ্ঠ সৃষ্টিকেও ধ্বংস করে দিতে পারে। যেমন-প্লেগ, কলেরা, বসন্ত ইত্যাদির জীবাণু চর্মচক্ষে দেখা সম্ভব নয়। কিন্তু এদের ধ্বংস করার ক্ষমতা আমরা সবাই জানি। সাম্প্রতিককালে এইড্স এর আতঙ্ক সকলেরই জানা। সুতরাং স্রষ্টার সৃষ্টিতে ছোট বড় কিছু নাই এই বোধ শুধুমাত্র দূরদর্শী ও চিন্তাশীলরাই অনুধাবন করতে পারে, যারা সত্যিকারের ভাবে মুমিন। মুমিনদের জন্য এসব দৃষ্টান্ত হেদায়েতের উপকরণ। আর যাদের মন মস্তিষ্ক অবিরাম খোদাদ্রোহিতার ফলে সম্পূর্ণভাবে বুদ্ধি-বিবেচনা ও অনুধাবন শক্তি বিবর্জিত হয়ে পড়েছে, তাদের জন্য উপরিউক্ত উপমা আরও পথভ্রষ্টতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এই সাথে এটাও লক্ষণীয় যে আয়াত ২৬ ও ২৭ এক সাথে পড়া উচিত। পথভ্রষ্টদের সম্বন্ধে বলা হয়েছে আয়াত ২ : ২৭-তে। এরা সেই সব পাপী যারা আল্লাহ্র সাথে তাদের কৃত অঙ্গীকার ভঙ্গ করে। যারা মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে, পৃথিবীতে হিংসা , বিদ্বেষের আগুন জ্বালায়, সমাজের শান্তির পরিবর্তে হানাহানির সৃষ্টি করে।
২:২৭ এই আয়াতে যে অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে এটা এখানে কোন বিশেষ সম্প্রদায়ের (ইহুদী) জন্য বলা হলেও এর আবেদন সর্বকালের, সর্বস্থানের জন্য প্রযোজ্য। এখানে ইহুদীদের আচার আচরণ সম্বন্ধে বলা হয়েছে। আল্লাহ্ হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর মুনাজাতের জবাবে বলেছেন যে আল্লাহ্র নির্দেশিত বাণী যুগে যুগে হযরত ইব্রাহীমের (আঃ) বংশধরদের মাধ্যমেই প্রচারের জন্য পাঠাবেন। বিনিময়ে তারা আল্লাহ্ নির্দেশিত পথে চলবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ইহুদীরা তাদের সেই অঙ্গীকার থেকে দূরে সরে গিয়েছে। শুধু তাই-ই নয় তারা আল্লাহ্র প্রেরিত রসুলদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, তাদের হত্যা ইত্যাদি কাজে নিয়োজিত, ফলে তাদের আত্মার ধ্বংস নিজেরাই ডেকে এনেছে। ইহুদীদের উপমার সাহায্যে আল্লাহ্ সমগ্র মানব সমাজকে এই শিক্ষা দিয়েছেন যে পৃথিবীর প্রতিটি জীবন আল্লাহ্র কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ। আল্লাহ্ তাদের ভালবাসেন, দয়া করেন। বিনিময়ে তারা আল্লাহ্র প্রদর্শিত পথে চলবে। এই পথ চলা হবে স্ব-ইচ্ছায়। স্রষ্টার কাছে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পনের মাধ্যমে। যারা তা না করে, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে আল্লাহ্র প্রদর্শিত পথকে উপক্ষো করে, তাদের বিবেক (Spiritual Insight) হয় তমসাচ্ছন্ন। বিবেক তমসাচ্ছন্ন হলে মানুষের মধ্যে ভাল-মন্দের, ন্যায়-অন্যায় এর মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা বিলুপ্ত হয়ে যায়। এর ফলে আল্লাহ্র রহমত তাদের অন্তরকে স্পর্শ করে না। পরিণতিতে অন্তরের অন্ধকার দূরীভূত হয় না, বিবেক জাগ্রত হয় না। বিবেকহীন আত্মা পশুর সমান। যার অন্তর প্রদর্শিত পথের আলো গ্রহণে অপারগ, তার মত হতভাগা আর কে আছে? তার জন্য পৃথিবী হাহাকারময় ও অশান্তিময়। তাদের পরকাল দোযখের আগুনের লেলিহান শিখায় আবৃত। আল্লাহ্র পরিকল্পনা বা উদ্দেশ্য এতে ব্যাহত হয় না একবিন্দুও। তাই ক্ষুদ্র বস্তুর উপমা এসব অন্তর বোঝার ক্ষমতা রাখে না। কারণ তাদের আত্মা অন্ধকারে আচ্ছন্ন। শুধুমাত্র তারাই বুঝতে পারবে, যাদের আত্মায় আল্লাহ্র হেদায়েতের আলো প্রবেশ লাভ করেছে। বরং এইসব উপমাতে তাদের ঈমানের দৃঢ়তা আরও বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ্র রহমত তাদের অন্তরকে বিধৌত করে, ফলে তাদের অন্তর্দৃষ্টি, জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও অনুধাবন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
আয়াতঃ 002.028
কেমন করে তোমরা আল্লাহর ব্যাপারে কুফরী অবলম্বন করছ? অথচ তোমরা ছিলে নিষ্প্রাণ। অতঃপর তিনিই তোমাদেরকে প্রাণ দান করেছেন, আবার মৃত্যু দান করবেন। পুনরায় তোমাদেরকে জীবনদান করবেন। অতঃপর তারই প্রতি প্রত্যাবর্তন করবে।
How can you disbelieve in Allâh? Seeing that you were dead and He gave you life. Then He will give you death, then again will bring you to life (on the Day of Resurrection) and then unto Him you will return.
كَيْفَ تَكْفُرُونَ بِاللَّهِ وَكُنتُمْ أَمْوَاتاً فَأَحْيَاكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيكُمْ ثُمَّ إِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
Kayfa takfuroona biAllahi wakuntum amwatan faahyakum thumma yumeetukum thumma yuhyeekum thumma ilayhi turjaAAoona
YUSUFALI: How can ye reject the faith in Allah?- seeing that ye were without life, and He gave you life; then will He cause you to die, and will again bring you to life; and again to Him will ye return.
PICKTHAL: How disbelieve ye in Allah when ye were dead and He gave life to you! Then He will give you death, then life again, and then unto Him ye will return.
SHAKIR: How do you deny Allah and you were dead and He gave you life? Again He will cause you to die and again bring you to life, then you shall be brought back to Him.
KHALIFA: How can you disbelieve in GOD when you were dead and He gave you life, then He puts you to death, then He brings you back to life, then to Him you ultimately return?
২৮। কিভাবে তোমরা আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাসকে অস্বীকার কর ৪৬? যখন দেখতে পাও তোমরা ছিলে প্রাণহীন এবং তিনি তোমাদের জীবন দিয়েছেন। তারপরে তিনি তোমাদের মৃত্যু দেবেন এবং পুণরায় তোমাদের জীবনে ফিরিয়ে আনবেন এবং পুণরায় তাঁর নিকটই হবে তোমাদের সকলের প্রত্যাবর্তন।২৯। তিনিই পৃথিবীর সকল বস্তু তোমাদের [ব্যবহারের] জন্য সৃষ্টি করেছেন। উপরন্তু তার পরিকল্পনা আকাশকেও অন্তর্ভূক্ত করে, তিনি সপ্ত আসমান তৈরির কাজকে সুষম করেন। সকল বিষয় সম্বন্ধে তিনি পরিপূর্ণ জ্ঞানের অধিকারী।
৪৬। এই [২ : ২২]-আয়াতে আল্লাহ্ তার বান্দাকে জানাচ্ছেন তার অসীম করুণার কথা। সন্দেহ বাতিকদের সন্দেহ খণ্ডন করেছেন ২ : ২৩-এ। অন্যায় কাজের শাস্তি বর্ণনা করেছেন ২ : ২৪ আয়াতে এবং যারা পৃথিবীতে ভাল কাজ করে তাদের জন্য আছে সুখবর :২৫ আয়াতে। কোরআনের আয়াতে এসব বর্ণনা করা হয়েছে চমৎকার ভাষা ও যুক্তির মাধ্যমে। আয়াত ২ : ২৬-২৭ আয়াতে বলা হয়েছে যে যারা ইচ্ছাকৃতভাবে ভালর পরিবর্তে মন্দকে বেছে নেয়, আল্লাহ্র বাণীকে অস্বীকার করে, আল্লাহ্র দেখানো রাস্তাকে (নৈতিক ও চারিত্রিক গুনাবলীর উন্নতি) পরিহার করে, ফলে আল্লাহ্র সাথে মানুষের যে ওয়াদা তারা তা ভঙ্গ করে। মহাগ্রন্থ কুরআনে বর্ণিত ছোট ছোট উপমার দ্বারা এইসব উদ্ধত ও অবাধ্যজনকেই বিপথগামীরূপে বর্ণনা করা হয়েছে। এরা আল্লাহ্র সাথে কৃত অঙ্গীকার ভঙ্গ করে এবং যে সব সম্পর্ক আল্লাহ্ রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন তা ছিন্ন করে। যার পরিণাম স্বরূপ ধরার বুকে অশান্তি বিস্তার করে।
এর পরের আয়াতে ২ : ২৮-২৯ আল্লাহ্ তার বান্দার অন্তরের অনুভূতির কাছে আবেদন রেখেছেন। তিনি বলেছেন এই পৃথিবীতে বান্দার সর্ব অস্তিত্ব, তার ধন-সম্পদ, ক্ষমতা-প্রতিপত্তি, জ্ঞান-মেধা সবকিছুই তাঁরই দান। জীবন ও মৃত্যুর রহস্য তাঁরই হাতে। মরদেহের মৃত্যুই জীবনের শেষ কথা নয়। ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী জীবন। এই পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী জীবনকে পরকালের ‘শিক্ষানবীশ কাল’ (Probationary Period) বলা যায়। পরকালের অনন্ত জীবনের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার সময় হচ্ছে পৃথিবীর এই জীবন। এই জীবন শেষে আল্লাহ্র কাছেই ফিরে যেতে হবে। আল্লাহ্ মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব করে সৃষ্টি করেছেন। পৃথিবীর সমস্ত সৃষ্টিকে মানুষের কল্যাণের জন্যই সৃষ্টি করেছেন। আলোচ্য আয়াতে এ তথ্যের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। এর দ্বারা বোঝা যায় যে পৃথিবীতে এমন কোন বস্তু নাই যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানুষের উপকার সাধন করে না। পৃথিবীর ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অনুজীব থেকে বিরাট মহাবিশ্ব সবই তাঁর সৃষ্টি। মহাবিশ্বের আয়তন ধারণা করা মানুষের পক্ষে অসম্ভব। এই মহাকাশকে আল্লাহ্ সপ্ত আকাশে ভাগ করেছেন। ভবিষ্যতের বিজ্ঞানই হয়তো এই সপ্ত আকাশের সন্ধান দেবে। এখানে সপ্ত আকাশ হয়তো আল্লাহ্ সাতটি গ্যালাক্সির বা ছায়াপথের সন্ধান দিচ্ছেন-যেখানে আমাদের বিজ্ঞান বিশ্বজগতের শুধুমাত্র এক আকাশ বা একটি ছায়াপথের সন্ধান দেয়। ভবিষ্যতের বিজ্ঞান আমাদের এই রহস্যের সমাধান দেবে। স্রষ্টার সৃষ্টি বিশাল এবং সুক্ষ্ম কৌশল এবং জ্ঞানে ভরা। তার সৃষ্টির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তাঁর সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য ও জ্ঞান আমাদের মত সাধারণ মানুষের পক্ষে ধারণা করাও অসম্ভব। সেই স্রষ্টাকে ইচ্ছাকৃতভাবে যারা অস্বীকার করে তাদের আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গি (Spiritual Faculty) আস্তে আস্তে ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে যায়।
আয়াতঃ 002.029
তিনিই সে সত্ত্বা যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য যা কিছু জমীনে রয়েছে সে সমস্ত। তারপর তিনি মনোসংযোগ করেছেন আকাশের প্রতি। বস্তুতঃ তিনি তৈরী করেছেন সাত আসমান। আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে অবহিত।
He it is Who created for you all that is on earth. Then He Istawâ (rose over) towards the heaven and made them seven heavens and He is the All-Knower of everything.
هُوَ الَّذِي خَلَقَ لَكُم مَّا فِي الأَرْضِ جَمِيعاً ثُمَّ اسْتَوَى إِلَى السَّمَاء فَسَوَّاهُنَّ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
Huwa allathee khalaqa lakum ma fee al-ardi jameeAAan thumma istawa ila alssama-i fasawwahunna sabAAa samawatin wahuwa bikulli shay-in AAaleemun
YUSUFALI: It is He Who hath created for you all things that are on earth; Moreover His design comprehended the heavens, for He gave order and perfection to the seven firmaments; and of all things He hath perfect knowledge.
PICKTHAL: He it is Who created for you all that is in the earth. Then turned He to the heaven, and fashioned it as seven heavens. And He is knower of all things.
SHAKIR: He it is Who created for you all that is in the earth, and He directed Himself to the heaven, so He made them complete seven heavens, and He knows all things.
KHALIFA: He is the One who created for you everything on earth, then turned to the sky and perfected seven universes therein, and He is fully aware of all things.
২৮। কিভাবে তোমরা আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাসকে অস্বীকার কর ৪৬? যখন দেখতে পাও তোমরা ছিলে প্রাণহীন এবং তিনি তোমাদের জীবন দিয়েছেন। তারপরে তিনি তোমাদের মৃত্যু দেবেন এবং পুণরায় তোমাদের জীবনে ফিরিয়ে আনবেন এবং পুণরায় তাঁর নিকটই হবে তোমাদের সকলের প্রত্যাবর্তন।২৯। তিনিই পৃথিবীর সকল বস্তু তোমাদের [ব্যবহারের] জন্য সৃষ্টি করেছেন। উপরন্তু তার পরিকল্পনা আকাশকেও অন্তর্ভূক্ত করে, তিনি সপ্ত আসমান তৈরির কাজকে সুষম করেন। সকল বিষয় সম্বন্ধে তিনি পরিপূর্ণ জ্ঞানের অধিকারী।
৪৬। এই [২ : ২২]-আয়াতে আল্লাহ্ তার বান্দাকে জানাচ্ছেন তার অসীম করুণার কথা। সন্দেহ বাতিকদের সন্দেহ খণ্ডন করেছেন ২ : ২৩-এ। অন্যায় কাজের শাস্তি বর্ণনা করেছেন ২ : ২৪ আয়াতে এবং যারা পৃথিবীতে ভাল কাজ করে তাদের জন্য আছে সুখবর :২৫ আয়াতে। কোরআনের আয়াতে এসব বর্ণনা করা হয়েছে চমৎকার ভাষা ও যুক্তির মাধ্যমে। আয়াত ২ : ২৬-২৭ আয়াতে বলা হয়েছে যে যারা ইচ্ছাকৃতভাবে ভালর পরিবর্তে মন্দকে বেছে নেয়, আল্লাহ্র বাণীকে অস্বীকার করে, আল্লাহ্র দেখানো রাস্তাকে (নৈতিক ও চারিত্রিক গুনাবলীর উন্নতি) পরিহার করে, ফলে আল্লাহ্র সাথে মানুষের যে ওয়াদা তারা তা ভঙ্গ করে। মহাগ্রন্থ কুরআনে বর্ণিত ছোট ছোট উপমার দ্বারা এইসব উদ্ধত ও অবাধ্যজনকেই বিপথগামীরূপে বর্ণনা করা হয়েছে। এরা আল্লাহ্র সাথে কৃত অঙ্গীকার ভঙ্গ করে এবং যে সব সম্পর্ক আল্লাহ্ রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন তা ছিন্ন করে। যার পরিণাম স্বরূপ ধরার বুকে অশান্তি বিস্তার করে।
এর পরের আয়াতে ২ : ২৮-২৯ আল্লাহ্ তার বান্দার অন্তরের অনুভূতির কাছে আবেদন রেখেছেন। তিনি বলেছেন এই পৃথিবীতে বান্দার সর্ব অস্তিত্ব, তার ধন-সম্পদ, ক্ষমতা-প্রতিপত্তি, জ্ঞান-মেধা সবকিছুই তাঁরই দান। জীবন ও মৃত্যুর রহস্য তাঁরই হাতে। মরদেহের মৃত্যুই জীবনের শেষ কথা নয়। ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী জীবন। এই পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী জীবনকে পরকালের ‘শিক্ষানবীশ কাল’ (Probationary Period) বলা যায়। পরকালের অনন্ত জীবনের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার সময় হচ্ছে পৃথিবীর এই জীবন। এই জীবন শেষে আল্লাহ্র কাছেই ফিরে যেতে হবে। আল্লাহ্ মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব করে সৃষ্টি করেছেন। পৃথিবীর সমস্ত সৃষ্টিকে মানুষের কল্যাণের জন্যই সৃষ্টি করেছেন। আলোচ্য আয়াতে এ তথ্যের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। এর দ্বারা বোঝা যায় যে পৃথিবীতে এমন কোন বস্তু নাই যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানুষের উপকার সাধন করে না। পৃথিবীর ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অনুজীব থেকে বিরাট মহাবিশ্ব সবই তাঁর সৃষ্টি। মহাবিশ্বের আয়তন ধারণা করা মানুষের পক্ষে অসম্ভব। এই মহাকাশকে আল্লাহ্ সপ্ত আকাশে ভাগ করেছেন। ভবিষ্যতের বিজ্ঞানই হয়তো এই সপ্ত আকাশের সন্ধান দেবে। এখানে সপ্ত আকাশ হয়তো আল্লাহ্ সাতটি গ্যালাক্সির বা ছায়াপথের সন্ধান দিচ্ছেন-যেখানে আমাদের বিজ্ঞান বিশ্বজগতের শুধুমাত্র এক আকাশ বা একটি ছায়াপথের সন্ধান দেয়। ভবিষ্যতের বিজ্ঞান আমাদের এই রহস্যের সমাধান দেবে। স্রষ্টার সৃষ্টি বিশাল এবং সুক্ষ্ম কৌশল এবং জ্ঞানে ভরা। তার সৃষ্টির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তাঁর সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য ও জ্ঞান আমাদের মত সাধারণ মানুষের পক্ষে ধারণা করাও অসম্ভব। সেই স্রষ্টাকে ইচ্ছাকৃতভাবে যারা অস্বীকার করে তাদের আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গি (Spiritual Faculty) আস্তে আস্তে ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে যায়।
আয়াতঃ 002.030
আর তোমার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদিগকে বললেনঃ আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি বানাতে যাচ্ছি, তখন ফেরেশতাগণ বলল, তুমি কি পৃথিবীতে এমন কাউকে সৃষ্টি করবে যে দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে? অথচ আমরা নিয়ত তোমার গুণকীর্তন করছি এবং তোমার পবিত্র সত্তাকে স্মরণ করছি। তিনি বললেন, নিঃসন্দেহে আমি জানি, যা তোমরা জান না।
And (remember) when your Lord said to the angels: ”Verily, I am going to place (mankind) generations after generations on earth.” They said: ”Will You place therein those who will make mischief therein and shed blood, – while we glorify You with praises and thanks (Exalted be You above all that they associate with You as partners) and sanctify You.” He (Allâh) said: ”I know that which you do not know.”
وَإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلاَئِكَةِ إِنِّي جَاعِلٌ فِي الأَرْضِ خَلِيفَةً قَالُواْ أَتَجْعَلُ فِيهَا مَن يُفْسِدُ فِيهَا وَيَسْفِكُ الدِّمَاء وَنَحْنُ نُسَبِّحُ بِحَمْدِكَ وَنُقَدِّسُ لَكَ قَالَ إِنِّي أَعْلَمُ مَا لاَ تَعْلَمُونَ
Wa-ith qala rabbuka lilmala-ikati innee jaAAilun fee al-ardi khaleefatan qaloo atajAAalu feeha man yufsidu feeha wayasfiku alddimaa wanahnu nusabbihu bihamdika wanuqaddisu laka qala innee aAAlamu ma la taAAlamoona
YUSUFALI: Behold, thy Lord said to the angels: “I will create a vicegerent on earth.” They said: “Wilt Thou place therein one who will make mischief therein and shed blood?- whilst we do celebrate Thy praises and glorify Thy holy (name)?” He said: “I know what ye know not.”
PICKTHAL: And when thy Lord said unto the angels: Lo! I am about to place a viceroy in the earth, they said: Wilt thou place therein one who will do harm therein and will shed blood, while we, we hymn Thy praise and sanctify Thee? He said: Surely I know that which ye know not.
SHAKIR: And when your Lord said to the angels, I am going to place in the earth a khalif, they said: What! wilt Thou place in it such as shall make mischief in it and shed blood, and we celebrate Thy praise and extol Thy holiness? He said: Surely I know what you do not know.
KHALIFA: Recall that your Lord said to the angels, “I am placing a representative (a temporary god) on Earth.” They said, “Will You place therein one who will spread evil therein and shed blood, while we sing Your praises, glorify You, and uphold Your absolute authority?” He said, “I know what you do not know.”
রুকু – ৪
৪৭। ফেরেশতারা যদিও পূত, পবিত্র এবং ক্ষমতাধর তবুও তারা সম্পূর্ণ নয়। তাদের ক্ষমতা অত্যন্ত শক্তিশালী ও সম্পূর্ণ (Perfect) তবুও তারা অসম্পূর্ণ। কারণ তাদের কার্যপ্রণালীর মধ্যে কোথাও আবেগ ও অনুভূতির স্থান নাই। এখানেই ফেরেশতাদের সাথে মানুষের পার্থক্য। এখানেই ফেরেশতাদের উপর মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব। যে রকম কম্পিউটার যে কোনও কাজে মানুষের থেকে অত্যন্ত দ্রুত, অত্যন্ত নির্ভুল এবং অত্যন্ত শক্তিশালী,-তবুও মানুষ কম্পিউটার থেকে শ্রেষ্ঠ। ফেরেশতারা আবেগ ও অনুভূতিশূন্য ফলে তারা কম্পিউটারের মত যান্ত্রিক। আবেগ ও অনুভূতির সর্বশ্রেষ্ঠ প্রকাশ হচ্ছে-ভালবাসার ক্ষমতা। সৃষ্টির মধ্যে একমাত্র মানুষেরই ভালবাসার ক্ষমতা আছে। এই আবেগ ও অনুভূতি (Passion and emotion) ঠিকভাবে পরিচালিত করে মানুষ হয় দেবত্বে উন্নীত, আবার অন্ধ আবেগ ও অনুভূতির ফলে মানুষ ন্যায়-অন্যায় বোধ হারিয়ে ফেলে। নিজেকে পশুর স্তরে নামিয়ে ফেলে। কে কিভাবে তার আবেগ ও অনুভূতিকে পরিচালিত করে তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে তার “স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি” প্রয়োগের উপরে। একমাত্র মানুষকেই আল্লাহ্ “সীমিত স্বাধীন ইচ্ছা শক্তি” দান করেছেন। ফলে পৃথিবীর সমস্ত সৃষ্ট জীবের মধ্যে একমাত্র মানুষই তার নিজস্ব ভাগ্য গড়ার অধিকার লাভ করেছে। যখন এই ইচ্ছা শক্তি সঠিক পথে পরিচালিত হয়, তখন মানুষ নিজের সৌভাগ্য নিজে গড়ে তোলে। প্রকৃতিকে বশ করে, নিজেকে পৃথিবীর ‘খলিফা’ রূপে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে এমন ক্ষমতা আল্লাহ্ একমাত্র মানুষকেই দিয়েছেন।
অপরপক্ষে ফেরেশতাদের আমরা কল্পনা করতে পারি, যাদের নিজস্ব ইচ্ছাশক্তি নাই। তাদের আমরা শক্তির (Force) প্রতীক হিসেবে ধরতে পারি। আল্লাহ্র হুকুম যারা নির্ভুলভাবে মেনে চলে। কিন্তু নিজস্ব বিচার বিবেচনা নাই। ফলে আল্লাহ্র প্রতিভূ হওয়ার ক্ষমতা নাই। আল্লাহ্র প্রতিভূ হওয়া যায় তখনই যখন নিজস্ব আবেগ, অনুভূতির সাহায্যে সুন্দর পৃথিবী সৃষ্টিতে সমস্ত ইচ্ছাশক্তিকে নিয়োজিত করার ক্ষমতা থাকে, ভাল কাজে নিজেকে উৎসর্গ করতে পারে, মন্দ কাজে বাঁধা দান করতে পারে, তখনই মানুষের মনুষ্যত্ব প্রকাশ পায় এবং মানুষ দেবত্বে উন্নীত হয়। ‘খলিফার’ গুণাবলী অর্জনে সক্ষম হয়। এই পার্থক্য শেক্সপীয়ার [৯৪ সনেটে] কয়েকটি পংক্তিতে প্রকাশ করেছেন, ‘They are the lords and owners of their faces. Others but stewards of their excellence.’ যেহেতু ফেরেশতারা আবেগ-অনুভূতিহীন, তাই আবেগ অনুভূতির অপব্যবহারের ফলে পৃথিবীতে যে দুঃখ দুর্দশার উদ্ভব হবে সেটাই তাদের প্রধান শঙ্কার বিষয় ছিল। আসলে মানুষের মাঝে স্রষ্টা তাঁর বৈশিষ্ট্যের রূপ প্রকাশ করেছেন। মানুষ সৃষ্টি করে, মানুষ তার সৃষ্টিকে রক্ষা করে, সর্বোপরি মানুষ ভালবাসে। যেরূপ স্রষ্টা আমাদের এবং বিশ্বচরাচরের তার সমস্ত সৃষ্টিকেই ভালবাসেন। আবেগ-অনুভূতির সর্বোচ্চ ফসল হচ্ছে ভালবাসা। ভালবাসা চাওয়া ও ভালাবাসা দেওয়া। স্রষ্টার করুণা ও দয়া-তাঁর ভালবাসারই প্রকাশ। ফেরেশতারা স্রষ্টার এই বিশেষ দিকটি অনুধাবন করতে অক্ষম। কারণ তারা আবেগ ও অনুভূতি বিহীন। ফেরেশতারা বিনয় ও ভক্তি সহকারে আল্লাহ্র কাছে মানুষ সৃষ্টিতে আপত্তি জানিয়েছেন। ফেরেশতাদের মতামত প্রকাশ কোন প্রতিবাদ ছলে অহংকার প্রদর্শন বা যোগ্যতার দাবী প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল না। বরং তাদের অভিমতের অভিব্যক্তি ছিল একান্ত অনুগতের ন্যায় এবং বিনীতভাবে নিজস্ব খেদমত পেশ করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। এখানে এ কথা ভাবার অবকাশ নাই যে ফেরেশতারা হিংসার বশবর্তী হয়ে এরকম অনুরোধ জানিয়েছেন। কারণ তা সম্ভব নয়। হিংসা বা রাগ, দ্বেষ সবেরই উৎপত্তিস্থল হচ্ছে আবেগ ও অনুভূতি। ফেরেশতারা সর্বপ্রকার আবেগ ও অনুভূতিশূন্য। সুতরাং ভালবাসার আবেগ ও অনুভূতি অনুভব করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। সেই কারণেই সর্বজ্ঞ আল্লাহ্ তাদের বলেছেন যে তাদের জ্ঞান সীমিত এবং ফেরেশতারা তা স্বীকার করে নেয় [২ : ৩২]।
ফেরেশতাদের এই যে অপূর্ণতা এটা তাদের কোনও ত্রুটি নয়। আল্লাহ্ তাদের সেইভাবেই সৃষ্টি করেছেন এবং আল্লাহ্ যখন ফেরেশতাদের নিকট আদমের (আঃ) মানসিক উৎকর্ষতার প্রমাণ দাখিল করলেন তখন ফেরেশতারা তাদের অপূর্ণতা স্বীকার করে নিল।
আয়াতঃ 002.031
আর আল্লাহ তা’আলা শিখালেন আদমকে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীর নাম। তারপর সে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীকে ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করলেন। অতঃপর বললেন, আমাকে তোমরা এগুলোর নাম বলে দাও, যদি তোমরা সত্য হয়ে থাক।
And He taught Adam all the names (of everything) , then He showed them to the angels and said, ”Tell Me the names of these if you are truthful.”
وَعَلَّمَ آدَمَ الأَسْمَاء كُلَّهَا ثُمَّ عَرَضَهُمْ عَلَى الْمَلاَئِكَةِ فَقَالَ أَنبِئُونِي بِأَسْمَاء هَـؤُلاء إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
WaAAallama adama al-asmaa kullaha thumma AAaradahum AAala almala-ikati faqala anbi-oonee bi-asma-i haola-i in kuntum sadiqeena
YUSUFALI: And He taught Adam the names of all things; then He placed them before the angels, and said: “Tell me the names of these if ye are right.”
PICKTHAL: And He taught Adam all the names, then showed them to the angels, saying: Inform Me of the names of these, if ye are truthful.
SHAKIR: And He taught Adam all the names, then presented them to the angels; then He said: Tell me the names of those if you are right.
KHALIFA: He taught Adam all the names then presented them to the angels, saying, “Give me the names of these, if you are right.”
৪৮। এই আয়াতের তর্জমা এরকম দাঁড়ায় যে, ‘বস্তুর প্রকৃতি শিক্ষা দেন’ অনুবাদেকরা একে এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন যে বস্তুসামগ্রীর নাম, এদের গুণাগুণ ও লক্ষনাদি সম্পর্কে জ্ঞান লাভের যোগ্যতা। অর্থাৎ একমাত্র আদমই সেই বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন যার সাহায্যে মানুষ জড় প্রকৃতিকে অতিক্রম করে তার প্রকৃত সত্তাকে উদ্ঘাটনে সক্ষম হবে। এ যোগ্যতা কেবলমাত্র আদম সন্তানকেই দেয়া হয়েছে। ফেরেশতাদের স্বভাব প্রকৃতি মোটেই এর উপযোগী নয়। এসব কিছুই আদমকে তার স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ধর্ম হিসেবেই শিখিয়ে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ বাহ্যিকভাবে শিক্ষাদানের কোনও আয়োজনই করা হয় নাই। বরং আদম (আঃ) কে সৃষ্টির প্রারম্ভিক পর্যায়ে এসব জ্ঞান স্বভাবগত করেই দেওয়া হয়েছিল। যেমন-সদ্যজাত শিশু ভূমিষ্ট হওয়ার সাথে সাথেই মায়ের দুধ পান করতে এবং হাঁসের ছানা সাঁতার কাটতে জানে। এ ব্যাপারে কোনও বাহ্যিক প্রশিক্ষণ প্রয়োজন হয় না। হযরত আদমের (আঃ) জন্য জন্মগতভাবে যে বিশেষ গুণাবলী ছিল, তা হচ্ছে তার আবেগ ও অনুভূতি, যার সাহায্যে তিনি বস্তু জগতের উর্ধ্বেও চিন্তা করতে সক্ষম ছিলেন। সমস্ত আয়াতটাই এক বিশেষ অর্থবোধক। যে বিশেষ চারিত্রিক গুণাবলীর জন্য আদম সন্তানকে ফেরেশতাদের থেকে পৃথক এবং শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে তা হচ্ছে – ১) মানুষ ভালবাসতে পারে, ২) নিজস্ব ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগে কোনও কাজের পরিকল্পনা করতে পারে, ৩) ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে, ফলে আল্লাহ্র প্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা রাখে। মানুষের এই বিশেষ গুণাবলীর জন্যই মানুষ স্রষ্টাকে না দেখেও নিজের সত্ত্বার ভিতরে স্রষ্টার অস্তিত্ব অনুভব করতে পারে। সে বিশ্বাস করে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ আদম সন্তানকে ভালবাসেন। তিনি সর্বজ্ঞ। তিনি সব দেখেন, সব শুনেন। মানুষ তার অন্তরের অন্তঃস্থলের কোনও চিন্তা, কোনও কাজ, কোনও অনুভব, কোনও কিছু তাঁর কাছে গোপন করতে পারে না। সর্বশক্তিমানের উপর বিশ্বাস, তাঁর প্রতি আনুগত্য, ভালবাসা, সবই জন্মলাভ করে মানুষের সেই বিশেষ চারিত্রিক গুণাবলীর জন্য, আর তা হচ্ছে আবেগ ও অনুভূতি (Feeling)। এই বিশেষ গুণটি অর্থাৎ আবেগ ও অনুভূতি শুধু যে ফেরেশতাদের মধ্যেই অনুপস্থিত তাই নয়, সমগ্র বিশ্ব চরাচরে মানুষ বাদে সমস্ত প্রাণীকূলের মধ্যেও অনুপস্থিত।
আয়াতঃ 002.032
তারা বলল, তুমি পবিত্র! আমরা কোন কিছুই জানি না, তবে তুমি যা আমাদিগকে শিখিয়েছ (সেগুলো ব্যতীত) নিশ্চয় তুমিই প্রকৃত জ্ঞানসম্পন্ন, হেকমতওয়ালা।
They (angels) said: ”Glory be to You, we have no knowledge except what you have taught us. Verily, it is You, the All-Knower, the All-Wise.”
قَالُواْ سُبْحَانَكَ لاَ عِلْمَ لَنَا إِلاَّ مَا عَلَّمْتَنَا إِنَّكَ أَنتَ الْعَلِيمُ الْحَكِيمُ
Qaloo subhanaka la AAilma lana illa ma AAallamtana innaka anta alAAaleemu alhakeemu
YUSUFALI: They said: “Glory to Thee, of knowledge We have none, save what Thou Hast taught us: In truth it is Thou Who art perfect in knowledge and wisdom.”
PICKTHAL: They said: Be glorified! We have no knowledge saving that which Thou hast taught us. Lo! Thou, only Thou, art the Knower, the Wise.
SHAKIR: They said: Glory be to Thee! we have no knowledge but that which Thou hast taught us; surely Thou art the Knowing, the Wise.
KHALIFA: They said, “Be You glorified, we have no knowledge, except that which You have taught us. You are the Omniscient, Most Wise.”
৩২। তারা বলল, ‘আপনি পবিত্র, আপনি যা শিক্ষা দিয়েছেন তা ছাড়া আমাদের অন্য কোন জ্ঞান নাই। প্রকৃতপক্ষে আপনিই [একমাত্র] জ্ঞানে ও প্রজ্ঞায় পূর্ণাঙ্গ।৩৩। তিনি বললেন, ‘হে আদম! এগুলির প্রকৃতি সম্বন্ধে বল।’ যখন সে ফেরেশতাদের তা বলল, আল্লাহ্ বললেন, ‘আমি কি তোমাদের বলি নাই যে আমি আকাশ ও পৃথিবীর গোপন রহস্য অবগত, এবং তোমরা যা প্রকাশ কর এবং যা গোপন কর আমি তা [সব] জানি?’
৩৪। এবং স্মরণ কর, আমি ফেরেশতাদের বলেছিলাম, ‘আদমকে সেজ্দা কর।’ ইবলীশ ব্যতীত সকলেই সেজ্দা করলো ৪৯। সে অমান্য করলো এবং ঔদ্ধত্য প্রকাশ করলো। [ফলে] সে কাফেরদের অন্তুর্ভূক্ত হল।
৪৯। এই আরবী আয়াতের অনুবাদ দাঁড়ায় যে, ‘ইবলীশ ব্যতীত সকলেই সিজ্দা করলো।’ এর থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ইব্লিশ একজন ফেরেশ্তা কিন্তু ফেরেশ্তারা পথভ্রষ্ট হবে সে রকম ক্ষমতা তাদের নাই। মুসলিম দর্শনে তা স্বীকারও করে না। সূরা ১৩ এর আয়াত ৫০-এ ইব্লিশকে জ্বীন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। আমরা পরে এ সম্বন্ধে আলোচনা করবো।
আয়াতঃ 002.033
তিনি বললেন, হে আদম, ফেরেশতাদেরকে বলে দাও এসবের নাম। তারপর যখন তিনি বলে দিলেন সে সবের নাম, তখন তিনি বললেন, আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, আমি আসমান ও যমীনের যাবতীয় গোপন বিষয় সম্পর্কে খুব ভাল করেই অবগত রয়েছি? এবং সেসব বিষয়ও জানি যা তোমরা প্রকাশ কর, আর যা তোমরা গোপন কর!
He said: ”O Adam! Inform them of their names,” and when he had informed them of their names, He said: ”Did I not tell you that I know the Ghaib (unseen) in the heavens and the earth, and I know what you reveal and what you have been concealing?”
قَالَ يَا آدَمُ أَنبِئْهُم بِأَسْمَآئِهِمْ فَلَمَّا أَنبَأَهُمْ بِأَسْمَآئِهِمْ قَالَ أَلَمْ أَقُل لَّكُمْ إِنِّي أَعْلَمُ غَيْبَ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَأَعْلَمُ مَا تُبْدُونَ وَمَا كُنتُمْ تَكْتُمُونَ
Qala ya adamu anbi/hum bi-asma-ihim falamma anbaahum bi-asma-ihim qala alam aqul lakum innee aAAlamu ghayba alssamawati waal-ardi waaAAlamu ma tubdoona wama kuntum taktumoona
YUSUFALI: He said: “O Adam! Tell them their names.” When he had told them, Allah said: “Did I not tell you that I know the secrets of heaven and earth, and I know what ye reveal and what ye conceal?”
PICKTHAL: He said: O Adam! Inform them of their names, and when he had informed them of their names, He said: Did I not tell you that I know the secret of the heavens and the earth? And I know that which ye disclose and which ye hide.
SHAKIR: He said: O Adam! inform them of their names. Then when he had informed them of their names, He said: Did I not say to you that I surely know what is ghaib in the heavens and the earth and (that) I know what you manifest and what you hide?
KHALIFA: He said, “O Adam, tell them their names.” When he told them their names, He said, “Did I not tell you that I know the secrets of the heavens and the earth? I know what you declare, and what you conceal.”
৩২। তারা বলল, ‘আপনি পবিত্র, আপনি যা শিক্ষা দিয়েছেন তা ছাড়া আমাদের অন্য কোন জ্ঞান নাই। প্রকৃতপক্ষে আপনিই [একমাত্র] জ্ঞানে ও প্রজ্ঞায় পূর্ণাঙ্গ।৩৩। তিনি বললেন, ‘হে আদম! এগুলির প্রকৃতি সম্বন্ধে বল।’ যখন সে ফেরেশতাদের তা বলল, আল্লাহ্ বললেন, ‘আমি কি তোমাদের বলি নাই যে আমি আকাশ ও পৃথিবীর গোপন রহস্য অবগত, এবং তোমরা যা প্রকাশ কর এবং যা গোপন কর আমি তা [সব] জানি?’
৩৪। এবং স্মরণ কর, আমি ফেরেশতাদের বলেছিলাম, ‘আদমকে সেজ্দা কর।’ ইবলীশ ব্যতীত সকলেই সেজ্দা করলো ৪৯। সে অমান্য করলো এবং ঔদ্ধত্য প্রকাশ করলো। [ফলে] সে কাফেরদের অন্তুর্ভূক্ত হল।
৪৯। এই আরবী আয়াতের অনুবাদ দাঁড়ায় যে, ‘ইবলীশ ব্যতীত সকলেই সিজ্দা করলো।’ এর থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ইব্লিশ একজন ফেরেশ্তা কিন্তু ফেরেশ্তারা পথভ্রষ্ট হবে সে রকম ক্ষমতা তাদের নাই। মুসলিম দর্শনে তা স্বীকারও করে না। সূরা ১৩ এর আয়াত ৫০-এ ইব্লিশকে জ্বীন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। আমরা পরে এ সম্বন্ধে আলোচনা করবো।
আয়াতঃ 002.034
এবং যখন আমি হযরত আদম (আঃ)-কে সেজদা করার জন্য ফেরেশতাগণকে নির্দেশ দিলাম, তখনই ইবলীস ব্যতীত সবাই সিজদা করলো। সে (নির্দেশ) পালন করতে অস্বীকার করল এবং অহংকার প্রদর্শন করল। ফলে সে কাফেরদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেল।
And (remember) when We said to the angels: ”Prostrate yourselves before Adam.”. And they prostrated except Iblîs (Satan), he refused and was proud and was one of the disbelievers (disobedient to Allâh).
وَإِذْ قُلْنَا لِلْمَلاَئِكَةِ اسْجُدُواْ لآدَمَ فَسَجَدُواْ إِلاَّ إِبْلِيسَ أَبَى وَاسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنَ الْكَافِرِينَ
Wa-ith qulna lilmala-ikati osjudoo li-adama fasajadoo illa ibleesa aba waistakbara wakana mina alkafireena
YUSUFALI: And behold, We said to the angels: “Bow down to Adam” and they bowed down. Not so Iblis: he refused and was haughty: He was of those who reject Faith.
PICKTHAL: And when We said unto the angels: Prostrate yourselves before Adam, they fell prostrate, all save Iblis. He demurred through pride, and so became a disbeliever.
SHAKIR: And when We said to the angels: Make obeisance to Adam they did obeisance, but Iblis (did it not). He refused and he was proud, and he was one of the unbelievers.
KHALIFA: When we said to the angels, “Fall prostrate before Adam,” they fell prostrate, except Satan; he refused, was too arrogant, and a disbeliever.
৩২। তারা বলল, ‘আপনি পবিত্র, আপনি যা শিক্ষা দিয়েছেন তা ছাড়া আমাদের অন্য কোন জ্ঞান নাই। প্রকৃতপক্ষে আপনিই [একমাত্র] জ্ঞানে ও প্রজ্ঞায় পূর্ণাঙ্গ।৩৩। তিনি বললেন, ‘হে আদম! এগুলির প্রকৃতি সম্বন্ধে বল।’ যখন সে ফেরেশতাদের তা বলল, আল্লাহ্ বললেন, ‘আমি কি তোমাদের বলি নাই যে আমি আকাশ ও পৃথিবীর গোপন রহস্য অবগত, এবং তোমরা যা প্রকাশ কর এবং যা গোপন কর আমি তা [সব] জানি?’
৩৪। এবং স্মরণ কর, আমি ফেরেশতাদের বলেছিলাম, ‘আদমকে সেজ্দা কর।’ ইবলীশ ব্যতীত সকলেই সেজ্দা করলো ৪৯। সে অমান্য করলো এবং ঔদ্ধত্য প্রকাশ করলো। [ফলে] সে কাফেরদের অন্তুর্ভূক্ত হল।
৪৯। এই আরবী আয়াতের অনুবাদ দাঁড়ায় যে, ‘ইবলীশ ব্যতীত সকলেই সিজ্দা করলো।’ এর থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ইব্লিশ একজন ফেরেশ্তা কিন্তু ফেরেশ্তারা পথভ্রষ্ট হবে সে রকম ক্ষমতা তাদের নাই। মুসলিম দর্শনে তা স্বীকারও করে না। সূরা ১৩ এর আয়াত ৫০-এ ইব্লিশকে জ্বীন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। আমরা পরে এ সম্বন্ধে আলোচনা করবো।
আয়াতঃ 002.035
এবং আমি আদমকে হুকুম করলাম যে, তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করতে থাক এবং ওখানে যা চাও, যেখান থেকে চাও, পরিতৃপ্তিসহ খেতে থাক, কিন্তু এ গাছের নিকটবর্তী হয়ো না। অন্যথায় তোমরা যালিমদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে পড়বে।
And We said: ”O Adam! Dwell you and your wife in the Paradise and eat both of you freely with pleasure and delight of things therein as wherever you will, but come not near this tree or you both will be of the Zâlimûn (wrong-doers).”
وَقُلْنَا يَا آدَمُ اسْكُنْ أَنتَ وَزَوْجُكَ الْجَنَّةَ وَكُلاَ مِنْهَا رَغَداً حَيْثُ شِئْتُمَا وَلاَ تَقْرَبَا هَـذِهِ الشَّجَرَةَ فَتَكُونَا مِنَ الْظَّالِمِينَ
Waqulna ya adamu oskun anta wazawjuka aljannata wakula minha raghadan haythu shi/tuma wala taqraba hathihi alshshajarata fatakoona mina alththalimeena
YUSUFALI: We said: “O Adam! dwell thou and thy wife in the Garden; and eat of the bountiful things therein as (where and when) ye will; but approach not this tree, or ye run into harm and transgression.”
PICKTHAL: And We said: O Adam! Dwell thou and thy wife in the Garden, and eat ye freely (of the fruits) thereof where ye will; but come not nigh this tree lest ye become wrong-doers.
SHAKIR: And We said: O Adam! Dwell you and your wife in the garden and eat from it a plenteous (food) wherever you wish and do not approach this tree, for then you will be of the unjust.
KHALIFA: We said, “O Adam, live with your wife in Paradise, and eat therefrom generously, as you please, but do not approach this tree, lest you sin.”
৫০। প্রশ্ন হচ্ছে বেহেশ্তের বাগানের অবস্থান কি আমাদের পৃথিবীতেই ছিল কি না? অবশ্যই না। কারণ ৩৬ নং আয়াতে বলা হয়েছে যে, ‘পৃথিবী হবে তোমাদের বাসস্থান।’ পৃথিবীতে পতনের পূর্বে আদমের অবস্থান এমন এক জায়গায় ছিল যেখানে নির্মল হৃদয়ে বিরাজ করতো অপার শান্তি, নির্মল ভালবাসা, বিশ্বাস, আত্মার ভিতরে আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাসের অপূর্ব আনুগত্য। আর পৃথিবী এমন এক জায়গা যেখানে প্রতি নিয়ত যে পরিবেশ বিরাজ করে তা কখনই বেহেশ্তের উপযোগী নয়। পৃথিবীতে বিরাজ করে পরস্পরের প্রতি অবিশ্বাস, শত্রুতা, হিংসা-বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা। এখানে প্রতিনিয়ত স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাসের অভাব পরিলক্ষিত হয়।
সুতরাং যারা বলে আদমের স্বর্গ পৃথিবীরই কোনও এক জায়গা তারা ভুল বলে। কারণ হয়তো স্বর্গ এমন এক জায়গা যেখানে আত্মার অবস্থান হবে স্থান ও কালের (Time & space) এর উর্ধ্বে। খ্রীষ্টানরা বলে আদমের স্বর্গ থেকে পতনের কারণ আদমের ‘জ্ঞান বৃক্ষের’ নিকট গমন এবং এর ফল ভক্ষণ। কিন্তু তা যুক্তিগ্রাহ্য হতে পারে না। কারণ আল্লাহ্ ফেরেশতাদের বলেছেন [২ : ৩১] যে মানুষকে তিনি জ্ঞান দান করেছেন, যা ফেরেশতাদের নাই। সুতরাং মানুষের মধ্যে যে জ্ঞান ধারণের ক্ষমতা বা বিকাশ তা স্রষ্টা মানুষ সৃষ্টির সময়েই দান করেছেন। তাহলে কুরআন শরীফে যে বৃক্ষের নিকট আদম সন্তানকে অগ্রসর হতে নিষেধ করা হয়েছিল তা কি? তা অবশ্যই পাপ বৃক্ষ [Tree of evil]। আর এটা পাপ বৃক্ষ বলেই আল্লাহ্ শুধু যে এর ফল খেতে নিষেধ করেছেন তা নয়; এমনকি এর ধারে কাছে যেতেও নিষেধ করেছেন।
৫১। ‘জুল্ম’ আরবী শব্দটি বহুবিদ অর্থ করা যায়। এর দ্বারা ভুল, অন্যায়, ক্ষতি ইত্যাদি বুঝায়। যখন অন্যের প্রতি ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল বা ক্ষতি করা হয় তখন তা অত্যাচার বা নিষ্পেষণে পরিণত হয়, তখন পাপবোধ অত্যাচারীর আত্মাকে অন্ধকারে আচ্ছন্ন করে ফেলে। সুতরাং পাপী ব্যক্তি তার আত্মাকে ‘জুল্ম’ করে। আত্মার যা স্বাভাবিক বিকাশ তা বাধাগ্রস্থ হয়। স্বাভাবিকভাবে আত্মা হচ্ছে পূত, পবিত্র ও নিষ্পাপ। সৃষ্টির আদিতে আত্মার পরিচয় হচ্ছে স্বর্গীয়; শান্তিতে আপ্লুত কিন্তু কৃত পাপ তার আত্মাকে অন্ধকারে বা যন্ত্রণায় নিক্ষিপ্ত করে। ফলে আত্মার মধ্যে শান্তির পরিবর্তে যন্ত্রণার উদ্ভব হয় ‘জুল্ম’ এই শব্দটির দ্বারা আত্মার স্বাভাবিক গতির বিরুদ্ধাচরণ করা বুঝানো হয়েছে।
আয়াতঃ 002.036
অনন্তর শয়তান তাদের উভয়কে ওখান থেকে পদস্খলিত করেছিল। পরে তারা যে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ছিল তা থেকে তাদেরকে বের করে দিল এবং আমি বললাম, তোমরা নেমে যাও। তোমরা পরস্পর একে অপরের শক্র হবে এবং তোমাদেরকে সেখানে কিছুকাল অবস্থান করতে হবে ও লাভ সংগ্রহ করতে হবে।
Then the Shaitân (Satan) made them slip therefrom (the Paradise), and got them out from that in which they were. We said: ”Get you down, all, with enmity between yourselves. On earth will be a dwelling place for you and an enjoyment for a time.”
فَأَزَلَّهُمَا الشَّيْطَانُ عَنْهَا فَأَخْرَجَهُمَا مِمَّا كَانَا فِيهِ وَقُلْنَا اهْبِطُواْ بَعْضُكُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ وَلَكُمْ فِي الأَرْضِ مُسْتَقَرٌّ وَمَتَاعٌ إِلَى حِينٍ
Faazallahuma alshshaytanu AAanha faakhrajahuma mimma kana feehi waqulna ihbitoo baAAdukum libaAAdin AAaduwwun walakum fee al-ardi mustaqarrun wamataAAun ila heenin
YUSUFALI: Then did Satan make them slip from the (garden), and get them out of the state (of felicity) in which they had been. We said: “Get ye down, all (ye people), with enmity between yourselves. On earth will be your dwelling-place and your means of livelihood – for a time.”
PICKTHAL: But Satan caused them to deflect therefrom and expelled them from the (happy) state in which they were; and We said: Fall down, one of you a foe unto the other! There shall be for you on earth a habitation and provision for a time.
SHAKIR: But the Shaitan made them both fall from it, and caused them to depart from that (state) in which they were; and We said: Get forth, some of you being the enemies of others, and there is for you in the earth an abode and a provision for a time.
KHALIFA: But the devil duped them, and caused their eviction therefrom. We said, “Go down as enemies of one another. On Earth shall be your habitation and provision for awhile.”
৫২। [২ : ৩৪]-এ ‘ইব্লিশ’ এই কথাটির দ্বারা দুষ্টের বা শয়তানের ক্ষমতাকে (Power of Evil) বুঝানো হয়েছে। শয়তানের ক্ষমতা হচ্ছে ভালকে অবদমিত করার চেষ্টা ও শত্রুতা। ভালোর বিরুদ্ধে মন্দের বিদ্রোহ করা ও ভালোকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা, এই-ই হচ্ছে শয়তানের ক্ষমতা ও কার্যপ্রণালী। এখানে বেহেশ্তের বাগান থেকে পতনকে রূপক অর্থে প্রকাশ করলে আমরা আমাদের চারিপাশের পৃথিবীতে এর অসংখ্য উদাহরণই দেখতে পাই। পৃথিবীর মানুষ প্রতিনিয়ত লোভ-প্রলোভন বা শয়তানের কুমন্ত্রণার কাছে পরাজিত হচ্ছে। ফলে ধীরে ধীরে সে আত্মার নিষ্পাপ অবস্থা যা সৃষ্টির আদিতে সে স্রষ্টার কাছে থেকে লাভ করেছিল, যার ফলে তার নির্মল আত্মায় অপার বেহেশতি শান্তি বিরাজ করতো সেই মানসিক অবস্থা থেকে বিচ্যুত হয়। লোভ-প্রলোভন, অন্যায় অত্যাচারের ফলে আত্মার শান্তি হয় বিঘ্নিত। আত্মা হয় মানসিক যন্ত্রণায় ক্ষত-বিক্ষত ও জর্জরিত। রূপক অর্থে আমাদের মানসিক শান্তিময় অবস্থা [State of Felicity] থেকে শয়তানের ক্ষমতার কাছে আত্মসমর্পণ করাই হচ্ছে বেহেশ্ত থেকে পৃথিবীতে পতন যা অহরহ-ই আমাদের চারিপাশে ঘটে।
৫৩। মানুষ সৎ কাজের ফলে আত্মায় বেহেশ্তের শান্তি অনুভব করে, অসৎ কাজের ফল হচ্ছে দোযখের যন্ত্রণা। এই যন্ত্রনা হয় আত্মায়। এখানে আদম অর্থ মানব সম্প্রদায়কে বুঝানো হচ্ছে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই আদম সন্তান। এখানে আদম, ইভ, শয়তান সবাইকে পরস্পরের শত্রু হিসেবে বলা হয়েছে। অর্থাৎ শয়তানের প্রলোভনই হচ্ছে মানুষের শত্রু, আত্মার যন্ত্রণা।
৫৪। পৃথিবীর আবাসস্থল মানব সন্তানের জন্য অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। এই ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে অবস্থানকালে আদম সন্তানকে তার জীবিকার জন্য তার বাঁচার জন্য অহরহ সংগ্রাম করতে হবে-এইই আল্লাহ্র হুকুম। সংগ্রামী জীবনের মাধ্যমেই তাকে বেঁচে থাকতে হবে এবং এর মাধ্যমেই ভালোকে গ্রহণ করে, মন্দকে প্রতিহত করে আত্মাকে বেহেশ্তের উপযোগী করতে হবে। পৃথিবীতে তাঁর বেঁচে থাকার সংগ্রাম হচ্ছে আত্মিক এবাদতের এবং আত্মিক উন্নতির এক অপরিহার্য অংশ।
আয়াতঃ 002.037
অতঃপর হযরত আদম (আঃ) স্বীয় পালনকর্তার কাছ থেকে কয়েকটি কথা শিখে নিলেন, অতঃপর আল্লাহ পাক তাঁর প্রতি (করুণাভরে) লক্ষ্য করলেন। নিশ্চয়ই তিনি মহা-ক্ষমাশীল ও অসীম দয়ালু।
Then Adam received from his Lord Words . And his Lord pardoned him (accepted his repentance). Verily, He is the One Who forgives (accepts repentance), the Most Merciful.
فَتَلَقَّى آدَمُ مِن رَّبِّهِ كَلِمَاتٍ فَتَابَ عَلَيْهِ إِنَّهُ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
Fatalaqqa adamu min rabbihi kalimatin fataba AAalayhi innahu huwa alttawwabu alrraheemu
YUSUFALI: Then learnt Adam from his Lord words of inspiration, and his Lord Turned towards him; for He is Oft-Returning, Most Merciful.
PICKTHAL: Then Adam received from his Lord words (of revelation), and He relented toward him. Lo! He is the relenting, the Merciful.
SHAKIR: Then Adam received (some) words from his Lord, so He turned to him mercifully; surely He is Oft-returning (to mercy), the Merciful.
KHALIFA: Then, Adam received from his Lord words, whereby He redeemed him. He is the Redeemer, Most Merciful.
৫৫। ৩১ নং আয়াতে ‘আল্লাহ্ সকল জিনিসের প্রকৃতি শিক্ষা দিলেন’ বলা হয়েছে। এই ‘সকল জিনিষের প্রকৃতি হচ্ছে বস্তুর ধর্ম। ঠিক সেইভাবে এখানে আল্লাহ্র কাছ থেকে ‘প্রত্যাদেশের বাণী পেল অর্থাৎ প্রত্যাদেশ বা আধ্যাত্মিক’ জ্ঞান লাভ করলো। কারণ কোনও জ্ঞান শিখতে হলে তার নিজস্ব চেষ্টায় শিখতে হয়। কিন্তু প্রত্যাদেশ বা আধ্যাত্মিক জ্ঞান যা আল্লাহ্র অসীম রহমত বা করুণার প্রতীক যা নদীর ফল্গুধারার মত স্বতঃপ্রবাহিত। হযরত আদম (আঃ) আল্লাহ্র কাছ থেকে সেই অসীম রহমতেরই সন্ধান পেয়েছিলেন।
আরবীতে অনুতাপ [তওবা] কথাটির অর্থ ফিরিয়া আসা এবং ‘তওয়াফ’ কথাটির ব্যবহার হয়েছে আল্লাহ্র কাছে কৃত পাপের ক্ষমা চাওয়া হিসেবে। কারণ আল্লাহ্ ক্ষমাশীল ও দয়ালু (Oft-returning Or Ever returning)। ক্ষমা চাওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে কৃত পাপের জন্য অনুতাপ প্রকাশ করা। অনুতাপ তিনটি ধাপের সমন্বয়ে গঠিত। প্রথমতঃ পাপী ব্যক্তি তার কৃত পাপকে সনাক্ত করবে। দ্বিতীয়তঃ সেই পাপ কাজকে শুধু সনাক্ত করলেই হবে না তা পরিত্যাগ করতে হবে। তৃতীয়তঃ ভবিষ্যতেও সে সেই মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকবে এই মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা ও দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করা। এই তিনটি ধাপের সমন্বয়ই হচ্ছে অনুতাপ করা। এই তিনটি ধাপের যে কোনও একটির অভাব থাকলে তওবা হবে না। অর্থাৎ অতীতের পাপকে সনাক্ত করা, বর্তমানে তা পরিহার করা এবং ভবিষ্যতে তা না করার সংকল্প গ্রহণ করা-এই তিনটি জিনিসের সমাবেশ না ঘটা পর্যন্ত তওবা হবে না।
এরপরে আসে অতীতের কৃত পাপের জন্য ক্ষমা চাওয়া। মানুষ অত্যন্ত দুর্বল চরিত্রের। সে বার বার ভুল করে এবং বার বার আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চায়। যতক্ষণ পর্যন্ত তার ক্ষমা চাওয়া হয় আন্তরিক এবং সত্যিকারের, আল্লাহ্ অসীম করুণার অধিকারী, রহমানুর রহীম এবং ক্ষমাশীল। একমাত্র তাঁর করুণাই আমাদের দোষত্রুটি মুক্ত হতে সাহায্য করে।
আয়াতঃ 002.038
আমি হুকুম করলাম, তোমরা সবাই নীচে নেমে যাও। অতঃপর যদি তোমাদের নিকট আমার পক্ষ থেকে কোন হেদায়েত পৌঁছে, তবে যে ব্যক্তি আমার সে হেদায়েত অনুসারে চলবে, তার উপর না কোন ভয় আসবে, না (কোন কারণে) তারা চিন্তাগ্রস্ত ও সন্তপ্ত হবে।
We said: ”Get down all of you from this place (the Paradise), then whenever there comes to you Guidance from Me, and whoever follows My Guidance, there shall be no fear on them, nor shall they grieve.
قُلْنَا اهْبِطُواْ مِنْهَا جَمِيعاً فَإِمَّا يَأْتِيَنَّكُم مِّنِّي هُدًى فَمَن تَبِعَ هُدَايَ فَلاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ
Qulna ihbitoo minha jameeAAan fa-imma ya/tiyannakum minnee hudan faman tabiAAa hudaya fala khawfun AAalayhim wala hum yahzanoona
YUSUFALI: We said: “Get ye down all from here; and if, as is sure, there comes to you Guidance from me, whosoever follows My guidance, on them shall be no fear, nor shall they grieve.
PICKTHAL: We said: Go down, all of you, from hence; but verily there cometh unto you from Me a guidance; and whoso followeth My guidance, there shall no fear come upon them neither shall they grieve.
SHAKIR: We said: Go forth from this (state) all; so surely there will come to you a guidance from Me, then whoever follows My guidance, no fear shall come upon them, nor shall they grieve.
KHALIFA: We said, “Go down therefrom, all of you. When guidance comes to you from Me, those who follow My guidance will have no fear, nor will they grieve.
৫৬। লক্ষ্য করুন এই আয়াতটি শুরু হয়েছে বহুবচন ‘আমরা’ দিয়ে এবং শেষে একবচন ‘আমার’ ব্যবহার করা হয়েছে। কুরআন শরীফের বহুস্থানে আল্লাহ্ নিজেকে প্রথম পুরুষ বহুবচন ‘আমরা’ ব্যবহার করেছেন। কারণ এটা ব্যবহার হয়েছে সম্মানীয় অর্থে। এরকম ব্যবহার জনসাধারণের জন্য রাজকীয় হুকুম জারীর মধ্যেও করা হয়ে থাকে। ঠিক সে রকমভাবেই আদম, ইভ, শয়তানের জন্য যা সাধারণ হুকুম তা প্রকাশ করার জন্য সম্মানীয় আল্লাহ্র হুকুমকে বহুবচনের ব্যবহার করা হয়েছে; যেমন-‘আমরা বললাম, তোমরা এখান থেকে নেমে যাও।’ কিন্তু স্রষ্টা যখন ব্যক্তিগতভাবে কারও প্রতি করুণা প্রকাশ করেছেন তখন নিজেকে বহুবচনের পরিবর্তে একবচনের ব্যবহার করেছেন। যেমন, ‘যারা আমার সৎ পথের নির্দেশ অনুসরণ করবে, তাদের কোন ভয় নাই।’
এই আয়াতে মানুষের অধঃপতন সত্ত্বেও আদম সন্তানকে আল্লাহ্ সুন্দরতম জীবনের, তাঁর করুণাধারা, তাঁর ক্ষমার আশ্বাস দিয়েছেন। আশ্বাস দিয়েছেন পথের নিশানার। যদি মানব জাতি তার নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে, তবে মহান স্রষ্টা আমাদের আশ্বাস দিচ্ছেন যে আমাদের কোনও ভয় নাই, পৃথিবীর কোন ব্যাথা, গ্লানি আমাদের আত্মাকে স্পর্শ করবে না। আমাদের পার্থিব জীবন হবে শান্তিময় এবং পারলৌকিক জীবন হবে ঐশ্বর্যময়। কারণ আল্লাহ্র নির্দেশিত পথে চলার ফলে আত্মার যাত্রা শুরু হবে পরমাত্মার দিকে। পরমাত্মার সান্নিধ্যই আত্মার একমাত্র কাম্য। ফলে মহান স্রষ্টার করুণায় আত্মা হয় বিধৌত, আপ্লুত।
আয়াতঃ 002.039
আর যে লোক তা অস্বীকার করবে এবং আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার প্রয়াস পাবে, তারাই হবে জাহান্নামবাসী; অন্তকাল সেখানে থাকবে।
But those who disbelieve and belie Our Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.) such are the dwellers of the Fire, they shall abide therein forever.
وَالَّذِينَ كَفَرواْ وَكَذَّبُواْ بِآيَاتِنَا أُولَـئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
Waallatheena kafaroo wakaththaboo bi-ayatina ola-ika as-habu alnnari hum feeha khalidoona
YUSUFALI: “But those who reject Faith and belie Our Signs, they shall be companions of the Fire; they shall abide therein.”
PICKTHAL: But they who disbelieve, and deny Our revelations, such are rightful Peoples of the Fire. They will abide therein.
SHAKIR: And (as to) those who disbelieve in and reject My communications, they are the inmates of the fire, in it they shall abide.
KHALIFA: “As for those who disbelieve and reject our revelations, they will be dwellers of Hell, wherein they abide forever.”
৫৭। কিন্তু যখন মানব সন্তান আল্লাহ্র নির্দেশিত পথ ত্যাগ করে, তখন সে আত্মার জন্য স্বর্গীয় আলো প্রবেশে পথ বন্ধ করে দেয়। এভাবে সে ক্রমাগত আল্লাহ্র নির্দেশিত পথ থেকে বিচ্যুত হওয়ার ফলে তার আত্মায় আল্লাহ্র রহমত ও হেদায়েতের আলো পৌঁছাতে পারে না। ইচ্ছাকৃতভাবে স্রষ্টার নির্দেশিত পথকে উপক্ষো করার ফলে আত্মা তার পবিত্রতা হারায়, ফলে আত্মা অন্ধকারে আবৃত হয়ে যায় এবং আত্মার মধ্যে যন্ত্রণার উদ্ভব হয়। আল্লাহ্র নির্দেশিত পথ হচ্ছে সৎ জীবন যাপন করা। সৎ জীবন যাপনের মাধ্যমে আত্মিক শক্তির উদ্ভব হয়। আত্মার মধ্যে আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভ করা যায়। ফলে হৃদয় হয় আলোকিত। অর্থাৎ সৎ জীবন যাপনের ফলে আত্মায় বিভিন্ন গুণরাজির জন্ম নেয়। এই গুণরাজিই হচ্ছে আল্লাহ্র নেয়ামত। ফলে মানুষ আত্মার মধ্যে শান্তি লাভ করে।
কিন্তু যে ইচ্ছাকৃতভাবে আল্লাহ্র প্রদর্শিত পথ পরিহার করে, তার হৃদয় ভয়, ভীতি, আশঙ্কায় পূর্ণ হয়ে যায়। হৃদয়ের মধ্যে আল্লাহ্র সান্নিধ্য অনুভব করতে সে হয় ব্যর্থ-ফলে তার হৃদয় সর্বদা থাকে শঙ্কিত, ভীত। এর ফলে জন্ম নেয় অনিশ্চয়তা এবং এক ধরণের আত্মিক যন্ত্রণা। আত্মার এই যন্ত্রণাকেই [Spiritual Fire] দোযখের আগুন বলা হয়েছে একং তারা এই আগুনে চিরদিন থাকবে।
আয়াতঃ 002.040
হে বনী-ইসরাঈলগণ, তোমরা স্মরণ কর আমার সে অনুগ্রহ যা আমি তোমাদের প্রতি করেছি এবং তোমরা পূরণ কর আমার সাথে কৃত প্রতিজ্ঞা, তাহলে আমি তোমাদেরকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ করব। আর ভয় কর আমাকেই।
O Children of Israel! Remember My Favour which I bestowed upon you, and fulfill (your obligations to) My Covenant (with you) so that I fulfill (My Obligations to) your covenant (with Me), and fear none but Me.
يَا بَنِي إِسْرَائِيلَ اذْكُرُواْ نِعْمَتِيَ الَّتِي أَنْعَمْتُ عَلَيْكُمْ وَأَوْفُواْ بِعَهْدِي أُوفِ بِعَهْدِكُمْ وَإِيَّايَ فَارْهَبُونِ
Ya banee isra-eela othkuroo niAAmatiya allatee anAAamtu AAalaykum waawfoo biAAahdee oofi biAAahdikum wa-iyyaya fairhabooni
YUSUFALI: O Children of Israel! call to mind the (special) favour which I bestowed upon you, and fulfil your covenant with Me as I fulfil My Covenant with you, and fear none but Me.
PICKTHAL: O Children of Israel! Remember My favour wherewith I favoured you, and fulfil your (part of the) covenant, I shall fulfil My (part of the) covenant, and fear Me.
SHAKIR: O children of Israel! call to mind My favor which I bestowed on you and be faithful to (your) covenant with Me, I will fulfill (My) covenant with you; and of Me, Me alone, should you be afraid.
KHALIFA: O Children of Israel, remember My favor, which I bestowed upon you, and fulfill your part of the covenant, that I fulfill My part of the covenant, and reverence Me.
রুকু – ৫
৫৮। আল্লাহ্ এখানে ইসরাঈলীদের প্রতি তাঁর অনুকম্পাসমূহের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। আল্লাহ্ বলেছেন যে তিনি তাদের মিশরীয় দাসত্ব থেকে মুক্ত করে দুধ ও মধুতে ভরা ক্যানান দেশে স্বাধীনভাবে বাঁচার সুযোগ করে দিয়েছেন। আল্লাহ্ বলেছেন, ‘আমি আমার চুক্তি পালন করেছি, তোমরা তোমাদের চুক্তি পালন কর।’
আয়াতঃ 002.041
আর তোমরা সে গ্রন্থের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, যা আমি অবতীর্ণ করেছি সত্যবক্তা হিসেবে তোমাদের কাছে। বস্তুতঃ তোমরা তার প্রাথমিক অস্বীকারকারী হয়ো না আর আমার আয়াতের অল্প মূল্য দিও না। এবং আমার (আযাব) থেকে বাঁচ।
And believe in what I have sent down (this Qur’ân), confirming that which is with you, [the Taurât (Torah) and the Injeel (Gospel)], and be not the first to disbelieve therein, and buy [get (ÊÇÎÐ ÇÌÑÇ)] not with My Verses [the Taurât (Torah) and the Injeel (Gospel)] a small price (i.e. getting a small gain by selling My Verses), and fear Me and Me Alone. (Tafsir At-Tabarî, Vol. I, Page 253).
وَآمِنُواْ بِمَا أَنزَلْتُ مُصَدِّقاً لِّمَا مَعَكُمْ وَلاَ تَكُونُواْ أَوَّلَ كَافِرٍ بِهِ وَلاَ تَشْتَرُواْ بِآيَاتِي ثَمَناً قَلِيلاً وَإِيَّايَ فَاتَّقُونِ
Waaminoo bima anzaltu musaddiqan lima maAAakum wala takoonoo awwala kafirin bihi wala tashtaroo bi-ayatee thamanan qaleelan wa-iyyaya faittaqooni
YUSUFALI: And believe in what I reveal, confirming the revelation which is with you, and be not the first to reject Faith therein, nor sell My Signs for a small price; and fear Me, and Me alone.
PICKTHAL: And believe in that which I reveal, confirming that which ye possess already (of the Scripture), and be not first to disbelieve therein, and part not with My revelations for a trifling price, and keep your duty unto Me.
SHAKIR: And believe in what I have revealed, verifying that which is with you, and be not the first to deny it, neither take a mean price in exchange for My communications; and Me, Me alone should you fear.
KHALIFA: You shall believe in what I have revealed herein, confirming what you have; do not be the first to reject it. Do not trade away My revelations for a cheap price, and observe Me.
৫৯। ইহুদীরা পূর্বেই আল্লাহ্র বাণী লাভ করেছে হযরত মুসার মাধ্যমে। সেই বাণীর সমর্থক হিসেবে হযরত মুহম্মদ (দঃ) এর আবির্ভাব। সুতরাং হযরতের (দঃ) কাছে আল্লাহ্ যা নাজিল করেছেন তা ইহুদীদের পূর্ব পরিচিত হওয়ার কথা। তবু ইহুদীরাই প্রথম, যারা আল্লাহ্র বাণীর বিরুদ্ধাচরণ করেছে। নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ রক্ষার জন্যই তারা তা করে। কিন্তু আল্লাহ্র নির্দেশ তাদের ক্ষুদ্র বিচার-বিবেচনার অনেক উর্ধ্বে। আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ্র আয়াতসমূহের বিনিময়ে মূল্য গ্রহণ নিষিদ্ধ হওয়ার অর্থ হলো-মানুষের মর্জি ও স্বার্থের তাগিদে আয়াতসমূহের মর্ম বিকৃত ও ভুলভাবে প্রকাশ করে কিংবা তা গোপন রেখে টাকা-পয়সা, অর্থ-সম্পদ গ্রহণ করা নিষিদ্ধ। এ কাজটি উম্মতের জন্য সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। তাই সৎ কাজ ও নিজ কর্তব্য সম্বন্ধে নির্দেশ আল্লাহ্র কাছ থেকে নিতে হবে। অর্থাৎ কুরআন শরীফ পড়ে বুঝে সেই অনুযায়ী জীবন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কোনও পুরোহিত (পীর-ফকির-মাজার) বা অমনোনীত ফতোয়াবাজ বা সামাজিক রীতিনীতি বা সামাজিক সংস্কার এ সবের অনুগত হওয়া হারাম।
আয়াতঃ 002.042
তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিও না এবং জানা সত্ত্বে সত্যকে তোমরা গোপন করো না।
And mix not truth with falsehood, nor conceal the truth [i.e. Muhammad Peace be upon him is Allâh’s Messenger and his qualities are written in your Scriptures, the Taurât (Torah) and the Injeel (Gospel)] while you know (the truth) .
وَلاَ تَلْبِسُواْ الْحَقَّ بِالْبَاطِلِ وَتَكْتُمُواْ الْحَقَّ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ
Wala talbisoo alhaqqa bialbatili wataktumoo alhaqqa waantum taAAlamoona
YUSUFALI: And cover not Truth with falsehood, nor conceal the Truth when ye know (what it is).
PICKTHAL: Confound not truth with falsehood, nor knowingly conceal the truth.
SHAKIR: And do not mix up the truth with the falsehood, nor hide the truth while you know (it).
KHALIFA: Do not confound the truth with falsehood, nor shall you conceal the truth, knowingly.
৪৩। এবং তোমরা সালাতে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত থাক; যাকাত আদায় কর; এবং যারা আমার সামনে মাথা নত করে তাদের সাথে মাথা নত কর [এবাদতের জন্য] ৬০।
৬০। সত্য গোপন করা এবং তাতে সংযোজন ও সংমিশ্রণ করা হারাম। যদিও উপরিউক্ত আয়াত ইহুদীদের সম্বোধন করে নাজিল করা হয়েছে তবুও এর আবেদন সর্বকালের সর্বযুগের, সর্ব জাতির জন্য সর্বাবস্থায় প্রযোজ্য। বাঙালি জাতির এর থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা কর্তব্য। শ্রোতা ও সম্বোধিত ব্যক্তিকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে বা নিজ কার্য সিদ্ধির উদ্দেশ্যে সত্যকে মিথ্যার সাথে উপস্থাপন করা সম্পূর্ণ না-জায়েজ ও হারাম।
আয়াতঃ 002.043
আর নামায কায়েম কর, যাকাত দান কর এবং নামাযে অবনত হও তাদের সাথে, যারা অবনত হয়।
And perform As-Salât (Iqâmat-as-Salât), and give Zakât, and Irka’ (i.e. bow down or submit yourselves with obedience to Allâh) along with ArRaki’ûn.
وَأَقِيمُواْ الصَّلاَةَ وَآتُواْ الزَّكَاةَ وَارْكَعُواْ مَعَ الرَّاكِعِينَ
Waaqeemoo alssalata waatoo alzzakata wairkaAAoo maAAa alrrakiAAeena
YUSUFALI: And be steadfast in prayer; practise regular charity; and bow down your heads with those who bow down (in worship).
PICKTHAL: Establish worship, pay the poor-due, and bow your heads with those who bow (in worship).
SHAKIR: And keep up prayer and pay the poor-rate and bow down with those who bow down.
KHALIFA: You shall observe the Contact Prayers (Salat) and give the obligatory charity (Zakat), and bow down with those who bow down.
৪৩। এবং তোমরা সালাতে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত থাক; যাকাত আদায় কর; এবং যারা আমার সামনে মাথা নত করে তাদের সাথে মাথা নত কর [এবাদতের জন্য] ৬০।
৬০। সত্য গোপন করা এবং তাতে সংযোজন ও সংমিশ্রণ করা হারাম। যদিও উপরিউক্ত আয়াত ইহুদীদের সম্বোধন করে নাজিল করা হয়েছে তবুও এর আবেদন সর্বকালের সর্বযুগের, সর্ব জাতির জন্য সর্বাবস্থায় প্রযোজ্য। বাঙালি জাতির এর থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা কর্তব্য। শ্রোতা ও সম্বোধিত ব্যক্তিকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে বা নিজ কার্য সিদ্ধির উদ্দেশ্যে সত্যকে মিথ্যার সাথে উপস্থাপন করা সম্পূর্ণ না-জায়েজ ও হারাম।
আয়াতঃ 002.044
তোমরা কি মানুষকে সৎকর্মের নির্দেশ দাও এবং নিজেরা নিজেদেরকে ভূলে যাও, অথচ তোমরা কিতাব পাঠ কর? তবুও কি তোমরা চিন্তা কর না?
Enjoin you Al-Birr (piety and righteousness and each and every act of obedience to Allâh) on the people and you forget (to practise it) yourselves, while you recite the Scripture [the Taurât (Torah)]! Have you then no sense?
أَتَأْمُرُونَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَتَنسَوْنَ أَنفُسَكُمْ وَأَنتُمْ تَتْلُونَ الْكِتَابَ أَفَلاَ تَعْقِلُونَ
Ata/muroona alnnasa bialbirri watansawna anfusakum waantum tatloona alkitaba afala taAAqiloona
YUSUFALI: Do ye enjoin right conduct on the people, and forget (To practise it) yourselves, and yet ye study the Scripture? Will ye not understand?
PICKTHAL: Enjoin ye righteousness upon mankind while ye yourselves forget (to practise it)? And ye are readers of the Scripture! Have ye then no sense?
SHAKIR: What! do you enjoin men to be good and neglect your own souls while you read the Book; have you then no sense?
KHALIFA: Do you exhort the people to be righteous, while forgetting yourselves, though you read the scripture? Do you not understand?
৪৪। তোমরা কি মানুষকে সৎ কাজের আদেশ দাও, এবং নিজেরা তা [অনুশীলন] করতে ভুলে যাও? যদিও তোমরা আল্লাহ্র কিতাব পাঠ কর? তোমরা কি বুঝবে না?৪৫। তোমরা [আল্লাহ্র] সাহায্য প্রার্থনা কর ধৈর্য্য, অধ্যবসায় এবং সালাতের মাধ্যমে। বিনয়ী ব্যক্তি ব্যতীত আর সকলের নিকট ইহা নিশ্চিতভাবে কঠিন কাজ ৬১।
৬১। আল্লাহ্ এখানে ধৈর্য্য, অধ্যবসায় ও প্রার্থনার মাধ্যমে আল্লাহ্র সাহায্য প্রার্থনা করতে বলেছেন। বাংলায় আরবী সবর্ কথাটির অনুবাদ করা হয়েছে ধৈর্য্য। কিন্তু সবর্ কথাটির অর্থ এত ব্যাপক যে শুধুমাত্র ধৈর্য্য এই একটি মাত্র শব্দ দ্বারা এর অর্থের ব্যাপকতা বুঝানো সম্ভব নয়। এর দ্বারা বুঝায় –
১) ধৈর্য্য অর্থাৎ তাড়াহুড়া না করে ধীর স্থিরভাবে অগ্রসর হওয়ার ক্ষমতা।
২) কোন কাজে দৃঢ়ভাবে এবং অধ্যবসায়ের সাথে লেগে থাকার ক্ষমতা। যে কোনও কাজ করতে গেলে সাফল্য না-ও আসতে পারে, কিন্তু তার দরুন হতাশাগ্রস্থ না হয়ে দৃঢ়তার সাথে অগ্রসর হওয়ার ক্ষমতা এবং অধ্যাবসায়ী হওয়ার নামই ধৈর্য্য।
৩) কোনও কাজে ধারাবাহিকভাবে অগ্রসর হওয়ার ক্ষমতাই ধৈর্য্য। কোনও দৈব ক্ষমতায় (Chance action) বিশ্বাসী না হয়ে নিজের যোগ্যতার উপরে এবং আল্লাহ্র উপরে আস্থাশীল হয়ে ধারাবাহিকভাবে ক্রমান্বয়ে কাজ করার ক্ষমতাই হচ্ছে সবর্।
৪) সুখ-দুঃখ, সাফল্য-ব্যর্থতা সবই আল্লাহ্র দান হিসেবে গ্রহণ করার ক্ষমতা এবং সেই কারণে কোনও সাফল্যে বা সুখে উদ্বেলিত না হওয়া এবং ব্যর্থতা বা দুঃখে মানসিক অস্থিরতা প্রকাশ না করা বা ভেঙ্গে না পড়া বা আল্লাহ্কে দোষারোপ না করার নামই হচ্ছে সবর্ বা ধৈর্য্য।
এই চারটি গুণের সমন্বয় করলে চরিত্রের যে দৃঢ়তার অভিব্যক্তি বুঝানো যায় তাকেই এক কথায় সবর্ নামে অভিব্যক্তি করা হয়। এর অর্থ কেউ যেনো এ না বুঝে যে পৃথিবীর সুখ-দুঃখ, ব্যথা-বেদনা সম্পর্কে নিরাসক্ত ভাবই হচ্ছে সবর্। সবর্ হচ্ছে সর্বক্ষণ, সর্বাবস্থায় আল্লাহ্র কাছে শুকরিযা আদায় করা। মনে এই আশা পোষণ করা যে দুঃখ তাঁরই দান। দুঃখের মাঝেও নিশ্চয়ই তাঁর কল্যাণময় ইঙ্গিত আছে। সুতরাং দুঃখের অমানিশা একদিন অতিক্রান্ত হবেই। এই বিশ্বাসের নামই সবর্।
আয়াতঃ 002.045
ধৈর্য্যর সাথে সাহায্য প্রার্থনা কর নামাযের মাধ্যমে। অবশ্য তা যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু সে সমস্ত বিনয়ী লোকদের পক্ষেই তা সম্ভব।
And seek help in patience and As-Salât (the prayer) and truly it is extremely heavy and hard except for Al-Khâshi’ûn [i.e. the true believers in Allâh – those who obey Allâh with full submission, fear much from His Punishment, and believe in His Promise (Paradise, etc.) and in His Warnings (Hell, etc.)].
وَاسْتَعِينُواْ بِالصَّبْرِ وَالصَّلاَةِ وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلاَّ عَلَى الْخَاشِعِينَ
WaistaAAeenoo bialssabri waalssalati wa-innaha lakabeeratun illa AAala alkhashiAAeena
YUSUFALI: Nay, seek (Allah’s) help with patient perseverance and prayer: It is indeed hard, except to those who bring a lowly spirit,-
PICKTHAL: Seek help in patience and prayer; and truly it is hard save for the humble-minded,
SHAKIR: And seek assistance through patience and prayer, and most surely it is a hard thing except for the humble ones,
KHALIFA: You shall seek help through steadfastness and the Contact Prayers (Salat). This is difficult indeed, but not so for the reverent,
৪৪। তোমরা কি মানুষকে সৎ কাজের আদেশ দাও, এবং নিজেরা তা [অনুশীলন] করতে ভুলে যাও? যদিও তোমরা আল্লাহ্র কিতাব পাঠ কর? তোমরা কি বুঝবে না?৪৫। তোমরা [আল্লাহ্র] সাহায্য প্রার্থনা কর ধৈর্য্য, অধ্যবসায় এবং সালাতের মাধ্যমে। বিনয়ী ব্যক্তি ব্যতীত আর সকলের নিকট ইহা নিশ্চিতভাবে কঠিন কাজ ৬১।
৬১। আল্লাহ্ এখানে ধৈর্য্য, অধ্যবসায় ও প্রার্থনার মাধ্যমে আল্লাহ্র সাহায্য প্রার্থনা করতে বলেছেন। বাংলায় আরবী সবর্ কথাটির অনুবাদ করা হয়েছে ধৈর্য্য। কিন্তু সবর্ কথাটির অর্থ এত ব্যাপক যে শুধুমাত্র ধৈর্য্য এই একটি মাত্র শব্দ দ্বারা এর অর্থের ব্যাপকতা বুঝানো সম্ভব নয়। এর দ্বারা বুঝায় –
১) ধৈর্য্য অর্থাৎ তাড়াহুড়া না করে ধীর স্থিরভাবে অগ্রসর হওয়ার ক্ষমতা।
২) কোন কাজে দৃঢ়ভাবে এবং অধ্যবসায়ের সাথে লেগে থাকার ক্ষমতা। যে কোনও কাজ করতে গেলে সাফল্য না-ও আসতে পারে, কিন্তু তার দরুন হতাশাগ্রস্থ না হয়ে দৃঢ়তার সাথে অগ্রসর হওয়ার ক্ষমতা এবং অধ্যাবসায়ী হওয়ার নামই ধৈর্য্য।
৩) কোনও কাজে ধারাবাহিকভাবে অগ্রসর হওয়ার ক্ষমতাই ধৈর্য্য। কোনও দৈব ক্ষমতায় (Chance action) বিশ্বাসী না হয়ে নিজের যোগ্যতার উপরে এবং আল্লাহ্র উপরে আস্থাশীল হয়ে ধারাবাহিকভাবে ক্রমান্বয়ে কাজ করার ক্ষমতাই হচ্ছে সবর্।
৪) সুখ-দুঃখ, সাফল্য-ব্যর্থতা সবই আল্লাহ্র দান হিসেবে গ্রহণ করার ক্ষমতা এবং সেই কারণে কোনও সাফল্যে বা সুখে উদ্বেলিত না হওয়া এবং ব্যর্থতা বা দুঃখে মানসিক অস্থিরতা প্রকাশ না করা বা ভেঙ্গে না পড়া বা আল্লাহ্কে দোষারোপ না করার নামই হচ্ছে সবর্ বা ধৈর্য্য।
এই চারটি গুণের সমন্বয় করলে চরিত্রের যে দৃঢ়তার অভিব্যক্তি বুঝানো যায় তাকেই এক কথায় সবর্ নামে অভিব্যক্তি করা হয়। এর অর্থ কেউ যেনো এ না বুঝে যে পৃথিবীর সুখ-দুঃখ, ব্যথা-বেদনা সম্পর্কে নিরাসক্ত ভাবই হচ্ছে সবর্। সবর্ হচ্ছে সর্বক্ষণ, সর্বাবস্থায় আল্লাহ্র কাছে শুকরিযা আদায় করা। মনে এই আশা পোষণ করা যে দুঃখ তাঁরই দান। দুঃখের মাঝেও নিশ্চয়ই তাঁর কল্যাণময় ইঙ্গিত আছে। সুতরাং দুঃখের অমানিশা একদিন অতিক্রান্ত হবেই। এই বিশ্বাসের নামই সবর্।
আয়াতঃ 002.046
যারা একথা খেয়াল করে যে, তাদেরকে সম্মুখীন হতে হবে স্বীয় পরওয়ারদেগারের এবং তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে।
(They are those) who are certain that they are going to meet their Lord, and that unto Him they are going to return.
الَّذِينَ يَظُنُّونَ أَنَّهُم مُّلاَقُو رَبِّهِمْ وَأَنَّهُمْ إِلَيْهِ رَاجِعُونَ
Allatheena yathunnoona annahum mulaqoo rabbihim waannahum ilayhi rajiAAoona
YUSUFALI: Who bear in mind the certainty that they are to meet their Lord, and that they are to return to Him.
PICKTHAL: Who know that they will have to meet their Lord, and that unto Him they are returning.
SHAKIR: Who know that they shall meet their Lord and that they shall return to Him.
KHALIFA: who believe that they will meet their Lord; that to Him they ultimately return.
রুকু – ৬
৬২। আয়াত [২ : ৪০]-তে আল্লাহ্ ইসরাঈলীদের বলেছেন যে, তিনি তাদের বিশেষ নেয়ামত দান করেছেন। উপরিউক্ত আয়াতে সামগ্রিকভাবে নেয়ামতসমূহ বা আল্লাহ্র দানসমূহের (Gift) কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এখানে অনেক নেয়ামতের মধ্যে বিশেষভাবে একটি নেয়ামতের কথা বলা হয়েছে। ইহুদীদের ইতিহাস বলে আল্লাহ্ ইহুদীদের বিশেষ ক্ষেত্রে বিশ্ববাসীর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন।
আয়াতঃ 002.047
হে বনী-ইসরাঈলগণ! তোমরা স্মরণ কর আমার অনুগ্রহের কথা, যা আমি তোমাদের উপর করেছি এবং (স্মরণ কর) সে বিষয়টি যে, আমি তোমাদেরকে উচ্চমর্যাদা দান করেছি সমগ্র বিশ্বের উপর।
O Children of Israel! Remember My Favour which I bestowed upon you and that I preferred you to the ’Alamîn (mankind and jinns) (of your time period, in the past).
يَا بَنِي إِسْرَائِيلَ اذْكُرُواْ نِعْمَتِيَ الَّتِي أَنْعَمْتُ عَلَيْكُمْ وَأَنِّي فَضَّلْتُكُمْ عَلَى الْعَالَمِينَ
Ya banee isra-eela othkuroo niAAmatiya allatee anAAamtu AAalaykum waannee faddaltukum AAala alAAalameena
YUSUFALI: Children of Israel! call to mind the (special) favour which I bestowed upon you, and that I preferred you to all other (for My Message).
PICKTHAL: O Children of Israel! Remember My favour wherewith I favoured you and how I preferred you to (all) creatures.
SHAKIR: O children of Israel! call to mind My favor which I bestowed on you and that I made you excel the nations.
KHALIFA: O Children of Israel, remember My favor which I bestowed upon you, and that I blessed you more than any other people.
রুকু – ৬
৬২। আয়াত [২ : ৪০]-তে আল্লাহ্ ইসরাঈলীদের বলেছেন যে, তিনি তাদের বিশেষ নেয়ামত দান করেছেন। উপরিউক্ত আয়াতে সামগ্রিকভাবে নেয়ামতসমূহ বা আল্লাহ্র দানসমূহের (Gift) কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এখানে অনেক নেয়ামতের মধ্যে বিশেষভাবে একটি নেয়ামতের কথা বলা হয়েছে। ইহুদীদের ইতিহাস বলে আল্লাহ্ ইহুদীদের বিশেষ ক্ষেত্রে বিশ্ববাসীর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন।
আয়াতঃ 002.048
আর সে দিনের ভয় কর, যখন কেউ কারও সামান্য উপকারে আসবে না এবং তার পক্ষে কোন সুপারিশও কবুল হবে না; কারও কাছ থেকে ক্ষতিপূরণও নেয়া হবে না এবং তারা কোন রকম সাহায্যও পাবে না।
And fear a Day (of Judgement) when a person shall not avail another, nor will intercession be accepted from him nor will compensation be taken from him nor will they be helped.
وَاتَّقُواْ يَوْماً لاَّ تَجْزِي نَفْسٌ عَن نَّفْسٍ شَيْئاً وَلاَ يُقْبَلُ مِنْهَا شَفَاعَةٌ وَلاَ يُؤْخَذُ مِنْهَا عَدْلٌ وَلاَ هُمْ يُنصَرُونَ
Waittaqoo yawman la tajzee nafsun AAan nafsin shay-an wala yuqbalu minha shafaAAatun wala yu/khathu minha AAadlun wala hum yunsaroona
YUSUFALI: Then guard yourselves against a day when one soul shall not avail another nor shall intercession be accepted for her, nor shall compensation be taken from her, nor shall anyone be helped (from outside).
PICKTHAL: And guard yourselves against a day when no soul will in aught avail another, nor will intercession be accepted from it, nor will compensation be received from it, nor will they be helped.
SHAKIR: And be on your guard against a day when one soul shall not avail another in the least, neither shall intercession on its behalf be accepted, nor shall any compensation be taken from it, nor shall they be helped.
KHALIFA: Beware of the day when no soul can avail another soul, no intercession will be accepted, no ransom can be paid, nor can anyone be helped.
৬৩। আলোচ্য আয়াতে যেদিনের কথা বলা হয়েছে, সেটি হল কিয়ামতের দিন। সেদিন প্রত্যেককে নিজ নিজ কর্মফলের হিসাব দিতে হবে এবং প্রত্যেককে নিজ কর্মের জন্য দায়ী থাকতে হবে। কেহই অন্যের কর্ম ফলের জন্য দায়ী হবে না। অথবা পূণ্য কাজ বা সুপারিশের বদৌলতে বেহেশ্তে প্রবেশ করবে না; বা অপরের পাপের পরিণতিতে কেহ দোযখবাসী হবে না। প্রত্যেকের দায়িত্ব প্রত্যেকের নিজের। এখানে আল্লাহ্ সাবধান করে দিচ্ছেন যে আমরা যেনো নিজেদের পাহারা দিয়ে রাখি। প্রত্যেকের দায়িত্ব তার নিজস্ব দায়িত্ব (Personal Responsibility)। একথা যেনো ইহুদীরা মনে না করে যে তারা আল্লাহ্র বিশেষ নেয়ামত প্রাপ্ত হয়েছিল, সুতরাং পরলোকে তাদের জন্য হবে বিশেষ সুপারিশ।
এখানে সকলের জন্য এই উপদেশ যে আল্লাহ্র চোখে সবাই সমান। সকলকে তার নিজ নিজ কর্মের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। ধনী-দরিদ্র, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, সাদা-কালো, নারী-পুরুষ এর মধ্যে কোন ভেদাভেদ নাই।
আয়াতঃ 002.049
আর (স্মরণ কর) সে সময়ের কথা, যখন আমি তোমাদিগকে মুক্তিদান করেছি ফেরআউনের লোকদের কবল থেকে যারা তোমাদিগকে কঠিন শাস্তি দান করত; তোমাদের পুত্রসন্তানদেরকে জবাই করত এবং তোমাদের স্ত্রীদিগকে অব্যাহতি দিত। বস্তুতঃ তাতে পরীক্ষা ছিল তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে, মহা পরীক্ষা।
And (remember) when We delivered you from Fir’aun’s (Pharaoh) people, who were afflicting you with a horrible torment, killing your sons and sparing your women, and therein was a mighty trial from your Lord.
وَإِذْ نَجَّيْنَاكُم مِّنْ آلِ فِرْعَوْنَ يَسُومُونَكُمْ سُوَءَ الْعَذَابِ يُذَبِّحُونَ أَبْنَاءكُمْ وَيَسْتَحْيُونَ نِسَاءكُمْ وَفِي ذَلِكُم بَلاء مِّن رَّبِّكُمْ عَظِيمٌ
Wa-ith najjaynakum min ali firAAawna yasoomoonakum soo-a alAAathabi yuthabbihoona abnaakum wayastahyoona nisaakum wafee thalikum balaon min rabbikum AAatheemun
YUSUFALI: And remember, We delivered you from the people of Pharaoh: They set you hard tasks and punishments, slaughtered your sons and let your women-folk live; therein was a tremendous trial from your Lord.
PICKTHAL: And (remember) when We did deliver you from Pharaoh’s folk, who were afflicting you with dreadful torment, slaying your sons and sparing your women: that was a tremendous trial from your Lord.
SHAKIR: And when We delivered you from Firon’s people, who subjected you to severe torment, killing your sons and sparing your women, and in this there was a great trial from your Lord.
KHALIFA: Recall that we saved you from Pharaoh’s people who inflicted upon you the worst persecution, slaying your sons and sparing your daughters. That was an exacting test from your Lord.
৬৪। উপরে যে বিশেষ আচরণের কথা বলা হয়েছে এখান থেকে তার বিস্তারিত বর্ণনা আরম্ভ হয়েছে। মিশরের দাসত্ব বন্ধন ছিলো এক ভীষণ পরীক্ষা ইহুদীদের জন্য। দিবা-রাত্র তাদের অমানুষিক পরিশ্রম করতে হতো, তারপরও তারা পেতো অমানবিক ব্যবহার। কোনও এক গণক ভবিষ্যৎ বাণী করেছিল যে, ইসরাঈলী বংশে এমন এক ছেলের জন্ম হবে যার হাতে ফেরাউনের পতন হবে। এজন্য ফেরাউন আদেশ দেন ইসরাঈলদের পুত্র সন্তানদের হত্যা করার জন্য এবং কন্যা সন্তানদের জীবিত রাখার জন্য। এই হুকুমের প্রেক্ষিতেই হযরত মুসার জন্মের পর তিনমাস পর্যন্ত তাঁকে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। যখন আর তা সম্ভব হলো না তখন তাঁর মা তাকে একটি ঝুড়িতে করে নীল নদীতে ভাসিয়ে দেন। পরবর্তীতে ফেরাউনের স্ত্রী ও কন্যা তাঁকে উদ্ধার করে এবং দত্তক হিসেবে গ্রহণ করেন [২৮:৯]। এভাবেই হযরত মুসা তাঁর শত্রুদের দ্বারাই প্রতিপালিত হতে থাকলেন। এ সবই আল্লাহ্র ইচ্ছা। কারণ হযরত মুসা আল্লাহ্ কর্তৃক নির্বাচিত ব্যক্তি, যিনি তাঁর জাতিকে মিশরীয় দাসত্ব থেকে মুক্ত করবেন। আল্লাহ্র অপূর্ব লীলায় হযরত মুসা শুধু যে জীবন রক্ষা পেলেন তাই-ই নয় শত্রুপুরীতে বসবাস করে শত্রুদের সমস্ত জ্ঞান আহরণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। কারণ আল্লাহ্র ইচ্ছা ছিল মিশরীয়দের জ্ঞান ভান্ডার হযরত মুসার কাছে উন্মুক্ত করা। কারণ তিনি ছিলেন ইসরাঈলীদের মুক্ত করার জন্য আল্লাহ্ কর্তৃক নির্বাচিত ব্যক্তি সেজন্য আল্লাহ্ তাঁকে শত্রু শিবিরের সমস্ত জ্ঞান বিজ্ঞান শিক্ষা দিয়েছিলেন। ফেরাউনের রাজপ্রাসাদে থেকে তিনি প্রত্যক্ষ করতে সক্ষম হয়েছিলেন মিশরবাসীর অত্যাচার, নিষ্ঠুরতা ইসরাঈলীদের উপর। এ সবই আল্লাহ্র ইচ্ছায় সংঘটিত হয়। আল্লাহ্র ইচ্ছা হযরত মুসার জ্ঞান ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করা। কারণ এ জ্ঞান তাঁকে ইসরাঈলীদের মুক্ত করতে সাহায্য করবে।
সাধারণ উপদেশ হলো, আল্লাহ্র ইচ্ছা কীভাবে প্রতিপালিত হয় তা বোঝার ক্ষমতা বা রদ করার ক্ষমতা সাধারণ মানুষের নাই। থাকলে ফেরাউনের নিজ পুরীতে সন্তানতুল্য আদরে নিজশত্রু (হযরত মুসা) প্রতিপালিত হতো না।
আয়াতঃ 002.050
আর যখন আমি তোমাদের জন্য সাগরকে দ্বিখন্ডিত করেছি, অতঃপর তোমাদেরকে বাঁচিয়ে দিয়েছি এবং ডুবিয়ে দিয়েছি ফেরআউনের লোকদিগকে অথচ তোমরা দেখছিলে।
And (remember) when We separated the sea for you and saved you and drowned Fir’aun’s (Pharaoh) people while you were looking (at them, when the sea-water covered them).
وَإِذْ فَرَقْنَا بِكُمُ الْبَحْرَ فَأَنجَيْنَاكُمْ وَأَغْرَقْنَا آلَ فِرْعَوْنَ وَأَنتُمْ تَنظُرُونَ
Wa-ith faraqna bikumu albahra faanjaynakum waaghraqna ala firAAawna waantum tanthuroona
YUSUFALI: And remember We divided the sea for you and saved you and drowned Pharaoh’s people within your very sight.
PICKTHAL: And when We brought you through the sea and rescued you, and drowned the folk of Pharaoh in your sight.
SHAKIR: And when We parted the sea for you, so We saved you and drowned the followers of Firon and you watched by.
KHALIFA: Recall that we parted the sea for you; we saved you and drowned Pharaoh’s people before your eyes.
৬৫। শেষ পর্যন্ত ইসরাঈলীরা যখন মিশর থেকে পলায়ন করতে সক্ষম হলো, তখন ফেরাউন তাদের পশ্চাৎ ধাবন করলো। আল্লাহ্র কুদরতে সমুদ্র দ্বিধাবিভক্ত হলো এবং বনী-ইসরাঈলীরা লোহিত সাগর অতিক্রম করতে সক্ষম হলো। কিন্তু ফেরাউন তাদের পশ্চাদ্ধাবন করতে যেয়ে সমুদ্রে ডুবে মারা গেল।
আয়াতঃ 002.051
আর যখন আমি মূসার সাথে ওয়াদা করেছি চল্লিশ রাত্রির অতঃপর তোমরা গোবৎস বানিয়ে নিয়েছ মূসার অনুপস্থিতিতে। বস্তুতঃ তোমরা ছিলে যালেম।
And (remember) when We appointed for Mûsa (Moses) forty nights, and (in his absence) you took the calf (for worship), and you were Zâlimûn (polytheists and wrong-doers, etc.).
وَإِذْ وَاعَدْنَا مُوسَى أَرْبَعِينَ لَيْلَةً ثُمَّ اتَّخَذْتُمُ الْعِجْلَ مِن بَعْدِهِ وَأَنتُمْ ظَالِمُونَ
Wa-ith waAAadna moosa arbaAAeena laylatan thumma ittakhathtumu alAAijla min baAAdihi waantum thalimoona
YUSUFALI: And remember We appointed forty nights for Moses, and in his absence ye took the calf (for worship), and ye did grievous wrong.
PICKTHAL: And when We did appoint for Moses forty nights (of solitude), and then ye chose the calf, when he had gone from you, and were wrong-doers.
SHAKIR: And when We appointed a time of forty nights with Musa, then you took the calf (for a god) after him and you were unjust.
KHALIFA: Yet, when we summoned Moses for forty nights, you worshiped the calf in his absence, and turned wicked.
৫১। এবং স্মরণ কর, মুসার জন্য চল্লিশ রাত্রি নির্ধারিত ৬৬ করেছিলাম। তাঁর অনুপস্থিতিতে তোমরা গো বৎসকে [উপাস্য রূপে] গ্রহণ করলে এবং [ফলে] তোমরা মহা পাপ করলে।
৬৬। এই আয়াতের ঘটনা ঐ সময়ের পর। হযরত মুসা ৪০ দিন তূর পাহাড়ে অবস্থান করেন এবং আল্লাহ্র এবাদতে মগ্ন থাকেন ফলে তাওরাত কিতাব লাভ করেন। কিন্তু বনী ইসরাঈলীরা হযরত মুসার অনুপস্থিতিতে অধৈর্য্য হয়ে উঠলো এবং সোনা দিয়ে একটি গো-বৎসের প্রতিমূর্তি করে তার পূঁজা শুরু করে দিলো।
আয়াতঃ 002.052
তারপর আমি তাতেও তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছি, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে নাও।
Then after that We forgave you so that you might be grateful.
ثُمَّ عَفَوْنَا عَنكُمِ مِّن بَعْدِ ذَلِكَ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
Thumma AAafawna AAankum min baAAdi thalika laAAallakum tashkuroona
YUSUFALI: Even then We did forgive you; there was a chance for you to be grateful.
PICKTHAL: Then, even after that, We pardoned you in order that ye might give thanks.
SHAKIR: Then We pardoned you after that so that you might give thanks.
KHALIFA: Still, we pardoned you thereafter that you may be appreciative.
৫২। এরপরেও আমি তোমাদের ক্ষমা করলাম ৬৭, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সুযোগ লাভ কর।
৬৭। হযরত মুসা আল্লাহ্র কাছে তাঁর জাতির জন্য ক্ষমা চাইলেন এবং আল্লাহ্ ক্ষমা করে দিলেন। এই হচ্ছে কুরআনের বর্ণনা কিন্তু ওল্ড টেস্টামেন্টের বর্ণনায় বিভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। আসলে ইহুদী এবং খৃস্টানদের ধর্মগ্রন্থ হযরত মুসা এবং হযরত ঈসার মৃত্যুর বহুপরে সংগৃহীত হয়। সেই সময়ে তা অবিকৃত ছিল না। ফলে বহু পরিবর্তন ও পরিবর্ধন হয়েছে।
আয়াতঃ 002.053
আর (স্মরণ কর) যখন আমি মূসাকে কিতাব এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্য বিধানকারী নির্দেশ দান করেছি, যাতে তোমরা সরল পথ প্রাপ্ত হতে পার।
And (remember) when We gave Mûsa (Moses) the Scripture [the Taurât (Torah)] and the criterion (of right and wrong) so that you may be guided aright.
وَإِذْ آتَيْنَا مُوسَى الْكِتَابَ وَالْفُرْقَانَ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ
Wa-ith atayna moosa alkitaba waalfurqana laAAallakum tahtadoona
YUSUFALI: And remember We gave Moses the Scripture and the Criterion (Between right and wrong): There was a chance for you to be guided aright.
PICKTHAL: And when We gave unto Moses the Scripture and the criterion (of right and wrong), that ye might be led aright.
SHAKIR: And when We gave Musa the Book and the distinction that you might walk aright.
KHALIFA: Recall that we gave Moses scripture and the statute book, that you may be guided.
৫৩। এবং স্মরণ কর, আমি মুসাকে কিতাব এবং ফুরকান [ন্যায়-অন্যায় পার্থক্যকারী] দান করেছিলাম, যেনো তোমরা সৎপথে চলার সুযোগ লাভ কর ৬৮।
৬৮। আল্লাহ্র প্রত্যাদেশই হচ্ছে আল্লাহ্র ইচ্ছার প্রকাশ। যার সাহায্যে আমরা ভাল-মন্দ, সত্য-অসত্য, ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য করতে পারি। এই প্রত্যাদেশকে আমরা প্রত্যক্ষ করতে পারি আল্লাহ্র কিতাবে। ইতিহাস থেকে আমরা সেই শিক্ষাই পাই যে, সেই জাতিই পৃথিবীতে স্থায়িত্ব পেয়েছে যারা আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ মেনে চলেছে। আর যারা চলে নাই তারা ধ্বংস প্রাপ্ত হয়েছে। এই আয়াতে ‘কিতাব’ ও ‘ফুরকান’ শব্দটি অনেক তফসীরকারগণ সমার্থক শব্দ হিসেবে ব্যবহার করেছেন। আবার অনেকে এই দুই শব্দকে সম্পূর্ণ আলাদা অর্থবোধক শব্দ হিসেবে ধরেছেন। ‘কিতাব’ অর্থ লিখিত বই এবং ‘ফুরকান’ অর্থ তফসীরকারগণ ব্যাখ্যা করেছেন ‘আল্লাহ্র নিদর্শন’। মাওলানা ইউসুফ আলী সাহেব শেষোক্তদের সাথে একমত। কারণ ফুরকান শব্দটি [২১ : ৪৮]-আয়াতে হযরত মুসা ও তার ভাই হারূনের বর্ণনায় ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু হারুণ কোনও কিতাব প্রাপ্ত হন নাই সুতরাং ফুরকান আলাদা এবং অন্য অর্থবোধক কোন শব্দ হবে যা আল্লাহ্র নিদর্শনকে প্রকাশ করে। যার সাহায্যে ভাল-মন্দ, সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য করা হয়েছে। এছাড়াও [২৫ নং] সূরাটির নাম ‘ফুরকান’ এবং এই সূরার প্রথম আয়াতেই ফুরকান শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। সুতরাং ‘ফুরকান’ শব্দটি কিতাবের পরিবর্তে হতে পারে না। এর অর্থ হওয়া উচিত যুগে যুগে আল্লাহ্র নিদর্শন। মুসলমানদের কিতাব ও নিদর্শন দুটোই আছে। ফুরকান হলো ন্যায় ও অন্যায়ের মানদন্ড।
আয়াতঃ 002.054
আর যখন মূসা তার সম্প্রদায়কে বলল, হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা তোমাদেরই ক্ষতিসাধন করেছ এই গোবৎস নির্মাণ করে। কাজেই এখন তওবা কর স্বীয় স্রষ্টার প্রতি এবং নিজ নিজ প্রাণ বিসর্জন দাও। এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর তোমাদের স্রষ্টার নিকট। তারপর তোমাদের প্রতি লক্ষ্য করা হল। নিঃসন্দেহে তিনিই ক্ষমাকারী, অত্যন্ত মেহেরবান।
And (remember) when Mûsa (Moses) said to his people: ”O my people! Verily, you have wronged yourselves by worshipping the calf. So turn in repentance to your Creator and kill yourselves (the innocent kill the wrongdoers among you), that will be better for you with your Lord.” Then He accepted your repentance. Truly, He is the One Who accepts repentance, the Most Merciful.
وَإِذْ قَالَ مُوسَى لِقَوْمِهِ يَا قَوْمِ إِنَّكُمْ ظَلَمْتُمْ أَنفُسَكُمْ بِاتِّخَاذِكُمُ الْعِجْلَ فَتُوبُواْ إِلَى بَارِئِكُمْ فَاقْتُلُواْ أَنفُسَكُمْ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ عِندَ بَارِئِكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ إِنَّهُ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
Wa-ith qala moosa liqawmihi ya qawmi innakum thalamtum anfusakum biittikhathikumu alAAijla fatooboo ila bari-ikum faoqtuloo anfusakum thalikum khayrun lakum AAinda bari-ikum fataba AAalaykum innahu huwa alttawwabu alrraheemu
YUSUFALI: And remember Moses said to his people: “O my people! Ye have indeed wronged yourselves by your worship of the calf: So turn (in repentance) to your Maker, and slay yourselves (the wrong-doers); that will be better for you in the sight of your Maker.” Then He turned towards you (in forgiveness): For He is Oft-Returning, Most Merciful.
PICKTHAL: And when Moses said unto his people: O my people! Ye have wronged yourselves by your choosing of the calf (for worship) so turn in penitence to your Creator, and kill (the guilty) yourselves. That will be best for you with your Creator and He will relent toward you. Lo! He is the Relenting, the Merciful.
SHAKIR: And when Musa said to his people: O my people! you have surely been unjust to yourselves by taking the calf (for a god), therefore turn to your Creator (penitently), so kill your people, that is best for you with your Creator: so He turned to you (mercifully), for surely He is the Oft-returning (to mercy), the Merciful.
KHALIFA: Recall that Moses said to his people, “O my people, you have wronged your souls by worshiping the calf. You must repent to your Creator. You shall kill your egos. This is better for you in the sight of your Creator.” He did redeem you. He is the Redeemer, Most Merciful.
৫৪। এবং স্মরণ কর মুসা তার সম্প্রদায়কে বলেছিলো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! গো বৎসকে উপাসনা করে তোমরা নিজের [আত্মার] প্রতি ঘোর অত্যাচার করেছ। সুতরাং তোমরা তোমাদের সৃষ্টিকর্তার দিকে [অনুতাপের মাধ্যমে] ফিরে এসো এবং [পাপীরা] নিজেদের হত্যা কর ৬৯। তোমাদের সৃষ্টিকর্তার চোখে এটাই শ্রেয়! অতঃপর তিনি তোমাদের ক্ষমা করলেন। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’
৬৯। ওল্ড টেস্টামেন্টের ভাষ্য অনুযায়, ‘Go in and out from gate to gate throughout the camp, and slay every man his brother, and every man his companion, and every man his neighbor………. and there fell of the people that day 3,000 men.’ আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলতে হয় হত্যা ছিল তাদের জন্য মহা পরীক্ষা। কিন্তু আল্লাহ্ তাদের ক্ষমা করে দিলেন। ‘আন্ফুসাকুম’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে ‘আত্মা’, ‘ব্যক্তি’ নয়। সেদিক থেকে অর্থ করলে হযরত মুসার নির্দেশের অর্থ দাঁড়ায়, ‘গো-বৎস পূজার’ দ্বারা তোমরা তোমাদের আত্মাকে কলুষিত করেছ সুতরাং তোমাদের অপবিত্র আত্মাকে বিনাশ কর। আল্লাহ্র চোখে তা-ই হবে তোমাদের জন্য প্রযোজ্য।
আয়াতঃ 002.055
আর যখন তোমরা বললে, হে মূসা, কস্মিনকালেও আমরা তোমাকে বিশ্বাস করব না, যতক্ষণ না আমরা আল্লাহকে (প্রকাশ্যে) দেখতে পাব। বস্তুতঃ তোমাদিগকে পাকড়াও করল বিদ্যুৎ। অথচ তোমরা তা প্রত্যক্ষ করছিলে।
And (remember) when you said: ”O Mûsa (Moses)! We shall never believe in you till we see Allâh plainly.” But you were seized with a thunderbolt (lightning) while you were looking.
وَإِذْ قُلْتُمْ يَا مُوسَى لَن نُّؤْمِنَ لَكَ حَتَّى نَرَى اللَّهَ جَهْرَةً فَأَخَذَتْكُمُ الصَّاعِقَةُ وَأَنتُمْ تَنظُرُونَ
Wa-ith qultum ya moosa lan nu/mina laka hatta nara Allaha jahratan faakhathatkumu alssaAAiqatu waantum tanthuroona
YUSUFALI: And remember ye said: “O Moses! We shall never believe in thee until we see Allah manifestly,” but ye were dazed with thunder and lighting even as ye looked on.
PICKTHAL: And when ye said: O Moses! We will not believe in thee till we see Allah plainly; and even while ye gazed the lightning seized you.
SHAKIR: And when you said: O Musa! we will not believe in you until we see Allah manifestly, so the punishment overtook you while you looked on.
KHALIFA: Recall that you said, “O Moses, we will not believe unless we see GOD, physically.” Consequently, the lightning struck you, as you looked.
৫৫। এবং স্মরণ কর, তোমরা বলেছিলে; ৭০ ‘হে মুসা! আমরা আল্লাহ্কে সুস্পষ্টরূপে না দেখা পর্যন্ত তোমাকে কখনও বিশ্বাস করবো না।’ কিন্তু তখন তোমরা বজ্রাহত হলে, যদিও তোমরা তাকিয়ে ছিলে।
৭০। হযরত মুসা (আঃ) তূর পর্বত থেকে তাওরাত নিয়ে এসে বনী ইসরাঈলের সামনে পেশ করে বললেন যে, এটা আল্লাহ্ প্রদত্ত কিতাব। তখন কিছু সংখ্যক উদ্ধত লোক বলল, যদি আল্লাহ্ স্বয়ং বলে দেন যে, এ কিতাব তাঁর প্রদত্ত তবে অবশ্যই আমাদের বিশ্বাস এসে যাবে। মুসা (আঃ) আল্লাহ্র আদেশক্রমে তাদেরকে তূর পর্বতে যেতে বললেন। বনী ইসরাঈলীরা সত্তর জন লোককে মনোনীত করে হযরত মুসা (আঃ) এর সঙ্গে তূর পর্বতে পাঠাল। সেখানে পৌঁছে তারা আল্লাহ্র বাণী স্বয়ং শুনতে পেলো। তখন তারা নতুন ভান করে বলল, শুধু কথা শুনে তো তৃপ্তি হচ্ছেনা; আল্লাহ্ই জানেন এ কথা কে বলছে। যদি আল্লাহকে দেখতে পাই, তবে অবশ্যই মেনে নেবো। কিন্তু যেহেতু এ মরজগতে আল্লাহ্কে দেখার ক্ষমতা কারও নাই কাজেই এ ধৃষ্টতার জন্য তাদের উপর বজ্রপাত হল এবং সবাই ধ্বংস হয়ে গেলো।
আয়াতঃ 002.056
তারপর, মরে যাবার পর তোমাদিগকে আমি তুলে দাঁড় করিয়েছি, যাতে করে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে নাও।
Then We raised you up after your death, so that you might be grateful.
ثُمَّ بَعَثْنَاكُم مِّن بَعْدِ مَوْتِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
Thumma baAAathnakum min baAAdi mawtikum laAAallakum tashkuroona
YUSUFALI: Then We raised you up after your death: Ye had the chance to be grateful.
PICKTHAL: Then We revived you after your extinction, that ye might give thanks.
SHAKIR: Then We raised you up after your death that you may give thanks.
KHALIFA: We then revived you, after you had died, that you may be appreciative.
৫৬। তোমাদের মৃত্যুর পরে আমি তোমাদের পুনর্জীবিত করলাম; [ফলে] তোমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সুযোগ ছিলো।
৫৭। আমি তোমাদের মেঘের ছায়া দিয়েছিলাম, এবং তোমাদের নিকট মান্না ৭১ ও কোয়েল প্রেরণ করেছিলাম এই বলে: ‘তোমাদের ভাল যা দান করেছি তা থেকে আহার কর।’ [কিন্তু তারা বিদ্রোহ করে]; তারা আমার কোন ক্ষতি করতে পারে নাই, বরং তারা তাদের নিজের আত্মার প্রতি ক্ষতি করেছে।
৭১। ইহুদীরা যে প্রান্তরে থাকতো তা ছিল উন্মুক্ত মরুভূমি প্রান্তর। এখানে কোনও লোকালয় বা গাছ ছিল না যার নীচে শীত-গরম বা সূর্যতাপ থেকে আশ্রয় নেয়া চলে। তেমনিভাবে এখানে পানাহারের উপকরণ বা পরিধানের বস্ত্রসামগ্রীও ছিল না। কিন্তু আল্লাহ্ হযরত মুসার দোয়ার বদৌলতে যাবতীয় প্রয়োজন মেটাবার বন্দোবস্ত করেন। মেঘ দ্বারা ছায়া দানের এবং ক্ষুধা পেলে ‘মান্না ও সালওয়া’ এর বন্দোবস্ত করেন। ‘মান্না’ কি? মান্নাকে বলা হয়েছে বরফের মত স্বচ্ছ, শ্রভ্র এক ধরণের মিষ্ট খাবার যা মাটিতে জমে থাকতো। এগুলিকে পরদিন পর্যন্ত রেখে দিলে পচে যেতো এবং সূর্যতাপে রাখলে গেল যেতো। প্রত্যেক লোকের জন্য প্রয়োজন ছিল এক ওমের (হিব্রু মাপ) যা ২ কোয়ার্টের সমান বর্তমানে সময়ে ‘মান্না’ বলতে যা বোঝায় তা হচ্চে ঝাউ জাতীয় একরকম চিরহরিৎ বৃক্ষের রস। এই রস মিষ্টি এবং আঠালো। এক রকমের পোকা যখন বৃক্ষকে ছিদ্র করে তখন এই রস নির্গত করে। ভারতে যেমন-লাক্ষা পোকা দ্বারা এক রকম বৃক্ষ থেকে লাক্ষা উৎপন্ন হয়।
সালওয়া হচ্ছে কোয়েল পাখীর মত ছোট ছোট পাখীর ঝাঁক। পাখীর ঝাঁক তাদের কাছে ঝাঁকে ঝাঁকে সমবেত হত, আর তারা সেগুলি সংগ্রহ করে নিত। পাখীর ঝাঁক তাদের দেখে পালাতো না। ‘মান্নার’ অসাধারণ প্রাচুর্য এবং কোয়েল পাখীর লোকভীতি না থাকাও ছিল অস্বাভাবিক। এ হিসেবে উভয় বস্তুই অদৃশ্য ধনভান্ডার হতে দেওয়া হয়েছিলো বলে প্রকাশ করা হয়েছে। বর্তমান সময়ে কোয়েল পাখির ঝাঁক বছরের কোনও এক নির্দিষ্ট সময়ে ভূ-মধ্যসাগরের বাতাস দ্বারা পরিচালিত হয়ে এখানে এসে পড়ে। এ ঘটনা ১৯১৪-১৯১৮ সনের বিশ্বযুদ্ধের সময়ে বহু ভারতীয় সামরিক অফিসার যারা মিশর ও প্যালেষ্টাইনের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থান নিয়েছিলেন তারা প্রত্যক্ষ করেছেন।
আয়াতঃ 002.057
আর আমি তোমাদের উপর ছায়া দান করেছি মেঘমালার দ্বারা এবং তোমাদের জন্য খাবার পাঠিয়েছি ’মান্না’ ও সালওয়া’। সেসব পবিত্র বস্তু তোমরা ভক্ষন কর, যা আমি তোমাদেরকে দান করেছি। বস্তুতঃ তারা আমার কোন ক্ষতি করতে পারেনি, বরং নিজেদেরই ক্ষতি সাধন করেছে।
And We shaded you with clouds and sent down on you Al-Manna and the quails, (saying): ”Eat of the good lawful things We have provided for you,” (but they rebelled). And they did not wrong Us but they wronged themselves.
وَظَلَّلْنَا عَلَيْكُمُ الْغَمَامَ وَأَنزَلْنَا عَلَيْكُمُ الْمَنَّ وَالسَّلْوَى كُلُواْ مِن طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ وَمَا ظَلَمُونَا وَلَـكِن كَانُواْ أَنفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ
Wathallalna AAalaykumu alghamama waanzalna AAalaykumu almanna waalssalwa kuloo min tayyibati ma razaqnakum wama thalamoona walakin kanoo anfusahum yathlimoona
YUSUFALI: And We gave you the shade of clouds and sent down to you Manna and quails, saying: “Eat of the good things We have provided for you:” (But they rebelled); to us they did no harm, but they harmed their own souls.
PICKTHAL: And We caused the white cloud to overshadow you and sent down on you the manna and the quails, (saying): Eat of the good things wherewith We have provided you – they wronged Us not, but they did wrong themselves.
SHAKIR: And We made the clouds to give shade over you and We sent to you manna and quails: Eat of the good things that We have given you; and they did not do Us any harm, but they made their own souls suffer the loss.
KHALIFA: We shaded you with clouds (in Sinai), and sent down to you manna and quails: “Eat from the good things we provided for you.” They did not hurt us (by rebelling); they only hurt their own souls.
৫৬। তোমাদের মৃত্যুর পরে আমি তোমাদের পুনর্জীবিত করলাম; [ফলে] তোমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সুযোগ ছিলো।
৫৭। আমি তোমাদের মেঘের ছায়া দিয়েছিলাম, এবং তোমাদের নিকট মান্না ৭১ ও কোয়েল প্রেরণ করেছিলাম এই বলে: ‘তোমাদের ভাল যা দান করেছি তা থেকে আহার কর।’ [কিন্তু তারা বিদ্রোহ করে]; তারা আমার কোন ক্ষতি করতে পারে নাই, বরং তারা তাদের নিজের আত্মার প্রতি ক্ষতি করেছে।
৭১। ইহুদীরা যে প্রান্তরে থাকতো তা ছিল উন্মুক্ত মরুভূমি প্রান্তর। এখানে কোনও লোকালয় বা গাছ ছিল না যার নীচে শীত-গরম বা সূর্যতাপ থেকে আশ্রয় নেয়া চলে। তেমনিভাবে এখানে পানাহারের উপকরণ বা পরিধানের বস্ত্রসামগ্রীও ছিল না। কিন্তু আল্লাহ্ হযরত মুসার দোয়ার বদৌলতে যাবতীয় প্রয়োজন মেটাবার বন্দোবস্ত করেন। মেঘ দ্বারা ছায়া দানের এবং ক্ষুধা পেলে ‘মান্না ও সালওয়া’ এর বন্দোবস্ত করেন। ‘মান্না’ কি? মান্নাকে বলা হয়েছে বরফের মত স্বচ্ছ, শ্রভ্র এক ধরণের মিষ্ট খাবার যা মাটিতে জমে থাকতো। এগুলিকে পরদিন পর্যন্ত রেখে দিলে পচে যেতো এবং সূর্যতাপে রাখলে গেল যেতো। প্রত্যেক লোকের জন্য প্রয়োজন ছিল এক ওমের (হিব্রু মাপ) যা ২ কোয়ার্টের সমান বর্তমানে সময়ে ‘মান্না’ বলতে যা বোঝায় তা হচ্চে ঝাউ জাতীয় একরকম চিরহরিৎ বৃক্ষের রস। এই রস মিষ্টি এবং আঠালো। এক রকমের পোকা যখন বৃক্ষকে ছিদ্র করে তখন এই রস নির্গত করে। ভারতে যেমন-লাক্ষা পোকা দ্বারা এক রকম বৃক্ষ থেকে লাক্ষা উৎপন্ন হয়।
সালওয়া হচ্ছে কোয়েল পাখীর মত ছোট ছোট পাখীর ঝাঁক। পাখীর ঝাঁক তাদের কাছে ঝাঁকে ঝাঁকে সমবেত হত, আর তারা সেগুলি সংগ্রহ করে নিত। পাখীর ঝাঁক তাদের দেখে পালাতো না। ‘মান্নার’ অসাধারণ প্রাচুর্য এবং কোয়েল পাখীর লোকভীতি না থাকাও ছিল অস্বাভাবিক। এ হিসেবে উভয় বস্তুই অদৃশ্য ধনভান্ডার হতে দেওয়া হয়েছিলো বলে প্রকাশ করা হয়েছে। বর্তমান সময়ে কোয়েল পাখির ঝাঁক বছরের কোনও এক নির্দিষ্ট সময়ে ভূ-মধ্যসাগরের বাতাস দ্বারা পরিচালিত হয়ে এখানে এসে পড়ে। এ ঘটনা ১৯১৪-১৯১৮ সনের বিশ্বযুদ্ধের সময়ে বহু ভারতীয় সামরিক অফিসার যারা মিশর ও প্যালেষ্টাইনের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থান নিয়েছিলেন তারা প্রত্যক্ষ করেছেন।
আয়াতঃ 002.058
আর যখন আমি বললাম, তোমরা প্রবেশ কর এ নগরীতে এবং এতে যেখানে খুশী খেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে বিচরণ করতে থাক এবং দরজার ভিতর দিয়ে প্রবেশ করার সময় সেজদা করে ঢুক, আর বলতে থাক-‘আমাদিগকে ক্ষমা করে দাও’-তাহলে আমি তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করব এবং সৎ কর্মশীলদেরকে অতিরিক্ত দানও করব।
And (remember) when We said: ”Enter this town (Jerusalem) and eat bountifully therein with pleasure and delight wherever you wish, and enter the gate in prostration (or bowing with humility) and say: ’Forgive us,’ and We shall forgive you your sins and shall increase (reward) for the good-doers.”
وَإِذْ قُلْنَا ادْخُلُواْ هَـذِهِ الْقَرْيَةَ فَكُلُواْ مِنْهَا حَيْثُ شِئْتُمْ رَغَداً وَادْخُلُواْ الْبَابَ سُجَّداً وَقُولُواْ حِطَّةٌ نَّغْفِرْ لَكُمْ خَطَايَاكُمْ وَسَنَزِيدُ الْمُحْسِنِينَ
Wa-ith qulna odkhuloo hathihi alqaryata fakuloo minha haythu shi/tum raghadan waodkhuloo albaba sujjadan waqooloo hittatun naghfir lakum khatayakum wasanazeedu almuhsineena
YUSUFALI: And remember We said: “Enter this town, and eat of the plenty therein as ye wish; but enter the gate with humility, in posture and in words, and We shall forgive you your faults and increase (the portion of) those who do good.”
PICKTHAL: And when We said: Go into this township and eat freely of that which is therein, and enter the gate prostrate, and say: “Repentance.” We will forgive you your sins and will increase (reward) for the right-doers.
SHAKIR: And when We said: Enter this city, then eat from it a plenteous (food) wherever you wish, and enter the gate making obeisance, and say, forgiveness. We will forgive you your wrongs and give more to those who do good (to others).
KHALIFA: Recall that we said, “Enter this town, where you will find as many provisions as you like. Just enter the gate humbly, and treat the people nicely. We will then forgive your sins, and increase the reward for the pious.”
৫৮। এবং স্মরণ কর আমি বলেছিলাম, ‘এই শহরে প্রবেশ কর ৭২ এবং সেখানে তোমাদের ইচ্ছানুযায়ী যা খুশী প্রচুর পরিমাণে আহার কর। কিন্তু [শহরের] তোরণ দিয়ে প্রবেশের সময়ে অঙ্গ বিন্যাসে ও ভাষাতে বিনয় প্রকাশ করবে। আমি তোমাদের দোষত্রুটি ক্ষমা করে দেবো এবং যারা সৎ কাজ করে তাদের প্রতি [আমার অনুগ্রহ] বৃদ্ধি করে দেবো।’
৭২। এ জায়গাটি সম্ভবতঃ সিত্থিম। এটা জর্দানের পূর্বপ্রান্তে আকাশিয়া শহর। এখানেই ইসরাঈলীরা নীতিভ্রষ্ট হয় এবং গো-বৎস পূজার অপরাধে অপরাধী হয়। [Num xxv 1-2], যার ফলে ভয়াবহ শাস্তিরূপে তাদের মধ্যে প্লেগ রোগের আবির্ভাব হয় এবং যাতে প্রায় ২৪,০০০ লোক মারা যায়।
যখন বনী ইসরাঈলীদের একটানা মান্না ও সালওয়া খেতে খেতে বিস্বাদ এসে গেলো এবং স্বাভাবিক খাবারের জন্য প্রার্থনা করলো তখন তাদেরকে এমন এক নগরীতে প্রবেশ করতে হুকুম দেওয়া হলো, যেখানে পানাহারের জন্য সাধারণভাবে ব্যবহার্য দ্রব্যাদি পাওয়া যাবে। যখন তারা নগরীতে প্রবেশ করতে আরম্ভ করবে শহরের দরজা দিয়ে, তখন বিনয়ের সাথে প্রণত মস্তকে প্রবেশ করবে এবং মুখে ক্ষমা চাইবে। কিন্তু যে শব্দটির (সাংকেতিক) সাহায্যে ক্ষমা চাইতে বলা হলো ইহুদীরা তা পরিবর্তন করে ফেললো। আরবীতে এই শব্দটি ছিল ‘হিত্তাতুন’ যা বিনয় এবং ক্ষমা প্রার্থনার পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়। এই বিশেষ ঘটনা থেকে যে শিক্ষা গ্রহণের ইঙ্গিত আল্লাহ্ তায়ালা দিচ্ছেন তা হচ্ছে কোনও কাজে বিজয়ের মুহূর্তে আমরা বিনয়ী ও নম্র থাকবো যেনো আল্লাহ্র চোখে আমাদের আচরণ পছন্দনীয় হয়। অন্যথায় আমাদের উদ্ধত ও অহংকার আচরণ আমাদের ধ্বংসের পথে নিয়ে যাবে।
আয়াত [২ : ৫৮-৫৯] কে সূরা [৭ : ১৬১-১৬২] সাথে তুলনা করা যায়। দু একটা শব্দ যেমন-[২ : ৫৮] তে ব্যবহার করা হয়েছে, ‘শহরে প্রবেশ কর’ কিন্তু [৭ ; ১৬১] তে ব্যবহার করা হয়েছে ‘বাস কর; আবার [২ : ৫৯] এ ব্যবহার করা হয়েছে ‘আদেশ লঙ্ঘন করা’ এবং [৭ : ১৬২] তে ‘সীমা লঙ্ঘন করা’ বলা হয়েছে। কিন্তু এর জন্য আয়াতের অর্থের কোন পরিবর্তন হয় নাই।
আয়াতঃ 002.059
অতঃপর যালেমরা কথা পাল্টে দিয়েছে, যা কিছু তাদেরকে বলে দেয়া হয়েছিল তা থেকে। তারপর আমি অবতীর্ণ করেছি যালেমদের উপর আযাব, আসমান থেকে, নির্দেশ লংঘন করার কারণে।
But those who did wrong changed the word from that which had been told to them for another, so We sent upon the wrong-doers Rijzan (a punishment) from the heaven because of their rebelling against Allâh’s Obedience. (Tafsir At-Tabarî, Vol. I, Page 305).
فَبَدَّلَ الَّذِينَ ظَلَمُواْ قَوْلاً غَيْرَ الَّذِي قِيلَ لَهُمْ فَأَنزَلْنَا عَلَى الَّذِينَ ظَلَمُواْ رِجْزاً مِّنَ السَّمَاء بِمَا كَانُواْ يَفْسُقُونَ
Fabaddala allatheena thalamoo qawlan ghayra allathee qeela lahum faanzalna AAala allatheena thalamoo rijzan mina alssama-i bima kanoo yafsuqoona
YUSUFALI: But the transgressors changed the word from that which had been given them; so We sent on the transgressors a plague from heaven, for that they infringed (Our command) repeatedly.
PICKTHAL: But those who did wrong changed the word which had been told them for another saying, and We sent down upon the evil-doers wrath from heaven for their evil-doing.
SHAKIR: But those who were unjust changed it for a saying other than that which had been spoken to them, so We sent upon those who were unjust a pestilence from heaven, because they transgressed.
KHALIFA: But the wicked among them carried out commands other than the commands given to them. Consequently, we sent down upon the transgressors condemnation from the sky, due to their wickedness.
৫৯। কিন্তু সীমালঙ্ঘনকারীরা, তাদের যে বাণী দেয়া হয়েছিলো তা পরিবর্তন করে ফেললো। সুতরাং আমি সীমালঙ্ঘনকারীদের উপর আসমান থেকে প্লেগ প্রেরণ করলাম, যেহেতু তারা [আমার আদেশ] বারে বারে লঙ্ঘন করেছিলো।
রুকু – ৭
৬০। এবং স্মরণ কর মুসা তার সম্প্রদায়ের জন্য পানির প্রার্থনা করলো, আমি বললাম, ‘তোমার লাঠি দ্বারা পাথরে আঘাত কর।’ ফলে সেখান থেকে বারটি ঝর্ণাধারা উৎসরিত হলো। প্রত্যেক গোত্র ৭৩ তাদের নিজ নিজ পানির স্থান জেনে নিল। সুতরাং আল্লাহ্ প্রদত্ত জীবিকা থেকে আহার ও পান কর এবং পৃথিবীতে পাপ ও বিপর্যয় সৃষ্টি করো না।
৭৩। এই আয়াতে ইহুদীদের বিভিন্ন উপজাতি (Tribe) সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে। ইহুদীদের বার (১২)টি উপজাতি হচ্ছে ইয়াকুব নবীর ১২ জন ছেলের বংশধরগণ। ইয়াকুব নবীকে ইহুদীরা নাম দিয়েছে ইসরাঈল। সেই কারণে ইহুদীদের আর এক নাম বনী ইসরাঈল বা ইসরাঈলের বংশধর।
সিনাই পর্বতের কাছে হোরের নামক স্থানে যেখানে মুসা নবীকে প্রত্যাদেশ বা আল্লাহ্র আইন প্রদান করা হয় সেখানে ১২ ফুট উচ্চ এবং ৫০ ফুট পরিধি বিশিষ্ট লাল গ্রানাইট পাথরের স্তুপ থেকে ১২টি ঝর্ণা প্রবাহিত যা ১৫ শতাব্দীতে ইউরোপীয়ান পরিব্রাজক ব্রেভডেনবাচ (Brevdenbach) প্রত্যক্ষ করেন। এই ঝর্ণাগুলির অস্তিত্ব হযরত মুহম্মদের (দঃ) সময়েও ছিলো এবং সম্ভবতঃ এখনও আছে।
এই আয়াতকে আল্লাহ্ উপমা হিসেবে ব্যবহার করেছেন আরও মহত্তর কিছু শিক্ষা দেওয়ার জন্য। এই পৃথিবীতে চলার পথে আমরা আত্মিক দিক থেকে নিঃসঙ্গ। মায়া-মমতাহীন, স্বার্থপর পৃথিবীতে একটু স্নেহ ভালবাসা ও সঙ্গের জন্য তৃষিত হই। পৃথিবীর পথ আদম সন্তানের জন্য পৃথিবীকে করে তোলে বন্ধুর ও কঙ্করময়। আধ্যাত্মিক জগতের বা আত্মার তৃষ্ণা মেটাতে পরম করুণাময় যুগে-যুগে, কালে কালে তাঁর দূত প্রেরণ করেছেন পৃথিবীতে। এমনকি পাথরের মত শক্ত যাদের হৃদয [যেমন-প্যাগান আরবেরা] তাদের মাঝেও আমাদের নবীর মত দূত প্রেরণ করেছেন তাঁর রহমতের ফল্গুধারায় তাদের কঠিন হৃদয়কে সঞ্জীবিত করার জন্য। আর এই সব নবী ও রাসূলগণের চারিপাশে বিভিন্ন জাতি তাদের বিভিন্ন সংস্কৃতি, ভাষা, নিয়ে বিভিন্ন সময়ের প্রেক্ষিতে ভীড় করেছে, তারা ধর্মের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় গ্রহণ করেছে, আত্মিক তৃষ্ণা মিটিয়েছে। যেমন-তৃষ্ণা মেটানোর জন্য ইসরাঈলীদের ১২টি সম্প্রদায় ১২টি ঝর্ণাধারার চারিপাশে সমবেত হয়েছিল। আল্লাহ্ যুগে যুগে মানুষের জন্য ঐ ঝর্ণাধারার মত নবী রাসূল প্রেরণ করেছেন। তাদের অমিয় বাণীর প্রভাবে মানুষের আত্মা তার তৃষ্ণা মেটাতে সক্ষম হয়েছে। আত্মার খোরাক আল্লাহ্ এই ভাবেই যুগে যুগে বিশ্ববাসীদের কাছে প্রেরণ করেছেন। আমরা এর জন্য পরম করুণাময়ের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবো। কীভাবে? আল্লাহ্র কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা মৌখিক নয়-তা হবে কার্যাবলীর মাধ্যমে প্রকাশ। আমরা আমাদের আচরণের মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবো। আমরা নিজেদের অন্যায়, অবিচার ও স্বার্থপরতা নামক রিপু থেকে নিজেকে রক্ষা করবো। সর্বদা মনে রাখতে হবে এই পৃথিবীতে আমাদের অবস্থান ক্ষণস্থায়ী। আর এই ক্ষণস্থায়ী অবস্থানেরই কার্যকলাপ নির্ধারণ করবে আমাদের আগামী দিনের বা পরকালের অবস্থান। এই হচ্ছে বিশ্ব প্রতিপালকের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাবার ভাষা। আর এই কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী অবস্থানকালে। যে ক্ষণস্থায়ী অবস্থান কালকে বলা যায় আমাদের ‘শিক্ষানবীশকাল’ (Probationary Period) অনন্ত পরকালের জন্য।
আয়াতঃ 002.060
আর মূসা যখন নিজ জাতির জন্য পানি চাইল, তখন আমি বললাম, স্বীয় যষ্ঠির দ্বারা আঘাত কর পাথরের উপরে। অতঃপর তা থেকে প্রবাহিত হয়ে এল বারটি প্রস্রবণ। তাদের সব গোত্রই চিনে নিল নিজ নিজ ঘাট। আল্লাহর দেয়া রিযিক খাও, পান কর আর দুনিয়ার বুকে দাংগা-হাংগামা করে বেড়িও না।
And (remember) when Mûsa (Moses) asked for water for his people, We said: ”Strike the stone with your stick.” Then gushed forth therefrom twelve springs. Each (group of) people knew its own place for water. ”Eat and drink of that which Allâh has provided and do not act corruptly, making mischief on the earth.”
وَإِذِ اسْتَسْقَى مُوسَى لِقَوْمِهِ فَقُلْنَا اضْرِب بِّعَصَاكَ الْحَجَرَ فَانفَجَرَتْ مِنْهُ اثْنَتَا عَشْرَةَ عَيْناً قَدْ عَلِمَ كُلُّ أُنَاسٍ مَّشْرَبَهُمْ كُلُواْ وَاشْرَبُواْ مِن رِّزْقِ اللَّهِ وَلاَ تَعْثَوْاْ فِي الأَرْضِ مُفْسِدِينَ
Wa-ithi istasqa moosa liqawmihi faqulna idrib biAAasaka alhajara fainfajarat minhu ithnata AAashrata AAaynan qad AAalima kullu onasin mashrabahum kuloo waishraboo min rizqi Allahi wala taAAthaw fee al-ardi mufsideena
YUSUFALI: And remember Moses prayed for water for his people; We said: “Strike the rock with thy staff.” Then gushed forth therefrom twelve springs. Each group knew its own place for water. So eat and drink of the sustenance provided by Allah, and do no evil nor mischief on the (face of the) earth.
PICKTHAL: And when Moses asked for water for his people, We said: Smite with thy staff the rock. And there gushed out therefrom twelve springs (so that) each tribe knew their drinking-place. Eat and drink of that which Allah hath provided, and do not act corruptly, making mischief in the earth.
SHAKIR: And when Musa prayed for drink for his people, We said: Strike the rock with your staff So there gushed from it twelve springs; each tribe knew its drinking place: Eat and drink of the provisions of Allah and do not act corruptly in the land, making mischief.
KHALIFA: Recall that Moses sought water for his people. We said, “Strike the rock with your staff.” Whereupon, twelve springs gushed out therefrom. The members of each tribe knew their own water. Eat and drink from GOD’s provisions, and do not roam the earth corruptingly.
৫৯। কিন্তু সীমালঙ্ঘনকারীরা, তাদের যে বাণী দেয়া হয়েছিলো তা পরিবর্তন করে ফেললো। সুতরাং আমি সীমালঙ্ঘনকারীদের উপর আসমান থেকে প্লেগ প্রেরণ করলাম, যেহেতু তারা [আমার আদেশ] বারে বারে লঙ্ঘন করেছিলো।
রুকু – ৭
৬০। এবং স্মরণ কর মুসা তার সম্প্রদায়ের জন্য পানির প্রার্থনা করলো, আমি বললাম, ‘তোমার লাঠি দ্বারা পাথরে আঘাত কর।’ ফলে সেখান থেকে বারটি ঝর্ণাধারা উৎসরিত হলো। প্রত্যেক গোত্র ৭৩ তাদের নিজ নিজ পানির স্থান জেনে নিল। সুতরাং আল্লাহ্ প্রদত্ত জীবিকা থেকে আহার ও পান কর এবং পৃথিবীতে পাপ ও বিপর্যয় সৃষ্টি করো না।
৭৩। এই আয়াতে ইহুদীদের বিভিন্ন উপজাতি (Tribe) সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে। ইহুদীদের বার (১২)টি উপজাতি হচ্ছে ইয়াকুব নবীর ১২ জন ছেলের বংশধরগণ। ইয়াকুব নবীকে ইহুদীরা নাম দিয়েছে ইসরাঈল। সেই কারণে ইহুদীদের আর এক নাম বনী ইসরাঈল বা ইসরাঈলের বংশধর।
সিনাই পর্বতের কাছে হোরের নামক স্থানে যেখানে মুসা নবীকে প্রত্যাদেশ বা আল্লাহ্র আইন প্রদান করা হয় সেখানে ১২ ফুট উচ্চ এবং ৫০ ফুট পরিধি বিশিষ্ট লাল গ্রানাইট পাথরের স্তুপ থেকে ১২টি ঝর্ণা প্রবাহিত যা ১৫ শতাব্দীতে ইউরোপীয়ান পরিব্রাজক ব্রেভডেনবাচ (Brevdenbach) প্রত্যক্ষ করেন। এই ঝর্ণাগুলির অস্তিত্ব হযরত মুহম্মদের (দঃ) সময়েও ছিলো এবং সম্ভবতঃ এখনও আছে।
এই আয়াতকে আল্লাহ্ উপমা হিসেবে ব্যবহার করেছেন আরও মহত্তর কিছু শিক্ষা দেওয়ার জন্য। এই পৃথিবীতে চলার পথে আমরা আত্মিক দিক থেকে নিঃসঙ্গ। মায়া-মমতাহীন, স্বার্থপর পৃথিবীতে একটু স্নেহ ভালবাসা ও সঙ্গের জন্য তৃষিত হই। পৃথিবীর পথ আদম সন্তানের জন্য পৃথিবীকে করে তোলে বন্ধুর ও কঙ্করময়। আধ্যাত্মিক জগতের বা আত্মার তৃষ্ণা মেটাতে পরম করুণাময় যুগে-যুগে, কালে কালে তাঁর দূত প্রেরণ করেছেন পৃথিবীতে। এমনকি পাথরের মত শক্ত যাদের হৃদয [যেমন-প্যাগান আরবেরা] তাদের মাঝেও আমাদের নবীর মত দূত প্রেরণ করেছেন তাঁর রহমতের ফল্গুধারায় তাদের কঠিন হৃদয়কে সঞ্জীবিত করার জন্য। আর এই সব নবী ও রাসূলগণের চারিপাশে বিভিন্ন জাতি তাদের বিভিন্ন সংস্কৃতি, ভাষা, নিয়ে বিভিন্ন সময়ের প্রেক্ষিতে ভীড় করেছে, তারা ধর্মের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় গ্রহণ করেছে, আত্মিক তৃষ্ণা মিটিয়েছে। যেমন-তৃষ্ণা মেটানোর জন্য ইসরাঈলীদের ১২টি সম্প্রদায় ১২টি ঝর্ণাধারার চারিপাশে সমবেত হয়েছিল। আল্লাহ্ যুগে যুগে মানুষের জন্য ঐ ঝর্ণাধারার মত নবী রাসূল প্রেরণ করেছেন। তাদের অমিয় বাণীর প্রভাবে মানুষের আত্মা তার তৃষ্ণা মেটাতে সক্ষম হয়েছে। আত্মার খোরাক আল্লাহ্ এই ভাবেই যুগে যুগে বিশ্ববাসীদের কাছে প্রেরণ করেছেন। আমরা এর জন্য পরম করুণাময়ের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবো। কীভাবে? আল্লাহ্র কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা মৌখিক নয়-তা হবে কার্যাবলীর মাধ্যমে প্রকাশ। আমরা আমাদের আচরণের মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবো। আমরা নিজেদের অন্যায়, অবিচার ও স্বার্থপরতা নামক রিপু থেকে নিজেকে রক্ষা করবো। সর্বদা মনে রাখতে হবে এই পৃথিবীতে আমাদের অবস্থান ক্ষণস্থায়ী। আর এই ক্ষণস্থায়ী অবস্থানেরই কার্যকলাপ নির্ধারণ করবে আমাদের আগামী দিনের বা পরকালের অবস্থান। এই হচ্ছে বিশ্ব প্রতিপালকের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাবার ভাষা। আর এই কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী অবস্থানকালে। যে ক্ষণস্থায়ী অবস্থান কালকে বলা যায় আমাদের ‘শিক্ষানবীশকাল’ (Probationary Period) অনন্ত পরকালের জন্য।
আয়াতঃ 002.061
আর তোমরা যখন বললে, হে মূসা, আমরা একই ধরনের খাদ্য-দ্রব্যে কখনও ধৈর্য্যধারণ করব না। কাজেই তুমি তোমার পালনকর্তার নিকট আমাদের পক্ষে প্রার্থনা কর, তিনি যেন আমাদের জন্যে এমন বস্তুসামগ্রী দান করেন যা জমিতে উৎপন্ন হয়, তরকারী, কাকড়ী, গম, মসুরি, পেঁয়াজ প্রভৃতি। মূসা (আঃ) বললেন, তোমরা কি এমন বস্তু নিতে চাও যা নিকৃষ্ট সে বস্তুর পরিবর্তে যা উত্তম? তোমরা কোন নগরীতে উপনীত হও, তাহলেই পাবে যা তোমরা কামনা করছ। আর তাদের উপর আরোপ করা হল লাঞ্ছনা ও পরমুখাপেক্ষিতা। তারা আল্লাহর রোষানলে পতিত হয়ে ঘুরতে থাকল। এমন হলো এ জন্য যে, তারা আল্লাহর বিধি বিধান মানতো না এবং নবীগনকে অন্যায়ভাবে হত্যা করত। তার কারণ, তারা ছিল নাফরমান সীমালংঘকারী।
And (remember) when you said, ”O Mûsa (Moses)! We cannot endure one kind of food. So invoke your Lord for us to bring forth for us of what the earth grows, its herbs, its cucumbers, its Fûm (wheat or garlic), its lentils and its onions.” He said, ”Would you exchange that which is better for that which is lower? Go you down to any town and you shall find what you want!” And they were covered with humiliation and misery, and they drew on themselves the Wrath of Allâh. That was because they used to disbelieve the Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.) of Allâh and killed the Prophets wrongfully. That was because they disobeyed and used to transgress the bounds (in their disobedience to Allâh, i.e. commit crimes and sins).
وَإِذْ قُلْتُمْ يَا مُوسَى لَن نَّصْبِرَ عَلَىَ طَعَامٍ وَاحِدٍ فَادْعُ لَنَا رَبَّكَ يُخْرِجْ لَنَا مِمَّا تُنبِتُ الأَرْضُ مِن بَقْلِهَا وَقِثَّآئِهَا وَفُومِهَا وَعَدَسِهَا وَبَصَلِهَا قَالَ أَتَسْتَبْدِلُونَ الَّذِي هُوَ أَدْنَى بِالَّذِي هُوَ خَيْرٌ اهْبِطُواْ مِصْراً فَإِنَّ لَكُم مَّا سَأَلْتُمْ وَضُرِبَتْ عَلَيْهِمُ الذِّلَّةُ وَالْمَسْكَنَةُ وَبَآؤُوْاْ بِغَضَبٍ مِّنَ اللَّهِ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَانُواْ يَكْفُرُونَ بِآيَاتِ اللَّهِ وَيَقْتُلُونَ النَّبِيِّينَ بِغَيْرِ الْحَقِّ ذَلِكَ بِمَا عَصَواْ وَّكَانُواْ يَعْتَدُونَ
Wa-ith qultum ya moosa lan nasbira AAala taAAamin wahidin faodAAu lana rabbaka yukhrij lana mimma tunbitu al-ardu min baqliha waqiththa-iha wafoomiha waAAadasiha wabasaliha qala atastabdiloona allathee huwa adna biallathee huwa khayrun ihbitoo misran fa-inna lakum ma saaltum waduribat AAalayhimu alththillatu waalmaskanatu wabaoo bighadabin mina Allahi thalika bi-annahum kanoo yakfuroona bi-ayati Allahi wayaqtuloona alnnabiyyeena bighayri alhaqqi thalika bima AAasaw wakanoo yaAAtadoona
YUSUFALI: And remember ye said: “O Moses! we cannot endure one kind of food (always); so beseech thy Lord for us to produce for us of what the earth groweth, -its pot-herbs, and cucumbers, Its garlic, lentils, and onions.” He said: “Will ye exchange the better for the worse? Go ye down to any town, and ye shall find what ye want!” They were covered with humiliation and misery; they drew on themselves the wrath of Allah. This because they went on rejecting the Signs of Allah and slaying His Messengers without just cause. This because they rebelled and went on transgressing.
PICKTHAL: And when ye said: O Moses! We are weary of one kind of food; so call upon thy Lord for us that He bring forth for us of that which the earth groweth – of its herbs and its cucumbers and its corn and its lentils and its onions. He said: Would ye exchange that which is higher for that which is lower? Go down to settled country, thus ye shall get that which ye demand. And humiliation and wretchedness were stamped upon them and they were visited with wrath from Allah. That was because they disbelieved in Allah’s revelations and slew the prophets wrongfully. That was for their disobedience and transgression.
SHAKIR: And when you said: O Musa! we cannot bear with one food, therefore pray Lord on our behalf to bring forth for us out of what the earth grows, of its herbs and its cucumbers and its garlic and its lentils and its onions. He said: Will you exchange that which is better for that which is worse? Enter a city, so you will have what you ask for. And abasement and humiliation were brought down upon them, and they became deserving of Allah’s wrath; this was so because they disbelieved in the communications of Allah and killed the prophets unjustly; this was so because they disobeyed and exceeded the limits.
KHALIFA: Recall that you said, “O Moses, we can no longer tolerate one kind of food. Call upon your Lord to produce for us such earthly crops as beans, cucumbers, garlic, lentils, and onions.” He said, “Do you wish to substitute that which is inferior for that which is good? Go down to Egypt, where you can find what you asked for.” They have incurred condemnation, humiliation, and disgrace, and brought upon themselves wrath from GOD. This is because they rejected GOD’s revelations, and killed the prophets unjustly. This is because they disobeyed and exceeded the limits.
৬১। এবং স্মরণ কর তোমরা বলেছিলে, ‘হে মুসা! আমরা [সর্বদা] একই প্রকার খাদ্য সহ্য করতে পারছি না। সুতরাং তোমার প্রভুর নিকট আমাদের জন্য প্রার্থনা কর, তিনি যেনো আমাদের জন্য ভূমি জাত দ্রব্য উৎপন্ন করেন- শাক-সব্জি এবং শশা, রসুন, ডাল এবং পিয়াঁজ।’ সে [মুসা] বলল, ‘তোমরা কি উৎকৃষ্টতর বস্তুর পরিবর্তে নিকৃষ্টতর বস্তু চাও? তবে তোমরা যে কোন নগরে যাও। তোমরা যা চাও তা সেখানে পাবে। ৭৪। লাঞ্ছনা ও দুর্দশা তাদের [চারিদিক থেকে] ঘিরে ধরলো ৭৫, তারা নিজেদের উপরে আল্লাহ্র ক্রোধকে আকর্ষণ করেছিলো। এর কারণ তারা আল্লাহ্র আয়াতকে অস্বীকার করতো এবং আল্লাহ্র নবীদের অন্যায়ভাবে হত্যা করতো। অবাধ্যতা ও সীমালঙ্ঘনের জন্য তাদের এই পরিণতি হয়েছিলো।
৭৪। ‘মিশরা’ কথাটির আরবী শব্দরূপ দাঁড়ায় ‘যে কোন শহর’। কথাটির শব্দরূপই সব নয়, এর গূঢ় অর্থ হবে মিশরের যে কোনও শহর। কারন ‘তানউইন’ আরবী শব্দটির দ্বারা যা প্রকাশ করা হয়েছে তার অর্থ ‘মিশরের’ কোনও স্থানের প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে। অর্থাৎ যে কোন দেশ যা মিশরের মতই উর্বর। এই আয়াতে ইহুদীদের ভৎর্সনা করা হয়েছে। ইহুদীরা একই খাবার প্রতিদিন খাওয়ার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলো। কারণ মিশরে তারা যখন কৃতদাস বন্ধনে আবদ্ধ ছিল, ফেরাউনদের খাবারের প্রাচুর্য ও প্রকারভেদ তাদের প্রলুব্ধ করতো। দাসত্বের বন্ধন, অত্যাচার অপেক্ষা তাদের কাছে খাবারের বিভিন্নতা ও প্রাচুর্য হয়ে উঠলো বেশী লোভনীয়। এ ব্যাপারে হযরত মুসা (আঃ) এর ভৎর্সনা ছিল দু’ভাবে, (১) বিভিন্ন ধরণের সুস্বাদু খাবার যে কোনও শহরেই পাওয়া যায়, কিন্তু তার পরিবর্তে কি স্বাধীনতা বিক্রি করা যায়? সুস্বাদু খাবার অপেক্ষা কি স্বাধীনতা বহু মূল্যবান নয়? (২) সামনেই ইহুদীদের জন্য রয়েছে আল্লাহ্র অঙ্গীকারাবদ্ধ সমৃদ্ধির দেশ, আর পিছনে রয়েছে দাসত্বের দেশ (মিশর)। কোনটা মঙ্গলজনক? তারা কি ভালর প্রতিদানে মন্দকে বেছে নেবে?
৭৫। এখান থেকে এই আয়াতের অর্থ সার্বজনীন। আল্লাহ্ ইহুদীদের দাসত্ব মুক্ত করে আল্লাহ্র মনোনীত স্থানে তাদের বাসস্থান স্থির করলেন। কিন্তু ইহুদীরা আল্লাহ্র এই বিধি-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলো। ফলে তাদের উপর আল্লাহ্র গজব নাজেল হলো। তাদের লাঞ্ছনা গঞ্জনা জাতীয় বিপর্যয়ে পরিণত হলো। এটা আমরা ইহুদীদের ইতিহাস পড়লেই দেখতে পাই। প্রথমতঃ তারা ‘আসেরিয়ান’দের দ্বারা পরাজিত ও বন্দী হয়ে তাদের দেশে নীত হয়। পরে পারস্য সম্রাট তাদের আসেরিয়ানদের থেকে মুক্ত করে তাদের দাসে পরিণত করেন এবং এর পরে তারা আবার গ্রীক, রোমান ও আরবদের অধীনে চলে যায়। এর ফলে ইহুদী জাতি সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে এবং সেই থেকে নিজেদের স্বাধীন আবাসস্থল থেকে বঞ্চিত হয় এবং সেই থেকে তারা পৃথিবীব্যাপী ঘুরে বেড়াচ্ছে। নিজেদের কোনও মাতৃভূমি নাই। এ লাঞ্ছনা এ জন্য হলো যে তারা আল্লাহ্র বিধি বিধানের প্রতি কুফরী করেছিলো এবং নবীদের হত্যা করেছিলো। তারা আল্লাহ্র আনুগত্য প্রকাশ করতো না এবং আনুগত্যের সীমা লঙ্ঘন করতো।
নবী-হত্যা শুরু হয় আবেল হত্যার মধ্য দিয়ে, যে ছিল ইহুদীদের পূর্বপুরুষ। এরপর ইয়াকুব নবীর জ্যোষ্ঠ পুত্ররা ইউসুফ নবীকে হত্যার পরিকল্পনা নেয়। ইউসুফ নবীকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁরা তাকে কূপের মধ্যে নিক্ষেপ করে। যদিও আল্লাহ্র অপার করুণায় তাঁর মৃত্যু ঘটে নাই, তিনি অপরিচিত বণিকদের দ্বারা উদ্ধারপ্রাপ্ত হন এবং মিশরে আনীত হন, কিন্তু তাঁর ভাইরা ভাতৃ হত্যার পাপে অভিযুক্ত। কারণ আল্লাহ্ কর্মকে বিচার করেন তার নিয়ত দ্বারা। ইউসুফ নবীর ভাইদের সংকল্প ছিল তাঁকে হত্যা করার। তিনি নিহত হন নাই সেটা আল্লাহ্র অসীম করুণা ও দয়া। কিন্তু এতে তাঁর ভাইদের মানসিক অবস্থা বা নিয়তের কোন তারতম্য ঘটে নাই। সুতরাং ভাতৃ হত্যার নিয়তের দরুন তাদের উপরে ভাতৃহত্যার পাপই বর্তায়। পরবর্তীতে তারা ঈসা নবীকে হত্যা করে। যদিও তারা সত্যিকারের ঈসা নবীকে হত্যা করতে পারে নাই। তাঁরই সদৃশ একজনকে হত্যা করে। সুতরাং নবী হত্যার নিয়ত বা সংকল্পের দরুণ হত্যার পাপের দায়ভার তাদের উপর বর্তায়। শেষে আমরা দেখি তারা হযরত মুহম্মদ (সাঃ) কেও হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। কুরআনের এই আয়াতের অর্থ যদিও ইহুদীদের সম্বোধন করে বলা হয়েছে, কিন্তু এর নৈতিক আবেদন সার্বজনীন। এর নৈতিক উপদেশ হচ্ছে, যদি কেউ ব্যক্তিগত বা জাতিগতভাবে উদ্ধত ও অহংকারী হয় এবং নৈতিক মূল্যবোধ, আধ্যাত্মিক মুক্তি ও স্বাধীনতার চেয়ে পৃথিবীর চাকচিক্যময় জীবন ও ভোগ বিলাস অধিক পছন্দ করে, আল্লাহ্র আইন ভঙ্গ করে অর্থাৎ আল্লাহ্ প্রদত্ত নৈতিক নিয়মাবলী (যথা সত্যি কথা বলা, চুরি না করা, আমানতের খেয়ানত না করা, ব্যভিচার না করা ইত্যাদি) ভঙ্গ করে, আল্লাহ্র নিয়ামত প্রত্যাখান করে [যেমন করেছিলো ইহুদীরা] তবে তাদের জন্য সে যে ব্যক্তিই বা জাতিই হোক, রয়েছে দুঃখজনক লাঞ্ছনা এই পৃথিবীতে এবং পরকালে।
আয়াতঃ 002.062
নিঃসন্দেহে যারা মুসলমান হয়েছে এবং যারা ইহুদী, নাসারা ও সাবেঈন, (তাদের মধ্য থেকে) যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামত দিবসের প্রতি এবং সৎকাজ করেছে, তাদের জন্য রয়েছে তার সওয়াব তাদের পালনকর্তার কাছে। আর তাদের কোনই ভয়-ভীতি নেই, তারা দুঃখিতও হবে না।
Verily! Those who believe and those who are Jews and Christians, and Sabians, whoever believes in Allâh and the Last Day and do righteous good deeds shall have their reward with their Lord, on them shall be no fear, nor shall they grieve .
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُواْ وَالَّذِينَ هَادُواْ وَالنَّصَارَى وَالصَّابِئِينَ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَعَمِلَ صَالِحاً فَلَهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ
Inna allatheena amanoo waallatheena hadoo waalnnasara waalssabi-eena man amana biAllahi waalyawmi al-akhiri waAAamila salihan falahum ajruhum AAinda rabbihim wala khawfun AAalayhim wala hum yahzanoona
YUSUFALI: Those who believe (in the Qur’an), and those who follow the Jewish (scriptures), and the Christians and the Sabians,- any who believe in Allah and the Last Day, and work righteousness, shall have their reward with their Lord; on them shall be no fear, nor shall they grieve.
PICKTHAL: Lo! Those who believe (in that which is revealed unto thee, Muhammad), and those who are Jews, and Christians, and Sabaeans – whoever believeth in Allah and the Last Day and doeth right – surely their reward is with their Lord, and there shall no fear come upon them neither shall they grieve.
SHAKIR: Surely those who believe, and those who are Jews, and the f Christians, and the Sabians, whoever believes in Allah and the Last day and does good, they shall have their reward from their Lord, and there is no fear for them, nor shall they grieve.
KHALIFA: Surely, those who believe, those who are Jewish, the Christians, and the converts; anyone who (1) believes in GOD, and (2) believes in the Last Day, and (3) leads a righteous life, will receive their recompense from their Lord. They have nothing to fear, nor will they grieve.
রুকু – ৮
৬২। যারা ঈমান আনে [এই কুর-আনে], এবং যারা ইহুদীদের [ধর্মগ্রন্থ] অনুসরণ করে, এবং খৃশ্চিয়ান, এবং সাবীয়ান ৭৬, যারাই ঈমান আনে আল্লাহ্র [একত্বে] শেষ [বিচার] দিবসে এবং সৎ কাজ করে, তাদের জন্য পুরষ্কার আছে তাদের প্রভুর নিকট। তাদের কোন ভয় নাই তারা দুঃখিতও হবে না ৭৭।
৭৬। আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে যে ইরাকের নিম্নাংশ বসরার সন্নিকটে খুব ছোট এক সম্প্রদায় বাস করে। এদের জনসংখ্যা ২০০০ এর বেশী হবে না। আরবীতে তাদের বলা হয় সুবী (বহুবচনে সুবা)। তাদেরকে বলা হয় সার্বিয়ান এবং নাসোরিয়ান, অথবা সেন্ট জনসের ক্রিশ্চিয়ান। এরা নিজেদের আধ্যাত্মিক রহস্যবাদী খৃষ্টানরূপে বা জীবনের মূল রহস্যভেদী রূপে দাবী করে। তারা সাদা কাপড় পরে এবং ঘন ঘন পানিতে ডুব দিয়ে গোসল করে। তাদের ধর্মপুস্তকের নাম গিন্জা, যা সিরীয় ভাষায় লেখা। তারা অগ্নি উপাসক বা জরাথুষ্ট্র। তারা যে কোন নদীকে ইয়ারডান (জর্দান) নামে অভিহিত করে। তারা তাদের মুসলমান প্রতিবেশীদের সাথে সুখ-শান্তিতে বসবাস করে। এদের সাথেই কুরআন শরীফ বর্ণিত সার্বিয়ানদের সাদৃশ্য লক্ষ করা যায; কিন্তু আবার কুরআন বর্ণিত সম্প্রদায়ের সাথে সম্পূর্ণ একও নয়।
আর একটি সম্প্রদায় যাদেরকে বলা হতো হারানের নকল সার্বিয়ান। এই সম্প্রদায় তাদের লম্বা চুল ও অদ্ভূত পোষাকের জন্য ৮৩০ খৃষ্টাদে খলিফা হারুন-অর-রশীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সম্ভতঃ তারা কুরআনের বর্ণিত সার্বিয়ান নাম গ্রহণ করে কারণ তাহলে তারা কিতাব প্রাপ্ত জাতিসমূহের অন্তর্গত হতে পারবে। এরা সিরিয়াবাসী এবং তারার পূজক (star worshipper) এবং এদের আচার আচরণ সমসাময়িক গ্রীক ভাষাভাষি ইহুদীদের মত। এরা যদিও নিজদের কিতাবপ্রাপ্ত জাতিসমূহের অন্তর্গত বলে দাবী করে তবে তা যৌক্তিক কিনা তা বিবেচ্য। এ ব্যাপারে মাওলানা ইউসুফ আলীর মতামত হচ্ছে (যদিও অনেক লেখক ভিন্নমত পোষণ করেন) সার্বিয়ান কথাটির সঙ্কীর্ণার্থে ব্যবহার না করে ব্যাপক ও সার্বজনীন অর্থে ব্যবহার করা যায়। এদের মধ্যে যুগে যুগে অন্যান্য মহান শিক্ষক যারা পৃথিবীকে নৈতিক শিক্ষা দানে ধন্য করেছেন তাঁদের সবাইকে অন্তুর্ভুক্ত করা যায়। এখানেও ইসলামের মাহাত্ম্য ও সার্বজনীনতা বিদ্যমান।
আর একটি শ্রেণী আছে যাদের সার্বিয়ান নামে অভিহিত করা হয়। এরা প্রাচীন আরবের ইতিহাসে খুব গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে। যার সাথে ফিনিশিয়া দেশীয় এবং বেবীলন দেশীয়দের সম্যক মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ৮০০-৭০০ খৃঃ পূর্বে আরবের দক্ষিণে ইয়েমেনের কাছে এদের এক সমৃদ্ধশালী রাজ্যের বিস্তার লাভ করে, যদিও এদের সাম্রাজ্যের সূত্রপাত হয় আরবের উত্তরাংশে।এরা তারার পূজক ছিল (সূর্য, চন্দ্র, ভেনাস)। সম্ভবতঃ শেবার রাণী এদের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। এরা ৩৫০ খৃষ্টাব্দে আসোরিয়ানদের কাছে পরাভূত হয়। এদের রাজধানী ছিল সানার নিকটে। এরা পাথরের তৈরি প্রাসাদ তৈরি করেছিল যার বৈশিষ্ট্য ছিল সুদৃশ্য তোরণ।
৭৭। এই কথা বলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ইসলাম ধর্ম কোনও বিশেষ সম্প্রদায়ের একচেটিয়া অন্তর্ভূক্ত নয়। যেমন-ইহুদীরা নিজেদের স্বতন্ত্র মনে করে, খৃষ্টানেরা নিজেদের মনে করে ইহুদীদের থেকে উদ্ভূদ। অর্থাৎ আল্লাহ্র প্রদত্ত ধর্ম ইহুদীদের মধ্যে ব্যতীত আর কারও কাছে নাজেল হওয়া সম্ভব নয়। কারন তারা বিশ্বাস করে তারা আল্লাহ্র মনোনীত। এমনকি আধুনিক খৃষ্টান সম্প্রদায় সচেতনভাবে যা অযৌক্তিক ভাবে আল্লাহ্র প্রতিনিধিমূলক ব্যবস্থায় বিশ্বাস করে। অর্থাৎ তারা বিশ্বাস করে যে পাদ্রী বা পুরোহিতের সাহায্য পাপস্খালনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তারা বিশ্বাস করে যে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে আল্লাহ্র মনোনীত পাদ্রী বা পুরোহিতের প্রয়োজন। এর অর্থ দাঁড়ায় যে খৃষ্টান বা ইহুদী ব্যতীত আর কেহই আল্লাহ্র সন্নিকটে পৌঁছানোর যোগ্য নয়। কিন্তু উপরের আয়াত থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিতে ব্যাপারটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। হযরত মুহম্মদ (দঃ) এর পূর্বে পৃথিবীতে ইসলাম ছিল। কুরআন শরীফের [৩ : ৬৭] এ পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে যে, হযরত ইব্রাহীম ছিলেন একজন প্রকৃত মুসলমান। কারণ তিনি সম্পূর্ণভাবে নিজেকে আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে সমর্পন করেছিলেন। ইসলামের শিক্ষার মূল নির্যাস হচ্ছে আল্লাহ্র কাছে পরিপূর্ণ আত্মসমর্পন। আর আল্লাহ্র ইচ্ছা হচ্ছে (১) বিশ্বাস করা স্রষ্টা এক এবং অদ্বিতীয়, পরকালে তার কাছেই ইহকালের হিসাব দিতে হবে এবং (২) তাঁরই সন্তুষ্টি বিধানের জন্য সৎ কাজ করতে হবে। এই দুই ধর্ম যে পালন করে, সে-ই প্রকৃত মুসলমান। তাদের কোনও ভয় নাই। ইসলামের এই শিক্ষা সর্বকালের, সর্বযুগের এবং সর্ব মানুষের জন্য।
আয়াতঃ 002.063
আর আমি যখন তোমাদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম এবং তুর পর্বতকে তোমাদের মাথার উপর তুলে ধরেছিলাম এই বলে যে, তোমাদিগকে যে কিতাব দেয়া হয়েছে তাকে ধর সুদৃঢ়ভাবে এবং এতে যা কিছু রয়েছে তা মনে রেখো যাতে তোমরা ভয় কর।
And (O Children of Israel, remember) when We took your covenant and We raised above you the Mount (saying): ”Hold fast to that which We have given you, and remember that which is therein so that you may become Al-Muttaqûn (the pious – see V.2:2).
وَإِذْ أَخَذْنَا مِيثَاقَكُمْ وَرَفَعْنَا فَوْقَكُمُ الطُّورَ خُذُواْ مَا آتَيْنَاكُم بِقُوَّةٍ وَاذْكُرُواْ مَا فِيهِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
Wa-ith akhathna meethaqakum warafaAAna fawqakumu alttoora khuthoo ma ataynakum biquwwatin waothkuroo ma feehi laAAallakum tattaqoona
YUSUFALI: And remember We took your covenant and We raised above you (The towering height) of Mount (Sinai) : (Saying): “Hold firmly to what We have given you and bring (ever) to remembrance what is therein: Perchance ye may fear Allah.”
PICKTHAL: And (remember, O Children of Israel) when We made a covenant with you and caused the mount to tower above you, (saying): Hold fast that which We have given you, and remember that which is therein, that ye may ward off (evil).
SHAKIR: And when We took a promise from you and lifted the mountain over you: Take hold of the law (Tavrat) We have given you with firmness and bear in mind what is in it, so that you may guard (against evil).
KHALIFA: We made a covenant with you, as we raised Mount Sinai above you: “You shall uphold what we have given you strongly, and remember its contents, that you may be saved.”
৬৩। এবং স্মরণ কর আমি তোমাদের অঙ্গীকার নিয়েছিলাম এবং [সুউচ্চ সিনাই] পর্বতকে উর্ধ্বে উত্তোলন করেছিলাম ৭৮ [বলেছিলাম] : ‘আমি যা দিলাম তা দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং তাতে যা আছে তা [চিরকাল] স্মরণ রেখো। [তাহলে] সম্ভবতঃ তোমরা আল্লাহ্কে ভয় করবে।
৭৮। সিনাই পর্বত বা তুর পর্বত আরবের মরুভূমিতে অবস্থিত একটি অন্যতম প্রধান পর্বত; যার অবস্থান লোহিত সাগরের দুই বাহুর মধ্যবর্তী উপদ্বীপে (Peninsula)। এই জায়গায় হযরত মুসাকে বাইবেলে বর্ণিত দশটি বিধান দেওয়া হয়। সেই কারণে এই পাহাড়কে মুসার পাহাড়ও বলা হয় (Jabal Musa) এখানেই ইসরাঈলীরা প্রায় এক বছর অবস্থান করে। এ সম্বন্ধে তাদের ধর্মগ্রন্থে যে বর্ণনা আছে তা হচ্ছে-এরূপ পাহাড়ের পাদদেশ থেকে বজ্র ও বিদ্যুৎ উদ্ভাসিত হলে এক স্বর্গীয় সুষমামন্ডিত দৃশ্যের অবতারণা করে। এ দৃশ্য অবলোকন করে সমস্ত লোকেরা ভক্তিভরে দশ বিধান মেনে চলার চুক্তিতে উপনীত হয়। সব লোকেরা এক সাথে ভক্তিভরে বলেছিল, ‘আমাদের প্রভু আমাদের যা করতে আদেশ দিয়েছে আমরা তা করবো।’
আয়াতঃ 002.064
তারপরেও তোমরা তা থেকে ফিরে গেছ। কাজেই আল্লাহর অনুগ্রহ ও মেহেরবানী যদি তোমাদের উপর না থাকত, তবে অবশ্যই তোমরা ধবংস হয়ে যেতে।
Then after that you turned away. Had it not been for the Grace and Mercy of Allâh upon you, indeed you would have been among the losers.
ثُمَّ تَوَلَّيْتُم مِّن بَعْدِ ذَلِكَ فَلَوْلاَ فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ لَكُنتُم مِّنَ الْخَاسِرِينَ
Thumma tawallaytum min baAAdi thalika falawla fadlu Allahi AAalaykum warahmatuhu lakuntum mina alkhasireena
YUSUFALI: But ye turned back thereafter: Had it not been for the Grace and Mercy of Allah to you, ye had surely been among the lost.
PICKTHAL: Then, even after that, ye turned away, and if it had not been for the grace of Allah and His mercy ye had been among the losers.
SHAKIR: Then you turned back after that; so were it not for the grace of Allah and His mercy on you, you would certainly have been among the losers.
KHALIFA: But you turned away thereafter, and if it were not for GOD’s grace towards you and His mercy, you would have been doomed.
৬৪। এরপরেও তোমরা [অঙ্গীকার থেকে] ফিরে গেলে। যদি আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও দয়া তোমাদের প্রতি না থাকতো, তাহলে তোমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভূক্ত হতে।
৬৫। তোমরা তো ভাল করেই জানো তোমাদের মধ্যে যারা সাবাতের [শনিবারের] সম্পর্কে সীমালঙ্ঘন করেছিলো। আমি তাদের বললাম, ‘তোমরা ঘৃণিত বানর হয়ে যাও।’ ৭৯
৬৬। সুতরাং আমি তা সমসাময়িক ও তাদের পরবর্তী বংশধরদের জন্য করেছিলাম দৃষ্টান্ত এবং আল্লাহ্ ভীরুদের জন্য করেছিলাম উপদেশ।
৭৯। ইহুদী ধর্ম মতে শনিবার হচ্ছে অত্যন্ত পবিত্র দিন। ঐদিনকে বলে সাবাত। ঐদিন সমস্ত কাজ নিষিদ্ধ, শুধুমাত্র সাপ্তাহিক উপসনার জন্য নির্দিষ্ট। হযরত মুসার আইন অনুযায়ী সাবাতের আইন ভঙ্গ করার শাস্তি মৃত্যুদন্ড। সমুদ্র তীরবর্তী স্থানে একদল ইহুদী বাস করতো যারা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো। এই সম্প্রদায় সাবাত আইন লঙ্ঘন করে সেদিনও মাছ ধরতো। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই তারা মৎস্য শিকার করতো। ফলে তারা আল্লাহ্র রোষানলে পতিত হয় এবং তাদের আকৃতির রূপান্তর ঘটে। আয়াত [৭: ১৬৩-১৬৬]-এ বর্ণনা আছে যে, যেহেতু শনিবার বা সাবাত দিনে সমস্ত কাজ কর্ম বন্ধ থাকে মাছেরা নিরাপদ মনে করে ঐ দিন সমুদ্র উপকূলে নির্ভয়ে মাথা উচুঁ করে চলাফেরা করতো। কিন্তু সপ্তাহের অন্য দিন তা করতো না। এটা ছিলো ঐ সম্প্রদায়ের জন্য এক পরীক্ষা। বিভিন্ন রেওয়াত থেকে জানা যায় যে, ইহুদীরা শরীয়তের নির্দেশ অমান্য করার জন্য অপকৌশল অবলম্বন করে। তারা সমুদ্র উপকূলে নির্ভয়ে বিচরণশীল মাছগুলিকে ধরে লেজে লম্বা সুতো বেঁধে দিত এবং তার একটা মাথা ডাঙ্গায় কোন কিছুর সাথে বেঁধে রাখা হতো। রবিবার আসতেই সুতো টেনে মাছ শিকার করে নেওয়া হতো। এ শুধু আল্লাহ্র আইন লঙ্ঘনই নয়, এ এক রকম উপহাসও বটে। হয়তো বা তাদের মধ্যে ধারণা ছিলো যে তারা শনিবারে মাছগুলিকে বধ করছে না সুতরাং আল্লাহ্র আইন ভঙ্গ করছে না। কিন্তু আল্লাহ্র আইন ছিলো যে ঐ দিনটি মাছেদের জন্য নিরাপদ থাকবে। যেহেতু ইহুদীরা অপকৌশল অবলম্বনকারী, সেই কারণে তারা ধর্মের মূল ভিত্তি থেকে সরে এসে ধর্মের আনুষ্ঠানিকতার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়। তাদের ধারণা ছিলো তারা শনিবারে মাছ বধ না করে রবিবারে করছে। এটা ধর্মের পরিপন্থি হবে না। ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার উপর তারা অত্যাধিক গুরুত্ব দিত। আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে কোন ধর্ম নাই। এই সহজ সত্য বোঝা মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্যও অপরিহার্য বটে। কারণ আত্মিক প্রণোদনা ব্যতীত কর্মের গুরুত্ব নাই। এ ব্যাপারে আল্লাহ্ বিশদ দিক নির্দেশনা দিয়েছেন মানুষের জন্য। আমাদের মনে রাখতে হবে ‘নিয়তের উপরেই কর্মের ফলাফল নির্ভর করে’। একমাত্র আল্লাহ্ই অন্তর্যামী, তিনি সব কাজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সম্যক অবহিত। আজকের মুসলিম সম্প্রদায় আল্লাহ্ প্রদত্ত ন্যায় ও সত্য পথকে পরিহার করে শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে। ফলে ঐ ধীবর ইহুদী সম্প্রদায়ের মতই তাদের আজ বিশ্বব্যাপী লাঞ্ছনা ও গঞ্জনা।
আয়াতঃ 002.065
তোমরা তাদেরকে ভালরূপে জেনেছ, যারা শনিবারের ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘণ করেছিল। আমি বলেছিলামঃ তোমরা লাঞ্ছিত বানর হয়ে যাও।
And indeed you knew those amongst you who transgressed in the matter of the Sabbath (i.e. Saturday). We said to them: ”Be you monkeys, despised and rejected.”
وَلَقَدْ عَلِمْتُمُ الَّذِينَ اعْتَدَواْ مِنكُمْ فِي السَّبْتِ فَقُلْنَا لَهُمْ كُونُواْ قِرَدَةً خَاسِئِينَ
Walaqad AAalimtumu allatheena iAAtadaw minkum fee alssabti faqulna lahum koonoo qiradatan khasi-eena
YUSUFALI: And well ye knew those amongst you who transgressed in the matter of the Sabbath: We said to them: “Be ye apes, despised and rejected.”
PICKTHAL: And ye know of those of you who broke the Sabbath, how We said unto them: Be ye apes, despised and hated!
SHAKIR: And certainly you have known those among you who exceeded the limits of the Sabbath, so We said to them: Be (as) apes, despised and hated.
KHALIFA: You have known about those among you who desecrated the Sabbath. We said to them, “Be you as despicable as apes.”
৬৪। এরপরেও তোমরা [অঙ্গীকার থেকে] ফিরে গেলে। যদি আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও দয়া তোমাদের প্রতি না থাকতো, তাহলে তোমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভূক্ত হতে।
৬৫। তোমরা তো ভাল করেই জানো তোমাদের মধ্যে যারা সাবাতের [শনিবারের] সম্পর্কে সীমালঙ্ঘন করেছিলো। আমি তাদের বললাম, ‘তোমরা ঘৃণিত বানর হয়ে যাও।’ ৭৯
৬৬। সুতরাং আমি তা সমসাময়িক ও তাদের পরবর্তী বংশধরদের জন্য করেছিলাম দৃষ্টান্ত এবং আল্লাহ্ ভীরুদের জন্য করেছিলাম উপদেশ।
৭৯। ইহুদী ধর্ম মতে শনিবার হচ্ছে অত্যন্ত পবিত্র দিন। ঐদিনকে বলে সাবাত। ঐদিন সমস্ত কাজ নিষিদ্ধ, শুধুমাত্র সাপ্তাহিক উপসনার জন্য নির্দিষ্ট। হযরত মুসার আইন অনুযায়ী সাবাতের আইন ভঙ্গ করার শাস্তি মৃত্যুদন্ড। সমুদ্র তীরবর্তী স্থানে একদল ইহুদী বাস করতো যারা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো। এই সম্প্রদায় সাবাত আইন লঙ্ঘন করে সেদিনও মাছ ধরতো। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই তারা মৎস্য শিকার করতো। ফলে তারা আল্লাহ্র রোষানলে পতিত হয় এবং তাদের আকৃতির রূপান্তর ঘটে। আয়াত [৭: ১৬৩-১৬৬]-এ বর্ণনা আছে যে, যেহেতু শনিবার বা সাবাত দিনে সমস্ত কাজ কর্ম বন্ধ থাকে মাছেরা নিরাপদ মনে করে ঐ দিন সমুদ্র উপকূলে নির্ভয়ে মাথা উচুঁ করে চলাফেরা করতো। কিন্তু সপ্তাহের অন্য দিন তা করতো না। এটা ছিলো ঐ সম্প্রদায়ের জন্য এক পরীক্ষা। বিভিন্ন রেওয়াত থেকে জানা যায় যে, ইহুদীরা শরীয়তের নির্দেশ অমান্য করার জন্য অপকৌশল অবলম্বন করে। তারা সমুদ্র উপকূলে নির্ভয়ে বিচরণশীল মাছগুলিকে ধরে লেজে লম্বা সুতো বেঁধে দিত এবং তার একটা মাথা ডাঙ্গায় কোন কিছুর সাথে বেঁধে রাখা হতো। রবিবার আসতেই সুতো টেনে মাছ শিকার করে নেওয়া হতো। এ শুধু আল্লাহ্র আইন লঙ্ঘনই নয়, এ এক রকম উপহাসও বটে। হয়তো বা তাদের মধ্যে ধারণা ছিলো যে তারা শনিবারে মাছগুলিকে বধ করছে না সুতরাং আল্লাহ্র আইন ভঙ্গ করছে না। কিন্তু আল্লাহ্র আইন ছিলো যে ঐ দিনটি মাছেদের জন্য নিরাপদ থাকবে। যেহেতু ইহুদীরা অপকৌশল অবলম্বনকারী, সেই কারণে তারা ধর্মের মূল ভিত্তি থেকে সরে এসে ধর্মের আনুষ্ঠানিকতার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়। তাদের ধারণা ছিলো তারা শনিবারে মাছ বধ না করে রবিবারে করছে। এটা ধর্মের পরিপন্থি হবে না। ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার উপর তারা অত্যাধিক গুরুত্ব দিত। আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে কোন ধর্ম নাই। এই সহজ সত্য বোঝা মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্যও অপরিহার্য বটে। কারণ আত্মিক প্রণোদনা ব্যতীত কর্মের গুরুত্ব নাই। এ ব্যাপারে আল্লাহ্ বিশদ দিক নির্দেশনা দিয়েছেন মানুষের জন্য। আমাদের মনে রাখতে হবে ‘নিয়তের উপরেই কর্মের ফলাফল নির্ভর করে’। একমাত্র আল্লাহ্ই অন্তর্যামী, তিনি সব কাজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সম্যক অবহিত। আজকের মুসলিম সম্প্রদায় আল্লাহ্ প্রদত্ত ন্যায় ও সত্য পথকে পরিহার করে শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে। ফলে ঐ ধীবর ইহুদী সম্প্রদায়ের মতই তাদের আজ বিশ্বব্যাপী লাঞ্ছনা ও গঞ্জনা।
আয়াতঃ 002.066
অতঃপর আমি এ ঘটনাকে তাদের সমসাময়িক ও পরবর্তীদের জন্য দৃষ্টান্ত এবং আল্লাহভীরুদের জন্য উপদেশ গ্রহণের উপাদান করে দিয়েছি।
So We made this punishment an example to their own and to succeeding generations and a lesson to those who are Al-Muttaqûn (the pious – see V.2:2).
فَجَعَلْنَاهَا نَكَالاً لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهَا وَمَا خَلْفَهَا وَمَوْعِظَةً لِّلْمُتَّقِينَ
FajaAAalnaha nakalan lima bayna yadayha wama khalfaha wamawAAithatan lilmuttaqeena
YUSUFALI: So We made it an example to their own time and to their posterity, and a lesson to those who fear Allah.
PICKTHAL: And We made it an example to their own and to succeeding generations, and an admonition to the Allah-fearing.
SHAKIR: So We made them an example to those who witnessed it and those who came after it, and an admonition to those who guard (against evil).
KHALIFA: We set them up as an example for their generation, as well as subsequent generations, and an enlightenment for the righteous.
৬৪। এরপরেও তোমরা [অঙ্গীকার থেকে] ফিরে গেলে। যদি আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও দয়া তোমাদের প্রতি না থাকতো, তাহলে তোমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভূক্ত হতে।
৬৫। তোমরা তো ভাল করেই জানো তোমাদের মধ্যে যারা সাবাতের [শনিবারের] সম্পর্কে সীমালঙ্ঘন করেছিলো। আমি তাদের বললাম, ‘তোমরা ঘৃণিত বানর হয়ে যাও।’ ৭৯
৬৬। সুতরাং আমি তা সমসাময়িক ও তাদের পরবর্তী বংশধরদের জন্য করেছিলাম দৃষ্টান্ত এবং আল্লাহ্ ভীরুদের জন্য করেছিলাম উপদেশ।
৭৯। ইহুদী ধর্ম মতে শনিবার হচ্ছে অত্যন্ত পবিত্র দিন। ঐদিনকে বলে সাবাত। ঐদিন সমস্ত কাজ নিষিদ্ধ, শুধুমাত্র সাপ্তাহিক উপসনার জন্য নির্দিষ্ট। হযরত মুসার আইন অনুযায়ী সাবাতের আইন ভঙ্গ করার শাস্তি মৃত্যুদন্ড। সমুদ্র তীরবর্তী স্থানে একদল ইহুদী বাস করতো যারা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো। এই সম্প্রদায় সাবাত আইন লঙ্ঘন করে সেদিনও মাছ ধরতো। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই তারা মৎস্য শিকার করতো। ফলে তারা আল্লাহ্র রোষানলে পতিত হয় এবং তাদের আকৃতির রূপান্তর ঘটে। আয়াত [৭: ১৬৩-১৬৬]-এ বর্ণনা আছে যে, যেহেতু শনিবার বা সাবাত দিনে সমস্ত কাজ কর্ম বন্ধ থাকে মাছেরা নিরাপদ মনে করে ঐ দিন সমুদ্র উপকূলে নির্ভয়ে মাথা উচুঁ করে চলাফেরা করতো। কিন্তু সপ্তাহের অন্য দিন তা করতো না। এটা ছিলো ঐ সম্প্রদায়ের জন্য এক পরীক্ষা। বিভিন্ন রেওয়াত থেকে জানা যায় যে, ইহুদীরা শরীয়তের নির্দেশ অমান্য করার জন্য অপকৌশল অবলম্বন করে। তারা সমুদ্র উপকূলে নির্ভয়ে বিচরণশীল মাছগুলিকে ধরে লেজে লম্বা সুতো বেঁধে দিত এবং তার একটা মাথা ডাঙ্গায় কোন কিছুর সাথে বেঁধে রাখা হতো। রবিবার আসতেই সুতো টেনে মাছ শিকার করে নেওয়া হতো। এ শুধু আল্লাহ্র আইন লঙ্ঘনই নয়, এ এক রকম উপহাসও বটে। হয়তো বা তাদের মধ্যে ধারণা ছিলো যে তারা শনিবারে মাছগুলিকে বধ করছে না সুতরাং আল্লাহ্র আইন ভঙ্গ করছে না। কিন্তু আল্লাহ্র আইন ছিলো যে ঐ দিনটি মাছেদের জন্য নিরাপদ থাকবে। যেহেতু ইহুদীরা অপকৌশল অবলম্বনকারী, সেই কারণে তারা ধর্মের মূল ভিত্তি থেকে সরে এসে ধর্মের আনুষ্ঠানিকতার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়। তাদের ধারণা ছিলো তারা শনিবারে মাছ বধ না করে রবিবারে করছে। এটা ধর্মের পরিপন্থি হবে না। ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার উপর তারা অত্যাধিক গুরুত্ব দিত। আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে কোন ধর্ম নাই। এই সহজ সত্য বোঝা মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্যও অপরিহার্য বটে। কারণ আত্মিক প্রণোদনা ব্যতীত কর্মের গুরুত্ব নাই। এ ব্যাপারে আল্লাহ্ বিশদ দিক নির্দেশনা দিয়েছেন মানুষের জন্য। আমাদের মনে রাখতে হবে ‘নিয়তের উপরেই কর্মের ফলাফল নির্ভর করে’। একমাত্র আল্লাহ্ই অন্তর্যামী, তিনি সব কাজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সম্যক অবহিত। আজকের মুসলিম সম্প্রদায় আল্লাহ্ প্রদত্ত ন্যায় ও সত্য পথকে পরিহার করে শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে। ফলে ঐ ধীবর ইহুদী সম্প্রদায়ের মতই তাদের আজ বিশ্বব্যাপী লাঞ্ছনা ও গঞ্জনা।
আয়াতঃ 002.067
যখন মূসা (আঃ) স্বীয় সম্প্রদায়কে বললেনঃ আল্লাহ তোমাদের একটি গরু জবাই করতে বলেছেন। তারা বলল, তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ? মূসা (আঃ) বললেন, মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে আমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
And (remember) when Mûsa (Moses) said to his people: ”Verily, Allâh commands you that you slaughter a cow.” They said, ”Do you make fun of us?” He said, ”I take Allâh’s Refuge from being among Al-Jâhilûn (the ignorants or the foolish).”
وَإِذْ قَالَ مُوسَى لِقَوْمِهِ إِنَّ اللّهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَذْبَحُواْ بَقَرَةً قَالُواْ أَتَتَّخِذُنَا هُزُواً قَالَ أَعُوذُ بِاللّهِ أَنْ أَكُونَ مِنَ الْجَاهِلِينَ
Wa-ith qala moosa liqawmihi inna Allaha ya/murukum an tathbahoo baqaratan qaloo atattakhithuna huzuwan qala aAAoothu biAllahi an akoona mina aljahileena
YUSUFALI: And remember Moses said to his people: “Allah commands that ye sacrifice a heifer.” They said: “Makest thou a laughing-stock of us?” He said: “Allah save me from being an ignorant (fool)!”
PICKTHAL: And when Moses said unto his people: Lo! Allah commandeth you that ye sacrifice a cow, they said: Dost thou make game of us? He answered: Allah forbid that I should be among the foolish!
SHAKIR: And when Musa said to his people: Surely Allah commands you that you should sacrifice a cow; they said: Do you ridicule us? He said: I seek the protection of Allah from being one of the ignorant.
KHALIFA: Moses said to his people, “GOD commands you to sacrifice a heifer.” They said, “Are you mocking us?” He said, “GOD forbid, that I should behave like the ignorant ones.”
৬৭। এবং স্মরণ কর মুসা তাঁর সম্প্রদায়কে বলেছিলো, ‘আল্লাহ্ আদেশ দিচ্ছেন যে তোমরা একটি বকনা গাভী কোরবানী দাও’ ৮০। তারা বলেছিলো, ‘তুমি কি আমাদের সাথে ঠাট্টা করছো?’ সে [মুসা] বলেছিলো, ‘অজ্ঞ এবং নির্বোধ হওয়া থেকে আল্লাহ্ আমাকে রক্ষা করুণ।
৮০। এই আয়াতটি [৬৭-৭১] পড়তে হবে [২:৭২-৭৩] সঙ্গে সংযুক্তি করে। এই নীর্তিগর্ভমূলক বিবরণ এই যে, বনী ইসরাঈলীদের মধ্যে একটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিলো। হত্যাকারী কে তা জানা কঠিন হয়ে পড়ে। বনী ইসরাঈলরা মুসা (আঃ)’র কাছে হত্যাকারীকে খুঁজে বের করার ইচ্ছা ব্যক্ত করলে তিনি আল্লাহ্র নির্দেশ অনুযায়ী একটি গরু জবাই করার জন্য আদেশ দেন। তারা চিরাচরিত অভ্যাস ও প্রকৃতি অনুযায়ী এতে নানা প্রকার বাদানুবাদের অবতারণা করতে থাকে ও বলে তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছো? (কোথায় হত্যাকারীর সন্ধান, আর কোথায় গরু জবাই)। উপরের ঘটনার মাধ্যমে যে উপদেশ দেওয়া হয়েছে তা অত্যন্ত সহজ। হযরত মুসা কোরবানীর জন্য উপদেশ দিলেন। কিন্তু ইসরাঈলরা তা হাসি ঠাট্টা রূপে পরিগণিত করলো। কিন্তু যখন মুসা আল্লাহ্র নামে হল্ফ করে তাদের কোরবাণী দেয়ার জন্য ক্রমাগত তাগাদা দিতে লাগলেন, তখন তারা বিভিন্ন অজুহাতের অবতারণা করতে লাগলো। এসব অজুহাত ছিল কোরবাণী না দেওয়ার অজুহাত। কারণ যে সব প্রশ্ন তারা হযরত মুসাকে করেছিলো যদি তারা আন্তরিক হতো কোরবাণীর ব্যাপারে তবে তারা নিজেরাই প্রশ্নের সমাধান করতে পারতো। হযরত মুসার নির্দেশ খুব সহজেই বুঝতে পারতো। কিন্তু তারা আল্লাহ্র নির্দেশ বুঝতে চেষ্টা করে নাই মোটেও। তাদের উদ্দেশ্য ছিল খারাপ, দোষত্রুটি খুঁজে সমালোচনা করাই ছিল তাদের আসল উদ্দেশ্য। পুরো জিনিষটাই ছিল তাদের এক ধরণের ভাল অপকৌশল, যে তারা সুপথের বা আল্লাহ্র নির্দেশকে বুঝতে চেষ্টা করছে। শেষ পর্যন্ত যখন তাদের কোনও অজুহাত বা টালবাহানা টিকলো না তখন তারা গরু কোরবানী দিল কিন্তু অনিচ্ছা সত্ত্বেও। ফলে তাদের নিবেদন (কোরবানী) এর মূল সুর যা হচ্ছে আত্মাকে পাপ থেকে পরিশুদ্ধ করা, তা হারিয়ে যায়। তারা কৌশলে সত্যকে এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করেছে। এই এড়ানোর চেষ্টা স্বরূপ তারা নানা রকম কৌশলের আশ্রয় গ্রহণ করে। কারণ বিবেককে প্রতারিত করতে অনেক কৌশলের আশ্রয় গ্রহণ করতে হয়।
আয়াতঃ 002.068
তারা বলল, তুমি তোমার পালনকর্তার কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা কর, যেন সেটির রূপ বিশ্লেষণ করা হয়। মূসা (আঃ) বললেন, তিনি বলছেন, সেটা হবে একটা গাভী, যা বৃদ্ধ নয় এবং কুমারীও নয়-বার্ধক্য ও যৌবনের মাঝামাঝি বয়সের। এখন আদিষ্ট কাজ করে ফেল।
They said, ”Call upon your Lord for us that He may make plain to us what it is!” He said, ”He says, ’Verily, it is a cow neither too old nor too young, but (it is) between the two conditions’, so do what you are commanded.”
قَالُواْ ادْعُ لَنَا رَبَّكَ يُبَيِّن لّنَا مَا هِيَ قَالَ إِنَّهُ يَقُولُ إِنَّهَا بَقَرَةٌ لاَّ فَارِضٌ وَلاَ بِكْرٌ عَوَانٌ بَيْنَ ذَلِكَ فَافْعَلُواْ مَا تُؤْمَرونَ
Qaloo odAAu lana rabbaka yubayyin lana ma hiya qala innahu yaqoolu innaha baqaratun la faridun wala bikrun AAawanun bayna thalika faifAAaloo ma tu/maroona
YUSUFALI: They said: “Beseech on our behalf Thy Lord to make plain to us what (heifer) it is!” He said; “He says: The heifer should be neither too old nor too young, but of middling age. Now do what ye are commanded!”
PICKTHAL: They said: Pray for us unto thy Lord that He make clear to us what (cow) she is. (Moses) answered: Lo! He saith, Verily she is a cow neither with calf nor immature; (she is) between the two conditions; so do that which ye are commanded.
SHAKIR: They said: Call on your Lord for our sake to make it plain to us what she is. Musa said: He says, Surely she is a cow neither advanced in age nor too young, of middle age between that (and this); do therefore what you are commanded.
KHALIFA: They said, “Call upon your Lord to show us which one.” He said, “He says that she is a heifer that is neither too old, nor too young; of an intermediate age. Now, carry out what you are commanded to do.”
৬৮। তারা বলেছিলো, ‘আমাদের পক্ষ থেকে তোমার প্রভুর নিকট প্রার্থনা করে স্পষ্টভাবে আমাদের জন্য জেনে নাও [বক্না গাভীটি] কেমন হবে! সে [মুসা] বলেছিলো, [আল্লাহ্ বলেছেন]: ‘বক্না গাভীটি খুব বৃদ্ধও নয় আবার খুব বাচ্চাও নয়, কিন্তু তা হবে এ দুয়ের মাঝামাঝি বয়সের। এখন তোমাদের যা আদেশ করা হয়েছে তা কর।’
৬৯। তারা বলেছিলো, ‘আমাদের পক্ষ থেকে তোমার প্রভুর নিকট প্রার্থনা করে স্পষ্টভাবে জেনে নাও উহার রং কি?’ সে [মুসা] বলেছিলো, ‘আল্লাহ্ বলেছেন, [হরিণ শিশুর ন্যায়] হলুদ বর্ণের গাভী, উজ্জ্বল রং এর আমেজ যা দর্শকদের সন্তুষ্ট করে।’
৭০। তারা বলেছিলো, ‘আমাদের পক্ষ থেকে তোমার প্রভুর নিকট বল, তিনি যেনো আমাদের সুস্পষ্ট করে বলেন এটি কেমন হবে; আমাদের নিকট সকল গাভীই এক রকম; যদি আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন তবে নিশ্চয়ই আমরা নির্দেশ পাব।
৭১। সে বলেছিলো, ‘আল্লাহা বলেছেন, উহা এমন একটি গাভী যা ক্ষেত চাষ বা পানি সেচের জন্য ব্যবহৃত হয় নাই। সুস্থ এবং নিখুঁত।’ তারা বলেছিলো, ‘এখন তুমি সত্য এনেছ।’ অতঃপর তারা গাভীটিকে কোরবাণী দিলো যদিও তারা তা করতে ইচ্ছুক ছিলো না।
রুকু – ৯
৭২। স্মরণ কর যখন তোমরা এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে ৮১, এবং অপরাধের ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিলে। কিন্তু তোমরা যা গোপন করেছিলে, আল্লাহ্ তা প্রকাশ করে দিতেছেন।
৮১। ইহুদী ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী এক ব্যক্তিকে হত্যা করে মাঠে ফেলে রাখা হয়েছিলো, কেউই জানতো না তার হত্যাকারী কে? আল্লাহ্র নির্দেশ হলো বক্না গাভী কোরবানী দিয়ে তার উপরে নগরের প্রতিটি লোক তার হস্ত প্রক্ষালন করবে এবং নিজেকে নির্দোষ দাবী করবে। এভাবেই তাদেরকে রক্তের ঋণ শোধ করতে হুকুম দেয়া হল। প্রথমে তারা একে অন্যকে দোষারোপ শুরু করলো, তারপরে তারা চেষ্টা করলো যেন বক্না গাভটিকে কোরবানী দেওয়া না হয়, সেজন্য নানা টালবাহানা বের করলো যেমন বর্ণনা করা হয়েছে। যখন গরু জবাই হলো, আল্লাহ্র হুকুমে মৃত ব্যক্তি জীবিত হয়ে তার হত্যাকারীকে সনাক্ত করলো।
এই আয়াতের উপদেশ হচ্ছে, মানুষ তার পাপ ও অন্যায়কে লুকাতে চায়। এটা হতে পারে ব্যক্তিগতভাবে বা সমষ্টিগতভাবে। কিন্তু পাপ কখনও লুকায়িত থাকে না। যে কোন ভাবেই হোক পাপ জনসম্মুখে প্রকাশ পাবেই। এ-ই হচ্ছে আল্লাহ্র বিধান। ইহুদীদের জাতীয় ইতিহাসের মাধ্যমে এই শিক্ষাই আমাদের দেয়া হচ্ছে।
আয়াতঃ 002.069
তারা বলল, তোমার পালনকর্তার কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা কর যে, তার রঙ কিরূপ হবে? মূসা (আঃ) বললেন, তিনি বলেছেন যে, গাঢ় পীতবর্ণের গাভী-যা দর্শকদের চমৎকৃত করবে।
They said, ”Call upon your Lord for us to make plain to us its colour.” He said, ”He says, ’It is a yellow cow, bright in its colour, pleasing to the beholders.’ ”
قَالُواْ ادْعُ لَنَا رَبَّكَ يُبَيِّن لَّنَا مَا لَوْنُهَا قَالَ إِنَّهُ يَقُولُ إِنّهَا بَقَرَةٌ صَفْرَاء فَاقِـعٌ لَّوْنُهَا تَسُرُّ النَّاظِرِينَ
Qaloo odAAu lana rabbaka yubayyin lana ma lawnuha qala innahu yaqoolu innaha baqaratun safrao faqiAAun lawnuha tasurru alnnathireena
YUSUFALI: They said: “Beseech on our behalf Thy Lord to make plain to us Her colour.” He said: “He says: A fawn-coloured heifer, pure and rich in tone, the admiration of beholders!”
PICKTHAL: They said: Pray for us unto thy Lord that He make clear to us of what colour she is. (Moses) answered: Lo! He saith: Verily she is a yellow cow. Bright is her colour, gladdening beholders.
SHAKIR: They said: Call on your Lord for our sake to make it plain to us what her color is. Musa said: He says, Surely she is a yellow cow; her color is intensely yellow, giving delight to the beholders.
KHALIFA: They said, “Call upon your Lord to show us her color.” He said, “He says that she is a yellow heifer, bright colored, pleases the beholders.”
৬৮। তারা বলেছিলো, ‘আমাদের পক্ষ থেকে তোমার প্রভুর নিকট প্রার্থনা করে স্পষ্টভাবে আমাদের জন্য জেনে নাও [বক্না গাভীটি] কেমন হবে! সে [মুসা] বলেছিলো, [আল্লাহ্ বলেছেন]: ‘বক্না গাভীটি খুব বৃদ্ধও নয় আবার খুব বাচ্চাও নয়, কিন্তু তা হবে এ দুয়ের মাঝামাঝি বয়সের। এখন তোমাদের যা আদেশ করা হয়েছে তা কর।’
৬৯। তারা বলেছিলো, ‘আমাদের পক্ষ থেকে তোমার প্রভুর নিকট প্রার্থনা করে স্পষ্টভাবে জেনে নাও উহার রং কি?’ সে [মুসা] বলেছিলো, ‘আল্লাহ্ বলেছেন, [হরিণ শিশুর ন্যায়] হলুদ বর্ণের গাভী, উজ্জ্বল রং এর আমেজ যা দর্শকদের সন্তুষ্ট করে।’
৭০। তারা বলেছিলো, ‘আমাদের পক্ষ থেকে তোমার প্রভুর নিকট বল, তিনি যেনো আমাদের সুস্পষ্ট করে বলেন এটি কেমন হবে; আমাদের নিকট সকল গাভীই এক রকম; যদি আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন তবে নিশ্চয়ই আমরা নির্দেশ পাব।
৭১। সে বলেছিলো, ‘আল্লাহা বলেছেন, উহা এমন একটি গাভী যা ক্ষেত চাষ বা পানি সেচের জন্য ব্যবহৃত হয় নাই। সুস্থ এবং নিখুঁত।’ তারা বলেছিলো, ‘এখন তুমি সত্য এনেছ।’ অতঃপর তারা গাভীটিকে কোরবাণী দিলো যদিও তারা তা করতে ইচ্ছুক ছিলো না।
রুকু – ৯
৭২। স্মরণ কর যখন তোমরা এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে ৮১, এবং অপরাধের ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিলে। কিন্তু তোমরা যা গোপন করেছিলে, আল্লাহ্ তা প্রকাশ করে দিতেছেন।
৮১। ইহুদী ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী এক ব্যক্তিকে হত্যা করে মাঠে ফেলে রাখা হয়েছিলো, কেউই জানতো না তার হত্যাকারী কে? আল্লাহ্র নির্দেশ হলো বক্না গাভী কোরবানী দিয়ে তার উপরে নগরের প্রতিটি লোক তার হস্ত প্রক্ষালন করবে এবং নিজেকে নির্দোষ দাবী করবে। এভাবেই তাদেরকে রক্তের ঋণ শোধ করতে হুকুম দেয়া হল। প্রথমে তারা একে অন্যকে দোষারোপ শুরু করলো, তারপরে তারা চেষ্টা করলো যেন বক্না গাভটিকে কোরবানী দেওয়া না হয়, সেজন্য নানা টালবাহানা বের করলো যেমন বর্ণনা করা হয়েছে। যখন গরু জবাই হলো, আল্লাহ্র হুকুমে মৃত ব্যক্তি জীবিত হয়ে তার হত্যাকারীকে সনাক্ত করলো।
এই আয়াতের উপদেশ হচ্ছে, মানুষ তার পাপ ও অন্যায়কে লুকাতে চায়। এটা হতে পারে ব্যক্তিগতভাবে বা সমষ্টিগতভাবে। কিন্তু পাপ কখনও লুকায়িত থাকে না। যে কোন ভাবেই হোক পাপ জনসম্মুখে প্রকাশ পাবেই। এ-ই হচ্ছে আল্লাহ্র বিধান। ইহুদীদের জাতীয় ইতিহাসের মাধ্যমে এই শিক্ষাই আমাদের দেয়া হচ্ছে।
আয়াতঃ 002.070
তারা বলল, আপনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করুন-তিনি বলে দিন যে, সেটা কিরূপ? কেননা, গরু আমাদের কাছে সাদৃশ্যশীল মনে হয়। ইনশাআল্লাহ এবার আমরা অবশ্যই পথপ্রাপ্ত হব। মূসা (আঃ) বললেন, তিনি বলেন যে, এ গাভী ভূকর্ষণ ও জল সেচনের শ্রমে অভ্যস্ত নয়-হবে নিষ্কলঙ্ক, নিখুঁত।
They said, ”Call upon your Lord for us to make plain to us what it is. Verily to us all cows are alike, And surely, if Allâh wills, we will be guided.”
قَالُواْ ادْعُ لَنَا رَبَّكَ يُبَيِّن لَّنَا مَا هِيَ إِنَّ البَقَرَ تَشَابَهَ عَلَيْنَا وَإِنَّآ إِن شَاء اللَّهُ لَمُهْتَدُونَ
Qaloo odAAu lana rabbaka yubayyin lana ma hiya inna albaqara tashabaha AAalayna wa-inna in shaa Allahu lamuhtadoona
YUSUFALI: They said: “Beseech on our behalf Thy Lord to make plain to us what she is: To us are all heifers alike: We wish indeed for guidance, if Allah wills.”
PICKTHAL: They said: Pray for us unto thy Lord that He make clear to us what (cow) she is. Lo! cows are much alike to us; and Lo! if Allah wills, we may be led aright.
SHAKIR: They said: Call on your Lord for our sake to make it plain to us what she is, for surely to us the cows are all alike, and if Allah please we shall surely be guided aright.
KHALIFA: They said, “Call upon your Lord to show us which one. The heifers look alike to us and, GOD willing, we will be guided.”
৬৮। তারা বলেছিলো, ‘আমাদের পক্ষ থেকে তোমার প্রভুর নিকট প্রার্থনা করে স্পষ্টভাবে আমাদের জন্য জেনে নাও [বক্না গাভীটি] কেমন হবে! সে [মুসা] বলেছিলো, [আল্লাহ্ বলেছেন]: ‘বক্না গাভীটি খুব বৃদ্ধও নয় আবার খুব বাচ্চাও নয়, কিন্তু তা হবে এ দুয়ের মাঝামাঝি বয়সের। এখন তোমাদের যা আদেশ করা হয়েছে তা কর।’
৬৯। তারা বলেছিলো, ‘আমাদের পক্ষ থেকে তোমার প্রভুর নিকট প্রার্থনা করে স্পষ্টভাবে জেনে নাও উহার রং কি?’ সে [মুসা] বলেছিলো, ‘আল্লাহ্ বলেছেন, [হরিণ শিশুর ন্যায়] হলুদ বর্ণের গাভী, উজ্জ্বল রং এর আমেজ যা দর্শকদের সন্তুষ্ট করে।’
৭০। তারা বলেছিলো, ‘আমাদের পক্ষ থেকে তোমার প্রভুর নিকট বল, তিনি যেনো আমাদের সুস্পষ্ট করে বলেন এটি কেমন হবে; আমাদের নিকট সকল গাভীই এক রকম; যদি আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন তবে নিশ্চয়ই আমরা নির্দেশ পাব।
৭১। সে বলেছিলো, ‘আল্লাহা বলেছেন, উহা এমন একটি গাভী যা ক্ষেত চাষ বা পানি সেচের জন্য ব্যবহৃত হয় নাই। সুস্থ এবং নিখুঁত।’ তারা বলেছিলো, ‘এখন তুমি সত্য এনেছ।’ অতঃপর তারা গাভীটিকে কোরবাণী দিলো যদিও তারা তা করতে ইচ্ছুক ছিলো না।
রুকু – ৯
৭২। স্মরণ কর যখন তোমরা এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে ৮১, এবং অপরাধের ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিলে। কিন্তু তোমরা যা গোপন করেছিলে, আল্লাহ্ তা প্রকাশ করে দিতেছেন।
৮১। ইহুদী ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী এক ব্যক্তিকে হত্যা করে মাঠে ফেলে রাখা হয়েছিলো, কেউই জানতো না তার হত্যাকারী কে? আল্লাহ্র নির্দেশ হলো বক্না গাভী কোরবানী দিয়ে তার উপরে নগরের প্রতিটি লোক তার হস্ত প্রক্ষালন করবে এবং নিজেকে নির্দোষ দাবী করবে। এভাবেই তাদেরকে রক্তের ঋণ শোধ করতে হুকুম দেয়া হল। প্রথমে তারা একে অন্যকে দোষারোপ শুরু করলো, তারপরে তারা চেষ্টা করলো যেন বক্না গাভটিকে কোরবানী দেওয়া না হয়, সেজন্য নানা টালবাহানা বের করলো যেমন বর্ণনা করা হয়েছে। যখন গরু জবাই হলো, আল্লাহ্র হুকুমে মৃত ব্যক্তি জীবিত হয়ে তার হত্যাকারীকে সনাক্ত করলো।
এই আয়াতের উপদেশ হচ্ছে, মানুষ তার পাপ ও অন্যায়কে লুকাতে চায়। এটা হতে পারে ব্যক্তিগতভাবে বা সমষ্টিগতভাবে। কিন্তু পাপ কখনও লুকায়িত থাকে না। যে কোন ভাবেই হোক পাপ জনসম্মুখে প্রকাশ পাবেই। এ-ই হচ্ছে আল্লাহ্র বিধান। ইহুদীদের জাতীয় ইতিহাসের মাধ্যমে এই শিক্ষাই আমাদের দেয়া হচ্ছে।
আয়াতঃ 002.071
তারা বলল, এবার সঠিক তথ্য এনেছ। অতঃপর তারা সেটা জবাই করল, অথচ জবাই করবে বলে মনে হচ্ছিল না।
He [Mûsa (Moses)] said, ”He says, ’It is a cow neither trained to till the soil nor water the fields, sound, having no other colour except bright yellow.’ ” They said, ”Now you have brought the truth.” So they slaughtered it though they were near to not doing it.
قَالَ إِنَّهُ يَقُولُ إِنَّهَا بَقَرَةٌ لاَّ ذَلُولٌ تُثِيرُ الأَرْضَ وَلاَ تَسْقِي الْحَرْثَ مُسَلَّمَةٌ لاَّ شِيَةَ فِيهَا قَالُواْ الآنَ جِئْتَ بِالْحَقِّ فَذَبَحُوهَا وَمَا كَادُواْ يَفْعَلُونَ
Qala innahu yaqoolu innaha baqaratun la thaloolun tutheeru al-arda wala tasqee alhartha musallamatun la shiyata feeha qaloo al-ana ji/ta bialhaqqi fathabahooha wama kadoo yafAAaloona
YUSUFALI: He said: “He says: A heifer not trained to till the soil or water the fields; sound and without blemish.” They said: “Now hast thou brought the truth.” Then they offered her in sacrifice, but not with good-will.
PICKTHAL: (Moses) answered: Lo! He saith: Verily she is a cow unyoked; she plougheth not the soil nor watereth the tilth; whole and without mark. They said: Now thou bringest the truth. So they sacrificed her, though almost they did not.
SHAKIR: Musa said: He says, Surely she is a cow not made submissive that she should plough the land, nor does she irrigate the tilth; sound, without a blemish in her. They said: Now you have brought the truth; so they sacrificed her, though they had not the mind to do (it).
KHALIFA: He said, “He says that she is a heifer that was never humiliated in plowing the land or watering the crops; free from any blemish.” They said, “Now you have brought the truth.” They finally sacrificed her, after this lengthy reluctance.
৬৮। তারা বলেছিলো, ‘আমাদের পক্ষ থেকে তোমার প্রভুর নিকট প্রার্থনা করে স্পষ্টভাবে আমাদের জন্য জেনে নাও [বক্না গাভীটি] কেমন হবে! সে [মুসা] বলেছিলো, [আল্লাহ্ বলেছেন]: ‘বক্না গাভীটি খুব বৃদ্ধও নয় আবার খুব বাচ্চাও নয়, কিন্তু তা হবে এ দুয়ের মাঝামাঝি বয়সের। এখন তোমাদের যা আদেশ করা হয়েছে তা কর।’
৬৯। তারা বলেছিলো, ‘আমাদের পক্ষ থেকে তোমার প্রভুর নিকট প্রার্থনা করে স্পষ্টভাবে জেনে নাও উহার রং কি?’ সে [মুসা] বলেছিলো, ‘আল্লাহ্ বলেছেন, [হরিণ শিশুর ন্যায়] হলুদ বর্ণের গাভী, উজ্জ্বল রং এর আমেজ যা দর্শকদের সন্তুষ্ট করে।’
৭০। তারা বলেছিলো, ‘আমাদের পক্ষ থেকে তোমার প্রভুর নিকট বল, তিনি যেনো আমাদের সুস্পষ্ট করে বলেন এটি কেমন হবে; আমাদের নিকট সকল গাভীই এক রকম; যদি আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন তবে নিশ্চয়ই আমরা নির্দেশ পাব।
৭১। সে বলেছিলো, ‘আল্লাহা বলেছেন, উহা এমন একটি গাভী যা ক্ষেত চাষ বা পানি সেচের জন্য ব্যবহৃত হয় নাই। সুস্থ এবং নিখুঁত।’ তারা বলেছিলো, ‘এখন তুমি সত্য এনেছ।’ অতঃপর তারা গাভীটিকে কোরবাণী দিলো যদিও তারা তা করতে ইচ্ছুক ছিলো না।
রুকু – ৯
৭২। স্মরণ কর যখন তোমরা এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে ৮১, এবং অপরাধের ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিলে। কিন্তু তোমরা যা গোপন করেছিলে, আল্লাহ্ তা প্রকাশ করে দিতেছেন।
৮১। ইহুদী ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী এক ব্যক্তিকে হত্যা করে মাঠে ফেলে রাখা হয়েছিলো, কেউই জানতো না তার হত্যাকারী কে? আল্লাহ্র নির্দেশ হলো বক্না গাভী কোরবানী দিয়ে তার উপরে নগরের প্রতিটি লোক তার হস্ত প্রক্ষালন করবে এবং নিজেকে নির্দোষ দাবী করবে। এভাবেই তাদেরকে রক্তের ঋণ শোধ করতে হুকুম দেয়া হল। প্রথমে তারা একে অন্যকে দোষারোপ শুরু করলো, তারপরে তারা চেষ্টা করলো যেন বক্না গাভটিকে কোরবানী দেওয়া না হয়, সেজন্য নানা টালবাহানা বের করলো যেমন বর্ণনা করা হয়েছে। যখন গরু জবাই হলো, আল্লাহ্র হুকুমে মৃত ব্যক্তি জীবিত হয়ে তার হত্যাকারীকে সনাক্ত করলো।
এই আয়াতের উপদেশ হচ্ছে, মানুষ তার পাপ ও অন্যায়কে লুকাতে চায়। এটা হতে পারে ব্যক্তিগতভাবে বা সমষ্টিগতভাবে। কিন্তু পাপ কখনও লুকায়িত থাকে না। যে কোন ভাবেই হোক পাপ জনসম্মুখে প্রকাশ পাবেই। এ-ই হচ্ছে আল্লাহ্র বিধান। ইহুদীদের জাতীয় ইতিহাসের মাধ্যমে এই শিক্ষাই আমাদের দেয়া হচ্ছে।
আয়াতঃ 002.072
যখন তোমরা একজনকে হত্যা করে পরে সে সম্পর্কে একে অপরকে অভিযুক্ত করেছিলে। যা তোমরা গোপন করছিলে, তা প্রকাশ করে দেয়া ছিল আল্লাহর অভিপ্রায়।
And (remember) when you killed a man and fell into dispute among yourselves as to the crime. But Allâh brought forth that which you were hiding.
وَإِذْ قَتَلْتُمْ نَفْساً فَادَّارَأْتُمْ فِيهَا وَاللّهُ مُخْرِجٌ مَّا كُنتُمْ تَكْتُمُونَ
Wa-ith qataltum nafsan faiddara/tum feeha waAllahu mukhrijun ma kuntum taktumoona
YUSUFALI: Remember ye slew a man and fell into a dispute among yourselves as to the crime: But Allah was to bring forth what ye did hide.
PICKTHAL: And (remember) when ye slew a man and disagreed concerning it and Allah brought forth that which ye were hiding.
SHAKIR: And when you killed a man, then you disagreed with respect to that, and Allah was to bring forth that which you were going to hide.
KHALIFA: You had killed a soul, then disputed among yourselves. GOD was to expose what you tried to conceal.
৬৮। তারা বলেছিলো, ‘আমাদের পক্ষ থেকে তোমার প্রভুর নিকট প্রার্থনা করে স্পষ্টভাবে আমাদের জন্য জেনে নাও [বক্না গাভীটি] কেমন হবে! সে [মুসা] বলেছিলো, [আল্লাহ্ বলেছেন]: ‘বক্না গাভীটি খুব বৃদ্ধও নয় আবার খুব বাচ্চাও নয়, কিন্তু তা হবে এ দুয়ের মাঝামাঝি বয়সের। এখন তোমাদের যা আদেশ করা হয়েছে তা কর।’
৬৯। তারা বলেছিলো, ‘আমাদের পক্ষ থেকে তোমার প্রভুর নিকট প্রার্থনা করে স্পষ্টভাবে জেনে নাও উহার রং কি?’ সে [মুসা] বলেছিলো, ‘আল্লাহ্ বলেছেন, [হরিণ শিশুর ন্যায়] হলুদ বর্ণের গাভী, উজ্জ্বল রং এর আমেজ যা দর্শকদের সন্তুষ্ট করে।’
৭০। তারা বলেছিলো, ‘আমাদের পক্ষ থেকে তোমার প্রভুর নিকট বল, তিনি যেনো আমাদের সুস্পষ্ট করে বলেন এটি কেমন হবে; আমাদের নিকট সকল গাভীই এক রকম; যদি আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন তবে নিশ্চয়ই আমরা নির্দেশ পাব।
৭১। সে বলেছিলো, ‘আল্লাহা বলেছেন, উহা এমন একটি গাভী যা ক্ষেত চাষ বা পানি সেচের জন্য ব্যবহৃত হয় নাই। সুস্থ এবং নিখুঁত।’ তারা বলেছিলো, ‘এখন তুমি সত্য এনেছ।’ অতঃপর তারা গাভীটিকে কোরবাণী দিলো যদিও তারা তা করতে ইচ্ছুক ছিলো না।
রুকু – ৯
৭২। স্মরণ কর যখন তোমরা এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে ৮১, এবং অপরাধের ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিলে। কিন্তু তোমরা যা গোপন করেছিলে, আল্লাহ্ তা প্রকাশ করে দিতেছেন।
৮১। ইহুদী ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী এক ব্যক্তিকে হত্যা করে মাঠে ফেলে রাখা হয়েছিলো, কেউই জানতো না তার হত্যাকারী কে? আল্লাহ্র নির্দেশ হলো বক্না গাভী কোরবানী দিয়ে তার উপরে নগরের প্রতিটি লোক তার হস্ত প্রক্ষালন করবে এবং নিজেকে নির্দোষ দাবী করবে। এভাবেই তাদেরকে রক্তের ঋণ শোধ করতে হুকুম দেয়া হল। প্রথমে তারা একে অন্যকে দোষারোপ শুরু করলো, তারপরে তারা চেষ্টা করলো যেন বক্না গাভটিকে কোরবানী দেওয়া না হয়, সেজন্য নানা টালবাহানা বের করলো যেমন বর্ণনা করা হয়েছে। যখন গরু জবাই হলো, আল্লাহ্র হুকুমে মৃত ব্যক্তি জীবিত হয়ে তার হত্যাকারীকে সনাক্ত করলো।
এই আয়াতের উপদেশ হচ্ছে, মানুষ তার পাপ ও অন্যায়কে লুকাতে চায়। এটা হতে পারে ব্যক্তিগতভাবে বা সমষ্টিগতভাবে। কিন্তু পাপ কখনও লুকায়িত থাকে না। যে কোন ভাবেই হোক পাপ জনসম্মুখে প্রকাশ পাবেই। এ-ই হচ্ছে আল্লাহ্র বিধান। ইহুদীদের জাতীয় ইতিহাসের মাধ্যমে এই শিক্ষাই আমাদের দেয়া হচ্ছে।
আয়াতঃ 002.073
অতঃপর আমি বললামঃ গরুর একটি খন্ড দ্বারা মৃতকে আঘাত কর। এভাবে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শণ সমূহ প্রদর্শন করেন-যাতে তোমরা চিন্তা কর।
So We said: ”Strike him (the dead man) with a piece of it (the cow).” Thus Allâh brings the dead to life and shows you His Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.) so that you may understand.
فَقُلْنَا اضْرِبُوهُ بِبَعْضِهَا كَذَلِكَ يُحْيِي اللّهُ الْمَوْتَى وَيُرِيكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
Faqulna idriboohu bibaAAdiha kathalika yuhyee Allahu almawta wayureekum ayatihi laAAallakum taAAqiloona
YUSUFALI: So We said: “Strike the (body) with a piece of the (heifer).” Thus Allah bringeth the dead to life and showeth you His Signs: Perchance ye may understand.
PICKTHAL: And We said: Smite him with some of it. Thus Allah bringeth the dead to life and showeth you His portents so that ye may understand.
SHAKIR: So We said: Strike the (dead body) with part of the (Sacrificed cow), thus Allah brings the dead to life, and He shows you His signs so that you may understand.
KHALIFA: We said, “Strike (the victim) with part (of the heifer).” That is when GOD brought the victim back to life, and showed you His signs, that you may understand.
৭৩। সুতরাং আমি বললাম, ‘গাভীর একটি অংশ দ্বারা [মৃত দেহটিকে] আঘাত কর।’ এভাবেই আল্লাহ্ মৃতকে জীবিত করেন এবং তোমাদের তাঁর নিদর্শনসমূহ দেখান। সম্ভবতঃ তোমরা বুঝতে পারবে।
৭৪। এরপরও তোমাদের হৃদয় কঠিন হয়ে গেলো; কাঠিন্যে পাথরের মত অথবা তদপেক্ষা অধিক। পাথরের মধ্যে এমনও কতক আছে যেগুলি থেকে নদী বেগে উৎসারিত হয়; কতক এমন আছে যেগুলি বিদীর্ণ হলে তা থেকে পানি নির্গত হয়; এবং এমনও কতক আছে যা আল্লাহ্র ভয়ে ধ্বসে পড়ে। এবং তোমরা যা কর আল্লাহ্ সে সম্বন্ধে অমনোযোগী নন ৮২।
৮২। পাপী লোকের হৃদয় কঠিন থেকে কঠিনতর হয় যত দিন যায়। সুন্দর উপমার সাহায্যে বর্ণনা করা হয়েছে যে এদের হৃদয় শক্ত পাথরের থেকেও শক্ত। আমাদের ধারণা প্রকৃতিতে পাথরের থেকে শক্ত আর কিছু নাই। কিন্তু এই পাথরের বুক চিরেই ঝর্ণাধারার উৎপত্তি হয়-যা পরবর্তীতে নদীতে রূপান্তরিত হয়। যে নদীপ্রবাহ মানুষের জীবন ফুলে-ফলে ভরিয়ে তোলে। আবার এমন পাথরের স্তর আছে যা ডিনামাইটের সাহায্যে উড়িয়ে দিলে তার নীচে সুমিষ্ট পানিয় জলের স্তরের সন্ধান পাওয়া যায়। আবার এমন অনেক পাথরের স্তর আছে যা প্রাকৃতিক কারণে বা ভূমির চাপ বা ভূমিকম্পন ইত্যাদিতে মাটির নীচে ডুবে যায় এবং ফলশ্রুতিতে পানির স্তরকে মাটির উপরে এনে দেয়। এর একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে-১৯৩৪ সালে বিহারের ভূমিকম্পে ঠিক এরকমই এক ঘটনা ঘটে। একেই কবিতার ছন্দে উপমার সাহায্যে বলা হচ্ছে বিশ্ব প্রকৃতি আল্লাহ্র হুকুম মেনে চলে। এমনকি কঠিন পাথরের বুকেও সুমিষ্ট পানির সন্ধান লাভ করা যায় আল্লাহ্র হুকুমে। ঠিক সেইরকম যে কঠিন হৃদয়ে শুধুমাত্র আল্লাহ্ ভীতি থাকবে সে হৃদয় যত কঠিনই হোক না কেন একদিন না একদিন তা অনুতাপের আগুনে গলে চোখের পানিতে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করবে। খোদভীতি তার অন্তরের তন্ত্রীগুলোতে অনুতাপের আগুন জ্বেলে দেবে। পাথরের বুকে যেমন সুমিষ্ট ঝর্ণাধারার সৃষ্টি হয়, অনুতাপের আগুনে কঠিন হৃদয়ে আল্লাহ্ প্রেমের অমিয় ধারার সৃষ্টি হবে। কিন্তু জ্ঞান পাপীর হৃদয় ঐ প্রস্তর খন্ডের চেয়েও বেশি শক্ত। পৃথিবীর কোন শক্তিই ঐ হৃদয়কে আল্লাহ্র ভয়ে ভীত করতে পারবে না। পারবে না ঐ কঠিন হৃদয় থেকে উৎসরিত করতে আল্লাহ্ প্রেমের অমিয় ধারা।
আয়াতঃ 002.074
অতঃপর এ ঘটনার পরে তোমাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেছে। তা পাথরের মত অথবা তদপেক্ষাও কঠিন। পাথরের মধ্যে এমন ও আছে; যা থেকে ঝরণা প্রবাহিত হয়, এমনও আছে, যা বিদীর্ণ হয়, অতঃপর তা থেকে পানি নির্গত হয় এবং এমনও আছে, যা আল্লাহর ভয়ে খসেপড়তে থাকে! আল্লাহ তোমাদের কাজকর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন।
Then, after that, your hearts were hardened and became as stones or even worse in hardness. And indeed, there are stones out of which rivers gush forth, and indeed, there are of them (stones) which split asunder so that water flows from them, and indeed, there are of them (stones) which fall down for fear of Allâh. And Allâh is not unaware of what you do.
ثُمَّ قَسَتْ قُلُوبُكُم مِّن بَعْدِ ذَلِكَ فَهِيَ كَالْحِجَارَةِ أَوْ أَشَدُّ قَسْوَةً وَإِنَّ مِنَ الْحِجَارَةِ لَمَا يَتَفَجَّرُ مِنْهُ الأَنْهَارُ وَإِنَّ مِنْهَا لَمَا يَشَّقَّقُ فَيَخْرُجُ مِنْهُ الْمَاء وَإِنَّ مِنْهَا لَمَا يَهْبِطُ مِنْ خَشْيَةِ اللّهِ وَمَا اللّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ
Thumma qasat quloobukum min baAAdi thalika fahiya kaalhijarati aw ashaddu qaswatan wa-inna mina alhijarati lama yatafajjaru minhu al-anharu wa-inna minha lama yashshaqqaqu fayakhruju minhu almao wa-inna minha lama yahbitu min khashyati Allahi wama Allahu bighafilin AAamma taAAmaloona
YUSUFALI: Thenceforth were your hearts hardened: They became like a rock and even worse in hardness. For among rocks there are some from which rivers gush forth; others there are which when split asunder send forth water; and others which sink for fear of Allah. And Allah is not unmindful of what ye do.
PICKTHAL: Then, even after that, your hearts were hardened and became as rocks, or worse than rocks, for hardness. For indeed there are rocks from out which rivers gush, and indeed there are rocks which split asunder so that water floweth from them. And indeed there are rocks which fall down for the fear of Allah. Allah is not unaware of what ye do.
SHAKIR: Then your hearts hardened after that, so that they were like rocks, rather worse in hardness; and surely there are some rocks from which streams burst forth, and surely there are some of them which split asunder so water issues out of them, and surely there are some of them which fall down for fear of Allah, and Allah is not at all heedless of what you do.
KHALIFA: Despite this, your hearts hardened like rocks, or even harder. For there are rocks from which rivers gush out. Others crack and release gentle streams, and other rocks cringe out of reverence for GOD. GOD is never unaware of anything you do.
৭৩। সুতরাং আমি বললাম, ‘গাভীর একটি অংশ দ্বারা [মৃত দেহটিকে] আঘাত কর।’ এভাবেই আল্লাহ্ মৃতকে জীবিত করেন এবং তোমাদের তাঁর নিদর্শনসমূহ দেখান। সম্ভবতঃ তোমরা বুঝতে পারবে।
৭৪। এরপরও তোমাদের হৃদয় কঠিন হয়ে গেলো; কাঠিন্যে পাথরের মত অথবা তদপেক্ষা অধিক। পাথরের মধ্যে এমনও কতক আছে যেগুলি থেকে নদী বেগে উৎসারিত হয়; কতক এমন আছে যেগুলি বিদীর্ণ হলে তা থেকে পানি নির্গত হয়; এবং এমনও কতক আছে যা আল্লাহ্র ভয়ে ধ্বসে পড়ে। এবং তোমরা যা কর আল্লাহ্ সে সম্বন্ধে অমনোযোগী নন ৮২।
৮২। পাপী লোকের হৃদয় কঠিন থেকে কঠিনতর হয় যত দিন যায়। সুন্দর উপমার সাহায্যে বর্ণনা করা হয়েছে যে এদের হৃদয় শক্ত পাথরের থেকেও শক্ত। আমাদের ধারণা প্রকৃতিতে পাথরের থেকে শক্ত আর কিছু নাই। কিন্তু এই পাথরের বুক চিরেই ঝর্ণাধারার উৎপত্তি হয়-যা পরবর্তীতে নদীতে রূপান্তরিত হয়। যে নদীপ্রবাহ মানুষের জীবন ফুলে-ফলে ভরিয়ে তোলে। আবার এমন পাথরের স্তর আছে যা ডিনামাইটের সাহায্যে উড়িয়ে দিলে তার নীচে সুমিষ্ট পানিয় জলের স্তরের সন্ধান পাওয়া যায়। আবার এমন অনেক পাথরের স্তর আছে যা প্রাকৃতিক কারণে বা ভূমির চাপ বা ভূমিকম্পন ইত্যাদিতে মাটির নীচে ডুবে যায় এবং ফলশ্রুতিতে পানির স্তরকে মাটির উপরে এনে দেয়। এর একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে-১৯৩৪ সালে বিহারের ভূমিকম্পে ঠিক এরকমই এক ঘটনা ঘটে। একেই কবিতার ছন্দে উপমার সাহায্যে বলা হচ্ছে বিশ্ব প্রকৃতি আল্লাহ্র হুকুম মেনে চলে। এমনকি কঠিন পাথরের বুকেও সুমিষ্ট পানির সন্ধান লাভ করা যায় আল্লাহ্র হুকুমে। ঠিক সেইরকম যে কঠিন হৃদয়ে শুধুমাত্র আল্লাহ্ ভীতি থাকবে সে হৃদয় যত কঠিনই হোক না কেন একদিন না একদিন তা অনুতাপের আগুনে গলে চোখের পানিতে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করবে। খোদভীতি তার অন্তরের তন্ত্রীগুলোতে অনুতাপের আগুন জ্বেলে দেবে। পাথরের বুকে যেমন সুমিষ্ট ঝর্ণাধারার সৃষ্টি হয়, অনুতাপের আগুনে কঠিন হৃদয়ে আল্লাহ্ প্রেমের অমিয় ধারার সৃষ্টি হবে। কিন্তু জ্ঞান পাপীর হৃদয় ঐ প্রস্তর খন্ডের চেয়েও বেশি শক্ত। পৃথিবীর কোন শক্তিই ঐ হৃদয়কে আল্লাহ্র ভয়ে ভীত করতে পারবে না। পারবে না ঐ কঠিন হৃদয় থেকে উৎসরিত করতে আল্লাহ্ প্রেমের অমিয় ধারা।
আয়াতঃ 002.075
হে মুসলমানগণ, তোমরা কি আশা কর যে, তারা তোমাদের কথায় ঈমান আনবে? তাদের মধ্যে একদল ছিল, যারা আল্লাহর বাণী শ্রবণ করত; অতঃপর বুঝে-শুনে তা পরিবর্তন করে দিত এবং তারা তা অবগত ছিল।
Do you (faithful believers) covet that they will believe in your religion inspite of the fact that a party of them (Jewish rabbis) used to hear the Word of Allâh [the Taurât (Torah)], then they used to change it knowingly after they understood it?
أَفَتَطْمَعُونَ أَن يُؤْمِنُواْ لَكُمْ وَقَدْ كَانَ فَرِيقٌ مِّنْهُمْ يَسْمَعُونَ كَلاَمَ اللّهِ ثُمَّ يُحَرِّفُونَهُ مِن بَعْدِ مَا عَقَلُوهُ وَهُمْ يَعْلَمُونَ
AfatatmaAAoona an yu/minoo lakum waqad kana fareequn minhum yasmaAAoona kalama Allahi thumma yuharrifoonahu min baAAdi ma AAaqaloohu wahum yaAAlamoona
YUSUFALI: Can ye (o ye men of Faith) entertain the hope that they will believe in you?- Seeing that a party of them heard the Word of Allah, and perverted it knowingly after they understood it.
PICKTHAL: Have ye any hope that they will be true to you when a party of them used to listen to the word of Allah, then used to change it, after they had understood it, knowingly?
SHAKIR: Do you then hope that they would believe in you, and a party from among them indeed used to hear the Word of Allah, then altered it after they had understood it, and they know (this).
KHALIFA: Do you expect them to believe as you do, when some of them used to hear the word of GOD, then distort it, with full understanding thereof, and deliberately?
৭৫। [হে বিশ্বাসী সম্প্রদায়] তোমরা কি এই আশা পোষণ কর যে, তারা তোমাদের কথায় ঈমান আনবে? – যখন তাদের একদল আল্লাহ্র বাণী শোনে এবং তা হৃদয়ঙ্গম করার পরে; জেনে-বুঝে বিকৃত করে থাকে।
৭৬। দেখো! যখন তারা মুমিনদের সংস্পর্শে আসে, তারা বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’ ৮৩, কিন্তু যখন তারা একান্তে পরস্পরের সাথে মিলিত হয়, তখন তারা বলে, ‘আল্লাহ্ তোমাদের যে প্রত্যাদেশ দিয়েছেন তোমরা কি তাদের তা বলে দেবে; যেনো ইহার দ্বারা তোমাদের বিরুদ্ধে আল্লাহ্র সামনে যুক্তি পেশ করতে পারে?’ তোমরা কি [তাদের উদ্দেশ্য] বুঝতে পার না ?
৮৩। তাৎক্ষণিকভাবে এই আয়াতে মদিনার সমসাময়িক ইহুদী সম্প্রদায়ের সম্পর্কে বলা হয়েছে। কিন্তু এর আবেদন সার্বজনীন-সর্বকালের, সর্ব সম্প্রদায়ের জন্য প্রযোজ্য-
মদিনার মুসলিমদের ধারণা ছিল ইহুদীরা হযরত মুহম্মদ-কে (সাঃ) নবী হিসেবে সাদরে গ্রহণ করবে। কারণ তাদের ধর্মগ্রন্থে মুহম্মদ (দঃ) সম্বন্ধে বলা আছে। কিন্তু মুসলমানদের এ ধারণা ছিল ভুল। তাদের ধর্মগ্রন্থে [Deut xviii-১৮] এ বর্ণিত আছে যে, ‘I will raise them up a prophet from among their brethen, like unto thee’ অর্থাৎ হযরত মুসার মত।
এই লাইনটি ইহুদীদের মধ্যে কিছু গুণী এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন যে, আমাদের নবী হযরত মুহম্মদ (সাঃ) হচ্ছেন আল্লাহ্র অঙ্গীকার করা সেই নবী। ফলে অনেকেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। আরবেরা সেমেটিকদের স্বগোত্রভূক্ত। ইহুদীরা সেমোটিক গোত্রভূক্ত। সুতরাং ইহুদী ধর্মগ্রন্থে সঠিকভাবেই বর্ণিত হয়েছে যে, ‘তোমাদের ভ্রাতৃদের মধ্যে থেকেই হযরত মুসার মত নবী প্রেরণ করা হবে’। আর এ কথাও ঠিক যে হযরত মুহম্মদ (দঃ) ব্যতীত আর কোনও নবীই হযরত মুসার মত ছিলেন না। ওল্ড টেস্টামেন্টের পঞ্চম গ্রন্থ ‘Deuteronomy’ যা হযরত মুসার বহু পরে লেখা হয়েছিলো, তাতে বলা হয়েছে, ‘There arose not a prophet since in Israel like unto Moses, whom the lord knew face to face.’
তাই হযরত মুহম্মদের (দঃ) আগমনে ইহুদীরা অত্যন্ত হিংসা অনুভব করতে থাকলো। কারণ হযরত মুহম্মদকে (দঃ) হযরত মুসার প্রতিদ্বন্দী ভাবতে শুরু করলো। মুসলমানদের সাথে তারা দ্বৈত ভূমিকা পালন করতে থাকলো। মদিনায় যখন ধীরে ধীরে মুসলিম কমিউনিটি বড় হতে থাকলো এবং শক্তি সংগ্রহ করতে থাকলো, তখন ইহুদীরা এমন ভান করতে থাকলো যে তারা মুসলিমদের উন্নতিতে খুশী এবং তারা তাদেরই একজন। কিন্তু সত্যিকারভাবে তাদের মনোভাব ছিল অন্য। তারা সযত্নে তাদের ধর্মগ্রন্থ বর্ণিত হযরত মুহম্মদের (দঃ) আগমন বার্তা গোপন রাখে যেনো তারা এ ব্যাপারে কখনও প্রশ্নের সম্মুখীন না হয়।
ইহুদীদের এই দ্বৈত ভূমিকা সমন্বিত এই আয়াতটির সার্বজনীন ব্যাখ্যা হচ্ছে সর্বকালের, সর্বযুগের, সর্বসাধারণের জন্য। আল্লাহ্তে বিশ্বাস হচ্ছে এক ধরণের নৈতিক মূল্যবোধ, এক ধরনের নীতিজ্ঞান, এক ধরণের আদর্শ। যুগে-যুগে, কালে-কালে, বিশ্বাস বা আদর্শকে টিকে থাকার জন্য জিহাদ করা হয়েছে, ক্ষমতা, শক্তি, সামাজিক মর্যাদা, প্রতিষ্ঠা, সংঘটিত সংঘ ও প্রতিষ্ঠান এবং বিশেষ সুযোগ সুবিধার বিরুদ্ধে। এই জিহাদে বিশ্বাস বা সদ্যনীতি বা আদর্শ যখন জয়লাভ করে তখন দেখা যায় যে, সব প্রতিকূল শক্তি বা অবিশ্বাসীরা যারা এতদিন বাধা দান করেছে তারা বন্ধুর ছদ্মবেশে, মিত্রের ছদ্মবেশে তাদের দিকে সখ্যতার হাত বাড়ায়। কিন্তু অবিশ্বাসীরা কোনও নীতিতেই বিশ্বাসী নয়, তারা সব সময়েই বিশ্বাসীদের অর্থাৎ নীতিজ্ঞান সম্পন্নদের কাফেলার সাফল্যে ঈর্ষান্বিত। বন্ধুত্ব তাদের একটি ভান মাত্র।
বিশ্বাসীরা তাদের জ্ঞান ও মেধাকে আল্লাহ্র রাস্তায় ব্যয় করে ফলে আল্লাহ্ তাদের জ্ঞান ও মেধাকে [এই জ্ঞান শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান বা ধর্মের ইত্যাদির] আরও বিকশিত করেন। তাদের এই সাফল্য অবিশ্বাসীদের আরও হিংসার কারণ হয়। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, তিনি সবই জানেন। বিশ্বাসীদের সত্যিকারভাবে জ্ঞানার্জন করতে বলা হচ্ছে এবং এর জন্য সর্বপ্রকার দুঃখ কষ্ট স্বীকার করতেও দ্বিধাবোধ না করে, এমনকি প্রয়োজনে বিদ্যা অর্জনের জন্য সুদূর চীন দেশে যেতেও তাদের অনুপ্রাণিত করা হচ্ছে। এরপর আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে বিশ্বাসীদের এই জ্ঞানকে যদি জনহিতকর কার্যে নিয়োজিত করা হয় তবে অবশ্য ছদ্মবেশধারী অবিশ্বাসীরা বিশ্বাসীদের কাছে পরাজিত হতে বাধ্য হবে। অবিশ্বাসীরা হয় নীতিজ্ঞান শূন্য, কপট ও ভণ্ড। তারা সু-সময়েই বন্ধুর ছদ্মবেশে বিশ্বাসীদের আস্থাভাজন হয়ে তাদের বিপথে চালিত করতে চায়।
আয়াতঃ 002.076
যখন তারা মুসলমানদের সাথে মিলিত হয়, তখন বলেঃ আমরা মুসলমান হয়েছি। আর যখন পরস্পরের সাথে নিভৃতে অবস্থান করে, তখন বলে, পালনকর্তা তোমাদের জন্যে যা প্রকাশ করেছেন, তা কি তাদের কাছে বলে দিচ্ছ? তাহলে যে তারা এ নিয়ে পালকর্তার সামনে তোমাদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করবে। তোমরা কি তা উপলব্ধি কর না?
And when they (Jews) meet those who believe (Muslims), they say, ”We believe”, but when they meet one another in private, they say, ”Shall you (Jews) tell them (Muslims) what Allâh has revealed to you [Jews, about the description and the qualities of Prophet Muhammad Peace be upon him , that which are written in the Taurât (Torah)] , that they (Muslims) may argue with you (Jews) about it before your Lord?” Have you (Jews) then no understanding?
وَإِذَا لَقُواْ الَّذِينَ آمَنُواْ قَالُواْ آمَنَّا وَإِذَا خَلاَ بَعْضُهُمْ إِلَىَ بَعْضٍ قَالُواْ أَتُحَدِّثُونَهُم بِمَا فَتَحَ اللّهُ عَلَيْكُمْ لِيُحَآجُّوكُم بِهِ عِندَ رَبِّكُمْ أَفَلاَ تَعْقِلُونَ
Wa-itha laqoo allatheena amanoo qaloo amanna wa-itha khala baAAduhum ila baAAdin qaloo atuhaddithoonahum bima fataha Allahu AAalaykum liyuhajjookum bihi AAinda rabbikum afala taAAqiloona
YUSUFALI: Behold! when they meet the men of Faith, they say: “We believe”: But when they meet each other in private, they say: “Shall you tell them what Allah hath revealed to you, that they may engage you in argument about it before your Lord?”- Do ye not understand (their aim)?
PICKTHAL: And when they fall in with those who believe, they say: We believe. But when they go apart one with another they say: Prate ye to them of that which Allah hath disclosed to you that they may contend with you before your Lord concerning it? Have ye then no sense?
SHAKIR: And when they meet those who believe they say: We believe, and when they are alone one with another they say: Do you talk to them of what Allah has disclosed to you that they may contend with you by this before your Lord? Do you not then understand?
KHALIFA: And when they meet the believers, they say, “We believe,” but when they get together with each other, they say, “Do not inform (the believers) of the information given to you by GOD, lest you provide them with support for their argument concerning your Lord. Do you not understand?”
৭৫। [হে বিশ্বাসী সম্প্রদায়] তোমরা কি এই আশা পোষণ কর যে, তারা তোমাদের কথায় ঈমান আনবে? – যখন তাদের একদল আল্লাহ্র বাণী শোনে এবং তা হৃদয়ঙ্গম করার পরে; জেনে-বুঝে বিকৃত করে থাকে।
৭৬। দেখো! যখন তারা মুমিনদের সংস্পর্শে আসে, তারা বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’ ৮৩, কিন্তু যখন তারা একান্তে পরস্পরের সাথে মিলিত হয়, তখন তারা বলে, ‘আল্লাহ্ তোমাদের যে প্রত্যাদেশ দিয়েছেন তোমরা কি তাদের তা বলে দেবে; যেনো ইহার দ্বারা তোমাদের বিরুদ্ধে আল্লাহ্র সামনে যুক্তি পেশ করতে পারে?’ তোমরা কি [তাদের উদ্দেশ্য] বুঝতে পার না ?
৮৩। তাৎক্ষণিকভাবে এই আয়াতে মদিনার সমসাময়িক ইহুদী সম্প্রদায়ের সম্পর্কে বলা হয়েছে। কিন্তু এর আবেদন সার্বজনীন-সর্বকালের, সর্ব সম্প্রদায়ের জন্য প্রযোজ্য-
মদিনার মুসলিমদের ধারণা ছিল ইহুদীরা হযরত মুহম্মদ-কে (সাঃ) নবী হিসেবে সাদরে গ্রহণ করবে। কারণ তাদের ধর্মগ্রন্থে মুহম্মদ (দঃ) সম্বন্ধে বলা আছে। কিন্তু মুসলমানদের এ ধারণা ছিল ভুল। তাদের ধর্মগ্রন্থে [Deut xviii-১৮] এ বর্ণিত আছে যে, ‘I will raise them up a prophet from among their brethen, like unto thee’ অর্থাৎ হযরত মুসার মত।
এই লাইনটি ইহুদীদের মধ্যে কিছু গুণী এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন যে, আমাদের নবী হযরত মুহম্মদ (সাঃ) হচ্ছেন আল্লাহ্র অঙ্গীকার করা সেই নবী। ফলে অনেকেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। আরবেরা সেমেটিকদের স্বগোত্রভূক্ত। ইহুদীরা সেমোটিক গোত্রভূক্ত। সুতরাং ইহুদী ধর্মগ্রন্থে সঠিকভাবেই বর্ণিত হয়েছে যে, ‘তোমাদের ভ্রাতৃদের মধ্যে থেকেই হযরত মুসার মত নবী প্রেরণ করা হবে’। আর এ কথাও ঠিক যে হযরত মুহম্মদ (দঃ) ব্যতীত আর কোনও নবীই হযরত মুসার মত ছিলেন না। ওল্ড টেস্টামেন্টের পঞ্চম গ্রন্থ ‘Deuteronomy’ যা হযরত মুসার বহু পরে লেখা হয়েছিলো, তাতে বলা হয়েছে, ‘There arose not a prophet since in Israel like unto Moses, whom the lord knew face to face.’
তাই হযরত মুহম্মদের (দঃ) আগমনে ইহুদীরা অত্যন্ত হিংসা অনুভব করতে থাকলো। কারণ হযরত মুহম্মদকে (দঃ) হযরত মুসার প্রতিদ্বন্দী ভাবতে শুরু করলো। মুসলমানদের সাথে তারা দ্বৈত ভূমিকা পালন করতে থাকলো। মদিনায় যখন ধীরে ধীরে মুসলিম কমিউনিটি বড় হতে থাকলো এবং শক্তি সংগ্রহ করতে থাকলো, তখন ইহুদীরা এমন ভান করতে থাকলো যে তারা মুসলিমদের উন্নতিতে খুশী এবং তারা তাদেরই একজন। কিন্তু সত্যিকারভাবে তাদের মনোভাব ছিল অন্য। তারা সযত্নে তাদের ধর্মগ্রন্থ বর্ণিত হযরত মুহম্মদের (দঃ) আগমন বার্তা গোপন রাখে যেনো তারা এ ব্যাপারে কখনও প্রশ্নের সম্মুখীন না হয়।
ইহুদীদের এই দ্বৈত ভূমিকা সমন্বিত এই আয়াতটির সার্বজনীন ব্যাখ্যা হচ্ছে সর্বকালের, সর্বযুগের, সর্বসাধারণের জন্য। আল্লাহ্তে বিশ্বাস হচ্ছে এক ধরণের নৈতিক মূল্যবোধ, এক ধরনের নীতিজ্ঞান, এক ধরণের আদর্শ। যুগে-যুগে, কালে-কালে, বিশ্বাস বা আদর্শকে টিকে থাকার জন্য জিহাদ করা হয়েছে, ক্ষমতা, শক্তি, সামাজিক মর্যাদা, প্রতিষ্ঠা, সংঘটিত সংঘ ও প্রতিষ্ঠান এবং বিশেষ সুযোগ সুবিধার বিরুদ্ধে। এই জিহাদে বিশ্বাস বা সদ্যনীতি বা আদর্শ যখন জয়লাভ করে তখন দেখা যায় যে, সব প্রতিকূল শক্তি বা অবিশ্বাসীরা যারা এতদিন বাধা দান করেছে তারা বন্ধুর ছদ্মবেশে, মিত্রের ছদ্মবেশে তাদের দিকে সখ্যতার হাত বাড়ায়। কিন্তু অবিশ্বাসীরা কোনও নীতিতেই বিশ্বাসী নয়, তারা সব সময়েই বিশ্বাসীদের অর্থাৎ নীতিজ্ঞান সম্পন্নদের কাফেলার সাফল্যে ঈর্ষান্বিত। বন্ধুত্ব তাদের একটি ভান মাত্র।
বিশ্বাসীরা তাদের জ্ঞান ও মেধাকে আল্লাহ্র রাস্তায় ব্যয় করে ফলে আল্লাহ্ তাদের জ্ঞান ও মেধাকে [এই জ্ঞান শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান বা ধর্মের ইত্যাদির] আরও বিকশিত করেন। তাদের এই সাফল্য অবিশ্বাসীদের আরও হিংসার কারণ হয়। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, তিনি সবই জানেন। বিশ্বাসীদের সত্যিকারভাবে জ্ঞানার্জন করতে বলা হচ্ছে এবং এর জন্য সর্বপ্রকার দুঃখ কষ্ট স্বীকার করতেও দ্বিধাবোধ না করে, এমনকি প্রয়োজনে বিদ্যা অর্জনের জন্য সুদূর চীন দেশে যেতেও তাদের অনুপ্রাণিত করা হচ্ছে। এরপর আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে বিশ্বাসীদের এই জ্ঞানকে যদি জনহিতকর কার্যে নিয়োজিত করা হয় তবে অবশ্য ছদ্মবেশধারী অবিশ্বাসীরা বিশ্বাসীদের কাছে পরাজিত হতে বাধ্য হবে। অবিশ্বাসীরা হয় নীতিজ্ঞান শূন্য, কপট ও ভণ্ড। তারা সু-সময়েই বন্ধুর ছদ্মবেশে বিশ্বাসীদের আস্থাভাজন হয়ে তাদের বিপথে চালিত করতে চায়।
আয়াতঃ 002.077
তারা কি এতটুকুও জানে না যে, আল্লাহ সেসব বিষয়ও পরিজ্ঞাত যা তারা গোপন করে এবং যা প্রকাশ করে?
Know they (Jews) not that Allâh knows what they conceal and what they reveal?
أَوَلاَ يَعْلَمُونَ أَنَّ اللّهَ يَعْلَمُ مَا يُسِرُّونَ وَمَا يُعْلِنُونَ
Awa la yaAAlamoona anna Allaha yaAAlamu ma yusirroona wama yuAAlinoona
YUSUFALI: Know they not that Allah knoweth what they conceal and what they reveal?
PICKTHAL: Are they then unaware that Allah knoweth that which they keep hidden and that which they proclaim?
SHAKIR: Do they not know that Allah knows what they keep secret and what they make known?
KHALIFA: Do they not know that GOD knows everything they conceal, and everything they declare?
৭৭। তারা কি জানে না যে, তারা যা গোপন করে এবং তারা যা প্রকাশ করে আল্লাহ্ তা জানেন?
৭৮। তাদের মধ্যে কিছু নিরক্ষর লোক আছে, যারা [নিজেদের] আশা-আকাঙ্ক্ষা ব্যতীত কিতাব সম্বন্ধে কোন জ্ঞান নাই। তারা অনুমান ব্যতীত আর কিছু করে না। ৮৪
৮৪। এই আয়াতটি [২:৭৬] এর বর্ধিত অংশ হিসেবে ধরা হয়েছে। ইহুদীরা তাদের ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত জ্ঞানকে (অর্থাৎ হযরত মুহম্মদের (দঃ) আর্বিভাবের খবর) গোপন করতে চেয়েছিল। কিন্তু ইহুদীদের মধ্যে যারা ধর্মগ্রন্থ পড়তে পারতো তারাও নিরপেক্ষ ছিল না। অশিক্ষিতদের সাথে তাদের খুব পার্থক্য ছিল না। কারণ তারা তাদের ধর্মগ্রন্থের আসল উপদেশ খুব ভালভাবেই জানতো, কিন্তু তারা তা বিকৃত করে নিজেদের মনগড়া তথ্য যা শুধুমাত্র অনুমানভিত্তিক তা পরিবেশন করতো। তারা মানুষকে প্রতারণা করার জন্য নিজস্ব লেখাকে আল্লাহ্র বাণী বলে প্রচার করতো। এই জঘন্য প্রতারণা তাদের সাময়িক সুবিধা দান করতে সক্ষম হয়েছিলো। কিন্তু এই সুবিধা বা লাভ কখনও সত্যিকারের হতে পারে না। যদি এই সুবিধার পরিবর্তে সমস্ত পৃথিবীও করতলগত হয় তবুও তা জোচ্চুরি, আর তা হচ্ছে আত্মাকে বিক্রি করার সামিল। তারা ক্রয় করলো ‘Gained the whole world and lost their own souls.’ কারণ নিজের হাতে বাণী লিখে আল্লাহ্র বাণী বলে প্রচারিত করা জঘন্য পাপ। কারণ এর মধ্যে কোনও সত্য নাই।
[সর্বজনীন উপদেশ হচ্ছে, ধর্মহীনতা সব সময়েই নিজস্ব মনগড়া কাল্পনিক স্রষ্টা গড়তে ভালবাসে। ধর্মহীন ব্যক্তির নিজস্ব সুযোগ, সুবিধা, কল্পনা যা তাকে আত্মতৃপ্ত করে তার নিজস্ব কল্পনার জগৎকে। তার নিজস্ব ধর্মকে সে নিজে সৃষ্টি করে, কিন্তু প্রতারিত করে বিশ্বস্রষ্টার নামে। দেখা যায় তারা তাদের কামনা বাসনা চরিতার্থ করার জন্য অন্যায় অবিচার, অপরাধের আশ্রয় নেয়। এ সবই করে শুধুমাত্র জনসাধারণকে প্রভাবিত করার জন্য তাদের স্বপক্ষে, এর সাথে স্রষ্টার তুষ্টির কোন সম্পর্ক নাই। ধর্মের নামে এই অনাচার যুগে যুগে দেশে দেশে সংগঠিত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। এর থেকে আমরা মুসলমানেরাও বাদ যাচ্ছি না। এর ফল অত্যন্ত বিষদায়ক। তাৎক্ষণিকভাবে কখনও এর কিছু সুফল পাওয়া যেতে পারে তা খুব স্বল্প সময়ের জন্য। এ যেনো সেই সাবানের বুদবুদ যা স্বল্পকালের জন্য রামধনুর বর্ণালী বিচ্ছুরিত করে আকাশে ওড়ে কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফেটে যায়। সেইরূপ ধর্মের নামে জোচ্চুরী সব সময়েই ধ্বংস ডেকে আনবে।
আয়াতঃ 002.078
তোমাদের কিছু লোক নিরক্ষর। তারা মিথ্যা আকাঙ্খা ছাড়া আল্লাহর গ্রন্থের কিছুই জানে না। তাদের কাছে কল্পনা ছাড়া কিছুই নেই।
And there are among them (Jews) unlettered people, who know not the Book, but they trust upon false desires and they but guess.
وَمِنْهُمْ أُمِّيُّونَ لاَ يَعْلَمُونَ الْكِتَابَ إِلاَّ أَمَانِيَّ وَإِنْ هُمْ إِلاَّ يَظُنُّونَ
Waminhum ommiyyoona la yaAAlamoona alkitaba illa amaniyya wa-in hum illa yathunnoona
YUSUFALI: And there are among them illiterates, who know not the Book, but (see therein their own) desires, and they do nothing but conjecture.
PICKTHAL: Among them are unlettered folk who know the Scripture not except from hearsay. They but guess.
SHAKIR: And there are among them illiterates who know not the Book but only lies, and they do but conjecture.
KHALIFA: Among them are gentiles who do not know the scripture, except through hearsay, then assume that they know it.
৭৭। তারা কি জানে না যে, তারা যা গোপন করে এবং তারা যা প্রকাশ করে আল্লাহ্ তা জানেন?
৭৮। তাদের মধ্যে কিছু নিরক্ষর লোক আছে, যারা [নিজেদের] আশা-আকাঙ্ক্ষা ব্যতীত কিতাব সম্বন্ধে কোন জ্ঞান নাই। তারা অনুমান ব্যতীত আর কিছু করে না। ৮৪
৮৪। এই আয়াতটি [২:৭৬] এর বর্ধিত অংশ হিসেবে ধরা হয়েছে। ইহুদীরা তাদের ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত জ্ঞানকে (অর্থাৎ হযরত মুহম্মদের (দঃ) আর্বিভাবের খবর) গোপন করতে চেয়েছিল। কিন্তু ইহুদীদের মধ্যে যারা ধর্মগ্রন্থ পড়তে পারতো তারাও নিরপেক্ষ ছিল না। অশিক্ষিতদের সাথে তাদের খুব পার্থক্য ছিল না। কারণ তারা তাদের ধর্মগ্রন্থের আসল উপদেশ খুব ভালভাবেই জানতো, কিন্তু তারা তা বিকৃত করে নিজেদের মনগড়া তথ্য যা শুধুমাত্র অনুমানভিত্তিক তা পরিবেশন করতো। তারা মানুষকে প্রতারণা করার জন্য নিজস্ব লেখাকে আল্লাহ্র বাণী বলে প্রচার করতো। এই জঘন্য প্রতারণা তাদের সাময়িক সুবিধা দান করতে সক্ষম হয়েছিলো। কিন্তু এই সুবিধা বা লাভ কখনও সত্যিকারের হতে পারে না। যদি এই সুবিধার পরিবর্তে সমস্ত পৃথিবীও করতলগত হয় তবুও তা জোচ্চুরি, আর তা হচ্ছে আত্মাকে বিক্রি করার সামিল। তারা ক্রয় করলো ‘Gained the whole world and lost their own souls.’ কারণ নিজের হাতে বাণী লিখে আল্লাহ্র বাণী বলে প্রচারিত করা জঘন্য পাপ। কারণ এর মধ্যে কোনও সত্য নাই।
[সর্বজনীন উপদেশ হচ্ছে, ধর্মহীনতা সব সময়েই নিজস্ব মনগড়া কাল্পনিক স্রষ্টা গড়তে ভালবাসে। ধর্মহীন ব্যক্তির নিজস্ব সুযোগ, সুবিধা, কল্পনা যা তাকে আত্মতৃপ্ত করে তার নিজস্ব কল্পনার জগৎকে। তার নিজস্ব ধর্মকে সে নিজে সৃষ্টি করে, কিন্তু প্রতারিত করে বিশ্বস্রষ্টার নামে। দেখা যায় তারা তাদের কামনা বাসনা চরিতার্থ করার জন্য অন্যায় অবিচার, অপরাধের আশ্রয় নেয়। এ সবই করে শুধুমাত্র জনসাধারণকে প্রভাবিত করার জন্য তাদের স্বপক্ষে, এর সাথে স্রষ্টার তুষ্টির কোন সম্পর্ক নাই। ধর্মের নামে এই অনাচার যুগে যুগে দেশে দেশে সংগঠিত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। এর থেকে আমরা মুসলমানেরাও বাদ যাচ্ছি না। এর ফল অত্যন্ত বিষদায়ক। তাৎক্ষণিকভাবে কখনও এর কিছু সুফল পাওয়া যেতে পারে তা খুব স্বল্প সময়ের জন্য। এ যেনো সেই সাবানের বুদবুদ যা স্বল্পকালের জন্য রামধনুর বর্ণালী বিচ্ছুরিত করে আকাশে ওড়ে কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফেটে যায়। সেইরূপ ধর্মের নামে জোচ্চুরী সব সময়েই ধ্বংস ডেকে আনবে।
আয়াতঃ 002.079
অতএব তাদের জন্যে আফসোস! যারা নিজ হাতে গ্রন্থ লেখে এবং বলে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ-যাতে এর বিনিময়ে সামান্য অর্থ গ্রহণ করতে পারে। অতএব তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের হাতের লেখার জন্য এবং তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের উপার্জনের জন্যে।
Then woe to those who write the Book with their own hands and then say, ”This is from Allâh,” to purchase with it a little price! Woe to them for what their hands have written and woe to them for that they earn thereby.
فَوَيْلٌ لِّلَّذِينَ يَكْتُبُونَ الْكِتَابَ بِأَيْدِيهِمْ ثُمَّ يَقُولُونَ هَـذَا مِنْ عِندِ اللّهِ لِيَشْتَرُواْ بِهِ ثَمَناً قَلِيلاً فَوَيْلٌ لَّهُم مِّمَّا كَتَبَتْ أَيْدِيهِمْ وَوَيْلٌ لَّهُمْ مِّمَّا يَكْسِبُونَ
Fawaylun lillatheena yaktuboona alkitaba bi-aydeehim thumma yaqooloona hatha min AAindi Allahi liyashtaroo bihi thamanan qaleelan fawaylun lahum mimma katabat aydeehim wawaylun lahum mimma yaksiboona
YUSUFALI: Then woe to those who write the Book with their own hands, and then say:”This is from Allah,” to traffic with it for miserable price!- Woe to them for what their hands do write, and for the gain they make thereby.
PICKTHAL: Therefore woe be unto those who write the Scripture with their hands and then say, “This is from Allah,” that they may purchase a small gain therewith. Woe unto them for that their hands have written, and woe unto them for that they earn thereby.
SHAKIR: Woe, then, to those who write the book with their hands and then say: This is from Allah, so that they may take for it a small price; therefore woe to them for what their hands have written and woe to them for what they earn.
KHALIFA: Therefore, woe to those who distort the scripture with their own hands, then say, “This is what GOD has revealed,” seeking a cheap material gain. Woe to them for such distortion, and woe to them for their illicit gains.
৭৯। তাদের জন্য দুর্ভোগ যারা নিজ হাতে কিতাব রচনা করে এবং ঘৃণ্য মূল্যে বাণিজ্য করার জন্য বলে, ‘এটা আল্লাহ্র নিকট থেকে [প্রাপ্ত]’।- তাদের হাত যা রচনা করেছে তার জন্য এবং তা দ্বারা যা তারা উপার্জন করেছে তার জন্য তাদের [নির্ধারিত আছে] দুঃখ।’
৮০। এবং তারা বলে, ‘দিন কতক ব্যতীত আগুন আমাদের স্পর্শ করবে না।’ ৮৫। বল, ‘তোমরা কি আল্লাহ্ সম্বন্ধে এমন কিছু বলছো যা তোমরা জান না?
৮৫। উদ্ধত অহংকারী ইহুদীরা দাবী করে যে, যেহেতু তারা হযরত ইব্রাহীমের বংশধর তারা যত গুণাহ্ করুক না কেন তারা বেহেশ্তে যাবেই। যদি তাদের কারও দোযখে যেতেই হয় তবে তা হবে শুধুমাত্র অল্প কয়েকদিনের জন্য। তারপর তাদের বেহেশ্তে পুনর্বাসিত করা হবে। তাদের এই মিথ্যা অহংকারকে বা মিথ্যা দাবীকে আল্লাহ্ [২ : ৮১-৮২] নাকচ করে দিয়েছেন। তাদের মিথ্যার ফানুস সত্যের আঘাতে ফুটো হয়ে গেছে।
সাধারণ উপদেশ হচ্ছে, ধর্মহীনতা উৎপন্ন করে মানসিক অবিশ্বাস, অবিশ্বস্ততা। আর তাই অবিশ্বাসী ব্যক্তিদের দেখা যায় নিজেদের সম্বন্ধে অন্ধ আত্ম অহংকারে মত্ত থাকতে। এরা নিজেদের সম্বন্ধে পদ মর্যাদা, উচ্চ বংশ গৌরব, সভ্যতা, সামাজিক, রাজনৈতিক ক্ষমতা দাবী করে। কারণ এরা মনে করে তারা আল্লাহ্ কর্তৃক নির্বাচিত ব্যক্তি। এরা জানে না যে, যা কিছুর উপরই তাদের লোভ থাকুক না কেন এর কোন কিছুই তাদের অধিকারে নেই। অসামান্য ধন-সম্পদ, প্রতিপত্তি নিয়েও মানুষ মুহূর্তের মধ্যে নির্মমভাবে লাঞ্ছিত হতে পারে। বাহ্যিকভাবে সুশ্রী হয়েও চিত্তে ধারণ করতে পারে অপরিমেয় অসুখ যন্ত্রণা। ক্ষমতার শীর্ষে থেকেও সাধারণ মানুষের পদদলিত হতে পারে, হতে পারে জীবনের প্রতিকূলে যে কোন বিপর্যয়। আর মানুষের জীবনের এইসব প্রাপ্তি কিংবা অপ্রাপ্তির কোন কিছুই মানুষের নিয়ন্ত্রণে নেই। মানুষ চেষ্টা করতে পারে কিন্তু চেষ্টা করার মানসিকতা তৈরি করতে পারে না। যখন আল্লাহ্ কাউকে সে মানসিকতা দেন আর যখন সে তা অবহেলা করে তখন কোন কিছুই আর তার জন্য ভাল অবস্থা তৈরি করতে পারে না। মানুষের মনের উপর সৃষ্টিকর্তার রয়েছে এই রকম সুক্ষ্ণ ও সর্বব্যাপী নিয়ন্ত্রণ। কিন্তু তাদের এই বিপরীতে মানসিক অবস্থা তাদের ধর্মহীনতারই ফসল। এই ধর্মহীনতার কয়েক রকম আছে। কেউ ধর্মের নামে ধর্মহীন, কেউ মানবতার নামে ধর্মহীন, কেউ ব্যক্তিস্বার্থে ধর্মহীন। তবে ধর্মহীনতার বা অবিশ্বাসের মূল কথা হচ্ছে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ। কিন্তু আল্লাহ্ সব জানেন-মানুষের অন্তরের নিয়ত সম্পর্কে। আল্লাহ্র রহমত তারই উপরে বর্ষিত হবে যে লোক দেখানো বা ব্যক্তিস্বার্থের জন্য নয়, শুধুমাত্র আল্লাহ্কে খুশী করার জন্যই চারিত্রিক গুণাবলী (Conduct of life) অর্জন করবে।
আয়াতঃ 002.080
তারা বলেঃ আগুন আমাদিগকে কখনও স্পর্শ করবে না; কিন্তু গণাগনতি কয়েকদিন। বলে দিনঃ তোমরা কি আল্লাহর কাছ থেকে কোন অঙ্গীকার পেয়েছ যে, আল্লাহ কখনও তার খেলাফ করবেন না-না তোমরা যা জান না, তা আল্লাহর সাথে জুড়ে দিচ্ছ।
And they (Jews) say, ”The Fire (i.e. Hell-fire on the Day of Resurrection) shall not touch us but for a few numbered days.” Say (O Muhammad Peace be upon him to them): ”Have you taken a covenant from Allâh, so that Allâh will not break His Covenant? Or is it that you say of Allâh what you know not?”
وَقَالُواْ لَن تَمَسَّنَا النَّارُ إِلاَّ أَيَّاماً مَّعْدُودَةً قُلْ أَتَّخَذْتُمْ عِندَ اللّهِ عَهْدًا فَلَن يُخْلِفَ اللّهُ عَهْدَهُ أَمْ تَقُولُونَ عَلَى اللّهِ مَا لاَ تَعْلَمُونَ
Waqaloo lan tamassana alnnaru illa ayyaman maAAdoodatan qul attakhathtum AAinda Allahi AAahdan falan yukhlifa Allahu AAahdahu am taqooloona AAala Allahi ma la taAAlamoona
YUSUFALI: And they say: “The Fire shall not touch us but for a few numbered days:” Say: “Have ye taken a promise from Allah, for He never breaks His promise? or is it that ye say of Allah what ye do not know?”
PICKTHAL: And they say: The Fire (of punishment) will not touch us save for a certain number of days. Say: Have ye received a covenant from Allah – truly Allah will not break His covenant – or tell ye concerning Allah that which ye know not?
SHAKIR: And they say: Fire shall not touch us but for a few days. Say: Have you received a promise from Allah, then Allah will not fail to perform His promise, or do you speak against Allah what you do not know?
KHALIFA: Some have said, “Hell will not touch us, except for a limited number of days.” Say, “Have you taken such a pledge from GOD – GOD never breaks His pledge – or, are you saying about GOD what you do not know?”
৭৯। তাদের জন্য দুর্ভোগ যারা নিজ হাতে কিতাব রচনা করে এবং ঘৃণ্য মূল্যে বাণিজ্য করার জন্য বলে, ‘এটা আল্লাহ্র নিকট থেকে [প্রাপ্ত]’।- তাদের হাত যা রচনা করেছে তার জন্য এবং তা দ্বারা যা তারা উপার্জন করেছে তার জন্য তাদের [নির্ধারিত আছে] দুঃখ।’
৮০। এবং তারা বলে, ‘দিন কতক ব্যতীত আগুন আমাদের স্পর্শ করবে না।’ ৮৫। বল, ‘তোমরা কি আল্লাহ্ সম্বন্ধে এমন কিছু বলছো যা তোমরা জান না?
৮৫। উদ্ধত অহংকারী ইহুদীরা দাবী করে যে, যেহেতু তারা হযরত ইব্রাহীমের বংশধর তারা যত গুণাহ্ করুক না কেন তারা বেহেশ্তে যাবেই। যদি তাদের কারও দোযখে যেতেই হয় তবে তা হবে শুধুমাত্র অল্প কয়েকদিনের জন্য। তারপর তাদের বেহেশ্তে পুনর্বাসিত করা হবে। তাদের এই মিথ্যা অহংকারকে বা মিথ্যা দাবীকে আল্লাহ্ [২ : ৮১-৮২] নাকচ করে দিয়েছেন। তাদের মিথ্যার ফানুস সত্যের আঘাতে ফুটো হয়ে গেছে।
সাধারণ উপদেশ হচ্ছে, ধর্মহীনতা উৎপন্ন করে মানসিক অবিশ্বাস, অবিশ্বস্ততা। আর তাই অবিশ্বাসী ব্যক্তিদের দেখা যায় নিজেদের সম্বন্ধে অন্ধ আত্ম অহংকারে মত্ত থাকতে। এরা নিজেদের সম্বন্ধে পদ মর্যাদা, উচ্চ বংশ গৌরব, সভ্যতা, সামাজিক, রাজনৈতিক ক্ষমতা দাবী করে। কারণ এরা মনে করে তারা আল্লাহ্ কর্তৃক নির্বাচিত ব্যক্তি। এরা জানে না যে, যা কিছুর উপরই তাদের লোভ থাকুক না কেন এর কোন কিছুই তাদের অধিকারে নেই। অসামান্য ধন-সম্পদ, প্রতিপত্তি নিয়েও মানুষ মুহূর্তের মধ্যে নির্মমভাবে লাঞ্ছিত হতে পারে। বাহ্যিকভাবে সুশ্রী হয়েও চিত্তে ধারণ করতে পারে অপরিমেয় অসুখ যন্ত্রণা। ক্ষমতার শীর্ষে থেকেও সাধারণ মানুষের পদদলিত হতে পারে, হতে পারে জীবনের প্রতিকূলে যে কোন বিপর্যয়। আর মানুষের জীবনের এইসব প্রাপ্তি কিংবা অপ্রাপ্তির কোন কিছুই মানুষের নিয়ন্ত্রণে নেই। মানুষ চেষ্টা করতে পারে কিন্তু চেষ্টা করার মানসিকতা তৈরি করতে পারে না। যখন আল্লাহ্ কাউকে সে মানসিকতা দেন আর যখন সে তা অবহেলা করে তখন কোন কিছুই আর তার জন্য ভাল অবস্থা তৈরি করতে পারে না। মানুষের মনের উপর সৃষ্টিকর্তার রয়েছে এই রকম সুক্ষ্ণ ও সর্বব্যাপী নিয়ন্ত্রণ। কিন্তু তাদের এই বিপরীতে মানসিক অবস্থা তাদের ধর্মহীনতারই ফসল। এই ধর্মহীনতার কয়েক রকম আছে। কেউ ধর্মের নামে ধর্মহীন, কেউ মানবতার নামে ধর্মহীন, কেউ ব্যক্তিস্বার্থে ধর্মহীন। তবে ধর্মহীনতার বা অবিশ্বাসের মূল কথা হচ্ছে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ। কিন্তু আল্লাহ্ সব জানেন-মানুষের অন্তরের নিয়ত সম্পর্কে। আল্লাহ্র রহমত তারই উপরে বর্ষিত হবে যে লোক দেখানো বা ব্যক্তিস্বার্থের জন্য নয়, শুধুমাত্র আল্লাহ্কে খুশী করার জন্যই চারিত্রিক গুণাবলী (Conduct of life) অর্জন করবে।
আয়াতঃ 002.081
হাঁ, যে ব্যক্তি পাপ অর্জন করেছে এবং সে পাপ তাকে পরিবেষ্টিত করে নিয়েছে, তারাই দোযখের অধিবাসী। তারা সেখানেই চিরকাল থাকবে।
Yes! Whosoever earns evil and his sin has surrounded him, they are dwellers of the Fire (i.e. Hell); they will dwell therein forever.
بَلَى مَن كَسَبَ سَيِّئَةً وَأَحَاطَتْ بِهِ خَطِيـئَتُهُ فَأُوْلَـئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
Bala man kasaba sayyi-atan waahatat bihi khatee-atuhu faola-ika as-habu alnnari hum feeha khalidoona
YUSUFALI: Nay, those who seek gain in evil, and are girt round by their sins,- they are companions of the Fire: Therein shall they abide (For ever).
PICKTHAL: Nay, but whosoever hath done evil and his sin surroundeth him; such are rightful owners of the Fire; they will abide therein.
SHAKIR: Yea, whoever earns evil and his sins beset him on every side, these are the inmates of the fire; in it they shall abide.
KHALIFA: Indeed, those who earn sins and become surrounded by their evil work will be the dwellers of Hell; they abide in it forever.
৮১। কেবল তাই নয়, যারা পাপ [কাজের মাধ্যমে] লাভ অনুসন্ধান করে, এবং যারা পরিবেষ্টিত হয় তাদের পাপ দ্বারা, এরাই হবে আগুনের অধিবাসী। সেখানে তারা [চিরকাল] থাকবে; ৮৬।
৮৬। নিজস্ব স্বার্থ বা লাভের জন্য যারা পাপ করে তারা আল্লাহ্র চোখে অত্যন্ত গুণাহ্গার। তারা সাধারণ পাপীদের থেকে বহুগুণ জঘন্য। কারণ নিজের স্বার্থ-লাভের জন্য যারা পাপ করে তারা চরম স্বার্থপর। স্বার্থপরতা এমন একটি দোষ যা মানুষের ন্যায় অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা লুপ্ত করে দেয়। আর ন্যায়-অন্যায়বোধ লুপ্ত মানুষ হয় সমস্ত নীতিজ্ঞান বা বিবেক বিবর্জিত। এর উদাহরণ আমরা বাংলাদেশীরা আমাদের চারিপাশে ব্যক্তি জীবনে বা জাতীয় জীবনে দেখতে পাই। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। কারণ আল্লাহ্ মানুষকে বিবেক দান করেছেন। কিন্তু মানুষ যখন তার নিজস্ব স্বার্থ উদ্ধারের জন্য সেই বিবেককে বিসর্জন দেয়, তখন অন্যায়ের পথ, পাপের পথ তার পক্ষে হয় অনেক সহজ, অনেক মসৃণ। নিজস্ব স্বার্থ হাসিলের জন্য যারা পাপ কাজ করে তাদের মানসিক অবস্থা [State of mind] এমনরূপ ধারণ করে যে, সেখানে কোনও ভালো, কোনও ন্যায়, কোনও সত্য প্রবেশ করতে পারে না। [They are impervious to truth and justice] অর্থাৎ তাদের ন্যায় ও সত্য বোঝার ক্ষমতা বিলুপ্ত হয়ে যায়। তাই আল্লাহ্ বলেছেন যারা শুধুমাত্র জাগতিক লাভ ও নিজস্ব স্বার্থের জন্য পাপ করে তাদের ক্ষতি সাধারণ পাপীদের থেকে অনেক বেশি। কারণ তারা তাদের আত্মাকে বিক্রি করে দেয় স্বার্থপরতার কাছে।
আয়াতঃ 002.082
পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তারাই জান্নাতের অধিবাসী। তারা সেখানেই চিরকাল থাকবে।
And those who believe (in the Oneness of Allâh ÊÚÇáì – Islâmic Monotheism) and do righteous good deeds, they are dwellers of Paradise, they will dwell therein forever.
وَالَّذِينَ آمَنُواْ وَعَمِلُواْ الصَّالِحَاتِ أُولَـئِكَ أَصْحَابُ الْجَنَّةِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
Waallatheena amanoo waAAamiloo alssalihati ola-ika as-habu aljannati hum feeha khalidoona
YUSUFALI: But those who have faith and work righteousness, they are companions of the Garden: Therein shall they abide (For ever).
PICKTHAL: And those who believe and do good works: such are rightful owners of the Garden. They will abide therein.
SHAKIR: And (as for) those who believe and do good deeds, these are the dwellers of the garden; in it they shall abide.
KHALIFA: As for those who believe, and lead a righteous life, they will be the dwellers of Paradise; they abide in it forever.
৮২। কিন্তু যাদের আছে ঈমান এবং যারা সৎকাজ করে, তারা হবে [বেহেশতের] বাগানের অধিবাসী। সেখানে তারা [চিরদিন] থাকবে।
রুকু – ১০
৮৩। এবং স্মরণ কর, আমি বনী ইসরাঈলীদের নিকট থেকে [এই মর্মে] অঙ্গীকার নিয়েছিলাম ৮৭ যে, আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারও এবাদত করবে না; পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন এবং এতিম ও অভাবগ্রস্থের সাথে সদয় ব্যবহার করবে। মানুষের সাথে সুন্দরভাবে কথা বলবে। সালাতে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত থাকবে। যাকাত দেয়ার অভ্যাস গঠন করবে। অতঃপর তোমাদের মাঝে স্বল্প সংখ্যক ব্যতীত তোমরা [তা থেকে] মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। এবং [এখন পর্যন্ত] তোমরা পতিত হয়ে আছ।
৮৭। উপরের আয়াতে বলা হচ্ছে যে সেই সব নির্দেশের কথা যা তাওরাতে আল্লাহ্ হযরত মুসাকে দিয়েছিলেন। আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, একত্ববাদে ঈমান, পিতা-মাতা, এতিম বালক-বালিকা ও দীন-দরিদ্রের সেবা যত্ন করা, সব মানুষের ভালর জন্য কথা বলা এবং যাকাত দেওয়া ইসলামী শরীয়তসহ পূর্ববর্তী শরিয়তসমূহেও বিদ্যমান ছিল। অর্থাৎ এইসব নৈতিক অনুশাসন সর্বকালের, সর্বযুগের, সর্বজাতির জন্য প্রযোজ্য [Universal]। যদি কেউ আল্লাহ্র এই আইন অমান্য বা লঙ্ঘন করে, তবে আল্লাহ্র শাস্তি সবার জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। কারও জন্য তা লাঘব করা হবে না। [২ : ৮৬]।
‘মানুষের সাথে সুন্দরভাবে কথা বলবে’ বা ‘Speak fair to the people’ কথাটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ। এর আবেদন অনেক গভীর। শুধুমাত্র বাহ্যিক ভালো ব্যবহার চরিত্রের নম্রতা প্রকাশ করে না। এর অর্থ অনেক গভীর, অনেক ব্যাপক। নিপীড়িত, বঞ্চিত ও শোষিত এদের সাথে শুধু ভাল ব্যবহারই যথেষ্ট নয়, এদের অধিকারের জন্য কথা বলা, দুঃখীর সান্তনার জন্য কথা বলা, দুঃখ মোচনের জন্য কাজ করা, সত্য গোপন না করে সত্যর জন্য কথা বলা, এ সবই এই আয়াতটির দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে। অর্থাৎ যেখানেই মানুষের প্রতি অন্যায় অবিচার হতে দেখা যাবে সেখানেই আল্লাহ্ নির্দেশ অনুযায়ী তার পাশে দাঁড়াতে হবে, তার হয়ে কথা বলতে হবে।
আয়াতঃ 002.083
যখন আমি বনী-ইসরাঈলের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিলাম যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারও উপাসনা করবে না, পিতা-মাতা, আত্নীয়-স্বজন, এতীম ও দীন-দরিদ্রদের সাথে সদ্ব্যবহার করবে, মানুষকে সৎ কথাবার্তা বলবে, নামায প্রতিষ্ঠা করবে এবং যাকাত দেবে, তখন সামান্য কয়েকজন ছাড়া তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিলে, তোমরাই অগ্রাহ্যকারী।
And (remember) when We took a covenant from the Children of Israel, (saying): Worship none but Allâh (Alone) and be dutiful and good to parents, and to kindred, and to orphans and Al-Masâkîn (the poor), [Tafsir At-Tabarî, Vol. 10, Page 158 (Verse 9:60)] and speak good to people [i.e. enjoin righteousness and forbid evil, and say the truth about Muhammad Peace be upon him ], and perform As-Salât (Iqâmat-as-Salât), and give Zakât. Then you slid back, except a few of you, while you are backsliders. (Tafsir Al-Qurtubî, Vol. 2, Page 392).
وَإِذْ أَخَذْنَا مِيثَاقَ بَنِي إِسْرَائِيلَ لاَ تَعْبُدُونَ إِلاَّ اللّهَ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَاناً وَذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَقُولُواْ لِلنَّاسِ حُسْناً وَأَقِيمُواْ الصَّلاَةَ وَآتُواْ الزَّكَاةَ ثُمَّ تَوَلَّيْتُمْ إِلاَّ قَلِيلاً مِّنكُمْ وَأَنتُم مِّعْرِضُونَ
Wa-ith akhathna meethaqa banee isra-eela la taAAbudoona illa Allaha wabialwalidayni ihsanan wathee alqurba waalyatama waalmasakeeni waqooloo lilnnasi husnan waaqeemoo alssalata waatoo alzzakata thumma tawallaytum illa qaleelan minkum waantum muAAridoona
YUSUFALI: And remember We took a covenant from the Children of Israel (to this effect): Worship none but Allah; treat with kindness your parents and kindred, and orphans and those in need; speak fair to the people; be steadfast in prayer; and practise regular charity. Then did ye turn back, except a few among you, and ye backslide (even now).
PICKTHAL: And (remember) when We made a covenant with the Children of Israel, (saying): Worship none save Allah (only), and be good to parents and to kindred and to orphans and the needy, and speak kindly to mankind; and establish worship and pay the poor-due. Then, after that, ye slid back, save a few of you, being averse.
SHAKIR: And when We made a covenant with the children of Israel: You shall not serve any but Allah and (you shall do) good to (your) parents, and to the near of kin and to the orphans and the needy, and you shall speak to men good words and keep up prayer and pay the poor-rate. Then you turned back except a few of you and (now too) you turn aside.
KHALIFA: We made a covenant with the Children of Israel: “You shall not worship except GOD. You shall honor your parents and regard the relatives, the orphans, and the poor. You shall treat the people amicably. You shall observe the Contact Prayers (Salat) and give the obligatory charity (Zakat).” But you turned away, except a few of you, and you became averse.
৮২। কিন্তু যাদের আছে ঈমান এবং যারা সৎকাজ করে, তারা হবে [বেহেশতের] বাগানের অধিবাসী। সেখানে তারা [চিরদিন] থাকবে।
রুকু – ১০
৮৩। এবং স্মরণ কর, আমি বনী ইসরাঈলীদের নিকট থেকে [এই মর্মে] অঙ্গীকার নিয়েছিলাম ৮৭ যে, আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারও এবাদত করবে না; পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন এবং এতিম ও অভাবগ্রস্থের সাথে সদয় ব্যবহার করবে। মানুষের সাথে সুন্দরভাবে কথা বলবে। সালাতে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত থাকবে। যাকাত দেয়ার অভ্যাস গঠন করবে। অতঃপর তোমাদের মাঝে স্বল্প সংখ্যক ব্যতীত তোমরা [তা থেকে] মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। এবং [এখন পর্যন্ত] তোমরা পতিত হয়ে আছ।
৮৭। উপরের আয়াতে বলা হচ্ছে যে সেই সব নির্দেশের কথা যা তাওরাতে আল্লাহ্ হযরত মুসাকে দিয়েছিলেন। আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, একত্ববাদে ঈমান, পিতা-মাতা, এতিম বালক-বালিকা ও দীন-দরিদ্রের সেবা যত্ন করা, সব মানুষের ভালর জন্য কথা বলা এবং যাকাত দেওয়া ইসলামী শরীয়তসহ পূর্ববর্তী শরিয়তসমূহেও বিদ্যমান ছিল। অর্থাৎ এইসব নৈতিক অনুশাসন সর্বকালের, সর্বযুগের, সর্বজাতির জন্য প্রযোজ্য [Universal]। যদি কেউ আল্লাহ্র এই আইন অমান্য বা লঙ্ঘন করে, তবে আল্লাহ্র শাস্তি সবার জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। কারও জন্য তা লাঘব করা হবে না। [২ : ৮৬]।
‘মানুষের সাথে সুন্দরভাবে কথা বলবে’ বা ‘Speak fair to the people’ কথাটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ। এর আবেদন অনেক গভীর। শুধুমাত্র বাহ্যিক ভালো ব্যবহার চরিত্রের নম্রতা প্রকাশ করে না। এর অর্থ অনেক গভীর, অনেক ব্যাপক। নিপীড়িত, বঞ্চিত ও শোষিত এদের সাথে শুধু ভাল ব্যবহারই যথেষ্ট নয়, এদের অধিকারের জন্য কথা বলা, দুঃখীর সান্তনার জন্য কথা বলা, দুঃখ মোচনের জন্য কাজ করা, সত্য গোপন না করে সত্যর জন্য কথা বলা, এ সবই এই আয়াতটির দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে। অর্থাৎ যেখানেই মানুষের প্রতি অন্যায় অবিচার হতে দেখা যাবে সেখানেই আল্লাহ্ নির্দেশ অনুযায়ী তার পাশে দাঁড়াতে হবে, তার হয়ে কথা বলতে হবে।
আয়াতঃ 002.084
যখন আমি তোমাদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিলাম যে, তোমরা পরস্পর খুনাখুনি করবে না এবং নিজেদেরকে দেশ থেকে বহিস্কার করবে না, তখন তোমরা তা স্বীকার করেছিলে এবং তোমরা তার সাক্ষ্য দিচ্ছিলে।
And (remember) when We took your covenant (saying): Shed not the blood of your people, nor turn out your own people from their dwellings. Then, (this) you ratified and (to this) you bear witness.
وَإِذْ أَخَذْنَا مِيثَاقَكُمْ لاَ تَسْفِكُونَ دِمَاءكُمْ وَلاَ تُخْرِجُونَ أَنفُسَكُم مِّن دِيَارِكُمْ ثُمَّ أَقْرَرْتُمْ وَأَنتُمْ تَشْهَدُونَ
Wa-ith akhathna meethaqakum la tasfikoona dimaakum wala tukhrijoona anfusakum min diyarikum thumma aqrartum waantum tashhadoona
YUSUFALI: And remember We took your covenant (to this effect): Shed no blood amongst you, nor turn out your own people from your homes: and this ye solemnly ratified, and to this ye can bear witness.
PICKTHAL: And when We made with you a covenant (saying): Shed not the blood of your people nor turn (a party of) your people out of your dwellings. Then ye ratified (Our covenant) and ye were witnesses (thereto).
SHAKIR: And when We made a covenant with you: You shall not shed your blood and you shall not turn your people out of your cities; then you gave a promise while you witnessed.
KHALIFA: We made a covenant with you, that you shall not shed your blood, nor shall you evict each other from your homes. You agreed and bore witness.
৮৪। এবং স্মরণ কর, আমি [এই মর্মে] তোমাদের অঙ্গীকার নিয়েছিলাম যে, ৮৮ নিজেদের মধ্যে রক্তপাত ঘটাবে না, নিজ সম্প্রদায়কে দেশ ছাড়া করবে না। তোমরা তা শ্রদ্ধার সাথে অনুমোদন করেছিলে এবং এ বিষয়ে তোমরাই ছিলে সাক্ষী।
৮৮। [২ : ৮৩] আয়াতটি হচ্ছে সার্বজনীন। পূর্বের আয়াতে যে অঙ্গীকার নেওয়া হয়েছিল [২:৮৪], আয়াতে তারই পরিশিষ্ট বর্ণনা করা হয়েছে। এই পরিশিষ্টে বলা হচ্ছে যে, মদিনায় হযরত মুহম্মদের (দঃ) নেতৃত্বে যে মুসলিম সম্প্রদায়ের সৃষ্টি হয়েছে, তাদের সাথে মদিনার ইহুদীরা চুক্তিতে আসে যার শর্তগুলি আয়াতে [২:৮৪] বর্ণিত হয়েছে। চুক্তিটি ইব্নে হিশামের সিরাত-উর-রসূল এবং আমীর আলীর স্পিরিট অফ ইসলাম গ্রন্থে [পৃষ্ঠা ৫৭-৬১ লন্ডন ১৯২২] বর্ণিত আছে। হিযরতের দ্বিতীয় বর্ষে মদিনায় ইহুদীরা বিশ্বাস ঘাতকতা করে এবং ঐ চুক্তি লঙ্ঘন করে। সে সম্পর্কে এখানে বলা হয়েছে।
আয়াতঃ 002.085
অতঃপর তোমরাই পরস্পর খুনাখুনি করছ এবং তোমাদেরই একদলকে তাদের দেশ থেকে বহিস্কার করছ। তাদের বিরুদ্ধে পাপ ও অন্যায়ের মাধ্যমে আক্রমণ করছ। আর যদি তারাই কারও বন্দী হয়ে তোমাদের কাছে আসে, তবে বিনিময় নিয়ে তাদের মুক্ত করছ। অথচ তাদের বহিস্কার করাও তোমাদের জন্য অবৈধ। তবে কি তোমরা গ্রন্থের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে পার্থিব জীবনে দূগর্তি ছাড়া তাদের আর কোনই পথ নেই। কিয়ামতের দিন তাদের কঠোরতম শাস্তির দিকে পৌঁছে দেয়া হবে। আল্লাহ তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন।
After this, it is you who kill one another and drive out a party of you from their homes, assist (their enemies) against them, in sin and transgression. And if they come to you as captives, you ransom them, although their expulsion was forbidden to you. Then do you believe in a part of the Scripture and reject the rest? Then what is the recompense of those who do so among you, except disgrace in the life of this world, and on the Day of Resurrection they shall be consigned to the most grievous torment. And Allâh is not unaware of what you do.
ثُمَّ أَنتُمْ هَـؤُلاء تَقْتُلُونَ أَنفُسَكُمْ وَتُخْرِجُونَ فَرِيقاً مِّنكُم مِّن دِيَارِهِمْ تَظَاهَرُونَ عَلَيْهِم بِالإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَإِن يَأتُوكُمْ أُسَارَى تُفَادُوهُمْ وَهُوَ مُحَرَّمٌ عَلَيْكُمْ إِخْرَاجُهُمْ أَفَتُؤْمِنُونَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُونَ بِبَعْضٍ فَمَا جَزَاء مَن يَفْعَلُ ذَلِكَ مِنكُمْ إِلاَّ خِزْيٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرَدُّونَ إِلَى أَشَدِّ الْعَذَابِ وَمَا اللّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ
Thumma antum haola-i taqtuloona anfusakum watukhrijoona fareeqan minkum min diyarihim tathaharoona AAalayhim bial-ithmi waalAAudwani wa-in ya/tookum osara tufadoohum wahuwa muharramun AAalaykum ikhrajuhum afatu/minoona bibaAAdi alkitabi watakfuroona bibaAAdin fama jazao man yafAAalu thalika minkum illa khizyun fee alhayati alddunya wayawma alqiyamati yuraddoona ila ashaddi alAAathabi wama Allahu bighafilin AAamma taAAmaloona
YUSUFALI: After this it is ye, the same people, who slay among yourselves, and banish a party of you from their homes; assist (Their enemies) against them, in guilt and rancour; and if they come to you as captives, ye ransom them, though it was not lawful for you to banish them. Then is it only a part of the Book that ye believe in, and do ye reject the rest? but what is the reward for those among you who behave like this but disgrace in this life?- and on the Day of Judgment they shall be consigned to the most grievous penalty. For Allah is not unmindful of what ye do.
PICKTHAL: Yet ye it is who slay each other and drive out a party of your people from their homes, supporting one another against them by sin and transgression? – and if they came to you as captives ye would ransom them, whereas their expulsion was itself unlawful for you – Believe ye in part of the Scripture and disbelieve ye in part thereof? And what is the reward of those who do so save ignominy in the life of the world, and on the Day of Resurrection they will be consigned to the most grievous doom. For Allah is not unaware of what ye do.
SHAKIR: Yet you it is who slay your people and turn a party from among you out of their homes, backing each other up against them unlawfully and exceeding the limits; and if they should come to you, as captives you would ransom them– while their very turning out was unlawful for you. Do you then believe in a part of the Book and disbelieve in the other? What then is the re ward of such among you as do this but disgrace in the life of this world, and on the day of resurrection they shall be sent back to the most grievous chastisement, and Allah is not at all heedless of what you do.
KHALIFA: Yet, here you are killing each other, and evicting some of you from their homes, banding against them sinfully and maliciously. Even when they surrendered, you demanded ransom from them. Evicting them was prohibited for you in the first place. Do you believe in part of the scripture and disbelieve in part? What should be the retribution for those among you who do this, except humiliation in this life, and a far worse retribution on the Day of Resurrection? GOD is never unaware of anything you do.
৮৫। এরপরে, তোমরা সেই একই সম্প্রদায়, যারা নিজেরা নিজেদের হত্যা করেছ এবং তোমাদেরই একদলকে তাদের দেশ থেকে নির্বাসিত করেছ। তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ ও বিদ্বেষ পোষণ করতে, তাদের [শত্রুদের] সাহায্য করছো। এবং তারা যখন বন্দীরূপে তোমাদের নিকট উপস্থিত হয় তখন তোমরা তাদের মুক্তিপণ দাও ৮৯। অথচ তাদের নির্বাসিত করা তোমাদের জন্য বৈধ ছিল না। তবে কি তোমরা কিতাবের কিছু অংশ বিশ্বাস কর এবং অবশিষ্টাংশ প্রত্যাখ্যান কর? সুতরাং তোমাদের মধ্য যারা এরূপ ব্যবহার করো, এই জীবনে তাদের জন্য অসম্মান ব্যতীত আর কি পুরস্কার আছে? এবং শেষ বিচারের দিনে তাদের ভয়াবহ শাস্তির দিকে নিক্ষিপ্ত করা হবে। তোমরা যা কর আল্লাহ্ সে সম্বন্ধে অমনোযোগী নন।
৮৯। বনী ইসরাঈলকে তিনটি নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। প্রথমতঃ খুনোখুনী না করা, দ্বিতীয়তঃ বহিস্কার অর্থাৎ দেশত্যাগে বাধ্য না করা, তৃতীয়তঃ স্বগোত্রের কেউ কারও হাতে বন্দী হলে অর্থের বিনিময়ে তাকে মুক্ত করা। এই আয়াতটি অনুবাদের সময়ে কেউ কেউ ‘মুক্তিপণ আদায়’ করতো আবার কেউ ‘মুক্তিপণ দিত’ এই অনুবাদ করেছেন। সে সময়ে মদিনায় অনেকগুলি ইহুদী গোত্র বাস করতো। এর মধ্যে আওস ও খাযরাজ গোত্রের মধ্যে যুদ্ধ-বিগ্রহ প্রায়ই লেগে থাকতো এবং এই সব যুদ্ধ বিগ্রহে উষ্কানী এবং প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিজেদের সুযোগ সুবিধা মত মদদ দেওয়াই ছিল অন্যান্য ইহুদী গোত্রদের কাজ। বিনিময়ে তারা যুদ্ধলব্ধ ধন-সম্পদের হিস্সা পেত। তদুপরি তারা পরাজিতদের দেশ থেকে বহিষ্কার করতো। ইহুদীরা নিজেদের মধ্যে ঝগড়া ফ্যাসাদ প্রায়ই করতো ফলে তারা আল্লাহ্র প্রথম ও দ্বিতীয় আদেশ অমান্য করতো। তৃতীয় আদেশ যদি অনুবাদ হয় মুক্তিপণ নিত অর্থাৎ অর্থের বিনিময়ে মুক্ত করতো, তবে তৃতীয় আদেশও অমান্য করতো কিন্তু যদি অনুবাদ হয় ‘মুক্তিপণ দিত’ অর্থাৎ মুক্ত করার জন্য তারা টাকা পয়সা দিত। সেক্ষেত্রে অনেক অনুবাদকের মতে, ইহুদীরা আল্লাহ্র প্রথম দুটি আদেশ অমান্য করে ধার্মিকতা প্রদর্শনের জন্য যুদ্ধবন্দী ঘটা করে মুক্ত করতো এবং সে জন্য চাঁদা প্রদান করতো। অথচ যুদ্ধ না করার ও অযথা নির্বাসন না দেওয়ার ওয়াদা ভঙ্গ করতে তারা দ্বিধাবোধ করে নাই।
এই আয়াতটির সার্বজনীন উপদেশ হচ্ছে একদিকে আল্লাহ্র হুকুম অমান্য করা অন্যদিকে ধার্মিকতা প্রদর্শন করা ইহুদীদের এই মানসিকতা সর্বকালে সর্বস্থানে পৃথিবীর বহু জাতির মধ্যে দেখা যায়। যেমন-আমাদের দেশে অসৎ পথে অর্জিত অর্থে দান-ধ্যান করে ধার্মিকতা প্রদর্শন করে। অথচ অসৎ পথে অর্থ উপার্জন আল্লাহ্র নিষেধ। এই নিষেধ ভঙ্গ করতে দ্বিধাবোধ করে না; কিন্তু সে অর্থে ধার্মিকতা প্রদর্শনে আত্মতৃপ্তি পায় এ রকম উদাহরণ পৃথিবীর বহু জাতির মধ্যে বিদ্যমান।
আয়াতঃ 002.086
এরাই পরকালের বিনিময়ে পার্থিব জীবন ক্রয় করেছে। অতএব এদের শাস্তি লঘু হবে না এবং এরা সাহায্যও পাবে না।
Those are they who have bought the life of this world at the price of the Hereafter. Their torment shall not be lightened nor shall they be helped.
أُولَـئِكَ الَّذِينَ اشْتَرَوُاْ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا بِالآَخِرَةِ فَلاَ يُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلاَ هُمْ يُنصَرُونَ
Ola-ika allatheena ishtarawoo alhayata alddunya bial-akhirati fala yukhaffafu AAanhumu alAAathabu wala hum yunsaroona
YUSUFALI: These are the people who buy the life of this world at the price of the Hereafter: their penalty shall not be lightened nor shall they be helped.
PICKTHAL: Such are those who buy the life of the world at the price of the Hereafter. Their punishment will not be lightened, neither will they have support.
SHAKIR: These are they who buy the life of this world for the hereafter, so their chastisement shall not be lightened nor shall they be helped.
KHALIFA: It is they who bought this lowly life at the expense of the Hereafter. Consequently, the retribution is never commuted for them, nor can they be helped.
৮৬। এরাই তারা, যারা পরকালের বিনিময়ে পার্থিব জীবনকে ক্রয় করে থাকে। তাদের শাস্তিকে লঘু করা হবে না অথবা তাদের সাহায্যও করা হবে না।
রুকু – ১১
৮৭। আমি মুসাকে কিতাব দিয়েছিলাম এবং তাকে অনুসরণ করে পর্যায়ক্রমে রাসূল প্রেরণ করেছি। আমি মরিয়ম পুত্র ঈসাকে স্পষ্ট [প্রমাণ] দান করেছি এবং পবিত্র আত্মা দ্বারা শক্তিশালী করেছি ৯০। তবে কি যখনই কোন রাসূল তোমাদের নিকট এমন কিছু এনেছে যা তোমাদের মনঃপূত হয় নাই, তখনই তোমরা অহংকারে স্ফীত হয়েছ?-এদের কতককে বলেছ প্রতারক এবং অন্যদের করেছ হত্যা ৯১।
৯০। [১৯:১৬-৩৪] এই আয়াতগুলিতে যীশুখৃষ্টের জন্মের বিবরণ দেয়া হয়েছে। কেন তাঁকে ‘মরিয়মের পুত্র’ নামে সম্বোধন করা হয়েছে? ‘স্পষ্ট প্রমাণ’ কি? ‘পবিত্র আত্মা’ কে যা দ্বারা তাঁকে শক্তিশালী করা হয়েছিলো? আমরা কুরআনের এই উক্তি সম্বন্ধে পরে আলোচনা করবো। দেখুন সূরা ৩, আয়াত ৬২ এবং টিকা ৪০১।
৯১। সেকশন ১১-১৩, আয়াত [২:৮৭-১১২] পর্যন্ত সাধারণভাবে কিতাবী লোকদের সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে বিশেষভাবে ইহুদী ও খৃষ্টানদের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। খৃষ্টানদের ধর্মগ্রন্থে যেসব নৈতিক আইনাবলী বিদ্যমান তা ইহুদীদের কিতাব যা আল্লাহ্ মুসাকে দান করেছেন তারই অনুরূপ। হযরত মুহম্মদের (দঃ) ধর্ম ইসলামের শিক্ষা সেই একই স্রষ্টার কাছ থেকে আগত। সুতরাং খৃষ্টান বা ইহুদীদের তা না বোঝার বা না সনাক্ত করার কথা নয়। কিন্তু তাদের অন্ধ অহংকার ও উদ্ধতপনা তাদের ইসলাম গ্রহণে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সাধারণ উপদেশ হচ্ছে, অহংকার একটি খারাপ রিপু যা সত্যকে দেখতে, অনুধাবন করতে ও গ্রহণ করতে বাধা দেয়।
আয়াতঃ 002.087
অবশ্যই আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছি। এবং তার পরে পর্যায়ক্রমে রসূল পাঠিয়েছি। আমি মরিয়ম তনয় ঈসাকে সুস্পষ্ট মোজেযা দান করেছি এবং পবিত্র রূহের মাধ্যমে তাকে শক্তিদান করেছি। অতঃপর যখনই কোন রসূল এমন নির্দেশ নিয়ে তোমাদের কাছে এসেছে, যা তোমাদের মনে ভাল লাগেনি, তখনই তোমরা অহংকার করেছ। শেষ পর্যন্ত তোমরা একদলকে মিথ্যাবাদী বলেছ এবং একদলকে হত্যা করেছ।
And indeed, We gave Mûsa (Moses) the Book and followed him up with a succession of Messengers. And We gave ’Iesa (Jesus), the son of Maryam (Mary), clear signs and supported him with Rûh-ul-Qudus [Jibrael (Gabriel) ]. Is it that whenever there came to you a Messenger with what you yourselves desired not, you grew arrogant? Some, you disbelieved and some, you killed.
وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَى الْكِتَابَ وَقَفَّيْنَا مِن بَعْدِهِ بِالرُّسُلِ وَآتَيْنَا عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ الْبَيِّنَاتِ وَأَيَّدْنَاهُ بِرُوحِ الْقُدُسِ أَفَكُلَّمَا جَاءكُمْ رَسُولٌ بِمَا لاَ تَهْوَى أَنفُسُكُمُ اسْتَكْبَرْتُمْ فَفَرِيقاً كَذَّبْتُمْ وَفَرِيقاً تَقْتُلُونَ
Walaqad atayna moosa alkitaba waqaffayna min baAAdihi bialrrusuli waatayna AAeesa ibna maryama albayyinati waayyadnahu biroohi alqudusi afakullama jaakum rasoolun bima la tahwa anfusukumu istakbartum fafareeqan kaththabtum wafareeqan taqtuloona
YUSUFALI: We gave Moses the Book and followed him up with a succession of messengers; We gave Jesus the son of Mary Clear (Signs) and strengthened him with the holy spirit. Is it that whenever there comes to you a messenger with what ye yourselves desire not, ye are puffed up with pride?- Some ye called impostors, and others ye slay!
PICKTHAL: And verily We gave unto Moses the Scripture and We caused a train of messengers to follow after him, and We gave unto Jesus, son of Mary, clear proofs (of Allah’s sovereignty), and We supported him with the Holy spirit. Is it ever so, that, when there cometh unto you a messenger (from Allah) with that which ye yourselves desire not, ye grow arrogant, and some ye disbelieve and some ye slay?
SHAKIR: And most certainly We gave Musa the Book and We sent messengers after him one after another; and We gave Isa, the son of Marium, clear arguments and strengthened him with the holy spirit, What! whenever then a messenger came to you with that which your souls did not desire, you were insolent so you called some liars and some you slew.
KHALIFA: We gave Moses the scripture, and subsequent to him we sent other messengers, and we gave Jesus, son of Mary, profound miracles and supported him with the Holy Spirit. Is it not a fact that every time a messenger went to you with anything you disliked, your ego caused you to be arrogant? Some of them you rejected, and some of them you killed.
৮৬। এরাই তারা, যারা পরকালের বিনিময়ে পার্থিব জীবনকে ক্রয় করে থাকে। তাদের শাস্তিকে লঘু করা হবে না অথবা তাদের সাহায্যও করা হবে না।
রুকু – ১১
৮৭। আমি মুসাকে কিতাব দিয়েছিলাম এবং তাকে অনুসরণ করে পর্যায়ক্রমে রাসূল প্রেরণ করেছি। আমি মরিয়ম পুত্র ঈসাকে স্পষ্ট [প্রমাণ] দান করেছি এবং পবিত্র আত্মা দ্বারা শক্তিশালী করেছি ৯০। তবে কি যখনই কোন রাসূল তোমাদের নিকট এমন কিছু এনেছে যা তোমাদের মনঃপূত হয় নাই, তখনই তোমরা অহংকারে স্ফীত হয়েছ?-এদের কতককে বলেছ প্রতারক এবং অন্যদের করেছ হত্যা ৯১।
৯০। [১৯:১৬-৩৪] এই আয়াতগুলিতে যীশুখৃষ্টের জন্মের বিবরণ দেয়া হয়েছে। কেন তাঁকে ‘মরিয়মের পুত্র’ নামে সম্বোধন করা হয়েছে? ‘স্পষ্ট প্রমাণ’ কি? ‘পবিত্র আত্মা’ কে যা দ্বারা তাঁকে শক্তিশালী করা হয়েছিলো? আমরা কুরআনের এই উক্তি সম্বন্ধে পরে আলোচনা করবো। দেখুন সূরা ৩, আয়াত ৬২ এবং টিকা ৪০১।
৯১। সেকশন ১১-১৩, আয়াত [২:৮৭-১১২] পর্যন্ত সাধারণভাবে কিতাবী লোকদের সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে বিশেষভাবে ইহুদী ও খৃষ্টানদের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। খৃষ্টানদের ধর্মগ্রন্থে যেসব নৈতিক আইনাবলী বিদ্যমান তা ইহুদীদের কিতাব যা আল্লাহ্ মুসাকে দান করেছেন তারই অনুরূপ। হযরত মুহম্মদের (দঃ) ধর্ম ইসলামের শিক্ষা সেই একই স্রষ্টার কাছ থেকে আগত। সুতরাং খৃষ্টান বা ইহুদীদের তা না বোঝার বা না সনাক্ত করার কথা নয়। কিন্তু তাদের অন্ধ অহংকার ও উদ্ধতপনা তাদের ইসলাম গ্রহণে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সাধারণ উপদেশ হচ্ছে, অহংকার একটি খারাপ রিপু যা সত্যকে দেখতে, অনুধাবন করতে ও গ্রহণ করতে বাধা দেয়।
আয়াতঃ 002.088
তারা বলে, আমাদের হৃদয় অর্ধাবৃত। এবং তাদের কুফরের কারণে আল্লাহ অভিসম্পাত করেছেন। ফলে তারা অল্পই ঈমান আনে।
And they say, ”Our hearts are wrapped (i.e. do not hear or understand Allâh’s Word).” Nay, Allâh has cursed them for their disbelief, so little is that which they believe.
وَقَالُواْ قُلُوبُنَا غُلْفٌ بَل لَّعَنَهُمُ اللَّه بِكُفْرِهِمْ فَقَلِيلاً مَّا يُؤْمِنُونَ
Waqaloo quloobuna ghulfun bal laAAanahumu Allahu bikufrihim faqaleelan ma yu/minoona
YUSUFALI: They say, “Our hearts are the wrappings (which preserve Allah’s Word: we need no more).” Nay, Allah’s curse is on them for their blasphemy: Little is it they believe.
PICKTHAL: And they say: Our hearts are hardened. Nay, but Allah hath cursed them for their unbelief. Little is that which they believe.
SHAKIR: And they say: Our hearts are covered. Nay, Allah has cursed them on account of their unbelief; so little it is that they believe.
KHALIFA: Some would say, “Our minds are made up!” Instead, it is a curse from GOD, as a consequence of their disbelief, that keeps them from believing, except for a few of them.
৮৮। তারা বলেছিলো, ‘আমাদের হৃদয় আচ্ছাদিত ৯২ [তা আল্লাহ্র বাণীকে সংরক্ষিত করেছে, সুতরাং আমাদের আর প্রয়োজন নাই]।’ না, বরং তাদের আল্লাহ্ নিন্দার জন্য তাদের উপরে আল্লাহ্র অভিশাপ। তাদের অল্প সংখ্যকই ঈমান এনে থাকে ৯৩।
৯২। অহংকার বা অহংবোধ মানুষকে অন্ধ করে তোলে, এর ফলে স্রষ্টার করুণা ও মানুষের আত্মার মাঝে দেয়ালের সৃষ্টি হয়। ইহুদীদের ঠিক সেই অবস্থা হয়েছিলো। তারা বিশ্বাস করতো যে আল্লাহ্ প্রদত্ত জ্ঞান ও বিবেক দ্বারা একমাত্র তাদের হৃদয়ই পূর্ণ। গর্ব এবং অহংকার তাদের চোখের উপর পর্দা টেনে দিয়েছে-তাই তারা প্রকৃত সত্যকে দেখতে বা অনুধাবন করতে সক্ষম নয়। তাদের দাবী, যে একমাত্র তারাই আল্লাহ্র বাণীর ধারক, বাহক ও রক্ষক। এ শুধু যে মিথ্যা তা-ই নয়, এ এক ধরণের কুফ্রী। বাস্তব সত্য হচ্ছে তারা আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। তারা অবিশ্বাসী, তারা আল্লাহ্কে বিশ্বাস করে না।
সার্বজনীন উপদেশ হচ্ছে যুগে-যুগে, কালে-কালে, দেশে-দেশে বহু ব্যক্তি, বহু জাতি দেখা যায় যারা ক্ষুদ্র জ্ঞানের অধিকারী হয়ে অহংকারে অন্ধ হয়ে যায় এবং এই অন্ধ অহংকার তাদের জ্ঞানের বৃহত্তর পরিসরে প্রবেশে বাঁধা দান করে। ধর্ম সম্বন্ধে ক্ষুদ্র জ্ঞান তাদের করে তোলে কুসংস্কারাচ্ছন্ন, একগুঁয়ে, অহংকারী। নিজেকে শ্রেষ্ঠ ভাবার প্রবণতা জন্মায়। এই মনোভাবের কারণেই যুগে যুগে, কালে-কালে, ধর্ম নিয়ে দ্বন্দ কলহের সৃষ্টি হয়েছে। এই মনোভাব হচ্ছে প্রকৃত কুফরী মনোভাব, অধার্মিকতার বা অবিশ্বাসের মনোভাব। আধ্যাত্মিক জগতে আল্লাহ্র নেয়ামত অফুরন্ত। এই সব মৌলবাদীরা অহংকারের ফলে সেই অফুরন্ত নেয়ামত হৃদয়ে ধারণ করার দরজা বন্ধ করে দেয়। ফলে তারা আল্লাহ্র রোষানলে পতিত হয়।
৯৩। মূল শব্দ ‘কাফারা’ এর অনেক মানে আছে-
১) আল্লাহ্র রহমতকে অস্বীকার করা এবং অকৃতজ্ঞ হওয়া।
২) ধর্মে বিশ্বাস হারানো এবং প্রত্যাদেশকে আল্লাহ্র প্রেরিত বাণীরূপে বিশ্বাস না করা।
৩) এরা আল্লাহ্র সম্পর্কে বহু মনগড়া কথা বলে। ব্যাখ্যা দান করে যা আল্লাহ্র প্রতি নিন্দারূপে আল্লাহ্র চোখে পরিগণিত।
এই লাইনটিতে এর যে কোনও একটি মানে প্রযোজ্য হতে পারে। কিন্তু মনে হয় এই লাইনটিতে এর তিনটি অর্থই সমভাবে প্রযোজ্য।
আয়াতঃ 002.089
যখন তাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে কিতাব এসে পৌঁছাল, যা সে বিষয়ের সত্যায়ন করে, যা তাদের কাছে রয়েছে এবং তারা পূর্বে করত। অবশেষে যখন তাদের কাছে পৌঁছল যাকে তারা চিনে রেখেছিল, তখন তারা তা অস্বীকার করে বসল। অতএব, অস্বীকারকারীদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত।
And when there came to them (the Jews), a Book (this Qur’ân) from Allâh confirming what is with them [the Taurât (Torah) and the Injeel (Gospel)], although aforetime they had invoked Allâh (for coming of Muhammad Peace be upon him ) in order to gain victory over those who disbelieved, then when there came to them that which they had recognised, they disbelieved in it. So let the Curse of Allâh be on the disbelievers.
وَلَمَّا جَاءهُمْ كِتَابٌ مِّنْ عِندِ اللّهِ مُصَدِّقٌ لِّمَا مَعَهُمْ وَكَانُواْ مِن قَبْلُ يَسْتَفْتِحُونَ عَلَى الَّذِينَ كَفَرُواْ فَلَمَّا جَاءهُم مَّا عَرَفُواْ كَفَرُواْ بِهِ فَلَعْنَةُ اللَّه عَلَى الْكَافِرِينَ
Walamma jaahum kitabun min AAindi Allahi musaddiqun lima maAAahum wakanoo min qablu yastaftihoona AAala allatheena kafaroo falamma jaahum ma AAarafoo kafaroo bihi falaAAnatu Allahi AAala alkafireena
YUSUFALI: And when there comes to them a Book from Allah, confirming what is with them,- although from of old they had prayed for victory against those without Faith,- when there comes to them that which they (should) have recognised, they refuse to believe in it but the curse of Allah is on those without Faith.
PICKTHAL: And when there cometh unto them a scripture from Allah, confirming that in their possession – though before that they were asking for a signal triumph over those who disbelieved – and when there cometh unto them that which they know (to be the truth) they disbelieve therein. The curse of Allah is on disbelievers.
SHAKIR: And when there came to them a Book from Allah verifying that which they have, and aforetime they used to pray for victory against those who disbelieve, but when there came to them (Prophet) that which they did not recognize, they disbelieved in him; so Allah’s curse is on the unbelievers.
KHALIFA: When this scripture came to them from GOD, and even though it agrees with, and confirms what they have, and even though they used to prophesy its advent when they talked with the disbelievers, when their own prophecy came to pass, they disbelieved therein. GOD’s condemnation thus afflicts the disbelievers.
৮৯। যখন তাদের নিকট যা [যে কিতাব] আছে তার সমর্থক রূপে আল্লাহ্র তরফ থেকে কিতাব ৯৪ এলো, যদিও প্রাচীন কাল থেকেই তারা এর সাহায্যে অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে বিজয় প্রার্থনা করেছিলো-তবুও যখন তাদের নিকট তা আসলো, যা তাদের সনাক্ত করা [উচিত] ছিলো, [কিন্তু] তারা তা বিশ্বাস করতে অস্বীকার করলো। ফলে যাদের ঈমান নাই আল্লাহ্র অভিশাপ তাদের উপরে [পতিত হলো]।
৯৪। ইহুদীরা বিশ্বাস করে তারা সকলের থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ কারণ অন্য সকলেই অবিশ্বাসী (বিধর্মী), শুধুমাত্র ইহুদীরাই প্রকৃত বিশ্বাসী (ধার্মিক)। কারণ পৃথিবীতে একমাত্র তারাই প্রথম ঐশী গ্রন্থ বা কিতাবপ্রাপ্ত জাতি। কোরআনকে তাওরাতের ‘মুসাদ্দিক’ (সত্যায়নকারী) বলা হয়েছে। এর কারণ এই যে, তাওরাতে মুহম্মদ (সাঃ) এর আবির্ভাব ও কুরআন অবতরণের যে সব ভবিষ্যতবাণী করা হয়েছে কুরআনের মাধ্যমে সেগুলির সতত্যা প্রমাণিত হয়েছে। যে মৌলিক নীতিমালার কথা তাওরাতে বলা হয়েছে, তার সাথে বক্তব্যে, ভাষাতে কুরআনের এত সামঞ্জস্য যে, কুরআন পড়ে যে কোনও ইহুদীর বোঝা উচিত যে, এটা তাওরাতে ‘মুসাদ্দিক’। অর্থাৎ তাওরাতের সম্প্রসারণ ও সত্যায়নকারী। সুতরাং যারা তাওরাতকে স্বীকার করে তারা কিছুতেই কুরআন ও মুহম্মদকে (দঃ) অস্বীকার করতে পারে না। তা করতে গেলে তাওরাতকে অস্বীকার করতে হয়। কিন্তু উদ্ধত এবং অহংকারী ইহুদীরা তাই-ই করে। তারা সত্যকে অস্বীকার করে। এই অবিশ্বাসের জন্যই ইহুদীদের উপর আল্লাহ্র অভিসম্পাত এবং তারা আল্লাহ্র রহমত থেকে বঞ্চিত এবং এই মনোভাব যদি গ্রহণ করি, তবে আমরাও পরম করুণাময়ের করুণা থেকে বঞ্চিত হব।
আয়াতঃ 002.090
যার বিনিময়ে তারা নিজেদের বিক্রি করেছে, তা খুবই মন্দ; যেহেতু তারা আল্লাহ যা নযিল করেছেন, তা অস্বীকার করেছে এই হঠকারিতার দরুন যে, আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা অনুগ্রহ নাযিল করেন। অতএব, তারা ক্রোধের উপর ক্রোধ অর্জন করেছে। আর কাফেরদের জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি।
How bad is that for which they have sold their ownselves, that they should disbelieve in that which Allâh has revealed (the Qur’ân), grudging that Allâh should reveal of His Grace unto whom He will of His slaves. So they have drawn on themselves wrath upon wrath. And for the disbelievers, there is disgracing torment.
بِئْسَمَا اشْتَرَوْاْ بِهِ أَنفُسَهُمْ أَن يَكْفُرُواْ بِمَا أنَزَلَ اللّهُ بَغْياً أَن يُنَزِّلُ اللّهُ مِن فَضْلِهِ عَلَى مَن يَشَاء مِنْ عِبَادِهِ فَبَآؤُواْ بِغَضَبٍ عَلَى غَضَبٍ وَلِلْكَافِرِينَ عَذَابٌ مُّهِينٌ
Bi/sama ishtaraw bihi anfusahum an yakfuroo bima anzala Allahu baghyan an yunazzila Allahu min fadlihi AAala man yashao min AAibadihi fabaoo bighadabin AAala ghadabin walilkafireena AAathabun muheenun
YUSUFALI: Miserable is the price for which they have sold their souls, in that they deny (the revelation) which Allah has sent down, in insolent envy that Allah of His Grace should send it to any of His servants He pleases: Thus have they drawn on themselves Wrath upon Wrath. And humiliating is the punishment of those who reject Faith.
PICKTHAL: Evil is that for which they sell their souls: that they should disbelieve in that which Allah hath revealed, grudging that Allah should reveal of His bounty unto whom He will of His slaves. They have incurred anger upon anger. For disbelievers is a shameful doom.
SHAKIR: Evil is that for which they have sold their souls– that they should deny what Allah has revealed, out of envy that Allah should send down of His grace on whomsoever of His servants He pleases; so they have made themselves deserving of wrath upon wrath, and there is a disgraceful punishment for the unbelievers.
KHALIFA: Miserable indeed is what they sold their souls for – rejecting these revelations of GOD out of sheer resentment that GOD should bestow His grace upon whomever He chooses from among His servants. Consequently, they incurred wrath upon wrath. The disbelievers have incurred a humiliating retribution.
৯০। তা হচ্ছে কত নিকৃষ্ট মূল্য যার বিনিময়ে তারা তাদের আত্মাকে বিক্রী করেছে – উহা এই যে, আল্লাহ্ যে প্রত্যাদেশ প্রেরণ করেছেন প্রতিহিংসায় উম্মত্ত হয়ে তারা তা অস্বীকার করে, এই কারণে যে, আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা স্বীয় অনুগ্রহ দান করে থাকেন ৯৫। এভাবে তারা ক্রোধের উপর ক্রোধ আকর্ষণ করেছে। যারা ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে তাদের জন্য আছে অপমানজনক শাস্তি।
৯৫। জাতিগত শ্রেষ্ঠত্ববোধ, অন্ধ অহংকার, উদ্ধত দৃষ্টিভঙ্গী ইহুদীদের কুরআনের সত্যকে গ্রহণ করতে বাঁধা দান করেছে। কারণ, কুরআন এবং হযরত মুহম্মদ (দঃ) তাদের জাতির বাইরের একজন। তাদের ধ্যান-ধারণা অনুযায়ী একমাত্র তারাই শ্রেষ্ঠ জাতি। সুতরাং আল্লাহ্র কিতাব পাওয়ার অধিকারী একমাত্র তারাই। এখানে সার্বজনীন উপদেশ হচ্ছে, জাতিগত শ্রেষ্ঠত্বের (Racial arrogance) দাবী তা কি আজকের পৃথিবীতে অনুপস্থিত? অনুপস্থিত নয়, আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন জাতির মধ্যে এই বিকৃত মানসিকতার সন্ধান পাই। বিকৃত এই জন্য যে এ ধরণের দৃষ্টিভঙ্গী আল্লাহ্র খুব অপছন্দ। আজকের পৃথিবীতে মৌলবাদী মুসলমানদের আমরা ঐ ইহুদীদের মতই দাবী করতে দেখি যে, মুসলমান নামের দরুণই আমরা বেহেশ্তে যাব। অন্য সব ধর্মের লোকেরা দোযখে যাবে। কিন্তু [২:৬২] আয়াতে আল্লাহ্ পরিষ্কারভাবে ঘোষণা করেছেন যে, যে কেউ একত্ববাদে বিশ্বাসী এবং পৃথিবীর কাজকর্মের জন্য পরকালের জবাবদিহিতাতে বিশ্বাস করবে এবং স্রষ্টার সৃষ্টির সেবার জন্য সৎ কাজ করবে সেই বেহেশ্তের অধিকারী হবে। এখানে কোনও নির্দিষ্ট জাতি বা গোষ্ঠীর কথা বলা হয় নাই।
সুতরাং মানুষ কিভাবে সীমানা নির্ধারণ করে, কে বেহেশ্তে যাবে আর কে যাবে না? আল্লাহ্ এই বিশাল বিশ্বভূবনের মালিক। তিনিই এর নিয়ন্তা, পরিচালক ও পালনকর্তা। বেহেশ্ত দোযখের সীমা নির্ধারণ করার ক্ষমতা একমাত্র তাঁরই। সুতরাং এভাবে যারা আল্লাহ্র আদেশ লঙ্ঘন করে তারা ইহুদী, খৃষ্টান বা মুসলিম যে সম্প্রদায়েরই হোক না কেন তারা সবাই আল্লাহ্র রোষানলে পতিত হবে।
আয়াতঃ 002.091
যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ যা পাঠিয়েছেন তা মেনে নাও, তখন তারা বলে, আমরা মানি যা আমাদের প্রতি অবর্তীণ হয়েছে। সেটি ছাড়া সবগুলোকে তারা অস্বীকার করে। অথচ এ গ্রন্থটি সত্য এবং সত্যায়ন করে ঐ গ্রন্থের যা তাদের কাছে রয়েছে। বলে দিন, তবে তোমরা ইতিপূর্বে পয়গম্বরদের হত্যা করতে কেন যদি তোমরা বিশ্বাসী ছিলে?
And when it is said to them (the Jews), ”Believe in what Allâh has sent down,” they say, ”We believe in what was sent down to us.” And they disbelieve in that which came after it, while it is the truth confirming what is with them. Say (O Muhammad Peace be upon him to them): ”Why then have you killed the Prophets of Allâh aforetime, if you indeed have been believers?”
وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ آمِنُواْ بِمَا أَنزَلَ اللّهُ قَالُواْ نُؤْمِنُ بِمَآ أُنزِلَ عَلَيْنَا وَيَكْفُرونَ بِمَا وَرَاءهُ وَهُوَ الْحَقُّ مُصَدِّقاً لِّمَا مَعَهُمْ قُلْ فَلِمَ تَقْتُلُونَ أَنبِيَاء اللّهِ مِن قَبْلُ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ
Wa-itha qeela lahum aminoo bima anzala Allahu qaloo nu/minu bima onzila AAalayna wayakfuroona bima waraahu wahuwa alhaqqu musaddiqan lima maAAahum qul falima taqtuloona anbiyaa Allahi min qablu in kuntum mu/mineena
YUSUFALI: When it is said to them, “Believe in what Allah Hath sent down, “they say, “We believe in what was sent down to us:” yet they reject all besides, even if it be Truth confirming what is with them. Say: “Why then have ye slain the prophets of Allah in times gone by, if ye did indeed believe?”
PICKTHAL: And when it is said unto them: Believe in that which Allah hath revealed, they say: We believe in that which was revealed unto us. And they disbelieve in that which cometh after it, though it is the truth confirming that which they possess. Say (unto them, O Muhammad): Why then slew ye the prophets of Allah aforetime, if ye are (indeed) believers?
SHAKIR: And when it is said to them, Believe in what Allah has revealed, they say: We believe in that which was revealed to us; and they deny what is besides that, while it is the truth verifying that which they have. Say: Why then did you kill Allah’s Prophets before if you were indeed believers?
KHALIFA: When they are told, “You shall believe in these revelations of GOD,” they say, “We believe only in what was sent down to us.” Thus, they disbelieve in subsequent revelations, even if it is the truth from their Lord, and even though it confirms what they have! Say, “Why then did you kill GOD’s prophets, if you were believers?”
৯১। যখন তাদের বলা হয়, ‘আল্লাহ যা প্রেরণ করেছেন তাতে বিশ্বাস স্থাপন কর।’ তারা বলে, ‘আমাদের প্রতি যা প্রেরণ করা হয়েছে, আমরা তাতে বিশ্বাস করি।’ এবং এর পরে যা এসেছে তাতে তারা ঈমান আনে না, যদিও এটাই [প্রকৃত] সত্য এবং যা তাদের নিকট আছে তার সত্যায়নকারী। বল, ‘যদি তোমরা প্রকৃতই বিশ্বাসী ছিলে তবে কেন অতীতে তোমরা আল্লাহ্র নবীগণকে হত্যা করেছিলে?’ ৯৬
৯৬। ইহুদীদের এই জাতিগত আভিজাত্য যা তারা দাবী করে তা তাদের কাজের দ্বারা প্রমাণিত হয় না। কারণ ইহুদীরা তাদের নিজ গোষ্ঠীভূত বহু পয়গম্বরকে হত্যা করেছে। যখনই তাদের নিজেদের মতের সাথে সত্যের বিরোধ হয়েছে তখনই তারা তাদের হত্যা করেছে। অথচ এসব পয়গম্বরেরা বিশেষভাবে তাওরাতের শিক্ষাই প্রচার করতেন। এসব হত্যাকারীদেরই ইহুদীরা নেতা ও পুরোহিত মনে করেছে। এভাবে তারা তাওরাতের সাথে কুফ্রী করেছে। সুতরাং তাওরাতের প্রতি ঈমান আনার দাবী অসার প্রতিপন্ন হয়। মোটকথা তাদের কথা ও কাজ সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
[এখানে সর্বজনীন শিক্ষা হচ্ছে, এই মানসিকতা আমরা এখনও পৃথিবীর বিভিন্ন জাতির মধ্যে দেখতে পাই। আমাদের কাজ বিচার বিশ্লেষণ করার সময় এসেছে কেন মুসলিম জাতি বা সম্প্রদায় আজ পৃথিবীব্যাপী এত লাঞ্ছনা-গঞ্জনার শিকার। একটু তলিয়ে চিন্তা করলেই দেখা যায় যে আজ মুসলিম সমাজ প্রকৃত সত্যের আলো থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। আজ মুসলিম সমাজ কুরআনের সত্য থেকে দূরে সরে যাওয়ার ফলে তাদের পৃথিবীব্যাপী এত লাঞ্ছনা-গঞ্জনা।
আয়াতঃ 002.092
সুস্পষ্ট মু’জেযাসহ মূসা তোমাদের কাছে এসেছেন। এরপর তার অনুপস্থিতিতে তোমরা গোবৎস বানিয়েছ। বাস্তবিকই তোমরা অত্যাচারী।
And indeed Mûsa (Moses) came to you with clear proofs, yet you worshipped the calf after he left, and you were Zâlimûn (polytheists and wrong-doers).
وَلَقَدْ جَاءكُم مُّوسَى بِالْبَيِّنَاتِ ثُمَّ اتَّخَذْتُمُ الْعِجْلَ مِن بَعْدِهِ وَأَنتُمْ ظَالِمُونَ
Walaqad jaakum moosa bialbayyinati thumma ittakhathtumu alAAijla min baAAdihi waantum thalimoona
YUSUFALI: There came to you Moses with clear (Signs); yet ye worshipped the calf (Even) after that, and ye did behave wrongfully.
PICKTHAL: And Moses came unto you with clear proofs (of Allah’s Sovereignty), yet, while he was away, ye chose the calf (for worship) and ye were wrong-doers.
SHAKIR: And most certainly Musa came to you with clear arguments, then you took the calf (for a god) in his absence and you were unjust.
KHALIFA: Moses went to you with profound miracles, yet you worshiped the calf in his absence, and you turned wicked.
৯২। তোমাদের নিকট মুসা এসেছিলো স্পষ্ট [প্রমাণ] সহ। এর পরেও তোমরা গোবৎসের পূঁজা করেছিলে এবং তোমরা পাপিষ্ঠের [ন্যায়] আচরণ করেছিল।
৯৩। এবং স্মরণ কর, আমি তোমাদের অঙ্গীকার নিয়েছিলাম এবং আমি [উচ্চ সিনাই] পর্বতকে তোমাদের উর্দ্ধে উত্তোলন করেছিলাম, [বলেছিলাম]: “আমি তোমাদের যা দিলাম তা দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং [আইনের প্রতি] মনোযোগী হও। “৯৭। তারা বলেছিল ” আমরা শুনলাম এবং আমরা অমান্য করলাম ৯৮। ” [ফলে] কুফরী হেতু তাদের হৃদয়ে গোবৎসের প্রতি প্রীতি সঞ্চিত হয়েছিলো ৯৯।বলঃ” তা কতই না নিকৃষ্ট যা তোমাদের ঈমান তোমাদেরকে নির্দ্দেশ দেয়, [অবশ্য] যদি তোমাদের কোন ঈমান থাকে।”
৯৭+৯৮। [:৬৩] আয়াতের এবং [:৯৩] আয়াতের আরাম্ভ এক। কিন্তু সূচনা এক হলেও, এই দুই আয়াতের ভিন্ন প্রেক্ষাপট যুক্তির সাহায্যে উত্থাপন করা হয়েছে। [:৬৩] আয়াতে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে সিনাই পর্বতের নীচে তারা আল্লাহ্র সাথে যে পবিত্র চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিল পরর্বতী যুগে কেমনভাবে তারা চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। এই আয়াতে [:৯৩] সেই একই চুক্তি কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলা হচ্ছে সেই থেকে তারা চুক্তিটিকে অন্তরের সাথে গ্রহণ করে নাই। তারা মুখে বলে, “আল্লাহ্র সব হুকুম আমরা মানবো”, কিন্তু তারা মনে মনে বলে “আমরা অস্বীকার করবো,”কিন্তু তাদের অন্তর থেকে বলা উচিত ছিল, ” আমরা যা শুনলাম সবই মেনে চলবো।” কথা ও কাজের মধ্যে পার্থক্য না করা হচ্ছে মুত্তাকী বা বিশ্বাসী লোকের লক্ষণ [:২৮৫]।
৯৯। হযরত মুসা তুর পর্বতে কিতাবপ্রাপ্ত হওয়ার পর ফিরে এসে ইহুদীদের পবিত্র গ্রন্থের চুক্তিসমূহ মেনে চলার নির্দেশ দেন এবং ইহুদীরা অঙ্গীকার করেছিল যে তারা তাওরাতের অনুশাসন মেনে চলবে। তার অবর্তমানে ইহুদীরা সোনার গো-বৎস বানিয়ে পূজা করতে থাকে। হযরত মুসা ফিরে এসে প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হয়ে যান এবং সোনার গো-বৎসকে আগুনে পুড়িয়ে গুড়ো করে পানিতে মিশিয়ে ইহুদীদের খেতে বাধ্য করেন, এই ঘটনাকে কোরআনে উপমার সাহায্যে বর্ণনা করা হয়েছে। সোনার গো-বৎস হচ্ছে আল্লাহ্র হুকুম না মানার, অবাধ্যতার, বিদ্রোহ এবং অবিশ্বাসের প্রতীক। একে তুলনা করা যায় সামান্য পরিমাণ বিষের প্রভূত ক্ষতি সাধন করার ক্ষমতার সাথে। গো-বৎস পূজার শাস্তি ছিলো ঐ বিষবৎ পানীয় পান করা। এই বিষ তারা পান করলো তাদের পাকস্থলীতে নয়; তাদের হৃদয়ে। আল্লাহর চোখে তাদের অপবিত্র, উদ্ধত, অহংকারী আত্মার বিনাশ হতে হবে। তাদের হতে হবে বিনয়ী [:৫৪]
আয়াতঃ 002.093
আর যখন আমি তোমাদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নিলাম এবং তুর পর্বতকে তোমাদের উপর তুলে ধরলাম যে, শক্ত করে ধর, আমি যা তোমাদের দিয়েছি আর শোন। তারা বলল, আমরা শুনেছি আর অমান্য করেছি। কুফরের কারণে তাদের অন্তরে গোবৎসপ্রীতি পান করানো হয়েছিল। বলে দিন, তোমরা বিশ্বাসী হলে, তোমাদের সে বিশ্বাস মন্দ বিষয়াদি শিক্ষা দেয়।
And (remember) when We took your covenant and We raised above you the Mount (saying), ”Hold firmly to what We have given you and hear (Our Word). They said, ”We have heard and disobeyed.” And their hearts absorbed (the worship of) the calf because of their disbelief. Say: ”Worst indeed is that which your faith enjoins on you if you are believers.”
وَإِذْ أَخَذْنَا مِيثَاقَكُمْ وَرَفَعْنَا فَوْقَكُمُ الطُّورَ خُذُواْ مَا آتَيْنَاكُم بِقُوَّةٍ وَاسْمَعُواْ قَالُواْ سَمِعْنَا وَعَصَيْنَا وَأُشْرِبُواْ فِي قُلُوبِهِمُ الْعِجْلَ بِكُفْرِهِمْ قُلْ بِئْسَمَا يَأْمُرُكُمْ بِهِ إِيمَانُكُمْ إِن كُنتُمْ مُّؤْمِنِينَ
Wa-ith akhathna meethaqakum warafaAAna fawqakumu alttoora khuthoo ma ataynakum biquwwatin waismaAAoo qaloo samiAAna waAAasayna waoshriboo fee quloobihimu alAAijla bikufrihim qul bi/sama ya/murukum bihi eemanukum in kuntum mu/mineena
YUSUFALI: And remember We took your covenant and We raised above you (the towering height) of Mount (Sinai): (Saying): “Hold firmly to what We have given you, and hearken (to the Law)”: They said:” We hear, and we disobey:” And they had to drink into their hearts (of the taint) of the calf because of their Faithlessness. Say: “Vile indeed are the behests of your Faith if ye have any faith!”
PICKTHAL: And when We made with you a covenant and caused the Mount to tower above you, (saying): Hold fast by that which We have given you, and hear (Our Word), they said: We hear and we rebel. And (worship of) the calf was made to sink into their hearts because of their rejection (of the covenant). Say (unto them): Evil is that which your belief enjoineth on you, if ye are believers.
SHAKIR: And when We made a covenant with you and raised the mountain over you: Take hold of what We have given you with firmness and be obedient. They said: We hear and disobey. And they were made to imbibe (the love of) the calf into their hearts on account of their unbelief Say: Evil is that which your belief bids you if you are believers.
KHALIFA: We made a covenant with you, as we raised Mount Sinai above you, saying, “You shall uphold the commandments we have given you, strongly, and listen.” They said, “We hear, but we disobey.” Their hearts became filled with adoration for the calf, due to their disbelief. Say, “Miserable indeed is what your faith dictates upon you, if you do have any faith.”
৯২। তোমাদের নিকট মুসা এসেছিলো স্পষ্ট [প্রমাণ] সহ। এর পরেও তোমরা গোবৎসের পূঁজা করেছিলে এবং তোমরা পাপিষ্ঠের [ন্যায়] আচরণ করেছিল।
৯৩। এবং স্মরণ কর, আমি তোমাদের অঙ্গীকার নিয়েছিলাম এবং আমি [উচ্চ সিনাই] পর্বতকে তোমাদের উর্দ্ধে উত্তোলন করেছিলাম, [বলেছিলাম]: “আমি তোমাদের যা দিলাম তা দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং [আইনের প্রতি] মনোযোগী হও। “৯৭। তারা বলেছিল ” আমরা শুনলাম এবং আমরা অমান্য করলাম ৯৮। ” [ফলে] কুফরী হেতু তাদের হৃদয়ে গোবৎসের প্রতি প্রীতি সঞ্চিত হয়েছিলো ৯৯।বলঃ” তা কতই না নিকৃষ্ট যা তোমাদের ঈমান তোমাদেরকে নির্দ্দেশ দেয়, [অবশ্য] যদি তোমাদের কোন ঈমান থাকে।”
৯৭+৯৮। [:৬৩] আয়াতের এবং [:৯৩] আয়াতের আরাম্ভ এক। কিন্তু সূচনা এক হলেও, এই দুই আয়াতের ভিন্ন প্রেক্ষাপট যুক্তির সাহায্যে উত্থাপন করা হয়েছে। [:৬৩] আয়াতে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে সিনাই পর্বতের নীচে তারা আল্লাহ্র সাথে যে পবিত্র চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিল পরর্বতী যুগে কেমনভাবে তারা চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। এই আয়াতে [:৯৩] সেই একই চুক্তি কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলা হচ্ছে সেই থেকে তারা চুক্তিটিকে অন্তরের সাথে গ্রহণ করে নাই। তারা মুখে বলে, “আল্লাহ্র সব হুকুম আমরা মানবো”, কিন্তু তারা মনে মনে বলে “আমরা অস্বীকার করবো,”কিন্তু তাদের অন্তর থেকে বলা উচিত ছিল, ” আমরা যা শুনলাম সবই মেনে চলবো।” কথা ও কাজের মধ্যে পার্থক্য না করা হচ্ছে মুত্তাকী বা বিশ্বাসী লোকের লক্ষণ [:২৮৫]।
৯৯। হযরত মুসা তুর পর্বতে কিতাবপ্রাপ্ত হওয়ার পর ফিরে এসে ইহুদীদের পবিত্র গ্রন্থের চুক্তিসমূহ মেনে চলার নির্দেশ দেন এবং ইহুদীরা অঙ্গীকার করেছিল যে তারা তাওরাতের অনুশাসন মেনে চলবে। তার অবর্তমানে ইহুদীরা সোনার গো-বৎস বানিয়ে পূজা করতে থাকে। হযরত মুসা ফিরে এসে প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হয়ে যান এবং সোনার গো-বৎসকে আগুনে পুড়িয়ে গুড়ো করে পানিতে মিশিয়ে ইহুদীদের খেতে বাধ্য করেন, এই ঘটনাকে কোরআনে উপমার সাহায্যে বর্ণনা করা হয়েছে। সোনার গো-বৎস হচ্ছে আল্লাহ্র হুকুম না মানার, অবাধ্যতার, বিদ্রোহ এবং অবিশ্বাসের প্রতীক। একে তুলনা করা যায় সামান্য পরিমাণ বিষের প্রভূত ক্ষতি সাধন করার ক্ষমতার সাথে। গো-বৎস পূজার শাস্তি ছিলো ঐ বিষবৎ পানীয় পান করা। এই বিষ তারা পান করলো তাদের পাকস্থলীতে নয়; তাদের হৃদয়ে। আল্লাহর চোখে তাদের অপবিত্র, উদ্ধত, অহংকারী আত্মার বিনাশ হতে হবে। তাদের হতে হবে বিনয়ী [:৫৪]
আয়াতঃ 002.094
বলে দিন, যদি আখেরাতের বাসস্থান আল্লাহর কাছে একমাত্র তোমাদের জন্যই বরাদ্দ হয়ে থাকে-অন্য লোকদের বাদ দিয়ে, তবে মৃত্যু কামনা কর, যদি সত্যবাদী হয়ে থাক।
Say to (them): ”If the home of the Hereafter with Allâh is indeed for you specially and not for others, of mankind, then long for death if you are truthful.”
قُلْ إِن كَانَتْ لَكُمُ الدَّارُ الآَخِرَةُ عِندَ اللّهِ خَالِصَةً مِّن دُونِ النَّاسِ فَتَمَنَّوُاْ الْمَوْتَ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
Qul in kanat lakumu alddaru al-akhiratu AAinda Allahi khalisatan min dooni alnnasi fatamannawoo almawta in kuntum sadiqeena
YUSUFALI: Say: “If the last Home, with Allah, be for you specially, and not for anyone else, then seek ye for death, if ye are sincere.”
PICKTHAL: Say (unto them): If the abode of the Hereafter in the providence of Allah is indeed for you alone and not for others of mankind (as ye pretend), then long for death (for ye must long for death) if ye are truthful.
SHAKIR: Say: If the future abode with Allah is specially for you to the exclusion of the people, then invoke death if you are truthful.
KHALIFA: Say, “If the abode of the Hereafter is reserved for you at GOD, to the exclusion of all other people, then you should long for death, if you are truthful.”
৯৪। বল, “যদি আল্লাহ্র নিকট অবস্থিত আখিরাতের আবাসস্থল অন্য লোকের না হয়ে বিশেষভাবে শুধু তোমাদের জন্যই হয়ে থাকে; তবে তোমরা মৃত্যু কামনা কর-যদি তোমরা সত্যবাদী হও।”
৯৫। কিন্তু তারা কখনও মৃত্যু কামনা করবে না, কারণ হচ্ছে তাদের [পাপ কর্ম] যা তাদের হাতসমূহ তাদের পূর্বেই [আল্লাহ্র নিকট] প্রেরণ করেছে ১০০। আল্লাহ্ পাপীদের সম্পর্কে ভালোভাবেই জানেন।
১০০। ‘Which their hands have sent on before them’ মওলানা ইউসুফ আলী লাইনটি এভাবে উপস্থাপন করেছেন “[তাদের পাপ] যা তাদের হাত সমূহ তাদের পূর্বেই আল্লাহ্ নিকট প্রেরণ করেছে।” কথাটার অর্থ অনেক ব্যাপক, মহাকালের গর্ভে কিছুই হারায় না । আমরা মৃত্যুর পরে আল্লাহর দরবারে নীত হব। কিন্তু আমাদের পৃথিবীতে কৃতকর্মগুলি আমাদের মৃত্যুর বহুপূর্বে সাথে সাথেই আল্লাহ্র দরবারে নীত হয়। “তাদের হাত যা পূর্বে প্রেরণ করেছে”- এই কথাটি কুরআন শরীফে বহুবার বলা হয়েছে। আমাদের সু-কর্ম বা কু-কর্ম সবই আল্লাহ্র দরবারে তাৎক্ষণিকভাবে পৌঁছে যায়। এর কিছু উদাহরণ দেওয়া যায় বর্তমানে ইন্টারনেট, ফ্যাক্স ইত্যাদির সাহায্যে পৃথিবীর এক প্রান্তের সংবাদ মূহুর্তের মধ্যে পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। সুতরাং আমরা কি করি, আমরা কি ভাবি, কি আমাদের কাজের নিয়ত সব আমাদের চিন্তাধারার সাথে সংম্পৃক্ত। আর এই চিন্তাধারা ঐ ইন্টানেটের মত মূহুর্তের মধ্যে আল্লাহ্র দরবারে নীত হয়, কারণ আল্লাহ্ বারে বারে বলেছেন যে আল্লাহ্ আমাদের কাজের বিচার করবেন তার নিয়ত দ্বারা কাজ দ্বারা নয়। এখানে এবং কুরআনে বহু স্থানে বলা হয়েছে যে মানুষের সুপ্ত এবং গুপ্ত সব পাপ কার্যই আল্লাহ্র দরবারে তার মৃত্যুর পূর্বেই নীত হয়, সূরা [৭:৪০] অথবা [৮:১৪] বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে পৃথিবীতে আমাদের কৃত ভালো কাজ ও মন্দ কাজ আমাদের মৃত্যুর বহু পূর্বেই তাৎক্ষণিকভাবে আল্লাহ্র দরবারে বিচারাধীন হওয়ার জন্য ফাইলবন্দী হয়ে নীত হয়। আমাদের এই কৃতকর্ম হবে আমাদের ব্যক্তিগত দায়িত্ব। আল্লাহ্র দরবারে আমাদের কৃতকর্ম সবই আমাদের মৃত্যুর পূর্বেই আমাদের এই পৃথিবীতে অবস্থান সময়েই মহান আল্লাহ্র দরবারে পৌঁছে যাবে। আমরা বুঝতে পারি বা নাই পারি এর ফলাফল এই পৃথিবীতেই আমাদের জীবনে পেতে শুরু করি। আমরা দেখি সৎ আল্লাহ ভীরু লোকের জীবন শান্তিতে ভরে যায়। অপরপক্ষে, জাগতিক উন্নতি সত্ত্বেও অসৎ অধার্মিক লোকের শান্তি (Bliss) আসে না কারণ আত্মার শান্তির পূর্বশর্ত হচ্ছে আত্মিক উন্নতি [Spiritual growth] আবার আত্মার [Spiritual faculty] সমৃদ্ধির পূর্বশর্তই হচ্ছে সততা ও সৎ কাজ। আল্লাহ্র নিয়তে যারা সততা অবলম্বন করে ও সৎ কাজ করে তাদের সেই নিয়ত ও কাজ তার মৃত্যুর পূর্বেই আল্লাহর দরবারে নীত হয় এবং আল্লাহ্ তাদের আত্মিক সমৃদ্ধি দান করেন। ফলশ্রুতিতে তারা আত্মার মাঝে শান্তি খুঁজে পায়। অপর পক্ষে যারা শুধু জাগতিক মোহে অসৎ ও অধার্মিকতার পথ অবলম্বন করে তাদের সেই নিয়ত বা চিন্তাধারাও আল্লাহ্র দরবারে তাদের মৃত্যুর পূর্বেই নীত হয়। ফলে তাদের আত্মিক উন্নতির পথ বন্ধ হয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে তারা ধন-সম্পদ থাকা সত্ত্বেও আত্মিক শান্তি থেকে বঞ্চিত হয় এবং এক ধরনের আত্মিক যন্ত্রণাতে ভোগে।
আয়াতঃ 002.095
কস্মিনকালেও তারা মৃত্যু কামনা করবে না ঐসব গোনাহর কারণে, যা তাদের হাত পাঠিয়ে দিয়েছে। আল্লাহ গোনাহগারদের সম্পর্কে সম্যক অবগত রয়েছেন।
But they will never long for it because of what their hands have sent before them (i.e. what they have done). And Allâh is All-Aware of the Zâlimûn (polytheists and wrong-doers).
وَلَن يَتَمَنَّوْهُ أَبَدًا بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيهِمْ وَاللّهُ عَلِيمٌ بِالظَّالِمينَ
Walan yatamannawhu abadan bima qaddamat aydeehim waAllahu AAaleemun bialththalimeena
YUSUFALI: But they will never seek for death, on account of the (sins) which their hands have sent on before them. and Allah is well-acquainted with the wrong-doers.
PICKTHAL: But they will never long for it, because of that which their own hands have sent before them. Allah is aware of evil-doers.
SHAKIR: And they will never invoke it on account of what their hands have sent before, and Allah knows the unjust.
KHALIFA: They never long for it, because of what their hands have sent forth. GOD is fully aware of the wicked.
৯৪। বল, “যদি আল্লাহ্র নিকট অবস্থিত আখিরাতের আবাসস্থল অন্য লোকের না হয়ে বিশেষভাবে শুধু তোমাদের জন্যই হয়ে থাকে; তবে তোমরা মৃত্যু কামনা কর-যদি তোমরা সত্যবাদী হও।”
৯৫। কিন্তু তারা কখনও মৃত্যু কামনা করবে না, কারণ হচ্ছে তাদের [পাপ কর্ম] যা তাদের হাতসমূহ তাদের পূর্বেই [আল্লাহ্র নিকট] প্রেরণ করেছে ১০০। আল্লাহ্ পাপীদের সম্পর্কে ভালোভাবেই জানেন।
১০০। ‘Which their hands have sent on before them’ মওলানা ইউসুফ আলী লাইনটি এভাবে উপস্থাপন করেছেন “[তাদের পাপ] যা তাদের হাত সমূহ তাদের পূর্বেই আল্লাহ্ নিকট প্রেরণ করেছে।” কথাটার অর্থ অনেক ব্যাপক, মহাকালের গর্ভে কিছুই হারায় না । আমরা মৃত্যুর পরে আল্লাহর দরবারে নীত হব। কিন্তু আমাদের পৃথিবীতে কৃতকর্মগুলি আমাদের মৃত্যুর বহুপূর্বে সাথে সাথেই আল্লাহ্র দরবারে নীত হয়। “তাদের হাত যা পূর্বে প্রেরণ করেছে”- এই কথাটি কুরআন শরীফে বহুবার বলা হয়েছে। আমাদের সু-কর্ম বা কু-কর্ম সবই আল্লাহ্র দরবারে তাৎক্ষণিকভাবে পৌঁছে যায়। এর কিছু উদাহরণ দেওয়া যায় বর্তমানে ইন্টারনেট, ফ্যাক্স ইত্যাদির সাহায্যে পৃথিবীর এক প্রান্তের সংবাদ মূহুর্তের মধ্যে পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। সুতরাং আমরা কি করি, আমরা কি ভাবি, কি আমাদের কাজের নিয়ত সব আমাদের চিন্তাধারার সাথে সংম্পৃক্ত। আর এই চিন্তাধারা ঐ ইন্টানেটের মত মূহুর্তের মধ্যে আল্লাহ্র দরবারে নীত হয়, কারণ আল্লাহ্ বারে বারে বলেছেন যে আল্লাহ্ আমাদের কাজের বিচার করবেন তার নিয়ত দ্বারা কাজ দ্বারা নয়। এখানে এবং কুরআনে বহু স্থানে বলা হয়েছে যে মানুষের সুপ্ত এবং গুপ্ত সব পাপ কার্যই আল্লাহ্র দরবারে তার মৃত্যুর পূর্বেই নীত হয়, সূরা [৭:৪০] অথবা [৮:১৪] বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে পৃথিবীতে আমাদের কৃত ভালো কাজ ও মন্দ কাজ আমাদের মৃত্যুর বহু পূর্বেই তাৎক্ষণিকভাবে আল্লাহ্র দরবারে বিচারাধীন হওয়ার জন্য ফাইলবন্দী হয়ে নীত হয়। আমাদের এই কৃতকর্ম হবে আমাদের ব্যক্তিগত দায়িত্ব। আল্লাহ্র দরবারে আমাদের কৃতকর্ম সবই আমাদের মৃত্যুর পূর্বেই আমাদের এই পৃথিবীতে অবস্থান সময়েই মহান আল্লাহ্র দরবারে পৌঁছে যাবে। আমরা বুঝতে পারি বা নাই পারি এর ফলাফল এই পৃথিবীতেই আমাদের জীবনে পেতে শুরু করি। আমরা দেখি সৎ আল্লাহ ভীরু লোকের জীবন শান্তিতে ভরে যায়। অপরপক্ষে, জাগতিক উন্নতি সত্ত্বেও অসৎ অধার্মিক লোকের শান্তি (Bliss) আসে না কারণ আত্মার শান্তির পূর্বশর্ত হচ্ছে আত্মিক উন্নতি [Spiritual growth] আবার আত্মার [Spiritual faculty] সমৃদ্ধির পূর্বশর্তই হচ্ছে সততা ও সৎ কাজ। আল্লাহ্র নিয়তে যারা সততা অবলম্বন করে ও সৎ কাজ করে তাদের সেই নিয়ত ও কাজ তার মৃত্যুর পূর্বেই আল্লাহর দরবারে নীত হয় এবং আল্লাহ্ তাদের আত্মিক সমৃদ্ধি দান করেন। ফলশ্রুতিতে তারা আত্মার মাঝে শান্তি খুঁজে পায়। অপর পক্ষে যারা শুধু জাগতিক মোহে অসৎ ও অধার্মিকতার পথ অবলম্বন করে তাদের সেই নিয়ত বা চিন্তাধারাও আল্লাহ্র দরবারে তাদের মৃত্যুর পূর্বেই নীত হয়। ফলে তাদের আত্মিক উন্নতির পথ বন্ধ হয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে তারা ধন-সম্পদ থাকা সত্ত্বেও আত্মিক শান্তি থেকে বঞ্চিত হয় এবং এক ধরনের আত্মিক যন্ত্রণাতে ভোগে।
আয়াতঃ 002.096
আপনি তাদেরকে জীবনের প্রতি সবার চাইতে, এমনকি মুশরিকদের চাইতেও অধিক লোভী দেখবেন। তাদের প্রত্যেকে কামনা করে, যেন হাজার বছর আয়ু পায়। অথচ এরূপ আয়ু প্রাপ্তি তাদেরকে শাস্তি থেকে রক্ষা করতে পারবে না। আল্লাহ দেখেন যা কিছু তারা করে।
And verily, you will find them (the Jews) the greediest of mankind for life and (even greedier) than those who – ascribe partners to Allâh (and do not believe in Resurrection – Magians, pagans, and idolaters, etc.). Everyone of them wishes that he could be given a life of a thousand years. But the grant of such life will not save him even a little from (due) punishment. And Allâh is All-Seer of what they do.
وَلَتَجِدَنَّهُمْ أَحْرَصَ النَّاسِ عَلَى حَيَاةٍ وَمِنَ الَّذِينَ أَشْرَكُواْ يَوَدُّ أَحَدُهُمْ لَوْ يُعَمَّرُ أَلْفَ سَنَةٍ وَمَا هُوَ بِمُزَحْزِحِهِ مِنَ الْعَذَابِ أَن يُعَمَّرَ وَاللّهُ بَصِيرٌ بِمَا يَعْمَلُونَ
Walatajidannahum ahrasa alnnasi AAala hayatin wamina allatheena ashrakoo yawaddu ahaduhum law yuAAammaru alfa sanatin wama huwa bimuzahzihihi mina alAAathabi an yuAAammara waAllahu baseerun bima yaAAmaloona
YUSUFALI: Thou wilt indeed find them, of all people, most greedy of life,-even more than the idolaters: Each one of them wishes He could be given a life of a thousand years: But the grant of such life will not save him from (due) punishment. For Allah sees well all that they do.
PICKTHAL: And thou wilt find them greediest of mankind for life and (greedier) than the idolaters. (Each) one of them would like to be allowed to live a thousand years. And to live (a thousand years) would be no means remove him from the doom. Allah is Seer of what they do.
SHAKIR: And you will most certainly find them the greediest of men for life (greedier) than even those who are polytheists; every one of them loves that he should be granted a life of a thousand years, and his being granted a long life will in no way remove him further off from the chastisement, and Allah sees what they do.
KHALIFA: In fact, you will find them the most covetous of life; even more so than the idol worshipers. The one of them wishes to live a thousand years. But this will not spare him any retribution, no matter how long he lives. GOD is seer of everything they do.
৯৬। তুমি তাদের নিশ্চই জীবনের প্রতি, সমস্ত মানুষ এমনকি মুশরিকদের অপেক্ষা অধিক লোভী দেখবে। এদের প্রত্যেকে আকাঙ্খা করে যদি হাজার বৎসর পরমায়ু দেয়া হতো। কিন্তু এরূপ দীর্ঘায়ু তাদের [প্রাপ্য] শাস্তি থেকে রক্ষা করতে পারবে না। কারণ তারা যা করে আল্লাহ্ সব দেখেন।
রুকু – ১২
৯৭। বল, “যে কেউ জিব্রাইলের শত্রু এই জন্য যে, সে ১০১ আল্লাহ্র নির্দেশে তোমার হৃদয়ে [প্রত্যাদেশ] অবতীর্ণ করেছে যা, উহার পূর্ববর্তী কিতাবের সমর্থক এবং যা মুমিনদের জন্য পথ প্রদর্শক ও শুভ সংবাদ।”
১০১। জিব্রাইল (আ) ওহী নিয়ে আগমন করেন, একথা রাসুল্লাহ (সাঃ) এর মুখে শুনে কতক ইহুদী বলতে থাকে, ইনি তো আমাদের শুত্রু: আমাদের সম্প্রদায়ের প্রলয়ঙ্কারী ঘটনাবলী এবং প্রাণান্তকর নির্দেশাবলী তার মাধ্যমেই অবতীর্ণ হয়েছে। পক্ষান্তরে মীকাঈল (আঃ) অত্যন্ত গুণী ফেরেশ্তা, তিনি বৃষ্টি ও রহমতের সাথে জড়িত। তিনি ওহী নিয়ে এলে আমরা তাকে মেনে নিতাম। এটা অবশ্যই একটা ভণ্ডামী – তারা আল্লাহ্র প্রেরিত একজন দূতকে মানবে, অন্য দূতকে প্রত্যাখান করবে, সেটা তো ভণ্ডামীরই লক্ষণ। হযরত মুহাম্মদের [সাঃ] অন্তরে আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ পৌঁছে দিয়েছেন জিব্রাইল (আঃ)। আধ্যাত্মিক আলোয় মুহাম্মদের (দঃ) অন্তর আল্লাহ্ আলোকিত করেছেন জিব্রাইলের দ্বারা। সুতরাং জিব্রাইলের বৈশিষ্ট্য না দেখে স্বয়ং কুরআনকে দেখা দরকার এবং দেখা দরকার মানুষ হিসাবে নবী করিমের নিষ্কলুষ, উজ্জ্বল চারিত্রিক গুণাবলী। আমাদের নিরক্ষর নবীর কিতাব পাওয়া, কোনও রকম প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যতীত আমাদের নবীর চারিত্রিক গুণাবলী, তার প্রজ্ঞা, জ্ঞান সবই সেই সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র অসীম ক্ষমতার ইঙ্গিত বহন করে। সবচেয়ে বড় কথা কোরআন [এর অবস্থান এই যে] সে পূর্ববর্তী আসমানী কিতাব সমূহের সত্যায়ন করে, এবং কিতাবপ্রাপ্ত জাতিদের পথ প্রদর্শন করে ও মুমিনদের সুসংবাদ দেয়। আসমানী কিতাবসমূহের অবস্থা তাই-ই হয়ে থাকে। সুতরাং জিব্রাইলের দোহাই দিয়ে এই আসমানী কিতাবে বিশ্বাস স্থাপন না করার অর্থই হচ্ছে এ সবই ইহুদীদের কপটতা বা ছলনা।
আয়াতঃ 002.097
আপনি বলে দিন, যে কেউ জিবরাঈলের শত্রু হয়-যেহেতু তিনি আল্লাহর আদেশে এ কালাম আপনার অন্তরে নাযিল করেছেন, যা সত্যায়নকারী তাদের সম্মুখস্থ কালামের এবং মুমিনদের জন্য পথপ্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা।
Say (O Muhammad Peace be upon him ): ”Whoever is an enemy to Jibrael (Gabriel) (let him die in his fury), for indeed he has brought it (this Qur’ân) down to your heart by Allâh’s Permission, confirming what came before it [i.e. the Taurât (Torah) and the Injeel (Gospel)] and guidance and glad tidings for the believers.
قُلْ مَن كَانَ عَدُوًّا لِّجِبْرِيلَ فَإِنَّهُ نَزَّلَهُ عَلَى قَلْبِكَ بِإِذْنِ اللّهِ مُصَدِّقاً لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ وَهُدًى وَبُشْرَى لِلْمُؤْمِنِينَ
Qul man kana AAaduwwan lijibreela fa-innahu nazzalahu AAala qalbika bi-ithni Allahi musaddiqan lima bayna yadayhi wahudan wabushra lilmu/mineena
YUSUFALI: Say: Whoever is an enemy to Gabriel-for he brings down the (revelation) to thy heart by Allah’s will, a confirmation of what went before, and guidance and glad tidings for those who believe,-
PICKTHAL: Say (O Muhammad, to mankind): Who is an enemy to Gabriel! For he it is who hath revealed (this Scripture) to thy heart by Allah’s leave, confirming that which was (revealed) before it, and a guidance and glad tidings to believers;
SHAKIR: Say: Whoever is the enemy of Jibreel– for surely he revealed it to your heart by Allah’s command, verifying that which is before it and guidance and good news for the believers.
KHALIFA: Say, “Anyone who opposes Gabriel should know that he has brought down this (Quran) into your heart, in accordance with GOD’s will, confirming previous scriptures, and providing guidance and good news for the believers.”
৯৬। তুমি তাদের নিশ্চই জীবনের প্রতি, সমস্ত মানুষ এমনকি মুশরিকদের অপেক্ষা অধিক লোভী দেখবে। এদের প্রত্যেকে আকাঙ্খা করে যদি হাজার বৎসর পরমায়ু দেয়া হতো। কিন্তু এরূপ দীর্ঘায়ু তাদের [প্রাপ্য] শাস্তি থেকে রক্ষা করতে পারবে না। কারণ তারা যা করে আল্লাহ্ সব দেখেন।
রুকু – ১২
৯৭। বল, “যে কেউ জিব্রাইলের শত্রু এই জন্য যে, সে ১০১ আল্লাহ্র নির্দেশে তোমার হৃদয়ে [প্রত্যাদেশ] অবতীর্ণ করেছে যা, উহার পূর্ববর্তী কিতাবের সমর্থক এবং যা মুমিনদের জন্য পথ প্রদর্শক ও শুভ সংবাদ।”
১০১। জিব্রাইল (আ) ওহী নিয়ে আগমন করেন, একথা রাসুল্লাহ (সাঃ) এর মুখে শুনে কতক ইহুদী বলতে থাকে, ইনি তো আমাদের শুত্রু: আমাদের সম্প্রদায়ের প্রলয়ঙ্কারী ঘটনাবলী এবং প্রাণান্তকর নির্দেশাবলী তার মাধ্যমেই অবতীর্ণ হয়েছে। পক্ষান্তরে মীকাঈল (আঃ) অত্যন্ত গুণী ফেরেশ্তা, তিনি বৃষ্টি ও রহমতের সাথে জড়িত। তিনি ওহী নিয়ে এলে আমরা তাকে মেনে নিতাম। এটা অবশ্যই একটা ভণ্ডামী – তারা আল্লাহ্র প্রেরিত একজন দূতকে মানবে, অন্য দূতকে প্রত্যাখান করবে, সেটা তো ভণ্ডামীরই লক্ষণ। হযরত মুহাম্মদের [সাঃ] অন্তরে আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ পৌঁছে দিয়েছেন জিব্রাইল (আঃ)। আধ্যাত্মিক আলোয় মুহাম্মদের (দঃ) অন্তর আল্লাহ্ আলোকিত করেছেন জিব্রাইলের দ্বারা। সুতরাং জিব্রাইলের বৈশিষ্ট্য না দেখে স্বয়ং কুরআনকে দেখা দরকার এবং দেখা দরকার মানুষ হিসাবে নবী করিমের নিষ্কলুষ, উজ্জ্বল চারিত্রিক গুণাবলী। আমাদের নিরক্ষর নবীর কিতাব পাওয়া, কোনও রকম প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যতীত আমাদের নবীর চারিত্রিক গুণাবলী, তার প্রজ্ঞা, জ্ঞান সবই সেই সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র অসীম ক্ষমতার ইঙ্গিত বহন করে। সবচেয়ে বড় কথা কোরআন [এর অবস্থান এই যে] সে পূর্ববর্তী আসমানী কিতাব সমূহের সত্যায়ন করে, এবং কিতাবপ্রাপ্ত জাতিদের পথ প্রদর্শন করে ও মুমিনদের সুসংবাদ দেয়। আসমানী কিতাবসমূহের অবস্থা তাই-ই হয়ে থাকে। সুতরাং জিব্রাইলের দোহাই দিয়ে এই আসমানী কিতাবে বিশ্বাস স্থাপন না করার অর্থই হচ্ছে এ সবই ইহুদীদের কপটতা বা ছলনা।
আয়াতঃ 002.098
যে ব্যক্তি আল্লাহ তাঁর ফেরেশতা ও রসূলগণ এবং জিবরাঈল ও মিকাঈলের শত্রু হয়, নিশ্চিতই আল্লাহ সেসব কাফেরের শত্রু।
”Whoever is an enemy to Allâh, His Angels, His Messengers, Jibrael (Gabriel) and Mikael (Michael), then verily, Allâh is an enemy to the disbelievers.”
مَن كَانَ عَدُوًّا لِّلّهِ وَمَلآئِكَتِهِ وَرُسُلِهِ وَجِبْرِيلَ وَمِيكَالَ فَإِنَّ اللّهَ عَدُوٌّ لِّلْكَافِرِينَ
Man kana AAaduwwan lillahi wamala-ikatihi warusulihi wajibreela wameekala fa-inna Allaha AAaduwwun lilkafireena
YUSUFALI: Whoever is an enemy to Allah and His angels and messengers, to Gabriel and Michael,- Lo! Allah is an enemy to those who reject Faith.
PICKTHAL: Who is an enemy to Allah, and His angels and His messengers, and Gabriel and Michael! Then, lo! Allah (Himself) is an enemy to the disbelievers.
SHAKIR: Whoever is the enemy of Allah and His angels and His messengers and Jibreel and Meekaeel, so surely Allah is the enemy of the unbelievers.
KHALIFA: Anyone who opposes GOD, and His angels, and His messengers, and Gabriel and Michael, should know that GOD opposes the disbelievers.
৯৮। যে কেউ আল্লাহ্র, তাঁর ফেরেশতাগণের, তাঁর রাসূলগণের এবং জিব্রাইল ও মীকাঈলের শত্রু; সে জেনে রাখুক; যারা ঈমান আনে না আল্লাহ তাদের শত্রু।
৯৯। আমি তোমার প্রতি সুস্পষ্ট নিদর্শন [আয়াতসমূহ] অবতীর্ণ করেছি। বিকৃত স্বভাব সম্পন্ন ব্যতীত আর কেউ তা প্রত্যাখান করে না।
১০০। [ঘটনা] কি এই নয় যে, প্রত্যেক সময় তারা অঙ্গীকার করে, [কিন্তু] তাদের মধ্যে একদল তা ছুঁড়ে ফেলে দেয়? বরং তাদের অধিকাংশই ঈমানহীন।
১০১। যখন তাদের নিকট আল্লাহ্র তরফ থেকে একজন রাসূল এসেছিলো, যে তাদের নিকট যা আছে উহার সমর্থক, কিতাবীদের একদল, আল্লাহ্র কিতাবটিকে পিছনে নিক্ষেপ করলো, যেনো [এটা এমন একটি ঘটনা যা] তারা জানে না ১০২।
১০২। এ আয়াতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর প্রতি ঈমান না আনার ব্যাপারে একটি বিশেষ অঙ্গীকার ভঙ্গের বিষয় বর্ণিত হয়েছে। তাদের কাছে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে একজন মহান পয়গম্বর আসলেন এবং কুরআন নাজেল হলো যা ইহুদীদের কাছে যে ধর্মগ্রন্থ [তাওরাত] আছে তাকে সত্যায়ন করে। এ অবস্থায় রসূল করিম (সাঃ) এর প্রতি ঈমান আনা তাওরাতের নির্দেশ পালনেরই নামান্তর ছিল। তাওরাতকে তারাও আল্লাহ্র প্রেরিত গ্রন্থ মনে করতো। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা তাদের নিজেদের ধর্ম গ্রন্থের বাণীকে অস্বীকার করলো। নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী তার পরিবর্তন করলো। যদি তারা আন্তরিক হতো তবে তারা অবশ্যই দেখতে পেতো তাদের ধর্মগ্রন্থের [তাওরাতের] যে বাণী বা নৈতিক নীতিমালা, সে নীতিমালা আমাদের কুরআনের নৈতিক নীতিমালারই অনুরূপ। কারণ সবই একই স্রষ্টার কাছ থেকে আগত। কিন্তু তারা সে চেষ্টা না করে কপটতার আশ্রয় গ্রহণ করলো। সবচেয়ে খারাপ কাজ যেটা তারা করলো তা হচ্ছে মিথ্যা কপটতা ও অমঙ্গলের পথ তারা বেছে নিল। মন্দের দ্বারা তারা প্রভাবিত হয়ে পড়লো। যেমন-তারা [আল্লাহ্র কিতাব অনুসরণ না করে] ম্যাজিক বা যাদুবিদ্যার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়লো এবং তারই অনুসরণ করতো। পরবর্তী আয়াতে এ সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 002.099
আমি আপনার প্রতি উজ্জ্বল নিদর্শনসমূহ অবতীর্ণ করেছি। অবাধ্যরা ব্যতীত কেউ এগুলো অস্বীকার করে না।
And indeed We have sent down to you manifest Ayât (these Verses of the Qur’ân which inform in detail about the news of the Jews and their secret intentions, etc.), and none disbelieve in them but Fâsiqûn (those who rebel against Allâh’s Command).
وَلَقَدْ أَنزَلْنَآ إِلَيْكَ آيَاتٍ بَيِّنَاتٍ وَمَا يَكْفُرُ بِهَا إِلاَّ الْفَاسِقُونَ
Walaqad anzalna ilayka ayatin bayyinatin wama yakfuru biha illa alfasiqoona
YUSUFALI: We have sent down to thee Manifest Signs (ayat); and none reject them but those who are perverse.
PICKTHAL: Verily We have revealed unto thee clear tokens, and only miscreants will disbelieve in them.
SHAKIR: And certainly We have revealed to you clear communications and none disbelieve in them except the transgressors.
KHALIFA: We have sent down to you such clear revelations, and only the wicked will reject them.
৯৮। যে কেউ আল্লাহ্র, তাঁর ফেরেশতাগণের, তাঁর রাসূলগণের এবং জিব্রাইল ও মীকাঈলের শত্রু; সে জেনে রাখুক; যারা ঈমান আনে না আল্লাহ তাদের শত্রু।
৯৯। আমি তোমার প্রতি সুস্পষ্ট নিদর্শন [আয়াতসমূহ] অবতীর্ণ করেছি। বিকৃত স্বভাব সম্পন্ন ব্যতীত আর কেউ তা প্রত্যাখান করে না।
১০০। [ঘটনা] কি এই নয় যে, প্রত্যেক সময় তারা অঙ্গীকার করে, [কিন্তু] তাদের মধ্যে একদল তা ছুঁড়ে ফেলে দেয়? বরং তাদের অধিকাংশই ঈমানহীন।
১০১। যখন তাদের নিকট আল্লাহ্র তরফ থেকে একজন রাসূল এসেছিলো, যে তাদের নিকট যা আছে উহার সমর্থক, কিতাবীদের একদল, আল্লাহ্র কিতাবটিকে পিছনে নিক্ষেপ করলো, যেনো [এটা এমন একটি ঘটনা যা] তারা জানে না ১০২।
১০২। এ আয়াতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর প্রতি ঈমান না আনার ব্যাপারে একটি বিশেষ অঙ্গীকার ভঙ্গের বিষয় বর্ণিত হয়েছে। তাদের কাছে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে একজন মহান পয়গম্বর আসলেন এবং কুরআন নাজেল হলো যা ইহুদীদের কাছে যে ধর্মগ্রন্থ [তাওরাত] আছে তাকে সত্যায়ন করে। এ অবস্থায় রসূল করিম (সাঃ) এর প্রতি ঈমান আনা তাওরাতের নির্দেশ পালনেরই নামান্তর ছিল। তাওরাতকে তারাও আল্লাহ্র প্রেরিত গ্রন্থ মনে করতো। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা তাদের নিজেদের ধর্ম গ্রন্থের বাণীকে অস্বীকার করলো। নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী তার পরিবর্তন করলো। যদি তারা আন্তরিক হতো তবে তারা অবশ্যই দেখতে পেতো তাদের ধর্মগ্রন্থের [তাওরাতের] যে বাণী বা নৈতিক নীতিমালা, সে নীতিমালা আমাদের কুরআনের নৈতিক নীতিমালারই অনুরূপ। কারণ সবই একই স্রষ্টার কাছ থেকে আগত। কিন্তু তারা সে চেষ্টা না করে কপটতার আশ্রয় গ্রহণ করলো। সবচেয়ে খারাপ কাজ যেটা তারা করলো তা হচ্ছে মিথ্যা কপটতা ও অমঙ্গলের পথ তারা বেছে নিল। মন্দের দ্বারা তারা প্রভাবিত হয়ে পড়লো। যেমন-তারা [আল্লাহ্র কিতাব অনুসরণ না করে] ম্যাজিক বা যাদুবিদ্যার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়লো এবং তারই অনুসরণ করতো। পরবর্তী আয়াতে এ সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 002.100
কি আশ্চর্য, যখন তারা কোন অঙ্গীকারে আবদ্ধ হয়, তখন তাদের একদল তা ছুঁড়ে ফেলে, বরং অধিকাংশই বিশ্বাস করে না।
Is it not (the case) that every time they make a covenant, some party among them throw it aside? Nay! the truth is most of them believe not.
أَوَكُلَّمَا عَاهَدُواْ عَهْداً نَّبَذَهُ فَرِيقٌ مِّنْهُم بَلْ أَكْثَرُهُمْ لاَ يُؤْمِنُونَ
Awa kullama AAahadoo AAahdan nabathahu fareequn minhum bal aktharuhum la yu/minoona
YUSUFALI: Is it not (the case) that every time they make a covenant, some party among them throw it aside?- Nay, Most of them are faithless.
PICKTHAL: Is it ever so that when they make a covenant a party of them set it aside? The truth is, most of them believe not.
SHAKIR: What! whenever they make a covenant, a party of them cast it aside? Nay, most of them do not believe.
KHALIFA: Is it not a fact that when they make a covenant and pledge to keep it, some of them always disregard it? In fact, most of them do not believe.
৯৮। যে কেউ আল্লাহ্র, তাঁর ফেরেশতাগণের, তাঁর রাসূলগণের এবং জিব্রাইল ও মীকাঈলের শত্রু; সে জেনে রাখুক; যারা ঈমান আনে না আল্লাহ তাদের শত্রু।
৯৯। আমি তোমার প্রতি সুস্পষ্ট নিদর্শন [আয়াতসমূহ] অবতীর্ণ করেছি। বিকৃত স্বভাব সম্পন্ন ব্যতীত আর কেউ তা প্রত্যাখান করে না।
১০০। [ঘটনা] কি এই নয় যে, প্রত্যেক সময় তারা অঙ্গীকার করে, [কিন্তু] তাদের মধ্যে একদল তা ছুঁড়ে ফেলে দেয়? বরং তাদের অধিকাংশই ঈমানহীন।
১০১। যখন তাদের নিকট আল্লাহ্র তরফ থেকে একজন রাসূল এসেছিলো, যে তাদের নিকট যা আছে উহার সমর্থক, কিতাবীদের একদল, আল্লাহ্র কিতাবটিকে পিছনে নিক্ষেপ করলো, যেনো [এটা এমন একটি ঘটনা যা] তারা জানে না ১০২।
১০২। এ আয়াতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর প্রতি ঈমান না আনার ব্যাপারে একটি বিশেষ অঙ্গীকার ভঙ্গের বিষয় বর্ণিত হয়েছে। তাদের কাছে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে একজন মহান পয়গম্বর আসলেন এবং কুরআন নাজেল হলো যা ইহুদীদের কাছে যে ধর্মগ্রন্থ [তাওরাত] আছে তাকে সত্যায়ন করে। এ অবস্থায় রসূল করিম (সাঃ) এর প্রতি ঈমান আনা তাওরাতের নির্দেশ পালনেরই নামান্তর ছিল। তাওরাতকে তারাও আল্লাহ্র প্রেরিত গ্রন্থ মনে করতো। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা তাদের নিজেদের ধর্ম গ্রন্থের বাণীকে অস্বীকার করলো। নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী তার পরিবর্তন করলো। যদি তারা আন্তরিক হতো তবে তারা অবশ্যই দেখতে পেতো তাদের ধর্মগ্রন্থের [তাওরাতের] যে বাণী বা নৈতিক নীতিমালা, সে নীতিমালা আমাদের কুরআনের নৈতিক নীতিমালারই অনুরূপ। কারণ সবই একই স্রষ্টার কাছ থেকে আগত। কিন্তু তারা সে চেষ্টা না করে কপটতার আশ্রয় গ্রহণ করলো। সবচেয়ে খারাপ কাজ যেটা তারা করলো তা হচ্ছে মিথ্যা কপটতা ও অমঙ্গলের পথ তারা বেছে নিল। মন্দের দ্বারা তারা প্রভাবিত হয়ে পড়লো। যেমন-তারা [আল্লাহ্র কিতাব অনুসরণ না করে] ম্যাজিক বা যাদুবিদ্যার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়লো এবং তারই অনুসরণ করতো। পরবর্তী আয়াতে এ সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 002.101
যখন তাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন রসূল আগমন করলেন-যিনি ঐ কিতাবের সত্যায়ন করেন, যা তাদের কাছে রয়েছে, তখন আহলে কেতাবদের একদল আল্লাহর গ্রন্থকে পশ্চাতে নিক্ষেপ করল-যেন তারা জানেই না।
And when there came to them a Messenger from Allâh (i.e. Muhammad Peace be upon him ) confirming what was with them, a party of those who were given the Scripture threw away the Book of Allâh behind their backs as if they did not know!
وَلَمَّا جَاءهُمْ رَسُولٌ مِّنْ عِندِ اللّهِ مُصَدِّقٌ لِّمَا مَعَهُمْ نَبَذَ فَرِيقٌ مِّنَ الَّذِينَ أُوتُواْ الْكِتَابَ كِتَابَ اللّهِ وَرَاء ظُهُورِهِمْ كَأَنَّهُمْ لاَ يَعْلَمُونَ
Walamma jaahum rasoolun min AAindi Allahi musaddiqun lima maAAahum nabatha fareequn mina allatheena ootoo alkitaba kitaba Allahi waraa thuhoorihim kaannahum la yaAAlamoona
YUSUFALI: And when there came to them a messenger from Allah, confirming what was with them, a party of the people of the Book threw away the Book of Allah behind their backs, as if (it had been something) they did not know!
PICKTHAL: And when there cometh unto them a messenger from Allah, confirming that which they possess, a party of those who have received the Scripture fling the Scripture of Allah behind their backs as if they knew not,
SHAKIR: And when there came to them a Messenger from Allah verifying that which they have, a party of those who were given the Book threw the Book of Allah behind their backs as if they knew nothing.
KHALIFA: Now that a messenger from GOD has come to them, and even though he proves and confirms their own scripture, some followers of the scripture (Jews, Christians, and Muslims) disregard GOD’s scripture behind their backs, as if they never had any scripture.
৯৮। যে কেউ আল্লাহ্র, তাঁর ফেরেশতাগণের, তাঁর রাসূলগণের এবং জিব্রাইল ও মীকাঈলের শত্রু; সে জেনে রাখুক; যারা ঈমান আনে না আল্লাহ তাদের শত্রু।
৯৯। আমি তোমার প্রতি সুস্পষ্ট নিদর্শন [আয়াতসমূহ] অবতীর্ণ করেছি। বিকৃত স্বভাব সম্পন্ন ব্যতীত আর কেউ তা প্রত্যাখান করে না।
১০০। [ঘটনা] কি এই নয় যে, প্রত্যেক সময় তারা অঙ্গীকার করে, [কিন্তু] তাদের মধ্যে একদল তা ছুঁড়ে ফেলে দেয়? বরং তাদের অধিকাংশই ঈমানহীন।
১০১। যখন তাদের নিকট আল্লাহ্র তরফ থেকে একজন রাসূল এসেছিলো, যে তাদের নিকট যা আছে উহার সমর্থক, কিতাবীদের একদল, আল্লাহ্র কিতাবটিকে পিছনে নিক্ষেপ করলো, যেনো [এটা এমন একটি ঘটনা যা] তারা জানে না ১০২।
১০২। এ আয়াতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর প্রতি ঈমান না আনার ব্যাপারে একটি বিশেষ অঙ্গীকার ভঙ্গের বিষয় বর্ণিত হয়েছে। তাদের কাছে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে একজন মহান পয়গম্বর আসলেন এবং কুরআন নাজেল হলো যা ইহুদীদের কাছে যে ধর্মগ্রন্থ [তাওরাত] আছে তাকে সত্যায়ন করে। এ অবস্থায় রসূল করিম (সাঃ) এর প্রতি ঈমান আনা তাওরাতের নির্দেশ পালনেরই নামান্তর ছিল। তাওরাতকে তারাও আল্লাহ্র প্রেরিত গ্রন্থ মনে করতো। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা তাদের নিজেদের ধর্ম গ্রন্থের বাণীকে অস্বীকার করলো। নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী তার পরিবর্তন করলো। যদি তারা আন্তরিক হতো তবে তারা অবশ্যই দেখতে পেতো তাদের ধর্মগ্রন্থের [তাওরাতের] যে বাণী বা নৈতিক নীতিমালা, সে নীতিমালা আমাদের কুরআনের নৈতিক নীতিমালারই অনুরূপ। কারণ সবই একই স্রষ্টার কাছ থেকে আগত। কিন্তু তারা সে চেষ্টা না করে কপটতার আশ্রয় গ্রহণ করলো। সবচেয়ে খারাপ কাজ যেটা তারা করলো তা হচ্ছে মিথ্যা কপটতা ও অমঙ্গলের পথ তারা বেছে নিল। মন্দের দ্বারা তারা প্রভাবিত হয়ে পড়লো। যেমন-তারা [আল্লাহ্র কিতাব অনুসরণ না করে] ম্যাজিক বা যাদুবিদ্যার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়লো এবং তারই অনুসরণ করতো। পরবর্তী আয়াতে এ সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 002.102
তারা ঐ শাস্ত্রের অনুসরণ করল, যা সুলায়মানের রাজত্ব কালে শয়তানরা আবৃত্তি করত। সুলায়মান কুফর করেনি; শয়তানরাই কুফর করেছিল। তারা মানুষকে জাদুবিদ্যা এবং বাবেল শহরে হারুত ও মারুত দুই ফেরেশতার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছিল, তা শিক্ষা দিত। তারা উভয়ই একথা না বলে কাউকে শিক্ষা দিত না যে, আমরা পরীক্ষার জন্য; কাজেই তুমি কাফের হয়ো না। অতঃপর তারা তাদের কাছ থেকে এমন জাদু শিখত, যদ্দ্বারা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। তারা আল্লাহর আদেশ ছাড়া তদ্দ্বারা কারও অনিষ্ট করতে পারত না। যা তাদের ক্ষতি করে এবং উপকার না করে, তারা তাই শিখে। তারা ভালরূপে জানে যে, যে কেউ জাদু অবলম্বন করে, তার জন্য পরকালে কোন অংশ নেই। যার বিনিময়ে তারা আত্নবিক্রয় করেছে, তা খুবই মন্দ যদি তারা জানত।
They followed what the Shayâtin (devils) gave out (falsely of the magic) in the lifetime of Sulaimân (Solomon). Sulaimân did not disbelieve, but the Shayâtin (devils) disbelieved, teaching men magic and such things that came down at Babylon to the two angels, Hârût and Mârût, but neither of these two (angels) taught anyone (such things) till they had said, ”We are only for trial, so disbelieve not (by learning this magic from us).” And from these (angels) people learn that by which they cause separation between man and his wife, but they could not thus harm anyone except by Allâh’s Leave. And they learn that which harms them and profits them not. And indeed they knew that the buyers of it (magic) would have no share in the Hereafter. And how bad indeed was that for which they sold their ownselves, if they but knew.
وَاتَّبَعُواْ مَا تَتْلُواْ الشَّيَاطِينُ عَلَى مُلْكِ سُلَيْمَانَ وَمَا كَفَرَ سُلَيْمَانُ وَلَـكِنَّ الشَّيْاطِينَ كَفَرُواْ يُعَلِّمُونَ النَّاسَ السِّحْرَ وَمَا أُنزِلَ عَلَى الْمَلَكَيْنِ بِبَابِلَ هَارُوتَ وَمَارُوتَ وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّى يَقُولاَ إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلاَ تَكْفُرْ فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ وَمَا هُم بِضَآرِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلاَّ بِإِذْنِ اللّهِ وَيَتَعَلَّمُونَ مَا يَضُرُّهُمْ وَلاَ يَنفَعُهُمْ وَلَقَدْ عَلِمُواْ لَمَنِ اشْتَرَاهُ مَا لَهُ فِي الآخِرَةِ مِنْ خَلاَقٍ وَلَبِئْسَ مَا شَرَوْاْ بِهِ أَنفُسَهُمْ لَوْ كَانُواْ يَعْلَمُونَ
ttabaAAoo ma tatloo alshshayateenu AAala mulki sulaymana wama kafara sulaymanu walakinna alshshayateena kafaroo yuAAallimoona alnnasa alssihra wama onzila AAala almalakayni bibabila haroota wamaroota wama yuAAallimani min ahadin hatta yaqoola innama nahnu fitnatun fala takfur fayataAAallamoona minhuma ma yufarriqoona bihi bayna almar-i wazawjihi wama hum bidarreena bihi min ahadin illa bi-ithni Allahi wayataAAallamoona ma yadurruhum wala yanfaAAuhum walaqad AAalimoo lamani ishtarahu ma lahu fee al-akhirati min khalaqin walabi/sa ma sharaw bihi anfusahum law kanoo yaAAlamoona
YUSUFALI: They followed what the evil ones gave out (falsely) against the power of Solomon: the blasphemers Were, not Solomon, but the evil ones, teaching men Magic, and such things as came down at babylon to the angels Harut and Marut. But neither of these taught anyone (Such things) without saying: “We are only for trial; so do not blaspheme.” They learned from them the means to sow discord between man and wife. But they could not thus harm anyone except by Allah’s permission. And they learned what harmed them, not what profited them. And they knew that the buyers of (magic) would have no share in the happiness of the Hereafter. And vile was the price for which they did sell their souls, if they but knew!
PICKTHAL: And follow that which the devils falsely related against the kingdom of Solomon. Solomon disbelieved not; but the devils disbelieved, teaching mankind magic and that which was revealed to the two angels in Babel, Harut and Marut. Nor did they (the two angels) teach it to anyone till they had said: We are only a temptation, therefore disbelieve not (in the guidance of Allah). And from these two (angles) people learn that by which they cause division between man and wife; but they injure thereby no-one save by Allah’s leave. And they learn that which harmeth them and profiteth them not. And surely they do know that he who trafficketh therein will have no (happy) portion in the Hereafter; and surely evil is the price for which they sell their souls, if they but knew.
SHAKIR: And they followed what the Shaitans chanted of sorcery in the reign of Sulaiman, and Sulaiman was not an unbeliever, but the Shaitans disbelieved, they taught men sorcery and that was sent down to the two angels at Babel, Harut and Marut, yet these two taught no man until they had said, “Surely we are only a trial, therefore do not be a disbeliever.” Even then men learned from these two, magic by which they might cause a separation between a man and his wife; and they cannot hurt with it any one except with Allah’s permission, and they learned what harmed them and did not profit them, and certainly they know that he who bought it should have no share of good in the hereafter and evil was the price for which they sold their souls, had they but known this.
KHALIFA: They pursued what the devils taught concerning Solomon’s kingdom. Solomon, however, was not a disbeliever, but the devils were disbelievers. They taught the people sorcery, and that which was sent down through the two angels of Babel, Haroot and Maroot. These two did not divulge such knowledge without pointing out: “This is a test. You shall not abuse such knowledge.” But the people used it in such evil schemes as the breaking up of marriages. They can never harm anyone against the will of GOD. They thus learn what hurts them, not what benefits them, and they know full well that whoever practices witchcraft will have no share in the Hereafter. Miserable indeed is what they sell their souls for, if they only knew.
১০২। সুলাইমানের ক্ষমতার বিরুদ্ধে শয়তানেরা [মিথ্যা ম্যাজিককে] প্রকাশ করতো যার অনুসরণ তারা করতো ১০৩। সুলাইমান আল্লাহ্র নিন্দা করে নাই, করেছিলো শয়তানগণ, তারা মানুষকে শিক্ষা দিত-যাদু এবং এরূপ জিনিষ যা বেবিলন শহরে হারূত ও মারূত ফেরেশতাদ্বয়ের উপরে অবতীর্ণ করা হয়েছিলো ১০৪। ‘আমরা পরীক্ষা স্বরূপ; সুতরাং [আমাদের নিকট থেকে এ ম্যাজিক শিখে] অবিশ্বাসী হয়ো না;’-এ কথা না বলে তারা কাউকেও [এসব জিনিষ শিক্ষা দিত না। তারা তাদের নিকট থেকে শিক্ষা লাভ করতো যা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করবে। কিন্তু আল্লাহ্র নির্দেশ ব্যতীত এভাবে তারা কারও ক্ষতি সাধন করতে পারবে না। তারা শিক্ষা লাভ করেছিলো যা তাদের [নিজেদের] ক্ষতি সাধন করবে, কোন উপকারেই আসবে না। আর তারা জানতো যে, যারা [যাদুবিদ্যা] ক্রয় করে পরলোকের সুখ শান্তিতে তাদের কোন অংশ নাই। কত নিকৃষ্ট মূল্য যার বিনিময়ে তারা স্বীয় আত্মাকে বিক্রি করেছে-যদি তারা তা জানতো; ১০৫।
১০৩। এই আয়াতটি পূর্ববর্তী আয়াতের সংযোজিত অংশ। ইহুদীরা আল্লাহ্র ইচ্ছার প্রতিফলন বা আল্লাহ্র কিতাবের অনুসরণ না করে ঐ শাস্ত্রের অনুসরণ করলো, যা হযরত সুলায়মানের রাজত্বকালে শয়তানেরা চর্চা করতো। তা হচ্ছে জ্যোতিষ শাস্ত্রের চর্চা ও যাদুবিদ্যা। আল্লাহ্ এগুলি থেকে দূরে থাকতে বলেছেন। জ্যোতিষ বিদ্যা ও যাদু বিদ্যাতে বিশ্বাস স্থাপন করা কুফ্র। কিন্তু ইহুদীরা হযরত সোলায়মান সম্পর্কে অপূর্ব সব যাদুর কাহিনী চালু করেছিলো। কিন্তু আল্লাহ্ বলেছেন যে হযরত সোলায়মান যাদুতে বিশ্বাসী ছিলেন না। তিনি শয়তানের শক্তিতে বিশ্বাসী ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের খোদাভীরু নবী। যারা এইসব অতিপ্রাকৃত শক্তিতে বিশ্বাস করে তারা আল্লাহ্র আইনের বিরোধিতা করে। তারাই সত্যিকারের স্রষ্টার নিন্দুক বা কাফের।
সার্বজনীন উপদেশ হচ্ছে, যে সব জাতি শিক্ষা দীক্ষায় অনগ্রসর এবং সামাজিক জীবনে দারিদ্র এবং অবিচার ও অনাচারের মধ্যে বাস করে, দেখা যায় তাদের মধ্যে স্রষ্টার উপরে নির্ভরশীলতা অপেক্ষা অতিপ্রাকৃত শক্তির উপর নির্ভরশীলতা বেশি হয়। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা অপ্রাসঙ্গিক হবে না যে, বাংলাদেশীদের জাতীয় জীবনে এ ধরনের প্রভাব অত্যন্ত বেশি।
১০৪। এই আয়াতটিকে বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। প্রশ্ন জাগে হারূত মারূত কে ছিলেন? তারা কি শিক্ষা দিতেন? মাওলানা ইউসুফ আলী ‘তফসীর হাক্কানী’ ও ‘তফসীর কবীর’- কে অনুসরণ করেছেন। হারূত ও মারূতকে ফেরেশ্তা বলা হয়েছে। ফেরেশ্তা এখানে প্রতীক অর্থে ব্যবহৃত। যার অর্থ করা যায় তারা ছিলেন ভাল মানুষ ও বিভিন্ন জ্ঞানে সমৃদ্ধ। তারা ছিলেন জ্ঞানী এবং বিবেকবান [man of knowledge and wisdom]। তাদের ফেরেশ্তা বলা হচ্ছে এই জন্য যে, প্রাচীনকালে ফেরেশ্তারা ছিলেন পৌরুষের প্রতীক। ফেরেশ্তা সমতুল্য ব্যক্তি হবেন জ্ঞানে-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ, বিচক্ষণতা, বিবেকে, ক্ষমতায় যারা অপ্রতিদ্বন্ধী। যদি প্রতীকরূপে ধরা হয় তবে হারূত ও মারূত ছিলেন সেইরূপ ব্যক্তি। শঠতা, নীচতা, কপটতার উর্ধ্বে ছিলেন তারা।
হারূত ও মারূত প্রাচীন বেবীলন শহরে বাস করতেন। বেবীলন শহর সেই যুগের জ্ঞান-বিজ্ঞানের পীঠস্থানরূপে পরিচিত ছিল। ঠিক কখন সে সম্পর্কে সুনিশ্চিত তথ্য জানা না থাকলেও এক সময়ে পৃথিবীতে বিশেষ করে বাবেল শহরে যাদুবিদ্যার যথেষ্ট প্রচলন ছিল। যাদুর অত্যাচার্য ক্রিয়া দেখে মূর্খ লোকদের মধ্যে যাদু ও পয়গম্বরদের মো’জেযার স্বরূপ সম্বন্ধে বিভ্রান্তি দেখা যায়। সে কারণে তারা হযরত সোলায়মান (আঃ) কে যাদু বিদ্যার চর্চা করার কথা বলতো। কিন্তু আল্লাহ্ বলেছেন হযরত সোলায়মান যাদুর র্চচা করতেন না। তিনি ছিলেন সত্যদ্রষ্টা আল্লাহ্ কর্তৃক মোজেযাপ্রাপ্ত পয়গম্বর। কেউ কেউ যাদুকরদেরও সজ্জন ও অনুসরণযোগ্য মনে করতে থাকে। এই বিভ্রান্তি দূর করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ্ তায়ালা বাবেল শহরে হারূত ও মারূত নামে দুজন ফেরেশ্তাকে প্রেরণ করেন। তাদের কাজ ছিল যাদুর স্বরুপ ও ভেল্কিবাজী সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করা যাতে বিভ্রান্তি দূর হয় এবং যাদুর আমল, রূপ ও যাদুকরদের অনুসরণ থেকে তারা বিরত থাকতে পারে। মোট কথা ফেরেশ্তাদ্বয় বাবেল শহরে কাজ আরম্ভ করে দিলেন। তারা যাদুর মূল শাখা-প্রশাখার বর্ণনা করে জনগণকে এ কুকর্ম থেকে আত্মরক্ষা ও যাদুকরগণকে ঘৃণা করার উপদেশ দেন। ফেরেশ্তাদ্বয় এ বলে লোকজনদের সাবধান করতেন যে দেখ, আমাদের দ্বারা আল্লাহ্ তায়ালা পরীক্ষা নিতে চান যে, এগুলি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে কে স্বীয় ধর্মের হেফাজত ও সংরক্ষণ করেন এবং কে এগুলো সম্পর্কে অবগত হয়ে নিজেই সে অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে এবং স্বীয় দ্বীন ঈমান বরবাদ করে দেয়। যে জ্ঞান পৃথিবীকে আলোকিত ও শান্তিতে ভরিয়ে দিতে পারে, সেই জ্ঞান দুষ্ট লোকের হাতে পড়লে ক্ষতি সাধন হয়। উদাহরণ স্বরূপ আমরা আমাদের সাম্প্রতিক পৃথিবীতে দেখতে পাই যে, পারমাণবিক জ্ঞান যখন শান্তির কাজে ব্যবহার করা হয় তা হয় মানুষের কল্যাণের জন্য। এই জ্ঞানই আবার পৃথিবীর ধ্বংস যজ্ঞের কারণ হতে পারে। জ্ঞানই শক্তি-আবার এই জ্ঞানই দুষ্ট লোকের হাতে মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে। বর্তমানে পৃথিবীতে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার জ্ঞান এরূপ পরীক্ষার সম্মুখীন। আল্লাহ্ আমাদে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়েছেন। হারূত মারূতের মাধ্যমে আল্লাহ্ আমাদের এই শিক্ষাই দিয়েছেন যে আল্লাহ্ প্রদত্ত জ্ঞান আমাদের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ। জ্ঞানকে মানুষ লোভ ও ক্ষমতার জন্য অপব্যবহার করবে না। জ্ঞানকে মানুষ আল্লাহ্র রাস্তায় অর্থাৎ মানুষের কল্যাণের জন্য ব্যবহার করবে। আর একটি উপদেশ হচ্ছে এই যে, জীবনের কোনও অবস্থাতেই কোনও বিপদ-আপদের সম্মুখীন হলেও তা থেকে উদ্ধারের জন্য যাদু-টোনা, ঝাড়-ফুক ও অলৌকিক কিছুর আশ্রয় গ্রহণ করা হারাম ও কুফর। আজ আমাদের বাংলাদেশীদের মধ্যে রত্ন পাথর, ঝাড়-ফুক, মাদুলী – তাবিজ ইত্যাদির অত্যাধিক প্রসার লাভ করেছে। সেই সাথে প্রসার লাভ করেছে পীর-ফকির নামধারী ভন্ড প্রতারকদের, যারা দাবী করে যে তাদের অলৌকিক ক্ষমতাবলে তারা সব মুশকিল আসান করে দিতে পারে। কিন্তু মুসলমাদের কর্তব্য হচ্ছে মুসকিল আসান বা বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য শুধুমাত্র সর্বশক্তিমানের কাছে আত্মসমর্পন করা। তিনি সব মুশকিল-আসানের মালিক। যাদু টোনা বা অলৌকিক কিছুর আশ্রয় গ্রহণ করা মুসলমানদের জন্য নিষিদ্ধ বা হারাম।
১০৫। দুষ্ট লোকেরা হারূত ও মারূতের কাছ থেকে যাদুর স্বরূপ সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করে তা তাদের দুষ্ট অভিসন্ধি চরিতার্থ করার কাজে নিয়োজিত করে। তাদের প্রতারণা, জালিয়াতি, সাধারণ মানুষের চোখে বিভ্রান্তি ঘটায়। এসব যাদুকরেরা সাধারণভাবে স্ত্রী পুরুষের মধ্যে বিভেদ ঘটানোর জন্য তাদের এই যাদুর ব্যবহার করতো। কুরআন ও হাদীসের পরিভাষায় এসব অলৌকিক কর্মকাণ্ডকে যাদু বলা হয়। যাদু হচ্ছে সেই জিনিষ বা শয়তানের সন্তুষ্টির জন্য করা হয়; যে কাজ সম্পাদনের জন্য শয়তানের সাহায্য প্রার্থনা করা হয়। কিন্তু মহান আল্লাহ্ আমাদের আস্বস্ত করেছেন যে ওদের ক্ষমতা আল্লাহ্ খুবই সীমিত করেছেন। শয়তানকে এই সীমিত ক্ষমতা আল্লাহ্ দিয়েছেন বেহেশ্ত থেকে বিতাড়িত করার সময়েই। আর আদমকে দেয়া হয়েছিলো সেই স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি যেনো সে স্ব-ইচ্ছায় আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পন করে, শয়তানের সন্তুষ্টির জন্য কাজ না করে। যারা শয়তানের কু-প্রভাব থেকে সর্বশক্তিমানের আশ্রয় ও সাহায্য প্রার্থনা করে, আল্লাহ্ তাদের সাহায্য করেন। আল্লাহ্র রহমত ও করুণাধারা তাদের বেষ্টিত করে রাখে। যারা অনুতপ্ত এবং সেই সাথে নিজ কার্যপ্রণালীকে সংশোধনের মাধ্যমে আল্লাহ্র নির্দেশ অন্বেষণ করে; তারা অবশ্যই সমস্ত ক্ষতি, সমস্ত কু-প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহ্র আশ্রয় লাভ করে। বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এসব যাদুকর বা ভণ্ড পীরের আশ্রয় প্রার্থনা করার অর্থ হচ্ছে কুফ্র এবং নিজের আত্মার বা আধ্যাত্মিক জীবনের ক্ষতি করা। কিন্তু আল্লাহ্ বলেছেন এসব যাদুকর বা ভণ্ড পীরেরা (যারা ধর্মের নামে মানুষকে ঠকায়) তাদের নিজের আত্মাকে শয়তানের কাছে বিক্রি করে দেয়। তারা অশুভ শক্তির ক্রীতদাসে পরিণত হয়। এই আয়াতে শুধু যে ব্যক্তিগত দু-একজনের কথাই বলা হয়েছে তা নয় বরং এখানে বলা হয়েছে ইহুদীদের এক বিশাল জনগোষ্ঠীর কথা, ঠিক একইভাবে পৃথিবীর যে কোনও অধঃপতিত জাতি সমষ্টিগতভাবে রত্ন-পাথর, যাদু-টোনা, পীর-ফকিরের আধিপত্যে বিশ্বাসী হতে পারে। পরিণামে সে জাতির ধ্বংস অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। কারন তারা আল্লাহ্র করুণা বা রহমত থেকে বঞ্চিত হয়।
আয়াতঃ 002.103
যদি তারা ঈমান আনত এবং খোদাভীরু হত, তবে আল্লাহর কাছ থেকে উত্তম প্রতিদান পেত। যদি তারা জানত।
And if they had believed, and guarded themselves from evil and kept their duty to Allâh, far better would have been the reward from their Lord, if they but knew!
وَلَوْ أَنَّهُمْ آمَنُواْ واتَّقَوْا لَمَثُوبَةٌ مِّنْ عِندِ اللَّه خَيْرٌ لَّوْ كَانُواْ يَعْلَمُونَ
Walaw annahum amanoo waittaqaw lamathoobatun min AAindi Allahi khayrun law kanoo yaAAlamoona
YUSUFALI: If they had kept their Faith and guarded themselves from evil, far better had been the reward from their Lord, if they but knew!
PICKTHAL: And if they had believed and kept from evil, a recompense from Allah would be better, if they only knew.
SHAKIR: And if they had believed and guarded themselves (against evil), reward from Allah would certainly have been better; had they but known (this).
KHALIFA: If they believe and lead a righteous life, the reward from GOD is far better, if they only knew.
১০৩। যদি তারা ঈমান আনতো এবং পাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করতো; তবে আল্লাহ্র নিকট থেকে পুরস্কার অধিক কল্যাণকর হতো-যদি তারা তা জানতো।
রুকু – ১৩
১০৪। হে বিশ্বাসীগণ! [নবীকে দ্বর্থ্যবোধক শব্দ] ‘রাঈনা’ বলো না, বরং [সম্মানকনক শব্দ] ‘উরজুরনা ‘ বল, এবং [তাঁর কথা] মনোযোগের সাথে শোন। অবিশ্বাসীদের জন্য আছে ভয়াবহ শাস্তি ১০৬।
১০৬। কোন কোন ইহুদী রাসুলুল্লাহ্কে (সাঃ) এর নিকট এসে দুরভিসন্ধিমূলকভাবে তাঁকে, ‘রাঈনা’ বলে সম্বোধন করত। হিব্রু ভাষায় এর অর্থ একটি বদ দোয়া। তারা এ নিয়তেই তা বলতো কিন্তু আরবী ভাষায় এর অর্থ হচ্ছে ‘আমাদের প্রতি লক্ষ্য করুন’ ফলে আরবীভাষীরা তাদের এই দুরভিসন্ধি বুঝতে পারতো না। ভাল অর্থের প্রতি লক্ষ্য রেখে কোন কোন মুসলমানও রাসুলুল্লাহ্কে এই শব্দে সম্বোধন করতেন। এতে দুষ্টরা আরও আশ্কারা পেতো ও পরস্পর হাসাহাসি করতো আর বলতো, ‘এত দিন আমরা গোপনেই তাকে মন্দ বলতাম। এখন এতে মুসলমানদেরও শরীক হওয়ার কারণে প্রকাশ্যে মন্দ বলার সুযোগ এসেছে’। তাদের এই সুযোগ নষ্ট করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ্ মুসলমানদের নির্দেশ দিচ্ছেন, ‘হে মুমিনগণ তোমরা ‘রাঈনা’ শব্দটি বলো না। এর পরিবর্তে উনযুরনা বলবে।
সার্বজনীন শিক্ষা হচ্ছে, প্রত্যেক যুগে প্রত্যেক জাতির মধ্যে একশ্রেণীর লোক থাকে যারা ভালো জিনিষকে কথার মাধ্যমে মন্দভাবে উপস্থাপন করতে ভালবাসে। এরা হচ্ছে বিশ্বনিন্দুক। এদের কথার ধুম্রজালে সাধারণ মানুষ হয় বিভ্রান্ত। আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে চিন্তা ও বক্তব্যে সৎ হওয়া। বক্তব্য হবে স্বচ্ছ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ। আরও হুকুম হচ্ছে সৎ বিবেকবান নেতার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা, যে জাতির চিন্তা ও কথার মধ্যে ব্যবধান থাকে তারা মুনাফিক। কারণ তারা ভাবে এক কথা বলে অন্য কথা এরূপ ব্যক্তি বা জাতির উপর আল্লাহ্র গজব অবশ্যই নিপতিত হবে।
আয়াতঃ 002.104
হে মুমিন গণ, তোমরা ‘রায়িনা’ বলো না-‘উনযুরনা’ বল এবং শুনতে থাক। আর কাফেরদের জন্যে রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি।
O you who believe! Say not (to the Messenger Peace be upon him ) Râ’ina but say Unzurna (Do make us understand) and hear. And for the disbelievers there is a painful torment. (See Verse 4:46)
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ لاَ تَقُولُواْ رَاعِنَا وَقُولُواْ انظُرْنَا وَاسْمَعُوا ْوَلِلكَافِرِينَ عَذَابٌ أَلِيمٌ
Ya ayyuha allatheena amanoo la taqooloo raAAina waqooloo onthurna waismaAAoo walilkafireena AAathabun aleemun
YUSUFALI: O ye of Faith! Say not (to the Messenger) words of ambiguous import, but words of respect; and hearken (to him): To those without Faith is a grievous punishment.
PICKTHAL: O ye who believe, say not (unto the Prophet): “Listen to us” but say “Look upon us,” and be ye listeners. For disbelievers is a painful doom.
SHAKIR: O you who believe! do not say Raina and say Unzurna and listen, and for the unbelievers there is a painful chastisement.
KHALIFA: O you who believe, do not say, “Raa`ena” (be our shepherd). Instead, you should say, “Unzurna” (watch over us), and listen. The disbelievers have incurred a painful retribution.
১০৩। যদি তারা ঈমান আনতো এবং পাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করতো; তবে আল্লাহ্র নিকট থেকে পুরস্কার অধিক কল্যাণকর হতো-যদি তারা তা জানতো।
রুকু – ১৩
১০৪। হে বিশ্বাসীগণ! [নবীকে দ্বর্থ্যবোধক শব্দ] ‘রাঈনা’ বলো না, বরং [সম্মানকনক শব্দ] ‘উরজুরনা ‘ বল, এবং [তাঁর কথা] মনোযোগের সাথে শোন। অবিশ্বাসীদের জন্য আছে ভয়াবহ শাস্তি ১০৬।
১০৬। কোন কোন ইহুদী রাসুলুল্লাহ্কে (সাঃ) এর নিকট এসে দুরভিসন্ধিমূলকভাবে তাঁকে, ‘রাঈনা’ বলে সম্বোধন করত। হিব্রু ভাষায় এর অর্থ একটি বদ দোয়া। তারা এ নিয়তেই তা বলতো কিন্তু আরবী ভাষায় এর অর্থ হচ্ছে ‘আমাদের প্রতি লক্ষ্য করুন’ ফলে আরবীভাষীরা তাদের এই দুরভিসন্ধি বুঝতে পারতো না। ভাল অর্থের প্রতি লক্ষ্য রেখে কোন কোন মুসলমানও রাসুলুল্লাহ্কে এই শব্দে সম্বোধন করতেন। এতে দুষ্টরা আরও আশ্কারা পেতো ও পরস্পর হাসাহাসি করতো আর বলতো, ‘এত দিন আমরা গোপনেই তাকে মন্দ বলতাম। এখন এতে মুসলমানদেরও শরীক হওয়ার কারণে প্রকাশ্যে মন্দ বলার সুযোগ এসেছে’। তাদের এই সুযোগ নষ্ট করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ্ মুসলমানদের নির্দেশ দিচ্ছেন, ‘হে মুমিনগণ তোমরা ‘রাঈনা’ শব্দটি বলো না। এর পরিবর্তে উনযুরনা বলবে।
সার্বজনীন শিক্ষা হচ্ছে, প্রত্যেক যুগে প্রত্যেক জাতির মধ্যে একশ্রেণীর লোক থাকে যারা ভালো জিনিষকে কথার মাধ্যমে মন্দভাবে উপস্থাপন করতে ভালবাসে। এরা হচ্ছে বিশ্বনিন্দুক। এদের কথার ধুম্রজালে সাধারণ মানুষ হয় বিভ্রান্ত। আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে চিন্তা ও বক্তব্যে সৎ হওয়া। বক্তব্য হবে স্বচ্ছ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ। আরও হুকুম হচ্ছে সৎ বিবেকবান নেতার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা, যে জাতির চিন্তা ও কথার মধ্যে ব্যবধান থাকে তারা মুনাফিক। কারণ তারা ভাবে এক কথা বলে অন্য কথা এরূপ ব্যক্তি বা জাতির উপর আল্লাহ্র গজব অবশ্যই নিপতিত হবে।
আয়াতঃ 002.105
আহলে-কিতাব ও মুশরিকদের মধ্যে যারা কাফের, তাদের মনঃপুত নয় যে, তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি কোন কল্যাণ অবতীর্ণ হোক। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বিশেষ ভাবে স্বীয় অনুগ্রহ দান করেন। আল্লাহ মহান অনুগ্রহদাতা।
Neither those who disbelieve among the people of the Scripture (Jews and Christians) nor Al-Mushrikûn (the disbelievers in the Oneness of Allâh, idolaters, polytheists, pagans, etc.) like that there should be sent down unto you any good from your Lord. But Allâh chooses for His Mercy whom He wills. And Allâh is the Owner of Great Bounty.
مَّا يَوَدُّ الَّذِينَ كَفَرُواْ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ وَلاَ الْمُشْرِكِينَ أَن يُنَزَّلَ عَلَيْكُم مِّنْ خَيْرٍ مِّن رَّبِّكُمْ وَاللّهُ يَخْتَصُّ بِرَحْمَتِهِ مَن يَشَاء وَاللّهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِيمِ
Ma yawaddu allatheena kafaroo min ahli alkitabi wala almushrikeena an yunazzala AAalaykum min khayrin min rabbikum waAllahu yakhtassu birahmatihi man yashao waAllahu thoo alfadli alAAatheemi
YUSUFALI: It is never the wish of those without Faith among the People of the Book, nor of the Pagans, that anything good should come down to you from your Lord. But Allah will choose for His special Mercy whom He will – for Allah is Lord of grace abounding.
PICKTHAL: Neither those who disbelieve among the people of the Scripture nor the idolaters love that there should be sent down unto you any good thing from your Lord. But Allah chooseth for His mercy whom He will, and Allah is of Infinite Bounty.
SHAKIR: Those who disbelieve from among the followers of the Book do not like, nor do the polytheists, that the good should be sent down to you from your Lord, and Allah chooses especially whom He pleases for His mercy, and Allah is the Lord of mighty grace.
KHALIFA: Neither the disbelievers among the followers of the scripture, nor the idol worshipers, wish to see any blessings come down to you from your Lord. However, GOD showers His blessings upon whomever He chooses. GOD possesses infinite grace.
১০৫। কিতাবীদের মধ্যে যারা ঈমানহীন তারা এবং মুশরিকরা চায় না যে, তোমার প্রভুর নিকট থেকে তোমার প্রতি কোন কল্যাণ অবতীর্ণ হোক। কিন্তু আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা করেন তাকে নিজ অনুগ্রহের জন্য বিশেষভাবে মনোনীত করেন। কারণ আল্লাহ্ অসীম অনুগ্রহের মালিক।
১০৬। আমি কোন আয়াতকে রহিত করলে, বা ভুলে যেতে দিলে, তা থেকে উত্তম কিংবা সমতুল্য কোন আয়াত প্রতিস্থাপন করি। তুমি কি জান না যে, আল্লাহ্ সকল জিনিষের উপরে ক্ষমতাবান? ১০৭।
১০৭। উপরের আয়াতটির অর্থ সার্বজনীন। এর অর্থ সঙ্কীর্ণ অর্থে ব্যবহার না করাই উচিত। এই আয়াতের অর্থ ব্যাপকভাবে গ্রহণ করলে এর অর্থ দাঁড়ায় যে, যুগে-যুগে, কালে-কালে, সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে আল্লাহ্র বাণী সময় ও যুগোপযোগী করা হয়েছে। এর ভাষা, নিয়ম-কানুনের মধ্যে বাহ্যিক কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে সময়ের দাবী ও সময়ের প্রয়োজনে এবং যুগের সাথে সামঞ্জস্য বিধানের জন্য। কিন্তু এর অন্তর্নিহিত বক্তব্য সেই আদি যুগ থেকে আজ পর্যন্ত একই রয়ে গেছে। হযরত মুসার ধর্মগ্রন্থের সামাজিক নিয়ম কানুনের সাথে হযরত ঈসার ধর্মগ্রন্থের সামাজিক নিয়ম কানুনের পার্থক্য এবং শেষে হযরত মুহম্মদ (সাঃ) এর উম্মতদের সামাজিক নিয়ম কানুনের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু লক্ষ্য করলেই দেখা যায় কিতাবীদের নৈতিক নীতিমালা যুগে-যুগে, কালে-কালে একই রয়ে গেছে। শুধু পরিবর্তন হয়েছে বাহ্যিক, সামাজিক নিয়ম নীতিমালা যা যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে যুগোপযোগী করা হয়েছে। এটা ভাবা অন্যায় নয় যে মানব সমাজ সময় ও যুগ অতিক্রম করে সভ্যতার দিকে এগিয়ে চলেছে। যুগে-যুগে আল্লাহ্ ধর্মকে সেই যুগের উপযোগী করার জন্য বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন নবী রাসূলকে প্রেরণ করেছেন। [৩ : ৭] আয়াতে আল্লাহ্ পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করেছেন যে-
‘তিনিই তোমার প্রতি এই কিতাব অবতীর্ণ করেছেন; যাহার কতক আয়াত সুস্পষ্ট, দ্ব্যর্থহীন; এইগুলি কিতাবের মূল অংশ’ আর অন্যগুলি রূপক। যাদের অন্তরে সত্য লঙ্ঘন প্রবণতা রয়েছে শুধু তারাই ফিত্না এবং ভুল ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে যা রূপক তার অনুসরণ করে।’
উদাহরণ স্বরূপ যেমন-অনেকে বলে যে আয়াত [২ : ১১৫] কে [২ : ১৪৪] আয়াত দ্বারা রহিত করা হয়েছে। আয়াত [২ : ১১৫] এ বলা হয়েছে যে –
‘পূর্ব পশ্চিম সর্বত্রই আল্লাহ্ বিদ্যমান; এবং যে দিকেই তোমরা মুখ ফিরাও না কেন সে দিকেই আল্লাহ্র উপস্থিতি বিদ্যমান। আল্লাহ্ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞ।’ এবং আয়াত [২:১৪৪] তে বলা হয়েছে –
‘…. তোমাকে এমন কিবলার দিকে ফিরাইয়া দিতেছি যা তোমাকে সন্তুষ্ট করবে। অতএব তুমি মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাও। তোমরা যেখানেই থাক না কেন উহার দিকে মুখ ফিরাও ….’।
– এর অর্থ এই দাঁড়ায় না যে আয়াত [২:১৪৪] দ্বারা আয়াত [২:১১৫] কে রহিত করা হয়েছে। কারণ এটা ভাবা সংকীর্ণতা ও অন্যায় যে আল্লাহ্ শুধু কোনও নির্দিষ্ট স্থানে সীমাবদ্ধ। তাঁর অবস্থান সর্বত্র; আয়াত [২:১১৫] দ্বারা এই বুঝানো হয়েছে যে আল্লাহ্র ব্যপ্তি বিশ্বজগৎব্যাপী; তাঁর উপস্থিতি সর্বত্র। আয়াত [২:১৪৪] দ্বারা বুঝনো হয়েছে যে, এবাদতের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সকলে মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাবে।
পৃথিবীর দিকে লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাই যে কালের আবর্তে পৃথিবীতে কোনও জিনিস স্থায়ী নয়। কত জনপদ, সভ্যতা, অনুসরণীয় প্রতিষ্ঠান সময়ের আর্বতনে লোপ পেয়ে যায়। বিবর্তনের ধারায় তাদের শিক্ষাও লোকে ভুলে যায়। আজকে যা মনে হবে প্রকৃষ্ট অনুসরণীয় নীতি আগামীকাল তা মনে হবে যুগোপযোগী নয়। কিন্তু আল্লাহ্র শাশ্বত বাণী অপরিবর্তনীয়। উদাহরণ স্বরূপ বলা চলে, সত্য কথা বলা, চুরি না করা, অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ হস্তগত না করা, ব্যাভিচার না করা ইত্যাদি এগুলি হচ্ছে আল্লাহ্র শাশ্বত আইন। হযরত মুসার কিতাব থেকে হযরত ঈসা, হযরত মুহম্মদ (সাঃ) এর কুরআন পর্যন্ত একইভাবে অপরিবর্তিত রয়েছে। যে কোনও কিতাবীদের ধর্মের মূল নৈতিক নীতিমালা এক। কিন্তু এমন অনেক ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান আছে যেখানে খৃষ্টানদের সাথে ইহুদীদের মেলে না, আবার খৃষ্টানদের সাথে মুসলমানদের মেলে না ইত্যাদি। তাই বলে ইহুদী, খৃষ্টান বা ইসলাম এর কোনটাই ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম নয়। কিতাবীরা সবাই হযরত ইব্রাহীমের ধর্মের অনুসারী। সময়ের ব্যবধানে ধর্মের মধ্যে যে অনাচার প্রবেশ করেছিলো, সেগুলি পরিশুদ্ধ করে যুগোপযোগী করার জন্য ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের পরিবর্তন করা হয়েছে। কুরআন হলো সম্পূর্ণ জীবন ব্যবস্থা । উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যুগোপযোগী করার জন্য ইসলামে মেয়েদের অধিকার স্বীকৃত করা হয় – জীবনের সর্ব অবস্থায় যথা : সম্পত্তি, সাক্ষী ইত্যাদিতে যা পূর্বে ছিল না।
আয়াতঃ 002.106
আমি কোন আয়াত রহিত করলে অথবা বিস্মৃত করিয়ে দিলে তদপেক্ষা উত্তম অথবা তার সমপর্যায়ের আয়াত আনয়ন করি। তুমি কি জান না যে, আল্লাহ সব কিছুর উপর শক্তিমান?
Whatever a Verse (revelation) do We abrogate or cause to be forgotten, We bring a better one or similar to it. Know you not that Allâh is able to do all things?
مَا نَنسَخْ مِنْ آيَةٍ أَوْ نُنسِهَا نَأْتِ بِخَيْرٍ مِّنْهَا أَوْ مِثْلِهَا أَلَمْ تَعْلَمْ أَنَّ اللّهَ عَلَىَ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
Ma nansakh min ayatin aw nunsiha na/ti bikhayrin minha aw mithliha alam taAAlam anna Allaha AAala kulli shay-in qadeerun
YUSUFALI: None of Our revelations do We abrogate or cause to be forgotten, but We substitute something better or similar: Knowest thou not that Allah Hath power over all things?
PICKTHAL: Nothing of our revelation (even a single verse) do we abrogate or cause be forgotten, but we bring (in place) one better or the like thereof. Knowest thou not that Allah is Able to do all things?
SHAKIR: Whatever communications We abrogate or cause to be forgotten, We bring one better than it or like it. Do you not know that Allah has power over all things?
KHALIFA: When we abrogate any miracle, or cause it to be forgotten, we produce a better miracle, or at least an equal one. Do you not recognize the fact that GOD is Omnipotent?
১০৫। কিতাবীদের মধ্যে যারা ঈমানহীন তারা এবং মুশরিকরা চায় না যে, তোমার প্রভুর নিকট থেকে তোমার প্রতি কোন কল্যাণ অবতীর্ণ হোক। কিন্তু আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা করেন তাকে নিজ অনুগ্রহের জন্য বিশেষভাবে মনোনীত করেন। কারণ আল্লাহ্ অসীম অনুগ্রহের মালিক।
১০৬। আমি কোন আয়াতকে রহিত করলে, বা ভুলে যেতে দিলে, তা থেকে উত্তম কিংবা সমতুল্য কোন আয়াত প্রতিস্থাপন করি। তুমি কি জান না যে, আল্লাহ্ সকল জিনিষের উপরে ক্ষমতাবান? ১০৭।
১০৭। উপরের আয়াতটির অর্থ সার্বজনীন। এর অর্থ সঙ্কীর্ণ অর্থে ব্যবহার না করাই উচিত। এই আয়াতের অর্থ ব্যাপকভাবে গ্রহণ করলে এর অর্থ দাঁড়ায় যে, যুগে-যুগে, কালে-কালে, সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে আল্লাহ্র বাণী সময় ও যুগোপযোগী করা হয়েছে। এর ভাষা, নিয়ম-কানুনের মধ্যে বাহ্যিক কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে সময়ের দাবী ও সময়ের প্রয়োজনে এবং যুগের সাথে সামঞ্জস্য বিধানের জন্য। কিন্তু এর অন্তর্নিহিত বক্তব্য সেই আদি যুগ থেকে আজ পর্যন্ত একই রয়ে গেছে। হযরত মুসার ধর্মগ্রন্থের সামাজিক নিয়ম কানুনের সাথে হযরত ঈসার ধর্মগ্রন্থের সামাজিক নিয়ম কানুনের পার্থক্য এবং শেষে হযরত মুহম্মদ (সাঃ) এর উম্মতদের সামাজিক নিয়ম কানুনের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু লক্ষ্য করলেই দেখা যায় কিতাবীদের নৈতিক নীতিমালা যুগে-যুগে, কালে-কালে একই রয়ে গেছে। শুধু পরিবর্তন হয়েছে বাহ্যিক, সামাজিক নিয়ম নীতিমালা যা যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে যুগোপযোগী করা হয়েছে। এটা ভাবা অন্যায় নয় যে মানব সমাজ সময় ও যুগ অতিক্রম করে সভ্যতার দিকে এগিয়ে চলেছে। যুগে-যুগে আল্লাহ্ ধর্মকে সেই যুগের উপযোগী করার জন্য বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন নবী রাসূলকে প্রেরণ করেছেন। [৩ : ৭] আয়াতে আল্লাহ্ পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করেছেন যে-
‘তিনিই তোমার প্রতি এই কিতাব অবতীর্ণ করেছেন; যাহার কতক আয়াত সুস্পষ্ট, দ্ব্যর্থহীন; এইগুলি কিতাবের মূল অংশ’ আর অন্যগুলি রূপক। যাদের অন্তরে সত্য লঙ্ঘন প্রবণতা রয়েছে শুধু তারাই ফিত্না এবং ভুল ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে যা রূপক তার অনুসরণ করে।’
উদাহরণ স্বরূপ যেমন-অনেকে বলে যে আয়াত [২ : ১১৫] কে [২ : ১৪৪] আয়াত দ্বারা রহিত করা হয়েছে। আয়াত [২ : ১১৫] এ বলা হয়েছে যে –
‘পূর্ব পশ্চিম সর্বত্রই আল্লাহ্ বিদ্যমান; এবং যে দিকেই তোমরা মুখ ফিরাও না কেন সে দিকেই আল্লাহ্র উপস্থিতি বিদ্যমান। আল্লাহ্ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞ।’ এবং আয়াত [২:১৪৪] তে বলা হয়েছে –
‘…. তোমাকে এমন কিবলার দিকে ফিরাইয়া দিতেছি যা তোমাকে সন্তুষ্ট করবে। অতএব তুমি মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাও। তোমরা যেখানেই থাক না কেন উহার দিকে মুখ ফিরাও ….’।
– এর অর্থ এই দাঁড়ায় না যে আয়াত [২:১৪৪] দ্বারা আয়াত [২:১১৫] কে রহিত করা হয়েছে। কারণ এটা ভাবা সংকীর্ণতা ও অন্যায় যে আল্লাহ্ শুধু কোনও নির্দিষ্ট স্থানে সীমাবদ্ধ। তাঁর অবস্থান সর্বত্র; আয়াত [২:১১৫] দ্বারা এই বুঝানো হয়েছে যে আল্লাহ্র ব্যপ্তি বিশ্বজগৎব্যাপী; তাঁর উপস্থিতি সর্বত্র। আয়াত [২:১৪৪] দ্বারা বুঝনো হয়েছে যে, এবাদতের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সকলে মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাবে।
পৃথিবীর দিকে লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাই যে কালের আবর্তে পৃথিবীতে কোনও জিনিস স্থায়ী নয়। কত জনপদ, সভ্যতা, অনুসরণীয় প্রতিষ্ঠান সময়ের আর্বতনে লোপ পেয়ে যায়। বিবর্তনের ধারায় তাদের শিক্ষাও লোকে ভুলে যায়। আজকে যা মনে হবে প্রকৃষ্ট অনুসরণীয় নীতি আগামীকাল তা মনে হবে যুগোপযোগী নয়। কিন্তু আল্লাহ্র শাশ্বত বাণী অপরিবর্তনীয়। উদাহরণ স্বরূপ বলা চলে, সত্য কথা বলা, চুরি না করা, অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ হস্তগত না করা, ব্যাভিচার না করা ইত্যাদি এগুলি হচ্ছে আল্লাহ্র শাশ্বত আইন। হযরত মুসার কিতাব থেকে হযরত ঈসা, হযরত মুহম্মদ (সাঃ) এর কুরআন পর্যন্ত একইভাবে অপরিবর্তিত রয়েছে। যে কোনও কিতাবীদের ধর্মের মূল নৈতিক নীতিমালা এক। কিন্তু এমন অনেক ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান আছে যেখানে খৃষ্টানদের সাথে ইহুদীদের মেলে না, আবার খৃষ্টানদের সাথে মুসলমানদের মেলে না ইত্যাদি। তাই বলে ইহুদী, খৃষ্টান বা ইসলাম এর কোনটাই ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম নয়। কিতাবীরা সবাই হযরত ইব্রাহীমের ধর্মের অনুসারী। সময়ের ব্যবধানে ধর্মের মধ্যে যে অনাচার প্রবেশ করেছিলো, সেগুলি পরিশুদ্ধ করে যুগোপযোগী করার জন্য ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের পরিবর্তন করা হয়েছে। কুরআন হলো সম্পূর্ণ জীবন ব্যবস্থা । উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যুগোপযোগী করার জন্য ইসলামে মেয়েদের অধিকার স্বীকৃত করা হয় – জীবনের সর্ব অবস্থায় যথা : সম্পত্তি, সাক্ষী ইত্যাদিতে যা পূর্বে ছিল না।
আয়াতঃ 002.107
তুমি কি জান না যে, আল্লাহর জন্যই নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের আধিপত্য? আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন বন্ধু ও সাহায্যকারী নেই।
Know you not that it is Allâh to Whom belongs the dominion of the heavens and the earth? And besides Allâh you have neither any Walî (protector or guardian) nor any helper.
أَلَمْ تَعْلَمْ أَنَّ اللّهَ لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ اللّهِ مِن وَلِيٍّ وَلاَ نَصِيرٍ
Alam taAAlam anna Allaha lahu mulku alssamawati waal-ardi wama lakum min dooni Allahi min waliyyin wala naseerin
YUSUFALI: Knowest thou not that to Allah belongeth the dominion of the heavens and the earth? And besides Him ye have neither patron nor helper.
PICKTHAL: Knowest thou not that it is Allah unto Whom belongeth the Sovereignty of the heavens and the earth; and ye have not, beside Allah, any guardian or helper?
SHAKIR: Do you not know that Allah’s is the kingdom of the heavens and the earth, and that besides Allah you have no guardian or helper?
KHALIFA: Do you not recognize the fact that GOD possesses the kingship of the heavens and the earth; that you have none besides GOD as your Lord and Master?
১০৭। তুমি কি জান না যে, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সীমানা আল্লাহ্রই নিয়ন্ত্রণাধীনে? তিনি ব্যতীত তোমাদের কোনও অভিভাবক নাই, সাহায্যকারীও নাই।
১০৮। তোমরা কি তোমাদের রাসূলকে সেইরূপ প্রশ্ন করতে চাও, প্রাচীনকালে মুসাকে যেরূপ করা হয়েছিল? ১০৮। কিন্তু যে বিশ্বাসী থেকে অবিশ্বাসীতে পরিবর্তিত হয়, নিঃসন্দেহে সে সরল পথ থেকে বিপথে যায় ১০৯।
১০৮। ইহুদীরা হযরত মুসা (আঃ) কে অপ্রাসঙ্গিক কুটিল প্রশ্ন দ্বারা অবিরাম হয়রানী করতো। এখানে আল্লাহ্ মুসলমানদের সেই উদাহরণ অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। আধ্যাত্মিক জগতে নিজেকে জাহির করা বা প্রচার করার মাধ্যমে কিছুই পাওয়া যায় না। সত্যিকারের যদি কিছু জানার আকাঙ্ক্ষা থাকে শুধুমাত্র তবেই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা উচিত।
১০৯। আরবী শব্দ ‘সাওয়াআ’ এর অর্থ অনেক ব্যাপক। শুধুমাত্র সরল পথ বা মসৃন পথ-এভাবে এর অর্থ প্রকাশ করা সম্ভব নয়। এর দ্বারা বিভিন্ন ভাবের প্রকাশ পায়। যেমন-এ এমন পথ যা মসৃন [বন্ধুর পথের বিপরীত]; সুসামঞ্জস্যপূর্ণ [এলোমেলো এর বিপরীত]; সঙ্গতিপূর্ণ [অসঙ্গতির বিপরীত]; ন্যায়ের পথ [অন্যায়ের বিপরীত]; মধ্য পথ [চরম পথের বিপরীত] এবং যে পথ আদর্শ বা উদ্দেশ্যের প্রতি নিবেদিত। অর্থাৎ এটা এমন এক পথ যা মধ্য পথ, ন্যায় ও সত্যের আলোয় উদ্ভাসিত, পারিপার্শ্বিকের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। জীবনের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভালোর প্রতি, সত্য ও সুন্দরের প্রতি নিবেদিত পরিকল্পিত জীবন। সুতরাং এ পথ অবলম্বন করতে হলে চারিত্রিক গুণাবলী অর্জন করতে হবে। সরল পথ হারায় অর্থাৎ চারিত্রিক গুণাবলীর যে মাধুর্য যা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে, যা সরল পথকে নির্দেশ করে, তা হারিয়ে ফেলে এবং ঠিক তার বিপরীত ধর্মই তার চরিত্রে প্রকাশ পায়। চারিত্রিক গুণাবলীর বিকাশই হচ্ছে ইসলামের সরল পথের ঠিকানা। ‘সাওয়াআ’ অর্থ এই সরল পথের ঠিকানা।
আয়াতঃ 002.108
ইতিপূর্বে মূসা (আঃ) যেমন জিজ্ঞাসিত হয়েছিলেন, (মুসলমানগন, ) তোমরাও কি তোমাদের রসূলকে তেমনি প্রশ্ন করতে চাও? যে কেউ ঈমানের পরিবর্তে কুফর গ্রহন করে, সে সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়।
Or do you want to ask your Messenger (Muhammad Peace be upon him ) as Mûsa (Moses) was asked before (i.e. show us openly our Lord?) And he who changes Faith for disbelief, verily, he has gone astray from the right way.
أَمْ تُرِيدُونَ أَن تَسْأَلُواْ رَسُولَكُمْ كَمَا سُئِلَ مُوسَى مِن قَبْلُ وَمَن يَتَبَدَّلِ الْكُفْرَ بِالإِيمَانِ فَقَدْ ضَلَّ سَوَاء السَّبِيلِ
Am tureedoona an tas-aloo rasoolakum kama su-ila moosa min qablu waman yatabaddali alkufra bial-eemani faqad dalla sawaa alssabeeli
YUSUFALI: Would ye question your Messenger as Moses was questioned of old? but whoever changeth from Faith to Unbelief, Hath strayed without doubt from the even way.
PICKTHAL: Or would ye question your messenger as Moses was questioned aforetime? He who chooseth disbelief instead of faith, verily he hath gone astray from a plain road.
SHAKIR: Rather you wish to put questions to your Messenger, as Musa was questioned before; and whoever adopts unbelief instead of faith, he indeed has lost the right direction of the way.
KHALIFA: Do you wish to demand of your messenger what was demanded of Moses in the past? Anyone who chooses disbelief, instead of belief, has truly strayed off the right path.
১০৭। তুমি কি জান না যে, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সীমানা আল্লাহ্রই নিয়ন্ত্রণাধীনে? তিনি ব্যতীত তোমাদের কোনও অভিভাবক নাই, সাহায্যকারীও নাই।
১০৮। তোমরা কি তোমাদের রাসূলকে সেইরূপ প্রশ্ন করতে চাও, প্রাচীনকালে মুসাকে যেরূপ করা হয়েছিল? ১০৮। কিন্তু যে বিশ্বাসী থেকে অবিশ্বাসীতে পরিবর্তিত হয়, নিঃসন্দেহে সে সরল পথ থেকে বিপথে যায় ১০৯।
১০৮। ইহুদীরা হযরত মুসা (আঃ) কে অপ্রাসঙ্গিক কুটিল প্রশ্ন দ্বারা অবিরাম হয়রানী করতো। এখানে আল্লাহ্ মুসলমানদের সেই উদাহরণ অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। আধ্যাত্মিক জগতে নিজেকে জাহির করা বা প্রচার করার মাধ্যমে কিছুই পাওয়া যায় না। সত্যিকারের যদি কিছু জানার আকাঙ্ক্ষা থাকে শুধুমাত্র তবেই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা উচিত।
১০৯। আরবী শব্দ ‘সাওয়াআ’ এর অর্থ অনেক ব্যাপক। শুধুমাত্র সরল পথ বা মসৃন পথ-এভাবে এর অর্থ প্রকাশ করা সম্ভব নয়। এর দ্বারা বিভিন্ন ভাবের প্রকাশ পায়। যেমন-এ এমন পথ যা মসৃন [বন্ধুর পথের বিপরীত]; সুসামঞ্জস্যপূর্ণ [এলোমেলো এর বিপরীত]; সঙ্গতিপূর্ণ [অসঙ্গতির বিপরীত]; ন্যায়ের পথ [অন্যায়ের বিপরীত]; মধ্য পথ [চরম পথের বিপরীত] এবং যে পথ আদর্শ বা উদ্দেশ্যের প্রতি নিবেদিত। অর্থাৎ এটা এমন এক পথ যা মধ্য পথ, ন্যায় ও সত্যের আলোয় উদ্ভাসিত, পারিপার্শ্বিকের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। জীবনের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভালোর প্রতি, সত্য ও সুন্দরের প্রতি নিবেদিত পরিকল্পিত জীবন। সুতরাং এ পথ অবলম্বন করতে হলে চারিত্রিক গুণাবলী অর্জন করতে হবে। সরল পথ হারায় অর্থাৎ চারিত্রিক গুণাবলীর যে মাধুর্য যা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে, যা সরল পথকে নির্দেশ করে, তা হারিয়ে ফেলে এবং ঠিক তার বিপরীত ধর্মই তার চরিত্রে প্রকাশ পায়। চারিত্রিক গুণাবলীর বিকাশই হচ্ছে ইসলামের সরল পথের ঠিকানা। ‘সাওয়াআ’ অর্থ এই সরল পথের ঠিকানা।
আয়াতঃ 002.109
আহলে কিতাবদের অনেকেই প্রতিহিংসাবশতঃ চায় যে, মুসলমান হওয়ার পর তোমাদেরকে কোন রকমে কাফের বানিয়ে দেয়। তাদের কাছে সত্য প্রকাশিত হওয়ার পর (তারা এটা চায়)। যাক তোমরা আল্লাহর নির্দেশ আসা পর্যন্ত তাদের ক্ষমা কর এবং উপেক্ষা কর। নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
Many of the people of the Scripture (Jews and Christians) wish that if they could turn you away as disbelievers after you have believed, out of envy from their ownselves, even, after the truth (that Muhammad Peace be upon him is Allâh’s Messenger) has become manifest unto them. But forgive and overlook, till Allâh brings His Command. Verily, Allâh is Able to do all things.
وَدَّ كَثِيرٌ مِّنْ أَهْلِ الْكِتَابِ لَوْ يَرُدُّونَكُم مِّن بَعْدِ إِيمَانِكُمْ كُفَّاراً حَسَدًا مِّنْ عِندِ أَنفُسِهِم مِّن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ الْحَقُّ فَاعْفُواْ وَاصْفَحُواْ حَتَّى يَأْتِيَ اللّهُ بِأَمْرِهِ إِنَّ اللّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
Wadda katheerun min ahli alkitabi law yaruddoonakum min baAAdi eemanikum kuffaran hasadan min AAindi anfusihim min baAAdi ma tabayyana lahumu alhaqqu faoAAfoo waisfahoo hatta ya/tiya Allahu bi-amrihi inna Allaha AAala kulli shay-in qadeerun
YUSUFALI: Quite a number of the People of the Book wish they could Turn you (people) back to infidelity after ye have believed, from selfish envy, after the Truth hath become Manifest unto them: But forgive and overlook, Till Allah accomplish His purpose; for Allah Hath power over all things.
PICKTHAL: Many of the people of the Scripture long to make you disbelievers after your belief, through envy on their own account, after the truth hath become manifest unto them. Forgive and be indulgent (toward them) until Allah give command. Lo! Allah is Able to do all things.
SHAKIR: Many of the followers of the Book wish that they could turn you back into unbelievers after your faith, out of envy from themselves, (even) after the truth has become manifest to them; but pardon and forgive, so that Allah should bring about His command; surely Allah has power over all things.
KHALIFA: Many followers of the scripture would rather see you revert to disbelief, now that you have believed. This is due to jealousy on their part, after the truth has become evident to them. You shall pardon them, and leave them alone, until GOD issues His judgment. GOD is Omnipotent.
১০৯। তাদের নিকট সত্য প্রকাশিত হওয়ার পরও কিতাবীদের মধ্যে অনেকেই, তোমরা ঈমান আনার পরও ঈর্ষার বশবর্তী হয়ে আবার তোমাদের নাস্তিক রূপে ফিরে পেতে চায়। কিন্তু তোমরা [তাদের] ক্ষমা কর এবং উপক্ষো কর ১১০ যতক্ষণ না আল্লাহ্ তার অভিপ্রায় সম্পাদন করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সকল বিষয়ের উপরে ক্ষমতাবান ১১২।
১১০। কোরআন শরীফে তিনটি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে যার অর্থ ‘ক্ষমা করা’র সমার্থক, তবুও এদের ব্যবহারে এদের বিভিন্নতা দেখা যায়। ‘আফা’ কে এই আয়াতে ক্ষমা করা অনুবাদ করা হয়েছে কিন্তু আরবী এই শব্দটির দ্বারা বুঝানো হয়েছে ভুলে যাওয়া বা মন থেকে মুছে ফেলা। ‘সাফাহা’ কে এখানে অনুবাদ করা হয়েছে উপেক্ষা করা। আরবী শব্দটির দ্বারা বুঝানো হয়েছে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া, উপক্ষো করা, এমন ভাব করা যেনো ব্যাপারটি কোন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে নাই ইত্যাদি এই ব্যাপক অর্থ প্রকাশ করা হয়েছে। ‘সাফা’ শব্দের বাংলা এক কথায় উপেক্ষা করা শব্দ দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে। সুতরাং ‘আফা’ এবং ‘সাফা’ এই দুটোই ক্ষমা এই কথাটির সমার্থক বোঝায়। কিন্তু কোরআন শরীফে আর একটি শব্দ ‘গাফারা’ ব্যবহার করা হয়েছে ক্ষমা করা অর্থে। এই শব্দটি শুধুমাত্র আল্লাহ্র প্রতি প্রযোজ্য, কারণ পাপীর পাপ শুধু ক্ষমা নয়, ক্ষমার পর তাকে রহমতের ধারায় বিধৌত করা এবং বার বার পাপীর পাপ ক্ষমা করা এবং রহমত করার নামই হচ্ছে ‘গাফারা’; এই জন্য আল্লাহ্র আর এক নাম ‘গফুর’।
১১২। [২:১০৬] আয়াতের এই লাইনটি যে, ‘আল্লাহ্ সকল বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান’-এর পূর্বে ও পরে কুরআন শরীফের অনেক জায়গাতেই পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে। কিন্তু প্রত্যেকবার এই লাইনটি ব্যবহার করা হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। [২:১০৬] এ বলা হয়েছে প্রত্যাদেশের ধারাবাহিকতার উপরে। এখানে বক্তব্য হচ্ছে ধর্মের মূলনীতি রয়ে গেছে একই কিন্তু যুগোপযোগী করা হয়েছে যুগে-যুগে, কালে-কালে। বাঁধা এসেছে প্রতিটি যুগেই। কিন্তু আল্লাহ্র ক্ষমতা অসীম, তাঁর ইচ্ছাই জয় লাভ করে শেষ পর্যন্ত, এই ছিল [২:১০৬] এর প্রেক্ষাপট। কিন্তু [২:১০৯] আয়াতে আল্লাহ্ আমাদের বাধা-বিপত্তির মুখে ধৈর্য্যশীল ও ক্ষমাশীল হতে আদেশ দিচ্ছেন অন্যায়কারী ও হিংসুকদের উপরে। প্রতিহিংসা বা প্রতিশোধের মাধ্যমে নয়। আল্লাহ্র যা ইচ্ছা শেষ পর্যন্ত পূরণ হবেই। কারণ তিনি সব কিছুর উপরে শক্তিমান।
আয়াতঃ 002.110
তোমরা নামায প্রতিষ্ঠা কর এবং যাকাত দাও। তোমরা নিজের জন্যে পূর্বে যে সৎকর্ম প্রেরণ করবে, তা আল্লাহর কাছে পাবে। তোমরা যা কিছু কর, নিশ্চয় আল্লাহ তা প্রত্যক্ষ করেন।
And perform As-Salât (Iqâmat-as-Salât), and give Zakât, and whatever of good (deeds that Allâh loves) you send forth for yourselves before you, you shall find it with Allâh. Certainly, Allâh is All-Seer of what you do.
وَأَقِيمُواْ الصَّلاَةَ وَآتُواْ الزَّكَاةَ وَمَا تُقَدِّمُواْ لأَنفُسِكُم مِّنْ خَيْرٍ تَجِدُوهُ عِندَ اللّهِ إِنَّ اللّهَ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
Waaqeemoo alssalata waatoo alzzakata wama tuqaddimoo li-anfusikum min khayrin tajidoohu AAinda Allahi inna Allaha bima taAAmaloona baseerun
YUSUFALI: And be steadfast in prayer and regular in charity: And whatever good ye send forth for your souls before you, ye shall find it with Allah: for Allah sees Well all that ye do.
PICKTHAL: Establish worship, and pay the poor-due; and whatever of good ye send before (you) for your souls, ye will find it with Allah. Lo! Allah is Seer of what ye do.
SHAKIR: And keep up prayer and pay the poor-rate and whatever good you send before for yourselves, you shall find it with Allah; surely Allah sees what you do.
KHALIFA: You shall observe the Contact Prayers (Salat) and give the obligatory charity (Zakat). Any good you send forth on behalf of your souls, you will find it at GOD. GOD is seer of everything you do.
১১০। তোমরা সালাতে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত থাক এবং যাকাত দাও। [তোমাদের মৃত্যুর] পূর্বে যা কিছু তোমরা তোমাদের আত্মার [কল্যাণের] জন্য প্রেরণ করবে, আল্লাহ্র নিকট তা [ফেরৎ] পাবে। তোমরা যা কর আল্লাহ্ সব ভালভাবে জানেন ১১৩।
১১৩। [২:৯৫] আয়াতে এবং টিকা ১০০ তে দ্রষ্টব্য।
আয়াতঃ 002.111
ওরা বলে, ইহুদী অথবা খ্রীস্টান ব্যতীত কেউ জান্নাতে যাবে না। এটা ওদের মনের বাসনা। বলে দিন, তোমরা সত্যবাদী হলে, প্রমাণ উপস্থিত কর।
And they say, ”None shall enter Paradise unless he be a Jew or a Christian.” These are their own desires. Say (O Muhammad Peace be upon him ), ”Produce your proof if you are truthful.”
وَقَالُواْ لَن يَدْخُلَ الْجَنَّةَ إِلاَّ مَن كَانَ هُوداً أَوْ نَصَارَى تِلْكَ أَمَانِيُّهُمْ قُلْ هَاتُواْ بُرْهَانَكُمْ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
Waqaloo lan yadkhula aljannata illa man kana hoodan aw nasara tilka amaniyyuhum qul hatoo burhanakum in kuntum sadiqeena
YUSUFALI: And they say: “None shall enter Paradise unless he be a Jew or a Christian.” Those are their (vain) desires. Say: “Produce your proof if ye are truthful.”
PICKTHAL: And they say: None entereth paradise unless he be a Jew or a Christian. These are their own desires. Say: Bring your proof (of what ye state) if ye are truthful.
SHAKIR: And they say: None shall enter the garden (or paradise) except he who is a Jew or a Christian. These are their vain desires. Say: Bring your proof if you are truthful.
KHALIFA: Some have said, “No one will enter Paradise except Jews or Christians!” Such is their wishful thinking. Say, “Show us your proof, if you are right.”
১১১। এবং তারা বলে, ‘ইহুদী অথবা খৃষ্টান ব্যতীত আর কেউ বেহেশ্তে প্রবেশ করবে না”। এটা তাদের [মিথ্যা] আশা। বল, ‘যদি তোমরা সত্যবাদী হও, তবে প্রমাণ দাও।’
১১২। পক্ষান্তরে, যে কেউ পরিপূর্ণভাবে আল্লাহ্র নিকট আত্মসমর্পন করে ১১৪, এবং ভালো কাজ করে, সে এর পুরষ্কার তার প্রভুর নিকট পাবে; তাদের কোন ভয় নাই, তারা দুঃখিতও হবে না; ১১৫।
১১৪। এখানে ‘ওয়াজহা’ আরবী শব্দটির অর্থ হচ্চে মুখমণ্ডল। কিন্তু তর্জমা করা হয়েছে ‘আত্ম’ কথাটির দ্বারা। এখানে আল্লাহ্ বলেছেন, যে ব্যক্তি স্বীয় মাথা আল্লাহ্র দিকে নত করে দেয় অর্থাৎ আত্মসমর্পন করে বা বিশ্বাস ও কাজকর্মে আনুগত্য অবলম্বন করে এবং তৎসঙ্গে [শুধু বাহ্যিক আচার অনুষ্ঠানই নয়, আন্তরিকভাবে] সৎ কর্ম করে, সে তার আনুগত্যের প্রতিদান প্রতিপালকের কাছে পাবে।
আলোচ্য আয়াতসমূহে আল্লাহ্ তায়ালা ইহুদী ও খৃষ্টানদের পারস্পরিক মত বিরোধ উল্লেখ করে তাদের নিবুর্দ্ধিতা ও মত বিরোধের কুফল বর্ণনা করেছেন। অতঃপর সত্য উদঘাটন করেছেন। এ ঘটনায় মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হেদায়েত (পথ নির্দেশ) নিহিত আছে।
খৃষ্টান ও ইহুদী উভয় সম্প্রদায়ই ধর্মের প্রকৃত সত্যকে উপক্ষো করে ধর্মের নাম ভিত্তিক জাতীয়তা গড়ে তুলেছিল। তারা প্রত্যেকেই স্ব-জাতিকে জান্নাত ও আল্লাহ্র প্রিয় পাত্র বলে দাবী করতো এবং তারা ব্যতীত জগতের সমস্ত জাতিকে জাহান্নামী ও পথভ্রষ্ট বলে বিশ্বাস করতো। আল্লাহ্ তায়ালা উভয় সম্প্রদায়কে তাদের মূর্খতা সম্বন্ধে মন্তব্য করেছেন যে, এরা উভয় সম্প্রদায়ই জান্নাতে যাওয়ার প্রকৃত কারণ সম্পর্কে উদাসীন। তারা শুধু ধর্মের নামভিত্তিক জাতীয়তার অনুসরণ করে। বস্তুতঃ ইহুদী, খৃষ্টান ও ইসলাম যে কোনও ধর্মেরই প্রাণকেন্দ্র হচ্ছে দুটি বিষয়।
ক) বান্দা মনে প্রাণে নিজেকে আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে সমর্পন করবে। তাঁর আনুগত্যকেই স্বীয় মত ও পথ বলে মনে করবে। এ উদ্দেশ্যটি যে ধর্মে অর্জিত হয় তাই প্রকৃত ধর্ম। ধর্মের প্রকৃত স্বরূপকে পেছনে ফেলে ইহুদী অথবা খৃষ্টান অথবা ইসলাম জাতীয়তাবাদের ধ্বজা উত্তোলন করা ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতারই পরিচায়ক।
খ) দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে সৎকর্ম। পারলৌকিক মুক্তি ও জান্নাতে প্রবেশের জন্য শুধু আনুগত্যের সংকল্পই যথেষ্ট নয় বরং সৎকর্মেরও প্রয়োজন। আল্লাহ্র কাছে ইহুদী, খৃষ্টান ও মুসলমানের কোনও মূল্য নাই। গ্রহণীয় বিষয় হচ্ছে ঈমান ও সৎকর্ম। সৎকর্ম কি? যে কাজ আল্লাহ্র সৃষ্টির মঙ্গলের জন্য আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে করা হয় তাই-ই সৎকর্ম। কুরআনের বহু স্থানে সমাজ ও জাতির মঙ্গলের জন্য কাজ করার নির্দেশ দান করা হয়েছে। এই জাতীয় কাজই হচ্ছে সৎকাজ।
যে কেউ উপরোক্ত মৌলিক বিষয়াদির মধ্য থেকে যে কোনও একটি ছেড়ে দেয়, অতঃপর শুধুমাত্র নাম ভিত্তিক জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে নিজেকে জান্নাতের ইজারাদার মনে করে নেয়; সে আত্মপ্রবঞ্চনা বৈ আর কিছুই করে না। আসল সত্যের সাথে এর কোনও সম্পর্ক নাই। এসব নামের উপর ভরসা করে কেউ আল্লাহ্র নিকটবর্তী ও মকবুল হতে পারবে না। যে পর্যন্ত না তার মধ্যে ঈমান ও সৎ কর্ম থাকে। সুতরাং এ দাবী যেনো কেউ না করে যে আমরা পুরুষানুক্রমে মুসলমান। প্রত্যেক অফিস ও রেজিস্টারে আমাদের নাম মুসলমানদের কোটায় লিপিবদ্ধ এবং আমরা মুখেও নিজেদের মুসলমান বলি, সুতরাং সকল পুরস্কারের যোগ্য হকদার আমরাই। তাহলে ইহুদী ও আমাদের মধ্যে পার্থক্য খুব কমই থাকবে। দুনিয়া জুড়ে মুসলমানদের অবনতি ও অস্থিরতার মূল কারণ আমাদের এখানেই খুঁজে দেখতে হবে। আমাদের ঈমান মৌখিক। এর সাথে আন্তরিকতার সম্পর্ক কম। অর্থাৎ আমরা আন্তরিকভাবে আল্লাহ্র হুকুম মান্য করি না। যেমন-আমরা মিথ্যার বেসাতি করি, মানুষকে ঠকাতে দ্বিধাবোধ করি না, অন্যায়-অবিচার, অসত্য আজ আমাদের জীবনের সামাজিক ব্যাধি। অন্যায় আইন আজ আমরা সমাজ জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে স্বীকার করে চলছি। এগুলি হচ্ছে আল্লাহ্র আইন অমান্য করা। আল্লাহ্র আইনকে অস্বীকার করার অর্থ হচ্ছে, মৌখিকভাবে নিজেকে মুসলমান দাবী করলেও অন্তরে আল্লাহ্কে অস্বীকার করা। সে নিজের প্রতি নিজে বিশ্বস্ত নয় এটা মুনাফিকীরই নামান্তর।
দ্বিতীয়তঃ তাঁর সৃষ্টির সেবা করা। এ ব্যাপারে মুসলমানেরা কতটুকু অগ্রগামী তা বিবেচ্য। আমরা কতটুকু আন্তরিক সমাজের মঙ্গলের জন্য, সৎ কাজে আমরা কতটুকু উৎসর্গীকৃত। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, দ্বীনের ব্যাপারে মুসলিম সমাজ আজ খুব একটা আন্তরিক নয়। এখানেই দুনিয়া জুড়ে মুসলমানদের এত অস্থিরতা ও অবনতির কারণ। মুসলমানদের অবনতি ও অস্থিরতা অপরপক্ষে খৃষ্টান ও ইহুদীদের উন্নতির ও প্রশান্তির মূল বিষয় উপরে বর্ণিত হলো। এতে প্রতীয়মান হয় যে জগতে আমাদের দারিদ্র, পরমুখাপেক্ষিতা, বিপদ-আপদ ও সংকট ইসলামের মূল ধারা থেকে বিচ্যুতির কারণে। যারাই এই মূলধারা বা ধর্মের মূল অন্তর্নিহিত নৈতিক গুণাবলী অর্জন করেছে তারা ইহুদী বা খৃষ্টান যেই হোক না কেন তাদের উপরে আল্লাহ্র রহমত বর্ষিত হয়। আলোচ্য আয়াত থেকে একথা সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, ঈমান ও সৎকর্ম পূর্ণরূপে অবলম্বন না করলে শুধু বংশগতভাবে ইসলামের নাম ব্যবহারের দ্বারা কোনও শুভ ফল আশা করা যায় না [২ :৬২] দেখুন।
১১৫। ‘তাদের কোনও ভয় নাই এবং তারা দুঃখিতও হবে না।’-এই লাইনটি এই সূরায় এবং কুরআনের বহু জায়গাতে এসেছে। যেমন-[২, ৩৮, ৬২, ১১২, ২৬২, ২৭৪ এবং ২৭৭]এ। কুরআন নাজেল হয়েছে কবিতার ছন্দে। এর ভাষা, ছন্দ, বর্ণনার মাধুর্যে অতুলনীয়। এই লাইনটি বার বার ব্যবহৃত হয়েছে সঙ্গীতের মত। যেমন-সঙ্গীতের একটি লাইন ‘সোমের’ সৃষ্টি করে ঠিক সেরূপ। এছাড়াও এ দ্বারা লাইনটির গূঢ় অর্থের গুরুত্বের প্রতিও ইঙ্গিত করা হয়েছে।
আয়াতঃ 002.112
হাঁ, যে ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে সমর্পন করেছে এবং সে সৎকর্মশীলও বটে তার জন্য তার পালনকর্তার কাছে পুরস্কার বয়েছে। তাদের ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।
Yes, but whoever submits his face (himself) to Allâh (i.e. follows Allâh’s Religion of Islâmic Monotheism) and he is a Muhsin (good-doer i.e. performs good deeds totally for Allâh’s sake only without any show off or to gain praise or fame, etc., and in accordance with the Sunnah of Allâh’s Messenger Muhammad Peace be upon him ) then his reward is with his Lord (Allâh), on such shall be no fear, nor shall they grieve. [See Tafsir Ibn Kathîr, Vol.1, Page 154].
بَلَى مَنْ أَسْلَمَ وَجْهَهُ لِلّهِ وَهُوَ مُحْسِنٌ فَلَهُ أَجْرُهُ عِندَ رَبِّهِ وَلاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ
Bala man aslama wajhahu lillahi wahuwa muhsinun falahu ajruhu AAinda rabbihi wala khawfun AAalayhim wala hum yahzanoona
YUSUFALI: Nay,-whoever submits His whole self to Allah and is a doer of good,- He will get his reward with his Lord; on such shall be no fear, nor shall they grieve.
PICKTHAL: Nay, but whosoever surrendereth his purpose to Allah while doing good, his reward is with his Lord; and there shall no fear come upon them neither shall they grieve.
SHAKIR: Yes! whoever submits himself entirely to Allah and he is the doer of good (to others) he has his reward from his Lord, and there is no fear for him nor shall he grieve.
KHALIFA: Indeed, those who submit themselves absolutely to GOD alone, while leading a righteous life, will receive their recompense from their Lord; they have nothing to fear, nor will they grieve.
১১১। এবং তারা বলে, ‘ইহুদী অথবা খৃষ্টান ব্যতীত আর কেউ বেহেশ্তে প্রবেশ করবে না”। এটা তাদের [মিথ্যা] আশা। বল, ‘যদি তোমরা সত্যবাদী হও, তবে প্রমাণ দাও।’
১১২। পক্ষান্তরে, যে কেউ পরিপূর্ণভাবে আল্লাহ্র নিকট আত্মসমর্পন করে ১১৪, এবং ভালো কাজ করে, সে এর পুরষ্কার তার প্রভুর নিকট পাবে; তাদের কোন ভয় নাই, তারা দুঃখিতও হবে না; ১১৫।
১১৪। এখানে ‘ওয়াজহা’ আরবী শব্দটির অর্থ হচ্চে মুখমণ্ডল। কিন্তু তর্জমা করা হয়েছে ‘আত্ম’ কথাটির দ্বারা। এখানে আল্লাহ্ বলেছেন, যে ব্যক্তি স্বীয় মাথা আল্লাহ্র দিকে নত করে দেয় অর্থাৎ আত্মসমর্পন করে বা বিশ্বাস ও কাজকর্মে আনুগত্য অবলম্বন করে এবং তৎসঙ্গে [শুধু বাহ্যিক আচার অনুষ্ঠানই নয়, আন্তরিকভাবে] সৎ কর্ম করে, সে তার আনুগত্যের প্রতিদান প্রতিপালকের কাছে পাবে।
আলোচ্য আয়াতসমূহে আল্লাহ্ তায়ালা ইহুদী ও খৃষ্টানদের পারস্পরিক মত বিরোধ উল্লেখ করে তাদের নিবুর্দ্ধিতা ও মত বিরোধের কুফল বর্ণনা করেছেন। অতঃপর সত্য উদঘাটন করেছেন। এ ঘটনায় মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হেদায়েত (পথ নির্দেশ) নিহিত আছে।
খৃষ্টান ও ইহুদী উভয় সম্প্রদায়ই ধর্মের প্রকৃত সত্যকে উপক্ষো করে ধর্মের নাম ভিত্তিক জাতীয়তা গড়ে তুলেছিল। তারা প্রত্যেকেই স্ব-জাতিকে জান্নাত ও আল্লাহ্র প্রিয় পাত্র বলে দাবী করতো এবং তারা ব্যতীত জগতের সমস্ত জাতিকে জাহান্নামী ও পথভ্রষ্ট বলে বিশ্বাস করতো। আল্লাহ্ তায়ালা উভয় সম্প্রদায়কে তাদের মূর্খতা সম্বন্ধে মন্তব্য করেছেন যে, এরা উভয় সম্প্রদায়ই জান্নাতে যাওয়ার প্রকৃত কারণ সম্পর্কে উদাসীন। তারা শুধু ধর্মের নামভিত্তিক জাতীয়তার অনুসরণ করে। বস্তুতঃ ইহুদী, খৃষ্টান ও ইসলাম যে কোনও ধর্মেরই প্রাণকেন্দ্র হচ্ছে দুটি বিষয়।
ক) বান্দা মনে প্রাণে নিজেকে আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে সমর্পন করবে। তাঁর আনুগত্যকেই স্বীয় মত ও পথ বলে মনে করবে। এ উদ্দেশ্যটি যে ধর্মে অর্জিত হয় তাই প্রকৃত ধর্ম। ধর্মের প্রকৃত স্বরূপকে পেছনে ফেলে ইহুদী অথবা খৃষ্টান অথবা ইসলাম জাতীয়তাবাদের ধ্বজা উত্তোলন করা ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতারই পরিচায়ক।
খ) দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে সৎকর্ম। পারলৌকিক মুক্তি ও জান্নাতে প্রবেশের জন্য শুধু আনুগত্যের সংকল্পই যথেষ্ট নয় বরং সৎকর্মেরও প্রয়োজন। আল্লাহ্র কাছে ইহুদী, খৃষ্টান ও মুসলমানের কোনও মূল্য নাই। গ্রহণীয় বিষয় হচ্ছে ঈমান ও সৎকর্ম। সৎকর্ম কি? যে কাজ আল্লাহ্র সৃষ্টির মঙ্গলের জন্য আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে করা হয় তাই-ই সৎকর্ম। কুরআনের বহু স্থানে সমাজ ও জাতির মঙ্গলের জন্য কাজ করার নির্দেশ দান করা হয়েছে। এই জাতীয় কাজই হচ্ছে সৎকাজ।
যে কেউ উপরোক্ত মৌলিক বিষয়াদির মধ্য থেকে যে কোনও একটি ছেড়ে দেয়, অতঃপর শুধুমাত্র নাম ভিত্তিক জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে নিজেকে জান্নাতের ইজারাদার মনে করে নেয়; সে আত্মপ্রবঞ্চনা বৈ আর কিছুই করে না। আসল সত্যের সাথে এর কোনও সম্পর্ক নাই। এসব নামের উপর ভরসা করে কেউ আল্লাহ্র নিকটবর্তী ও মকবুল হতে পারবে না। যে পর্যন্ত না তার মধ্যে ঈমান ও সৎ কর্ম থাকে। সুতরাং এ দাবী যেনো কেউ না করে যে আমরা পুরুষানুক্রমে মুসলমান। প্রত্যেক অফিস ও রেজিস্টারে আমাদের নাম মুসলমানদের কোটায় লিপিবদ্ধ এবং আমরা মুখেও নিজেদের মুসলমান বলি, সুতরাং সকল পুরস্কারের যোগ্য হকদার আমরাই। তাহলে ইহুদী ও আমাদের মধ্যে পার্থক্য খুব কমই থাকবে। দুনিয়া জুড়ে মুসলমানদের অবনতি ও অস্থিরতার মূল কারণ আমাদের এখানেই খুঁজে দেখতে হবে। আমাদের ঈমান মৌখিক। এর সাথে আন্তরিকতার সম্পর্ক কম। অর্থাৎ আমরা আন্তরিকভাবে আল্লাহ্র হুকুম মান্য করি না। যেমন-আমরা মিথ্যার বেসাতি করি, মানুষকে ঠকাতে দ্বিধাবোধ করি না, অন্যায়-অবিচার, অসত্য আজ আমাদের জীবনের সামাজিক ব্যাধি। অন্যায় আইন আজ আমরা সমাজ জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে স্বীকার করে চলছি। এগুলি হচ্ছে আল্লাহ্র আইন অমান্য করা। আল্লাহ্র আইনকে অস্বীকার করার অর্থ হচ্ছে, মৌখিকভাবে নিজেকে মুসলমান দাবী করলেও অন্তরে আল্লাহ্কে অস্বীকার করা। সে নিজের প্রতি নিজে বিশ্বস্ত নয় এটা মুনাফিকীরই নামান্তর।
দ্বিতীয়তঃ তাঁর সৃষ্টির সেবা করা। এ ব্যাপারে মুসলমানেরা কতটুকু অগ্রগামী তা বিবেচ্য। আমরা কতটুকু আন্তরিক সমাজের মঙ্গলের জন্য, সৎ কাজে আমরা কতটুকু উৎসর্গীকৃত। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, দ্বীনের ব্যাপারে মুসলিম সমাজ আজ খুব একটা আন্তরিক নয়। এখানেই দুনিয়া জুড়ে মুসলমানদের এত অস্থিরতা ও অবনতির কারণ। মুসলমানদের অবনতি ও অস্থিরতা অপরপক্ষে খৃষ্টান ও ইহুদীদের উন্নতির ও প্রশান্তির মূল বিষয় উপরে বর্ণিত হলো। এতে প্রতীয়মান হয় যে জগতে আমাদের দারিদ্র, পরমুখাপেক্ষিতা, বিপদ-আপদ ও সংকট ইসলামের মূল ধারা থেকে বিচ্যুতির কারণে। যারাই এই মূলধারা বা ধর্মের মূল অন্তর্নিহিত নৈতিক গুণাবলী অর্জন করেছে তারা ইহুদী বা খৃষ্টান যেই হোক না কেন তাদের উপরে আল্লাহ্র রহমত বর্ষিত হয়। আলোচ্য আয়াত থেকে একথা সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, ঈমান ও সৎকর্ম পূর্ণরূপে অবলম্বন না করলে শুধু বংশগতভাবে ইসলামের নাম ব্যবহারের দ্বারা কোনও শুভ ফল আশা করা যায় না [২ :৬২] দেখুন।
১১৫। ‘তাদের কোনও ভয় নাই এবং তারা দুঃখিতও হবে না।’-এই লাইনটি এই সূরায় এবং কুরআনের বহু জায়গাতে এসেছে। যেমন-[২, ৩৮, ৬২, ১১২, ২৬২, ২৭৪ এবং ২৭৭]এ। কুরআন নাজেল হয়েছে কবিতার ছন্দে। এর ভাষা, ছন্দ, বর্ণনার মাধুর্যে অতুলনীয়। এই লাইনটি বার বার ব্যবহৃত হয়েছে সঙ্গীতের মত। যেমন-সঙ্গীতের একটি লাইন ‘সোমের’ সৃষ্টি করে ঠিক সেরূপ। এছাড়াও এ দ্বারা লাইনটির গূঢ় অর্থের গুরুত্বের প্রতিও ইঙ্গিত করা হয়েছে।
আয়াতঃ 002.113
ইহুদীরা বলে, খ্রীস্টানরা কোন ভিত্তির উপরেই নয় এবং খ্রীস্টানরা বলে, ইহুদীরা কোন ভিত্তির উপরেই নয়। অথচ ওরা সবাই কিতাব পাঠ করে! এমনিভাবে যারা মূর্খ, তারাও ওদের মতই উক্তি করে। অতএব, আল্লাহ কেয়ামতের দিন তাদের মধ্যে ফয়সালা দেবেন, যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করছিল।
The Jews said that the Christians follow nothing (i.e. are not on the right religion); and the Christians said that the Jews follow nothing (i.e. are not on the right religion); though they both recite the Scripture. Like unto their word, said (the pagans) who know not. Allâh will judge between them on the Day of Resurrection about that wherein they have been differing.
وَقَالَتِ الْيَهُودُ لَيْسَتِ النَّصَارَى عَلَىَ شَيْءٍ وَقَالَتِ النَّصَارَى لَيْسَتِ الْيَهُودُ عَلَى شَيْءٍ وَهُمْ يَتْلُونَ الْكِتَابَ كَذَلِكَ قَالَ الَّذِينَ لاَ يَعْلَمُونَ مِثْلَ قَوْلِهِمْ فَاللّهُ يَحْكُمُ بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيمَا كَانُواْ فِيهِ يَخْتَلِفُونَ
Waqalati alyahoodu laysati alnnasara AAala shay-in waqalati alnnasara laysati alyahoodu AAala shay-in wahum yatloona alkitaba kathalika qala allatheena la yaAAlamoona mithla qawlihim faAllahu yahkumu baynahum yawma alqiyamati feema kanoo feehi yakhtalifoona
YUSUFALI: The Jews say: “The Christians have naught (to stand) upon; and the Christians say: “The Jews have naught (To stand) upon.” Yet they (Profess to) study the (same) Book. Like unto their word is what those say who know not; but Allah will judge between them in their quarrel on the Day of Judgment.
PICKTHAL: And the Jews say the Christians follow nothing (true), and the Christians say the Jews follow nothing (true); yet both are readers of the Scripture. Even thus speak those who know not. Allah will judge between them on the Day of Resurrection concerning that wherein they differ.
SHAKIR: And the Jews say: The Christians do not follow anything (good) and the Christians say: The Jews do not follow anything (good) while they recite the (same) Book. Even thus say those who have no knowledge, like to what they say; so Allah shall judge between them on the day of resurrection in what they differ.
KHALIFA: The Jews said, “The Christians have no basis,” while the Christians said, “The Jews have no basis.” Yet, both of them read the scripture. Such are the utterances of those who possess no knowledge. GOD will judge them on the Day of Resurrection, regarding their disputes.
রুকু – ১৪
১১৩। ইহুদীরা বলে, ‘খৃষ্টানদের [বিশ্বাসের] কোন ভিত্তি নাই’; এবং খৃষ্টানেরা বলে, ‘ইহুদীদের [বিশ্বাসের] কোন ভিত্তি নাই।’ যদিও তারা [একই কিতাব] পাঠ করে [বলে স্বীকার করে]। একইভাবে, যারা কিছুই জানে না তারাও অনুরূপ কথা বলে ১১৬। সুতরাং যে বিষয়ে তাদের মতভেদ আছে শেষ বিচারের দিনে আল্লাহ্ তা ফয়সালা করবেন।
১১৬। এই আয়াতে কিতাবধারীদের সম্বন্ধে আলোচনা করা হচ্ছে। যদিও তারা ঐশী গ্রন্থপ্রাপ্ত এবং ইব্রাহীমের ধর্মের অনুসারী, তবুও নিজেদের অজ্ঞতা এবং অন্ধ অহংকারে তারা একে অপরের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে। যদিও তারা সকলেই ঐশী গ্রন্থের অধিকারী।
[সার্বজনীন শিক্ষা হচ্ছে অজ্ঞতা, অন্ধ-অহংকার, একগুঁয়েমী আমাদের অন্তরে অন্ধকারের সৃষ্টি করে যা আমাদের সত্য ও সুন্দরকে চিনতে বাঁধা দান করে। ভালো-মন্দ সব একাকার হয়ে যায়, ফলে সত্যকে অস্বীকার করার প্রবণতা জন্মে।
আয়াতঃ 002.114
যে ব্যাক্তি আল্লাহর মসজিদসমূহে তাঁর নাম উচ্চারণ করতে বাধা দেয় এবং সেগুলোকে উজাড় করতে চেষ্টা করে, তার চাইতে বড় যালেম আর কে? এদের পক্ষে মসজিদসমূহে প্রবেশ করা বিধেয় নয়, অবশ্য ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায়। ওদের জন্য ইহকালে লাঞ্ছনা এবং পরকালে কঠিন শাস্তি রয়েছে।
And who is more unjust than those who forbid that Allâh’s Name be glorified and mentioned much (i.e. prayers and invocations, etc.) in Allâh’s Mosques and strive for their ruin? It was not fitting that such should themselves enter them (Allâh’s Mosques) except in fear. For them there is disgrace in this world, and they will have a great torment in the Hereafter.
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّن مَّنَعَ مَسَاجِدَ اللّهِ أَن يُذْكَرَ فِيهَا اسْمُهُ وَسَعَى فِي خَرَابِهَا أُوْلَـئِكَ مَا كَانَ لَهُمْ أَن يَدْخُلُوهَا إِلاَّ خَآئِفِينَ لهُمْ فِي الدُّنْيَا خِزْيٌ وَلَهُمْ فِي الآخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ
Waman athlamu mimman manaAAa masajida Allahi an yuthkara feeha ismuhu wasaAAa fee kharabiha ola-ika ma kana lahum an yadkhulooha illa kha-ifeena lahum fee alddunya khizyun walahum fee al-akhirati AAathabun AAatheemun
YUSUFALI: And who is more unjust than he who forbids that in places for the worship of Allah, Allah’s name should be celebrated?-whose zeal is (in fact) to ruin them? It was not fitting that such should themselves enter them except in fear. For them there is nothing but disgrace in this world, and in the world to come, an exceeding torment.
PICKTHAL: And who doth greater wrong than he who forbiddeth the approach to the sanctuaries of Allah lest His name should be mentioned therein, and striveth for their ruin. As for such, it was never meant that they should enter them except in fear. Theirs in the world is ignominy and theirs in the Hereafter is an awful doom.
SHAKIR: And who is more unjust than he who prevents (men) from the masjids of Allah, that His name should be remembered in them, and strives to ruin them? (As for) these, it was not proper for them that they should have entered them except in fear; they shall meet with disgrace in this world, and they shall have great chastisement in the hereafter.
KHALIFA: Who are more evil than those who boycott GOD’s masjids, where His name is commemorated, and contribute to their desertion? These ought not to enter therein except fearfully. They will suffer in this life humiliation, and will suffer in the Hereafter a terrible retribution.
১১৪। তার থেকে বড় জালিম আর কে আছে যে আল্লাহ্র মসজিদসমূহে তাঁর নাম স্মরণ করতে বাঁধা প্রদান করে ১১৭। [প্রকৃতপক্ষে] তার প্রচন্ড ইচ্ছা সেগুলির ধ্বংস সাধন। [আল্লাহ্র ভয়ে] ভীত না হয়ে তাদের সেখানে প্রবেশ করা সঙ্গত ছিল না। তাদের জন্য এই পৃথিবীতে লাঞ্ছনা ছাড়া কিছু নাই, এবং অনাগত পৃথিবীতে তাদের জন্য আছে মহাশাস্তি।
১১৭। মক্কা বিজয়ের পূর্বে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) যখন মক্কায় প্রবেশ করে কাবা গৃহে তাওয়াফ ও নামাজ আদায় করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন, তখন মক্কার মুশরিকরা তাঁকে বাধা দান করে। ফলে শেষ পর্যন্ত তিনি নামাজ আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন। আল্লাহ্ তায়ালা এখানে ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ ব্যবহার করে এ কাজের দোষ প্রকাশ করেছেন। অর্থাৎ ঐ ব্যক্তির চাইতে বড় জালেম আর কে আছে যে আল্লাহ্র মসজিদসমূহে [মক্কার মসজিদুল হারাম, মদীনার মসজিদে নববী, মসজিদে বায়তুল মোকাদ্দাস প্রভৃতি সব মসজিদই অন্তর্ভূক্ত] তার নাম উচ্চারণ [ও এবাদত] করতে বাধা দেয় এবং পরিত্যক্ত করতে চেষ্টা করে।
হুদায়বিয়ার ঘটনার পর মক্কার মুশরিকরা যখন রাসূলুল্লাহ্কে (সাঃ) কাবা প্রাঙ্গণে প্রবেশ এবং তাঁর তাওয়াফে বাঁধা প্রদান করে, তখন এই আয়াত নাজেল হয়।
এই আয়াতের বর্ণনায় সাধারণ শব্দের মাধ্যমে একটি স্বতন্ত্র আইনের ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে যাতে নির্দেশটি শুধুমাত্র খৃষ্টান ও মুশরিকদের সাথে সম্পর্কযুক্ত মনে করা না হয়। বরং এ নির্দেশটি সার্বজনীন, সর্বকালের জন্য এবং সকল সম্প্রদায়ের জন্য প্রযোজ্য করা হয়। এ কারণেই আয়াতে বিশেষভাবে বায়তুল মোকাদ্দাসের নামোল্লেখের পরিবর্তে ‘আল্লাহ্র মসজিদ সমূহে’ সব মসজিদের ক্ষেত্রেই নির্দেশটি ব্যাপক করে দেওয়া হয়েছে।
[সাধারণ জ্ঞাতব্য হচ্ছে-ইসলাম এবাদতের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। সমস্ত মসজিদই আল্লাহ্র এবাদতের জন্য উন্মুক্ত। ধর্ম সম্বন্ধে বিভিন্ন মতবাদ থাকতে পারে। ব্যক্তিগত, গোষ্ঠীগত বা জাতিগত। ইসলাম বলে সে যেই হোক না কেন এক সম্প্রদায় আর এক সম্প্রদায়কে উচ্ছেদ করতে পারেনা যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা সকলের শান্তিপূর্ণ এবাদতের জন্য বাধা স্বরূপ হয়ে দাঁড়ায়। যতক্ষণ পর্যন্ত যে কেউ এক আল্লাহ্-য় বিশ্বাসী হয় এবং ভক্তিভরে স্রষ্টার কাছে নিজেকে নিবেদনের জন্য মসজিদে উপস্থি হয়, তার জন্য আল্লাহ্র মসজিদের দ্বার উন্মুক্ত। আত্মবিশ্লেষনের মাধ্যমে আমাদের খুঁজে দেখতে হবে আমরা কি কুরআনের এই নির্দেশ অনুসরণ করি না গোষ্ঠীগত বিভক্তিতে আল্লাহ্র আদেশ অমান্য করে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব জাহিরের চেষ্টা করি।
আয়াতঃ 002.115
পূর্ব ও পশ্চিম আল্লারই। অতএব, তোমরা যেদিকেই মুখ ফেরাও, সেদিকেই আল্লাহ বিরাজমান। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞ।
And to Allâh belong the east and the west, so wherever you turn yourselves or your faces there is the Face of Allâh (and He is High above, over His Throne). Surely! Allâh is All-Sufficient for His creatures’ needs, All-Knowing.
وَلِلّهِ الْمَشْرِقُ وَالْمَغْرِبُ فَأَيْنَمَا تُوَلُّواْ فَثَمَّ وَجْهُ اللّهِ إِنَّ اللّهَ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
Walillahi almashriqu waalmaghribu faaynama tuwalloo fathamma wajhu Allahi inna Allaha wasiAAun AAaleemun
YUSUFALI: To Allah belong the east and the West: Whithersoever ye turn, there is the presence of Allah. For Allah is all-Pervading, all-Knowing.
PICKTHAL: Unto Allah belong the East and the West, and whithersoever ye turn, there is Allah’s Countenance. Lo! Allah is All-Embracing, All-Knowing.
SHAKIR: And Allah’s is the East and the West, therefore, whither you turn, thither is Allah’s purpose; surely Allah is Amplegiving, Knowing.
KHALIFA: To GOD belongs the east and the west; wherever you go there will be the presence of GOD. GOD is Omnipresent, Omniscient.
১১৫। পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহ্রই। যেদিকেই তাকাও না কেন সর্বত্র আল্লাহ্র উপস্থিতি বিদ্যমান। আল্লাহ্র [অবস্থান] সর্বব্যাপী, [তিনি] সর্বজ্ঞ ১১৮।
১১৮। ‘ওয়াজহা’ শব্দটির শাব্দিক অর্থ হচ্ছে ‘মুখমন্ডল’ এখানে অনুবাদ করা হয়েছে উপস্থিতি। টিকা ১০৭-দ্রষ্টব্য।
আয়াতঃ 002.116
তারা বলে, আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন। তিনি তো এসব কিছু থেকে পবিত্র, বরং নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু রয়েছে সবই তার আজ্ঞাধীন।
And they (Jews, Christians and pagans) say: Allâh has begotten a son (children or offspring). Glory be to Him (Exalted be He above all that they associate with Him). Nay, to Him belongs all that is in the heavens and on earth, and all surrender with obedience (in worship) to Him.
وَقَالُواْ اتَّخَذَ اللّهُ وَلَدًا سُبْحَانَهُ بَل لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ كُلٌّ لَّهُ قَانِتُونَ
Waqaloo itakhatha Allahu waladan subhanahu bal lahu ma fee alssamawati waal-ardi kullun lahu qanitoona
YUSUFALI: They say: “Allah hath begotten a son” :Glory be to Him.-Nay, to Him belongs all that is in the heavens and on earth: everything renders worship to Him.
PICKTHAL: And they say: Allah hath taken unto Himself a son. Be He glorified! Nay, but whatsoever is in the heavens and the earth is His. All are subservient unto Him.
SHAKIR: And they say: Allah has taken to himself a son. Glory be to Him; rather, whatever is in the heavens and the earth is His; all are obedient to Him.
KHALIFA: They said, “GOD has begotten a son!” Be He glorified; never! To Him belongs everything in the heavens and the earth; all are subservient to Him.
১১৬। তারা বলে, ‘আল্লাহ্ পুত্র সন্তান গ্রহণ করেছেন।’ তিনি পবিত্র, বরং আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সব আল্লাহ্র [নিয়ন্ত্রণাধীনে] সকল কিছুই তারই এবাদত করে ১১৯।
১১৯। ‘আল্লাহ্ পুত্র সন্তান গ্রহণ ,করেছেন’ এ কথাটির দ্বারা আল্লাহ্র মহিমা খর্ব করা হয়। শুধু খর্ব করাই নয়, এ এক ধরণের ‘ঈশ্বর নিন্দা’ কারণ এ কথার দ্বারা এটাই বোঝানো হয় যে, আল্লাহ্ সাধারণ মানুষের মত যৌন-তাড়িত বস্তুবাদী এক শক্তি। এতে আল্লাহ্র মহিমাকে খর্ব করা হয়। আল্লাহ্র কোন অভাব নাই। তিনি অভাবমুক্ত। মরণশীল মানুষ বা প্রাণীর যে কোনও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য মহান আল্লাহ্র জন্য প্রয়োগ করা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। অপরপক্ষে, আধ্যাত্মিক মতবাদ অনুযায়ী সমস্ত সৃষ্টিই আল্লাহ্র সন্তান তুল্য। মা যেভাবে নিজ সন্তানকে সমস্ত বিপদ থেকে রক্ষা করে। স্নেহ ভালবাসায় সন্তানের জীবনকে ভরিয়ে দেয়, আল্লাহ্ তার সৃষ্টিকে মায়ের স্নেহের থেকেও বেশি ভালবাসেন। তাঁর করুণাধারা মায়ের স্নেহ অপেক্ষাও বেশি তাঁর সৃষ্টিকে ঘিরে থাকে। সেই হিসেবে আমরা সবাই আল্লাহ্র সন্তান। তাঁর সৃষ্টির দিকে চোখ ফিরালে দেখতে পাই, সমস্ত সৃষ্টি তাঁর আইন অর্থাৎ হুকুম মেনে চলছে। বৃক্ষকুল, প্রাণীকূল, বিশ্ব-প্রকৃতি সদা-সর্বদা আল্লাহ্র আইন মেনে চলে। উদাহরণ স্বরূপ, বলা যায়-বীজকে উপযুক্ত পরিবেশে রাখলে অঙ্কুরোদগম ঘটে। বৃক্ষ তার নিজস্ব গতিতে বড় হয়, ফল-ফুলে শোভিত হয়ে এক সময়ে মরে যায়। এটা আল্লাহ্র আইন। পাহাড়, নদী, সমুদ্র, আকাশ, বাতাস, পানি, আলো সমস্ত বিশ্বভূবন ও বস্তুজগত সকলেই আল্লাহ্র প্রদত্ত স্ব-স্ব আইন মেনে চলে। সেই হিসেবে বিশ্ব-চরাচরে সকলেই আল্লাহ্র গুণগানে ব্যস্ত। আল্লাহ্র আইন মান্য করা মানেই তাঁর এবাদত করা। বস্তুজগতের ক্ষমতা নাই আল্লাহ্র আইন অমান্য করার। একমাত্র মানুষকেই আল্লাহ্ সীমিত ইচ্ছা শক্তির স্বাধীনতা দিয়েছেন যেনো সে তা প্রয়োগ করতে পারে আত্মিক উন্নতির জন্য। কিন্তু মানুষের যে দেহ সে দেহের দিকে লক্ষ্য করলেও আমরা দেখতে পাই সে নির্ভুলভাবে আল্লাহ্র আইন মেনে চলে। শৈশবে, কৈশোরে, যৌবনে, বার্ধক্যে তার যে পরিবর্তন তা আল্লাহ্র আইনকেই মেনে চলা। এ পরিবর্তনের ধারাকে রহিত করার ক্ষমতা কারও নাই। তাই আমাদের দেহ আল্লাহ্র আইন মেনে চলে। সুতরাং তাঁর গুণগান করে তাঁরই এবাদত করে। কিন্তু সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি [Limited free will] প্রাপ্ত হওয়ার ফলে মানুষ আল্লাহ্র আইন লঙ্ঘন করার ক্ষমতা রাখে এবং এ শক্তি তার আত্মায় নিহিত। এর সদ্ব্যবহার করলে আত্মিক উন্নতি হয়। অপব্যবহার আত্মিক ক্ষতি হয়।
আয়াতঃ 002.117
তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের উদ্ভাবক। যখন তিনি কোন কার্য সম্পাদনের সিন্ধান্ত নেন, তখন সেটিকে একথাই বলেন, ‘হয়ে যাও’ তৎক্ষণাৎ তা হয়ে যায়।
The Originator of the heavens and the earth. When He decrees a matter, He only says to it : ”Be!” – and it is.
بَدِيعُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَإِذَا قَضَى أَمْراً فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُ كُن فَيَكُونُ
BadeeAAu alssamawati waal-ardi wa-itha qada amran fa-innama yaqoolu lahu kun fayakoonu
YUSUFALI: To Him is due the primal origin of the heavens and the earth: When He decreeth a matter, He saith to it: “Be,” and it is.
PICKTHAL: The Originator of the heavens and the earth! When He decreeth a thing, He saith unto it only: Be! and it is.
SHAKIR: Wonderful Originator of the heavens and the earth, and when He decrees an affair, He only says to it, Be, so there it is.
KHALIFA: The Initiator of the heavens and the earth: to have anything done, He simply says to it, “Be,” and it is.
১১৭। তিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর আদি স্রষ্টা। এবং যখন তিনি কিছু করতে সিদ্ধান্ত করেন, তিনি শুধু বলেন, ‘হও’ আর তা হয়ে যায়।
১১৮। যাদের কোন জ্ঞান নাই, তারা বলে, ‘আল্লাহ্ আমাদের সাথে কথা বলেন না কেন? অথবা আমাদের নিকট কোন নিদর্শন আসে না কেন?’ এভাবেই তাদের পূর্ববর্তীরাও অনুরূপ কথা বলতো। তাদের অন্তর একই রকম। যে কেউ দৃঢ়ভাবে [তাদের অন্তরে] ঈমানকে ধরে রাখে, আমি অবশ্যই তাদের জন্য নিদর্শনাবলীকে সুস্পষ্ট করেছি।
১১৯। আমি তোমাকে সত্যসহ শুভ সংবাদ দাতা এবং সতর্ককারী রূপে প্রেরণ করেছি। জাহান্নামের অধিবাসীদের সম্বন্ধে তোমাকে কোন প্রশ্ন করা হবে না।
১২০। ইহুদী ও খ্রীষ্টানগণ কখনও সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না তুমি তাদের ধর্ম মত অনুসরণ কর। বল, ‘আল্লাহ্র পথ নির্দেশই [একমাত্র] পথ নির্দেশ।’ তোমার নিকট যে জ্ঞান এসেছে তা প্রাপ্তির পর যদি তুমি তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ কর, তবে আল্লাহ্র বিপক্ষে তোমার কোন রক্ষাকারী থাকবে না এবং কোন সাহায্যকারীও থাকবে না।
১২১। যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি যেভাবে তা পাঠ করা উচিত সেভাবে পাঠ কর। এরাই তারা যারা তাতে বিশ্বাস করে। যারা তাতে বিশ্বাস করতে অস্বীকার করে তারা ক্ষতিগ্রস্থ।
রুকু – ১৫
১২২। হে বনী ইসরাঈলীগণ! আমার সেই বিশেষ অনুগ্রহ স্মরণ কর যা দ্বারা আমি তোমাদের অনুগৃহীত করেছি এবং সকল [জাতির] মধ্যে তোমাদের [নবুয়তের জন্য] পছন্দ করেছি।
১২৩। সেই দিন থেকে নিজেকে রক্ষা কর, যেদিন কেউ কারও উপকারে আসবে না। কারও কাছ থেকে কোন ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করা হবে না। কোন সুপারিশ লাভজনক হবে না। এবং [বাইরে থেকে] কেউ কোন সাহায্য পাবে না ১২২।
১২২। [২: ১২২-১২৩] আয়াত দুটি, [২: ৪৭-৪৮] আয়াত দুটির পুনরাবৃত্তি। ১২৩ এর ভাষাতে সামান্য পরিবর্তন হলেও তা আয়াতের অর্থে কোনও পরিবর্তন ঘটে নাই। এই আয়াতগুলিতে ইহুদীদের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহের বর্ণনা সুন্দরভাবে শেষ করা হয়েছে। এরপরে শুরু হতে যাচ্ছে, আধ্যাত্মিক জগতে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর বংশধর হিসেবে [হযরত ইসমাইলের (আঃ) মাধ্যমে] আরবদের উপরে আল্লাহ্র অনুগ্রহ বা করুণার বর্ণনা।
আয়াতঃ 002.118
যারা কিছু জানে না, তারা বলে, আল্লাহ আমাদের সঙ্গে কেন কথা বলেন না? অথবা আমাদের কাছে কোন নিদর্শন কেন আসে না? এমনি ভাবে তাদের পূর্বে যারা ছিল তারাও তাদেরই অনুরূপ কথা বলেছে। তাদের অন্তর একই রকম। নিশ্চয় আমি উজ্জ্বল নিদর্শনসমূহ বর্ণনা করেছি তাদের জন্যে যারা প্রত্যয়শীল।
And those who have no knowledge say: ”Why does not Allâh speak to us (face to face) or why does not a sign come to us?” So said the people before them words of similar import. Their hearts are alike, We have indeed made plain the signs for people who believe with certainty.
وَقَالَ الَّذِينَ لاَ يَعْلَمُونَ لَوْلاَ يُكَلِّمُنَا اللّهُ أَوْ تَأْتِينَا آيَةٌ كَذَلِكَ قَالَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِم مِّثْلَ قَوْلِهِمْ تَشَابَهَتْ قُلُوبُهُمْ قَدْ بَيَّنَّا الآيَاتِ لِقَوْمٍ يُوقِنُونَ
Waqala allatheena la yaAAlamoona lawla yukallimuna Allahu aw ta/teena ayatun kathalika qala allatheena min qablihim mithla qawlihim tashabahat quloobuhum qad bayyanna al-ayati liqawmin yooqinoona
YUSUFALI: Say those without knowledge: “Why speaketh not Allah unto us? or why cometh not unto us a Sign?” So said the people before them words of similar import. Their hearts are alike. We have indeed made clear the Signs unto any people who hold firmly to Faith (in their hearts).
PICKTHAL: And those who have no knowledge say: Why doth not Allah speak unto us, or some sign come unto us? Even thus, as they now speak, spake those (who were) before them. Their hearts are all alike. We have made clear the revelations for people who are sure.
SHAKIR: And those who have no knowledge say: Why does not Allah speak to us or a sign come to us? Even thus said those before them, the like of what they say; their hearts are all alike. Indeed We have made the communications clear for a people who are sure.
KHALIFA: Those who possess no knowledge say, “If only GOD could speak to us, or some miracle could come to us!” Others before them have uttered similar utterances; their minds are similar. We do manifest the miracles for those who have attained certainty.
১১৭। তিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর আদি স্রষ্টা। এবং যখন তিনি কিছু করতে সিদ্ধান্ত করেন, তিনি শুধু বলেন, ‘হও’ আর তা হয়ে যায়।
১১৮। যাদের কোন জ্ঞান নাই, তারা বলে, ‘আল্লাহ্ আমাদের সাথে কথা বলেন না কেন? অথবা আমাদের নিকট কোন নিদর্শন আসে না কেন?’ এভাবেই তাদের পূর্ববর্তীরাও অনুরূপ কথা বলতো। তাদের অন্তর একই রকম। যে কেউ দৃঢ়ভাবে [তাদের অন্তরে] ঈমানকে ধরে রাখে, আমি অবশ্যই তাদের জন্য নিদর্শনাবলীকে সুস্পষ্ট করেছি।
১১৯। আমি তোমাকে সত্যসহ শুভ সংবাদ দাতা এবং সতর্ককারী রূপে প্রেরণ করেছি। জাহান্নামের অধিবাসীদের সম্বন্ধে তোমাকে কোন প্রশ্ন করা হবে না।
১২০। ইহুদী ও খ্রীষ্টানগণ কখনও সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না তুমি তাদের ধর্ম মত অনুসরণ কর। বল, ‘আল্লাহ্র পথ নির্দেশই [একমাত্র] পথ নির্দেশ।’ তোমার নিকট যে জ্ঞান এসেছে তা প্রাপ্তির পর যদি তুমি তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ কর, তবে আল্লাহ্র বিপক্ষে তোমার কোন রক্ষাকারী থাকবে না এবং কোন সাহায্যকারীও থাকবে না।
১২১। যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি যেভাবে তা পাঠ করা উচিত সেভাবে পাঠ কর। এরাই তারা যারা তাতে বিশ্বাস করে। যারা তাতে বিশ্বাস করতে অস্বীকার করে তারা ক্ষতিগ্রস্থ।
রুকু – ১৫
১২২। হে বনী ইসরাঈলীগণ! আমার সেই বিশেষ অনুগ্রহ স্মরণ কর যা দ্বারা আমি তোমাদের অনুগৃহীত করেছি এবং সকল [জাতির] মধ্যে তোমাদের [নবুয়তের জন্য] পছন্দ করেছি।
১২৩। সেই দিন থেকে নিজেকে রক্ষা কর, যেদিন কেউ কারও উপকারে আসবে না। কারও কাছ থেকে কোন ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করা হবে না। কোন সুপারিশ লাভজনক হবে না। এবং [বাইরে থেকে] কেউ কোন সাহায্য পাবে না ১২২।
১২২। [২: ১২২-১২৩] আয়াত দুটি, [২: ৪৭-৪৮] আয়াত দুটির পুনরাবৃত্তি। ১২৩ এর ভাষাতে সামান্য পরিবর্তন হলেও তা আয়াতের অর্থে কোনও পরিবর্তন ঘটে নাই। এই আয়াতগুলিতে ইহুদীদের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহের বর্ণনা সুন্দরভাবে শেষ করা হয়েছে। এরপরে শুরু হতে যাচ্ছে, আধ্যাত্মিক জগতে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর বংশধর হিসেবে [হযরত ইসমাইলের (আঃ) মাধ্যমে] আরবদের উপরে আল্লাহ্র অনুগ্রহ বা করুণার বর্ণনা।
আয়াতঃ 002.119
নিশ্চয় আমি আপনাকে সত্যধর্মসহ সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারীরূপে পাঠিয়েছি। আপনি দোযখবাসীদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন না।
Verily, We have sent you (O Muhammad Peace be upon him ) with the truth (Islâm), a bringer of glad tidings (for those who believe in what you brought, that they will enter Paradise) and a warner (for those who disbelieve in what you brought, they will enter the Hell-fire). And you will not be asked about the dwellers of the blazing Fire.
إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ بِالْحَقِّ بَشِيرًا وَنَذِيرًا وَلاَ تُسْأَلُ عَنْ أَصْحَابِ الْجَحِيمِ
Inna arsalnaka bialhaqqi basheeran wanatheeran wala tus-alu Aaan as-habi aljaheemi
YUSUFALI: Verily We have sent thee in truth as a bearer of glad tidings and a warner: But of thee no question shall be asked of the Companions of the Blazing Fire.
PICKTHAL: Lo! We have sent thee (O Muhammad) with the truth, a bringer of glad tidings and a warner. And thou wilt not be asked about the owners of hell-fire.
SHAKIR: Surely We have sent you with the truth as a bearer of good news and as a warner, and you shall not be called upon to answer for the companions of the flaming fire.
KHALIFA: We have sent you with the truth as a bearer of good news, as well as a warner. You are not answerable for those who incur Hell.
১১৭। তিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর আদি স্রষ্টা। এবং যখন তিনি কিছু করতে সিদ্ধান্ত করেন, তিনি শুধু বলেন, ‘হও’ আর তা হয়ে যায়।
১১৮। যাদের কোন জ্ঞান নাই, তারা বলে, ‘আল্লাহ্ আমাদের সাথে কথা বলেন না কেন? অথবা আমাদের নিকট কোন নিদর্শন আসে না কেন?’ এভাবেই তাদের পূর্ববর্তীরাও অনুরূপ কথা বলতো। তাদের অন্তর একই রকম। যে কেউ দৃঢ়ভাবে [তাদের অন্তরে] ঈমানকে ধরে রাখে, আমি অবশ্যই তাদের জন্য নিদর্শনাবলীকে সুস্পষ্ট করেছি।
১১৯। আমি তোমাকে সত্যসহ শুভ সংবাদ দাতা এবং সতর্ককারী রূপে প্রেরণ করেছি। জাহান্নামের অধিবাসীদের সম্বন্ধে তোমাকে কোন প্রশ্ন করা হবে না।
১২০। ইহুদী ও খ্রীষ্টানগণ কখনও সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না তুমি তাদের ধর্ম মত অনুসরণ কর। বল, ‘আল্লাহ্র পথ নির্দেশই [একমাত্র] পথ নির্দেশ।’ তোমার নিকট যে জ্ঞান এসেছে তা প্রাপ্তির পর যদি তুমি তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ কর, তবে আল্লাহ্র বিপক্ষে তোমার কোন রক্ষাকারী থাকবে না এবং কোন সাহায্যকারীও থাকবে না।
১২১। যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি যেভাবে তা পাঠ করা উচিত সেভাবে পাঠ কর। এরাই তারা যারা তাতে বিশ্বাস করে। যারা তাতে বিশ্বাস করতে অস্বীকার করে তারা ক্ষতিগ্রস্থ।
রুকু – ১৫
১২২। হে বনী ইসরাঈলীগণ! আমার সেই বিশেষ অনুগ্রহ স্মরণ কর যা দ্বারা আমি তোমাদের অনুগৃহীত করেছি এবং সকল [জাতির] মধ্যে তোমাদের [নবুয়তের জন্য] পছন্দ করেছি।
১২৩। সেই দিন থেকে নিজেকে রক্ষা কর, যেদিন কেউ কারও উপকারে আসবে না। কারও কাছ থেকে কোন ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করা হবে না। কোন সুপারিশ লাভজনক হবে না। এবং [বাইরে থেকে] কেউ কোন সাহায্য পাবে না ১২২।
১২২। [২: ১২২-১২৩] আয়াত দুটি, [২: ৪৭-৪৮] আয়াত দুটির পুনরাবৃত্তি। ১২৩ এর ভাষাতে সামান্য পরিবর্তন হলেও তা আয়াতের অর্থে কোনও পরিবর্তন ঘটে নাই। এই আয়াতগুলিতে ইহুদীদের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহের বর্ণনা সুন্দরভাবে শেষ করা হয়েছে। এরপরে শুরু হতে যাচ্ছে, আধ্যাত্মিক জগতে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর বংশধর হিসেবে [হযরত ইসমাইলের (আঃ) মাধ্যমে] আরবদের উপরে আল্লাহ্র অনুগ্রহ বা করুণার বর্ণনা।
আয়াতঃ 002.120
ইহুদী ও খ্রীষ্টানরা কখনই আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হবে না, যে পর্যন্ত না আপনি তাদের ধর্মের অনুসরণ করেন। বলে দিন, যে পথ আল্লাহ প্রদর্শন করেন, তাই হল সরল পথ। যদি আপনি তাদের আকাঙ্খাসমূহের অনুসরণ করেন, ঐ জ্ঞান লাভের পর, যা আপনার কাছে পৌঁছেছে, তবে কেউ আল্লাহর কবল থেকে আপনার উদ্ধারকারী ও সাহায্যকারী নেই।
Never will the Jews nor the Christians be pleased with you (O Muhammad Peace be upon him ) till you follow their religion. Say: ”Verily, the Guidance of Allâh (i.e. Islâmic Monotheism) that is the (only) Guidance. And if you (O Muhammad Peace be upon him ) were to follow their (Jews and Christians) desires after what you have received of Knowledge (i.e. the Qur’ân), then you would have against Allâh neither any Walî (protector or guardian) nor any helper.
وَلَن تَرْضَى عَنكَ الْيَهُودُ وَلاَ النَّصَارَى حَتَّى تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمْ قُلْ إِنَّ هُدَى اللّهِ هُوَ الْهُدَى وَلَئِنِ اتَّبَعْتَ أَهْوَاءهُم بَعْدَ الَّذِي جَاءكَ مِنَ الْعِلْمِ مَا لَكَ مِنَ اللّهِ مِن وَلِيٍّ وَلاَ نَصِيرٍ
Walan tarda AAanka alyahoodu wala alnnasara hatta tattabiAAa millatahum qul inna huda Allahi huwa alhuda wala-ini ittabaAAta ahwaahum baAAda allathee jaaka mina alAAilmi ma laka mina Allahi min waliyyin wala naseerin
YUSUFALI: Never will the Jews or the Christians be satisfied with thee unless thou follow their form of religion. Say: “The Guidance of Allah,-that is the (only) Guidance.” Wert thou to follow their desires after the knowledge which hath reached thee, then wouldst thou find neither Protector nor helper against Allah.
PICKTHAL: And the Jews will not be pleased with thee, nor will the Christians, till thou follow their creed. Say: Lo! the guidance of Allah (Himself) is Guidance. And if thou shouldst follow their desires after the knowledge which hath come unto thee, then wouldst thou have from Allah no protecting guardian nor helper.
SHAKIR: And the Jews will not be pleased with you, nor the Christians until you follow their religion. Say: Surely Allah’s guidance, that is the (true) guidance. And if you follow their desires after the knowledge that has come to you, you shall have no guardian from Allah, nor any helper.
KHALIFA: Neither the Jews, nor the Christians, will accept you, unless you follow their religion. Say, “GOD’s guidance is the true guidance.” If you acquiesce to their wishes, despite the knowledge you have received, you will find no ally or supporter to help you against GOD.
১১৭। তিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর আদি স্রষ্টা। এবং যখন তিনি কিছু করতে সিদ্ধান্ত করেন, তিনি শুধু বলেন, ‘হও’ আর তা হয়ে যায়।
১১৮। যাদের কোন জ্ঞান নাই, তারা বলে, ‘আল্লাহ্ আমাদের সাথে কথা বলেন না কেন? অথবা আমাদের নিকট কোন নিদর্শন আসে না কেন?’ এভাবেই তাদের পূর্ববর্তীরাও অনুরূপ কথা বলতো। তাদের অন্তর একই রকম। যে কেউ দৃঢ়ভাবে [তাদের অন্তরে] ঈমানকে ধরে রাখে, আমি অবশ্যই তাদের জন্য নিদর্শনাবলীকে সুস্পষ্ট করেছি।
১১৯। আমি তোমাকে সত্যসহ শুভ সংবাদ দাতা এবং সতর্ককারী রূপে প্রেরণ করেছি। জাহান্নামের অধিবাসীদের সম্বন্ধে তোমাকে কোন প্রশ্ন করা হবে না।
১২০। ইহুদী ও খ্রীষ্টানগণ কখনও সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না তুমি তাদের ধর্ম মত অনুসরণ কর। বল, ‘আল্লাহ্র পথ নির্দেশই [একমাত্র] পথ নির্দেশ।’ তোমার নিকট যে জ্ঞান এসেছে তা প্রাপ্তির পর যদি তুমি তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ কর, তবে আল্লাহ্র বিপক্ষে তোমার কোন রক্ষাকারী থাকবে না এবং কোন সাহায্যকারীও থাকবে না।
১২১। যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি যেভাবে তা পাঠ করা উচিত সেভাবে পাঠ কর। এরাই তারা যারা তাতে বিশ্বাস করে। যারা তাতে বিশ্বাস করতে অস্বীকার করে তারা ক্ষতিগ্রস্থ।
রুকু – ১৫
১২২। হে বনী ইসরাঈলীগণ! আমার সেই বিশেষ অনুগ্রহ স্মরণ কর যা দ্বারা আমি তোমাদের অনুগৃহীত করেছি এবং সকল [জাতির] মধ্যে তোমাদের [নবুয়তের জন্য] পছন্দ করেছি।
১২৩। সেই দিন থেকে নিজেকে রক্ষা কর, যেদিন কেউ কারও উপকারে আসবে না। কারও কাছ থেকে কোন ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করা হবে না। কোন সুপারিশ লাভজনক হবে না। এবং [বাইরে থেকে] কেউ কোন সাহায্য পাবে না ১২২।
১২২। [২: ১২২-১২৩] আয়াত দুটি, [২: ৪৭-৪৮] আয়াত দুটির পুনরাবৃত্তি। ১২৩ এর ভাষাতে সামান্য পরিবর্তন হলেও তা আয়াতের অর্থে কোনও পরিবর্তন ঘটে নাই। এই আয়াতগুলিতে ইহুদীদের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহের বর্ণনা সুন্দরভাবে শেষ করা হয়েছে। এরপরে শুরু হতে যাচ্ছে, আধ্যাত্মিক জগতে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর বংশধর হিসেবে [হযরত ইসমাইলের (আঃ) মাধ্যমে] আরবদের উপরে আল্লাহ্র অনুগ্রহ বা করুণার বর্ণনা।
আয়াতঃ 002.121
আমি যাদেরকে গ্রন্থ দান করেছি, তারা তা যথাযথভাবে পাঠ করে। তারাই তৎপ্রতি বিশ্বাস করে। আর যারা তা অবিশ্বাস করে, তারাই হবে ক্ষতিগ্রস্ত।
Those (who embraced Islâm from Banî Israel) to whom We gave the Book [the Taurât (Torah)] [or those (Muhammad’s Peace be upon him companions) to whom We have given the Book (the Qur’ân)] recite it (i.e. obey its orders and follow its teachings) as it should be recited (i.e. followed), they are the ones that believe therein. And whoso disbelieves in it (the Qur’ân), those are they who are the losers. (Tafsir Al-Qurtubî. Vol. 2, Page 95).
الَّذِينَ آتَيْنَاهُمُ الْكِتَابَ يَتْلُونَهُ حَقَّ تِلاَوَتِهِ أُوْلَـئِكَ يُؤْمِنُونَ بِهِ وَمن يَكْفُرْ بِهِ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ
Allatheena ataynahumu alkitaba yatloonahu haqqa tilawatihi ola-ika yu/minoona bihi waman yakfur bihi faola-ika humu alkhasiroona
YUSUFALI: Those to whom We have sent the Book study it as it should be studied: They are the ones that believe therein: Those who reject faith therein,- the loss is their own.
PICKTHAL: Those unto whom We have given the Scripture, who read it with the right reading, those believe in it. And whoso disbelieveth in it, those are they who are the losers.
SHAKIR: Those to whom We have given the Book read it as it ought to be read. These believe in it; and whoever disbelieves in it, these it is that are the losers.
KHALIFA: Those who received the scripture, and know it as it should be known, will believe in this. As for those who disbelieve, they are the losers.
১১৭। তিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর আদি স্রষ্টা। এবং যখন তিনি কিছু করতে সিদ্ধান্ত করেন, তিনি শুধু বলেন, ‘হও’ আর তা হয়ে যায়।
১১৮। যাদের কোন জ্ঞান নাই, তারা বলে, ‘আল্লাহ্ আমাদের সাথে কথা বলেন না কেন? অথবা আমাদের নিকট কোন নিদর্শন আসে না কেন?’ এভাবেই তাদের পূর্ববর্তীরাও অনুরূপ কথা বলতো। তাদের অন্তর একই রকম। যে কেউ দৃঢ়ভাবে [তাদের অন্তরে] ঈমানকে ধরে রাখে, আমি অবশ্যই তাদের জন্য নিদর্শনাবলীকে সুস্পষ্ট করেছি।
১১৯। আমি তোমাকে সত্যসহ শুভ সংবাদ দাতা এবং সতর্ককারী রূপে প্রেরণ করেছি। জাহান্নামের অধিবাসীদের সম্বন্ধে তোমাকে কোন প্রশ্ন করা হবে না।
১২০। ইহুদী ও খ্রীষ্টানগণ কখনও সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না তুমি তাদের ধর্ম মত অনুসরণ কর। বল, ‘আল্লাহ্র পথ নির্দেশই [একমাত্র] পথ নির্দেশ।’ তোমার নিকট যে জ্ঞান এসেছে তা প্রাপ্তির পর যদি তুমি তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ কর, তবে আল্লাহ্র বিপক্ষে তোমার কোন রক্ষাকারী থাকবে না এবং কোন সাহায্যকারীও থাকবে না।
১২১। যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি যেভাবে তা পাঠ করা উচিত সেভাবে পাঠ কর। এরাই তারা যারা তাতে বিশ্বাস করে। যারা তাতে বিশ্বাস করতে অস্বীকার করে তারা ক্ষতিগ্রস্থ।
রুকু – ১৫
১২২। হে বনী ইসরাঈলীগণ! আমার সেই বিশেষ অনুগ্রহ স্মরণ কর যা দ্বারা আমি তোমাদের অনুগৃহীত করেছি এবং সকল [জাতির] মধ্যে তোমাদের [নবুয়তের জন্য] পছন্দ করেছি।
১২৩। সেই দিন থেকে নিজেকে রক্ষা কর, যেদিন কেউ কারও উপকারে আসবে না। কারও কাছ থেকে কোন ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করা হবে না। কোন সুপারিশ লাভজনক হবে না। এবং [বাইরে থেকে] কেউ কোন সাহায্য পাবে না ১২২।
১২২। [২: ১২২-১২৩] আয়াত দুটি, [২: ৪৭-৪৮] আয়াত দুটির পুনরাবৃত্তি। ১২৩ এর ভাষাতে সামান্য পরিবর্তন হলেও তা আয়াতের অর্থে কোনও পরিবর্তন ঘটে নাই। এই আয়াতগুলিতে ইহুদীদের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহের বর্ণনা সুন্দরভাবে শেষ করা হয়েছে। এরপরে শুরু হতে যাচ্ছে, আধ্যাত্মিক জগতে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর বংশধর হিসেবে [হযরত ইসমাইলের (আঃ) মাধ্যমে] আরবদের উপরে আল্লাহ্র অনুগ্রহ বা করুণার বর্ণনা।
আয়াতঃ 002.122
হে বনী-ইসরাঈল! আমার অনুগ্রহের কথা স্মরণ কর, যা আমি তোমাদের দিয়েছি। আমি তোমাদেরকে বিশ্বাবাসীর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি।
O Children of Israel! Remember My Favour which I bestowed upon you and that I preferred you to the ’Alamîn (mankind and jinns) (of your time-period, in the past).
يَا بَنِي إِسْرَائِيلَ اذْكُرُواْ نِعْمَتِيَ الَّتِي أَنْعَمْتُ عَلَيْكُمْ وَأَنِّي فَضَّلْتُكُمْ عَلَى الْعَالَمِينَ
Ya banee isra-eela othkuroo niAAmatiya allatee anAAamtu AAalaykum waannee faddaltukum AAala alAAalameena
YUSUFALI: O Children of Israel! call to mind the special favour which I bestowed upon you, and that I preferred you to all others (for My Message).
PICKTHAL: O Children of Israel! Remember My favour wherewith I favoured you and how I preferred you to (all) creatures.
SHAKIR: O children of Israel, call to mind My favor which I bestowed on you and that I made you excel the nations.
KHALIFA: O Children of Israel, remember My favor which I bestowed upon you, and that I blessed you more than any other people.
১১৭। তিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর আদি স্রষ্টা। এবং যখন তিনি কিছু করতে সিদ্ধান্ত করেন, তিনি শুধু বলেন, ‘হও’ আর তা হয়ে যায়।
১১৮। যাদের কোন জ্ঞান নাই, তারা বলে, ‘আল্লাহ্ আমাদের সাথে কথা বলেন না কেন? অথবা আমাদের নিকট কোন নিদর্শন আসে না কেন?’ এভাবেই তাদের পূর্ববর্তীরাও অনুরূপ কথা বলতো। তাদের অন্তর একই রকম। যে কেউ দৃঢ়ভাবে [তাদের অন্তরে] ঈমানকে ধরে রাখে, আমি অবশ্যই তাদের জন্য নিদর্শনাবলীকে সুস্পষ্ট করেছি।
১১৯। আমি তোমাকে সত্যসহ শুভ সংবাদ দাতা এবং সতর্ককারী রূপে প্রেরণ করেছি। জাহান্নামের অধিবাসীদের সম্বন্ধে তোমাকে কোন প্রশ্ন করা হবে না।
১২০। ইহুদী ও খ্রীষ্টানগণ কখনও সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না তুমি তাদের ধর্ম মত অনুসরণ কর। বল, ‘আল্লাহ্র পথ নির্দেশই [একমাত্র] পথ নির্দেশ।’ তোমার নিকট যে জ্ঞান এসেছে তা প্রাপ্তির পর যদি তুমি তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ কর, তবে আল্লাহ্র বিপক্ষে তোমার কোন রক্ষাকারী থাকবে না এবং কোন সাহায্যকারীও থাকবে না।
১২১। যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি যেভাবে তা পাঠ করা উচিত সেভাবে পাঠ কর। এরাই তারা যারা তাতে বিশ্বাস করে। যারা তাতে বিশ্বাস করতে অস্বীকার করে তারা ক্ষতিগ্রস্থ।
রুকু – ১৫
১২২। হে বনী ইসরাঈলীগণ! আমার সেই বিশেষ অনুগ্রহ স্মরণ কর যা দ্বারা আমি তোমাদের অনুগৃহীত করেছি এবং সকল [জাতির] মধ্যে তোমাদের [নবুয়তের জন্য] পছন্দ করেছি।
১২৩। সেই দিন থেকে নিজেকে রক্ষা কর, যেদিন কেউ কারও উপকারে আসবে না। কারও কাছ থেকে কোন ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করা হবে না। কোন সুপারিশ লাভজনক হবে না। এবং [বাইরে থেকে] কেউ কোন সাহায্য পাবে না ১২২।
১২২। [২: ১২২-১২৩] আয়াত দুটি, [২: ৪৭-৪৮] আয়াত দুটির পুনরাবৃত্তি। ১২৩ এর ভাষাতে সামান্য পরিবর্তন হলেও তা আয়াতের অর্থে কোনও পরিবর্তন ঘটে নাই। এই আয়াতগুলিতে ইহুদীদের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহের বর্ণনা সুন্দরভাবে শেষ করা হয়েছে। এরপরে শুরু হতে যাচ্ছে, আধ্যাত্মিক জগতে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর বংশধর হিসেবে [হযরত ইসমাইলের (আঃ) মাধ্যমে] আরবদের উপরে আল্লাহ্র অনুগ্রহ বা করুণার বর্ণনা।
আয়াতঃ 002.123
তোমরা ভয় কর সেদিনকে, যে দিন এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তি বিন্দুমাত্র উপকৃত হবে না, কারও কাছ থেকে বিনিময় গৃহীত হবে না, কার ও সুপারিশ ফলপ্রদ হবে না এবং তারা সাহায্য প্রাপ্ত ও হবে না।
And fear the Day (of Judgement) when no person shall avail another, nor shall compensation be accepted from him, nor shall intercession be of use to him, nor shall they be helped.
وَاتَّقُواْ يَوْماً لاَّ تَجْزِي نَفْسٌ عَن نَّفْسٍ شَيْئاً وَلاَ يُقْبَلُ مِنْهَا عَدْلٌ وَلاَ تَنفَعُهَا شَفَاعَةٌ وَلاَ هُمْ يُنصَرُونَ
Waittaqoo yawman la tajzee nafsun AAan nafsin shay-an wala yuqbalu minha AAadlun wala tanfaAAuha shafaAAatun wala hum yunsaroona
YUSUFALI: Then guard yourselves against a-Day when one soul shall not avail another, nor shall compensation be accepted from her nor shall intercession profit her nor shall anyone be helped (from outside).
PICKTHAL: And guard (yourselves) against a day when no soul will in aught avail another, nor will compensation be accepted from it, nor will intercession be of use to it; nor will they be helped.
SHAKIR: And be on your guard against a day when no soul shall avail another in the least neither shall any compensation be accepted from it, nor shall intercession profit it, nor shall they be helped.
KHALIFA: Beware of the day when no soul will help another soul, no ransom will be accepted, no intercession will be useful, and no one will be helped.
১১৭। তিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর আদি স্রষ্টা। এবং যখন তিনি কিছু করতে সিদ্ধান্ত করেন, তিনি শুধু বলেন, ‘হও’ আর তা হয়ে যায়।
১১৮। যাদের কোন জ্ঞান নাই, তারা বলে, ‘আল্লাহ্ আমাদের সাথে কথা বলেন না কেন? অথবা আমাদের নিকট কোন নিদর্শন আসে না কেন?’ এভাবেই তাদের পূর্ববর্তীরাও অনুরূপ কথা বলতো। তাদের অন্তর একই রকম। যে কেউ দৃঢ়ভাবে [তাদের অন্তরে] ঈমানকে ধরে রাখে, আমি অবশ্যই তাদের জন্য নিদর্শনাবলীকে সুস্পষ্ট করেছি।
১১৯। আমি তোমাকে সত্যসহ শুভ সংবাদ দাতা এবং সতর্ককারী রূপে প্রেরণ করেছি। জাহান্নামের অধিবাসীদের সম্বন্ধে তোমাকে কোন প্রশ্ন করা হবে না।
১২০। ইহুদী ও খ্রীষ্টানগণ কখনও সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না তুমি তাদের ধর্ম মত অনুসরণ কর। বল, ‘আল্লাহ্র পথ নির্দেশই [একমাত্র] পথ নির্দেশ।’ তোমার নিকট যে জ্ঞান এসেছে তা প্রাপ্তির পর যদি তুমি তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ কর, তবে আল্লাহ্র বিপক্ষে তোমার কোন রক্ষাকারী থাকবে না এবং কোন সাহায্যকারীও থাকবে না।
১২১। যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি যেভাবে তা পাঠ করা উচিত সেভাবে পাঠ কর। এরাই তারা যারা তাতে বিশ্বাস করে। যারা তাতে বিশ্বাস করতে অস্বীকার করে তারা ক্ষতিগ্রস্থ।
রুকু – ১৫
১২২। হে বনী ইসরাঈলীগণ! আমার সেই বিশেষ অনুগ্রহ স্মরণ কর যা দ্বারা আমি তোমাদের অনুগৃহীত করেছি এবং সকল [জাতির] মধ্যে তোমাদের [নবুয়তের জন্য] পছন্দ করেছি।
১২৩। সেই দিন থেকে নিজেকে রক্ষা কর, যেদিন কেউ কারও উপকারে আসবে না। কারও কাছ থেকে কোন ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করা হবে না। কোন সুপারিশ লাভজনক হবে না। এবং [বাইরে থেকে] কেউ কোন সাহায্য পাবে না ১২২।
১২২। [২: ১২২-১২৩] আয়াত দুটি, [২: ৪৭-৪৮] আয়াত দুটির পুনরাবৃত্তি। ১২৩ এর ভাষাতে সামান্য পরিবর্তন হলেও তা আয়াতের অর্থে কোনও পরিবর্তন ঘটে নাই। এই আয়াতগুলিতে ইহুদীদের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহের বর্ণনা সুন্দরভাবে শেষ করা হয়েছে। এরপরে শুরু হতে যাচ্ছে, আধ্যাত্মিক জগতে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর বংশধর হিসেবে [হযরত ইসমাইলের (আঃ) মাধ্যমে] আরবদের উপরে আল্লাহ্র অনুগ্রহ বা করুণার বর্ণনা।
যখন ইব্রাহীমকে তাঁর পালনকর্তা কয়েকটি বিষয়ে পরীক্ষা করলেন, অতঃপর তিনি তা পূর্ণ করে দিলেন, তখন পালনকর্তা বললেন, আমি তোমাকে মানবজাতির নেতা করব। তিনি বললেন, আমার বংশধর থেকেও! তিনি বললেন আমার অঙ্গীকার অত্যাচারীদের পর্যন্ত পৌঁছাবে না।
And (remember) when the Lord of Ibrâhim (Abraham) [i.e., Allâh] tried him with (certain) Commands, which he fulfilled. He (Allâh) said (to him), ”Verily, I am going to make you a leader (Prophet) of mankind.” [Ibrâhim (Abraham)] said, ”And of my offspring (to make leaders).” (Allâh) said, ”My Covenant (Prophethood, etc.) includes not Zâlimûn (polytheists and wrong-doers).”
وَإِذِ ابْتَلَى إِبْرَاهِيمَ رَبُّهُ بِكَلِمَاتٍ فَأَتَمَّهُنَّ قَالَ إِنِّي جَاعِلُكَ لِلنَّاسِ إِمَامًا قَالَ وَمِن ذُرِّيَّتِي قَالَ لاَ يَنَالُ عَهْدِي الظَّالِمِينَ
Wa-ithi ibtala ibraheema rabbuhu bikalimatin faatammahunna qala innee jaAAiluka lilnnasi imaman qala wamin thurriyyatee qala la yanalu AAahdee alththalimeena
YUSUFALI: And remember that Abraham was tried by his Lord with certain commands, which he fulfilled: He said: “I will make thee an Imam to the Nations.” He pleaded: “And also (Imams) from my offspring!” He answered: “But My Promise is not within the reach of evil-doers.”
PICKTHAL: And (remember) when his Lord tried Abraham with (His) commands, and he fulfilled them, He said: Lo! I have appointed thee a leader for mankind. (Abraham) said: And of my offspring (will there be leaders)? He said: My covenant includeth not wrong-doers.
SHAKIR: And when his Lord tried Ibrahim with certain words, he fulfilled them. He said: Surely I will make you an Imam of men. Ibrahim said: And of my offspring? My covenant does not include the unjust, said He.
KHALIFA: Recall that Abraham was put to the test by his Lord, through certain commands, and he fulfilled them. (God) said, “I am appointing you an imam for the people.” He said, “And also my descendants?” He said, “My covenant does not include the transgressors.”
১২৪। এবং স্মরণ কর ইব্রাহীমকে তাঁর প্রভু কয়েকটি হুকুম দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন ১২৩ যা সে প্রতিপালন করেছিলো। আল্লাহ্ বলেছিলেন, ‘আমি তোমাকে সকল জাতির নেতা করবো ১২৪।’ সে আবেদন করেছিলো, ‘এবং আমার বংশধরগণের মধ্য থেকেও [ইমাম হবে]’। আল্লাহ্ বলেছিলেন, ‘কিন্তু আমার প্রতিশ্রুতি পাপীদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না।’
১২৩+১২৪। এই আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেন যে, তিনি হযরত ইব্রাহীমের পরীক্ষা নিয়েছিলেন এবং হযরত ইব্রাহীম তাঁর ইচ্ছাকে স্রষ্টার ইচ্ছার কাছে বিলীনকরে দিয়েছিলেন এবং আল্লাহ্র ইচ্ছা পূরণ করেছিলেন। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ। হযরত ইব্রাহীমের পরীক্ষা কোন অজ্ঞতা যাচাই এর জন্য ছিল না বরং এর উদ্দেশ্য ছিল পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁকে আধ্যাত্মিক জগতে পূর্ণতার স্তরে পৌঁছে দেওয়া। আল্লাহ্র কাছে শিক্ষা বিষয়ক জ্ঞানের চাইতে চারিত্রিক দৃঢ়তার মূল্য বেশি। এতে বোঝা যায় আল্লাহ্র দরবারে যে বিষয়ের মূল্য বেশি তা শিক্ষা বিষয়ক জ্ঞান নয়, বরং কার্যগত ও চরিত্রগত শ্রেষ্ঠত্ব। এ ধরনের পরীক্ষার বিষয়-বস্তুর মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল-
আল্লাহ্ তায়ালার ইচ্ছা ছিল হযরত ইব্রাহীমকে স্বীয় বন্ধুত্বের বিশেষ মূল্যবোন পোশাক উপহার দেওয়া। তাই তাঁকে বিভিন্ন রকম কঠোর পরীক্ষার সম্মুখীন করা হয়। সমগ্র জাতি এমন কি তাঁর আপন পরিবারের সবাই মূর্তি পূজায় লিপ্ত ছিল। সবার বিশ্বাস ও রীতিনীতির বিপরীত একটি সনাতন ধর্ম তাকে দেওয়া হয়। জাতিকে এ ধর্মের দিকে আহবান জানানোর গুরু দায়িত্ব তাঁর কাঁধে অর্পন করা হয়। তিনি পয়গম্বর সুলভ দৃঢ়তা ও সাহসিকতার মাধ্যমে নির্ভয়ে জাতিকে এক আল্লাহ্র দিকে আহবান জানান। বিভিন্ন পন্থায় তিনি মূর্তিপূঁজার নিন্দা ও কুৎসা প্রচার করেন। প্রকৃত পক্ষে কার্যক্ষেত্রে তিনি মূর্তিসমূহের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেন। ফলে সমগ্র জাতি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে উদ্যত হয়। বাদশাহ নমরুদ ও তার পরিবারবর্গ তাকে অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার সিদ্ধান্ত নেয়। আল্লাহ্র খলীল (বন্ধু) প্রভুর সন্তুষ্টির জন্য এসব বিপদ-আপদ সত্ত্বেও হাসিমুখে নিজেকে অগ্নিতে নিক্ষেপের জন্য পেশ করেন।
এ পরীক্ষা সমাপ্ত হলে জন্মভূমি ত্যাগ করে সিরিয়ায় হিজরতের পর দ্বিতীয় পরীক্ষা নেওয়া হয়। ইব্রাহীম (আঃ) আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের আশায় স্বগোত্র ও মাতৃভূমিকেও হাসিমুখে ত্যাগ করে পরিবার পরিজনসহ হিজরত করলেন।
মাতৃভূমি ও স্বজাতি ত্যাগ করে সিরিয়ায় অবস্থান করতেই নির্দেশ এরো বিবি হাজেরাকে দুগ্ধপোশ্য শিশু হযরত ইসমাঈলসহ নির্বাসনের। আল্লাহ্র ইচ্ছা মক্কা নগরীর সৃষ্টি ও হযরত ইসমাঈলের বংশে আরবে শেষ নবী প্রেরণ করা। তাই এই পুরো ঘটনার অবতারণা। এখানে অনুধাবনযোগ্য যে, শেষ নবী ও শ্রেষ্ঠ নবী স্বীয় বংশে পাওয়ার সম্মান ও গৌরব আল্লাহ্ হযরত ইব্রাহীমকে দিবেন। কিন্তু আল্লাহ্ দান বহু সাধনার দ্বারা ধারণ করার ক্ষমতা অর্জন করতে হয়। তাই তো আমরা দেখি সৎ ও ঈমানদার ব্যক্তি দুঃখ কষ্টের মধ্যে বেশি নিপতিত হয়। কারণ দুঃখ কষ্টের আগুনে পুড়ে তাদের আত্মা নিখাদ হয়, খাঁটি সোনায় রূপান্তরিত হয়, ফলে আল্লাহ্র সান্নিধ্য সেই হৃদয়ে অনুভব করার ক্ষমতা জন্মে। হযরত ইব্রাহীমের চরিত্রের মাধ্যমে আল্লাহ্ আমাদের এই শিক্ষাই দিয়েছেন যে, আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে পরিপূর্ণ আত্মসমর্পনই হচ্ছে ইসলাম। দুঃখ-কষ্ট, ব্যথা-বেদনা এরই মাধ্যমে আত্মা পরিশুদ্ধ এবং সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য লাভের যোগ্যতা অর্জন করে।
অতঃপর হযরত হাজেরা দুগ্ধপোষ্য শিশুকে নিয়ে জন-মানবহীন প্রান্তরে কালাতিপাত করতে থাকেন। এক সময়ে দারুণ পিপাসা তাঁকে পানির খোঁজে বেরিয়ে আসতে বাধ্য করলো। তিনি শিশুকে উন্মুক্ত প্রান্তরে রেখে পানির খোঁজে ‘সাফা’ ও ‘মারওয়া’ পাহাড়ে বারবার দৌড়াদৌড়ি করতে লাগলেন। কিন্তু কোথাও পানির চিহ্নমাত্র দেখলেন না এবং এমন কোনও মানুষ দৃষ্টিগোচর হল না, যার কাছে কিছু সাহায্য পেতে পারেন। সাতবার ছুটাছুটি করে পানির কোনও হদিস করতে না পেরে বিবি হাজেরা শিশু ইসমাঈলের কাছে ফিরে এলেন। কিন্তু তিনি আল্লাহ্র রহমতের উপরে অটল বিশ্বাসে, আল্লাহ্র কাছেই পানির জন্য প্রার্থনা জানালেন। এবারে আল্লাহ্র রহমত নাজিল হল। জিবরাঈল এলেন এবং শুষ্ক মরুভূমিতে পানির একটি ঝর্ণা ধারা বইয়ে দিলেন-যা যমযম কূপ নামে খ্যাত। এখানে বিবি হাজেরার চরিত্র থেকে আল্লাহ্ আমাদের শিক্ষনীয় করেছেন যে বিপদে ধৈর্য্য ধারণ করতে এবং আল্লাহ্র রহমত থেকে কখনও নিরাশ না হতে। বিবি হাজেরার সাফা ও মারওয়া দৌড়ানোর ঘটনা হচ্ছে বিপদে ধৈর্য্য ধারণের প্রতীক। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণের জন্য ‘সাফা’ ও ‘মারওয়া’ পাহাড় দুটির মাঝখানে সাতবার দৌড়ানো কিয়ামত পর্যন্ত ভবিষ্যত বংশধরদের জন্য হজ্জ্বের বিধিবিধানে অত্যাবশকীয় করা হয়েছে। ধৈর্য্য ও আল্লাহ্র রহমতের প্রত্যাশাকে প্রতীকের সাহায্যে হজ্জ্বের ময়দানে আমরা এভাবেই উপস্থাপন করি। যমযম কূপের সৃষ্টির পর তার চারিপাশে আস্তে আস্তে জনবসতি গড়ে উঠে এবং মক্কা নগরীর সূত্রপাত হয় এবং শিশু ইসমাঈল ধীরে ধীরে বড় হতে থাকেন।
এরপর আল্লাহ্র হুকুম হয় হযরত ইসমাঈলকে আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য কোরবানী দিতে। এর পরবর্তী ঘটনা সবারই জানা। এটা ছিল পুত্রবৎসল পিতার চরম আত্মোৎসর্গের পরীক্ষা। এগুলো ছিল শক্ত ও বড় কঠিন পরীক্ষা যার সম্মুখীন হযরত খলীলুল্লাহকে করা হল।
এই আয়াতটিকে [২:১২৪] পরবর্তী আয়াতসমূহের সারাংশ হিসেবে ধরা হয়। ‘কালিমাত’ এ শব্দটির দ্বারা রহস্যময় ইচ্ছা বা পরীক্ষাসমূহকে ব্যক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি পরীক্ষাতেই হযরত ইব্রাহীম আল্লাহ্র ইচ্ছা পূরণ করেন। এছাড়াও তিনি আল্লাহ্র ঘরকে পুনঃনির্মাণ করেন। একে পুতঃ পবিত্র করেন। যে কেউ আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পন করে সেই মুসলিম। হযরত ইব্রাহীম ছিলেন খাঁটি মুসলিম। আমাদের যে বিশ্বাস আমরা জন্মসূত্রে মুসলিম-সুতরাং আমরা আল্লাহ্র কাছে গ্রহণযোগ্য। কিন্তু এ বিশ্বাস ঠিক নয়। মুসলমানের একমাত্র মানদন্ড হচ্ছে আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে পরিপূর্ণ আত্মসমর্পন, তা কি আজকে বিশ্ব মুসলিম সমাজ পালন করে? আমরা নামেই বা জন্মসূত্রে মুসলিম-কিন্তু প্রতিনিয়ত আমরা আল্লাহ্র ইচ্ছার আইন অমান্য করি-অর্থাৎ আমরা সত্যবাদী হব, সৎ পথে চলবো, মানুষকে ঠকাবো না, ন্যায় ও সত্যের জন্য জেহাদ ঘোষণা করবো ইত্যাদিই হচ্ছে আল্লাহ্র ইচ্ছা বা আইন যা আমরা অমান্য করি। ভেবে দেখতে হবে আমরা ব্যক্তিগত জীবনে ও জাতীয় জীবনে আল্লাহ্র এই ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে পেরেছি কিনা। যদি না পেরে থাকি তবে অবশ্যই আল্লাহ্র রোষানলে আমরা পতিত হবে। এই-ই আল্লাহ্র বিধান।
হযরত ইব্রাহীমের এই চারিত্রিক দৃঢ়তার জন্য আল্লাহ্ তাকে পৃথিবীর আধ্যাত্মিক জগতের নেতৃত্ব দান করেন। হযরত ইব্রাহীম তাঁর বংশধরদের জন্যও এই অনুগ্রহ প্রার্থনা করেন। আল্লাহ্ তাঁর প্রার্থনা কবুল করেন-কিন্তু শর্ত সাপেক্ষে। নৈতিক ও কার্যগত গুণে গুণান্বিত হওয়া হচ্ছে নেতৃত্বের প্রধান শর্ত। পাপাচারী ও জালিমকে নেতৃত্ব লাভের সম্মান দেওয়া হবে না-হোক না কেন সে হযরত ইব্রাহীমের বংশধর। এর ব্যাখ্যা এই যে নেতৃত্ব একদিক দিয়ে আল্লাহ্র খেলাফত বা প্রতিনিধি। আল্লাহ্র অবাধ্য বা বিদ্রোহী, যারা উপরিউক্ত নৈতিক ও কর্মগতগুণে গুণান্বিত হয় না, তাদেরকে এ পদ দেয়া যায় না। এ কারণেই যারা নৈতিক চরিত্র ও কর্মগুণে গুণান্বিত নয়, তাদের স্বেচ্ছায় বা ভোট দানের মাধ্যমে নেতা নিযুক্ত না করা মুসলমানের অবশ্য কর্তব্য।
আয়াতঃ 002.125
যখন আমি কা’বা গৃহকে মানুষের জন্যে সম্মিলন স্থল ও শান্তির আলয় করলাম, আর তোমরা ইব্রাহীমের দাঁড়ানোর জায়গাকে নামাযের জায়গা বানাও এবং আমি ইব্রাহীম ও ইসমাঈলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, অবস্থানকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখ।
And (remember) when We made the House (the Ka’bah at Makkah) a place of resort for mankind and a place of safety. And take you (people) the Maqâm (place) of Ibrâhim (Abraham) [or the stone on which Ibrâhim (Abraham) stood while he was building the Ka’bah] as a place of prayer (for some of your prayers, e.g. two Rak’at after the Tawâf of the Ka’bah at Makkah), and We commanded Ibrâhim (Abraham) and Ismâ’il (Ishmael) that they should purify My House (the Ka’bah at Makkah) for those who are circumambulating it, or staying (I’tikâf), or bowing or prostrating themselves (there, in prayer).
وَإِذْ جَعَلْنَا الْبَيْتَ مَثَابَةً لِّلنَّاسِ وَأَمْناً وَاتَّخِذُواْ مِن مَّقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى وَعَهِدْنَا إِلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ أَن طَهِّرَا بَيْتِيَ لِلطَّائِفِينَ وَالْعَاكِفِينَ وَالرُّكَّعِ السُّجُودِ
Wa-ith jaAAalna albayta mathabatan lilnnasi waamnan waittakhithoo min maqami ibraheema musallan waAAahidna ila ibraheema wa-ismaAAeela an tahhira baytiya liltta-ifeena waalAAakifeena waalrrukkaAAi alssujoodi
YUSUFALI: Remember We made the House a place of assembly for men and a place of safety; and take ye the station of Abraham as a place of prayer; and We covenanted with Abraham and Isma’il, that they should sanctify My House for those who compass it round, or use it as a retreat, or bow, or prostrate themselves (therein in prayer).
PICKTHAL: And when We made the House (at Makka) a resort for mankind and sanctuary, (saying): Take as your place of worship the place where Abraham stood (to pray). And We imposed a duty upon Abraham and Ishmael, (saying): Purify My house for those who go around and those who meditate therein and those who bow down and prostrate themselves (in worship).
SHAKIR: And when We made the House a pilgrimage for men and a (place of) security, and: Appoint for yourselves a place of prayer on the standing-place of Ibrahim. And We enjoined Ibrahim and Ismail saying: Purify My House for those who visit (it) and those who abide (in it) for devotion and those who bow down (and) those who prostrate themselves.
KHALIFA: We have rendered the shrine (the Ka`aba) a focal point for the people, and a safe sanctuary. You may use Abraham’s shrine as a prayer house. We commissioned Abraham and Ismail: “You shall purify My house for those who visit, those who live there, and those who bow and prostrate.”
১২৫। স্মরণ কর, কাবা ঘরকে আমি মানব জাতির মিলন কেন্দ্র ও নিরাপত্তাস্থল করেছিলাম, [এবং বলেছিলাম] তোমরা ইব্রাহীমের দাঁড়ানোর স্থানকে সালাতের স্থানরূপে গ্রহণ কর; ১২৫। আমি ইব্রাহীম, ইসমাঈল এর নিকট থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলাম, যে, তারা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী, রুকু ও সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখবে ১২৬।
১২৫। কাবা শরীফ হচ্ছে আল্লাহ্র ঘর। কাবা শরীফ পুনঃনির্মাণ করেন হযরত ইব্রাহীম, হযরত ইসমাঈলের সহযোগিতায়। আল্লাহ্ কাবা শরীফের চারটি বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন। যেমন-
ক) এই স্থান হবে সকলের সম্মেলন স্থান, তা হতে পারে ব্যবসা বাণিজ্য বা উপাসনা, যে কোন ব্যাপারে।
খ) কাবা গৃহ এবং এর সীমানা অত্যন্ত পবিত্র। শত্রু-মিত্র সবাই এই স্থানকে সম্মান করবে। বছরের নির্দিষ্ট সময়ে সীমানার মধ্যে সর্বপ্রকার সহিংসতা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কোন রকম খেলাধুলা এবং আনুষাঙ্গিক আনন্দ ফূর্তি করাও সীমানার মধ্যে নিষেধ। এই স্থানকে আল্লাহ্ সকলের জন্য নিরাপদ স্থানরূপে নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। কাবা হচ্ছে শান্তির আবাসস্থল।
গ) কাবা গৃহ হচ্ছে আল্লাহ্র এবাদতের স্থান। এখানে মাকামে ইব্রাহীম অবস্থিত অর্থাৎ ঐ পাথর যাতে মোজেযা হিসেবে হযরত ইব্রাহীমের পদচিহ্ন অঙ্কিত হয়ে আছে।
ঘ) এ গৃহকে অবশ্যই সর্বদা পূত-পবিত্র রাখা কর্তব্য। কাবা গৃহকে যাবতীয় বাহ্যিক ও আত্মিক অপবিত্রতা থেকে মুক্ত রাখতে বলা হয়েছে। দেহ ও পোষাক পরিচ্ছদকে যাবতীয় অপবিত্রতা ও দুর্গন্ধযুক্ত বস্তু থেকে পাক-সাফ করে এবং অন্তরকে কুফ্র, শিরক্, দুশ্চরিত্রতা, অহংকার, হিংসা, লোভ-লালসা ইত্যাদি থেকে পবিত্র করে কাবা শরীফে প্রবেশ করা কর্তব্য। অর্থাৎ হজ্বের পূর্বশর্ত হচ্ছে দৈহিক ও আত্মিক পবিত্রতা।
১২৬। এখানে চারটি আচার অনুষ্ঠানের উল্লেখ করা হয়েছে।
ক) তাওয়াফ করা বা কাবা শরীফের চতুর্দিক প্রদক্ষিণ করা
খ) ইতিকাফ করার স্থান হচ্ছে এই স্থান।
গ) রুকু করা।
ঘ) সেজদা করা।
এই পবিত্র স্থানকে পবিত্র রাখার দায়িত্ব সবার। তবে যারা হজ্জ্বযাত্রী, যারা এই আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে তাদের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পবিত্রতার উপর। বাহ্যিক অপবিত্রতা ও আবর্জনা এবং আত্মিক অপবিত্রতা উভয়টিই এর অন্তুর্ভূক্ত যেমন-কুফর, শির্ক, দুশ্চরিত্রতা, হিংসা, লোভ-লালসা, কু-প্রবৃত্তি, অহংকার, রিয়া, নাম-যশ ইত্যাদি অন্তরে রেখে আল্লাহ্র গৃহে আগমণ না জায়েয। পৃথিবীর সব লোভ-লালসা, প্রবৃত্তি কামনা সব কিছু ত্যাগ করে শুদ্ধ পবিত্র আত্মাকে আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে নিবেদনের জন্যই তীর্থযাত্রীদের কাবাগৃহে আগমন করা উচিত। আমাদের আচার-অনুষ্ঠান সবই হবে আন্তরিক যেনো শুদ্ধ-পবিত্র আত্মার নিবেদন তাঁর কাছে পৌঁছায়। পৃথিবীর সবকিছুর মোহ ত্যাগ করে পবিত্র আত্মা নিয়ে তার দরবারে হাজির হওয়ার নামই হচ্ছে হজ্বব্রত পালন।
আয়াতঃ 002.126
যখন ইব্রাহীম বললেন, পরওয়ারদেগার! এ স্থানকে তুমি শান্তিধান কর এবং এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা অল্লাহ ও কিয়ামতে বিশ্বাস করে, তাদেরকে ফলের দ্বারা রিযিক দান কর। বললেনঃ যারা অবিশ্বাস করে, আমি তাদেরও কিছুদিন ফায়দা ভোগ করার সুযোগ দেব, অতঃপর তাদেরকে বলপ্রয়োগে দোযখের আযাবে ঠেলে দেবো; সেটা নিকৃষ্ট বাসস্থান।
And (remember) when Ibrâhim (Abraham) said, ”My Lord, make this city (Makkah) a place of security and provide its people with fruits, such of them as believe in Allâh and the Last Day.” He (Allâh) answered: ”As for him who disbelieves, I shall leave him in contentment for a while, then I shall compel him to the torment of the Fire, and worst indeed is that destination!”
وَإِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ رَبِّ اجْعَلْ هَـَذَا بَلَدًا آمِنًا وَارْزُقْ أَهْلَهُ مِنَ الثَّمَرَاتِ مَنْ آمَنَ مِنْهُم بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ قَالَ وَمَن كَفَرَ فَأُمَتِّعُهُ قَلِيلاً ثُمَّ أَضْطَرُّهُ إِلَى عَذَابِ النَّارِ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ
Wa-ith qala ibraheemu rabbi ijAAal hatha baladan aminan waorzuq ahlahu mina alththamarati man amana minhum biAllahi waalyawmi al-akhiri qala waman kafara faomattiAAuhu qaleelan thumma adtarruhu ila AAathabi alnnari wabi/sa almaseeru
YUSUFALI: And remember Abraham said: “My Lord, make this a City of Peace, and feed its people with fruits,-such of them as believe in Allah and the Last Day.” He said: “(Yea), and such as reject Faith,-for a while will I grant them their pleasure, but will soon drive them to the torment of Fire,- an evil destination (indeed)!”
PICKTHAL: And when Abraham prayed: My Lord! Make this a region of security and bestow upon its people fruits, such of them as believe in Allah and the Last Day, He answered: As for him who disbelieveth, I shall leave him in contentment for a while, then I shall compel him to the doom of Fire – a hapless journey’s end!
SHAKIR: And when Ibrahim said: My Lord, make it a secure town and provide its people with fruits, such of them as believe in Allah and the last day. He said: And whoever disbelieves, I will grant him enjoyment for a short while, then I will drive him to the chastisement of the fire; and it is an evil destination.
KHALIFA: Abraham prayed: “My Lord, make this a peaceful land, and provide its people with fruits. Provide for those who believe in GOD and the Last Day.” (God) said, “I will also provide for those who disbelieve. I will let them enjoy, temporarily, then commit them to the retribution of Hell, and a miserable destiny.”
১২৬। এবং স্মরণ কর, ইব্রাহীম বলেছিলো, ‘হে আমার প্রভু ইহাকে শান্তির শহরে পরিণত করে দিও ১২৭; এবং এদের মধ্যে যারা আল্লাহ্ এবং পরকালে বিশ্বাস করে তাদের ফলমূল থেকে জীবিকা প্রদান করো’ ১২৮। তিনি বললেন, ‘[হ্যাঁ] এবং যারা ঈমানকে প্রত্যাখান করবে, তাদেরকেও কিছুকালের জন্য সুখ ভোগ করতে দেবো। কিন্তু শীঘ্রই তাদের আগুনের শাস্তির দিকে তাড়িত করা হবে-[প্রকৃতই] উহা কত নিকৃষ্ট পরিণাম।’
১২৭। মূল শব্দ ‘সালাম’। ইসলাম অর্থ ‘শান্তি’। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) হেরেমকে শান্তির স্থলরূপে বানানোর জন্য প্রার্থনা করেন। ইসলামে হেরেমকে শান্তির শহর বলা হয়, কারণ এখানে কাবা গৃহ অবস্থিত। ইহুদীরাও জেরুজালেমকে তাদের ‘শান্তির শহর’ বলে। আয়াত [২:১৩৪, ১৪১] থেকে বোঝা যায় যে পুরনো দিন গত। সুতরাং মক্কা হবে নূতন ‘জেরুজালেম’ বা বলা যায় হযরত ইব্রাহীমের সেই ‘শান্তির আলয়’ যার জন্য হযরত ইব্রাহীম প্রার্থনা করেছিলেন। এখন থেকে হেরেম শরীফ ও কাবা ঘর হবে বিশ্ব মানবের মিলন কেন্দ্র। আত্মিক শান্তির আশ্রয়স্থল। হেরেমের শান্তির স্থল হওয়ার বিধান হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর দোয়ারই ফলশ্রুতি যা জাহিলিয়ত যুগ থেকে কার্যকর রয়েছে। ইসলাম ও কুরআন এগুলোকে অধিকতর সুসংহত ও বিকশিত করেছে। মোটকথা হযরত ইব্রাহীমের দোয়া অনুযায়ী আল্লাহ্ তায়ালা শহরটিকে প্রাকৃতিক দিক থেকেও সারা বিশ্বের জন্য শান্তির আলয়ে পরিণত করে দিয়েছেন।
১২৮। হযরত ইব্রাহীমের দোয়া ছিল এই যে, এ শহরের উপজীবিকা হিসেবে যেন ফল-মূল দান করা হয়। মক্কা মুকাররমা ও পার্শ্ববর্তী ভূমি কোনরূপ বাগ-বাগিচার উপযোগী ছিল না। দূর-দূরান্তর পর্যন্ত ছিল না পানির নিশানা। কিন্তু আল্লাহ্ তায়ালা ইব্রাহীমের দোয়া কবুল করেন এবং ফলে মক্কার অদূরে তায়েফ হয়ে উঠে সুজলা-সুফলা শস্য শ্যামলা।
এখানে হযরত ইব্রাহীমের দোয়া থেকে মনে হয় তাঁর দোয়ায় সবটুকুই ছিল তাঁর বংশধরদের জাগতিক সুখ ও স্বাচ্ছন্দের নিশ্চয়তার জন্য। আক্ষরিকভাবে এর অর্থ তাই-ই দাঁড়ায়। কিন্তু আয়াতটির দিকে লক্ষ্য করলেই দেখা যায় হযরত ইব্রাহীমের প্রার্থনা ছিল পূণ্যাত্মাদের জন্য যারা খোদভীরু তাদের জন্য আল্লাহ্র নিয়ামত বা [ফল] অর্থাৎ আধ্যাত্মিক জীবনে আত্মার বিকাশ লাভের জন্য আল্লাহর নিয়ামত প্রার্থনা করা হয়েছে। আক্ষরিক অর্থে-আল্লাহ্র উত্তর হচ্ছে যারা ‘অবিশ্বাসী তাদের জন্যও জীবন উপভোগের সুযোগ দেওয়া হবে’। এর রূপক অর্থ এই যে এই পৃথিবীতে পূণ্যাত্মা ও অবিশ্বাসী সবার জন্যই আল্লাহ্র রহমত বর্ষিত হয়। কারণ আল্লাহ্ রাহমানুর রহিম। কিন্তু আল্লাহ্র রহমতে বিশ্বাসীদের জন্য ইহকালে ও পরকালে সুখ ও শান্তি বয়ে আনে, কিন্তু অবিশ্বাসীদের জন্য শেষ পর্যন্ত এর কোন সুফল নাই।
[আল্লাহ্ আমাদের যে নৈতিক গুণাবলী অর্জন করতে বলেছেন তা না করে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে অন্যায়, অসত্যের, মিথ্যা ঘুষ, জোচ্চুরীর আশ্রয় নিয়েছে যার ফলাফল আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে ও জাতীয় জীবনে ছাপ ফেলেছে। একথা পৃথিবীর সব মানুষ সব জাতির জন্যই প্রযোজ্য ছিল অতীতে। প্রযোজ্য থাকবে বর্তমানে আরও থাকবে ভবিষ্যতে। কোরআনের এই বাণী শাশ্বত সর্বকালের, সর্বযুগের।
আয়াতঃ 002.127
স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম ও ইসমাঈল কা’বাগৃহের ভিত্তি স্থাপন করছিল। তারা দোয়া করেছিলঃ পরওয়ারদেগার! আমাদের থেকে কবুল কর। নিশ্চয়ই তুমি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ।
And (remember) when Ibrâhim (Abraham) and (his son) Ismâ’il (Ishmael) were raising the foundations of the House (the Ka’bah at Makkah), (saying), ”Our Lord! Accept (this service) from us. Verily! You are the All-Hearer, the All-Knower.”
وَإِذْ يَرْفَعُ إِبْرَاهِيمُ الْقَوَاعِدَ مِنَ الْبَيْتِ وَإِسْمَاعِيلُ رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
Wa-ith yarfaAAu ibraheemu alqawaAAida mina albayti wa-ismaAAeelu rabbana taqabbal minna innaka anta alssameeAAu alAAaleemu
YUSUFALI: And remember Abraham and Isma’il raised the foundations of the House (With this prayer): “Our Lord! Accept (this service) from us: For Thou art the All-Hearing, the All-knowing.
PICKTHAL: And when Abraham and Ishmael were raising the foundations of the House, (Abraham prayed): Our Lord! Accept from us (this duty). Lo! Thou, only Thou, art the Hearer, the Knower.
SHAKIR: And when Ibrahim and Ismail raised the foundations of the House: Our Lord! accept from us; surely Thou art the Hearing, the Knowing:
KHALIFA: As Abraham raised the foundations of the shrine, together with Ismail (they prayed): “Our Lord, accept this from us. You are the Hearer, the Omniscient.
১২৭। এবং স্মরণ কর! ইব্রাহীম ও ইসমাঈল [এই প্রার্থনার সাথে] কাবা গৃহের ভিত্তি স্থাপন করেছিলো, ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের [এই কাজ] গ্রহণ কর। নিশ্চয় তুমি সব কিছু শোন এবং সব কিছু জানো।’
১২৮। ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের তোমার [ইচ্ছার] কাছে আত্মসমর্পনকারী মুসলিম কর এবং আমাদের পরবর্তী বংশধরদের তোমার [ইচ্ছার] কাছে আত্ম সমর্পনকারী মুসলিম করো। আমাদের এবাদতের নিয়ম পদ্ধতি শিখিয়ে দাও এবং আমাদের প্রতি [অনুগ্রহ] কর। তুমি তো বারে বারে ক্ষমাশীল ও অত্যন্ত দয়ালু।
১২৯। ‘হে আমাদের প্রভু! তাদের মধ্য থেকে তাদের নিকট একজন রাসূল প্রেরণ কর, যে তাদের নিকট তোমার আয়াতসমূহ আবৃত্তি করবে, তাদের কিতাব এবং জ্ঞান ও প্রজ্ঞা শিক্ষা দেবে এবং তাদের পবিত্র করবে। তুমি তো শক্তিতে পরাক্রমশালী এবং প্রজ্ঞাময়।’ ১২৯
১২৯। আয়াত [২:১২৫]-এ কাবা গৃহের ইতিহাস, হযরত ইব্রাহীম ও হযরত ইসমাঈল (আঃ) কর্তৃক কাবা গৃহ পুনঃনির্মাণ, কাবা ও মক্কার কতিপয় বৈশিষ্ট্য এবং কাবা গৃহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন সম্পর্কিত বিধি বিধান উল্লেখিত হয়েছে। হযরত ইব্রাহীম ও হযরত ইসমাঈল কাবাকে পুনঃ প্রতিষ্ঠা করেন এবং একে পাক-সাফ করেন মুমিনদের জন্য। এই হিসেবে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) হচ্ছেন ইসলামের প্রথম প্রতিষ্ঠাতা। কাবা শরীফ হচ্ছে ইসলামের প্রতীক।
হযরত ইব্রাহীম (আঃ) আল্লাহ্র নির্দেশে সিরিয়ার সুজলা-সুফলা ভূখণ্ড ছেড়ে মক্কার বিশুষ্ক পাহাড় সমূহের মাঝখানে স্বীয় পরিবার পরিজন এনে ফেলে রাখেন এবং কাবাগৃহ নির্মাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। এরূপ ক্ষেত্রে অন্য কোন আত্মত্যাগী সাধকের অন্তরে অহংকার দানা বাঁধতে পারতো এবং সে তাঁর ক্রিয়া কর্মকে অনেক মূল্যবান মনে করতে পারতো। কিন্তু তিনি জানতেন আল্লাহ্র উপযুক্ত ইবাদত ও আনুগত্য কোন মানুষের পক্ষেই করা সম্ভব নয়। প্রত্যেকেই নিজ নিজ শক্তি সামর্থ অনুযায়ী কাজ করে। তাই আমল যত বড়ই হোক সেজন্য অহংকার না করে কেঁদে কেঁদে এমনি দোয়া করা প্রয়োজন যে, হে পরওয়ারদেগার! আমার এ আমল কবুল হোক।
আয়াত [১২৭, ১২৮, ১২৯]-এ হযরত ইব্রাহীমের মোনাজাত কত সুন্দর। বিনয়ের সাথে তিনি তাঁর সমস্ত এবাদত আল্লাহ্কে সমর্পন করছেন এবং আল্লাহ্কে শ্রবণকারী ও সর্বজ্ঞ বলে সম্বোধন করছেন। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ভবিষ্যৎ বংশধরদের ইহলৌকিক ও পরলৌকিক মঙ্গরের জন্য আল্লাহ্র কাছে দোয়া করেছেন। তিনি তাঁর পয়গম্বর সুলভ অন্তর্দৃষ্টি থেকে বুঝতে পেরেছিলেন যে ভবিষ্যতে তাঁর বংশধরদের মধ্যে মোশরেকী প্রবেশ করবে। মক্কা হবে ৩৬০টি মূর্তির আবাসস্থল। পবিত্র নগরী জেরুজালেম হবে বেশ্যাদের দ্বারা কলুষিত। তাই তিনি আল্লাহ্র অনুগ্রহ প্রার্থনা করেছেন, আল্লাহ্র ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য। এবং মোনাজাতের শেষ আয়াতে [২:১২৯] দেখা যায় তিনি অন্তর্দৃষ্টিতে তার বংশে আমাদের শেষ নবীর আগমন প্রত্যক্ষ করেছেন এবং তার জন্য আল্লাহ্র করুণা ভিক্ষা করেছেন।
হযরত ইব্রাহীমের মোনাজাত আমাদের এই শিক্ষাই দেয় যে আল্লাহ্র কাছে নিজের সু-কর্মকে বিনয়ের সাথে নিবেদন করতে হয়। আত্ম-অহংকার যেনো আমাদের সুকৃতি নষ্ট করে না দেয়।
আয়াতঃ 002.128
পরওয়ারদেগার! আমাদের উভয়কে তোমার আজ্ঞাবহ কর এবং আমাদের বংশধর থেকেও একটি অনুগত দল সৃষ্টি কর, আমাদের হজ্বের রীতিনীতি বলে দাও এবং আমাদের ক্ষমা কর। নিশ্চয় তুমি তওবা কবুলকারী। দয়ালু।
”Our Lord! And make us submissive unto You and of our offspring a nation submissive unto You, and show us our Manâsik (all the ceremonies of pilgrimage – Hajj and ’Umrah, etc.), and accept our repentance. Truly, You are the One Who accepts repentance, the Most Merciful.
رَبَّنَا وَاجْعَلْنَا مُسْلِمَيْنِ لَكَ وَمِن ذُرِّيَّتِنَا أُمَّةً مُّسْلِمَةً لَّكَ وَأَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبْ عَلَيْنَآ إِنَّكَ أَنتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
Rabbana waijAAalna muslimayni laka wamin thurriyyatina ommatan muslimatan laka waarina manasikana watub AAalayna innaka anta alttawwabu alrraheemu
YUSUFALI: “Our Lord! make of us Muslims, bowing to Thy (Will), and of our progeny a people Muslim, bowing to Thy (will); and show us our place for the celebration of (due) rites; and turn unto us (in Mercy); for Thou art the Oft-Returning, Most Merciful.
PICKTHAL: Our Lord! And make us submissive unto Thee and of our seed a nation submissive unto Thee, and show us our ways of worship, and relent toward us. Lo! Thou, only Thou, art the Relenting, the Merciful.
SHAKIR: Our Lord! and make us both submissive to Thee and (raise) from our offspring a nation submitting to Thee, and show us our ways of devotion and turn to us (mercifully), surely Thou art the Oft-returning (to mercy), the Merciful.
KHALIFA: “Our Lord, make us submitters to You, and from our descendants let there be a community of submitters to You. Teach us the rites of our religion, and redeem us. You are the Redeemer, Most Merciful.
১২৭। এবং স্মরণ কর! ইব্রাহীম ও ইসমাঈল [এই প্রার্থনার সাথে] কাবা গৃহের ভিত্তি স্থাপন করেছিলো, ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের [এই কাজ] গ্রহণ কর। নিশ্চয় তুমি সব কিছু শোন এবং সব কিছু জানো।’
১২৮। ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের তোমার [ইচ্ছার] কাছে আত্মসমর্পনকারী মুসলিম কর এবং আমাদের পরবর্তী বংশধরদের তোমার [ইচ্ছার] কাছে আত্ম সমর্পনকারী মুসলিম করো। আমাদের এবাদতের নিয়ম পদ্ধতি শিখিয়ে দাও এবং আমাদের প্রতি [অনুগ্রহ] কর। তুমি তো বারে বারে ক্ষমাশীল ও অত্যন্ত দয়ালু।
১২৯। ‘হে আমাদের প্রভু! তাদের মধ্য থেকে তাদের নিকট একজন রাসূল প্রেরণ কর, যে তাদের নিকট তোমার আয়াতসমূহ আবৃত্তি করবে, তাদের কিতাব এবং জ্ঞান ও প্রজ্ঞা শিক্ষা দেবে এবং তাদের পবিত্র করবে। তুমি তো শক্তিতে পরাক্রমশালী এবং প্রজ্ঞাময়।’ ১২৯
১২৯। আয়াত [২:১২৫]-এ কাবা গৃহের ইতিহাস, হযরত ইব্রাহীম ও হযরত ইসমাঈল (আঃ) কর্তৃক কাবা গৃহ পুনঃনির্মাণ, কাবা ও মক্কার কতিপয় বৈশিষ্ট্য এবং কাবা গৃহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন সম্পর্কিত বিধি বিধান উল্লেখিত হয়েছে। হযরত ইব্রাহীম ও হযরত ইসমাঈল কাবাকে পুনঃ প্রতিষ্ঠা করেন এবং একে পাক-সাফ করেন মুমিনদের জন্য। এই হিসেবে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) হচ্ছেন ইসলামের প্রথম প্রতিষ্ঠাতা। কাবা শরীফ হচ্ছে ইসলামের প্রতীক।
হযরত ইব্রাহীম (আঃ) আল্লাহ্র নির্দেশে সিরিয়ার সুজলা-সুফলা ভূখণ্ড ছেড়ে মক্কার বিশুষ্ক পাহাড় সমূহের মাঝখানে স্বীয় পরিবার পরিজন এনে ফেলে রাখেন এবং কাবাগৃহ নির্মাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। এরূপ ক্ষেত্রে অন্য কোন আত্মত্যাগী সাধকের অন্তরে অহংকার দানা বাঁধতে পারতো এবং সে তাঁর ক্রিয়া কর্মকে অনেক মূল্যবান মনে করতে পারতো। কিন্তু তিনি জানতেন আল্লাহ্র উপযুক্ত ইবাদত ও আনুগত্য কোন মানুষের পক্ষেই করা সম্ভব নয়। প্রত্যেকেই নিজ নিজ শক্তি সামর্থ অনুযায়ী কাজ করে। তাই আমল যত বড়ই হোক সেজন্য অহংকার না করে কেঁদে কেঁদে এমনি দোয়া করা প্রয়োজন যে, হে পরওয়ারদেগার! আমার এ আমল কবুল হোক।
আয়াত [১২৭, ১২৮, ১২৯]-এ হযরত ইব্রাহীমের মোনাজাত কত সুন্দর। বিনয়ের সাথে তিনি তাঁর সমস্ত এবাদত আল্লাহ্কে সমর্পন করছেন এবং আল্লাহ্কে শ্রবণকারী ও সর্বজ্ঞ বলে সম্বোধন করছেন। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ভবিষ্যৎ বংশধরদের ইহলৌকিক ও পরলৌকিক মঙ্গরের জন্য আল্লাহ্র কাছে দোয়া করেছেন। তিনি তাঁর পয়গম্বর সুলভ অন্তর্দৃষ্টি থেকে বুঝতে পেরেছিলেন যে ভবিষ্যতে তাঁর বংশধরদের মধ্যে মোশরেকী প্রবেশ করবে। মক্কা হবে ৩৬০টি মূর্তির আবাসস্থল। পবিত্র নগরী জেরুজালেম হবে বেশ্যাদের দ্বারা কলুষিত। তাই তিনি আল্লাহ্র অনুগ্রহ প্রার্থনা করেছেন, আল্লাহ্র ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য। এবং মোনাজাতের শেষ আয়াতে [২:১২৯] দেখা যায় তিনি অন্তর্দৃষ্টিতে তার বংশে আমাদের শেষ নবীর আগমন প্রত্যক্ষ করেছেন এবং তার জন্য আল্লাহ্র করুণা ভিক্ষা করেছেন।
হযরত ইব্রাহীমের মোনাজাত আমাদের এই শিক্ষাই দেয় যে আল্লাহ্র কাছে নিজের সু-কর্মকে বিনয়ের সাথে নিবেদন করতে হয়। আত্ম-অহংকার যেনো আমাদের সুকৃতি নষ্ট করে না দেয়।
আয়াতঃ 002.129
হে পরওয়ারদেগার! তাদের মধ্যে থেকেই তাদের নিকট একজন পয়গম্বর প্রেরণ করুণ যিনি তাদের কাছে তোমার আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করবেন, তাদেরকে কিতাব ও হেকমত শিক্ষা দিবেন। এবং তাদের পবিত্র করবেন। নিশ্চয় তুমিই পরাক্রমশালী হেকমতওয়ালা।
”Our Lord! Send amongst them a Messenger of their own (and indeed Allâh answered their invocation by sending Muhammad Peace be upon him ), who shall recite unto them Your Verses and instruct them in the Book (this Qur’ân) and Al-Hikmah (full knowledge of the Islâmic laws and jurisprudence or wisdom or Prophethood, etc.), and sanctify them. Verily! You are the All-Mighty, the All-Wise.”
رَبَّنَا وَابْعَثْ فِيهِمْ رَسُولاً مِّنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِكَ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَيُزَكِّيهِمْ إِنَّكَ أَنتَ العَزِيزُ الحَكِيمُ
Rabbana waibAAath feehim rasoolan minhum yatloo AAalayhim ayatika wayuAAallimuhumu alkitaba waalhikmata wayuzakkeehim innaka anta alAAazeezu alhakeemu
YUSUFALI: “Our Lord! send amongst them a Messenger of their own, who shall rehearse Thy Signs to them and instruct them in scripture and wisdom, and sanctify them: For Thou art the Exalted in Might, the Wise.”
PICKTHAL: Our Lord! And raise up in their midst a messenger from among them who shall recite unto them Thy revelations, and shall instruct them in the Scripture and in wisdom and shall make them grow. Lo! Thou, only Thou, art the Mighty, Wise.
SHAKIR: Our Lord! and raise up in them a Messenger from among them who shall recite to them Thy communications and teach them the Book and the wisdom, and purify them; surely Thou art the Mighty, the Wise.
KHALIFA: “Our Lord, and raise among them a messenger to recite to them Your revelations, teach them the scripture and wisdom, and purify them. You are the Almighty, Most Wise.”
১২৭। এবং স্মরণ কর! ইব্রাহীম ও ইসমাঈল [এই প্রার্থনার সাথে] কাবা গৃহের ভিত্তি স্থাপন করেছিলো, ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের [এই কাজ] গ্রহণ কর। নিশ্চয় তুমি সব কিছু শোন এবং সব কিছু জানো।’
১২৮। ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের তোমার [ইচ্ছার] কাছে আত্মসমর্পনকারী মুসলিম কর এবং আমাদের পরবর্তী বংশধরদের তোমার [ইচ্ছার] কাছে আত্ম সমর্পনকারী মুসলিম করো। আমাদের এবাদতের নিয়ম পদ্ধতি শিখিয়ে দাও এবং আমাদের প্রতি [অনুগ্রহ] কর। তুমি তো বারে বারে ক্ষমাশীল ও অত্যন্ত দয়ালু।
১২৯। ‘হে আমাদের প্রভু! তাদের মধ্য থেকে তাদের নিকট একজন রাসূল প্রেরণ কর, যে তাদের নিকট তোমার আয়াতসমূহ আবৃত্তি করবে, তাদের কিতাব এবং জ্ঞান ও প্রজ্ঞা শিক্ষা দেবে এবং তাদের পবিত্র করবে। তুমি তো শক্তিতে পরাক্রমশালী এবং প্রজ্ঞাময়।’ ১২৯
১২৯। আয়াত [২:১২৫]-এ কাবা গৃহের ইতিহাস, হযরত ইব্রাহীম ও হযরত ইসমাঈল (আঃ) কর্তৃক কাবা গৃহ পুনঃনির্মাণ, কাবা ও মক্কার কতিপয় বৈশিষ্ট্য এবং কাবা গৃহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন সম্পর্কিত বিধি বিধান উল্লেখিত হয়েছে। হযরত ইব্রাহীম ও হযরত ইসমাঈল কাবাকে পুনঃ প্রতিষ্ঠা করেন এবং একে পাক-সাফ করেন মুমিনদের জন্য। এই হিসেবে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) হচ্ছেন ইসলামের প্রথম প্রতিষ্ঠাতা। কাবা শরীফ হচ্ছে ইসলামের প্রতীক।
হযরত ইব্রাহীম (আঃ) আল্লাহ্র নির্দেশে সিরিয়ার সুজলা-সুফলা ভূখণ্ড ছেড়ে মক্কার বিশুষ্ক পাহাড় সমূহের মাঝখানে স্বীয় পরিবার পরিজন এনে ফেলে রাখেন এবং কাবাগৃহ নির্মাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। এরূপ ক্ষেত্রে অন্য কোন আত্মত্যাগী সাধকের অন্তরে অহংকার দানা বাঁধতে পারতো এবং সে তাঁর ক্রিয়া কর্মকে অনেক মূল্যবান মনে করতে পারতো। কিন্তু তিনি জানতেন আল্লাহ্র উপযুক্ত ইবাদত ও আনুগত্য কোন মানুষের পক্ষেই করা সম্ভব নয়। প্রত্যেকেই নিজ নিজ শক্তি সামর্থ অনুযায়ী কাজ করে। তাই আমল যত বড়ই হোক সেজন্য অহংকার না করে কেঁদে কেঁদে এমনি দোয়া করা প্রয়োজন যে, হে পরওয়ারদেগার! আমার এ আমল কবুল হোক।
আয়াত [১২৭, ১২৮, ১২৯]-এ হযরত ইব্রাহীমের মোনাজাত কত সুন্দর। বিনয়ের সাথে তিনি তাঁর সমস্ত এবাদত আল্লাহ্কে সমর্পন করছেন এবং আল্লাহ্কে শ্রবণকারী ও সর্বজ্ঞ বলে সম্বোধন করছেন। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ভবিষ্যৎ বংশধরদের ইহলৌকিক ও পরলৌকিক মঙ্গরের জন্য আল্লাহ্র কাছে দোয়া করেছেন। তিনি তাঁর পয়গম্বর সুলভ অন্তর্দৃষ্টি থেকে বুঝতে পেরেছিলেন যে ভবিষ্যতে তাঁর বংশধরদের মধ্যে মোশরেকী প্রবেশ করবে। মক্কা হবে ৩৬০টি মূর্তির আবাসস্থল। পবিত্র নগরী জেরুজালেম হবে বেশ্যাদের দ্বারা কলুষিত। তাই তিনি আল্লাহ্র অনুগ্রহ প্রার্থনা করেছেন, আল্লাহ্র ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য। এবং মোনাজাতের শেষ আয়াতে [২:১২৯] দেখা যায় তিনি অন্তর্দৃষ্টিতে তার বংশে আমাদের শেষ নবীর আগমন প্রত্যক্ষ করেছেন এবং তার জন্য আল্লাহ্র করুণা ভিক্ষা করেছেন।
হযরত ইব্রাহীমের মোনাজাত আমাদের এই শিক্ষাই দেয় যে আল্লাহ্র কাছে নিজের সু-কর্মকে বিনয়ের সাথে নিবেদন করতে হয়। আত্ম-অহংকার যেনো আমাদের সুকৃতি নষ্ট করে না দেয়।
আয়াতঃ 002.130
ইব্রাহীমের ধর্ম থেকে কে মুখ ফেরায়? কিন্তু সে ব্যক্তি, যে নিজেকে বোকা প্রতিপন্ন করে। নিশ্চয়ই আমি তাকে পৃথিবীতে মনোনীত করেছি এবং সে পরকালে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত।
And who turns away from the religion of Ibrâhim (Abraham) (i.e. Islâmic Monotheism) except him who befools himself? Truly, We chose him in this world and verily, in the Hereafter he will be among the righteous.
وَمَن يَرْغَبُ عَن مِّلَّةِ إِبْرَاهِيمَ إِلاَّ مَن سَفِهَ نَفْسَهُ وَلَقَدِ اصْطَفَيْنَاهُ فِي الدُّنْيَا وَإِنَّهُ فِي الآخِرَةِ لَمِنَ الصَّالِحِينَ
Waman yarghabu AAan millati ibraheema illa man safiha nafsahu walaqadi istafaynahu fee alddunya wa-innahu fee al-akhirati lamina alssaliheena
YUSUFALI: And who turns away from the religion of Abraham but such as debase their souls with folly? Him We chose and rendered pure in this world: And he will be in the Hereafter in the ranks of the Righteous.
PICKTHAL: And who forsaketh the religion of Abraham save him who befooleth himself? Verily We chose him in the world, and lo! in the Hereafter he is among the righteous.
SHAKIR: And who forsakes the religion of Ibrahim but he who makes himself a fool, and most certainly We chose him in this world, and in the hereafter he is most surely among the righteous.
KHALIFA: Who would forsake the religion of Abraham, except one who fools his own soul? We have chosen him in this world, and in the Hereafter he will be with the righteous.
রুকু – ১৬
১৩০। যে তার আত্মাকে নির্বুদ্ধিতার দ্বারা বিকৃত করেছে, সে ব্যতীত ইব্রাহীমের ধর্ম থেকে আর কে বিমুখ হবে? এই পৃথিবীতে আমি তাঁকে মনোনীত করেছি এবং পবিত্র করেছি। পরকালেও সে পূণ্যাত্মাদের অন্তর্ভূক্ত হবে ১৩০।
১৩০। আয়াত [২:১৩০-১৩১]-তে বলা হয়েছে ইব্রাহীমের ধর্ম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে, যার বিন্দুমাত্র বোধ শক্তি নাই। কারণ এই ধর্মটি হুবহু স্বভাব ধর্ম। কোন সুস্থ স্বভাব ব্যক্তি এই ধর্মকে অস্বীকার করতে পারে না। এ ধর্মের বদৌলতেই হযরত ইব্রাহীমকে আল্লাহ্ ইহকালে সম্মান ও মাহাত্ম্য দান করেছেন এবং পরকালেও। ইব্রাহীমি ধর্মের মূলনীতি হচ্ছে আল্লাহ্র আনুগত্য, যার অপর নাম ইসলাম। জগতে পয়গম্বরগণ যত ধর্মই এনেছেন নিজ নিজ সময়ে সে সবই ছিল আল্লাহ্র মনোনীত ধর্ম। সুতরাং নিঃসন্দেহে সে সব ধর্মও ছিল ইসলাম। যদিও সেগুলো এখন আমাদের কাছে বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন-ইহুদী ধর্ম, খৃষ্ট ধর্ম ইত্যাদি। এসব ধর্মের মূল স্বরূপ ছিল ইসলাম বা এক আল্লাহ্র আনুগত্য। তবে এ ব্যাপারে হযরত ইব্রাহীমের ধর্মের একটি বৈশিষ্ট্য ছিল এই যে তিনি নিজ ধর্মের নাম ‘ইসলাম’ রেখেছিলেন। মোট কথা আল্লাহ্র পক্ষ থেকে যত পয়গম্বর আগমন করেছেন এবং যত আসমানী গ্রন্থ ও শরীয়ত অবতীর্ণ হয়েছে, সে সবগুলোর প্রাণ হচ্ছে ইসলাম তথা আল্লাহ্র আনুগত্য। এ আনুগত্যের সারমর্ম হলো রিপুর কামনা-বাসনা থেকে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করা এবং আল্লাহ্র নির্দেশ অনুযায়ী আনুগত্য প্রকাশ করা। এই পৃথিবীতে হিংসা, লোভ-লালসা, কাম, ক্রোধ ইত্যাদি বিভিন্ন রিপু আমাদের কামনা-বাসনাকে ভোগ বিলাসের জীবনে আকর্ষণ করে। ফলে আমরা বিভিন্ন পাপ কাজে নিয়োজিত হয়ে পড়ি। আল্লাহ্র নির্দেশ হচ্ছে পাপ থেকে বিরত থাকা, সত্য ও ন্যায়ের পথে থাকা, সর্ব অবস্থায় আল্লাহ্র কাছে আনুগত্য প্রকাশ করা হচ্ছে ইসলামের মর্মবাণী। পরিতাপের বিষয়, আজ ইসলামের নাম উচ্চারণকারী লক্ষ লক্ষ মুসলমান এ সত্য সম্পর্কে অজ্ঞ। তারা ইসলামের মূল অর্থ হৃদয়ঙ্গম না করে এর আচার ও আনুষ্ঠানিকতার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয় এবং একেই ইসলাম ধর্ম নামে অভিহিত করে। তারা ধর্মের নামে স্বীয় কামনা-বাসনারই অনুসরণ করে। কুরআন ও হাদিসের এমন ব্যাখ্যাই তাদের কাছে পছন্দ যা তাদের কামনা বাসনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তারা জানে না যে এসব অপব্যাখ্যার দ্বারা সৃষ্টিকে প্রতারিত করা গেলেও স্রষ্টাকে ধোঁকা দেওয়া সম্ভব নয়। তাঁর জ্ঞান প্রতিটি অণু-পরমাণুতে পরিব্যপ্ত। তিনি মনের গোপন ইচ্ছা বা কল্পনা সবই দেখেন ও জানেন। তাঁর কাছে পবিত্র আত্মার আনুগত্য কাম্য। পবিত্র সেই আত্মা যে আত্মা হিংসা-দ্বেষ, মিথ্যা, ধোঁকাবাজি ইত্যাদি কলুষতা থেকে মুক্ত। আত্মাকে পূত পবিত্র রাখা স্রষ্টার নির্দেশ। ন্যায় ও সত্যের পথে চলাও স্রষ্টার নির্দেশ। পৃথিবীর সমস্ত ক্রিয়া কর্ম শুধুমাত্র স্রষ্টার সন্তুষ্টি বিধানের জন্য করাই হচ্ছে স্রষ্টার নির্দেশ। স্রষ্টার নির্দেশ মানাই হচ্ছে স্রষ্টার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা।
আয়াতঃ 002.131
স্মরণ কর, যখন তাকে তার পালনকর্তা বললেনঃ অনুগত হও। সে বললঃ আমি বিশ্বপালকের অনুগত হলাম।
When his Lord said to him, ”Submit (i.e. be a Muslim)!” He said, ”I have submitted myself (as a Muslim) to the Lord of the ’Alamîn (mankind, jinns and all that exists).”
إِذْ قَالَ لَهُ رَبُّهُ أَسْلِمْ قَالَ أَسْلَمْتُ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ
Ith qala lahu rabbuhu aslim qala aslamtu lirabbi alAAalameena
YUSUFALI: Behold! his Lord said to him: “Bow (thy will to Me):” He said: “I bow (my will) to the Lord and Cherisher of the Universe.”
PICKTHAL: When his Lord said unto him: Surrender! he said: I have surrendered to the Lord of the Worlds.
SHAKIR: When his Lord said to him, Be a Muslim, he said: I submit myself to the Lord of the worlds.
KHALIFA: When his Lord said to him, “Submit,” he said, “I submit to the Lord of the universe.”
১৩১। দেখো! তাঁর প্রভু তাঁকে বলেছিলো, ‘[তোমার ইচ্ছাকে আমার নিকট] আত্মসমর্পণ কর।’ সে বলেছিলো, ‘সারা বিশ্ব-ভূবনের প্রভু ও প্রতিপালকের নিকট [আমার ইচ্ছাকে] সমর্পন করলাম’।
১৩২। এবং ইব্রাহীম ও ইয়াকুবও এই সম্বন্ধে তাদের পুত্রগণকে নির্দেশ দিয়ে বলেছিলো, ‘হে আমার পুত্রগণ! আল্লাহ্ তোমাদের জন্য [এই] দ্বীনকে মনোনীত করেছেন। সুতরাং ইসলামে বিশ্বাসী না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।’
১৩৩। ইয়াকুবের নিকট যখন মৃত্যু উপস্থিত হলো, তোমরা কি তখন উপস্থিত ছিলে ১৩১? দেখো! সে তাঁর পুত্রগণকে বলেছিলো, ‘আমার পরে তোমরা কার এবাদত করবে?’ তারা বলেছিলো, ‘আমরা আপনার ইলাহ্ এবং আপনার পিতৃপুরুষ ইব্রাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাকের ইলাহ্ এরই এবাদত করবো ১৩২। আল্লাহ্-ই [প্রকৃত পক্ষে] একমাত্র ইলাহ্। আমরা তাঁর নিকট আত্মসমর্পন করি [ইসলাম]’।
১৩২। উপরের আয়াত দ্বারা বোঝানো হচ্ছে যে আল্লাহ্ এক এবং চিরন্তন। হযরত ইব্রাহীম, হযরত ইসহাক, হযরত ইসমাঈলের যে স্রষ্টা, আজও সেই একই স্রষ্টা বিরাজমান। ইব্রাহীমের ধর্মই হচ্ছে ইসলাম ধর্ম। এই ধর্ম হচ্ছে সমগ্র বিশ্ব মানবের ধর্ম, এই ধর্ম সমগ্র বিশ্ব মানবের এক অনন্য নির্দেশ নামা। ইসলাম ধর্ম কোনও এক যুগের ধর্ম নয়। তা সর্বকালের সর্বযুগের এবং সর্বসাধারণের। ইসলাম ধর্মের নির্যাস হচ্ছে এক স্রষ্টার কাছে আনুগত্য প্রকাশ। এখানে হযরত ইয়াকুবের মৃত্যুর সময়কার ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 002.132
এরই ওছিয়ত করেছে ইব্রাহীম তার সন্তানদের এবং ইয়াকুবও যে, হে আমার সন্তানগণ, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের জন্য এ ধর্মকে মনোনীত করেছেন। কাজেই তোমরা মুসলমান না হয়ে কখনও মৃত্যুবরণ করো না।
And this (submission to Allâh, Islâm) was enjoined by Ibrâhim (Abraham) upon his sons and by Ya’qûb (Jacob), (saying), ”O my sons! Allâh has chosen for you the (true) religion, then die not except in the Faith of Islâm (as Muslims – Islâmic Monotheism).”
وَوَصَّى بِهَا إِبْرَاهِيمُ بَنِيهِ وَيَعْقُوبُ يَا بَنِيَّ إِنَّ اللّهَ اصْطَفَى لَكُمُ الدِّينَ فَلاَ تَمُوتُنَّ إَلاَّ وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ
Wawassa biha ibraheemu baneehi wayaAAqoobu ya baniyya inna Allaha istafa lakumu alddeena fala tamootunna illa waantum muslimoona
YUSUFALI: And this was the legacy that Abraham left to his sons, and so did Jacob; “Oh my sons! Allah hath chosen the Faith for you; then die not except in the Faith of Islam.”
PICKTHAL: The same did Abraham enjoin upon his sons, and also Jacob, (saying): O my sons! Lo! Allah hath chosen for you the (true) religion; therefore die not save as men who have surrendered (unto Him).
SHAKIR: And the same did Ibrahim enjoin on his sons and (so did) Yaqoub. O my sons! surely Allah has chosen for you (this) faith, therefore die not unless you are Muslims.
KHALIFA: Moreover, Abraham exhorted his children to do the same, and so did Jacob: “O my children, GOD has pointed out the religion for you; do not die except as submitters.”
১৩১। দেখো! তাঁর প্রভু তাঁকে বলেছিলো, ‘[তোমার ইচ্ছাকে আমার নিকট] আত্মসমর্পণ কর।’ সে বলেছিলো, ‘সারা বিশ্ব-ভূবনের প্রভু ও প্রতিপালকের নিকট [আমার ইচ্ছাকে] সমর্পন করলাম’।
১৩২। এবং ইব্রাহীম ও ইয়াকুবও এই সম্বন্ধে তাদের পুত্রগণকে নির্দেশ দিয়ে বলেছিলো, ‘হে আমার পুত্রগণ! আল্লাহ্ তোমাদের জন্য [এই] দ্বীনকে মনোনীত করেছেন। সুতরাং ইসলামে বিশ্বাসী না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।’
১৩৩। ইয়াকুবের নিকট যখন মৃত্যু উপস্থিত হলো, তোমরা কি তখন উপস্থিত ছিলে ১৩১? দেখো! সে তাঁর পুত্রগণকে বলেছিলো, ‘আমার পরে তোমরা কার এবাদত করবে?’ তারা বলেছিলো, ‘আমরা আপনার ইলাহ্ এবং আপনার পিতৃপুরুষ ইব্রাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাকের ইলাহ্ এরই এবাদত করবো ১৩২। আল্লাহ্-ই [প্রকৃত পক্ষে] একমাত্র ইলাহ্। আমরা তাঁর নিকট আত্মসমর্পন করি [ইসলাম]’।
১৩২। উপরের আয়াত দ্বারা বোঝানো হচ্ছে যে আল্লাহ্ এক এবং চিরন্তন। হযরত ইব্রাহীম, হযরত ইসহাক, হযরত ইসমাঈলের যে স্রষ্টা, আজও সেই একই স্রষ্টা বিরাজমান। ইব্রাহীমের ধর্মই হচ্ছে ইসলাম ধর্ম। এই ধর্ম হচ্ছে সমগ্র বিশ্ব মানবের ধর্ম, এই ধর্ম সমগ্র বিশ্ব মানবের এক অনন্য নির্দেশ নামা। ইসলাম ধর্ম কোনও এক যুগের ধর্ম নয়। তা সর্বকালের সর্বযুগের এবং সর্বসাধারণের। ইসলাম ধর্মের নির্যাস হচ্ছে এক স্রষ্টার কাছে আনুগত্য প্রকাশ। এখানে হযরত ইয়াকুবের মৃত্যুর সময়কার ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 002.133
তোমরা কি উপস্থিত ছিলে, যখন ইয়াকুবের মৃত্যু নিকটবর্তী হয়? যখন সে সন্তানদের বললঃ আমার পর তোমরা কার এবাদত করবে? তারা বললো, আমরা তোমার পিতৃ-পুরুষ ইব্রাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাকের উপাস্যের এবাদত করব। তিনি একক উপাস্য।
Or were you witnesses when death approached Ya’qûb (Jacob)? When he said unto his sons, ”What will you worship after me?” They said, ”We shall worship your Ilâh (God – Allâh), the Ilâh (God) of your fathers, Ibrâhim (Abraham), Ismâ’il (Ishmael), Ishâque (Isaac), One Ilâh (God), and to Him we submit (in Islâm).”
أَمْ كُنتُمْ شُهَدَاء إِذْ حَضَرَ يَعْقُوبَ الْمَوْتُ إِذْ قَالَ لِبَنِيهِ مَا تَعْبُدُونَ مِن بَعْدِي قَالُواْ نَعْبُدُ إِلَـهَكَ وَإِلَـهَ آبَائِكَ إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَقَ إِلَـهًا وَاحِدًا وَنَحْنُ لَهُ مُسْلِمُونَ
Am kuntum shuhadaa ith hadara yaAAqooba almawtu ith qala libaneehi ma taAAbudoona min baAAdee qaloo naAAbudu ilahaka wa-ilaha aba-ika ibraheema wa-ismaAAeela wa-ishaqa ilahan wahidan wanahnu lahu muslimoona
YUSUFALI: Were ye witnesses when death appeared before Jacob? Behold, he said to his sons: “What will ye worship after me?” They said: “We shall worship Thy god and the god of thy fathers, of Abraham, Isma’il and Isaac,- the one (True) Allah: To Him we bow (in Islam).”
PICKTHAL: Or were ye present when death came to Jacob, when he said unto his sons: What will ye worship after me? They said: We shall worship thy god, the god of thy fathers, Abraham and Ishmael and Isaac, One Allah, and unto Him we have surrendered.
SHAKIR: Nay! were you witnesses when death visited Yaqoub, when he said to his sons: What will you serve after me? They said: We will serve your god and the god of your fathers, Ibrahim and Ismail and Ishaq, one Allah only, and to Him do we submit.
KHALIFA: Had you witnessed Jacob on his death bed; he said to his children, “What will you worship after I die?” They said, “We will worship your god; the god of your fathers Abraham, Ismail, and Isaac; the one god. To Him we are submitters.”
১৩১। দেখো! তাঁর প্রভু তাঁকে বলেছিলো, ‘[তোমার ইচ্ছাকে আমার নিকট] আত্মসমর্পণ কর।’ সে বলেছিলো, ‘সারা বিশ্ব-ভূবনের প্রভু ও প্রতিপালকের নিকট [আমার ইচ্ছাকে] সমর্পন করলাম’।
১৩২। এবং ইব্রাহীম ও ইয়াকুবও এই সম্বন্ধে তাদের পুত্রগণকে নির্দেশ দিয়ে বলেছিলো, ‘হে আমার পুত্রগণ! আল্লাহ্ তোমাদের জন্য [এই] দ্বীনকে মনোনীত করেছেন। সুতরাং ইসলামে বিশ্বাসী না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।’
১৩৩। ইয়াকুবের নিকট যখন মৃত্যু উপস্থিত হলো, তোমরা কি তখন উপস্থিত ছিলে ১৩১? দেখো! সে তাঁর পুত্রগণকে বলেছিলো, ‘আমার পরে তোমরা কার এবাদত করবে?’ তারা বলেছিলো, ‘আমরা আপনার ইলাহ্ এবং আপনার পিতৃপুরুষ ইব্রাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাকের ইলাহ্ এরই এবাদত করবো ১৩২। আল্লাহ্-ই [প্রকৃত পক্ষে] একমাত্র ইলাহ্। আমরা তাঁর নিকট আত্মসমর্পন করি [ইসলাম]’।
১৩২। উপরের আয়াত দ্বারা বোঝানো হচ্ছে যে আল্লাহ্ এক এবং চিরন্তন। হযরত ইব্রাহীম, হযরত ইসহাক, হযরত ইসমাঈলের যে স্রষ্টা, আজও সেই একই স্রষ্টা বিরাজমান। ইব্রাহীমের ধর্মই হচ্ছে ইসলাম ধর্ম। এই ধর্ম হচ্ছে সমগ্র বিশ্ব মানবের ধর্ম, এই ধর্ম সমগ্র বিশ্ব মানবের এক অনন্য নির্দেশ নামা। ইসলাম ধর্ম কোনও এক যুগের ধর্ম নয়। তা সর্বকালের সর্বযুগের এবং সর্বসাধারণের। ইসলাম ধর্মের নির্যাস হচ্ছে এক স্রষ্টার কাছে আনুগত্য প্রকাশ। এখানে হযরত ইয়াকুবের মৃত্যুর সময়কার ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 002.134
আমরা সবাই তাঁর আজ্ঞাবহ। তারা ছিল এক সম্প্রদায়-যারা গত হয়ে গেছে। তারা যা করেছে, তা তাদেরই জন্যে। তারা কি করত, সে সম্পর্কে তোমরা জিজ্ঞাসিত হবে না।
That was a nation who has passed away. They shall receive the reward of what they earned and you of what you earn. And you will not be asked of what they used to do.
تِلْكَ أُمَّةٌ قَدْ خَلَتْ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَلَكُم مَّا كَسَبْتُمْ وَلاَ تُسْأَلُونَ عَمَّا كَانُوا يَعْمَلُونَ
Tilka ommatun qad khalat laha ma kasabat walakum ma kasabtum wala tus-aloona AAamma kano yaAAmaloona
YUSUFALI: That was a people that hath passed away. They shall reap the fruit of what they did, and ye of what ye do! Of their merits there is no question in your case!
PICKTHAL: Those are a people who have passed away. Theirs is that which they earned, and yours is that which ye earn. And ye will not be asked of what they used to do.
SHAKIR: This is a people that have passed away; they shall have what they earned and you shall have what you earn, and you shall not be called upon to answer for what they did.
KHALIFA: Such is a community from the past. They are responsible for what they earned, and you are responsible for what you earned. You are not answerable for anything they have done.
১৩৪। সেই ছিলো এক সম্প্রদায় যারা গত হয়েছে। তারা যা করেছে তার ফল তারা লাভ করবে এবং তোমরা যা করবে তা তোমাদের। তাদের যোগ্যতা সম্বন্ধে তোমাদের জিজ্ঞাসা করা হবে না ১৩৩।
১৩৩। শেষ বিচারের দিনে প্রত্যেককেই তার নিজ নিজ কর্মফল সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হবে। ব্যক্তিগত কর্মের এবং কর্মের নিয়ত দ্বারাই তাকে বিচার করা হবে। প্রত্যেক আত্মাকে তার ব্যক্তিগত দায় দায়িত্ব স্বীকার করতে হয়। অন্যজনের পাপ আর একজনকে স্পর্শ করবে না। সেইরূপ অন্যজনের কৃত পূণ্যও আর একজনকে স্পর্শ করবে না। কোনও সুপারিশ গ্রহণযোগ্য হবে না। হোক সে খৃষ্টানদের বড় পাদ্রী বা মুসলমানদের বড় পীর, কারও সুপারিশ গ্রহণযোগ্য হবে না।
ইহুদী এবং খৃষ্টানরা বলে তারা হযরত ইব্রাহীমের সন্তান। সুতরাং তারা পরকালে বেহেশ্তে প্রবেশ করবে। তাদের বিশ্বাস তাদের পূর্ব পুরুষের সুকৃতি তাদের পরকালে মুক্তি দেবে। কিন্তু এই আয়াত [২:১৩৪] থেকে বোঝা যায় যে বাপ-দাদার সৎকর্ম সন্তানের উপকারে আসবে না; যতক্ষণ না তারা নিজে সৎকর্ম সম্পাদন করে। এমনিভাবে বাপ-দাদাদের কুকর্মের শাস্তিও সন্তানেরা ভোগ করবে না; যদি তারা সৎ কর্মশীল হয়। এতে ইহুদীদের যে দাবী-তারা যা খুশী তাই করবে, শুধুমাত্র তারা ইহুদী এবং বাপ-দাদার সৎকর্মের উত্তরাধিকার সেই কারণে তারা বেহেশ্তে যাবে, কুরআনের আলোকে তা ভুল প্রমাণিত। আমাদের মুসলমানদের মধ্যে কিছু লোকের ভ্রান্ত ধারণা আছে যে যারা সৈয়দ পরিবারের, রাসূলের বংশধর দেখে তারা পরকালে বিচারের সম্মুখীন হবে না। কুরআনে এ বিষয়টি বার বার বিভিন্নভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যে, ‘প্রত্যেকের আমলের [কাজের] দায়িত্ব তার নিজেকে বহন করতে হবে’। আরও আছে, ‘কিয়ামতের দিন একজনের বোঝা অন্যজন বহন করবে না’। হাদীসে আছে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, ‘হে বনী হাশেম! এমন যেন না হয় যে, কিয়ামতের দিন অন্যান্য লোক নিজ নিজ সৎকর্ম নিয়ে আসবে আর তোমরা আসবে সৎকর্ম থেকে উদাসীন হয়ে শুধু বংশ গৌরব নিয়ে এবং আমি বলবো যে, আল্লাহ্র আযাব থেকে আমি তোমাদের বাঁচাতে পারবো না।’
আয়াতঃ 002.135
তারা বলে, তোমরা ইহুদী অথবা খ্রীষ্টান হয়ে যাও, তবেই সুপথ পাবে। আপনি বলুন, কখনই নয়; বরং আমরা ইব্রাহীমের ধর্মে আছি যাতে বক্রতা নেই। সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
And they say, ”Be Jews or Christians, then you will be guided.” Say (to them, O Muhammad Peace be upon him ), ”Nay, (We follow) only the religion of Ibrâhim (Abraham), Hanifa [Islâmic Monotheism, i.e. to worship none but Allâh (Alone)], and he was not of Al-Mushrikûn (those who worshipped others along with Allâh – see V.2:105).”
وَقَالُواْ كُونُواْ هُودًا أَوْ نَصَارَى تَهْتَدُواْ قُلْ بَلْ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا وَمَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ
Waqaloo koonoo hoodan aw nasara tahtadoo qul bal millata ibraheema haneefan wama kana mina almushrikeena
YUSUFALI: They say: “Become Jews or Christians if ye would be guided (To salvation).” Say thou: “Nay! (I would rather) the Religion of Abraham the True, and he joined not gods with Allah.”
PICKTHAL: And they say: Be Jews or Christians, then ye will be rightly guided. Say (unto them, O Muhammad): Nay, but (we follow) the religion of Abraham, the upright, and he was not of the idolaters.
SHAKIR: And they say: Be Jews or Christians, you will be on the right course. Say: Nay! (we follow) the religion of Ibrahim, the Hanif, and he was not one of the polytheists.
KHALIFA: They said, “You have to be Jewish or Christian, to be guided.” Say, “We follow the religion of Abraham – monotheism – he never was an idol worshiper.”
১৩৫। তারা বলেছিলো, ‘যদি তোমরা [আধ্যাত্মিক মুক্তির] পথ নির্দেশ চাও, তবে ইহুদী অথবা খৃষ্টান হয়ে যাও।’ বল, [‘বরং আমি অনুসরণ করবো] ইব্রাহীমের সত্য ধর্ম ১৩৪, সে আল্লাহ্র সাথে অংশীদার করতো না।’
১৩৪। ইহুদী ও খৃষ্টানেরা উপদেশ দিত যে তোমরা ইহুদী হয়ে যাও [এটা ইহুদীদের কথা] অথবা খৃষ্টান হয়ে যাও [এটা খৃষ্টানদের কথা], তবে তোমরা পরকালে মুক্তি পাবে। কারণ ইহুদীদের ধারণা তারাই একমাত্র আল্লাহ্র বরপুত্র। যদিও তাদের এক আল্লাহ্র উপসনা শিক্ষা দেওয়া হয়েছিলো কিন্তু বাস্তবে তারা এই এক আল্লাহ্র পথ থেকে বিপথে চালিত হয়েছিল। খৃষ্টানেরা আরব পৌত্তলিকদের মত আল্লাহ্র তিনরূপে বিশ্বাস করে আর তা হচ্ছে পিতা, পুত্র ও পবিত্র আত্মা। কিন্তু আল্লাহ্ মুসলমানদের নির্দেশ দিচ্ছেন তাদের হযরত ইব্রাহীমের ধর্মের উপর স্থির থাকতে। হযরত ইব্রাহীমের ধর্ম কি? একেশ্বরবাদ এবং আল্লাহ্র কাছে পরিপূর্ণ আত্মসমর্পন-এই হচ্ছে হযরত ইব্রাহীমের ধর্মের মূল কথা, যার অপর নাম হচ্ছে ইসলাম।
আয়াতঃ 002.136
তোমরা বল, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের প্রতি এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তদীয় বংশধরের প্রতি এবং মূসা, ঈসা, অন্যান্য নবীকে পালনকর্তার পক্ষ থেকে যা দান করা হয়েছে, তৎসমুদয়ের উপর। আমরা তাদের মধ্যে পার্থক্য করি না। আমরা তাঁরই আনুগত্যকারী।
Say (O Muslims), ”We believe in Allâh and that which has been sent down to us and that which has been sent down to Ibrâhim (Abraham), Ismâ’il (Ishmael), Ishâque (Isaac), Ya’qûb (Jacob), and to Al-Asbât [the twelve sons of Ya’qûb (Jacob)], and that which has been given to Mûsa (Moses) and ’Iesa (Jesus), and that which has been given to the Prophets from their Lord. We make no distinction between any of them, and to Him we have submitted (in Islâm).”
قُولُواْ آمَنَّا بِاللّهِ وَمَآ أُنزِلَ إِلَيْنَا وَمَا أُنزِلَ إِلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَقَ وَيَعْقُوبَ وَالأسْبَاطِ وَمَا أُوتِيَ مُوسَى وَعِيسَى وَمَا أُوتِيَ النَّبِيُّونَ مِن رَّبِّهِمْ لاَ نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّنْهُمْ وَنَحْنُ لَهُ مُسْلِمُونَ
Qooloo amanna biAllahi wama onzila ilayna wama onzila ila ibraheema wa-ismaAAeela wa-ishaqa wayaAAqooba waal-asbati wama ootiya moosa waAAeesa wama ootiya alnnabiyyoona min rabbihim la nufarriqu bayna ahadin minhum wanahnu lahu muslimoona
YUSUFALI: Say ye: “We believe in Allah, and the revelation given to us, and to Abraham, Isma’il, Isaac, Jacob, and the Tribes, and that given to Moses and Jesus, and that given to (all) prophets from their Lord: We make no difference between one and another of them: And we bow to Allah (in Islam).”
PICKTHAL: Say (O Muslims): We believe in Allah and that which is revealed unto us and that which was revealed unto Abraham, and Ishmael, and Isaac, and Jacob, and the tribes, and that which Moses and Jesus received, and that which the prophets received from their Lord. We make no distinction between any of them, and unto Him we have surrendered.
SHAKIR: Say: We believe in Allah and (in) that which had been revealed to us, and (in) that which was revealed to Ibrahim and Ismail and Ishaq and Yaqoub and the tribes, and (in) that which was given to Musa and Isa, and (in) that which was given to the prophets from their Lord, we do not make any distinction between any of them, and to Him do we submit.
KHALIFA: Say, “We believe in GOD, and in what was sent down to us, and in what was sent down to Abraham, Ismail, Isaac, Jacob, and the Patriarchs; and in what was given to Moses and Jesus, and all the prophets from their Lord. We make no distinction among any of them. To Him alone we are submitters.”
১৩৬। বল, ‘আমরা ঈমান আনি আল্লাহ্তে এবং আমাদের যে প্রত্যাদেশ দেয়া হয়েছে এবং ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসাহাক, ইয়াকুব এবং তার বংশধরদের প্রতি [যা অবতীর্ণ হয়েছে] এবং মুসা, ঈসা ও [অন্যান্য সকল] নবীগণকে আল্লাহ্ যা দিয়েছেন [তাহাতে]। আমরা তাঁদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না। এবং আমরা আল্লাহ্র নিকট আত্মসমর্পন করি [ইসলাম]।’ ১৩৫
১৩৫। এই আয়াতটিতে ইসলামের সারমর্ম বর্ণনা করা হয়েছে। এগুলি হচ্ছে –
১) স্রষ্টা একজনই। ক্ষুদ্র প্রাণী থেকে মানুষ পর্যন্ত সবকিছুরই স্রষ্টা তিনিই। গাছ-পালা, পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা, আকাশ-পৃথিবী, মহাকাশ, নভোমন্ডল, দৃশ্য-অদৃশ্য সবকিছুরই স্রষ্টা একজনই তিনি পরম করুণাময় আল্লাহ্।
২) আল্লাহ্র নির্দেশসমূহ হযরত মুহম্মদের (সাঃ) মাধ্যমে আমাদের দান করা হয়েছে। এই নির্দেশ মানার দায়িত্ব প্রত্যেকের নিজের। কেউ এই নির্দেশ না মানলে সে দায়-দায়িত্ব তারই। অন্য কেউ তার দায়-দায়িত্ব বহন করবে না। কিংবা কোনও নির্দিষ্ট গোত্র বা বংশ বা ধর্মে জন্মগ্রহণ সূত্রেও কেউ নিজ কর্মের দায়-দায়িত্ব থেকে মুক্তি পাবে না।
৩) পূর্ববর্তী নবী-রাসূলদের তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়েছে :
ক) ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তাদের গোত্রের অন্যান্য নবী। এদের মধ্যে হযরত ইব্রাহীম আল্লাহ্র নিকট থেকে নির্দেশপ্রাপ্ত। অন্যান্যরা তাকে সঠিকভাবে অনুসরণকারী এবং সত্যের প্রচারক।
খ) হযরত মুসা এবং হযরত ঈসা-এঁরা ঐশীগ্রন্থপ্রাপ্ত। তাঁদের এই গ্রন্থ অদ্যাপি বর্তমান যদিও এই গ্রন্থদ্বয় আল্লাহ্ প্রেরিত গ্রন্থদ্বয় থেকে বহু পরিবর্তিত হয়েছে। যুগের এবং কালের প্রবাহে বহুজন বহুভাবে এতে পরিবর্তন সাধন করেছে। আল্লাহ্ প্রেরিত এই গ্রন্থদ্বয় ঠিক আদি এবং অকৃত্রিমরূপে নাই।
গ) এছাড়াও অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ, ধর্ম প্রচারক, নবী, রাসূল যাদের নাম কুরআন শরীফে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয় নাই আমরা মুসলমানেরা তাদের সবাইকে আল্লাহ্র দূত হিসেবে বিশ্বাস করি। আমরা তাদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ করি না-এইই হচ্ছে আমাদের উপর আল্লাহ্র নির্দেশ। সর্বকালে, সর্বযুগে আল্লাহ্র দূতদের যে বাণী, তা ইসলামের মূল কথারই প্রতিধ্বনি। সুতরাং ধর্মের যে নৈতিক শিক্ষা তা যুগে-যুগে, কালে-কালে একই রয়ে গেছে। কারণ এই শিক্ষাই হচ্ছে আল্লাহ্র নির্দেশ। আর আল্লাহ্র নির্দেশই হচ্ছে ইসলাম। নৈতিক মূল্যবোধ সর্বকালে, সর্বযুগে, সর্ব-সাধারণের জন্য অপরিবর্তনীয়। সুতরাং এই অপরিবর্তনীয় বাণী যেই প্রচার করুন না কেন বুঝতে হবে তিনি আল্লাহ্র দূত। আল্লাহ্র নির্দেশ তিনি সর্বসাধারণের মঙ্গলের জন্য প্রচার করেছেন। এই বিশ্বাস করা মুসলমানের কর্তব্য। এখানেই ইসলামের সৌন্দর্য্য, এখানেই ইসলামের মহানুভবতা, এইখানেই ইসলামের সার্বজনীনতা। (১), (২) এবং (৩) এই তিনের সমষ্টিই হচ্ছে ইসলামের সার সংক্ষেপ বা ধর্ম বিশ্বাস।
আয়াতঃ 002.137
অতএব তারা যদি ঈমান আনে, তোমাদের ঈমান আনার মত, তবে তারা সুপথ পাবে। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তারাই হঠকারিতায় রয়েছে। সুতরাং এখন তাদের জন্যে আপনার পক্ষ থেকে আল্লাহই যথেষ্ট। তিনিই শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী।
So if they believe in the like of that which you believe, then they are rightly guided, but if they turn away, then they are only in opposition. So Allâh will suffice you against them. And He is the All-Hearer, the All-Knower.
فَإِنْ آمَنُواْ بِمِثْلِ مَا آمَنتُم بِهِ فَقَدِ اهْتَدَواْ وَّإِن تَوَلَّوْاْ فَإِنَّمَا هُمْ فِي شِقَاقٍ فَسَيَكْفِيكَهُمُ اللّهُ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
Fa-in amanoo bimithli ma amantum bihi faqadi ihtadaw wa-in tawallaw fa-innama hum fee shiqaqin fasayakfeekahumu Allahu wahuwa alssameeAAu alAAaleemu
YUSUFALI: So if they believe as ye believe, they are indeed on the right path; but if they turn back, it is they who are in schism; but Allah will suffice thee as against them, and He is the All-Hearing, the All-Knowing.
PICKTHAL: And if they believe in the like of that which ye believe, then are they rightly guided. But if they turn away, then are they in schism, and Allah will suffice thee (for defence) against them. He is the Hearer, the Knower.
SHAKIR: If then they believe as you believe in Him, they are indeed on the right course, and if they turn back, then they are only in great opposition, so Allah will suffice you against them, and He is the Hearing, the Knowing.
KHALIFA: If they believe as you do, then they are guided. But if they turn away, then they are in opposition. GOD will spare you their opposition; He is the Hearer, the Omniscient.
১৩৭। তোমরা যেরূপ বিশ্বাস করেছ তারাও যদি সেরূপ বিশ্বাস করে, তবে তারা প্রকৃতই সঠিক পথে আছে। কিন্তু যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে এরাই তারা যারা সাম্প্রদায়িক। তাদের বিরুদ্ধে তোমার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট ১৩৬ এবং তিনি সব কিছু শোনেন এবং সব কিছু জানেন।
১৩৬। ইব্রাহীমের ধর্ম হচ্ছে সহজ সরল পথ, তার বর্ণনা শেষে বলা হচ্ছে যে, যে কেউ এ পথে চলে বা বিশ্বাস করে তারাই সঠিক পথের দিশারী। অর্থাৎ যারা ইব্রাহীমের ধর্মের উপর বিশ্বাসী তারাই সঠিক পথ প্রাপ্ত। কিন্তু যারা সহজ সরল পথ ত্যাগ করে, বিভিন্ন মাসায়ালার সাহায্যে ধর্মীয় ব্যাখ্যায় ব্যস্ত, এসব লোকের মস্তিষ্ক ও চিন্তাধারা শুধু বস্তু বা বস্তুবাচক বিষয়াদির মধ্যেই নিমজ্জিত। তারা এসব ব্যাপারে নিজ থেকে নানবিধ ব্যাখ্যা করতে প্রবৃত্ত হয় এবং একে দ্বীনের খেদমত বলে মনে করে। আজকাল মুসলমানদের মধ্যেও এ প্রবৃত্তি দেখা যায়। সহজ সরল দ্বীনকে তারা তাদের ব্যাখ্যার মাধ্যমে অত্যন্ত জটিল আচার-আচরণ ও শাস্ত্রীয় আচার-অনুষ্ঠানে পরিণত করেছে। এই বাহ্যিক আনুষ্ঠানিকতা বা পোষাকী আচরণসিদ্ধতা বা বস্তুকেন্দ্রীকতা ইহুদী, খৃষ্টান, মুসলমান সবার মধ্যেই জন্মাতে পারি যদি তারা হযরত ইব্রাহীমের ধর্ম থেকে চ্যুত হয়। মুসলমানদের মধ্যে এই গর্ব দেখা যায় যে তারা শেষ নবীর উম্মত, সুতরাং তারাই একমাত্র আল্লাহ্র রাস্তায় আছে। কিন্তু আল্লাহ্ বলেছেন মৌখিক ঈমানের কোনও মূল্য নাই আল্লাহ্র কাছে। আত্মিক সংবেদন দ্বারা যে কেউ হযরত ইব্রাহীমের ধর্মের উপরে স্থির আছে সেই মুসলমান। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে এটার সবার জন্যই প্রযোজ্য। যারাই ইব্রাহীমের ধর্ম থেকে চ্যুত হয়েছে তারাই ধর্ম নিয়ে সাম্প্রদায়িক হয়েছে এবং উগ্র মৌলবাদীতে পরিণত হয়েছে।
আয়াতঃ 002.138
আমরা আল্লাহর রং গ্রহণ করেছি। আল্লাহর রং এর চাইতে উত্তম রং আর কার হতে পারে?আমরা তাঁরই এবাদত করি।
[Our Sibghah (religion) is] the Sibghah (Religion) of Allâh (Islâm) and which Sibghah (religion) can be better than Allâh’s? And we are His worshippers. [Tafsir Ibn Kathîr.]
صِبْغَةَ اللّهِ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللّهِ صِبْغَةً وَنَحْنُ لَهُ عَابِدونَ
Sibghata Allahi waman ahsanu mina Allahi sibghatan wanahnu lahu AAabidoona
YUSUFALI: (Our religion is) the Baptism of Allah: And who can baptize better than Allah? And it is He Whom we worship.
PICKTHAL: (We take our) colour from Allah, and who is better than Allah at colouring. We are His worshippers.
SHAKIR: (Receive) the baptism of Allah, and who is better than Allah in baptising? and Him do we serve.
KHALIFA: Such is GOD’s system, and whose system is better than GOD’s? “Him alone we worship.”
১৩৮। [আমাদের ধর্ম হচ্ছে] আল্লাহ্র রং ১৩৭। এবং আর কে আল্লাহ্র চেয়ে রঙে অধিক সুন্দর? এবং আমরা তারই এবাদত করি।
১৩৭। খ্রষ্টানেরা সন্তান জন্ম গ্রহণ করলে তারা সপ্তম দিনে তাকে গীর্জায় নিয়ে পবিত্র পানিতে গোসল করায় এবং খৃষ্ট ধর্মের গভীর রঙে রাঙানো বলে মনে করে। এটাকে তারা ব্যাপ্টিজম বলে। ব্যাপ্টিজম খৃষ্টানদের একটি ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, যার সাহায্যে প্রকাশ করে যে শিশুর জীবনে খৃষ্টান ধর্মের ছোপ লাগানো হলো, তার অনাগত ভবিষ্যতকে ধর্মের গভীর রং-এ রাঙানো হলো।
কিন্তু আল্লাহ্ বলেছেন বাহিরের এই আনুষ্ঠানিকতার কোনও মূল্য নাই। যে আত্মাকে আল্লাহ্র ভালবাসায় নিমজ্জিত করতে পারে সেই তো আল্লাহ্র রংয়ে নিজেকে রাঙাতে পারে। এখানে রং কথাটি প্রতীক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। আল্লাহ্র প্রতি ভালবাসার যে রূপ তাকেই ‘আল্লাহ্র রং’ এই প্রতীক শব্দটি দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে। আল্লাহ্র রং-ই হচ্ছে সবচেয়ে স্থায়ী, সর্বোৎকৃষ্ট। বাহিরের রং এর কোনও মূল্য নাই। অন্তরের এই রং-ই হচ্ছে সর্বোৎকৃষ্ট।
আয়াতঃ 002.139
আপনি বলে দিন, তোমরা কি আমাদের সাথে আল্লাহ সম্পর্কে তর্ক করছ? অথচ তিনিই আমাদের পালনকর্তা এবং তোমাদের ও পালনকর্তা। আমাদের জন্যে আমাদের কর্ম তোমাদের জন্যে তোমাদের কর্ম। এবং আমরা তাঁরই প্রতি একনিষ্ঠ।
Say (O Muhammad Peace be upon him to the Jews and Christians), ”Dispute you with us about Allâh while He is our Lord and your Lord? And we are to be rewarded for our deeds and you for your deeds. And we are sincere to Him in worship and obedience (i.e. we worship Him Alone and none else, and we obey His Orders).”
قُلْ أَتُحَآجُّونَنَا فِي اللّهِ وَهُوَ رَبُّنَا وَرَبُّكُمْ وَلَنَا أَعْمَالُنَا وَلَكُمْ أَعْمَالُكُمْ وَنَحْنُ لَهُ مُخْلِصُونَ
Qul atuhajjoonana fee Allahi wahuwa rabbuna warabbukum walana aAAmaluna walakum aAAmalukum wanahnu lahu mukhlisoona
YUSUFALI: Say: Will ye dispute with us about Allah, seeing that He is our Lord and your Lord; that we are responsible for our doings and ye for yours; and that We are sincere (in our faith) in Him?
PICKTHAL: Say (unto the People of the Scripture): Dispute ye with us concerning Allah when He is our Lord and your Lord? Ours are our works and yours your works. We look to Him alone.
SHAKIR: Say: Do you dispute with us about Allah, and He is our Lord and your Lord, and we shall have our deeds and you shall have your deeds, and we are sincere to Him.
KHALIFA: Say, “Do you argue with us about GOD, when He is our Lord and your Lord? We are responsible for our deeds, and you are responsible for your deeds. To Him alone we are devoted.”
১৩৯। বল, ‘আল্লাহ্ আমাদের প্রভু এবং তোমাদের প্রভু তা দেখেও তোমরা কি আমাদের সাথে আল্লাহ্ সম্বন্ধে বিতর্কে লিপ্ত হতে চাও? আমরা আমাদের কর্মের জন্য দায়বদ্ধ এবং তোমরা তোমাদের। আমরা তাঁর প্রতি [বিশ্বাসে] আন্তরিক’।
১৪০। অথবা ১৩৮, তোমরা কি বল, ‘ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসাহাক, ইয়াকুব ও তাঁর বংশধরগণ ইহুদী অথবা খৃষ্টান ছিলো’ ? বল, ‘তোমরা কি আল্লাহ্ অপেক্ষা বেশি জান ? আঃ! আল্লাহ্র নিকট থেকে যে প্রমাণ তারা পেয়েছে তা যারা গোপন করে তার থেকে বড় অন্যায়কারী আর কে আছে? তোমরা যা কর আল্লাহ্ সে সম্বন্ধে অমনোযোগী নন।’
১৩৮। [২ : ১৩৯] আয়াতে আল্লাহ্ রাসূলকে বলেছেন যে আপনি [ইহুদী ও খৃষ্টানদের] বলে দিন যে তোমরা কি এখনও ধর্ম সম্বন্ধে তর্ক বিতর্কে মগ্ন থাকবে। যখন তোমরা জান যে তিনি আমাদের এবং তোমাদের সকলেরই পালনকর্তা ও মালিক? তোমরা দাবী কর যে, তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের ধর্ম পালন কর। তাহলে কি তোমরা দাবী কর যে, ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক ও ইয়াকুব এবং তাদের সন্তানেরা সবাই ইহুদী বা খৃষ্টান ছিলেন কারণ এরাই তোমাদের পূর্বপুরুষ। হযরত মুসা বা হযরত ঈসা নবীর আগমণের বহু পূর্বে হযরত ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক ও তাদের গোত্রদের অবস্থান ছিল। তাহলে কী ভাবে হযরত ইব্রাহীম যার আগমণ হযরত মুসার পূর্বে তিনি ইহুদী ছিলেন? খৃষ্টানেরা তাদের ধর্মে হযরত ঈসাকে খোদার পুত্র বলে শেরেকী করে। হযরত ইব্রাহীমকে খৃষ্টান হতে হলে তাকেও হযরত ঈসাকে খোদার পুত্র বলে মানতে হয়। কিন্তু হযরত ইব্রাহীমের সময়ে পৃথিবীতে হযরত ঈসার অস্তিত্ব ছিল না। তাহলে কি ভাবে হযরত ইব্রাহীম খ্রষ্টধর্ম পালন করেছেন? সেই একইভাবে ইহুদী ধর্মেও অনেক বক্তব্য আসে যা ইব্রাহীমের ধর্মের বিরোধী। ইতিহাসই এর সাক্ষ্য দেয় যে একমাত্র ইসলামই অবিকৃতভাবে হযরত ইব্রাহীমের ধর্মকে উপস্থাপন করে, যার মূল কথা হচ্ছে আল্লাহ্র সাথে কাউকে অংশীদার না করা এবং একমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য সৎকর্ম করা। ইসলামের এই শিক্ষা হচ্ছে হযরত ইব্রাহীমের শিক্ষা যা যুগে যুগে হযরত মুসা, হযরত ঈসা ও অন্যান্য নবী রাসূলগণ প্রচার করে গেছেন। কিন্তু কালের পরিবর্তনের সাথে সাথে হযরত মুসা হযরত ঈসার ধর্মীয় গ্রন্থে এবং ধর্মের মূল বাণীতে অনেক শেরেকী প্রবেশ করে।
আয়াতঃ 002.140
অথবা তোমরা কি বলছ যে, নিশ্চয়ই ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব (আঃ) ও তাদের সন্তানগন ইহুদী অথবা খ্রীষ্টান ছিলেন? আপনি বলে দিন, তোমরা বেশী জান, না আল্লাহ বেশী জানেন?
Or say you that Ibrâhim (Abraham), Ismâ’il (Ishmael), Ishâque (Isaac), Ya’qûb (Jacob) and Al-Asbât [the twelve sons of Ya’qûb (Jacob)] were Jews or Christians? Say, ”Do you know better or does Allâh (knows better… that they all were Muslims)? And who is more unjust than he who conceals the testimony [i.e. to believe in Prophet Muhammad Peace be upon him when he comes, written in their Books. (See Verse 7:157)] he has from Allâh? And Allâh is not unaware of what you do.”
أَمْ تَقُولُونَ إِنَّ إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَـقَ وَيَعْقُوبَ وَالأسْبَاطَ كَانُواْ هُودًا أَوْ نَصَارَى قُلْ أَأَنتُمْ أَعْلَمُ أَمِ اللّهُ وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّن كَتَمَ شَهَادَةً عِندَهُ مِنَ اللّهِ وَمَا اللّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ
Am taqooloona inna ibraheema wa-ismaAAeela wa-ishaqa wayaAAqooba waal-asbata kanoo hoodan aw nasara qul aantum aAAlamu ami Allahu waman athlamu mimman katama shahadatan AAindahu mina Allahi wama Allahu bighafilin AAamma taAAmaloona
YUSUFALI: Or do ye say that Abraham, Isma’il Isaac, Jacob and the Tribes were Jews or Christians? Say: Do ye know better than Allah? Ah! who is more unjust than those who conceal the testimony they have from Allah? but Allah is not unmindful of what ye do!
PICKTHAL: Or say ye that Abraham, and Ishmael, and Isaac, and Jacob, and the tribes were Jews or Christians? Say: Do ye know best, or doth Allah? And who is more unjust than he who hideth a testimony which he hath received from Allah? Allah is not unaware of what ye do.
SHAKIR: Nay! do you say that Ibrahim and Ismail and Yaqoub and the tribes were Jews or Christians? Say: Are you better knowing or Allah? And who is more unjust than he who conceals a testimony that he has from Allah? And Allah is not at all heedless of what you do.
KHALIFA: Do you say that Abraham, Ismail, Isaac, Jacob, and the Patriarchs were Jewish or Christian? Say, “Do you know better than GOD? Who is more evil than one who conceals a testimony he has learned from GOD? GOD is never unaware of anything you do.”
১৩৯। বল, ‘আল্লাহ্ আমাদের প্রভু এবং তোমাদের প্রভু তা দেখেও তোমরা কি আমাদের সাথে আল্লাহ্ সম্বন্ধে বিতর্কে লিপ্ত হতে চাও? আমরা আমাদের কর্মের জন্য দায়বদ্ধ এবং তোমরা তোমাদের। আমরা তাঁর প্রতি [বিশ্বাসে] আন্তরিক’।
১৪০। অথবা ১৩৮, তোমরা কি বল, ‘ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসাহাক, ইয়াকুব ও তাঁর বংশধরগণ ইহুদী অথবা খৃষ্টান ছিলো’ ? বল, ‘তোমরা কি আল্লাহ্ অপেক্ষা বেশি জান ? আঃ! আল্লাহ্র নিকট থেকে যে প্রমাণ তারা পেয়েছে তা যারা গোপন করে তার থেকে বড় অন্যায়কারী আর কে আছে? তোমরা যা কর আল্লাহ্ সে সম্বন্ধে অমনোযোগী নন।’
১৩৮। [২ : ১৩৯] আয়াতে আল্লাহ্ রাসূলকে বলেছেন যে আপনি [ইহুদী ও খৃষ্টানদের] বলে দিন যে তোমরা কি এখনও ধর্ম সম্বন্ধে তর্ক বিতর্কে মগ্ন থাকবে। যখন তোমরা জান যে তিনি আমাদের এবং তোমাদের সকলেরই পালনকর্তা ও মালিক? তোমরা দাবী কর যে, তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের ধর্ম পালন কর। তাহলে কি তোমরা দাবী কর যে, ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক ও ইয়াকুব এবং তাদের সন্তানেরা সবাই ইহুদী বা খৃষ্টান ছিলেন কারণ এরাই তোমাদের পূর্বপুরুষ। হযরত মুসা বা হযরত ঈসা নবীর আগমণের বহু পূর্বে হযরত ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক ও তাদের গোত্রদের অবস্থান ছিল। তাহলে কী ভাবে হযরত ইব্রাহীম যার আগমণ হযরত মুসার পূর্বে তিনি ইহুদী ছিলেন? খৃষ্টানেরা তাদের ধর্মে হযরত ঈসাকে খোদার পুত্র বলে শেরেকী করে। হযরত ইব্রাহীমকে খৃষ্টান হতে হলে তাকেও হযরত ঈসাকে খোদার পুত্র বলে মানতে হয়। কিন্তু হযরত ইব্রাহীমের সময়ে পৃথিবীতে হযরত ঈসার অস্তিত্ব ছিল না। তাহলে কি ভাবে হযরত ইব্রাহীম খ্রষ্টধর্ম পালন করেছেন? সেই একইভাবে ইহুদী ধর্মেও অনেক বক্তব্য আসে যা ইব্রাহীমের ধর্মের বিরোধী। ইতিহাসই এর সাক্ষ্য দেয় যে একমাত্র ইসলামই অবিকৃতভাবে হযরত ইব্রাহীমের ধর্মকে উপস্থাপন করে, যার মূল কথা হচ্ছে আল্লাহ্র সাথে কাউকে অংশীদার না করা এবং একমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য সৎকর্ম করা। ইসলামের এই শিক্ষা হচ্ছে হযরত ইব্রাহীমের শিক্ষা যা যুগে যুগে হযরত মুসা, হযরত ঈসা ও অন্যান্য নবী রাসূলগণ প্রচার করে গেছেন। কিন্তু কালের পরিবর্তনের সাথে সাথে হযরত মুসা হযরত ঈসার ধর্মীয় গ্রন্থে এবং ধর্মের মূল বাণীতে অনেক শেরেকী প্রবেশ করে।
আয়াতঃ 002.141
তার চাইতে অত্যাচারী কে, যে আল্লাহর পক্ষ থেকে তার কাছে প্রমাণিত সাক্ষ্যকে গোপন করে? আল্লাহ তোমাদের কর্ম সম্পর্কে বেখবর নন। সে সম্প্রদায় অতীত হয়ে গেছে। তারা যা করেছে, তা তাদের জন্যে এবং তোমরা যা করছ, তা তোমাদের জন্যে। তাদের কর্ম সম্পর্কে তোমাদের জিজ্ঞেস করা হবে না।
That was a nation who has passed away. They shall receive the reward of what they earned, and you of what you earn. And you will not be asked of what they used to do.
تِلْكَ أُمَّةٌ قَدْ خَلَتْ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَلَكُم مَّا كَسَبْتُمْ وَلاَ تُسْأَلُونَ عَمَّا كَانُواْ يَعْمَلُونَ
Tilka ommatun qad khalat laha ma kasabat walakum ma kasabtum wala tus-aloona AAamma kanoo yaAAmaloona
YUSUFALI: That was a people that hath passed away. They shall reap the fruit of what they did, and ye of what ye do! Of their merits there is no question in your case:
PICKTHAL: Those are a people who have passed away; theirs is that which they earned and yours that which ye earn. And ye will not be asked of what they used to do.
SHAKIR: This is a people that have passed away; they shall have what they earned and you shall have what you earn, and you shall not be called upon to answer for what they did.
KHALIFA: That was a community from the past. They are responsible for what they earned, and you are responsible for what you earned. You are not answerable for anything they did.
১৪১। তারা ছিলো এক সম্প্রদায়, যারা অতীতে হয়েছে। তারা যা করেছে তার ফল তারা লাভ করবে, এবং তোমরা যা কর তা তোমাদের। তাদের যোগ্যতা সম্বন্ধে তোমাদের জিজ্ঞাসা করা হবে না ১৩৯।
১৩৯। এই আয়াতের শুরু [২:১৩৪] আয়াত থেকে। আল্লাহ্ বিভিন্নভাবে আমাদের এই উপদেশ দিয়েছেন যে, একমাত্র সত্য ধর্ম হচ্ছে ইব্রাহীমের (আঃ) ধর্ম, যা যুগে যুগে প্রচার করেছেন বিভিন্ন নবী ও রাসূলগণ। যার সারমর্ম হচ্ছে এক স্রষ্টার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা ও আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের জন্য তাঁর সৃষ্টির সেবা করা। যার কর্মফল সে-ই ভোগ করবে। কারও পাপের জন্য অন্য কাউকে দায়ী করা হবে না; বা কারও পূণ্যও কেউ ভোগ করতে পারবে না। সঙ্গীত যেমন প্রতিটি অনুচ্ছেদের শেষে প্রথম পংক্তিটির বার বার পুনরাবৃত্তি করা হয়। কোরআন শরীফ কবিতার ছন্দে নাজেল হয়েছে। সঙ্গীতের সেই সৌন্দর্য্য এখানেও ধরে রাখা হয়েছে এবং পূর্বের আয়াতের [২:১৩৪] পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে। কুরআন শরীফ নাজেল হয়েছে কবিতার মাধ্যমে এবং পড়তেও হয় সুরেলাভাবে। এর ভাষা, ছন্দ, মাধুর্য্য অতুলনীয়। এই লাইনটি শেষে বার বার ব্যবহার করা হয়েছে’ সঙ্গীতের একটি লাইন যেরূপ বার বার ব্যবহার করা হয় সেরূপ এই বিষয়টির গুরুত্ব বাড়ানোর জন্য।
আয়াতঃ 002.142
এখন নির্বোধেরা বলবে, কিসে মুসলমানদের ফিরিয়ে দিল তাদের ঐ কেবলা থেকে, যার উপর তারা ছিল? আপনি বলুনঃ পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা সরল পথে চালান।
The fools (pagans, hypocrites, and Jews) among the people will say, ”What has turned them (Muslims) from their Qiblah [prayer direction (towards Jerusalem)] to which they were used to face in prayer.” Say, (O Muhammad SAW) ”To Allâh belong both, east and the west. He guides whom He wills to a Straight Way.”
سَيَقُولُ السُّفَهَاء مِنَ النَّاسِ مَا وَلاَّهُمْ عَن قِبْلَتِهِمُ الَّتِي كَانُواْ عَلَيْهَا قُل لِّلّهِ الْمَشْرِقُ وَالْمَغْرِبُ يَهْدِي مَن يَشَاء إِلَى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ
Sayaqoolu alssufahao mina alnnasi ma wallahum AAan qiblatihimu allatee kanoo AAalayha qul lillahi almashriqu waalmaghribu yahdee man yashao ila siratin mustaqeemin
YUSUFALI: The fools among the people will say: “What hath turned them from the Qibla to which they were used?” Say: To Allah belong both east and West: He guideth whom He will to a Way that is straight.
PICKTHAL: The foolish of the people will say: What hath turned them from the qiblah which they formerly observed? Say: Unto Allah belong the East and the West. He guideth whom He will unto a straight path.
SHAKIR: The fools among the people will say: What has turned them from their qiblah which they had? Say: The East and the West belong only to Allah; He guides whom He likes to the right path.
KHALIFA: The fools among the people would say, “Why did they change the direction of their Qiblah?” Say, “To GOD belongs the east and the west; He guides whoever wills in a straight path.”
দ্বিতীয় পারা
রুকু – ১৭
১৪২। তাদের মধ্যে যারা নির্বোধ ১৪০ তারা বলবে, ‘তারা যে, কিব্লাতে অভ্যস্ত ছিলো, তা থেকে কি তাদের ফিরিয়ে দিলো ১৪১?’ বল, ‘পূর্ব পশ্চিম সবই আল্লাহ্র। তিনি যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন।’
১৪০। যারা নির্বোধ তারা স্রষ্টার নির্দেশের অপেক্ষা তাদের পুরনো অভ্যাসের দিকেই বেশি ঝুঁকে থাকে, দিশেহারা হয়ে এদিক ওদিক ঘুরতে থাকে। কোন কিছুতেই তাদের অবিচল আস্থা থাকে না। এখানে ইঙ্গিত করা হয়েছে মূর্তি পূজারী, মুশরিক এবং ইহুদীদের একটা অংশকে যারা সবসময়ই হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এবং তাঁর সাথীকে তাদের বিভিন্ন খোঁড়া যুক্তি দিয়ে পেরেশান করতে সচেষ্ট থাকতো। এমনকি এ ধরণের লোকেরা হযরত ঈসা (আঃ) এর সময়ে তাঁকেও এভাবে বিরক্ত করতো (Matt. xxii, ১৫, ২৩)।
১৪১। আলোচ্য আয়াতে কিবলা পরিবর্তন সম্পর্কে বিরোধীতাকারীদের আপত্তি বর্ণনা করে তার জওয়াব দেওয়া হয়েছে। আয়াতটি বোঝার জন্য কিবলার স্বরূপ ও সংক্ষিপ্ত ইতিহাস জেনে নেওয়া বাঞ্ছনীয়। [কিবলার শাব্দিক অর্থ মুখ করার দিক। প্রত্যেক এবাদতে মুমিনদের মুখ এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহ্র দিকেই থাকে। আল্লাহ্ পবিত্র সত্তা পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ বন্ধন থেকে মুক্ত, তিনি কোনও বিশেষ দিকে অবস্থান করেন না। ফলে কোনও এবাদতকারী যদি যে দিকে ইচ্ছা সেদিকেই মুখ করতো কিংবা একই ব্যক্তি এক সময়ে একদিকে, অন্য সময়ে অন্যদিকে মুখ করতো, তবে তাও স্বাভাবিক নিয়মের পরিপন্থি হতো না।]
কিন্তু অপর একটি রহস্যের কারণে সমস্ত ইবাদতকারীর মুখ একদিকেই যাওয়া উচিত। রহস্যটি এই, ইবাদত বিভিন্ন প্রকার। কিছু ইবাদত ব্যক্তিগত, আর কিছু ইবাদত সমষ্টিগত। আল্লাহ্র যিকির, রোযা প্রভৃতি ব্যক্তিগত ইবাদত। এগুলো নির্জনে ও গোপনভাবে সম্পাদন করতে হয়। নামাজ ও হজ্ব সমষ্টিগত ইবাদত। এগুলো সংঘবদ্ধভাবে ও প্রকাশ্যে সম্পাদন করতে হয়। সমষ্টিগত ইবাদতের বেলায় ইবাদতের সাথে সাথে মুসলমানদের সংঘবদ্ধ জীবনের রীতি-নীতিও শিক্ষা দেওয়া লক্ষ্য থাকে। এটা সবারই জানা যে, সংঘবদ্ধ জীবন-ব্যবস্তার প্রধান মূলনীতি হচ্ছে বহু ব্যক্তিভিত্তিক ঐক্য ও একাত্মতা। ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা ও বিচ্ছিন্নতা, সংঘবদ্ধ জীবন ব্যবস্থার পক্ষে বিষতুল্য। এরপর ঐক্যের কেন্দ্রবিন্দু কি হবে; তা নির্ধারণ করার ব্যাপারে বিভিন্ন যুগের মানুষ বিভিন্ন মত পোষণ করেছে। কোন কোন সম্প্রদায় বংশকে কেন্দ্র বিন্দু সাব্যস্ত করেছে, কেউ দেশ ও ভৌগলিক বৈশিষ্ট্যকে এবং কেউ বর্ণ ও ভাষাকে ঐক্যের কেন্দ্র বিন্দু হিসাবে সাব্যস্ত করেছে। প্রকৃতপক্ষে এসব বিষয় সমগ্র জাতিকে একই কেন্দ্রে সমবেত করতে সমর্থও নয়। বরং চিন্তা করলে দেখা যায় এ জাতীয় ঐক্য প্রকৃতপক্ষে মানব জাতিকে বেহুদা বিভক্ত করে দেয় এবং পারস্পরিক সংঘর্ষ ও মতানৈক্যই সৃষ্টি করে বেশী।
বিশ্বের সকল পয়গম্বরের ধর্ম ইসলাম অর্থাৎ হযরত ইব্রাহীমের দ্বারা যার নামকরণ হয়েছিল। যার মূল কথা হচ্ছে কোটি কোটির প্রভুর এবাদতে বিভক্ত বিশ্বকে এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহ্র এবাদত ও আনুগত্যের প্রতি আহবান।
এই আয়াতের তাৎপর্য এই যে বায়তুল মোকাদ্দাস বা কাবা শরীফ এসব স্থানের নিজস্ব কোন বৈশিষ্ট্য নাই। কিবলা হিসেবে আল্লাহ্ তায়ালা যে এগুলোকে মনোনীত করেছেন, এটাই সে স্থানের শ্রেষ্ঠত্বের একমাত্র কারণ। মহানবী (সাঃ) এর বেলায় কেবলা পরিবর্তনের রহস্য সম্ভবত এই যে, কার্যক্ষেত্রে মানুষ জেনে নিক যে, কিবলা কোন পূজনীয় মূর্তি বা বিগ্রহ নয় বরং আসল বিষয় হচ্ছে আল্লাহ্র নির্দেশ ও নির্দেশ মানার আনুগত্য।
আয়াতঃ 002.143
এমনিভাবে আমি তোমাদেরকে মধ্যপন্থী সম্প্রদায় করেছি যাতে করে তোমরা সাক্ষ্যদাতা হও মানবমন্ডলীর জন্যে এবং যাতে রসূল সাক্ষ্যদাতা হন তোমাদের জন্য। আপনি যে কেবলার উপর ছিলেন, তাকে আমি এজন্যই কেবলা করেছিলাম, যাতে একথা প্রতীয়মান হয় যে, কে রসূলের অনুসারী থাকে আর কে পিঠটান দেয়। নিশ্চিতই এটা কঠোরতর বিষয়, কিন্তু তাদের জন্যে নয়, যাদেরকে আল্লাহ পথপ্রদর্শন করেছেন। আল্লাহ এমন নন যে, তোমাদের ঈমান নষ্ট করে দেবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ, মানুষের প্রতি অত্যন্ত স্নেহশীল, করুনাময়।
Thus We have made you [true Muslims – real believers of Islâmic Monotheism, true followers of Prophet Muhammad SAW and his Sunnah (legal ways)], a Wasat (just) (and the best) nation, that you be witnesses over mankind and the Messenger (Muhammad SAW) be a witness over you. And We made the Qiblah (prayer direction towards Jerusalem) which you used to face, only to test those who followed the Messenger (Muhammad SAW) from those who would turn on their heels (i.e. disobey the Messenger). Indeed it was great (heavy) except for those whom Allâh guided. And Allâh would never make your faith (prayers) to be lost (i.e. your prayers offered towards Jerusalem). Truly, Allâh is full of kindness, the Most Merciful towards mankind.
وَكَذَلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا لِّتَكُونُواْ شُهَدَاء عَلَى النَّاسِ وَيَكُونَ الرَّسُولُ عَلَيْكُمْ شَهِيدًا وَمَا جَعَلْنَا الْقِبْلَةَ الَّتِي كُنتَ عَلَيْهَا إِلاَّ لِنَعْلَمَ مَن يَتَّبِعُ الرَّسُولَ مِمَّن يَنقَلِبُ عَلَى عَقِبَيْهِ وَإِن كَانَتْ لَكَبِيرَةً إِلاَّ عَلَى الَّذِينَ هَدَى اللّهُ وَمَا كَانَ اللّهُ لِيُضِيعَ إِيمَانَكُمْ إِنَّ اللّهَ بِالنَّاسِ لَرَؤُوفٌ رَّحِيمٌ
Wakathalika jaAAalnakum ommatan wasatan litakoonoo shuhadaa AAala alnnasi wayakoona alrrasoolu AAalaykum shaheedan wama jaAAalna alqiblata allatee kunta AAalayha illa linaAAlama man yattabiAAu alrrasoola mimman yanqalibu AAala AAaqibayhi wa-in kanat lakabeeratan illa AAala allatheena hada Allahu wama kana Allahu liyudeeAAa eemanakum inna Allaha bialnnasi laraoofun raheemun
YUSUFALI: Thus, have We made of you an Ummat justly balanced, that ye might be witnesses over the nations, and the Messenger a witness over yourselves; and We appointed the Qibla to which thou wast used, only to test those who followed the Messenger from those who would turn on their heels (From the Faith). Indeed it was (A change) momentous, except to those guided by Allah. And never would Allah Make your faith of no effect. For Allah is to all people Most surely full of kindness, Most Merciful.
PICKTHAL: Thus We have appointed you a middle nation, that ye may be witnesses against mankind, and that the messenger may be a witness against you. And We appointed the qiblah which ye formerly observed only that We might know him who followeth the messenger, from him who turneth on his heels. In truth it was a hard (test) save for those whom Allah guided. But it was not Allah’s purpose that your faith should be in vain, for Allah is Full of Pity, Merciful toward mankind.
SHAKIR: And thus We have made you a medium (just) nation that you may be the bearers of witness to the people and (that) the Messenger may be a bearer of witness to you; and We did not make that which you would have to be the qiblah but that We might distinguish him who follows the Messenger from him who turns back upon his heels, and this was surely hard except for those whom Allah has guided aright; and Allah was not going to make your faith to be fruitless; most surely Allah is Affectionate, Merciful to the people.
KHALIFA: We thus made you an impartial community, that you may serve as witnesses among the people, and the messenger serves as a witness among you. We changed the direction of your original Qiblah only to distinguish those among you who readily follow the messenger from those who would turn back on their heels. It was a difficult test, but not for those who are guided by GOD. GOD never puts your worship to waste. GOD is Compassionate towards the people, Most Merciful.
১৪৩। এভাবেই ১৪২ আমি তোমাদের এক মধ্যপন্থী ও ভারসাম্যপূর্ণ জাতিরূপে ১৪৩ প্রতিষ্ঠিত করেছি; যেনো তোমরা মানব জাতির উপর সাক্ষী স্বরূপ ১৪৪ এবং রাসূল তোমাদের উপর সাক্ষী স্বরূপ হবে। তুমি এতদিন যে কিব্লাতে অভ্যস্ত ছিলে আমি তা মনোনীত করেছিলাম, পরীক্ষা করার জন্য কে রাসূলকে অনুসরণ করে আর কে [বিশ্বাস থেকে] ফিরে যায় ১৪৫। আল্লাহ্ যাদের পরিচালিত করেন তারা ব্যতীত [অন্যদের জন্য] এটা অবশ্যই কঠিন [কাজ]। আল্লাহ্ এরূপ নন যে তোমাদের ঈমানকে ব্যর্থ করবেন ১৪৬। অবশ্যই আল্লাহ্ সকল মানুষের জন্য দয়ায় পরিপূর্ণ এবং অতীব অনুগ্রহশীল।
১৪২। মানবমণ্ডলীর ঐক্যের কেন্দ্রবিন্দু সমগ্র বিশ্বের কেবলার মুখ করার দিক কোনটি হবে এর মীমাংসা মানুষের হাতে ছেড়ে দিলে তা বিরাট মতানৈক্য ও কলহের কারণ হয়ে যাবে। সুতরাং এর মীমাংসা আল্লাহ্র পক্ষ থেকেই হওয়া উচিত। হযরত আদম (আঃ) এর পৃথিবীতে অবতরণের পূর্বেই ফেরেশ্তাদের দ্বারা কাবা গৃহের ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছিল। আদম ও আদম সন্তানদের জন্য সর্বপ্রথম কেবলারূপে কাবা গৃহকেই সাব্যস্ত করা হয়। আল্লাহ্ সেই ঐতিহ্যবাহী স্থানকে মুসলমানদের জন্য কিবলার জন্য নির্দিষ্ট করে মুসলমানদের ইহুদী ও খৃষ্টানদের থেকে আলাদা উম্মত হিসেবে চিহ্নিত করে সম্মানিত করেছেন। কাবা শরীফ হচ্ছে তারই প্রতীক।
১৪৩। ‘মধ্যপথ অবলম্বী’ এই হচ্ছে ইসলামের মূল চেতনা। যেকোন কাজে বা ধর্মের ব্যাপারে ইসলাম বাড়াবাড়ি পছন্দ করে না। যারা ধর্মের ব্যাপারে অত্যন্ত নিষ্ঠাবান, ধর্মের খুঁটি-নাটি, নিয়ম-নীতি ইত্যাদি নিয়ে মাতামাতি করে, ফলে তারা ধর্মের যে মূল চেতনা বা ভিত্তি তা থেকে দূরে সরে যায়। মানুষের কল্যাণের দিকটি তাদের ভিতর থেকে অন্তর্হিত হয়ে যায়। আবার যারা ধর্মকে সম্পূর্ণ পরিত্যাগ করে শুধু পৃথিবীর সুখ, শান্তি, অর্থ, ক্ষমতা ইত্যাদির পিছনে ধাওয়া করে তারাও এক ধরণের মৌলবাদী (থেমে থাকা মানুষ)। এই দুই শ্রেণীর মধ্যে পার্থক্য খুব কম। কারণ এই দুইশ্রেণীই মানুষের কল্যাণের প্রকৃত দিকটি সম্বন্ধে অন্ধ; এবং আল্লাহ্র প্রতি আনুগত্য সম্পর্কে বৈরী। এটা এক ধরণের স্বার্থপরতা ও স্বেচ্ছাচারিতা। কারণ নিজস্ব মনগড়া মতবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য তারা মানব কল্যাণের দিকটি পরিত্যাগ করে, ফলে তারা আল্লাহ্র আইন লঙ্ঘন করে, যা ইসলামের মূলকথা তাকেই অস্বীকার করে। কিন্তু ইসলাম এই দুই চরম পন্থীতের পরিত্যাগ করতে বলে।
‘মধ্যপন্থী ও ভারসাম্যপূর্ণ সম্প্রদায়’ এই কথাটির মধ্যে ইসলাম ধর্মের সারমর্ম ও সৌন্দর্য নিহিত। এই ভারসাম্যপূর্ণ সম্প্রদায়ের মানদণ্ড কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে। সূরা আল-ইমরানে [৩:১০] বলা হয়েছে, তোমরাই সে শ্রেষ্ঠ উম্মত মানবজাতির কল্যাণের জন্য যাদের সৃষ্টি করা হয়েছে। (১) তোমরা ভাল কাজে আদেশ করবে; (২) মন্দ কাজে নিষেধ করবে এবং (৩) আল্লাহ্র উপর ঈমান আনবে।’ সূরা আরাফের শেষভাগে এই সম্প্রদায় সম্বন্ধে বলা হয়েছে ‘আমি যাদের সৃষ্টি করেছি তাদের মধ্যে এমন একটি সম্প্রদায় রয়েছে যারা সৎ পথ প্রদর্শন করে এবং তদানুযায়ী ন্যায় বিচার করে।’ অর্থাৎ এ সম্প্রদায়টি অন্যের হিতাকাঙ্ক্ষা ও উপকারের নিমিত্তে সৃষ্টি। তাদের অভীষ্ট কর্তব্য ও জাতীয় পরিচয় এই যে, তারা মানুষকে সৎ কাজের দিকে পথ দেখাবে এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখবে। এবং এই হচ্ছে মধ্যপথ। ধর্ম সম্বন্ধে উন্মাদনা ইসলাম অনুমোদন করে না। মধ্যপন্থী হচ্ছে তারাই যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাক্ষী এবং অত্যাচারের বিরুদ্ধে জেহাদে তারা হচ্ছে নিঃস্বার্থ। তারা কোনও বিশেষ দেশ ও ভৌগলিক সীমার বন্ধনে আবদ্ধ থাকবে না। তাদের কর্মক্ষেত্র হবে সমগ্র বিশ্ব এবং জীবনের সকল শাখায় পরিব্যপ্ত। এরাই প্রকৃত মুসলমান।
১৪৪। যখন দু’পক্ষ আত্ম কলহে মগ্ন হয়, তখন তাদের মধ্যে সবকিছুতেই বাড়াবাড়ি পরিলক্ষিত হয়। এসময়ে একজন নিরপেক্ষ ও ন্যায়বান ব্যক্তি সাক্ষী হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এখানে বলা হয়েছে ইহুদী জাতির কথা। যারা মুসার ধর্মের আচরণবিধি কঠোরভাবে অনুশীলন করতো ফলে ধর্ম রূপান্তরিত হয়ে গেলো ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে। ধর্মের যে প্রাণ তা গেলো হারিয়ে। আবার খৃষ্টানেরা বলে ধর্মের নামে পৃথিবীর সমস্ত কর্মকাণ্ড পরিত্যাগ করতে। তাদের কাছে পরকালের জন্য পৃথিবীর সমস্ত ক্রিয়া-কর্ম পরিতাজ্য। তাহলে তো সভ্যতা থমকে যাবে। মানব সভ্যতার যে অগ্রগতি তা হবে ব্যাহত। কিন্তু কর্মহীন দ্বীন আল্লাহ্র কাছে মনোনীত নয়। ইসলামই একমাত্র ধর্ম যেখানে বলা হয়েছে দ্বীন ও দুনিয়া উভয়েরই প্রয়োজন পরকালের মুক্তির জন্য। মুসলমান চলমান পৃথিবীর সমস্ত ক্রিয়াকর্মে অংশ গ্রহণ করবে। আমরা এর প্রকৃত উদাহরণ দেখি ৭ম ও ৮ম শতাব্দীতে মুসলিম সভ্যতার আমলে। তারা হয়েছেন বৈজ্ঞানিক, ডাক্তার, শিল্পী, সাহিত্যিক। পৃথিবীর সভ্যতাকে তারা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু একই সাথের তাদের সমস্ত ক্রিয়াকর্ম ছিল আল্লাহ্র কাছে নিবেদিত। আল্লাহ্র প্রতি আনুগত্যের সাথে সাথেই ছিল তাদের দুনিয়া। দ্বীন ও দুনিয়া এই দুয়ে মিলেই ইসলাম। দুনিয়ার প্রলোভন দুনিয়াতে থেকেই আল্লাহ্র প্রতি ভালবাসায় আল্লাহ্র জন্য ত্যাগ করাই হচ্ছে ইসলামের মূল কথা। সুতরাং ইসলামে ঈমানদারগণকে এই মধ্যপন্থী ন্যায়বান সাক্ষী হিসেবে বলা হচ্ছে।
১৪৫। জেরুজালেমের বায়তুল মোকাদ্দাস থেকে কিব্লা পরিবর্তন করে কাবাকে কিব্লা নির্দেশ করার পর ইহুদী ও আরবের মুশরিক ও মুনাফিকরা প্রশ্ন তুলতে থাকে যে এ ধর্মের কোনও স্থিতিশীলতা নাই। রোজ কিব্লা পরিবর্তন করে। কিন্তু আল্লাহ্র অস্তিত্ব পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ সর্বত্রই। কিব্লার কোনও নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নাই।
আল্লাহ্ মনোনীত করেছেন এটাই এ স্থানের শ্রেষ্ঠত্বের কারণ। কোনটা কিব্লা হলো সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হলো কে আল্লাহ্র হুকুম বিশ্বাস ও আনুগত্যের সাথে পালন করলো। আল্লাহ্ কিব্লা পরিবর্তনের ঘটনাকে অনুসারী মুসলমানদের জন্য একটি পরীক্ষা সাব্যস্ত করেছিলেন যাতে প্রকাশ্যভাবে জানা যায় যে কে রাসূলের খাঁটি অনুসারী এবং কে নিজ মতের অনুসারী।
১৪৬। কিব্লা পরিবর্তনের পূর্বে যারা ইন্তেকাল করেছিলেন তারা বায়তুল মোকাদ্দাসের দিকে মুখ করে সালাত কায়েম করেছিলেন। তাদের ঈমান ও সালাত কবুল হয়েছে কিনা এ নিয়ে কারও কারও মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এই আয়াতটি-তখন ইরশাদ হয়। আল্লাহ্র কাছে বিশ্বাসের গভীরতা ও আন্তরিকতাই আসল কাম্য। এক স্রষ্টায় বিশ্বাস, তাঁর প্রতি আনুগত্য এবং অকৃত্রিম ভালবাসা-এটাই আল্লাহ্ আমাদের কাছে চান। আল্লাহ্ তাঁর বান্দার কাছে ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা হাদীস ফেকার চুলচেরা বিশ্লেষণের পাণ্ডিত্য চান না। বাহ্যিক আচার অনুষ্ঠান, ধর্মের চুলচেরা বিশ্লেষণ, ধর্মের পাণ্ডিত্যে বাইরের পৃথিবীকে চমকিত করতে পারে, সাধারণ মানুষ মুগ্ধ হয়ে তার অনুসারী হতে পারে। কিন্তু আল্লাহ্র কাছে এসব আনুষ্ঠানিকতার কোনও মূল্য নাই। আল্লাহ্ আমাদের পরিশুদ্ধ আত্মা চান। যে আত্মা থাকবে শুধু আল্লাহ্র প্রতি ভালবাসা, আনুগত্য ও বিশ্বাসে ভরপুর। এখানে আনুষ্ঠানিকতা বা তার ত্রুটিতে কিছুই যাবে বা আসবে না। সুতরাং যারা বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে কিব্লা করে নামায পড়ে গত হয়েছেন তাদের নামাজ যদি আন্তরিক ও আল্লাহ্র প্রতি ভালবাসাতে ভরপুর হয় তবে অবশ্যই তা আল্লাহ্র কাছে গৃহীত। ইসলাম বাহুল্য আনুষ্ঠানিকতাকে সবসময়ে পরিত্যাগ করতে বলেছে।
আয়াতঃ 002.144
আয়াতঃ 002.145
যদি আপনি আহলে কিতাবদের কাছে সমুদয় নিদর্শন উপস্থাপন করেন, তবুও তারা আপনার কেবলা মেনে নেবে না এবং আপনিও তাদের কেবলা মানেন না। তারাও একে অন্যের কেবলা মানে না। যদি আপনি তাদের বাসনার অনুসরণ করেন, সে জ্ঞানলাভের পর, যা আপনার কাছে পৌঁছেছে, তবে নিশ্চয় আপনি অবিচারকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবেন।
And even if you were to bring to the people of the Scripture (Jews and Christians) all the Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.), they would not follow your Qiblah (prayer direction), nor are you going to follow their Qiblah (prayer direction). And they will not follow each other’s Qiblah (prayer direction). Verily, if you follow their desires after that which you have received of knowledge (from Allâh), then indeed you will be one of the Zâlimûn (polytheists, wrong-doers, etc.).
وَلَئِنْ أَتَيْتَ الَّذِينَ أُوْتُواْ الْكِتَابَ بِكُلِّ آيَةٍ مَّا تَبِعُواْ قِبْلَتَكَ وَمَا أَنتَ بِتَابِعٍ قِبْلَتَهُمْ وَمَا بَعْضُهُم بِتَابِعٍ قِبْلَةَ بَعْضٍ وَلَئِنِ اتَّبَعْتَ أَهْوَاءهُم مِّن بَعْدِ مَا جَاءكَ مِنَ الْعِلْمِ إِنَّكَ إِذَاً لَّمِنَ الظَّالِمِينَ
Wala-in atayta allatheena ootoo alkitaba bikulli ayatin ma tabiAAoo qiblataka wama anta bitabiAAin qiblatahum wama baAAduhum bitabiAAin qiblata baAAdin wala-ini ittabaAAta ahwaahum min baAAdi ma jaaka mina alAAilmi innaka ithan lamina alththalimeena
YUSUFALI: Even if thou wert to bring to the people of the Book all the Signs (together), they would not follow Thy Qibla; nor art thou going to follow their Qibla; nor indeed will they follow each other’s Qibla. If thou after the knowledge hath reached thee, Wert to follow their (vain) desires,-then wert thou Indeed (clearly) in the wrong.
PICKTHAL: And even if thou broughtest unto those who have received the Scripture all kinds of portents, they would not follow thy qiblah, nor canst thou be a follower of their qiblah; nor are some of them followers of the qiblah of others. And if thou shouldst follow their desires after the knowledge which hath come unto thee, then surely wert thou of the evil-doers.
SHAKIR: And even if you bring to those who have been given the Book every sign they would not follow your qiblah, nor can you be a follower of their qiblah, neither are they the followers of each other’s qiblah, and if you follow their desires after the knowledge that has come to you, then you shall most surely be among the unjust.
KHALIFA: Even if you show the followers of the scripture every kind of miracle, they will not follow your Qiblah. Nor shall you follow their Qiblah. They do not even follow each others’ Qiblah. If you acquiesce to their wishes, after the knowledge that has come to you, you will belong with the transgressors.
১৪৫। যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে, তুমি যদি তাদের নিকট সকল নিদর্শন [একসঙ্গে] হাজির কর, তবুও তারা তোমার কিব্লা অনুসরণ করবে না। তুমিও তাদের কিব্লা অনুসরণ করতে যাচ্ছ না। অবশ্যই তারা পরস্পরের কিব্লা অনুসরণ করবে না ১৫০। তোমার নিকট জ্ঞান আসার পরও যদি তুমি তাদের [মিথ্যা] খেয়াল-খুশীর অনুসরণ কর, নিশ্চয়ই তখন তুমি পাপীদের অন্তর্ভূক্ত হবে।
১৫০। টীকা নং ১৪৭ ও আয়াত ১৪৪ দেখুন। ইহুদী ও খৃষ্টানদের মধ্যে কিব্লা অনুসরণের রীতি ছিল কিন্তু ইসলামের মত এত সুদৃঢ় আইনের ভিত্তিতে কিব্লার অনুসরণ করতে তাদের একগুঁয়ে মন প্রস্তুত ছিল না। আর ইসলামেও একটি সুনির্দিষ্ট কিব্লা নির্ধারণের পর পূর্বের মত অন্য কোন অনিশ্চিত, অপূর্ণ ও ভিন্ন ভিন্ন মতের পরিতোষক কোন কিছু গ্রহণের কোন অবকাশ থাকে না।
আয়াতঃ 002.146
আমি যাদেরকে কিতাব দান করেছি, তারা তাকে চেনে, যেমন করে চেনে নিজেদের পুত্রদেরকে। আর নিশ্চয়ই তাদের একটি সম্প্রদায় জেনে শুনে সত্যকে গোপন করে।
Those to whom We gave the Scripture (Jews and Christians) recognise him (Muhammad SAW or the Ka’bah at Makkah) as they recongise their sons. But verily, a party of them conceal the truth while they know it – [i.e. the qualities of Muhammad SAW which are written in the Taurât (Torah) and the Injeel (Gospel)].
الَّذِينَ آتَيْنَاهُمُ الْكِتَابَ يَعْرِفُونَهُ كَمَا يَعْرِفُونَ أَبْنَاءهُمْ وَإِنَّ فَرِيقاً مِّنْهُمْ لَيَكْتُمُونَ الْحَقَّ وَهُمْ يَعْلَمُونَ
Allatheena ataynahumu alkitaba yaAArifoonahu kama yaAArifoona abnaahum wa-inna fareeqan minhum layaktumoona alhaqqa wahum yaAAlamoona
YUSUFALI: The people of the Book know this as they know their own sons; but some of them conceal the truth which they themselves know.
PICKTHAL: Those unto whom We gave the Scripture recognise (this revelation) as they recognise their sons. But lo! a party of them knowingly conceal the truth.
SHAKIR: Those whom We have given the Book recognize him as they recognize their sons, and a party of them most surely conceal the truth while they know (it).
KHALIFA: Those who received the scripture recognize the truth herein, as they recognize their own children. Yet, some of them conceal the truth, knowingly.
১৪৬। কিতাবধারী লোকেরা এই [সত্যকে] সেরূপ জানে, যেরূপ তারা নিজেদের সন্তানদের চেনে ১৫১। কিন্তু তাদের এক দল জেনে শুনে সত্যকে গোপন করে।
১৫১। কিতাবধারী জাতিরা এই সত্যকে এমনভাবে চেনে যেমন তারা তাদের সন্তানদের চেনে। কারণ তাদের ধর্মগ্রন্থ, তাদের কৃষ্টি, ঐতিহ্য সবই সেই এক সত্যের উপরে প্রতিষ্ঠিত যা তাদের ধর্মের নূতন রূপকে স্বাগতম জানাতে সাহায্য করে। (কারণ এই রূপ সেই একই আল্লাহ্র নির্দেশে পরিবর্তিত ও সময়োপযোগী করে সংশোধিত। এরপরে আর কোনও জীবন-দর্শনের প্রয়োজন নেই-এটি সর্বকালের মানুষের জন্য একটি সম্পূর্ণ গ্রন্থ)। কোন কোন অনুবাদকের মতে ‘this’ বা এই শব্দটি আমাদের নবীকে ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে। তাহলে এ আয়াতটির অর্থ দাঁড়ায় যে কিতাবধারী জাতিরা মুহম্মদকে সেরকম ভালভাবে জানে যেমন তারা তাদের সন্তানদের জানে। তারা জানে তিনি সত্যের প্রচারক, তারা জানে তিনি ইব্রাহীমের ধর্ম প্রচার করেছেন। তারা এও জানে যে তার বর্ণনাই তাদের ধর্মগ্রন্থে পূর্বেই বলা হয়েছে। কিন্তু অন্ধকার ও স্বার্থপরতা তাদের সত্য গোপন করতে এবং তাদের ধর্মগ্রন্থের বিপরীত কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে।
আয়াতঃ 002.147
বাস্তব সত্য সেটাই যা তোমার পালনকর্তা বলেন। কাজেই তুমি সন্দিহান হয়ো না।
(This is) the truth from your Lord. So be you not one of those who doubt.
الْحَقُّ مِن رَّبِّكَ فَلاَ تَكُونَنَّ مِنَ الْمُمْتَرِينَ
Alhaqqu min rabbika fala takoonanna mina almumtareena
YUSUFALI: The Truth is from thy Lord; so be not at all in doubt.
PICKTHAL: It is the Truth from thy Lord (O Muhammad), so be not thou of those who waver.
SHAKIR: The truth is from your Lord, therefore you should not be of the doubters.
KHALIFA: This is the truth from your Lord; do not harbor any doubt.
১৪৭। সত্য তোমার প্রভুর নিকট থেকে আগত ১৫২। সুতরাং তুমি বিন্দুমাত্র সন্দেহ পোষণ করো না।
১৫২। ‘সত্য’ হেদায়েতের ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ্র। মানুষ যত চেষ্টাই করুক সত্যকে গোপন রাখতে পারে না। মানুষের সন্দেহ, স্বার্থপরতা, বিকৃতি সবকিছুর উর্ধ্বে আল্লাহ্র অস্তিত্ব। পৃথিবীতে আল্লাহ্ই একমাত্র সত্য। তিনিই আদি এবং অন্ত। সুতরাং সত্য হেদায়েতের ক্ষমতা একমাত্র তাঁরই।
আয়াতঃ 002.148
আর সবার জন্যই রয়েছে কেবলা একেক দিকে, যে দিকে সে মুখ করে (এবাদত করবে)। কাজেই সৎকাজে প্রতিযোগিতামূলকভাবে এগিয়ে যাও। যেখানেই তোমরা থাকবে, আল্লাহ অবশ্যই তোমাদেরকে সমবেত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল।
For every nation there is a direction to which they face (in their prayers). So hasten towards all that is good. Wheresoever you may be, Allâh will bring you together (on the Day of Resurrection). Truly, Allâh is Able to do all things.
وَلِكُلٍّ وِجْهَةٌ هُوَ مُوَلِّيهَا فَاسْتَبِقُواْ الْخَيْرَاتِ أَيْنَ مَا تَكُونُواْ يَأْتِ بِكُمُ اللّهُ جَمِيعًا إِنَّ اللّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
Walikullin wijhatun huwa muwalleeha faistabiqoo alkhayrati aynama takoonoo ya/ti bikumu Allahu jameeAAan inna Allaha AAala kulli shay-in qadeerun
YUSUFALI: To each is a goal to which Allah turns him; then strive together (as in a race) Towards all that is good. Wheresoever ye are, Allah will bring you Together. For Allah Hath power over all things.
PICKTHAL: And each one hath a goal toward which he turneth; so vie with one another in good works. Wheresoever ye may be, Allah will bring you all together. Lo! Allah is Able to do all things.
SHAKIR: And every one has a direction to which he should turn, therefore hasten to (do) good works; wherever you are, Allah will bring you all together; surely Allah has power over all things.
KHALIFA: Each of you chooses the direction to follow; you shall race towards righteousness. Wherever you may be, GOD will summon you all. GOD is Omnipotent.
রুকু – ১৮
১৪৮। প্রত্যেকের [জীবনের] একটি উদ্দেশ্য রয়েছে, যেদিকে আল্লাহ্ তাকে ফিরিয়ে দেন ১৫৩। সুতরাং [জাতি হিসেবে] যা কিছু ভালো তার জন্য এক সাথে প্রতিযোগিতা কর। তোমরা যেখানেই থাক না কেন, আল্লাহ্ তোমাদের সকলকে একত্র করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্ব বিষযের উপরে সর্বশক্তিমান।
১৫৩। ‘প্রত্যেকের [জীবনের] একটি উদ্দেশ্য রয়েছে, যেদিকে আল্লাহ্ তাকে ফিরিয়ে দেন’ এখানে ‘হু-ওয়া’ কথাটির অন্যভাবে অনুবাদ করলে বাক্যটির অর্থ দাঁড়ায় ‘প্রত্যেকের নিজস্ব লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য আছে যার দিকে সে ধাবিত হয়।’ এখানে পৃথিবীর জীবনটাকে এক প্রতিযোগিতাপূর্ণ দৌড়ের সাথে তুলনা করা হয়েছে। এই প্রতিযোগীতা ব্যক্তিগত হতে পারে বা জাতিগত হতে পারে প্রত্যেকেই নিজ নিজ লক্ষের দিকে প্রাণপণে দৌড়াচ্ছে। সে লক্ষ্যটি কি? সে লক্ষ্য হচ্ছে সত্য, সুন্দর ও যা কিছু ভালো তার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম।
আল্লাহ্ প্রতিটি মানুষকে পাঠিয়েছেন তার বিশেষ নেয়ামতে ধন্য করে। তাঁর নেয়ামত-ই হচ্ছে মানুষের জন্য বিশেষ গুণাবলী যা মানবকে করে গৌরবান্বিত, ধন্য। একেই আমরা আখ্যায়িত করি প্রতিভারূপে। তবে সবাই প্রতিভাবান না হলেও সকলের মধ্যেই আল্লাহ্র কিছু না কিছু নেয়ামত আছে। বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্য, সঙ্গীত ইত্যাদি বিভিন্ন গুণাবলী বিভিন্ন মানুষের মধ্যে জন্মগতভাবে জন্ম নেয়। এই জন্মগতভাবে পাওয়া ক্ষমতাই হচ্ছে আল্লাহ্র বিশেষ দান। এই দানকে সম্পূর্ণ করায়ত্ব করতে হলে প্রত্যেককে তার সমস্ত সত্ত্বা ও আন্তরিকতা দিয়ে প্রাণপণে চেষ্টা করতে হবে। চেষ্টা ব্যতীত আল্লাহ্ প্রদত্ত এই নেয়ামতকে করায়ত্ব করা সম্ভব নয়। আপাতঃদৃষ্টিতে বৈজ্ঞানিকের লক্ষ্য এক, শিল্পীর লক্ষ্য অন্য, সাহিত্যিকের লক্ষ্য আলাদা কিন্তু সামগ্রিকভাবে সকলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক, আর তা হচ্ছে পৃথিবীতে সত্য ও সুন্দরের প্রতিষ্ঠা ও সৃষ্টির সেবা করা ও মন্দকে প্রতিহত করা। অর্থাৎ আল্লাহ্ প্রদত্ত নেয়ামত দ্বারা আল্লাহ্ প্রত্যেকের জন্য তার লক্ষ্য স্থির করে দিয়েছেন যে লক্ষ্য অর্জনের জন্য সে আপ্রাণ চেষ্টা করে। সে চেষ্টা ব্যক্তিগত হতে পারে আবার সমষ্টিগতও হতে পারে। এই চেষ্টার শেষ পরিণতি হচ্ছে আল্লাহ্ প্রদত্ত নেয়ামতকে আয়ত্ব করে তার সৃষ্টির সেবার জন্য তা নিবেদন করা। এখানে লক্ষ্য এক কিন্তু পথ প্রত্যেকের জন্য আলাদা।
আয়াতঃ 002.149
আর যে স্থান থেকে তুমি বের হও, নিজের মুখ মসজিদে হারামের দিকে ফেরাও-নিঃসন্দেহে এটাই হলো তোমার পালনকর্তার পক্ষ থেকে নির্ধারিত বাস্তব সত্য। বস্তুতঃ তোমার পালনকর্তা তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অনবহিত নন।
And from wheresoever you start forth (for prayers), turn your face in the direction of Al-Masjid-al-Harâm (at Makkah), that is indeed the truth from your Lord. And Allâh is not unaware of what you do.
وَمِنْ حَيْثُ خَرَجْتَ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَإِنَّهُ لَلْحَقُّ مِن رَّبِّكَ وَمَا اللّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ
Wamin haythu kharajta fawalli wajhaka shatra almasjidi alharami wa-innahu lalhaqqu min rabbika wama Allahu bighafilin AAamma taAAmaloona
YUSUFALI: From whencesoever Thou startest forth, turn Thy face in the direction of the sacred Mosque; that is indeed the truth from the Lord. And Allah is not unmindful of what ye do.
PICKTHAL: And whencesoever thou comest forth (for prayer, O Muhammad) turn thy face toward the Inviolable Place of Worship. Lo! it is the Truth from thy Lord. Allah is not unaware of what ye do.
SHAKIR: And from whatsoever place you come forth, turn your face towards the Sacred Mosque; and surely it is the very truth from your Lord, and Allah is not at all heedless of what you do.
KHALIFA: Wherever you go, you shall turn your face (during Salat) towards the Sacred Masjid. This is the truth from your Lord. GOD is never unaware of anything you all do.
১৪৯। যেখান থেকেই তুমি বের হও না কেন, মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাও ১৫৪। ইহা নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালকের নিকট থেকে আগত সত্য। তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আল্লাহ্ অমনোযোগী নন।
১৫৪। এই আয়াতে প্রতিযোগিতাপূর্ণ দৌড়ের উপমাটির [২:১৪৮] ধারাবাহিকতা বর্ণনা করা হয়েছে। পূর্বে বলা হয়েছে এই দৌড়ের প্রতিযোগিতার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য এক। এখানে কিব্লাকে এর প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। আয়াত [২:১৪৪] এ বলা হয়েছে নূতন মুসলমানদের জন্য কাবা হচ্ছে একতার প্রতীক। এখানে কাবাকে বলা হচ্ছে সত্য, সুন্দর ও ভালোর প্রতীক-যে প্রতীক সকলেরই লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। এখানে খৃষ্টান বা ইহুদী বা মুসলমানদের মধ্যে কোনও পার্থক্য নাই। যে যেখানে থেকেই শুরু করুক না কেন সকলেরই শেষ লক্ষ্য একটাই। আর তা হচ্ছে পৃথিবীতে সত্য ও সুন্দরের এবং ভালোর প্রতিষ্ঠা। এই এক লক্ষ্যে একত্রিত করার প্রতীক হচ্ছে কিব্লা। আয়াত [২:১৫০] এ এই একই কথার পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে। আয়াতে [২:১৫০] ‘Where soever’ কথাটি আরবীতে অনেক ব্যাপক অর্থ বহন করে। এর মানে তিনটি বিভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে, (১) যে কোনও পরিবেশে, (২) যে কোনও যুগে, সময়ে (৩) যে কোনও স্থানে। অর্থাৎ এর যে কোনও অবস্থানেই ব্যক্তি বা সমষ্টি থাকুক না কেন সকলের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য এক কিব্লার দিকে মুখ যা সত্য, সুন্দর ও ভালর প্রতীক।
আয়াতঃ 002.150
আর তোমরা যেখান থেকেই বেরিয়ে আস এবং যেখানেই অবস্থান কর, সেদিকেই মুখ ফেরাও, যাতে করে মানুষের জন্য তোমাদের সাথে ঝগড়া করার অবকাশ না থাকে। অবশ্য যারা অবিবেচক, তাদের কথা আলাদা। কাজেই তাদের আপত্তিতে ভীত হয়ো না। আমাকেই ভয় কর। যাতে আমি তোমাদের জন্যে আমার অনুগ্রহ সমূহ পূর্ণ করে দেই এবং তাতে যেন তোমরা সরলপথ প্রাপ্ত হও।
And from wheresoever you start forth (for prayers), turn your face in the direction of Al-Masjid-al-Harâm (at Makkah), and wheresoever you are, turn your faces towards, it (when you pray) so that men may have no argument against you except those of them that are wrong-doers, so fear them not, but fear Me! – And so that I may complete My Blessings on you and that you may be guided.
وَمِنْ حَيْثُ خَرَجْتَ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَحَيْثُ مَا كُنتُمْ فَوَلُّواْ وُجُوهَكُمْ شَطْرَهُ لِئَلاَّ يَكُونَ لِلنَّاسِ عَلَيْكُمْ حُجَّةٌ إِلاَّ الَّذِينَ ظَلَمُواْ مِنْهُمْ فَلاَ تَخْشَوْهُمْ وَاخْشَوْنِي وَلأُتِمَّ نِعْمَتِي عَلَيْكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ
Wamin haythu kharajta fawalli wajhaka shatra almasjidi alharami wahaythu ma kuntum fawalloo wujoohakum shatrahu li-alla yakoona lilnnasi AAalaykum hujjatun illa allatheena thalamoo minhum fala takhshawhum waikhshawnee wali-otimma niAAmatee AAalaykum walaAAallakum tahtadoona
YUSUFALI: So from whencesoever Thou startest forth, turn Thy face in the direction of the sacred Mosque; and wheresoever ye are, Turn your face thither: that there be no ground of dispute against you among the people, except those of them that are bent on wickedness; so fear them not, but fear Me; and that I may complete My favours on you, and ye May (consent to) be guided;
PICKTHAL: Whencesoever thou comest forth turn thy face toward the Inviolable Place of Worship; and wheresoever ye may be (O Muslims) turn your faces toward it (when ye pray) so that men may have no argument against you, save such of them as do injustice – Fear them not, but fear Me! – and so that I may complete My grace upon you, and that ye may be guided.
SHAKIR: And from whatsoever place you come forth, turn your face towards the Sacred Mosque; and wherever you are turn your faces towards it, so that people shall have no accusation against you, except such of them as are unjust; so do not fear them, and fear Me, that I may complete My favor on you and that you may walk on the right course.
KHALIFA: Wherever you go, you shall turn your face (during Salat) towards the Sacred Masjid; wherever you might be, you shall turn your faces (during Salat) towards it. Thus, the people will have no argument against you, except the transgressors among them. Do not fear them, and fear Me instead. I will then perfect My blessings upon you, that you may be guided.
১৫০। সুতরাং তুমি যেখান থেকেই বের হও না কেন, মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাও। আর যেখানেই তোমরা থাক না কেন এর দিকেই তোমাদের মুখ ফিরাবে। এটা এ জন্য যে, দুষ্ট লোকেরা ব্যতীত তোমাদের বিরুদ্ধে বিতর্ক করার কারও কোনও ভিত্তি না থাকে। অতএব, তোমরা তাদেরকে ভয় করো না, ভয় করবে আমাকে। যেনো আমি তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ পূর্ণ করতে পারি এবং যাতে তোমরা হেদায়েত প্রাপ্ত হতে পার।
১৫১। যেমন [অনুগ্রহ তোমরা ইতিমধ্যে পেয়েছ যে], তোমাদের মধ্য থেকেই তোমাদের প্রতি রাসূল প্রেরণ করেছি ১৫৫। যে তোমাদের নিকট আমার আয়াতসমূহ আবৃত্তি করে, তোমাদের পরিশুদ্ধ করে, এবং তোমাদের কিতাব ও প্রজ্ঞা এবং নূতন জ্ঞান শিক্ষা দেয়।
১৫৫। এই [২:২৫১] আয়াতটি [২:১৫০] আয়াতের শেষ অংশরূপে পরিগণিত করা যায়। সুতরাং সম্পূর্ণ অর্থ হৃদয়ঙ্গম করতে হলে দুটো [১৫০ ও ১৫১] আয়াত এক সাথে পড়া প্রয়োজন। এখানে কাবাকে কিব্লা করার স্বপক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করা হচ্ছে, কাবাকে কিব্লা করার মাধ্যমে আল্লাহ্ আমাদের ধর্মকে সম্পূর্ণ করে দিচ্ছেন এবং সেই সাথে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর প্রার্থনাও মঞ্জুর করে দিচ্ছেন। হযরত ইব্রাহীমের প্রার্থনা ছিল তিনটি। প্রথমটি ছিল মক্কা হবে পবিত্র নগরী [২:১২৬], দ্বিতীয়টি হচ্ছে সেখানে সত্যিকারের মুসলমানদের উদ্ভব হবে এবং কাবা শরীফ হচ্ছে পরহেযগারদের জন্য Sanctuary [২:১২৮] এবং তৃতীয়টি হচ্ছে আরবদের মধ্যে যেনো নবী প্রেরণ করা হয় যার গুণাবলী পৃথিবীকে উদ্ভাসিত করবে [২:১২৯]। এই আয়াতটিতে উপরিউক্ত কথাগুলিরই পুনরাবৃত্তি করে শেষ করা হয়েছে।
আয়াতঃ 002.151
যেমন, আমি পাঠিয়েছি তোমাদেরই মধ্য থেকে তোমাদের জন্যে একজন রসূল, যিনি তোমাদের নিকট আমার বাণীসমুহ পাঠ করবেন এবং তোমাদের পবিত্র করবেন; আর তোমাদের শিক্ষা দেবেন কিতাব ও তাঁর তত্ত্বজ্ঞান এবং শিক্ষা দেবেন এমন বিষয় যা কখনো তোমরা জানতে না।
Similarly (to complete My Blessings on you) We have sent among you a Messenger (Muhammad SAW) of your own, reciting to you Our Verses (the Qur’ân) and sanctifying you, and teaching you the Book (the Qur’ân) and the Hikmah (i.e. Sunnah, Islâmic laws and Fiqh – jurisprudence), and teaching you that which you used not to know.
كَمَا أَرْسَلْنَا فِيكُمْ رَسُولاً مِّنكُمْ يَتْلُو عَلَيْكُمْ آيَاتِنَا وَيُزَكِّيكُمْ وَيُعَلِّمُكُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَيُعَلِّمُكُم مَّا لَمْ تَكُونُواْ تَعْلَمُونَ
Kama arsalna feekum rasoolan minkum yatloo AAalaykum ayatina wayuzakkeekum wayuAAallimukumu alkitaba waalhikmata wayuAAallimukum ma lam takoonoo taAAlamoona
YUSUFALI: A similar (favour have ye already received) in that We have sent among you a Messenger of your own, rehearsing to you Our Signs, and sanctifying you, and instructing you in Scripture and Wisdom, and in new knowledge.
PICKTHAL: Even as We have sent unto you a messenger from among you, who reciteth unto you Our revelations and causeth you to grow, and teacheth you the Scripture and wisdom, and teacheth you that which ye knew not.
SHAKIR: Even as We have sent among you a Messenger from among you who recites to you Our communications and purifies you and teaches you the Book and the wisdom and teaches you that which you did not know.
KHALIFA: (Blessings) such as the sending of a messenger from among you to recite our revelations to you, purify you, teach you the scripture and wisdom, and to teach you what you never knew.
১৫০। সুতরাং তুমি যেখান থেকেই বের হও না কেন, মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাও। আর যেখানেই তোমরা থাক না কেন এর দিকেই তোমাদের মুখ ফিরাবে। এটা এ জন্য যে, দুষ্ট লোকেরা ব্যতীত তোমাদের বিরুদ্ধে বিতর্ক করার কারও কোনও ভিত্তি না থাকে। অতএব, তোমরা তাদেরকে ভয় করো না, ভয় করবে আমাকে। যেনো আমি তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ পূর্ণ করতে পারি এবং যাতে তোমরা হেদায়েত প্রাপ্ত হতে পার।
১৫১। যেমন [অনুগ্রহ তোমরা ইতিমধ্যে পেয়েছ যে], তোমাদের মধ্য থেকেই তোমাদের প্রতি রাসূল প্রেরণ করেছি ১৫৫। যে তোমাদের নিকট আমার আয়াতসমূহ আবৃত্তি করে, তোমাদের পরিশুদ্ধ করে, এবং তোমাদের কিতাব ও প্রজ্ঞা এবং নূতন জ্ঞান শিক্ষা দেয়।
১৫৫। এই [২:২৫১] আয়াতটি [২:১৫০] আয়াতের শেষ অংশরূপে পরিগণিত করা যায়। সুতরাং সম্পূর্ণ অর্থ হৃদয়ঙ্গম করতে হলে দুটো [১৫০ ও ১৫১] আয়াত এক সাথে পড়া প্রয়োজন। এখানে কাবাকে কিব্লা করার স্বপক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করা হচ্ছে, কাবাকে কিব্লা করার মাধ্যমে আল্লাহ্ আমাদের ধর্মকে সম্পূর্ণ করে দিচ্ছেন এবং সেই সাথে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর প্রার্থনাও মঞ্জুর করে দিচ্ছেন। হযরত ইব্রাহীমের প্রার্থনা ছিল তিনটি। প্রথমটি ছিল মক্কা হবে পবিত্র নগরী [২:১২৬], দ্বিতীয়টি হচ্ছে সেখানে সত্যিকারের মুসলমানদের উদ্ভব হবে এবং কাবা শরীফ হচ্ছে পরহেযগারদের জন্য Sanctuary [২:১২৮] এবং তৃতীয়টি হচ্ছে আরবদের মধ্যে যেনো নবী প্রেরণ করা হয় যার গুণাবলী পৃথিবীকে উদ্ভাসিত করবে [২:১২৯]। এই আয়াতটিতে উপরিউক্ত কথাগুলিরই পুনরাবৃত্তি করে শেষ করা হয়েছে।
আয়াতঃ 002.152
সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদের স্মরণ রাখবো এবং আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর; অকৃতজ্ঞ হয়ো না।
Therefore remember Me (by praying, glorifying, etc.). I will remember you, and be grateful to Me (for My countless Favours on you) and never be ungrateful to Me.
فَاذْكُرُونِي أَذْكُرْكُمْ وَاشْكُرُواْ لِي وَلاَ تَكْفُرُونِ
Faothkuroonee athkurkum waoshkuroo lee wala takfurooni
YUSUFALI: Then do ye remember Me; I will remember you. Be grateful to Me, and reject not Faith.
PICKTHAL: Therefore remember Me, I will remember you. Give thanks to Me, and reject not Me.
SHAKIR: Therefore remember Me, I will remember you, and be thankful to Me, and do not be ungrateful to Me.
KHALIFA: You shall remember Me, that I may remember you, and be thankful to Me; do not be unappreciative.
১৫২। সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ কর ১৫৬। আমিও তোমাদের স্মরণ করবো। আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হও এবং ঈমানকে প্রত্যাখান করো না।
১৫৬। ‘জিকির’ কথাটির অনুবাদ করা হয়েছে স্মরণ করা। স্মরণ কর কথাটির দ্বারা জিকির শব্দটির পূর্ণাঙ্গভাব প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আরবী জিকির শব্দটি বিভিন্ন ভাবের প্রকাশ করে। আমাদের ধর্মে জিকির শব্দটি ব্যবহার হয় (১) স্মরণ অর্থে (২) প্রশংসা অর্থে (৩) অনুশীলন অর্থে (৪) [To celebrate or commemorate] উদ্যাপন অর্থে (৫) গুরুত্ব দেওয়া অর্থে ও (৬) ভক্তি ও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে আনন্দ লাভ করা অর্থে ইত্যাদি। অর্থাৎ আল্লাহ্র নামকে ভক্তির সাথে, শ্রদ্ধার সাথে, কৃতজ্ঞতার সাথে, জীবনের প্রতিটি অবস্থায় স্মরণ করার নামই হচ্ছে জিকির করা। সুখ-দুঃখ, আনন্দ-ব্যাথা, সাফল্য-ব্যর্থতা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহ্র নাম স্মরণে আনন্দ পাওয়ার নামই হচ্ছে জিকির।
আয়াতঃ 002.153
হে মুমিন গন! তোমরা ধৈর্য্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চিতই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন।
O you who believe! Seek help in patience and As-Salât (the prayer). Truly! Allâh is with As-Sâbirin (the patient ones, etc.).
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اسْتَعِينُواْ بِالصَّبْرِ وَالصَّلاَةِ إِنَّ اللّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
Ya ayyuha allatheena amanoo istaAAeenoo bialssabri waalssalati inna Allaha maAAa alssabireena
YUSUFALI: O ye who believe! seek help with patient perseverance and prayer; for Allah is with those who patiently persevere.
PICKTHAL: O ye who believe! Seek help in steadfastness and prayer. Lo! Allah is with the steadfast.
SHAKIR: O you who believe! seek assistance through patience and prayer; surely Allah is with the patient.
KHALIFA: O you who believe, seek help through steadfastness and the Contact Prayers (Salat). GOD is with those who steadfastly persevere.
রুকু – ১৯
১৫৩। হে বিশ্বাসীগণ! ধৈর্য্য, অধ্যাবসায় ও প্রার্থনার মাধ্যমে [আল্লাহ্র] সাহায্য প্রার্থনা কর ১৫৭। যারা ধৈর্য্যরে সাথে অধ্যাবসায়ী হয়, আল্লাহ্ তাদের সাথে থাকেন।
১৫৭। আয়াত [২ : ৪৫] এ সব্র কথাটির গূঢ় অর্থ সংশ্লিষ্ট টিকাতে আলোচনা করা হয়েছে। এখানে সব্র কথাটির অন্য আর একটি অর্থ সংযোজন করা হয়েছে যার অর্থ আত্ম সংযম। হাক্কানী তাঁর তাফসীরে আত্ম সংযমকে এভাবে বর্ণনা করেছেন যে ভয়, রাগ বা লোভ-লালসা থেকে নিজেকে সংযত রাখা। সব্র হচ্ছে ধৈর্য্য, অধ্যাবসায়, আত্ম সংযম এবং চরিত্রের দৃঢ়তা যাদের চরিত্রে এসব গুণের সমাবেশ ঘটে অর্থাৎ আল্লাহ্র উপরে ভরসা করে যে সব্র ধারণ করে আল্লাহ্ বলেছেন আল্লাহ্ তাদের সাথে থাকেন। এর থেকে বড় পুরস্কার বান্দার জীবনে আর কি হতে পারে? সেই সর্বশক্তিমানের সান্নিধ্যের চেয়ে মুসলমানের জীবনে আর চাওয়ার কি আছে?
আয়াতঃ 002.154
আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা বুঝ না।
And say not of those who are killed in the Way of Allâh, ”They are dead.” Nay, they are living, but you perceive (it) not.
وَلاَ تَقُولُواْ لِمَنْ يُقْتَلُ فِي سَبيلِ اللّهِ أَمْوَاتٌ بَلْ أَحْيَاء وَلَكِن لاَّ تَشْعُرُونَ
Wala taqooloo liman yuqtalu fee sabeeli Allahi amwatun bal ahyaon walakin la tashAAuroona
YUSUFALI: And say not of those who are slain in the way of Allah: “They are dead.” Nay, they are living, though ye perceive (it) not.
PICKTHAL: And call not those who are slain in the way of Allah “dead.” Nay, they are living, only ye perceive not.
SHAKIR: And do not speak of those who are slain in Allah’s way as dead; nay, (they are) alive, but you do not perceive.
KHALIFA: Do not say of those who are killed in the cause of GOD, “They are dead.” They are alive at their Lord, but you do not perceive.
১৫৪। আল্লাহ্র পথে যারা নিহত হয়, তাদের মৃত বলো না ১৫৮। বরং তারা জীবিত, যদিও তোমরা [তা] উপলব্ধি করতে পার না।
১৫৮। ‘ধৈর্য্য, অধ্যবসায় এবং প্রার্থনা’ যা পূর্ববর্তী আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। এর অর্থ এই নয় যে জীবন বিমুখতা। বরং এর অর্থ ঠিক উল্টো। এর অর্থ হচ্ছে সোচ্চার ভাবে শক্তভাবে হাল ধরে মিথ্যার বিরুদ্ধে, সত্যের জন্য যুদ্ধ করা। কারণ সত্যের জন্য যুদ্ধ করাই হচ্ছে আল্লাহ্র জন্য যুদ্ধ করা। আল্লাহ্র রাস্তায় যুদ্ধ করার অর্থ ধন-সম্পদ, আপন-জন, সুখ-সুবিধা, সর্বস্ব ত্যাগ করা, সত্যকে প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করা। সত্যের জন্য সংগ্রামে অনেক বড় ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। এমনও হয় যে সারা জীবনের কর্মফলকে ত্যাগ করতে হয়। ত্যাগ করতে হয় অর্থ-সম্পদ, মান-সম্মান, যশ-প্রতিপত্তি, সামাজিক প্রতিষ্ঠা এমনকি অনেক সময় সমাজের চোখে, সাধারণ মানুষের চোখে নিজেকে হেয় প্রতিপন্ন হতে হয়। তবুও সবকিছুর পরিবর্তে বান্দা যখন আনন্দ চিত্তে, সন্তুষ্টির সাথে শুধুমাত্র সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে, তখন তার এই আপাতঃ ক্ষতি আর ক্ষতি থাকে না। আধ্যাত্মিক জগতে বান্দা পায় আসল পুরস্কার। যারা সত্যের জন্য সংগ্রাম করে এই সংগ্রামে যদি তারা নিজেদের জীবন বিসর্জন দেয় তবুও তা বৃথা যায় না। তারা মানুষের ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে থাকে। তারা হয় অমর। আর এই সংগ্রামে বান্দা অর্থ-সম্পদ, মান-সম্মান যা তারা হারায়-সত্যিকার অর্থে তারা তা হারায় না। পৃথিবীর আর্থিক ক্ষতির বিনিময়ে আল্লাহ্ বান্দার সম্মুখে আধ্যাত্মিক জগতের দ্বার উন্মুক্ত করে দেন। আমরা মহামানবদের জীবন থেকে এই শিক্ষা পাই-তাদের সংগ্রাম তাদের মৃত্যুর পরও অমর হয়ে আছে। তারা মৃত নন। আবার সত্যের জন্য আত্মত্যাগ মানব সমাজের একটি বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবে থাকতে পারে, যে আত্মত্যাগের দ্বারা মানুষ যুগে যুগে উপকৃত হয়। ইসলাম এই আত্মনিবেদনকে উৎসাহিত করে।
আয়াতঃ 002.155
এবং অবশ্যই আমি তোমাদিগকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও সবরকারীদের।
And certainly, We shall test you with something of fear, hunger, loss of wealth, lives and fruits, but give glad tidings to As-Sâbirin (the patient ones, etc.).
وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوفْ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الأَمَوَالِ وَالأنفُسِ وَالثَّمَرَاتِ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ
Walanabluwannakum bishay-in mina alkhawfi waaljooAAi wanaqsin mina al-amwali waal-anfusi waalththamarati wabashshiri alssabireena
YUSUFALI: Be sure we shall test you with something of fear and hunger, some loss in goods or lives or the fruits (of your toil), but give glad tidings to those who patiently persevere,
PICKTHAL: And surely We shall try you with something of fear and hunger, and loss of wealth and lives and crops; but give glad tidings to the steadfast,
SHAKIR: And We will most certainly try you with somewhat of fear and hunger and loss of property and lives and fruits; and give good news to the patient,
KHALIFA: We will surely test you through some fear, hunger, and loss of money, lives, and crops. Give good news to the steadfast.
১৫৫। নিশ্চিত থেকো, আমি তোমাদের ভয়, ক্ষুধা, সম্পদ, জীবন অথবা [পরিশ্রমের] ফলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা পরীক্ষা করবো। কিন্তু যারা ধৈর্য্যের সাথে অধ্যাবসায়ীয় হয়, তাদের শুভ সংবাদ দাও ১৫৯।
১৫৯। এখানে সুসংবাদ যার অর্থ আল্লাহ্র রহমত। ঠিক এই একই কথা অন্য ভাষায় বলা হয়েছে [২:১৫৩] আয়াতে। সেখানে বলা হয়েছে আল্লাহ্ তাদের সাথে থাকবেন। এর থেকে বড় পুরস্কার পরহেজগার বান্দার জন্য আর কী হতে পারে।
আয়াতঃ 002.156
যখন তারা বিপদে পতিত হয়, তখন বলে, নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাবো।
Who, when afflicted with calamity, say: ”Truly! To Allâh we belong and truly, to Him we shall return.”
الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُم مُّصِيبَةٌ قَالُواْ إِنَّا لِلّهِ وَإِنَّـا إِلَيْهِ رَاجِعونَ
Allatheena itha asabat-hum museebatun qaloo inna lillahi wa-inna ilayhi rajiAAoona
YUSUFALI: Who say, when afflicted with calamity: “To Allah We belong, and to Him is our return”:-
PICKTHAL: Who say, when a misfortune striketh them: Lo! we are Allah’s and lo! unto Him we are returning.
SHAKIR: Who, when a misfortune befalls them, say: Surely we are Allah’s and to Him we shall surely return.
KHALIFA: When an affliction befalls them, they say, “We belong to GOD, and to Him we are returning.”
১৫৬। যারা বিপদ-বিপর্যয় দ্বারা আক্রান্ত হলে বলে, “আমরা তো আল্লাহ্রই অধিকারভূক্ত এবং তাঁর দিকেই আমাদের প্রত্যাবর্তন।”
১৫৭। এরাই তারা যাদের প্রতি তাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে আশীর্বাদ ও অনুগ্রহ বর্ষিত হয়। এবং এরাই তারা যারা সৎপথের নির্দেশ লাভ করে।
১৫৮। দেখো! সাফা ও মারওয়া আল্লাহ্র [প্রতীক] নিদর্শনসমূহের অন্তর্গত ১৬০। সুতরাং যে কেহ কাবা গৃহে ১৬১ হজ্ব ও ওমরা সম্পন্ন করে, তারা এ দুটিকে প্রদক্ষিণ করবে, এতে কোন পাপ নাই। যদি কেহ সৎ কাজের আবেগকে মেনে চলে, তবে নিশ্চিত হও, আল্লাহ্ [সৎ কাজকে] চিনতে পারেন ও সব জানেন ১৬২।
১৬০। আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাসের সাথে ধৈর্য্য ও অধ্যবসায় গুণ দু’টি আল্লাহ্ প্রতীকের মাধ্যমে এখানে বর্ণনা করেছেন সাফা ও মারওয়া দুটি ছোট ছোট পাহাড় যা মক্কা নগরীর অন্তর্ভূক্ত এবং যার খুব নিকটেই যম্যম্ কূপ অবস্থিত এই পাহাড় দুটি ধৈর্য্য ও অধ্যাবসায়ের প্রতীক। এর সম্বন্ধে পূর্বেই বর্ণনা করা হয়েছে। টিকা ১২৩-এ।
প্যাগান আরবেরা এখান মূর্তি স্থাপন করেছিল। ফলে নওমুসলিমরা হজ্বের সময়ে এখানে দৌড়াদৌড়ি করতে ইতঃস্তত করছিল। অবশ্য তাদের একটা কথা অনুধাবন করা উচিত ছিল যে পবিত্র কাবা ঘর [আল্লাহ্র ঘর] মূর্তি দ্বারা ভর্তি ছিল এবং আল্লাহর রাসূল তা পরিষ্কার করে সেখানে আল্লাহ্র ইবাদতের প্রতিষ্ঠা করেন।
এখানে শিক্ষণীয় হচ্ছে, পবিত্র জিনিষের অপবিত্র ব্যবহার হয়ে যেতে পারে। তাই বলে, আমরা সেই পবিত্র জিনিষকে ত্যাগ করতে পারি না। যা পারি তা হচ্ছে তাকে শুদ্ধ করে তার স্বস্থানে স্থাপন করতে। অর্থাৎ সত্য মিথ্যা দ্বারা আবৃত হতে পারে। যেমন-সূর্য মেঘে ঢেকে গেলে সূর্য সূর্যই থাকে। সেরকম সত্য মিথ্যা দ্বারা আবৃত্ত হলেও সত্য প্রকাশ পাবেই। সে রকম যদি আমাদের কাজের উদ্দেশ্য এবং আমাদের জীবন যদি পবিত্র হয়, পৃথিবীর আর কেউই তার মূল্য দিক বা না দিক আল্লাহ্ তার মূল্য দেবেনই।
১৬১। ‘The House’ পবিত্র মসজিদ বলতে কাবা ঘরকেই বোঝানো হয়েছে। পবিত্র হজ্বব্রত পালনের সময়ে যিলহজ্ব মাসের ৯ম দিনে আরাফাতের ময়দানে যেতে হয় এবং তারপর কাবা ঘরকে প্রদক্ষিণ করতে হয়। হজ্বের সময় ব্যতীত অন্য সময়ে কাবা ঘর প্রদক্ষিণ করাকে বলে ওমরা করা। ওমরা করার নিয়মাবলী ও হজ্বের নিয়মাবলী প্রায় একই শুধু ওমরার সময়ে আরাফাতের ময়দানে যেতে হয় না। তবে সাফা মারওয়া দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। সাফা মারওয়া মুসলিম ধর্মে এক মাইলফলক। এর দ্বারা আল্লাহ্র প্রতি নির্ভরশীলার সাথে যে গুণ দুটির জন্য সাফা ও মারওয়া প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে তা হলো ধৈর্য্য, অধ্যাবসায়। আল্লাহ্র প্রতি নির্ভরশীলতা, ধৈর্য্য ও অধ্যবসায় এই হচ্ছে প্রকৃত মোমেন বান্দাদের চরিত্রের প্রধান ও অন্যতম গুণাবলী।
১৬২। আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনও কাজ করা উচিত নয়। তীব্র আবেগে মানুষের ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় বিচারের ক্ষমতা লোপ পায়। সুতরাং তীব্র আবেগের বশবর্তী হয়ে কারও ক্ষতি করা বা কোনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া উচিত নয়। কিন্তু এখানে আল্লাহ্ বলেছেন যদি তীব্র আবেগ ভালর জন্য হয়, মানুষের মঙ্গলের জন্য হয়, তবে তা করা উচিত। সমাজ বা মানুষের ভয়ে তা ত্যাগ করা উচিত নয়। আমরা যদি নিশ্চিতভাবে জানি যে আবেগ ও অনুভূতি আমাদের সুপথে চালিত করছে-আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে মানুষের বা সমাজের ভয়ে তা ত্যাগ না করে আল্লাহ্র উপরে নির্ভর করে তার সন্তুষ্টির জন্য তা সম্পাদন করা। একেই বলা হচ্ছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে।
আয়াতঃ 002.157
তারা সে সমস্ত লোক, যাদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হেদায়েত প্রাপ্ত।
They are those on whom are the Salawât (i.e. blessings, etc.) (i.e. who are blessed and will be forgiven) from their Lord, and (they are those who) receive His Mercy, and it is they who are the guided-ones.
أُولَـئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَوَاتٌ مِّن رَّبِّهِمْ وَرَحْمَةٌ وَأُولَـئِكَ هُمُ الْمُهْتَدُونَ
Ola-ika AAalayhim salawatun min rabbihim warahmatun waola-ika humu almuhtadoona
YUSUFALI: They are those on whom (Descend) blessings from Allah, and Mercy, and they are the ones that receive guidance.
PICKTHAL: Such are they on whom are blessings from their Lord, and mercy. Such are the rightly guided.
SHAKIR: Those are they on whom are blessings and mercy from their Lord, and those are the followers of the right course.
KHALIFA: These have deserved blessings from their Lord and mercy. These are the guided ones.
১৫৬। যারা বিপদ-বিপর্যয় দ্বারা আক্রান্ত হলে বলে, “আমরা তো আল্লাহ্রই অধিকারভূক্ত এবং তাঁর দিকেই আমাদের প্রত্যাবর্তন।”
১৫৭। এরাই তারা যাদের প্রতি তাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে আশীর্বাদ ও অনুগ্রহ বর্ষিত হয়। এবং এরাই তারা যারা সৎপথের নির্দেশ লাভ করে।
১৫৮। দেখো! সাফা ও মারওয়া আল্লাহ্র [প্রতীক] নিদর্শনসমূহের অন্তর্গত ১৬০। সুতরাং যে কেহ কাবা গৃহে ১৬১ হজ্ব ও ওমরা সম্পন্ন করে, তারা এ দুটিকে প্রদক্ষিণ করবে, এতে কোন পাপ নাই। যদি কেহ সৎ কাজের আবেগকে মেনে চলে, তবে নিশ্চিত হও, আল্লাহ্ [সৎ কাজকে] চিনতে পারেন ও সব জানেন ১৬২।
১৬০। আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাসের সাথে ধৈর্য্য ও অধ্যবসায় গুণ দু’টি আল্লাহ্ প্রতীকের মাধ্যমে এখানে বর্ণনা করেছেন সাফা ও মারওয়া দুটি ছোট ছোট পাহাড় যা মক্কা নগরীর অন্তর্ভূক্ত এবং যার খুব নিকটেই যম্যম্ কূপ অবস্থিত এই পাহাড় দুটি ধৈর্য্য ও অধ্যাবসায়ের প্রতীক। এর সম্বন্ধে পূর্বেই বর্ণনা করা হয়েছে। টিকা ১২৩-এ।
প্যাগান আরবেরা এখান মূর্তি স্থাপন করেছিল। ফলে নওমুসলিমরা হজ্বের সময়ে এখানে দৌড়াদৌড়ি করতে ইতঃস্তত করছিল। অবশ্য তাদের একটা কথা অনুধাবন করা উচিত ছিল যে পবিত্র কাবা ঘর [আল্লাহ্র ঘর] মূর্তি দ্বারা ভর্তি ছিল এবং আল্লাহর রাসূল তা পরিষ্কার করে সেখানে আল্লাহ্র ইবাদতের প্রতিষ্ঠা করেন।
এখানে শিক্ষণীয় হচ্ছে, পবিত্র জিনিষের অপবিত্র ব্যবহার হয়ে যেতে পারে। তাই বলে, আমরা সেই পবিত্র জিনিষকে ত্যাগ করতে পারি না। যা পারি তা হচ্ছে তাকে শুদ্ধ করে তার স্বস্থানে স্থাপন করতে। অর্থাৎ সত্য মিথ্যা দ্বারা আবৃত হতে পারে। যেমন-সূর্য মেঘে ঢেকে গেলে সূর্য সূর্যই থাকে। সেরকম সত্য মিথ্যা দ্বারা আবৃত্ত হলেও সত্য প্রকাশ পাবেই। সে রকম যদি আমাদের কাজের উদ্দেশ্য এবং আমাদের জীবন যদি পবিত্র হয়, পৃথিবীর আর কেউই তার মূল্য দিক বা না দিক আল্লাহ্ তার মূল্য দেবেনই।
১৬১। ‘The House’ পবিত্র মসজিদ বলতে কাবা ঘরকেই বোঝানো হয়েছে। পবিত্র হজ্বব্রত পালনের সময়ে যিলহজ্ব মাসের ৯ম দিনে আরাফাতের ময়দানে যেতে হয় এবং তারপর কাবা ঘরকে প্রদক্ষিণ করতে হয়। হজ্বের সময় ব্যতীত অন্য সময়ে কাবা ঘর প্রদক্ষিণ করাকে বলে ওমরা করা। ওমরা করার নিয়মাবলী ও হজ্বের নিয়মাবলী প্রায় একই শুধু ওমরার সময়ে আরাফাতের ময়দানে যেতে হয় না। তবে সাফা মারওয়া দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। সাফা মারওয়া মুসলিম ধর্মে এক মাইলফলক। এর দ্বারা আল্লাহ্র প্রতি নির্ভরশীলার সাথে যে গুণ দুটির জন্য সাফা ও মারওয়া প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে তা হলো ধৈর্য্য, অধ্যাবসায়। আল্লাহ্র প্রতি নির্ভরশীলতা, ধৈর্য্য ও অধ্যবসায় এই হচ্ছে প্রকৃত মোমেন বান্দাদের চরিত্রের প্রধান ও অন্যতম গুণাবলী।
১৬২। আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনও কাজ করা উচিত নয়। তীব্র আবেগে মানুষের ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় বিচারের ক্ষমতা লোপ পায়। সুতরাং তীব্র আবেগের বশবর্তী হয়ে কারও ক্ষতি করা বা কোনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া উচিত নয়। কিন্তু এখানে আল্লাহ্ বলেছেন যদি তীব্র আবেগ ভালর জন্য হয়, মানুষের মঙ্গলের জন্য হয়, তবে তা করা উচিত। সমাজ বা মানুষের ভয়ে তা ত্যাগ করা উচিত নয়। আমরা যদি নিশ্চিতভাবে জানি যে আবেগ ও অনুভূতি আমাদের সুপথে চালিত করছে-আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে মানুষের বা সমাজের ভয়ে তা ত্যাগ না করে আল্লাহ্র উপরে নির্ভর করে তার সন্তুষ্টির জন্য তা সম্পাদন করা। একেই বলা হচ্ছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে।
আয়াতঃ 002.158
নিঃসন্দেহে সাফা ও মারওয়া আল্লাহ তা’আলার নিদর্শন গুলোর অন্যতম। সুতরাং যারা কা’বা ঘরে হজ্ব বা ওমরাহ পালন করে, তাদের পক্ষে এ দুটিতে প্রদক্ষিণ করাতে কোন দোষ নেই। বরং কেউ যদি স্বেচ্ছায় কিছু নেকীর কাজ করে, তবে আল্লাহ তা’আলার অবশ্যই তা অবগত হবেন এবং তার সে আমলের সঠিক মুল্য দেবেন।
Verily! As-Safâ and Al-Marwah (two mountains in Makkah) are of the Symbols of Allâh. So it is not a sin on him who perform Hajj or ’Umrah (pilgrimage) of the House (the Ka’bah at Makkah) to perform the going (Tawâf) between them (As-Safâ and Al-Marwah). And whoever does good voluntarily, then verily, Allâh is All-Recogniser, All-Knower.
إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِن شَعَآئِرِ اللّهِ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَن يَطَّوَّفَ بِهِمَا وَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَإِنَّ اللّهَ شَاكِرٌ عَلِيمٌ
Inna alssafa waalmarwata min shaAAa-iri Allahi faman hajja albayta awi iAAtamara fala junaha AAalayhi an yattawwafa bihima waman tatawwaAAa khayran fa-inna Allaha shakirun AAaleemun
YUSUFALI: Behold! Safa and Marwa are among the Symbols of Allah. So if those who visit the House in the Season or at other times, should compass them round, it is no sin in them. And if any one obeyeth his own impulse to good,- be sure that Allah is He Who recogniseth and knoweth.
PICKTHAL: Lo! (the mountains) As-Safa and Al-Marwah are among the indications of Allah. It is therefore no sin for him who is on pilgrimage to the House (of Allah) or visiteth it, to go around them (as the pagan custom is). And he who doeth good of his own accord, (for him) lo! Allah is Responsive, Aware.
SHAKIR: Surely the Safa and the Marwa are among the signs appointed by Allah; so whoever makes a pilgrimage to the House or pays a visit (to it), there is no blame on him if he goes round them both; and whoever does good spontaneously, then surely Allah is Grateful, Knowing.
KHALIFA: The knolls of Safa and Marwah are among the rites decreed by GOD. Anyone who observes Hajj or `Umrah commits no error by traversing the distance between them. If one volunteers more righteous works, then GOD is Appreciative, Omniscient.
১৫৬। যারা বিপদ-বিপর্যয় দ্বারা আক্রান্ত হলে বলে, “আমরা তো আল্লাহ্রই অধিকারভূক্ত এবং তাঁর দিকেই আমাদের প্রত্যাবর্তন।”
১৫৭। এরাই তারা যাদের প্রতি তাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে আশীর্বাদ ও অনুগ্রহ বর্ষিত হয়। এবং এরাই তারা যারা সৎপথের নির্দেশ লাভ করে।
১৫৮। দেখো! সাফা ও মারওয়া আল্লাহ্র [প্রতীক] নিদর্শনসমূহের অন্তর্গত ১৬০। সুতরাং যে কেহ কাবা গৃহে ১৬১ হজ্ব ও ওমরা সম্পন্ন করে, তারা এ দুটিকে প্রদক্ষিণ করবে, এতে কোন পাপ নাই। যদি কেহ সৎ কাজের আবেগকে মেনে চলে, তবে নিশ্চিত হও, আল্লাহ্ [সৎ কাজকে] চিনতে পারেন ও সব জানেন ১৬২।
১৬০। আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাসের সাথে ধৈর্য্য ও অধ্যবসায় গুণ দু’টি আল্লাহ্ প্রতীকের মাধ্যমে এখানে বর্ণনা করেছেন সাফা ও মারওয়া দুটি ছোট ছোট পাহাড় যা মক্কা নগরীর অন্তর্ভূক্ত এবং যার খুব নিকটেই যম্যম্ কূপ অবস্থিত এই পাহাড় দুটি ধৈর্য্য ও অধ্যাবসায়ের প্রতীক। এর সম্বন্ধে পূর্বেই বর্ণনা করা হয়েছে। টিকা ১২৩-এ।
প্যাগান আরবেরা এখান মূর্তি স্থাপন করেছিল। ফলে নওমুসলিমরা হজ্বের সময়ে এখানে দৌড়াদৌড়ি করতে ইতঃস্তত করছিল। অবশ্য তাদের একটা কথা অনুধাবন করা উচিত ছিল যে পবিত্র কাবা ঘর [আল্লাহ্র ঘর] মূর্তি দ্বারা ভর্তি ছিল এবং আল্লাহর রাসূল তা পরিষ্কার করে সেখানে আল্লাহ্র ইবাদতের প্রতিষ্ঠা করেন।
এখানে শিক্ষণীয় হচ্ছে, পবিত্র জিনিষের অপবিত্র ব্যবহার হয়ে যেতে পারে। তাই বলে, আমরা সেই পবিত্র জিনিষকে ত্যাগ করতে পারি না। যা পারি তা হচ্ছে তাকে শুদ্ধ করে তার স্বস্থানে স্থাপন করতে। অর্থাৎ সত্য মিথ্যা দ্বারা আবৃত হতে পারে। যেমন-সূর্য মেঘে ঢেকে গেলে সূর্য সূর্যই থাকে। সেরকম সত্য মিথ্যা দ্বারা আবৃত্ত হলেও সত্য প্রকাশ পাবেই। সে রকম যদি আমাদের কাজের উদ্দেশ্য এবং আমাদের জীবন যদি পবিত্র হয়, পৃথিবীর আর কেউই তার মূল্য দিক বা না দিক আল্লাহ্ তার মূল্য দেবেনই।
১৬১। ‘The House’ পবিত্র মসজিদ বলতে কাবা ঘরকেই বোঝানো হয়েছে। পবিত্র হজ্বব্রত পালনের সময়ে যিলহজ্ব মাসের ৯ম দিনে আরাফাতের ময়দানে যেতে হয় এবং তারপর কাবা ঘরকে প্রদক্ষিণ করতে হয়। হজ্বের সময় ব্যতীত অন্য সময়ে কাবা ঘর প্রদক্ষিণ করাকে বলে ওমরা করা। ওমরা করার নিয়মাবলী ও হজ্বের নিয়মাবলী প্রায় একই শুধু ওমরার সময়ে আরাফাতের ময়দানে যেতে হয় না। তবে সাফা মারওয়া দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। সাফা মারওয়া মুসলিম ধর্মে এক মাইলফলক। এর দ্বারা আল্লাহ্র প্রতি নির্ভরশীলার সাথে যে গুণ দুটির জন্য সাফা ও মারওয়া প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে তা হলো ধৈর্য্য, অধ্যাবসায়। আল্লাহ্র প্রতি নির্ভরশীলতা, ধৈর্য্য ও অধ্যবসায় এই হচ্ছে প্রকৃত মোমেন বান্দাদের চরিত্রের প্রধান ও অন্যতম গুণাবলী।
১৬২। আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনও কাজ করা উচিত নয়। তীব্র আবেগে মানুষের ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় বিচারের ক্ষমতা লোপ পায়। সুতরাং তীব্র আবেগের বশবর্তী হয়ে কারও ক্ষতি করা বা কোনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া উচিত নয়। কিন্তু এখানে আল্লাহ্ বলেছেন যদি তীব্র আবেগ ভালর জন্য হয়, মানুষের মঙ্গলের জন্য হয়, তবে তা করা উচিত। সমাজ বা মানুষের ভয়ে তা ত্যাগ করা উচিত নয়। আমরা যদি নিশ্চিতভাবে জানি যে আবেগ ও অনুভূতি আমাদের সুপথে চালিত করছে-আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে মানুষের বা সমাজের ভয়ে তা ত্যাগ না করে আল্লাহ্র উপরে নির্ভর করে তার সন্তুষ্টির জন্য তা সম্পাদন করা। একেই বলা হচ্ছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে।
আয়াতঃ 002.159
নিশ্চয় যারা গোপন করে, আমি যেসব বিস্তারিত তথ্য এবং হেদায়েতের কথা নাযিল করেছি মানুষের জন্য কিতাবের মধ্যে বিস্তারিত বর্ণনা করার পরও; সে সমস্ত লোকের প্রতিই আল্লাহর অভিসম্পাত এবং অন্যান্য অভিসম্পাতকারীগণের ও।
Verily, those who conceal the clear proofs, evidences and the guidance, which We have sent down, after We have made it clear for the people in the Book, they are the ones cursed by Allâh and cursed by the cursers.
إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنزَلْنَا مِنَ الْبَيِّنَاتِ وَالْهُدَى مِن بَعْدِ مَا بَيَّنَّاهُ لِلنَّاسِ فِي الْكِتَابِ أُولَـئِكَ يَلعَنُهُمُ اللّهُ وَيَلْعَنُهُمُ اللَّاعِنُونَ
Inna allatheena yaktumoona ma anzalna mina albayyinati waalhuda min baAAdi ma bayyannahu lilnnasi fee alkitabi ola-ika yalAAanuhumu Allahu wayalAAanuhumu allaAAinoona
YUSUFALI: Those who conceal the clear (Signs) We have sent down, and the Guidance, after We have made it clear for the people in the Book,-on them shall be Allah’s curse, and the curse of those entitled to curse,-
PICKTHAL: Lo! Those who hide the proofs and the guidance which We revealed, after We had made it clear to mankind in the Scripture: such are accursed of Allah and accursed of those who have the power to curse.
SHAKIR: Surely those who conceal the clear proofs and the guidance that We revealed after We made it clear in the Book for men, these it is whom Allah shall curse, and those who curse shall curse them (too).
KHALIFA: Those who conceal our revelations and guidance, after proclaiming them for the people in the scripture, are condemned by GOD; they are condemned by all the condemners.
১৫৯। আমি যেসব সুস্পষ্ট [নিদর্শন] প্রেরণ করেছি তা এবং কিতাবী জাতিদের নিকট পথ নির্দেশ স্পষ্ট করার পরও, যারা তা গোপন করে, তাদের উপরে আল্লাহ্র অভিশাপ এবং অভিশাপকারীগণও তাদের অভিশাপ দেয় ১৬৩।
১৬৩। ‘Those entitled to curse’ অভিশাপকারীগণ অর্থাৎ ফেরেশ্তা ও মানব গোষ্ঠীর কথা বলা হয়েছে যারা অভিশাপ দেয়ার ক্ষমতা রাখেন। [২:১৬১] এই আয়াতে বলা হয়েছে যারা অভিশপ্ত তারা আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও রহমত থেকে বঞ্চিত হবে। সেই সাথে বঞ্চিত হবে ফেরেশ্তা ও বৃহত্তর মানবগোষ্ঠীর শুভাশীষ থেকে। কারণ তারা আল্লাহ্কে অস্বীকার করার ফলে নিজের আত্মার উপরে অত্যাচার করে। আল্লাহ্ মানুষের আত্মাকে পুতঃ এবং পবিত্র করে সৃষ্টি করেছেন। মানুষের আত্মা আল্লাহ্র রুহুর অংশবিশেষ [১৫:২৯]। অবিশ্বাসের দ্বারা আত্মার পবিত্রতা কলুষিত হয়ে যায়। কলুষিত আত্মা মহান স্রষ্টার অনুগ্রহ লাভে ব্যর্থ হয় ফলে অন্ধকারে আচ্ছাদিত হয়। আল্লাহ্র সান্নিধ্য আত্মাকে করে আলোকিত, পরিতৃপ্ত, শান্ত এবং জ্ঞানী। অপর পক্ষে যারা ইচ্ছাকৃতভাবে আল্লাহ্কে অস্বীকার করে, তাদের আত্মা হয় পথভ্রান্ত, উদভ্রান্ত, অন্ধকারে আচ্ছন্ন ও বিচলিত। পৃথিবীর জ্ঞান, বিজ্ঞান তাদের মানসিক এই অবস্থার [State of mind] পরিবর্তন করতে পারে না। এই অবস্থায়ই হচ্ছে অভিশপ্ত অবস্থা।
আয়াতঃ 002.160
তবে যারা তওবা করে এবং বর্ণিত তথ্যাদির সংশোধন করে মানুষের কাছে তা বর্ণনা করে দেয়, সে সমস্ত লোকের তওবা আমি কবুল করি এবং আমি তওবা কবুলকারী পরম দয়ালু।
Except those who repent and do righteous deeds, and openly declare (the truth which they concealed). These, I will accept their repentance. And I am the One Who accepts repentance, the Most Merciful.
إِلاَّ الَّذِينَ تَابُواْ وَأَصْلَحُواْ وَبَيَّنُواْ فَأُوْلَـئِكَ أَتُوبُ عَلَيْهِمْ وَأَنَا التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
Illa allatheena taboo waaslahoo wabayyanoo faola-ika atoobu AAalayhim waana alttawwabu alrraheemu
YUSUFALI: Except those who repent and make amends and openly declare (the Truth): To them I turn; for I am Oft-returning, Most Merciful.
PICKTHAL: Except those who repent and amend and make manifest (the truth). These it is toward whom I relent. I am the Relenting, the Merciful.
SHAKIR: Except those who repent and amend and make manifest (the truth), these it is to whom I turn (mercifully); and I am the Oft-returning (to mercy), the Merciful.
KHALIFA: As for those who repent, reform, and proclaim, I redeem them. I am the Redeemer, Most Merciful.
১৬০। কিন্তু যারা অনুতাপের মাধ্যমে নিজেকে সংশোধন করে এবং প্রকাশ্যে [সত্যকে] ঘোষণা করে, আমি তাদের তওবা কবুল করি, কারণ আমি বার বার তওবা গ্রহণকারী, পরম দয়ালু।
১৬১। যারা ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে এবং কাফিররূপে মারা যায়, তাদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত এবং ফেরেশ্তাগণ ও সকল মানুষের অভিসম্পাত।
১৬২। তারা সে অবস্থায় স্থায়ী হবে ১৬৪, তাদের শাস্তি লঘু করা হবে না, তাদের [ভাগ্যে] কোন অবসরও দেয়া হবে না।
১৬৪। ‘অভিশাপ’ এটা শুধুমাত্র মুখের কথা নয়। অভিশপ্ত হচ্ছে আত্মার এক বিশেষ অবস্থা। [State of mind] এই অবস্থা আল্লাহ্র অনুগ্রহের ঠিক উল্টো। আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও রহমত আত্মাকে অন্ধকার থেকে আলোর ভূবনে নিয়ে আসে। ফলে আত্মার মধ্যে জন্ম নেয় শান্তি, অন্তর্দৃষ্টি [Spiritual insight] এবং জ্ঞান ও প্রজ্ঞা (Wisdom) এরকম অবস্থায় বান্দার মধ্যে জন্ম নেয় ন্যায়-অন্যায় বোঝার ক্ষমতা, ভালকে মন্দ থেকে পার্থক্য করার ক্ষমতা, ফলে তিনি হন বিবেকবান এবং আল্লাহ্র রহমতের ফলে তার সমস্ত সত্তা শান্তিতে ভরে যায়। পৃথিবীর দুঃখ ব্যাথা, লোভ-লালসা, হিংসা-দ্বেষ কিছুই তাকে স্পর্শ করতে পারে না। অনাবিল শান্তি এবং আলোর ভূবনে হয় আত্মার অগ্রযাত্রা।
অভিশাপ প্রাপ্ত অবস্থা ঠিক এর বিপরীত। অনেকে মনে করে মুখে উচ্চারণ করলেই অভিশাপগ্রস্থ করা যায় কোনও ব্যক্তিকে, কিন্তু তা ঠিক নয়। তাই ইংরেজী প্রবাদ আছে, ‘Causeless curse will not come.’ কিন্তু যদি অত্যাচারী নিপীড়িত ব্যক্তি আল্লাহ্র কাছে এর প্রতিকার চায় তাহলে তার কান্না আল্লাহ্র আরসকে কাঁপিয়ে দেয়, ফলে অত্যাচারিত ব্যক্তির অভিশাপের ফলে অন্যায়কারী, অত্যাচারী ব্যক্তির উপর আল্লাহ্র রোষানল পতিত হয়। তারা আল্লাহ্র অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত হয়। অন্যায়কারী বা অত্যাচারী তার নিজের আত্মার উপরে অত্যাচার করে। ফলে আত্মার শান্তি হয় বিঘ্নিত। ঐ ব্যক্তি সর্বদা থাকে ভীত, সন্ত্রস্ত, বিচলিত, পৃথিবীর উপর সে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। এরাই হচ্ছে অভিশপ্ত আত্মা। এটা হচ্ছে এক ধরনের (State of mind) মানসিক অবস্থা।
আয়াতঃ 002.161
নিশ্চয় যারা কুফরী করে এবং কাফের অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করে, সে সমস্ত লোকের প্রতি আল্লাহর ফেরেশতাগনের এবং সমগ্র মানুষের লা’নত।
Verily, those who disbelieve, and die while they are disbelievers, it is they on whom is the Curse of Allâh and of the angels and of mankind, combined.
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَمَاتُوا وَهُمْ كُفَّارٌ أُولَئِكَ عَلَيْهِمْ لَعْنَةُ اللّهِ وَالْمَلآئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ
Inna allatheena kafaroo wamatoo wahum kuffarun ola-ika AAalayhim laAAnatu Allahi waalmala-ikati waalnnasi ajmaAAeena
YUSUFALI: Those who reject Faith, and die rejecting,- on them is Allah’s curse, and the curse of angels, and of all mankind;
PICKTHAL: Lo! Those who disbelieve, and die while they are disbelievers; on them is the curse of Allah and of angels and of men combined.
SHAKIR: Surely those who disbelieve and die while they are disbelievers, these it is on whom is the curse of Allah and the angels and men all;
KHALIFA: Those who disbelieve and die as disbelievers, have incurred the condemnation of GOD, the angels, and all the people (on the Day of Judgment).
১৬০। কিন্তু যারা অনুতাপের মাধ্যমে নিজেকে সংশোধন করে এবং প্রকাশ্যে [সত্যকে] ঘোষণা করে, আমি তাদের তওবা কবুল করি, কারণ আমি বার বার তওবা গ্রহণকারী, পরম দয়ালু।
১৬১। যারা ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে এবং কাফিররূপে মারা যায়, তাদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত এবং ফেরেশ্তাগণ ও সকল মানুষের অভিসম্পাত।
১৬২। তারা সে অবস্থায় স্থায়ী হবে ১৬৪, তাদের শাস্তি লঘু করা হবে না, তাদের [ভাগ্যে] কোন অবসরও দেয়া হবে না।
১৬৪। ‘অভিশাপ’ এটা শুধুমাত্র মুখের কথা নয়। অভিশপ্ত হচ্ছে আত্মার এক বিশেষ অবস্থা। [State of mind] এই অবস্থা আল্লাহ্র অনুগ্রহের ঠিক উল্টো। আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও রহমত আত্মাকে অন্ধকার থেকে আলোর ভূবনে নিয়ে আসে। ফলে আত্মার মধ্যে জন্ম নেয় শান্তি, অন্তর্দৃষ্টি [Spiritual insight] এবং জ্ঞান ও প্রজ্ঞা (Wisdom) এরকম অবস্থায় বান্দার মধ্যে জন্ম নেয় ন্যায়-অন্যায় বোঝার ক্ষমতা, ভালকে মন্দ থেকে পার্থক্য করার ক্ষমতা, ফলে তিনি হন বিবেকবান এবং আল্লাহ্র রহমতের ফলে তার সমস্ত সত্তা শান্তিতে ভরে যায়। পৃথিবীর দুঃখ ব্যাথা, লোভ-লালসা, হিংসা-দ্বেষ কিছুই তাকে স্পর্শ করতে পারে না। অনাবিল শান্তি এবং আলোর ভূবনে হয় আত্মার অগ্রযাত্রা।
অভিশাপ প্রাপ্ত অবস্থা ঠিক এর বিপরীত। অনেকে মনে করে মুখে উচ্চারণ করলেই অভিশাপগ্রস্থ করা যায় কোনও ব্যক্তিকে, কিন্তু তা ঠিক নয়। তাই ইংরেজী প্রবাদ আছে, ‘Causeless curse will not come.’ কিন্তু যদি অত্যাচারী নিপীড়িত ব্যক্তি আল্লাহ্র কাছে এর প্রতিকার চায় তাহলে তার কান্না আল্লাহ্র আরসকে কাঁপিয়ে দেয়, ফলে অত্যাচারিত ব্যক্তির অভিশাপের ফলে অন্যায়কারী, অত্যাচারী ব্যক্তির উপর আল্লাহ্র রোষানল পতিত হয়। তারা আল্লাহ্র অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত হয়। অন্যায়কারী বা অত্যাচারী তার নিজের আত্মার উপরে অত্যাচার করে। ফলে আত্মার শান্তি হয় বিঘ্নিত। ঐ ব্যক্তি সর্বদা থাকে ভীত, সন্ত্রস্ত, বিচলিত, পৃথিবীর উপর সে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। এরাই হচ্ছে অভিশপ্ত আত্মা। এটা হচ্ছে এক ধরনের (State of mind) মানসিক অবস্থা।
আয়াতঃ 002.162
এরা চিরকাল এ লা’নতের মাঝেই থাকবে। তাদের উপর থেকে আযাব কখনও হালকা করা হবে না বরং এরা বিরাম ও পাবে না।
They will abide therein (under the curse in Hell), their punishment will neither be lightened, nor will they be reprieved.
خَالِدِينَ فِيهَا لاَ يُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلاَ هُمْ يُنظَرُونَ
Khalideena feeha la yukhaffafu AAanhumu alAAathabu wala hum yuntharoona
YUSUFALI: They will abide therein: Their penalty will not be lightened, nor will respite be their (lot).
PICKTHAL: They ever dwell therein. The doom will not be lightened for them, neither will they be reprieved.
SHAKIR: Abiding in it; their chastisement shall not be lightened nor shall they be given respite.
KHALIFA: Eternally they abide therein. The retribution is never commuted for them, nor are they reprieved.
১৬০। কিন্তু যারা অনুতাপের মাধ্যমে নিজেকে সংশোধন করে এবং প্রকাশ্যে [সত্যকে] ঘোষণা করে, আমি তাদের তওবা কবুল করি, কারণ আমি বার বার তওবা গ্রহণকারী, পরম দয়ালু।
১৬১। যারা ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে এবং কাফিররূপে মারা যায়, তাদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত এবং ফেরেশ্তাগণ ও সকল মানুষের অভিসম্পাত।
১৬২। তারা সে অবস্থায় স্থায়ী হবে ১৬৪, তাদের শাস্তি লঘু করা হবে না, তাদের [ভাগ্যে] কোন অবসরও দেয়া হবে না।
১৬৪। ‘অভিশাপ’ এটা শুধুমাত্র মুখের কথা নয়। অভিশপ্ত হচ্ছে আত্মার এক বিশেষ অবস্থা। [State of mind] এই অবস্থা আল্লাহ্র অনুগ্রহের ঠিক উল্টো। আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও রহমত আত্মাকে অন্ধকার থেকে আলোর ভূবনে নিয়ে আসে। ফলে আত্মার মধ্যে জন্ম নেয় শান্তি, অন্তর্দৃষ্টি [Spiritual insight] এবং জ্ঞান ও প্রজ্ঞা (Wisdom) এরকম অবস্থায় বান্দার মধ্যে জন্ম নেয় ন্যায়-অন্যায় বোঝার ক্ষমতা, ভালকে মন্দ থেকে পার্থক্য করার ক্ষমতা, ফলে তিনি হন বিবেকবান এবং আল্লাহ্র রহমতের ফলে তার সমস্ত সত্তা শান্তিতে ভরে যায়। পৃথিবীর দুঃখ ব্যাথা, লোভ-লালসা, হিংসা-দ্বেষ কিছুই তাকে স্পর্শ করতে পারে না। অনাবিল শান্তি এবং আলোর ভূবনে হয় আত্মার অগ্রযাত্রা।
অভিশাপ প্রাপ্ত অবস্থা ঠিক এর বিপরীত। অনেকে মনে করে মুখে উচ্চারণ করলেই অভিশাপগ্রস্থ করা যায় কোনও ব্যক্তিকে, কিন্তু তা ঠিক নয়। তাই ইংরেজী প্রবাদ আছে, ‘Causeless curse will not come.’ কিন্তু যদি অত্যাচারী নিপীড়িত ব্যক্তি আল্লাহ্র কাছে এর প্রতিকার চায় তাহলে তার কান্না আল্লাহ্র আরসকে কাঁপিয়ে দেয়, ফলে অত্যাচারিত ব্যক্তির অভিশাপের ফলে অন্যায়কারী, অত্যাচারী ব্যক্তির উপর আল্লাহ্র রোষানল পতিত হয়। তারা আল্লাহ্র অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত হয়। অন্যায়কারী বা অত্যাচারী তার নিজের আত্মার উপরে অত্যাচার করে। ফলে আত্মার শান্তি হয় বিঘ্নিত। ঐ ব্যক্তি সর্বদা থাকে ভীত, সন্ত্রস্ত, বিচলিত, পৃথিবীর উপর সে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। এরাই হচ্ছে অভিশপ্ত আত্মা। এটা হচ্ছে এক ধরনের (State of mind) মানসিক অবস্থা।
আয়াতঃ 002.163
আর তোমাদের উপাস্য একইমাত্র উপাস্য। তিনি ছাড়া মহা করুণাময় দয়ালু কেউ নেই।
And your Ilâh (God) is One Ilâh (God – Allâh), Lâ ilâha illa Huwa (there is none who has the right to be worshipped but He), the Most Beneficent, the Most Merciful.
وَإِلَـهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ لاَّ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ
Wa-ilahukum ilahun wahidun la ilaha illa huwa alrrahmanu alrraheemu
YUSUFALI: And your Allah is One Allah: There is no god but He, Most Gracious, Most Merciful.
PICKTHAL: Your Allah is One Allah; there is no Allah save Him, the Beneficent, the Merciful.
SHAKIR: And your Allah is one Allah! there is no god but He; He is the Beneficent, the Merciful.
KHALIFA: Your god is one god; there is no god but He, Most Gracious, Most Merciful.
১৬৩। এবং তোমাদের আল্লাহ্ এক ও অদ্বিতীয়। তিনি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নাই। তিনি পরম করুণাময় ও দয়াময় ১৬৫।
১৬৫। এই আয়াতটির মর্মার্থ হচ্ছে, যখনই ইচ্ছাকৃতভাবে আল্লাহ্কে অস্বীকারকারী এবং অন্যায় অত্যাচারকারীদের সম্পর্কে আল্লাহ্র রোষানলের কথা বলা হয়েছে, তখনই আবার বান্দাকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে আল্লাহ্র রহমত (Grace) এবং করুণার (Mercy) কথা। এই আয়াতে আল্লাহ্র একত্বের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আয়াতটি শেষ করা হয়েছে। বিশ্ব প্রকৃতি, আকাশ-নভোমন্ডল সবই আপাতঃদৃষ্টিতে মনে হবে বিভিন্ন। কিন্তু যারা বিজ্ঞানের সাধক তারা জানেন বিশ্ব-প্রকৃতি, নভোমন্ডল সবই প্রকৃতির নিয়ম মেনে চলে। সে নিয়ম সবার জন্যই এক। যেমন-উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, বিজ্ঞান বলে মানুষ ও স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে বুদ্ধি জগতের দিক থেকে বিভিন্নতা থাকলেও শারীরিক (Physiology) কলাকৌশল এক। রক্ত সঞ্চালন প্রণালী, Digestive System ইত্যাদি মানুষ ও প্রাণীর একই প্রক্রিয়ায় কাজ করে। তাইতো বিজ্ঞানীরা কোনও নতুন ঔষধ মানুষের পূর্বে কোনও প্রাণীর উপরে পরীক্ষা করে নেয়। একই নিয়ম বিশ্ব চরাচরের সবার জন্য প্রযোজ্য। একই নিয়মের আওতায় পৃথিবী, শুক্র, বৃহস্পতি, চন্দ্র, সূর্য ইত্যাদি। এ সমস্তই একটি তত্ত্বের প্রতিই আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে যে সব কিছুই এক জনের দ্বারা সৃষ্টি। বিভিন্ন স্রষ্টা বিভিন্ন জিনিস সৃষ্টি করলে বিশ্বজগতের বিজ্ঞান এক সূত্রে গাঁথা হতো না। বিভিন্ন বস্তু বিভিন্ন নিয়মের সূত্রে গাঁথা হতো। ফলে প্রকৃতিতে অনিয়ম ও সংঘর্ষ ঘটতো প্রতিনিয়ত। কিন্তু আমরা দেখি আমাদের চারিপার্শ্বের বিশ্ব এক সূত্রে গাঁথা যা নির্দেশ করে স্রষ্টার একত্ব।
আয়াতঃ 002.164
নিশ্চয়ই আসমান ও যমীনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের বিবর্তনে এবং নদীতে নৌকাসমূহের চলাচলে মানুষের জন্য কল্যাণ রয়েছে। আর আল্লাহ তা’ আলা আকাশ থেকে যে পানি নাযিল করেছেন, তদ্দ্বারা মৃত যমীনকে সজীব করে তুলেছেন এবং তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সবরকম জীব-জন্তু। আর আবহাওয়া পরিবর্তনে এবং মেঘমালার যা তাঁরই হুকুমের অধীনে আসমান ও যমীনের মাঝে বিচরণ করে, নিশ্চয়ই সে সমস্ত বিষয়ের মাঝে নিদর্শন রয়েছে বুদ্ধিমান সম্প্রদায়ের জন্যে।
Verily! In the creation of the heavens and the earth, and in the alternation of night and day, and the ships which sail through the sea with that which is of use to mankind, and the water (rain) which Allâh sends down from the sky and makes the earth alive therewith after its death, and the moving (living) creatures of all kinds that He has scattered therein, and in the veering of winds and clouds which are held between the sky and the earth, are indeed Ayât (proofs, evidences, signs, etc.) for people of understanding.
إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَاخْتِلاَفِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَالْفُلْكِ الَّتِي تَجْرِي فِي الْبَحْرِ بِمَا يَنفَعُ النَّاسَ وَمَا أَنزَلَ اللّهُ مِنَ السَّمَاء مِن مَّاء فَأَحْيَا بِهِ الأرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَبَثَّ فِيهَا مِن كُلِّ دَآبَّةٍ وَتَصْرِيفِ الرِّيَاحِ وَالسَّحَابِ الْمُسَخِّرِ بَيْنَ السَّمَاء وَالأَرْضِ لآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ
Inna fee khalqi alssamawati waal-ardi waikhtilafi allayli waalnnahari waalfulki allatee tajree fee albahri bima yanfaAAu alnnasa wama anzala Allahu mina alssama-i min ma-in faahya bihi al-arda baAAda mawtiha wabaththa feeha min kulli dabbatin watasreefi alrriyahi waalssahabi almusakhkhari bayna alssama-i waal-ardi laayatin liqawmin yaAAqiloona
YUSUFALI: Behold! in the creation of the heavens and the earth; in the alternation of the night and the day; in the sailing of the ships through the ocean for the profit of mankind; in the rain which Allah Sends down from the skies, and the life which He gives therewith to an earth that is dead; in the beasts of all kinds that He scatters through the earth; in the change of the winds, and the clouds which they Trail like their slaves between the sky and the earth;- (Here) indeed are Signs for a people that are wise.
PICKTHAL: Lo! In the creation of the heavens and the earth, and the difference of night and day, and the ships which run upon the sea with that which is of use to men, and the water which Allah sendeth down from the sky, thereby reviving the earth after its death, and dispersing all kinds of beasts therein, and (in) the ordinance of the winds, and the clouds obedient between heaven and earth: are signs (of Allah’s Sovereignty) for people who have sense.
SHAKIR: Most surely in the creation of the heavens and the earth and the alternation of the night and the day, and the ships that run in the sea with that which profits men, and the water that Allah sends down from the cloud, then gives life with it to the earth after its death and spreads in it all (kinds of) animals, and the changing of the winds and the clouds made subservient between the heaven and the earth, there are signs for a people who understand.
KHALIFA: In the creation of the heavens and the earth, the alternation of night and day, the ships that roam the ocean for the benefit of the people, the water that GOD sends down from the sky to revive dead land and to spread in it all kinds of creatures, the manipulation of the winds, and the clouds that are placed between the sky and the earth, there are sufficient proofs for people who understand.
রুকু – ২০
১৬৪। দেখো! আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে এবং রাত্রি ও দিবসের পরিবর্তনে, সমুদ্রে বিচরণশীল জাহাজ যা মানুষের জন্য মুনাফা বয়ে আনে, আকাশ থেকে আল্লাহ্ যে বৃষ্টি প্রেরণ করেন এবং তার সাহায্যে তিনি যে মৃত ধরিত্রীকে পুনর্জীবিত করেন তাতে; পৃথিবীতে সকল প্রকার জীবজন্তুর বিস্তারণে; বায়ুপ্রবাহের পরিবর্তনে এবং সে মেঘমালা যাকে আকাশ ও পৃথিবীর মাঝে অনুগত করে রাখা হয়েছে; [এসবের মাঝে] অবশ্যই জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে ১৬৬।
১৬৬। এই সুন্দর আয়াতটি হিমালয় পর্বতের মত। সৌন্দর্যমন্ডিত কিন্তু সুউচ্চ ও দৃপ্ত। আয়াতটির বর্ণনা শুধু সৌন্দর্য্যমন্ডিতই নয়, আয়াতটি আমাদের পরিচালিত করে বৃহত্তর, সুন্দরতম জীবনের প্রতি। আয়াতটির উপমাগুলি অনুধাবনযোগ্য এবং সাহিত্য রসে সমৃদ্ধ। এই আয়াতে বলা হয়েছে আল্লাহ্ এক এবং অদ্বিতীয়। প্রকৃতির বিভিন্নতার মধ্যে তার নিদর্শন খুঁজে পাওয়া যায়। তার নির্দশন ছড়িয়ে আছে সর্বত্র-সৌন্দর্য্য, শক্তিতে এবং মানুষের প্রয়োজনীয় জিনিষে। এই সব নির্দশন দ্বারা আল্লাহ্ মানুষের বুদ্ধি এবং জ্ঞানকে উজ্জীবিত করতে চেয়েছেন। প্রথমে আয়াতটি আরম্ভ হয়েছে আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির মাহাত্ম্য দিয়ে। বিশাল আকাশ ও নভোমন্ডল মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে কিন্তু মানুষের চিন্তায় কল্পনায় সে অত্যন্ত কাছে। সৌন্দর্য্যমন্ডিত তারায় খচিত, চন্দ্রালোক শোভিত, প্রদীপ্ত সূর্যালোকিত মেঘে ঢাকা নীলাম্বর, আবার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ঋতুতে পৃথিবীর রং রূপের পরিবর্তন, সবই মানুষের চিন্তার দিগন্ত কল্পনার সীমানাকে ছাড়িয়ে যায়। আকাশ ও পৃথিবীর কি নিগূঢ় সম্পর্ক। কতদূরে সূর্যের অবস্থান তবুও পৃথিবীর দিনরাত্রির পরিবর্তনের সাথে তার কতই না নিবিড় সম্পর্ক। সৃষ্টির কি অপার রহস্য-দিন রাত্রির হ্রাস বৃদ্ধির সাথে সাথে পৃথিবীতে ঋতুর পরিবর্তন হয়। এক এক ঋতুতে প্রকৃতি এক এক সাজে সেজে ওঠে। আবার এই পরিবর্তনের ধারা সমগ্র পৃথিবীব্যাপী এক নয়। দ্রাঘিমাংশ পরিবর্তনের সাথে সাথে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান বিভিন্ন আবহাওয়া ধারণ করে। ফলে সে দেশের প্রকৃতিও বিভিন্ন হয়। স্রষ্টার সুনিপুণ কৌশলের জন্যই একই পৃথিবীতে আমরা হাজারো বৈচিত্র্যের সন্ধান পাই। ‘দিন ও রাত্রির পরিবর্তন, যা মানুষের হিত সাধন করে’-আল্লাহ্ দিনকে সৃষ্টি করেছেন মানুষের রুজী রোজগারের জন্য আর রাতকে সৃষ্টি করেছেন বিশ্রামের জন্য। এই আয়াতে কাজ এবং রুজী রোজগারের বর্ণনার মধ্যে একটি সুন্দর উপমার সাহায্য নেওয়া হয়েছে। যেমন অসীম সমুদ্রে হেলে দুলে চলেছে নৌযান সম্পূর্ণ এক দেশ থেকে আর এক দেশে। বাণিজ্য জাহাজ দেশে দেশে, মানুষে-মানুষে বন্ধনের প্রতীক, যোগাযোগের মাধ্যম। এভাবে চিন্তা করলে পৃথিবীর সমুদ্র বা জলভাগ, স্থলভাগ থেকে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। আবার এই আয়াতে আল্লাহ্ বৃষ্টিকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন দেয়া-নেয়ার সম্পর্কের সাথে। আকাশ সমুদ্রের পানিকে গ্রহণ করে মেঘরূপে, আবার পৃথিবী সেই পানি গ্রহণ করে বৃষ্টিরূপে আবার সেই বৃষ্টির পানি পৃথিবী সমুদ্রকে ফিরিয়ে দেয় নদীর মাধ্যমে। এটাকে বিজ্ঞানীরা ‘পানি চক্র’ নামে অভিহিত করে। তবে এটা কি স্রষ্টার সৃষ্টির এক অপূর্ব কৌশল নয়? একই পানি চক্রাকারে প্রবাহিত হচ্ছে কিন্তু পরিণতিতে পৃথিবী ফুলে, ফলে ফসলে সমৃদ্ধ হচ্ছে-নদী সকল নাব্যতা রক্ষা করছে। শীতের শুষ্কতায় বৃক্ষ তরুলতা মৃত প্রায় হয়ে গেলে বৃষ্টির পানিতে মৃত প্রায় পৃথিবী আবার সজীব হয়ে উঠে। নদী সকল ব্যবসা বাণিজ্য ও যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করতে পারে। আল্লাহ্ পৃথিবীব্যাপী ছড়ানো তার নির্দশন সমূহের প্রতি ইঙ্গিত করতে যেয়ে বলেছেন, ‘আল্লাহ্ পৃথিবীব্যাপী বহুধরণের জীব জন্তু সৃষ্টি করেছেন। বিশাল ডাইনোসর থেকে অনুজীব এবং ভাইরাস যা অনুবীক্ষণ যন্ত্রেও দেখা সম্ভব নয়। সবই আল্লাহ্র সৃষ্টি। এর প্রতিটিতেই স্রষ্টার সৃষ্টি কৌশল বিদ্যমান। আল্লাহ্ মানুষকে চিন্তা করতে বলেছেন তাকে অনুধাবন করতে বলেছেন তার সৃষ্টির রহস্য কৌশলের মধ্য দিয়ে। তিনি যে কত বড় কর্মকার, কত বড় শিল্পী, কত বড় বিজ্ঞানী তার অনুধাবন করতে হলে অবশ্যই প্রত্যেককে বিজ্ঞান জানতে হবে। জ্ঞানী হতে হবে। আল্লাহ্ বলেছেন তাকিয়ে দেখ-কিভাবে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে বাতাসের গতিবেগের পরিবর্তন হয়। কখনও বাতাস উত্তর দিক থেকে কখনও দক্ষিণ দিক থেকে প্রবাহিত হয়। এর ফলে সমুদ্রের জলরাশি মেঘ হয়ে ভেসে ভেসে কোনও দেশে শীতে কোনও দেশে গ্রীষ্মে বৃষ্টিপাত ঘটায়। পৃথিবীকে সজীব রাখার আল্লাহ্র এ এক অপূর্ব কৌশল। প্রাচীনকালে যখন কলের জাহাজ আবিষ্কার হয় নাই, নাবিকেরা এই বাতাসের উপর নির্ভর করে সমুদ্র যাত্রা করতো, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতো, এক দেশের সভ্যতা অন্য দেশে প্রসার লাভ করতো। এখানে আল্লাহ্ বলেছেন মেঘ যেনো আকাশ, পৃথিবী ও বাতাসের দাস হিসেবে কাজ করে। শুধু তাই-ই নয় মেঘকে আল্লাহ্ সৃষ্টি করেছেন শুধুমাত্র বৃষ্টির জন্য নয়। প্রচণ্ড দাব-দাহে মেঘ আমাদের ছায়া দান করে, সূর্যাস্তের সময়ে পশ্চিম আকাশে মেঘের রংয়ের খেলা কাকে না মুগ্ধ করে? আল্লাহ্ বলেছেন তাঁকে অনুধাবন করতে হলে তাঁর সৃষ্টিকে জানতে হবে। তবেই তার অপার জ্ঞানের, করুণার নিদর্শনের একটু মাত্র কণা আমরা অনুধাবন করতে পারবো। ফলে আমাদের হৃদয়ে তাঁর করুণার জন্য ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা জন্মাবে। শুধুমাত্র মৌখিকভাবে তাঁকে স্মরণ করে তাকে ভালবাসা যায় না, তার যোগ্য সম্মান জানানো যায় না। নিরাকার আল্লাহ্কে হৃদয়ে অনুভব করতে হলে তাঁর সৃষ্টিকে অনুধাবনের মাধ্যমেই তা করা সম্ভব।
আয়াতঃ 002.165
আর কোন লোক এমনও রয়েছে যারা অন্যান্যকে আল্লাহর সমকক্ষ সাব্যস্ত করে এবং তাদের প্রতি তেমনি ভালবাসা পোষণ করে, যেমন আল্লাহর প্রতি ভালবাসা হয়ে থাকে। কিন্তু যারা আল্লাহর প্রতি ঈমানদার তাদের ভালবাসা ওদের তুলনায় বহুগুণ বেশী। আর কতইনা উত্তম হ’ত যদি এ জালেমরা পার্থিব কোন কোন আযাব প্রত্যক্ষ করেই উপলব্ধি করে নিত যে, যাবতীয় ক্ষমতা শুধুমাত্র আল্লাহরই জন্য এবং আল্লাহর আযাবই সবচেয়ে কঠিনতর।
And of mankind are some who take (for worship) others besides Allâh as rivals (to Allâh). They love them as they love Allâh. But those who believe, love Allâh more (than anything else). If only, those who do wrong could see, when they will see the torment, that all power belongs to Allâh and that Allâh is Severe in punishment.
وَمِنَ النَّاسِ مَن يَتَّخِذُ مِن دُونِ اللّهِ أَندَاداً يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللّهِ وَالَّذِينَ آمَنُواْ أَشَدُّ حُبًّا لِّلّهِ وَلَوْ يَرَى الَّذِينَ ظَلَمُواْ إِذْ يَرَوْنَ الْعَذَابَ أَنَّ الْقُوَّةَ لِلّهِ جَمِيعاً وَأَنَّ اللّهَ شَدِيدُ الْعَذَابِ
Wamina alnnasi man yattakhithu min dooni Allahi andadan yuhibboonahum kahubbi Allahi waallatheena amanoo ashaddu hubban lillahi walaw yara allatheena thalamoo ith yarawna alAAathaba anna alquwwata lillahi jameeAAan waanna Allaha shadeedu alAAathabi
YUSUFALI: Yet there are men who take (for worship) others besides Allah, as equal (with Allah): They love them as they should love Allah. But those of Faith are overflowing in their love for Allah. If only the unrighteous could see, behold, they would see the penalty: that to Allah belongs all power, and Allah will strongly enforce the penalty.
PICKTHAL: Yet of mankind are some who take unto themselves (objects of worship which they set as) rivals to Allah, loving them with a love like (that which is the due) of Allah (only) – those who believe are stauncher in their love for Allah – Oh, that those who do evil had but known, (on the day) when they behold the doom, that power belongeth wholly to Allah, and that Allah is severe in punishment!
SHAKIR: And there are some among men who take for themselves objects of worship besides Allah, whom they love as they love Allah, and those who believe are stronger in love for Allah and O, that those who are unjust had seen, when they see the chastisement, that the power is wholly Allah’s and that Allah is severe in requiting (evil).
KHALIFA: Yet, some people set up idols to rival GOD, and love them as if they are GOD. Those who believe love GOD the most. If only the transgressors could see themselves when they see the retribution! They will realize then that all power belongs to GOD alone, and that GOD’s retribution is awesome.
১৬৫। তথাপি কিছু লোক আছে যারা [এবাদতের জন্য] আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কিছুকে [আল্লাহ্র] সমকক্ষ রূপে গ্রহণ করে। আল্লাহ্কে যেরূপ ভালবাসা উচিত তারা এদের সেরূপ ভালবাসে। কিন্তু যারা ঈমান এনেছে, তারা আল্লাহ্র প্রতি ভালবাসায় সুদৃঢ়। পাপীদের যদি দেখার ক্ষমতা থাকতো তবে তারা শাস্তিকে প্রত্যক্ষ করতে পারতো। [তারা বুঝতো] সকল শক্তি [শুধুমাত্র] আল্লাহ্রই হাতে। আল্লাহ্ কঠোরভাবে শাস্তি বলবৎ করবেন ১৬৭।
১৬৭। আমাদের চারিপাশের বিশ্ব-জগতের দিকে আমরা যদি লক্ষ্য করি তাহলেই আমরা বুঝতে পারবো সমস্ত সৃষ্টিই এক স্রষ্টার সৃষ্টি। বিজ্ঞানের একই নিয়ম বা তত্ত্ব সকলেই অনুসরণ করে। তার করুণা ধারায় সকলেই সঞ্জীবিত। যারা বিশ্বাসী এবং পরহেজগার তারা সৃষ্টির সমস্ত কিছুর মধ্যেই স্রষ্টার অস্তিত্ব অনুভব করতে পারে। কিন্তু যারা অবিশ্বাসী তারা এই সহজ সত্যটি অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়। অবিশ্বাসী এই অর্থে যে, তারা অনেকে ইচ্ছাকৃতভাবে আল্লাহ্র অস্তিত্বকে অস্বীকার করে, অনেকে মুখে মুখে আল্লাহ্কে স্বীকার করে কিন্তু তাদের অন্তর অন্য জিনিষের বন্দনা করে, এরাও অবিশ্বাসীদের অন্তর্ভূক্ত। বিশ্বাসীদের অন্তর সর্বদা আল্লাহ্র প্রতি ভালবাসায় পরিপূর্ণ থাকে। তারা এই বিশ্বজগতের সব কিছুতেই আল্লাহ্র হাতের স্পর্শ অনুভব করে, তাঁর রহমতের সন্ধান পায়। কিন্তু অবিশ্বাসীদের অন্তরে বিভিন্ন জিনিষ পূজনীয় বিষয় হিসেবে স্থান পায়। এইসব পূজনীয় বিষয় যে সবসমযে মূর্তি বা বিগ্রহ হবে এমন কোনও কথা নাই। মূর্তি বা বিগ্রহকে যারা পূঁজা করে তাদের সহজেই সনাক্ত করা সম্ভব। কিন্তু এছাড়াও যে সব বস্তুকে অবিশ্বাসীরা আল্লাহ্র সমকক্ষরূপে পরিগণিত করে তাকে এভাবে বর্ণনা করা যায় –
(১) নিজের কাল্পনিক সৃষ্টিকে সে স্রষ্টার উপরে স্থান দেয়। যেমন-অনেক উচ্চ শিক্ষিত বুদ্ধিমান ব্যক্তি আছেন যারা নাস্তিক, তাদের উপাস্য হচ্ছে বিজ্ঞান বা শিল্প বা সাহিত্য। এর মাঝেই তারা আত্মার পরিপূর্ণতা খুঁজে পেতে চায়। তাদের ধ্যান ধারণা সবই নিজেকে ঘিরে, নিজের সৃষ্টিকে ঘিরে আবর্তিত হয়। সেখানে বিশ্ব স্রষ্টার কোনও স্থান নাই। তারা ভুলে যায় যে আল্লাহ্ তাকে বিশেষ নেয়ামতে ধন্য করেছেন মানুষের সেবা করার জন্য। এখানে আত্ম অহংকার বা আত্মপূঁজার কোনও স্থান নাই।
(২) আর এক ধরনের লোক আছে যারা আল্লাহ্র আসনে বসায় তাদের নেতাকে। এই নেতা রাজনৈতিক হতে পারে [যেমন-লেলিন ছিলেন কমুনিষ্ট সোভিয়েত রাশিয়ায়] আবার ধর্মীয় হতে পারে। এখানে ধর্মীয় নেতা অর্থাৎ আমাদের দেশের পীর পূঁজার সংস্কৃতির কথা বলতে চাচ্ছি। এই সব পীর তাদের ভক্তদের এক আল্লাহ্র আসন থেকে নিজেদের সেই আসনে অধিষ্ঠিত করেছে এবং ভক্তদের সব মুশকিল আসানের মালিক বলে দাবী করে। আবার আর এক ধরণের পৌত্তলিকতা আমাদের সমাজে আসন গেড়ে বসেছে তা হচ্ছে ‘মাজার পূঁজা’ আল্লাহ্র কাছে কোনও শুভকাজে অনুমতি না চেয়ে কোন বিপদে সাহায্য না চেয়ে মাজারে যেয়ে জিয়ারত করে শুভ কাজ শুরু করা হয় বা বিপদে সাহায্য চাওয়া হয়।
(৩) তৃতীয় আর এক ধরনের লোক আছে যারা শয়তানের পূঁজারী। এরা মানুষকে বিপথে পরিচালিত করে। ফলে এরা অন্যায়, অসত্যকে আকড়ে ধরে এবং এর দ্বারা ইহলৌকিক উন্নতিকে জীবনের পরম পাওয়া বলে গণ্য করে। কিন্তু আল্লাহ্ পরিষ্কার ভাবে বলেছেন যে মৃত্যুর পর প্রতিটি মানুষের জ্ঞান চক্ষু উন্মীলন করা হবে। তারা যাদের পূঁজা করতো সেই পূঁজনীয় বস্তু তার ভক্তদের ত্যাগ করবে।
আয়াতঃ 002.166
অনুসৃতরা যখন অনুসরণকারীদের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে যাবে এবং যখন আযাব প্রত্যক্ষ করবে আর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে তাদের পারস্পরিক সমস্ত সম্পর্ক।
When those who were followed, disown (declare themselves innocent of) those who followed (them), and they see the torment, then all their relations will be cut off from them.
إِذْ تَبَرَّأَ الَّذِينَ اتُّبِعُواْ مِنَ الَّذِينَ اتَّبَعُواْ وَرَأَوُاْ الْعَذَابَ وَتَقَطَّعَتْ بِهِمُ الأَسْبَابُ
Ith tabarraa allatheena ittubiAAoo mina allatheena ittabaAAoo waraawoo alAAathaba wataqattaAAat bihimu al-asbabu
YUSUFALI: Then would those who are followed clear themselves of those who follow (them) : They would see the penalty, and all relations between them would be cut off.
PICKTHAL: (On the day) when those who were followed disown those who followed (them), and they behold the doom, and all their aims collapse with them.
SHAKIR: When those who were followed shall renounce those who followed (them), and they see the chastisement and their ties are cut asunder.
KHALIFA: Those who were followed will disown those who followed them. They will see the retribution, and all ties among them will be severed.
১৬৬। যাদের অনুসরণ করা হয়েছিলো, তারা অনুসারীগণ থেকে নিজেদের যখন মুক্ত করবে, তারা [অনুসারীগণ] তখন শাস্তিকে প্রত্যক্ষ করবে এবং এদের মধ্যকার সকল সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে।
১৬৭। যারা অনুসরণ করেছিলো, তারা বলবে, ‘যদি আমাদের আর একবার সুযোগ দেয়া হতো আমরা তাদের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করতাম, তারা যেরূপ আমাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।’ এরূপেই আল্লাহ্ তাদের কাজের [পরিণামকে] আক্ষেপের বিষয়রূপে দেখাবেন। তাদের জন্য আগুন থেকে বের হওয়ার কোন উপায় থাকবে না ১৬৮।
১৬৮। দেখুন [৩:১৫৬], [৮:৩৬], [১৯:৩৯], [৬৯:৫০], [২৫:২৩]। মৃত্যুর পরে আমাদের কৃতকর্মের ফলাফল হবে অপরিবর্তনীয়। অবিশ্বাসীরা পরলোকে অনুতাপের অনলে দগ্ধ হতে থাকবে যা থেকে তাদের মুক্তি ঘটবে না।
আয়াতঃ 002.167
এবং অনুসারীরা বলবে, কতইনা ভাল হত, যদি আমাদিগকে পৃথিবীতে ফিরে যাবার সুযোগ দেয়া হত। তাহলে আমরাও তাদের প্রতি তেমনি অসন্তুষ্ট হয়ে যেতাম, যেমন তারা অসন্তুষ্ট হয়েছে আমাদের প্রতি। এভাবেই আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে দেখাবেন তাদের কৃতকর্ম তাদেরকে অনুতপ্ত করার জন্যে। অথচ, তারা কস্মিনকালেও আগুন থেকে বের হতে পারবে না।
And those who followed will say: ”If only we had one more chance to return (to the worldly life), we would disown (declare ourselves as innocent from) them as they have disowned (declared themselves as innocent from) us.” Thus Allâh will show them their deeds as regrets for them. And they will never get out of the Fire .
وَقَالَ الَّذِينَ اتَّبَعُواْ لَوْ أَنَّ لَنَا كَرَّةً فَنَتَبَرَّأَ مِنْهُمْ كَمَا تَبَرَّؤُواْ مِنَّا كَذَلِكَ يُرِيهِمُ اللّهُ أَعْمَالَهُمْ حَسَرَاتٍ عَلَيْهِمْ وَمَا هُم بِخَارِجِينَ مِنَ النَّارِ
Waqala allatheena ittabaAAoo law anna lana karratan fanatabarraa minhum kama tabarraoo minna kathalika yureehimu Allahu aAAmalahum hasaratin AAalayhim wama hum bikharijeena mina alnnari
YUSUFALI: And those who followed would say: “If only We had one more chance, We would clear ourselves of them, as they have cleared themselves of us.” Thus will Allah show them (The fruits of) their deeds as (nothing but) regrets. Nor will there be a way for them out of the Fire.
PICKTHAL: And those who were but followers will say: If a return were possible for us, we would disown them even as they have disowned us. Thus will Allah show them their own deeds as anguish for them, and they will not emerge from the Fire.
SHAKIR: And those who followed shall say: Had there been for us a return, then we would renounce them as they have renounced us. Thus will Allah show them their deeds to be intense regret to them, and they shall not come forth from the fire.
KHALIFA: Those who followed will say, “If we can get another chance, we will disown them, as they have disowned us now.” GOD thus shows them the consequences of their works as nothing but remorse; they will never exit Hell.
১৬৬। যাদের অনুসরণ করা হয়েছিলো, তারা অনুসারীগণ থেকে নিজেদের যখন মুক্ত করবে, তারা [অনুসারীগণ] তখন শাস্তিকে প্রত্যক্ষ করবে এবং এদের মধ্যকার সকল সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে।
১৬৭। যারা অনুসরণ করেছিলো, তারা বলবে, ‘যদি আমাদের আর একবার সুযোগ দেয়া হতো আমরা তাদের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করতাম, তারা যেরূপ আমাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।’ এরূপেই আল্লাহ্ তাদের কাজের [পরিণামকে] আক্ষেপের বিষয়রূপে দেখাবেন। তাদের জন্য আগুন থেকে বের হওয়ার কোন উপায় থাকবে না ১৬৮।
১৬৮। দেখুন [৩:১৫৬], [৮:৩৬], [১৯:৩৯], [৬৯:৫০], [২৫:২৩]। মৃত্যুর পরে আমাদের কৃতকর্মের ফলাফল হবে অপরিবর্তনীয়। অবিশ্বাসীরা পরলোকে অনুতাপের অনলে দগ্ধ হতে থাকবে যা থেকে তাদের মুক্তি ঘটবে না।
আয়াতঃ 002.168
হে মানব মন্ডলী, পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র বস্তু-সামগ্রী ভক্ষন কর। আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। সে নিঃসন্দেহে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
O mankind! Eat of that which is lawful and good on the earth, and follow not the footsteps of Shaitân (Satan). Verily, he is to you an open enemy.
يَا أَيُّهَا النَّاسُ كُلُواْ مِمَّا فِي الأَرْضِ حَلاَلاً طَيِّباً وَلاَ تَتَّبِعُواْ خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
Ya ayyuha alnnasu kuloo mimma fee al-ardi halalan tayyiban wala tattabiAAoo khutuwati alshshaytani innahu lakum AAaduwwun mubeenun
YUSUFALI: O ye people! Eat of what is on earth, Lawful and good; and do not follow the footsteps of the evil one, for he is to you an avowed enemy.
PICKTHAL: O mankind! Eat of that which is lawful and wholesome in the earth, and follow not the footsteps of the devil. Lo! he is an open enemy for you.
SHAKIR: O men! eat the lawful and good things out of what is in the earth, and do not follow the footsteps of the Shaitan; surely he is your open enemy.
KHALIFA: O people, eat from the earth’s products all that is lawful and good, and do not follow the steps of Satan; he is your most ardent enemy.
রুকু – ২১
১৬৮। হে মানবজাতি! পৃথিবীতে যা কিছু বৈধ ও পবিত্র খাদ্যবস্তু রয়েছে, তা থেকে আহার কর ১৬৯। এবং শয়তানের পদ চিহ্ন অনুসরণ করো না। অবশ্যই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
১৬৯। এই আয়াতটি খাদ্য বস্তুর হালাল সম্পর্কে সতর্ক করে আরম্ভ করা হয়েছে। প্রথমে [২: ১৬৮-৭১] বিশ্ববাসীকে সম্বোধন করা হয়েছে। হতে পারে তারা মুসলিম বা পৌত্তলিক বা কিতাবধারী জাতি। আল্লাহ্র এ আহবান জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের জন্য। আয়াত [২:১৭২-৭৩]এ বিশেষভাবে মুসলমানদের আহবান করা হয়েছে। তারপর [২:১৭৪-৭৬] তাদেরই সম্বোধন করা হয়েছে যারা ধর্মে আনুষ্ঠানিকতার উপরে খুব বেশি গুরুত্ব দেয় এবং ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করে এরাই আমাদের সমাজের মৌলবাদীরূপে পরিচিত। এরা প্রকৃত ধর্মের প্রাণ থেকে বহুদূরে। আবার আর এক শ্রেণীর কথা বলা হয়েছে যারা কোনও নিয়ম কানুনে বিশ্বাস করে না, এরা আমাদের সমাজে প্রগতিশীল বলে দাবী করে। কিন্তু ইসলাম হচ্ছে মধ্যপথ অবলম্বী। সুন্দর, সুস্থ সমাজে অবশ্যই কিছু ধরা বাঁধা নিয়ম-কানুন থাকবে। এই নিয়ম কানুন সমাজের সকল সদস্য-সদস্যাদের মঙ্গলার্থে সৃষ্টি এবং এই নিয়ম কানুন সম্পর্কে সমাজের সকল সদস্য-সদস্যাদের আন্তরিকতা থাকবে তা মানার জন্য। তবেই একটা Homogeneous (সমপ্রকৃতি) সমাজ হওয়া সম্ভব। তবে এখানে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন যে, এই সব নিয়ম-কানুন যেনো বাড়াবাড়িতে না পৌছাঁয় [২:১৭৬]। [পবিত্র বা Good : Taiyib=Pure, Clean, Wholesome, nourishing, pleasing to taste] সুতরাং নিয়ম-কানুন বা ধর্মের আনুষ্ঠানিকতা বা আইন তা যদি সুস্থ, সুন্দর ও সমাজের বৃহত্তর মঙ্গলের জন্য হয় তবে তাই-ই হচ্ছে ধর্মের আসল আনুষ্ঠানিকতা। কারণ ধর্মের আনুষ্ঠানিকতার সৃষ্টি করেছেন স্রষ্টা মানব গোষ্ঠীর বৃহত্তর কল্যাণের জন্য। তবে আনুষ্ঠানিকতা কখনও ধর্ম নয়। যে আনুষ্ঠানিকতা বা নিয়ম-কানুন সমাজকে এগিয়ে নেয়, মানব সভ্যতায় স্রষ্টার কাছাকাছি হতে সাহায্য করে এবং সমাজের মঙ্গলের জন্য সৃষ্টি তাই-ই স্রষ্টার মনোনীত। সুতরাং সাধারণ নীতি হচ্ছে, যা ইসলামী আইন দ্বারা সিক্ত করেছে এবং যা ভালো এবং সমাজ ও মানুষের মঙ্গলের জন্য তা অনুসরণ যোগ্য এবং যা মন্দ, লজ্জ্বাজনক, যা সমাজের মঙ্গল বিধান করে না তা পরিহার করতে হবে। ধর্মের নামে অনেক অপব্যাখ্যা চালু হয়েছে আমাদের সমাজে, উদ্ভব হয়েছে মৌলবাদীদের; ভ্রান্ত ধারণার সৃষ্টি হয়েছে আমাদের সমাজের মৌলবাদী মুসলিমদের যেমন উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, ‘মেয়েদের ঘরে আবদ্ধ রাখলেই ইসলাম রক্ষিত হবে।’ আবার সমাজের অনেককে দেখা যায় বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় বিশ্বাসী যার সাথে ধর্মের কোন সম্পর্ক নাই যেমন মাজার পূঁজা ও ভাগ্য গণনায় বিশ্বাস করা ও পাথর ধারণ করা, বিশেষ ধরণের পোষাক পরিধান করা ইত্যাদি।
আয়াতঃ 002.169
সে তো এ নির্দেশই তোমাদিগকে দেবে যে, তোমরা অন্যায় ও অশ্লীল কাজ করতে থাক এবং আল্লাহর প্রতি এমন সব বিষয়ে মিথ্যারোপ কর যা তোমরা জান না।
[Shaitân (Satan)] commands you only what is evil and Fahshâ (sinful), and that you should say against Allâh what you know not.
إِنَّمَا يَأْمُرُكُمْ بِالسُّوءِ وَالْفَحْشَاء وَأَن تَقُولُواْ عَلَى اللّهِ مَا لاَ تَعْلَمُونَ
Innama ya/murukum bialssoo-i waalfahsha-i waan taqooloo AAala Allahi ma la taAAlamoona
YUSUFALI: For he commands you what is evil and shameful, and that ye should say of Allah that of which ye have no knowledge.
PICKTHAL: He enjoineth upon you only the evil and the foul, and that ye should tell concerning Allah that which ye know not.
SHAKIR: He only enjoins you evil and indecency, and that you may speak against Allah what you do not know.
KHALIFA: He only commands you to commit evil and vice, and to say about GOD what you do not know.
১৬৯। সে তোমাদের মন্দ ও অশ্লীল কাজের নির্দেশ দেয় এবং আল্লাহ্ সম্বন্ধে তোমাদের যে জ্ঞান নাই এমন সব বিষয়ে বলার জন্য নির্দেশ দেয়।
১৭০। যখন তাদের বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যে প্রত্যাদেশ দিয়েছেন তা অনুসরণ কর’; তারা বলে, ‘না! আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদের পথ অনুসরণ করবো।’ কি! যদিও তাদের পিতৃপুরুষগণ ছিলো প্রজ্ঞাবিহীন এবং তারা সঠিক পথে পরিচালিত ছিলো না তথাপিও ?
১৭১। যারা ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে, তাদের উপমা হচ্ছে ভেড়ার পালের ন্যায়-যারা শুধু হাঁকডাক ও চিৎকার ব্যতীত কিছুই শোনে না ১৭০। [এরা হচ্ছে] বধির, বোবা ও অন্ধ ১৭১। [সুতরাং] তারা হচ্ছে জ্ঞান ও প্রজ্ঞাবিহীন।
১৭০। যারা আল্লাহ্র অস্তিত্বে বিশ্বাসী নয়, তাদের আত্মায় স্বর্গীয় আলো প্রবেশের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। এ সেই আলো যা মানুষের আত্মাকে বিবেক, জ্ঞানে ও প্রজ্ঞায় সমৃদ্ধ করে। এ জ্ঞান দানের ক্ষমতা একমাত্র সর্বশক্তিমান ব্যতীত আর কারও নাই বিশ্বজগতে। ফলে অবিশ্বাসী ব্যক্তি ধর্মীয় জীবন যাপন পদ্ধতির মাধ্যমে অমিয় শান্তির বাণী হৃদয়ঙ্গম করতে অক্ষম হয়। এই ব্যক্তির উপমা হচ্ছে গরু ও ভেড়ার পালের মত। যেমন-গরুর পাল বা ভেড়ার পাল কিছুই বোঝে না, দেখে না, শোনে না। দেখে না শোনে না এই অর্থে যে তারা শুধু মাত্র রাখালের চিৎকার দ্বারা পরিচালিত হয়। রাস্তার বা পথের ভাল-মন্দ বা চিৎকার বা শব্দের বিভিন্ন ধ্বনি (অর্থাৎ আদর বা রাগ) কিছুরই পার্থক্য করতে এরা অপারগ। সেই রকম যে ব্যক্তি আল্লাহ্তে বিশ্বাসী নয়, তার হৃদয় বিবেকের আলো বা অন্তর্দৃষ্টি লাভে অক্ষম। অন্তর্দৃষ্টি না থাকার দরুণ চক্ষু থাকলেও কোনও ঘটনার গূঢ় অর্থ অনুধাবনে হবে ব্যর্থ, কান থাকলেও স্রষ্টার বাণীর গূঢ় অর্থ সে হৃদয়ঙ্গম করতে হবে ব্যর্থ। ‘They are void of wisdom’.
১৭১। আয়াত [২:১৮] তে বলা হয়েছে যে যারা আল্লাহ্কে অস্বীকার করে ‘তারা হবে বধির, বোবা এবং অন্ধ’। তারা আর কখনও সুপথে আসবে না। যেহেতু তারা স্রষ্টাকে অস্বীকার করে, সুতরাং তারা আত্মার মূল উৎপত্তিকে অস্বীকার করে। স্রষ্টাকে বিশ্বাস করার ফলে, তার উপরে নির্ভর করার ফলে আত্মার ভিতরে জন্ম নেয় এক বিশেষ স্বর্গীয় অনুভূতি [State of mind]। এই অনুভূতির ব্যবহারের ফলে ব্যক্তির জীবনে অন্তর্দৃষ্টি জন্ম নেয়। ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় বোঝার ক্ষমতা জন্মে। আত্মার ভিতরে জন্ম নেয় বিবেকের আলো-যে আলোর উৎপত্তি স্বর্গীয়। এই আলো তাকে পথ দেখায়। এই আলোই তাকে আল্লাহ্র বাণীর অর্থ বুঝতে সাহায্য করে। এই আলোই তাকে সন্ধান দেয় শান্তির অমিয় ধারার। তারা চর্ম চক্ষুর বাইরেও দেখেন, শ্রবণেন্দ্রীয়ের বাইরেও শোনেন। এরা জ্ঞানী ও বিবেকবান। কিন্তু আল্লাহ্কে অস্বীকার করা ব্যক্তি গরু-ছাগলের পালের মত যারা চক্ষু থেকেও পথের নিশানা চেনে না, কান থাকতেও ধ্বনির পার্থক্য করতে পারেনা।
আয়াতঃ 002.170
আর যখন তাদেরকে কেউ বলে যে, সে হুকুমেরই আনুগত্য কর যা আল্লাহ তা’আলা নাযিল করেছেন, তখন তারা বলে কখনো না, আমরা তো সে বিষয়েরই অনুসরণ করব। যাতে আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে দেখেছি। যদি ও তাদের বাপ দাদারা কিছুই জানতো না, জানতো না সরল পথও।
When it is said to them: ”Follow what Allâh has sent down.” They say: ”Nay! We shall follow what we found our fathers following.” (Would they do that!) Even though their fathers did not understand anything nor were they guided?
وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ اتَّبِعُوا مَا أَنزَلَ اللّهُ قَالُواْ بَلْ نَتَّبِعُ مَا أَلْفَيْنَا عَلَيْهِ آبَاءنَا أَوَلَوْ كَانَ آبَاؤُهُمْ لاَ يَعْقِلُونَ شَيْئاً وَلاَ يَهْتَدُونَ
Wa-itha qeela lahumu ittabiAAoo ma anzala Allahu qaloo bal nattabiAAu ma alfayna AAalayhi abaana awa law kana abaohum la yaAAqiloona shay-an wala yahtadoona
YUSUFALI: When it is said to them: “Follow what Allah hath revealed:” They say: “Nay! we shall follow the ways of our fathers.” What! even though their fathers Were void of wisdom and guidance?
PICKTHAL: And when it is said unto them: Follow that which Allah hath revealed, they say: We follow that wherein we found our fathers. What! Even though their fathers were wholly unintelligent and had no guidance?
SHAKIR: And when it is said to them, Follow what Allah has revealed, they say: Nay! we follow what we found our fathers upon. What! and though their fathers had no sense at all, nor did they follow the right way.
KHALIFA: When they are told, “Follow what GOD has revealed herein,” they say, “We follow only what we found our parents doing.” What if their parents did not understand, and were not guided?
১৬৯। সে তোমাদের মন্দ ও অশ্লীল কাজের নির্দেশ দেয় এবং আল্লাহ্ সম্বন্ধে তোমাদের যে জ্ঞান নাই এমন সব বিষয়ে বলার জন্য নির্দেশ দেয়।
১৭০। যখন তাদের বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যে প্রত্যাদেশ দিয়েছেন তা অনুসরণ কর’; তারা বলে, ‘না! আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদের পথ অনুসরণ করবো।’ কি! যদিও তাদের পিতৃপুরুষগণ ছিলো প্রজ্ঞাবিহীন এবং তারা সঠিক পথে পরিচালিত ছিলো না তথাপিও ?
১৭১। যারা ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে, তাদের উপমা হচ্ছে ভেড়ার পালের ন্যায়-যারা শুধু হাঁকডাক ও চিৎকার ব্যতীত কিছুই শোনে না ১৭০। [এরা হচ্ছে] বধির, বোবা ও অন্ধ ১৭১। [সুতরাং] তারা হচ্ছে জ্ঞান ও প্রজ্ঞাবিহীন।
১৭০। যারা আল্লাহ্র অস্তিত্বে বিশ্বাসী নয়, তাদের আত্মায় স্বর্গীয় আলো প্রবেশের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। এ সেই আলো যা মানুষের আত্মাকে বিবেক, জ্ঞানে ও প্রজ্ঞায় সমৃদ্ধ করে। এ জ্ঞান দানের ক্ষমতা একমাত্র সর্বশক্তিমান ব্যতীত আর কারও নাই বিশ্বজগতে। ফলে অবিশ্বাসী ব্যক্তি ধর্মীয় জীবন যাপন পদ্ধতির মাধ্যমে অমিয় শান্তির বাণী হৃদয়ঙ্গম করতে অক্ষম হয়। এই ব্যক্তির উপমা হচ্ছে গরু ও ভেড়ার পালের মত। যেমন-গরুর পাল বা ভেড়ার পাল কিছুই বোঝে না, দেখে না, শোনে না। দেখে না শোনে না এই অর্থে যে তারা শুধু মাত্র রাখালের চিৎকার দ্বারা পরিচালিত হয়। রাস্তার বা পথের ভাল-মন্দ বা চিৎকার বা শব্দের বিভিন্ন ধ্বনি (অর্থাৎ আদর বা রাগ) কিছুরই পার্থক্য করতে এরা অপারগ। সেই রকম যে ব্যক্তি আল্লাহ্তে বিশ্বাসী নয়, তার হৃদয় বিবেকের আলো বা অন্তর্দৃষ্টি লাভে অক্ষম। অন্তর্দৃষ্টি না থাকার দরুণ চক্ষু থাকলেও কোনও ঘটনার গূঢ় অর্থ অনুধাবনে হবে ব্যর্থ, কান থাকলেও স্রষ্টার বাণীর গূঢ় অর্থ সে হৃদয়ঙ্গম করতে হবে ব্যর্থ। ‘They are void of wisdom’.
১৭১। আয়াত [২:১৮] তে বলা হয়েছে যে যারা আল্লাহ্কে অস্বীকার করে ‘তারা হবে বধির, বোবা এবং অন্ধ’। তারা আর কখনও সুপথে আসবে না। যেহেতু তারা স্রষ্টাকে অস্বীকার করে, সুতরাং তারা আত্মার মূল উৎপত্তিকে অস্বীকার করে। স্রষ্টাকে বিশ্বাস করার ফলে, তার উপরে নির্ভর করার ফলে আত্মার ভিতরে জন্ম নেয় এক বিশেষ স্বর্গীয় অনুভূতি [State of mind]। এই অনুভূতির ব্যবহারের ফলে ব্যক্তির জীবনে অন্তর্দৃষ্টি জন্ম নেয়। ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় বোঝার ক্ষমতা জন্মে। আত্মার ভিতরে জন্ম নেয় বিবেকের আলো-যে আলোর উৎপত্তি স্বর্গীয়। এই আলো তাকে পথ দেখায়। এই আলোই তাকে আল্লাহ্র বাণীর অর্থ বুঝতে সাহায্য করে। এই আলোই তাকে সন্ধান দেয় শান্তির অমিয় ধারার। তারা চর্ম চক্ষুর বাইরেও দেখেন, শ্রবণেন্দ্রীয়ের বাইরেও শোনেন। এরা জ্ঞানী ও বিবেকবান। কিন্তু আল্লাহ্কে অস্বীকার করা ব্যক্তি গরু-ছাগলের পালের মত যারা চক্ষু থেকেও পথের নিশানা চেনে না, কান থাকতেও ধ্বনির পার্থক্য করতে পারেনা।
আয়াতঃ 002.171
বস্তুতঃ এহেন কাফেরদের উদাহরণ এমন, যেন কেউ এমন কোন জীবকে আহবান করছে যা কোন কিছুই শোনে না, হাঁক-ডাক আর চিৎকার ছাড়া বধির মুক, এবং অন্ধ। সুতরাং তারা কিছুই বোঝে না।
And the example of those who disbelieve, is as that of him who shouts to the (flock of sheep) that hears nothing but calls and cries. (They are) deaf, dumb and blind. So they do not understand.
وَمَثَلُ الَّذِينَ كَفَرُواْ كَمَثَلِ الَّذِي يَنْعِقُ بِمَا لاَ يَسْمَعُ إِلاَّ دُعَاء وَنِدَاء صُمٌّ بُكْمٌ عُمْيٌ فَهُمْ لاَ يَعْقِلُونَ
Wamathalu allatheena kafaroo kamathali allathee yanAAiqu bima la yasmaAAu illa duAAaan wanidaan summun bukmun AAumyun fahum la yaAAqiloona
YUSUFALI: The parable of those who reject Faith is as if one were to shout Like a goat-herd, to things that listen to nothing but calls and cries: Deaf, dumb, and blind, they are void of wisdom.
PICKTHAL: The likeness of those who disbelieve (in relation to the messenger) is as the likeness of one who calleth unto that which heareth naught except a shout and cry. Deaf, dumb, blind, therefore they have no sense.
SHAKIR: And the parable of those who disbelieve is as the parable of one who calls out to that which hears no more than a call and a cry; deaf, dumb (and) blind, so they do not understand.
KHALIFA: The example of such disbelievers is that of parrots who repeat what they hear of sounds and calls, without understanding. Deaf, dumb, and blind; they cannot understand.
১৬৯। সে তোমাদের মন্দ ও অশ্লীল কাজের নির্দেশ দেয় এবং আল্লাহ্ সম্বন্ধে তোমাদের যে জ্ঞান নাই এমন সব বিষয়ে বলার জন্য নির্দেশ দেয়।
১৭০। যখন তাদের বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যে প্রত্যাদেশ দিয়েছেন তা অনুসরণ কর’; তারা বলে, ‘না! আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদের পথ অনুসরণ করবো।’ কি! যদিও তাদের পিতৃপুরুষগণ ছিলো প্রজ্ঞাবিহীন এবং তারা সঠিক পথে পরিচালিত ছিলো না তথাপিও ?
১৭১। যারা ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে, তাদের উপমা হচ্ছে ভেড়ার পালের ন্যায়-যারা শুধু হাঁকডাক ও চিৎকার ব্যতীত কিছুই শোনে না ১৭০। [এরা হচ্ছে] বধির, বোবা ও অন্ধ ১৭১। [সুতরাং] তারা হচ্ছে জ্ঞান ও প্রজ্ঞাবিহীন।
১৭০। যারা আল্লাহ্র অস্তিত্বে বিশ্বাসী নয়, তাদের আত্মায় স্বর্গীয় আলো প্রবেশের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। এ সেই আলো যা মানুষের আত্মাকে বিবেক, জ্ঞানে ও প্রজ্ঞায় সমৃদ্ধ করে। এ জ্ঞান দানের ক্ষমতা একমাত্র সর্বশক্তিমান ব্যতীত আর কারও নাই বিশ্বজগতে। ফলে অবিশ্বাসী ব্যক্তি ধর্মীয় জীবন যাপন পদ্ধতির মাধ্যমে অমিয় শান্তির বাণী হৃদয়ঙ্গম করতে অক্ষম হয়। এই ব্যক্তির উপমা হচ্ছে গরু ও ভেড়ার পালের মত। যেমন-গরুর পাল বা ভেড়ার পাল কিছুই বোঝে না, দেখে না, শোনে না। দেখে না শোনে না এই অর্থে যে তারা শুধু মাত্র রাখালের চিৎকার দ্বারা পরিচালিত হয়। রাস্তার বা পথের ভাল-মন্দ বা চিৎকার বা শব্দের বিভিন্ন ধ্বনি (অর্থাৎ আদর বা রাগ) কিছুরই পার্থক্য করতে এরা অপারগ। সেই রকম যে ব্যক্তি আল্লাহ্তে বিশ্বাসী নয়, তার হৃদয় বিবেকের আলো বা অন্তর্দৃষ্টি লাভে অক্ষম। অন্তর্দৃষ্টি না থাকার দরুণ চক্ষু থাকলেও কোনও ঘটনার গূঢ় অর্থ অনুধাবনে হবে ব্যর্থ, কান থাকলেও স্রষ্টার বাণীর গূঢ় অর্থ সে হৃদয়ঙ্গম করতে হবে ব্যর্থ। ‘They are void of wisdom’.
১৭১। আয়াত [২:১৮] তে বলা হয়েছে যে যারা আল্লাহ্কে অস্বীকার করে ‘তারা হবে বধির, বোবা এবং অন্ধ’। তারা আর কখনও সুপথে আসবে না। যেহেতু তারা স্রষ্টাকে অস্বীকার করে, সুতরাং তারা আত্মার মূল উৎপত্তিকে অস্বীকার করে। স্রষ্টাকে বিশ্বাস করার ফলে, তার উপরে নির্ভর করার ফলে আত্মার ভিতরে জন্ম নেয় এক বিশেষ স্বর্গীয় অনুভূতি [State of mind]। এই অনুভূতির ব্যবহারের ফলে ব্যক্তির জীবনে অন্তর্দৃষ্টি জন্ম নেয়। ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় বোঝার ক্ষমতা জন্মে। আত্মার ভিতরে জন্ম নেয় বিবেকের আলো-যে আলোর উৎপত্তি স্বর্গীয়। এই আলো তাকে পথ দেখায়। এই আলোই তাকে আল্লাহ্র বাণীর অর্থ বুঝতে সাহায্য করে। এই আলোই তাকে সন্ধান দেয় শান্তির অমিয় ধারার। তারা চর্ম চক্ষুর বাইরেও দেখেন, শ্রবণেন্দ্রীয়ের বাইরেও শোনেন। এরা জ্ঞানী ও বিবেকবান। কিন্তু আল্লাহ্কে অস্বীকার করা ব্যক্তি গরু-ছাগলের পালের মত যারা চক্ষু থেকেও পথের নিশানা চেনে না, কান থাকতেও ধ্বনির পার্থক্য করতে পারেনা।
আয়াতঃ 002.172
হে ঈমানদারগণ, তোমরা পবিত্র বস্তু সামগ্রী আহার কর, যেগুলো আমি তোমাদেরকে রুযী হিসাবে দান করেছি এবং শুকরিয়া আদায় কর আল্লাহর, যদি তোমরা তাঁরই বন্দেগী কর।
O you who believe (in the Oneness of Allâh – Islâmic Monotheism)! Eat of the lawful things that We have provided you with, and be grateful to Allâh, if it is indeed He Whom you worship.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ كُلُواْ مِن طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ وَاشْكُرُواْ لِلّهِ إِن كُنتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ
Ya ayyuha allatheena amanoo kuloo min tayyibati ma razaqnakum waoshkuroo lillahi in kuntum iyyahu taAAbudoona
YUSUFALI: O ye who believe! Eat of the good things that We have provided for you, and be grateful to Allah, if it is Him ye worship.
PICKTHAL: O ye who believe! Eat of the good things wherewith We have provided you, and render thanks to Allah if it is (indeed) He Whom ye worship.
SHAKIR: O you who believe! eat of the good things that We have provided you with, and give thanks to Allah if Him it is that you serve.
KHALIFA: O you who believe, eat from the good things we provided for you, and be thankful to GOD, if you do worship Him alone.
১৭২। হে বিশ্বাসী সম্প্রদায়! আমি তোমাদের যে সব পবিত্র বস্তু দিয়েছি তা থেকে আহার কর এবং আল্লাহ্র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর-যদি তোমরা শুধু তাঁরই এবাদত করে থাক ১৭২।
১৭২। আল্লাহ্র নেয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করাও আল্লাহ্র এবাদতের অংশ। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এক ধরণের অভ্যাস। দৈনন্দিন জীবনে আমরা বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সংস্পর্শে আসি। মানুষের সমাজ সব সময়েই পরস্পরের উপরে নির্ভরশীল। এ ব্যতীত কোনও সমাজ চলতে পারে না। এই নির্ভরশীলতা স্বীকার করে নিলেই আত্মায় কৃতজ্ঞতা বোধ জন্মায়। এটা একটা স্বর্গীয় গুণ। যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি প্রথমে কৃতজ্ঞ হবে অবশ্যই সে আল্লাহ্র নেয়ামতের প্রতিও কৃতজ্ঞ হবে। আল্লাহ্ কৃতজ্ঞ হতে বলেছেন কারণ কৃতজ্ঞতা মানুষের আত্মায় শান্তি আনে। অকৃতজ্ঞ আত্মায় সর্বদা হাহাকার বিরাজ করে ফলে শান্তি হয় তিরোহিত। অশান্ত আত্মা আল্লাহ্র বাণী ধারণে অক্ষম, আল্লাহ্র নেয়ামত সনাক্ত করতে অক্ষম। ফলে অকৃতজ্ঞ আত্মা হিংসা দ্বেষে পরিপূর্ণ হয়ে যায় এবং আত্মার শান্তি হয় তিরোহিত। এই কারণে বলা হয় Gratitude for Allash’s gift is one form of worship. তবে এই কৃতজ্ঞতা বোধের প্রথম পাঠ শুরু হয় জীবনের শৈশবে-সমাজে দেয়া নেয়ার মাধ্যমে।
আয়াতঃ 002.173
তিনি তোমাদের উপর হারাম করেছেন, মৃত জীব, রক্ত, শুকর মাংস এবং সেসব জীব-জন্তু যা আল্লাহ ব্যাতীত অপর কারো নামে উৎসর্গ করা হয়। অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমানী ও সীমালঙ্ঘনকারী না হয়, তার জন্য কোন পাপ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু।
He has forbidden you only the Maytatah (dead animals), and blood, and the flesh of swine, and that which is slaughtered as a scrifice for others than Allâh (or has been slaughtered for idols, etc., on which Allâh’s Name has not been mentioned while slaughtering). But if one is forced by necessity without wilful disobedience nor transgressing due limits, then there is no sin on him. Truly, Allâh is Oft-Forgiving, Most Merciful.
إِنَّمَا حَرَّمَ عَلَيْكُمُ الْمَيْتَةَ وَالدَّمَ وَلَحْمَ الْخِنزِيرِ وَمَا أُهِلَّ بِهِ لِغَيْرِ اللّهِ فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَلاَ عَادٍ فَلا إِثْمَ عَلَيْهِ إِنَّ اللّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
Innama harrama AAalaykumu almaytata waalddama walahma alkhinzeeri wama ohilla bihi lighayri Allahi famani idturra ghayra baghin wala AAadin fala ithma AAalayhi inna Allaha ghafoorun raheemun
YUSUFALI: He hath only forbidden you dead meat, and blood, and the flesh of swine, and that on which any other name hath been invoked besides that of Allah. But if one is forced by necessity, without wilful disobedience, nor transgressing due limits,- then is he guiltless. For Allah is Oft-forgiving Most Merciful.
PICKTHAL: He hath forbidden you only carrion, and blood, and swineflesh, and that which hath been immolated to (the name of) any other than Allah. But he who is driven by necessity, neither craving nor transgressing, it is no sin for him. Lo! Allah is Forgiving, Merciful.
SHAKIR: He has only forbidden you what dies of itself, and blood, and flesh of swine, and that over which any other (name) than (that of) Allah has been invoked; but whoever is driven to necessity, not desiring, nor exceeding the limit, no sin shall be upon him; surely Allah is Forgiving, Merciful.
KHALIFA: He only prohibits for you the eating of animals that die of themselves (without human interference), blood, the meat of pigs, and animals dedicated to other than GOD. If one is forced (to eat these), without being malicious or deliberate, he incurs no sin. GOD is Forgiver, Most Merciful.
১৭৩। আল্লাহ্ কেবলমাত্র নিষিদ্ধ করেছেন মৃত জন্তুর মাংস ১৭৩, রক্ত ও শুকরের মাংস এবং যার উপরে আল্লাহ্ নাম ব্যতীত অন্যের নাম উচ্চারিত হয়ছে [যবাই এর সময়ে] ১৭৪। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে অবাধ্য না হয়ে বা সীমা লঙ্ঘন না করে কেউ যদি প্রয়োজনে [তা আহার করতে] বাধ্য হয়, তবে সে হবে নির্দোষ। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বার বার ক্ষমাশীল ও পরম করুণাময়।
১৭৩। ‘মৃত প্রাণীর মাংস’-এ কথাটির দ্বারা বোঝানো হচ্ছে সেই প্রাণী যা নিজে নিজেই মৃত্যু বরণ করেছে, তাকে খাবার জন্য আল্লাহ্র নামে মারা হয় নাই। তবে এর মধ্যে অবশ্য মাছ এবং চিংড়ি জাতীয় প্রাণী পড়ে না।
১৭৪। খাদ্য সম্বন্ধে বিস্তৃত বিবরণ আছে [৫:৩-৪]; [৬:১২৪, ১৩৮-১৪৬] ইত্যাদি। যারা ফিকা শাস্ত্র অধ্যায়ন করেন তারা এ সম্বন্ধে বিশদ ব্যাখ্যা দান করেছেন। এখানে মাওলানা ইউসুফ আলী সাহেবের খাদ্য সম্পর্কীয় সাধারণ নিয়ম নীতি আলোচনা করাই উদ্দেশ্য-বিশদ ব্যাখ্যায় তিনি অংশ গ্রহণ করেন নাই।
মৃত জন্তুর মাংস এবং রক্ত যে কোনও সভ্য ব্যক্তির ঘৃণার উদ্রেক করবে। ঠিক সেই রকম শুকরের মাংসও করবে, কারণ শুকর অত্যন্ত নোংরা জায়গায় থাকতে ভালবাসে। যদিও বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্ব শুকরকে অত্যন্ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখে তবু নিম্নলিখিত যুক্তিগুলির জন্য শুকরের মাংস অপবিত্র।
(১) যেহেতু শুকর জন্মগতভাবে অত্যন্ত নোংরা। সুতরাং নোংরা প্রাণীর মাংস ভক্ষকের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
(২) শুকরের মাংসে চর্বির পরিমান অত্যন্ত বেশি গরু এবং ছাগল অপেক্ষা যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
(৩) শুকরের মাংসের সাহায্যে বিভিন্ন রকম কৃমির রোগের বিস্তার লাভ করতে পারে। যেমন-Trichinosis.
(৪) দেব-দেবীর উদ্দেশ্যে নিবেদিত প্রাণীর মাংস খাওয়া অবশ্যই যে কোনও কিতাবধারী জাতির জন্য হারাম।
আয়াতঃ 002.174
নিশ্চয় যারা সেসব বিষয় গোপন করে, যা আল্লাহ কিতাবে নাযিল করেছেন এবং সেজন্য অল্প মূল্য গ্রহণ করে, তারা আগুন ছাড়া নিজের পেটে আর কিছুই ঢুকায় না। আর আল্লাহ কেয়ামতের দিন তাদের সাথে না কথা বলবেন, না তাদের পবিত্র করা হবে, বস্তুতঃ তাদের জন্যে রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব।
Verily, those who conceal what Allâh has sent down of the Book, and purchase a small gain therewith (of worldly things), they eat into their bellies nothing but fire. Allâh will not speak to them on the Day of Resurrection, nor purify them, and theirs will be a painful torment.
إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنزَلَ اللّهُ مِنَ الْكِتَابِ وَيَشْتَرُونَ بِهِ ثَمَنًا قَلِيلاً أُولَـئِكَ مَا يَأْكُلُونَ فِي بُطُونِهِمْ إِلاَّ النَّارَ وَلاَ يُكَلِّمُهُمُ اللّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
Inna allatheena yaktumoona ma anzala Allahu mina alkitabi wayashtaroona bihi thamanan qaleelan ola-ika ma ya/kuloona fee butoonihim illa alnnara wala yukallimuhumu Allahu yawma alqiyamati wala yuzakkeehim walahum AAathabun aleemun
YUSUFALI: Those who conceal Allah’s revelations in the Book, and purchase for them a miserable profit,- they swallow into themselves naught but Fire; Allah will not address them on the Day of Resurrection. Nor purify them: Grievous will be their penalty.
PICKTHAL: Lo! those who hide aught of the Scripture which Allah hath revealed and purchase a small gain therewith, they eat into their bellies nothing else than fire. Allah will not speak to them on the Day of Resurrection, nor will He make them grow. Theirs will be a painful doom.
SHAKIR: Surely those who conceal any part of the Book that Allah has revealed and take for it a small price, they eat nothing but fire into their bellies, and Allah will not speak to them on the day of resurrection, nor will He purify them, and they shall have a painful chastisement.
KHALIFA: Those who conceal GOD’s revelations in the scripture, in exchange for a cheap material gain, eat but fire into their bellies. GOD will not speak to them on the Day of Resurrection, nor will He purify them. They have incurred a painful retribution.
১৭৪। যারা আল্লাহ্র কিতাবের প্রত্যাদেশকে গোপন করে, এবং তার পরিবর্তে তারা তাদের জন্য দুঃখজনক বিনিময় ক্রয় করে, তারা নিজেদের জন্য আগুন ব্যতীত অন্য কিছু গলধঃকরণ করে না ১৭৫। পুনরুত্থানের দিনে আল্লাহ্ তাদের সাথে কথা বলবেন না, তাদের পবিত্রও করবেন না। ভয়াবহ হবে তাদের শাস্তি।
১৭৫। ‘They eat nothing but fire into their bellies’ আক্ষরিক অনুবাদ শুনতে কিছুটা কঠোর এবং রসশূন্য মনে হয়। কিন্তু মূল আরবী শব্দের ভাব ঠিক তা নয়। ইসলাম সব সময়েই মধ্যপথ অবলম্বী, এমন কি খাদ্য ও পানীয়ের ব্যাপারেও ইসলাম মধ্যপথ অবলম্বী। ইসলাম, ধর্মের ব্যাপারে লাগাম ছাড়া স্বাধীনতার বিপক্ষে আবার অতিরিক্ত নিয়ম কানুন এবং আনুষ্ঠানিকতার বিপক্ষে। এ ব্যাপারে ইসলাম খুব সাধারণ এবং যুক্তিযুক্ত কয়েকটি নিয়ম নীতির কথা বলে। এসব নিয়ম-নীতি ভঙ্গ শুধু যে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির সম্ভাবনা তাই নয় আত্মার বিকাশের প্রভূত ক্ষতির সম্ভাবনা।
কেউ যদি আল্লাহ্র নিয়ম-নীতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বা উদ্দেশ্য মূলকভাবে ব্যক্তিগত লাভের জন্য ধর্মের নামে জাল-জুয়াচুরি করে, তার পরিণতি ভয়াবহ, নৈতিক ও আত্মিক অধঃপতন অনিবার্য। কারণ এ হচ্ছে পাপ, বিশ্বাস এবং নৈতিকতার বিরুদ্ধে। এই নৈতিক অধঃপতনকে উপমার সাহায্যে উত্থাপন করতে যেয়ে বলা হয়েছে, এ যেনো আগুন ভক্ষণ করার সামিল। আমাদের এই নশ্বর দেহে আগুন ভক্ষণ করা যে কী দুঃসহ যন্ত্রণা তা অনুধাবন করার জন্যই এই উপমার অবতারণা। আসলে হাশরের ময়দানে আত্মার যে যন্ত্রণা তা হবে নশ্বর দেহে আগুন ভক্ষণ করার যন্ত্রনার থেকেও বেশী। দৈহিক যন্ত্রণা সে যন্ত্রণার কাছে ম্লান হয়ে যাবে। সে যন্ত্রণা আরও বেড়ে যাবে কারণ বিচারক সর্বশক্তিমান আল্লাহ্, তার সমস্ত রহমত ও করুণা থেকে তাদের বঞ্চিত করবেন। এমনকি সামান্য প্রশ্নও তাদের জিজ্ঞাসা করা হবে না।
আয়াতঃ 002.175
এরাই হল সে সমস্ত লোক, যারা হেদায়েতের বিনিময়ে গোমরাহী খরিদ করেছে এবং (খরিদ করেছে) ক্ষমা ও অনুগ্রহের বিনিময়ে আযাব। অতএব, তারা দোযখের উপর কেমন ধৈর্য্য ধারণকারী।
Those are they who have purchased error at the price of Guidance, and torment at the price of Forgiveness. So how bold they are (for evil deeds which will push them) to the Fire.
أُولَـئِكَ الَّذِينَ اشْتَرَوُاْ الضَّلاَلَةَ بِالْهُدَى وَالْعَذَابَ بِالْمَغْفِرَةِ فَمَآ أَصْبَرَهُمْ عَلَى النَّارِ
Ola-ika allatheena ishtarawoo alddalalata bialhuda waalAAathaba bialmaghfirati fama asbarahum AAala alnnari
YUSUFALI: They are the ones who buy Error in place of Guidance and Torment in place of Forgiveness. Ah! what boldness (They show) for the Fire!
PICKTHAL: Those are they who purchase error at the price of guidance, and torment at the price of pardon. How constant are they in their strife to reach the Fire!
SHAKIR: These are they who buy error for the right direction and chastisement for forgiveness; how bold they are to encounter fire.
KHALIFA: It is they who chose the straying instead of guidance, and the retribution instead of forgiveness. Consequently, they will have to endure Hell.
১৭৫। এরাই তারা যারা সৎপথের বিনিময়ে ভ্রান্ত পথ ক্রয় করে, ক্ষমার পরিবর্তে শাস্তি [ক্রয় করে]। আঃ আগুনের [শাস্তির] জন্য তারা কতই না সাহসী।
১৭৬। [তাদের ধ্বংসের] কারণ আল্লাহ্ সত্যসহ কিতাব [কোরআন] প্রেরণ করেছেন, কিন্তু যারা কিতাবের মাঝে মতভেদ অনুসন্ধান করে, তারা [মতভেদের জন্য] ধর্মের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে [যা প্রকৃত লক্ষ্য থেকে বহুদূরে] ১৭৬।
১৭৬। এতক্ষণ আলোচনার বিষয়বস্তু সীমাবদ্ধ ছিল জীবন ধারণের, বিশেষভাবে খাদ্য বস্তু সম্পর্কীয় আলোচনার মধ্যে। দেহ এবং আত্মা এই দুই-ই মিলেই পৃথিবীর জীবন। দেহের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে আত্মার বিকাশ ঘটানোই হচ্ছে পৃথিবীতে আমাদের বাসস্থানের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য। দেহ ব্যতীত আত্মার বিকাশ অসম্ভব। তাই দেহের প্রকৃত পরিচর্যার নিয়মাবলী এখানে আলোচিত হয়েছে। খাদ্য, পানীয়, যৌনসংযম ইত্যাদি বিধি নিষেধ না মানলে শুধু যে দেহ ক্ষতিগ্রস্থ হয় তা নয়, দেহের ভিতরে যে আত্মার বাস সে আত্মার বিকাশেরও অবনতি ঘটে। তাই এই আয়াতটিতে [২:১৭৬] দৈহিক নিয়মাবলী থেকে নৈতিকতা এবং বিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে। যেমন-যে প্রচণ্ড মদ খায় এবং ব্যাভিচারে অভ্যস্ত তার আত্মার সুস্থ বিকাশ অসম্ভব। যে ব্যক্তি ঘুষ খেয়ে বা হারাম পয়সায়, বা জাল-জুয়াচুরি করে জীবিকা নির্বাহ করে তার আত্মায় আল্লাহ্র নূর প্রবেশে বাঁধা পায় ইত্যাদি। সুতরাং ধর্মের সাথে জীবন ধারণের রীতিনীতি অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত।
এই আয়াতটিতে আল্লাহ্ বলেছেন যে এই পৃথিবীতে জীবন ধারণের জন্য যে নিয়মাবলী তিনি প্রেরণ করেছেন তা মানা কর্তব্য। কিন্তু এ নিয়ে যারা বাড়াবাড়ি করে তারা ধর্মের মূল সুর থেকে সরে যায়। যারা ধর্মের আনুষ্ঠানিকতা ও নিয়ম-নীতি নিয়ে বাড়াবাড়ি করে তারাই সাম্প্রদায়িকতায় পরিণত হয় এবং পরিণতিতে ধর্মের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে। ফলে এরা মৌলবাদীতে পরিণত হয়। সুতরাং জীবন ধারণের রীতিনীতিই [খাদ্য, পানীয়, পর্দ্দা, বিয়ে ইত্যাদি] যেনো ধর্মে পরিণত না নয়। তাহলে ধর্মের মূল সূর হচ্ছে আত্মার বিকাশ, সেই পরম করুণাময়ের সান্নিধ্যলাভ, সেই বিশ্বাস, সেই মানসিকতা, সেই অনুভব ক্ষমতা আমাদের আত্মাকে আলোকিত করতে পারবে না। আমরা অন্ধকারে হারিয়ে যেয়ে নিজেদের মধ্যে শুধু বিভেদই সৃষ্টি করতে পারবো। এ কথাটাই এই আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 002.176
আর এটা এজন্যে যে, আল্লাহ নাযিল করেছেন সত্যপূর্ণ কিতাব। আর যারা কেতাবের মাঝে মতবিরোধ সৃষ্টি করেছে নিশ্চয়ই তারা জেদের বশবর্তী হয়ে অনেক দূরে চলে গেছে।
That is because Allâh has sent down the Book (the Qur’ân) in truth. And verily, those who disputed as regards the Book are far away in opposition.
ذَلِكَ بِأَنَّ اللّهَ نَزَّلَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ وَإِنَّ الَّذِينَ اخْتَلَفُواْ فِي الْكِتَابِ لَفِي شِقَاقٍ بَعِيدٍ
Thalika bi-anna Allaha nazzala alkitaba bialhaqqi wa-inna allatheena ikhtalafoo fee alkitabi lafee shiqaqin baAAeedin
YUSUFALI: (Their doom is) because Allah sent down the Book in truth but those who seek causes of dispute in the Book are in a schism Far (from the purpose).
PICKTHAL: That is because Allah hath revealed the Scripture with the truth. Lo! those who find (a cause of) disagreement in the Scripture are in open schism.
SHAKIR: This is because Allah has revealed the Book with the truth; and surely those who go against the Book are in a great opposition.
KHALIFA: This is because GOD has revealed this scripture, bearing the truth, and those who dispute the scripture are the most ardent opponents.
১৭৫। এরাই তারা যারা সৎপথের বিনিময়ে ভ্রান্ত পথ ক্রয় করে, ক্ষমার পরিবর্তে শাস্তি [ক্রয় করে]। আঃ আগুনের [শাস্তির] জন্য তারা কতই না সাহসী।
১৭৬। [তাদের ধ্বংসের] কারণ আল্লাহ্ সত্যসহ কিতাব [কোরআন] প্রেরণ করেছেন, কিন্তু যারা কিতাবের মাঝে মতভেদ অনুসন্ধান করে, তারা [মতভেদের জন্য] ধর্মের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে [যা প্রকৃত লক্ষ্য থেকে বহুদূরে] ১৭৬।
১৭৬। এতক্ষণ আলোচনার বিষয়বস্তু সীমাবদ্ধ ছিল জীবন ধারণের, বিশেষভাবে খাদ্য বস্তু সম্পর্কীয় আলোচনার মধ্যে। দেহ এবং আত্মা এই দুই-ই মিলেই পৃথিবীর জীবন। দেহের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে আত্মার বিকাশ ঘটানোই হচ্ছে পৃথিবীতে আমাদের বাসস্থানের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য। দেহ ব্যতীত আত্মার বিকাশ অসম্ভব। তাই দেহের প্রকৃত পরিচর্যার নিয়মাবলী এখানে আলোচিত হয়েছে। খাদ্য, পানীয়, যৌনসংযম ইত্যাদি বিধি নিষেধ না মানলে শুধু যে দেহ ক্ষতিগ্রস্থ হয় তা নয়, দেহের ভিতরে যে আত্মার বাস সে আত্মার বিকাশেরও অবনতি ঘটে। তাই এই আয়াতটিতে [২:১৭৬] দৈহিক নিয়মাবলী থেকে নৈতিকতা এবং বিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে। যেমন-যে প্রচণ্ড মদ খায় এবং ব্যাভিচারে অভ্যস্ত তার আত্মার সুস্থ বিকাশ অসম্ভব। যে ব্যক্তি ঘুষ খেয়ে বা হারাম পয়সায়, বা জাল-জুয়াচুরি করে জীবিকা নির্বাহ করে তার আত্মায় আল্লাহ্র নূর প্রবেশে বাঁধা পায় ইত্যাদি। সুতরাং ধর্মের সাথে জীবন ধারণের রীতিনীতি অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত।
এই আয়াতটিতে আল্লাহ্ বলেছেন যে এই পৃথিবীতে জীবন ধারণের জন্য যে নিয়মাবলী তিনি প্রেরণ করেছেন তা মানা কর্তব্য। কিন্তু এ নিয়ে যারা বাড়াবাড়ি করে তারা ধর্মের মূল সুর থেকে সরে যায়। যারা ধর্মের আনুষ্ঠানিকতা ও নিয়ম-নীতি নিয়ে বাড়াবাড়ি করে তারাই সাম্প্রদায়িকতায় পরিণত হয় এবং পরিণতিতে ধর্মের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে। ফলে এরা মৌলবাদীতে পরিণত হয়। সুতরাং জীবন ধারণের রীতিনীতিই [খাদ্য, পানীয়, পর্দ্দা, বিয়ে ইত্যাদি] যেনো ধর্মে পরিণত না নয়। তাহলে ধর্মের মূল সূর হচ্ছে আত্মার বিকাশ, সেই পরম করুণাময়ের সান্নিধ্যলাভ, সেই বিশ্বাস, সেই মানসিকতা, সেই অনুভব ক্ষমতা আমাদের আত্মাকে আলোকিত করতে পারবে না। আমরা অন্ধকারে হারিয়ে যেয়ে নিজেদের মধ্যে শুধু বিভেদই সৃষ্টি করতে পারবো। এ কথাটাই এই আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 002.177
সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হল এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসূলগণের উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্নীয়-স্বজন, এতীম-মিসকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে। আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেযগার।
It is not Al-Birr (piety, righteousness, and each and every act of obedience to Allâh, etc.) that you turn your faces towards east and (or) west (in prayers); but Al-Birr is (the quality of) the one who believes in Allâh, the Last Day, the Angels, the Book, the Prophets and gives his wealth, in spite of love for it, to the kinsfolk, to the orphans, and to Al-Masâkin (the poor), and to the wayfarer, and to those who ask, and to set slaves free, performs As-Salât (Iqâmat-as-Salât), and gives the Zakât, and who fulfill their covenant when they make it, and who are As-Sâbirin (the patient ones, etc.) in extreme poverty and ailment (disease) and at the time of fighting (during the battles). Such are the people of the truth and they are AlMuttaqûn (pious – see V.2:2).
لَّيْسَ الْبِرَّ أَن تُوَلُّواْ وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَـكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آمَنَ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَالْمَلآئِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ وَآتَى الْمَالَ عَلَى حُبِّهِ ذَوِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ وَالسَّآئِلِينَ وَفِي الرِّقَابِ وَأَقَامَ الصَّلاةَ وَآتَى الزَّكَاةَ وَالْمُوفُونَ بِعَهْدِهِمْ إِذَا عَاهَدُواْ وَالصَّابِرِينَ فِي الْبَأْسَاء والضَّرَّاء وَحِينَ الْبَأْسِ أُولَـئِكَ الَّذِينَ صَدَقُوا وَأُولَـئِكَ هُمُ الْمُتَّقُونَ
Laysa albirra an tuwalloo wujoohakum qibala almashriqi waalmaghribi walakinna albirra man amana biAllahi waalyawmi al-akhiri waalmala-ikati waalkitabi waalnnabiyyeena waata almala AAala hubbihi thawee alqurba waalyatama waalmasakeena waibna alssabeeli waalssa-ileena wafee alrriqabi waaqama alssalata waata alzzakata waalmoofoona biAAahdihim itha AAahadoo waalssabireena fee alba/sa-i waalddarra-i waheena alba/si ola-ika allatheena sadaqoo waola-ika humu almuttaqoona
YUSUFALI: It is not righteousness that ye turn your faces Towards east or West; but it is righteousness- to believe in Allah and the Last Day, and the Angels, and the Book, and the Messengers; to spend of your substance, out of love for Him, for your kin, for orphans, for the needy, for the wayfarer, for those who ask, and for the ransom of slaves; to be steadfast in prayer, and practice regular charity; to fulfil the contracts which ye have made; and to be firm and patient, in pain (or suffering) and adversity, and throughout all periods of panic. Such are the people of truth, the Allah-fearing.
PICKTHAL: It is not righteousness that ye turn your faces to the East and the West; but righteous is he who believeth in Allah and the Last Day and the angels and the Scripture and the prophets; and giveth wealth, for love of Him, to kinsfolk and to orphans and the needy and the wayfarer and to those who ask, and to set slaves free; and observeth proper worship and payeth the poor-due. And those who keep their treaty when they make one, and the patient in tribulation and adversity and time of stress. Such are they who are sincere. Such are the Allah-fearing.
SHAKIR: It is not righteousness that you turn your faces towards the East and the West, but righteousness is this that one should believe in Allah and the last day and the angels and the Book and the prophets, and give away wealth out of love for Him to the near of kin and the orphans and the needy and the wayfarer and the beggars and for (the emancipation of) the captives, and keep up prayer and pay the poor-rate; and the performers of their promise when they make a promise, and the patient in distress and affliction and in time of conflicts– these are they who are true (to themselves) and these are they who guard (against evil).
KHALIFA: Righteousness is not turning your faces towards the east or the west. Righteous are those who believe in GOD, the Last Day, the angels, the scripture, and the prophets; and they give the money, cheerfully, to the relatives, the orphans, the needy, the traveling alien, the beggars, and to free the slaves; and they observe the Contact Prayers (Salat) and give the obligatory charity (Zakat); and they keep their word whenever they make a promise; and they steadfastly persevere in the face of persecution, hardship, and war. These are the truthful;
রুকু – ২২
১৭৭। পূর্ব ও পশ্চিমে মুখ ফিরানোতে কোন পূণ্য নাই; কিন্তু পূণ্য আছে ১৭৭ বিশ্বাস স্থাপন করলে – আল্লাহ্তে, ১৭৮, শেষ বিচারের দিনে, ফেরেশ্তাগণে, কিতাবে এবং নবীগণে। আল্লাহ্র প্রতি ভালবাসা [প্রকাশ করতে] আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, অভাবগ্রস্থ, পর্যটক, সাহায্যপ্রার্থীকে এবং দাসমুক্তির জন্য সম্পদ ব্যয় করলে ১৭৯, সালাতে দৃঢ় থাকলে, যাকাত প্রদান করলে এবং প্রতিশ্রুতি দিলে তা পূর্ণ করলে ১৮০ এবং [দৈহিক বা মানসিক] ব্যথা বেদনা [দুঃখ-ক্লেশে] এবং সংগ্রামে সংকটে এবং নিদারুন আতঙ্কের সকল সময়ব্যাপী ধৈর্য্য ধারণ করলে, এরাই তারা যারা সত্যপরায়ণ এবং আল্লাহ্ ভীরু ১৮১।
১৭৭। ‘পূর্ব ও পশ্চিম দিকে মুখ ফিরানোতে কোন পূণ্য নাই।’ এ কথাটির অর্থ পশ্চিমা বিশ্ব পূর্বদিকে নামাজ পড়ে কারণ তাদের কাবা পূর্বদিকে আবার কাবার পূর্বদিকে যারা অবস্থিত তারা পশ্চিমদিকে নামাজ পড়ে। শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক নামাজ পড়ার মধ্যে ধর্ম নাই। এই আয়াতটিকে [২:১৭৭] পূর্বের আয়াতের সম্প্রসারণ বলা চলে। কারণ এখানে আল্লাহ্ বিশেষ গুরুত্বের সাথে সাবধান করে দিচ্ছেন আনুষ্ঠানিকতাকে যারা ধর্ম বলে বিবেচনা করে তাদের। শুধুমাত্র নামাজ, রোযা, পানাহার, চলাফেরা, পোষাক-পরিচ্ছদ এগুলো ধর্ম নয়। এগুলো কতগুলো নিয়ম যা শরীর ও মনের জন্য ভাল যা মানলে ধর্মের অন্তরে প্রবেশ করতে সুবিধা হয়। আল্লাহ্ এখানে পরিষ্কার ভাষায় আল্লাহ্ প্রেমিকদের মানদন্ড বর্ণনা করেছেন। এ মানদণ্ডে কিন্তু পোষাক-পরিচ্ছদ, (নারী বা পুরুষ) খাদ্য, চলাফেরা, আচার আচরণ কিছুই উল্লেখ করা হয় নাই।
(১) যাদের বিশ্বাসে আছে আন্তরিকতা। অর্থাৎ যারা সুখে-স্বাচ্ছন্দে, বিপদে-আপদে, ভাল-মন্দে, দুঃখে-কষ্টে জীবনে সর্বাবস্থায় শুধু এক আল্লাহ্র উপরে নির্ভরশীল, এক আল্লাহ্তে আস্থাশীল এক আল্লাহ্তে বিশ্বাসী। তিনিই একমাত্র ইহকালের ও পরকালের মালিক এই বিশ্বাস অন্তরে রাখা।
(২) এই বিশ্বাসকে কর্মে পরিণত করতে হবে। আল্লাহ্র কাছে আল্লাহ্ ভীরুরূপে উপস্থাপন করার উপায় হচ্ছে আল্লাহ্কে খুশী করার জন্য জনহিতকর কাজে দান করা। এ দান শুধু মাত্র টাকা পয়সা দান নয়। আল্লাহ্ যাকে যা নেয়ামত দান করেছেন সেই নেয়ামত জনহিতার্থে ব্যবহার করার নামই হচ্ছে দান।
(৩) সালাত কায়েম করলে
(৪) প্রকৃত এবং ভাল নাগরিক হতে হলে প্রত্যেককে যাকাত দিতে হবে।
(৫) মুসলমানের প্রত্যেক মুসলমানের জন্য সামাজিক বাধ্যবাধকতা (Social Obligation) আছে এবং তা তাকে পালন করতে হবে। প্রতিশ্রুতি পালনই হচ্ছে মুসলমানদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
(৬) আমাদের প্রত্যেককে বিপদে দুঃখে ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে এবং সর্বশক্তিমান দয়াময়ের করুণা প্রত্যাশা করে দৃঢ়তার সাথে বিপদকে অতিক্রম করতে হবে।
এই ছয়টি মানদন্ড (Criteria) যার চরিত্রে দেখা যাবে তিনিই মুসলমান; তিনিই বিশ্বাসী। শুধুমাত্র পোষাক-পরিচ্ছদ (টুপি, দাড়ি, বোরখা ইত্যাদি) বা খাদ্য দ্রব্য, বাছ বিচার, পূর্ব বা পশ্চিমে মুখ ফিরানো [অর্থাৎ আনুষ্ঠানিকভাবে নামাজ আদায় করার মধ্যে কোনও ধর্ম নাই] ধর্ম আছে উপরের ছয়টি মানদণ্ডে। যদিও মনে হয় এগুলি প্রত্যেকটি পৃথক পৃথক গুণাবলী কিন্তু তা নয় এরা এক সূতোয় গাঁথা। একটু চিন্তা করলেই বোঝা যাবে একটি আর একটির সম্পূরক।
যে বিশ্বাস, যে আনুগত্য আত্মার অন্তস্থল থেকে উৎসারিত নয় তা স্রষ্টার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
১৭৮। (১) ‘বিশ্বাস’ বা ঈমান কোনও মুখের কথা নয়। শুধুমাত্র মৌখিকভাবে আল্লাহ্র প্রতি যে বিশ্বাস স্থাপন করা হয়, তা কোনও বিশ্বাসই নয়। বিশ্বাস হল অন্তরের এক বিশেষ অবস্থা [State of mind] এটা শুধুমাত্র মুখের কথা নয়। বিশ্বাস হল সর্বাবস্থায় আল্লাহ্র উপর নির্ভরশীলতা, সর্বাবস্থায় সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে তার মঙ্গলময় উপস্থিতি আত্মার ভিতরে অনুভব করা, এই বিশ্বাস সর্বান্তকরণে করা যে, মঙ্গলময় প্রভু, ব্যক্তির সর্বসত্তা ঘিরে আছেন। তারই করুণার প্রত্যাশা করা, তারই ভালবাসা অনুভব করা, তার ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পন করা। যখন বিশ্বাসের ভিত্তিমুল আন্তরিক হয় তখন এই চাকচিক্যময় পৃথিবীর রূপ আমাদের চোখে বদলে যাবে। আমাদের মাঝে অন্তর্দৃষ্টির উদ্ভব হয় [Spiritual insight]। আমরা পৃথিবীর ভোগ-লালসা, আনন্দ-উল্লাস, প্রভাব-প্রতিপত্তি সব কিছুই যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে বেষ্টন করে থাকে, যার জন্য আমরা প্রাণপণে যত্নসহকারে পরিশ্রম করি, যার জন্য আমরা লালায়িত, তার রূপ যাবে বদলে। এসবই মনে হবে অর্থহীন। শুধু তখনই আমরা বুঝতে পারবো পৃথিবীর জীবন ক্ষণস্থায়ী। এটা হচ্ছে শিক্ষানবীসকাল পরকালের জন্য। আমরা বুঝতে পারবো আল্লাহ্র কিতাব, তার প্রেরিত রাসূল, ফেরেশ্তা সবই আমাদের পরলৌকিক মঙ্গলের জন্য। পৃথিবীর শিক্ষানবীসকাল নিরাপদে অতিক্রম করার জন্য মহান আল্লাহ্র করুণার স্পর্শ আমরা অনুভব করতে পারবো। আমাদের আত্মার ভিতরে অন্তর্দৃষ্টির উদ্ভব হবে [Spiritual insight]। একেই বলা হচ্ছে বিশ্বাসের আন্তরিকতা [টিকা: ১৭৭ দেখুন]।
১৭৯। (২) ‘দান’বা ‘ব্যয়’ আল্লাহ্র প্রতি ভালবাসা থেকে, মানুষের মঙ্গলের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য যা কিছু করা হয় তাই ‘দান’ কিন্তু এই দানের পিছনে ব্যক্তির নিয়ত যদি আল্লাহ্র প্রতি ভালবাসা না হয়, যদি আল্লাহ্কে খুশী করার ইচ্ছা না হয়ে নাম, যশঃ ও সুখ্যাতি অর্জনই মুখ্য উদ্দেশ্য হয় তবে তা আল্লাহ্র কাছে দান বলে পরিগণিত হবে না। এখানে কাদের দান বা দয়া করা যায় তাদের কথা ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। (১) নিকট আত্মীয়, (২) এতিম এই শব্দটি ব্যাপক অর্থ বহন করে। এতিম বলতে আমরা শুধুমাত্র পিতৃ-মাতৃহীন বালক-বালিকাকে বুঝি। কিন্তু ব্যাপক অর্থে এতিম বলতে বুঝায় সেই ব্যক্তি সমাজে যার কোন সহায় (Support) বা সম্বল (Wealth) নাই। (৩) সেই ব্যক্তি অভাবগ্রস্থ যার সাহায্যের প্রয়োজন আছে কিন্তু কারও কাছে সে সাহায্য প্রার্থনা করে না। এই সাহায্য শুধুমাত্র অর্থের নিক্তিতে মাপা যাবে না, এ সাহায্যে যে কোনও ধরণের হতে পারে যেমন অশিক্ষিত ব্যক্তির শিক্ষার প্রয়োজন, অসুস্থ ব্যক্তির চিকিৎসার প্রয়োজন। এখানে আমাদের কর্তব্য হচ্ছে এদের খুঁজে বের করা এবং যারা সাহায্য প্রার্থনা করে তাদের উপরে এদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। (৪) পথচারী, অর্থাৎ আজকের যুগে একদেশের লোক অন্যদেশে হর-হামেশা যাতায়াত করে। নূতন দেশে, নূতন পরিবেশে নূতন সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হতে যে কষ্ট ও পরিশ্রম তা লাঘব করার জন্য সাহায্যের হাত সম্প্রসারিত করা। (৫) সাহায্য প্রার্থী, অর্থাৎ আর্থিক সাহায্যে ছাড়াও সমাজে আমরা একে অপরের উপর নির্ভরশীল। আর্থিক সাহায্য ছাড়াও যে সাহায্যের প্রয়োজন একে অপরের, সে সাহায্য করা প্রয়োজন। যেমন-সামাজিক অনুষ্ঠান, বিয়ে-শাদী ইত্যাদি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে দুর্গত এলাকায় কাজ করা ইত্যাদি। (৬) ক্রীতদাসের মুক্ত করা। আজকের যুগে ক্রীতদাস প্রথা নাই। কিন্তু ঠিক সেভাবে ক্রীতদাস প্রথা বিরাজ না করলেও সময়ের ব্যবধানে এর ধরণ পাল্টে গেছে। মানুষ মানুষের উপরে যে নির্যাতন করে সেও এক ধরণের ক্রীতদাস প্রথা। যেমন-আমরা দেখছি বসনিয়াতে মানুষের নির্যাতন। ঠিক একইভাবে বলা যায় বাংলাদেশে বর্তমানে নারী নির্যাতন ‘আইয়ামে জাহেলিয়াতের’ স্তরে প্রায় পৌঁছে গেছে। আত্মার স্বাধীনতা যেখানে ব্যাহত হয় তাই-ই হচ্ছে দাস প্রথা। কুরআনের বাণী সর্বকালের, সর্বযুগের। তাই আক্ষরিক অর্থে দাস প্রথার মধ্যে একে সীমাবদ্ধ রাখলে আল্লাহ্র বাণীর অবমাননা করা হয়। যেখানেই মানবতার অবমাননা সেখানেই মানবতার মুক্তির জন্য দান করা কুরআনের নির্দেশ। মানবতার অবমাননাই হচ্ছে ক্রীতদাস প্রথা’ যা আজকের যুগেও বিভিন্ন দেশে বিভিন্নরূপে বিরাজমান।
১৮০। ব্যক্তিগতভাবে ধর্মপরায়ণ এবং ব্যক্তিগত দান করেই আমাদের কর্তব্য শেষ হয়ে যায় না। ধর্ম-কর্ম পালন এবং দান এসবই ব্যক্তিগত না হয়ে হতে হবে সমষ্টিগতভাবে, সুশৃঙ্খলভাবে যেনো সমাজে এর প্রতিফলন ঘটে। মুসলিম প্রজাতন্ত্রে অবশ্যই নামাজ, রোজা, যাকাত অর্থাৎ আল্লাহ্র ইবাদত সমষ্টিগতভাবে হওয়া প্রয়োজন শুধু তাই-ই নয়, প্রজাতন্ত্রের সমস্ত কার্যপ্রণালী হবে কল্যাণমুখী; এবং এই কল্যাণমুখী কাজে সমাজের প্রতিটি নাগরিকের (নারী, পুরুষ, নির্বিশেষে) অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। প্রত্যেকেই যেনো সমাজের কাছে দেয় তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করে। মুসলমানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হবে দেয় প্রতিশ্রুতি পালন।
১৮১। মুসলমানদের চরিত্রের আর একটি বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা এখানে করা হয়েছে। তা হচ্ছে ধৈর্য্য এবং চরিত্রের দৃঢ়তা। একে এভাবে বর্ণনা করা যায়, ‘Preserve the dignity of man, with soul ercet’-Burns. এই গুণটির বর্ণনা করতে যেয়ে কুরআন শরীফে তিনটি বিশেষ অবস্থার উল্লেখ করা হয়েছে।
(১) শারীরিক কষ্ট এবং যন্ত্রণা।
(২) যে কোনও প্রতিকূল রোগ-শোক, অর্থ-কষ্ট, অভাব-অনটন ইত্যাদি অবস্থা। জীবনের চলার পথ সব সময়ে মসৃণ নয়। নানা প্রকার দুঃখ-ব্যাথা, ঘাত-প্রতিঘাতে জীবনের চলার পথকে করে কণ্টকাকীর্ণ। অন্যায়-অবিচার আমাদের করে দিশাহারা। সব সময়েই আল্লাহ্র উপরে অবিচল আস্থা রেখে দৃঢ়তার সাথে দুঃখের রাস্তা অতিক্রম করা।
(৩) যুদ্ধ-বিগ্রহ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, প্রাকৃতিক বিপর্যয় প্রভৃতি সময়ে আল্লাহ্র উপরে আস্থা রেখে ধৈর্য্য ধারণ করা।
আয়াতঃ 002.178
হে ঈমানদারগন! তোমাদের প্রতি নিহতদের ব্যাপারে কেসাস গ্রহণ করা বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। স্বাধীন ব্যক্তি স্বাধীন ব্যক্তির বদলায়, দাস দাসের বদলায় এবং নারী নারীর বদলায়। অতঃপর তার ভাইয়ের তরফ থেকে যদি কাউকে কিছুটা মাফ করে দেয়া হয়, তবে প্রচলিত নিয়মের অনুসরণ করবে এবং ভালভাবে তাকে তা প্রদান করতে হবে। এটা তোমাদের পালনকর্তার তরফ থেকে সহজ এবং বিশেষ অনুগ্রহ। এরপরও যে ব্যাক্তি বাড়াবাড়ি করে, তার জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব।
O you who believe! Al-Qisâs (the Law of Equality in punishment) is prescribed for you in case of murder: the free for the free, the slave for the slave, and the female for the female. But if the killer is forgiven by the brother (or the relatives, etc.) of the killed against blood money, then adhering to it with fairness and payment of the blood money, to the heir should be made in fairness. This is an alleviation and a mercy from your Lord. So after this whoever transgresses the limits (i.e. kills the killer after taking the blood money), he shall have a painful torment.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِصَاصُ فِي الْقَتْلَى الْحُرُّ بِالْحُرِّ وَالْعَبْدُ بِالْعَبْدِ وَالأُنثَى بِالأُنثَى فَمَنْ عُفِيَ لَهُ مِنْ أَخِيهِ شَيْءٌ فَاتِّبَاعٌ بِالْمَعْرُوفِ وَأَدَاء إِلَيْهِ بِإِحْسَانٍ ذَلِكَ تَخْفِيفٌ مِّن رَّبِّكُمْ وَرَحْمَةٌ فَمَنِ اعْتَدَى بَعْدَ ذَلِكَ فَلَهُ عَذَابٌ أَلِيمٌ
Ya ayyuha allatheena amanoo kutiba AAalaykumu alqisasu fee alqatla alhurru bialhurri waalAAabdu bialAAabdi waalontha bialontha faman AAufiya lahu min akheehi shay-on faittibaAAun bialmaAAroofi waadaon ilayhi bi-ihsanin thalika takhfeefun min rabbikum warahmatun famani iAAtada baAAda thalika falahu AAathabun aleemun
YUSUFALI: O ye who believe! the law of equality is prescribed to you in cases of murder: the free for the free, the slave for the slave, the woman for the woman. But if any remission is made by the brother of the slain, then grant any reasonable demand, and compensate him with handsome gratitude, this is a concession and a Mercy from your Lord. After this whoever exceeds the limits shall be in grave penalty.
PICKTHAL: O ye who believe! Retaliation is prescribed for you in the matter of the murdered; the freeman for the freeman, and the slave for the slave, and the female for the female. And for him who is forgiven somewhat by his (injured) brother, prosecution according to usage and payment unto him in kindness. This is an alleviation and a mercy from your Lord. He who transgresseth after this will have a painful doom.
SHAKIR: O you who believe! retaliation is prescribed for you in the matter of the slain, the free for the free, and the slave for the slave, and the female for the female, but if any remission is made to any one by his (aggrieved) brother, then prosecution (for the bloodwit) should be made according to usage, and payment should be made to him in a good manner; this is an alleviation from your Lord and a mercy; so whoever exceeds the limit after this he shall have a painful chastisement.
KHALIFA: O you who believe, equivalence is the law decreed for you when dealing with murder – the free for the free, the slave for the slave, the female for the female. If one is pardoned by the victim’s kin, an appreciative response is in order, and an equitable compensation shall be paid. This is an alleviation from your Lord and mercy. Anyone who transgresses beyond this incurs a painful retribution.
১৭৮। হে মুমিনগণ! হত্যার ব্যাপারে কিসাসের ১৮২ বিধান দেয়া হলো ১৮৩। স্বাধীন ব্যক্তির পরিবর্তে স্বাধীন ব্যক্তি, ক্রীতদাসের বদলে ক্রীতদাস ও নারীর বদলে নারী। কিন্তু যদি নিহত ব্যক্তির ভাই এর ১৮৪ পক্ষ থেকে কিছুটা ক্ষমা প্রদর্শন করা হয় তবে, ন্যায়সঙ্গত দাবী মেনে নাও ১৮৫ এবং কৃতজ্ঞতার সাথে তাকে ক্ষতিপূরণ দাও। এটা তোমার প্রভুর নিকট থেকে সুবিধা প্রদান এবং অনুগ্রহ। এরপরে যে কেহ সীমানা অতিক্রম করবে তার জন্য আছে ভয়াবহ শাস্তি।
১৮২। লক্ষ্য করুণ এই আয়াতটিতে এবং এর পরবর্তী আয়াতটিতে ইসলাম পূর্বাবস্থায় প্রতিহিংসার যে ব্যাপকতা তার ভয়াবহতা অনেকটা হ্রাস করা হয়েছে। এই আয়াতটিতে ন্যায় এর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সমতার ভিত্তিতে তবে কেউ যদি ক্ষমা প্রদর্শন করতে পারে সেটা হচ্ছে সর্বোত্তম। ‘কিসাস’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে ‘জানের বদলে জান’ এ ধরণের হত্যার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ইসলামের পূর্বে আরবে গোত্রে গোত্রে রক্তক্ষয়ী বদলা বংশ পরম্পরায় চলতো। তাতে অনেক নিরাপরাধ লোকও মৃত্যুমুখে পতিত হতেন। ইসলাম তা অনুমোদন করে না। ইসলামের নিয়ম হচ্ছে ‘জানের বদলে জান’। তবে সর্ব সম্মতিক্রমে দয়া প্রদর্শন হচ্ছে সর্বোত্তম, এমনকি জানের পরিবর্তে ক্ষতিপূরণ দানও আল্লাহ্র কাছে অধিক গ্রহণযোগ্য।
ইসলামে সমতার আইনে [Law of equality] তিন ধরণের লোকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। স্বাধীন ব্যক্তির পরিবর্তে স্বাধীন ব্যক্তি, এখানে মেয়ে বা পুরুষ, ধনী বা দরিদ্রের কোন পার্থক্য নাই। একজন ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তির পরিবর্তে দু’জন গরীব স্বাধীন ব্যক্তি হতে পারে না। একজন ক্রীতদাসের পরিবর্তে একজন ক্রীতদাস, একজন মহিলার পরিবর্তে একজন মহিলা। স্বাধীন মেয়েদের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়েছে এর কারণ এটা নয় তারা সমাজে ছোট বা হেয়। তারা সন্তানের মা। এই হিসেবে সমাজে তাদের অন্য আর এক অবস্থান আছে। ইসলামে ন্যায়-নীতি এরকম সুশৃঙ্খল যে, একজনের হত্যার পরিবর্তে বহু জানের সমাপ্তি হতে পারে না-যা সে সময়ে আরবদের মধ্যে গোত্রগত বিবাদের ফলে ঘটতো। কিন্তু যদি ক্ষতিগ্রস্থ দল ক্ষমা প্রদর্শন করে সেটাই সর্বোত্তম।
১৮৩। ‘কিসাস’ প্রযোজ্য শুধুমাত্র বিবাদ বিসংবাদ, ঝগড়া-ঝাটির সময়ে। ভুলক্রমে বা দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ব্যাপারে ‘কিসাস’ প্রযোজ্য নয়।
১৮৪। ‘ভাই’ এই আয়াতের এই শব্দটির অর্থ অনেক ব্যাপক ইসলামে সবাই ভাতৃবন্ধনে আবদ্ধ।
১৮৫। যদি ক্ষতিগ্রস্থ পক্ষ ক্ষমা করে দেয়, তবে অন্য পক্ষের সব শাস্তি মাফ হতে পারে।
আয়াতঃ 002.179
হে বুদ্ধিমানগণ! কেসাসের মধ্যে তোমাদের জন্যে জীবন রয়েছে, যাতে তোমরা সাবধান হতে পার।
And there is (a saving of) life for you in Al-Qisâs (the Law of Equality in punishment), O men of understanding, that you may become Al-Muttaqûn (the pious – see V.2:2).
وَلَكُمْ فِي الْقِصَاصِ حَيَاةٌ يَاْ أُولِيْ الأَلْبَابِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
Walakum fee alqisasi hayatun ya olee al-albabi laAAallakum tattaqoona
YUSUFALI: In the Law of Equality there is (saving of) Life to you, o ye men of understanding; that ye may restrain yourselves.
PICKTHAL: And there is life for you in retaliation, O men of understanding, that ye may ward off (evil).
SHAKIR: And there is life for you in (the law of) retaliation, O men of understanding, that you may guard yourselves.
KHALIFA: Equivalence is a life saving law for you, O you who possess intelligence, that you may be righteous.
১৭৯। হে বোধসম্পন্ন মানব সম্প্রদায়, কিসাসের আইন তোমাদের জন্য [জীবন রক্ষাকারী]; যেনো তোমরা নিজেদের সংযত করতে পার।
১৮০। তোমাদের মধ্যে কারও মৃত্যুকাল উপস্থিত হলে, যদি তার বিষয় সম্পত্তি থাকে, তবে ন্যায় সঙ্গত প্রথামত তার পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজনের জন্য ওসিয়াত করার বিধান তোমাদের দেয়া হলো। এটি আল্লাহ্ ভীরুদের জন্য একটি কর্তব্য ১৮৬।
১৮৬। মৃতব্যক্তির সম্পত্তি ভাগ-বাটোয়ারার জন্য সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে। কিন্তু এটি একটি ভাল পদ্ধতি যে, মৃত্যুপথযাত্রী পুরুষ বা মহিলা নিজের স্বাধীন ইচ্ছায় তার পিতা-মাতা ও নিকট আত্মীয়দের মধ্যে কারও সম্বন্ধে ওসিয়ত করে যেতে পারে। এটি হতে হবে তার কাছের লোকদের প্রতি ভালবাসার বহিঃপ্রকাশস্বরূপ এবং একান্ত আন্তরিকতার সাথে, কারও প্রতি অন্যায় করার নিয়ত যেনো তাতে না থাকে। এই ওসিয়ত অবশ্যই ন্যায়ের ভিত্তিতে হতে হবে।
আয়াতঃ 002.180
তোমাদের কারো যখন মৃত্যুর সময় উপস্থিত হয়, সে যদি কিছু ধন-সম্পদ ত্যাগ করে যায়, তবে তার জন্য ওসীয়ত করা বিধিবদ্ধ করা হলো, পিতা-মাতা ও নিকটাত্নীয়দের জন্য ইনসাফের সাথে পরহেযগারদের জন্য এ নির্দেশ জরুরী। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা সবকিছু শোনেন ও জানেন।
It is prescribed for you, when death approaches any of you, if he leaves wealth, that he make a bequest to parents and next of kin, according to reasonable manners. (This is) a duty upon Al-Muttaqûn (the pious – see V.2:2).
كُتِبَ عَلَيْكُمْ إِذَا حَضَرَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ إِن تَرَكَ خَيْرًا الْوَصِيَّةُ لِلْوَالِدَيْنِ وَالأقْرَبِينَ بِالْمَعْرُوفِ حَقًّا عَلَى الْمُتَّقِينَ
Kutiba AAalaykum itha hadara ahadakumu almawtu in taraka khayran alwasiyyatu lilwalidayni waal-aqrabeena bialmaAAroofi haqqan AAala almuttaqeena
YUSUFALI: It is prescribed, when death approaches any of you, if he leave any goods that he make a bequest to parents and next of kin, according to reasonable usage; this is due from the Allah-fearing.
PICKTHAL: It is prescribed for you, when death approacheth one of you, if he leave wealth, that he bequeath unto parents and near relatives in kindness. (This is) a duty for all those who ward off (evil).
SHAKIR: Bequest is prescribed for you when death approaches one of you, if he leaves behind wealth for parents and near relatives, according to usage, a duty (incumbent) upon those who guard (against evil).
KHALIFA: It is decreed that when death approaches, you shall write a will for the benefit of the parents and relatives, equitably. This is a duty upon the righteous.
১৭৯। হে বোধসম্পন্ন মানব সম্প্রদায়, কিসাসের আইন তোমাদের জন্য [জীবন রক্ষাকারী]; যেনো তোমরা নিজেদের সংযত করতে পার।
১৮০। তোমাদের মধ্যে কারও মৃত্যুকাল উপস্থিত হলে, যদি তার বিষয় সম্পত্তি থাকে, তবে ন্যায় সঙ্গত প্রথামত তার পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজনের জন্য ওসিয়াত করার বিধান তোমাদের দেয়া হলো। এটি আল্লাহ্ ভীরুদের জন্য একটি কর্তব্য ১৮৬।
১৮৬। মৃতব্যক্তির সম্পত্তি ভাগ-বাটোয়ারার জন্য সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে। কিন্তু এটি একটি ভাল পদ্ধতি যে, মৃত্যুপথযাত্রী পুরুষ বা মহিলা নিজের স্বাধীন ইচ্ছায় তার পিতা-মাতা ও নিকট আত্মীয়দের মধ্যে কারও সম্বন্ধে ওসিয়ত করে যেতে পারে। এটি হতে হবে তার কাছের লোকদের প্রতি ভালবাসার বহিঃপ্রকাশস্বরূপ এবং একান্ত আন্তরিকতার সাথে, কারও প্রতি অন্যায় করার নিয়ত যেনো তাতে না থাকে। এই ওসিয়ত অবশ্যই ন্যায়ের ভিত্তিতে হতে হবে।
আয়াতঃ 002.181
যদি কেউ ওসীয়ত শোনার পর তাতে কোন রকম পরিবর্তন সাধন করে, তবে যারা পরিবর্তন করে তাদের উপর এর পাপ পতিত হবে।
Then whoever changes the bequest after hearing it, the sin shall be on those who make the change. Truly, Allâh is All-Hearer, All-Knower.
فَمَن بَدَّلَهُ بَعْدَمَا سَمِعَهُ فَإِنَّمَا إِثْمُهُ عَلَى الَّذِينَ يُبَدِّلُونَهُ إِنَّ اللّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
Faman baddalahu baAAda ma samiAAahu fa-innama ithmuhu AAala allatheena yubaddiloonahu inna Allaha sameeAAun AAaleemun
YUSUFALI: If anyone changes the bequest after hearing it, the guilt shall be on those who make the change. For Allah hears and knows (All things).
PICKTHAL: And whoso changeth (the will) after he hath heard it – the sin thereof is only upon those who change it. Lo! Allah is Hearer, Knower.
SHAKIR: Whoever then alters it after he has heard it, the sin of it then is only upon those who alter it; surely Allah is Hearing, Knowing.
KHALIFA: If anyone alters a will he had heard, the sin of altering befalls those responsible for such altering. GOD is Hearer, Knower.
১৮১। ইহা শোনার পর যদি কেউ তা পরিবর্তন করে, তবে যারা পরিবর্তন করবে অপরাধ তাদেরই। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ [সব] শোনেন এবং জানেন।
১৮২। কিন্তু কেউ যদি ওসিয়াতকারীর পক্ষপাতিত্বের কিংবা অন্যায়ের আশঙ্কা করে ১৮৭, অতঃপর সে তাদের মাঝে মীমাংসা করে দেয়, এতে তার কোন পাপ হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বার বার ক্ষমাশীল এবং পরম করুণাময়।
১৮৭। ইসলামের প্রাথমিক যুগে যতদিন পর্যন্ত ওয়ারিশগণের অংশ কুরআনের আয়াত দ্বারা [৪:১১] নির্ধারিত হয় নাই ততদিন পর্যন্ত নিয়ম ছিল মৃত্যুপথযাত্রী তার পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের জন্য ওসিয়ত করে যেতেন। অবশিষ্ট সম্পত্তি সন্তানদের মধ্যে বণ্টিত হত। সে নির্দেশটিই এ আয়াতে উল্লেখিত হয়েছে।
আয়াতঃ 002.182
যদি কেউ ওসীয়তকারীর পক্ষ থেকে আশংকা করে পক্ষপাতিত্বের অথবা কোন অপরাধমূলক সিদ্ধান্তের এবং তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়, তবে তার কোন গোনাহ হবে না। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা ক্ষমাশীল, অতি দয়ালু।
But he who fears from a testator some unjust act or wrong-doing, and thereupon he makes peace between the parties concerned, there shall be no sin on him. Certainly, Allâh is Oft-Forgiving, Most Merciful.
فَمَنْ خَافَ مِن مُّوصٍ جَنَفًا أَوْ إِثْمًا فَأَصْلَحَ بَيْنَهُمْ فَلاَ إِثْمَ عَلَيْهِ إِنَّ اللّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
Faman khafa min moosin janafan aw ithman faaslaha baynahum fala ithma AAalayhi inna Allaha ghafoorun raheemun
YUSUFALI: But if anyone fears partiality or wrong-doing on the part of the testator, and makes peace between (The parties concerned), there is no wrong in him: For Allah is Oft-forgiving, Most Merciful.
PICKTHAL: But he who feareth from a testator some unjust or sinful clause, and maketh peace between the parties, (it shall be) no sin for him. Lo! Allah is Forgiving, Merciful.
SHAKIR: But he who fears an inclination to a wrong course or an act of disobedience on the part of the testator, and effects an agreement between the parties, there is no blame on him. Surely Allah is Forgiving, Merciful.
KHALIFA: If one sees gross injustice or bias on the part of a testator, and takes corrective action to restore justice to the will, he commits no sin. GOD is Forgiver, Most Merciful.
১৮১। ইহা শোনার পর যদি কেউ তা পরিবর্তন করে, তবে যারা পরিবর্তন করবে অপরাধ তাদেরই। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ [সব] শোনেন এবং জানেন।
১৮২। কিন্তু কেউ যদি ওসিয়াতকারীর পক্ষপাতিত্বের কিংবা অন্যায়ের আশঙ্কা করে ১৮৭, অতঃপর সে তাদের মাঝে মীমাংসা করে দেয়, এতে তার কোন পাপ হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বার বার ক্ষমাশীল এবং পরম করুণাময়।
১৮৭। ইসলামের প্রাথমিক যুগে যতদিন পর্যন্ত ওয়ারিশগণের অংশ কুরআনের আয়াত দ্বারা [৪:১১] নির্ধারিত হয় নাই ততদিন পর্যন্ত নিয়ম ছিল মৃত্যুপথযাত্রী তার পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের জন্য ওসিয়ত করে যেতেন। অবশিষ্ট সম্পত্তি সন্তানদের মধ্যে বণ্টিত হত। সে নির্দেশটিই এ আয়াতে উল্লেখিত হয়েছে।
আয়াতঃ 002.183
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পার।
O you who believe! Observing As-Saum (the fasting) is prescribed for you as it was prescribed for those before you, that you may become Al-Muttaqûn (the pious – see V.2:2).
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
Ya ayyuha allatheena amanoo kutiba AAalaykumu alssiyamu kama kutiba AAala allatheena min qablikum laAAallakum tattaqoona
YUSUFALI: O ye who believe! Fasting is prescribed to you as it was prescribed to those before you, that ye may (learn) self-restraint,-
PICKTHAL: O ye who believe! Fasting is prescribed for you, even as it was prescribed for those before you, that ye may ward off (evil);
SHAKIR: O you who believe! fasting is prescribed for you, as it was prescribed for those before you, so that you may guard (against evil).
KHALIFA: O you who believe, fasting is decreed for you, as it was decreed for those before you, that you may attain salvation.
রুকু – ২৩
১৮৩। হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য উপবাসের বিধান দেয়া হলো যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের দেয়া হয়েছিল, যেনো তোমরা আত্মসংযম [শিক্ষা] লাভ করতে পার ১৮৮।
১৮৮। ‘যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের দেয়া হয়েছিলো’ এই কথাটির অর্থ এই নয় যে মুসলমানদের রোজা ও পুর্ববর্তী জাতিসমূহের রোজার নিয়মকানুন বা দিন একই রকম। এ কথাটির দ্বারা এই বোঝানো হচ্ছে যে, রোজা মানে আত্ম সংযম যা পূর্ববর্তী জাতিসমূহের প্রতিও নাজিল হয়েছিল। রোজার মূল সুর বা উদ্দেশ্য হচ্ছে আত্মসংযম। জীবনের প্রতিটি ব্যাপারেই আত্মসংযমই হচ্ছে রোজার মূল বিয়ষবস্তু।
আয়াতঃ 002.184
গণনার কয়েকটি দিনের জন্য অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে, অসুখ থাকবে অথবা সফরে থাকবে, তার পক্ষে অন্য সময়ে সে রোজা পূরণ করে নিতে হবে। আর এটি যাদের জন্য অত্যন্ত কষ্ট দায়ক হয়, তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্যদান করবে। যে ব্যক্তি খুশীর সাথে সৎকর্ম করে, তা তার জন্য কল্যাণ কর হয়। আর যদি রোজা রাখ, তবে তোমাদের জন্যে বিশেষ কল্যাণকর, যদি তোমরা তা বুঝতে পার।
[Observing Saum (fasts)] for a fixed number of days, but if any of you is ill or on a journey, the same number (should be made up) from other days. And as for those who can fast with difficulty, (e.g. an old man, etc.), they have (a choice either to fast or) to feed a Miskîn (poor person) (for every day). But whoever does good of his own accord, it is better for him. And that you fast, it is better for you if only you know.
أَيَّامًا مَّعْدُودَاتٍ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ فَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَهُوَ خَيْرٌ لَّهُ وَأَن تَصُومُواْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
Ayyaman maAAdoodatin faman kana minkum mareedan aw AAala safarin faAAiddatun min ayyamin okhara waAAala allatheena yuteeqoonahu fidyatun taAAamu miskeenin faman tatawwaAAa khayran fahuwa khayrun lahu waan tasoomoo khayrun lakum in kuntum taAAlamoona
YUSUFALI: (Fasting) for a fixed number of days; but if any of you is ill, or on a journey, the prescribed number (Should be made up) from days later. For those who can do it (With hardship), is a ransom, the feeding of one that is indigent. But he that will give more, of his own free will,- it is better for him. And it is better for you that ye fast, if ye only knew.
PICKTHAL: (Fast) a certain number of days; and (for) him who is sick among you, or on a journey, (the same) number of other days; and for those who can afford it there is a ransom: the feeding of a man in need – but whoso doeth good of his own accord, it is better for him: and that ye fast is better for you if ye did but know –
SHAKIR: For a certain number of days; but whoever among you is sick or on a journey, then (he shall fast) a (like) number of other days; and those who are not able to do it may effect a redemption by feeding a poor man; so whoever does good spontaneously it is better for him; and that you fast is better for you if you know.
KHALIFA: Specific days (are designated for fasting); if one is ill or traveling, an equal number of other days may be substituted. Those who can fast, but with great difficulty, may substitute feeding one poor person for each day of breaking the fast. If one volunteers (more righteous works), it is better. But fasting is the best for you, if you only knew.
১৮৪। [উপবাস] নির্দিষ্ট কয়েকদিনের জন্য ১৮৯। তোমাদের মধ্যে কেউ যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে অথবা পর্যটনে থাকে, তবে অন্য সময়ে এই সংখ্যা পূরণ করতে হবে ১৯০। ইহা [রোজা বা সিয়াম] যাদের নিকট অতিশয় [কষ্টকর] তাদের মুক্তিপণ হচ্ছে ১৯১ একজন অভাবগ্রস্থকে খাদ্য দান করা। কিন্তু কেউ যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে এর বেশী দেয় তা হবে তার জন্য অধিক কল্যাণকর। তোমরা যদি জানতে [তবে বুঝতে] সিয়াম পালনই তোমাদের জন্য অধিক কল্যাণকর।
১৮৯। আয়াত [২:১৮৪] পড়ার সময়ে আয়াত [২:১৮৫-১৮৮] গুলিও পড়তে হবে যেনো রোজা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা করা যায়। মুসলমানদের কাছে রোজা আত্মবঞ্চনা বা অত্যাচার নয়। মুসলমানদের রোজা অন্য ধর্মের লোকদের থেকে অনেক বেশী কঠোরভাবে পালন করতে হয়। রোজার সময়ে দিনের বেলা আহার, পানীয়, যৌন প্রবৃত্তি থেকে বিরত থাকতে হয়। যারা অত্যধিক ভোজন বিলাসী, রোজার নিযম তাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কারণ দেখা যায় অতিভোজনের ফলে তারা বেশির ভাগ সময়ে মেদবহুলতায় ভোগেন। তবে রোজার সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে আধ্যাত্মিক দিক। খাদ্য, পানীয় এবং যৌনপ্রবৃত্তি মানুষের ধর্ম, যা পশুর প্রবৃত্তির সমান। এই প্রবৃত্তির দাস যারা তাদের মধ্যে আত্মিক চেতনার জন্ম লাভ করে না। তাই যখন রোজার মাধ্যমে খাদ্য, পানীয় এবং যৌন প্রবৃত্তি থেকে নিজেকে সংযত রাখা হয়, তখন স্বাভাবিকভাবে আত্মার মধ্যে অন্যান্য রিপু দমন করাও সহজ হয়ে ওঠে। যখন রিপুসমূহ আমাদের করায়ত্ব হয় তখনই আত্মার ভিতরে জন্মলাভ করে আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভের আকাঙ্ক্ষা। এই সান্নিধ্য লাভ সম্ভব হয় প্রার্থনা (নামাজ) রোজা, আল্লাহ্র ধ্যান এবং দানের মাধ্যমে। অর্থাৎ আল্লাহ্র এবাদতের মাধ্যমে। এই এবাদত হতে হবে আন্তরিক। শুধুমাত্র লোক দেখানো বা আনুষ্ঠানিক হলে চলবে না।
১৯০। পর্যটন বা সফর কতটুকু হবে সে সীমারেখা কুরআনে উল্লেখিত নাই। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর হাদীস এবং সাহাবীগণের আমলের উপর ভিত্তি করে ইমাম আবু হানিফা (রাঃ) এবং অন্যান্য কিছু সংখ্যক ফিকহ্বিদের মতে এ সফর কমপক্ষে তিন মনজিল দূরত্বের হতে হবে। অর্থাৎ একজন লোক স্বাভাবিকভাবে পায়ে হেঁটে তিনদিন যতটুকু দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে ততটুকু দূরত্বের সফরকে সফর বলে উল্লেখ করেছেন। পরবর্তী যুগের আলেমগণ ‘মাইল’ হিসেবে এ দূরত্ব আটচল্লিশ মাইল নির্ধারণ করেছেন। অবশ্য শুধু মাইল হিসেবে এটাকে ধার্য করলে ঠিক হবে না। কারণ গরুর গাড়ীতে ৮-৯ মাইল অতিক্রম করা অপেক্ষা পায়ে হেঁটে ৮-৯ মাইল অতিক্রম করা অনেক বেশী কষ্টকর। আবার ঘোড়ায় চড়ে ৮-৯ মাইল যাওয়া কিছুই নয়, তার থেকে সহজ মটর গাড়ীতে যাওয়া বা এরোপ্লেনে যাওয়া। সুতরাং বর্তমান যুগে সফরের কষ্ট নির্ভর করে যানবাহনের উপরে, সেখানে হোটেল ব্যবস্থাপনার উপরে। মওলানা ইউসুফ আলীর মতে সফরের মান বা নীতি নির্ধারণ করা উচিত পরিবেশ অনুযায়ী।
১৯১। যাদের রোজা রাখতে কষ্ট হয়, যেমন-বৃদ্ধ বা অসুস্থ লোক। এর মধ্যে সন্তান সম্ভবা মহিলা বা যারা সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ান তারাও হতে পারেন। এদের জন্য এই আয়াতটি প্রযোজ্য, কিন্তু এ ব্যাপারে সবাই একমত নয়। অনেকে মনে করেন পরবর্তীতে তাদের সমসংখ্যক দিন রোজা রাখতে হবে যখন তারা সুস্থ বোধ করবেন।
আয়াতঃ 002.185
রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তা’আলার মহত্ত্ব বর্ণনা কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।
The month of Ramadân in which was revealed the Qur’ân, a guidance for mankind and clear proofs for the guidance and the criterion (between right and wrong). So whoever of you sights (the crescent on the first night of) the month (of Ramadân i.e. is present at his home), he must observe Saum (fasts) that month, and whoever is ill or on a journey, the same number [of days which one did not observe Saum (fasts) must be made up] from other days. Allâh intends for you ease, and He does not want to make things difficult for you. (He wants that you) must complete the same number (of days), and that you must magnify Allâh [i.e. to say Takbîr (Allâhu-Akbar; Allâh is the Most Great) on seeing the crescent of the months of Ramadân and Shawwâl] for having guided you so that you may be grateful to Him.
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ يُرِيدُ اللّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلاَ يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُواْ الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ اللّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
Shahru ramadana allathee onzila feehi alqur-anu hudan lilnnasi wabayyinatin mina alhuda waalfurqani faman shahida minkumu alshshahra falyasumhu waman kana mareedan aw AAala safarin faAAiddatun min ayyamin okhara yureedu Allahu bikumu alyusra wala yureedu bikumu alAAusra walitukmiloo alAAiddata walitukabbiroo Allaha AAala ma hadakum walaAAallakum tashkuroona
YUSUFALI: Ramadhan is the (month) in which was sent down the Qur’an, as a guide to mankind, also clear (Signs) for guidance and judgment (Between right and wrong). So every one of you who is present (at his home) during that month should spend it in fasting, but if any one is ill, or on a journey, the prescribed period (Should be made up) by days later. Allah intends every facility for you; He does not want to put to difficulties. (He wants you) to complete the prescribed period, and to glorify Him in that He has guided you; and perchance ye shall be grateful.
PICKTHAL: The month of Ramadan in which was revealed the Qur’an, a guidance for mankind, and clear proofs of the guidance, and the Criterion (of right and wrong). And whosoever of you is present, let him fast the month, and whosoever of you is sick or on a journey, (let him fast the same) number of other days. Allah desireth for you ease; He desireth not hardship for you; and (He desireth) that ye should complete the period, and that ye should magnify Allah for having guided you, and that peradventure ye may be thankful.
SHAKIR: The month of Ramazan is that in which the Quran was revealed, a guidance to men and clear proofs of the guidance and the distinction; therefore whoever of you is present in the month, he shall fast therein, and whoever is sick or upon a journey, then (he shall fast) a (like) number of other days; Allah desires ease for you, and He does not desire for you difficulty, and (He desires) that you should complete the number and that you should exalt the greatness of Allah for His having guided you and that you may give thanks.
KHALIFA: Ramadan is the month during which the Quran was revealed, providing guidance for the people, clear teachings, and the statute book. Those of you who witness this month shall fast therein. Those who are ill or traveling may substitute the same number of other days. GOD wishes for you convenience, not hardship, that you may fulfill your obligations, and to glorify GOD for guiding you, and to express your appreciation.
১৮৫। রমজান হচ্ছে [সেই মাস] যে মাসে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে-যা মানব জাতির জন্য পথ প্রদর্শক এবং ইহা [ন্যায় ও অন্যায় এর মধ্যে] সুস্পষ্ট পার্থক্যকারী ১৯২। সুতরাং তোমাদের প্রত্যেকে যারা এই মাসে [নিজের গৃহে] উপস্থিত থাকবে, তারা মাসটিতে সিয়াম পালন করবে। কিন্তু কেউ যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে অথবা ভ্রমণে থাকে, পরবর্তীতে তারা নির্ধারিত দিনগুলি [পূরণ করবে]। আল্লাহ্ তোমাদের জন্য যা সহজ, তা চান এবং তিনি তোমাদের ক্লেশ দিতে চান না। [তিনি চান] তোমরা নির্দিষ্ট সংখ্যক সময় পূর্ণ করবে এবং তোমাদের সৎপথে পরিচালিত করার জন্য তোমরা আল্লাহ্র মহিমা ঘোষণা করবে ১৯৩; এবং সম্ভবতঃ তোমরা কৃতজ্ঞ হবে।
১৯২। ‘ফোরকান’ অর্থাৎ মানদণ্ড। ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য বিধানকারী পথনির্দেশ। ন্যায়ের মানদণ্ড ও অন্যায়ের মানদণ্ড [দেখুন ২:৫৩ এবং এর টিকা]।
১৯৩। রমজানের রোজার নিয়ম-কানুন সম্বন্ধে যতবার বলা হয়েছে ততবার এর সাথে আর একটি উপদেশ সংযুক্ত হয়েছে আর তা হচ্ছে রোজার আধ্যাত্মিক দিক অনুধাবন করা। অর্থাৎ যদিও রোজা একটি কষ্টসাধ্য এবাদত কিন্তু আল্লাহ্ রোজাকে ফরজ করা সত্ত্বেও এর সাথে আমাদের জন্য (১) বিশেষ সুযোগ সুবিধা দান করেছেন বিশেষ শর্ত সাপেক্ষে এবং (২) বারে বারে উল্লেখ করেছেন রোজার আধ্যাত্মিক দিকটির প্রতি। আল্লাহ্র ওয়াস্তে রোজা রাখা হচ্ছে ব্যক্তির নিজের আত্মা পরিশুদ্ধ করার উপায়। পৃথিবীর চলার পথ, জীবন ধারণের পথ কর্দমাক্ত ও পিচ্ছিল। লোভ লালসা, আসক্তি আমাদের চালিত করতে চায় পাপের পথে। রিপুসমূহ আমাদের ভোগের কর্দমাক্ত পথে চালিত করে। ফলে আত্মা তার মঞ্জিল থেকে দূরে সরে যায়। আত্মা চালিত হয় অন্ধকার পথে। একমাত্র আল্লাহ্র নিয়তে, আল্লাহ্কে খুশী করার জন্য যখন আমরা রোজা রাখি, তখনই শুধুমাত্র আত্মা এইসব পাপের বোঝা থেকে মুক্ত হতে পারে। রিপু সকল হয় অবদমিত, ফলে আধ্যাত্মিক উন্নতির পথ চলা শুরু হয়। আত্মা প্রবেশ করে অন্ধকার থেকে আলোর রাজ্যে। রোজার এই বিশেষ নিহিতার্থ ব্যতীত রোজার কোন মূল্য নাই। শুধুমাত্র উপবাস হচ্ছে সেই মৃত ঝিনুকের মত যার মধ্যে কোনও শাঁস নাই। সুতরাং এই পবিত্র মাস কোনও কষ্টসাধ্য ব্যাপার নয়। এ হচ্ছে আল্লাহ্র বিশেষ নেয়ামত তাঁর বান্দাদের প্রতি। আমাদের এই বিশেষ নেয়ামতের জন্য আল্লাহ্র কাছে কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত। তাঁর মহিমা প্রচার করা উচিত।
আয়াতঃ 002.186
আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে বস্তুতঃ আমি রয়েছি সন্নিকটে। যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা কবুল করে নেই, যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে। কাজেই আমার হুকুম মান্য করা এবং আমার প্রতি নিঃসংশয়ে বিশ্বাস করা তাদের একান্ত কর্তব্য। যাতে তারা সৎপথে আসতে পারে।
And when My slaves ask you (O Muhammad SAW) concerning Me, then (answer them), I am indeed near (to them by My Knowledge). I respond to the invocations of the supplicant when he calls on Me (without any mediator or intercessor). So let them obey Me and believe in Me, so that they may be led aright.
وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ فَلْيَسْتَجِيبُواْ لِي وَلْيُؤْمِنُواْ بِي لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ
Wa-itha saalaka AAibadee AAannee fa-innee qareebun ojeebu daAAwata alddaAAi itha daAAani falyastajeeboo lee walyu/minoo bee laAAallahum yarshudoona
YUSUFALI: When My servants ask thee concerning Me, I am indeed close (to them): I listen to the prayer of every suppliant when he calleth on Me: Let them also, with a will, Listen to My call, and believe in Me: That they may walk in the right way.
PICKTHAL: And when My servants question thee concerning Me, then surely I am nigh. I answer the prayer of the suppliant when he crieth unto Me. So let them hear My call and let them trust in Me, in order that they may be led aright.
SHAKIR: And when My servants ask you concerning Me, then surely I am very near; I answer the prayer of the suppliant when he calls on Me, so they should answer My call and believe in Me that they may walk in the right way.
KHALIFA: When My servants ask you about Me, I am always near. I answer their prayers when they pray to Me. The people shall respond to Me and believe in Me, in order to be guided.
১৮৬। যখন আমার বান্দাগণ আমার সম্বন্ধে তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, আমি তো প্রকৃতই [তাদের] অতি নিকটে। যখন আহবানকারী আমাকে ডাকে, আমি প্রত্যেক আহবানকারীর আহবানে সাড়া দেই। সুতরাং তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ঈমান আনুক; যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে; ১৯৪।
১৮৭। সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য স্ত্রী সম্ভোগ বৈধ করা হলো। তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ [স্বরূপ], তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ [স্বরূপ] ১৯৫। আল্লাহ্ জানেন তোমরা পরস্পরের সঙ্গে গোপনে যা করতে। কিন্তু তিনি তোমাদের দিকে ফিরেছেন এবং ক্ষমা করেছেন। সুতরাং এখন তাদের সাথে সঙ্গত হও, এবং আল্লাহ্ তোমাদের জন্য যা বিধিবদ্ধ করেছেন তা কামনা কর ১৯৬। এবং আহার কর এবং পান কর যতক্ষণ না ঊষার শুভ্র রেখা রাত্রির কৃষ্ণরেখা থেকে স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত হয় ১৯৭। অতঃপর নিশাগম পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর ১৯৮। কিন্তু মসজিদে ই’তিকাফের সময়ে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সঙ্গত হয়ো না ১৯৯। এগুলি আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত সীমারেখা। সুতরাং এগুলির নিকটবর্তী হয়ো না। এভাবেই আল্লাহ্ মানব জাতির নিকট তাঁর নিদর্শনাবলী সুস্পষ্ট করেন; যেনো তারা আত্মসংযম শিক্ষা লাভ করে।
১৯৪। আয়াত [২:১৮৬] এবং আয়াত [২:১৮৮] দু’টি রমজানের রোজার সাথে সংশ্লিষ্ট, ১৮৬ তে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে রমজানের আধ্যাত্মিক দিকটির প্রতি। রোজা সংক্রান্ত ইবাদতে অবস্থা বিশেষে অব্যহতি দান এবং বিভিন্ন সহজতা সত্ত্বেও কিছু কষ্ট বিদ্যমান রয়েছে। এ কষ্টকে সহজ করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ্র বিশেষ অনুগ্রহের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, আমি বান্দাদের সন্নিকটে রয়েছি। আল্লাহ্ আমাদের প্রার্থনার জবাবে তাঁর সান্নিধ্যের আশ্বাস দিচ্ছেন। এর থেকে বড় পাওয়া আর বান্দার জীবনে কি হতে পারে? আয়াত [২:১৮৮] তে বলা হচ্ছে যে, অন্যায়ভাবে যেন অন্যের সম্পত্তি গ্রাস না করি অর্থাৎ হারাম খাবার না খাই।
১৯৫। এই আয়াতটি থেকে বোঝা যায় ইসলামে নারী ও পুরুষকে আল্লাহ্ সমান মর্যাদা দিয়েছেন। নারী ও পুরুষ একে অপরের ভূষণ। অর্থাৎ পরস্পরের বন্ধু, সুখে-দুঃখে পরস্পরের অংশীদার, বিপদে-আপদে পরস্পরের সান্ত্বনা ও অবলম্বন। অর্থাৎ একে অপরের সম্পূরক বা অংশ। পোষাক যেরূপ শরীরের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত থাকে নারী ও পুরুষের মধ্যে সম্পর্কও তাই, একে অপরের পোষাকের ন্যায়। কেউই বড় নয় বা কেউই ছোট নয়। এখানে পোষাকের উপমা দেয়া হয়েছে কারণ পোষাকের ব্যবহার হচ্ছে লজ্জা নিবারণ ও সৌন্দর্য্যবৃদ্ধির জন্য। ঠিক সেরকম স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হচ্ছে সুখ-দুঃখ, বিপদ-আপদ সবকিছুতে পরস্পর সমতার ভিত্তিতে জীবনের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি ও বাহিরের নিষ্ঠুর পৃথিবী থেকে আত্মরক্ষা করা। অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হবে সমঝোতার (Mutuality) ভিত্তিতে।
স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কের মধ্যে সহবাসের প্রশ্নটিও এসে যায়। এটা অত্যন্ত জটিল ব্যাপার, তাই আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে এ ব্যাপারে সততা এবং স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গীর (Openness) আশ্রয় নিতে। মিথ্যা এবং আত্মবঞ্চনাকে পরিহার করতে বলা হয়েছে। যৌন অনুভূতিকে খাদ্য এবং পানীয় এর সাথে এক শ্রেণীভূক্ত করা হয়েছে। কারণ খাদ্য, পানীয় এবং যৌন অনুভূতি এ তিনটিই পশু এবং মানুষ উভয়েরই মধ্যে সমভাবে বর্তমান। সুতরাং এ তিনটি প্রবৃত্তিকে পশু প্রবৃত্তি বলা চলে। সুতরাং রমজান মাসে দিনের বেলায় এই প্রবৃত্তিগুলিকে অবদমিত রাখতে হবে, তবে রাতের বেলায় এসবে নিষেধ নাই এবং এর জন্য লজ্জিত হওয়ার কোন কারণ নাই। কারণ প্রবৃত্তির জন্য আমরা দায়ী নই। এটা আল্লাহ্ প্রদত্ত। আমাদের প্রতি আল্লাহ্ আদেশ দিয়েছেন প্রবৃত্তি ও রিপুসমূহকে নিজের আয়ত্বে আনতে। আমরা যেনো প্রবৃত্তি ও রিপুর দাস না হই। তাই রমজানের একমাস এর চর্চা হয়।
১৯৬। ‘এবং আল্লাহ্ তোমাদের জন্য যা বিধিবদ্ধ করেছেন তা কামনা কর’। এই লাইনটি সম্বন্ধে বিভিন্ন মতবাদ আছে। বিভিন্ন অনুবাদক একে বিভিন্ন ভাবে অনুবাদ করেছেন। কেহ কেহ বলেন এর অর্থ এই যে ঊষা সমাগমের পূর্ব পর্যন্ত পানাহার এবং যৌনসঙ্গম বৈধ। আবার অনেকের মতে এর অর্থ হচ্ছে তোমাদের জন্য যা বৈধ করা হয়েছে তা ভোগ কর এবং রোজার যা মূল উদ্দেশ্য তার অনুসন্ধান কর। রোজার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে রিপুর দমন করা যাতে আত্মার উন্নতি লাভ ঘটে, ফলে আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভ সহজ হয়। অর্থাৎ আধ্যাত্মিক উন্নতি লাভের চেষ্টা করাই হচ্ছে রোজার মূল উদ্দেশ্য।
১৯৭। যারা প্রকৃতির সাথে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত তারা জানে, প্রতুষ্যের রূপমাধুর্য কী মনোহর। প্রথমে দেখা দেয় পূর্বদিগন্তে সাদা অনির্দিষ্ট আলোকের চিকন চিকন রেখা তারপর একটি অন্ধকার সবকিছু গ্রাস করে ফেলে, পরে এই অন্ধকারের বুক চিরে ধীরে ধীরে দেখা দেয় একটি রক্তিমাভ সাদা সুনির্দিষ্ট আলোক রেখা। এটিই হচ্ছে সত্যিকার প্রভাত বা ‘সুবহ্ সাদিক’। এরপর থেকেই রোজার সময় শুরু হয়।
১৯৮। ‘নিশাগম’ আরবীতে এই অর্থই হয়। তবে রাসূলের (সাঃ) শিক্ষা ও প্রত্যক্ষ রোজা রাখার নিয়ম থেকে জানা যায় যে এর সঠিক অর্থ হবে, ‘সূর্যাস্ত পর্যন্ত’।
১৯৯। এই আয়াতটি দ্বারা ‘ইহ্তিকাফ’ এর উল্লেখ করা হয়েছে। এর মানে হচ্ছে মসজিদে অবস্থান করে এবাদত বন্দেগীতে মশগুল হওয়া। আমাদের নবী (সাঃ) রমজানের শেষ দশ দিন মসজিদেই অবস্থান করতেন।
আয়াতঃ 002.187
রোযার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ অবগত রয়েছেন যে, তোমরা আত্নপ্রতারণা করছিলে, সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। অতঃপর তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর এবং যা কিছু তোমাদের জন্য আল্লাহ দান করেছেন, তা আহরন কর। আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত। আর যতক্ষণ তোমরা এতেকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মিশো না। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক বেঁধে দেয়া সীমানা। অতএব, এর কাছেও যেও না। এমনিভাবে বর্ণনা করেন আল্লাহ নিজের আয়াত সমূহ মানুষের জন্য, যাতে তারা বাঁচতে পারে।
It is made lawful for you to have sexual relations with your wives on the night of As-Saum (the fasts). They are Lîbas [i.e. body cover, or screen, or Sakan, (i.e. you enjoy the pleasure of living with her – as in Verse 7:189) Tafsir At-Tabarî], for you and you are the same for them. Allâh knows that you used to deceive yourselves, so He turned to you (accepted your repentance) and forgave you. So now have sexual relations with them and seek that which Allâh has ordained for you (offspring), and eat and drink until the white thread (light) of dawn appears to you distinct from the black thread (darkness of night), then complete your Saum (fast) till the nightfall. And do not have sexual relations with them (your wives) while you are in I’tikâf (i.e. confining oneself in a mosque for prayers and invocations leaving the worldly activities) in the mosques. These are the limits (set) by Allâh, so approach them not. Thus does Allâh make clear His Ayât (proofs, evidences, lessons, signs, revelations, verses, laws, legal and illegal things, Allâh’s set limits, orders, etc.) to mankind that they may become Al-Muttaqûn (the pious – see V.2:2).
أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَى نِسَآئِكُمْ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ عَلِمَ اللّهُ أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَخْتانُونَ أَنفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنكُمْ فَالآنَ بَاشِرُوهُنَّ وَابْتَغُواْ مَا كَتَبَ اللّهُ لَكُمْ وَكُلُواْ وَاشْرَبُواْ حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّواْ الصِّيَامَ إِلَى الَّليْلِ وَلاَ تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ تِلْكَ حُدُودُ اللّهِ فَلاَ تَقْرَبُوهَا كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللّهُ آيَاتِهِ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ
Ohilla lakum laylata alssiyami alrrafathu ila nisa-ikum hunna libasun lakum waantum libasun lahunna AAalima Allahu annakum kuntum takhtanoona anfusakum fataba AAalaykum waAAafa AAankum faal-ana bashiroohunna waibtaghoo ma kataba Allahu lakum wakuloo waishraboo hatta yatabayyana lakumu alkhaytu al-abyadu mina alkhayti al-aswadi mina alfajri thumma atimmoo alssiyama ila allayli wala tubashiroohunna waantum AAakifoona fee almasajidi tilka hudoodu Allahi fala taqrabooha kathalika yubayyinu Allahu ayatihi lilnnasi laAAallahum yattaqoona
YUSUFALI: Permitted to you, on the night of the fasts, is the approach to your wives. They are your garments and ye are their garments. Allah knoweth what ye used to do secretly among yourselves; but He turned to you and forgave you; so now associate with them, and seek what Allah Hath ordained for you, and eat and drink, until the white thread of dawn appear to you distinct from its black thread; then complete your fast Till the night appears; but do not associate with your wives while ye are in retreat in the mosques. Those are Limits (set by) Allah: Approach not nigh thereto. Thus doth Allah make clear His Signs to men: that they may learn self-restraint.
PICKTHAL: It is made lawful for you to go in unto your wives on the night of the fast. They are raiment for you and ye are raiment for them. Allah is Aware that ye were deceiving yourselves in this respect and He hath turned in mercy toward you and relieved you. So hold intercourse with them and seek that which Allah hath ordained for you, and eat and drink until the white thread becometh distinct to you from the black thread of the dawn. Then strictly observe the fast till nightfall and touch them not, but be at your devotions in the mosques. These are the limits imposed by Allah, so approach them not. Thus Allah expoundeth His revelation to mankind that they may ward off (evil).
SHAKIR: It is made lawful to you to go into your wives on the night of the fast; they are an apparel for you and you are an apparel for them; Allah knew that you acted unfaithfully to yourselves, so He has turned to you (mercifully) and removed from you (this burden); so now be in contact with them and seek what Allah has ordained for you, and eat and drink until the whiteness of the day becomes distinct from the blackness of the night at dawn, then complete the fast till night, and have not contact with them while you keep to the mosques; these are the limits of Allah, so do not go near them. Thus does Allah make clear His communications for men that they may guard (against evil).
KHALIFA: Permitted for you is sexual intercourse with your wives during the nights of fasting. They are the keepers of your secrets, and you are the keepers of their secrets. GOD knew that you used to betray your souls, and He has redeemed you, and has pardoned you. Henceforth, you may have intercourse with them, seeking what GOD has permitted for you. You may eat and drink until the white thread of light becomes distinguishable from the dark thread of night at dawn. Then, you shall fast until sunset. Sexual intercourse is prohibited if you decide to retreat to the masjid (during the last ten days of Ramadan). These are GOD’s laws; you shall not transgress them. GOD thus clarifies His revelations for the people, that they may attain salvation.
১৮৬। যখন আমার বান্দাগণ আমার সম্বন্ধে তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, আমি তো প্রকৃতই [তাদের] অতি নিকটে। যখন আহবানকারী আমাকে ডাকে, আমি প্রত্যেক আহবানকারীর আহবানে সাড়া দেই। সুতরাং তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ঈমান আনুক; যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে; ১৯৪।
১৮৭। সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য স্ত্রী সম্ভোগ বৈধ করা হলো। তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ [স্বরূপ], তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ [স্বরূপ] ১৯৫। আল্লাহ্ জানেন তোমরা পরস্পরের সঙ্গে গোপনে যা করতে। কিন্তু তিনি তোমাদের দিকে ফিরেছেন এবং ক্ষমা করেছেন। সুতরাং এখন তাদের সাথে সঙ্গত হও, এবং আল্লাহ্ তোমাদের জন্য যা বিধিবদ্ধ করেছেন তা কামনা কর ১৯৬। এবং আহার কর এবং পান কর যতক্ষণ না ঊষার শুভ্র রেখা রাত্রির কৃষ্ণরেখা থেকে স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত হয় ১৯৭। অতঃপর নিশাগম পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর ১৯৮। কিন্তু মসজিদে ই’তিকাফের সময়ে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সঙ্গত হয়ো না ১৯৯। এগুলি আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত সীমারেখা। সুতরাং এগুলির নিকটবর্তী হয়ো না। এভাবেই আল্লাহ্ মানব জাতির নিকট তাঁর নিদর্শনাবলী সুস্পষ্ট করেন; যেনো তারা আত্মসংযম শিক্ষা লাভ করে।
১৯৪। আয়াত [২:১৮৬] এবং আয়াত [২:১৮৮] দু’টি রমজানের রোজার সাথে সংশ্লিষ্ট, ১৮৬ তে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে রমজানের আধ্যাত্মিক দিকটির প্রতি। রোজা সংক্রান্ত ইবাদতে অবস্থা বিশেষে অব্যহতি দান এবং বিভিন্ন সহজতা সত্ত্বেও কিছু কষ্ট বিদ্যমান রয়েছে। এ কষ্টকে সহজ করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ্র বিশেষ অনুগ্রহের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, আমি বান্দাদের সন্নিকটে রয়েছি। আল্লাহ্ আমাদের প্রার্থনার জবাবে তাঁর সান্নিধ্যের আশ্বাস দিচ্ছেন। এর থেকে বড় পাওয়া আর বান্দার জীবনে কি হতে পারে? আয়াত [২:১৮৮] তে বলা হচ্ছে যে, অন্যায়ভাবে যেন অন্যের সম্পত্তি গ্রাস না করি অর্থাৎ হারাম খাবার না খাই।
১৯৫। এই আয়াতটি থেকে বোঝা যায় ইসলামে নারী ও পুরুষকে আল্লাহ্ সমান মর্যাদা দিয়েছেন। নারী ও পুরুষ একে অপরের ভূষণ। অর্থাৎ পরস্পরের বন্ধু, সুখে-দুঃখে পরস্পরের অংশীদার, বিপদে-আপদে পরস্পরের সান্ত্বনা ও অবলম্বন। অর্থাৎ একে অপরের সম্পূরক বা অংশ। পোষাক যেরূপ শরীরের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত থাকে নারী ও পুরুষের মধ্যে সম্পর্কও তাই, একে অপরের পোষাকের ন্যায়। কেউই বড় নয় বা কেউই ছোট নয়। এখানে পোষাকের উপমা দেয়া হয়েছে কারণ পোষাকের ব্যবহার হচ্ছে লজ্জা নিবারণ ও সৌন্দর্য্যবৃদ্ধির জন্য। ঠিক সেরকম স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হচ্ছে সুখ-দুঃখ, বিপদ-আপদ সবকিছুতে পরস্পর সমতার ভিত্তিতে জীবনের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি ও বাহিরের নিষ্ঠুর পৃথিবী থেকে আত্মরক্ষা করা। অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হবে সমঝোতার (Mutuality) ভিত্তিতে।
স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কের মধ্যে সহবাসের প্রশ্নটিও এসে যায়। এটা অত্যন্ত জটিল ব্যাপার, তাই আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে এ ব্যাপারে সততা এবং স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গীর (Openness) আশ্রয় নিতে। মিথ্যা এবং আত্মবঞ্চনাকে পরিহার করতে বলা হয়েছে। যৌন অনুভূতিকে খাদ্য এবং পানীয় এর সাথে এক শ্রেণীভূক্ত করা হয়েছে। কারণ খাদ্য, পানীয় এবং যৌন অনুভূতি এ তিনটিই পশু এবং মানুষ উভয়েরই মধ্যে সমভাবে বর্তমান। সুতরাং এ তিনটি প্রবৃত্তিকে পশু প্রবৃত্তি বলা চলে। সুতরাং রমজান মাসে দিনের বেলায় এই প্রবৃত্তিগুলিকে অবদমিত রাখতে হবে, তবে রাতের বেলায় এসবে নিষেধ নাই এবং এর জন্য লজ্জিত হওয়ার কোন কারণ নাই। কারণ প্রবৃত্তির জন্য আমরা দায়ী নই। এটা আল্লাহ্ প্রদত্ত। আমাদের প্রতি আল্লাহ্ আদেশ দিয়েছেন প্রবৃত্তি ও রিপুসমূহকে নিজের আয়ত্বে আনতে। আমরা যেনো প্রবৃত্তি ও রিপুর দাস না হই। তাই রমজানের একমাস এর চর্চা হয়।
১৯৬। ‘এবং আল্লাহ্ তোমাদের জন্য যা বিধিবদ্ধ করেছেন তা কামনা কর’। এই লাইনটি সম্বন্ধে বিভিন্ন মতবাদ আছে। বিভিন্ন অনুবাদক একে বিভিন্ন ভাবে অনুবাদ করেছেন। কেহ কেহ বলেন এর অর্থ এই যে ঊষা সমাগমের পূর্ব পর্যন্ত পানাহার এবং যৌনসঙ্গম বৈধ। আবার অনেকের মতে এর অর্থ হচ্ছে তোমাদের জন্য যা বৈধ করা হয়েছে তা ভোগ কর এবং রোজার যা মূল উদ্দেশ্য তার অনুসন্ধান কর। রোজার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে রিপুর দমন করা যাতে আত্মার উন্নতি লাভ ঘটে, ফলে আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভ সহজ হয়। অর্থাৎ আধ্যাত্মিক উন্নতি লাভের চেষ্টা করাই হচ্ছে রোজার মূল উদ্দেশ্য।
১৯৭। যারা প্রকৃতির সাথে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত তারা জানে, প্রতুষ্যের রূপমাধুর্য কী মনোহর। প্রথমে দেখা দেয় পূর্বদিগন্তে সাদা অনির্দিষ্ট আলোকের চিকন চিকন রেখা তারপর একটি অন্ধকার সবকিছু গ্রাস করে ফেলে, পরে এই অন্ধকারের বুক চিরে ধীরে ধীরে দেখা দেয় একটি রক্তিমাভ সাদা সুনির্দিষ্ট আলোক রেখা। এটিই হচ্ছে সত্যিকার প্রভাত বা ‘সুবহ্ সাদিক’। এরপর থেকেই রোজার সময় শুরু হয়।
১৯৮। ‘নিশাগম’ আরবীতে এই অর্থই হয়। তবে রাসূলের (সাঃ) শিক্ষা ও প্রত্যক্ষ রোজা রাখার নিয়ম থেকে জানা যায় যে এর সঠিক অর্থ হবে, ‘সূর্যাস্ত পর্যন্ত’।
১৯৯। এই আয়াতটি দ্বারা ‘ইহ্তিকাফ’ এর উল্লেখ করা হয়েছে। এর মানে হচ্ছে মসজিদে অবস্থান করে এবাদত বন্দেগীতে মশগুল হওয়া। আমাদের নবী (সাঃ) রমজানের শেষ দশ দিন মসজিদেই অবস্থান করতেন।
আয়াতঃ 002.188
তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না। এবং জনগণের সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে পাপ পন্থায় আত্নসাৎ করার উদ্দেশে শাসন কতৃপক্ষের হাতেও তুলে দিও না।
And eat up not one another’s property unjustly (in any illegal way e.g. stealing, robbing, deceiving, etc.), nor give bribery to the rulers (judges before presenting your cases) that you may knowingly eat up a part of the property of others sinfully.
وَلاَ تَأْكُلُواْ أَمْوَالَكُم بَيْنَكُم بِالْبَاطِلِ وَتُدْلُواْ بِهَا إِلَى الْحُكَّامِ لِتَأْكُلُواْ فَرِيقًا مِّنْ أَمْوَالِ النَّاسِ بِالإِثْمِ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ
Wala ta/kuloo amwalakum baynakum bialbatili watudloo biha ila alhukkami lita/kuloo fareeqan min amwali alnnasi bial-ithmi waantum taAAlamoona
YUSUFALI: And do not eat up your property among yourselves for vanities, nor use it as bait for the judges, with intent that ye may eat up wrongfully and knowingly a little of (other) people’s property.
PICKTHAL: And eat not up your property among yourselves in vanity, nor seek by it to gain the hearing of the judges that ye may knowingly devour a portion of the property of others wrongfully.
SHAKIR: And do not swallow up your property among yourselves by false means, neither seek to gain access thereby to the judges, so that you may swallow up a part of the property of men wrongfully while you know.
KHALIFA: You shall not take each others’ money illicitly, nor shall you bribe the officials to deprive others of some of their rights illicitly, while you know.
১৮৮। তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করো না। মানুষের ধন-সম্পদের অংশ বিশেষ জেনে বুঝে অন্যায়রূপে গ্রাস করার জন্য বিচারকদের, [শাসকদের] ঘুষ প্রদান করবে না ২০১।
২০১। জৈবিক প্রয়োজন তিনটি খাদ্য, পানীয় এবং যৌন অনুভূতি। এই তিনটি প্রয়োজন পশু, মানুষ সকলেরই সামন কিন্তু মানুষের পশু অপেক্ষা আর একটি কামনা প্রবল তা হচ্ছে অর্থ ও সম্পদের আকাঙ্ক্ষা। সৎ পথে অর্থ উপার্জন ইসলাম অনুমোদন করে। শুধু অনুমোদনই করে না উৎসাহিত করে। কিন্তু যখন এই অর্থ সম্পদ উপার্জন অসৎ পথে হয় তখনই তা পাপের পথ বা পাপে পর্যবসিত হয়। সাধারণভাবে আমরা সৎপথ বলতে বুঝি চুরি, ডাকাতি না করা, এবং তহবিল তসরুফ না করা। একজন সৎ মানুষ এই তিনটি থেকে বিরত থাকাকেই মোটামুটিভাবে সৎ পথ বলে ধারণা করেন। কারণ মানুষ লোভের বশবর্তী হয়ে অর্থ উপার্জনের জন্য এই তিনটি উপায়েরই আশ্রয় গ্রহণ করে। তিনটি উপায়ই হচ্ছে অর্থলোভ চরিতার্থ করার উপায়। কিন্তু এখানে আরও দুটি সুক্ষ্ণ লোভের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। এগুলির একটা হচ্ছে ঘুষ দেওয়া। অর্থাৎ অন্যের সম্পদ গ্রাস না করে নিজের সম্পদ বিচারক বা কর্তৃত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ঘুষ প্রদান করা যেনো অন্যায়ভাবে সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারে বা আর্থিক সুবিধা লাভ করতে পারে কিন্তু আইন তাকে ধরতে পারে না। এরকম উদাহরণ আমাদের সমাজে অজস্র। দ্বিতীয়টি অনুবাদ করা হয়েছে ‘একে অন্যের অর্থ সম্পদ অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করো না’। একথাটির অর্থ এই দাঁড়ায় যে, জনগণের সম্পদ (Public Property) অন্যায়ভাবে গ্রাস না করা। কর্তৃপক্ষকে ঘুষ দেওয়া, ঘুষ খাওয়া, অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করা ইসলামে নিষিদ্ধ। এগুলি সবই অসৎপথে উপার্জিত অর্থ। অসৎ পথে উপার্জিত অর্থ হারাম।
হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূলে করীম (সাঃ) বলেছেন, ‘যখন কোন বান্দা হারাম মাল খায় এবং সদ্কা খয়রাত করে, তা কবুল হয় না। যদি তা থেকে ব্যয় করে, তবে তাতে বরকত হয় না। যদি তা উত্তরাধিকারী ওয়ারিশানের জন্য রেখে যায় তবে তা জাহান্নামে যাওয়ার পক্ষে তার জন্য পাথেয় হয়।’ নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মন্দ বস্তু দ্বারা মন্দ আমলকে বিধৌত করেন না। অবশ্য সৎ কর্ম দ্বারা অসৎ কর্মকে ধুয়ে দেন। আমাদের সমাজে হারাম খাওয়ার সম্বন্ধে সাধারণ ব্যক্তিদের যা ধারণা তা হচ্ছে শুকরের মাংস, মদ এবং আল্লাহ্র নাম ব্যতীত জবাই করা পশুর গোশ্ত খাওয়া হারাম। এ ব্যাপারে সবাই কঠোরভাবে অনুশীলন করতে চেষ্টা করে। কিন্তু অসৎপথে [ঘুষ, চোরাকারবারী, জনগেণর সম্পদ] অর্জিত অর্থকে হারাম বলে গণ্য করা হয়না। অসৎ পথে অর্জিত অর্থ সমাজের শৃঙ্খলা ও শান্তি বিঘ্নিত করে। শুকরের মাংস, মদ ও বেহালাল পশুর মাংস অপেক্ষাও অসৎ পথের উপার্জিত অর্থে কেনা খাদ্য অনেক বেশী ক্ষতিকর এবং হারাম। হযরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, মহানবী (সাঃ) বলেছেন, ‘আর সে সত্তার কসম করে বলছি, যাঁর হাতে মুহম্মদের প্রাণ, বান্দা যখন নিজের পেটে হারাম লোকমা ঢোকায়, তখন চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার কোন আমল কবুল হয় না। আর যার শরীরের মাংস হারাম মাল দ্বারা গঠিত হয়, সে মাংসের জন্য তো জাহান্নামের আগুনই যোগ্য স্থান।’
এই আয়াতের শিক্ষা সর্বযুগের সর্বকালের জন্য প্রযোজ্য। এ কারণেই আজ বহু মুসলিম দেশ অনুন্নত ও সামাজিক অনাচার ও অত্যাচারের শিকার। সুতরাং রোজার সংযম হচ্ছে খাদ্য, পানীয়, যৌন অনুভূতি ও অর্থ সম্পদের অন্যায় লোভ থেকে নিজেকে রক্ষা করা ও আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য রীপু সমূহের সংযমের চেষ্টা করা।
আয়াতঃ 002.189
তোমার নিকট তারা জিজ্ঞেস করে নতুন চাঁদের বিষয়ে। বলে দাও যে এটি মানুষের জন্য সময় নির্ধারণ এবং হজ্বের সময় ঠিক করার মাধ্যম। আর পেছনের দিক দিয়ে ঘরে প্রবেশ করার মধ্যে কোন নেকী বা কল্যাণ নেই। অবশ্য নেকী হল আল্লাহকে ভয় করার মধ্যে। আর তোমরা ঘরে প্রবেশ কর দরজা দিয়ে এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক যাতে তোমরা নিজেদের বাসনায় কৃতকার্য হতে পার।
They ask you (O Muhammad SAW) about the new moons. Say: These are signs to mark fixed periods of time for mankind and for the pilgrimage. It is not Al-Birr (piety, righteousness, etc.) that you enter the houses from the back but Al-Birr (is the quality of the one) who fears Allâh. So enter houses through their proper doors, and fear Allâh that you may be successful.
يَسْأَلُونَكَ عَنِ الأهِلَّةِ قُلْ هِيَ مَوَاقِيتُ لِلنَّاسِ وَالْحَجِّ وَلَيْسَ الْبِرُّ بِأَنْ تَأْتُوْاْ الْبُيُوتَ مِن ظُهُورِهَا وَلَـكِنَّ الْبِرَّ مَنِ اتَّقَى وَأْتُواْ الْبُيُوتَ مِنْ أَبْوَابِهَا وَاتَّقُواْ اللّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
Yas-aloonaka AAani al-ahillati qul hiya mawaqeetu lilnnasi waalhajji walaysa albirru bi-an ta/too albuyoota min thuhooriha walakinna albirra mani ittaqa wa/too albuyoota min abwabiha waittaqoo Allaha laAAallakum tuflihoona
YUSUFALI: They ask thee concerning the New Moons. Say: They are but signs to mark fixed periods of time in (the affairs of) men, and for Pilgrimage. It is no virtue if ye enter your houses from the back: It is virtue if ye fear Allah. Enter houses through the proper doors: And fear Allah: That ye may prosper.
PICKTHAL: They ask thee, (O Muhammad), of new moons, say: They are fixed seasons for mankind and for the pilgrimage. It is not righteousness that ye go to houses by the backs thereof (as do the idolaters at certain seasons), but the righteous man is he who wardeth off (evil). So go to houses by the gates thereof, and observe your duty to Allah, that ye may be successful.
SHAKIR: They ask you concerning the new moon. Say: They are times appointed for (the benefit of) men, and (for) the pilgrimage; and it is not righteousness that you should enter the houses at their backs, but righteousness is this that one should guard (against evil); and go into the houses by their doors and be careful (of your duty) to Allah, that you may be successful.
KHALIFA: They ask you about the phases of the moon! Say, “They provide a timing device for the people, and determine the time of Hajj.” It is not righteous to beat around the bush; righteousness is attained by upholding the commandments and by being straightforward. You shall observe GOD, that you may succeed.
রুকু – ২৪
১৮৯। লোকে তোমাকে নূতন চাঁদ সম্বন্ধে প্রশ্ন করে ২০২। বল, ‘এটি তো [মানুষের কার্যকাল] সময়ের ব্যাপ্তিকালকে নির্দিষ্ট করার চিহ্ন এবং হজ্বের [সময়ের নির্দেশক]। পশ্চাৎ দিক দিয়ে গৃহে প্রবেশে কোন পূণ্য নাই। পূণ্য আছে আল্লাহ্কে ভয় করার মধ্যে। সঠিক দরজা দিয়ে গৃহে প্রবেশ কর ২০৩। আল্লাহ্কে ভয় কর যেনো তোমরা সফলতা লাভ করতে পার।
২০২। নূতন চাঁদ দেখা সম্বন্ধে অনেক ধরণের কুসংস্কার তখনকার আরব সমাজে চালু ছিল। এখানে আমাদের ঐসব কুসংস্কারকে পরিত্যাগ করতে বলা হয়েছে। মুসলমান সমাজে নূতন চাঁদের গুরুত্ব সমধিক। নূতন চাঁদ অনুযায়ী রোজা শুরু হয়, হজ্ব হয়, ঈদ হয় ইত্যাদি। সে যুগে আরবেরা নূতন চাঁদ দেখে তীর্থ যাত্রার আগে ও পরে বাড়ীর সামনের দরজা দিয়ে প্রবেশ না করে পিছনের দরজা দিয়ে করতো। এগুলিকে ইসলাম অনুমোদন করে না। ইসলাম ধর্মে কুসংস্কারের স্থান নাই। কুসংস্কার দ্বারা আত্মিক উন্নতি লাভ হয় না। আত্মিক উন্নতির চাবিকাঠি হচ্ছে চারিত্রিক গুণাবলী অর্জন। আর এই গুণাবলীর ভিত্তি হবে আল্লাহ্র প্রতি ভালবাসা, আল্লাহ্ ভীতি বা ‘তাকওয়া’।
২০৩। ‘তোমরা [উপযুক্ত] দরজা দিয়ে ঘরে প্রবেশ কর।’ এই লাইনটির বহুজন বহু অর্থ করেছেন। এর কয়েকটি নিম্নরূপ (১) তোমরা যখন কোনও নূতন সমাজে প্রবেশ লাভ করবে এর আচার, আচরণ ও সংস্কৃতিকে শ্রদ্ধা করবে। (২) যদি কোনও উদ্দেশ্য সফল করতে চাও সম্মানজনকভাবে এবং সৎ পথে, তবে তার জন্য আইন অনুযায়ী অগ্রসর হবে, সুবিধা লাভের জন্য ‘পিছনের দরজার [Back Door] আশ্রয় নেবে না। (৩) কোনও বক্তব্য উপস্থাপনের সময়ে সোজাসুজি উপস্থাপন করবে ‘Do not beat around the bush’। (৪) যদি কোনও কাজে বা মিশনে সাফল্য চাও তবে তার জন্য যত রকম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব তা গ্রহণ করবে।
আয়াতঃ 002.190
আর লড়াই কর আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের সাথে, যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে। অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না।
And fight in the Way of Allâh those who fight you, but transgress not the limits. Truly, Allâh likes not the transgressors. [This Verse is the first one that was revealed in connection with Jihâd, but it was supplemented by another (V.9:36)].
وَقَاتِلُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَكُمْ وَلاَ تَعْتَدُواْ إِنَّ اللّهَ لاَ يُحِبِّ الْمُعْتَدِينَ
Waqatiloo fee sabeeli Allahi allatheena yuqatiloonakum wala taAAtadoo inna Allaha la yuhibbu almuAAtadeena
YUSUFALI: Fight in the cause of Allah those who fight you, but do not transgress limits; for Allah loveth not transgressors.
PICKTHAL: Fight in the way of Allah against those who fight against you, but begin not hostilities. Lo! Allah loveth not aggressors.
SHAKIR: And fight in the way of Allah with those who fight with you, and do not exceed the limits, surely Allah does not love those who exceed the limits.
KHALIFA: You may fight in the cause of GOD against those who attack you, but do not aggress. GOD does not love the aggressors.
১৯০। যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে তোমরাও আল্লাহ্র পথে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর ২০৪। কিন্তু সীমা লঙ্ঘন করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সীমালঙ্ঘনকারীগনকে ভালোবাসেন না।
২০৪। ইসলাম আত্মরক্ষা এবং আল্লাহ্র জন্য জিহাদকে অনুমোদন করে। যুদ্ধের সময়ে সর্বশক্তি দিয়ে বিপক্ষ দলকে প্রতিরোধ করতে বলা হয়েছে কিন্তু কোনও অবস্থাতেই আল্লাহ্ প্রদত্ত সীমারেখা অতিক্রম করতে নিষেধ করা হয়েছে। যুদ্ধ জয়ের পরে শত্রুপক্ষের ফসল, গাছ কাটার অনুমতি নাই। যদি শত্রুপক্ষ বশ্যতা স্বীকার করে তবে তাদের জন্য শান্তি স্থাপন করার হুকুম হয়েছে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে।
আয়াতঃ 002.191
আর তাদেরকে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই এবং তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে যেখান থেকে তারা বের করেছে তোমাদেরকে। বস্তুতঃ ফেতনা ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ। আর তাদের সাথে লড়াই করো না মসজিদুল হারামের নিকটে যতক্ষণ না তারা তোমাদের সাথে সেখানে লড়াই করে। অবশ্য যদি তারা নিজেরাই তোমাদের সাথে লড়াই করে। তাহলে তাদেরকে হত্যা কর। এই হল কাফেরদের শাস্তি।
And kill them wherever you find them, and turn them out from where they have turned you out. And Al-Fitnah is worse than killing. And fight not with them at Al-Masjid-al-Harâm (the sanctuary at Makkah), unless they (first) fight you there. But if they attack you, then kill them. Such is the recompense of the disbelievers.
وَاقْتُلُوهُمْ حَيْثُ ثَقِفْتُمُوهُمْ وَأَخْرِجُوهُم مِّنْ حَيْثُ أَخْرَجُوكُمْ وَالْفِتْنَةُ أَشَدُّ مِنَ الْقَتْلِ وَلاَ تُقَاتِلُوهُمْ عِندَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ حَتَّى يُقَاتِلُوكُمْ فِيهِ فَإِن قَاتَلُوكُمْ فَاقْتُلُوهُمْ كَذَلِكَ جَزَاء الْكَافِرِينَ
Waoqtuloohum haythu thaqiftumoohum waakhrijoohum min haythu akhrajookum waalfitnatu ashaddu mina alqatli wala tuqatiloohum AAinda almasjidi alharami hatta yuqatilookum feehi fa-in qatalookum faoqtuloohum kathalika jazao alkafireena
YUSUFALI: And slay them wherever ye catch them, and turn them out from where they have Turned you out; for tumult and oppression are worse than slaughter; but fight them not at the Sacred Mosque, unless they (first) fight you there; but if they fight you, slay them. Such is the reward of those who suppress faith.
PICKTHAL: And slay them wherever ye find them, and drive them out of the places whence they drove you out, for persecution is worse than slaughter. And fight not with them at the Inviolable Place of Worship until they first attack you there, but if they attack you (there) then slay them. Such is the reward of disbelievers.
SHAKIR: And kill them wherever you find them, and drive them out from whence they drove you out, and persecution is severer than slaughter, and do not fight with them at the Sacred Mosque until they fight with you in it, but if they do fight you, then slay them; such is the recompense of the unbelievers.
KHALIFA: You may kill those who wage war against you, and you may evict them whence they evicted you. Oppression is worse than murder. Do not fight them at the Sacred Masjid, unless they attack you therein. If they attack you, you may kill them. This is the just retribution for those disbelievers.
১৯১। তাদের যেখানেই পাবে হত্যা করবে, যে স্থান থেকে তারা তোমাদের বের করেছিলো, তোমরাও তাদের সে স্থান থেকে বের করে দাও। দাঙ্গা-হাঙ্গামা বা উৎপীড়ন হত্যার চেয়েও বেশী খারাপ। কিন্তু মসজিদুল হারামের নিকট তাদের সাথে যুদ্ধ করবে না ২০৫ যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা [প্রথমে] সেখানে তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে। যদি তারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে; তবে তাদের হত্যা কর। যারা ঈমানের [শিখাকে] দমন করতে চায় এটাই হচ্ছে তাদের পুরস্কার ২০৬।
২০৫। ৬ষ্ঠ হিজরীতে হুদায়বিয়াতে যে ঘটনা ঘটে তারই প্রেক্ষিতে আয়াতটি নাজেল হয়। যদিও এটার সময়কাল সম্বন্ধে অনেকের সন্দেহ আছে। সেই সময়ে নও-মুসলিমরা একটি সুসংগঠিত প্রভাবশালী গোত্র বা জাতিতে পরিণত। সেই সময়ে মক্কায় মুসলিমদের প্রতি অবর্ণনীয় অত্যাচার চলছে ফলে বহু মুসলিম মদিনায় হিজরত করেছেন। মক্কার কোরাইশরা এসব নও-মুসলিমদের তাদের বাড়ী ঘরে যেতে বাঁধা প্রদান করতো এমনকি নও-মুসলিমরা যখন হজ্বব্রত পালন করতে গেলেন তখনও তাদের পবিত্র মক্কা নগরী যা বিশ্বমানবের সঙ্গম স্থল, সেখানে প্রবেশে বাঁধা প্রদান করা হয়। আরব প্যাগানদের মুসলমানদের উপর অত্যাচার, নিপীড়ন, ঔদ্ধত্য, সীমা ছাড়িয়ে যায়। নও-মুসলমান, যারা জন্মসূত্রে আরবের নাগরিক তাদের থেকে সে নাগরিক অধিকার হরণ করে নেয়া হয়। যখন হুদায়বিয়ার প্রান্তরে মুসলমানদের পবিত্র হজ্বব্রত পালনে বাঁধাদান এবং অনমনীয় মনোভাব প্রদর্শন করা হয়, তখন মুসলমান ও কোরাইশদের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা বন্ধ করার জন্য হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মক্কাবাসীরা যে শর্ত আরোপ করতে চায় তাতেই তিনি সম্মত হতে রাজী হলেন। অনেক অসুবিধার পর একটি সন্ধি চূড়ান্ত রূপ পরিগ্রহ করে। উভয় পক্ষের স্বাক্ষরিত এই চুক্তিই ‘হুদায়বিয়ার সন্ধি’ নামে খ্যাত। হুদায়বিয়ার সন্ধি চুক্তি শর্ত মোতাবেক হযরত (সাঃ) তাঁর সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) সহ ওমরাহ আদায়ের উদ্দেশ্যে যাত্রার নিয়ত করেন। আগের বছর মক্কার কাফিররা ওমরাহ্ উদ্যাপনে বাধা প্রদান করেছিল। কিন্তু সাহাবায়ে কেরামের মনে সন্দেহের উদ্রেক হয় যে, কাফিররা হয়তো তাদের সন্ধি ও চুক্তির মর্যাদা রক্ষা করবে না। যদি তারা এ বছরও বাঁধা দেয় তবে তাঁরা কী করবেন? এ প্রসঙ্গেই উল্লেখিত আয়াতে অনুমতি প্রদান করা হলো যে, যদি তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হয়, তবে তোমাদেরও তার সমুচিত জবাব দেওয়ার অনুমতি থাকলো, “তাদের যেখানেই পাবে হত্যা করবে, যে স্থান থেকে তারা তোমাদের বের করেছিলো, তোমরাও তাদের সে স্থান থেকে বের করে দাও।”
কিন্তু সাধারণভাবে ইসলাম হচ্ছে শান্তির ধর্ম যা সর্বদা ক্ষমা ও উদারতা শিক্ষা দেয়। পরস্পরের প্রতি শুভেচ্ছা, সমঝোতা ও বিশ্বস্ততায় ইসলাম বিশ্বাসী। কিন্তু তাই বলে ইসলামে অন্যায়, অত্যাচার সহ্য করার বিধান নাই। যখন ধর্ম হয় বিপন্ন, অন্যায়, অত্যাচার সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখন মুসলমানেরা নিজের জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করে এসবের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে। মুসলমানদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হবে, ধর্মের জন্য, ন্যায়ের জন্য, সত্যের জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করা, এমনকি জীবন ত্যাগ করতে দ্বিধা বোধ না করা। আত্মত্যাগ, নিঃস্বার্থ কাজ, দুঃস্থের প্রতি, নিপীড়িতের প্রতি কোমলতা প্রদর্শন ইত্যাদি হচ্ছে মুসলমানদের আদর্শ। যেমন আমরা দেখেছি মহানবী (সাঃ) এর জীবনে। আমরা এসবের প্রতিফলন দেখি সাহাবাদের জীবনে। তারা ছিলেন সাহসী, কর্তব্যপরায়ণ, বিশ্বস্ত। কাজের প্রতি আন্তরিকতা ও একাগ্রতা ছিল তাদের বৈশিষ্ট্য। তাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ছিল সর্বশক্তি দিয়ে সত্যের জন্য, ন্যায়ের জন্য যুদ্ধ করা যা ‘জেহাদ’ নামে খ্যাত। এই আয়াতে এই উপদেশই দেওয়া হয়েছে সর্বকালের সর্বযুগের মুসলমানদের জন্য।
২০৬। ‘যারা ঈমানের শিখাকে দমন করতে চায় এটাই হচ্ছে তাদের পুরষ্কার’-এখানে উপদেশ হচ্ছে কেউ যদি জোরপূর্বক তোমাদের ধর্মীয় অধিকার হরণ করতে চায়, তবে সে তোমাদের ধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এরকম অবস্থায় আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে ভীত না হয়ে প্রতিদ্বন্দীর আহবান গ্রহণ করা ও ধর্ম যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা।
আয়াতঃ 002.192
আর তারা যদি বিরত থাকে, তাহলে আল্লাহ অত্যন্ত দয়ালু।
But if they cease, then Allâh is Oft-Forgiving, Most Merciful.
فَإِنِ انتَهَوْاْ فَإِنَّ اللّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
Fa-ini intahaw fa-inna Allaha ghafoorun raheemun
YUSUFALI: But if they cease, Allah is Oft-forgiving, Most Merciful.
PICKTHAL: But if they desist, then lo! Allah is Forgiving, Merciful.
SHAKIR: But if they desist, then surely Allah is Forgiving, Merciful.
KHALIFA: If they refrain, then GOD is Forgiver, Most Merciful.
১৯২। কিন্তু তারা যদি বিরত হয়, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল এবং পরম দয়ালু।
১৯৩। যতক্ষণ [তাদের] দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও উৎপীড়ন বন্ধ না হয়; এবং ন্যায় নীতি ও আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত না হয়, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর ২০৭। কিন্তু যদি তারা বিরত হয়, তবে যারা অত্যাচারী তারা ব্যতীত অন্যদের বিরুদ্ধে শত্রুতা করা চলবে না ২০৮।
২০৭। আরবী শব্দ ‘দ্বীন’ এই কথাটির সংক্ষিপ্ত একটি শব্দ যার অর্থ অনেক ব্যাপক। দ্বীন শব্দটির দ্বারা যে ভাব প্রকাশ করে সেগুলি হচ্ছে কর্তব্যে অবিচল, ভাল-মন্দ বিচারের ক্ষমতা, ন্যায় বোধ, বিশ্বাস, আনুগত্য, কৃতজ্ঞতা বোধ, প্রথাগত আচার অনুষ্ঠান ইত্যাদি। যদি কোন রাষ্ট্র উপরোক্ত গুণাবলীর দ্বারা পরিচালিত হয় তবেই বলা যাবে সেখানে আল্লাহ্র দ্বীন প্রতিষ্ঠিত। শুধুমাত্র নাম সর্বস্ব ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আল্লাহ্র দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয় না।
২০৮। কিন্তু যদি কাফিররা তাদের চুক্তি ভঙ্গ করে এবং যুদ্ধ করে তবে তোমরাও যুদ্ধ কর জালিমদের সাথে।
আয়াতঃ 002.193
আর তোমরা তাদের সাথে লড়াই কর, যে পর্যন্ত না ফেতনার অবসান হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়। অতঃপর যদি তারা নিবৃত হয়ে যায় তাহলে কারো প্রতি কোন জবরদস্তি নেই, কিন্তু যারা যালেম (তাদের ব্যাপারে আলাদা)।
And fight them until there is no more Fitnah (disbelief and worshipping of others along with Allâh) and (all and every kind of) worship is for Allâh (Alone). But if they cease, let there be no transgression except against Az-Zâlimûn (the polytheists, and wrong-doers, etc.)
وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لاَ تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ لِلّهِ فَإِنِ انتَهَواْ فَلاَ عُدْوَانَ إِلاَّ عَلَى الظَّالِمِينَ
Waqatiloohum hatta la takoona fitnatun wayakoona alddeenu lillahi fa-ini intahaw fala AAudwana illa AAala alththalimeena
YUSUFALI: And fight them on until there is no more Tumult or oppression, and there prevail justice and faith in Allah; but if they cease, Let there be no hostility except to those who practise oppression.
PICKTHAL: And fight them until persecution is no more, and religion is for Allah. But if they desist, then let there be no hostility except against wrong-doers.
SHAKIR: And fight with them until there is no persecution, and religion should be only for Allah, but if they desist, then there should be no hostility except against the oppressors.
KHALIFA: You may also fight them to eliminate oppression, and to worship GOD freely. If they refrain, you shall not aggress; aggression is permitted only against the aggressors.
১৯২। কিন্তু তারা যদি বিরত হয়, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল এবং পরম দয়ালু।
১৯৩। যতক্ষণ [তাদের] দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও উৎপীড়ন বন্ধ না হয়; এবং ন্যায় নীতি ও আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত না হয়, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর ২০৭। কিন্তু যদি তারা বিরত হয়, তবে যারা অত্যাচারী তারা ব্যতীত অন্যদের বিরুদ্ধে শত্রুতা করা চলবে না ২০৮।
২০৭। আরবী শব্দ ‘দ্বীন’ এই কথাটির সংক্ষিপ্ত একটি শব্দ যার অর্থ অনেক ব্যাপক। দ্বীন শব্দটির দ্বারা যে ভাব প্রকাশ করে সেগুলি হচ্ছে কর্তব্যে অবিচল, ভাল-মন্দ বিচারের ক্ষমতা, ন্যায় বোধ, বিশ্বাস, আনুগত্য, কৃতজ্ঞতা বোধ, প্রথাগত আচার অনুষ্ঠান ইত্যাদি। যদি কোন রাষ্ট্র উপরোক্ত গুণাবলীর দ্বারা পরিচালিত হয় তবেই বলা যাবে সেখানে আল্লাহ্র দ্বীন প্রতিষ্ঠিত। শুধুমাত্র নাম সর্বস্ব ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আল্লাহ্র দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয় না।
২০৮। কিন্তু যদি কাফিররা তাদের চুক্তি ভঙ্গ করে এবং যুদ্ধ করে তবে তোমরাও যুদ্ধ কর জালিমদের সাথে।
আয়াতঃ 002.194
সম্মানিত মাসই সম্মানিত মাসের বদলা। আর সম্মান রক্ষা করারও বদলা রয়েছে। বস্তুতঃ যারা তোমাদের উপর জবর দস্তি করেছে, তোমরা তাদের উপর জবরদস্তি কর, যেমন জবরদস্তি তারা করেছে তোমাদের উপর। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ, যারা পরহেযগার, আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছেন।
The sacred month is for the sacred month, and for the prohibited things, there is the Law of Equality (Qisâs). Then whoever transgresses the prohibition against you, you transgress likewise against him. And fear Allâh, and know that Allâh is with Al-Muttaqûn (the pious – see V.2:2) .
الشَّهْرُ الْحَرَامُ بِالشَّهْرِ الْحَرَامِ وَالْحُرُمَاتُ قِصَاصٌ فَمَنِ اعْتَدَى عَلَيْكُمْ فَاعْتَدُواْ عَلَيْهِ بِمِثْلِ مَا اعْتَدَى عَلَيْكُمْ وَاتَّقُواْ اللّهَ وَاعْلَمُواْ أَنَّ اللّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ
Alshshahru alharamu bialshshahri alharami waalhurumatu qisasun famani iAAtada AAalaykum faiAAtadoo AAalayhi bimithli ma iAAtada AAalaykum waittaqoo Allaha waiAAlamoo anna Allaha maAAa almuttaqeena
YUSUFALI: The prohibited month for the prohibited month,- and so for all things prohibited,- there is the law of equality. If then any one transgresses the prohibition against you, Transgress ye likewise against him. But fear Allah, and know that Allah is with those who restrain themselves.
PICKTHAL: The forbidden month for the forbidden month, and forbidden things in retaliation. And one who attacketh you, attack him in like manner as he attacked you. Observe your duty to Allah, and know that Allah is with those who ward off (evil).
SHAKIR: The Sacred month for the sacred month and all sacred things are (under the law of) retaliation; whoever then acts aggressively against you, inflict injury on him according to the injury he has inflicted on you and be careful (of your duty) to Allah and know that Allah is with those who guard (against evil).
KHALIFA: During the Sacred Months, aggression may be met by an equivalent response. If they attack you, you may retaliate by inflicting an equitable retribution. You shall observe GOD and know that GOD is with the righteous.
১৯৪। পবিত্র মাসের বিনিময় পবিত্র মাস ২০৯। এবং সকল পবিত্র জিনিষের জন্য, [কিসাসের] সমতার বিধান রয়েছে। যদি কেহ তোমাদের পবিত্রতার সীমা-লঙ্ঘন করে তোমরাও তাদের বিরুদ্ধে অনুরূপ লঙ্ঘন কর। কিন্তু আল্লাহ্কে ভয় কর এবং জেনে রাখ যে, যারা নিজেকে সংযত রাখতে পারে, আল্লাহ্ তাদের সাথে থাকেন ২১০।
২০৯। আশহুরে-হারাম বা সম্মানিত মাস চারটি-(১) যিলকদ্ব, (২) যিলহজ্ব, (৩) মহরম, (৪) রজব। ইসলাম পূর্ব যুগেও এ চার মাস যুদ্ধ বিগ্রহকে হারাম মনে করা হতো; মক্কার মুশরিকরাও এ বিধি মেনে চলতো। এখানে আল্লাহ্ বলেছেন, হে মুসলমানগণ! মক্কার কাফিররা যদি তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তবে হারাম মাসে অর্থাৎ যিলকদ মাসে যুদ্ধ করতে হবে বলে তোমরা যে আশঙ্কা করছো সে সম্পর্কেও নিশ্চিত থাক। হারাম মাসে কেবল সে ক্ষেত্রেই তোমাদের জন্য যুদ্ধ নিষিদ্ধ, যে ক্ষেত্রে কাফিররা তোমাদের বিপক্ষে যুদ্ধ থেকে বিরত থাকে। অতএব যারা তোমাদের এই নিষিদ্ধতা মেনে চলে, তোমরাও তাদের বিপক্ষে এই নিষেধাজ্ঞা মেনে চল। আর যদি তারা তোমাদের সঙ্গে এই নিষিদ্ধতা মেনে না চলে, তোমাদের বিপক্ষে সীমা অতিক্রম করে, তবে তোমরাও তাদের প্রতি ততটুকুই সীমা অতিক্রম কর, যতটুকু তারা করেছে। আর এসব নির্দেশাবলী পালনে আল্লাহ্কে ভয় কর, যাতে সমতার ভিত্তিতে (Law of equality) সবকিছু হয়। আল্লাহ্ তায়ালার দান ও রহমত ঐসব আল্লাহ্ ভীরুদের সঙ্গে থাকে, যারা কোন ক্ষেত্রেই আইনের সীমা অতিক্রম করে না।
২১০। যদিও আল্লাহ্ মুসলমানদের যুদ্ধের হুকুম দিয়েছেন কিন্তু একই সাথে আত্মসংযমের আদেশ দিচ্ছেন। শক্তি প্রয়োগের এক ধরণের মাদকতা আছে। কিন্তু ধ্বংসের জন্য এ শক্তি প্রয়োগ নিষেধ। শুধুমাত্র আত্মরক্ষা ও অস্তিত্বের জন্য প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করা চলবে। মানুষের স্বভাবধর্ম এই যে শক্তির স্বাদ একবার পেলে সে শক্তি মদমত্ত হয়ে যায়। তাই আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে প্রয়োজনে অস্ত্র ধরবে কিন্তু সর্বদা নিজেকে সংযত রাখবে। যারা শক্তিধর হয়েও আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য নিজেকে সংযত রাখে আল্লাহ্র কাছে তারা মুত্তাকী। আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে যুদ্ধ করবে নীতিগত কারণে অন্ধ আবেগ ত্বারিত হয়ে নয়। নীতির জন্য প্রয়োজনে প্রাণ বিসর্জন দেবে এবং শহীদ হবে। আবেগ ত্বারিত এবং আক্রোশ দ্বেষ বা হিংসা চরিতার্থ করার জন্য যুদ্ধ করা না জায়েজ।
আয়াতঃ 002.195
আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে, তবে নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না। আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর। আল্লাহ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন।
And spend in the Cause of Allâh (i.e. Jihâd of all kinds, etc.) and do not throw yourselves into destruction (by not spending your wealth in the Cause of Allâh), and do good. Truly, Allâh loves Al-Muhsinûn (the good-doers).
وَأَنفِقُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ وَلاَ تُلْقُواْ بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ وَأَحْسِنُوَاْ إِنَّ اللّهَ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ
Waanfiqoo fee sabeeli Allahi wala tulqoo bi-aydeekum ila alttahlukati waahsinoo inna Allaha yuhibbu almuhsineena
YUSUFALI: And spend of your substance in the cause of Allah, and make not your own hands contribute to (your) destruction; but do good; for Allah loveth those who do good.
PICKTHAL: Spend your wealth for the cause of Allah, and be not cast by your own hands to ruin; and do good. Lo! Allah loveth the beneficent.
SHAKIR: And spend in the way of Allah and cast not yourselves to perdition with your own hands, and do good (to others); surely Allah loves the doers of good.
KHALIFA: You shall spend in the cause of GOD; do not throw yourselves with your own hands into destruction. You shall be charitable; GOD loves the charitable.
১৯৫। তোমাদের ধন-সম্পদ আল্লাহ্র পথে ব্যয় কর। তোমরা নিজের হাতে নিজের ধ্বংস ডেকে এনো না ২১১। সৎ কাজ কর। যারা সৎ কাজ করে আল্লাহ্ তাদের ভালবাসেন।
২১১। প্রতিটি যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের প্রয়োজন। যদি যুদ্ধ ন্যায় সঙ্গত কারণে, অন্যায়কে প্রতিরোধের জন্য আল্লাহ্র দ্বীনকে প্রতিষ্ঠার জন্য হয়, তবেই সে যুদ্ধ হবে আল্লাহ্র কারণে যুদ্ধ করা বা ‘নীতির’ জন্য যুদ্ধ করা। এসব যুদ্ধের সময়ে, আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে যার অর্থ-সম্পদ আছে তা যুদ্ধের জন্য মুক্ত হস্তে দান করা। শুধু অর্থ সম্পদ দান করেই দায়িত্ব পালন শেষ হয় না। সবচেয়ে বড় কর্তব্য ও দায়িত্ব পালন হচ্ছে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা সর্বান্তকরণে নিয়োগ করা। অর্থাৎ ‘আল্লাহ্র পথে’ ব্যয়ের সময়ে প্রত্যেকে স্ব-স্ব ক্ষমতা অনুযায়ী অর্থ-সম্পদ, মেধা, বুদ্ধি, শারীরিক সামর্থ এক কথায় সব কিছুই আল্লাহ্র রাস্তায় খরচ করবে। যদি কেউ এ সময়ে আল্লাহ্র রাস্তায় খরচ না করে অর্থ সম্পদকে কুক্ষিগত করে রাখে তবে সে তার নিজের ধ্বংস নিজেই ডেকে আনে। যদি কেউ তার অর্থ সম্পদকে আল্লাহ্র রাস্তায় ব্যয় না করে নিজস্ব ভোগ বিলাসের জন্য ব্যয় করে, তবে সে প্রকারান্তে শত্রুকেই সাহায্য করে। এবং ফলস্বরূপ নিজের ধ্বংস নিজেই ডেকে আনে। তাদের বোঝা উচিত স্বার্থপরতা কখনও ভাল কিছু করতে সমর্থ হয় না। নিঃস্বার্থভাবে সমাজের জন্য যা কিছুই করা হয় তাই আল্লাহ্কে খুশী করে। এই উপদেশ সর্বকালের সর্বযুগের। যে সমাজে ধনীদের ধন-সম্পদ, কুক্ষিগত নয়, যে সমাজে ধন-সম্পদ শুধুমাত্র তাদের বিলাস-ব্যসনে ব্যয় হয় না। তাদের সম্পদে গরীবের হক থাকে, আমরা দেখি সে সমাজ উন্নতির দিকে ধাবিত হয়। আল্লাহ্র রহমত সে সমাজের উপর বর্ষিত হয়। এই ব্যয়কেই ‘আল্লাহ্র পথে’ ব্যয় বলা হয়েছে।
আয়াতঃ 002.196
আর তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ্ব ওমরাহ পরিপূর্ণ ভাবে পালন কর। যদি তোমরা বাধা প্রাপ্ত হও, তাহলে কোরবানীর জন্য যাকিছু সহজলভ্য, তাই তোমাদের উপর ধার্য। আর তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত মাথা মুন্ডন করবে না, যতক্ষণ না কোরবাণী যথাস্থানে পৌছে যাবে। যারা তোমাদের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়বে কিংবা মাথায় যদি কোন কষ্ট থাকে, তাহলে তার পরিবর্তে রোজা করবে কিংবা খয়রাত দেবে অথবা কুরবানী করবে। আর তোমাদের মধ্যে যারা হজ্জ্ব ওমরাহ একত্রে একই সাথে পালন করতে চাও, তবে যাকিছু সহজলভ্য, তা দিয়ে কুরবানী করাই তার উপর কর্তব্য। বস্তুতঃ যারা কোরবানীর পশু পাবে না, তারা হজ্জ্বের দিনগুলোর মধ্যে রোজা রাখবে তিনটি আর সাতটি রোযা রাখবে ফিরে যাবার পর। এভাবে দশটি রোযা পূর্ণ হয়ে যাবে। এ নির্দেশটি তাদের জন্য, যাদের পরিবার পরিজন মসজিদুল হারামের আশে-পাশে বসবাস করে না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক। সন্দেহাতীতভাবে জেনো যে, আল্লাহর আযাব বড়ই কঠিন।
And perform properly (i.e. all the ceremonies according to the ways of Prophet Muhammad SAW), the Hajj and ’Umrah (i.e. the pilgrimage to Makkah) for Allâh. But if you are prevented (from completing them), sacrifice a Hady (animal, i.e. a sheep, a cow, or a camel, etc.) such as you can afford, and do not shave your heads until the Hady reaches the place of sacrifice. And whosoever of you is ill or has an ailment in his scalp (necessitating shaving), he must pay a Fidyah (ransom) of either observing Saum (fasts) (three days) or giving Sadaqah (charity – feeding six poor persons) or offering sacrifice (one sheep). Then if you are in safety and whosoever performs the ’Umrah in the months of Hajj, before (performing) the Hajj, (i.e. Hajj-at-Tamattu’ and Al-Qirân), he must slaughter a Hady such as he can afford, but if he cannot afford it, he should observe Saum (fasts) three days during the Hajj and seven days after his return (to his home), making ten days in all. This is for him whose family is not present at Al-Masjid-al-Harâm (i.e. non-resident of Makkah). And fear Allâh much and know that Allâh is Severe in punishment.[]
وَأَتِمُّواْ الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلّهِ فَإِنْ أُحْصِرْتُمْ فَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْيِ وَلاَ تَحْلِقُواْ رُؤُوسَكُمْ حَتَّى يَبْلُغَ الْهَدْيُ مَحِلَّهُ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضاً أَوْ بِهِ أَذًى مِّن رَّأْسِهِ فَفِدْيَةٌ مِّن صِيَامٍ أَوْ صَدَقَةٍ أَوْ نُسُكٍ فَإِذَا أَمِنتُمْ فَمَن تَمَتَّعَ بِالْعُمْرَةِ إِلَى الْحَجِّ فَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْيِ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلاثَةِ أَيَّامٍ فِي الْحَجِّ وَسَبْعَةٍ إِذَا رَجَعْتُمْ تِلْكَ عَشَرَةٌ كَامِلَةٌ ذَلِكَ لِمَن لَّمْ يَكُنْ أَهْلُهُ حَاضِرِي الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَاتَّقُواْ اللّهَ وَاعْلَمُواْ أَنَّ اللّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
Waatimmoo alhajja waalAAumrata lillahi fa-in ohsirtum fama istaysara mina alhadyi wala tahliqoo ruoosakum hatta yablugha alhadyu mahillahu faman kana minkum mareedan aw bihi athan min ra/sihi fafidyatun min siyamin aw sadaqatin aw nusukin fa-itha amintum faman tamattaAAa bialAAumrati ila alhajji fama istaysara mina alhadyi faman lam yajid fasiyamu thalathati ayyamin fee alhajji wasabAAatin itha rajaAAtum tilka AAasharatun kamilatun thalika liman lam yakun ahluhu hadiree almasjidi alharami waittaqoo Allaha waiAAlamoo anna Allaha shadeedu alAAiqabi
YUSUFALI: And complete the Hajj or ‘umra in the service of Allah. But if ye are prevented (From completing it), send an offering for sacrifice, such as ye may find, and do not shave your heads until the offering reaches the place of sacrifice. And if any of you is ill, or has an ailment in his scalp, (Necessitating shaving), (He should) in compensation either fast, or feed the poor, or offer sacrifice; and when ye are in peaceful conditions (again), if any one wishes to continue the ‘umra on to the hajj, He must make an offering, such as he can afford, but if he cannot afford it, He should fast three days during the hajj and seven days on his return, Making ten days in all. This is for those whose household is not in (the precincts of) the Sacred Mosque. And fear Allah, and know that Allah Is strict in punishment.
PICKTHAL: Perform the pilgrimage and the visit (to Makka) for Allah. And if ye are prevented, then send such gifts as can be obtained with ease, and shave not your heads until the gifts have reached their destination. And whoever among you is sick or hath an ailment of the head must pay a ransom of fasting or almsgiving or offering. And if ye are in safety, then whosoever contenteth himself with the visit for the pilgrimage (shall give) such gifts as can be had with ease. And whosoever cannot find (such gifts), then a fast of three days while on the pilgrimage, and of seven when ye have returned; that is, ten in all. That is for him whoso folk are not present at the Inviolable Place of Worship. Observe your duty to Allah, and know that Allah is severe in punishment.
SHAKIR: And accomplish the pilgrimage and the visit for Allah, but if, you are prevented, (send) whatever offering is easy to obtain, and do not shave your heads until the offering reaches its destination; but whoever among you is sick or has an ailment of the head, he (should effect) a compensation by fasting or alms or sacrificing, then when you are secure, whoever profits by combining the visit with the pilgrimage (should take) what offering is easy to obtain; but he who cannot find (any offering) should fast for three days during the pilgrimage and for seven days when you return; these (make) ten (days) complete; this is for him whose family is not present in the Sacred Mosque, and be careful (of your duty) to Allah, and know that Allah is severe in requiting (evil).
KHALIFA: You shall observe the complete rites of Hajj and`Umrah for GOD. If you are prevented, you shall send an offering, and do not resume cutting your hair until your offering has reached its destination. If you are ill, or suffering a head injury (and you must cut your hair), you shall expiate by fasting, or giving to charity, or some other form of worship. During the normal Hajj, if you break the state of Ihraam (sanctity) between `Umrah and Hajj, you shall expiate by offering an animal sacrifice. If you cannot afford it, you shall fast three days during Hajj and seven when you return home – this completes ten – provided you do not live at the Sacred Masjid. You shall observe GOD, and know that GOD is strict in enforcing retribution.
১৯৬। তোমরা আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে হজ্জ্ব ও ওমরা পালন কর ২১২। কিন্তু তোমরা যদি [তা করতে] বাঁধাপ্রাপ্ত হও, তবে সহজলভ্য কুরবানী করো। যতক্ষণ না কুরবাণীর পশু কুরবানী স্থলে পৌঁছায় ততক্ষণ মাথা মুন্ডন করো না। তোমাদের মধ্য যদি কেহ পীড়িত হয় ২১৩, কিংবা মাথার [চামড়ায়] অসুস্থতা থাকে তবে সিয়াম কিংবা গরীবকে অন্নদান অথবা কুরবাণীর দ্বারা ক্ষতিপূরণ দেবে। যখন তোমরা নিরাপদ হবে ২১৪, তখন যদি কেউ হজ্জ্বের সময়ে উমরাহ্ দ্বারা লাভবান হতে চায়, তবে সে সহজলভ্য কুরবাণী দেবে। কিন্তু যদি কেহ তার ব্যয়ভার বহনে সমর্থ না হয়, তবে সে হজ্জ্বের সময় তিন দিন এবং গৃহে প্রত্যাবর্তনের পরে সাত দিন এই পূর্ণ দশ দিন সিয়াম পালন করবে। ইহা তাদের জন্য যাদের ঘর-গৃহস্থালি মসজিদুল হারামের [সীমানার] নিকট নয় ২১৫, আল্লাহ্কে ভয় কর, এবং জেনে রাখ শাস্তি দানে আল্লাহ্ কঠোর ২১৬।
২১২। দেখুন সূরা ২, আয়াত ১৫০ ও টিকা ১৬১। হজ্জ্ব প্রক্রিয়া হচ্ছে একটি সম্পূর্ণ ইবাদত যা জুলহজ্জ্ব মাসের প্রথম ১২/১৩ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে হয়। উমরাহ্ হচ্ছে সংক্ষিপ্ত হজ্জ্ব যা বৎসরের যে কোন সময়েই করা সম্ভব। হজ্জ্ব ও উমরাহ্ উভয় ক্ষেত্রেই ইহ্রাম পরিধান করতে হয়, যা শুধুমাত্র কাফনের কাপড়ের ন্যায় সেলাইবিহীন দু’টুকরো কাপড়। ইহ্রাম হচ্ছে পৃথিবীর দম্ভ, অহংকার, ক্ষমতা, প্রতিপত্তি ইত্যাকার সর্ব রিপুর ত্যাগের প্রতীক স্বরূপ। ইহ্রাম পরিধানের পর থেকে হজ্জ্ব বা উমরাহ্র সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ না করা পর্যন্ত অন্য কাপড়, গহনা বা চুলের পরিচর্যা অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করা, শিকার করা ইত্যাদি নিষিদ্ধ। সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা শেষে পুরুষ লোকদের মাথার চুল চেঁছে ফেলা এবং মহিলাদের এক গোছা চুল কাটা বিধেয়। এরপরে ইহ্রাম খুলে ফেলে পোষাক পরিবর্তন করা জায়েজ।
বলা হয়েছে যে, (১) একবার ইহ্রাম পরিধান করার পর হজ্জ্ব বা উমরাহ্র সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হবে। (২) এসব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে দুনিয়াবী হবে না, তা হবে শুধুমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য নিবেদিত। (৩) যদি কোন কারণে আমরা তা সম্পন্ন করতে সক্ষম না হই, তবে তার উপরে কুরবানী করা অত্যাবশকীয় হয়ে যাবে।
২১৩। যদি কেউ সম্পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার পূর্বে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে, যার দরুন তাকে ইহ্রাম খুলে অন্য কাপড় পড়তে হবে, সেক্ষেত্রে অথবা তার মাথাতে চর্মরোগের জন্য বা অন্য কারণে তার পক্ষে চুল কামানো সম্ভব নয়, এসব ক্ষেত্রে যদি তাকে ইহ্রাম খুলে ফেলতে হয় তবে সে তিনদিন রোজা রাখবে এবং গরীবদের খাদ্য দান করবে বা পশু কুরবানী দেবে।
২১৪। এই আয়াতটি যখন অবতীর্ণ হয়, তখন মক্কা নগরী ছিলো ইসলামের শত্রুদের অধীন। সে কারণে যুদ্ধাবস্থা ও শান্তিপূর্ণ অবস্থার কথা একই সাথে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু আল্লাহ্র আয়াতের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তা বিশেষ অবস্থার প্রেক্ষাপটে অবতীর্ণ হলেও তার প্রয়োগ হবে সর্বজনীন। কারণ শীঘ্রই মক্কা নগরী শত্রুমুক্ত হয়েছিলো। দূর-দূরান্ত থেকে হজ্জ্বযাত্রীরা হজ্জ্ব ক্রিয়া সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে হজ্জ্বের সময়ের পূর্বেই মক্কা নগরীতে আগমন করতো। এসব হজ্জ্বযাত্রীরা উমরাহ্ সম্পন্ন করে ইহ্রাম খুলে ফেলতো এবং আনুষ্ঠানিক হজ্জ্বের জন্য অপেক্ষা করতো [হজ্জ্বে তামাত্তু অথবা আল্ কিরান]।
২১৬। এখানেই যুদ্ধ সম্পর্কিত কর্তব্য বা বিধান সম্বন্ধে বর্ণনা শেষ করে হজ্জ্বের সময়কার পালনীয় ও করণীয় বিধান সম্বন্ধে আলোচনা শুরু হয়েছে। যুদ্ধের সাথে সর্বদাই জীবনের ভয় জড়িত থাকে। কিন্তু আমাদের সাবধান করে দেয়া হয়েছে যে, আমরা যেন আমাদের ক্ষুদ্র স্বার্থ উদ্ধারের জন্য তীব্র আবেগে অন্ধ না হয়ে যাই। কারণ ক্ষুদ্র স্বার্থ চরিতার্থ করা অপেক্ষা আল্লাহ্র হুকুম মান্য করে জিহাদে অংশ গ্রহণ করা উত্তম। জিহাদ এমন একটি কঠিন সময় যখন ব্যক্তির চরিত্রের প্রকৃত তেজস্বীতা ও গুণাবলী পরিলক্ষিত হয় এবং এভাবেই আল্লাহ্ আমাদের ঈমানের পরীক্ষা করে থাকেন। আল্লাহ্র রাস্তায় যারা সৎ কাজ করে এবং আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে যারা আত্মসমর্পন করে তাদের প্রতি আল্লাহ্র করুণার কথা বলে শেষ করা হয়েছে ১৯৫ আয়াতটি। এই [২:১৯৬] আয়াতটি শেষ করা হয়েছে সেইসব লোকদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণের মাধ্যমে যারা আল্লাহ্র রাস্তায় কাজ করার দোহাই দিয়ে সীমা লঙ্ঘন করে থাকে। তাদের শাস্তি যে অবধারিত তাও এখানে নিশ্চিত করা হয়েছে। পরবর্তী আয়াতে আমাদের বলা হয়েছে হজ্জ্বের মত কোন বৃহৎ লোকসমাবেশে কোন কোন কাজ আমাদেরকে পরিহার করে চলতে হবে।
আয়াতঃ 002.197
হজ্জ্বে কয়েকটি মাস আছে সুবিদিত। এসব মাসে যে লোক হজ্জ্বের পরিপূর্ণ নিয়ত করবে, তার পক্ষে স্ত্রীও সাথে নিরাভরণ হওয়া জায়েজ নয়। না অশোভন কোন কাজ করা, না ঝাগড়া-বিবাদ করা হজ্জ্বের সেই সময় জায়েজ নয়। আর তোমরা যাকিছু সৎকাজ কর, আল্লাহ তো জানেন। আর তোমরা পাথেয় সাথে নিয়ে নাও। নিঃসন্দেহে সর্বোত্তম পাথেয় হচ্ছে আল্লাহর ভয়। আর আমাকে ভয় করতে থাক, হে বুদ্ধিমানগন! তোমাদের উপর তোমাদের পালনকর্তার অনুগ্রহ অন্বেষণ করায় কোন পাপ নেই।
The Hajj (pilgrimage) is (in) the well-known (lunar year) months (i.e. the 10th month, the 11th month and the first ten days of the 12th month of the Islâmic calendar, i.e. two months and ten days). So whosoever intends to perform Hajj therein by assuming Ihrâm), then he should not have sexual relations (with his wife), nor commit sin, nor dispute unjustly during the Hajj. And whatever good you do, (be sure) Allâh knows it. And take a provision (with you) for the journey, but the best provision is At-Taqwa (piety, righteousness, etc.). So fear Me, O men of understanding!
الْحَجُّ أَشْهُرٌ مَّعْلُومَاتٌ فَمَن فَرَضَ فِيهِنَّ الْحَجَّ فَلاَ رَفَثَ وَلاَ فُسُوقَ وَلاَ جِدَالَ فِي الْحَجِّ وَمَا تَفْعَلُواْ مِنْ خَيْرٍ يَعْلَمْهُ اللّهُ وَتَزَوَّدُواْ فَإِنَّ خَيْرَ الزَّادِ التَّقْوَى وَاتَّقُونِ يَا أُوْلِي الأَلْبَابِ
Alhajju ashhurun maAAloomatun faman farada feehinna alhajja fala rafatha wala fusooqa wala jidala fee alhajji wama tafAAaloo min khayrin yaAAlamhu Allahu watazawwadoo fa-inna khayra alzzadi alttaqwa waittaqooni ya olee al-albabi
YUSUFALI: For Hajj are the months well known. If any one undertakes that duty therein, Let there be no obscenity, nor wickedness, nor wrangling in the Hajj. And whatever good ye do, (be sure) Allah knoweth it. And take a provision (With you) for the journey, but the best of provisions is right conduct. So fear Me, o ye that are wise.
PICKTHAL: The pilgrimage is (in) the well-known months, and whoever is minded to perform the pilgrimage therein (let him remember that) there is (to be) no lewdness nor abuse nor angry conversation on the pilgrimage. And whatsoever good ye do Allah knoweth it. So make provision for yourselves (Hereafter); for the best provision is to ward off evil. Therefore keep your duty unto Me, O men of understanding.
SHAKIR: The pilgrimage is (performed in) the well-known months; so whoever determines the performance of the pilgrimage therein, there shall be no intercourse nor fornication nor quarrelling amongst one another; and whatever good you do, Allah knows it; and make provision, for surely the provision is the guarding of oneself, and be careful (of your duty) to Me, O men of understanding.
KHALIFA: Hajj shall be observed in the specified months. Whoever sets out to observe Hajj shall refrain from sexual intercourse, misconduct, and arguments throughout Hajj. Whatever good you do, GOD is fully aware thereof. As you prepare your provisions for the journey, the best provision is righteousness. You shall observe Me, O you who possess intelligence.
রুকু – ২৫
১৯৭। হজ্জ্ব হয় সুবিদিত মাসে ২১৭। যদি কেউ এ সময়ে [হজ্জ্বের] কর্তব্য করার জন্য মনস্থির করে তবে হজ্জ্বের সময়ে, স্ত্রী সম্ভোগ, অন্যায় আচরণ ও কলহ বিবাদ বৈধ নয়। তোমরা যে কোন ভাল কাজ কর, [নিশ্চিত থেকো] আল্লাহ্ তা জানেন। [তোমাদের সাথে] যাত্রার জন্য পাথেয় নিও ২১৮, তবে শ্রেষ্ঠ পাথেয় হচ্ছে উন্নত চরিত্র। সুতরাং হে প্রজ্ঞাসম্পন্ন ব্যক্তিরা আমাকে ভয় কর।
২১৭। ‘সুবিদিত মাস’ বলতে শাওয়াল, যিলক্বদ, যিলহজ্জ্ব মাস [১০ অথবা ১৩ পর্যন্ত] বুঝায়; যখন হজ্জ্বের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। অর্থাৎ হজ্জ্বের আনুষ্ঠানিকতা শাওয়াল মাসের প্রথম থেকেই শুরু করা যেতে পারে, যখন থেকে হজ্জ্বযাত্রীরা মক্কার দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। তবে হজ্জ্বের মূল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয় যিলহজ্জ্ব মাসের প্রথম দশ দিনে। বিশেষভাবে তা করা হয় ৮ম, ৯ম ও ১০ম যিলহজ্জ্ব তারিখে যখন হজ্জ্বের আনুষ্ঠানিকতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে। হজ্জ্বের সম্পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা নিম্নরূপ :
(১) নির্দিষ্ট স্থান থেকে ইহ্রাম পরিধান করে মক্কার দিকে অগ্রসর হতে হয়। এরপরে হজ্জ্বের বিধি নিষেধ তার উপরে আরোপিত হয়। এখান থেকেই হজ্জ্বযাত্রীরা আল্লাহ্র ইবাদতে মশগুল হয়ে পড়েন এবং পৃথিবীর সকল আকর্ষণকে পরিত্যাগ করেন। (২) সাত বার কাবা ঘরকে প্রদক্ষিণ (তাওয়াফ) করতে হয়। এ সময়ে কাবার দেয়াল সংলগ্ন কালো পাথরকে চুম্বন করতে হয়-যা আল্লাহ্র প্রতি গভীর অনুরাগ ও ভালবাসার প্রতীক। (৩) মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে [২:১২৫] দু’রাকায়াত নামাজ পড়ার পরে যমযম কূপের পানি পান করে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের উদ্দেশ্যে গমন করতে হয় [২:১৫৮]। এই পাহাড়দ্বয় ধৈর্য্য ও অধ্যবসায়ের প্রতীকস্বরূপ। (৪) ৭ই যিলহজ্জ্ব হজ্জ্ব সম্পর্কীয় খুৎবাহ্ পাঠ করা হয় যা সকলে শ্রবণ করে (৫) ৮ই যিলহজ্জ্ব সকল হজ্জ্বযাত্রীগণ মক্কা থেকে ৬ মাইল উত্তরে মীনাতে গমণ করেন এবং সেখানে রাত্রি যাপন করেন। সেখান থেকে ৯ই যিলহজ্জ্ব আরাফাতের পাহাড়ে গমণ করেন। আরাফাত মীনা থেকে আরও ৫ মাইল উত্তরে যা ‘রহমতের পাহাড়’ নামে খ্যাত। এখানেই হযরত আদম ও বিবি হাওয়া দীর্ঘ বিচ্ছেদের পরে পুণরায় মিলিত হন এবং আল্লাহ্র ক্ষমা লাভ করেন। এখানেই বিশ্বনবী তাঁর বিদায় হজ্জ্বের ভাষণ দান করেছিলেন। এখানে প্রচারিত ভাষণ সকলেই শুনে থাকেন। (৬) ১০ যিলহজ্জ্ব হচ্ছে ঈদ-উল-আযহা বা কুরবানীর দিন। কুরবানী দেয়া হয় মীনার প্রান্তরে। এরপরে মাথার চুল কামিয়ে ফেলে হজ্জ্বের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয় ‘তওয়াফ-আল-ইফাদা’ এবং প্রতীকধর্মী শয়তানকে পাথর ছোঁড়ার মাধ্যমে। পরবর্তী দু’দিনও পাথর ছোঁড়া হয়। এই পাথর নিক্ষেপের অনুষ্ঠানটি প্রতীকধর্মী, যা মানুষের কুচিন্তা, কুকথা ও কু-কাজকে প্রত্যাখ্যানের সাথে সম্পৃক্ত। কুরবাণীর পরে আরও ২/৩ দিন মীনাতে অবস্থান করতে বলা হয়। এই দিনকে বলা হয় ‘তাশরিক’ দিন।
২১৮। বলা হয়েছে প্রতিটি হজ্জ্বযাত্রী হজ্জ্বের দিনগুলি সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করার মত অর্থ নিয়ে আসবেন যেনো বিদেশ বিভূঁয়ে অর্থাভাবে ভিক্ষার মত অসম্মানজনক কাজ করতে না হয়। কুরআনের চিরাচরিত প্রথায় এখানেও আমাদের পার্থিব থেকে আধ্যাত্মিক দর্শনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। যদি এই পৃথিবীতে স্বল্পকালীন [হজ্জ্বের উদ্দেশ্যে] ভ্রমণের জন্য পাথেয় প্রয়োজন হয়, তবে পৃথিবী থেকে পরলোকের যে সুদীর্ঘ যাত্রাপথ, সে পথের জন্য পাথেয় কতটা প্রয়োজনীয় তা সহজেই অনুমেয়। সে যাত্রা হবে অনন্তযাত্রা। এই পৃথিবী থেকে অন্যভূবনে যাত্রা। ভবিষ্যত পৃথিবীর এই যাত্রাপথে সর্বাপেক্ষা উত্তম যে পাথেয় তা আত্মসংযম বা সঠিক চারিত্রিক গুণাবলী বা তাকওয়া। তাকওয়া হচ্ছে আল্লাহ্ ভীতি-যার ফলে আত্ম সংযমের মাধ্যমে চারিত্রিক গুণাবলীর বিকাশ ঘটে।
আয়াতঃ 002.198
তোমাদের উপর তোমাদের পালনকর্তার অনুগ্রহ অন্বেষন করায় কোন পাপ নেই। অতঃপর যখন তওয়াফের জন্য ফিরে আসবে আরাফাত থেকে, তখন মাশ‘ আরে-হারামের নিকটে আল্লাহকে স্মরণ কর। আর তাঁকে স্মরণ কর তেমনি করে, যেমন তোমাদিগকে হেদায়েত করা হয়েছে। আর নিশ্চয়ই ইতিপূর্বে তোমরা ছিলে অজ্ঞ।
There is no sin on you if you seek the Bounty of your Lord (during pilgrimage by trading, etc.). Then when you leave ’Arafât, remember Allâh (by glorifying His Praises, i.e. prayers and invocations, etc.) at the Mash’ar-il-Harâm. And remember Him (by invoking Allâh for all good, etc.) as He has guided you, and verily, you were, before, of those who were astray.
لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَبْتَغُواْ فَضْلاً مِّن رَّبِّكُمْ فَإِذَا أَفَضْتُم مِّنْ عَرَفَاتٍ فَاذْكُرُواْ اللّهَ عِندَ الْمَشْعَرِ الْحَرَامِ وَاذْكُرُوهُ كَمَا هَدَاكُمْ وَإِن كُنتُم مِّن قَبْلِهِ لَمِنَ الضَّآلِّينَ
Laysa AAalaykum junahun an tabtaghoo fadlan min rabbikum fa-itha afadtum min AAarafatin faothkuroo Allaha AAinda almashAAari alharami waothkuroohu kama hadakum wa-in kuntum min qablihi lamina alddalleena
YUSUFALI: It is no crime in you if ye seek of the bounty of your Lord (during pilgrimage). Then when ye pour down from (Mount) Arafat, celebrate the praises of Allah at the Sacred Monument, and celebrate His praises as He has directed you, even though, before this, ye went astray.
PICKTHAL: It is no sin for you that ye seek the bounty of your Lord (by trading). But, when ye press on in the multitude from ‘Arafat, remember Allah by the sacred monument. Remember Him as He hath guided you, although before ye were of those astray.
SHAKIR: There is no blame on you in seeking bounty from your Lord, so when you hasten on from “Arafat”, then remember Allah near the Holy Monument, and remember Him as He has guided you, though before that you were certainly of the erring ones.
KHALIFA: You commit no error by seeking provisions from your Lord (through commerce). When you file from `Arafaat, you shall commemorate GOD at the Sacred Location (of Muzdalifah). You shall commemorate Him for guiding you; before this, you had gone astray.
১৯৮। [হজ্জ্বের সময়ে] যদি তোমরা তোমাদের প্রভুর অনুগ্রহ অনুসন্ধান কর তাতে কোন পাপ নাই ২১৯। যখন তোমরা আরাফাত (পর্বত) থেকে (দলে দলে) প্রত্যাবর্তন করবে, তখন মুজদালফার [মাশ্-আরুল হারাম] নিকট পৌঁছে আল্লাহ্কে স্মরণ করবে ২২০। এবং তিনি যেভাবে তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন ঠিক সেভাবে তাঁকে স্মরণ করো ২২১। যদিও ইতিপূর্বে তোমরা বিপথে গিয়েছিলে।
২১৯। সৎ ব্যবসা-বাণিজ্য হজ্জ্বের সময়ে অনুমোদন করা হয়েছে। এ থেকে ব্যবসায়ীরা যেমন লাভবান হবেন ঠিক সেরূপ সুবিধা ভোগ করবেন হজ্জ্বযাত্রীরা। অন্যথায় এই বিপুল সংখ্যক হজ্জ্বযাত্রী প্রয়োজনীয় জিনিষের অভাবে জীবন যাত্রায় বিশেষ অসুবিধার সম্মুখীন হতেন। এখানে আল্লাহ্ স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে তাদের ব্যবসায় লাভ হচ্ছে আল্লাহ্র অনুগ্রহ স্বরূপ। সুতরাং ব্যবসা যেনো কোন প্রকার ছলচাতুরী ও অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত না হয়। সৎ ব্যবসা সমাজের জন্য সুফল বয়ে আনে। সুতরাং তা হবে আল্লাহ্র সেবা বা আল্লাহ্র রাস্তায় কাজের সমতুল্য।
[উপদেশ : সমাজ জীবনের প্রতিটি কাজ, যদি তা হয় সৎ ও সমাজের জন্য উপকারী, তবে তাই-ই হচ্ছে আল্লাহ্র ইবাদতের সমতুল্য। এখানেই ইসলামের মাহাত্ম্য অন্যান্য ধর্ম অপেক্ষা। দ্বীন ও দুনিয়ার এমন অপূর্ব সমন্বয় সত্যিই বিরল। কবির ভাষায় বলা যায়-
‘বৈরাগ্য সাধনে মুক্তি
সে আমার নয়;
মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই।’]
২২০। দেখুন সূরা ২, আয়াত ১৯৭ ও টীকা ২১৭। আরাফাত ও মীনার মধ্যবর্তী মুজ্দালিফা নামক স্থানে রাসূল (সাঃ) হজ্জ্বের দিনসমূহে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করতেন-সালাত কায়েমে। আরাফাত থেকে মীনাতে প্রত্যাবর্তনকালে এ জায়গাতেই সকল হজ্জ্বযাত্রীদের রাত্রিযাপন করতে হয় ও ইবাদাতে মশগুল হতে হয়। এখান থেকেই হজ্জ্বযাত্রীগণ শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য পাথর সংগ্রহ করে থাকেন। এভাবেই এ স্থান হজ্জ্বের আনুষ্ঠানিকতায় পবিত্র স্থান রূপে পরিগণিত হয়।
২২১। মক্কার কোন কোন গোত্র ছিলো উদ্ধত এবং একগুঁয়ে। তারা আরাফাতে গমন না করে মুজ্দালিফাতে অবস্থান করতো। এদেরকেই তিরস্কার করা হয়েছে তাদের একঁগুয়েমির জন্য এবং অন্য সকলের ন্যায় একই কাতারে হজ্জ্বের সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে নির্দেশ দান করা হয়েছে। কারণ ইসলাম সমতায় বিশ্বাসী।
আয়াতঃ 002.199
অতঃপর তওয়াফের জন্যে দ্রুতগতিতে সেখান থেকে ফিরে আস, যেখান থেকে সবাই ফিরে। আর আল্লাহর কাছেই মাগফেরাত কামনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাকারী, করুনাময়।
Then depart from the place whence all the people depart and ask Allâh for His Forgiveness. Truly, Allâh is Oft-Forgiving, Most-Merciful.
ثُمَّ أَفِيضُواْ مِنْ حَيْثُ أَفَاضَ النَّاسُ وَاسْتَغْفِرُواْ اللّهَ إِنَّ اللّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
Thumma afeedoo min haythu afada alnnasu waistaghfiroo Allaha inna Allaha ghafoorun raheemun
YUSUFALI: Then pass on at a quick pace from the place whence it is usual for the multitude so to do, and ask for Allah’s forgiveness. For Allah is Oft-forgiving, Most Merciful.
PICKTHAL: Then hasten onward from the place whence the multitude hasteneth onward, and ask forgiveness of Allah. Lo! Allah is Forgiving, Merciful.
SHAKIR: Then hasten on from the Place from which the people hasten on and ask the forgiveness of Allah; surely Allah is Forgiving, Merciful.
KHALIFA: You shall file together, with the rest of the people who file, and ask GOD for forgiveness. GOD is Forgiver, Most Merciful.
১৯৯। অতঃপর তোমরা দ্রুত পায়ে সে স্থান অতিক্রম করবে যেখান থেকে অন্যান্য লোকেরা ফিরে আসে ২২২। এবং আল্লাহ্র নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল ও পরম করুণাময়।
২২২। দেখুন উপরের টিকা। আরাফাতে সকল হজ্জ্বযাত্রীগণ সমবেত হন। সুতরাং এটা খুবই স্বাভাবিক যে, প্রচণ্ড ভীড়ে সেখানে যানজটের সৃষ্টি হতে পারে; যার ফলে হজ্জ্বযাত্রীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। সুতরাং আরাফাতে প্রয়োজনীয় সময়ের অধিক সময় ব্যয় না করে বা অপেক্ষা না করে সেখান থেকে দ্রুত প্রত্যাবর্তন করতে বলা হয়েছে। হজ্জ্বযাত্রীদের উচিত প্রত্যেকে পরস্পরের সুখ-সুবিধার প্রতি দৃষ্টি দেয়া।
আয়াতঃ 002.200
আর অতঃপর যখন হজ্জ্বের যাবতীয় অনুষ্ঠানক্রিয়াদি সমাপ্ত করে সারবে, তখন স্মরণ করবে আল্লাহকে, যেমন করে তোমরা স্মরণ করতে নিজেদের বাপ-দাদাদেরকে; বরং তার চেয়েও বেশী স্মরণ করবে। তারপর অনেকে তো বলে যে পরওয়াদেগার! আমাদিগকে দুনিয়াতে দান কর। অথচ তার জন্যে পরকালে কোন অংশ নেই।
So when you have accomplished your Manasik [(i.e. Ihrâm, Tawâf of the Ka’bah and As-Safâ and Al-Marwah), stay at ’Arafât, Muzdalifah and Mina, Ramy of Jamarât, (stoning of the specified pillars in Mina) slaughtering of Hady (animal, etc.)]. Remember Allâh as you remember your forefathers or with a far more remembrance. But of mankind there are some who say: ”Our Lord! Give us (Your Bounties) in this world!” and for such there will be no portion in the Hereafter.
فَإِذَا قَضَيْتُم مَّنَاسِكَكُمْ فَاذْكُرُواْ اللّهَ كَذِكْرِكُمْ آبَاءكُمْ أَوْ أَشَدَّ ذِكْرًا فَمِنَ النَّاسِ مَن يَقُولُ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا وَمَا لَهُ فِي الآخِرَةِ مِنْ خَلاَقٍ
Fa-itha qadaytum manasikakum faothkuroo Allaha kathikrikum abaakum aw ashadda thikran famina alnnasi man yaqoolu rabbana atina fee alddunya wama lahu fee al-akhirati min khalaqin
YUSUFALI: So when ye have accomplished your holy rites, celebrate the praises of Allah, as ye used to celebrate the praises of your fathers,- yea, with far more Heart and soul. There are men who say: “Our Lord! Give us (Thy bounties) in this world!” but they will have no portion in the Hereafter.
PICKTHAL: And when ye have completed your devotions, then remember Allah as ye remember your fathers or with a more lively remembrance. But of mankind is he who saith: “Our Lord! Give unto us in the world,” and he hath no portion in the Hereafter.
SHAKIR: So when you have performed your devotions, then laud Allah as you lauded your fathers, rather a greater lauding. But there are some people who say, Our Lord! give us in the world, and they shall have no resting place.
KHALIFA: Once you complete your rites, you shall continue to commemorate GOD as you commemorate your own parents, or even better. Some people would say, “Our Lord, give us of this world,” while having no share in the Hereafter.
২০০। অতএব যখন তুমি তোমার পবিত্র আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবে, আল্লাহ্র প্রশংসাতে নিমগ্ন হও সেইভাবে যে ভাবে তোমরা তোমাদের পূর্ব পুরুষদের স্মরণ করতে ২২৩। কিংবা তার চেয়ে বেশী মনোনিবেশ সহকারে। অনেক লোক আছে যারা বলে, ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের ইহজগতেই [তোমার অনুগ্রহ] দান কর।’ বস্তুত তাদের জন্য পরকালে কোন অংশই থাকবে না ২২৪।
২২৩। ইসলাম পূর্ব দিনগুলিতে মুনাফিকেরা হজ্জ্বযাত্রার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে মিনার ময়দানে সকলে সমবেত হতো এবং তাদের পূর্বপুরুষদের গুণগানে লিপ্ত হতো। ইসলাম হজ্জ্বের আনুষ্ঠানিকতাকে শেরেকীর পাপমুক্ত করে তা পরিশুদ্ধ করে এবং সেই সাথে হজ্জ্ব শেষের আনুষ্ঠানিকতাকেও পরিশুদ্ধ করা হয়। প্রত্যেক হজ্জ্বযাত্রীকে কুরবানী শেষে ২/৩ দিন মীনাতে অবস্থান করতে হয়। বলা হয়েছে এই ২/৩ দিন তারা আল্লাহ্র গুণগানে ব্যয় করবে। দেখুন নীচের আয়াত [২:২০৩]।
২২৪। যদি কেউ শুধুমাত্র পৃথিবীর ভোগ বিলাসের জন্য আল্লাহ্র কাছে প্রার্থনা করে এবং সর্বক্ষণ শুধুমাত্র পৃথিবীর ভোগ বিলাসের কথা চিন্তা করে তবে তার আধ্যাত্মিক জীবনের পথ অবশ্যই রুদ্ধ হয়ে যাবে। কোন কোন লোক হজ্জ্বের সময়ে দোয়া করে বটে, তা একান্তভাবে দুনিয়ার উন্নতির জন্য, পরকালের কোন চিন্তাই তাদের থাকে না। তারা পরকালে কিছুই পাবে না। কেননা তাদের কার্য পদ্ধতিতে বুঝা যায় যে, তারা হজ্জ্বের ফরজ প্রথাগতভাবে আদায় করে এবং তা করে দুনিয়াতে প্রভাব ও প্রতিপত্তি বিস্তারের জন্য। আল্লাহ্কে সন্তুষ্ট করা বা পরকালে মুক্তি পাওয়ার কোনও ধ্যান ধারণাই তাদের থাকে না। এই আয়াতে এদের বিষয়ে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, জাগতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তারা এমনিভাবে নিমগ্ন যে, কোন প্রকারে শুধু নিজের চাহিদা পূরণ হোক, এটাই তাদের কাম্য-চাই তা ভাল হোক বা মন্দ হোক, সৎ পথে অর্জিত হোক বা অসৎ পথে, মানুষ একে পছন্দ করুক বা নাই করুক।
আমাদের অবস্থাও একটু খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে যে, অনেক মুসলমান ধনী ব্যক্তি যেসব দোয়া কালাম পাঠ করে বা বুযুর্গ লোকদের দ্বারা করায় তাতে দুনিয়ার সমৃদ্ধি এবং ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নতি অগ্রগতির জন্যই করে বা করায়। তারা অনেক দোয়া কালাম পাঠ করে এবং নফল এবাদত করে ভাবে যে, আমরা অনেক এবাদত করে ফেলেছি। কিন্তু বাস্তবে এটা এক প্রকার দুনিয়াদারী পূজায় পরিণত হয়। এও এক ধরণের শেরেকী। আবার অনেক লোক জীবিত বুযুর্গান বা মৃত বুযুর্গানের (মাজারে যেয়ে কান্নাকাটি) সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে। এতেও তাদের উদ্দেশ্য থাকে তাদের দোয়া-তাবিজের সাহায্য নিজের উদ্দেশ্য সফল করা, দুনিয়ার বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ থাকা। এই আয়াতে তাদের জন্য উপদেশ আছে। সত্যিকারের মোমেন ব্যক্তিও ইহকালকেও অস্বীকার করে না পরকালকেও অস্বীকার করে না। তারা দুনিয়ার কল্যাণের মাধ্যমে পরকাল অর্জন করতে চায়। দুনিয়ার কল্যাণ যেমন-শারীরিক সুস্থতা, পরিবার-পরিজনের সুস্থতা, হালাল-রুজীর প্রাচুর্য্য, পার্থিব যাবতীয় প্রয়োজনের পূর্ণতা, নেক আমল, সচ্চরিত্র, উপকারী বিদ্যা, মান-সম্মান, সামাজিক প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠা, আকীদার সংশোধন, সিরাতে-মুস্তাকীমের হেদায়েত, এবাদতে একাগ্রতা প্রভৃতিসহ অসংখ্য স্থায়ী নেয়ামত এবং আল্লাহ্র সন্তুষ্টি ও সাক্ষাত লাভ প্রভৃতি সবই এর অন্তর্ভূক্ত।
আয়াতঃ 002.201
আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলে-হে পরওয়ারদেগার! আমাদিগকে দুনয়াতেও কল্যাণ দান কর এবং আখেরাতেও কল্যাণ দান কর এবং আমাদিগকে দোযখের আযাব থেকে রক্ষা কর।
And of them there are some who say: ”Our Lord! Give us in this world that which is good and in the Hereafter that which is good, and save us from the torment of the Fire!”
وِمِنْهُم مَّن يَقُولُ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
Waminhum man yaqoolu rabbana atina fee alddunya hasanatan wafee al-akhirati hasanatan waqina AAathaba alnnari
YUSUFALI: And there are men who say: “Our Lord! Give us good in this world and good in the Hereafter, and defend us from the torment of the Fire!”
PICKTHAL: And of them (also) is he who saith: “Our Lord! Give unto us in the world that which is good and in the Hereafter that which is good, and guard us from the doom of Fire.”
SHAKIR: And there are some among them who say: Our Lord! grant us good in this world and good in the hereafter, and save us from the chastisement of the fire.
KHALIFA: Others would say, “Our Lord, grant us righteousness in this world, and righteousness in the Hereafter, and spare us the retribution of Hell.”
২০১। আবার তাদের মধ্যে অনেক লোক আছে যারা বলে, ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের ইহকালে ও পরকালে কল্যাণ দান কর এবং আমাদের আগুনের আযাব থেকে রক্ষা কর।’
২০২। তারা যা অর্জন করেছে তা তাদেরই বণ্টন করা হবে ২২৫। বস্তুতঃ হিসাব গ্রহণে আল্লাহ্ অত্যন্ত তৎপর।
২২৫। আল্লাহ্র কাছে আমাদের সমস্ত কাজ কর্মের হিসাব পূণ্য এবং পাপের হিসাব অনুযায়ী জমা এবং খরচের খাতায় লেখা হয়ে যাচ্ছে। আর তা হচ্ছে মুহুর্তের মধ্যে। কারণ আল্লাহ্ আয়াতে [২:৯৫] বলেছেন যে, আমাদের কাজের হিসাব আমাদের মৃত্যুর বহু আগে তার দরবারে জমা হয়। আজকের কম্পিউটার যুগে দেখি পৃথিবীর একপ্রান্তের সংবাদ মুহূর্তের মধ্যে অন্য প্রান্তে চলে যায়। সুতরাং আমাদের হাত যা করে তার হিসাব মুহূর্তের মধ্যে আল্লাহ্র কাছে পৌঁছে যাবে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নাই।
আয়াতঃ 002.202
এদেরই জন্য অংশ রয়েছে নিজেদের উপার্জিত সম্পদের। আর আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।
For them there will be alloted a share for what they have earned. And Allâh is Swift at reckoning.
أُولَـئِكَ لَهُمْ نَصِيبٌ مِّمَّا كَسَبُواْ وَاللّهُ سَرِيعُ الْحِسَابِ
Ola-ika lahum naseebun mimma kasaboo waAllahu sareeAAu alhisabi
YUSUFALI: To these will be allotted what they have earned; and Allah is quick in account.
PICKTHAL: For them there is in store a goodly portion out of that which they have earned. Allah is swift at reckoning.
SHAKIR: They shall have (their) portion of what they have earned, and Allah is swift in reckoning.
KHALIFA: Each of these will receive the share they have earned. GOD is most efficient in reckoning.
২০১। আবার তাদের মধ্যে অনেক লোক আছে যারা বলে, ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের ইহকালে ও পরকালে কল্যাণ দান কর এবং আমাদের আগুনের আযাব থেকে রক্ষা কর।’
২০২। তারা যা অর্জন করেছে তা তাদেরই বণ্টন করা হবে ২২৫। বস্তুতঃ হিসাব গ্রহণে আল্লাহ্ অত্যন্ত তৎপর।
২২৫। আল্লাহ্র কাছে আমাদের সমস্ত কাজ কর্মের হিসাব পূণ্য এবং পাপের হিসাব অনুযায়ী জমা এবং খরচের খাতায় লেখা হয়ে যাচ্ছে। আর তা হচ্ছে মুহুর্তের মধ্যে। কারণ আল্লাহ্ আয়াতে [২:৯৫] বলেছেন যে, আমাদের কাজের হিসাব আমাদের মৃত্যুর বহু আগে তার দরবারে জমা হয়। আজকের কম্পিউটার যুগে দেখি পৃথিবীর একপ্রান্তের সংবাদ মুহূর্তের মধ্যে অন্য প্রান্তে চলে যায়। সুতরাং আমাদের হাত যা করে তার হিসাব মুহূর্তের মধ্যে আল্লাহ্র কাছে পৌঁছে যাবে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নাই।
আয়াতঃ 002.203
আর স্মরণ কর আল্লাহকে নির্দিষ্ট সংখ্যক কয়েকটি দিনে। অতঃপর যে লোক তাড়াহুড়া করে চলে যাবে শুধু দু, দিনের মধ্যে, তার জন্যে কোন পাপ নেই। আর যে লোক থেকে যাবে তাঁর উপর কোন পাপ নেই, অবশ্য যারা ভয় করে। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করতে থাক এবং নিশ্চিত জেনে রাখ, তোমরা সবাই তার সামনে সমবেত হবে।
And remember Allâh during the appointed Days. But whosoever hastens to leave in two days, there is no sin on him and whosoever stays on, there is no sin on him, if his aim is to do good and obey Allâh (fear Him), and know that you will surely be gathered unto Him.
وَاذْكُرُواْ اللّهَ فِي أَيَّامٍ مَّعْدُودَاتٍ فَمَن تَعَجَّلَ فِي يَوْمَيْنِ فَلاَ إِثْمَ عَلَيْهِ وَمَن تَأَخَّرَ فَلا إِثْمَ عَلَيْهِ لِمَنِ اتَّقَى وَاتَّقُواْ اللّهَ وَاعْلَمُوا أَنَّكُمْ إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ
Waothkuroo Allaha fee ayyamin maAAdoodatin faman taAAajjala fee yawmayni fala ithma AAalayhi waman taakhkhara fala ithma AAalayhi limani ittaqa waittaqoo Allaha waiAAlamoo annakum ilayhi tuhsharoona
YUSUFALI: Celebrate the praises of Allah during the Appointed Days. But if any one hastens to leave in two days, there is no blame on him, and if any one stays on, there is no blame on him, if his aim is to do right. Then fear Allah, and know that ye will surely be gathered unto Him.
PICKTHAL: Remember Allah through the appointed days. Then whoso hasteneth (his departure) by two days, it is no sin for him, and whoso delayeth, it is no sin for him; that is for him who wardeth off (evil). Be careful of your duty to Allah, and know that unto Him ye will be gathered.
SHAKIR: And laud Allah during the numbered days; then whoever hastens off in two days, there is no blame on him, and whoever remains behind, there is no blame on him, (this is) for him who guards (against evil), and be careful (of your duty) to Allah, and know that you shall be gathered together to Him.
KHALIFA: You shall commemorate GOD for a number of days (in Mena); whoever hastens to do this in two days commits no sin, and whoever stays longer commits no sin, so long as righteousness is maintained. You shall observe GOD, and know that before Him you will be gathered.
২০৩। তোমরা নির্দিষ্ট সংখ্যক দিনগুলিতে আল্লাহ্কে স্মরণ কর ২২৬। কিন্তু যদি কেউ তাড়াতাড়ি করে দুই দিনে চলে যায় তবে তার কোন পাপ নাই। [আবার ] যদি কেউ তাকওয়া [আল্লাহ্ প্রেম] অবলম্বনের উদ্দেশ্যে বিলম্ব করে তবে তারও কোন পাপ নাই। আল্লাহ্কে ভয় কর এবং জেনে রাখ অবশ্যই তোমাদের সকলকে তাঁর নিকট একত্র করা হবে।
২২৬। ‘নির্দিষ্ট সংখ্যক দিনসমুহে’-১০ যিলহজ্জ্বের পরে মীনাতে তিনদিন থেকে হজ্জ্বযাত্রীদের নিষ্ঠার সাথে আল্লাহ্কে স্মরণ করতে বলা হয়েছে। এই দিনগুলিকে বলা হয়েছে ‘তাশরীক’ [দেখুন আয়াত ২:২০০ ও টিকা ২২৩]। হজ্জ্বযাত্রী দুইদিন পর না তিনদিন পর চলে যাবে তা করা হয়েছে ঐচ্ছিক।
আয়াতঃ 002.204
আর এমন কিছু লোক রযেছে যাদের পার্থিব জীবনের কথাবার্তা তোমাকে চমৎকৃত করবে। আর তারা সাক্ষ্য স্থাপন করে আল্লাহকে নিজের মনের কথার ব্যাপারে। প্রকৃতপক্ষে তারা কঠিন ঝগড়াটে লোক।
And of mankind there is he whose speech may please you (O Muhammad SAW), in this worldly life, and he calls Allâh to witness as to that which is in his heart, yet he is the most quarrelsome of the opponents.
وَمِنَ النَّاسِ مَن يُعْجِبُكَ قَوْلُهُ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَيُشْهِدُ اللّهَ عَلَى مَا فِي قَلْبِهِ وَهُوَ أَلَدُّ الْخِصَامِ
Wamina alnnasi man yuAAjibuka qawluhu fee alhayati alddunya wayushhidu Allaha AAala ma fee qalbihi wahuwa aladdu alkhisami
YUSUFALI: There is the type of man whose speech about this world’s life May dazzle thee, and he calls Allah to witness about what is in his heart; yet is he the most contentious of enemies.
PICKTHAL: And of mankind there is he whoso conversation on the life of this world pleaseth thee (Muhammad), and he calleth Allah to witness as to that which is in his heart; yet he is the most rigid of opponents.
SHAKIR: And among men is he whose speech about the life of this world causes you to wonder, and he calls on Allah to witness as to what is in his heart, yet he is the most violent of adversaries.
KHALIFA: Among the people, one may impress you with his utterances concerning this life, and may even call upon GOD to witness his innermost thoughts, while he is a most ardent opponent.
২০৪। একদল লোক আছে পার্থিব জীবন সম্বন্ধে যাদের কথাবার্তা তোমাকে চমৎকৃত করবে ২২৭। এবং সে তার অন্তরের [কথা] সম্বন্ধে আল্লাহ্কে সাক্ষী রাখে। প্রকৃত পক্ষে শত্রুদের মধ্যে সেই সবচেয়ে বেশী কলহ প্রিয়।
২০৫। যখন সে ফিরে যায়, তার উদ্দেশ্য হয় পৃথিবীর সর্বত্র অশান্তির সৃষ্টি করা এবং শস্য ও গৃহপালিত পশুর ধ্বংস সাধন করা। আর অশান্তি সৃষ্টিকারীকে আল্লাহ্ পছন্দ করেন না।
২০৬। যখন তাদের বলা হয়, ‘আল্লাহ্কে ভয় কর’, তখন সে তার ঔদ্ধত্য [রিপুর] দ্বারা পরিচালিত হয় [আরও] অপরাধের প্রতি। এদের জন্য জাহান্নামই যথেষ্ট; [শোওয়ার জন্য] কত নিকৃষ্ট সে বিছানা।
২২৭। আয়াত [২:২০০] এবং আয়াত [২:২০১] এ দু’ধরণের লোকের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। এই আয়াতে [২:২০৪] তৃতীয় আর এক ধরণের লোকের কথা বলা হয়েছে। এরা হচ্ছে ধূর্ত চালাক এবং কথা বার্তায় সাবলীল মোনাফেক। সাধারণ মানুষ এদের মনে করে, দুনিয়াদারী সম্বন্ধে অত্যন্ত অভিজ্ঞ। চমকপ্রদ কথা বার্তার ফলে এদের কথা দ্বারা তারা মোহবিষ্ট হয়ে পড়ে। নিষ্ঠাবান মুমিন মুসলমান, যারা আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য আত্ম বিসর্জন দিকে কুণ্ঠাবোধ করেন না, এদের ক্ষতি সাধন করা, তাদের বিপথে চালিত করাই এই সব মোনাফেকদের উদ্দেশ্য। এদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা প্রসঙ্গে আল্লাহ্ বলেছেন (১) এরা মুখে অত্যন্ত মিষ্টি কিন্তু পিছনে এরা অঘটন ঘটনে পটিয়সী। (২) বিবাদ-বিসংবাদ ঘটানো, ঘৃণা-দ্বেষ, ঈর্ষা ছড়াতে এরা ওস্তাদ। (৩) এদের বাক্চাতুর্য্য আপাতঃ দৃষ্টিতে মনে হবে অত্যন্ত ন্যায়সঙ্গত এবং যুক্তিসঙ্গত। (৪) এরা কথায় কথায় প্রতিজ্ঞা করে। সাধারণ ব্যক্তিদের পক্ষে এদের জাল জুয়াচুরি ধরা প্রায় অসম্ভব। (৫) এরা পরস্পরের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে তা থেকে ফায়দা লুটতে আগ্রহী, এরা আল্লাহ্র অনুগ্রহ বঞ্চিত।
আয়াতঃ 002.205
যখন ফিরে যায় তখন চেষ্টা করে যাতে সেখানে অকল্যাণ সৃষ্টি করতে পারে এবং শস্যক্ষেত্র ও প্রাণনাশ করতে পারে। আল্লাহ ফাসাদ ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা পছন্দ করেন না।
And when he turns away (from you ”O Muhammad SAW ”), his effort in the land is to make mischief therein and to destroy the crops and the cattle, and Allâh likes not mischief.
وَإِذَا تَوَلَّى سَعَى فِي الأَرْضِ لِيُفْسِدَ فِيِهَا وَيُهْلِكَ الْحَرْثَ وَالنَّسْلَ وَاللّهُ لاَ يُحِبُّ الفَسَادَ
Wa-itha tawalla saAAa fee al-ardi liyufsida feeha wayuhlika alhartha waalnnasla waAllahu la yuhibbu alfasada
YUSUFALI: When he turns his back, His aim everywhere is to spread mischief through the earth and destroy crops and cattle. But Allah loveth not mischief.
PICKTHAL: And when he turneth away (from thee) his effort in the land is to make mischief therein and to destroy the crops and the cattle; and Allah loveth not mischief.
SHAKIR: And when he turn,s back, he runs along in the land that he may cause mischief in it and destroy the tilth and the stock, and Allah does not love mischief-making.
KHALIFA: As soon as he leaves, he roams the earth corruptingly, destroying properties and lives. GOD does not love corruption.
২০৪। একদল লোক আছে পার্থিব জীবন সম্বন্ধে যাদের কথাবার্তা তোমাকে চমৎকৃত করবে ২২৭। এবং সে তার অন্তরের [কথা] সম্বন্ধে আল্লাহ্কে সাক্ষী রাখে। প্রকৃত পক্ষে শত্রুদের মধ্যে সেই সবচেয়ে বেশী কলহ প্রিয়।
২০৫। যখন সে ফিরে যায়, তার উদ্দেশ্য হয় পৃথিবীর সর্বত্র অশান্তির সৃষ্টি করা এবং শস্য ও গৃহপালিত পশুর ধ্বংস সাধন করা। আর অশান্তি সৃষ্টিকারীকে আল্লাহ্ পছন্দ করেন না।
২০৬। যখন তাদের বলা হয়, ‘আল্লাহ্কে ভয় কর’, তখন সে তার ঔদ্ধত্য [রিপুর] দ্বারা পরিচালিত হয় [আরও] অপরাধের প্রতি। এদের জন্য জাহান্নামই যথেষ্ট; [শোওয়ার জন্য] কত নিকৃষ্ট সে বিছানা।
২২৭। আয়াত [২:২০০] এবং আয়াত [২:২০১] এ দু’ধরণের লোকের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। এই আয়াতে [২:২০৪] তৃতীয় আর এক ধরণের লোকের কথা বলা হয়েছে। এরা হচ্ছে ধূর্ত চালাক এবং কথা বার্তায় সাবলীল মোনাফেক। সাধারণ মানুষ এদের মনে করে, দুনিয়াদারী সম্বন্ধে অত্যন্ত অভিজ্ঞ। চমকপ্রদ কথা বার্তার ফলে এদের কথা দ্বারা তারা মোহবিষ্ট হয়ে পড়ে। নিষ্ঠাবান মুমিন মুসলমান, যারা আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য আত্ম বিসর্জন দিকে কুণ্ঠাবোধ করেন না, এদের ক্ষতি সাধন করা, তাদের বিপথে চালিত করাই এই সব মোনাফেকদের উদ্দেশ্য। এদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা প্রসঙ্গে আল্লাহ্ বলেছেন (১) এরা মুখে অত্যন্ত মিষ্টি কিন্তু পিছনে এরা অঘটন ঘটনে পটিয়সী। (২) বিবাদ-বিসংবাদ ঘটানো, ঘৃণা-দ্বেষ, ঈর্ষা ছড়াতে এরা ওস্তাদ। (৩) এদের বাক্চাতুর্য্য আপাতঃ দৃষ্টিতে মনে হবে অত্যন্ত ন্যায়সঙ্গত এবং যুক্তিসঙ্গত। (৪) এরা কথায় কথায় প্রতিজ্ঞা করে। সাধারণ ব্যক্তিদের পক্ষে এদের জাল জুয়াচুরি ধরা প্রায় অসম্ভব। (৫) এরা পরস্পরের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে তা থেকে ফায়দা লুটতে আগ্রহী, এরা আল্লাহ্র অনুগ্রহ বঞ্চিত।
আর যখন তাকে বলা হয় যে, আল্লাহকে ভয় কর, তখন তার পাপ তাকে অহঙ্কারে উদ্বুদ্ধ করে। সুতরাং তার জন্যে দোযখই যথেষ্ট। আর নিঃসন্দেহে তা হলো নিকৃষ্টতর ঠিকানা।
And when it is said to him, ”Fear Allâh”, he is led by arrogance to (more) crime. So enough for him is Hell, and worst indeed is that place to rest!
وَإِذَا قِيلَ لَهُ اتَّقِ اللّهَ أَخَذَتْهُ الْعِزَّةُ بِالإِثْمِ فَحَسْبُهُ جَهَنَّمُ وَلَبِئْسَ الْمِهَادُ
Wa-itha qeela lahu ittaqi Allaha akhathat-hu alAAizzatu bial-ithmi fahasbuhu jahannamu walabi/sa almihadu
YUSUFALI: When it is said to him, “Fear Allah”, He is led by arrogance to (more) crime. Enough for him is Hell;-An evil bed indeed (To lie on)!
PICKTHAL: And when it is said unto him: Be careful of thy duty to Allah, pride taketh him to sin. Hell will settle his account, an evil resting-place.
SHAKIR: And when it is said to him, guard against (the punish ment of) Allah; pride carries him off to sin, therefore hell is sufficient for him; and certainly it is an evil resting place.
KHALIFA: When he is told, “Observe GOD,” he becomes arrogantly indignant. Consequently, his only destiny is Hell; what a miserable abode.
২০৪। একদল লোক আছে পার্থিব জীবন সম্বন্ধে যাদের কথাবার্তা তোমাকে চমৎকৃত করবে ২২৭। এবং সে তার অন্তরের [কথা] সম্বন্ধে আল্লাহ্কে সাক্ষী রাখে। প্রকৃত পক্ষে শত্রুদের মধ্যে সেই সবচেয়ে বেশী কলহ প্রিয়।
২০৫। যখন সে ফিরে যায়, তার উদ্দেশ্য হয় পৃথিবীর সর্বত্র অশান্তির সৃষ্টি করা এবং শস্য ও গৃহপালিত পশুর ধ্বংস সাধন করা। আর অশান্তি সৃষ্টিকারীকে আল্লাহ্ পছন্দ করেন না।
২০৬। যখন তাদের বলা হয়, ‘আল্লাহ্কে ভয় কর’, তখন সে তার ঔদ্ধত্য [রিপুর] দ্বারা পরিচালিত হয় [আরও] অপরাধের প্রতি। এদের জন্য জাহান্নামই যথেষ্ট; [শোওয়ার জন্য] কত নিকৃষ্ট সে বিছানা।
২২৭। আয়াত [২:২০০] এবং আয়াত [২:২০১] এ দু’ধরণের লোকের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। এই আয়াতে [২:২০৪] তৃতীয় আর এক ধরণের লোকের কথা বলা হয়েছে। এরা হচ্ছে ধূর্ত চালাক এবং কথা বার্তায় সাবলীল মোনাফেক। সাধারণ মানুষ এদের মনে করে, দুনিয়াদারী সম্বন্ধে অত্যন্ত অভিজ্ঞ। চমকপ্রদ কথা বার্তার ফলে এদের কথা দ্বারা তারা মোহবিষ্ট হয়ে পড়ে। নিষ্ঠাবান মুমিন মুসলমান, যারা আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য আত্ম বিসর্জন দিকে কুণ্ঠাবোধ করেন না, এদের ক্ষতি সাধন করা, তাদের বিপথে চালিত করাই এই সব মোনাফেকদের উদ্দেশ্য। এদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা প্রসঙ্গে আল্লাহ্ বলেছেন (১) এরা মুখে অত্যন্ত মিষ্টি কিন্তু পিছনে এরা অঘটন ঘটনে পটিয়সী। (২) বিবাদ-বিসংবাদ ঘটানো, ঘৃণা-দ্বেষ, ঈর্ষা ছড়াতে এরা ওস্তাদ। (৩) এদের বাক্চাতুর্য্য আপাতঃ দৃষ্টিতে মনে হবে অত্যন্ত ন্যায়সঙ্গত এবং যুক্তিসঙ্গত। (৪) এরা কথায় কথায় প্রতিজ্ঞা করে। সাধারণ ব্যক্তিদের পক্ষে এদের জাল জুয়াচুরি ধরা প্রায় অসম্ভব। (৫) এরা পরস্পরের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে তা থেকে ফায়দা লুটতে আগ্রহী, এরা আল্লাহ্র অনুগ্রহ বঞ্চিত।
আয়াতঃ 002.207
আর মানুষের মাঝে এক শ্রেণীর লোক রয়েছে যারা আল্লাহর সন্তুষ্টিকল্পে নিজেদের জানের বাজি রাখে। আল্লাহ হলেন তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত মেহেরবান।
And of mankind is he who would sell himself, seeking the Pleasure of Allâh. And Allâh is full of Kindness to (His) slaves.
وَمِنَ النَّاسِ مَن يَشْرِي نَفْسَهُ ابْتِغَاء مَرْضَاتِ اللّهِ وَاللّهُ رَؤُوفٌ بِالْعِبَادِ
Wamina alnnasi man yashree nafsahu ibtighaa mardati Allahi waAllahu raoofun bialAAibadi
YUSUFALI: And there is the type of man who gives his life to earn the pleasure of Allah: And Allah is full of kindness to (His) devotees.
PICKTHAL: And of mankind is he who would sell himself, seeking the pleasure of Allah; and Allah hath compassion on (His) bondmen.
SHAKIR: And among men is he who sells himself to seek the pleasure of Allah; and Allah is Affectionate to the servants.
KHALIFA: Then there are those who dedicate their lives to serving GOD; GOD is compassionate towards such worshipers.
২০৭। আবার আর একদল লোক আছে, যারা আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য জীবন দিতে পারে। আল্লাহ্ [তাঁর] অনুগত বান্দাদের প্রতি দয়াতে পরিপূর্ণ ২২৯।
২২৯। আয়াত [২:২০৭] এ যে ধরণের লোকের বর্ণনা করা হয়েছে তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা আল্লাহ্র সন্তুষ্টি বিধানের জন্য নিজের জীবন ত্যাগ করতে কুণ্ঠিত নয়। এরা আল্লাহ্র প্রতি অনুগত, আল্লাহ্র রাস্তায় উৎসর্গিত প্রাণ, দৃঢ় এবং বিশ্বস্ত। আমরা এ ধরণের বহু ব্যক্তির সন্ধান পাই। ইসলামের প্রথম যুগে, এরাই হচ্ছেন ইসলামের প্রকৃত স্তম্ভ (Pillar) বা থাম। শত অত্যাচার, হত্যা, অন্যায় অবিচারে তারা নতি স্বীকার করেন নাই। নিজের জীবনের এমনকি নিজের ভালবাসার জনের বিনিময়েও তারা ইসলামের রাস্তা থেকে বিচ্যুত হন নাই। সবকিছুর পরিবর্তে তারা তাদের নবী (সাঃ) এর পাশে পাহাড়ের মত অটল, অনড় থেকেছেন। আর এদের কারণেই ইসলামের বিস্তার লাভ। আয়াত [২:২০৮] এ আল্লাহ্ এই দ্বিতীয় ধরণের বান্দাকে অনুসরণ করার জন্য সবাইকে আদেশ দিচ্ছেন এবং অন্য দু’ধরণের লোক যাদের এক ধরন শুধু পৃথিবীর অর্থ সম্পদ, প্রভাব-প্রতিপত্তি যাদের কাম্য পরকাল যাদের কাছে অর্থহীন আয়াত [২:২০০] এবং অন্য ধরণ [২:২০৪] যারা ধূর্ত এবং মোনাফেক, যারা পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে বেড়ায়, তাদের অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। যদি আমরা তা করতে পারি তবেই আমরা মুক্তি পাব, আমরা মুত্তাকী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবো।
আয়াতঃ 002.208
হে ঈমানদার গন! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ কর না। নিশ্চিত রূপে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
O you who believe! Enter perfectly in Islâm (by obeying all the rules and regulations of the Islâmic religion) and follow not the footsteps of Shaitân (Satan). Verily! He is to you a plain enemy.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ ادْخُلُواْ فِي السِّلْمِ كَآفَّةً وَلاَ تَتَّبِعُواْ خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
Ya ayyuha allatheena amanoo odkhuloo fee alssilmi kaffatan wala tattabiAAoo khutuwati alshshaytani innahu lakum AAaduwwun mubeenun
YUSUFALI: O ye who believe! Enter into Islam whole-heartedly; and follow not the footsteps of the evil one; for he is to you an avowed enemy.
PICKTHAL: O ye who believe! Come, all of you, into submission (unto Him); and follow not the footsteps of the devil. Lo! he is an open enemy for you.
SHAKIR: O you who believe! enter into submission one and all and do not follow the footsteps of Shaitan; surely he is your open enemy.
KHALIFA: O you who believe, you shall embrace total submission; do not follow the steps of Satan, for he is your most ardent enemy.
২০৮। হে বিশ্বাসীগণ! সমস্ত মন প্রাণ দিয়ে ইসলাম গ্রহণ কর। এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
২০৯। যদি তোমাদের নিকট সুস্পষ্ট [নিদর্শন] আসার পরেও তোমাদের পদস্খলন ঘটে, তবে জেনে রাখ আল্লাহ্ মহাশক্তিশালী ও প্রজ্ঞাময় ২৩০।
২৩০। আল্লাহ্র আদেশাবলী জানার পরেও কেউ যদি তা না মানে, তবে ক্ষতি আল্লাহ্র নয়, ক্ষতি তারই। সময়ের বৃহত্তর পরিসরে আল্লাহ্র পরিকল্পনা কার্যকর হবেই। কেউ যদি আল্লাহ্কে অস্বীকার করে তার পথ থেকে দূরে সরে যায় তা হয়তো ক্ষণকালের জন্য সমাজে কিছু অশান্তির সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র তাতে কিছু ক্ষতিবৃদ্ধি হবে না। ক্ষতি হবে তারই যে আল্লাহ্কে অস্বীকার করে তার পথ থেকে দূরে সরে যাবে। আল্লাহ্ মহাপরাক্রমশালী, তার পরিকল্পনা অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে।
আয়াতঃ 002.209
অতঃপর তোমাদের মাঝে পরিস্কার নির্দেশ এসে গেছে বলে জানার পরেও যদি তোমরা পদস্খলিত হও, তাহলে নিশ্চিত জেনে রেখো, আল্লাহ, পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ।
Then if you slide back after the clear signs (Prophet Muhammad SAW and this Qur’ân, and Islâm) have come to you, then know that Allâh is All-Mighty, All-Wise.
فَإِن زَلَلْتُمْ مِّن بَعْدِ مَا جَاءتْكُمُ الْبَيِّنَاتُ فَاعْلَمُواْ أَنَّ اللّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
Fa-in zalaltum min baAAdi ma jaatkumu albayyinatu faiAAlamoo anna Allaha AAazeezun hakeemun
YUSUFALI: If ye backslide after the clear (Signs) have come to you, then know that Allah is Exalted in Power, Wise.
PICKTHAL: And if ye slide back after the clear proofs have come unto you, then know that Allah is Mighty, Wise.
SHAKIR: But if you slip after clear arguments have come to you, then know that Allah is Mighty, Wise.
KHALIFA: If you backslide, after the clear proofs have come to you, then know that GOD is Almighty, Most Wise.
২০৮। হে বিশ্বাসীগণ! সমস্ত মন প্রাণ দিয়ে ইসলাম গ্রহণ কর। এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
২০৯। যদি তোমাদের নিকট সুস্পষ্ট [নিদর্শন] আসার পরেও তোমাদের পদস্খলন ঘটে, তবে জেনে রাখ আল্লাহ্ মহাশক্তিশালী ও প্রজ্ঞাময় ২৩০।
২৩০। আল্লাহ্র আদেশাবলী জানার পরেও কেউ যদি তা না মানে, তবে ক্ষতি আল্লাহ্র নয়, ক্ষতি তারই। সময়ের বৃহত্তর পরিসরে আল্লাহ্র পরিকল্পনা কার্যকর হবেই। কেউ যদি আল্লাহ্কে অস্বীকার করে তার পথ থেকে দূরে সরে যায় তা হয়তো ক্ষণকালের জন্য সমাজে কিছু অশান্তির সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র তাতে কিছু ক্ষতিবৃদ্ধি হবে না। ক্ষতি হবে তারই যে আল্লাহ্কে অস্বীকার করে তার পথ থেকে দূরে সরে যাবে। আল্লাহ্ মহাপরাক্রমশালী, তার পরিকল্পনা অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে।
আয়াতঃ 002.210
তারা কি সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছে যে, মেঘের আড়ালে তাদের সামনে আসবেন আল্লাহ ও ফেরেশতাগণ ? আর তাতেই সব মীমাংসা হয়ে যাবে। বস্তুতঃ সবকার্যকলাপই আল্লাহর নিকট গিয়ে পৌঁছবে।
Do they then wait for anything other than that Allâh should come to them in the shadows of the clouds and the angels? (Then) the case would be already judged. And to Allâh return all matters (for decision).
هَلْ يَنظُرُونَ إِلاَّ أَن يَأْتِيَهُمُ اللّهُ فِي ظُلَلٍ مِّنَ الْغَمَامِ وَالْمَلآئِكَةُ وَقُضِيَ الأَمْرُ وَإِلَى اللّهِ تُرْجَعُ الأمُورُ
Hal yanthuroona illa an ya/tiyahumu Allahu fee thulalin mina alghamami waalmala-ikatu waqudiya al-amru wa-ila Allahi turjaAAu al-omooru
YUSUFALI: Will they wait until Allah comes to them in canopies of clouds, with angels (in His train) and the question is (thus) settled? but to Allah do all questions go back (for decision).
PICKTHAL: Wait they for naught else than that Allah should come unto them in the shadows of the clouds with the angels? Then the case would be already judged. All cases go back to Allah (for judgment).
SHAKIR: They do not wait aught but that Allah should come to them in the shadows of the clouds along with the angels, and the matter has (already) been decided; and (all) matters are returned to Allah.
KHALIFA: Are they waiting until GOD Himself comes to them in dense clouds, together with the angels? When this happens, the whole matter will be terminated, and to GOD everything will be returned.
২১০। তারা শুধু কি এই প্রতীক্ষায় আছে যে, যতক্ষণ না আল্লাহ্ ফেরেশ্তাগণের সাথে তাদের নিকট উপস্থিত হবে [তাঁর বাহনে করে] মেঘের ছায়ার মধ্যে এবং [তখন এভাবে সবকিছুর] সমাধান হয়ে যাবে? কিন্তু [সিদ্ধান্তের জন্য] সকল বিষয় আল্লাহ্র নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে ২৩১।
২৩১। যদি বিশ্বাসের অভাব থাকে, যদি ঈমানের দৃঢ়তা না থাকে, তখনই আল্লাহ্র হুকুম মানার ক্ষেত্রে গড়িমসি দেখা যায়। তখনই তারা এ রকম বাক্য ব্যবহার করবে, ‘হ্যাঁ আমরা তখনই বিশ্বাস করবো যখন আল্লাহ্ তার ফেরেশ্তাদের সমবিভরে আমাদের সামনে তাঁর মহিমা উপস্থাপন করবেন।’ অর্থাৎ তারা তাদের মত করে আল্লাহ্কে বিশ্বাস করতে চায়; আল্লাহ্র মনোনীত পন্থায় নয়। কিন্তু তা তো হবার নয়। সব সিদ্ধান্তের একমাত্র মালিক আল্লাহ্। তার হুকুমই একমাত্র হুকুম, তার সিদ্ধান্তই একমাত্র সিদ্ধান্ত।
আয়াতঃ 002.211
বনী ইসরাঈলদিগকে জিজ্ঞেস কর, তাদেরকে আমি কত স্পষ্ট নির্দশনাবলী দান করেছি। আর আল্লাহর নেয়ামত পৌছে যাওয়ার পর যদি কেউ সে নেয়ামতকে পরিবর্তিত করে দেয়, তবে আল্লাহর আযাব অতি কঠিন।
Ask the Children of Israel how many clear Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.) We gave them. And whoever changes Allâh’s Favour after it had come to him, [e.g. renounces the Religion of Allâh (Islâm) and accepts Kufr (disbelief),] then surely, Allâh is Severe in punishment.
سَلْ بَنِي إِسْرَائِيلَ كَمْ آتَيْنَاهُم مِّنْ آيَةٍ بَيِّنَةٍ وَمَن يُبَدِّلْ نِعْمَةَ اللّهِ مِن بَعْدِ مَا جَاءتْهُ فَإِنَّ اللّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
Sal banee isra-eela kam ataynahum min ayatin bayyinatin waman yubaddil niAAmata Allahi min baAAdi ma jaat-hu fa-inna Allaha shadeedu alAAiqabi
YUSUFALI: Ask the Children of Israel how many clear (Signs) We have sent them. But if any one, after Allah’s favour has come to him, substitutes (something else), Allah is strict in punishment.
PICKTHAL: Ask of the Children of Israel how many a clear revelation We gave them! He who altereth the grace of Allah after it hath come unto him (for him), lo! Allah is severe in punishment.
SHAKIR: Ask the Israelites how many a clear sign have We given them; and whoever changes the favor of Allah after it has come to him, then surely Allah is severe in requiting (evil).
KHALIFA: Ask the Children of Israel how many profound miracles have we shown them! For those who disregard the blessings bestowed upon them by GOD, GOD is most strict in retribution.
রুকু – ২৬
২১১। বণী ইসরাঈলীদের জিজ্ঞেস কর, কতগুলি সুস্পষ্ট [নিদর্শন] আমি তাদের প্রেরণ করেছি? ২৩২। আল্লাহ্র অনুগ্রহ আসার পরে কেউ তার পরিবর্তন করলে আল্লাহ্ তো শাস্তি দানে কঠোর ২৩৩।
২৩২। উপরের আয়াতের উদাহরণ আমরা দেখি হযরত মুসার সময়ে। আল্লাহ্ ইসরাঈলীদের তার মহিমা এবং নিদর্শন দেখান, তারপরও ইসরাঈলীরা আল্লাহ্র নির্দেশিত পথ ত্যাগ করে নিজেদের কল্পনায় গড়া মূর্তিপূজা এবং খেয়ালখুশী মত চলতে থাকে। এ কথাটা শুধুমাত্র ইসরাঈলীদের বেলায প্রযোজ্য তাই নয়। এ কথা সর্বকালের সর্বযুগের জন্য প্রযোজ্য। অবিশ্বাসীরা আল্লাহ্র পরিবর্তে নিজেদের কল্পনা প্রসূত শক্তির পূঁজা করে। প্রাচীন ইসরাঈলীরা সোনার গো-বৎস্য পঁজা করেছে, আজকের যুগে আমরা দেখি এর ধরণ পাল্টে গেছে। কেউ বিশ্বমানবতার নামে নাস্তিক, কেউ কমুনিজমের নামে নাস্তিক। আবার কেউ আল্লাহ্র নামে Trinity তে বিশ্বাসী ইত্যাদি। অর্থাৎ সবাই স্ব-স্ব মত অনুসারে আল্লাহ্কে বিশ্বাস করতে চায়। আজ মুসলমানদের মধ্যে এত বিভক্তির কারণও এই একটাই। কিন্তু আল্লাহ্ বলেছেন এর দ্বারা তারা নিজেদেরই প্রতারিত করবে, কারণ আল্লাহ্র ন্যায় বিচার অবশ্যই আসবে। যারা তার রহমত ও করুণা অস্বীকার করে তাদের জন্য এই ন্যায় বিচার অত্যন্ত কঠোরভাবে প্রযোজ্য হবে।
২৩৩। আয়াত [২:১৯৬] এর শেষাংশে আল্লাহ্কে ভয় করতে বলা হয়েছে, যারা আল্লাহ্কে ভয় করে না তাদের কঠোর শাস্তির কথা বলা হয়েছে। আয়াত [২:২১১] এর শেষাংশে তাদের কথা বলা হয়েছে যারা আল্লাহ্র নিদর্শন অস্বীকার করে এবং পরিবর্তন করে তাদের শাস্তি হবে কঠোর।
আয়াতঃ 002.212
পার্থিব জীবনের উপর কাফেরদিগকে উম্মত্ত করে দেয়া হয়েছে। আর তারা ঈমানদারদের প্রতি লক্ষ্য করে হাসাহাসি করে। পক্ষান্তরে যারা পরহেযগার তারা সেই কাফেরদের তুলনায় কেয়ামতের দিন অত্যন্ত উচ্চমর্যাদায় থাকবে। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সীমাহীন রুযী দান করেন।
Beautified is the life of this world for those who disbelieve, and they mock at those who believe. But those who obey Allâh’s Orders and keep away from what He has forbidden, will be above them on the Day of Resurrection. And Allâh gives (of His Bounty, Blessings, Favours, Honours, etc. on the Day of Resurrection) to whom He wills without limit.
زُيِّنَ لِلَّذِينَ كَفَرُواْ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا وَيَسْخَرُونَ مِنَ الَّذِينَ آمَنُواْ وَالَّذِينَ اتَّقَواْ فَوْقَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَاللّهُ يَرْزُقُ مَن يَشَاء بِغَيْرِ حِسَابٍ
Zuyyina lillatheena kafaroo alhayatu alddunya wayaskharoona mina allatheena amanoo waallatheena ittaqaw fawqahum yawma alqiyamati waAllahu yarzuqu man yashao bighayri hisabin
YUSUFALI: The life of this world is alluring to those who reject faith, and they scoff at those who believe. But the righteous will be above them on the Day of Resurrection; for Allah bestows His abundance without measure on whom He will.
PICKTHAL: Beautified is the life of the world for those who disbelieve; they make a jest of the believers. But those who keep their duty to Allah will be above them on the Day of Resurrection. Allah giveth without stint to whom He will.
SHAKIR: The life of this world is made to seem fair to those who disbelieve, and they mock those who believe, and those who guard (against evil) shall be above them on the day of resurrection; and Allah gives means of subsistence to whom he pleases without measure.
KHALIFA: This worldly life is adorned in the eyes of the disbelievers, and they ridicule those who believe. However, the righteous will be far above them on the Day of Resurrection. GOD blesses whomever He wills, without limits.
২১২। যারা ঈমানকে প্রত্যাখান করে তাদের জন্য পৃথিবীর এই জীবনকে মনোমুগ্ধকর করেছি। তারা বিশ্বাসীদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে। কিন্তু পুনরুত্থানের দিনে পূণ্যাত্মারা তাদের উর্ধ্বে অবস্থান করবে। আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা অপরিমিত প্রাচুর্য দান করেন ২৩৪।
২৩৪। এই আয়াতে বলা হয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দুনিয়ার প্রতি আসক্তি হচ্ছে, সত্যের প্রতি, আধ্যাত্মিক জগতের প্রতি অনীহার প্রকৃত কারণ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। যার নিদর্শন হলো ধর্মভীরুদের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন। মানুষের পক্ষে শুধুমাত্র পার্থিব জীবনের উন্নতিতে অহংকারী হওয়া উচিত নয়। কারণ আল্লাহ্ সবাইকে সমান রিযিক দান করেন না। আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা প্রচুর পরিমাণে দিয়ে থাকেন এবং দেখা যায় আমাদের ধারণায় যাদের পাওয়া উচিত নয়, তাদেরই অর্থবিত্ত বেশী। সময়ের বৃহত্তর পরিসরে, পৃথিবীর অগ্রযাত্রায়, আল্লাহ্র পরিকল্পনা বোঝা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই যে কেউ আল্লাহ্র নেয়ামতের অধিকারী হলে, কেন তাকে সে নেয়ামত দেওয়া হলো তা বোঝার ক্ষমতা আমাদের নাই। তবে এটা নিশ্চিত যে, আল্লাহ্ যাকে যে নেয়ামত দিয়েছেন তার সদ্ব্যবহার সম্বন্ধে হিসাব নেবেন পরকালে। যেমন-আমরা দিন শেষে আমাদের ব্যবসায়ের হিসাব মিলাই।
আয়াতঃ 002.213
সকল মানুষ একই জাতি সত্তার অন্তর্ভুক্ত ছিল। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা পয়গম্বর পাঠালেন সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকরী হিসাবে। আর তাঁদের সাথে অবর্তীণ করলেন সত্য কিতাব, যাতে মানুষের মাঝে বিতর্কমূলক বিষয়ে মীমাংসা করতে পারেন। বস্তুতঃ কিতাবের ব্যাপারে অন্য কেউ মতভেদ করেনি; কিন্তু পরিষ্কার নির্দেশ এসে যাবার পর নিজেদের পারস্পরিক জেদবশতঃ তারাই করেছে, যারা কিতাব প্রাপ্ত হয়েছিল। অতঃপর আল্লাহ ঈমানদারদেরকে হেদায়েত করেছেন সেই সত্য বিষয়ে, যে ব্যাপারে তারা মতভেদ লিপ্ত হয়েছিল। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা, সরল পথ বাতলে দেন।
Mankind were one community and Allâh sent Prophets with glad tidings and warnings, and with them He sent the Scripture in truth to judge between people in matters wherein they differed. And only those to whom (the Scripture) was given differed concerning it after clear proofs had come unto them through hatred, one to another. Then Allâh by His Leave guided those who believed to the truth of that wherein they differed. And Allâh guides whom He wills to a Straight Path.
كَانَ النَّاسُ أُمَّةً وَاحِدَةً فَبَعَثَ اللّهُ النَّبِيِّينَ مُبَشِّرِينَ وَمُنذِرِينَ وَأَنزَلَ مَعَهُمُ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ لِيَحْكُمَ بَيْنَ النَّاسِ فِيمَا اخْتَلَفُواْ فِيهِ وَمَا اخْتَلَفَ فِيهِ إِلاَّ الَّذِينَ أُوتُوهُ مِن بَعْدِ مَا جَاءتْهُمُ الْبَيِّنَاتُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ فَهَدَى اللّهُ الَّذِينَ آمَنُواْ لِمَا اخْتَلَفُواْ فِيهِ مِنَ الْحَقِّ بِإِذْنِهِ وَاللّهُ يَهْدِي مَن يَشَاء إِلَى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ
Kana alnnasu ommatan wahidatan fabaAAatha Allahu alnnabiyyeena mubashshireena wamunthireena waanzala maAAahumu alkitaba bialhaqqi liyahkuma bayna alnnasi feema ikhtalafoo feehi wama ikhtalafa feehi illa allatheena ootoohu min baAAdi ma jaat-humu albayyinatu baghyan baynahum fahada Allahu allatheena amanoo lima ikhtalafoo feehi mina alhaqqi bi-ithnihi waAllahu yahdee man yashao ila siratin mustaqeemin
YUSUFALI: Mankind was one single nation, and Allah sent Messengers with glad tidings and warnings; and with them He sent the Book in truth, to judge between people in matters wherein they differed; but the People of the Book, after the clear Signs came to them, did not differ among themselves, except through selfish contumacy. Allah by His Grace Guided the believers to the Truth, concerning that wherein they differed. For Allah guided whom He will to a path that is straight.
PICKTHAL: Mankind were one community, and Allah sent (unto them) prophets as bearers of good tidings and as warners, and revealed therewith the Scripture with the truth that it might judge between mankind concerning that wherein they differed. And only those unto whom (the Scripture) was given differed concerning it, after clear proofs had come unto them, through hatred one of another. And Allah by His Will guided those who believe unto the truth of that concerning which they differed. Allah guideth whom He will unto a straight path.
SHAKIR: (All) people are a single nation; so Allah raised prophets as bearers of good news and as warners, and He revealed with them the Book with truth, that it might judge between people in that in which they differed; and none but the very people who were given it differed about it after clear arguments had come to them, revolting among themselves; so Allah has guided by His will those who believe to the truth about which they differed and Allah guides whom He pleases to the right path.
KHALIFA: The people used to be one community when GOD sent the prophets as bearers of good news, as well as warners. He sent down with them the scripture, bearing the truth, to judge among the people in their disputes. Ironically, those who received the scripture were the ones who rejected any new scripture, despite clear proofs given to them. This is due to jealousy on their part. GOD guides those who believe to the truth that is disputed by all others, in accordance with His will. GOD guides whoever wills in a straight path.
২১৩। মনুষ্য সম্প্রদায় ছিলো একই জাতি, অতঃপর আল্লাহ্ নবীদের সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেন। মানুষেরা যে বিষয়ে মতভেদ করতো তাদের মধ্যে সে বিষয়ে মীমাংসার জন্য তিনি তাদের সাথে সত্যসহ কিতাব প্রেরণ করেন। কিন্তু কিতাব প্রাপ্তদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শন আসার পরেও, স্বার্থপরতা ও অবাধ্যতার দরুন সে বিষয়ে মতভেদ করতো। তারা [অবিশ্বাসীরা] যে বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করতো আল্লাহ্ তাঁর নিজ অনুগ্রহে সে বিষয়ে বিশ্বাসীদের সত্য পথে পরিচালিত করেন। আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন।
২১৪। তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা [পরীক্ষা ব্যতীত] জান্নাতে প্রবেশ করবে, যেরূপ পরীক্ষা পূর্ববর্তীগণ, যারা গত হয়েছে, তাদের করা হয়েছিলো? দুঃখ, কষ্ট এবং দুর্ভাগ্য তাদের স্পর্শ করেছিলো এবং তারা এতটাই ভীত ও কম্পিত হয়েছিলো যে, এমনকি রাসূল এবং তার সাথে যারা ঈমান এনেছিলো, তারা [সকলেই] কেঁদে বলেছিলো, ‘কখন আল্লাহ্র সাহায্য আসবে?’ আঃ! অবশ্যই আল্লাহ্র সাহায্য [সর্বদা] অতি নিকটে।
২১৫। তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, [দান হিসেবে] কি তারা ব্যয় করবে। বল, যা ভাল ২৩৫ তাই-ই ব্যয় কর, পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্থ এবং পর্যটকদের জন্য। এবং তোমরা যা ভাল কাজ কর আল্লাহ্ তা খুব ভালভাবে জানেন।
২৩৫। দান বা Charity সম্পর্কে এখানে তিনটি প্রশ্নের উদ্ভব হয়েছে। (১) কি দান করবে? (২) কাকে দান করবে? এবং (৩) কীভাবে দান করবে? এর উত্তরে বলা হয়েছে, যা কিছু ভাল, মানুষের জন্য মঙ্গলজনক, তাই-ই দানের বস্তু। অনেকের ধারণা শুধুমাত্র অর্থ-সম্পদই দানের বস্তু। অর্থ দান করা পৃথিবী সর্বাপেক্ষা সহজ কাজ। আল্লাহ্ প্রতিটি মানুষকে কোন না কোন নেয়ামতে ধন্য করেছেন। কাউকে দিয়েছেন মেধা, কাউকে শিল্পীমন, কাউকে প্রভাব প্রতিপত্তি, কাউকে ক্ষমতা, কাউকে অর্থ-সম্পদ ইত্যাদি। যাকে যে নেয়ামত দিন না কেন সে সেই নেয়ামত আল্লাহ্র রাস্তায় খরচ করবে। এখানে বলা হয়েছে, “যা ভাল তাই-ই ব্যয় কর।” অর্থাৎ ফেলে দেওয়া অপ্রয়োজনীয় বা যা মানুষের জন্য কল্যাণকর নয় তা দানের যোগ্যতা রাখে না। এ ব্যাপারে দুঃখী ব্যক্তিকে সান্ত্বনার বাণীও দান হিসেবে গ্রহণযোগ্য। উদাহরণস্বরূপ বলা যায, মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে অর্থ সাহায্য দান নয় কারণ এই অর্থ সাহায্য তার জন্য কোনও কল্যাণ বয়ে আনবে না।
দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে কাকে দেওয়া হবে বা কার জন্য ব্যয় করবে? এ দানে পিতামাতাকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। সুতরাং এ দান যে যাকাত নয় তা বোঝা যায় এ কারণে যে, পিতা-মাতাকে যাকাত দেওয়া যায় না এবং যাকাতে সব সময়ে পরিমাণ ধার্য করা থাকে। এখানে তা নাই। সুতরাং পিতা-মাতার পর যাদের কথা বলা হয়েছে তারা হচ্ছে আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্থ এবং মুসাফির। এদের মধ্যে বিচার করতে হবে কার প্রয়োজন অধিক। যার অধিক তার দাবী অগ্রগণ্য। এ ব্যাপারে কেউ যদি পৃথিবীতে প্রশংসিত হওয়ার জন্য [যা স্বভাবধর্ম] যে অগ্রগণ্য দাবীদার তার দাবীকে তুচ্ছ জ্ঞান করে এবং এমন লোককে দান করে যাতে সে পৃথিবীতে সবার কাছে প্রশংসা পেতে পারে, তবে তার সে দান, দান বলে গণ্য হবে না। এটা আল্লাহ্র চোখে জালিয়াতির সমান। যে কোনও দানকে আল্লাহ্ বিচার করবেন তার নিয়ত দ্বারা। দানের উদ্দেশ্য হবে দুটি (১) দান হতে হবে নিঃস্বার্থ এবং (২) গ্রহীতার প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থাৎ যার প্রয়োজন অধিক তার দাবী অগ্রগণ্য এই ভিত্তিতে দান করা। যদি কেউ দান করার ব্যাপারে এই দু’টি মূলনীতি অস্বীকার করে তবে অবশ্যই তার দানের পিছনে নিজস্ব কোনও স্বার্থ বিদ্যমান থাকে।
তৃতীয় প্রশ্ন কীভাবে দান করা হবে। এর উত্তরে বলা হয়েছে এমনভাবে দান করতে হবে যেন আমাদের অবস্থান আল্লাহ্র দৃষ্টির সম্মুখে, কারণ “আল্লাহ্ তা খুব ভালোভাবে জানেন।” আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, তিনি আমাদের নিয়ত সম্বন্ধে আমাদের চেয়েও বেশি ওয়াকিবহাল। সুতরাং তার হুকুম মেনে, তাকে খুশী করাই হচ্ছে দানের একমাত্র উদ্দেশ্য। যদি কেউ মনে করে বাহিরের প্রদর্শনী, বা ভান বা আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বস্ত না হয়ে দান খয়রাত করে পূণ্য বা সওয়াব হাসিল করবে, তবে তারা মূর্খ। কারণ মানুষের কোনও শঠতা বা ভান বা বাহিরের প্রদর্শনী কিছুই বিশ্ব স্রষ্টার কাছে গোপন থাকে না।
আয়াতঃ 002.214
তোমাদের কি এই ধারণা যে, তোমরা জান্নাতে চলে যাবে, অথচ সে লোকদের অবস্থা অতিক্রম করনি যারা তোমাদের পূর্বে অতীত হয়েছে। তাদের উপর এসেছে বিপদ ও কষ্ট। আর এমনি ভাবে শিহরিত হতে হয়েছে যাতে নবী ও তাঁর প্রতি যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে পর্যন্ত একথা বলতে হয়েছে যে, কখন আসবে আল্লাহর সাহায্যে! তোমরা শোনে নাও, আল্লাহর সাহায্যে একান্তই নিকটবর্তী।
Or think you that you will enter Paradise without such (trials) as came to those who passed away before you? They were afflicted with severe poverty and ailments and were so shaken that even the Messenger and those who believed along with him said, ”When (will come) the Help of Allâh?” Yes! Certainly, the Help of Allâh is near!
أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُواْ الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَأْتِكُم مَّثَلُ الَّذِينَ خَلَوْاْ مِن قَبْلِكُم مَّسَّتْهُمُ الْبَأْسَاء وَالضَّرَّاء وَزُلْزِلُواْ حَتَّى يَقُولَ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُواْ مَعَهُ مَتَى نَصْرُ اللّهِ أَلا إِنَّ نَصْرَ اللّهِ قَرِيبٌ
Am hasibtum an tadkhuloo aljannata walamma ya/tikum mathalu allatheena khalaw min qablikum massat-humu alba/sao waalddarrao wazulziloo hatta yaqoola alrrasoolu waallatheena amanoo maAAahu mata nasru Allahi ala inna nasra Allahi qareebun
YUSUFALI: Or do ye think that ye shall enter the Garden (of bliss) without such (trials) as came to those who passed away before you? they encountered suffering and adversity, and were so shaken in spirit that even the Messenger and those of faith who were with him cried: “When (will come) the help of Allah?” Ah! Verily, the help of Allah is (always) near!
PICKTHAL: Or think ye that ye will enter paradise while yet there hath not come unto you the like of (that which came to) those who passed away before you? Affliction and adversity befell them, they were shaken as with earthquake, till the messenger (of Allah) and those who believed along with him said: When cometh Allah’s help? Now surely Allah’s help is nigh.
SHAKIR: Or do you think that you would enter the garden while yet the state of those who have passed away before you has not come upon you; distress and affliction befell them and they were shaken violently, so that the Messenger and those who believed with him said: When will the help of Allah come? Now surely the help of Allah is nigh!
KHALIFA: Do you expect to enter Paradise without being tested like those before you? They were tested with hardship and adversity, and were shaken up, until the messenger and those who believed with him said, “Where is GOD’s victory?” GOD’s victory is near.
২১৩। মনুষ্য সম্প্রদায় ছিলো একই জাতি, অতঃপর আল্লাহ্ নবীদের সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেন। মানুষেরা যে বিষয়ে মতভেদ করতো তাদের মধ্যে সে বিষয়ে মীমাংসার জন্য তিনি তাদের সাথে সত্যসহ কিতাব প্রেরণ করেন। কিন্তু কিতাব প্রাপ্তদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শন আসার পরেও, স্বার্থপরতা ও অবাধ্যতার দরুন সে বিষয়ে মতভেদ করতো। তারা [অবিশ্বাসীরা] যে বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করতো আল্লাহ্ তাঁর নিজ অনুগ্রহে সে বিষয়ে বিশ্বাসীদের সত্য পথে পরিচালিত করেন। আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন।
২১৪। তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা [পরীক্ষা ব্যতীত] জান্নাতে প্রবেশ করবে, যেরূপ পরীক্ষা পূর্ববর্তীগণ, যারা গত হয়েছে, তাদের করা হয়েছিলো? দুঃখ, কষ্ট এবং দুর্ভাগ্য তাদের স্পর্শ করেছিলো এবং তারা এতটাই ভীত ও কম্পিত হয়েছিলো যে, এমনকি রাসূল এবং তার সাথে যারা ঈমান এনেছিলো, তারা [সকলেই] কেঁদে বলেছিলো, ‘কখন আল্লাহ্র সাহায্য আসবে?’ আঃ! অবশ্যই আল্লাহ্র সাহায্য [সর্বদা] অতি নিকটে।
২১৫। তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, [দান হিসেবে] কি তারা ব্যয় করবে। বল, যা ভাল ২৩৫ তাই-ই ব্যয় কর, পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্থ এবং পর্যটকদের জন্য। এবং তোমরা যা ভাল কাজ কর আল্লাহ্ তা খুব ভালভাবে জানেন।
২৩৫। দান বা Charity সম্পর্কে এখানে তিনটি প্রশ্নের উদ্ভব হয়েছে। (১) কি দান করবে? (২) কাকে দান করবে? এবং (৩) কীভাবে দান করবে? এর উত্তরে বলা হয়েছে, যা কিছু ভাল, মানুষের জন্য মঙ্গলজনক, তাই-ই দানের বস্তু। অনেকের ধারণা শুধুমাত্র অর্থ-সম্পদই দানের বস্তু। অর্থ দান করা পৃথিবী সর্বাপেক্ষা সহজ কাজ। আল্লাহ্ প্রতিটি মানুষকে কোন না কোন নেয়ামতে ধন্য করেছেন। কাউকে দিয়েছেন মেধা, কাউকে শিল্পীমন, কাউকে প্রভাব প্রতিপত্তি, কাউকে ক্ষমতা, কাউকে অর্থ-সম্পদ ইত্যাদি। যাকে যে নেয়ামত দিন না কেন সে সেই নেয়ামত আল্লাহ্র রাস্তায় খরচ করবে। এখানে বলা হয়েছে, “যা ভাল তাই-ই ব্যয় কর।” অর্থাৎ ফেলে দেওয়া অপ্রয়োজনীয় বা যা মানুষের জন্য কল্যাণকর নয় তা দানের যোগ্যতা রাখে না। এ ব্যাপারে দুঃখী ব্যক্তিকে সান্ত্বনার বাণীও দান হিসেবে গ্রহণযোগ্য। উদাহরণস্বরূপ বলা যায, মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে অর্থ সাহায্য দান নয় কারণ এই অর্থ সাহায্য তার জন্য কোনও কল্যাণ বয়ে আনবে না।
দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে কাকে দেওয়া হবে বা কার জন্য ব্যয় করবে? এ দানে পিতামাতাকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। সুতরাং এ দান যে যাকাত নয় তা বোঝা যায় এ কারণে যে, পিতা-মাতাকে যাকাত দেওয়া যায় না এবং যাকাতে সব সময়ে পরিমাণ ধার্য করা থাকে। এখানে তা নাই। সুতরাং পিতা-মাতার পর যাদের কথা বলা হয়েছে তারা হচ্ছে আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্থ এবং মুসাফির। এদের মধ্যে বিচার করতে হবে কার প্রয়োজন অধিক। যার অধিক তার দাবী অগ্রগণ্য। এ ব্যাপারে কেউ যদি পৃথিবীতে প্রশংসিত হওয়ার জন্য [যা স্বভাবধর্ম] যে অগ্রগণ্য দাবীদার তার দাবীকে তুচ্ছ জ্ঞান করে এবং এমন লোককে দান করে যাতে সে পৃথিবীতে সবার কাছে প্রশংসা পেতে পারে, তবে তার সে দান, দান বলে গণ্য হবে না। এটা আল্লাহ্র চোখে জালিয়াতির সমান। যে কোনও দানকে আল্লাহ্ বিচার করবেন তার নিয়ত দ্বারা। দানের উদ্দেশ্য হবে দুটি (১) দান হতে হবে নিঃস্বার্থ এবং (২) গ্রহীতার প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থাৎ যার প্রয়োজন অধিক তার দাবী অগ্রগণ্য এই ভিত্তিতে দান করা। যদি কেউ দান করার ব্যাপারে এই দু’টি মূলনীতি অস্বীকার করে তবে অবশ্যই তার দানের পিছনে নিজস্ব কোনও স্বার্থ বিদ্যমান থাকে।
তৃতীয় প্রশ্ন কীভাবে দান করা হবে। এর উত্তরে বলা হয়েছে এমনভাবে দান করতে হবে যেন আমাদের অবস্থান আল্লাহ্র দৃষ্টির সম্মুখে, কারণ “আল্লাহ্ তা খুব ভালোভাবে জানেন।” আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, তিনি আমাদের নিয়ত সম্বন্ধে আমাদের চেয়েও বেশি ওয়াকিবহাল। সুতরাং তার হুকুম মেনে, তাকে খুশী করাই হচ্ছে দানের একমাত্র উদ্দেশ্য। যদি কেউ মনে করে বাহিরের প্রদর্শনী, বা ভান বা আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বস্ত না হয়ে দান খয়রাত করে পূণ্য বা সওয়াব হাসিল করবে, তবে তারা মূর্খ। কারণ মানুষের কোনও শঠতা বা ভান বা বাহিরের প্রদর্শনী কিছুই বিশ্ব স্রষ্টার কাছে গোপন থাকে না।
আয়াতঃ 002.215
তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে, কি তারা ব্যয় করবে? বলে দাও-যে বস্তুই তোমরা ব্যয় কর, তা হবে পিতা-মাতার জন্যে, আত্নীয়-আপনজনের জন্যে, এতীম-অনাথদের জন্যে, অসহায়দের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে। আর তোমরা যে কোন সৎকাজ করবে, নিঃসন্দেহে তা অত্যন্ত ভালভাবেই আল্লাহর জানা রয়েছে।
They ask you (O Muhammad SAW) what they should spend. Say: Whatever you spend of good must be for parents and kindred and orphans and AlMasâkin (the poor) and the wayfarers, and whatever you do of good deeds, truly, Allâh knows it well.
يَسْأَلُونَكَ مَاذَا يُنفِقُونَ قُلْ مَا أَنفَقْتُم مِّنْ خَيْرٍ فَلِلْوَالِدَيْنِ وَالأَقْرَبِينَ وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَابْنِ السَّبِيلِ وَمَا تَفْعَلُواْ مِنْ خَيْرٍ فَإِنَّ اللّهَ بِهِ عَلِيمٌ
Yas-aloonaka matha yunfiqoona qul ma anfaqtum min khayrin falilwalidayni waal-aqrabeena waalyatama waalmasakeeni waibni alssabeeli wama tafAAaloo min khayrin fa-inna Allaha bihi AAaleemun
YUSUFALI: They ask thee what they should spend (In charity). Say: Whatever ye spend that is good, is for parents and kindred and orphans and those in want and for wayfarers. And whatever ye do that is good, -Allah knoweth it well.
PICKTHAL: They ask thee, (O Muhammad), what they shall spend. Say: that which ye spend for good (must go) to parents and near kindred and orphans and the needy and the wayfarer. And whatsoever good ye do, lo! Allah is Aware of it.
SHAKIR: They ask you as to what they should spend. Say: Whatever wealth you spend, it is for the parents and the near of kin and the orphans and the needy and the wayfarer, and whatever good you do, Allah surely knows it.
KHALIFA: They ask you about giving: say, “The charity you give shall go to the parents, the relatives, the orphans, the poor, and the traveling alien.” Any good you do, GOD is fully aware thereof.
২১৩। মনুষ্য সম্প্রদায় ছিলো একই জাতি, অতঃপর আল্লাহ্ নবীদের সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেন। মানুষেরা যে বিষয়ে মতভেদ করতো তাদের মধ্যে সে বিষয়ে মীমাংসার জন্য তিনি তাদের সাথে সত্যসহ কিতাব প্রেরণ করেন। কিন্তু কিতাব প্রাপ্তদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শন আসার পরেও, স্বার্থপরতা ও অবাধ্যতার দরুন সে বিষয়ে মতভেদ করতো। তারা [অবিশ্বাসীরা] যে বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করতো আল্লাহ্ তাঁর নিজ অনুগ্রহে সে বিষয়ে বিশ্বাসীদের সত্য পথে পরিচালিত করেন। আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন।
২১৪। তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা [পরীক্ষা ব্যতীত] জান্নাতে প্রবেশ করবে, যেরূপ পরীক্ষা পূর্ববর্তীগণ, যারা গত হয়েছে, তাদের করা হয়েছিলো? দুঃখ, কষ্ট এবং দুর্ভাগ্য তাদের স্পর্শ করেছিলো এবং তারা এতটাই ভীত ও কম্পিত হয়েছিলো যে, এমনকি রাসূল এবং তার সাথে যারা ঈমান এনেছিলো, তারা [সকলেই] কেঁদে বলেছিলো, ‘কখন আল্লাহ্র সাহায্য আসবে?’ আঃ! অবশ্যই আল্লাহ্র সাহায্য [সর্বদা] অতি নিকটে।
২১৫। তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, [দান হিসেবে] কি তারা ব্যয় করবে। বল, যা ভাল ২৩৫ তাই-ই ব্যয় কর, পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্থ এবং পর্যটকদের জন্য। এবং তোমরা যা ভাল কাজ কর আল্লাহ্ তা খুব ভালভাবে জানেন।
২৩৫। দান বা Charity সম্পর্কে এখানে তিনটি প্রশ্নের উদ্ভব হয়েছে। (১) কি দান করবে? (২) কাকে দান করবে? এবং (৩) কীভাবে দান করবে? এর উত্তরে বলা হয়েছে, যা কিছু ভাল, মানুষের জন্য মঙ্গলজনক, তাই-ই দানের বস্তু। অনেকের ধারণা শুধুমাত্র অর্থ-সম্পদই দানের বস্তু। অর্থ দান করা পৃথিবী সর্বাপেক্ষা সহজ কাজ। আল্লাহ্ প্রতিটি মানুষকে কোন না কোন নেয়ামতে ধন্য করেছেন। কাউকে দিয়েছেন মেধা, কাউকে শিল্পীমন, কাউকে প্রভাব প্রতিপত্তি, কাউকে ক্ষমতা, কাউকে অর্থ-সম্পদ ইত্যাদি। যাকে যে নেয়ামত দিন না কেন সে সেই নেয়ামত আল্লাহ্র রাস্তায় খরচ করবে। এখানে বলা হয়েছে, “যা ভাল তাই-ই ব্যয় কর।” অর্থাৎ ফেলে দেওয়া অপ্রয়োজনীয় বা যা মানুষের জন্য কল্যাণকর নয় তা দানের যোগ্যতা রাখে না। এ ব্যাপারে দুঃখী ব্যক্তিকে সান্ত্বনার বাণীও দান হিসেবে গ্রহণযোগ্য। উদাহরণস্বরূপ বলা যায, মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে অর্থ সাহায্য দান নয় কারণ এই অর্থ সাহায্য তার জন্য কোনও কল্যাণ বয়ে আনবে না।
দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে কাকে দেওয়া হবে বা কার জন্য ব্যয় করবে? এ দানে পিতামাতাকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। সুতরাং এ দান যে যাকাত নয় তা বোঝা যায় এ কারণে যে, পিতা-মাতাকে যাকাত দেওয়া যায় না এবং যাকাতে সব সময়ে পরিমাণ ধার্য করা থাকে। এখানে তা নাই। সুতরাং পিতা-মাতার পর যাদের কথা বলা হয়েছে তারা হচ্ছে আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্থ এবং মুসাফির। এদের মধ্যে বিচার করতে হবে কার প্রয়োজন অধিক। যার অধিক তার দাবী অগ্রগণ্য। এ ব্যাপারে কেউ যদি পৃথিবীতে প্রশংসিত হওয়ার জন্য [যা স্বভাবধর্ম] যে অগ্রগণ্য দাবীদার তার দাবীকে তুচ্ছ জ্ঞান করে এবং এমন লোককে দান করে যাতে সে পৃথিবীতে সবার কাছে প্রশংসা পেতে পারে, তবে তার সে দান, দান বলে গণ্য হবে না। এটা আল্লাহ্র চোখে জালিয়াতির সমান। যে কোনও দানকে আল্লাহ্ বিচার করবেন তার নিয়ত দ্বারা। দানের উদ্দেশ্য হবে দুটি (১) দান হতে হবে নিঃস্বার্থ এবং (২) গ্রহীতার প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থাৎ যার প্রয়োজন অধিক তার দাবী অগ্রগণ্য এই ভিত্তিতে দান করা। যদি কেউ দান করার ব্যাপারে এই দু’টি মূলনীতি অস্বীকার করে তবে অবশ্যই তার দানের পিছনে নিজস্ব কোনও স্বার্থ বিদ্যমান থাকে।
তৃতীয় প্রশ্ন কীভাবে দান করা হবে। এর উত্তরে বলা হয়েছে এমনভাবে দান করতে হবে যেন আমাদের অবস্থান আল্লাহ্র দৃষ্টির সম্মুখে, কারণ “আল্লাহ্ তা খুব ভালোভাবে জানেন।” আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, তিনি আমাদের নিয়ত সম্বন্ধে আমাদের চেয়েও বেশি ওয়াকিবহাল। সুতরাং তার হুকুম মেনে, তাকে খুশী করাই হচ্ছে দানের একমাত্র উদ্দেশ্য। যদি কেউ মনে করে বাহিরের প্রদর্শনী, বা ভান বা আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বস্ত না হয়ে দান খয়রাত করে পূণ্য বা সওয়াব হাসিল করবে, তবে তারা মূর্খ। কারণ মানুষের কোনও শঠতা বা ভান বা বাহিরের প্রদর্শনী কিছুই বিশ্ব স্রষ্টার কাছে গোপন থাকে না।
আয়াতঃ 002.216
তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হয়েছে, অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়। পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না।
Jihâd (holy fighting in Allâh’s Cause) is ordained for you (Muslims) though you dislike it, and it may be that you dislike a thing which is good for you and that you like a thing which is bad for you. Allâh knows but you do not know.
كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِتَالُ وَهُوَ كُرْهٌ لَّكُمْ وَعَسَى أَن تَكْرَهُواْ شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ وَعَسَى أَن تُحِبُّواْ شَيْئًا وَهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ وَاللّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ
Kutiba AAalaykumu alqitalu wahuwa kurhun lakum waAAasa an takrahoo shay-an wahuwa khayrun lakum waAAasa an tuhibboo shay-an wahuwa sharrun lakum waAllahu yaAAlamu waantum la taAAlamoona
YUSUFALI: Fighting is prescribed for you, and ye dislike it. But it is possible that ye dislike a thing which is good for you, and that ye love a thing which is bad for you. But Allah knoweth, and ye know not.
PICKTHAL: Warfare is ordained for you, though it is hateful unto you; but it may happen that ye hate a thing which is good for you, and it may happen that ye love a thing which is bad for you. Allah knoweth, ye know not.
SHAKIR: Fighting is enjoined on you, and h is an object of dislike to you; and it may be that you dislike a thing while it is good for you, and it may be that you love a thing while it is evil for you, and Allah knows, while you do not know.
KHALIFA: Fighting may be imposed on you, even though you dislike it. But you may dislike something which is good for you, and you may like something which is bad for you. GOD knows while you do not know.
২১৬। তোমাদের জন্য যুদ্ধের বিধান দেওয়া হলো এবং তোমরা তা অপছন্দ করলে ২৩৬। তোমরা যা অপছন্দ কর, সম্ভবতঃ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর এবং যা ভালবাস, সম্ভবতঃ তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। কিন্তু আল্লাহ্ জানেন এবং তোমরা তা জান না।
২৩৬। সত্য ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ হচ্ছে জিহাদ। কারন আল্লাহ্র আইন রয়েছে সত্য ও ন্যায়ের মধ্যে। তাই সত্য ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা মানেই হচ্ছে আল্লাহ্র আইনের প্রতিষ্ঠা। আর সত্য ও ন্যায়ের জন্য যুদ্ধ করা হচ্ছে সর্বোচ্চ দান। পৃথিবীতে নিজের জীবনের চেয়ে বড় আর কি আছে? সেই জীবনকে যে দান করতে পারে তার থেকে বড় দাতা আর কে আছে? জেহাদ বা আল্লাহ্র জন্য সেই জীবনকে নিবেদন করা হয়। একথা স্মরণযোগ্য যে জেহাদ শুধুমাত্র অস্ত্রের সাহায্যেই হয় না লেখনীর সাহায্যে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা, জনমত গঠন করা জেহাদ। সেই রকম বক্তৃতার মাধ্যমে, নেতৃত্বের মাধ্যমে যদি সত্য ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠার জন্য ও অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা হয় তাও আল্লাহ্র চোখে জেহাদ। যদি কেউ নিজের দম্ভ প্রকাশের জন্য অন্যায় জুলুম বা অত্যাচার করে, নিজের নাম প্রকাশের জন্য কূট-তর্কে অবতীর্ণ হয়, নিজের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য জনমত তৈরির চেষ্টা করে তবে তারা আল্লাহ্র চোখে নিন্দনীয়। আল্লাহ্ সবকিছুই জানেন।
আয়াতঃ 002.217
সম্মানিত মাস সম্পর্কে তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে যে, তাতে যুদ্ধ করা কেমন? বলে দাও এতে যুদ্ধ করা ভীষণ বড় পাপ। আর আল্লাহর পথে প্রতিবন্দ্বকতা সৃষ্টি করা এবং কুফরী করা, মসজিদে-হারামের পথে বাধা দেয়া এবং সেখানকার অধিবাসীদেরকে বহিস্কার করা, আল্লাহর নিকট তার চেয়েও বড় পাপ। আর ধর্মের ব্যাপারে ফেতনা সৃষ্টি করা নরহত্যা অপেক্ষাও মহা পাপ। বস্তুতঃ তারা তো সর্বদাই তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকবে, যাতে করে তোমাদিগকে দ্বীন থেকে ফিরিয়ে দিতে পারে যদি সম্ভব হয়। তোমাদের মধ্যে যারা নিজের দ্বীন থেকে ফিরে দাঁড়াবে এবং কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে, দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের যাবতীয় আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে। আর তারাই হলো দোযখবাসী। তাতে তারা চিরকাল বাস করবে।
They ask you concerning fighting in the Sacred Months (i.e. 1st, 7th, 11th and 12th months of the Islâmic calendar). Say, ”Fighting therein is a great (transgression) but a greater (transgression) with Allâh is to prevent mankind from following the Way of Allâh, to disbelieve in Him, to prevent access to Al-Masjid-al-Harâm (at Makkah), and to drive out its inhabitants, and Al-Fitnah is worse than killing. And they will never cease fighting you until they turn you back from your religion (Islâmic Monotheism) if they can. And whosoever of you turns back from his religion and dies as a disbeliever, then his deeds will be lost in this life and in the Hereafter, and they will be the dwellers of the Fire. They will abide therein forever.”
يَسْأَلُونَكَ عَنِ الشَّهْرِ الْحَرَامِ قِتَالٍ فِيهِ قُلْ قِتَالٌ فِيهِ كَبِيرٌ وَصَدٌّ عَن سَبِيلِ اللّهِ وَكُفْرٌ بِهِ وَالْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَإِخْرَاجُ أَهْلِهِ مِنْهُ أَكْبَرُ عِندَ اللّهِ وَالْفِتْنَةُ أَكْبَرُ مِنَ الْقَتْلِ وَلاَ يَزَالُونَ يُقَاتِلُونَكُمْ حَتَّىَ يَرُدُّوكُمْ عَن دِينِكُمْ إِنِ اسْتَطَاعُواْ وَمَن يَرْتَدِدْ مِنكُمْ عَن دِينِهِ فَيَمُتْ وَهُوَ كَافِرٌ فَأُوْلَـئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَأُوْلَـئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
Yas-aloonaka AAani alshshahri alharami qitalin feehi qul qitalun feehi kabeerun wasaddun AAan sabeeli Allahi wakufrun bihi waalmasjidi alharami wa-ikhraju ahlihi minhu akbaru AAinda Allahi waalfitnatu akbaru mina alqatli wala yazaloona yuqatiloonakum hatta yaruddookum AAan deenikum ini istataAAoo waman yartadid minkum AAan deenihi fayamut wahuwa kafirun faola-ika habitat aAAmaluhum fee alddunya waal-akhirati waola-ika as-habu alnnari hum feeha khalidoona
YUSUFALI: They ask thee concerning fighting in the Prohibited Month. Say: “Fighting therein is a grave (offence); but graver is it in the sight of Allah to prevent access to the path of Allah, to deny Him, to prevent access to the Sacred Mosque, and drive out its members.” Tumult and oppression are worse than slaughter. Nor will they cease fighting you until they turn you back from your faith if they can. And if any of you Turn back from their faith and die in unbelief, their works will bear no fruit in this life and in the Hereafter; they will be companions of the Fire and will abide therein.
PICKTHAL: They question thee (O Muhammad) with regard to warfare in the sacred month. Say: Warfare therein is a great (transgression), but to turn (men) from the way of Allah, and to disbelieve in Him and in the Inviolable Place of Worship, and to expel His people thence, is a greater with Allah; for persecution is worse than killing. And they will not cease from fighting against you till they have made you renegades from your religion, if they can. And whoso becometh a renegade and dieth in his disbelief: such are they whose works have fallen both in the world and the Hereafter. Such are rightful owners of the Fire: they will abide therein.
SHAKIR: They ask you concerning the sacred month about fighting in it. Say: Fighting in it is a grave matter, and hindering (men) from Allah’s way and denying Him, and (hindering men from) the Sacred Mosque and turning its people out of it, are still graver with Allah, and persecution is graver than slaughter; and they will not cease fighting with you until they turn you back from your religion, if they can; and whoever of you turns back from his religion, then he dies while an unbeliever– these it is whose works shall go for nothing in this world and the hereafter, and they are the inmates of the fire; therein they shall abide.
KHALIFA: They ask you about the Sacred Months and fighting therein: say, “Fighting therein is a sacrilege. However, repelling from the path of GOD and disbelieving in Him and in the sanctity of the Sacred Masjid, and evicting its people, are greater sacrileges in the sight of GOD. Oppression is worse than murder.” They will always fight you to revert you from your religion, if they can. Those among you who revert from their religion, and die as disbelievers, have nullified their works in this life and the Hereafter. These are the dwellers of Hell, wherein they abide forever.
রুকু – ২৭
২১৭। পবিত্র মাসে যুদ্ধ করা সম্পর্কে লোকে তোমাকে জিজ্ঞাসা করে ২৩৭। বল, ‘তখন যুদ্ধ করা ভীষণ অন্যায়। কিন্তু আল্লাহ্র পথে বাঁধা দান করা, আল্লাহ্কে অস্বীকার করা, মসজিদুল হারামে প্রবেশে বাঁধা দান করা এবং এর সদস্যদের [সেখান থেকে] বিতাড়িত করা, আল্লাহ্র নিকট অধিকতর অন্যায় ২৩৮।’ দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও উৎপীড়ন হত্যা অপেক্ষাও নিকৃষ্ট ২৩৯। তারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থেকে বিরত হবে না যতক্ষণ না তারা তোমাদেরকে দ্বীন থেকে ফিরিয়ে আনতে পারে, যদি তারা [তা করতে] সক্ষম হয়। আর যদি তোমাদের মধ্যে কেউ দ্বীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং অবিশ্বাসী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে; পৃথিবীতে এবং পরলোকে তাদের [সকল] কাজকর্ম হবে মূল্যহীন। তারা হবে আগুনের অধিবাসী এবং সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।
২৩৭। পবিত্র মাস দেখুন [২:১৯৪] ও টিকা ২০৯।
২৩৮। রাসূল (সাঃ) এর কয়েকজন সাহাবা কোন এক সফরে ঘটনাচক্রে কাফিরদের সাথে একটি খণ্ডযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। সে যুদ্ধে একজন কাফির নিহত হয়। দিনটি ছিল রজব মাসের পহেলা তারিখ। যেহেতু ঘটনাটি নিষিদ্ধ মাসে সংঘটিত হয়েছিল, তাই কাফিররা মুসলমানদের দোষারোপ করতে লাগল যে, মুসলমানেরা নিষিদ্ধ মাসের সম্মান পর্যন্ত করে না। তাতে মুসলমানগণ চিন্তিত হয়ে রাসূল (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলেন। এখানে তারই উত্তরে ইরশাদ হচ্ছে উপরের আয়াত। হিজরতের পূর্বে মক্কার সেই দুর্বিসহ দিনগুলিতে নও মুসলমানদের অমানবিক নির্যাতন সহ্য করতে হতো। তারা এই নির্যাতন দীর্ঘকাল ভোগ করেন যতদিন না আল্লাহ্ তাদের আত্মরক্ষার্থে অস্ত্র হাতে তুলে নেয়ার হুকুম দান করেন। তারা নিষিদ্ধ মাসে আত্মরক্ষার জন্য যুদ্ধ করতে বাধ্য হয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু তা ছিল তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ফলে তারা বিবেকের দংশনে জর্জরিত হয়েছিলেন। শত্রুরা শুধু যে তাদের যুদ্ধ করতে বাধ্য করে তাদের বিবেককে ক্ষত বিক্ষত করেছিল তাই-ই নয় তারা তাদের উপরে অপমান, অত্যাচারের ঝড় বইয়ে দিয়েছিলো। তারা আল্লাহ্কে অস্বীকার করতো, মুসলমানদেরকে কাবা ঘর থেকে বের করে দিত, মুসলমানদের নির্বাসনে যেতে বাধ্য করতো ইত্যাদি। এই আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেন যে, ফিৎনা বা সন্ত্রাস হত্যার চেয়ে বেশী অপরাধ।
২৩৯। আয়াত [২:১৯১, ১৯৩]-টি, আয়াত [২:২১৭] এরই অনুরূপ। ফিৎনা কথাটির অর্থ করা হয়েছে দাঙ্গা, বিশৃঙ্খলা, গৃহযুদ্ধ, শিরক্, কুফর, ধর্মীয় নির্যাতন ইত্যাদি।
আয়াতঃ 002.218
আর এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই যে, যারা ঈমান এনেছে এবং যারা হিজরত করেছে আর আল্লাহর পথে লড়াই (জেহাদ) করেছে, তারা আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশী। আর আল্লাহ হচ্ছেন ক্ষমাকারী করুনাময়।
Verily, those who have believed, and those who have emigrated (for Allâh’s Religion) and have striven hard in the Way of Allâh, all these hope for Allâh’s Mercy. And Allâh is Oft-Forgiving, Most-Merciful.
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُواْ وَالَّذِينَ هَاجَرُواْ وَجَاهَدُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ أُوْلَـئِكَ يَرْجُونَ رَحْمَتَ اللّهِ وَاللّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
Inna allatheena amanoo waallatheena hajaroo wajahadoo fee sabeeli Allahi ola-ika yarjoona rahmata Allahi waAllahu ghafoorun raheemun
YUSUFALI: Those who believed and those who suffered exile and fought (and strove and struggled) in the path of Allah,- they have the hope of the Mercy of Allah: And Allah is Oft-forgiving, Most Merciful.
PICKTHAL: Lo! those who believe, and those who emigrate (to escape the persecution) and strive in the way of Allah, these have hope of Allah’s mercy. Allah is Forgiving, Merciful.
SHAKIR: Surely those who believed and those who fled (their home) and strove hard in the way of Allah these hope for the mercy of Allah and Allah is Forgiving, Merciful.
KHALIFA: Those who believe, and those who emigrate and strive in the cause of GOD, have deserved GOD’s mercy. GOD is Forgiver, Most Merciful.
২১৮। যারা ঈমান এনেছে এবং যারা নির্বাসনের কষ্ট ভোগ করেছে এবং [সর্বশক্তি দিয়ে] আল্লাহ্র রাস্তায় যুদ্ধ করেছে, তাদের জন্য আল্লাহ্র অনুগ্রহের আশা আছে। আর আল্লাহ্ তো বারে বারে ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
২১৯। তারা তোমাকে মদ ২৪০ ও জুয়া ২৪১ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বল, ‘এগুলির মধ্যে রয়েছে মহাপাপ এবং মানুষের জন্য কিছু লাভ। কিন্তু লাভ অপেক্ষা পাপ অনেক বেশী।’ তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে কি পরিমাণ তারা [দানে] ব্যয় করবে? বল, ‘তোমার প্রয়োজনের পরে যা উদ্বৃত্ত থাকে ২৪২।’ এভাবেই আল্লাহ্ তাঁর বিধান সমূহ তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট রূপে ব্যক্ত করেন-যেনো তোমরা চিন্তা করতে পার;-
২৪০। ‘Khamr’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে ‘গাঁজানো’। হতে পারে তা আঙ্গুরের রস বা মদ। যদি একে বৃহত্তর অর্থে প্রয়োগ করা হয় তবে যে কোনও ‘গাঁজানো’ পানীয় এর জন্য তা প্রযোজ্য। সাধারণ অর্থে যে কোনও মাদক দ্রব্যের জন্য তা প্রযোজ্য।
২৪১। ‘Maisir’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে পরিশ্রম ব্যতিরেকে খুব সহজে যা লাভ করা যায়, তাই হচ্ছে জুয়া বা Gambling। জাহিলিয়াতের যুগে নানা রকম জুয়ার প্রচলন ছিল। তার মধ্যে এক প্রকার জুয়া ছিল তীরের সাহায্যে ভাগ্য নির্ধারণ করতো। আজকের যুগে যাকে আমরা লটারী নামে অভিহিত করি। উট জবাই করে তার মাংস বন্টন করার সময়ে জুয়ার আশ্রয় নেয়া হতো, কেউ একাধিক অংশ পেতো, আবার কেউ বঞ্চিত হত। যে নীতির উপরে জুয়াকে নিন্দনীয় করা হয়েছে তা হচ্ছে এমন কিছু লাভ করা যা তার প্রাপ্য নয় অথবা সর্বস্ব হারানো। সমস্ত ব্যাপারটি হচ্ছে সম্পূর্ণ লটারী ও ‘মায়সারের’ অন্তর্ভূক্ত।
২৪২। কারও কোনও জিনিস প্রয়োজনের অতিরিক্ত মজুত করা উচিত নয়। সম্পদ যতটুকু আমাদের প্রয়োজন তা ব্যবহারের অনুমতি আছে কিন্তু বাড়তি সম্পদ জনহিতকর কাজে বা দান-ধ্যানে ব্যয় করবে।
আয়াতঃ 002.219
তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, এতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ। আর মানুষের জন্যে উপকারিতাও রয়েছে, তবে এগুলোর পাপ উপকারিতা অপেক্ষা অনেক বড়। আর তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে, কি তারা ব্যয় করবে? বলে দাও, নিজেদের প্রয়োজনীয় ব্যয়ের পর যা বাঁচে তাই খরচ করবে। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্যে নির্দেশ সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা করতে পার।
They ask you (O Muhammad SAW) concerning alcoholic drink and gambling. Say: ”In them is a great sin, and (some) benefit for men, but the sin of them is greater than their benefit.” And they ask you what they ought to spend. Say: ”That which is beyond your needs.” Thus Allâh makes clear to you His Laws in order that you may give thought.”
يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَآ أَكْبَرُ مِن نَّفْعِهِمَا وَيَسْأَلُونَكَ مَاذَا يُنفِقُونَ قُلِ الْعَفْوَ كَذَلِكَ يُبيِّنُ اللّهُ لَكُمُ الآيَاتِ لَعَلَّكُمْ تَتَفَكَّرُونَ
Yas-aloonaka AAani alkhamri waalmaysiri qul feehima ithmun kabeerun wamanafiAAu lilnnasi wa-ithmuhuma akbaru min nafAAihima wayas-aloonaka matha yunfiqoona quli alAAafwa kathalika yubayyinu Allahu lakumu al-ayati laAAallakum tatafakkaroona
YUSUFALI: They ask thee concerning wine and gambling. Say: “In them is great sin, and some profit, for men; but the sin is greater than the profit.” They ask thee how much they are to spend; Say: “What is beyond your needs.” Thus doth Allah Make clear to you His Signs: In order that ye may consider-
PICKTHAL: They question thee about strong drink and games of chance. Say: In both is great sin, and (some) utility for men; but the sin of them is greater than their usefulness. And they ask thee what they ought to spend. Say: that which is superfluous. Thus Allah maketh plain to you (His) revelations, that haply ye may reflect.
SHAKIR: They ask you about intoxicants and games of chance. Say: In both of them there is a great sin and means of profit for men, and their sin is greater than their profit. And they ask you as to what they should spend. Say: What you can spare. Thus does Allah make clear to you the communications, that you may ponder
KHALIFA: They ask you about intoxicants and gambling: say, “In them there is a gross sin, and some benefits for the people. But their sinfulness far outweighs their benefit.” They also ask you what to give to charity: say, “The excess.” GOD thus clarifies the revelations for you, that you may reflect,
২১৮। যারা ঈমান এনেছে এবং যারা নির্বাসনের কষ্ট ভোগ করেছে এবং [সর্বশক্তি দিয়ে] আল্লাহ্র রাস্তায় যুদ্ধ করেছে, তাদের জন্য আল্লাহ্র অনুগ্রহের আশা আছে। আর আল্লাহ্ তো বারে বারে ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
২১৯। তারা তোমাকে মদ ২৪০ ও জুয়া ২৪১ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বল, ‘এগুলির মধ্যে রয়েছে মহাপাপ এবং মানুষের জন্য কিছু লাভ। কিন্তু লাভ অপেক্ষা পাপ অনেক বেশী।’ তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে কি পরিমাণ তারা [দানে] ব্যয় করবে? বল, ‘তোমার প্রয়োজনের পরে যা উদ্বৃত্ত থাকে ২৪২।’ এভাবেই আল্লাহ্ তাঁর বিধান সমূহ তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট রূপে ব্যক্ত করেন-যেনো তোমরা চিন্তা করতে পার;-
২৪০। ‘Khamr’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে ‘গাঁজানো’। হতে পারে তা আঙ্গুরের রস বা মদ। যদি একে বৃহত্তর অর্থে প্রয়োগ করা হয় তবে যে কোনও ‘গাঁজানো’ পানীয় এর জন্য তা প্রযোজ্য। সাধারণ অর্থে যে কোনও মাদক দ্রব্যের জন্য তা প্রযোজ্য।
২৪১। ‘Maisir’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে পরিশ্রম ব্যতিরেকে খুব সহজে যা লাভ করা যায়, তাই হচ্ছে জুয়া বা Gambling। জাহিলিয়াতের যুগে নানা রকম জুয়ার প্রচলন ছিল। তার মধ্যে এক প্রকার জুয়া ছিল তীরের সাহায্যে ভাগ্য নির্ধারণ করতো। আজকের যুগে যাকে আমরা লটারী নামে অভিহিত করি। উট জবাই করে তার মাংস বন্টন করার সময়ে জুয়ার আশ্রয় নেয়া হতো, কেউ একাধিক অংশ পেতো, আবার কেউ বঞ্চিত হত। যে নীতির উপরে জুয়াকে নিন্দনীয় করা হয়েছে তা হচ্ছে এমন কিছু লাভ করা যা তার প্রাপ্য নয় অথবা সর্বস্ব হারানো। সমস্ত ব্যাপারটি হচ্ছে সম্পূর্ণ লটারী ও ‘মায়সারের’ অন্তর্ভূক্ত।
২৪২। কারও কোনও জিনিস প্রয়োজনের অতিরিক্ত মজুত করা উচিত নয়। সম্পদ যতটুকু আমাদের প্রয়োজন তা ব্যবহারের অনুমতি আছে কিন্তু বাড়তি সম্পদ জনহিতকর কাজে বা দান-ধ্যানে ব্যয় করবে।
আয়াতঃ 002.220
দুনিয়া ও আখেরাতের বিষয়ে। আর তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে, এতীম সংক্রান্ত হুকুম। বলে দাও, তাদের কাজ-কর্ম সঠিকভাবে গুছিয়ে দেয়া উত্তম আর যদি তাদের ব্যয়ভার নিজের সাথে মিশিয়ে নাও, তাহলে মনে করবে তারা তোমাদের ভাই । বস্তুতঃ অমঙ্গলকামী ও মঙ্গলকামীদেরকে আল্লাহ জানেন। আল্লাহ যদি ইচ্ছা করতেন, তাহলে তোমাদের উপর জটিলতা আরোপ করতে পারতেন। নিশ্চয়ই তিনি পরাক্রমশালী, মহাপ্রজ্ঞ।
In (to) this worldly life and in the Hereafter. And they ask you concerning orphans. Say: ”The best thing is to work honestly in their property, and if you mix your affairs with theirs, then they are your brothers. And Allâh knows him who means mischief (e.g. to swallow their property) from him who means good (e.g. to save their property). And if Allâh had wished, He could have put you into difficulties. Truly, Allâh is All-Mighty, All-Wise.”
فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْيَتَامَى قُلْ إِصْلاَحٌ لَّهُمْ خَيْرٌ وَإِنْ تُخَالِطُوهُمْ فَإِخْوَانُكُمْ وَاللّهُ يَعْلَمُ الْمُفْسِدَ مِنَ الْمُصْلِحِ وَلَوْ شَاء اللّهُ لأعْنَتَكُمْ إِنَّ اللّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
Fee alddunya waal-akhirati wayas-aloonaka AAani alyatama qul islahun lahum khayrun wa-in tukhalitoohum fa-ikhwanukum waAllahu yaAAlamu almufsida mina almuslihi walaw shaa Allahu laaAAnatakum inna Allaha AAazeezun hakeemun
YUSUFALI: (Their bearings) on this life and the Hereafter. They ask thee concerning orphans. Say: “The best thing to do is what is for their good; if ye mix their affairs with yours, they are your brethren; but Allah knows the man who means mischief from the man who means good. And if Allah had wished, He could have put you into difficulties: He is indeed Exalted in Power, Wise.”
PICKTHAL: Upon the world and the Hereafter. And they question thee concerning orphans. Say: To improve their lot is best. And if ye mingle your affairs with theirs, then (they are) your brothers. Allah knoweth him who spoileth from him who improveth. Had Allah willed He could have overburdened you. Allah is Mighty, Wise.
SHAKIR: On this world and the hereafter. And they ask you concerning the orphans Say: To set right for them (their affairs) is good, and if you become co-partners with them, they are your brethren; and Allah knows the mischief-maker and the pacemaker, and if Allah had pleased, He would certainly have caused you to fall into a difficulty; surely Allah is Mighty, Wise.
KHALIFA: upon this life and the Hereafter. And they ask you about the orphans: say, “Bringing them up as righteous persons is the best you can do for them. If you mix their property with yours, you shall treat them as family members.” GOD knows the righteous and the wicked. Had GOD willed, He could have imposed harsher rules upon you. GOD is ALmighty, Most Wise.
২২০। দুনিয়া ও পরলোক সম্বন্ধে ২৪৩। লোকে তোমাকে এতিমদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে ২৪৪। বল, ‘তাদের কল্যাণের জন্য যা কর, তাই-ই উত্তম। যদি তোমরা তাদের সাথে মিলে মিশে থাক, তবে তারা তোমাদের ভাই। আল্লাহ্ জানেন, কে অনিষ্টকারী এবং কে হিতাকাঙ্ক্ষী এবং আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে তোমাদের কষ্টে ফেলতে পারতেন। অবশ্যই আল্লাহ্ ক্ষমতায় মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় ২৪৫।’
২৪৩। মাদকদ্রব্য ও জুয়া পাপ। এ পাপের জন্য শুধু যে ব্যক্তিগত ক্ষতি হয় তাই নয়, সামাজিক ভাবেও এর ক্ষতি প্রভূত। উপকারের চেয়ে অপকারিতা বেশী। তাই এ সম্বন্ধে আল্লাহ্ আমাদের চিন্তা করতে বলেছেন, ব্যক্তির জীবনে এর প্রভাব, সমাজ জীবনে এর প্রভাব এবং সর্বোপরি আধ্যাত্মিক জীবনে এর প্রভাব সম্পর্কে।
২৪৪। এতিমদের সম্পত্তি সম্পর্কে সর্বাপেক্ষা উত্তম পন্থা হচ্ছে তাদের হিসাব নিকাশ সম্পূর্ণ আলাদা রাখা। কোনও অভিভাবক যেনো এতিমের সম্পত্তির সাথে নিজের সম্পত্তি মিশ্রিত না করে ফেলে, যাতে তার মনে এতিমের সম্পত্তি থেকে ব্যক্তিগত লাভের জন্য লোভ জন্মাতে পারে। এমনকি ব্যক্তিগত লাভের জন্য এতিম মেয়েকে বিয়ে করাও উচিত নয়। অধিকন্তু আয়াত [৬:১৫২]-এ সম্বন্ধে স্পষ্ট নির্দেশ দেয়া হচ্ছে যে, অভিভাবকেরা তাদের সম্পদ এতিমের সম্পদ থেকে আলাদা রাখবে। এতিমের মাল আলাদা করার আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদের সম্পদ যেনো নষ্ট করা না হয়। আর যদি ব্যয় যৌথ রাখলে তাদের মঙ্গল হয়, তবে তাদের মঙ্গলের খেয়াল করা অতি উত্তম। অর্থাৎ এমন কিছু করা উচিত নয় যাতে এতিমের ক্ষতি হয়। অভিভাবক যদি এমন কিছু করেন যা এতিমের জন্য ক্ষতিকারক কিন্তু আইন তাকে স্পর্শ করতে পারবে না সেক্ষেত্রে আল্লাহ্কে ভয় করতে বলা হয়েছে।
২৪৫। ইসলামে আল্লাহ্র আইনকে এত কঠোর করা হয় নাই যাতে তা মানুষের কাছে দুরূহ বা ভারী মনে হয়। বরং আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমা প্রদর্শন এবং মানুষের প্রতি তার আস্থা প্রদর্শনের মাধ্যমে মানুষকে সম্মান প্রদর্শন করেছেন। আল্লাহ্র চোখে আত্মিক ও চারিত্রিক পরাকাষ্ঠাই হচ্ছে মানুষের সম্মানের চাবিকাঠি। তবু মানুষ বারে বারে এই মাপকাঠি থেকে পদস্খলিত হয়। মানুষের কাছে আল্লাহ্ এই নৈতিক দৃঢ়তা আশা করেন যেনো সে সততার ব্যাপারে [তা এতিমের সম্পত্তিই হোক বা অন্য কারও আমানত হোক] অত্যন্ত নিষ্ঠাবান ও কঠোর হতে পারে। যদি সে তা না হয়, তবে অবশ্যই তাকে আল্লাহ্র শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। ছলনা বা কূটনীতির আশ্রয় নিয়ে সে হয়তো সমাজের চোখে সম্মানীয় হতে পারবে এবং মানুষের সৃষ্ট আইনকে ফাঁকি দিতে সম্ভব হবে। কিন্তু আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, তাঁর শাস্তি অলঙ্ঘনীয়।
আয়াতঃ 002.221
আর তোমরা মুশরেক নারীদেরকে বিয়ে করোনা, যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করে। অবশ্য মুসলমান ক্রীতদাসী মুশরেক নারী অপেক্ষা উত্তম, যদিও তাদেরকে তোমাদের কাছে ভালো লাগে। এবং তোমরা (নারীরা) কোন মুশরেকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত সে ঈমান না আনে। একজন মুসলমান ক্রীতদাসও একজন মুশরেকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা দোযখের দিকে আহ্বান করে, আর আল্লাহ নিজের হুকুমের মাধ্যমে আহ্বান করেন জান্নাত ও ক্ষমার দিকে। আর তিনি মানুষকে নিজের নির্দেশ বাতলে দেন যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
And do not marry Al-Mushrikât (idolatresses, etc.) till they believe (worship Allâh Alone). And indeed a slave woman who believes is better than a (free) Mushrikah (idolatress, etc.), even though she pleases you. And give not (your daughters) in marriage to Al-Mushrikûn till they believe (in Allâh Alone) and verily, a believing slave is better than a (free) Mushrik (idolater, etc.), even though he pleases you. Those (Al-Mushrikûn) invite you to the Fire, but Allâh invites (you) to Paradise and Forgiveness by His Leave, and makes His Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.) clear to mankind that they may remember.
وَلاَ تَنكِحُواْ الْمُشْرِكَاتِ حَتَّى يُؤْمِنَّ وَلأَمَةٌ مُّؤْمِنَةٌ خَيْرٌ مِّن مُّشْرِكَةٍ وَلَوْ أَعْجَبَتْكُمْ وَلاَ تُنكِحُواْ الْمُشِرِكِينَ حَتَّى يُؤْمِنُواْ وَلَعَبْدٌ مُّؤْمِنٌ خَيْرٌ مِّن مُّشْرِكٍ وَلَوْ أَعْجَبَكُمْ أُوْلَـئِكَ يَدْعُونَ إِلَى النَّارِ وَاللّهُ يَدْعُوَ إِلَى الْجَنَّةِ وَالْمَغْفِرَةِ بِإِذْنِهِ وَيُبَيِّنُ آيَاتِهِ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ
Wala tankihoo almushrikati hatta yu/minna walaamatun mu/minatun khayrun min mushrikatin walaw aAAjabatkum wala tunkihoo almushrikeena hatta yu/minoo walaAAabdun mu/minun khayrun min mushrikin walaw aAAjabakum ola-ika yadAAoona ila alnnari waAllahu yadAAoo ila aljannati waalmaghfirati bi-ithnihi wayubayyinu ayatihi lilnnasi laAAallahum yatathakkaroona
YUSUFALI: Do not marry unbelieving women (idolaters), until they believe: A slave woman who believes is better than an unbelieving woman, even though she allures you. Nor marry (your girls) to unbelievers until they believe: A man slave who believes is better than an unbeliever, even though he allures you. Unbelievers do (but) beckon you to the Fire. But Allah beckons by His Grace to the Garden (of bliss) and forgiveness, and makes His Signs clear to mankind: That they may celebrate His praise.
PICKTHAL: Wed not idolatresses till they believe; for lo! a believing bondwoman is better than an idolatress though she please you; and give not your daughters in marriage to idolaters till they believe, for lo! a believing slave is better than an idolater though he please you. These invite unto the Fire, and Allah inviteth unto the Garden, and unto forgiveness by His grace, and expoundeth His revelations to mankind that haply they may remember.
SHAKIR: And do not marry the idolatresses until they believe, and certainly a believing maid is better than an idolatress woman, even though she should please you; and do not give (believing women) in marriage to idolaters until they believe, and certainly a believing servant is better than an idolater, even though he should please you; these invite to the fire, and Allah invites to the garden and to forgiveness by His will, and makes clear His communications to men, that they may be mindful.
KHALIFA: Do not marry idolatresses unless they believe; a believing woman is better than an idolatress, even if you like her. Nor shall you give your daughters in marriage to idolatrous men, unless they believe. A believing man is better than an idolater, even if you like him. These invite to Hell, while GOD invites to Paradise and forgiveness, as He wills. He clarifies His revelations for the people, that they may take heed.
২২১। [পৌত্তলিক] মুশরিক নারীকে ঈমান না আনা পর্যন্ত তোমরা বিয়ে করো না। মুশরিক নারী তোমাকে মুগ্ধ করলেও, ঈমানদার ক্রীতদাসী তাদের থেকে উত্তম। ঈমান না আনা পর্যন্ত মুশরিক পুরুষের সাথে [তোমার কন্যার] বিয়ে দিও না। মুশরিক পুরুষ তোমাদের মুগ্ধ করলেও একজন ঈমানদার ক্রীতদাস তাদের থেকে উত্তম ২৪৬। অবিশ্বাসীরা তো তোমাদের অগ্নির দিকে আহবান করে, কিন্তু আল্লাহ্ তাঁর নিজ অনুগ্রহে জান্নাতে ও ক্ষমার দিকে আহবান করেন। তিনি তার নিদর্শনাবলী [আয়াতসমূহ] মানুষের জন্য সুস্পষ্ট ভাবে বর্ণনা করেন যেনো তোমরা তাঁর প্রশংসা কীর্তন করতে পারো।
২৪৬। ‘বিবাহ’ হচ্ছে দাম্পত্য জীবনে প্রবেশের চাবিকাঠি। দু’জন ব্যক্তি একই বন্ধনে আবদ্ধ হয় চিন্তায়, কর্মে, প্রাত্যহিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে। বিবাহ সম্পর্ক হচ্ছে একে অপরের সম্পূরক বা ভূষণ স্বরূপ। পৃথিবীর জীবন ক্ষণস্থায়ী, পরকালের জন্য পাথেয় সংগ্রহের জন্যই এখানে আমাদের আগমণ। পৃথিবীর জীবনকে বলা হয় ‘শিক্ষানবীশকাল’ (Probationary Period) পরকালের জন্য। এই জীবনের সাফল্যই পরকালের সাফল্য। আর এ সাফল্য হচ্ছে আত্মিক, চারিত্রিক ও নৈতিক উন্নতি। পৃথিবীর এই দুস্তর, দুর্গম পথে আছে নানা প্রলোভন, একে সাফল্যের সাথে অতিক্রম করতে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের সহযোগিতার ভূমিকা পালন করে। বৈবাহিক জীবনে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক এত নিবিড় ও একান্ত যে একে অন্যের ভাবধারায় বা চিন্তাধারায় সহজেই প্রভাব বিস্তার করতে পারে। ধর্মীয় বা নৈতিক জীবনে যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ব্যবধান থাকে তবে তার প্রভাব তাদের জীবনে পড়তে বাধ্য। সুতরাং যারা পরস্পরের বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে যাচ্ছে তাদের ধর্মীয় চেতনা একই প্রকার হওয়া উচিত। যেহেতু বৈবাহিক জীবন পরস্পরের প্রতি ভালবাসা, বিশ্বাস, নির্ভরশীলতা ও একাত্মতার উপর প্রতিষ্ঠিত সেই কারণে ধর্মীয় ও নৈতিক জীবন যদি দু’জনের দু’রকম হয় তবে তাদের মধ্যে মত পার্থক্য থেকে জন্ম নেবে অবিশ্বাস ফলে বৈবাহিক জীবনের অন্যান্য গুণাবলী যথা নির্ভরশীলতা ও একাত্মতা কমে যাবে। ফলশ্রুতিতে বৈবাহিক জীবনের মূল ভিত্তি, ভালবাসার ভিত্তি হয়ে যাবে দুর্বল। যদি দু’জন দু’জনকে ভালবাসে তবে তাদের ধর্মের ভিত্তি এক হওয়া একান্ত প্রয়োজন। এখানে ধর্মের অর্থ যেনো কেউ ধর্মের লেবেল মনে না করেন। আজকে বাংলাদেশে জন্মসূত্রে মুসলমান লেবেল সর্বস্ব বহু নারী-পুরুষের সন্ধান পাওয়া যায়। এসব নারী পুরুষের মধ্যে ধর্মের ন্যূনতম মূল্যবোধও অনুপস্থিত। ইসলামের স্বরূপ ও অর্থ হচ্ছে ইসলামের আনুগত্য। এ আনুগত্যের সারমর্ম হলো রিপুর কামনা-বাসনার বিপরীতে আল্লাহ্র নির্দেশের আনুগত্য ও স্বেচ্ছাচারিতা ত্যাগ করে হেদায়েতের অনুসরণ। আজকে বাংলাদেশীদের মধ্যে অনেকের ধারণা মসজিদে গমন এবং নামায রোজার মধ্যেই ধর্ম নিহিত। এ কথা বলার কারণ হচ্ছে আজকে আমাদের সমাজের বহু লোক দেখা যায়, যারা নামায রোজার ব্যাপারে অত্যন্ত মনোযোগী ও সতর্ক। কিন্তু এদের মধ্য ইসলামী মূল্যবোধ সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। মূল্যবোধ এই অর্থে তারা আল্লাহ্ যে সব কাজ করতে নিষেধ করেছেন তা অহরহই করছেন। যেমন-ঘুষ খাচ্ছেন, জনগণের মাল (সরকারী সম্পত্তি) বে-আইনীভাবে ব্যবহার করছেন, জনগণের আমানতের খেয়ানত করছেন, জীবনের প্রতিটি পদে (কথায় ও কাজে) মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করছেন, অন্যকে ঠকাচ্ছেন ইত্যাদি। সুতরাং এদেরকে ইসলামের লেবেল ভূষিত ছাড়া আর কিছু বলা যায় না। দু’জন লোক ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হতে পারে কিন্তু তাদের মূল্যবোধ যদি একই হয় তবে তারা ধর্মের যে মূল সত্য তা অনুধাবন করতে বাধ্য। কারণ জগতে পয়গম্বরগণ যত ধর্ম এনেছেন, নিজ নিজ সময়ে সে সবই আল্লাহ্র কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল। সুতরাং সেসব ধর্মও ছিল ইসলাম যদিও সেগুলি বিভিন্ন নামে অভিহিত হত। যেমন-মুসা (আঃ) এর ধর্ম তথা ইহুদী ধর্ম, ঈসা (আঃ) এর ধর্ম তথা খৃষ্ট ধর্ম ইত্যাদি। এসব ধর্মের স্বরূপ ছিল ইসলাম, যার মর্ম হচ্ছে আল্লাহ্র হুকুমের প্রতি আনুগত্য। যেহেতু স্বামী-স্ত্রী পরস্পর পরস্পরের উপর প্রভাব বিস্তার করে সেই কারণে তাদের একই ধর্মে একই মূল্যবোধে বিশ্বাসী হওয়া একান্ত প্রয়োজন। না হলে তাদের মধ্যে বক্তিগত ও সামাজিক কোন্দল হতে বাধ্য। এখানে ধর্ম অর্থ যারা আল্লাহ্র আনুগত্যে বিশ্বাসী এবং অনুসরণকারী।
আয়াতঃ 002.222
আর তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে হায়েয (ঋতু) সম্পর্কে। বলে দাও, এটা অশুচি। কাজেই তোমরা হায়েয অবস্থায় স্ত্রীগমন থেকে বিরত থাক। তখন পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হবে না, যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়ে যায়। যখন উত্তম রূপে পরিশুদ্ধ হয়ে যাবে, তখন গমন কর তাদের কাছে, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে হুকুম দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন।
They ask you concerning menstruation. Say: that is an Adha (a harmful thing for a husband to have a sexual intercourse with his wife while she is having her menses), therefore keep away from women during menses and go not unto them till they have purified (from menses and have taken a bath). And when they have purified themselves, then go in unto them as Allâh has ordained for you (go in unto them in any manner as long as it is in their vagina). Truly, Allâh loves those who turn unto Him in repentance and loves those who purify themselves (by taking a bath and cleaning and washing thoroughly their private parts, bodies, for their prayers, etc.).
وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُواْ النِّسَاء فِي الْمَحِيضِ وَلاَ تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّىَ يَطْهُرْنَ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللّهُ إِنَّ اللّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ
Wayas-aloonaka AAani almaheedi qul huwa athan faiAAtaziloo alnnisaa fee almaheedi wala taqraboohunna hatta yathurna fa-itha tatahharna fa/toohunna min haythu amarakumu Allahu inna Allaha yuhibbu alttawwabeena wayuhibbu almutatahhireena
YUSUFALI: They ask thee concerning women’s courses. Say: They are a hurt and a pollution: So keep away from women in their courses, and do not approach them until they are clean. But when they have purified themselves, ye may approach them in any manner, time, or place ordained for you by Allah. For Allah loves those who turn to Him constantly and He loves those who keep themselves pure and clean.
PICKTHAL: They question thee (O Muhammad) concerning menstruation. Say: It is an illness, so let women alone at such times and go not in unto them till they are cleansed. And when they have purified themselves, then go in unto them as Allah hath enjoined upon you. Truly Allah loveth those who turn unto Him, and loveth those who have a care for cleanness.
SHAKIR: And they ask you about menstruation. Say: It is a discomfort; therefore keep aloof from the women during the menstrual discharge and do not go near them until they have become clean; then when they have cleansed themselves, go in to them as Allah has commanded you; surely Allah loves those who turn much (to Him), and He loves those who purify themselves.
KHALIFA: They ask you about menstruation: say, “It is harmful; you shall avoid sexual intercourse with the women during menstruation; do not approach them until they are rid of it. Once they are rid of it, you may have intercourse with them in the manner designed by GOD. GOD loves the repenters, and He loves those who are clean.”
রুকু – ২৮
২২২। লোকে তোমাকে নারীদের রজঃস্রাব সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করে। বল, ‘এই [সময়টা] হচ্ছে একটি কষ্টকর ও অপবিত্র অবস্থা ২৪৭।’ সুতরাং রজঃস্রাবকালে নারী [সঙ্গম] থেকে দূরে থাক, তারা পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটে গমন করবে না। কিন্তু যখন তারা পবিত্র হবে, তখন তোমরা আল্লাহ্ যেভাবে আদেশ দিয়েছেন সেভাবে, সে সময়ে, সে স্থানে তাদের নিকট গমন করতে পার ২৪৮। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্বদা তওবাকারীকে ভালবাসেন এবং যারা নিজেদের পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন রাখে তাদেরও ভালবাসেন।
২৪৭। ‘Azan’ অর্থ কষ্টকর, অপবিত্র। মওলানা ইউসুফ আলী মেয়েদের রজঃস্রাব সম্বন্ধে এই দুইটি অবস্থার কথাই উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ এটা মেয়েদের জন্য কষ্টকর এবং অপবিত্র অবস্থা। কিন্তু বেশীরভাগ অনুবাদক শুধুমাত্র অপবিত্রতার কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু মহান আল্লাহ্ বলেছেন বিষয়টি মেয়েদের দিক থেকে এবং পুরুষের দিক থেকেও দেখা কর্তব্য। মেয়েরা মাত্রই জানেন এই অবস্থা তাদের জন্য কতটা কষ্টদায়ক, সেটা যাতে পুরুষেরা মনে রাখেন এবং যেহেতু অবস্থাটা হচ্ছে অপবিত্র অবস্থা সে জন্য পবিত্র না হওযা পর্যন্ত সহবাস থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মানুষকে আল্লাহ্ ‘সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি’ দিয়েছেন যা পৃথিবীর অন্য কোন প্রাণীকে দান করা হয় নাই। প্রাণীরা চলে তাদের সহজাত প্রবৃত্তি দ্বারা। উদাহরণস্বরূপ দেখা যায়, বন্য প্রাণীরা কত সাবধানতায়, কত সংগ্রামের মাধ্যমে তাদের সন্তানদের বড় করে কারণ এই হচ্ছে আল্লাহ্র হুকুম। নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে যে সন্তানকে বড় করে, তারপরে একদিন তারা সে সন্তানের কথা ভুলে যায়। কারণ এই হচ্ছে তাদের উপর আল্লাহ্র হুকুম। আবার যখন সন্তান ধারণ করার সময় হয় শুধুমাত্র তখনই তারা জোড়া বাঁধে, সহবাস করে অন্য সময়ে নয়। কারণ এই-ই হচ্ছে তাদের উপর আল্লাহ্র হুকুম। তারা তা কখনও লঙ্ঘন করে না বা করার ক্ষমতা তাদের দেওয়া হয় নাই। মানুষই একমাত্র প্রাণী যাদের আল্লাহ্ সীমিত আকারে ‘স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি’ দিয়েছেন। ইচ্ছা করলে তারা আল্লাহ্র আইন ভঙ্গ করতে পারে। তাই শুধুমাত্র মানুষকেই এই ‘ইচ্ছাশক্তির’ ব্যবহার সম্বন্ধে হিসাব দাখিল করতে হবে পরকালে। পৃথিবীর আর কোনও প্রাণীকে তা করতে হবে না। মেয়েদের রজঃস্রাব সম্বন্ধে আল্লাহ্র এই বিধান পুরুষ মেনে চলবে এই আল্লাহ্র বিধান। যেনো কেউ তার স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির অপব্যবহার না করে।
২৪৮। ‘Haithu’ এই সংক্ষিপ্ত শব্দটির অর্থ আচরণ, সময় এবং স্থানকে নির্দেশ করা হচ্ছে। সহবাসের ব্যাপারে নৈতিকতা, আচরণ, সময় এবং স্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য আল্লাহ্ আমাদের জন্য সামাজিক এবং নৈতিক নীতিমালা নির্ধারিত করে দিয়েছেন। যা স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের প্রতি সহানুভূতির উপরে নির্ভরশীল এবং মহানবী (সাঃ) এর জীবনধারা থেকে আমরা যার অনুপ্রেরণা পাই। আল্লাহ্ পবিত্রতা ভালবাসেন। এই পবিত্রতার শুরু প্রথমতঃ শারীরিক পবিত্রতা থেকে যা শরীরকে পরিশুদ্ধ করে, স্বাস্থ্যকে সমৃদ্ধ করে সর্বোপরি আত্মিক উন্নতিতে সহায়ক হয়। পবিত্রতা হতে হবে শারীরিক, খাদ্য, মানসিক এবং আত্মিক।
আয়াতঃ 002.223
তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর। আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক। আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে। আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও।
Your wives are a tilth for you, so go to your tilth (have sexual relations with your wives in any manner as long as it is in the vagina and not in the anus), when or how you will, and send (good deeds, or ask Allâh to bestow upon you pious offspring) before you for your ownselves. And fear Allâh, and know that you are to meet Him (in the Hereafter), and give good tidings to the believers (O Muhammad SAW).
نِسَآؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ فَأْتُواْ حَرْثَكُمْ أَنَّى شِئْتُمْ وَقَدِّمُواْ لأَنفُسِكُمْ وَاتَّقُواْ اللّهَ وَاعْلَمُواْ أَنَّكُم مُّلاَقُوهُ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ
Nisaokum harthun lakum fa/too harthakum anna shi/tum waqaddimoo li-anfusikum waittaqoo Allaha waiAAlamoo annakum mulaqoohu wabashshiri almu/mineena
YUSUFALI: Your wives are as a tilth unto you; so approach your tilth when or how ye will; but do some good act for your souls beforehand; and fear Allah. And know that ye are to meet Him (in the Hereafter), and give (these) good tidings to those who believe.
PICKTHAL: Your women are a tilth for you (to cultivate) so go to your tilth as ye will, and send (good deeds) before you for your souls, and fear Allah, and know that ye will (one day) meet Him. Give glad tidings to believers, (O Muhammad).
SHAKIR: Your wives are a tilth for you, so go into your tilth when you like, and do good beforehand for yourselves, and be careful (of your duty) to Allah, and know that you will meet Him, and give good news to the believers.
KHALIFA: Your women are the bearers of your seed. Thus, you may enjoy this privilege however you like, so long as you maintain righteousness. You shall observe GOD, and know that you will meet Him. Give good news to the believers.
২২৩। তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের জন্য শস্যক্ষেত্র স্বরূপ ২৪৯। অতএব তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যখন যেভাবে ইচ্ছা গমন করতে পার। কিন্তু পূর্বাহ্নে তোমাদের আত্মার [কল্যাণের জন্য] কিছু সৎ কাজ করো; এবং আল্লাহ্কে ভয় করো এবং স্মরণ রেখো [পরকালে] তোমরা আল্লাহ্র সম্মুখীন হবে। যারা বিশ্বাসী তাদের [এই] সুসংবাদ দাও ২৫০।
২৪৯। ইসলামের দৃষ্টিতে যৌনজীবন অত্যন্ত পবিত্র। এই জীবন সম্বন্ধে লজ্জিত হওয়ারও কিছু নাই বা একে হালকাভাবে গ্রহণ করা উচিত নয় বা এ নিয়ে অত্যাধিক বাড়াবাড়ি করারও প্রয়োজন নাই। মানব জীবন চক্রের এ এক অপরিহার্য অংশ। এই জীবনকে আল্লাহ্ এভাবে বর্ণনা করেছেন স্ত্রীরা হচ্ছে শস্য ক্ষেত্র স্বরূপ। স্বামীরা সেই শস্য ক্ষেত্রে বীজ বপন (শুক্র) করবে এবং ফসল ঘরে তুলবে, এখানে সন্তান তার ফসলস্বরূপ। সুতরাং স্বীয় জমি যেভাবে ইচ্ছা ব্যবহার করার অনুমতি রয়েছে। অর্থাৎ কৃষিকাজে যেমন জমি চাষ করা এবং ফসল বোনার নির্দিষ্ট সময় ও নিয়ম আছে; সেইরূপ আল্লাহ্ মানুষকে বলেছেন তার সময়, সুযোগ ও ইচ্ছা অনুযায়ী তার স্ত্রীর সাথে মিলিত হবে। সে এমনভাবে তার ফসল বুনবে না যাতে তার জমির ক্ষতি হয় বা তার ফসল পরিপক্কতা লাভ করতে না পারে। এই উক্তিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অল্প বয়সে ঘন ঘন সন্তান ধারণের ফলে বহু নারীই অকালে বার্ধক্যে উপনীত হয় এবং ফলে স্বামী দ্বারা পরিত্যক্ত হয়। স্ত্রীকে বলা হচ্ছে ‘ফসলের জমি’ যা আল্লাহ্ তাকে ইচ্ছা বা বিবেক অনুযায়ী কর্ষণ করার অনুমতি দিয়েছেন, তার অপব্যবহার না করতে বলা হয়েছে। যেনো ‘ভূমি’ অর্থাৎ স্ত্রীর কোনও ক্ষতি না হয়। শুধু যে স্ত্রীর স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় তাই নয় ঘন ঘন সন্তান জন্মের ফলে তারা উপযুক্ত যত্ন পায় না, ফলে ভগ্ন স্বাস্থ্য এবং যত্নের অভাবে দেশের উপযুক্ত নাগরিকরূপে গড়ে উঠতে পারে না। সুতরাং ভুল কর্ষণ ও ভুল বপনের ফলে শুধু যে জমিরই ক্ষতি হয় তাই নয় উপযুক্ত পরিপুষ্ঠ ফসল লাভ থেকেও জমির মালিক বঞ্চিত হয়। এখানে ইচ্ছামত কর্ষণ করার অর্থ এই যে, স্বামীরা তাদের স্ত্রীদের ব্যাপারে সহানুভূতি সম্পন্ন হবে এবং নিজের বিবেক ও বুদ্ধির ব্যবহার করবে। নিজের বিবেক ও বুদ্ধির ব্যবহারকেই আল্লাহ্ বলেছেন ‘তোমাদের শস্য ক্ষেত্রে যখন যেভাবে ইচ্ছা গমন করতে পার’। অর্থাৎ বিবেকের স্বাধীনতা দেওয়া হলো। বৈবাহিক সম্পর্ক শুধুমাত্র ভোগ-উপভোগের জন্য নয়। সুন্দর শান্তিপূর্ণ জীবন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, সৎ সন্তানের জন্ম দেওয়া ও তাদের সুষ্ঠু লালন পালন এর অত্যতম উদ্দেশ্য।
[অনুবাদকের মন্তব্যঃ এই প্রসঙ্গে বলা যায় যে, সঙ্গতি না থাকলে অধিক সন্তানের জন্ম না দেওয়াই উচিত। সে হিসেবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ বৈধ হওয়া উচিত।]
খৃষ্টান ধর্মে যেমন সংসার ধর্ম পালনকে পাপ বলে মনে করে এবং চিরকুমার থাকাকে ধার্মিকতার মাপকাঠি গণনা করে, ইসলাম ধর্ম এই মতবাদে বিশ্বাস করে না।(অস্বাভাবিক জীবনযাপন মানসিক ভারসাম্যতা নষ্ট করে) ইসলাম ধর্মে পিতা-মাতার আসন সর্বোচ্চ এবং বিবাহের ফসল প্রতিটি সন্তানই হচ্ছে পবিত্র।
২৫০। আমাদের আধ্যাত্মিক জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য পরকালে মহান আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভ। যারা বিশ্বাসী, ঈমানদার, তাদের জন্য আল্লাহ্ তার সান্নিধ্যের আশ্বাস দিয়েছেন। এর থেকে বড় সুসংবাদ পরহেজগারদের জন্য আর কিছুই নাই। পৃথিবীর সব চাওয়া পাওয়া, লোভ-লালসা, হিংসা-দ্বেষ থেকে মুক্তি লাভ করার ফলে আত্মা সেই ক্ষমতা লাভ করে, যে ক্ষমতার ফলে সে মহান আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভের যোগ্যতা অর্জন করবে। পরহেজগার ব্যক্তিরা সেই দিনটির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন যখন তাদের আত্মা পরম আত্মার সাথে মিলিত হওয়ার সুযোগ পাবে। যারা পাপী তারা এই দিনটিকে ভয় পাবে। এই আয়াতটির সৌন্দর্য্য হচ্ছে মানব জীবনের ইন্দ্রিয়গত দিগটিকেও মহিমান্বিত করা হয়েছে, যুক্ত করা হয়েছে আত্মিক উন্নতির সোপান স্বরূপ।
আয়াতঃ 002.224
আর নিজেদের শপথের জন্য আল্লাহর নামকে লক্ষ্যবস্তু বানিও না মানুষের সাথে কোন আচার আচরণ থেকে পরহেযগারী থেকে এবং মানুষের মাঝে মীমাংসা করে দেয়া থেকে বেঁচে থাকার উদ্দেশ্যে। আল্লাহ সবকিছুই শুনেন ও জানেন।
And make not Allâh’s (Name) an excuse in your oaths against your doing good and acting piously, and making peace among mankind. And Allâh is All-Hearer, All-Knower (i.e. do not swear much and if you have sworn against doing something good then give an expiation for the oath and do good).
وَلاَ تَجْعَلُواْ اللّهَ عُرْضَةً لِّأَيْمَانِكُمْ أَن تَبَرُّواْ وَتَتَّقُواْ وَتُصْلِحُواْ بَيْنَ النَّاسِ وَاللّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
Wala tajAAaloo Allaha AAurdatan li-aymanikum an tabarroo watattaqoo watuslihoo bayna alnnasi waAllahu sameeAAun AAaleemun
YUSUFALI: And make not Allah’s (name) an excuse in your oaths against doing good, or acting rightly, or making peace between persons; for Allah is One Who heareth and knoweth all things.
PICKTHAL: And make not Allah, by your oaths, a hindrance to your being righteous and observing your duty unto Him and making peace among mankind. Allah is Hearer, Knower.
SHAKIR: And make not Allah because of your swearing (by Him) an obstacle to your doing good and guarding (against evil) and making peace between men, and Allah is Hearing, Knowing.
KHALIFA: Do not subject GOD’s name to your casual swearing, that you may appear righteous, pious, or to attain credibility among the people. GOD is Hearer, Knower.
২২৪। তোমরা ভালকাজে, আত্মসংযমে অথবা মানুষের মাঝে শান্তি স্থাপনের ব্যাপারে বিরত থাকার জন্য, আল্লাহ্র [নামে] শপথকে অজুহাত করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সব শোনেন এবং জানেন ২৫১।
২৫১। কুসংস্কারাচ্ছন্ন আরব সমাজে বহুবিধ নিয়মনীতি চালু ছিল যা অত্যন্ত ক্ষতিকর। সে সময়ে আরবদের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার শপথ বাক্য চালু ছিল যা তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ঘটনায় ব্যবহার করতো। এর মধ্যে কিছু ছিল দাম্পত্য জীবন সম্পর্কিত। তারা শপথ বাক্য উচ্চারণ করতো স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য, ভুল বোঝাবুঝি বা সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার উদ্দেশ্যে। এই আয়াত ও পরবর্তী তিন আয়াতে এদের সম্পর্কেই বলা হয়েছে। আয়াতে [২:২২৪] এর বক্তব্য সার্বজনীন; বলা হয়েছে সাধারণ লোকদের সম্পর্কে যারা আল্লাহ্র নামে শপথ করে সৎকর্ম, আত্মসংযম ও মানুষের মাঝে শান্তি স্থাপন থেকে বিরত থাকে। যদি এই সংকল্প হয়ে শুধুমাত্র রাগের বশে এবং তা যদি অন্তরের কথা না হয়, তবে আল্লাহ্র আশ্বাস, তিনি সর্বজ্ঞ, তিনি সব শোনেন, সব জানেন। তিনি তো চান বান্দার অন্তরের সঠিক আচরণ। বান্দার আচরণে অবাধ্যতা ও বাকচাতুর্য্য, ছলনা, আল্লাহ্র কাম্য নয়।
আয়াতঃ 002.225
তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে ধরবেন না, কিন্তু সেসব কসমের ব্যাপারে ধরবেন, তোমাদের মন যার প্রতিজ্ঞা করেছে। আর আল্লাহ হচ্ছেন ক্ষমাকারী ধৈর্য্যশীল।
Allâh will not call you to account for that which is unintentional in your oaths, but He will call you to account for that which your hearts have earned. And Allâh is Oft-Forgiving, Most-Forbearing.
لاَّ يُؤَاخِذُكُمُ اللّهُ بِاللَّغْوِ فِيَ أَيْمَانِكُمْ وَلَكِن يُؤَاخِذُكُم بِمَا كَسَبَتْ قُلُوبُكُمْ وَاللّهُ غَفُورٌ حَلِيمٌ
La yu-akhithukumu Allahu biallaghwi fee aymanikum walakin yu-akhithukum bima kasabat quloobukum waAllahu ghafoorun haleemun
YUSUFALI: Allah will not call you to account for thoughtlessness in your oaths, but for the intention in your hearts; and He is Oft-forgiving, Most Forbearing.
PICKTHAL: Allah will not take you to task for that which is unintentional in your oaths. But He will take you to task for that which your hearts have garnered. Allah is Forgiving, Clement.
SHAKIR: Allah does not call you to account for what is vain in your oaths, but He will call you to account for what your hearts have earned, and Allah is Forgiving, Forbearing.
KHALIFA: GOD does not hold you responsible for the mere utterance of oaths; He holds you responsible for your innermost intentions. GOD is Forgiver, Clement.
২২৫। তোমাদের অর্থহীন শপথের জন্য আল্লাহ্ তোমাদের দায়ী করবেন না। কিন্তু তোমাদের অন্তরের সংকল্পের [নিয়তের] জন্য [দায়ী করবেন] ২৫২। এবং তিনি বারে বারে ক্ষমাশীল ও ধৈর্য্যশীল।
২৫২। এখানে বলা হয়েছে, যে শপথের পিছনে কোন উদ্দেশ্য নাই; রাগ, অভিমান বা আবেগ দ্বারা পরিচালিত কোনও শপথের জন্য আল্লাহ্ বান্দাকে দায়ী করবেন না। আল্লাহ্ বান্দাকে তার নিয়ত দ্বারা বিচার করবেন। যদি শপথ হয় তার অন্তরের ইচ্ছা তবেই আল্লাহ্র কাছে তা বিচার্য্য। উদ্দেশ্যবিহীন শপথের জন্য প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ কিছু দান করা প্রয়োজন।
আয়াতঃ 002.226
যারা নিজেদের স্ত্রীদের নিকট গমন করবেনা বলে কসম খেয়ে বসে তাদের জন্য চার মাসের অবকাশ রয়েছে অতঃপর যদি পারস্পরিক মিল-মিশ করে নেয়, তবে আল্লাহ ক্ষামাকারী দয়ালু।
Those who take an oath not to have sexual relation with their wives must wait four months, then if they return (change their idea in this period), verily, Allâh is Oft-Forgiving, Most Merciful.
لِّلَّذِينَ يُؤْلُونَ مِن نِّسَآئِهِمْ تَرَبُّصُ أَرْبَعَةِ أَشْهُرٍ فَإِنْ فَآؤُوا فَإِنَّ اللّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
Lillatheena yu/loona min nisa-ihim tarabbusu arbaAAati ashhurin fa-in faoo fa-inna Allaha ghafoorun raheemun
YUSUFALI: For those who take an oath for abstention from their wives, a waiting for four months is ordained; if then they return, Allah is Oft-forgiving, Most Merciful.
PICKTHAL: Those who forswear their wives must wait four months; then, if they change their mind, lo! Allah is Forgiving, Merciful.
SHAKIR: Those who swear that they will not go in to their wives should wait four months; so if they go back, then Allah is surely Forgiving, Merciful.
KHALIFA: Those who intend to divorce their wives shall wait four months (cooling off); if they change their minds and reconcile, then GOD is Forgiver, Merciful.
২২৬। যারা স্ত্রীর সাথে মিলিত না হওয়ার জন্য শপথ করে, তারা চার মাস অপেক্ষা করবে। অতঃপর যদি তারা ফিরে আসে, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
২২৭। কিন্তু যদি তারা তালাকের ব্যাপারে দৃঢ় মনোভাব সম্পন্ন হয়, তবে আল্লাহ্ সব শোনেন এবং সব জানেন ২৫৩।
২৫৩। আয়াত [২:২২৫, ২২৬, ২২৭] তিনটি আয়াত [২:২২৪] এর সাথে এক সঙ্গে পাঠ করা প্রয়োজন। যদিও আয়াত [২:২২৪] এর বক্তব্য সার্বজনীন তবুও এর সাথে পরের তিনটি আয়াতকে সম্পর্কযুক্ত করা হয়েছে।
সেই অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগে আরবেরা মেয়েদের উপর বিভিন্নভাবে অত্যাচার করতো। এর একটা অন্যতম উপায় ছিল বিয়ের মাধ্যমে, যা ইসলাম রহিত করে। ইসলাম পূর্ব আরবের লোকেরা রাগের বশে বা খেয়াল খুশীমত আল্লাহ্র নামে শপথ করে বলতো যে তারা তাদের স্ত্রীদের নিকট গমন করবে না। এর ফলে মহিলাদের কোনও দাম্পত্য জীবন থাকতো না, কিন্তু তাকে অন্য কোথাও বিয়ে করার অধিকারও দেওয়া হতো না। ফলে মেয়েটির জীবন নষ্ট হয়ে যেতো। এর কেউ প্রতিবাদ করলে বলা হতো যে এটা আল্লাহ্র নামে শপথ। সুতরাং এটা মানতে বাধ্য। ইসলামের বিধান হচ্ছে যদি ঐ শপথ ক্রোধের বশবর্তী হয়ে বা হঠাৎ খেয়ালের বশে করা হয়, কিন্তু সত্যিকারের নিয়ত না হয়; তবে সেই উদ্দেশ্যবিহীন শপথের কোনও মূল্য নাই আল্লাহ্র কাছে। উদ্দেশ্য বিহীন শপথের জন্য কোনও মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যাওয়া ইসলাম অনুমোদন করে না। শপথ হতে হবে আন্তরিক যা সে সত্যিকারভাবে করতে চায় বা বিশ্বাস করে। আল্লাহ্ বিচার করবেন নিয়ত দ্বারা, চিন্তাবিহীন, উদ্দেশ্যবিহীন শপথ দ্বারা নয়। যদি কেউ সত্যিকারভাবে স্ত্রীর সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক ছেদ করতে চায়, তবে ইসলামের মতে তাকে চার মাস কাল অপেক্ষা করতে হবে। এর মধ্যে যদি তারা পরস্পর মিলিত হতে চায় তবে তা গ্রহণযোগ্য। চার মাস অপেক্ষার পরেও যদি মতের পরিবর্তন না হয় তবে তা তালাক হয়ে যাবে।
আমাদের দেশে গ্রামে কোথাও কোথাও এখনও রাগের বশবর্তী হয়ে তালাক উচ্চারণ করলেই মোল্লাদের বিচারে তা তালাক হয়ে যায়। স্বামী বা স্ত্রীকে এই চার মাসের সুযোগ দেওয়া হয় না বা আল্লাহ্ বলেছেন উদ্দেশ্য বিহীন নিয়তহীন অন্তরের শপথ আল্লাহ্র কাছে গ্রহণযোগ্য নয় আয়াত [২:২২৪] কোরআনের এই আদেশকে তারা লঙ্ঘন করে ধর্মের নামে।
আয়াতঃ 002.227
আর যদি বর্জন করার সংকল্প করে নেয়, তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ শ্রবণকারী ও জ্ঞানী।
And if they decide upon divorce, then Allâh is All-Hearer, All-Knower.
وَإِنْ عَزَمُواْ الطَّلاَقَ فَإِنَّ اللّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
Wa-in AAazamoo alttalaqa fa-inna Allaha sameeAAun AAaleemun
YUSUFALI: But if their intention is firm for divorce, Allah heareth and knoweth all things.
PICKTHAL: And if they decide upon divorce (let them remember that) Allah is Hearer, Knower.
SHAKIR: And if they have resolved on a divorce, then Allah is surely Hearing, Knowing.
KHALIFA: If they go through with the divorce, then GOD is Hearer, Knower.
২২৬। যারা স্ত্রীর সাথে মিলিত না হওয়ার জন্য শপথ করে, তারা চার মাস অপেক্ষা করবে। অতঃপর যদি তারা ফিরে আসে, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
২২৭। কিন্তু যদি তারা তালাকের ব্যাপারে দৃঢ় মনোভাব সম্পন্ন হয়, তবে আল্লাহ্ সব শোনেন এবং সব জানেন ২৫৩।
২৫৩। আয়াত [২:২২৫, ২২৬, ২২৭] তিনটি আয়াত [২:২২৪] এর সাথে এক সঙ্গে পাঠ করা প্রয়োজন। যদিও আয়াত [২:২২৪] এর বক্তব্য সার্বজনীন তবুও এর সাথে পরের তিনটি আয়াতকে সম্পর্কযুক্ত করা হয়েছে।
সেই অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগে আরবেরা মেয়েদের উপর বিভিন্নভাবে অত্যাচার করতো। এর একটা অন্যতম উপায় ছিল বিয়ের মাধ্যমে, যা ইসলাম রহিত করে। ইসলাম পূর্ব আরবের লোকেরা রাগের বশে বা খেয়াল খুশীমত আল্লাহ্র নামে শপথ করে বলতো যে তারা তাদের স্ত্রীদের নিকট গমন করবে না। এর ফলে মহিলাদের কোনও দাম্পত্য জীবন থাকতো না, কিন্তু তাকে অন্য কোথাও বিয়ে করার অধিকারও দেওয়া হতো না। ফলে মেয়েটির জীবন নষ্ট হয়ে যেতো। এর কেউ প্রতিবাদ করলে বলা হতো যে এটা আল্লাহ্র নামে শপথ। সুতরাং এটা মানতে বাধ্য। ইসলামের বিধান হচ্ছে যদি ঐ শপথ ক্রোধের বশবর্তী হয়ে বা হঠাৎ খেয়ালের বশে করা হয়, কিন্তু সত্যিকারের নিয়ত না হয়; তবে সেই উদ্দেশ্যবিহীন শপথের কোনও মূল্য নাই আল্লাহ্র কাছে। উদ্দেশ্য বিহীন শপথের জন্য কোনও মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যাওয়া ইসলাম অনুমোদন করে না। শপথ হতে হবে আন্তরিক যা সে সত্যিকারভাবে করতে চায় বা বিশ্বাস করে। আল্লাহ্ বিচার করবেন নিয়ত দ্বারা, চিন্তাবিহীন, উদ্দেশ্যবিহীন শপথ দ্বারা নয়। যদি কেউ সত্যিকারভাবে স্ত্রীর সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক ছেদ করতে চায়, তবে ইসলামের মতে তাকে চার মাস কাল অপেক্ষা করতে হবে। এর মধ্যে যদি তারা পরস্পর মিলিত হতে চায় তবে তা গ্রহণযোগ্য। চার মাস অপেক্ষার পরেও যদি মতের পরিবর্তন না হয় তবে তা তালাক হয়ে যাবে।
আমাদের দেশে গ্রামে কোথাও কোথাও এখনও রাগের বশবর্তী হয়ে তালাক উচ্চারণ করলেই মোল্লাদের বিচারে তা তালাক হয়ে যায়। স্বামী বা স্ত্রীকে এই চার মাসের সুযোগ দেওয়া হয় না বা আল্লাহ্ বলেছেন উদ্দেশ্য বিহীন নিয়তহীন অন্তরের শপথ আল্লাহ্র কাছে গ্রহণযোগ্য নয় আয়াত [২:২২৪] কোরআনের এই আদেশকে তারা লঙ্ঘন করে ধর্মের নামে।
আয়াতঃ 002.228
আর তালাকপ্রাপ্তা নারী নিজেকে অপেক্ষায় রাখবে তিন হায়েয পর্যন্ত। আর যদি সে আল্লাহর প্রতি এবং আখেরাত দিবসের উপর ঈমানদার হয়ে থাকে, তাহলে আল্লাহ যা তার জরায়ুতে সৃষ্টি করেছেন তা লুকিয়ে রাখা জায়েজ নয়। আর যদি সদ্ভাব রেখে চলতে চায়, তাহলে তাদেরকে ফিরিয়ে নেবার অধিকার তাদের স্বামীরা সংরক্ষণ করে। আর পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের উপর অধিকার রয়েছে, তেমনি ভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েছে পুরুষদের উপর নিয়ম অনুযায়ী। আর নারীরদের ওপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। আর আল্লাহ হচ্ছে পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ।
And divorced women shall wait (as regards their marriage) for three menstrual periods, and it is not lawful for them to conceal what Allâh has created in their wombs, if they believe in Allâh and the Last Day. And their husbands have the better right to take them back in that period, if they wish for reconciliation. And they (women) have rights (over their husbands as regards living expenses, etc.) similar (to those of their husbands) over them (as regards obedience and respect, etc.) to what is reasonable, but men have a degree (of responsibility) over them. And Allâh is All-Mighty, All-Wise.
وَالْمُطَلَّقَاتُ يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ ثَلاَثَةَ قُرُوَءٍ وَلاَ يَحِلُّ لَهُنَّ أَن يَكْتُمْنَ مَا خَلَقَ اللّهُ فِي أَرْحَامِهِنَّ إِن كُنَّ يُؤْمِنَّ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَبُعُولَتُهُنَّ أَحَقُّ بِرَدِّهِنَّ فِي ذَلِكَ إِنْ أَرَادُواْ إِصْلاَحًا وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ وَلِلرِّجَالِ عَلَيْهِنَّ دَرَجَةٌ وَاللّهُ عَزِيزٌ حَكُيمٌ
Waalmutallaqatu yatarabbasna bi-anfusihinna thalathata quroo-in wala yahillu lahunna an yaktumna ma khalaqa Allahu fee arhamihinna in kunna yu/minna biAllahi waalyawmi al-akhiri wabuAAoolatuhunna ahaqqu biraddihinna fee thalika in aradoo islahan walahunna mithlu allathee AAalayhinna bialmaAAroofi walilrrijali AAalayhinna darajatun waAllahu AAazeezun hakeemun
YUSUFALI: Divorced women shall wait concerning themselves for three monthly periods. Nor is it lawful for them to hide what Allah Hath created in their wombs, if they have faith in Allah and the Last Day. And their husbands have the better right to take them back in that period, if they wish for reconciliation. And women shall have rights similar to the rights against them, according to what is equitable; but men have a degree (of advantage) over them. And Allah is Exalted in Power, Wise.
PICKTHAL: Women who are divorced shall wait, keeping themselves apart, three (monthly) courses. And it is not lawful for them that they should conceal that which Allah hath created in their wombs if they are believers in Allah and the Last Day. And their husbands would do better to take them back in that case if they desire a reconciliation. And they (women) have rights similar to those (of men) over them in kindness, and men are a degree above them. Allah is Mighty, Wise.
SHAKIR: And the divorced women should keep themselves in waiting for three courses; and it is not lawful for them that they should conceal what Allah has created in their wombs, if they believe in Allah and the last day; and their husbands have a better right to take them back in the meanwhile if they wish for reconciliation; and they have rights similar to those against them in a just manner, and the men are a degree above them, and Allah is Mighty, Wise.
KHALIFA: The divorced women shall wait three menstruations (before marrying another man). It is not lawful for them to conceal what GOD creates in their wombs, if they believe in GOD and the Last Day. (In case of pregnancy,) the husband’s wishes shall supersede the wife’s wishes, if he wants to remarry her. The women have rights, as well as obligations, equitably. Thus, the man’s wishes prevail (in case of pregnancy). GOD is Almighty, Most Wise.
২২৮। তালাকপ্রাপ্ত নারীরা তাদের জন্য তিন রজঃস্রাব কাল অপেক্ষা করবে। যদি তাদের আল্লাহ্র প্রতি এবং শেষ বিচার দিনের প্রতি বিশ্বাস থাকে, তবে তাদের গর্ভাশয়ে আল্লাহ্ যা সৃষ্টি করেছেন তা গোপন রাখা তাদের জন্য বৈধ নয়। যদি তারা আপোষ নিষ্পত্তি করতে চায়, তবে তাদের পুনঃগ্রহণ করার ব্যাপারে তাদের স্বামীদের অধিকার অগ্রগণ্য ২৫৪। নারীদের তেমনি ন্যায়সঙ্গত অধিকার আছে যেমন আছে তাদের উপরে [পুরুষদের]। কিন্তু নারীদের উপরে পুরুষদের কিছুটা [প্রাধান্য] আছে ২৫৫। আল্লাহ্ ক্ষমায় মহাপরাক্রমশালী এবং প্রজ্ঞাময়।
২৫৪। ইসলামের চোখে ‘তালাক’ ঘৃণ্য। ইসলাম চেষ্টা করে যতদূর সম্ভব বিবাহ বন্ধনকে অটুট রাখতে। কারণ বিবাহ-বন্ধন ছিন্ন হলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয় সন্তানেরা। তাই ইসলামের চোখে তালাক কাম্য নয়। ইসলাম হচ্ছে সাম্যের ধর্ম। নারী-পুরুষের সমতায় ইসলাম বিশ্বাসী। তাই দাম্পত্য জীবনের সম্পর্কের যদি চির ধরে, যদি দাম্পত্য সম্পর্কের মধ্যে ভালবাসার অভাব, অপমান, হীনমন্যতা প্রবেশ করে তবে তালাকের ব্যাপারে নারী-পুরুষের সম-অধিকার ‘নারীদের তেমনি ন্যায়সঙ্গত অধিকার আছে, যেমন আছে তাহাদের উপর পুরুষদের।’ কিন্তু এই ব্যাপারটি যাতে আবেগ তাড়িত না হয়ে যায়, তাড়াহুড়ো না হয় সেজন্য সমঝোতার দ্বার উন্মুক্ত রাখা হয়েছে অনেক ভাবে। আয়াতে [২:২২৮] বলা হয়েছে এবং [২:২২৬, ২২৭] আয়াতে বলা হয়েছে তালাক হয়ে যাওয়ার পরও মহিলাদের জন্য রয়েছে তিনমাস ‘ইদ্দত কাল’। এই ইদ্দত কাল স্বামী-স্ত্রীর যদি সমঝোতা হয় তবে বিবাহ বন্ধন অটুট থাকে।
এই আয়াতের বৈশিষ্ট্য এই যে, এই আয়াতে নারী-পুরুষের সম-অধিকারের কথাটি পরিস্কারভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। যারা বলে ইসলামে নারী ও পুরুষের সম-অধিকার নাই তাদের জন্য এই আয়াতটি একটি প্রামাণ্য দলিল।
২৫৫। ‘কিন্তু নারীদের উপর পুরুষদের কিছুটা প্রাধান্য আছে’ সমাজের পুরুষ, পরিবার পরিজনদের রুটি-রুজীর অর্জনের জন্য দাবীদার। আরবের সেই অন্ধকারময় যুগে যখন নারীদের পণ্য হিসেবে গণ্য করা হতো, তখন ইসলাম নারীদের জন্য সম-অধিকারের দলিল নিয়ে আবির্ভূত হয়। সে যুগে মেয়েরা অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বাধীন ছিল না। যেহেতু পুরুষ পরিবারের ভরণ-পোষণ, অর্থ উপার্জনের জন্য দায়ী সেই কারণে পুরুষদের মেয়েদের অপেক্ষা সামান্য অধিক মর্যাদা দান করা হয়েছে। আয়াত [৪:৩৪] এ এই কথাই বলা হয়েছে যে, পুরুষ তার পরিবারের জন্য ধন-সম্পদ ব্যয় করে সেই কারণে তাকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে। অন্যথায় আধ্যাত্মিক জীবনে ও দাম্পত্য জীবনে পুরুষ নারীর অধিকার সমান।
[অনুবাদকের মন্তব্যঃ আজকের যুগে নারীরা যেখানে সমভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছে সেখানে মর্যাদার দিক থেকে নারীরা পুরুষের সমকক্ষ। কারণ আল্লাহ্ অর্থনৈতিক কারণেই পুরুষদের মেয়েদের থেকে অধিক মর্যাদা সম্পন্ন করেছেন। আধ্যাত্মিক কারণে নয়। আধ্যাত্মিক জগতে পাপ-পূণ্যের হিসাব নিকাশের ক্ষেত্রে পরকালে আল্লাহ্র পুরস্কার ও শাস্তির ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীকে সমভাবে বিচার করা হবে। যার যার কর্মফল অনুযায়ী তাকে পুরস্কৃত ও শাস্তি দান করা হবে। যে মর্যাদা সম্পন্ন তার পুরস্কার বেশি ও শাস্তি কম, পরকালের জন্য এই বিধান নাই। আয়াত [৩:১৯৫] এ বলা হয়েছে, ‘কখনোই আমি তোমাদের কোনও একজনের কাজকেও বিনষ্ট হতে দেব না, তা সে নারীই হোক আর পুরুষই হোক। তোমরা তো সমগোত্রীয় লোক।’ আবার আয়াত [৯:৭১] এ বলা হয়েছে ‘মুমিন নারী ও পুরুষেরা একে অপরের সংরক্ষক ও সাহায্যকারী, তারা ন্যায়ের আদেশ করে ও অন্যায়ের বাধা প্রদান করে। তারা নামাজ কায়েম করে, যাকাত আদায় করে এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূরের আনুগত্য করে। তাদেরই উপর আল্লাহ্ রহমত বর্ষণ করবেন। আর আল্লাহ্তো ক্ষমতা ও প্রজ্ঞায় এক সত্ত্বা।’ সুতরাং ইসলামের নারীর সম অধিকার স্বীকৃত। যে মর্যাদার জন্য পুরুষ দাবীদার তা হচ্ছে তারা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অংশীদার এবং শারীরিক দিক থেকেও তারা শক্তিশালী। সুতরাং আজকের বিংশ শতাব্দীতে মেয়েরা যেখানে সমভাবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশীদার সেখানে মর্যাদার প্রশ্নটি নূতনভাবে মূল্যায়নের দাবীদার বৈকি। কারণ ইসলাম নারী ও পুরুষের সম-অধিকারে বিশ্বাসী। ইসলামের দৃষ্টিতে মুসলমানেরা দৈহিক, আধ্যাত্মিক ও মানসিকভাবে কেউ কারো তুলনায় নিকৃষ্টতর নয়; যদিও কোন কোন বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে একজন নারী বা পুরুষের কিছু কিছু দক্ষতা বা দূর্বলতা থাকতে পারে। কিন্তু মুসলমান হিসাবে ইসলামী সংগ্রামে তারা সমান অংশীদার।]
আয়াতঃ 002.229
তালাকে-‘রাজঈ’ হ’ল দুবার পর্যন্ত তারপর হয় নিয়মানুযায়ী রাখবে, না হয় সহৃদয়তার সঙ্গে বর্জন করবে। আর নিজের দেয়া সম্পদ থেকে কিছু ফিরিয়ে নেয়া তোমাদের জন্য জায়েয নয় তাদের কাছ থেকে। কিন্তু যে ক্ষেত্রে স্বামী ও স্ত্রী উভয়েই এ ব্যাপারে ভয় করে যে, তারা আল্লাহর নির্দেশ বজায় রাখতে পারবে না, অতঃপর যদি তোমাদের ভয় হয় যে, তারা উভয়েই আল্লাহর নির্দেশ বজায় রাখতে পারবে না, তাহলে সেক্ষেত্রে স্ত্রী যদি বিনিময় দিয়ে অব্যাহতি নিয়ে নেয়, তবে উভয়ের মধ্যে কারোরই কোন পাপ নেই। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা। কাজেই একে অতিক্রম করো না। বস্তুতঃ যারা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন করবে, তারাই জালেম।
The divorce is twice, after that, either you retain her on reasonable terms or release her with kindness. And it is not lawful for you (men) to take back (from your wives) any of your Mahr (bridal money given by the husband to his wife at the time of marriage) which you have given them, except when both parties fear that they would be unable to keep the limits ordained by Allâh (e.g. to deal with each other on a fair basis). Then if you fear that they would not be able to keep the limits ordained by Allâh, then there is no sin on either of them if she gives back (the Mahr or a part of it) for her Al-Khul’ (divorce). These are the limits ordained by Allâh, so do not transgress them. And whoever transgresses the limits ordained by Allâh, then such are the Zâlimûn (wrong-doers, etc.).
الطَّلاَقُ مَرَّتَانِ فَإِمْسَاكٌ بِمَعْرُوفٍ أَوْ تَسْرِيحٌ بِإِحْسَانٍ وَلاَ يَحِلُّ لَكُمْ أَن تَأْخُذُواْ مِمَّا آتَيْتُمُوهُنَّ شَيْئًا إِلاَّ أَن يَخَافَا أَلاَّ يُقِيمَا حُدُودَ اللّهِ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلاَّ يُقِيمَا حُدُودَ اللّهِ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِمَا فِيمَا افْتَدَتْ بِهِ تِلْكَ حُدُودُ اللّهِ فَلاَ تَعْتَدُوهَا وَمَن يَتَعَدَّ حُدُودَ اللّهِ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ
Alttalaqu marratani fa-imsakun bimaAAroofin aw tasreehun bi-ihsanin wala yahillu lakum an ta/khuthoo mimma ataytumoohunna shay-an illa an yakhafa alla yuqeema hudooda Allahi fa-in khiftum alla yuqeema hudooda Allahi fala junaha AAalayhima feema iftadat bihi tilka hudoodu Allahi fala taAAtadooha waman yataAAadda hudooda Allahi faola-ika humu alththalimoona
YUSUFALI: A divorce is only permissible twice: after that, the parties should either hold Together on equitable terms, or separate with kindness. It is not lawful for you, (Men), to take back any of your gifts (from your wives), except when both parties fear that they would be unable to keep the limits ordained by Allah. If ye (judges) do indeed fear that they would be unable to keep the limits ordained by Allah, there is no blame on either of them if she give something for her freedom. These are the limits ordained by Allah; so do not transgress them if any do transgress the limits ordained by Allah, such persons wrong (Themselves as well as others).
PICKTHAL: Divorce must be pronounced twice and then (a woman) must be retained in honour or released in kindness. And it is not lawful for you that ye take from women aught of that which ye have given them; except (in the case) when both fear that they may not be able to keep within the limits (imposed by) Allah. And if ye fear that they may not be able to keep the limits of Allah, in that case it is no sin for either of them if the woman ransom herself. These are the limits (imposed by) Allah. Transgress them not. For whoso transgresseth Allah’s limits: such are wrong-doers.
SHAKIR: Divorce may be (pronounced) twice, then keep (them) in good fellowship or let (them) go with kindness; and it is not lawful for you to take any part of what you have given them, unless both fear that they cannot keep within the limits of Allah; then if you fear that they cannot keep within the limits of Allah, there is no blame on them for what she gives up to become free thereby. These are the limits of Allah, so do not exceed them and whoever exceeds the limits of Allah these it is that are the unjust.
KHALIFA: Divorce may be retracted twice. The divorced woman shall be allowed to live in the same home amicably, or leave it amicably. It is not lawful for the husband to take back anything he had given her. However, the couple may fear that they may transgress GOD’s law. If there is fear that they may transgress GOD’s law, they commit no error if the wife willingly gives back whatever she chooses. These are GOD’s laws; do not transgress them. Those who transgress GOD’s laws are the unjust.
রুকু – ২৯
২২৯। তালাক শুধুমাত্র দুইবার অনুমোদনযোগ্য ২৫৬। এরপরে তারা হয় ন্যায়সঙ্গত চুক্তিতে একত্রে থাকবে অথবা সদয়ভাবে আলাদা হয়ে যাবে ২৫৭। তোমরা [স্ত্রীদের] যে উপহার প্রদান করেছ, তা থেকে কোন কিছু ফেরৎ নেয়া তোমাদের জন্য বৈধ নয়; অবশ্য ব্যতিক্রম যদি উভয়পক্ষ আশঙ্কা করে যে, তোমরা আল্লাহ্ প্রদত্ত সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে না ২৫৮। যদি তোমরা [মীমাংসাকারীরা] সত্যিই আশঙ্কা কর যে তারা আল্লাহ্ প্রদত্ত সীমারেখা রক্ষা করতে পারবে না সেক্ষেত্রে স্ত্রী কোন কিছুর বিনিময়ে মুক্তি চাইলে তাতে তাদের কোন অপরাধ নাই। এগুলি আল্লাহ্ প্রদত্ত সীমারেখা। সুতরাং এগুলির সীমালঙ্ঘন করো না। যে এসব আল্লাহ্ প্রদত্ত সীমারেখা লঙ্ঘন করে তারাই পাপ করে [নিজেদের প্রতি এবং অন্যদের প্রতিও] ২৫৯।
২৫৬। যদি স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্য এমন পর্যায়ে পরিণত হয় যে একসাথে বসবাস করা অসম্ভব সেক্ষেত্রে তালাক বা বিচ্ছেদ যুক্তিযুক্ত। কিন্তু অনেক সময়ে দেখা যায় আবেগ তাড়িত হয়ে বা ক্রোধের বশবর্তী হয়ে, স্বামী-স্ত্রী আলাদা হয়ে গেলো কিন্তু পরবর্তীতে অনুতপ্ত হয়ে আবার একত্রে তারা সংসার ধর্ম পালন করতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলো। এরকম ক্ষেত্রে দুবার এরকম করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে হঠকারিতার মাধ্যমে যেনো কোন বিবাহ বিচ্ছেদ না হয়। ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহ হচ্ছে একটি পবিত্র অঙ্গীকার। সুতরাং বিবাহ-বিচ্ছেদ যাতে হঠকারিতা বা ক্রোধের বশবর্তী হয়ে না হয় সেই কারণেই এত সাবধানতা। দুবার আলাদা থাকা এবং পুনরায় মিলনের পরে অবশ্যই দুপক্ষ ন্যায় সঙ্গত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সক্ষম হবে যে, তাদের পক্ষে এক সঙ্গে থাকা সম্ভব কি না। তৃতীয় বারে তারা অবশ্যই মনস্থির করবে হয় তারা সম্মানজনকভাবে বিবাহ বিচ্ছেদ করবে নয়তো এক সাথে সুখী দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করবে। তালাক প্রত্যাহারের অধিকার শুধু এক বা দুই তালাক পর্যন্ত সীমাবদ্ধ, যাতে কোন অত্যাচারী স্বামী এমন করতে না পারে যে, কথায় কথায় তালাক দেবে এবং তা প্রত্যাহার করে পুনরায় স্বীয় বন্ধনে আবদ্ধ করে রাখবে। দুই তালাকের মধ্যে শর্ত রাখা হেয়ছে যে এতে বিবাহ বন্ধন ছিন্ন হয়ে যায় না বরং ইদ্দত শেষ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তালাক প্রত্যাহার করে স্ত্রীকে স্বীয় বিবাহ বন্ধনে ফিরিয়ে আনার ক্ষমতা স্বামীর থাকে। বস্তুতঃ ইদ্দত শেষ হয়ে যাওয়া পর্যন্ত যদি তালাক প্রত্যাহার করা না হয়, তবেই বিবাহ বন্ধন ছিন্ন হয়। এই দুই তালাক হতে হবে পৃথক পৃথকভাবে, সময়ের ব্যবধানে।
২৫৭। যদি বিবাহ-বিচ্ছেদ বা তালাক অপরিহার্য হয়ে পড়ে, তবে ইসলামের বিধান হচ্ছে তা যেনো কাদা ছোঁড়াছুড়ির পর্যায়ে চলে না যায়। বিচ্ছেদ হবে সম্মানজনকভাবে, পরস্পরের সমঝোতার মাধ্যমে। ইসলামে বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম শর্ত হচ্ছে স্ত্রীকে দেয়া উপহার সামগ্রী ও দেন মোহরানা বা সম্পত্তি যা সে তার স্ত্রীকে দান করেছিল তা সে ফেরত নিতে পারবে না। নারীদের অর্থনৈতিকভাবে রক্ষা করার এই সনদ একমাত্র ইসলামই দেয়।
[অনুবাদকের মন্তব্যঃ আজকের বাংলাদেশে ৫০% উপরে জনসংখ্যা দারিদ্র সীমার নিচে বাস করে। এদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের হার অত্যন্ত বেশী। এদের পুরুষেরা বিবাহের সময়ে যৌতুক গ্রহণ করে যা ইসলাম বিরোধী এবং বিচ্ছেদের সময়ে সন্তানসহ স্ত্রীদের ত্যাগ করে এবং কোন রকম মোহরানা শোধ করা ব্যতীত তারা এই কাজ করে। এরা সমাজে নিন্দনীয় নয়। এও কুরআনের হুকুমের বরখেলাপ বা ইসলামের দৃষ্টিতে বেআইনী। যেখানে ইসলাম নারীদের অধিকার রক্ষায় এত সচেতন, সেখানে কুরআনের আইন বহির্ভূতভাবে নারীদের তাদের মোহরানার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।]
২৫৮। তালাক সম্পর্কে যত আইন-কানুন করা হয়েছে তা দু’পক্ষেরই মঙ্গলের জন্য যাতে তারা সমাজে সুস্থ ও সুন্দর জীবন যাপন করতে পারে। তালাক হচ্ছে একটি পবিত্র বন্ধনকে ছিন্ন করা। আর সৎ লোকের কর্ম পদ্ধতি হচ্ছে এই যে, কোন কাজ বা চুক্তি হলে তারা উত্তম পন্থায় করে থাকেন। এমনিভাবে যদি বিবাহ-বন্ধনও ছিন্ন করার পর্যায়ে এসে যায় তবে তা রাগান্বিত হয়ে বা ঝগড়া-বিবাদের মাধ্যমে করা উচিত নয়। ন্যায় ও ভদ্রতার সাথেই তা করা উচিত। এই-ই হচ্ছে ইসলামের বিধান। এই আয়াতে স্ত্রী জাতিকেও এ অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়নি। স্বামীর যুলুম অত্যাচার হতে আত্মরক্ষা করার ব্যবস্থা তাদের জন্যও রয়েছে। তারা কাজীর দরবারে নিজেদের অসুবিধার বিষয় উপস্থাপন করে স্বামীর দোষ প্রমাণ করে বিবাহ-বিচ্ছেদ করিয়ে নিতে পারে। এরকম ক্ষেত্রে বিচারকের সিন্ধান্ত অনুযায়ী স্বামী স্ত্রীর নিকট থেকে আর্থিক সুবিধা পেতে পারে [দেনমোহরানা মাপ করে দেওয়া] এরকম তালাককে ‘খুলা’ তালাক বলে।
২৫৯। ‘জুলুম’ করে [নিজেদের প্রতি এবং অন্যদের প্রতি]। ‘জালিমুন’ এর মূল অর্থের জন্য দেখুন সূরা ২, আয়াত ৩৫, টিকা ৫১।
আয়াতঃ 002.230
তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কতৃêক নির্ধারিত সীমা; যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়।
And if he has divorced her (the third time), then she is not lawful unto him thereafter until she has married another husband. Then, if the other husband divorces her, it is no sin on both of them that they reunite, provided they feel that they can keep the limits ordained by Allâh. These are the limits of Allâh, which He makes plain for the people who have knowledge.
فَإِن طَلَّقَهَا فَلاَ تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىَ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ فَإِن طَلَّقَهَا فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللّهِ وَتِلْكَ حُدُودُ اللّهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ
Fa-in tallaqaha fala tahillu lahu min baAAdu hatta tankiha zawjan ghayrahu fa-in tallaqaha fala junaha AAalayhima an yatarajaAAa in thanna an yuqeema hudooda Allahi watilka hudoodu Allahi yubayyinuha liqawmin yaAAlamoona
YUSUFALI: So if a husband divorces his wife (irrevocably), He cannot, after that, re-marry her until after she has married another husband and He has divorced her. In that case there is no blame on either of them if they re-unite, provided they feel that they can keep the limits ordained by Allah. Such are the limits ordained by Allah, which He makes plain to those who understand.
PICKTHAL: And if he hath divorced her (the third time), then she is not lawful unto him thereafter until she hath wedded another husband. Then if he (the other husband) divorce her it is no sin for both of them that they come together again if they consider that they are able to observe the limits of Allah. These are the limits of Allah. He manifesteth them for people who have knowledge.
SHAKIR: So if he divorces her she shall not be lawful to him afterwards until she marries another husband; then if he divorces her there is no blame on them both if they return to each other (by marriage), if they think that they can keep within the limits of Allah, and these are the limits of Allah which He makes clear for a people who know.
KHALIFA: If he divorces her (for the third time), it is unlawful for him to remarry her, unless she marries another man, then he divorces her. The first husband can then remarry her, so long as they observe GOD’s laws. These are GOD’s laws; He explains them for people who know.
২৩০। সুতরাং যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেয় [যা অপরিবর্তনীয়] ২৬০; এরপর সে তাকে আর বিবাহ করতে পারবে না, যতক্ষণ না সে [স্ত্রী] অন্য স্বামী গ্রহণ করে এবং তালাকপ্রাপ্ত হয়। অতঃপর যদি তারা মনে করে যে, তারা আল্লাহ্ প্রদত্ত সীমারেখা মেনে চলতে পারবে, সেক্ষেত্রে তাদের পুনর্মিলনে কোন অপরাধ হবে না। এগুলি হচ্ছে আল্লাহ্র প্রদত্ত সীমারেখা যা তিনি সরলভাবে বর্ণনা করেছেন যারা বুঝতে পারে তাদের জন্য।
২৬০। এই আয়াতটিকে পূর্ববর্তী আয়াতের অংশ হিসেবে ধরা যেতে পারে। পূর্ববর্তী আয়াতের [২:২২৯] প্রথম বাক্যে বলা হয়েছে দুই তালাকের পর পুনঃর্মিলন সম্ভব, কিন্তু তিন তালাকের পরে তা আর সম্ভব নয়। যদি তিন তালাক প্রাপ্ত স্ত্রীকে কেউ আবার ফিরে পেতে চায় তবে সেই স্ত্রীর অন্য লোকের সাথে বিবাহ হতে হবে। সেই লোক তালাক দিলেই তবে প্রথম স্বামী আবার তাকে পুনঃর্বিবাহ করতে পারবে। এখানে আল্লাহ্ আমাদের এই উপদেশ দিচ্ছেন যে বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন। একে সব সময়ে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। ক্রোধের বশবর্তী হয়ে বা আবেগ দ্বারা অন্ধ হয়ে বা হঠকারিতার দ্বারা বার বার এ কাজ করার সুযোগ থাকলে বিয়ের পবিত্রতা ও গাম্ভীর্য নষ্ট হয়ে ছেলে খেলাতে পরিণত হবে। এই বাধা বা শাস্তি দ্বারা পুরুষদের আত্মসংযম করতে ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে যেন ‘তালাক’ দেয়াকে তারা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে পারে।
আয়াতঃ 002.231
আর যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দিয়ে দাও, অতঃপর তারা নির্ধারিত ইদ্দত সমাপ্ত করে নেয়, তখন তোমরা নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে রেখে দাও অথবা সহানুভুতির সাথে তাদেরকে মুক্ত করে দাও। আর তোমরা তাদেরকে জ্বালাতন ও বাড়াবাড়ি করার উদ্দেশ্যে আটকে রেখো না। আর যারা এমন করবে, নিশ্চয়ই তারা নিজেদেরই ক্ষতি করবে। আর আল্লাহর নির্দেশকে হাস্যকর বিষয়ে পরিণত করো না। আল্লাহর সে অনুগ্রহের কথা স্মরণ কর, যা তোমাদের উপর রয়েছে এবং তাও স্মরণ কর, যে কিতাব ও জ্ঞানের কথা তোমাদের উপর নাযিল করা হয়েছে যার দ্বারা তোমাদেরকে উপদেশ দান করা হয়। আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ যে, আল্লাহ সর্ববিষয়েই জ্ঞানময়।
And when you have divorced women and they have fulfilled the term of their prescribed period, either take them back on reasonable basis or set them free on reasonable basis. But do not take them back to hurt them, and whoever does that, then he has wronged himself. And treat not the Verses (Laws) of Allâh as a jest, but remember Allâh’s Favours on you (i.e. Islâm), and that which He has sent down to you of the Book (i.e. the Qur’ân) and Al-Hikmah (the Prophet’s Sunnah – legal ways – Islâmic jurisprudence, etc.) whereby He instructs you. And fear Allâh, and know that Allâh is All-Aware of everything.
وَإِذَا طَلَّقْتُمُ النَّسَاء فَبَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَأَمْسِكُوهُنَّ بِمَعْرُوفٍ أَوْ سَرِّحُوهُنَّ بِمَعْرُوفٍ وَلاَ تُمْسِكُوهُنَّ ضِرَارًا لَّتَعْتَدُواْ وَمَن يَفْعَلْ ذَلِكَ فَقَدْ ظَلَمَ نَفْسَهُ وَلاَ تَتَّخِذُوَاْ آيَاتِ اللّهِ هُزُوًا وَاذْكُرُواْ نِعْمَتَ اللّهِ عَلَيْكُمْ وَمَا أَنزَلَ عَلَيْكُمْ مِّنَ الْكِتَابِ وَالْحِكْمَةِ يَعِظُكُم بِهِ وَاتَّقُواْ اللّهَ وَاعْلَمُواْ أَنَّ اللّهَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
Wa-itha tallaqtumu alnnisaa fabalaghna ajalahunna faamsikoohunna bimaAAroofin aw sarrihoohunna bimaAAroofin wala tumsikoohunna diraran litaAAtadoo waman yafAAal thalika faqad thalama nafsahu wala tattakhithoo ayati Allahi huzuwan waothkuroo niAAmata Allahi AAalaykum wama anzala AAalaykum mina alkitabi waalhikmati yaAAithukum bihi waittaqoo Allaha waiAAlamoo anna Allaha bikulli shay-in AAaleemun
YUSUFALI: When ye divorce women, and they fulfil the term of their (‘Iddat), either take them back on equitable terms or set them free on equitable terms; but do not take them back to injure them, (or) to take undue advantage; if any one does that; He wrongs his own soul. Do not treat Allah’s Signs as a jest, but solemnly rehearse Allah’s favours on you, and the fact that He sent down to you the Book and Wisdom, for your instruction. And fear Allah, and know that Allah is well acquainted with all things.
PICKTHAL: When ye have divorced women, and they have reached their term, then retain them in kindness or release them in kindness. Retain them not to their hurt so that ye transgress (the limits). He who doeth that hath wronged his soul. Make not the revelations of Allah a laughing-stock (by your behaviour), but remember Allah’s grace upon you and that which He hath revealed unto you of the Scripture and of wisdom, whereby He doth exhort you. Observe your duty to Allah and know that Allah is Aware of all things.
SHAKIR: And when you divorce women and they reach their prescribed time, then either retain them in good fellowship or set them free with liberality, and do not retain them for injury, so that you exceed the limits, and whoever does this, he indeed is unjust to his own soul; and do not take Allah’s communications for a mockery, and remember the favor of Allah upon you, and that which He has revealed to you of the Book and the Wisdom, admonishing you thereby; and be careful (of your duty to) Allah, and know that Allah is the Knower of all things.
KHALIFA: If you divorce the women, once they fulfill their interim (three menstruations), you shall allow them to live in the same home amicably, or let them leave amicably. Do not force them to stay against their will, as a revenge. Anyone who does this wrongs his own soul. Do not take GOD’s revelations in vain. Remember GOD’s blessings upon you, and that He sent down to you the scripture and wisdom to enlighten you. You shall observe GOD, and know that GOD is aware of all things.
২৩১। যখন তোমরা স্ত্রীদের তালাক দাও ২৬১, এবং তারা তাদের [ইদ্দতকাল] সময় [প্রায়] পূর্ণ করে, হয় তাদের ন্যায়ের ভিত্তিতে পুণরায় গ্রহণ কর অথবা ন্যায়ের ভিত্তিতে তাদের মুক্ত করে দাও। কিন্তু অনিষ্ট করার উদ্দেশ্যে অথবা অন্যায় সুবিধা ভোগের জন্য তাদের ফেরৎ নিও না ২৬২। কেউ যদি তা করে তবে সে নিজের [আত্মার] ক্ষতি করে। আল্লাহ্র বিধানকে ঠাট্টা তামাশার বস্তুতে পরিণত করো না ২৬৩। বরং ভক্তি সহকারে স্মরণ কর তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহ সমূহ এবং তোমাদের উপদেশ দানের জন্য কিতাব ও প্রজ্ঞা যা তিনি তোমাদের জন্য প্রেরণ করেছেন ২৬৪। আল্লাহ্কে ভয় কর এবং জেনে রাখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্ব বিষয়ে জ্ঞানবান।
২৬১। যদি কোন লোক দুই তালাকের পরে স্ত্রীকে ফিরে পেতে চায় তবে তা সে করতে পারে শর্ত সাপেক্ষে, যেনো অত্যাচার করার জন্য তাদের ফেরত নেয়া না হয়। স্ত্রীকে ফেরত নেওয়ার প্রধান শর্ত হবে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ন্যায় ও সমতার ভিত্তি, সম্মানের ভিত্তি যেনো স্বামী-স্ত্রী পরস্পর পরস্পরের ব্যক্তিত্বকে শ্রদ্ধা করতে পারে। এই আয়াতে দুইটি শর্ত সাপেক্ষে চুক্তির উল্লেখ করা হয়েছে। (১) যখন তোমরা স্ত্রীকে তালাক দাও; (২) তাহারা ইদ্দত পূর্তীর নিকটবর্তী হয়; এই দুই শর্তের সাথে আর দুটো অংশ যোগ করা হয়েছে। এগুলি হচ্ছে, (৩) যথাবিধি বা ন্যায়সঙ্গতভাবে তাদের ফিরিয়ে নেবে বা (৪) বিধিমত বা ন্যায়সঙ্গতভাবে তাদের মুক্ত করবে। প্রথম (১) শর্তটি যুক্ত হয়েছে তিন (৩) নম্বরের সাথে এবং দুই (২) নম্বর শর্তটি যোগ হয়েছে চার (৪) নম্বরের সাথে। অর্থাৎ স্বামী যদি পুনরায় স্ত্রীকে গ্রহণ করতে চায় তবে ইদ্দত কাল পর্যন্ত অপেক্ষা করার প্রয়োজন নাই আর যদি তা না হয় তবে ইদ্দত কাল পূর্ণ হওয়ার পর স্ত্রীগণের পুনরায় বিবাহ করায় কোনও বাধা নাই।
২৬২। পুরুষকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে আল্লাহ্ তাকে অধিক মর্যাদাবান করেছেন। কিন্তু তাকে সাবধান করে দেয়া হচ্ছে সে যেনো এর অমর্যাদা না করে। যদি সে দুর্বল নারীকে অত্যাচার করার জন্য এই অধিকারের অপপ্রয়োগ করে, তবে তার নৈতিক ও চারিত্রিক গুণাবলী ধ্বংস হতে বাধ্য।
২৬৩। কখনও কখনও দাম্পত্য সম্পর্ককে অনেকে হাল্কাভাবে গ্রহণ করে। কিন্তু একটু চিন্তা করলেই দেখা যাবে এই সম্পর্কই হচ্ছে একটি সমাজের মৌলিক উপাদান। এই সম্পর্কে ফাটল ধরলে সংসারে অশান্তি নেমে আসে, স্বামী-স্ত্রীর মানসিক যন্ত্রণা ব্যতীতও সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয় সন্তান-সন্ততিরা। আজকের শিশু আগামী দিনের নাগরিক। এদের নিরাপত্তা, সুখ-শান্তি বিঘ্নিত হলে পরবর্তীতে এরা সুস্থ মানসিকতা সম্পন্ন ও বিবেক বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবে না। ফলে সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা হবে বিঘ্নিত। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ পাশ্চাত্য সমাজ। সেখানে যে সব শিশু ভগ্ন পরিবার থেকে আগত তাদের মানসিক বিকৃতি সমাজবিদদের চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন করে। উচ্ছৃঙ্খল সমাজ কোনও দিন শান্তি পেতে পারে না।
২৬৪। ‘জিকির’-[এ শব্দটির অর্থ দেখুন ২:২৫১ এবং টিকা ১৫৬] জিকির করার অর্থ এই নয় যে সশব্দে আল্লাহ্র নাম উচ্চারণ করতে হবে, জিকিরের অর্থ হচ্ছে সমস্ত হৃদয় মন জুড়ে আল্লাহ্র নাম অনুরণিত হতে থাকবে, তা সশব্দে হতে পারে নিঃশব্দেও হতে পারে। এই নাম স্মরণ শুধু শব্দ উচ্চারণেই শেষ হবে না, আল্লাহ্কে হৃদয়ে ধারণ করতে হবে, আল্লাহ্র নেয়ামতের জন্য তার কাছে কৃতজ্ঞ হতে হবে। অর্থাৎ এ শব্দটির গূঢ় অর্থ হচ্ছে সর্ব সত্তায়, সর্বান্তকরণে, আল্লাহ্র চিন্তা, আল্লাহ্র ধ্যান করা এবং অন্তরে তার সান্নিধ্য অনুভব করা যার প্রকাশ ঘটবে কয়েকটি শব্দ দ্বারা। অন্যথায় শুধু মৌখিক ‘জিকির’ জিকিরের সম-মর্যাদা সম্পন্ন নয়।
আয়াতঃ 002.232
আর যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দিয়ে দাও এবং তারপর তারাও নির্ধারিত ইদ্দত পূর্ন করতে থাকে, তখন তাদেরকে পূর্ব স্বামীদের সাথে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে নিয়মানুযায়ী বিয়ে করতে বাধাদান করো না। এ উপদেশ তাকেই দেয়া হচ্ছে, যে আল্লাহ ও কেয়ামত দিনের উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে। এর মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে একান্ত পরিশুদ্ধতা ও অনেক পবিত্রতা। আর আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না।
And when you have divorced women and they have fulfilled the term of their prescribed period, do not prevent them from marrying their (former) husbands, if they mutually agree on reasonable basis. This (instruction) is an admonition for him among you who believes in Allâh and the Last Day. That is more virtuous and purer for you. Allâh knows and you know not.
وَإِذَا طَلَّقْتُمُ النِّسَاء فَبَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَلاَ تَعْضُلُوهُنَّ أَن يَنكِحْنَ أَزْوَاجَهُنَّ إِذَا تَرَاضَوْاْ بَيْنَهُم بِالْمَعْرُوفِ ذَلِكَ يُوعَظُ بِهِ مَن كَانَ مِنكُمْ يُؤْمِنُ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ ذَلِكُمْ أَزْكَى لَكُمْ وَأَطْهَرُ وَاللّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ
Wa-itha tallaqtumu alnnisaa fabalaghna ajalahunna fala taAAduloohunna an yankihna azwajahunna itha taradaw baynahum bialmaAAroofi thalika yooAAathu bihi man kana minkum yu/minu biAllahi waalyawmi al-akhiri thalikum azka lakum waatharu waAllahu yaAAlamu waantum la taAAlamoona
YUSUFALI: When ye divorce women, and they fulfil the term of their (‘Iddat), do not prevent them from marrying their (former) husbands, if they mutually agree on equitable terms. This instruction is for all amongst you, who believe in Allah and the Last Day. That is (the course Making for) most virtue and purity amongst you and Allah knows, and ye know not.
PICKTHAL: And when ye have divorced women and they reach their term, place not difficulties in the way of their marrying their husbands if it is agreed between them in kindness. This is an admonition for him among you who believeth in Allah and the Last Day. That is more virtuous for you, and cleaner. Allah knoweth; ye know not.
SHAKIR: And when you have divorced women and they have ended– their term (of waiting), then do not prevent them from marrying their husbands when they agree among themselves in a lawful manner; with this is admonished he among you who believes in Allah and the last day, this is more profitable and purer for you; and Allah knows while you do not know.
KHALIFA: If you divorce the women, once they fulfill their interim, do not prevent them from remarrying their husbands, if they reconcile amicably. This shall be heeded by those among you who believe in GOD and the Last Day. This is purer for you, and more righteous. GOD knows, while you do not know.
রুকু – ৩০
২৩২। যখন তোমরা স্ত্রীদের তালাক দাও, এবং তারা তাদের ইদ্দত কাল পূর্ণ করে, তাদের [পূর্ব] স্বামীদের বিয়ে করতে তাদের বাঁধা দিও না ২৬৫, যদি তারা পরস্পর ন্যায় সঙ্গতভাবে সম্মত থাকে। এই উপদেশ তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ্তে এবং শেষ বিচারের দিনে বিশ্বাস রাখে তাদের সকলের জন্য। এটাই হলো তোমাদের মধ্যে সর্বোচ্চ পূণ্য এবং পবিত্রতা [তৈরির গতিপথ]। এবং আল্লাহ্ তা জানেন তোমরা জান না।
২৬৫। বিবাহ বিচ্ছেদ ইসলামের চোখে অত্যন্ত ঘৃণ্য ব্যাপার। কারণ দাম্পত্য জীবন হচ্ছে সমাজের মূলভিত্তি। এই ভিত্তি দুর্বল হলে পুরো সমাজটাই দুর্বল হয়ে যাবে। সুতরাং বিবাহের বন্ধনকে বহাল রাখার ব্যাপারে ইসলামী জীবন ব্যবস্থা অত্যন্ত যত্নশীল। কিন্তু তাই বলে এমন কথা বলে না যে, স্নেহ, মায়া, ভালবাসা ও সম্মান ছাড়া যে বৈবাহিক জীবন তা যাপন করতেই হবে। তবে ভালবাসা ও সম্মানের উপর ভিত্তি করে যদি সমঝোতা হয় তবে সে বিয়ে টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে ইসলাম ধর্মে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে। রাসূলের জীবনকালে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই আয়াত নাজেল হয়। তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে পুনঃর্বিবাহে বাঁধা দেওয়া হারাম।
আয়াতঃ 002.233
আর সন্তানবতী নারীরা তাদের সন্তানদেরকে পূর্ন দু’বছর দুধ খাওয়াবে, যদি দুধ খাওয়াবার পূর্ণ মেয়াদ সমাপ্ত করতে চায়। আর সন্তানের অধিকারী অর্থাৎ, পিতার উপর হলো সে সমস্ত নারীর খোর-পোষের দায়িত্ব প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী। কাউকে তার সামর্থাতিরিক্ত চাপের সম্মুখীন করা হয় না। আর মাকে তার সন্তানের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। এবং যার সন্তান তাকেও তার সন্তানের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন করা যাবে না। আর ওয়ারিসদের উপরও দায়িত্ব এই। তারপর যদি পিতা-মাতা ইচ্ছা করে, তাহলে দু’বছরের ভিতরেই নিজেদের পারস্পরিক পরামর্শক্রমে দুধ ছাড়িয়ে দিতে পারে, তাতে তাদের কোন পাপ নেই, আর যদি তোমরা কোন ধাত্রীর দ্বারা নিজের সন্তানদেরকে দুধ খাওয়াতে চাও, তাহলে যদি তোমরা সাব্যস্তকৃত প্রচলিত বিনিময় দিয়ে দাও তাতেও কোন পাপ নেই। আর আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রেখো যে, আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজ অত্যন্ত ভাল করেই দেখেন।
The mothers shall give suck to their children for two whole years, (that is) for those (parents) who desire to complete the term of suckling, but the father of the child shall bear the cost of the mother’s food and clothing on a reasonable basis. No person shall have a burden laid on him greater than he can bear. No mother shall be treated unfairly on account of her child, nor father on account of his child. And on the (father’s) heir is incumbent the like of that (which was incumbent on the father). If they both decide on weaning, by mutual consent, and after due consultation, there is no sin on them. And if you decide on a foster suckling-mother for your children, there is no sin on you, provided you pay (the mother) what you agreed (to give her) on reasonable basis. And fear Allâh and know that Allâh is All-Seer of what you do.
وَالْوَالِدَاتُ يُرْضِعْنَ أَوْلاَدَهُنَّ حَوْلَيْنِ كَامِلَيْنِ لِمَنْ أَرَادَ أَن يُتِمَّ الرَّضَاعَةَ وَعلَى الْمَوْلُودِ لَهُ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ لاَ تُكَلَّفُ نَفْسٌ إِلاَّ وُسْعَهَا لاَ تُضَآرَّ وَالِدَةٌ بِوَلَدِهَا وَلاَ مَوْلُودٌ لَّهُ بِوَلَدِهِ وَعَلَى الْوَارِثِ مِثْلُ ذَلِكَ فَإِنْ أَرَادَا فِصَالاً عَن تَرَاضٍ مِّنْهُمَا وَتَشَاوُرٍ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِمَا وَإِنْ أَرَدتُّمْ أَن تَسْتَرْضِعُواْ أَوْلاَدَكُمْ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ إِذَا سَلَّمْتُم مَّآ آتَيْتُم بِالْمَعْرُوفِ وَاتَّقُواْ اللّهَ وَاعْلَمُواْ أَنَّ اللّهَ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
Waalwalidatu yurdiAAna awladahunna hawlayni kamilayni liman arada an yutimma alrradaAAata waAAala almawloodi lahu rizquhunna wakiswatuhunna bialmaAAroofi la tukallafu nafsun illa wusAAaha la tudarra walidatun biwaladiha wala mawloodun lahu biwaladihi waAAala alwarithi mithlu thalika fa-in arada fisalan AAan taradin minhuma watashawurin fala junaha AAalayhima wa-in aradtum an tastardiAAoo awladakum fala junaha AAalaykum itha sallamtum ma ataytum bialmaAAroofi waittaqoo Allaha waiAAlamoo anna Allaha bima taAAmaloona baseerun
YUSUFALI: The mothers shall give such to their offspring for two whole years, if the father desires to complete the term. But he shall bear the cost of their food and clothing on equitable terms. No soul shall have a burden laid on it greater than it can bear. No mother shall be Treated unfairly on account of her child. Nor father on account of his child, an heir shall be chargeable in the same way. If they both decide on weaning, by mutual consent, and after due consultation, there is no blame on them. If ye decide on a foster-mother for your offspring, there is no blame on you, provided ye pay (the mother) what ye offered, on equitable terms. But fear Allah and know that Allah sees well what ye do.
PICKTHAL: Mothers shall suckle their children for two whole years; (that is) for those who wish to complete the suckling. The duty of feeding and clothing nursing mothers in a seemly manner is upon the father of the child. No-one should be charged beyond his capacity. A mother should not be made to suffer because of her child, nor should he to whom the child is born (be made to suffer) because of his child. And on the (father’s) heir is incumbent the like of that (which was incumbent on the father). If they desire to wean the child by mutual consent and (after) consultation, it is no sin for them; and if ye wish to give your children out to nurse, it is no sin for you, provide that ye pay what is due from you in kindness. Observe your duty to Allah, and know that Allah is Seer of what ye do.
SHAKIR: And the mothers should suckle their children for two whole years for him who desires to make complete the time of suckling; and their maintenance and their clothing must be– borne by the father according to usage; no soul shall have imposed upon it a duty but to the extent of its capacity; neither shall a mother be made to suffer harm on account of her child, nor a father on account of his child, and a similar duty (devolves) on the (father’s) heir, but if both desire weaning by mutual consent and counsel, there is no blame on them, and if you wish to engage a wet-nurse for your children, there is no blame on you so long as you pay what you promised for according to usage; and be careful of (your duty to) Allah and know that Allah sees what you do.
KHALIFA: Divorced mothers shall nurse their infants two full years, if the father so wishes. The father shall provide the mother’s food and clothing equitably. No one shall be burdened beyond his ability. No mother shall be harmed on account of her infant, nor shall the father be harmed because of his infant. (If the father dies), his inheritor shall assume these responsibilities. If the infant’s parents mutually agree to part, after due consultation, they commit no error by doing so. You commit no error by hiring nursing mothers, so long as you pay them equitably. You shall observe GOD, and know that GOD is Seer of everything you do.
২৩৩। যদি পিতা স্তন্য পান কাল পূর্ণ করতে চায় ২৬৬ তবে মাতা তার সন্তানের পূর্ণ দুই বৎসর স্তন্য পান করাবে। কিন্তু সে [পিতা] ন্যায়সঙ্গতভাবে তাদের ভরণ পোষণ করবে। কাহাকেও তার সাধ্যাতীত কার্যভার দেয়া হয় না। কোন মাতার প্রতি তার সন্তানের জন্য অন্যায় আচরণ করা হবে না। কোন পিতার প্রতিও সন্তানের জন্য [অন্যায়] করা হবে না এবং [পিতার] উত্তরাধীকারগণও সমভাবে অভিযুক্ত হবে। কিন্তু যদি তারা পরস্পরের সম্মতি ও পরামর্শক্রমে স্তন্য পান বন্ধ রাখতে চায়, তবে তাদের কারও কোন অপরাধ নাই। যদি তোমরা তোমাদের সন্তানদের জন্য ধাত্রী-মা মনোনীত কর, তাতে কোন অপরাধ নাই এই শর্তে যে তোমরা [মাতাকে] ন্যায়সঙ্গতভাবে যা দিতে চেয়েছিলে তা পরিশোধ করবে। আল্লাহ্কে ভয় কর এবং জেনে রাখ যে, তোমরা যা কর আল্লাহ্ তা খুব ভালভাবেই দেখেন।
২৬৬। এ আয়াতে স্তন্যদান সম্পর্কিত নির্দেশাবলী বর্ণিত হয়েছে। এর পূর্ববর্তী ও পরবর্তী আয়াতে তালাক সংক্রান্ত আদেশাবলীর আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে শিশুকে স্তন্যদান সংক্রান্ত আলোচনা এজন্য করা হয়েছে যে, সাধারণতঃ তালাকের পর শিশুর লালন-পালন ও দুধ পান নিয়ে বিবাদের সৃষ্টি হয়। কাজেই এই আয়াতে এমন ন্যায়সঙ্গত নিয়ম বাত্লে দেওয়া হয়েছে যা স্ত্রী পুরুষ উভয়ের জন্যই সহজ ও যুক্তিযুক্ত। এই আয়াতে স্তন্যদান সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা সার্বজনীন। অর্থাৎ শিশুদের স্তন্যদান মায়ের উপর ওয়াজিব, বিবাহ বন্ধনে থাকা বা তালাক অবস্থায়। স্তন্যদানের পূর্ণ সময় দুই বছর। নিয়ম অনুযায়ী এ সময়ে মাতার খাওয়া-পরা ইত্যাদির ব্যবস্থা করা সন্তানের পিতার দায়িত্ব। আল্লাহ্ কাকেও কারও সামর্থের উর্ধ্বে কোন আদেশ দান করেন না। বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ থাকা অবস্থায় এ ব্যাপারে কোনও ঝগড়া ফ্যাসাদের অবকাশ নাই। কারণ বিবাহিত স্ত্রীর ভরণ পোষণের দায়িত্ব স্বামীর। কিন্তু তালাক প্রাপ্ত অবস্থায় যাতে এ ব্যাপারে কোনও পক্ষের উপর কোন জুলুম না হয় সে জন্য এ নির্দেশ।
আয়াতঃ 002.234
আর তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করবে এবং নিজেদের স্ত্রীদেরকে ছেড়ে যাবে, তখন সে স্ত্রীদের কর্তব্য হলো নিজেকে চার মাস দশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করিয়ে রাখা। তারপর যখন ইদ্দত পূর্ণ করে নেবে, তখন নিজের ব্যাপারে নীতি সঙ্গত ব্যবস্থা নিলে কোন পাপ নেই। আর তোমাদের যাবতীয় কাজের ব্যাপারেই আল্লাহর অবগতি রয়েছে।
And those of you who die and leave wives behind them, they (the wives) shall wait (as regards their marriage) for four months and ten days, then when they have fulfilled their term, there is no sin on you if they (the wives) dispose of themselves in a just and honourable manner (i.e. they can marry). And Allâh is Well-Acquainted with what you do.
وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَاجًا يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا فَإِذَا بَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا فَعَلْنَ فِي أَنفُسِهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ وَاللّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
Waallatheena yutawaffawna minkum wayatharoona azwajan yatarabbasna bi-anfusihinna arbaAAata ashhurin waAAashran fa-itha balaghna ajalahunna fala junaha AAalaykum feema faAAalna fee anfusihinna bialmaAAroofi waAllahu bima taAAmaloona khabeerun
YUSUFALI: If any of you die and leave widows behind, they shall wait concerning themselves four months and ten days: When they have fulfilled their term, there is no blame on you if they dispose of themselves in a just and reasonable manner. And Allah is well acquainted with what ye do.
PICKTHAL: Such of you as die and leave behind them wives, they (the wives) shall wait, keeping themselves apart, four months and ten days. And when they reach the term (prescribed for them) then there is no sin for you in aught that they may do with themselves in decency. Allah is informed of what ye do.
SHAKIR: And (as for) those of you who die and leave wives behind, they should keep themselves in waiting for four months and ten days; then when they have fully attained their term, there is no blame on you for what they do for themselves in a lawful manner; and Allah is aware of what you do.
KHALIFA: Those who die and leave wives, their widows shall wait four months and ten days (before they remarry). Once they fulfill their interim, you commit no error by letting them do whatever righteous matters they wish to do. GOD is fully Cognizant of everything you do.
২৩৪। তোমাদের মধ্য যারা বিধবা রেখে মৃত্যুবরণ কর, তাদের স্ত্রীরা চারিমাস দশদিন অপেক্ষা করবে ২৬৭। যখন ইদ্দত কাল পূর্ণ করবে, তখন নিয়ম অনুযায়ী তারা নিজেদের জন্য যা করবে তাতে তোমাদের কোন অপরাধ নাই। তোমরা যা কর আল্লাহ্ সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত।
২৬৭। বিধবাদের জন্য ইদ্দত কাল ৪ মাস ১০ দিন। বিবাহ বিচ্ছেদ হলে ইদ্দত কাল ৩ মাস এবং বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে কিন্তু কুমারী তার ইদ্দত কালের প্রয়োজন নাই [৩৩:৪৯] আয়াত।
আয়াতঃ 002.235
আর যদি তোমরা আকার ইঙ্গিতে সে নারীর বিয়ের পয়গাম দাও, কিংবা নিজেদের মনে গোপন রাখ, তবে তাতেও তোমাদের কোন পাপ নেই, আল্লাহ জানেন যে, তোমরা অবশ্যই সে নারীদের কথা উল্লেখ করবে। কিন্তু তাদের সাথে বিয়ে করার গোপন প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখো না। অবশ্য শরীয়তের নির্ধারিত প্রথা অনুযায়ী কোন কথা সাব্যস্ত করে নেবে। আর নির্ধারিত ইদ্দত সমাপ্তি পর্যায়ে না যাওয়া অবধি বিয়ে করার কোন ইচ্ছা করো না। আর একথা জেনে রেখো যে, তোমাদের মনে যে কথা রয়েছে, আল্লাহর তা জানা আছে। কাজেই তাঁকে ভয় করতে থাক। আর জেনে রেখো যে, আল্লাহ ক্ষমাকারী ও ধৈর্য্যশীল।
And there is no sin on you if you make a hint of betrothal or conceal it in yourself, Allâh knows that you will remember them, but do not make a promise of contract with them in secret except that you speak an honourable saying according to the Islâmic law (e.g. you can say to her, ”If one finds a wife like you, he will be happy”). And do not consummate the marriage until the term prescribed is fulfilled. And know that Allâh knows what is in your minds, so fear Him. And know that Allâh is Oft-Forgiving, Most Forbearing.
وَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا عَرَّضْتُم بِهِ مِنْ خِطْبَةِ النِّسَاء أَوْ أَكْنَنتُمْ فِي أَنفُسِكُمْ عَلِمَ اللّهُ أَنَّكُمْ سَتَذْكُرُونَهُنَّ وَلَـكِن لاَّ تُوَاعِدُوهُنَّ سِرًّا إِلاَّ أَن تَقُولُواْ قَوْلاً مَّعْرُوفًا وَلاَ تَعْزِمُواْ عُقْدَةَ النِّكَاحِ حَتَّىَ يَبْلُغَ الْكِتَابُ أَجَلَهُ وَاعْلَمُواْ أَنَّ اللّهَ يَعْلَمُ مَا فِي أَنفُسِكُمْ فَاحْذَرُوهُ وَاعْلَمُواْ أَنَّ اللّهَ غَفُورٌ حَلِيمٌ
Wala junaha AAalaykum feema AAarradtum bihi min khitbati alnnisa-i aw aknantum fee anfusikum AAalima Allahu annakum satathkuroonahunna walakin la tuwaAAidoohunna sirran illa an taqooloo qawlan maAAroofan wala taAAzimoo AAuqdata alnnikahi hatta yablugha alkitabu ajalahu waiAAlamoo anna Allaha yaAAlamu ma fee anfusikum faihtharoohu waiAAlamoo anna Allaha ghafoorun haleemun
YUSUFALI: There is no blame on you if ye make an offer of betrothal or hold it in your hearts. Allah knows that ye cherish them in your hearts: But do not make a secret contract with them except in terms Honourable, nor resolve on the tie of marriage till the term prescribed is fulfilled. And know that Allah Knoweth what is in your hearts, and take heed of Him; and know that Allah is Oft-forgiving, Most Forbearing.
PICKTHAL: There is no sin for you in that which ye proclaim or hide in your minds concerning your troth with women. Allah knoweth that ye will remember them. But plight not your troth with women except by uttering a recognised form of words. And do not consummate the marriage until (the term) prescribed is run. Know that Allah knoweth what is in your minds, so beware of Him; and know that Allah is Forgiving, Clement.
SHAKIR: And there is no blame on you respecting that which you speak indirectly in the asking of (such) women in marriage or keep (the proposal) concealed within your minds; Allah knows that you win mention them, but do not give them a promise in secret unless you speak in a lawful manner, and do not confirm the marriage tie until the writing is fulfilled, and know that Allah knows what is in your minds, therefore beware of Him, and know that Allah is Forgiving, Forbearing.
KHALIFA: You commit no sin by announcing your engagement to the women, or keeping it secret. GOD knows that you will think about them. Do not meet them secretly, unless you have something righteous to discuss. Do not consummate the marriage until their interim is fulfilled. You should know that GOD knows your innermost thoughts, and observe Him. You should know that GOD is Forgiver, Clement.
২৩৫। এতে কোন দোষ নাই, যদি তোমরা বিয়ের প্রস্তাব দাও অথবা তোমাদের অন্তরে গোপন রাখ ২৬৮। আল্লাহ্ জানেন যে, তোমরা তোমাদের অন্তরে তাদের সম্বন্ধে আশা পোষণ করবে। কিন্তু সম্মানজনক কথাবার্তা ব্যতীত তাদের সাথে গোপনে কোন অঙ্গীকার করো না। নির্দিষ্ট কাল পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ কার্য সম্পন্ন করার সংকল্প করো না। এবং জেনে রাখ যে, আল্লাহ্ তোমাদের অন্তরের [সব] কথা জানেন। সুতরাং তাঁকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল, পরম সহনশীল।
২৬৮। বিধবাদের ইদ্দত পালন করা অবস্থায় বিবাহ নিষেধ করা হয়েছে। এমন কি এ ব্যাপারে গোপনে কোনও অঙ্গীকার করাও জায়েয নয়। এর কারণ এই যে ঐ শোকাবস্থায় নারীরা ভাল-মন্দ বোঝার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। অনিশ্চয়তা এবং শোক তাদের এত অভিভূত করে যে এ সময়ে তাদের বিচার বুদ্ধি স্বাভাবিক অবস্থায় না থাকারই কথা। সুতরাং সেই অবস্থায় বিয়ের মত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে সে ভুল করে। এ জন্যই এই নিয়ম। কিন্তু কেউ যদি প্রস্তাব দেয় বিবেচনার করার জন্য তবে তা জায়েজ।
আয়াতঃ 002.236
স্ত্রীদেরকে স্পর্শ করার আগে এবং কোন মোহর সাব্যস্ত করার পূর্বেও যদি তালাক দিয়ে দাও, তবে তাতেও তোমাদের কোন পাপ নেই। তবে তাদেরকে কিছু খরচ দেবে। আর সামর্থ্যবানদের জন্য তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী এবং কম সামর্থ্যবানদের জন্য তাদের সাধ্য অনুযায়ী। যে খরচ প্রচলিত রয়েছে তা সৎকর্মশীলদের উপর দায়িত্ব।
There is no sin on you, if you divorce women while yet you have not touched (had sexual relation with) them, nor appointed unto them their Mahr (bridal money given by the husband to his wife at the time of marriage). But bestow on them ( a suitable gift), the rich according to his means, and the poor according to his means, a gift of reasonable amount is a duty on the doers of good.
لاَّ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ إِن طَلَّقْتُمُ النِّسَاء مَا لَمْ تَمَسُّوهُنُّ أَوْ تَفْرِضُواْ لَهُنَّ فَرِيضَةً وَمَتِّعُوهُنَّ عَلَى الْمُوسِعِ قَدَرُهُ وَعَلَى الْمُقْتِرِ قَدْرُهُ مَتَاعًا بِالْمَعْرُوفِ حَقًّا عَلَى الْمُحْسِنِينَ
La junaha AAalaykum in tallaqtumu alnnisaa ma lam tamassoohunna aw tafridoo lahunna fareedatan wamattiAAoohunna AAala almoosiAAi qadaruhu waAAala almuqtiri qadaruhu mataAAan bialmaAAroofi haqqan AAala almuhsineena
YUSUFALI: There is no blame on you if ye divorce women before consummation or the fixation of their dower; but bestow on them (A suitable gift), the wealthy according to his means, and the poor according to his means;- A gift of a reasonable amount is due from those who wish to do the right thing.
PICKTHAL: It is no sin for you if ye divorce women while yet ye have not touched them, nor appointed unto them a portion. Provide for them, the rich according to his means, and the straitened according to his means, a fair provision. (This is) a bounden duty for those who do good.
SHAKIR: There is no blame on you if you divorce women when you have not touched them or appointed for them a portion, and make provision for them, the wealthy according to his means and the straitened in circumstances according to his means, a provision according to usage; (this is) a duty on the doers of good (to others).
KHALIFA: You commit no error by divorcing the women before touching them, or before setting the dowry for them. In this case, you shall compensate them – the rich as he can afford and the poor as he can afford – an equitable compensation. This is a duty upon the righteous.
রুকু – ৩১
২৩৬। তোমাদের স্ত্রীদের স্পর্শ করার পূর্বে অথবা তাদের মোহর ধার্য করার পূর্বে তালাক দিলে কোন পাপ নাই। সম্পদশালী ব্যক্তি তাদের সামর্থ অনুযায়ী এবং অস্বচ্ছল ব্যক্তি তাদের সামর্থ অনুযায়ী ন্যায়সঙ্গত ভাবে তাদের [উপযুক্ত] উপহার দান করবে। ন্যায়বান লোকদের এটাই কর্তব্য।
২৩৭। যদি তোমরা [স্ত্রীদের] স্পর্শ করা পূর্বে তালাক দাও অথচ মোহর ধার্য করা হয়েছে [সেক্ষেত্রে স্ত্রীরা] অর্ধেক মোহর পাবে যদি সে তা মাফ করে না দেয় অথবা সে [স্বামী], যার হাতে বিবাহ বন্ধন রয়েছে ২৬৯, [স্বামীর অর্ধেক প্রাপ্য] মাফ করে দিলে [সেক্ষেত্রে স্বামী] স্ত্রীকে পূর্ণ মোহর দেবে ২৭০। [স্বামীর প্রাপ্য অর্ধেক] মাফ করে দেওয়াই হচ্ছে পুণ্যাত্মার নিকটবর্তী কাজ। এবং নিজেদের মধ্যে বদান্যতার কথা ভুলে যেও না। নিশ্চয়ই তোমরা যা কর আল্লাহ্ তা সব দেখেন।
২৬৯। স্ত্রী গমণের পূর্বে যদি তালাক অনুষ্ঠিত হয়, এর দুটি দিক আছে। যে বিয়ের মোহর নির্ধারিত করা হয় নাই কিংবা মোহর নির্ধারিত হয়ে থাকবে। প্রথম অবস্থায় তোমার উপর মোহরের দায়িত্ব আছে বলে মনে করো না। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক ব্যক্তির সামর্থ্য অনুযায়ী স্ত্রীকে উপঢৌকন দেওয়া উচিত।
দ্বিতীয় ক্ষেত্রে মোহরের অর্ধেক শোধ করতে হবে। কিন্তু স্ত্রী ইচ্ছা করলে তার অংশ মাফ করে দিতে পারে অথবা স্বামী তার প্রাপ্য অংশ মাফ করে দিতে পারে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে স্ত্রী পূর্ণ মোহর পাবে। যদি সে বদান্যতার প্রেক্ষিতে অর্ধেক না নেয়, তবে তাও ক্ষমার পর্যায়ে পড়ে এবং ক্ষমা করাকে উত্তম ও তাকওয়ার পক্ষে অনুকূলে বলা হয়েছে।
২৭০। এই অবস্থায় নির্ধারিত মোহরের অর্ধেক দেওয়াই বিধেয়। ‘যাহার হাতে বিবাহ বন্ধন রয়েছে’-কথাটির অর্থ স্বামীর হাতে [হানাফী মত অনুসারে] বিবাহ বন্ধন ন্যস্ত। কারণ তালাক দেওয়ার ক্ষমতাও তার হাতে। সুতরাং মোহরের অর্ধেক যেটা তার প্রাপ্য সেটাও ইচ্ছা করলে সে মাফ করে দিতে পারে। এক্ষেত্রে স্ত্রী পূর্ণ মোহর পাবে।
আয়াতঃ 002.237
আর যদি মোহর সাব্যস্ত করার পর স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দিয়ে দাও, তাহলে যে, মোহর সাব্যস্ত করা হয়েছে তার অর্ধেক দিয়ে দিতে হবে। অবশ্য যদি নারীরা ক্ষমা করে দেয় কিংবা বিয়ের বন্ধন যার অধিকারে সে (অর্থাৎ, স্বামী) যদি ক্ষমা করে দেয় তবে তা স্বতন্ত্র কথা। আর তোমরা পুরুষরা যদি ক্ষমা কর, তবে তা হবে পরহেযগারীর নিকটবর্তী। আর পারস্পরিক সহানুভূতির কথা বিস্মৃত হয়ো না। নিশ্চয় তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ সেসবই অত্যন্ত ভাল করে দেখেন।
And if you divorce them before you have touched (had a sexual relation with) them, and you have appointed unto them the Mahr (bridal money given by the husbands to his wife at the time of marriage), then pay half of that (Mahr), unless they (the women) agree to forego it, or he (the husband), in whose hands is the marriage tie, agrees to forego and give her full appointed Mahr. And to forego and give (her the full Mahr) is nearer to At-Taqwa (piety, right-eousness, etc.). And do not forget liberality between yourselves. Truly, Allâh is All-Seer of what you do.
وَإِن طَلَّقْتُمُوهُنَّ مِن قَبْلِ أَن تَمَسُّوهُنَّ وَقَدْ فَرَضْتُمْ لَهُنَّ فَرِيضَةً فَنِصْفُ مَا فَرَضْتُمْ إَلاَّ أَن يَعْفُونَ أَوْ يَعْفُوَ الَّذِي بِيَدِهِ عُقْدَةُ النِّكَاحِ وَأَن تَعْفُواْ أَقْرَبُ لِلتَّقْوَى وَلاَ تَنسَوُاْ الْفَضْلَ بَيْنَكُمْ إِنَّ اللّهَ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
Wa-in tallaqtumoohunna min qabli an tamassoohunna waqad faradtum lahunna fareedatan fanisfu ma faradtum illa an yaAAfoona aw yaAAfuwa allathee biyadihi AAuqdatu alnnikahi waan taAAfoo aqrabu lilttaqwa wala tansawoo alfadla baynakum inna Allaha bima taAAmaloona baseerun
YUSUFALI: And if ye divorce them before consummation, but after the fixation of a dower for them, then the half of the dower (Is due to them), unless they remit it or (the man’s half) is remitted by him in whose hands is the marriage tie; and the remission (of the man’s half) is the nearest to righteousness. And do not forget Liberality between yourselves. For Allah sees well all that ye do.
PICKTHAL: If ye divorce them before ye have touched them and ye have appointed unto them a portion, then (pay the) half of that which ye appointed, unless they (the women) agree to forgo it, or he agreeth to forgo it in whose hand is the marriage tie. To forgo is nearer to piety. And forget not kindness among yourselves. Allah is Seer of what ye do.
SHAKIR: And if you divorce them before you have touched them and you have appointed for them a portion, then (pay to them) ha!f of what you have appointed, unless they relinquish or he should relinquish in whose hand is the marriage tie; and it is nearer to righteousness that you should relinquish; and do not neglect the giving of free gifts between you; surely Allah sees what you do.
KHALIFA: If you divorce them before touching them, but after you had set the dowry for them, the compensation shall be half the dowry, unless they voluntarily forfeit their rights, or the party responsible for causing the divorce chooses to forfeit the dowry. To forfeit is closer to righteousness. You shall maintain the amicable relations among you. GOD is Seer of everything you do.
রুকু – ৩১
২৩৬। তোমাদের স্ত্রীদের স্পর্শ করার পূর্বে অথবা তাদের মোহর ধার্য করার পূর্বে তালাক দিলে কোন পাপ নাই। সম্পদশালী ব্যক্তি তাদের সামর্থ অনুযায়ী এবং অস্বচ্ছল ব্যক্তি তাদের সামর্থ অনুযায়ী ন্যায়সঙ্গত ভাবে তাদের [উপযুক্ত] উপহার দান করবে। ন্যায়বান লোকদের এটাই কর্তব্য।
২৩৭। যদি তোমরা [স্ত্রীদের] স্পর্শ করা পূর্বে তালাক দাও অথচ মোহর ধার্য করা হয়েছে [সেক্ষেত্রে স্ত্রীরা] অর্ধেক মোহর পাবে যদি সে তা মাফ করে না দেয় অথবা সে [স্বামী], যার হাতে বিবাহ বন্ধন রয়েছে ২৬৯, [স্বামীর অর্ধেক প্রাপ্য] মাফ করে দিলে [সেক্ষেত্রে স্বামী] স্ত্রীকে পূর্ণ মোহর দেবে ২৭০। [স্বামীর প্রাপ্য অর্ধেক] মাফ করে দেওয়াই হচ্ছে পুণ্যাত্মার নিকটবর্তী কাজ। এবং নিজেদের মধ্যে বদান্যতার কথা ভুলে যেও না। নিশ্চয়ই তোমরা যা কর আল্লাহ্ তা সব দেখেন।
২৬৯। স্ত্রী গমণের পূর্বে যদি তালাক অনুষ্ঠিত হয়, এর দুটি দিক আছে। যে বিয়ের মোহর নির্ধারিত করা হয় নাই কিংবা মোহর নির্ধারিত হয়ে থাকবে। প্রথম অবস্থায় তোমার উপর মোহরের দায়িত্ব আছে বলে মনে করো না। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক ব্যক্তির সামর্থ্য অনুযায়ী স্ত্রীকে উপঢৌকন দেওয়া উচিত।
দ্বিতীয় ক্ষেত্রে মোহরের অর্ধেক শোধ করতে হবে। কিন্তু স্ত্রী ইচ্ছা করলে তার অংশ মাফ করে দিতে পারে অথবা স্বামী তার প্রাপ্য অংশ মাফ করে দিতে পারে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে স্ত্রী পূর্ণ মোহর পাবে। যদি সে বদান্যতার প্রেক্ষিতে অর্ধেক না নেয়, তবে তাও ক্ষমার পর্যায়ে পড়ে এবং ক্ষমা করাকে উত্তম ও তাকওয়ার পক্ষে অনুকূলে বলা হয়েছে।
২৭০। এই অবস্থায় নির্ধারিত মোহরের অর্ধেক দেওয়াই বিধেয়। ‘যাহার হাতে বিবাহ বন্ধন রয়েছে’-কথাটির অর্থ স্বামীর হাতে [হানাফী মত অনুসারে] বিবাহ বন্ধন ন্যস্ত। কারণ তালাক দেওয়ার ক্ষমতাও তার হাতে। সুতরাং মোহরের অর্ধেক যেটা তার প্রাপ্য সেটাও ইচ্ছা করলে সে মাফ করে দিতে পারে। এক্ষেত্রে স্ত্রী পূর্ণ মোহর পাবে।
আয়াতঃ 002.238
সমস্ত নামাযের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাযের ব্যাপারে। আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সাথে দাঁড়াও।
Guard strictly (five obligatory) AsSalawât (the prayers) especially the middle Salât (i.e. the best prayer ’Asr). And stand before Allâh with obedience [and do not speak to others during the Salât (prayers)].
حَافِظُواْ عَلَى الصَّلَوَاتِ والصَّلاَةِ الْوُسْطَى وَقُومُواْ لِلّهِ قَانِتِينَ
Hafithoo AAala alssalawati waalssalati alwusta waqoomoo lillahi qaniteena
YUSUFALI: Guard strictly your (habit of) prayers, especially the Middle Prayer; and stand before Allah in a devout (frame of mind).
PICKTHAL: Be guardians of your prayers, and of the midmost prayer, and stand up with devotion to Allah.
SHAKIR: Attend constantly to prayers and to the middle prayer and stand up truly obedient to Allah.
KHALIFA: You shall consistently observe the Contact Prayers, especially the middle prayer, and devote yourselves totally to GOD.
২৩৮। সালাতের [অভ্যাসকে] কঠোরভাবে রক্ষা করবে ২৭১, বিশেষভাবে মধ্যবর্তী সালাতের এবং [অন্তরে] ভক্তি সহকারে আল্লাহ্র সামনে দাঁড়াবে।
২৭১। আগে ও পরে সালাত সম্পর্কে আলোচনার মাধ্যমে নামাজের হুকুম বর্ণনা করার ইঙ্গিত করে যে, আল্লাহ্র আনুগত্যই হচ্ছে প্রকৃত উদ্দেশ্য। সামাজিকতা ও বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানের দ্বারা অন্যান্য কল্যাণ লাভ ছাড়াও সেই লক্ষ্যের রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন একটা স্বতন্ত্র উদ্দেশ্য। এখানে সর্ব প্রকার সালাতের বিশেষত আসরের সালাতের প্রতি যত্নবান হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে বিনীতভাবে দাঁড়াতে বলা হয়েছে।
আয়াতঃ 002.239
অতঃপর যদি তোমাদের কারো ব্যাপারে ভয় থাকে, তাহলে পদচারী অবস্থাতেই পড়ে নাও অথবা সওয়ারীর উপরে। তারপর যখন তোমরা নিরাপত্তা পাবে, তখন আল্লাহকে স্মরণ কর, যেভাবে তোমাদের শেখানো হয়েছে, যা তোমরা ইতিপূর্বে জানতে না।
And if you fear (an enemy), perfrom Salât (pray) on foot or riding. And when you are in safety, offer the Salât (prayer) in the manner He has taught you, which you knew not (before).
فَإنْ خِفْتُمْ فَرِجَالاً أَوْ رُكْبَانًا فَإِذَا أَمِنتُمْ فَاذْكُرُواْ اللّهَ كَمَا عَلَّمَكُم مَّا لَمْ تَكُونُواْ تَعْلَمُونَ
Fa-in khiftum farijalan aw rukbanan fa-itha amintum faothkuroo Allaha kama AAallamakum ma lam takoonoo taAAlamoona
YUSUFALI: If ye fear (an enemy), pray on foot, or riding, (as may be most convenient), but when ye are in security, celebrate Allah’s praises in the manner He has taught you, which ye knew not (before).
PICKTHAL: And if ye go in fear, then (pray) standing or on horseback. And when ye are again in safety, remember Allah, as He hath taught you that which (heretofore) ye knew not.
SHAKIR: But if you are in danger, then (say your prayers) on foot or on horseback; and when you are secure, then remember Allah, as. He has taught you what you did not know.
KHALIFA: Under unusual circumstances, you may pray while walking or riding. Once you are safe, you shall commemorate GOD as He taught you what you never knew.
২৩৯। যদি তোমরা [শত্রুর] আশঙ্কা কর ২৭২ তবে দাঁড়িয়ে বা আরোহী অবস্থায় [যেটা বেশী সুবিধাজনক মনে হয়] সালাত আদায় করবে। কিন্তু যখন তোমরা নিরাপদ হবে, তখন আল্লাহ্কে স্মরণ করবে যেভাবে তিনি তোমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, যা তোমরা [পূর্বে] জানতে না।
২৭২। আয়াত ২৩৮-২৩৯ সমজাতীয়, দুটিই বিপদের সময় আল্লাহ্কে স্মরণ করার পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে। ৪:১০১-১০৩ এ এটি আরো বিস্তারিত ভাবে বর্ণিত হয়েছে।
আয়াতঃ 002.240
আর যখন তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করবে তখন স্ত্রীদের ঘর থেকে বের না করে এক বছর পর্যন্ত তাদের খরচের ব্যাপারে ওসিয়ত করে যাবে। অতঃপর যদি সে স্ত্রীরা নিজে থেকে বেরিয়ে যায়, তাহলে সে নারী যদি নিজের ব্যাপারে কোন উত্তম ব্যবস্থা করে, তবে তাতে তোমাদের উপর কোন পাপ নেই। আর আল্লাহ হচ্ছেন পরাক্রমশালী বিজ্ঞতা সম্পন্ন।
And those of you who die and leave behind wives should bequeath for their wives a year’s maintenance and residence without turning them out, but if they (wives) leave, there is no sin on you for that which they do of themselves, provided it is honourable (e.g. lawful marriage). And Allâh is All-Mighty, All-Wise. [The order of this Verse has been cancelled (abrogated) by Verse 4:12].
وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَاجًا وَصِيَّةً لِّأَزْوَاجِهِم مَّتَاعًا إِلَى الْحَوْلِ غَيْرَ إِخْرَاجٍ فَإِنْ خَرَجْنَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِي مَا فَعَلْنَ فِيَ أَنفُسِهِنَّ مِن مَّعْرُوفٍ وَاللّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
Waallatheena yutawaffawna minkum wayatharoona azwajan wasiyyatan li-azwajihim mataAAan ila alhawli ghayra ikhrajin fa-in kharajna fala junaha AAalaykum fee ma faAAalna fee anfusihinna min maAAroofin waAllahu AAazeezun hakeemun
YUSUFALI: Those of you who die and leave widows should bequeath for their widows a year’s maintenance and residence; but if they leave (The residence), there is no blame on you for what they do with themselves, provided it is reasonable. And Allah is Exalted in Power, Wise.
PICKTHAL: (In the case of) those of you who are about to die and leave behind them wives, they should bequeath unto their wives a provision for the year without turning them out, but if they go out (of their own accord) there is no sin for you in that which they do of themselves within their rights. Allah is Mighty, Wise.
SHAKIR: And those of you who die and leave wives behind, (make) a bequest in favor of their wives of maintenance for a year without turning (them) out, then if they themselves go away, there is no blame on you for what they do of lawful deeds by themselves, and Allah is Mighty, Wise.
KHALIFA: Those who die and leave wives, a will shall provide their wives with support for a year, provided they stay within the same household. If they leave, you commit no sin by letting them do whatever they wish, so long as righteousness is maintained. GOD is Almighty, Most Wise.
২৪০। তোমাদের মধ্যে যারা বিধবা স্ত্রী রেখে মারা যায়, তারা যেনো তাদের বিধবাদের জন্য এক বছরের থাকা ও খাওয়ার বন্দোবস্ত করে যায় ২৭৩। কিন্তু যদি তারা [গৃহ] ত্যাগ করে যায় এই শর্তে যে তারা নিজেদের জন্য যা করবে তা ন্যায়সঙ্গত, তাহলে তোমাদের কোন অপরাধ নাই। আল্লাহ্ অসীম ক্ষমতাধর, প্রজ্ঞাময়।
২৭৩। এখানে বিভিন্ন তফসীরকারদের মধ্যে মত পার্থক্য আছে। অনেকের মতে [৪:১২] দ্বারা বিধবাকে সম্পত্তির অংশ প্রদান করা হয় উত্তরাধিকারী সূত্রে। সুতরাং বিধবার এক বছরের ভরণ পোষণের যে আয়াতটি এখানে নাজিল হয়েছিল তা উক্ত আয়াত দ্বারা রহিত হয়ে গেলো। কিন্তু মওলানা ইউসুফ আলী তা মনে করেন না। উক্ত আয়াতটি সম্পত্তির ব্যাপারে প্রযোজ্য। কিন্তু বিধবা যদি ইচ্ছা করে এক বছরের পূর্বেই স্বামী গৃহ ত্যাগ করতে পারে। সেক্ষেত্রে তার ভরণ পোষণের দায়িত্ব রহিত হয়ে যায়।
আয়াতঃ 002.241
আর তালাকপ্রাপ্তা নারীদের জন্য প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী খরচ দেয়া পরহেযগারদের উপর কর্তব্য।
And for divorced women, maintenance (should be provided) on reasonable (scale). This is a duty on Al-Muttaqûn (the pious – see V.2:2).
وَلِلْمُطَلَّقَاتِ مَتَاعٌ بِالْمَعْرُوفِ حَقًّا عَلَى الْمُتَّقِينَ
Walilmutallaqati mataAAun bialmaAAroofi haqqan AAala almuttaqeena
YUSUFALI: For divorced women Maintenance (should be provided) on a reasonable (scale). This is a duty on the righteous.
PICKTHAL: For divorced women a provision in kindness: a duty for those who ward off (evil).
SHAKIR: And for the divorced women (too) provision (must be made) according to usage; (this is) a duty on those who guard (against evil).
KHALIFA: The divorcees also shall be provided for, equitably. This is a duty upon the righteous.
২৪১। তালাকপ্রাপ্ত নারীদের ন্যায়সঙ্গত [মানে] ভরণ পোষণ দেবে। পূণ্যাত্মাদের জন্য এটা কর্তব্য।
২৪২। এভাবেই আল্লাহ্ তাঁর বিধান সমূহ তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট করেছেনে যেনো তোমরা বুঝতে পার।
রুকু – ৩২
২৪৩। তুমি কি তাদের দেখ নাই, যারা মৃত্যুভয়ে তাদের গৃহ পরিত্যাগ করেছিলো, যদিও তারা [সংখ্যায়] ছিলো হাজারে হাজার? আল্লাহ্ তাদের বলেছিলেন, ‘তোমাদের মৃত্যু হোক’। অতঃপর আল্লাহ্ তাদের জীবিত করেছিলেন ২৭৪। মানুষের প্রতি আল্লাহ্ অনুগ্রহে পূর্ণ; কিন্তু তাদের অধিকাংশই অকৃতজ্ঞ।
২৭৪। এই আয়াতে আমরা আবার জিহাদের কথায় ফিরে এলাম যা পূর্বে [২:২১৪-২১৬] বর্ণনা করা হয়েছে। জিহাদ সম্পর্কে আমাদের কোনও রকম ভ্রান্ত ধারণা থাকা উচিত নয়। একথা সর্বদা বিশ্বাস রাখা কর্তব্য যে জীবন ও মৃত্যুর মালিক একমাত্র আল্লাহ্। যদি আমরা আমাদের ঈমান বা বিশ্বাসের জন্য যুদ্ধ করতে প্রস্তুত না থাকি; যদি আমরা আমাদের বিশ্বাসের অস্তিত্ব রক্ষা করার জন্য আমাদের সমস্ত বিষয় সম্পত্তি, সহায়-সম্বল, আমাদের সর্ব প্রচেষ্টা নিয়োগ না করি, তবে অচিরেই আমাদের সযত্নে রক্ষিত অর্থ-সম্পদ, সহায়-সম্বল শত্রু কবলিত হয়ে যাবে। জীবন ও মৃত্যুর মালিক আল্লাহ্। ভীতুরা মনে করে সযত্নে রক্ষা করায় তারা হয়তো মৃত্যুকে এড়াতে সক্ষম হবে, কিম্বা শত্রুর কাছে আত্ম নিবেদন করে নিজেকে এবং অর্থ সম্পদ রক্ষা করতে সক্ষম হবে। কিন্তু ইতিহাসই এর প্রমাণ বহন করে। যারা মৃত্যুকে বা ক্ষতিকে এড়ানোর জন্য ধর্ম যুদ্ধকে পরিহার করে এবং শত্রুর কাছে ভীতুর ন্যায় আত্মসমর্পন করে, তারা এর কোনটা থেকেই রেহাই পায় না। সংখ্যায় অধিক থাকলেও তাদের ভাগ্যে থাকে অপমানজনক মৃত্যু। এই উপদেশটি সর্বকালের এবং সর্বযুগের জন্য প্রযোজ্য। অবশ্য কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে আয়াতটি নাজেল হয় তফসীরকারদের মধ্যে মতভেদ আছে। কিন্তু এর যে উপদেশ বা শিক্ষা তা সার্বজনীন।
আয়াতঃ 002.242
এভাবেই আল্লাহ তা’আলা তোমাদের জন্য স্বীয় নির্দেশ বর্ণনা করেন যাতে তোমরা তা বুঝতে পার।
Thus Allâh makes clear His Ayât (Laws) to you, in order that you may understand.
كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللّهُ لَكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
Kathalika yubayyinu Allahu lakum ayatihi laAAallakum taAAqiloona
YUSUFALI: Thus doth Allah Make clear His Signs to you: In order that ye may understand.
PICKTHAL: Thus Allah expoundeth unto you His revelations so that ye may understand.
SHAKIR: Allah thus makes clear to you His communications that you may understand.
KHALIFA: GOD thus explains His revelations for you, that you may understand.
২৪১। তালাকপ্রাপ্ত নারীদের ন্যায়সঙ্গত [মানে] ভরণ পোষণ দেবে। পূণ্যাত্মাদের জন্য এটা কর্তব্য।
২৪২। এভাবেই আল্লাহ্ তাঁর বিধান সমূহ তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট করেছেনে যেনো তোমরা বুঝতে পার।
রুকু – ৩২
২৪৩। তুমি কি তাদের দেখ নাই, যারা মৃত্যুভয়ে তাদের গৃহ পরিত্যাগ করেছিলো, যদিও তারা [সংখ্যায়] ছিলো হাজারে হাজার? আল্লাহ্ তাদের বলেছিলেন, ‘তোমাদের মৃত্যু হোক’। অতঃপর আল্লাহ্ তাদের জীবিত করেছিলেন ২৭৪। মানুষের প্রতি আল্লাহ্ অনুগ্রহে পূর্ণ; কিন্তু তাদের অধিকাংশই অকৃতজ্ঞ।
২৭৪। এই আয়াতে আমরা আবার জিহাদের কথায় ফিরে এলাম যা পূর্বে [২:২১৪-২১৬] বর্ণনা করা হয়েছে। জিহাদ সম্পর্কে আমাদের কোনও রকম ভ্রান্ত ধারণা থাকা উচিত নয়। একথা সর্বদা বিশ্বাস রাখা কর্তব্য যে জীবন ও মৃত্যুর মালিক একমাত্র আল্লাহ্। যদি আমরা আমাদের ঈমান বা বিশ্বাসের জন্য যুদ্ধ করতে প্রস্তুত না থাকি; যদি আমরা আমাদের বিশ্বাসের অস্তিত্ব রক্ষা করার জন্য আমাদের সমস্ত বিষয় সম্পত্তি, সহায়-সম্বল, আমাদের সর্ব প্রচেষ্টা নিয়োগ না করি, তবে অচিরেই আমাদের সযত্নে রক্ষিত অর্থ-সম্পদ, সহায়-সম্বল শত্রু কবলিত হয়ে যাবে। জীবন ও মৃত্যুর মালিক আল্লাহ্। ভীতুরা মনে করে সযত্নে রক্ষা করায় তারা হয়তো মৃত্যুকে এড়াতে সক্ষম হবে, কিম্বা শত্রুর কাছে আত্ম নিবেদন করে নিজেকে এবং অর্থ সম্পদ রক্ষা করতে সক্ষম হবে। কিন্তু ইতিহাসই এর প্রমাণ বহন করে। যারা মৃত্যুকে বা ক্ষতিকে এড়ানোর জন্য ধর্ম যুদ্ধকে পরিহার করে এবং শত্রুর কাছে ভীতুর ন্যায় আত্মসমর্পন করে, তারা এর কোনটা থেকেই রেহাই পায় না। সংখ্যায় অধিক থাকলেও তাদের ভাগ্যে থাকে অপমানজনক মৃত্যু। এই উপদেশটি সর্বকালের এবং সর্বযুগের জন্য প্রযোজ্য। অবশ্য কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে আয়াতটি নাজেল হয় তফসীরকারদের মধ্যে মতভেদ আছে। কিন্তু এর যে উপদেশ বা শিক্ষা তা সার্বজনীন।
আয়াতঃ 002.243
তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যারা মৃত্যুর ভয়ে নিজেদের ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন? অথচ তারা ছিল হাজার হাজার। তারপর আল্লাহ তাদেরকে বললেন মরে যাও। তারপর তাদেরকে জীবিত করে দিলেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের উপর অনুগ্রহকারী। কিন্তু অধিকাংশ লোক শুকরিয়া প্রকাশ করে না।
Did you (O Muhammad SAW) not think of those who went forth from their homes in thousands, fearing death? Allâh said to them, ”Die”. And then He restored them to life. Truly, Allâh is full of Bounty to mankind, but most men thank not.
أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ خَرَجُواْ مِن دِيَارِهِمْ وَهُمْ أُلُوفٌ حَذَرَ الْمَوْتِ فَقَالَ لَهُمُ اللّهُ مُوتُواْ ثُمَّ أَحْيَاهُمْ إِنَّ اللّهَ لَذُو فَضْلٍ عَلَى النَّاسِ وَلَـكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لاَ يَشْكُرُونَ
Alam tara ila allatheena kharajoo min diyarihim wahum oloofun hathara almawti faqala lahumu Allahu mootoo thumma ahyahum inna Allaha lathoo fadlin AAala alnnasi walakinna akthara alnnasi la yashkuroona
YUSUFALI: Didst thou not Turn by vision to those who abandoned their homes, though they were thousands (In number), for fear of death? Allah said to them: “Die”: Then He restored them to life. For Allah is full of bounty to mankind, but Most of them are ungrateful.
PICKTHAL: Bethink thee (O Muhammad) of those of old, who went forth from their habitations in their thousands, fearing death, and Allah said unto them: Die; and then He brought them back to life. Lo! Allah is a Lord of Kindness to mankind, but most of mankind give not thanks.
SHAKIR: Have you not considered those who went forth from their homes, for fear of death, and they were thousands, then Allah said to them, Die; again He gave them life; most surely Allah is Gracious to people, but most people are not grateful.
KHALIFA: Have you noted those who fled their homes – though they were in the thousands – fearing death? GOD said to them, “Die,” then revived them. GOD showers His grace upon the people, but most people are unappreciative.
২৪১। তালাকপ্রাপ্ত নারীদের ন্যায়সঙ্গত [মানে] ভরণ পোষণ দেবে। পূণ্যাত্মাদের জন্য এটা কর্তব্য।
২৪২। এভাবেই আল্লাহ্ তাঁর বিধান সমূহ তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট করেছেনে যেনো তোমরা বুঝতে পার।
রুকু – ৩২
২৪৩। তুমি কি তাদের দেখ নাই, যারা মৃত্যুভয়ে তাদের গৃহ পরিত্যাগ করেছিলো, যদিও তারা [সংখ্যায়] ছিলো হাজারে হাজার? আল্লাহ্ তাদের বলেছিলেন, ‘তোমাদের মৃত্যু হোক’। অতঃপর আল্লাহ্ তাদের জীবিত করেছিলেন ২৭৪। মানুষের প্রতি আল্লাহ্ অনুগ্রহে পূর্ণ; কিন্তু তাদের অধিকাংশই অকৃতজ্ঞ।
২৭৪। এই আয়াতে আমরা আবার জিহাদের কথায় ফিরে এলাম যা পূর্বে [২:২১৪-২১৬] বর্ণনা করা হয়েছে। জিহাদ সম্পর্কে আমাদের কোনও রকম ভ্রান্ত ধারণা থাকা উচিত নয়। একথা সর্বদা বিশ্বাস রাখা কর্তব্য যে জীবন ও মৃত্যুর মালিক একমাত্র আল্লাহ্। যদি আমরা আমাদের ঈমান বা বিশ্বাসের জন্য যুদ্ধ করতে প্রস্তুত না থাকি; যদি আমরা আমাদের বিশ্বাসের অস্তিত্ব রক্ষা করার জন্য আমাদের সমস্ত বিষয় সম্পত্তি, সহায়-সম্বল, আমাদের সর্ব প্রচেষ্টা নিয়োগ না করি, তবে অচিরেই আমাদের সযত্নে রক্ষিত অর্থ-সম্পদ, সহায়-সম্বল শত্রু কবলিত হয়ে যাবে। জীবন ও মৃত্যুর মালিক আল্লাহ্। ভীতুরা মনে করে সযত্নে রক্ষা করায় তারা হয়তো মৃত্যুকে এড়াতে সক্ষম হবে, কিম্বা শত্রুর কাছে আত্ম নিবেদন করে নিজেকে এবং অর্থ সম্পদ রক্ষা করতে সক্ষম হবে। কিন্তু ইতিহাসই এর প্রমাণ বহন করে। যারা মৃত্যুকে বা ক্ষতিকে এড়ানোর জন্য ধর্ম যুদ্ধকে পরিহার করে এবং শত্রুর কাছে ভীতুর ন্যায় আত্মসমর্পন করে, তারা এর কোনটা থেকেই রেহাই পায় না। সংখ্যায় অধিক থাকলেও তাদের ভাগ্যে থাকে অপমানজনক মৃত্যু। এই উপদেশটি সর্বকালের এবং সর্বযুগের জন্য প্রযোজ্য। অবশ্য কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে আয়াতটি নাজেল হয় তফসীরকারদের মধ্যে মতভেদ আছে। কিন্তু এর যে উপদেশ বা শিক্ষা তা সার্বজনীন।
আয়াতঃ 002.244
আল্লাহর পথে লড়াই কর এবং জেনে রাখ, নিঃসন্দেহে আল্লাহ সবকিছু জানেন, সবকিছু শুনেন।
And fight in the Way of Allâh and know that Allâh is All-Hearer, All-Knower.
وَقَاتِلُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ وَاعْلَمُواْ أَنَّ اللّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
Waqatiloo fee sabeeli Allahi waiAAlamoo anna Allaha sameeAAun AAaleemun
YUSUFALI: Then fight in the cause of Allah, and know that Allah Heareth and knoweth all things.
PICKTHAL: Fight in the way of Allah, and know that Allah is Hearer, Knower.
SHAKIR: And fight in the way of Allah, and know that Allah is Hearing, Knowing.
KHALIFA: You shall fight in the cause of GOD, and know that GOD is Hearer, Knower.
২৪৪। সুতরাং আল্লাহ্র রাস্তায় যুদ্ধ কর এবং জেনে রেখ আল্লাহ্ সবকিছু শোনেন এবং সব কিছু জানেন ২৭৫।
২৭৫। এই আয়াতে পূর্বের আয়াতের বক্তব্যকে সমর্থন করা হচ্ছে। জেহাদ করতে হবে আল্লাহ্র আইনকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য। যে যুদ্ধ স্বার্থ বা লোভের জন্য সংগঠিত হয় তা জেহাদ বা আল্লাহ্র জন্য যুদ্ধ নয়। আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ। অর্থাৎ আমাদের সব কাজ, সব কথা, চিন্তা-ভাবনা, নিয়ত সবকিছু আমাদের থেকে আল্লাহ্ই বেশী জানেন। আমরা আমাদের অন্তরের গোপন চিন্তা-ভাবনা বা ইচ্ছা মানুষের কাছে গোপন করতে পারি। আমাদের পাপ বাহিরের পৃথিবীর কাছে লুকিয়ে রাখতে পারি, কিন্তু আল্লাহ্র কাছে কিছুই গোপন থাকে না। [দেখুন ২ : ২১৬ এবং টীকা ২৩৬]
আয়াতঃ 002.245
এমন কে আছে যে, আল্লাহকে করজ দেবে, উত্তম করজ; অতঃপর আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ-বহুগুণ বৃদ্ধি করে দিবেন। আল্লাহই সংকোচিত করেন এবং তিনিই প্রশস্ততা দান করেন এবং তাঁরই নিকট তোমরা সবাই ফিরে যাবে।
Who is he that will lend to Allâh a goodly loan so that He may multiply it to him many times? And it is Allâh that decreases or increases (your provisions), and unto Him you shall return.
مَّن ذَا الَّذِي يُقْرِضُ اللّهَ قَرْضًا حَسَنًا فَيُضَاعِفَهُ لَهُ أَضْعَافًا كَثِيرَةً وَاللّهُ يَقْبِضُ وَيَبْسُطُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
Man tha allathee yuqridu Allaha qardan hasanan fayudaAAifahu lahu adAAafan katheeratan waAllahu yaqbidu wayabsutu wa-ilayhi turjaAAoona
YUSUFALI: Who is he that will loan to Allah a beautiful loan, which Allah will double unto his credit and multiply many times? It is Allah that giveth (you) Want or plenty, and to Him shall be your return.
PICKTHAL: Who is it that will lend unto Allah a goodly loan, so that He may give it increase manifold? Allah straiteneth and enlargeth. Unto Him ye will return.
SHAKIR: Who is it that will offer of Allah a goodly gift, so He will multiply it to him manifold, and Allah straitens and amplifies, and you shall be returned to Him.
KHALIFA: Who would lend GOD a loan of righteousness, to have it repaid to them multiplied manifold? GOD is the One who provides and withholds, and to Him you will be returned.
২৪৫। কে এমন আছ যে আল্লাহ্কে উত্তম ঋণ প্রদান করবে ২৭৬; আল্লাহ্ যা দ্বিগুণ পরিশোধ করবেন এবং বহুগুণ বাড়িয়ে দেবেন? আল্লাহ্-ই [তোমাদের] অভাব ও প্রাচুর্য [উভয়ই] দেন, এবং তাঁর কাছেই তোমরা হবে প্রত্যাণীত।
২৭৬। আল্লাহ্র রাস্তায় বা সৎ কাজে খরচ করাকে রূপকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে “উত্তম ঋণ”। বহু কারণেই এই ঋণকে উত্তম বলা যায়। (১) এর মাধ্যমে নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগের প্রেরণা জন্মলাভ করে। (২) সাধারণভাবে অর্থ ঋণদানের ব্যাপারে অর্থ ফেরৎ পাওয়া বা না পাওয়ার একটা আশঙ্কা থাকে। কিন্তু এখানে আমরা সৎ কাজের মাধ্যমে যে ব্যয় করি তা আল্লাহ্র জন্য, আল্লাহ্কে পাওয়ার সাধনা। এ জীবন হচ্ছে পরকালের জন্য শিক্ষানবীশ কাল [Probationary Period] তবে কি আমরা আল্লাহ্র আইন প্রতিষ্ঠার নিয়তে সৎ কাজে অর্থ ব্যয় করতে পিছিয়ে যেতে পারি?
আয়াতঃ 002.246
আয়াতঃ 002.247
আর তাদেরকে তাদের নবী বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তালূতকে তোমাদের জন্য বাদশাহ সাব্যস্ত করেছেন। তারা বলতে লাগল তা কেমন করে হয় যে, তার শাসন চলবে আমাদের উপর। অথচ রাষ্ট্রক্ষমতা পাওয়ার ক্ষেত্রে তার চেয়ে আমাদেরই অধিকার বেশী। আর সে সম্পদের দিক দিয়েও সচ্ছল নয়। নবী বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর তাকে পছন্দ করেছেন এবং স্বাস্থ্য ও জ্ঞানের দিক দিয়ে প্রাচুর্য দান করেছেন। বস্তুতঃ আল্লাহ তাকেই রাজ্য দান করেন, যাকে ইচ্ছা। আর আল্লাহ হলেন অনুগ্রহ দানকারী এবং সব বিষয়ে অবগত।
And their Prophet (Samuel ) said to them, ”Indeed Allâh has appointed Talût (Saul) as a king over you.” They said, ”How can he be a king over us when we are better fitted than him for the kingdom, and he has not been given enough wealth.” He said: ”Verily, Allâh has chosen him above you and has increased him abundantly in knowledge and stature. And Allâh grants His Kingdom to whom He wills. And Allâh is All-Sufficient for His creatures’ needs, All-Knower.”
وَقَالَ لَهُمْ نَبِيُّهُمْ إِنَّ اللّهَ قَدْ بَعَثَ لَكُمْ طَالُوتَ مَلِكًا قَالُوَاْ أَنَّى يَكُونُ لَهُ الْمُلْكُ عَلَيْنَا وَنَحْنُ أَحَقُّ بِالْمُلْكِ مِنْهُ وَلَمْ يُؤْتَ سَعَةً مِّنَ الْمَالِ قَالَ إِنَّ اللّهَ اصْطَفَاهُ عَلَيْكُمْ وَزَادَهُ بَسْطَةً فِي الْعِلْمِ وَالْجِسْمِ وَاللّهُ يُؤْتِي مُلْكَهُ مَن يَشَاء وَاللّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
Waqala lahum nabiyyuhum inna Allaha qad baAAatha lakum taloota malikan qaloo anna yakoonu lahu almulku AAalayna wanahnu ahaqqu bialmulki minhu walam yu/ta saAAatan mina almali qala inna Allaha istafahu AAalaykum wazadahu bastatan fee alAAilmi waaljismi waAllahu yu/tee mulkahu man yashao waAllahu wasiAAun AAaleemun
YUSUFALI: Their Prophet said to them: “Allah hath appointed Talut as king over you.” They said: “How can he exercise authority over us when we are better fitted than he to exercise authority, and he is not even gifted, with wealth in abundance?” He said: “Allah hath Chosen him above you, and hath gifted him abundantly with knowledge and bodily prowess: Allah Granteth His authority to whom He pleaseth. Allah careth for all, and He knoweth all things.”
PICKTHAL: Their Prophet said unto them: Lo! Allah hath raised up Saul to be a king for you. They said: How can he have kingdom over us when we are more deserving of the kingdom than he is, since he hath not been given wealth enough? He said: Lo! Allah hath chosen him above you, and hath increased him abundantly in wisdom and stature. Allah bestoweth His Sovereignty on whom He will. Allah is All-Embracing, All-Knowing.
SHAKIR: And their prophet said to them: Surely Allah has raised Talut to be a king over you. They said: How can he hold kingship over us while we have a greater right to kingship than he, and he has not been granted an abundance of wealth? He said: Surely Allah has chosen him in preference to you, and He has increased him abundantly in knowledge and physique, and Allah grants His kingdom to whom He pleases, and Allah is Amplegiving, Knowing.
KHALIFA: Their prophet said to them, “GOD has appointed Taloot (Saul) to be your king.” They said, “How can he have kingship over us when we are more worthy of kingship than he; he is not even rich?” He said, “GOD has chosen him over you, and has blessed him with an abundance in knowledge and in body.” GOD grants His kingship to whomever He wills. GOD is Bounteous, Omniscient.
২৪৭। তাদের নবী বলেছিলো, ‘আল্লাহ্ তালূতকে ২৮০ তোমাদের রাজা নিযুক্ত করেছেন।’ তারা বলেছিলো, ‘সে কিভাবে আমাদের উপরে কর্তৃত্ব করবে, যখন কর্তৃত্বের জন্য আমরা তার অপেক্ষা অধিক যোগ্যতা সম্পন্ন; অধিকন্তু যেখানে তাকে প্রচুর ধন-সম্পদ দেয়া হয় নাই?’ সে বলেছিলো, ‘আল্লাহ্ তাঁকে তোমাদের উপরে মনোনীত করেছেন এবং তাঁকে জ্ঞানে ও শারীরিক শক্তিকে ধন্য করেছেন।’ আল্লাহ্ যাকে খুশী তার [পক্ষ থেকে] কর্তৃত্ব অনুমোদন করেন। আল্লাহ্ সকল কিছুর প্রতি যত্নবান এবং তিনি সকল কিছুই জানেন।
২৮০। Saul এই নামটি বাইবেলে ব্যবহার করা হয়েছে যার আরবী ভাষান্তর হচ্ছে তালূত। তালূত ছিলেন বেনজামিনের গোত্রভূক্ত। বেনজামিনের গোত্র ছিল ইসরাঈলীদের একটি ছোট গোত্র। তালূত ছিলেন লম্বা এবং সুন্দর কিন্তু অত্যন্ত দরিদ্র। একদিন তিনি যখন তার পিতার হারানো গাধার সন্ধান করেছিলেন সে সময়ে তার সাথে স্যামুয়েলের সাক্ষাত হয়। স্যামুয়েল তাকে ইসরাঈলী সম্প্রদায়ের রাজা নিযুক্ত করেন। তার নাম ঘোষণার সাথে সাথে ইহুদীদের মধ্যে মতভেদের শুরু হয়ে যায়। তারা নানাভাবে এর বাধা দান করে। তাদের নানা ওজর আপত্তি ছিল বাইরে লোক দেখানো। তাদের প্রত্যেকের একটাই উদ্দেশ্য ছিল, তা ছিল তাদের স্বার্থপরতা। প্রত্যেকেরই মনের গোপন ইচ্ছা ছিল রাজা হওয়ার। তাদের এই রাজা হওয়ার ইচ্ছার পিছনে কোনও মহৎ উদ্দেশ্য ছিল না। উদ্দেশ্য ছিল শুধু নিজস্ব ভোগ বিলাস এবং আত্মপ্রচার ও অহংকার।
[উপদেশ হচ্ছে যুগে যুগে খারাপ লোকের মধ্যে এই মানসিকতার সন্ধান পাওয়া যায়। যে দেশের জনগণের নৈতিক চরিত্র যত খারাপ তাদের মধ্যে প্রভাব প্রতিপত্তির মোহ তত বেশী দেখা যায়। এসব লোক জনগণের নামে ক্ষমতা দখল করতে চায়। কিন্তু জনগণের কল্যাণ চায় না। [বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একই অবস্থা বিরাজমান।]
আয়াতঃ 002.248
বনী-ইসরাঈলদেরকে তাদের নবী আরো বললেন, তালূতের নেতৃত্বের চিহ্ন হলো এই যে, তোমাদের কাছে একটা সিন্দুক আসবে তোমাদের পালকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের মনের সন্তুষ্টির নিমিত্তে। আর তাতে থাকবে মূসা, হারুন এবং তাঁদের সন্তানবর্গের পরিত্যক্ত কিছু সামগ্রী। সিন্দুকটিকে বয়ে আনবে ফেরেশতারা। তোমরা যদি ঈমানদার হয়ে থাক, তাহলে এতে তোমাদের জন্য নিশ্চিতই পরিপূর্ণ নিদর্শন রয়েছে।
And their Prophet (Samuel ) said to them: Verily! The sign of His Kingdom is that there shall come to you At-Tâbût (a wooden box), wherein is Sakinah (peace and reassurance) from your Lord and a remnant of that which Musâ (Moses) and Hârûn (Aaron) left behind, carried by the angels. Verily, in this is a sign for you if you are indeed believers.
وَقَالَ لَهُمْ نِبِيُّهُمْ إِنَّ آيَةَ مُلْكِهِ أَن يَأْتِيَكُمُ التَّابُوتُ فِيهِ سَكِينَةٌ مِّن رَّبِّكُمْ وَبَقِيَّةٌ مِّمَّا تَرَكَ آلُ مُوسَى وَآلُ هَارُونَ تَحْمِلُهُ الْمَلآئِكَةُ إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَةً لَّكُمْ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ
Waqala lahum nabiyyuhum inna ayata mulkihi an ya/tiyakumu alttabootu feehi sakeenatun min rabbikum wabaqiyyatun mimma taraka alu moosa waalu haroona tahmiluhu almala-ikatu inna fee thalika laayatan lakum in kuntum mu/mineena
YUSUFALI: And (further) their Prophet said to them: “A Sign of his authority is that there shall come to you the Ark of the covenant, with (an assurance) therein of security from your Lord, and the relics left by the family of Moses and the family of Aaron, carried by angels. In this is a symbol for you if ye indeed have faith.”
PICKTHAL: And their Prophet said unto them: Lo! the token of his kingdom is that there shall come unto you the ark wherein is peace of reassurance from your Lord, and a remnant of that which the house of Moses and the house of Aaron left behind, the angels bearing it. Lo! herein shall be a token for you if (in truth) ye are believers.
SHAKIR: And the prophet said to them: Surely the sign of His kingdom is, that there shall come to you the chest in which there is tranquillity from your Lord and residue of the relics of what the children of Musa and the children of Haroun have left, the angels bearing it; most surely there is a sign in this for those who believe.
KHALIFA: Their prophet said to them, “The sign of his kingship is that the Ark of the Covenant will be restored to you, bringing assurances from your Lord, and relics left by the people of Moses and the people of Aaron. It will be carried by the angels. This should be a convincing sign for you, if you are really believers.”
২৪৮। [উপরন্তু] তাদের নবী বলেছিলো, ‘তাঁর কর্তৃত্বের নিদর্শন এই যে, মুসা ও হারুনের বংশধরগণ দ্বারা পরিত্যক্ত স্মারক ‘তাবুক’ ২৮১ তোমাদের নিকট ফেরত আসবে, যা তোমাদের প্রভুর নিকট থেকে নিরাপত্তার [আশ্বাস বাণী] স্বরূপ ২৮২। ফেরেশতারা তা বহন করে আনবে ২৮৩।’ যদি তোমাদের বিশ্বাস বা ঈমান প্রকৃত খাঁটি হয় তবে এর মধ্যে আছে প্রতীক [তোমাদের জন্য]।
২৮১। তাবুক বা ‘Ark of Covenant’- বা পবিত্র সিন্ধুক। এই সিন্ধুকটি ছিল আকাশিয়া কাঠের তৈরি। এর মাপ ছিল ৫’´৩’´৩’। এর পুরোটা সোনার পাত দ্বারা আবৃত [see Exad xxv ১০-১২] এর ভিতরে আল্লাহ্র কাছ থেকে হযরত মুসার পাওয়া আল্লাহ্র বাণীসমূহ সংরক্ষিত ছিল। অর্থাৎ হযরত মুসার পাওয়া পাথরের উপরে খোদাই করা আল্লাহ্র বাণী সমূহ সংরক্ষিত থাকতো। এই সিন্ধুকটি ছিল ইহুদীদের অত্যন্ত পবিত্র আমানত। পয়গম্বর স্যামুয়েলের জীবনের প্রথম ভাগে ইসরাঈলীরা এই পবিত্র সিন্ধুকটির অভিভাবকত্ব হারায় [টিকা ২৭৮ আয়াত ২:২৪৬] যখন এই সিন্ধুকটি পরিত্যক্ত হয়ে বিশ বছর সিন্ধুকটি একটি গ্রামে পতিত অবস্থায় পড়ে ছিল। পরে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পরে সিন্ধুকটি রাজধানীতে আনা হয়। এই সিন্ধুকটি পরবর্তীতে একতা এবং শাসন ক্ষমতার প্রতীকরূপে ব্যবহৃত হয়।
[উপদেশঃ আল্লাহ্র বাণী অনুযায়ী জীবন যাপন করাই হচ্ছে আল্লাহ্র প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা এবং তা হচ্ছে জীবনের সাফল্যের চাবিকাটি। তা না করে আল্লাহ্র বাণীকে বাক্সবন্দী করে রেখে, খুশীমত জীবন যাপন করা এবং আল্লাহ্র করুণার প্রত্যাশা করা মূর্খতা। আজকে মুসলিম সমাজে অনেকেই কুরআনের অর্থ না বুঝে কুরআন তেলওয়াত করে এবং শ্রদ্ধার সাথে ধর্মপুস্তক বাক্সবন্দী করে রাখে। কিন্তু বাস্তব জীবনে কুরআনের শিক্ষার কোনও প্রতিফলন নাই। ফলে মুসলমান সমাজ আল্লাহ্র করুণা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।]
২৮২। ‘Sakina’ ব নিরাপত্তা, শান্তি, প্রশান্তকারী। রাজা সোলাইমান যখন মসজিদ তৈয়ার করলেন সেখানে এই পবিত্র সিন্ধুকটি রক্ষিত ছিল এবং এই কথাটি ‘Sakina’-লেখা ছিল আল্লাহ্র মহিমার প্রতীক স্বরূপ।
২৮৩। “ফেরেশতারা ইহা বহন করিয়া আনিবে” – ইহা অর্থাৎ পবিত্র সিন্ধুকটি।
আয়াতঃ 002.249
অতঃপর তালূত যখন সৈন্য-সামন্ত নিয়ে বেরুল, তখন বলল, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদিগকে পরীক্ষা করবেন একটি নদীর মাধ্যমে। সুতরাং যে লোক সেই নদীর পানি পান করবে সে আমার নয়। আর যে, লোক তার স্বাদ গ্রহণ করলো না, নিশ্চয়ই সে আমার লোক। কিন্তু যে লোক হাতের আঁজলা ভরে সামান্য খেয়ে নেবে তার দোষঅবশ্য তেমন গুরুতর হবে না। অতঃপর সবাই পান করল সে পানি, সামান্য কয়েকজন ছাড়া। পরে তালূত যখন তা পার হলো এবং তার সাথে ছিল মাত্র কয়েকজন ঈমানদার, তখন তারা বলতে লাগল, আজকের দিনে জালূত এবং তার সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করার শক্তি আমাদের নেই, যাদের ধারণা ছিল যে, আল্লাহর সামনে তাদের একদিন উপস্থিত হতে হবে, তারা বার বার বলতে লাগল, সামান্য দলই বিরাট দলের মোকাবেলায় জয়ী হয়েছে আল্লাহর হুকুমে। আর যারা ধৈর্য্যশীল আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছেন।
Then when Talût (Saul) set out with the army, he said: ”Verily! Allâh will try you by a river. So whoever drinks thereof, he is not of me, and whoever tastes it not, he is of me, except him who takes (thereof) in the hollow of his hand.” Yet, they drank thereof, all, except a few of them. So when he had crossed it (the river), he and those who believed with him, they said: ”We have no power this day against Jalût (Goliath) and his hosts.” But those who knew with certainty that they were to meet their Lord, said: ”How often a small group overcame a mighty host by Allâh’s Leave?” And Allâh is with As-Sâbirin (the patient ones, etc.).
فَلَمَّا فَصَلَ طَالُوتُ بِالْجُنُودِ قَالَ إِنَّ اللّهَ مُبْتَلِيكُم بِنَهَرٍ فَمَن شَرِبَ مِنْهُ فَلَيْسَ مِنِّي وَمَن لَّمْ يَطْعَمْهُ فَإِنَّهُ مِنِّي إِلاَّ مَنِ اغْتَرَفَ غُرْفَةً بِيَدِهِ فَشَرِبُواْ مِنْهُ إِلاَّ قَلِيلاً مِّنْهُمْ فَلَمَّا جَاوَزَهُ هُوَ وَالَّذِينَ آمَنُواْ مَعَهُ قَالُواْ لاَ طَاقَةَ لَنَا الْيَوْمَ بِجَالُوتَ وَجُنودِهِ قَالَ الَّذِينَ يَظُنُّونَ أَنَّهُم مُّلاَقُو اللّهِ كَم مِّن فِئَةٍ قَلِيلَةٍ غَلَبَتْ فِئَةً كَثِيرَةً بِإِذْنِ اللّهِ وَاللّهُ مَعَ الصَّابِرِينَ
Falamma fasala talootu bialjunoodi qala inna Allaha mubtaleekum binaharin faman shariba minhu falaysa minnee waman lam yatAAamhu fa-innahu minnee illa mani ightarafa ghurfatan biyadihi fashariboo minhu illa qaleelan minhum falamma jawazahu huwa waallatheena amanoo maAAahu qaloo la taqata lana alyawma bijaloota wajunoodihi qala allatheena yathunnoona annahum mulaqoo Allahi kam min fi-atin qaleelatin ghalabat fi-atan katheeratan bi-ithni Allahi waAllahu maAAa alssabireena
YUSUFALI: When Talut set forth with the armies, he said: “Allah will test you at the stream: if any drinks of its water, He goes not with my army: Only those who taste not of it go with me: A mere sip out of the hand is excused.” but they all drank of it, except a few. When they crossed the river,- He and the faithful ones with him,- they said: “This day We cannot cope with Goliath and his forces.” but those who were convinced that they must meet Allah, said: “How oft, by Allah’s will, Hath a small force vanquished a big one? Allah is with those who steadfastly persevere.”
PICKTHAL: And when Saul set out with the army, he said: Lo! Allah will try you by (the ordeal of) a river. Whosoever therefore drinketh thereof he is not of me, and whosoever tasteth it not he is of me, save him who taketh (thereof) in the hollow of his hand. But they drank thereof, all save a few of them. And after he had crossed (the river), he and those who believed with him, they said: We have no power this day against Goliath and his hosts. But those who knew that they would meet Allah exclaimed: How many a little company hath overcome a mighty host by Allah’s leave! Allah is with the steadfast.
SHAKIR: So when Talut departed with the forces, he said: Surely Allah will try you with a river; whoever then drinks from it, he is not of me, and whoever does not taste of it, he is surely of me, except he who takes with his hand as much of it as fills the hand; but with the exception of a few of them they drank from it. So when he had crossed it, he and those who believed with him, they said: We have today no power against Jalut and his forces. Those who were sure that they would meet their Lord said: How often has a small party vanquished a numerous host by Allah’s permission, and Allah is with the patient.
KHALIFA: When Saul took command of the troops, he said, “GOD is putting you to the test by means of a stream. Anyone who drinks from it does not belong with me – only those who do not taste it belong with me – unless it is just a single sip.” They drank from it, except a few of them. When he crossed it with those who believed, they said, “Now we lack the strength to face Goliath and his troops.” Those who were conscious of meeting GOD said, “Many a small army defeated a large army by GOD’s leave. GOD is with those who steadfastly persevere.”
রুকু – ৩৩
২৪৯। অতঃপর যখন তালূত সৈন্যবাহিনীসহ বের হলো, সে তখন বলেছিলো, “আল্লাহ্ তোমাদের এক নদী দ্বারা পরীক্ষা করবেন ২৮৪ কেউ যদি এর পানি পান করে তবে সে আমার সেনাবাহিনীর সাথে অগ্রসর হবে না। কেবল তারাই আমার সাথে অগ্রসর হবে যারা তা থেকে পান করবে না। [অবশ্য] এক গন্ডুষ পানি যে পান করবে তাঁকে ক্ষমা করা হবে।” কিন্তু তাদের মাঝে স্বল্প সংখ্যক ব্যতীত সকলেই তা পান করলো। সে এবং তাঁর সঙ্গী ঈমানদারগণ যখন উহা [নদী] অতিক্রম করলো, তখন তারা বলেছিলো, “আজকে আমরা জালুত ও তাঁর সেনাবাহিনীর সাথে শক্তিতে পেরে উঠবো না ২৮৫।” কিন্তু তাদের মধ্যে যাদের আল্লাহ্র সাথে সাক্ষাৎ সম্বন্ধে দৃঢ় প্রত্যয় ছিলো তারা বলেছিলো, ” আল্লাহ্র ইচ্ছায় বার বার কি ক্ষুদ্র দল বৃহৎ দলকে পরাভুত করে নাই ?” যারা দৃঢ়তার সাথে অধ্যাবসায়ী হয়, আল্লাহ্ তাদের সাথে থাকেন।
২৮৪। যুদ্ধক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে সৈনিকের শৃঙ্খলার। সেনাপতির আদেশ হবে শিরোধার্য। যদি যুদ্ধক্ষেত্রে সাধারণ সৈনিকেরা সেনাপতির আদেশ লঙ্ঘন করে এবং খেয়াল খুশীমত চলে; তবে সৈন্য সংখ্যা যত বেশীই হোক না কেন সে যুদ্ধ জয়ের আশা সুদূর পরাহত। এ রকম উচ্ছৃঙ্খল সৈনিক থাকার থেকে না থাকাই ভালো। এরা পারে শুধু বিশৃঙ্খলা ও ত্রাসের সৃষ্টি করতে। তালুত ছিলেন আল্লাহ্ প্রদত্ত জ্ঞানে সমৃদ্ধ। উত্তপ্ত গরমে পদব্রজে দুর্গম পথ অতিক্রমের পরে স্বাভাবিকভাবে সবাই পিপাসায় ক্লান্ত হয়ে পড়বে। সে সময়ে ছোট নদী অতিক্রান্ত করার সময়ে স্বাভাবিকভাবে সবাই পানি পান করতে চাইবে। সত্যিকার ভাবে ইহুদীরা তালুতের (সেনাপতি) অনুগত কিনা এটা পরীক্ষা করার জন্য তালুত হুকুম জারী করলেন যে, কেউ যেনো নদী থেকে পানি পান না করে। এটা আল্লাহ্র পরীক্ষা। যারা পানি পান করবে তারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এবং অধিকাংশ ইহুদী এই পরীক্ষায় ব্যর্থতার পরিচয় দিল। স্বল্প সংখ্যাক এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সমর্থ হয়েছিল।
[উপদেশঃ প্রয়োজনের সময়ে খুব নগন্য সংখ্যক লোকই এগিয়ে আসে। উপরন্তু তখন কিছু লোকের অসহযোগ অন্যান্য লোককেও বিচলিত করে।]
২৮৫। যদিও নগণ্যসংখ্যক লোক বিশ্বস্ত ছিল তালুতের নেতৃত্বে। কিন্তু তাদের মধ্যেও বিভক্তি ছিল। তালুতের সেনাবাহিনীর মধ্যে একদল ছিল অসম্পূর্ণ ঈমানদার, যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে নাই। দ্বিতীয় দল : ঈমানদার যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলো ঠিকই কিন্তু যখন জালুতের (Goliath) বিরাট বাহিনীর সম্মুখীন হলো, তখন নিজেদের সংখ্যা কম বলে চিন্তা করেছিলো এবং তৃতীয় দল ছিল পূর্ণ ঈমানদার, যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং নিজেদের সংখ্যা লঘুষ্টতার কথাও চিন্তা করেন নাই। কারণ তাদের ভরসা ছিল একমাত্র আল্লাহ। কারণ তারা জানে যে তারা ন্যায় ও সত্যের জন্য যুদ্ধ করছে। এবং যারা ন্যায় ও সত্যের জন্য যুদ্ধ করে তাদের পক্ষে আল্লাহ্ যুদ্ধ করেন। সুতরাং তাদের কোনও ভয় নাই।
উপদেশঃ সংসারের যুদ্ধ ক্ষেত্রে প্রতিকূল শক্তি দেখে ভয় না পেয়ে আল্লাহ্র উপরে ভরসা স্থাপন করা পূর্ণ ঈমানের লক্ষণ। এখানে প্রতিকূল অর্থাৎ অন্যায় অবিচারের শক্তি ও ক্ষমতা দেখে ভয় না পেয়ে ন্যায় ও সত্য পথে আল্লাহ্র উপরে বিশ্বাস স্থাপন করে অগ্রসর হলে আল্লাহ্র সাহায্য সুনিশ্চিত।
আয়াতঃ 002.250
আর যখন তালূত ও তার সেনাবাহিনী শত্রুর সম্মুখীন হল, তখন বলল, হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের মনে ধৈর্য্য সৃষ্টি করে দাও এবং আমাদেরকে দৃঢ়পদ রাখ-আর আমাদের সাহায্য কর সে কাফের জাতির বিরুদ্ধে।
And when they advanced to meet Jalût (Goliath) and his forces, they invoked: ”Our Lord! Pour forth on us patience and make us victorious over the disbelieving people.”
وَلَمَّا بَرَزُواْ لِجَالُوتَ وَجُنُودِهِ قَالُواْ رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
Walamma barazoo lijaloota wajunoodihi qaloo rabbana afrigh AAalayna sabran wathabbit aqdamana waonsurna AAala alqawmi alkafireena
YUSUFALI: When they advanced to meet Goliath and his forces, they prayed: “Our Lord! Pour out constancy on us and make our steps firm: Help us against those that reject faith.”
PICKTHAL: And when they went into the field against Goliath and his hosts they said: Our Lord! Bestow on us endurance, make our foothold sure, and give us help against the disbelieving folk.
SHAKIR: And when they went out against Jalut and his forces they said: Our Lord, pour down upon us patience, and make our steps firm and assist us against the unbelieving people.
KHALIFA: When they faced Goliath and his troops, they prayed, “Our Lord, grant us steadfastness, strengthen our foothold, and support us against the disbelieving people.”
২৫০। যখন তারা জালুত ও তাঁর সেনাবাহিনীর সম্মুখীন হলো, তারা প্রার্থনা করেছিলো, “হে আমাদের প্রভু ! আমাদের [চিত্তে] স্থিরতা দান কর এবং আমাদের পা অবিচলিত রাখ। যারা ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য কর।”
২৫১। আল্লাহ্র ইচ্ছায় তারা তাদের ছত্রভঙ্গ করলো। এবং দাউদ জালুতকে সংহার করলো ২৮৬। আল্লাহ্ তাঁকে দান করেছিলেন ক্ষমতা ও প্রজ্ঞা এবং আল্লাহ্ যা ইচ্ছা করলেন তাই তাঁকে শিক্ষা দিলেন। আল্লাহ্ যদি মানব জাতির এক দলকে অন্য দল দ্বারা ২৮৭ প্রতিহত না করতেন তবে পৃথিবী বিপর্যস্ত হয়ে যেতো। কিন্তু আল্লাহ্ পৃথিবীর সকল কিছুর প্রতি অনুগ্রহে পূর্ণ ২৮৮।
২৮৬। কোরান শরীফে অনেক বর্ণনামূলক ঘটনাকে অল্প দুই এক লাইনে প্রকাশ করা হয়েছে। যেমনটি করা হয়েছে এখানে। ওল্ড টেস্টামেন্টে ঘটনাটির পূর্ণ বিবরণ আছে, কিন্তু এর যে মূল আবেদন মানুষের আত্মিক উন্নতির দিক, সে দিকটি ওল্ড টেস্টামেন্টে অনুপস্থিত। কুরআনে ঘটনাকে বর্ণনা করা হয়েছে রূপক হিসাবে যেনো আমরা এর থেকে মহত্তর শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি।
ডেভিড যার আরবী ভাষান্তর হচ্ছে দাউদ। তিনি ছিলেন একজন দরিদ্র যুবক, যার না ছিলো কোনও অস্ত্র, না ছিলো কোনও যুদ্ধ অভিজ্ঞতা। তিনি ছিলেন একজন সামান্য মেষপালক। তিনি তার গোত্রে এমনই একজন নগন্য ব্যক্তি ছিলেন যে ইসরাঈলদের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তাকে চিনতো না। মেষ পালক ডেভিড বা দাউদ যখন যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য অগ্রসর হলেন তার উপস্থিতি সকলের কাছে এত হাস্যকর মনে হলো যে, এমনকি তার বড় ভাই তাকে তিরষ্কার করেছিলো, কারণ মেষদের পরিত্যাগ করে আসার জন্য। একজন গরীব মেষপালক জালুতের মত শক্তিশালী এবং সুসংগঠিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে সেটা ইহুদীদের কাছেও একটা হাস্যকর প্রচেষ্টা বৈকি। এমনকি জালুত পর্যন্ত দাউদের উপস্থিতিকে হাস্যকর মনে করেছিলো। হত দরিদ্র, অস্ত্রবিহীন, মেষপালক দাউদের বাইরের রুপ সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে নাই, কিন্তু তার বিশ্বাস এবং ঈমানের দৃঢ়তা তাকে আল্লাহ্র চোখে বহুগুণ শক্তিশালী করেছিলো। দাউদ যখন জালুতকে সম্মুখ সমরে আহবান করলো, অস্ত্রবিহীন দাউদের উপস্থিতি জালুতের মনে হাসির উদ্রেক করলো। এ সময়ে জালুত অস্ত্রবিহীন দাউদকে তার নিজ অস্ত্র দ্বারা সাহায্য করতে চাইলেন। কিন্তু দাউদ তা গ্রহণ না করে, নদী থেকে কয়েকটি নুড়ি কুড়িয়ে নিলেন এবং নিজের গুলতীর সাহায্যে জালুতকে নুড়ি পাথর দ্বারা মস্তকে আঘাত করলেন। এতে জালুত ভীষণভাবে আহত হয়ে মাটিতে পড়ে যায় এবং দাউদ জালুতেরই তরবারী দ্বারা জালুতকে হত্যা করেন। জালুতের মৃত্যুর পরে জালুতের বাহিনীর মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। ফলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পলায়ন করে । ইহুদীরা তাদের পশ্চাদধাবন করে এবং হত্যা করে। কাহিনীর এখানেই শেষ।
[উপদেশঃ এই আয়াতের কাহিনীর মাধ্যমে আল্লাহ্ আমাদের অনেকগুলি নৈতিক উপদেশ দিচ্ছেন। এর প্রধান উপদেশ হচ্ছে, যদি আমরা আমাদের জাতীয় অস্তিত্ব এবং সংহতি রক্ষা করতে চাই, যদি আমরা আমাদের ধর্মকে নিরাপদ করতে চাই, তাহলে আমাদের প্রধান কর্তব্য হচ্ছে সাহস, দৃঢ়তা এবং আল্লাহ্র প্রতি ঐকান্তিক বিশ্বাসের সাথে শত্রুর মোকাবেলা করা। অন্যান্য যে সব উপদেশের কথা বলা হচ্ছে, তা হলো :
(১) যুদ্ধক্ষেত্রে বিপক্ষদলের সৈন্য সংখ্যা বা অস্ত্র সজ্জার আধিক্যই শেষ কথা নয়, যুদ্ধক্ষেত্রের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হচ্ছে নৈতিক মনোবল, বিশ্বাস, দৃঢ়তা এবং সর্বোপরি আল্লাহ্র উপরে আস্থা স্থাপন।
(২) যুদ্ধক্ষেত্রে নৈতিক মনোবলই প্রধান অস্ত্র। শত্রুপক্ষের সমরসজ্জা বা আয়তন দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নাই। আর এই নৈতিক মনোবল তখনই পাওয়া যায় যখন অস্ত্র ধারণ করা যায় অন্যায়, অসত্যের বিরুদ্ধে। সত্যের জন্য যুদ্ধ করার নৈতিকতা, সাহস এবং বিচক্ষণতার সাথে পরিকল্পনা করা [যেমন করেছিলেন দাউদ]।
(৩) বীর যোদ্ধা সব সময়ে নিজের শক্তি ও অস্ত্রের উপরে ভরসা রাখে, যেখানে যা সহজলভ্য তা-ই তার অস্ত্র হতে পারে [যেমন দাউদ ব্যবহার করেছিলেন নুড়ি পাথর]। আজকের পৃথিবীতে যে গেরিলা যুদ্ধ হচ্ছে তারা এই পথই অবলম্বন করে। পরিবেশকে তারা শত্রুনিধনের কাজে লাগায়।
(৪) যদি আল্লাহ্র রহমত আমরা পেতে পারি তবে শত্রুর অস্ত্র বুমেরাং এর মত তার নিজেরই ধ্বংসের কারণ হবে [জালুতকে, জালুতের তরবারী দ্বারা হত্যা করা হয়]।
(৫) নেতার ব্যক্তিত্ব, অধীনস্তদের দৃঢ়তার সাথে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে এবং শত্রুপক্ষের অন্তরে ত্রাসের সঞ্চার করে [যেমন দাউদের বীরত্ব বিপক্ষ দলের মনে ত্রাস এবং ইহুহীদের শত্রুদের ছত্রভঙ্গ করতে উৎসাহিত করে।]
(৬) বিশুদ্ধ ঈমান আল্লাহ্র সন্তুষ্টির কারণ, আল্লাহ্র রহমতের কারণ। এই রহমত বান্দার জীবনে বিভিন্নভাবে প্রবাহিত হতে পারে। যেমন – দাউদের ক্ষেত্রে আল্লাহ্র পুরস্কার বা রহমত ছিল; ক্ষমতা, জ্ঞান এবং আরও অন্যান্য চারিত্রিক গুণাবলী। [নীচের টিকা দেখুন।]
২৮৭। মেষপালক দাউদকে আল্লাহ্ যেসব গুণাবলীতে ভূষিত করেছিলেন সেগুলি হচ্ছে, বড় যোদ্ধা, রাজা, জ্ঞানী ব্যক্তি, পয়গম্বর ইত্যাদি। এ ব্যতীত দাউদ নবীকে আল্লাহ্ আর যে নেয়ামতে ধন্য করেছিলেন তা হচ্ছে তার কাব্য প্রতিভা ও সঙ্গীতে অসাধারণ দক্ষতা। অর্থাৎ একাধারে কবি ও সঙ্গীতজ্ঞ।
[উপদেশঃ ব্যক্তির চরিত্রের গুণাবলী বা Talent-ই হচ্ছে আল্লাহ্র সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত বা পুরস্কার।
২৮৮। আল্লাহ্র অস্তিত্ব বিশ্বব্রহ্মান্ড ব্যাপী। তিনি সর্বত্র বিদ্যমান। তিনি তার সৃষ্টিকে ভালোবাসেন, করুণা করেন, রক্ষা করেন [১ : ২] এবং পালন করেন। পৃথিবীর জীবনযাত্রায় আমরা দেখি প্রকৃতিতে শান্তি-শৃঙ্খলার মধ্যে (Peace harmony) এক অপূর্ব সমন্বয় সাধন করা হয়েছে। প্রাণীকূলের দিকে দৃষ্টি ফেরালে দেখি কেউ শক্তিশালী কেউ দুর্বল। কিন্তু প্রকৃতিতে আল্লাহ এমন বিধিবদ্ধ আইন করে দিয়েছেন যে, সবল ও দুর্বল সেই সৃষ্টির আদি থেকে শান্তি ও শৃঙ্খলার মধ্যে সমন্বয় করে বেঁচে আছে। তা না হলে দুর্বল পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতো। মানুষের বেলাতেও আল্লাহ্ একদল দ্বারা অন্য দলের ক্ষমতাকে সীমিত করেন, কারণ তাঁর সৃষ্টিতে সমতা রক্ষা করার জন্য এর প্রয়োজন আছে। বিশ্বব্যাপী আল্লাহ্র পরিকল্পনা বোঝার বা হৃদয়ঙ্গম করার ক্ষমতা আমাদের মত ক্ষুদ্র মানুষের নাই। তার জ্ঞান এবং পরিকল্পনা স্থান, কাল ও সময়ের উর্ধ্বে। সুতরাং আমাদের কর্তব্য হচ্ছে সর্বশক্তিশানের প্রতি অটল বিশ্বাস রাখা যে, তিনি আমাদের ভালোবাসেন এবং তার নেয়ামত সীমাহীন এবং তিনি আমাদের মঙ্গলাকাঙ্খী।
আয়াতঃ 002.251
তারপর ঈমানদাররা আল্লাহর হুকুমে জালূতের বাহিনীকে পরাজিত করে দিল এবং দাউদ জালূতকে হত্যা করল। আর আল্লাহ দাউদকে দান করলেন রাজ্য ও অভিজ্ঞতা। আর তাকে যা চাইলেন শিখালেন। আল্লাহ যদি একজনকে অপরজনের দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তাহলে গোটা দুনিয়া বিধ্বস্ত হয়ে যেতো। কিন্তু বিশ্ববাসীর প্রতি আল্লাহ একান্তই দয়ালু, করুণাময়।
So they routed them by Allâh’s Leave and Dawûd (David) killed Jalût (Goliath), and Allâh gave him [Dawûd (David)] the kingdom [after the death of Talût (Saul) and Samuel] and AlHikmah (Prophethood), and taught him of that which He willed. And if Allâh did not check one set of people by means of another, the earth would indeed be full of mischief. But Allâh is full of Bounty to the ’Alamîn (mankind, jinns and all that exists).
فَهَزَمُوهُم بِإِذْنِ اللّهِ وَقَتَلَ دَاوُدُ جَالُوتَ وَآتَاهُ اللّهُ الْمُلْكَ وَالْحِكْمَةَ وَعَلَّمَهُ مِمَّا يَشَاء وَلَوْلاَ دَفْعُ اللّهِ النَّاسَ بَعْضَهُمْ بِبَعْضٍ لَّفَسَدَتِ الأَرْضُ وَلَـكِنَّ اللّهَ ذُو فَضْلٍ عَلَى الْعَالَمِينَ
Fahazamoohum bi-ithni Allahi waqatala dawoodu jaloota waatahu Allahu almulka waalhikmata waAAallamahu mimma yashao walawla dafAAu Allahi alnnasa baAAdahum bibaAAdin lafasadati al-ardu walakinna Allaha thoo fadlin AAala alAAalameena
YUSUFALI: By Allah’s will they routed them; and David slew Goliath; and Allah gave him power and wisdom and taught him whatever (else) He willed. And did not Allah Check one set of people by means of another, the earth would indeed be full of mischief: But Allah is full of bounty to all the worlds.
PICKTHAL: So they routed them by Allah’s leave and David slew Goliath; and Allah gave him the kingdom and wisdom, and taught him of that which He willeth. And if Allah had not repelled some men by others the earth would have been corrupted. But Allah is a Lord of Kindness to (His) creatures.
SHAKIR: So they put them to flight by Allah’s permission. And Dawood slew Jalut, and Allah gave him kingdom and wisdom, and taught him of what He pleased. And were it not for Allah’s repelling some men with others, the earth would certainly be in a state of disorder; but Allah is Gracious to the creatures.
KHALIFA: They defeated them by GOD’s leave, and David killed Goliath. GOD gave him kingship and wisdom, and taught him as He willed. If it were not for GOD’s support of some people against others, there would be chaos on earth. But GOD showers His grace upon the people.
২৫০। যখন তারা জালুত ও তাঁর সেনাবাহিনীর সম্মুখীন হলো, তারা প্রার্থনা করেছিলো, “হে আমাদের প্রভু ! আমাদের [চিত্তে] স্থিরতা দান কর এবং আমাদের পা অবিচলিত রাখ। যারা ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য কর।”
২৫১। আল্লাহ্র ইচ্ছায় তারা তাদের ছত্রভঙ্গ করলো। এবং দাউদ জালুতকে সংহার করলো ২৮৬। আল্লাহ্ তাঁকে দান করেছিলেন ক্ষমতা ও প্রজ্ঞা এবং আল্লাহ্ যা ইচ্ছা করলেন তাই তাঁকে শিক্ষা দিলেন। আল্লাহ্ যদি মানব জাতির এক দলকে অন্য দল দ্বারা ২৮৭ প্রতিহত না করতেন তবে পৃথিবী বিপর্যস্ত হয়ে যেতো। কিন্তু আল্লাহ্ পৃথিবীর সকল কিছুর প্রতি অনুগ্রহে পূর্ণ ২৮৮।
২৮৬। কোরান শরীফে অনেক বর্ণনামূলক ঘটনাকে অল্প দুই এক লাইনে প্রকাশ করা হয়েছে। যেমনটি করা হয়েছে এখানে। ওল্ড টেস্টামেন্টে ঘটনাটির পূর্ণ বিবরণ আছে, কিন্তু এর যে মূল আবেদন মানুষের আত্মিক উন্নতির দিক, সে দিকটি ওল্ড টেস্টামেন্টে অনুপস্থিত। কুরআনে ঘটনাকে বর্ণনা করা হয়েছে রূপক হিসাবে যেনো আমরা এর থেকে মহত্তর শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি।
ডেভিড যার আরবী ভাষান্তর হচ্ছে দাউদ। তিনি ছিলেন একজন দরিদ্র যুবক, যার না ছিলো কোনও অস্ত্র, না ছিলো কোনও যুদ্ধ অভিজ্ঞতা। তিনি ছিলেন একজন সামান্য মেষপালক। তিনি তার গোত্রে এমনই একজন নগন্য ব্যক্তি ছিলেন যে ইসরাঈলদের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তাকে চিনতো না। মেষ পালক ডেভিড বা দাউদ যখন যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য অগ্রসর হলেন তার উপস্থিতি সকলের কাছে এত হাস্যকর মনে হলো যে, এমনকি তার বড় ভাই তাকে তিরষ্কার করেছিলো, কারণ মেষদের পরিত্যাগ করে আসার জন্য। একজন গরীব মেষপালক জালুতের মত শক্তিশালী এবং সুসংগঠিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে সেটা ইহুদীদের কাছেও একটা হাস্যকর প্রচেষ্টা বৈকি। এমনকি জালুত পর্যন্ত দাউদের উপস্থিতিকে হাস্যকর মনে করেছিলো। হত দরিদ্র, অস্ত্রবিহীন, মেষপালক দাউদের বাইরের রুপ সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে নাই, কিন্তু তার বিশ্বাস এবং ঈমানের দৃঢ়তা তাকে আল্লাহ্র চোখে বহুগুণ শক্তিশালী করেছিলো। দাউদ যখন জালুতকে সম্মুখ সমরে আহবান করলো, অস্ত্রবিহীন দাউদের উপস্থিতি জালুতের মনে হাসির উদ্রেক করলো। এ সময়ে জালুত অস্ত্রবিহীন দাউদকে তার নিজ অস্ত্র দ্বারা সাহায্য করতে চাইলেন। কিন্তু দাউদ তা গ্রহণ না করে, নদী থেকে কয়েকটি নুড়ি কুড়িয়ে নিলেন এবং নিজের গুলতীর সাহায্যে জালুতকে নুড়ি পাথর দ্বারা মস্তকে আঘাত করলেন। এতে জালুত ভীষণভাবে আহত হয়ে মাটিতে পড়ে যায় এবং দাউদ জালুতেরই তরবারী দ্বারা জালুতকে হত্যা করেন। জালুতের মৃত্যুর পরে জালুতের বাহিনীর মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। ফলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পলায়ন করে । ইহুদীরা তাদের পশ্চাদধাবন করে এবং হত্যা করে। কাহিনীর এখানেই শেষ।
[উপদেশঃ এই আয়াতের কাহিনীর মাধ্যমে আল্লাহ্ আমাদের অনেকগুলি নৈতিক উপদেশ দিচ্ছেন। এর প্রধান উপদেশ হচ্ছে, যদি আমরা আমাদের জাতীয় অস্তিত্ব এবং সংহতি রক্ষা করতে চাই, যদি আমরা আমাদের ধর্মকে নিরাপদ করতে চাই, তাহলে আমাদের প্রধান কর্তব্য হচ্ছে সাহস, দৃঢ়তা এবং আল্লাহ্র প্রতি ঐকান্তিক বিশ্বাসের সাথে শত্রুর মোকাবেলা করা। অন্যান্য যে সব উপদেশের কথা বলা হচ্ছে, তা হলো :
(১) যুদ্ধক্ষেত্রে বিপক্ষদলের সৈন্য সংখ্যা বা অস্ত্র সজ্জার আধিক্যই শেষ কথা নয়, যুদ্ধক্ষেত্রের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হচ্ছে নৈতিক মনোবল, বিশ্বাস, দৃঢ়তা এবং সর্বোপরি আল্লাহ্র উপরে আস্থা স্থাপন।
(২) যুদ্ধক্ষেত্রে নৈতিক মনোবলই প্রধান অস্ত্র। শত্রুপক্ষের সমরসজ্জা বা আয়তন দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নাই। আর এই নৈতিক মনোবল তখনই পাওয়া যায় যখন অস্ত্র ধারণ করা যায় অন্যায়, অসত্যের বিরুদ্ধে। সত্যের জন্য যুদ্ধ করার নৈতিকতা, সাহস এবং বিচক্ষণতার সাথে পরিকল্পনা করা [যেমন করেছিলেন দাউদ]।
(৩) বীর যোদ্ধা সব সময়ে নিজের শক্তি ও অস্ত্রের উপরে ভরসা রাখে, যেখানে যা সহজলভ্য তা-ই তার অস্ত্র হতে পারে [যেমন দাউদ ব্যবহার করেছিলেন নুড়ি পাথর]। আজকের পৃথিবীতে যে গেরিলা যুদ্ধ হচ্ছে তারা এই পথই অবলম্বন করে। পরিবেশকে তারা শত্রুনিধনের কাজে লাগায়।
(৪) যদি আল্লাহ্র রহমত আমরা পেতে পারি তবে শত্রুর অস্ত্র বুমেরাং এর মত তার নিজেরই ধ্বংসের কারণ হবে [জালুতকে, জালুতের তরবারী দ্বারা হত্যা করা হয়]।
(৫) নেতার ব্যক্তিত্ব, অধীনস্তদের দৃঢ়তার সাথে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে এবং শত্রুপক্ষের অন্তরে ত্রাসের সঞ্চার করে [যেমন দাউদের বীরত্ব বিপক্ষ দলের মনে ত্রাস এবং ইহুহীদের শত্রুদের ছত্রভঙ্গ করতে উৎসাহিত করে।]
(৬) বিশুদ্ধ ঈমান আল্লাহ্র সন্তুষ্টির কারণ, আল্লাহ্র রহমতের কারণ। এই রহমত বান্দার জীবনে বিভিন্নভাবে প্রবাহিত হতে পারে। যেমন – দাউদের ক্ষেত্রে আল্লাহ্র পুরস্কার বা রহমত ছিল; ক্ষমতা, জ্ঞান এবং আরও অন্যান্য চারিত্রিক গুণাবলী। [নীচের টিকা দেখুন।]
২৮৭। মেষপালক দাউদকে আল্লাহ্ যেসব গুণাবলীতে ভূষিত করেছিলেন সেগুলি হচ্ছে, বড় যোদ্ধা, রাজা, জ্ঞানী ব্যক্তি, পয়গম্বর ইত্যাদি। এ ব্যতীত দাউদ নবীকে আল্লাহ্ আর যে নেয়ামতে ধন্য করেছিলেন তা হচ্ছে তার কাব্য প্রতিভা ও সঙ্গীতে অসাধারণ দক্ষতা। অর্থাৎ একাধারে কবি ও সঙ্গীতজ্ঞ।
[উপদেশঃ ব্যক্তির চরিত্রের গুণাবলী বা Talent-ই হচ্ছে আল্লাহ্র সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত বা পুরস্কার।
২৮৮। আল্লাহ্র অস্তিত্ব বিশ্বব্রহ্মান্ড ব্যাপী। তিনি সর্বত্র বিদ্যমান। তিনি তার সৃষ্টিকে ভালোবাসেন, করুণা করেন, রক্ষা করেন [১ : ২] এবং পালন করেন। পৃথিবীর জীবনযাত্রায় আমরা দেখি প্রকৃতিতে শান্তি-শৃঙ্খলার মধ্যে (Peace harmony) এক অপূর্ব সমন্বয় সাধন করা হয়েছে। প্রাণীকূলের দিকে দৃষ্টি ফেরালে দেখি কেউ শক্তিশালী কেউ দুর্বল। কিন্তু প্রকৃতিতে আল্লাহ এমন বিধিবদ্ধ আইন করে দিয়েছেন যে, সবল ও দুর্বল সেই সৃষ্টির আদি থেকে শান্তি ও শৃঙ্খলার মধ্যে সমন্বয় করে বেঁচে আছে। তা না হলে দুর্বল পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতো। মানুষের বেলাতেও আল্লাহ্ একদল দ্বারা অন্য দলের ক্ষমতাকে সীমিত করেন, কারণ তাঁর সৃষ্টিতে সমতা রক্ষা করার জন্য এর প্রয়োজন আছে। বিশ্বব্যাপী আল্লাহ্র পরিকল্পনা বোঝার বা হৃদয়ঙ্গম করার ক্ষমতা আমাদের মত ক্ষুদ্র মানুষের নাই। তার জ্ঞান এবং পরিকল্পনা স্থান, কাল ও সময়ের উর্ধ্বে। সুতরাং আমাদের কর্তব্য হচ্ছে সর্বশক্তিশানের প্রতি অটল বিশ্বাস রাখা যে, তিনি আমাদের ভালোবাসেন এবং তার নেয়ামত সীমাহীন এবং তিনি আমাদের মঙ্গলাকাঙ্খী।
আয়াতঃ 002.252
এগুলো হলো আল্লাহর নিদর্শন, যা আমরা তোমাদেরকে যথাযথভাবে শুনিয়ে থাকি। আর আপনি নিশ্চিতই আমার রসূলগণের অন্তর্ভুক্ত।
These are the Verses of Allâh, We recite them to you (O Muhammad SAW) in truth, and surely, you are one of the Messengers (of Allâh).
تِلْكَ آيَاتُ اللّهِ نَتْلُوهَا عَلَيْكَ بِالْحَقِّ وَإِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ
Tilka ayatu Allahi natlooha AAalayka bialhaqqi wa-innaka lamina almursaleena
YUSUFALI: These are the Signs of Allah: we rehearse them to thee in truth: verily Thou art one of the messengers.
PICKTHAL: These are the portents of Allah which We recite unto thee (Muhammad) with truth, and lo! thou art of the number of (Our) messengers;
SHAKIR: These are the communications of Allah: We recite them to you with truth; and most surely you are (one) of the messengers.
KHALIFA: These are GOD’s revelations. We recite them through you, truthfully, for you are one of the messengers.
২৫২। এ সকল আল্লাহ্র আয়াত; আমি তোমার নিকট তা যথাযথভাবে আবৃত্তি করছি। অবশ্যই তুমি রাসূলদের একজন।
তৃতীয় পারা
২৫৩। এই রাসূলদের মধ্যে, কতককে অপর সকলের উপরে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি ২৮৯। তাদের একজনের সাথে আল্লাহ্ কথা বলেছেন, ২৯০; অন্যদের [মর্যাদায়] উন্নীত করেছেন ২৯১। মরিয়ম পুত্র ঈসাকে আমি সুস্পষ্ট [নিদর্শন] দিয়েছিলাম এবং পবিত্র আত্মা দ্বারা তাঁকে শক্তিশালী করেছিলাম ২৯২। আল্লাহ্ যদি ইচ্ছা করতেন তবে তাদের পরবর্তী প্রজন্ম তাদের নিকট স্পষ্ট [প্রমাণ] আসার পরও পারস্পরিক যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত হতো না। কিন্তু তারা বিবাদ বিতন্ডায় লিপ্ত হলো। ফলে তাদের কতক ঈমান আনলো, কতক প্রত্যাখ্যান করলো। আল্লাহ্ যদি ইচ্ছা করতেন তবে তারা পরস্পরের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হতো না। কিন্তু আল্লাহ্ তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করেন ২৯৩।
২৮৯। যুগে যুগে আল্লাহ্ নবী-রাসূলদের পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। তাদের বিভিন্ন জনকে বিভিন্ন নেয়ামতে ধন্য করেছেন। সম্ভবতঃ আল্লাহ্র কাছে তাদের মর্যাদাও ছিল বিভিন্ন। কিন্তু আমরা ক্ষুদ্র মানুষ সীমিত জ্ঞান দ্বারা আল্লাহ্র নবী রাসূলদের [২ : ১৩৬] মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা রাখি না। এই নবী রাসূলরা যদিও আল্লাহ্র মনোনীত তবুও যুদ্ধের বিভিষিকা থেকে মুক্তি পান নাই। এখানে তিনটি উপমার সাহায্যে তা তুলে ধরা হয়েছে। হযরত মুসা (আঃ) এর সাথে আল্লাহ্ সরাসরি কথা বলেছেন। তিনি তার অনুসারীদের নিয়ে চল্লিশ বছর উষর ও নির্জন প্রান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। কারণ ছিল তার নিজের লোকদের ধর্মে অবিশ্বাস। তিনি প্যালেষ্টাইনদের বিরুদ্ধে অস্ত্রের সাহায্যে যুদ্ধ পরিচালনা করতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার পূর্বেই আল্লাহ্ তাকে তুলে নেন এবং এর দায়িত্ব বর্তায় যেয়ে জোসুয়ার উপরে। দাউদ নবী ছিলেন আল্লাহ্র মনোনীত। তিনি তার সময়কালের সর্বশ্রেষ্ঠ যোদ্ধাকে পরাজিত করেন। তিনি রাজা হিসেবে, পয়গম্বর হিসেবে সফল যুদ্ধ পরিচালনা করেন। যীশুখৃষ্টকে আল্লাহ্ পবিত্র আত্মা দ্বারা শক্তিশালী করেন। তাকে আল্লাহ্ যুদ্ধের জন্য কোনও অস্ত্র দেন নাই। তার নবুওয়াতকাল ছিল খুবই সীমিত। আমাদের নবী মুহম্মদ (সাঃ) জীবনে দেখি, আল্লাহ্ সব নবী রাসূলদের উপরে নির্ধারিত দায়িত্ব সমন্বিত করে তাকে সে দায়িত্ব দেন। তিনি ছিলেন হযরত ঈসা (আঃ) ন্যায় কোমল হৃদয়, আবার হযরত মুসা (আঃ) অপেক্ষা তিনি বড় সংগঠক ছিলেন। হযরত মুসা ইহুদীদের সংগঠিত করেছিলেন, কিন্তু মুহম্মদ (সাঃ) মদিনা থেকে বিশাল আরব গোষ্ঠীকে সংগঠিত করেছিলেন কোরানের আইনের আলোকে। তার সাফল্য হচ্ছে তার উপরে আল্লাহ্র অর্পিত দায়িত্ব তিনি তার জীবদ্দশায় সম্পন্ন করতে সক্ষম হন।
২৯০। হযরত মুসার জন্য উপরের টিকা দেখুন।
২৯১। এর অর্থ দ্বিবিধ। প্রথমতঃ তাদের উচ্চ পদে সম্মানিত করা হয় এবং দ্বিতীয়তঃ এ মর্যাদার ক্রমধাপ বিদ্যমান।
২৯২। দেখুন [২ : ৮৭] আয়াত এবং [৩ : ৬২] এর টিকা নং ৪০১।
২৯৩। আদম সন্তানকে আল্লাহ্ গুণাবলীতে ফেরেশতাদের উপরে স্থাপন করেছেন; আবার শয়তানের প্ররোচণাতে সে পশুরও অধম। সাধারণ মানুষ প্রকৃতিগতভাবে অত্যন্ত স্বার্থপর। ব্যক্তিস্বার্থ তার কাছে সর্বাপেক্ষা প্রাধাণ্য পায়। সারাটা জীবন সে শুধুমাত্র “জান এবং মাল” এরই রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় করে। আল্লাহ্ মানুষকে “সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি” দিয়েছেন। এই সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির অপব্যবহার মানুষ করে। কারণ মানুষ অত্যন্ত স্বার্থপর জীব। কিন্তু মানুষের এই স্বার্থপরতা আল্লাহ্র সুদূর প্রসারিত পরিকল্পনা ব্যহত করতে পারে না। আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান। আল্লাহ যদি মানুষকে এই সীমিত ইচ্ছাশক্তি না দিতেন হয়তো সেক্ষেত্রে পৃথিবীর অন্যসব প্রাণীর মতই কোন জটিল দ্বন্দ্বে মানুষ জড়িয়ে পড়তো না এবং পাপ-পূণ্যের জন্য দুঃখ-সুখ ভোগের আশংকা থাকতো না।
আয়াতঃ 002.253
এই রসূলগণ-আমি তাদের কাউকে কারো উপর মর্যাদা দিয়েছি। তাদের মধ্যে কেউ তো হলো তারা যার সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন, আর কারও মর্যাদা উচ্চতর করেছেন এবং আমি মরিয়ম তনয় ঈসাকে প্রকৃষ্ট মু’জেযা দান করেছি এবং তাকে শক্তি দান করেছি ‘রুহূল কুদ্দুস’ অর্থৎ জিবরাঈলের মাধ্যমে। আর আল্লাহ যদি ইচ্ছা করতেন, তাহলে পরিস্কার নির্দেশ এসে যাবার পর পয়গম্বরদের পেছনে যারা ছিল তারা লড়াই করতো না। কিন্তু তাদের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়ে গেছে। অতঃপর তাদের কেউ তো ঈমান এনেছে, আর কেউ হয়েছে কাফের। আর আল্লাহ যদি ইচ্ছা করতেন, তাহলে তারা পরস্পর লড়াই করতো, কিন্তু আল্লাহ তাই করেন, যা তিনি ইচ্ছা করেন।
Those Messengers! We preferred some to others; to some of them Allâh spoke (directly); others He raised to degrees (of honour); and to ’Iesa (Jesus), the son of Maryam (Mary), We gave clear proofs and evidences, and supported him with Rûh-ul-Qudus [Jibrael (Gabriel)]. If Allâh had willed, succeeding generations would not have fought against each other, after clear Verses of Allâh had come to them, but they differed – some of them believed and others disbelieved. If Allâh had willed, they would not have fought against one another, but Allâh does what He likes.
تِلْكَ الرُّسُلُ فَضَّلْنَا بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ مِّنْهُم مَّن كَلَّمَ اللّهُ وَرَفَعَ بَعْضَهُمْ دَرَجَاتٍ وَآتَيْنَا عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ الْبَيِّنَاتِ وَأَيَّدْنَاهُ بِرُوحِ الْقُدُسِ وَلَوْ شَاء اللّهُ مَا اقْتَتَلَ الَّذِينَ مِن بَعْدِهِم مِّن بَعْدِ مَا جَاءتْهُمُ الْبَيِّنَاتُ وَلَـكِنِ اخْتَلَفُواْ فَمِنْهُم مَّنْ آمَنَ وَمِنْهُم مَّن كَفَرَ وَلَوْ شَاء اللّهُ مَا اقْتَتَلُواْ وَلَـكِنَّ اللّهَ يَفْعَلُ مَا يُرِيدُ
Tilka alrrusulu faddalna baAAdahum AAala baAAdin minhum man kallama Allahu warafaAAa baAAdahum darajatin waatayna AAeesa ibna maryama albayyinati waayyadnahu biroohi alqudusi walaw shaa Allahu ma iqtatala allatheena min baAAdihim min baAAdi ma jaat-humu albayyinatu walakini ikhtalafoo faminhum man amana waminhum man kafara walaw shaa Allahu ma iqtataloo walakinna Allaha yafAAalu ma yureedu
YUSUFALI: Those messengers We endowed with gifts, some above others: To one of them Allah spoke; others He raised to degrees (of honour); to Jesus the son of Mary We gave clear (Signs), and strengthened him with the holy spirit. If Allah had so willed, succeeding generations would not have fought among each other, after clear (Signs) had come to them, but they (chose) to wrangle, some believing and others rejecting. If Allah had so willed, they would not have fought each other; but Allah Fulfilleth His plan.
PICKTHAL: Of those messengers, some of whom We have caused to excel others, and of whom there are some unto whom Allah spake, while some of them He exalted (above others) in degree; and We gave Jesus, son of Mary, clear proofs (of Allah’s Sovereignty) and We supported him with the holy Spirit. And if Allah had so wiled it, those who followed after them would not have fought one with another after the clear proofs had come unto them. But they differed, some of them believing and some disbelieving. And if Allah had so willed it, they would not have fought one with another; but Allah doeth what He will.
SHAKIR: We have made some of these messengers to excel the others among them are they to whom Allah spoke, and some of them He exalted by (many degrees of) rank; and We gave clear miracles to Isa son of Marium, and strengthened him with the holy spirit. And if Allah had pleased, those after them would not have fought one with another after clear arguments had come to them, but they disagreed; so there were some of them who believed and others who denied; and if Allah had pleased they would not have fought one with another, but Allah brings about what He intends.
KHALIFA: These messengers; we blessed some of them more than others. For example, GOD spoke to one, and we raised some of them to higher ranks. And we gave Jesus, son of Mary, profound miracles and supported him with the Holy Spirit. Had GOD willed, their followers would not have fought with each other, after the clear proofs had come to them. Instead, they disputed among themselves; some of them believed, and some disbelieved. Had GOD willed, they would not have fought. Everything is in accordance with GOD’s will.
২৫২। এ সকল আল্লাহ্র আয়াত; আমি তোমার নিকট তা যথাযথভাবে আবৃত্তি করছি। অবশ্যই তুমি রাসূলদের একজন।
তৃতীয় পারা
২৫৩। এই রাসূলদের মধ্যে, কতককে অপর সকলের উপরে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি ২৮৯। তাদের একজনের সাথে আল্লাহ্ কথা বলেছেন, ২৯০; অন্যদের [মর্যাদায়] উন্নীত করেছেন ২৯১। মরিয়ম পুত্র ঈসাকে আমি সুস্পষ্ট [নিদর্শন] দিয়েছিলাম এবং পবিত্র আত্মা দ্বারা তাঁকে শক্তিশালী করেছিলাম ২৯২। আল্লাহ্ যদি ইচ্ছা করতেন তবে তাদের পরবর্তী প্রজন্ম তাদের নিকট স্পষ্ট [প্রমাণ] আসার পরও পারস্পরিক যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত হতো না। কিন্তু তারা বিবাদ বিতন্ডায় লিপ্ত হলো। ফলে তাদের কতক ঈমান আনলো, কতক প্রত্যাখ্যান করলো। আল্লাহ্ যদি ইচ্ছা করতেন তবে তারা পরস্পরের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হতো না। কিন্তু আল্লাহ্ তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করেন ২৯৩।
২৮৯। যুগে যুগে আল্লাহ্ নবী-রাসূলদের পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। তাদের বিভিন্ন জনকে বিভিন্ন নেয়ামতে ধন্য করেছেন। সম্ভবতঃ আল্লাহ্র কাছে তাদের মর্যাদাও ছিল বিভিন্ন। কিন্তু আমরা ক্ষুদ্র মানুষ সীমিত জ্ঞান দ্বারা আল্লাহ্র নবী রাসূলদের [২ : ১৩৬] মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা রাখি না। এই নবী রাসূলরা যদিও আল্লাহ্র মনোনীত তবুও যুদ্ধের বিভিষিকা থেকে মুক্তি পান নাই। এখানে তিনটি উপমার সাহায্যে তা তুলে ধরা হয়েছে। হযরত মুসা (আঃ) এর সাথে আল্লাহ্ সরাসরি কথা বলেছেন। তিনি তার অনুসারীদের নিয়ে চল্লিশ বছর উষর ও নির্জন প্রান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। কারণ ছিল তার নিজের লোকদের ধর্মে অবিশ্বাস। তিনি প্যালেষ্টাইনদের বিরুদ্ধে অস্ত্রের সাহায্যে যুদ্ধ পরিচালনা করতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার পূর্বেই আল্লাহ্ তাকে তুলে নেন এবং এর দায়িত্ব বর্তায় যেয়ে জোসুয়ার উপরে। দাউদ নবী ছিলেন আল্লাহ্র মনোনীত। তিনি তার সময়কালের সর্বশ্রেষ্ঠ যোদ্ধাকে পরাজিত করেন। তিনি রাজা হিসেবে, পয়গম্বর হিসেবে সফল যুদ্ধ পরিচালনা করেন। যীশুখৃষ্টকে আল্লাহ্ পবিত্র আত্মা দ্বারা শক্তিশালী করেন। তাকে আল্লাহ্ যুদ্ধের জন্য কোনও অস্ত্র দেন নাই। তার নবুওয়াতকাল ছিল খুবই সীমিত। আমাদের নবী মুহম্মদ (সাঃ) জীবনে দেখি, আল্লাহ্ সব নবী রাসূলদের উপরে নির্ধারিত দায়িত্ব সমন্বিত করে তাকে সে দায়িত্ব দেন। তিনি ছিলেন হযরত ঈসা (আঃ) ন্যায় কোমল হৃদয়, আবার হযরত মুসা (আঃ) অপেক্ষা তিনি বড় সংগঠক ছিলেন। হযরত মুসা ইহুদীদের সংগঠিত করেছিলেন, কিন্তু মুহম্মদ (সাঃ) মদিনা থেকে বিশাল আরব গোষ্ঠীকে সংগঠিত করেছিলেন কোরানের আইনের আলোকে। তার সাফল্য হচ্ছে তার উপরে আল্লাহ্র অর্পিত দায়িত্ব তিনি তার জীবদ্দশায় সম্পন্ন করতে সক্ষম হন।
২৯০। হযরত মুসার জন্য উপরের টিকা দেখুন।
২৯১। এর অর্থ দ্বিবিধ। প্রথমতঃ তাদের উচ্চ পদে সম্মানিত করা হয় এবং দ্বিতীয়তঃ এ মর্যাদার ক্রমধাপ বিদ্যমান।
২৯২। দেখুন [২ : ৮৭] আয়াত এবং [৩ : ৬২] এর টিকা নং ৪০১।
২৯৩। আদম সন্তানকে আল্লাহ্ গুণাবলীতে ফেরেশতাদের উপরে স্থাপন করেছেন; আবার শয়তানের প্ররোচণাতে সে পশুরও অধম। সাধারণ মানুষ প্রকৃতিগতভাবে অত্যন্ত স্বার্থপর। ব্যক্তিস্বার্থ তার কাছে সর্বাপেক্ষা প্রাধাণ্য পায়। সারাটা জীবন সে শুধুমাত্র “জান এবং মাল” এরই রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় করে। আল্লাহ্ মানুষকে “সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি” দিয়েছেন। এই সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির অপব্যবহার মানুষ করে। কারণ মানুষ অত্যন্ত স্বার্থপর জীব। কিন্তু মানুষের এই স্বার্থপরতা আল্লাহ্র সুদূর প্রসারিত পরিকল্পনা ব্যহত করতে পারে না। আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান। আল্লাহ যদি মানুষকে এই সীমিত ইচ্ছাশক্তি না দিতেন হয়তো সেক্ষেত্রে পৃথিবীর অন্যসব প্রাণীর মতই কোন জটিল দ্বন্দ্বে মানুষ জড়িয়ে পড়তো না এবং পাপ-পূণ্যের জন্য দুঃখ-সুখ ভোগের আশংকা থাকতো না।
আয়াতঃ 002.254
হে ঈমানদারগণ! আমি তোমাদেরকে যে রুযী দিয়েছি, সেদিন আসার পূর্বেই তোমরা তা থেকে ব্যয় কর, যাতে না আছে বেচা-কেনা, না আছে সুপারিশ কিংবা বন্ধুত্ব। আর কাফেররাই হলো প্রকৃত যালেম।
O you who believe! Spend of that with which We have provided for you, before a Day comes when there will be no bargaining, nor friendship, nor intercession. And it is the disbelievers who are the Zâlimûn (wrong-doers, etc.).
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَنفِقُواْ مِمَّا رَزَقْنَاكُم مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِيَ يَوْمٌ لاَّ بَيْعٌ فِيهِ وَلاَ خُلَّةٌ وَلاَ شَفَاعَةٌ وَالْكَافِرُونَ هُمُ الظَّالِمُونَ
Ya ayyuha allatheena amanoo anfiqoo mimma razaqnakum min qabli an ya/tiya yawmun la bayAAun feehi wala khullatun wala shafaAAatun waalkafiroona humu alththalimoona
YUSUFALI: O ye who believe! Spend out of (the bounties) We have provided for you, before the Day comes when no bargaining (Will avail), nor friendship nor intercession. Those who reject Faith they are the wrong-doers.
PICKTHAL: O ye who believe! spend of that wherewith We have provided you ere a day come when there will be no trafficking, nor friendship, nor intercession. The disbelievers, they are the wrong-doers.
SHAKIR: O you who believe! spend out of what We have given you before the day comes in which there is no bargaining, neither any friendship nor intercession, and the unbelievers– they are the unjust.
KHALIFA: O you who believe, you shall give to charity from the provisions we have given to you, before a day comes where there is no trade, no nepotism, and no intercession. The disbelievers are the unjust.
রুকু – ৩৪
২৫৪। হে বিশ্বাসীগণ ! যে [অনুগ্রহ] আমি তোমাদের দান করেছি
তা থেকে ব্যয় কর ২৯৪; সেই দিন আসার পূর্বে যেদিন কোন দরকষাকষি [চলবে না];
বন্ধুত্ব, সুপারিশ [কাজে] আসবে না ২৯৫। যারা ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে তারাই
পাপী।
২৯৪। ‘Spend’ বা ‘ব্যয় কর’। অর্থাৎ দান কর বা সৎ কাজে
নিয়োজিত কর। আল্লাহ্র যা কিছু দান, তা সবকিছু একা ভোগ করবে বলে মজুদ করে
রাখা হারাম। আল্লাহ্র এই দানকে শুধুমাত্র টাকা পয়সার নিক্তিতে মাপা যায়
না। সভ্যতার বিকাশের জন্য আল্লাহ্ মানুষকে যা কিছু দান করেছেন সবই
আল্লাহ্র নেয়ামত [দেখুন টিকা ২৭]। সৎ কাজ করাও হচ্ছে দান করা। সৎ কাজ কি ?
সৎ কাজ হচ্ছে সেই কাজ যা আল্লাহ্র সৃষ্টির মঙ্গলের জন্য করা হয়। হতে পারে
তা প্রতিবেশীর জন্য, হতে পারে তা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জন্য, হতে পারে তা
অপরিচিত আগন্তুকের জন্য, হতে পারে তা সমাজের জন্য। এমন কি হতে পারে তা পশু,
পাখী, বা গাছপালা বা প্রকৃতি। যা-ই আল্লাহ্র সৃষ্ট তার রক্ষণাবেক্ষণ, তার
মঙ্গলের জন্য, নিজের মেধা, মনন শক্তি, শ্রম, উৎসর্গ করার নামই হচ্ছে দান
করা। শুধু অর্থ সম্পদ গরীবের মধ্যে বিতরণকে সঙ্কীর্ণার্থে দান পরিগণিত করা
যায়, কিন্তু ইসলামের চোখে দানের সংজ্ঞা বা পরিধি অনেক ব্যাপক। আল্লাহ্
যাকে যে নেয়ামত [অর্থ-সম্পদ, মেধা-মননশক্তি, সাহিত্য প্রতিভা, শিল্পী মন,
বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি, প্রভাব-প্রতিপত্তি, সমাজে উচ্চ অধিষ্ঠান, উচ্চ বংশে
জন্ম ইত্যাদি] দিয়েছেন; সেই নেয়ামতকে নিঃস্বার্থভাবে জনগণের কল্যাণের জন্য
নিয়োজিত করাই হচ্ছে ইসলামের দৃষ্টিতে বৃহত্তর পরিসরে দান করা বা Charity।
এখানে নিঃস্বার্থ কথাটি ব্যবহার করা হয়েছে। কারণ এই দানের পিছনে যেনো দম্ভ,
আত্ম অহংকার বা সমাজের চোখে সুনামের মোহ বা কোনও বিশেষ সুবিধা লাভের
আকাঙ্খা থাকে না। এই দানের হবে একটাই উদ্দেশ্য – আর তা হচ্ছে আল্লাহ্র
নেয়ামতকে আল্লাহ্র সৃষ্টির সেবায় নিয়োজিত করা যেনো স্রষ্টাকে খুশী করা
যায়, পরম করুণাময়ের সন্তুষ্টিই হবে দানের একমাত্র উদ্দেশ্য। আর এ কথাটা
অনুধাবনযোগ্য যে আল্লাহ্র নেয়ামত বলতে অর্থ-সম্পদ ব্যতীতও মানসিক এবং
আত্মিক নেয়ামতকেও বোঝায় [টিকা ২৭]। আল্লাহ্র সৃষ্ট সকল প্রাণী নিয়ে তাঁর
পরিবার। “তিনিই আল্লাহ্র সর্বাধিক প্রিয় যিনি আল্লাহ্র সৃষ্ট প্রাণীগণের
সর্বাধিক কল্যাণ সাধনের চেষ্টা করেন।” – হাদীস।
২৯৫। আরও দেখুন ২ : ৪৮, ১২৩।
আয়াতঃ 002.255
আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছ এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।
Allâh! Lâ ilâha illa Huwa (none has the right to be worshipped but He), the Ever Living, the One Who sustains and protects all that exists. Neither slumber, nor sleep overtake Him. To Him belongs whatever is in the heavens and whatever is on earth. Who is he that can intercede with Him except with His Permission? He knows what happens to them (His creatures) in this world, and what will happen to them in the Hereafter . And they will never compass anything of His Knowledge except that which He wills. His Kursî extends over the heavens and the earth, and He feels no fatigue in guarding and preserving them. And He is the Most High, the Most Great. [This Verse 2:255 is called Ayat-ul-Kursî.]
اللّهُ لاَ إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلاَ نَوْمٌ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَاء وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ وَلاَ يَؤُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
Allahu la ilaha illa huwa alhayyu alqayyoomu la ta/khuthuhu sinatun wala nawmun lahu ma fee alssamawati wama fee al-ardi man tha allathee yashfaAAu AAindahu illa bi-ithnihi yaAAlamu ma bayna aydeehim wama khalfahum wala yuheetoona bishay-in min AAilmihi illa bima shaa wasiAAa kursiyyuhu alssamawati waal-arda wala yaooduhu hifthuhuma wahuwa alAAaliyyu alAAatheemu
YUSUFALI: Allah! There is no god but He,-the Living, the Self-subsisting, Eternal. No slumber can seize Him nor sleep. His are all things in the heavens and on earth. Who is there can intercede in His presence except as He permitteth? He knoweth what (appeareth to His creatures as) before or after or behind them. Nor shall they compass aught of His knowledge except as He willeth. His Throne doth extend over the heavens and the earth, and He feeleth no fatigue in guarding and preserving them for He is the Most High, the Supreme (in glory).
PICKTHAL: Allah! There is no deity save Him, the Alive, the Eternal. Neither slumber nor sleep overtaketh Him. Unto Him belongeth whatsoever is in the heavens and whatsoever is in the earth. Who is he that intercedeth with Him save by His leave? He knoweth that which is in front of them and that which is behind them, while they encompass nothing of His knowledge save what He will. His throne includeth the heavens and the earth, and He is never weary of preserving them. He is the Sublime, the Tremendous.
SHAKIR: Allah is He besides Whom there is no god, the Everliving, the Self-subsisting by Whom all subsist; slumber does not overtake Him nor sleep; whatever is in the heavens and whatever is in the earth is His; who is he that can intercede with Him but by His permission? He knows what is before them and what is behind them, and they cannot comprehend anything out of His knowledge except what He pleases, His knowledge extends over the heavens and the earth, and the preservation of them both tires Him not, and He is the Most High, the Great.
KHALIFA: GOD: there is no other god besides Him, the Living, the Eternal. Never a moment of unawareness or slumber overtakes Him. To Him belongs everything in the heavens and everything on earth. Who could intercede with Him, except in accordance with His will? He knows their past, and their future. No one attains any knowledge, except as He wills. His dominion encompasses the heavens and the earth, and ruling them never burdens Him. He is the Most High, the Great.
২৫৫। আল্লাহ্ ! তিনি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নাই। তিনি চিরঞ্জীব, অনন্ত-অসীম ২৯৬। তন্দ্রা অথবা নিদ্রা তাঁকে স্পর্শ করে না। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা সমস্তই তাঁর। কে সে, যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর নিকট সুপারিশ করবে ? [তার সৃষ্ট প্রাণীর] তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে যা কিছু আছে তা তিনি জানেন ২৯৭। যা তিনি ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত তাঁর জ্ঞানের কিছুই তারা আয়ত্ব করতে পারে না। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী ব্যাপী তাঁর সিংহাসন পরিব্যাপ্ত ২৯৮; ইহাদের রক্ষণাবেক্ষণ তাঁকে ক্লান্ত করে না ২৯৯। নিশ্চয়ই তিনি মহান ও [গৌরবে] সর্বশ্রেষ্ঠ।
২৯৬। এই সেই আয়াত যার নাম ‘আয়তাল কুরসী’ বা “Verse of the Throne” বাংলা অনুবাদ দাঁড়ায় আল্লাহ্র “সিংহাসনের ছন্দ গ্রহণ।” অবশ্য পৃথিবীতে এমন কেউই নাই যার পক্ষে আয়তাল কুরসীর প্রকৃত অনুবাদ বা ভাবানুবাদ করা সম্ভব। এই আয়াতটির ভাব-গাম্ভীর্য, মহিমা প্রকাশের ভাষা এবং গভীরতা, ছন্দের চমৎকারীত্ব, রচনাশৈলী, শব্দ চয়ন, ভাবের প্রকাশ এত গভীর এবং ব্যঞ্ছণাময় যে আরবী ভাষাতেও এর ব্যাখ্যা দান করে মূলভাব প্রকাশ করা মানুষের সাধ্যাতীত। আর এখানে আরবী নয় অন্য ভাষাতে এর ভাষান্তরিত করা হচ্ছে, সুতরাং আয়তাল কুরসীর মূল ভাবের সম্পূর্ণ প্রকাশ না হওয়াই স্বাভাবিক। আর এই অক্ষমতার জন্য সর্বশক্তিমানের কাছে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।
এই আয়াতে আল্লাহ্র বিশেষ গুণাবলীর স্তুতি করা হয়েছে। এসব বিশেষণ শুধুমাত্র আল্লাহ্র। পৃথিবীর আর কোনও কিছুর জন্যই এগুলি প্রযোজ্য নয়। তিনি চিরঞ্জীব, স্বাধিষ্ঠ বিশ্ববিধাতা সৃষ্টির তত্ত্বাবধান ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে সত্তা অনাদি ও অনন্তকাল ব্যাপী বিরাজমান, আপন সত্তার জন্য যিনি কারও মুখাপেক্ষী নন, অথচ সর্বসত্তার যিনি ধারক, তাঁকেই ‘কাইয়ুম’ বলা হয়]। পৃথিবীতে আমাদের জীবন অসম্পূর্ণ, তাই পৃথিবীর জীবনে প্রতিনিয়ত নির্ভর করতে হয় বিভিন্ন ভাবে। আমাদের কর্মক্ষেত্রে আমাদের বিশ্রামের প্রয়োজন হয়, দুঃখে সান্ত্বনার প্রয়োজন হয়, সুখে অংশীদার প্রয়োজন হয়, বিশাল কর্মকাণ্ডে সাহায্যকারীর প্রয়োজন হয়। আমাদের পক্ষে ‘কাইয়ুম’ (self subsisting) কথাটির গুঢ় অর্থ অনুধাবন করাও সম্ভব নয়। একমাত্র আল্লাহই হচ্ছেন ‘কাইয়ুম’। তার জন্য বিশ্রাম বা তন্দ্রার প্রয়োজন নাই। মানুষের জাগতিক প্রয়োজনের মাপকাঠিতে তাঁকে বিচার করা যাবে না। এটাই স্বাভাবিক।
২৯৭। বিশ্ববিধাতা আল্লাহ্ সয়ম্ভু। তিনি অসীম। সীমার বাঁধনে তাকে বাঁধা যায় না। তিনি স্থান-কাল ও সময়ের উর্ধ্বে। তিনি সর্বস্থান ও সর্বকালব্যাপী। একমাত্র বিশ্ববিধাতার এই রূপ অনুধাবন করলেই স্বর্গ-মর্ত্য সম্বন্ধে বস্তুবাদী ধারণা আমাদের ভিতর থেকে অন্তর্হিত হবে। প্রকৃতিবাদীরা ভুলভাবে একে উপস্থাপন করে যে বিশ্ব প্রকৃতি-ই হচ্ছে স্রষ্টার একটি রূপ। কিন্তু আসল সত্য হচ্ছে সমস্ত সৃষ্টি-ই তাঁর দ্বারা সৃষ্ট এবং পদানত। আকাশ ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সে সবই আল্লাহ্র মালিকাধীন। তিনি স্বয়ংসম্পূর্ণ ইচ্ছা শক্তির মালিক। যেভাবে যাকে ইচ্ছা তাকে নিয়ন্ত্রণ করেন। আল্লাহ্ যাবতীয় সৃষ্ট বস্তুর মালিক এবং কোনও বস্তু তাঁর চাইতে বড় নয়, তাই কেউ তাঁর কাজ সম্পর্কে প্রশ্ন করার অধিকারী নয়। কেউ কারও জন্য সুপারিশ করারও অধিকারী নয়। এ ক্ষমতা কারো নাই। তবে তাঁর অনুমতি সাপেক্ষে সুপারিশ করতে পারবেন। হাদীসে আছে আল্লাহ্ হাশরের ময়দানে একমাত্র আমাদের রাসূলকে (সাঃ) এই ক্ষমতা দান করবেন অন্য কাউকে নয়। আল্লাহ্র জ্ঞান, স্থান, কাল ও সময়ের উর্ধ্বে। আমাদের পৃথিবীর মানুষেরা সীমিত জ্ঞানে যে কোনও জ্ঞানকে বিচার করি সময়ের প্রেক্ষিতে। আজকে বিজ্ঞান যা অমোঘ সত্যরূপে আত্মপ্রকাশ করছে, কাল তা ভুল বলে প্রমাণিত হচ্ছে। এ রকম অহরহই ঘটে থাকে। এখানেই আমাদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা ও অপূর্ণতা। এখানেই তাঁর জ্ঞানের সাথে আমাদের জ্ঞানের পার্থক্য। যদি আমরা সর্বান্তকরণে আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পণ করতে পারি, তবেই আমাদের জ্ঞানের এই অপূর্ণতা দূরীভূত হয়ে তার জ্ঞানের বৃহত্তর অঙ্গনে প্রবেশাধিকার পাবো অর্থাৎ আমাদের অন্তর্দৃষ্টির [spiritual insight] জন্ম নেবে।
২৯৮। [Throne] সিংহাসন বা আসন : আল্লাহ্র আসন সর্বব্যাপী। আকাশ, পৃথিবী, ভূমন্ডল, সর্বত্র তার হাতের স্পর্শ বিদ্যমান। এই ভুমণ্ডল, নভোমন্ডল সবই তাঁর নির্দেশে চলে। আসমান ও যমীনের যাবতীয় বস্তুর নিয়ন্ত্রণকারী হচ্ছেন আল্লাহ্তায়ালা। সমস্ত সৃষ্টি তাঁর আশ্রয়ে বিদ্যমান।
২৯৯। আমাদের অপূর্ণ পার্থিব জীবনে কর্ম এবং বিশ্রাম দুটোই অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। কর্মের পরে বিশ্রাম দ্বারা ক্লান্তি দূর না করলে আমরা নূতনভাবে কর্ম শুরু করার ক্ষমতা রাখি না। আমাদের সীমিত এবং অপূর্ণ জ্ঞান দ্বারা আমরা বুঝতে অক্ষম অনাদি অনন্তকাল ধরে বিশ্রাম না করে কীভাবে কাজ করা যায়। কিন্তু পৃথিবী, আকাশ ও নভোমন্ডলের দিকে দৃষ্টিপাত করলে আমরা দেখতে পাই স্রষ্টার সৃষ্টি কাজ সেই আবহমান কাল থেকে বিরতিহীন, একভাবে চলে আসছে। সৃষ্টি এক মূহুর্তের জন্যও থেমে থাকেনি, থেমে থাকছে না। এই পৃথিবীতে জন্ম মৃত্যু আবহমান কাল থেকে চলে আসছে। পুরানোরা মৃত্যুর মাধ্যমে নূতনদের স্থান করে দিচ্ছে। আবার এই নূতনদের সৃষ্টিকে স্রষ্টা আবহমান কাল থেকে রক্ষা করে আসছেন। এই সৃষ্টি এবং সৃষ্টির রক্ষা করা যতিহীনভাবে চলছে। তার পরিপূর্ণ ক্ষমতার পক্ষে এসব কাজ করা কঠিন নয়। আবার মানুষের মত তাঁর ক্লান্তিরও কোনও কারণ নাই। কারণ তার সত্তা যাবতীয় ক্লান্তি, তন্দ্রা ও নিদ্রার প্রভাব থেকে মুক্ত ও পবিত্র।
আয়াতঃ 002.256
দ্বীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি বা বাধ্য-বাধকতা নেই। নিঃসন্দেহে হেদায়াত গোমরাহী থেকে পৃথক হয়ে গেছে। এখন যারা গোমরাহকারী ‘তাগুত’দেরকে মানবে না এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় হাতল যা ভাংবার নয়। আর আল্লাহ সবই শুনেন এবং জানেন।
There is no compulsion in religion. Verily, the Right Path has become distinct from the wrong path. Whoever disbelieves in Tâghût and believes in Allâh, then he has grasped the most trustworthy handhold that will never break. And Allâh is All-Hearer, All-Knower.
لاَ إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ قَد تَّبَيَّنَ الرُّشْدُ مِنَ الْغَيِّ فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِن بِاللّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَىَ لاَ انفِصَامَ لَهَا وَاللّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
La ikraha fee alddeeni qad tabayyana alrrushdu mina alghayyi faman yakfur bialttaghooti wayu/min biAllahi faqadi istamsaka bialAAurwati alwuthqa la infisama laha waAllahu sameeAAun AAaleemun
YUSUFALI: Let there be no compulsion in religion: Truth stands out clear from Error: whoever rejects evil and believes in Allah hath grasped the most trustworthy hand-hold, that never breaks. And Allah heareth and knoweth all things.
PICKTHAL: There is no compulsion in religion. The right direction is henceforth distinct from error. And he who rejecteth false deities and believeth in Allah hath grasped a firm handhold which will never break. Allah is Hearer, Knower.
SHAKIR: There is no compulsion in religion; truly the right way has become clearly distinct from error; therefore, whoever disbelieves in the Shaitan and believes in Allah he indeed has laid hold on the firmest handle, which shall not break off, and Allah is Hearing, Knowing.
KHALIFA: There shall be no compulsion in religion: the right way is now distinct from the wrong way. Anyone who denounces the devil and believes in GOD has grasped the strongest bond; one that never breaks. GOD is Hearer, Omniscient.
২৫৬। ধর্মে কোন জোর জবরদস্তি নাই ৩০০। সত্য, মিথ্যা থেকে সুস্পষ্টরূপে পৃথক হয়েছে। যে কেউ মন্দকে ত্যাগ করবে ৩০০-ক এবং আল্লাহতে ঈমান আনবে, সে এমন এক মজবুত হাতল ধরবে যা কখনও ভাঙ্গবে না ৩০১। এবং আল্লাহ্ সকল কিছুই শোনেন এবং জানেন।
৩০০। ধর্মের ব্যাপারে বাধ্যাবাধকতার স্থান নাই। কারণ-
(১) ধর্ম হচ্ছে অন্তরের ব্যাপার। আমাদের সমস্ত সত্তা যখন পরম করুণাময়ের পরশ পাওয়ার জন্য উন্মুখ হয়, একমাত্র তারই উপর নির্ভরশীল হয়, তাঁর সন্তুষ্টির জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করে, তখনই ঈমান বা ধর্মের ভিত্তি স্থাপিত হয়। জোরপূর্বক বাধ্যাবাধকতার মাধ্যমে ধর্মের আনুষ্ঠানিকতা করানো সম্ভব কিন্তু আল্লাহ্র প্রতি ভালোবাসা জন্মানো সম্ভব নয়। কারণ ঈমানের সম্পর্ক বাহ্যিক অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সঙ্গে নয়। এ হচ্ছে অন্তরের ব্যাপার, আত্মার ব্যাপার।
(২) সত্য এবং মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সুতরাং সত্যের রূপ সম্বন্ধে বিশ্বাসীদের মধ্যে কোনও সন্দেহ থাকা উচিত নয়।
(৩) আল্লাহ্ সর্বশ্রেষ্ঠ রক্ষাকারী। তাঁর শুভাকাঙ্খা আমাদের সর্ব অবয়বকে ঘিরে আছে। তিনি আমাদের মঙ্গল চান। আমাদের আত্মাকে অন্ধকার থেকে আলোর যাত্রা পথে পরিচালিত করাই তার কাম্য।
৩০০-ক ‘Tagut’ ‘তাগুত’-এর আভিধানিক অর্থ সীমালঙ্ঘনকারী; দুষ্কৃতির মূল বস্তু। যা মানুষকে বিভ্রান্ত করে ইত্যাদি। শয়তান, কল্পিত দেবদেবী, যাবতীয় উপায় যাকে আল্লাহ্র সমকক্ষ মনে করা হয় সবই তাগুতের অন্তর্গত।
৩০১। “Hand hold” – ‘মজবুত হাতল’ ধরিবে। আমরা যখন পড়ে যাই বা পদস্খালিত হই, তখন আমরা কোনও কিছু ধরতে চেষ্টা করি যেনো পতন থেকে রক্ষা পেতে পারি। এটা হতে পারে দড়ি বা এই জাতীয় কিছু, বা কোনও কিছুর হাতল বা নোঙ্গর। আমরা আমাদের পতন রোধ করার জন্য যাই-ই অবলম্বন করি না কেন, যদি তা মজবুত হয় এবং ভাঙ্গার বা ছেঁড়ার সম্ভাবনা না থাকে, তবে আমাদের নিরাপত্তার ভিত্ হয় মজবুত। ততক্ষণ পর্যন্ত-ই হবে মজবুত যতক্ষণ আমরা তা শক্ত করে ধরে থাকতে পারবো। যেমন- লোক ভর্তি বাসে যখন লোকে হাতল ধরে ঝুলতে ঝুলতে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করে, তখন ঐ ব্যক্তির নিরাপত্তা নির্ভর করে দুটো জিনিসের উপর। প্রথমতঃ বাসের হাতলের অবস্থার (condition) উপরে, দ্বিতীয়, ব্যক্তির হাতল ধরে থাকার শক্তির বা ইচ্ছার উপরে। যদি হাতলের অবস্থা মজবুত হয় তবে বাসে ঝুলন্ত ঐ ব্যক্তির নিরাপত্তা নির্ভর করবে সম্পূর্ণরূপে মজবুত ভাবে হাতল ধরে রাখার ক্ষমতার বা ইচ্ছার উপরে। অর্থাৎ ব্যক্তির দৃঢ়ভাবে হাতল ধরে রাখার ইচ্ছার উপরেই তার পতনের কারণ নির্ধারিত হবে। এই উপমার সাহায্যে আল্লাহ্ আমাদের উপদেশ দিচ্ছেন- সংসার জীবনের পথ নানা লোভ ও প্রলোভনে ভরা। এ পথে প্রতি মূহুর্তে পদস্খলনের সম্ভাবনা। যদি আমরা তাগুতকে অস্বীকার করে শুধুমাত্র আল্লাহ্র উপরই আমাদের বিশ্বাস স্থাপন করি, তবে আমাদের অবস্থান ঐ লোকটির মত যে মজবুত হাতলকে ধরে রাখলো। ফলে সে পতন থেকে রক্ষা পেলো। ধরে রাখা বা না রাখা তার ইচ্ছা। সেই রকম আমরা যদি স্বইচ্ছায় আল্লাহ্র কাছে আত্মসমর্পণ করি এবং শুধুমাত্র তার উপরেই আস্থা স্থাপন করি, এবং তার কাছেই আমাদের নিরাপত্তা চাই তবে সে এমন এক মজবুত হাতলকে অবলম্বন করলো যা কখনও ভাঙ্গবে না। অর্থাৎ সংসার জীবনে তার পদস্খলন হবে না।
আয়াতঃ 002.257
যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক। তাদেরকে তিনি বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে। আর যারা কুফরী করে তাদের অভিভাবক হচ্ছে তাগুত। তারা তাদেরকে আলো থেকে বের করে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়। এরাই হলো দোযখের অধিবাসী, চিরকাল তারা সেখানেই থাকবে।
Allâh is the Walî (Protector or Guardian) of those who believe. He brings them out from darkness into light. But as for those who disbelieve, their Auliyâ (supporters and helpers) are Tâghût [false deities and false leaders, etc.], they bring them out from light into darkness. Those are the dwellers of the Fire, and they will abide therein forever.
اللّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آمَنُواْ يُخْرِجُهُم مِّنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّوُرِ وَالَّذِينَ كَفَرُواْ أَوْلِيَآؤُهُمُ الطَّاغُوتُ يُخْرِجُونَهُم مِّنَ النُّورِ إِلَى الظُّلُمَاتِ أُوْلَـئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
Allahu waliyyu allatheena amanoo yukhrijuhum mina alththulumati ila alnnoori waallatheena kafaroo awliyaohumu alttaghootu yukhrijoonahum mina alnnoori ila alththulumati ola-ika as-habu alnnari hum feeha khalidoona
YUSUFALI: Allah is the Protector of those who have faith: from the depths of darkness He will lead them forth into light. Of those who reject faith the patrons are the evil ones: from light they will lead them forth into the depths of darkness. They will be companions of the fire, to dwell therein (For ever).
PICKTHAL: Allah is the Protecting Guardian of those who believe. He bringeth them out of darkness into light. As for those who disbelieve, their patrons are false deities. They bring them out of light into darkness. Such are rightful owners of the Fire. They will abide therein.
SHAKIR: Allah is the guardian of those who believe. He brings them out of the darkness into the light; and (as to) those who disbelieve, their guardians are Shaitans who take them out of the light into the darkness; they are the inmates of the fire, in it they shall abide.
KHALIFA: GOD is Lord of those who believe; He leads them out of darkness into the light. As for those who disbelieve, their lords are their idols; they lead them out of the light into darkness – these will be the dwellers of Hell; they abide in it forever.
২৫৭। যাদের ঈমান আছে; আল্লাহ্ তাদের রক্ষাকর্তা। অন্ধকারের অতল থেকে তিনি তাদের আলোতে পরিচালিত করবেন। যারা ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে, ‘মন্দ’ [শক্তি] তাদের অভিভাবক হবে। ইহা তাদের আলো থেকে অতল অন্ধকারের দিকে পরিচালিত করে। তারা হবে আগুনের অধিবাসী, সেখানে তারা [চিরদিন] বাস করবে।
রুকু – ৩৫
২৫৮। তুমি কি ঐ ব্যক্তিকে দেখ নাই, যে ইব্রাহীমের সাথে তার প্রভুর সম্বন্ধে বিতর্ক করছিলো, যেহেতু আল্লাহ্ তাকে [ক্ষমতা ও] কর্তৃত্ব দিয়েছিলেন ৩০২। ইব্রাহীম বলেছিলো, “আমার প্রভু তিনি, যিনি জীবন ও মৃত্যু দেন।” সে বলেছিলো, “আমিও জীবন ও মৃত্যু দান করি।” ইব্রাহীম বলেছিলো, “কিন্তু আল্লাহ্ সূর্যকে পূর্বদিকে উদয় করেন, তুমি উহাকে পশ্চিম দিক থেকে উদয় করাও তো।” এভাবেই যে [একগুঁয়ে ভাবে] ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করেছিলো, সে হতবুদ্ধি হয়ে গেল। যারা অন্যায়কারী আল্লাহ্ তাদের সৎপথ দেখান না ৩০৩।
৩০২। আয়াত [২ : ২৫৮ – ২৬০] এই আয়াত তিনটি সম্পর্কে নানা রকম মতবাদ আছে। বিশেষ করে কে সেই ব্যক্তি যে হযরত ইব্রাহীমের সাথে তর্কে প্রবৃত্ত হয়েছিলো ? কুরআন শরীফে যেহেতু তার নাম উল্লেখ করা হয় নাই, এবং আমাদের প্রিয় নবীও এ সম্বন্ধে কোনও বক্তব্য রাখেন নাই, সুতরাং এই ব্যক্তির নামের অনুসন্ধান করা বৃথা এবং এ সম্বন্ধে নিজস্ব কোনও অনুমান করাও উচিত নয়। গবেষণার ক্ষেত্রে অনেক সময়ে অনুমান অত্যন্ত ফলপ্রসু হয়। কিন্তু কুরআন শরীফ এমন এক গ্রন্থ যার বক্তব্য, যার শিক্ষা, সার্বজনীন এবং যুগ কাল অতিক্রান্ত। সুতরাং এখানে সামান্য একটা নামের ব্যাপারে অনুমান করে কূটতর্কে জড়িয়ে যাবার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। ফলে কুরআনের যে মূল শিক্ষা বা যে উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখা হয়েছে তার থেকে আমরা বহু দূরে চলে যেতে পারি। কুরআনের সার্বজনীন ও বৃহত্তর রূপ হৃদয়ঙ্গম করার পরিবর্তে আমরা ক্ষুদ্র পরিবেশে কুটতর্কের ফলে আল্লাহ্র বাণীর মহিমা থেকে বঞ্চিত হব। এ যেনো সমুদ্র দর্শনের পরিবর্তে ক্ষুদ্র ‘ডোবা’ দর্শন এবং এর মহিমা কীর্তন। উপরের আয়াত তিনটি [২ : ২৫৮, ২৫৯, ২৬০] যে কোনও পয়গম্বরের জীবনেই ঘটতে পারে, তবে আয়াত [২ : ২৫৮]-এ আল্লাহ্, নবী মুহম্মদ মুস্তফাকে (সাঃ) সম্বোধন করেছেন।
৩০৩। আয়াতের [২ : ২৫৮] লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে মানুষের ক্ষমতার দম্ভ ও অহংকার আল্লাহ্র ক্ষমতার কাছে তুচ্ছ। যে ব্যক্তির সাথে হযরত ইব্রাহীমের তর্কবিতর্ক হচ্ছিল, সম্ভবতঃ তিনি ছিলেন বেবীলনের রাজা নমরুদ। মাওলানা ইউসুফ আলী এখানে নমরুদের উল্লেখ করেছেন এ জন্য যে হযরত ইব্রাহীমের আদি বাসস্থান ছিল বেবীলনে। সে সময়ে বেবীলন শিল্প, সাহিত্য ও বিজ্ঞানে পৃথিবীর শীর্ষ স্থানীয় ছিল। বিজ্ঞান পৃথিবীতে বহু আশ্চর্য্য ঘটনার জন্ম দিতে সক্ষম। একথা সে সময়ের বেবীলনের জন্যও প্রযোজ্য ছিল, বর্তমান সময়ের জন্যও প্রযোজ্য আছে। বিজ্ঞান যত কিছুই আবিষ্কার করুক না কেন জীবনের বা প্রাণের রহস্য আজও তার কাছে অজানা। এই রহস্য সে সময়েও বিজ্ঞানীদের হতবুদ্ধি করতো, আজ এত বছর পরেও বিজ্ঞানীদের প্রাণের রহস্য সেই একইভাবে বিস্মিত ও হতবুদ্ধি করে। আজকের যুগে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর সাহায্যে মানুষ সৃষ্টির কলা-কৌশল উদঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছে। ইব্রাহীমের (আঃ) পরে কত যুগ অতিক্রান্ত হয়েছে। বিজ্ঞানের জ্ঞান কত সমৃদ্ধ হয়েছে, তবুও নিউটনের মত বলতে হয়, “আমরা জ্ঞান সমুদ্রের তীরে নুড়ি কুড়াচ্ছি।” অসীম জ্ঞানের আঁধার একমাত্র সর্বশক্তিমান। যখন লোকে অহংকারে স্ফীত হয়ে দম্ভ প্রকাশ করে তখন সে এই সত্যকে ভুলে যায় বা দেখতে অপারগ হয়। নিজেকে সে স্রষ্টার সমকক্ষ মনে করে। আজকের যুগেও আমরা এসব লোকের সন্ধান পাই যারা বিজ্ঞান পড়ে আল্লাহ্র অস্তিত্ব অস্বীকার করে। তাদের ক্ষুদ্র জ্ঞানের দম্ভে ভুলে যায় যে, পৃথিবীর যাবতীয় প্রাকৃতিক বিধান বা বিজ্ঞান সবই আল্লাহ্র অসীম জ্ঞানের সামান্য অংশ মাত্র। নৃপতি বা রাজা এবং বিজ্ঞানী এরা উভয়েই সাধারণ মানুষের তুলনায় ক্ষমতাধর সন্দেহ নাই। কিন্তু আল্লাহ্র তুলনায় তা অত্যন্ত সীমিত। হযরত ইব্রাহীম নমরুদকে সেই কথাই স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন যে, যদি সে আল্লাহ্র মতই ক্ষমতাধর হয়, তবে সূর্যকে বলুক পশ্চিম দিক থেকে উঠতে।
আয়াতঃ 002.258
তুমি কি সে লোককে দেখনি, যে পালনকর্তার ব্যাপারে বাদানুবাদ করেছিল ইব্রাহীমের সাথে এ কারণে যে, আল্লাহ সে ব্যাক্তিকে রাজ্য দান করেছিলেন? ইব্রাহীম যখন বললেন, আমার পালনকর্তা হলেন তিনি, যিনি জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান। সে বলল, আমি জীবন দান করি এবং মৃত্যু ঘটিয়ে থাকি। ইব্রাহীম বললেন, নিশ্চয়ই তিনি সুর্যকে উদিত করেন পূর্ব দিক থেকে এবার তুমি তাকে পশ্চিম দিক থেকে উদিত কর। তখন সে কাফের হতভম্ব হয়ে গেল। আর আল্লাহ সীমালংঘণকারী সম্প্রদায়কে সরল পথ প্রদর্শন করেন না।
Have you not looked at him who disputed with Ibrâhim (Abraham) about his Lord (Allâh), because Allâh had given him the kingdom? When Ibrâhim (Abraham) said (to him): ”My Lord (Allâh) is He Who gives life and causes death.” He said, ”I give life and cause death.” Ibrâhim (Abraham) said, ”Verily! Allâh causes the sun to rise from the east; then cause it you to rise from the west.” So the disbeliever was utterly defeated. And Allâh guides not the people, who are Zâlimûn (wrong-doers, etc.).
أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِي حَآجَّ إِبْرَاهِيمَ فِي رِبِّهِ أَنْ آتَاهُ اللّهُ الْمُلْكَ إِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ رَبِّيَ الَّذِي يُحْيِـي وَيُمِيتُ قَالَ أَنَا أُحْيِـي وَأُمِيتُ قَالَ إِبْرَاهِيمُ فَإِنَّ اللّهَ يَأْتِي بِالشَّمْسِ مِنَ الْمَشْرِقِ فَأْتِ بِهَا مِنَ الْمَغْرِبِ فَبُهِتَ الَّذِي كَفَرَ وَاللّهُ لاَ يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ
Alam tara ila allathee hajja ibraheema fee rabbihi an atahu Allahu almulka ith qala ibraheemu rabbiya allathee yuhyee wayumeetu qala ana ohyee waomeetu qala ibraheemu fa-inna Allaha ya/tee bialshshamsi mina almashriqi fa/ti biha mina almaghribi fabuhita allathee kafara waAllahu la yahdee alqawma alththalimeena
YUSUFALI: Hast thou not Turned thy vision to one who disputed with Abraham About his Lord, because Allah had granted him power? Abraham said: “My Lord is He Who Giveth life and death.” He said: “I give life and death”. Said Abraham: “But it is Allah that causeth the sun to rise from the east: Do thou then cause him to rise from the West.” Thus was he confounded who (in arrogance) rejected faith. Nor doth Allah Give guidance to a people unjust.
PICKTHAL: Bethink thee of him who had an argument with Abraham about his Lord, because Allah had given him the kingdom; how, when Abraham said: My Lord is He Who giveth life and causeth death, he answered: I give life and cause death. Abraham said: Lo! Allah causeth the sun to rise in the East, so do thou cause it to come up from the West. Thus was the disbeliever abashed. And Allah guideth not wrongdoing folk.
SHAKIR: Have you not considered him (Namrud) who disputed with Ibrahim about his Lord, because Allah had given him the kingdom? When Ibrahim said: My Lord is He who gives life and causes to die, he said: I give life and cause death. Ibrahim said: So surely Allah causes the sun to rise from the east, then make it rise from the west; thus he who disbelieved was confounded; and Allah does not guide aright the unjust people.
KHALIFA: Have you noted the one who argued with Abraham about his Lord, though GOD had given him kingship? Abraham said, “My Lord grants life and death.” He said, “I grant life and death.” Abraham said, “GOD brings the sun from the east, can you bring it from the west?” The disbeliever was stumped. GOD does not guide the wicked.
২৫৭। যাদের ঈমান আছে; আল্লাহ্ তাদের রক্ষাকর্তা। অন্ধকারের অতল থেকে তিনি তাদের আলোতে পরিচালিত করবেন। যারা ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে, ‘মন্দ’ [শক্তি] তাদের অভিভাবক হবে। ইহা তাদের আলো থেকে অতল অন্ধকারের দিকে পরিচালিত করে। তারা হবে আগুনের অধিবাসী, সেখানে তারা [চিরদিন] বাস করবে।
রুকু – ৩৫
২৫৮। তুমি কি ঐ ব্যক্তিকে দেখ নাই, যে ইব্রাহীমের সাথে তার প্রভুর সম্বন্ধে বিতর্ক করছিলো, যেহেতু আল্লাহ্ তাকে [ক্ষমতা ও] কর্তৃত্ব দিয়েছিলেন ৩০২। ইব্রাহীম বলেছিলো, “আমার প্রভু তিনি, যিনি জীবন ও মৃত্যু দেন।” সে বলেছিলো, “আমিও জীবন ও মৃত্যু দান করি।” ইব্রাহীম বলেছিলো, “কিন্তু আল্লাহ্ সূর্যকে পূর্বদিকে উদয় করেন, তুমি উহাকে পশ্চিম দিক থেকে উদয় করাও তো।” এভাবেই যে [একগুঁয়ে ভাবে] ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করেছিলো, সে হতবুদ্ধি হয়ে গেল। যারা অন্যায়কারী আল্লাহ্ তাদের সৎপথ দেখান না ৩০৩।
৩০২। আয়াত [২ : ২৫৮ – ২৬০] এই আয়াত তিনটি সম্পর্কে নানা রকম মতবাদ আছে। বিশেষ করে কে সেই ব্যক্তি যে হযরত ইব্রাহীমের সাথে তর্কে প্রবৃত্ত হয়েছিলো ? কুরআন শরীফে যেহেতু তার নাম উল্লেখ করা হয় নাই, এবং আমাদের প্রিয় নবীও এ সম্বন্ধে কোনও বক্তব্য রাখেন নাই, সুতরাং এই ব্যক্তির নামের অনুসন্ধান করা বৃথা এবং এ সম্বন্ধে নিজস্ব কোনও অনুমান করাও উচিত নয়। গবেষণার ক্ষেত্রে অনেক সময়ে অনুমান অত্যন্ত ফলপ্রসু হয়। কিন্তু কুরআন শরীফ এমন এক গ্রন্থ যার বক্তব্য, যার শিক্ষা, সার্বজনীন এবং যুগ কাল অতিক্রান্ত। সুতরাং এখানে সামান্য একটা নামের ব্যাপারে অনুমান করে কূটতর্কে জড়িয়ে যাবার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। ফলে কুরআনের যে মূল শিক্ষা বা যে উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখা হয়েছে তার থেকে আমরা বহু দূরে চলে যেতে পারি। কুরআনের সার্বজনীন ও বৃহত্তর রূপ হৃদয়ঙ্গম করার পরিবর্তে আমরা ক্ষুদ্র পরিবেশে কুটতর্কের ফলে আল্লাহ্র বাণীর মহিমা থেকে বঞ্চিত হব। এ যেনো সমুদ্র দর্শনের পরিবর্তে ক্ষুদ্র ‘ডোবা’ দর্শন এবং এর মহিমা কীর্তন। উপরের আয়াত তিনটি [২ : ২৫৮, ২৫৯, ২৬০] যে কোনও পয়গম্বরের জীবনেই ঘটতে পারে, তবে আয়াত [২ : ২৫৮]-এ আল্লাহ্, নবী মুহম্মদ মুস্তফাকে (সাঃ) সম্বোধন করেছেন।
৩০৩। আয়াতের [২ : ২৫৮] লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে মানুষের ক্ষমতার দম্ভ ও অহংকার আল্লাহ্র ক্ষমতার কাছে তুচ্ছ। যে ব্যক্তির সাথে হযরত ইব্রাহীমের তর্কবিতর্ক হচ্ছিল, সম্ভবতঃ তিনি ছিলেন বেবীলনের রাজা নমরুদ। মাওলানা ইউসুফ আলী এখানে নমরুদের উল্লেখ করেছেন এ জন্য যে হযরত ইব্রাহীমের আদি বাসস্থান ছিল বেবীলনে। সে সময়ে বেবীলন শিল্প, সাহিত্য ও বিজ্ঞানে পৃথিবীর শীর্ষ স্থানীয় ছিল। বিজ্ঞান পৃথিবীতে বহু আশ্চর্য্য ঘটনার জন্ম দিতে সক্ষম। একথা সে সময়ের বেবীলনের জন্যও প্রযোজ্য ছিল, বর্তমান সময়ের জন্যও প্রযোজ্য আছে। বিজ্ঞান যত কিছুই আবিষ্কার করুক না কেন জীবনের বা প্রাণের রহস্য আজও তার কাছে অজানা। এই রহস্য সে সময়েও বিজ্ঞানীদের হতবুদ্ধি করতো, আজ এত বছর পরেও বিজ্ঞানীদের প্রাণের রহস্য সেই একইভাবে বিস্মিত ও হতবুদ্ধি করে। আজকের যুগে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর সাহায্যে মানুষ সৃষ্টির কলা-কৌশল উদঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছে। ইব্রাহীমের (আঃ) পরে কত যুগ অতিক্রান্ত হয়েছে। বিজ্ঞানের জ্ঞান কত সমৃদ্ধ হয়েছে, তবুও নিউটনের মত বলতে হয়, “আমরা জ্ঞান সমুদ্রের তীরে নুড়ি কুড়াচ্ছি।” অসীম জ্ঞানের আঁধার একমাত্র সর্বশক্তিমান। যখন লোকে অহংকারে স্ফীত হয়ে দম্ভ প্রকাশ করে তখন সে এই সত্যকে ভুলে যায় বা দেখতে অপারগ হয়। নিজেকে সে স্রষ্টার সমকক্ষ মনে করে। আজকের যুগেও আমরা এসব লোকের সন্ধান পাই যারা বিজ্ঞান পড়ে আল্লাহ্র অস্তিত্ব অস্বীকার করে। তাদের ক্ষুদ্র জ্ঞানের দম্ভে ভুলে যায় যে, পৃথিবীর যাবতীয় প্রাকৃতিক বিধান বা বিজ্ঞান সবই আল্লাহ্র অসীম জ্ঞানের সামান্য অংশ মাত্র। নৃপতি বা রাজা এবং বিজ্ঞানী এরা উভয়েই সাধারণ মানুষের তুলনায় ক্ষমতাধর সন্দেহ নাই। কিন্তু আল্লাহ্র তুলনায় তা অত্যন্ত সীমিত। হযরত ইব্রাহীম নমরুদকে সেই কথাই স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন যে, যদি সে আল্লাহ্র মতই ক্ষমতাধর হয়, তবে সূর্যকে বলুক পশ্চিম দিক থেকে উঠতে।
আয়াতঃ 002.259
তুমি কি সে লোককে দেখনি যে এমন এক জনপদ দিয়ে যাচ্ছিল যার বাড়ীঘরগুলো ভেঙ্গে ছাদের উপর পড়ে ছিল? বলল, কেমন করে আল্লাহ মরনের পর একে জীবিত করবেন? অতঃপর আল্লাহ তাকে মৃত অবস্থায় রাখলেন একশ বছর। তারপর তাকে উঠালেন। বললেন, কত কাল এভাবে ছিলে? বলল আমি ছিলাম, একদিন কংবা একদিনের কিছু কম সময়। বললেন, তা নয়; বরং তুমি তো একশ বছর ছিলে। এবার চেয়ে দেখ নিজের খাবার ও পানীয়ের দিকে-সেগুলো পচে যায় নি এবং দেখ নিজের গাধাটির দিকে। আর আমি তোমাকে মানুষের জন্য দৃষ্টান্ত বানাতে চেয়েছি। আর হাড়গুলোর দিকে চেয়ে দেখ যে, আমি এগুলোকে কেমন করে জুড়ে দেই এবং সেগুলোর উপর মাংসের আবরণ পরিয়ে দেই। অতঃপর যখন তার উপর এ অবস্থা প্রকাশিত হল, তখন বলে উঠল-আমি জানি, নিঃসন্দেহে আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল।
Or like the one who passed by a town and it had tumbled over its roofs. He said: ”Oh! How will Allâh ever bring it to life after its death?” So Allâh caused him to die for a hundred years, then raised him up (again). He said: ”How long did you remain (dead)?” He (the man) said: ”(Perhaps) I remained (dead) a day or part of a day”. He said: ”Nay, you have remained (dead) for a hundred years, look at your food and your drink, they show no change; and look at your donkey! And thus We have made of you a sign for the people. Look at the bones, how We bring them together and clothe them with flesh”. When this was clearly shown to him, he said, ”I know (now) that Allâh is Able to do all things.”
أَوْ كَالَّذِي مَرَّ عَلَى قَرْيَةٍ وَهِيَ خَاوِيَةٌ عَلَى عُرُوشِهَا قَالَ أَنَّىَ يُحْيِـي هَـَذِهِ اللّهُ بَعْدَ مَوْتِهَا فَأَمَاتَهُ اللّهُ مِئَةَ عَامٍ ثُمَّ بَعَثَهُ قَالَ كَمْ لَبِثْتَ قَالَ لَبِثْتُ يَوْمًا أَوْ بَعْضَ يَوْمٍ قَالَ بَل لَّبِثْتَ مِئَةَ عَامٍ فَانظُرْ إِلَى طَعَامِكَ وَشَرَابِكَ لَمْ يَتَسَنَّهْ وَانظُرْ إِلَى حِمَارِكَ وَلِنَجْعَلَكَ آيَةً لِّلنَّاسِ وَانظُرْ إِلَى العِظَامِ كَيْفَ نُنشِزُهَا ثُمَّ نَكْسُوهَا لَحْمًا فَلَمَّا تَبَيَّنَ لَهُ قَالَ أَعْلَمُ أَنَّ اللّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
Aw kaallathee marra AAala qaryatin wahiya khawiyatun AAala AAurooshiha qala anna yuhyee hathihi Allahu baAAda mawtiha faamatahu Allahu mi-ata AAamin thumma baAAathahu qala kam labithta qala labithtu yawman aw baAAda yawmin qala bal labithta mi-ata AAamin faonthur ila taAAamika washarabika lam yatasannah waonthur ila himarika walinajAAalaka ayatan lilnnasi waonthur ila alAAithami kayfa nunshizuha thumma naksooha lahman falamma tabayyana lahu qala aAAlamu anna Allaha AAala kulli shay-in qadeerun
YUSUFALI: Or (take) the similitude of one who passed by a hamlet, all in ruins to its roofs. He said: “Oh! how shall Allah bring it (ever) to life, after (this) its death?” but Allah caused him to die for a hundred years, then raised him up (again). He said: “How long didst thou tarry (thus)?” He said: (Perhaps) a day or part of a day.” He said: “Nay, thou hast tarried thus a hundred years; but look at thy food and thy drink; they show no signs of age; and look at thy donkey: And that We may make of thee a sign unto the people, Look further at the bones, how We bring them together and clothe them with flesh.” When this was shown clearly to him, he said: “I know that Allah hath power over all things.”
PICKTHAL: Or (bethink thee of) the like of him who, passing by a township which had fallen into utter ruin, exclaimed: How shall Allah give this township life after its death? And Allah made him die a hundred years, then brought him back to life. He said: How long hast thou tarried? (The man) said: I have tarried a day or part of a day. (He) said: Nay, but thou hast tarried for a hundred years. Just look at thy food and drink which have not rotted! Look at thine ass! And, that We may make thee a token unto mankind, look at the bones, how We adjust them and then cover them with flesh! And when (the matter) became clear unto him, he said: I know now that Allah is Able to do all things.
SHAKIR: Or the like of him (Uzair) who passed by a town, and it had fallen down upon its roofs; he said: When will Allah give it life after its death? So Allah caused him to die for a hundred years, then raised him to life. He said: How long have you tarried? He said: I have tarried a day, or a part of a day. Said He: Nay! you have tarried a hundred years; then look at your food and drink– years have not passed over it; and look at your ass; and that We may make you a sign to men, and look at the bones, how We set them together, then clothed them with flesh; so when it became clear to him, he said: I know that Allah has power over all things.
KHALIFA: Consider the one who passed by a ghost town and wondered, “How can GOD revive this after it had died?” GOD then put him to death for a hundred years, then resurrected him. He said, “How long have you stayed here?” He said, “I have been here a day, or part of the day.” He said, “No! You have been here a hundred years. Yet, look at your food and drink; they did not spoil. Look at your donkey – we thus render you a lesson for the people. Now, note how we construct the bones, then cover them with flesh.” When he realized what had happened, he said, “Now I know that GOD is Omnipotent.”
২৫৯। অথবা সেই লোকটির উপমা। [চিন্তা কর] যে একটি ক্ষুদ্র গ্রামের ধ্বংস স্তুপের মধ্য দিয়ে পথ অতিক্রম করছিলো ৩০৪। সে বলেছিলো, “মৃত্যুর পর কিভাবে আল্লাহ্ ইহাকে জীবিত করবেন ?” অতঃপর আল্লাহ্ তাকে একশত বৎসর মৃত রাখলেন, তারপর [পুনরায়] তাকে জীবিত করলেন। আল্লাহ্ বললেন, “[এরূপ অবস্থায়] তুমি কতকাল অবস্থান করলে ?” সে বলেছিলো, [সম্ভবতঃ] একদিন বা দিনের কিছু অংশ।” আল্লাহ্ বলেছিলেন, “না, বরং তুমি একশত বৎসর অবস্থান করেছ। তোমার খাদ্য ও পানীয়ের প্রতি লক্ষ্য কর, উহাতে দীর্ঘদিনের অবস্থানের কোন চিহ্ন নাই। এবং তোমার গাধাটির দিকে তাকাও। তোমাকে মানব জাতির জন্য নিদর্শন স্বরূপ করবো সে কারণে আরও তাকাও [গাধাটির] অস্থিগুলির প্রতি। কিভাবে সেগুলি আমি সংযোজিত করি এবং মাংস দ্বারা ঢেকে দেই ৩০৫।” যখন তাকে তা সুস্পষ্টরূপে দেখানো হলো, সে বলেছিলো, “আমি জানি যে সকল বিষয়ের উপরে আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান।”
৩০৪। এই ঘটনাকে বিভিন্নভাবে বর্ণনা করা হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়; (১) Ezekiel-এর শুষ্ক হাড়ের দর্শন [Ezekiel. xxxvii ১-১০] (২) জেরুজালেম পরাজিত ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ার পরে Nehemiah এর জেরুজালেম পরিদর্শন এবং এর পুনঃনির্মাণ [Nehemia ১. ১২-২০]; এবং (৩) ইহুদীদের ধর্মগুরু ও লেখক, সংস্কারকের নাম ‘Uzair or Ezra or Esdras’ যাকে পারস্য সম্রাট জেরুজালেম পরাজয়ের পরে জেরুজালেমে পাঠিয়েছিলেন। তাঁর বহু নীতিবাক্য ইহুদীদের মধ্যে প্রচলিত। এর মধ্যে নম্বর (১) এ এই শুষ্ক হাড় সম্বন্ধে শুধুমাত্র অল্প কয়েকটি লাইনে ৪টি শব্দ পাওয়া যায়। (২) এবং (৩) নম্বরে নির্দিষ্টভাবে এ সম্বন্ধে কিছু উল্লেখ নাই। কুরআন শরীফের বাণী সর্বকালের সর্বযুগের, সর্ব সাধারণের জন্য। কোনও বিশেষ ঘটনার মাধ্যমে এই সার্বজনীন উপদেশ বা বাণী প্রচার করা হয়েছে। এখানেও গল্পছন্দে যে নীতিপূর্ণ উপদেশ (similitude) দেওয়া হচ্ছে তা যুগ-কাল অতিক্রান্ত, সর্বজীন; এবং আমাদের সেভাবেই তা গ্রহণ করা উচিত। এখানে মাওলানা ইউসুফ আলীর মতে এই উপদেশ কোনও ব্যক্তিগত নয়, এই গল্পের মাধ্যমে যুগে যুগে এক এক জাতির মৃত্যু ও পুনরুত্থানের কথা ব্যক্ত করা হয়েছে।
৩০৫। এই আয়াতের গল্পটি এরূপ যে, এক লোক ছিল। এক বার চলতে চলতে সে এমন এক জনপদের উপর দিয়ে অতিক্রম করলো যে সে শহর এবং তার সভ্যতা সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত। এই দেখে তার মনে সন্দেহের উদ্রেক হলো, এই ভেবে যে, কীভাবে এই শহর পূণঃর্জীবিত হবে ? কিন্তু আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান। পৃথিবীর ইতিহাস বলে, যুগে যুগে আল্লাহ্ বহু জাতি বহু সভ্যতা ধ্বংস করেছেন, আবার পুনঃর্জীবিত করেছেন। শেষ বিচারের দিনেও ঠিক সেভাবেই প্রত্যেক মানুষকে পুনঃর্জীবিত করবেন। ঐ ব্যক্তি ১০০ বছর মৃত থেকে পুনরায় জীবিত হলো, কিন্তু তার কাছে ব্যাপারটি মনে হলো ক্ষণিক মাত্র। তার খাদ্য ও পানীয় আল্লাহ্র হুকুমে একশত বছর অবিকৃত ছিল কিন্তু তার গাধাটি, শুধুমাত্র যে মারাই গিয়েছিল তাই-ই নয়, তার শুধুমাত্র কয়েকটি শুকনা হাড় অবশিষ্ট ছিল। ঐ লোকটির চোখের সামনেই আল্লাহ্ গাধাটিকে মাংস রক্তে আবৃত করে পুনঃর্জীবিত করলেন।
[সর্বজনীন উপদেশ হচ্ছেঃ (১) আল্লাহ্ হচ্ছেন সময়ের উর্ধ্বে। বর্তমান যুগে বিজ্ঞানীরাও এ কথা বলেন যে, সময়ের ধারণা আপেক্ষিক মাত্র। কসমিক ক্যালেন্ডারের বছরের ধারণা আমাদের দৈনন্দিক জীবনের বছরের ধারণা এক নয়। (২) সময়ের ব্যাপার বিভিন্ন বস্তুকে বিভিন্নভাবে প্রভাবান্বিত করে। (৩) জীবন মৃত্যুর মালিক একমাত্র আল্লাহ। (৪) মানুষের ক্ষমতার দম্ভের কোনও মূল্য নাই আল্লাহ্র চোখে। আল্লাহ্ মানুষের ঈমান বা তার প্রতি আন্তরিক বিশ্বাসের মূল্য দেন।]
আয়াতঃ 002.260
আর স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম বলল, হে আমার পালনকর্তা আমাকে দেখাও, কেমন করে তুমি মৃতকে জীবিত করবে। বললেন; তুমি কি বিশ্বাস কর না? বলল, অবশ্যই বিশ্বাস করি, কিন্তু দেখতে এজন্যে চাইছি যাতে অন্তরে প্রশান্তি লাভ করতে পারি। বললেন, তাহলে চারটি পাখী ধরে নাও। পরে সেগুলোকে নিজের পোষ মানিয়ে নাও, অতঃপর সেগুলোর দেহের একেকটি অংশ বিভিন্ন পাহাড়ের উপর রেখে দাও। তারপর সেগুলোকে ডাক; তোমার নিকট দৌড়ে চলে আসবে। আর জেনে রাখো, নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী, অতি জ্ঞান সম্পন্ন।
And (remember) when Ibrâhim (Abraham) said, ”My Lord! Show me how You give life to the dead.” He (Allâh) said: ”Do you not believe?” He [Ibrâhim (Abraham)] said: ”Yes (I believe), but to be stronger in Faith.” He said: ”Take four birds, then cause them to incline towards you (then slaughter them, cut them into pieces), and then put a portion of them on every hill, and call them, they will come to you in haste. And know that Allâh is All-Mighty, All-Wise.”
وَإِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ رَبِّ أَرِنِي كَيْفَ تُحْيِـي الْمَوْتَى قَالَ أَوَلَمْ تُؤْمِن قَالَ بَلَى وَلَـكِن لِّيَطْمَئِنَّ قَلْبِي قَالَ فَخُذْ أَرْبَعَةً مِّنَ الطَّيْرِ فَصُرْهُنَّ إِلَيْكَ ثُمَّ اجْعَلْ عَلَى كُلِّ جَبَلٍ مِّنْهُنَّ جُزْءًا ثُمَّ ادْعُهُنَّ يَأْتِينَكَ سَعْيًا وَاعْلَمْ أَنَّ اللّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
Wa-ith qala ibraheemu rabbi arinee kayfa tuhyee almawta qala awa lam tu/min qala bala walakin liyatma-inna qalbee qala fakhuth arbaAAatan mina alttayri fasurhunna ilayka thumma ijAAal AAala kulli jabalin minhunna juz-an thumma odAAuhunna ya/teenaka saAAyan waiAAlam anna Allaha AAazeezun hakeemun
YUSUFALI: When Abraham said: “Show me, Lord, how You will raise the dead, ” He replied: “Have you no faith?” He said “Yes, but just to reassure my heart.” Allah said, “Take four birds, draw them to you, and cut their bodies to pieces. Scatter them over the mountain-tops, then call them back. They will come swiftly to you. Know that Allah is Mighty, Wise.”
PICKTHAL: And when Abraham said (unto his Lord): My Lord! Show me how Thou givest life to the dead, He said: Dost thou not believe? Abraham said: Yea, but (I ask) in order that my heart may be at ease. (His Lord) said: Take four of the birds and cause them to incline unto thee, then place a part of them on each hill, then call them, they will come to thee in haste, and know that Allah is Mighty, Wise.
SHAKIR: And when Ibrahim said: My Lord! show me how Thou givest life to the dead, He said: What! and do you not believe? He said: Yes, but that my heart may be at ease. He said: Then take four of the birds, then train them to follow you, then place on every mountain a part of them, then call them, they will come to you flying; and know that Allah is Mighty, Wise.
KHALIFA: Abraham said, “My Lord, show me how You revive the dead.” He said, “Do you not believe?” He said, “Yes, but I wish to reassure my heart.” He said, “Take four birds, study their marks, place a piece of each bird on top of a hill, then call them to you. They will come to you in a hurry. You should know that GOD is Almighty, Most Wise.”
২৬০। স্মরণ কর ! ইব্রাহীম বলেছিলো, “হে আমার প্রভু ! আমাকে দেখাও কিভাবে তুমি মৃতকে জীবিত কর” ৩০৬। আল্লাহ্ বলেছিলেন, “তুমি কি তাহলে বিশ্বাস কর না ?” সে বলেছিলে, “হ্যাঁ করি, তবে ইহা কেবল আমার চিত্তের প্রশান্তির জন্য” ৩০৭। আল্লাহ্ বললেন, “[তাহলে] চারটি পাখী নাও এবং তোমার দিকে ফিরে আসার [শিক্ষা দিয়ে] তাদের পোষ মানাও। অতঃপর তাদের এক একটি অংশ এক এক পাহাড়ে স্থাপন কর ৩০৮ এবং তারপর তাদের ডাক দাও। তারা দ্রুতগতিতে তোমার কাছে [উড়ে] আসবে। জেনে রাখ শক্তিতে আল্লাহ্ পরাক্রমশালী এবং প্রজ্ঞাময়।”
৩০৬। আয়াতে [২ : ২৫৮] বলা হয়েছে যে আল্লাহ্ সর্বময় ক্ষমতার মালিক। মানুষের মিথ্যা দম্ভ ও অহংকার এক মূহুর্তে ধূলিস্মাৎ হতে পারে। আয়াতে [২ : ২৫৯] বলা হয়েছে আল্লাহ্ সময়ের সীমার উর্ধ্বে। ব্যক্তিগত, জাতিগত জীবনের উত্থান পতন, জীবন-মৃত্যু সবই আল্লাহ্র আইনের কর্তৃত্বাধীন। আমরা আমাদের ক্ষুদ্র বিচার-বুদ্ধি দ্বারা অনেক সময়ে ভুল করে বসি বা কৌতুহল বা সন্দেহ প্রকাশ করে থাকি। হযরত ইব্রাহীমের (আঃ) কৌতুহলের উত্তরে আল্লাহ্ দেখালেন যে, মৃত্যুকে জীবিত করা তাঁর জন্য কিছুই নয়।
৩০৭। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) আল্লাহ্র উপরে এবং মৃত্যুর পরে পুনঃর্জীবন সম্পর্কে পরিপূর্ণ বিশ্বাসী; প্রশ্নটি ছিল শুধু মৃত্যুর পরে পুনর্জীবন লাভের যে স্বরূপ তা জানার কৌতুহল। পুনর্জীবন সম্পর্কে তাঁর মনে কোনরূপ সন্দেহ ছিল না।
৩০৮। ‘Juz-an’ : A portion of them: তফসীর কারকগণ বলেন যে, পাখীগুলিকে ছোট ছোট অংশে বিভক্ত করে বিভক্ত অংশগুলিকে পাহাড়ের উপর স্থাপন করা হয়েছিল। পাখীগুলিকে মারা বা টুকরো অংশে বিভক্ত করার কথা এখানে উল্লেখ নাই কিন্তু অধিকাংশ তফসীরকারগণের মতে টুকরো করা শব্দটি উহ্য আছে, কারণ যেহেতু মৃত পাখীকে জীবনদান প্রসঙ্গটি এখানে এই আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে।
আয়াতঃ 002.261
যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধন সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ একটি বীজের মত, যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়। প্রত্যেকটি শীষে একশ করে দানা থাকে। আল্লাহ অতি দানশীল, সর্বজ্ঞ।
The likeness of those who spend their wealth in the Way of Allâh, is as the likeness of a grain (of corn); it grows seven ears, and each ear has a hundred grains. Allâh gives manifold increase to whom He pleases. And Allâh is All-Sufficient for His creatures’ needs, All-Knower.
مَّثَلُ الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللّهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِي كُلِّ سُنبُلَةٍ مِّئَةُ حَبَّةٍ وَاللّهُ يُضَاعِفُ لِمَن يَشَاء وَاللّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
Mathalu allatheena yunfiqoona amwalahum fee sabeeli Allahi kamathali habbatin anbatat sabAAa sanabila fee kulli sunbulatin mi-atu habbatin waAllahu yudaAAifu liman yashao waAllahu wasiAAun AAaleemun
YUSUFALI: The parable of those who spend their substance in the way of Allah is that of a grain of corn: it groweth seven ears, and each ear Hath a hundred grains. Allah giveth manifold increase to whom He pleaseth: And Allah careth for all and He knoweth all things.
PICKTHAL: The likeness of those who spend their wealth in Allah’s way is as the likeness of a grain which groweth seven ears, in every ear a hundred grains. Allah giveth increase manifold to whom He will. Allah is All-Embracing, All-Knowing.
SHAKIR: The parable of those who spend their property in the way of Allah is as the parable of a grain growing seven ears (with) a hundred grains in every ear; and Allah multiplies for whom He pleases; and Allah is Ample-giving, Knowing
KHALIFA: The example of those who spend their monies in the cause of GOD is that of a grain that produces seven spikes, with a hundred grains in each spike. GOD multiplies this manifold for whomever He wills. GOD is Bounteous, Knower.
রুকু – ৩৬
২৬১। যারা আল্লাহ্র রাস্তায় তাদের সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উপমা হচ্ছে একটি শস্যবীজ; যা সাতটি শীষ উৎপন্ন করে, এবং প্রত্যেক শীষে আছে একশত শস্যদানা। আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা বহুগুণ বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ্ সকলের প্রতি যত্নশীল এবং তিনি সব কিছু জানেন।
২৬২। যারা আল্লাহ্র রাস্তায় সম্পদ ব্যয় করে, এবং তাদের উদারতার কথা [দান গ্রহীতাকে] স্মরণ করিয়ে দেয় না বা ক্লেশ দেয় না, তাদের পুরস্কার রয়েছে তাদের প্রভুর নিকটে। তাদের কোন ভয় নাই, তারা দুঃখিতও হবে না।
২৬৩। যে দানের পরে ক্লেশ দেয়া হয়, তা অপেক্ষা সান্ত্বনা বাণী ও ক্ষমা প্রদর্শন শ্রেয় ৩০৯। আল্লাহ্ অভাবমুক্ত এবং তিনি পরম সহনশীল।
৩০৯। আয়াতে [২ : ২৬২ – ২৬৪] দানের মান দন্ড বর্ণনা করা হয়েছে। এগুলি হচ্ছে-
(১) যাই-ই দান করা হোক না কেন তা হালাল রুজী হতে হবে, এবং শুধুমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের জন্য আল্লাহ্র রাস্তায় [অর্থাৎ তার সৃষ্ট জীবের সেবায়] তা ব্যয় করতে হবে। [২:২৬৭]
(২) দান করে দানের প্রতিদান চাওয়া উচিত নয়, গ্রহীতার কাছ থেকে। দানের প্রতিদান এ পৃথিবীতে চাওয়া অনুচিত। প্রতিদান শুধুমাত্র চাওয়া যেতে পারে সর্বশক্তিমানের কাছে; যার সন্তুষ্টি বিধানের জন্য দান করা।
(৩) দানের পরে গ্রহীতার অনুগ্রহ প্রকাশ না করা এবং যাকে দান করা হলো তাকে কষ্ট না দেওয়া বা দানের কথা তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাকে মানসিক কষ্ট বা লোকচক্ষে হেয় প্রতিপন্ন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। অর্থাৎ যাকে দান করা হবে তার সাথে এমন কোন ব্যবহার করা যাবে না যাতে সে নিজেকে ঘৃণিত ও হেয় অনুভব করে বা মানসিক কষ্ট পায়।
(৪) দান করতে হবে বিনয়ের সাথে। নাম যশঃ ইত্যাদির আশায় বা কোনও গোপন উদ্দেশ্য সিদ্ধির [যেমন ভোট পাওয়ার জন্য আমাদের দেশের লোক সৎ কাজ বা দান করে] আশায় দান করাকে আল্লাহ্র চোখে দান বলে গণ্য হবে না। এমন কোনও দম্ভ বা অহংকার যদি দাতার মনে থাকে যে সে বিপদের সময়ে গ্রহীতার উপকার করেছে তাতেও দাতার দানের কোনও মূল্য থাকবে না। কারণ কাকে দান করলাম বা কী দান করলাম সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হচ্ছে, অহংকার ও দম্ভমুক্তভাবে, বিনয়ের সাথে দান করাই হচ্ছে আসল কথা। মনে এই চিন্তা রাখা যে আমরা যাই দান করি না কেন তা শুধুমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য করা হচ্ছে। আমরা আল্লাহকেই দান করছি; তাকে সন্তুষ্ট করার জন্য। বিশ্ব প্রতিপালক, সর্বশক্তিমানকে ক্ষুদ্র মানুষ যখন দান করবে, তখন কতটা বিনয়ের সাথে এবং অহংকার মুক্ত মানসিকতা থাকতে হবে তা সহজেই অনুমেয়। কারণ তিনি তো সর্বজ্ঞ, আমাদের ক্ষুদ্রাতি-ক্ষুদ্র চিন্তাধারাও তার অজ্ঞাত নয়। নিরহংকার ও বিনয়ী চিত্তের দান আল্লাহ্ গ্রহণ করেন ও সন্তুষ্ট হন। দানের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভ।
দানের মূল নির্যাস হচ্ছে; গ্রহীতার দোষত্রুটি ক্ষমা করে, দয়ার সাথে, বিনয়ের সাথে সাহায্যের হাত প্রসারিত করা। দুর্ব্যবহারের সাথে দান করা অপেক্ষা ভালো ব্যবহারের সাথে প্রত্যাখ্যান করা শ্রেয়। দানে কোনও প্রতিদান চাওয়া চলবে না গ্রহীতার কাছ থেকে। একমাত্র আল্লাহ্র কাছে প্রতিদান চাওয়া যেতে পারে। আল্লাহ্ সম্পদশালী ও সহিষ্ণু। তিনি কারও অর্থের বা সাহায্যের মুখাপেক্ষী নন। আল্লাহ্ অভাবমুক্ত যে ব্যক্তি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য ব্যয় করে, সে নিজের উপকারের জন্যই করে। এই পৃথিবীতে মানব সন্তান প্রতিমূহুর্তে নানা প্রলোভনের শিকার। আমাদের অন্তরের লুকায়িত পাপ, বা লোভ-লালসা বাইরের দৃষ্টিগোচর না হতে পারে, কিন্তু সর্বজ্ঞ আল্লাহ্ সবই জানেন। এই দোষত্রুটির উর্ধ্বে ওঠা মানুষের পক্ষে অসম্ভব। পরম করুণাময় আল্লাহ্ আমাদের দোষত্রুটি ক্ষমা করেন বলেই তার দরবারে আমাদের কাজের পুরস্কারের আশা করি। আমরা ক্ষুদ্র ও নগণ্য এবং সর্বোপরি আমাদের আশা-আকাঙ্খা বা কর্মের নিয়ত কখনই সম্পূর্ণ পাপমুক্ত হতে পারে না। কারণ মানুষ অত্যন্ত দুর্বলচিত্ত। তাই আল্লাহ্র রহমতই আমাদের ভরসা।
আয়াতঃ 002.262
যারা স্বীয় ধন সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে, এরপর ব্যয় করার পর সে অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে না এবং কষ্টও দেয় না, তাদেরই জন্যে তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে পুরস্কার এবং তাদের কোন আশংকা নেই, তারা চিন্তিতও হবে না।
Those who spend their wealth in the Cause of Allâh, and do not follow up their gifts with reminders of their generosity or with injury, their reward is with their Lord. On them shall be no fear, nor shall they grieve.
الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللّهِ ثُمَّ لاَ يُتْبِعُونَ مَا أَنفَقُواُ مَنًّا وَلاَ أَذًى لَّهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ
Allatheena yunfiqoona amwalahum fee sabeeli Allahi thumma la yutbiAAoona ma anfaqoo mannan wala athan lahum ajruhum AAinda rabbihim wala khawfun AAalayhim wala hum yahzanoona
YUSUFALI: Those who spend their substance in the cause of Allah, and follow not up their gifts with reminders of their generosity or with injury,-for them their reward is with their Lord: on them shall be no fear, nor shall they grieve.
PICKTHAL: Those who spend their wealth for the cause of Allah and afterward make not reproach and injury to follow that which they have spent; their reward is with their Lord, and there shall no fear come upon them, neither shall they grieve.
SHAKIR: (As for) those who spend their property in the way of Allah, then do not follow up what they have spent with reproach or injury, they shall have their reward from their Lord, and they shall have no fear nor shall they grieve.
KHALIFA: Those who spend their money in the cause of GOD, then do not follow their charity with insult or harm, will receive their recompense from their Lord; they have nothing to fear, nor will they grieve.
রুকু – ৩৬
২৬১। যারা আল্লাহ্র রাস্তায় তাদের সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উপমা হচ্ছে একটি শস্যবীজ; যা সাতটি শীষ উৎপন্ন করে, এবং প্রত্যেক শীষে আছে একশত শস্যদানা। আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা বহুগুণ বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ্ সকলের প্রতি যত্নশীল এবং তিনি সব কিছু জানেন।
২৬২। যারা আল্লাহ্র রাস্তায় সম্পদ ব্যয় করে, এবং তাদের উদারতার কথা [দান গ্রহীতাকে] স্মরণ করিয়ে দেয় না বা ক্লেশ দেয় না, তাদের পুরস্কার রয়েছে তাদের প্রভুর নিকটে। তাদের কোন ভয় নাই, তারা দুঃখিতও হবে না।
২৬৩। যে দানের পরে ক্লেশ দেয়া হয়, তা অপেক্ষা সান্ত্বনা বাণী ও ক্ষমা প্রদর্শন শ্রেয় ৩০৯। আল্লাহ্ অভাবমুক্ত এবং তিনি পরম সহনশীল।
৩০৯। আয়াতে [২ : ২৬২ – ২৬৪] দানের মান দন্ড বর্ণনা করা হয়েছে। এগুলি হচ্ছে-
(১) যাই-ই দান করা হোক না কেন তা হালাল রুজী হতে হবে, এবং শুধুমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের জন্য আল্লাহ্র রাস্তায় [অর্থাৎ তার সৃষ্ট জীবের সেবায়] তা ব্যয় করতে হবে। [২:২৬৭]
(২) দান করে দানের প্রতিদান চাওয়া উচিত নয়, গ্রহীতার কাছ থেকে। দানের প্রতিদান এ পৃথিবীতে চাওয়া অনুচিত। প্রতিদান শুধুমাত্র চাওয়া যেতে পারে সর্বশক্তিমানের কাছে; যার সন্তুষ্টি বিধানের জন্য দান করা।
(৩) দানের পরে গ্রহীতার অনুগ্রহ প্রকাশ না করা এবং যাকে দান করা হলো তাকে কষ্ট না দেওয়া বা দানের কথা তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাকে মানসিক কষ্ট বা লোকচক্ষে হেয় প্রতিপন্ন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। অর্থাৎ যাকে দান করা হবে তার সাথে এমন কোন ব্যবহার করা যাবে না যাতে সে নিজেকে ঘৃণিত ও হেয় অনুভব করে বা মানসিক কষ্ট পায়।
(৪) দান করতে হবে বিনয়ের সাথে। নাম যশঃ ইত্যাদির আশায় বা কোনও গোপন উদ্দেশ্য সিদ্ধির [যেমন ভোট পাওয়ার জন্য আমাদের দেশের লোক সৎ কাজ বা দান করে] আশায় দান করাকে আল্লাহ্র চোখে দান বলে গণ্য হবে না। এমন কোনও দম্ভ বা অহংকার যদি দাতার মনে থাকে যে সে বিপদের সময়ে গ্রহীতার উপকার করেছে তাতেও দাতার দানের কোনও মূল্য থাকবে না। কারণ কাকে দান করলাম বা কী দান করলাম সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হচ্ছে, অহংকার ও দম্ভমুক্তভাবে, বিনয়ের সাথে দান করাই হচ্ছে আসল কথা। মনে এই চিন্তা রাখা যে আমরা যাই দান করি না কেন তা শুধুমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য করা হচ্ছে। আমরা আল্লাহকেই দান করছি; তাকে সন্তুষ্ট করার জন্য। বিশ্ব প্রতিপালক, সর্বশক্তিমানকে ক্ষুদ্র মানুষ যখন দান করবে, তখন কতটা বিনয়ের সাথে এবং অহংকার মুক্ত মানসিকতা থাকতে হবে তা সহজেই অনুমেয়। কারণ তিনি তো সর্বজ্ঞ, আমাদের ক্ষুদ্রাতি-ক্ষুদ্র চিন্তাধারাও তার অজ্ঞাত নয়। নিরহংকার ও বিনয়ী চিত্তের দান আল্লাহ্ গ্রহণ করেন ও সন্তুষ্ট হন। দানের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভ।
দানের মূল নির্যাস হচ্ছে; গ্রহীতার দোষত্রুটি ক্ষমা করে, দয়ার সাথে, বিনয়ের সাথে সাহায্যের হাত প্রসারিত করা। দুর্ব্যবহারের সাথে দান করা অপেক্ষা ভালো ব্যবহারের সাথে প্রত্যাখ্যান করা শ্রেয়। দানে কোনও প্রতিদান চাওয়া চলবে না গ্রহীতার কাছ থেকে। একমাত্র আল্লাহ্র কাছে প্রতিদান চাওয়া যেতে পারে। আল্লাহ্ সম্পদশালী ও সহিষ্ণু। তিনি কারও অর্থের বা সাহায্যের মুখাপেক্ষী নন। আল্লাহ্ অভাবমুক্ত যে ব্যক্তি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য ব্যয় করে, সে নিজের উপকারের জন্যই করে। এই পৃথিবীতে মানব সন্তান প্রতিমূহুর্তে নানা প্রলোভনের শিকার। আমাদের অন্তরের লুকায়িত পাপ, বা লোভ-লালসা বাইরের দৃষ্টিগোচর না হতে পারে, কিন্তু সর্বজ্ঞ আল্লাহ্ সবই জানেন। এই দোষত্রুটির উর্ধ্বে ওঠা মানুষের পক্ষে অসম্ভব। পরম করুণাময় আল্লাহ্ আমাদের দোষত্রুটি ক্ষমা করেন বলেই তার দরবারে আমাদের কাজের পুরস্কারের আশা করি। আমরা ক্ষুদ্র ও নগণ্য এবং সর্বোপরি আমাদের আশা-আকাঙ্খা বা কর্মের নিয়ত কখনই সম্পূর্ণ পাপমুক্ত হতে পারে না। কারণ মানুষ অত্যন্ত দুর্বলচিত্ত। তাই আল্লাহ্র রহমতই আমাদের ভরসা।
আয়াতঃ 002.263
নম্র কথা বলে দেয়া এবং ক্ষমা প্রদর্শন করা ঐ দান খয়রাত অপেক্ষা উত্তম, যার পরে কষ্ট দেয়া হয়। আল্লাহ তা’আলা সম্পদশালী, সহিঞ্চু।
Kind words and forgiving of faults are better than Sadaqah (charity) followed by injury. And Allâh is Rich (Free of all wants) and He is Most-Forbearing.
قَوْلٌ مَّعْرُوفٌ وَمَغْفِرَةٌ خَيْرٌ مِّن صَدَقَةٍ يَتْبَعُهَآ أَذًى وَاللّهُ غَنِيٌّ حَلِيمٌ
Qawlun maAAroofun wamaghfiratun khayrun min sadaqatin yatbaAAuha athan waAllahu ghaniyyun haleemun
YUSUFALI: Kind words and the covering of faults are better than charity followed by injury. Allah is free of all wants, and He is Most-Forbearing.
PICKTHAL: A kind word with forgiveness is better than almsgiving followed by injury. Allah is Absolute, Clement.
SHAKIR: Kind speech and forgiveness is better than charity followed by injury; and Allah is Self-sufficient, Forbearing.
KHALIFA: Kind words and compassion are better than a charity that is followed by insult. GOD is Rich, Clement.
রুকু – ৩৬
২৬১। যারা আল্লাহ্র রাস্তায় তাদের সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উপমা হচ্ছে একটি শস্যবীজ; যা সাতটি শীষ উৎপন্ন করে, এবং প্রত্যেক শীষে আছে একশত শস্যদানা। আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা বহুগুণ বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ্ সকলের প্রতি যত্নশীল এবং তিনি সব কিছু জানেন।
২৬২। যারা আল্লাহ্র রাস্তায় সম্পদ ব্যয় করে, এবং তাদের উদারতার কথা [দান গ্রহীতাকে] স্মরণ করিয়ে দেয় না বা ক্লেশ দেয় না, তাদের পুরস্কার রয়েছে তাদের প্রভুর নিকটে। তাদের কোন ভয় নাই, তারা দুঃখিতও হবে না।
২৬৩। যে দানের পরে ক্লেশ দেয়া হয়, তা অপেক্ষা সান্ত্বনা বাণী ও ক্ষমা প্রদর্শন শ্রেয় ৩০৯। আল্লাহ্ অভাবমুক্ত এবং তিনি পরম সহনশীল।
৩০৯। আয়াতে [২ : ২৬২ – ২৬৪] দানের মান দন্ড বর্ণনা করা হয়েছে। এগুলি হচ্ছে-
(১) যাই-ই দান করা হোক না কেন তা হালাল রুজী হতে হবে, এবং শুধুমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের জন্য আল্লাহ্র রাস্তায় [অর্থাৎ তার সৃষ্ট জীবের সেবায়] তা ব্যয় করতে হবে। [২:২৬৭]
(২) দান করে দানের প্রতিদান চাওয়া উচিত নয়, গ্রহীতার কাছ থেকে। দানের প্রতিদান এ পৃথিবীতে চাওয়া অনুচিত। প্রতিদান শুধুমাত্র চাওয়া যেতে পারে সর্বশক্তিমানের কাছে; যার সন্তুষ্টি বিধানের জন্য দান করা।
(৩) দানের পরে গ্রহীতার অনুগ্রহ প্রকাশ না করা এবং যাকে দান করা হলো তাকে কষ্ট না দেওয়া বা দানের কথা তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাকে মানসিক কষ্ট বা লোকচক্ষে হেয় প্রতিপন্ন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। অর্থাৎ যাকে দান করা হবে তার সাথে এমন কোন ব্যবহার করা যাবে না যাতে সে নিজেকে ঘৃণিত ও হেয় অনুভব করে বা মানসিক কষ্ট পায়।
(৪) দান করতে হবে বিনয়ের সাথে। নাম যশঃ ইত্যাদির আশায় বা কোনও গোপন উদ্দেশ্য সিদ্ধির [যেমন ভোট পাওয়ার জন্য আমাদের দেশের লোক সৎ কাজ বা দান করে] আশায় দান করাকে আল্লাহ্র চোখে দান বলে গণ্য হবে না। এমন কোনও দম্ভ বা অহংকার যদি দাতার মনে থাকে যে সে বিপদের সময়ে গ্রহীতার উপকার করেছে তাতেও দাতার দানের কোনও মূল্য থাকবে না। কারণ কাকে দান করলাম বা কী দান করলাম সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হচ্ছে, অহংকার ও দম্ভমুক্তভাবে, বিনয়ের সাথে দান করাই হচ্ছে আসল কথা। মনে এই চিন্তা রাখা যে আমরা যাই দান করি না কেন তা শুধুমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য করা হচ্ছে। আমরা আল্লাহকেই দান করছি; তাকে সন্তুষ্ট করার জন্য। বিশ্ব প্রতিপালক, সর্বশক্তিমানকে ক্ষুদ্র মানুষ যখন দান করবে, তখন কতটা বিনয়ের সাথে এবং অহংকার মুক্ত মানসিকতা থাকতে হবে তা সহজেই অনুমেয়। কারণ তিনি তো সর্বজ্ঞ, আমাদের ক্ষুদ্রাতি-ক্ষুদ্র চিন্তাধারাও তার অজ্ঞাত নয়। নিরহংকার ও বিনয়ী চিত্তের দান আল্লাহ্ গ্রহণ করেন ও সন্তুষ্ট হন। দানের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভ।
দানের মূল নির্যাস হচ্ছে; গ্রহীতার দোষত্রুটি ক্ষমা করে, দয়ার সাথে, বিনয়ের সাথে সাহায্যের হাত প্রসারিত করা। দুর্ব্যবহারের সাথে দান করা অপেক্ষা ভালো ব্যবহারের সাথে প্রত্যাখ্যান করা শ্রেয়। দানে কোনও প্রতিদান চাওয়া চলবে না গ্রহীতার কাছ থেকে। একমাত্র আল্লাহ্র কাছে প্রতিদান চাওয়া যেতে পারে। আল্লাহ্ সম্পদশালী ও সহিষ্ণু। তিনি কারও অর্থের বা সাহায্যের মুখাপেক্ষী নন। আল্লাহ্ অভাবমুক্ত যে ব্যক্তি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য ব্যয় করে, সে নিজের উপকারের জন্যই করে। এই পৃথিবীতে মানব সন্তান প্রতিমূহুর্তে নানা প্রলোভনের শিকার। আমাদের অন্তরের লুকায়িত পাপ, বা লোভ-লালসা বাইরের দৃষ্টিগোচর না হতে পারে, কিন্তু সর্বজ্ঞ আল্লাহ্ সবই জানেন। এই দোষত্রুটির উর্ধ্বে ওঠা মানুষের পক্ষে অসম্ভব। পরম করুণাময় আল্লাহ্ আমাদের দোষত্রুটি ক্ষমা করেন বলেই তার দরবারে আমাদের কাজের পুরস্কারের আশা করি। আমরা ক্ষুদ্র ও নগণ্য এবং সর্বোপরি আমাদের আশা-আকাঙ্খা বা কর্মের নিয়ত কখনই সম্পূর্ণ পাপমুক্ত হতে পারে না। কারণ মানুষ অত্যন্ত দুর্বলচিত্ত। তাই আল্লাহ্র রহমতই আমাদের ভরসা।
আয়াতঃ 002.264
হে ঈমানদারগণ!তোমরা অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে এবং কষ্ট দিয়ে নিজেদের দান খয়রাত বরবাদ করো না সে ব্যক্তির মত যে নিজের ধন-সম্পদ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে ব্যয় করে এবং আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে না। অতএব, এ ব্যাক্তির দৃষ্টান্ত একটি মসৃণ পাথরের মত যার উপর কিছু মাটি পড়েছিল। অতঃপর এর উপর প্রবল বৃষ্টি বর্ষিত হলো, অনন্তর তাকে সম্পূর্ণ পরিষ্কার করে দিল। তারা ঐ বস্তুর কোন সওয়াব পায় না, যা তারা উপার্জন করেছে। আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না।
O you who believe! Do not render in vain your Sadaqah (charity) by reminders of your generosity or by injury, like him who spends his wealth to be seen of men, and he does not believe in Allâh, nor in the Last Day. His likeness is the likeness of a smooth rock on which is a little dust; on it falls heavy rain which leaves it bare. They are not able to do anything with what they have earned. And Allâh does not guide the disbelieving people.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ لاَ تُبْطِلُواْ صَدَقَاتِكُم بِالْمَنِّ وَالأذَى كَالَّذِي يُنفِقُ مَالَهُ رِئَاء النَّاسِ وَلاَ يُؤْمِنُ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَمَثَلُهُ كَمَثَلِ صَفْوَانٍ عَلَيْهِ تُرَابٌ فَأَصَابَهُ وَابِلٌ فَتَرَكَهُ صَلْدًا لاَّ يَقْدِرُونَ عَلَى شَيْءٍ مِّمَّا كَسَبُواْ وَاللّهُ لاَ يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ
Ya ayyuha allatheena amanoo la tubtiloo sadaqatikum bialmanni waal-atha kaallathee yunfiqu malahu ri-aa alnnasi wala yu/minu biAllahi waalyawmi al-akhiri famathaluhu kamathali safwanin AAalayhi turabun faasabahu wabilun fatarakahu saldan la yaqdiroona AAala shay-in mimma kasaboo waAllahu la yahdee alqawma alkafireena
YUSUFALI: O ye who believe! cancel not your charity by reminders of your generosity or by injury,- like those who spend their substance to be seen of men, but believe neither in Allah nor in the Last Day. They are in parable like a hard, barren rock, on which is a little soil: on it falls heavy rain, which leaves it (Just) a bare stone. They will be able to do nothing with aught they have earned. And Allah guideth not those who reject faith.
PICKTHAL: O ye who believe! Render not vain your almsgiving by reproach and injury, like him who spendeth his wealth only to be seen of men and believeth not in Allah and the Last Day. His likeness is as the likeness of a rock whereon is dust of earth; a rainstorm smiteth it, leaving it smooth and bare. They have no control of aught of that which they have gained. Allah guideth not the disbelieving folk.
SHAKIR: O you who believe! do not make your charity worthless by reproach and injury, like him who spends his property to be seen of men and does not believe in Allah and the last day; so his parable is as the parable of a smooth rock with earth upon it, then a heavy rain falls upon it, so it leaves it bare; they shall not be able to gain anything of what they have earned; and Allah does not guide the unbelieving people.
KHALIFA: O you who believe, do not nullify your charities by inflicting reproach and insult, like one who spends his money to show off, while disbelieving in GOD and the Last Day. His example is like a rock covered with a thin layer of soil; as soon as heavy rain falls, it washes off the soil, leaving it a useless rock. They gain nothing from their efforts. GOD does not guide disbelieving people.
২৬৪। হে বিশ্বাসী সম্প্রদায় ! তোমার দানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বা কষ্ট দিয়ে তোমার দানকে ঐ ব্যক্তির ন্যায় নিষ্ফল করো না, যে তার সম্পদ লোক দেখানোর জন্য ব্যয় করে, [প্রকৃত পক্ষে] সে আল্লাহতেও বিশ্বাস করে না শেষ বিচারের দিনেও বিশ্বাস করে না ৩১০। তাদের উপমা হচ্ছে শক্ত, বন্ধ্যা পাথরের ন্যায়, যার উপরে সামান্য কিছু মাটি আছে। [অতঃপর] তার উপরে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়, যা [মাটিকে ধুয়ে] পাথরকে অনাবৃত করে দেয়। যা তারা উপার্জন করে তার কিছুই তারা কাজে লাগাতে পারবে না। যারা ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে, আল্লাহ্ তাদের সৎপথ প্রদর্শন করেন না।
৩১০। মূল্যহীন দান হচ্ছে সেই দান যা লোক দেখানো দান। যা নাম ও খ্যাতির জন্য করা হয়। সে দান আল্লাহ্র জন্য নয়, শুধুমাত্র খ্যাতির জন্য। যে দান নাম ও যশের জন্য, সে দান হচ্ছে মোনাফেকীর সমান। কারণ তারা আল্লাহ্ এবং পরকালে বিশ্বাস করে না। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, তিনি সব দেখেন, সব শোনেন [২ : ২৬৫]। তাদের এই দানকে আল্লাহ্ সুন্দর উপমার সাহায্যে তুলে ধরেছেন। তাদের হৃদয়কে পাথরের সাথে তুলনা করা হয়েছে। মসৃণ পাথরের উপরে পাতলা মাটির প্রলেপ জমা থাকে। অতঃপর এর উপরে মুষলধারে বারিপাত হয়। ফলে যে মাটিতে ফসল ফলতে পারতো তা ধুয়ে যেয়ে মসৃণ পাথরটি বের হয়ে আসে। যে বারিধারা উর্বর জমিকে আরও উর্বর করে, সেই একই বারিধারা মাটি দ্বারা আবৃত পাথরকে আরও উর্বর করার পরিবর্তে বৃষ্টির ফলে মাটিমুক্ত হয়ে সম্পূর্ণ অনুর্বর এক প্রস্তরখণ্ডে রূপান্তরিত হয়। সুতরাং যার অন্তরে মোনাফেকী, সে অন্তর দানের দ্বারা সমৃদ্ধি লাভ করতে পারে না বরং তার অন্তরে মোনাফেকীর শিকড় আরও বিস্তার লাভ করে ঐ মাটিমুক্ত শক্ত প্রস্তরখণ্ডের মত হয়ে যায়।
আয়াতঃ 002.265
যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধন-সম্পদ ব্যয় করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে এবং নিজের মনকে সুদৃঢ় করার জন্যে তাদের উদাহরণ টিলায় অবস্থিত বাগানের মত, যাতে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়; অতঃপর দ্বিগুণ ফসল দান করে। যদি এমন প্রবল বৃষ্টিপাত নাও হয়, তবে হাল্কা বর্ষণই যথেষ্ট। আল্লাহ তোমাদের কাজকর্ম যথার্থই প্রত্যক্ষ করেন।
And the likeness of those who spend their wealth seeking Allâh’s Pleasure while they in their ownselves are sure and certain that Allâh will reward them (for their spending in His Cause), is the likeness of a garden on a height; heavy rain falls on it and it doubles its yield of harvest. And if it does not receive heavy rain, light rain suffices it. And Allâh is All-Seer of (knows well) what you do.
وَمَثَلُ الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمُ ابْتِغَاء مَرْضَاتِ اللّهِ وَتَثْبِيتًا مِّنْ أَنفُسِهِمْ كَمَثَلِ جَنَّةٍ بِرَبْوَةٍ أَصَابَهَا وَابِلٌ فَآتَتْ أُكُلَهَا ضِعْفَيْنِ فَإِن لَّمْ يُصِبْهَا وَابِلٌ فَطَلٌّ وَاللّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
Wamathalu allatheena yunfiqoona amwalahumu ibtighaa mardati Allahi watathbeetan min anfusihim kamathali jannatin birabwatin asabaha wabilun faatat okulaha diAAfayni fa-in lam yusibha wabilun fatallun waAllahu bima taAAmaloona baseerun
YUSUFALI: And the likeness of those who spend their substance, seeking to please Allah and to strengthen their souls, is as a garden, high and fertile: heavy rain falls on it but makes it yield a double increase of harvest, and if it receives not Heavy rain, light moisture sufficeth it. Allah seeth well whatever ye do.
PICKTHAL: And the likeness of those who spend their wealth in search of Allah’s pleasure, and for the strengthening of their souls, is as the likeness of a garden on a height. The rainstorm smiteth it and it bringeth forth its fruit twofold. And if the rainstorm smite it not, then the shower. Allah is Seer of what ye do.
SHAKIR: And the parable of those who spend their property to seek the pleasure of Allah and for the certainty ‘of their souls is as the parable of a garden on an elevated ground, upon which heavy rain falls so it brings forth its fruit twofold but if heavy rain does not fall upon it, then light rain (is sufficient); and Allah sees what you do.
KHALIFA: The example of those who give their money seeking GOD’s pleasure, out of sincere conviction, is that of a garden on high fertile soil; when heavy rain falls, it gives twice as much crop. If heavy rain is not available, a drizzle will suffice. GOD is Seer of everything you do.
২৬৫। আর যারা আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য, নিজ আত্মাকে [ক্ষমতা ও নিরাপত্তায়] বলবান করার জন্য, তাদের সম্পদ ব্যয় করে তাদের উপমা হচ্ছে, উচ্চ এবং উর্বর ভূমিতে অবস্থিত একটি উদ্যানের ন্যায়। প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে, তাতে উৎপন্ন ফসল দ্বিগুণ হয় ৩১১ এবং যদি প্রবল বর্ষণ নাও হয় [তথাপিও] সামান্য আর্দ্রতাই এর জন্য যথেষ্ট [কারণ জমির উর্বরতা]। তোমরা যা কর আল্লাহ্ তা ভালোভাবেই দেখতে পান।
৩১১। এখানে উপমার সাহায্যে সত্যিকারের দানের প্রকৃতি তুলে ধরা হয়েছে। সত্যিকারের দান অর্থাৎ যে দান আল্লাহ্র কাছে গ্রহণযোগ্য। এই দানকে তুলনা করা হয়েছে উঁচু একখণ্ড উর্বর জমির সাথে, যে জমিতে বৃষ্টিপাতের ফলে বৃষ্টির পানি মাটির অভ্যন্তরে প্রবেশ লাভ করে মাটিকে আরও উর্বর করে, কিন্তু জমিখন্ড উঁচু হওয়ার দরুণ মাটিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে না। ফলে ফসলের ফলন দ্বিগুণ হয়ে যায়। এই জমির উর্বরাশক্তি এত বেশী যে যদি বৃষ্টির পরিমাণ কমও হয় তবুও শিশিরের সিক্ততাও ধারণ করার ক্ষমতা এই মাটির আছে। মাটির উর্বরাশক্তি অত্যন্ত বেশী হওয়ার দরুন এই সামান্য সিক্ততাও ফসলের প্রভূত উপকার সাধন করে। সেইরূপ যে লোক শুধুমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য দান করে সেই প্রকৃত দান করে। আর এই প্রকৃত দানের দরুন তার আধ্যাত্মিক জীবন হয় সমৃদ্ধ। তার আত্মা আল্লাহ্র নিয়ামত ধারণ করার ক্ষমতা অর্জন করে, যেরূপ ঐ উর্বর মাটি বৃষ্টির পানি এবং শিশির কণা ধারণ করে ফসলের উৎপাদন বাড়াতে সক্ষম হয়েছিল। আল্লাহ্র নেয়ামত হচ্ছে ঐ জমির ফসলের মত। এই নেয়ামতকে সে স্বার্থপরের মত শুধু নিজের ভোগে ব্যয় করবে না। সে এই নেয়ামতকে ব্যবহার করবে আল্লাহ্র সৃষ্টির সেবার জন্য বা দানের জন্য। দাতার জীবনে অসময় আসতে পারে, সে সময়েও সে তার সৎ কাজ থেকে বিরত হয় না। সে হচ্ছে ঐ জমিখণ্ডের মত, যখন বৃষ্টির অভাব হয় শিশিরের সিক্ততার সাহায্যে ফসল ফলাতে সক্ষম। অর্থাৎ প্রকৃত দাতা ব্যক্তির হৃদয় প্রাচুর্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়। তার যা আছে তাতেই সে সর্বদা সুখী এবং সন্তুষ্ট এবং তা থেকেই সে তার সাধ্যমত সৎকাজ করে বা দান করে। তার জীবনের লক্ষ্যই হচ্ছে আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভ করা ও পরিণামে তার নিজের আত্মার উন্নতি লাভ।
আয়াতঃ 002.266
তোমাদের কেউ পছন্দ করে যে, তার একটি খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান হবে, এর তলদেশ দিয়ে নহর প্রবাহিত হবে, আর এতে সর্বপ্রকার ফল-ফসল থাকবে এবং সে বার্ধক্যে পৌছবে, তার দুর্বল সন্তান সন্ততিও থাকবে, এমতাবস্থায় এ বাগানের একটি ঘূর্ণিবায়ু আসবে, যাতে আগুন রয়েছে, অনন্তর বাগানটি ভষ্মীভূত হয়ে যাবে? এমনিভাবে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের জন্যে নিদর্শনসমূহ বর্ননা করেন-যাতে তোমরা চিন্তা-ভাবনা কর।
Would any of you wish to have a garden with date-palms and vines, with rivers flowing underneath, and all kinds of fruits for him therein, while he is striken with old age, and his children are weak (not able to look after themselves), then it is struck with a fiery whirlwind, so that it is burnt? Thus does Allâh make clear His Ayât (proofs, evidences, verses) to you that you may give thought.
أَيَوَدُّ أَحَدُكُمْ أَن تَكُونَ لَهُ جَنَّةٌ مِّن نَّخِيلٍ وَأَعْنَابٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الأَنْهَارُ لَهُ فِيهَا مِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ وَأَصَابَهُ الْكِبَرُ وَلَهُ ذُرِّيَّةٌ ضُعَفَاء فَأَصَابَهَا إِعْصَارٌ فِيهِ نَارٌ فَاحْتَرَقَتْ كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللّهُ لَكُمُ الآيَاتِ لَعَلَّكُمْ تَتَفَكَّرُونَ
Ayawaddu ahadukum an takoona lahu jannatun min nakheelin waaAAnabin tajree min tahtiha al-anharu lahu feeha min kulli alththamarati waasabahu alkibaru walahu thurriyyatun duAAafao faasabaha iAAsarun feehi narun faihtaraqat kathalika yubayyinu Allahu lakumu al-ayati laAAallakum tatafakkaroona
YUSUFALI: Does any of you wish that he should have a garden with date-palms and vines and streams flowing underneath, and all kinds of fruit, while he is stricken with old age, and his children are not strong (enough to look after themselves)- that it should be caught in a whirlwind, with fire therein, and be burnt up? Thus doth Allah make clear to you (His) Signs; that ye may consider.
PICKTHAL: Would any of you like to have a garden of palm-trees and vines, with rivers flowing underneath it, with all kinds of fruit for him therein; and old age hath stricken him and he hath feeble offspring; and a fiery whirlwind striketh it and it is (all) consumed by fire. Thus Allah maketh plain His revelations unto you, in order that ye may give thought.
SHAKIR: Does one of you like that he should have a garden of palms and vines with streams flowing beneath it; he has in it all kinds of fruits; and old age has overtaken him and he has weak offspring, when, (lo!) a whirlwind with fire in it smites it so it becomes blasted; thus Allah makes the communications clear to you, that you may reflect.
KHALIFA: Does any of you wish to own a garden of palm trees and grapes, with flowing streams and generous crops, then, just as he grows old, and while his children are still dependent on him, a holocaust strikes and burns up his garden? GOD thus clarifies the revelations for you, that you may reflect.
২৬৬। তোমাদের মধ্যে কেহ কি চায় যে, তার একটি খেজুর ও আঙুরের বাগান থাকবে যার পাদদেশে ছোট নদী প্রবাহিত হচ্ছে ৩১২ এবং যাতে সর্বপ্রকার ফলমূল আছে; যখন সে ব্যক্তি বার্দ্ধক্যে উপনীত হয়, এবং তাঁর সন্তানগণ [নিজেদের ভার বহনের মত] শক্ত সামর্থ নয়, ৩১৩ সে সময়ে বাগানটির উপর এক অগ্নিক্ষরা ঘূর্ণিঝড় আপতিত হয় এবং তা [বাগানটিকে] জ্বালিয়ে দেয় ? এভাবেই আল্লাহ্ [তাঁর] নিদর্শনসমুহ তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট করেন যাতে তোমরা গভীরভাবে চিন্তা করতে পার।
৩১২। দান-ধ্যানের প্রকৃতরূপকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে আয়াতে [২ : ২৬১, ২৬৪, ২৬৫]। এখানে চতুর্থ উপমার সংযোজন করা হয়েছে। এই উপমাটির সাথে মানুষের জীবনকে সম্পর্কযুক্ত করা হয়েছে। মনে করুন আপনার একটি সুন্দর বাগান আছে। বাগানটি শুধু যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর তাই-ই নয় বাগানটি সংসারের আর্থিক সংস্থানের জন্য প্রচুর ফসলও উৎপন্ন করে। এখানে আঙ্গুর ও খেজুরের কথা বলা হয়েছে। আঙ্গুর ও খেজুরকে এখানে ফসলের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, [কারণ সব দেশে আঙ্গুর ও খেজুর জন্মায় না। কিন্তু কুরআনের আয়াত সর্বকালের, সর্বযুগের, সর্বসাধারণের জন্য]। আপনার বৃদ্ধ বয়সে সমাগত, কিন্তু আপনার সন্তানেরা এখনও উপযুক্ত হয় নাই। কিন্তু আপনি নিশ্চিন্ত, কারণ আপনার তৈরী বাগানটি আপনাকে বৃদ্ধ বয়সের জন্য যথেষ্ট নিশ্চয়তা প্রদান করবে। কিন্তু হঠাৎ করে যদি কোনও দৈব দুর্ঘটনা ঘটে, যেমন- প্রচণ্ড কালবৈশাখী, বা আগুন লেগে বা বন্যায় আপনার এতদিনের পরিশ্রমে তৈরী বাগানটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেলো- তখন আপনার মানসিক অবস্থা কিরূপ হবে ? যৌবনের পরিশ্রমের ফসল বাগানটি ছিল আপনার বর্তমান ও ভবিষ্যতের আশ্রয়স্থল। এক মূহুর্তের প্রাকৃতিক দুর্যোগে তা শেষ হয়ে গেলে বর্তমানের সাথে অতীতের পরিশ্রম ও ভবিষ্যতও শেষ হয়ে যায়। এই পৃথিবীর জীবন পরকালের জীবনের জন্য ‘শিক্ষানবীশকাল’ (probationary period)। আমরা পৃথিবীর জীবনকে স্বাচ্ছ্বন্দময় করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করি। ফলে সৌভাগ্যের চাবিকাঠি আমাদের হাতের মুঠোয় ধরা দেয়। আমাদের ধারণা জন্মায় আমরা নিজের এবং আমাদের সন্তান সন্তুতিদের ভবিষ্যত নিরাপদ করতে পেরেছি। কিন্তু মানুষের ভবিষ্যতকে দেখার ক্ষমতা অত্যন্ত সীমিত। এমনও হতে পারে ঐ বাগানের উপর পতিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের মত আমাদের সারা জীবনে গড়া পরিশ্রমের ফসল একমূহুর্তে লণ্ডভন্ড হয়ে যেতে পারে। নূতন করে জীবন শুরু করার ক্ষমতা আমাদের থাকবে না- আবার সন্তানেরাও অনুপযুক্ত হতে পারে। সুসময়ে এই দুঃসময়ের কথা চিন্তা করে তার বিরুদ্ধে কোনও বিকল্প ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়নি। তাহলে সেই লোকটির মত বর্তমানের সাথে সাথে অতীতের কাজ ও ভবিষ্যতের আশা সবই পন্ডশ্রম হবে। যদি সে এই দুর্যোগের কথা পূর্বেই চিন্তা করে তার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা রাখতো, তবে তার সারাটা জীবনের পরিশ্রম এবং ভবিষ্যতের আশা নষ্ট হয়ে যেতো না। এখানে দুর্যোগটাকে আল্লাহ্র ক্রোধ (Wrath of God) এর প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এর বিকল্প হচ্ছে সৎ কার্যে দান করা এবং পরহেজগারী অর্জন করা। দুদিনের ক্ষণস্থায়ী জীবন, চোখের পলকে শেষ হয়ে যায়। স্থায়ী যা তা হচ্ছে আল্লাহ্র রাস্তায় ব্যয় করা। ইহকাল ও পরকালের স্থায়ী সুখের ঠিকানা। কিন্তু সৎ কাজে দান বা আল্লাহ্র রাস্তায় দানের ফলাফলকে আমরা যেনো নষ্ট না করি এভাবে যে গ্রহীতা আমাদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে তাদেরকে তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে। কারণ সে ক্ষেত্রে দানের প্রকৃত উদ্দেশ্য হবে ব্যহত। দান যেনো নাম, যশ, খ্যাতি বা আনুগত্যের উদ্দেশ্যে না হয়। আল্লাহ্ আমাদের কাজকে বিচার করবেন তার নিয়ত দ্বারা। লোক দেখানোর জন্য দান করে গঞ্জনা ও শ্লেষ দিলে সেই দানে কোনও পূণ্য নাই বা উদ্দেশ্য হাসেলের নিয়তে দান করলে কোন পূণ্য নাই।
৩১৩। ‘সন্তান-সন্তুতি দুর্বল’ – এ কথাটির অর্থ হতে পারে শারীরিকভাবে দুর্বল বা চরিত্রগত দুর্বলতা। অর্থাৎ পিতামাতার ভার নিতে অক্ষম।
আয়াতঃ 002.267
হে ঈমানদারগণ! তোমরা স্বীয় উপার্জন থেকে এবং যা আমি তোমাদের জন্যে ভূমি থেকে উৎপন্ন করেছি, তা থেকে উৎকৃষ্ট বস্তু ব্যয় কর এবং তা থেকে নিকৃষ্ট জিনিস ব্যয় করতে মনস্থ করো না। কেননা, তা তোমরা কখনও গ্রহণ করবে না; তবে যদি তোমরা চোখ বন্ধ করে নিয়ে নাও। জেনে রেখো, আল্লাহ অভাব মুক্ত, প্রশংসিত।
O you who believe! Spend of the good things which you have (legally) earned, and of that which We have produced from the earth for you, and do not aim at that which is bad to spend from it, (though) you would not accept it save if you close your eyes and tolerate therein. And know that Allâh is Rich (Free of all wants), and Worthy of all praise.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَنفِقُواْ مِن طَيِّبَاتِ مَا كَسَبْتُمْ وَمِمَّا أَخْرَجْنَا لَكُم مِّنَ الأَرْضِ وَلاَ تَيَمَّمُواْ الْخَبِيثَ مِنْهُ تُنفِقُونَ وَلَسْتُم بِآخِذِيهِ إِلاَّ أَن تُغْمِضُواْ فِيهِ وَاعْلَمُواْ أَنَّ اللّهَ غَنِيٌّ حَمِيدٌ
Ya ayyuha allatheena amanoo anfiqoo min tayyibati ma kasabtum wamimma akhrajna lakum mina al-ardi wala tayammamoo alkhabeetha minhu tunfiqoona walastum bi-akhitheehi illa an tughmidoo feehi waiAAlamoo anna Allaha ghaniyyun hameedun
YUSUFALI: O ye who believe! Give of the good things which ye have (honourably) earned, and of the fruits of the earth which We have produced for you, and do not even aim at getting anything which is bad, in order that out of it ye may give away something, when ye yourselves would not receive it except with closed eyes. And know that Allah is Free of all wants, and worthy of all praise.
PICKTHAL: O ye who believe! Spend of the good things which ye have earned, and of that which We bring forth from the earth for you, and seek not the bad (with intent) to spend thereof (in charity) when ye would not take it for yourselves save with disdain; and know that Allah is Absolute, Owner of Praise.
SHAKIR: O you who believe! spend (benevolently) of the good things that you earn and or what We have brought forth for you out of the earth, and do not aim at what is bad that you may spend (in alms) of it, while you would not take it yourselves unless you have its price lowered, and know that Allah is Self-sufficient, Praiseworthy.
KHALIFA: O you who believe, you shall give to charity from the good things you earn, and from what we have produced for you from the earth. Do not pick out the bad therein to give away, when you yourselves do not accept it unless your eyes are closed. You should know that GOD is Rich, Praiseworthy.
রুকু – ৩৭
২৬৭। হে বিশ্বাসী সম্প্রদায় ! তোমরা যা [সৎ পথে] উপার্জন কর ৩১৪; এবং আমি তোমাদের জন্য ভূমি থেকে যা উৎপন্ন করি, তার মধ্যে যা উৎকৃষ্ট তা থেকে দান কর; এর মধ্যে যা নিকৃষ্ট বস্তু ৩১৫ তা দান করার সংকল্প করো না; কেননা তা তোমরা কখনই গ্রহণ করবে না, যদি না তোমরা চোখ বন্ধ করে রাখ ৩১৬। এবং জেনে রাখ যে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্ব অভাবমুক্ত ও সকল প্রশংসার যোগ্য ৩১৭।
৩১৪। ইংরেজী একটি প্রবাদ বাক্য আছে, “Charity covers a multitude of sins.” কিন্তু ইসলাম এই মতবাদে বিশ্বাসী নয়। প্রকৃত দানের মূল্য তখনই থাকবে যখন, (১) দাতার নিকট মূল্যবান, এমন কিছু দান করা হয়, (২) যাহা সৎপথে উপার্জিত হয় অর্থাৎ হালাল রুজী কিংবা (৩) আল্লাহ্ প্রদত্ত নেয়ামতসমূহ [টিকা ২৭ দেখুন] জনগণের কল্যাণে নিয়োজিত করা হয়।
নম্বর (১) সম্পর্কে বলা যায় যে, এরকম দানের জিনিস এমন হতে পারে যা দাতা ব্যবহার করেন না বা দাতার তার প্রয়োজনের থেকে অতিরিক্ত আছে। যেমন- ব্যবহৃত কাপড়। অনেক সময়ে ধনী ব্যক্তিরা ফ্যাশনের পরিবর্তনের সাথে সাথে ব্যবহার্য কাপড়-চোপড় নষ্ট হওয়ার পূর্বেই পরিত্যাগ করে এবং নূতন কাপড় ক্রয় করে। এরূপ ক্ষেত্রে ঐ পরিত্যক্ত কাপড় গরীবদের দান করা যায়। কিন্তু এমন কিছু দান করা উচিত নয় যা গ্রহীতা ব্যবহার করলে বিপদের সম্মুখীন হবে। উদাহরণ : যেমন ব্যবহৃত পুরানো সাইকেল কোনও গরীব ছাত্রকে দান করা হলো তার কলেজে যাতায়াতের সুবিধার জন্য। সাইকেলটির ব্রেকের এবং হ্যান্ডেলের অসুবিধার জন্য ঐ ছাত্রটি পথ চলার সময়ে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হলো। এ ক্ষেত্রে ঐ সাইকেলটি দেয়া দান হিসেবে গণ্য হবে না। কারণ যে দান গ্রহীতার উপকার অপেক্ষা অপকার করে তা সর্বশক্তিমানের কাছে দান হিসেবে গণ্য নয়। আবার মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে নেশার দ্রব্য ক্রয়ের জন্য সাহায্য করা দান নয়।
(২) ‘হালাল রুজী’ – সৎ পথে অর্জিত সম্পদ ব্যতীত যে অর্থ সম্পদ তা দানের অযোগ্য। আমাদের সামজে অনেক লোক আছে যারা ঘুষ, কলোবাজারী ইত্যাদি অসৎ উপায়ে অর্থ উপার্জন করে এবং রোজার মাসে দান-ধ্যানে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে। আবার অনেকে মনে করে যে বড় লোকদের অর্থকড়ি ডাকাতি বা জোরপূর্বক অপহরণ করে যদি তা গরীবের মঙ্গলের জন্য ব্যয় করা হয় তবে তাতে কোনও অন্যায় নাই। এমন কি বিশ্বসাহিত্যের ‘রবীনহুডের’ মত, আমাদের দেশে ‘দস্যু মোহনের’ মত চরিত্র কিশোর সাহিত্যে সমাধিক জনপ্রিয়। কারণ তারা, “Rob Peter to pay Paul” কিন্তু ইসলাম এই দৃষ্টিভঙ্গী সমর্থন করে না। ইসলামের দৃষ্টিতে উপার্জিত অর্থের প্রতিটি পাই পয়সা হতে হবে সৎ পথে অর্জিত এবং হালাল। এই-ই হচ্ছে ইসলামের অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী বা নিয়ম-কানুন (Code)। ইসলামের চোখে যে অর্থ সৎ পথে অর্জিত নয় সে অর্থ কোনভাবেই আল্লাহ্র কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এই হচ্ছে কোরানের হুকুম। অসৎ পথের অর্জিত অর্থ দ্বারা দান-ধ্যান বা সৎ কাজে ব্যয় করার মধ্যে কোনও পূণ্য নাই। কারণ তা আল্লাহ্র কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। একথা যেনো কেউ মনে না করে দানের পূণ্য তার অসৎ পথে অর্জিত পাপকে মুছে দেবে। তা কখনই দেবে না। কারণ যারা অসৎ পথে অর্থ উপার্জন করে তারা সমাজের শান্তি ও শৃঙ্খলা (peace & harmony) বিঘ্নিত করে এবং পুরো সমাজের সম্মুখে তারা যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে তা সমাজের বহু নবীন যুবককে পথভ্রষ্ট করে। তাই তাদের দান তাদের কৃতকর্মের পাপকে মুছে ফেলতে পারবে না।
নম্বর (৩) প্রতিটি মানুষের মধ্যে আল্লাহ্ কিছু না কিছু গুণাবলীর সৃষ্টি করেছেন। এই গুণাবলীই হচ্ছে আল্লাহ্র নেয়ামত [টিকা ২৭]। যদি এই নেয়ামত বান্দা জীবনে সৎ কাজের সন্ধানে ব্যয় করে তবেই তা সার্থক ও দান। কিন্তু তা না হয়ে যদি এই নেয়ামতকে অসৎ কাজে ব্যবহার করা হয় তবে তা পাপ। আল্লাহ্ মানব সন্তানকে বহু ধরণের নেয়ামত দিয়েছেন : শিল্প, সাহিত্য, প্রশাসনিক দক্ষতা, সঙ্গীত, বিজ্ঞান, বাণিজ্য ইত্যাদি জীবনের বিভিন্ন শাখায় বিভিন্ন প্রতিভাধর ব্যক্তির জন্ম হয়, সেই কারণে মানব সভ্যতা ক্রমাগত অগ্রসরমান। আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে, সর্বোচ্চ দান হচ্ছে সেই দান যে তার প্রতিভা বা দক্ষতা অন্যকে শিক্ষা দেয় অথবা এই দক্ষতা বা প্রতিভার যা ফসল তা সে অন্য সবার সাথে ভাগ করে নেয়। সেই রকমভাবে যে দক্ষতা বা প্রতিভা অন্যায় কাজে ব্যবহৃত হয়, যেমন- বাণিজ্য প্রতিভাকে কালোবাজারীতে ব্যবহার করা, ঋণ-খেলাপী হওয়া ইত্যাদি বা প্রশাসনিক ক্ষমতাকে জনগণের খেদমতের পরিবর্তে নিজ স্বার্থসিদ্ধির জন্য ব্যবহার করা পাপ, তখন আল্লাহ্র এই নেয়ামতের ব্যবহার দ্বারা বান্দা জীবনে দানের পূণ্য অর্জন করতে সক্ষম হয় না। কারণ আল্লাহ্র এইসব নেয়ামতের অপব্যবহার দ্বারা তারা সমাজের নৈতিকতা ধ্বংস করলো। ফলে তা কলঙ্কিত হলো, তা পাপে পরিণত হলো।
[অনুবাদকের মন্তব্যঃ বাংলাদেশ, যে দেশে অশিক্ষিতের হার এবং দরিদ্রের হার এত বেশী সেখানে শিক্ষিত ব্যক্তিবর্গ, যথা- ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যাংকার, ব্যবসায়ী ইত্যাদি এরা আল্লাহ্র নেয়ামতে ধন্য। এদের উপরে আল্লাহ্ কর্তৃক দায়িত্ব হচ্ছে যাকে আল্লাহ্ যে স্থানে অধিষ্ঠিত করেছেন, সেখান থেকেই তার মেধা ও দক্ষতা দ্বারা সমাজের মঙ্গলের জন্য কাজ করা। অর্থাৎ বিবেকের সাথে নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সুষ্ঠুভাবে পালন করা। তবেই সেটা হবে তার জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ দান। আর তা না করে যদি তারা এই দক্ষতার দ্বারা অন্যায়ভাবে টাকা উপার্জন করতে চায় নিজস্ব সুখ ও সুবিধা ভোগ করার জন্য, তবে তা হবে পাপ। যেমন : ডাক্তার যদি তার কর্তব্য না করে, ইঞ্জিনিয়ার যদি তার কর্তব্য না করে, শিক্ষক যদি তার কর্তব্য না করে তবে তা পাপ। আর স্ব স্ব কর্তব্য যদি নিষ্ঠার সাথে পালন করে তবে তা হবে সর্বশ্রেষ্ঠ দান এবং আল্লাহ্র এবাদত।
৩১৫। উপরের টিকাতে আলোচনা করা হয়েছে সেগুলি সম্বন্ধে যেগুলি ব্যয় করার মধ্যে কোনও দানের পূণ্য নাই। কারণ ঐ বস্তুগুলি হচ্ছে খারাপ পথে অর্জিত সম্পদ। এখানে সাবধান করা হচ্ছে আমরা ঐ সব খারাপ পথে অর্থ সম্পদ উপার্জন করা থেকে দূরে থাকবো। কারণ তা পাপ, আর ঐ পাপ পথে অর্জিত অর্থ দান দ্বারা অর্জিত পাপকে মুছে ফেলা সম্ভব নয়। কারণ হালাল রুজীর দান ব্যতীত আল্লাহ্র কাছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা হয়তো আমাদের বিবেককে সান্ত্বনা দিতে পারি যে, আমরা সৎ কাজে প্রচুর দান করেছি সুতরাং অসৎ অর্জিত সম্পদের যে পাপ তা ঐ দানের পূণ্য দ্বারা ক্ষয় বা শোধ হয়ে যাবে। কিন্তু একথা মনে রাখতে হবে হারাম উপায়ে অর্জিত বস্তু আল্লাহ্ কবুল করেন না।
৩১৬। ‘চক্ষু-বন্ধ করে থাকা’ – এ কথাটির দ্বারা বোঝানো হচ্ছে যে, সেই সব নৈতিকতা বর্জিত কাজ যা বিবেক সম্পন্ন লোক গ্রহণ করতে পারে না। ‘চক্ষু-বন্ধ’ অর্থাৎ বিবেককে বাদ দিয়ে যা করা হয়।
৩১৭। অসৎ পথে উপার্জিত অর্থ আল্লাহ্র নিয়তে দান করার অর্থ আল্লাহকে অসম্মান করা। আল্লাহ্ অভাবমুক্ত। তিনি বান্দার অর্থ সম্পদ চান না। তিনি চান বান্দার সমর্পিত হৃদয়। পূত পবিত্র হৃদয়ের দান, যে দান নির্মল হৃদয় থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে উৎসারিত। সমস্ত প্রশংসার মালিক আল্লাহ্।
আয়াতঃ 002.268
শয়তান তোমাদেরকে অভাব অনটনের ভীতি প্রদর্শন করে এবং অশ্লীলতার আদেশ দেয়। পক্ষান্তরে আল্লাহ তোমাদেরকে নিজের পক্ষ থেকে ক্ষমা ও বেশী অনুগ্রহের ওয়াদা করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সুবিজ্ঞ।
Shaitân (Satan) threatens you with poverty and orders you to commit Fahshâ (evil deeds, illegal sexual intercourse, sins etc.); whereas Allâh promises you Forgiveness from Himself and Bounty, and Allâh is All-Sufficient for His creatures’ needs, All-Knower.
الشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ وَيَأْمُرُكُم بِالْفَحْشَاء وَاللّهُ يَعِدُكُم مَّغْفِرَةً مِّنْهُ وَفَضْلاً وَاللّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
Alshshaytanu yaAAidukumu alfaqra waya/murukum bialfahsha-i waAllahu yaAAidukum maghfiratan minhu wafadlan waAllahu wasiAAun AAaleemun
YUSUFALI: The Evil one threatens you with poverty and bids you to conduct unseemly. Allah promiseth you His forgiveness and bounties. And Allah careth for all and He knoweth all things.
PICKTHAL: The devil promiseth you destitution and enjoineth on you lewdness. But Allah promiseth you forgiveness from Himself with bounty. Allah is All-Embracing, All-knowing.
SHAKIR: Shaitan threatens you with poverty and enjoins you to be niggardly, and Allah promises you forgiveness from Himself and abundance; and Allah is Ample-giving, Knowing.
KHALIFA: The devil promises you poverty and commands you to commit evil, while GOD promises you forgiveness from Him and grace. GOD is Bounteous, Omniscient.
২৬৮। শয়তান তোমাদের দারিদ্রের ভয় দেখায় এবং অশ্লীল কাজের আদেশ দেয়। আল্লাহ্ তোমাদের তাঁর ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন ৩১৮। আল্লাহ্ সকলের প্রতি যত্নশীল এবং তিনি সব কিছু জানেন।
৩১৮। ভালো মন্দের অবস্থান পরস্পর বিপরীত মেরুতে। কারণ ভালো এবং মন্দের নিয়ত সম্পূর্ণ বিপরীত। ভালো এবং মন্দের এই যে বৈষম্য তা পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় দানের নিয়তের মাধ্যমে। মন্দ সব সময়েই ভালো কাজে বাধা দান করবে। তাই যখন কোনও সৎ কাজের সংকল্প নেয়া হয়, তা শয়তানের দ্বারা বাধা প্রাপ্ত হয়। মনের কোণে ভীড় করে যদি এই অর্থ ব্যয় তাকে দারিদ্রের মধ্যে টেনে আনে ? আবার অনেকে সৎ কাজে দান করার মত অর্থের সঙ্গতি করতে পারে না কারণ তাদের স্বার্থপরতা, লোভ, তাদের উচ্চ জীবন যাত্রার মান এবং জীবন যাত্রার মানের মানদণ্ড বজায় রাখার জন্য প্রচুর অপব্যয় এবং পরস্পরের মধ্যে এই অপচয়ের প্রতিযোগিতা, তাদের সৎ কাজে ব্যয় থেকে নিবৃত রাখে। অর্থাৎ স্বার্থপরতা, লোভ, অপচয়, ভোগ-বিলাস তাদের সৎ কার্যে এবং দানের মানসিকতা থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। অপরপক্ষে, আল্লাহ্ সর্বদা আমাদের ভালোর দিকে আহবান করেন। তিনিই গোনাহ্ মাফকারী, তিনি প্রাচুর্যময়, তিনি সব কিছু দিতে পারেন, তিনিই একমাত্র প্রশান্তি দানকারী। আল্লাহ্ কারও সৎ কাজ ধ্বংস বা নষ্ট হতে দেন না। তিনি সুবিজ্ঞ অর্থাৎ নিয়ত অনুযায়ী ফল দান করেন। যদি কারও সৎ কাজ নষ্ট হয়ে যায়, তবে বুঝতে হবে তার নিয়ত খাঁটি ছিল না। কারণ আল্লাহ্ আমাদের অন্তরের নিশানা জানেন। তাঁর কাছে কিছুই গোপন থাকে না। তাঁর কল্যাণের হাত সবার জন্য প্রসারিত কিন্তু যারা জ্ঞানী শুধু তারাই পারে সেই কল্যাণের হাত ধরতে। সত্য কথা হলো এই যে, যাকে আধ্যাত্মিক জ্ঞান দান করা হয়েছে, তাকে জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞান দান করা হয়েছে। বিরাট কল্যাণকর বস্তু সে প্রাপ্ত হয়। বস্তুতঃ উপদেশ তারাই গ্রহণ করে যারা জ্ঞানবান।
আয়াতঃ 002.269
তিনি যাকে ইচ্ছা বিশেষ জ্ঞান দান করেন এবং যাকে বিশেষ জ্ঞান দান করা হয়, সে প্রভুত কল্যাণকর বস্তু প্রাপ্ত হয়। উপদেশ তারাই গ্রহণ করে, যারা জ্ঞানবান।
He grants Hikmah to whom He pleases, and he, to whom Hikmah is granted, is indeed granted abundant good. But none remember (will receive admonition) except men of understanding.
يُؤتِي الْحِكْمَةَ مَن يَشَاء وَمَن يُؤْتَ الْحِكْمَةَ فَقَدْ أُوتِيَ خَيْرًا كَثِيرًا وَمَا يَذَّكَّرُ إِلاَّ أُوْلُواْ الأَلْبَابِ
Yu/tee alhikmata man yashao waman yu/ta alhikmata faqad ootiya khayran katheeran wama yaththakkaru illa oloo al-albabi
YUSUFALI: He granteth wisdom to whom He pleaseth; and he to whom wisdom is granted receiveth indeed a benefit overflowing; but none will grasp the Message but men of understanding.
PICKTHAL: He giveth wisdom unto whom He will, and he unto whom wisdom is given, he truly hath received abundant good. But none remember except men of understanding.
SHAKIR: He grants wisdom to whom He pleases, and whoever is granted wisdom, he indeed is given a great good and none but men of understanding mind.
KHALIFA: He bestows wisdom upon whomever He chooses, and whoever attains wisdom, has attained a great bounty. Only those who possess intelligence will take heed.
২৬৯। তিনি যাকে ইচ্ছা প্রজ্ঞা দান করেন। যাকে প্রজ্ঞা দান করা হয়, তাকে প্রভুত কল্যাণ দান করা হয়। কিন্তু বোধশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তি ব্যতীত আর কেউ [আল্লাহ্র] বাণীর তাৎপর্য গ্রহণ করতে পারবে না।
২৭০। যা কিছু তোমরা দানে অথবা মানতে ব্যয় কর, নিশ্চিত থেকো আল্লাহ্ তা জানেন। আর পাপীদের জন্য কোন সাহায্যকারী নাই।
২৭১। তোমরা যদি দানের কথা প্রকাশ কর ৩১৯, তাহলেও তা ভালো। কিন্তু তোমরা যদি তা গোপন রাখ এবং [প্রকৃত] অভাবগ্রস্থকে দাও তবে তা তোমাদের জন্য সর্বোত্তম। ইহা তোমাদের [আত্মার] পাপের কিছু [দাগ] মোচন করে দেবে। তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আল্লাহ্ সবিশেষ অবহিত।
৩১৯। দান গোপনে করাই সর্বশ্রেষ্ঠ। অবশ্য প্রকাশ্য হলেও ক্ষতি নাই। যদি তা জনসাধারণের উপকারার্থে হয়। দানের বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত নিঃশব্দে, গোপনে, নিঃস্বার্থভাবে অভাবী মানুষের কাছে দান পৌঁছে দেয়া। কারণ দানের নিয়ত দ্বারা আল্লাহ্ এর বিচার করবেন। সৎ কর্মে দানের উদ্দেশ্য হবে আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভ। যদি দানের উদ্দেশ্য হয় লোক দেখানো এবং খ্যাতি এবং যশঃ তবে সে উদ্দেশ্য গ্রহীতার কাছে যতই গোপন থাকুক না কেন আল্লাহ্র কাছে তা প্রকাশ হয়ে যাবেই। ফলে দানের দ্বারা আমাদের আত্মিক উন্নতির পথ হয়ে যাবে রুদ্ধ। আমাদের আত্মার উন্নতির জন্য প্রয়োজন নিঃস্বার্থ দানের নিয়ত ও আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভ। একমাত্র খাঁটি নিয়তই আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভে সক্ষম। যাকে দান করা হবে তাকে হতে হবে ‘অভাবগ্রস্থ’।
আয়াতঃ 002.270
তোমরা যে খয়রাত বা সদ্ব্যয় কর কিংবা কোন মানত কর, আল্লাহ নিশ্চয়ই সেসব কিছুই জানেন। অন্যায়কারীদের কোন সাহায্যকারী নেই।
And whatever you spend for spendings (e.g., in Sadaqah – charity, etc. for Allâh’s Cause) or whatever vow you make, be sure Allâh knows it all. And for the Zâlimûn (wrong-doers, etc.) there are no helpers.
وَمَا أَنفَقْتُم مِّن نَّفَقَةٍ أَوْ نَذَرْتُم مِّن نَّذْرٍ فَإِنَّ اللّهَ يَعْلَمُهُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنصَارٍ
Wama anfaqtum min nafaqatin aw nathartum min nathrin fa-inna Allaha yaAAlamuhu wama lilththalimeena min ansarin
YUSUFALI: And whatever ye spend in charity or devotion, be sure Allah knows it all. But the wrong-doers have no helpers.
PICKTHAL: Whatever alms ye spend or vow ye vow, lo! Allah knoweth it. Wrong-doers have no helpers.
SHAKIR: And whatever alms you give or (whatever) vow you vow, surely Allah knows it; and the unjust shall have no helpers.
KHALIFA: Any charity you give, or a charitable pledge you fulfill, GOD is fully aware thereof. As for the wicked, they will have no helpers.
২৬৯। তিনি যাকে ইচ্ছা প্রজ্ঞা দান করেন। যাকে প্রজ্ঞা দান করা হয়, তাকে প্রভুত কল্যাণ দান করা হয়। কিন্তু বোধশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তি ব্যতীত আর কেউ [আল্লাহ্র] বাণীর তাৎপর্য গ্রহণ করতে পারবে না।
২৭০। যা কিছু তোমরা দানে অথবা মানতে ব্যয় কর, নিশ্চিত থেকো আল্লাহ্ তা জানেন। আর পাপীদের জন্য কোন সাহায্যকারী নাই।
২৭১। তোমরা যদি দানের কথা প্রকাশ কর ৩১৯, তাহলেও তা ভালো। কিন্তু তোমরা যদি তা গোপন রাখ এবং [প্রকৃত] অভাবগ্রস্থকে দাও তবে তা তোমাদের জন্য সর্বোত্তম। ইহা তোমাদের [আত্মার] পাপের কিছু [দাগ] মোচন করে দেবে। তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আল্লাহ্ সবিশেষ অবহিত।
৩১৯। দান গোপনে করাই সর্বশ্রেষ্ঠ। অবশ্য প্রকাশ্য হলেও ক্ষতি নাই। যদি তা জনসাধারণের উপকারার্থে হয়। দানের বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত নিঃশব্দে, গোপনে, নিঃস্বার্থভাবে অভাবী মানুষের কাছে দান পৌঁছে দেয়া। কারণ দানের নিয়ত দ্বারা আল্লাহ্ এর বিচার করবেন। সৎ কর্মে দানের উদ্দেশ্য হবে আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভ। যদি দানের উদ্দেশ্য হয় লোক দেখানো এবং খ্যাতি এবং যশঃ তবে সে উদ্দেশ্য গ্রহীতার কাছে যতই গোপন থাকুক না কেন আল্লাহ্র কাছে তা প্রকাশ হয়ে যাবেই। ফলে দানের দ্বারা আমাদের আত্মিক উন্নতির পথ হয়ে যাবে রুদ্ধ। আমাদের আত্মার উন্নতির জন্য প্রয়োজন নিঃস্বার্থ দানের নিয়ত ও আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভ। একমাত্র খাঁটি নিয়তই আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভে সক্ষম। যাকে দান করা হবে তাকে হতে হবে ‘অভাবগ্রস্থ’।
আয়াতঃ 002.271
যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান-খয়রাত কর, তবে তা কতইনা উত্তম। আর যদি খয়রাত গোপনে কর এবং অভাবগ্রস্তদের দিয়ে দাও, তবে তা তোমাদের জন্যে আরও উত্তম। আল্লাহ তা’আলা তোমাদের কিছু গোনাহ দূর করে দিবেন। আল্লাহ তোমাদের কাজ কর্মের খুব খবর রাখেন।
If you disclose your Sadaqât (alms-giving), it is well, but if you conceal it, and give it to the poor, that is better for you. (Allâh) will forgive you some of your sins. And Allâh is Well-Acquainted with what you do.
إِن تُبْدُواْ الصَّدَقَاتِ فَنِعِمَّا هِيَ وَإِن تُخْفُوهَا وَتُؤْتُوهَا الْفُقَرَاء فَهُوَ خَيْرٌ لُّكُمْ وَيُكَفِّرُ عَنكُم مِّن سَيِّئَاتِكُمْ وَاللّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
In tubdoo alssadaqati faniAAimma hiya wa-in tukhfooha watu/tooha alfuqaraa fahuwa khayrun lakum wayukaffiru AAankum min sayyi-atikum waAllahu bima taAAmaloona khabeerun
YUSUFALI: If ye disclose (acts of) charity, even so it is well, but if ye conceal them, and make them reach those (really) in need, that is best for you: It will remove from you some of your (stains of) evil. And Allah is well acquainted with what ye do.
PICKTHAL: If ye publish your almsgiving, it is well, but if ye hide it and give it to the poor, it will be better for you, and will atone for some of your ill-deeds. Allah is Informed of what ye do.
SHAKIR: If you give alms openly, it is well, and if you hide it and give it to the poor, it is better for you; and this will do away with some of your evil deeds; and Allah is aware of what you do.
KHALIFA: If you declare your charities, they are still good. But if you keep them anonymous, and give them to the poor, it is better for you, and remits more of your sins. GOD is fully Cognizant of everything you do.
২৬৯। তিনি যাকে ইচ্ছা প্রজ্ঞা দান করেন। যাকে প্রজ্ঞা দান করা হয়, তাকে প্রভুত কল্যাণ দান করা হয়। কিন্তু বোধশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তি ব্যতীত আর কেউ [আল্লাহ্র] বাণীর তাৎপর্য গ্রহণ করতে পারবে না।
২৭০। যা কিছু তোমরা দানে অথবা মানতে ব্যয় কর, নিশ্চিত থেকো আল্লাহ্ তা জানেন। আর পাপীদের জন্য কোন সাহায্যকারী নাই।
২৭১। তোমরা যদি দানের কথা প্রকাশ কর ৩১৯, তাহলেও তা ভালো। কিন্তু তোমরা যদি তা গোপন রাখ এবং [প্রকৃত] অভাবগ্রস্থকে দাও তবে তা তোমাদের জন্য সর্বোত্তম। ইহা তোমাদের [আত্মার] পাপের কিছু [দাগ] মোচন করে দেবে। তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আল্লাহ্ সবিশেষ অবহিত।
৩১৯। দান গোপনে করাই সর্বশ্রেষ্ঠ। অবশ্য প্রকাশ্য হলেও ক্ষতি নাই। যদি তা জনসাধারণের উপকারার্থে হয়। দানের বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত নিঃশব্দে, গোপনে, নিঃস্বার্থভাবে অভাবী মানুষের কাছে দান পৌঁছে দেয়া। কারণ দানের নিয়ত দ্বারা আল্লাহ্ এর বিচার করবেন। সৎ কর্মে দানের উদ্দেশ্য হবে আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভ। যদি দানের উদ্দেশ্য হয় লোক দেখানো এবং খ্যাতি এবং যশঃ তবে সে উদ্দেশ্য গ্রহীতার কাছে যতই গোপন থাকুক না কেন আল্লাহ্র কাছে তা প্রকাশ হয়ে যাবেই। ফলে দানের দ্বারা আমাদের আত্মিক উন্নতির পথ হয়ে যাবে রুদ্ধ। আমাদের আত্মার উন্নতির জন্য প্রয়োজন নিঃস্বার্থ দানের নিয়ত ও আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভ। একমাত্র খাঁটি নিয়তই আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভে সক্ষম। যাকে দান করা হবে তাকে হতে হবে ‘অভাবগ্রস্থ’।
আয়াতঃ 002.272
তাদেরকে সৎপথে আনার দায় তোমার নয়। বরং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সৎপথে পরিচালিত করেন। যে মাল তোমরা ব্যয় কর, তা নিজ উপাকারার্থেই কর। আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যয় করো না। তোমরা যে, অর্থ ব্যয় করবে, তার পুরস্কার পুরোপুরি পেয়ে যাবে এবং তোমাদের প্রতি অন্যায় করা হবে না।
Not upon you (Muhammad SAW) is their guidance, but Allâh guides whom He wills. And whatever you spend in good, it is for yourselves, when you spend not except seeking Allâh’s Countenance. And whatever you spend in good, it will be repaid to you in full, and you shall not be wronged.
لَّيْسَ عَلَيْكَ هُدَاهُمْ وَلَـكِنَّ اللّهَ يَهْدِي مَن يَشَاء وَمَا تُنفِقُواْ مِنْ خَيْرٍ فَلأنفُسِكُمْ وَمَا تُنفِقُونَ إِلاَّ ابْتِغَاء وَجْهِ اللّهِ وَمَا تُنفِقُواْ مِنْ خَيْرٍ يُوَفَّ إِلَيْكُمْ وَأَنتُمْ لاَ تُظْلَمُونَ
Laysa AAalayka hudahum walakinna Allaha yahdee man yashao wama tunfiqoo min khayrin fali-anfusikum wama tunfiqoona illa ibtighaa wajhi Allahi wama tunfiqoo min khayrin yuwaffa ilaykum waantum la tuthlamoona
YUSUFALI: It is not required of thee (O Messenger), to set them on the right path, but Allah sets on the right path whom He pleaseth. Whatever of good ye give benefits your own souls, and ye shall only do so seeking the “Face” of Allah. Whatever good ye give, shall be rendered back to you, and ye shall not Be dealt with unjustly.
PICKTHAL: The guiding of them is not thy duty (O Muhammad), but Allah guideth whom He will. And whatsoever good thing ye spend, it is for yourselves, when ye spend not save in search of Allah’s Countenance; and whatsoever good thing ye spend, it will be repaid to you in full, and ye will not be wronged.
SHAKIR: To make them walk in the right way is not incumbent on you, but Allah guides aright whom He pleases; and whatever good thing you spend, it is to your own good; and you do not spend but to seek Allah’s pleasure; and whatever good things you spend shall be paid back to you in full, and you shall not be wronged.
KHALIFA: You are not responsible for guiding anyone. GOD is the only one who guides whoever chooses (to be guided). Any charity you give is for your own good. Any charity you give shall be for the sake of GOD. Any charity you give will be repaid to you, without the least injustice.
২৭২। [হে নবী] তাদের সৎপথ গ্রহণের দায়িত্ব তোমার নয়; ৩২০; বরং আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা সৎপথে পরিচালিত করেন। যা কিছু ভালো [কাজ] তোমরা কর, তা করবে তোমাদের নিজের আত্মার কল্যাণের জন্য। এবং তোমরা তা করবে শুধু মাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের জন্য ৩২১। যা কিছু ভালো [কাজ] করবে, তা তোমাদের ফেরত দেয়া হবে, এবং তোমাদের প্রতি কোন অন্যায় করা হবে না।
৩২০। অনেক সাহাবী, কাফিরদেরকে এ উদ্দেশ্যে দান খয়রাত দিতেন যে, সম্ভবতঃ এ কৌশলে কিছু লোক মুসলমান হয়ে যাবে; এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও এ মতই প্রকাশ করেছিলেন। তাই এই আয়াতে আল্লাহ্ রাসূল (সাঃ) কে সম্বোধন করে বলেছেন যে, তাদেরকে সৎ পথে নিয়ে আসা আপনার দায়িত্ব নয়, যে কারণে এত সূক্ষ্ণ আয়োজন করতে হবে। কিন্তু এটি তো আল্লাহ্ তায়ালার কাজ, যাকে ইচ্ছা সৎ পথে নিয়ে আসবেন। আপনার কাজ শুধু হেদায়েত পৌঁছে দেওয়া। দানের সাথে হেদায়েতের কোনও সম্পর্ক নাই। দানের প্রধান শর্ত হচ্ছে অভাবী মানুষের অভাব মোচন। এ অভাব হতে পারে বিদ্যার, অর্থের, শক্তির ইত্যাদি। আয়াত [২ : ২৭১]-এ ‘অভাবগ্রস্থ’ কথাটির দ্বারা এই ভাবকেই প্রকাশ করা হয়েছে। এই অভাবগ্রস্থ মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ করা চলবে না। তাদের একটাই পরিচয় তারা অভাবগ্রস্থ। কাজেই এ চিন্তা করা উচিত নয় যে দান শুধু মুসলমানেরাই পাবে- কাফিররা পাবে না। কে দানের যোগ্য সে বিচারের ভার আমাদের আল্লাহ্ দেন নাই। আমাদের উপরে হুকুম হচ্ছে অভাবগ্রস্থের অভাব মোচন; সে ভালো হোক মন্দ হোক কাফির হোক, মুসলমান হোক সকলেই সমান হকদার। প্রসঙ্গক্রমে বলা যায় এই আয়াতটি [২ : ২৫৬] “ধর্মের ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা নাই” উপরের বক্তব্যটি সমর্থন করে। বাধ্যবাধকতার অর্থ শুধু এই নয় যে শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বাধ্যবাধকতার সৃষ্টি করা যায়। বাধ্যবাধকতার অর্থ এই হতে পারে যে অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা। অর্থাৎ দানের মাধ্যমে কাউকে অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল করা এবং তার প্রতিদানে তাকে ধর্মান্তরিত করার জন্য চাপ প্রয়োগ করা। দান বা ঘুষ বা সামাজিক প্রভাব প্রতিপত্তি কোনও কিছুই যেনো ধর্মান্তরিতদের জন্য প্রযোজ্য না হয়। দানের উদ্দেশ্য হবে একটাই আর তা হচ্ছে, অভাবগ্রস্থের অভাব মোচন করা আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের জন্য। আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভই হচ্ছে দানের প্রধান উদ্দেশ্য। আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য ব্যয় করলেই পরিণামে তা নিজের জন্য কল্যাণকর হবে। যদিও এই আয়াতটি আল-মুস্তফা (সাঃ) কে সম্বোধন করে বলা, কিন্তু এর প্রয়োগ সর্বকালের, সর্বযুগের এবং সর্বসাধারণের জন্য।
৩২১। দেখুন [২ : ১১২] আয়াতে টিকা। ‘Wajh’ এর আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে ‘মুখ’ বা ‘প্রসন্নতা’ অর্থ অনুগ্রহ, করুণা বা সান্নিধ্য অর্থে। [আরও দেখুন টিকা ৩১৯]।
আয়াতঃ 002.273
খয়রাত ঐ সকল গরীব লোকের জন্যে যারা আল্লাহর পথে আবদ্ধ হয়ে গেছে-জীবিকার সন্ধানে অন্যত্র ঘোরাফেরা করতে সক্ষম নয়। অজ্ঞ লোকেরা যাঞ্চা না করার কারণে তাদেরকে অভাবমুক্ত মনে করে। তোমরা তাদেরকে তাদের লক্ষণ দ্বারা চিনবে। তারা মানুষের কাছে কাকুতি-মিনতি করে ভিক্ষা চায় না। তোমরা যে অর্থ ব্যয় করবে, তা আল্লাহ তা’আলা অবশ্যই পরিজ্ঞাত।
(Charity is) for Fuqarâ (the poor), who in Allâh’s Cause are restricted (from travel), and cannot move about in the land (for trade or work). The one who knows them not, thinks that they are rich because of their modesty. You may know them by their mark, they do not beg of people at all. And whatever you spend in good, surely Allâh knows it well.
لِلْفُقَرَاء الَّذِينَ أُحصِرُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ لاَ يَسْتَطِيعُونَ ضَرْبًا فِي الأَرْضِ يَحْسَبُهُمُ الْجَاهِلُ أَغْنِيَاء مِنَ التَّعَفُّفِ تَعْرِفُهُم بِسِيمَاهُمْ لاَ يَسْأَلُونَ النَّاسَ إِلْحَافًا وَمَا تُنفِقُواْ مِنْ خَيْرٍ فَإِنَّ اللّهَ بِهِ عَلِيمٌ
Lilfuqara-i allatheena ohsiroo fee sabeeli Allahi la yastateeAAoona darban fee al-ardi yahsabuhumu aljahilu aghniyaa mina alttaAAaffufi taAArifuhum biseemahum la yas-aloona alnnasa ilhafan wama tunfiqoo min khayrin fa-inna Allaha bihi AAaleemun
YUSUFALI: (Charity is) for those in need, who, in Allah’s cause are restricted (from travel), and cannot move about in the land, seeking (For trade or work): the ignorant man thinks, because of their modesty, that they are free from want. Thou shalt know them by their (Unfailing) mark: They beg not importunately from all the sundry. And whatever of good ye give, be assured Allah knoweth it well.
PICKTHAL: (Alms are) for the poor who are straitened for the cause of Allah, who cannot travel in the land (for trade). The unthinking man accounteth them wealthy because of their restraint. Thou shalt know them by their mark: They do not beg of men with importunity. And whatsoever good thing ye spend, lo! Allah knoweth it.
SHAKIR: (Alms are) for the poor who are confined in the way of Allah– they cannot go about in the land; the ignorant man thinks them to be rich on account of (their) abstaining (from begging); you can recognise them by their mark; they do not beg from men importunately; and whatever good thing you spend, surely Allah knows it.
KHALIFA: Charity shall go to the poor who are suffering in the cause of GOD, and cannot emigrate. The unaware may think that they are rich, due to their dignity. But you can recognize them by certain signs; they never beg from the people persistently. Whatever charity you give, GOD is fully aware thereof.
২৭৩। [দান] অভাবগ্রস্থদের জন্য। [তাদের জন্য] আল্লাহ্র কাজে ব্যাপৃত থাকার জন্য যাদের [ভ্রমণ] সীমাবদ্ধ হয়, ৩২২, ফলে দেশময় ঘুরাফিরা করতে পারে না [বাণিজ্যের জন্য]। অজ্ঞ লোকেরা তাদের লজ্জাশীলতাকে অভাবমুক্ত বলে মনে করে। কিন্তু তুমি তাদের চিনতে পারবে তাদের [নিশ্চিত] লক্ষণ দেখে। তারা স্বতন্ত্রভাবে বা সকলের নিকট নাছোড়বান্দা হয়ে যাচ্ঞা করে না। যা কিছু ভালো [কাজ] তোমরা কর না কেন নিশ্চিত থেকো আল্লাহ্ তা ভালোভাবে জানেন।
৩২২। তারতম্যহীনভাবে দান করাকে ইসলাম অনুমোদন করে না। অর্থাৎ যার প্রয়োজন নাই তাকেও দান করলাম, এরূপ দানকে দান বলে গণ্য করা যাবে না। দান করতে হবে অভাবগ্রস্থকে। এখানে এই ‘অভাবগ্রস্থ’ কথাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যারা মহত্তর আদর্শের জন্য জীবন উৎসর্গ করেন এবং এই কারণে অর্থাভাবে কষ্ট বোধ করেন তাদেরকেই অভাবগ্রস্থ বলা হচ্ছে। যেমন- আয়াতে [২ : ২৬২]-এ বলা হয়েছে “যারা আল্লাহ্র পথে অর্থ ব্যয় করে”। এখানে আল্লাহ্র পথ এবং অভাবগ্রস্থ এক সূত্রে গাঁথা। আল্লাহ্র পথকে সংঙ্কীর্ণ অর্থে ব্যাখ্যা করা উচিত নয়। মানুষের মঙ্গলের জন্য যে কোনও সৎ কাজই হচ্ছে আল্লাহ্র পথে খরচ করা। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়; কেউ যদি বিনা বেতনে বিদ্যা দান করেন বা জ্ঞান অর্জনের জন্য অর্থ উপার্জনের দিকে মনোযোগ দিতে না পারেন বা কোনও বিশেষ নীতির কারণে নির্বাসিত জীবন যাপনে বাধ্য হচ্ছেন, সে কারণে অর্থাভাবে কষ্ট পাচ্ছেন। এসব ক্ষেত্রে এরা পথপার্শ্বের ভিক্ষুকদের মত দোরে দোরে ভিক্ষা করতে পারেন না কিন্তু এদের অর্থাভাব হচ্ছে জীবনের মহত্বর বিকাশের কারণের জন্য। আবার অনেক মহৎ ব্যক্তি দেখা যায় যারা দুঃখী মানুষের সেবায় জীবন উৎসর্গ করেন। যেমন- মাদাম তেরেসা। এরা দোরে দোরে ঘুরে অর্থ সংগ্রহ করতে পারেন না। এখানে অভাবগ্রস্থ বলতে এদেরকেই বোঝানো হচ্ছে। কারণ এরা মানুষের মঙ্গলের জন্য, সমাজের উন্নতির জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। এদের পিছনে অর্থ খরচ করার অর্থ হচ্ছে আল্লাহ্র রাস্তায় ব্যয় করা। সমাজের যারা সম্পদশালী – তাদের এবং সরকারের উচিত এদের সনাক্ত করে এদের অর্থ সাহায্য করা যেনো এরা সমাজের কল্যাণের জন্য অধিকতর কাজ করতে পারেন।
আয়াতঃ 002.274
যারা স্বীয় ধন-সম্পদ ব্যয় করে, রাত্রে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে। তাদের জন্যে তাদের সওয়াব রয়েছে তাদের পালনকর্তার কাছে। তাদের কোন আশংঙ্কা নেই এবং তারা চিন্তিত ও হবে না।
Those who spend their wealth (in Allâh’s Cause) by night and day, in secret and in public, they shall have their reward with their Lord. On them shall be no fear, nor shall they grieve.
الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُم بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ سِرًّا وَعَلاَنِيَةً فَلَهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ
Allatheena yunfiqoona amwalahum biallayli waalnnahari sirran waAAalaniyatan falahum ajruhum AAinda rabbihim wala khawfun AAalayhim wala hum yahzanoona
YUSUFALI: Those who (in charity) spend of their goods by night and by day, in secret and in public, have their reward with their Lord: on them shall be no fear, nor shall they grieve.
PICKTHAL: Those who spend their wealth by night and day, by stealth and openly, verily their reward is with their Lord, and their shall no fear come upon them neither shall they grieve.
SHAKIR: (As for) those who spend their property by night and by day, secretly and openly, they shall have their reward from their Lord and they shall have no fear, nor shall they grieve.
KHALIFA: Those who give to charity night and day, secretly and publicly, receive their recompense from their Lord; they will have nothing to fear, nor will they grieve.
রুকু – ৩৮
২৭৪। যারা রাত্রে দিনে, গোপনে-প্রকাশ্যে, তাদের সম্পদ [দান কাজে] ব্যয় করে, তাদের পুরস্কার তাদের প্রভুর কাছে রয়েছে। তাদের কোন ভয় নাই তারা দুঃখিতও হবে না ৩২৩।
৩২৩। দানের বৈশিষ্ট্যের প্রধান প্রধান অংশগুলি এখানে পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে [নিঃস্বার্থভাবে নিজেকে নিয়োজিত করা, নিজের অর্থ সম্পদ দান করা]। কারণ এর পরের আয়াতেই দানের বিপরীত ধর্মের সমালোচনা করা হয়েছে। নিঃস্বার্থ দানের বিপরীত হচ্ছে, লোভ, স্বার্থপরতা, সুদ খাওয়া ইত্যাদি যারা দুঃস্থদের শোষণ করতে দ্বিধা বোধ করে না। এই আয়াতে বলা হয়েছে যারা নিঃস্বার্থভাবে দান করতে পারে, তাদের আত্মা সমৃদ্ধ হয়। এই সমৃদ্ধি আর্থিক নয়। এই সমৃদ্ধি আত্মিক। এদের জীবন (আত্মা), সুখ ও শান্তিতে ভরে যায়। জীবন থেকে অস্থিরতা, জীবন যাপনের ক্লেশ, প্রাত্যাহিক দিন যাপনের মানসিক চাপ, ভীতি সব দূর হয়ে যায়। আত্মায় নেমে আসে এক অনাবিল শান্তি। একেই বলা হচ্ছে, যে দান করে সে নিজের কল্যাণের জন্যই করে। অপরপক্ষে যে আর্ত মানবতাকে সাহায্যের পরিবর্তে শোষণ করে তার আত্মার অবনতি হয়।
আয়াতঃ 002.275
যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত! অথচ আল্লা’হ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে।
Those who eat Ribâ (usury) will not stand (on the Day of Resurrection) except like the standing of a person beaten by Shaitân (Satan) leading him to insanity. That is because they say: ”Trading is only like Ribâ (usury),” whereas Allâh has permitted trading and forbidden Ribâ (usury). So whosoever receives an admonition from his Lord and stops eating Ribâ (usury) shall not be punished for the past; his case is for Allâh (to judge); but whoever returns [to Ribâ (usury)], such are the dwellers of the Fire – they will abide therein.
الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لاَ يَقُومُونَ إِلاَّ كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُواْ إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا وَأَحَلَّ اللّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا فَمَن جَاءهُ مَوْعِظَةٌ مِّن رَّبِّهِ فَانتَهَىَ فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللّهِ وَمَنْ عَادَ فَأُوْلَـئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
Allatheena ya/kuloona alrriba la yaqoomoona illa kama yaqoomu allathee yatakhabbatuhu alshshaytanu mina almassi thalika bi-annahum qaloo innama albayAAu mithlu alrriba waahalla Allahu albayAAa waharrama alrriba faman jaahu mawAAithatun min rabbihi faintaha falahu ma salafa waamruhu ila Allahi waman AAada faola-ika as-habu alnnari hum feeha khalidoona
YUSUFALI: Those who devour usury will not stand except as stand one whom the Evil one by his touch Hath driven to madness. That is because they say: “Trade is like usury,” but Allah hath permitted trade and forbidden usury. Those who after receiving direction from their Lord, desist, shall be pardoned for the past; their case is for Allah (to judge); but those who repeat (The offence) are companions of the Fire: They will abide therein (for ever).
PICKTHAL: Those who swallow usury cannot rise up save as he ariseth whom the devil hath prostrated by (his) touch. That is because they say: Trade is just like usury; whereas Allah permitteth trading and forbiddeth usury. He unto whom an admonition from his Lord cometh, and (he) refraineth (in obedience thereto), he shall keep (the profits of) that which is past, and his affair (henceforth) is with Allah. As for him who returneth (to usury) – Such are rightful owners of the Fire. They will abide therein.
SHAKIR: Those who swallow down usury cannot arise except as one whom Shaitan has prostrated by (his) touch does rise. That is because they say, trading is only like usury; and Allah has allowed trading and forbidden usury. To whomsoever then the admonition has come from his Lord, then he desists, he shall have what has already passed, and his affair is in the hands of Allah; and whoever returns (to it)– these arc the inmates of the fire; they shall abide in it.
KHALIFA: Those who charge usury are in the same position as those controlled by the devil’s influence. This is because they claim that usury is the same as commerce. However, GOD permits commerce, and prohibits usury. Thus, whoever heeds this commandment from his Lord, and refrains from usury, he may keep his past earnings, and his judgment rests with GOD. As for those who persist in usury, they incur Hell, wherein they abide forever.
২৭৫। শয়তানের স্পর্শ মানুষকে যেরূপ পাগলামির দিকে তাড়িত করে, সুদখোরেরা ৩২৪ [পুণরুত্থানের দিনে] সেই ব্যক্তির ন্যায় হবে ৩২৫। তার কারণ, তারা বলে, “ব্যবসা-বাণিজ্য তো সুদেরই মত” ৩২৬। কিন্তু আল্লাহ্ ব্যবসাকে বৈধ ও সুদকে অবৈধ করেছেন। যারা তাদের প্রভুর নিকট থেকে নির্দেশ আসার পর [সুদ খাওয়া থেকে] বিরত থাকে, তাদের অতীতের [কাজকে] ক্ষমা করা হবে। তাদের বিষয় আল্লাহ্র [বিচারের] বিষয়। কিন্তু যারা [তা] পুণরাবৃত্তি করবে, তারা হবে আগুনের অধিবাসী। সেখানে তারা [চিরদিন] থাকেব।
৩২৪। সুদ খাওয়াকে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কোনও দ্বিমতের অবকাশ নাই। অবতরণের দিক থেকে এটি সর্বশেষ আয়াত। এরপর কোন আয়াত অবতীর্ণ হয় নাই। এর একত্রিশ দিন পর হুযুর (সাঃ) ওফাত পান। কোন কোন রেওয়ায়েতে নয় দিন পর হযরত রাসূলে করীমের (সাঃ) ওফাতের কথা বর্ণিত আছে। ইবনে খাতিবের ভাষ্য অনুযায়ী হযরত ওমর তার খেলাফতের সময়ে সুদের ব্যাপারে বেশ কিছু অসুবিধার সম্মুখীন হন। কারণ এ ব্যাপারে বিশদ কিছু ব্যাখ্যার পূর্বেই হযরত (সাঃ) পরলোক গমন করেন। হযরত ওমর যে তিনটি প্রশ্নের সমাধানের জন্য আল্লাহ্র রাসূলের ব্যাখ্যার অভাব অনুভব করেছিলেন, সূদের ব্যাপারটি ছিল তার অন্যতম। কারণ ইসলাম সে সময়ে এক বিরাট শক্তি হিসাবে পৃথিবীতে আত্মপ্রকাশ করেছিল এবং বিশাল সাম্রাজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যার প্রয়োজন ছিল বৈকি। আমাদের প্রাচীন ও বর্তমান ওলেমাগণ সুদের উপর বহু গবেষণা করেছেন। তাদের গবেষণার মূল ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত ছিলো ইসলামের অভ্যুত্থানের সময়ের আর্থ-সামাজিক পটভূমি। যেহেতু বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং বিতর্কমূলক, সুতরাং ইউসুফ আলী সাহেব বিষয়বস্তুটি অন্য সময়ে যথাযোগ্য পরিবেশে উপস্থাপন করতে মনস্ত করেন। ইউসুফ আলী সাহেবের মতে এর সংজ্ঞা হওয়া উচিত নিম্নরূপ : সোনা, রূপা, প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী [যথা : গম, যব, বার্লি, খেজুর, ধান ইত্যাদি] ধার দেয়ার পরিবর্তে যে মুনাফা অর্জন করা হয় তাই সুদের আওতায় পরে। ইউসুফ আলী সাহেবের সংজ্ঞা অনুযায়ী যে কোনও প্রয়োজনীয় দ্রব্যের ধারের বিনিময়ে মুনাফা অর্জনই সুদ। এ ক্ষেত্রে বর্তমান যুগের ব্যাংকের হিসাব নিকাশ অন্তর্ভূক্ত কি না তা গবেষণার বিষয়।
৩২৫। সুদখোরেরা অনেকে এই প্রশ্ন তুলেছিল যে, ক্রয়-বিক্রয় তো সুদেরই অনুরূপ এবং সুদের মাধ্যমে যেমন মুনাফা অর্জিত হয়, তেমনি ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমেও মুনাফা অর্জনই উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। এই উক্তির জবাবে আল্লাহ্ বলেছেন যে, এরা ক্রয়-বিক্রয়কে সুদের অনুরূপ বা সমতুল্য বলেছে, কিন্তু আল্লাহ্র নির্দেশের ফলে এ দুয়ের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য বিরাজমান। সৎ ব্যবসা-বাণিজ্য এবং শিল্প কারখানার প্রসার ব্যক্তিগত এবং জাতিগত উন্নতির চাবিকাঠি। অন্যদিকে মহাজনি সুদখোর টাকা পয়সার লালসায় এমন বিভোর হয়ে পড়ে যে, কোন দরিদ্রের প্রতি তার সামান্য দয়ারও উদ্রেক হয় না। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প কারখানার প্রসারের ফলে বহু বেকারের কর্মসংস্থান হয় একদিকে, অন্যদিকে জাতীয় আয় এবং মাথাপিছু আয়ের বৃদ্ধি ঘটে। অন্যদিকে মহাজনি সুদখোরের ব্যবসাতে গরীব আরও গরীবে পরিণত হয় এবং জাতীয় জীবনে এর কোন সু-প্রভাব নাই। সুদখোর রক্তচোষা ছারপোকার ন্যায়। এখানেই ব্যাংকের সুদ ও মহাজনি সুদের মধ্যে পার্থক্য।
৩২৬। বৈধ ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সুদের মধ্যে যে সুনির্দিষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান, তা ইউসুফ আলী সাহেবের পূর্ববর্তী টিকাতে আলোচনা করা হয়েছে। Bai [আক্ষরিকভাবে বিক্রয় বা বাণিজ্য] শব্দটি সাধারণভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিভিন্ন কাজ-কারবারের জন্য ব্যবহৃত হয়। এ ব্যাপারে ইসলামি বিশ্বকে গবেষণা করে এক সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে।
আয়াতঃ 002.276
আল্লাহ তা’আলা সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দান খয়রাতকে বর্ধিত করেন। আল্লাহ পছন্দ করেন না কোন অবিশ্বাসী পাপীকে।
Allâh will destroy Ribâ (usury) and will give increase for Sadaqât (deeds of charity, alms, etc.) And Allâh likes not the disbelievers, sinners.
يَمْحَقُ اللّهُ الْرِّبَا وَيُرْبِي الصَّدَقَاتِ وَاللّهُ لاَ يُحِبُّ كُلَّ كَفَّارٍ أَثِيمٍ
Yamhaqu Allahu alrriba wayurbee alssadaqati waAllahu la yuhibbu kulla kaffarin atheemin
YUSUFALI: Allah will deprive usury of all blessing, but will give increase for deeds of charity: For He loveth not creatures ungrateful and wicked.
PICKTHAL: Allah hath blighted usury and made almsgiving fruitful. Allah loveth not the impious and guilty.
SHAKIR: Allah does not bless usury, and He causes charitable deeds to prosper, and Allah does not love any ungrateful sinner.
KHALIFA: GOD condemns usury, and blesses charities. GOD dislikes every disbeliever, guilty.
২৭৬। আল্লাহ্ সুদকে সকল অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত করেন, কিন্তু দান কাজকে বর্ধিত করেন। কারণ তিনি অকৃতজ্ঞ এবং দুষ্ট প্রাণীকে ভালোবাসেন না।
২৭৭। যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে এবং নিয়মিত সালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয়, তাদের প্রভুর নিকট তাদের পুরস্কার রয়েছে। তাদের কোন ভয় নাই, তারা দুঃখিতও হবে না ৩২৭।
৩২৭। আয়াত [২:২৭৪] থেকে শুরু হয়েছে দান-ধ্যান ও সুদের মধ্যে তুলনা করা। আয়াত [২:২৭৪] এ এই বাক্যটি ব্যবহার করা হয়েছে, “তাহাদের পুরস্কার তাহাদের প্রতিপালকের নিকট আছে। তাহাদের কোন ভয় নাই, এবং তাহারা দুঃখিতও হবে না;” – যার বিষয়বস্তু ছিল দানের উপকার বর্ণনা প্রসঙ্গে। এই আয়াতে [২ : ২৭৭] সেই একই লাইন ব্যবহার করা হয়েছে, এর পরবর্তী আয়াতসমূহতে উত্তমর্ণকে অধমর্ণের সাহায্যের জন্য নিম্নলিখিত সুপারিশসমূহ করা হয়েছে। (ক) অধমর্ণের সুদ মাপ করে দিতে, (খ) অধমর্ণকে আসল শোধ করার জন্য সময় দিতে; (গ) যদি সম্ভব হয় অধমর্ণের সব ঋণ মাপ করে দিতে যাতে উত্তমর্ণ দাতার সওয়াব লাভ করতে পারে। [তবে নিজেকে কষ্ট দিয়ে অথবা পারিবারিক বিশৃঙ্খলা তৈরী করে শুধুমাত্র সওয়াবের জন্য তা করা যাবে না। এখানে সম্ভব হলে তবেই ক্ষমা করতে হবে।]
আয়াতঃ 002.277
নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে, সৎকাজ করেছে, নামায প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং যাকাত দান করেছে, তাদের জন্যে তাদের পুরষ্কার তাদের পালনকর্তার কছে রয়েছে। তাদের কোন শঙ্কা নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না।
Truly those who believe, and do deeds of righteousness, and perform As-Salât (Iqâmat-as-Salât), and give Zakât, they will have their reward with their Lord. On them shall be no fear, nor shall they grieve.
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُواْ وَعَمِلُواْ الصَّالِحَاتِ وَأَقَامُواْ الصَّلاَةَ وَآتَوُاْ الزَّكَاةَ لَهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ
Inna allatheena amanoo waAAamiloo alssalihati waaqamoo alssalata waatawoo alzzakata lahum ajruhum AAinda rabbihim wala khawfun AAalayhim wala hum yahzanoona
YUSUFALI: Those who believe, and do deeds of righteousness, and establish regular prayers and regular charity, will have their reward with their Lord: on them shall be no fear, nor shall they grieve.
PICKTHAL: Lo! those who believe and do good works and establish worship and pay the poor-due, their reward is with their Lord and there shall no fear come upon them neither shall they grieve.
SHAKIR: Surely they who believe and do good deeds and keep up prayer and pay the poor-rate they shall have their reward from their Lord, and they shall have no fear, nor shall they grieve.
KHALIFA: Those who believe and lead a righteous life, and observe the Contact Prayers (Salat), and give the obligatory charity (Zakat), they receive their recompense from their Lord; they will have nothing to fear, nor will they grieve.
২৭৬। আল্লাহ্ সুদকে সকল অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত করেন, কিন্তু দান কাজকে বর্ধিত করেন। কারণ তিনি অকৃতজ্ঞ এবং দুষ্ট প্রাণীকে ভালোবাসেন না।
২৭৭। যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে এবং নিয়মিত সালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয়, তাদের প্রভুর নিকট তাদের পুরস্কার রয়েছে। তাদের কোন ভয় নাই, তারা দুঃখিতও হবে না ৩২৭।
৩২৭। আয়াত [২:২৭৪] থেকে শুরু হয়েছে দান-ধ্যান ও সুদের মধ্যে তুলনা করা। আয়াত [২:২৭৪] এ এই বাক্যটি ব্যবহার করা হয়েছে, “তাহাদের পুরস্কার তাহাদের প্রতিপালকের নিকট আছে। তাহাদের কোন ভয় নাই, এবং তাহারা দুঃখিতও হবে না;” – যার বিষয়বস্তু ছিল দানের উপকার বর্ণনা প্রসঙ্গে। এই আয়াতে [২ : ২৭৭] সেই একই লাইন ব্যবহার করা হয়েছে, এর পরবর্তী আয়াতসমূহতে উত্তমর্ণকে অধমর্ণের সাহায্যের জন্য নিম্নলিখিত সুপারিশসমূহ করা হয়েছে। (ক) অধমর্ণের সুদ মাপ করে দিতে, (খ) অধমর্ণকে আসল শোধ করার জন্য সময় দিতে; (গ) যদি সম্ভব হয় অধমর্ণের সব ঋণ মাপ করে দিতে যাতে উত্তমর্ণ দাতার সওয়াব লাভ করতে পারে। [তবে নিজেকে কষ্ট দিয়ে অথবা পারিবারিক বিশৃঙ্খলা তৈরী করে শুধুমাত্র সওয়াবের জন্য তা করা যাবে না। এখানে সম্ভব হলে তবেই ক্ষমা করতে হবে।]
আয়াতঃ 002.278
হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে, তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক।
O you who believe! Be afraid of Allâh and give up what remains (due to you) from Ribâ (usury) (from now onward), if you are (really) believers.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَذَرُواْ مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبَا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ
Ya ayyuha allatheena amanoo ittaqoo Allaha watharoo ma baqiya mina alrriba in kuntum mu/mineena
YUSUFALI: O ye who believe! Fear Allah, and give up what remains of your demand for usury, if ye are indeed believers.
PICKTHAL: O ye who believe! Observe your duty to Allah, and give up what remaineth (due to you) from usury, if ye are (in truth) believers.
SHAKIR: O you who believe! Be careful of (your duty to) Allah and relinquish what remains (due) from usury, if you are believers.
KHALIFA: O you who believe, you shall observe GOD and refrain from all kinds of usury, if you are believers.
২৭৮। হে বিশ্বাসীগণ ! আল্লাহকে ভয় কর, এবং সুদের যা বকেয়া আছে তা ছেড়ে দাও, যদি তোমরা প্রকৃতই মুমিন হও।
২৭৯। যদি তোমরা তা না কর, তবে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সাথে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও ৩২৮। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই থাকবে। অন্যায়ভাবে [মূলধনের বেশী চেয়ে] অত্যাচার করো না, এবং তোমরাও [মূলধনের কম গ্রহণ করে] অন্যায়ভাবে অত্যাচারিত হবে না।
৩২৮। ‘যুদ্ধ’ এখানে যে যুদ্ধের উল্লেখ করা হয়েছে, সে যুদ্ধ মতপার্থক্যের যুদ্ধ নয়। এ যুদ্ধের ঘোষণা আল্লাহ্ ও রাসূলের পক্ষ থেকে করা হয়েছে নিপীড়িত ও শোষিত অধমর্ণদের পক্ষ থেকে।
আয়াতঃ 002.279
অতঃপর যদি তোমরা পরিত্যাগ না কর, তবে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হয়ে যাও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে তোমরা নিজের মূলধন পেয়ে যাবে। তোমরা কারও প্রতি অত্যাচার করো না এবং কেউ তোমাদের প্রতি অত্যাচার করবে না।
And if you do not do it, then take a notice of war from Allâh and His Messenger but if you repent, you shall have your capital sums. Deal not unjustly (by asking more than your capital sums), and you shall not be dealt with unjustly (by receiving less than your capital sums).
فَإِن لَّمْ تَفْعَلُواْ فَأْذَنُواْ بِحَرْبٍ مِّنَ اللّهِ وَرَسُولِهِ وَإِن تُبْتُمْ فَلَكُمْ رُؤُوسُ أَمْوَالِكُمْ لاَ تَظْلِمُونَ وَلاَ تُظْلَمُونَ
Fa-in lam tafAAaloo fa/thanoo biharbin mina Allahi warasoolihi wa-in tubtum falakum ruoosu amwalikum la tathlimoona wala tuthlamoona
YUSUFALI: If ye do it not, Take notice of war from Allah and His Messenger: But if ye turn back, ye shall have your capital sums: Deal not unjustly, and ye shall not be dealt with unjustly.
PICKTHAL: And if ye do not, then be warned of war (against you) from Allah and His messenger. And if ye repent, then ye have your principal (without interest). Wrong not, and ye shall not be wronged.
SHAKIR: But if you do (it) not, then be apprised of war from Allah and His Messenger; and if you repent, then you shall have your capital; neither shall you make (the debtor) suffer loss, nor shall you be made to suffer loss.
KHALIFA: If you do not, then expect a war from GOD and His messenger. But if you repent, you may keep your capitals, without inflicting injustice, or incurring injustice.
২৭৮। হে বিশ্বাসীগণ ! আল্লাহকে ভয় কর, এবং সুদের যা বকেয়া আছে তা ছেড়ে দাও, যদি তোমরা প্রকৃতই মুমিন হও।
২৭৯। যদি তোমরা তা না কর, তবে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সাথে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও ৩২৮। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই থাকবে। অন্যায়ভাবে [মূলধনের বেশী চেয়ে] অত্যাচার করো না, এবং তোমরাও [মূলধনের কম গ্রহণ করে] অন্যায়ভাবে অত্যাচারিত হবে না।
৩২৮। ‘যুদ্ধ’ এখানে যে যুদ্ধের উল্লেখ করা হয়েছে, সে যুদ্ধ মতপার্থক্যের যুদ্ধ নয়। এ যুদ্ধের ঘোষণা আল্লাহ্ ও রাসূলের পক্ষ থেকে করা হয়েছে নিপীড়িত ও শোষিত অধমর্ণদের পক্ষ থেকে।
আয়াতঃ 002.280
যদি খাতক অভাবগ্রস্থ হয়, তবে তাকে সচ্ছলতা আসা পর্যন্ত সময় দেয়া উচিত। আর যদি ক্ষমা করে দাও, তবে তা খুবই উত্তম যদি তোমরা উপলব্ধি কর।
And if the debtor is in a hard time (has no money), then grant him time till it is easy for him to repay, but if you remit it by way of charity, that is better for you if you did but know.
وَإِن كَانَ ذُو عُسْرَةٍ فَنَظِرَةٌ إِلَى مَيْسَرَةٍ وَأَن تَصَدَّقُواْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
Wa-in kana thoo AAusratin fanathiratun ila maysaratin waan tasaddaqoo khayrun lakum in kuntum taAAlamoona
YUSUFALI: If the debtor is in a difficulty, grant him time Till it is easy for him to repay. But if ye remit it by way of charity, that is best for you if ye only knew.
PICKTHAL: And if the debtor is in straitened circumstances, then (let there be) postponement to (the time of) ease; and that ye remit the debt as almsgiving would be better for you if ye did but know.
SHAKIR: And if (the debtor) is in straitness, then let there be postponement until (he is in) ease; and that you remit (it) as alms is better for you, if you knew.
KHALIFA: If the debtor is unable to pay, wait for a better time. If you give up the loan as a charity, it would be better for you, if you only knew.
২৮০। যদি ঋণগ্রহণকারী অসুবিধার মধ্যে থাকে, তবে যতদিন না [টাকা] পরিশোধ করা তার জন্য সহজ হয়, তাকে সময় দাও। কিন্তু যদি তোমরা [টাকা] মার্জনা করে দাও, দান হিসেবে, তবে তা হবে তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা তা জানতে।
২৮১। সেই দিনকে ভয় কর, যেদিন তোমাদের [সবাইকে] আল্লাহ্র নিকট ফিরিয়ে আনা হবে। অতঃপর প্রতিটি আত্মাকে যা সে [পৃথিবীতে] উপার্জন করেছে তার [মূল্য] পরিশোধ করা হবে। এবং কারও প্রতি [এতটুকু] অন্যায় করা হবে না।
রুকু – ৩৯
২৮২। হে মুমিনগণ ! যখন তোমরা নির্ধারিত মেয়াদের জন্য ঋণের ব্যাপারে পরস্পরের মধ্যে চুক্তিবদ্ধ হও, তখন তা লিখে রাখবে ৩২৯। কোন লেখক তা যেন বিশ্বস্তভাবে দু’পক্ষে জন্য লিখে দেয়। লেখক যেনো তা লিখতে অস্বীকার না করে। যেহেতু আল্লাহ্ তাকে [লিখতে] শিখিয়েছেন ৩৩০। সুতরাং সে যেনো লেখে। ঋণ গ্রহীতা যেনো লেখার বিষয়বস্তু বলে দেয় এবং তার প্রভু আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর ঋণের কিছু যেনো না কমায়। কিন্তু ঋণগ্রহীতা যদি মানসিক প্রতিবন্ধী হয়, অথবা দুর্বল হয়, অথবা [লেখার বিষয়বস্তু] বলে দিতে অক্ষম হয়, ৩৩১ [সেক্ষেত্রে] তার অভিভাবক বিশ্বস্তভাবে বিষয়বস্তু বলে দেবে। তোমার আপনজনের মধ্যে থেকে দু’জন পুরুষ সাক্ষী রাখবে ৩৩২। যদিসেখানে দু’জন পুরুষ সাক্ষী না পাও, তবে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রীলোক তোমরা সাক্ষী হিসেবে নির্বাচন করবে, যেনো স্ত্রীলোকদের একজন ভুল করলেও তাদের অপরজন তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে পারবে। সাক্ষীগণকে যখন [সাক্ষ্য প্রমাণের জন্য] ডাকা হবে তারা তা অস্বীকার করতে পারবে না। ছোট হোক বা বড় হোক ভবিষ্যত মেয়াদসহ [তোমাদের চুক্তি] লিখতে অবজ্ঞা প্রকাশ করো না। এটাই আল্লাহ্র চোখে ন্যায্যতর ও প্রমাণের জন্য অধিক উপযুক্ত এবং তোমাদের মধ্যে সন্দেহ নির্ধারণের জন্য অধিক উপযোগী। কিন্তু তোমরা যদি নিজেদের মধ্যে নগদ আদান-প্রদান কর, তা তোমরা না লিখলেও কোন দোষ নাই। কিন্তু ব্যবসায়িক লেনদেনের ব্যাপারে সর্বদা সাক্ষী রাখবে। এবং লেখক ও সাক্ষী যেনো ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। যদি তোমরা [এরূপ ক্ষতি] কর, এটা হবে তোমাদের জন্য পাপ। সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদের শিক্ষা দিয়ে থাকেন। আল্লাহ্ সকল বিষয়ে সবিশেষে অবহিত ৩৩৩।
৩২৯। এই আয়াতে ব্যবসায়িক লেনদেনের শর্তাবলী আলোচনা করা হয়েছে। আয়াতটিতে লেনদেনের দুটো পর্যায় সম্বন্ধে বলা হয়েছে। এক হতে পারে ধারে মাল খরিদ করা এবং পরবর্তীতে দাম শোধ করা, অন্যটি হতে পারে অগ্রিম অর্থ প্রদান করা এবং পরবর্তীতে নির্দিষ্ট স্থানে মাল সরবরাহ করা। কুরআনের নির্দেশ হচ্ছে এসব ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে অবশ্যই লিখিত দলিলের আশ্রয় গ্রহণ করতে হবে এবং সাক্ষী রাখা উত্তম।
৩৩০। দলিল লেখকদের সম্পর্কে এখানে বলা হয়েছে, যিনি লিখবেন, তাকে অবশ্যই ন্যায়বান হতে হবে, যেনো কোনও পক্ষের হয়ে অন্যপক্ষের জন্য অন্যায় দলিল রচনা না করেন। এ কথা সর্বদা মনে রাখতে বলা হয়েছে যে আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, সব জানেন ও দেখেন। এ কথা যারা দলিল লিখবেন তারা অবশ্যই মনে রাখবেন যে লেখাপড়া করতে পারা, খুব বড় নেয়ামতপ্রাপ্ত হওয়ার সামিল। আল্লাহ্র এই নেয়ামতকে মানুষের মঙ্গলের জন্য ব্যয় করা উচিত। যাকে আল্লাহ্ পড়ার ক্ষমতা দিয়েছেন, লেখার ক্ষমতা দিয়েছেন, তাকে আল্লাহ্ অশেষ নেয়ামত দান করেছেন। কারণ লেখাপড়া করতে পারাই হচ্ছে জ্ঞানের রাজ্যে প্রবেশের চাবিকাঠি। বিশেষতঃ আমাদের মত দেশে যেখানে অশিক্ষিতের হার অত্যন্ত বেশী, সেখানে শিক্ষিত লোকের দায়িত্ব ও কর্তব্য অত্যন্ত বেশী এবং সে সম্বন্ধে আল্লাহ্র হুকুম এখানে বর্ণিত হয়েছে।
৩৩১। “ঋণ গ্রহীতা যদি নির্বোধ অথবা দুর্বল হয়, অথবা লিখার বিষয়বস্তু বলে দিতে না পারে” – সেক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি চুক্তির বিষয়বস্তু বর্ণনা করতে অক্ষম। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অভিভাবক অবশ্যই ন্যায়ের সাথে এবং বিশ্বস্ততার সাথে তার দায়িত্ব পালন করবেন।
৩৩২। সাক্ষী নির্বাচনের ব্যাপারে পুরুষ বা নারী যেই হোক না কেন তাকে নিজস্ব চেনা পরিচিত মন্ডল থেকে নির্বাচন করাই শ্রেয়ঃ। কারণ লেনদেনের পুরো প্রক্রিয়ার সাথে সে পরিচিত থাকায়, তার পক্ষে ঘটনাটি অনুধাবন করা সহজসাধ্য হবে। শুধু তা-ই নয়, ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে, সাক্ষ্যদাতাকে সহজেই হাজির করানো সম্ভব হবে।
৩৩৩। উপরের আয়াতটিতে ব্যবসা-বাণিজ্যে যাতে শৃঙ্খলা রক্ষা হয় এবং অন্যায় সংঘটিত না হয় সে ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। আয়াতটিতে নৈতিক মূল্যবোধের উপরে যেরূপ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে, সমগুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে নিজেদের মধ্যে দরদস্তুরের উপরে, লেনদেনের ব্যাপারে, সাক্ষীর ব্যাপারে, উপযুক্ত লিখিত দলিলের ব্যাপারে। শুধু তাই-ই নয় নৈতিকতার প্রশ্নে সকলেই সমান দায়ী। এমন কি যে দলিল লেখক তাকেও এখানে নৈতিকতার প্রশ্নে আল্লাহ্র কাছে দায়ী করা হয়েছে। ন্যায়পরায়ণতা বা সততাকে পৃথিবীর লাভ ও ক্ষতির মাপকাঠিতে, নিজের সুযোগ সুবিধার্থে যেনো প্রয়োগ করা না হয়। ন্যায়, সত্য ও সততা হবে সব কিছুর উর্ধ্বে, এই হচ্ছে ধার্মিক লোকের বিবেক। এ কথা সকলকেই স্মরণ রাখতে হবে যে প্রাত্যাহিক জীবন ও ধর্মীয় জীবন কোন আলাদা ব্যবস্থা বা দফতর নয়। ইসলামের চোখে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ন্যায় ও সত্য হবে প্রধান চালিকা শক্তি। এমন কি প্রাত্যাহিক জীবনে, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে, লেনদেনের ক্ষেত্রে এ কথা সর্বদা মনে রাখতে হবে যে আমাদের সব নেওয়া-দেওয়া, ব্যবসা-বাণিজ্য, আমরা করছি আল্লাহ্র চোখের সম্মুখে। সামান্যতম অন্যায়ও তার চক্ষুকে ফাঁকি দেওয়া যায় না। এই জীবনবোধই হচ্ছে ইসলামিক জীবনবোধ। জীবনের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহ্র উপস্থিতি অনুভব করা ও তার হুকুম মত জীবন অতিবাহিত করা, এই হচ্ছে ইসলামের মূল দর্শন।
আয়াতঃ 002.281
ঐ দিনকে ভয় কর, যে দিন তোমরা আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে। অতঃপর প্রত্যেকেই তার কর্মের ফল পুরোপুরি পাবে এবং তাদের প্রতি কোন রূপ অবিচার করা হবে না।
And be afraid of the Day when you shall be brought back to Allâh. Then every person shall be paid what he earned, and they shall not be dealt with unjustly.
وَاتَّقُواْ يَوْمًا تُرْجَعُونَ فِيهِ إِلَى اللّهِ ثُمَّ تُوَفَّى كُلُّ نَفْسٍ مَّا كَسَبَتْ وَهُمْ لاَ يُظْلَمُونَ
Waittaqoo yawman turjaAAoona feehi ila Allahi thumma tuwaffa kullu nafsin ma kasabat wahum la yuthlamoona
YUSUFALI: And fear the Day when ye shall be brought back to Allah. Then shall every soul be paid what it earned, and none shall be dealt with unjustly.
PICKTHAL: And guard yourselves against a day in which ye will be brought back to Allah. Then every soul will be paid in full that which it hath earned, and they will not be wronged.
SHAKIR: And guard yourselves against a day in which you shall be returned to Allah; then every soul shall be paid back in full what it has earned, and they shall not be dealt with unjustly.
KHALIFA: Beware of the day when you are returned to GOD, and every soul is paid for everything it had done, without the least injustice.
২৮০। যদি ঋণগ্রহণকারী অসুবিধার মধ্যে থাকে, তবে যতদিন না [টাকা] পরিশোধ করা তার জন্য সহজ হয়, তাকে সময় দাও। কিন্তু যদি তোমরা [টাকা] মার্জনা করে দাও, দান হিসেবে, তবে তা হবে তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা তা জানতে।
২৮১। সেই দিনকে ভয় কর, যেদিন তোমাদের [সবাইকে] আল্লাহ্র নিকট ফিরিয়ে আনা হবে। অতঃপর প্রতিটি আত্মাকে যা সে [পৃথিবীতে] উপার্জন করেছে তার [মূল্য] পরিশোধ করা হবে। এবং কারও প্রতি [এতটুকু] অন্যায় করা হবে না।
রুকু – ৩৯
২৮২। হে মুমিনগণ ! যখন তোমরা নির্ধারিত মেয়াদের জন্য ঋণের ব্যাপারে পরস্পরের মধ্যে চুক্তিবদ্ধ হও, তখন তা লিখে রাখবে ৩২৯। কোন লেখক তা যেন বিশ্বস্তভাবে দু’পক্ষে জন্য লিখে দেয়। লেখক যেনো তা লিখতে অস্বীকার না করে। যেহেতু আল্লাহ্ তাকে [লিখতে] শিখিয়েছেন ৩৩০। সুতরাং সে যেনো লেখে। ঋণ গ্রহীতা যেনো লেখার বিষয়বস্তু বলে দেয় এবং তার প্রভু আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর ঋণের কিছু যেনো না কমায়। কিন্তু ঋণগ্রহীতা যদি মানসিক প্রতিবন্ধী হয়, অথবা দুর্বল হয়, অথবা [লেখার বিষয়বস্তু] বলে দিতে অক্ষম হয়, ৩৩১ [সেক্ষেত্রে] তার অভিভাবক বিশ্বস্তভাবে বিষয়বস্তু বলে দেবে। তোমার আপনজনের মধ্যে থেকে দু’জন পুরুষ সাক্ষী রাখবে ৩৩২। যদিসেখানে দু’জন পুরুষ সাক্ষী না পাও, তবে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রীলোক তোমরা সাক্ষী হিসেবে নির্বাচন করবে, যেনো স্ত্রীলোকদের একজন ভুল করলেও তাদের অপরজন তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে পারবে। সাক্ষীগণকে যখন [সাক্ষ্য প্রমাণের জন্য] ডাকা হবে তারা তা অস্বীকার করতে পারবে না। ছোট হোক বা বড় হোক ভবিষ্যত মেয়াদসহ [তোমাদের চুক্তি] লিখতে অবজ্ঞা প্রকাশ করো না। এটাই আল্লাহ্র চোখে ন্যায্যতর ও প্রমাণের জন্য অধিক উপযুক্ত এবং তোমাদের মধ্যে সন্দেহ নির্ধারণের জন্য অধিক উপযোগী। কিন্তু তোমরা যদি নিজেদের মধ্যে নগদ আদান-প্রদান কর, তা তোমরা না লিখলেও কোন দোষ নাই। কিন্তু ব্যবসায়িক লেনদেনের ব্যাপারে সর্বদা সাক্ষী রাখবে। এবং লেখক ও সাক্ষী যেনো ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। যদি তোমরা [এরূপ ক্ষতি] কর, এটা হবে তোমাদের জন্য পাপ। সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদের শিক্ষা দিয়ে থাকেন। আল্লাহ্ সকল বিষয়ে সবিশেষে অবহিত ৩৩৩।
৩২৯। এই আয়াতে ব্যবসায়িক লেনদেনের শর্তাবলী আলোচনা করা হয়েছে। আয়াতটিতে লেনদেনের দুটো পর্যায় সম্বন্ধে বলা হয়েছে। এক হতে পারে ধারে মাল খরিদ করা এবং পরবর্তীতে দাম শোধ করা, অন্যটি হতে পারে অগ্রিম অর্থ প্রদান করা এবং পরবর্তীতে নির্দিষ্ট স্থানে মাল সরবরাহ করা। কুরআনের নির্দেশ হচ্ছে এসব ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে অবশ্যই লিখিত দলিলের আশ্রয় গ্রহণ করতে হবে এবং সাক্ষী রাখা উত্তম।
৩৩০। দলিল লেখকদের সম্পর্কে এখানে বলা হয়েছে, যিনি লিখবেন, তাকে অবশ্যই ন্যায়বান হতে হবে, যেনো কোনও পক্ষের হয়ে অন্যপক্ষের জন্য অন্যায় দলিল রচনা না করেন। এ কথা সর্বদা মনে রাখতে বলা হয়েছে যে আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, সব জানেন ও দেখেন। এ কথা যারা দলিল লিখবেন তারা অবশ্যই মনে রাখবেন যে লেখাপড়া করতে পারা, খুব বড় নেয়ামতপ্রাপ্ত হওয়ার সামিল। আল্লাহ্র এই নেয়ামতকে মানুষের মঙ্গলের জন্য ব্যয় করা উচিত। যাকে আল্লাহ্ পড়ার ক্ষমতা দিয়েছেন, লেখার ক্ষমতা দিয়েছেন, তাকে আল্লাহ্ অশেষ নেয়ামত দান করেছেন। কারণ লেখাপড়া করতে পারাই হচ্ছে জ্ঞানের রাজ্যে প্রবেশের চাবিকাঠি। বিশেষতঃ আমাদের মত দেশে যেখানে অশিক্ষিতের হার অত্যন্ত বেশী, সেখানে শিক্ষিত লোকের দায়িত্ব ও কর্তব্য অত্যন্ত বেশী এবং সে সম্বন্ধে আল্লাহ্র হুকুম এখানে বর্ণিত হয়েছে।
৩৩১। “ঋণ গ্রহীতা যদি নির্বোধ অথবা দুর্বল হয়, অথবা লিখার বিষয়বস্তু বলে দিতে না পারে” – সেক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি চুক্তির বিষয়বস্তু বর্ণনা করতে অক্ষম। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অভিভাবক অবশ্যই ন্যায়ের সাথে এবং বিশ্বস্ততার সাথে তার দায়িত্ব পালন করবেন।
৩৩২। সাক্ষী নির্বাচনের ব্যাপারে পুরুষ বা নারী যেই হোক না কেন তাকে নিজস্ব চেনা পরিচিত মন্ডল থেকে নির্বাচন করাই শ্রেয়ঃ। কারণ লেনদেনের পুরো প্রক্রিয়ার সাথে সে পরিচিত থাকায়, তার পক্ষে ঘটনাটি অনুধাবন করা সহজসাধ্য হবে। শুধু তা-ই নয়, ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে, সাক্ষ্যদাতাকে সহজেই হাজির করানো সম্ভব হবে।
৩৩৩। উপরের আয়াতটিতে ব্যবসা-বাণিজ্যে যাতে শৃঙ্খলা রক্ষা হয় এবং অন্যায় সংঘটিত না হয় সে ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। আয়াতটিতে নৈতিক মূল্যবোধের উপরে যেরূপ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে, সমগুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে নিজেদের মধ্যে দরদস্তুরের উপরে, লেনদেনের ব্যাপারে, সাক্ষীর ব্যাপারে, উপযুক্ত লিখিত দলিলের ব্যাপারে। শুধু তাই-ই নয় নৈতিকতার প্রশ্নে সকলেই সমান দায়ী। এমন কি যে দলিল লেখক তাকেও এখানে নৈতিকতার প্রশ্নে আল্লাহ্র কাছে দায়ী করা হয়েছে। ন্যায়পরায়ণতা বা সততাকে পৃথিবীর লাভ ও ক্ষতির মাপকাঠিতে, নিজের সুযোগ সুবিধার্থে যেনো প্রয়োগ করা না হয়। ন্যায়, সত্য ও সততা হবে সব কিছুর উর্ধ্বে, এই হচ্ছে ধার্মিক লোকের বিবেক। এ কথা সকলকেই স্মরণ রাখতে হবে যে প্রাত্যাহিক জীবন ও ধর্মীয় জীবন কোন আলাদা ব্যবস্থা বা দফতর নয়। ইসলামের চোখে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ন্যায় ও সত্য হবে প্রধান চালিকা শক্তি। এমন কি প্রাত্যাহিক জীবনে, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে, লেনদেনের ক্ষেত্রে এ কথা সর্বদা মনে রাখতে হবে যে আমাদের সব নেওয়া-দেওয়া, ব্যবসা-বাণিজ্য, আমরা করছি আল্লাহ্র চোখের সম্মুখে। সামান্যতম অন্যায়ও তার চক্ষুকে ফাঁকি দেওয়া যায় না। এই জীবনবোধই হচ্ছে ইসলামিক জীবনবোধ। জীবনের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহ্র উপস্থিতি অনুভব করা ও তার হুকুম মত জীবন অতিবাহিত করা, এই হচ্ছে ইসলামের মূল দর্শন।
আয়াতঃ 002.282
হে মুমিনগণ! যখন তোমরা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে ঋনের আদান-প্রদান কর, তখন তা লিপিবদ্ধ করে নাও এবং তোমাদের মধ্যে কোন লেখক ন্যায়সঙ্গতভাবে তা লিখে দেবে; লেখক লিখতে অস্বীকার করবে না। আল্লাহ তাকে যেমন শিক্ষা দিয়েছেন, তার উচিত তা লিখে দেয়া। এবং ঋন গ্রহীতা যেন লেখার বিষয় বলে দেয় এবং সে যেন স্বীয় পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করে এবং লেখার মধ্যে বিন্দুমাত্রও বেশ কম না করে। অতঃপর ঋণগ্রহীতা যদি নির্বোধ হয় কিংবা দূর্বল হয় অথবা নিজে লেখার বিষয়বস্তু বলে দিতে অক্ষম হয়, তবে তার অভিভাবক ন্যায়সঙ্গতভাবে লিখাবে। দুজন সাক্ষী কর, তোমাদের পুরুষদের মধ্যে থেকে। যদি দুজন পুরুষ না হয়, তবে একজন পুরুষ ও দুজন মহিলা। ঐ সাক্ষীদের মধ্য থেকে যাদেরকে তোমরা পছন্দ কর যাতে একজন যদি ভুলে যায়, তবে একজন অন্যজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়। যখন ডাকা হয়, তখন সাক্ষীদের অস্বীকার করা উচিত নয়। তোমরা এটা লিখতে অলসতা করোনা, তা ছোট হোক কিংবা বড়, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। এ লিপিবদ্ধ করণ আল্লাহর কাছে সুবিচারকে অধিক কায়েম রাখে, সাক্ষ্যকে অধিক সুসংহত রাখে এবং তোমাদের সন্দেহে পতিত না হওয়ার পক্ষে অধিক উপযুক্ত। কিন্তু যদি কারবার নগদ হয়, পরস্পর হাতে হাতে আদান-প্রদান কর, তবে তা না লিখলে তোমাদের প্রতি কোন অভিযোগ নেই। তোমরা ক্রয়-বিক্রয়ের সময় সাক্ষী রাখ। কোন লেখক ও সাক্ষীকে ক্ষতিগ্রস্ত করো না। যদি তোমরা এরূপ কর, তবে তা তোমাদের পক্ষে পাপের বিষয়। আল্লাহকে ভয় কর তিনি তোমাদেরকে শিক্ষা দেন। আল্লাহ সব কিছু জানেন।
O you who believe! When you contract a debt for a fixed period, write it down. Let a scribe write it down in justice between you. Let not the scribe refuse to write as Allâh has taught him, so let him write. Let him (the debtor) who incurs the liability dictate, and he must fear Allâh, his Lord, and diminish not anything of what he owes. But if the debtor is of poor understanding, or weak, or is unable himself to dictate, then let his guardian dictate in justice. And get two witnesses out of your own men. And if there are not two men (available), then a man and two women, such as you agree for witnesses, so that if one of them (two women) errs, the other can remind her. And the witnesses should not refuse when they are called on (for evidence). You should not become weary to write it (your contract), whether it be small or big, for its fixed term, that is more just with Allâh; more solid as evidence, and more convenient to prevent doubts among yourselves, save when it is a present trade which you carry out on the spot among yourselves, then there is no sin on you if you do not write it down. But take witnesses whenever you make a commercial contract. Let neither scribe nor witness suffer any harm, but if you do (such harm), it would be wickedness in you. So be afraid of Allâh; and Allâh teaches you. And Allâh is the All-Knower of each and everything.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ إِذَا تَدَايَنتُم بِدَيْنٍ إِلَى أَجَلٍ مُّسَمًّى فَاكْتُبُوهُ وَلْيَكْتُب بَّيْنَكُمْ كَاتِبٌ بِالْعَدْلِ وَلاَ يَأْبَ كَاتِبٌ أَنْ يَكْتُبَ كَمَا عَلَّمَهُ اللّهُ فَلْيَكْتُبْ وَلْيُمْلِلِ الَّذِي عَلَيْهِ الْحَقُّ وَلْيَتَّقِ اللّهَ رَبَّهُ وَلاَ يَبْخَسْ مِنْهُ شَيْئًا فَإن كَانَ الَّذِي عَلَيْهِ الْحَقُّ سَفِيهًا أَوْ ضَعِيفًا أَوْ لاَ يَسْتَطِيعُ أَن يُمِلَّ هُوَ فَلْيُمْلِلْ وَلِيُّهُ بِالْعَدْلِ وَاسْتَشْهِدُواْ شَهِيدَيْنِ من رِّجَالِكُمْ فَإِن لَّمْ يَكُونَا رَجُلَيْنِ فَرَجُلٌ وَامْرَأَتَانِ مِمَّن تَرْضَوْنَ مِنَ الشُّهَدَاء أَن تَضِلَّ إْحْدَاهُمَا فَتُذَكِّرَ إِحْدَاهُمَا الأُخْرَى وَلاَ يَأْبَ الشُّهَدَاء إِذَا مَا دُعُواْ وَلاَ تَسْأَمُوْاْ أَن تَكْتُبُوْهُ صَغِيرًا أَو كَبِيرًا إِلَى أَجَلِهِ ذَلِكُمْ أَقْسَطُ عِندَ اللّهِ وَأَقْومُ لِلشَّهَادَةِ وَأَدْنَى أَلاَّ تَرْتَابُواْ إِلاَّ أَن تَكُونَ تِجَارَةً حَاضِرَةً تُدِيرُونَهَا بَيْنَكُمْ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَلاَّ تَكْتُبُوهَا وَأَشْهِدُوْاْ إِذَا تَبَايَعْتُمْ وَلاَ يُضَآرَّ كَاتِبٌ وَلاَ شَهِيدٌ وَإِن تَفْعَلُواْ فَإِنَّهُ فُسُوقٌ بِكُمْ وَاتَّقُواْ اللّهَ وَيُعَلِّمُكُمُ اللّهُ وَاللّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
Ya ayyuha allatheena amanoo itha tadayantum bidaynin ila ajalin musamman faoktuboohu walyaktub baynakum katibun bialAAadli wala ya/ba katibun an yaktuba kama AAallamahu Allahu falyaktub walyumlili allathee AAalayhi alhaqqu walyattaqi Allaha rabbahu wala yabkhas minhu shay-an fa-in kana allathee AAalayhi alhaqqu safeehan aw daAAeefan aw la yastateeAAu an yumilla huwa falyumlil waliyyuhu bialAAadli waistashhidoo shaheedayni min rijalikum fa-in lam yakoona rajulayni farajulun waimraatani mimman tardawna mina alshshuhada-i an tadilla ihdahuma fatuthakkira ihdahuma al-okhra wala ya/ba alshshuhadao itha ma duAAoo wala tas-amoo an taktuboohu sagheeran aw kabeeran ila ajalihi thalikum aqsatu AAinda Allahi waaqwamu lilshshahadati waadna alla tartaboo illa an takoona tijaratan hadiratan tudeeroonaha baynakum falaysa AAalaykum junahun alla taktubooha waashhidoo itha tabayaAAtum wala yudarra katibun wala shaheedun wa-in tafAAaloo fa-innahu fusooqun bikum waittaqoo Allaha wayuAAallimukumu Allahu waAllahu bikulli shay-in AAaleemun
YUSUFALI: O ye who believe! When ye deal with each other, in transactions involving future obligations in a fixed period of time, reduce them to writing Let a scribe write down faithfully as between the parties: let not the scribe refuse to write: as Allah Has taught him, so let him write. Let him who incurs the liability dictate, but let him fear His Lord Allah, and not diminish aught of what he owes. If they party liable is mentally deficient, or weak, or unable Himself to dictate, Let his guardian dictate faithfully, and get two witnesses, out of your own men, and if there are not two men, then a man and two women, such as ye choose, for witnesses, so that if one of them errs, the other can remind her. The witnesses should not refuse when they are called on (For evidence). Disdain not to reduce to writing (your contract) for a future period, whether it be small or big: it is juster in the sight of Allah, More suitable as evidence, and more convenient to prevent doubts among yourselves but if it be a transaction which ye carry out on the spot among yourselves, there is no blame on you if ye reduce it not to writing. But take witness whenever ye make a commercial contract; and let neither scribe nor witness suffer harm. If ye do (such harm), it would be wickedness in you. So fear Allah; For it is Good that teaches you. And Allah is well acquainted with all things. If ye are on a journey, and cannot find a scribe, a pledge with possession (may serve the purpose). And if one of you deposits a thing on trust with another, let the trustee (faithfully) discharge his trust, and let him Fear his Lord conceal not evidence; for whoever conceals it, – his heart is tainted with sin. And Allah knoweth all that ye do.
PICKTHAL: O ye who believe! When ye contract a debt for a fixed term, record it in writing. Let a scribe record it in writing between you in (terms of) equity. No scribe should refuse to write as Allah hath taught him, so let him write, and let him who incurreth the debt dictate, and let him observe his duty to Allah his Lord, and diminish naught thereof. But if he who oweth the debt is of low understanding, or weak, or unable himself to dictate, then let the guardian of his interests dictate in (terms of) equity. And call to witness, from among your men, two witnesses. And if two men be not (at hand) then a man and two women, of such as ye approve as witnesses, so that if the one erreth (through forgetfulness) the other will remember. And the witnesses must not refuse when they are summoned. Be not averse to writing down (the contract) whether it be small or great, with (record of) the term thereof. That is more equitable in the sight of Allah and more sure for testimony, and the best way of avoiding doubt between you; save only in the case when it is actual merchandise which ye transfer among yourselves from hand to hand. In that case it is no sin for you if ye write it not. And have witnesses when ye sell one to another, and let no harm be done to scribe or witness. If ye do (harm to them) lo! it is a sin in you. Observe your duty to Allah. Allah is teaching you. And Allah is knower of all things.
SHAKIR: O you who believe! when you deal with each other in contracting a debt for a fixed time, then write it down; and let a scribe write it down between you with fairness; and the scribe should not refuse to write as Allah has taught him, so he should write; and let him who owes the debt dictate, and he should be careful of (his duty to) Allah, his Lord, and not diminish anything from it; but if he who owes the debt is unsound in understanding, or weak, or (if) he is not able to dictate himself, let his guardian dictate with fairness; and call in to witness from among your men two witnesses; but if there are not two men, then one man and two women from among those whom you choose to be witnesses, so that if one of the two errs, the second of the two may remind the other; and the witnesses should not refuse when they are summoned; and be not averse to writing it (whether it is) small or large, with the time of its falling due; this is more equitable in the sight of Allah and assures greater accuracy in testimony, and the nearest (way) that you may not entertain doubts (afterwards), except when it is ready merchandise which you give and take among yourselves from hand to hand, then there is no blame on you in not writing it down; and have witnesses when you barter with one another, and let no harm be done to the scribe or to the witness; and if you do (it) then surely it will be a transgression in you, and be careful of (your duty) to Allah, Allah teaches you, and Allah knows all things.
KHALIFA: O you who believe, when you transact a loan for any period, you shall write it down. An impartial scribe shall do the writing. No scribe shall refuse to perform this service, according to GOD’s teachings. He shall write, while the debtor dictates the terms. He shall observe GOD his Lord and never cheat. If the debtor is mentally incapable, or helpless, or cannot dictate, his guardian shall dictate equitably. Two men shall serve as witnesses; if not two men, then a man and two women whose testimony is acceptable to all. Thus, if one woman becomes biased, the other will remind her. It is the obligation of the witnesses to testify when called upon to do so. Do not tire of writing the details, no matter how long, including the time of repayment. This is equitable in the sight of GOD, assures better witnessing, and eliminates any doubts you may have. Business transactions that you execute on the spot need not be recorded, but have them witnessed. No scribe or witness shall be harmed on account of his services. If you harm them, it would be wickedness on your part. You shall observe GOD, and GOD will teach you. GOD is Omniscient.
২৮০। যদি ঋণগ্রহণকারী অসুবিধার মধ্যে থাকে, তবে যতদিন না [টাকা] পরিশোধ করা তার জন্য সহজ হয়, তাকে সময় দাও। কিন্তু যদি তোমরা [টাকা] মার্জনা করে দাও, দান হিসেবে, তবে তা হবে তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা তা জানতে।
২৮১। সেই দিনকে ভয় কর, যেদিন তোমাদের [সবাইকে] আল্লাহ্র নিকট ফিরিয়ে আনা হবে। অতঃপর প্রতিটি আত্মাকে যা সে [পৃথিবীতে] উপার্জন করেছে তার [মূল্য] পরিশোধ করা হবে। এবং কারও প্রতি [এতটুকু] অন্যায় করা হবে না।
রুকু – ৩৯
২৮২। হে মুমিনগণ ! যখন তোমরা নির্ধারিত মেয়াদের জন্য ঋণের ব্যাপারে পরস্পরের মধ্যে চুক্তিবদ্ধ হও, তখন তা লিখে রাখবে ৩২৯। কোন লেখক তা যেন বিশ্বস্তভাবে দু’পক্ষে জন্য লিখে দেয়। লেখক যেনো তা লিখতে অস্বীকার না করে। যেহেতু আল্লাহ্ তাকে [লিখতে] শিখিয়েছেন ৩৩০। সুতরাং সে যেনো লেখে। ঋণ গ্রহীতা যেনো লেখার বিষয়বস্তু বলে দেয় এবং তার প্রভু আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর ঋণের কিছু যেনো না কমায়। কিন্তু ঋণগ্রহীতা যদি মানসিক প্রতিবন্ধী হয়, অথবা দুর্বল হয়, অথবা [লেখার বিষয়বস্তু] বলে দিতে অক্ষম হয়, ৩৩১ [সেক্ষেত্রে] তার অভিভাবক বিশ্বস্তভাবে বিষয়বস্তু বলে দেবে। তোমার আপনজনের মধ্যে থেকে দু’জন পুরুষ সাক্ষী রাখবে ৩৩২। যদিসেখানে দু’জন পুরুষ সাক্ষী না পাও, তবে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রীলোক তোমরা সাক্ষী হিসেবে নির্বাচন করবে, যেনো স্ত্রীলোকদের একজন ভুল করলেও তাদের অপরজন তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে পারবে। সাক্ষীগণকে যখন [সাক্ষ্য প্রমাণের জন্য] ডাকা হবে তারা তা অস্বীকার করতে পারবে না। ছোট হোক বা বড় হোক ভবিষ্যত মেয়াদসহ [তোমাদের চুক্তি] লিখতে অবজ্ঞা প্রকাশ করো না। এটাই আল্লাহ্র চোখে ন্যায্যতর ও প্রমাণের জন্য অধিক উপযুক্ত এবং তোমাদের মধ্যে সন্দেহ নির্ধারণের জন্য অধিক উপযোগী। কিন্তু তোমরা যদি নিজেদের মধ্যে নগদ আদান-প্রদান কর, তা তোমরা না লিখলেও কোন দোষ নাই। কিন্তু ব্যবসায়িক লেনদেনের ব্যাপারে সর্বদা সাক্ষী রাখবে। এবং লেখক ও সাক্ষী যেনো ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। যদি তোমরা [এরূপ ক্ষতি] কর, এটা হবে তোমাদের জন্য পাপ। সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদের শিক্ষা দিয়ে থাকেন। আল্লাহ্ সকল বিষয়ে সবিশেষে অবহিত ৩৩৩।
৩২৯। এই আয়াতে ব্যবসায়িক লেনদেনের শর্তাবলী আলোচনা করা হয়েছে। আয়াতটিতে লেনদেনের দুটো পর্যায় সম্বন্ধে বলা হয়েছে। এক হতে পারে ধারে মাল খরিদ করা এবং পরবর্তীতে দাম শোধ করা, অন্যটি হতে পারে অগ্রিম অর্থ প্রদান করা এবং পরবর্তীতে নির্দিষ্ট স্থানে মাল সরবরাহ করা। কুরআনের নির্দেশ হচ্ছে এসব ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে অবশ্যই লিখিত দলিলের আশ্রয় গ্রহণ করতে হবে এবং সাক্ষী রাখা উত্তম।
৩৩০। দলিল লেখকদের সম্পর্কে এখানে বলা হয়েছে, যিনি লিখবেন, তাকে অবশ্যই ন্যায়বান হতে হবে, যেনো কোনও পক্ষের হয়ে অন্যপক্ষের জন্য অন্যায় দলিল রচনা না করেন। এ কথা সর্বদা মনে রাখতে বলা হয়েছে যে আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, সব জানেন ও দেখেন। এ কথা যারা দলিল লিখবেন তারা অবশ্যই মনে রাখবেন যে লেখাপড়া করতে পারা, খুব বড় নেয়ামতপ্রাপ্ত হওয়ার সামিল। আল্লাহ্র এই নেয়ামতকে মানুষের মঙ্গলের জন্য ব্যয় করা উচিত। যাকে আল্লাহ্ পড়ার ক্ষমতা দিয়েছেন, লেখার ক্ষমতা দিয়েছেন, তাকে আল্লাহ্ অশেষ নেয়ামত দান করেছেন। কারণ লেখাপড়া করতে পারাই হচ্ছে জ্ঞানের রাজ্যে প্রবেশের চাবিকাঠি। বিশেষতঃ আমাদের মত দেশে যেখানে অশিক্ষিতের হার অত্যন্ত বেশী, সেখানে শিক্ষিত লোকের দায়িত্ব ও কর্তব্য অত্যন্ত বেশী এবং সে সম্বন্ধে আল্লাহ্র হুকুম এখানে বর্ণিত হয়েছে।
৩৩১। “ঋণ গ্রহীতা যদি নির্বোধ অথবা দুর্বল হয়, অথবা লিখার বিষয়বস্তু বলে দিতে না পারে” – সেক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি চুক্তির বিষয়বস্তু বর্ণনা করতে অক্ষম। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অভিভাবক অবশ্যই ন্যায়ের সাথে এবং বিশ্বস্ততার সাথে তার দায়িত্ব পালন করবেন।
৩৩২। সাক্ষী নির্বাচনের ব্যাপারে পুরুষ বা নারী যেই হোক না কেন তাকে নিজস্ব চেনা পরিচিত মন্ডল থেকে নির্বাচন করাই শ্রেয়ঃ। কারণ লেনদেনের পুরো প্রক্রিয়ার সাথে সে পরিচিত থাকায়, তার পক্ষে ঘটনাটি অনুধাবন করা সহজসাধ্য হবে। শুধু তা-ই নয়, ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে, সাক্ষ্যদাতাকে সহজেই হাজির করানো সম্ভব হবে।
৩৩৩। উপরের আয়াতটিতে ব্যবসা-বাণিজ্যে যাতে শৃঙ্খলা রক্ষা হয় এবং অন্যায় সংঘটিত না হয় সে ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। আয়াতটিতে নৈতিক মূল্যবোধের উপরে যেরূপ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে, সমগুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে নিজেদের মধ্যে দরদস্তুরের উপরে, লেনদেনের ব্যাপারে, সাক্ষীর ব্যাপারে, উপযুক্ত লিখিত দলিলের ব্যাপারে। শুধু তাই-ই নয় নৈতিকতার প্রশ্নে সকলেই সমান দায়ী। এমন কি যে দলিল লেখক তাকেও এখানে নৈতিকতার প্রশ্নে আল্লাহ্র কাছে দায়ী করা হয়েছে। ন্যায়পরায়ণতা বা সততাকে পৃথিবীর লাভ ও ক্ষতির মাপকাঠিতে, নিজের সুযোগ সুবিধার্থে যেনো প্রয়োগ করা না হয়। ন্যায়, সত্য ও সততা হবে সব কিছুর উর্ধ্বে, এই হচ্ছে ধার্মিক লোকের বিবেক। এ কথা সকলকেই স্মরণ রাখতে হবে যে প্রাত্যাহিক জীবন ও ধর্মীয় জীবন কোন আলাদা ব্যবস্থা বা দফতর নয়। ইসলামের চোখে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ন্যায় ও সত্য হবে প্রধান চালিকা শক্তি। এমন কি প্রাত্যাহিক জীবনে, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে, লেনদেনের ক্ষেত্রে এ কথা সর্বদা মনে রাখতে হবে যে আমাদের সব নেওয়া-দেওয়া, ব্যবসা-বাণিজ্য, আমরা করছি আল্লাহ্র চোখের সম্মুখে। সামান্যতম অন্যায়ও তার চক্ষুকে ফাঁকি দেওয়া যায় না। এই জীবনবোধই হচ্ছে ইসলামিক জীবনবোধ। জীবনের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহ্র উপস্থিতি অনুভব করা ও তার হুকুম মত জীবন অতিবাহিত করা, এই হচ্ছে ইসলামের মূল দর্শন।
আয়াতঃ 002.283
আর তোমরা যদি প্রবাসে থাক এবং কোন লেখক না পাও তবে বন্ধকী বন্তু হস্তগত রাখা উচিত। যদি একে অন্যকে বিশ্বাস করে, তবে যাকে বিশ্বাস করা হয়, তার উচিত অন্যের প্রাপ্য পরিশোধ করা এবং স্বীয় পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় কর! তোমরা সাক্ষ্য গোপন করো না। যে কেউ তা গোপন করবে, তার অন্তর পাপপূর্ণ হবে। তোমরা যা করা, আল্লাহ সে সম্পর্কে খুব জ্ঞাত।
And if you are on a journey and cannot find a scribe, then let there be a pledge taken (mortgaging); then if one of you entrust the other, let the one who is entrusted discharge his trust (faithfully), and let him be afraid of Allâh, his Lord. And conceal not the evidence for he, who hides it, surely his heart is sinful. And Allâh is All-Knower of what you do.
وَإِن كُنتُمْ عَلَى سَفَرٍ وَلَمْ تَجِدُواْ كَاتِبًا فَرِهَانٌ مَّقْبُوضَةٌ فَإِنْ أَمِنَ بَعْضُكُم بَعْضًا فَلْيُؤَدِّ الَّذِي اؤْتُمِنَ أَمَانَتَهُ وَلْيَتَّقِ اللّهَ رَبَّهُ وَلاَ تَكْتُمُواْ الشَّهَادَةَ وَمَن يَكْتُمْهَا فَإِنَّهُ آثِمٌ قَلْبُهُ وَاللّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ
Wa-in kuntum AAala safarin walam tajidoo katiban farihanun maqboodatun fa-in amina baAAdukum baAAdan falyu-addi allathee i/tumina amanatahu walyattaqi Allaha rabbahu wala taktumoo alshshahadata waman yaktumha fa-innahu athimun qalbuhu waAllahu bima taAAmaloona AAaleemun
YUSUFALI: If ye are on a journey, and cannot find a scribe, a pledge with possession (may serve the purpose). And if one of you deposits a thing on trust with another, Let the trustee (Faithfully) discharge His trust, and let him fear his Lord. Conceal not evidence; for whoever conceals it,- His heart is tainted with sin. And Allah Knoweth all that ye do.
PICKTHAL: If ye be on a journey and cannot find a scribe, then a pledge in hand (shall suffice). And if one of you entrusteth to another let him who is trusted deliver up that which is entrusted to him (according to the pact between them) and let him observe his duty to Allah his Lord. Hide not testimony. He who hideth it, verily his heart is sinful. Allah is Aware of what ye do.
SHAKIR: And if you are upon a journey and you do not find a scribe, then (there may be) a security taken into possession; but if one of you trusts another, then he who is trusted should deliver his trust, and let him be careful (of his duty to) Allah, his Lord; and do not conceal testimony, and whoever conceals it, his heart is surely sinful; and Allah knows what you do.
KHALIFA: If you are traveling, and no scribe is available, a bond shall be posted to guarantee repayment. If one is trusted in this manner, he shall return the bond when due, and he shall observe GOD his Lord. Do not withhold any testimony by concealing what you had witnessed. Anyone who withholds a testimony is sinful at heart. GOD is fully aware of everything you do.
২৮৩। যদি তোমরা সফরে থাক এবং কোন লেখক না পাও, সেক্ষেত্রে কোন বন্ধকী বস্তু অধিকারে রাখবে ৩৩৪। তোমাদের একজন যদি অপরজনকে বিশ্বাস করে কোন জিনিস জমা রাখে ৩৩৫, তবে আমনতকারী যেনো [বিশ্বস্ততার সাথে] তার আমানত ফিরিয়ে দেয়; এবং তাঁর পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করে। তোমরা প্রমাণ গোপন করো না; যে তা গোপন করে, তার হৃদয় পাপ দ্বারা রঞ্জিত হয়ে যায় ৩৩৬। এবং তোমরা যা কর আল্লাহ্ তা জানেন।
৩৩৪। যদি কেউ সফরে থাকে এবং বাকীর ব্যাপারে যদি কেউ বিশ্বস্ততার জন্য কোন বস্তু বন্ধক নিতে চায়, তাও করতে পারে। কিন্তু বন্ধকী বস্তু দ্বারা উপকৃত হওয়া তার জন্য জায়েয নয়। সে শুধু ঋণ পরিশোধ হওয়া পর্যন্ত একে নিজের অধিকারে রাখবে। এর যাবতীয় মুনাফা আসল মালিকের প্রাপ্য।
৩৩৫। বন্ধকীর ব্যাপারে যিনি গচ্ছিত রাখেন তার উপর বিশ্বস্ততার এবং ন্যায় পরায়ণতার অঙ্গীকার করা হয়েছে। বন্ধকী জিনিস গচ্ছিত রাখা হচ্ছে আমানত রক্ষা করা। আমানতকারীর কর্তব্য হচ্ছে আমানতকৃত জিনিসের প্রকৃত তত্ত্বাবধান করা এবং ঋণ শোধের পরে তা মালিকের নিকট প্রত্যার্পন করা। আর এই কাজকে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার জন্য আল্লাহকে ভয় করার কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ- এটা একটা ধর্মীয় বিধান যে, কোনও অবস্থায়েই আমানত খেয়ানত করা চলবে না। এই আমানত শুধুমাত্র টাকা পয়সা বা মূল্যবান বস্তুসামগ্রীই নয়। আমানত বহু প্রকার। উদাহরণঃ যিনি প্রশাসনে সরকারী চাকুরী করেন জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা তার জন্য আল্লাহ্ প্রদত্ত আমানত। যিনি ডাক্তারী করেন তার জ্ঞান ও সেবা জনগণের জন্য আল্লাহ্ প্রদত্ত আমানত, যিনি শিক্ষকতা করেন তার মেধা ও জ্ঞান শিক্ষার্থীর জন্য আল্লাহ্ কর্তৃক তার আমানত ইত্যাদি। একটু ভেবে দেখলেই দেখা যায় সমাজে আমরা প্রত্যেকেই আল্লাহ্র কাছে ‘আমানতের’ অঙ্গীকারে আবদ্ধ, আল্লাহ্ প্রদত্ত সামর্থ অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে আমাদের পরীক্ষা করা হয় আমরা এর খেয়ানত করি কিনা, এই হচ্ছে ধর্মীয় বিধান বা আল্লাহ্র আইন। সাধারণ আইনের সাথে আমরা একে যেনো এক করে না দেখি। কারণ সাধারণ আইন প্রণীত হয় মানুষ দ্বারা। আর ধর্মীয় আইনের প্রণেতা স্বয়ং আল্লাহ্। বাংলাদেশীদের বিবেচ্য তারা এই ধর্মীয় বিধান কতটুকু মানেন।
৩৩৬। লোভ-লালসায় ভরা এই পৃথিবী। এই লোভের বশবর্তী হয়েই আদম (আঃ) কে বেহেশত থেকে নির্বাসিত হতে হয়েছিল। প্রাত্যাহিক জীবনে চলার পথে আমরা অনেক সময়েই লোভের শিকার হই ঐ হযরত আদমের (আঃ) মত। দেখা যায় সত্যকে সামান্য বিকৃত করলে বা গোপন করলে বা মিথ্যা সাক্ষ্য দান করলে বিরাট জাগতিক লাভ হয়। হতে পারে তা আর্থিক বা সামাজিক। এখানে আল্লাহ্ এই প্রলোভনের বিরুদ্ধে আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন, সত্যকে গোপন করে মিথ্যা সাক্ষীর পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। মিথ্যা সাক্ষীর পরিণামে আমাদের নৈতিক মূল্যবোধ এবং আধ্যাত্মিক জীবন বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হয়। কারণ এর ফলে আমাদের নৈতিক অধঃপতন হয়, ফলে আমাদের আধ্যত্মিক জীবনের শুভ্রতা নষ্ট হয়ে কালিমার দাগ পড়ে। আমাদের হৃদয় হয়ে পড়বে তমসাবৃত। এখানে আয়াতে বলা হয়েছে “হৃদয় পাপ দ্বার রঞ্জিত হয়”। এই অন্তর বা হৃদয় কথাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সকল গোপন ইচ্ছার প্রথম সৃষ্টি হয় এই অন্তরে। পাপ ও পূণ্য সবই অন্তরের ইচ্ছার প্রতিফলন। মিথ্যা সাক্ষীর অপরাধে এই অন্তর পাপের অন্ধকারে ঢেকে যায়। যদিও তা পৃথিবীর মানুষের দৃষ্টিগোচর নয়। ফলে তার আধ্যাত্মিক জীবনের উন্নতির পথ হয়ে যায় রুদ্ধ। কারণ অন্তর বা হৃদয়ই হচ্ছে প্রেম ও ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু। আল্লাহ্-প্রেম হচ্ছে জীবনের সর্বোচ্চ প্রেমের পরিণতি। আল্লাহ্র প্রতি ভালোবাসা হচ্ছে ভালোবাসার শীর্ষবিন্দু। মিথ্যার বেসাতি, প্রেম ভালোবাসার এই কেন্দ্রবিন্দুকে নষ্ট করে দেয় ফলে তার পক্ষে উন্নততর আধ্যাত্মিক জীবনের পথও রুদ্ধ হয়ে যায়।
[উপদেশঃ মিথ্যা সর্বাবস্থায় পরিত্যাজ্য।]
আয়াতঃ 002.284
যা কিছু আকাশসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু যমীনে আছে, সব আল্লাহরই। যদি তোমরা মনের কথা প্রকাশ কর কিংবা গোপন কর, আল্লাহ তোমাদের কাছ থেকে তার হিসাব নেবেন। অতঃপর যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করবেন এবং যাকে ইচ্ছা তিনি শাস্তি দেবেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে শক্তিমান।
To Allâh belongs all that is in the heavens and all that is on the earth, and whether you disclose what is in your ownselves or conceal it, Allâh will call you to account for it. Then He forgives whom He wills and punishes whom He wills. And Allâh is Able to do all things.
لِّلَّهِ ما فِي السَّمَاواتِ وَمَا فِي الأَرْضِ وَإِن تُبْدُواْ مَا فِي أَنفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُم بِهِ اللّهُ فَيَغْفِرُ لِمَن يَشَاء وَيُعَذِّبُ مَن يَشَاء وَاللّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
Lillahi ma fee alssamawati wama fee al-ardi wa-in tubdoo ma fee anfusikum aw tukhfoohu yuhasibkum bihi Allahu fayaghfiru liman yashao wayuAAaththibu man yashao waAllahu AAala kulli shay-in qadeerun
YUSUFALI: To Allah belongeth all that is in the heavens and on earth. Whether ye show what is in your minds or conceal it, Allah Calleth you to account for it. He forgiveth whom He pleaseth, and punisheth whom He pleaseth, for Allah hath power over all things.
PICKTHAL: Unto Allah (belongeth) whatsoever is in the heavens and whatsoever is in the earth; and whether ye make known what is in your minds or hide it, Allah will bring you to account for it. He will forgive whom He will and He will punish whom He will. Allah is Able to do all things.
SHAKIR: Whatever is in the heavens and whatever is in the earth is Allah’s; and whether you manifest what is in your minds or hide it, Allah will call you to account according to it; then He will forgive whom He pleases and chastise whom He pleases, and Allah has power over all things.
KHALIFA: To GOD belongs everything in the heavens and the earth. Whether you declare your innermost thoughts, or keep them hidden, GOD holds you responsible for them. He forgives whomever He wills, and punishes whomever He wills. GOD is Omnipotent.
রুকু – ৪০
২৮৪। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর মধ্য যা কিছু আছে সব আল্লাহ্রই অধিকারে। তোমাদের মনে যা আছে তা প্রকাশ কর অথবা গোপন কর, আল্লাহ্ সে সবের হিসাব গ্রহণ করবেন। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দান করেন। আল্লাহ্ সকল বিষয়ের উপরে সর্বশক্তিমান।
২৮৫। রাসূল তাঁর প্রভুর নিকট থেকে তাঁর প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তাতে ঈমান এনেছে এবং মুমিনগণও ! এরা প্রত্যেকে আল্লাহতে, তাঁর ফিরিশতাগণে, তাঁর কিতাবে, তাঁর রাসূলগণে বিশ্বাস স্থাপন করে ৩৩৭। [তারা বলে] “আমরা তাঁর রাসূলগণের মধ্যে কোন তারতম্য করি না ৩৩৮।” এবং তারা বলে, “আমরা শুনলাম এবং আমরা মান্য করলাম। হে আমাদের প্রভু, [আমরা] তোমার ক্ষমা চাই ৩৩৯। [জীবনের] সকল যাত্রা পথের সমাপ্তি তো তোমার কাছে এসে।”
৩৩৭। এই সূরার আরম্ভ বিশ্বাস (faith) বা ঈমান এর পূর্ণ বিবরণ দিয়ে [২ : ৩-৪] ঈমান বলতে কি বুঝায় তাই বর্ণনা করা হয়েছে উপরিউক্ত আয়াতে। সূরা বাকারা কুরআন শরীফের সর্বাপেক্ষা বড় ও গুরুত্বপূর্ণ সূরা। আল্লাহ্র বিধি বিধানের বিরাট অংশ এতে বিবৃত হয়েছে। এ সূরায় গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক ও আনুষাঙ্গিক এবং ইহলৌকিক ও পারলৌকিক নির্দেশাবলী যথা- নামাজ, যাকাত, রোজা, হজ্ব, জিহাদ, পবিত্রতা, তালাক, ইদ্দত, খুলা তামাক এবং শিশুকে দুগ্ধ পান করানো, মদ ও সুদের অবৈধতা, ঋণ, লেনদেনের বৈধ পন্থা ইত্যাদি বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। এখন আমরা এই সূরায় শেষ অংশে এসে পৌঁছেছি। ঈমানের প্রতি মোমেন বান্দাদের স্বীকারোক্তি এবং জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে আল্লাহ্র আইন মানার অঙ্গীকারের মধ্যে দিয়ে সূরাটি শেষ হতে যাচ্ছে। শেষ অংশের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আল্লাহ্র হুকুম মানার অঙ্গীকারের সাথে সাথে বান্দা তার জানা, অজানা কৃত সব পাপের জন্য আল্লাহ্র কাছে বিনয়ের সাথে ক্ষমা প্রার্থী। অর্থাৎ মোমেন বান্দার চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হবে বিনয়। আমাদের পৃথিবীর যাত্রাপথে, জীবনের যাত্রাপথ শেষ করবো সেই সর্বশক্তিমানের কাছে পৌঁছে। তিনিই আমাদের শেষ গন্তব্যস্থল। এই শেষ গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর জন্য আমাদের আল্লাহ্র সাহায্য প্রয়োজন, আমরা বিনয়ের সাথে তার সাহায্য ও ক্ষমাপ্রার্থী। সূরাটি শুরু করা হয়েছে ঈমানের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা দ্বারা, শেষ করা হয়েছে ঈমান মানার অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে।
৩৩৮। দেখুন আয়াত [২ : ২৫৩ ও টিকা ২৮৯]। আল্লাহ্র দূতদের মধ্যে (রাসূল) কোনও প্রকার ভেদাভেদ করা নিষিদ্ধ। আমরা তাদের সকলকে সমানভাবে সম্মান করবো। যদিও আল্লাহ্ কর্তৃক নির্দিষ্ট কাজের জন্য তাদেরকে প্রেরণ করা হয় বিভিন্ন যুগের প্রেক্ষাপটে। যুগের প্রেক্ষিতে তাদের কাজে ছিল বিভিন্নতা এবং আল্লাহ্ তাদের সমমর্যাদা দান করেন নাই। আল্লাহ্র কাছে তাদের মর্যাদাক্রমও ছিল বিভিন্ন। কিন্তু আমাদের উপর মুসলিম হিসেবে হুকুম হচ্ছে সকলকে সমভাবে সম্মান করা।
৩৩৯। যখন আমাদের ঈমান বা বিশ্বাস এবং আচরণ হয় আন্তরিক শুধু তখনই আমরা আমাদের চরিত্রের দোষত্রুটি অনুধাবন করতে সক্ষম হব। এই অনুধাবনের ফলে আমরা বিনয়ের সাথে, অনুনয়ের সাথে আমাদের কৃত অপরাধ, দোষত্রুটির জন্য ক্ষমাপ্রার্থী হব মহান আল্লাহ্র দরবারে। আমরা জানি আমরা সাধারণ মানুষ। প্রতি মূহুর্তে অন্যায় ও ভুলের দ্বারা বিপথে চালিত হই। আল্লাহ্ পরম করুণাময় ও ক্ষমাশালী। যত দোষই করা হোক না কেন প্রকৃত অনুতাপকারীকে আল্লাহ্ ক্ষমা করে দেবেন কারণ আমাদের ক্ষমতা অত্যন্ত সীমিত। যা আমাদের ক্ষমতার বাইরে আল্লাহ্ সে ভারে আমাদের ভারাক্রান্ত করেন না। আমাদের হৃদয়ের এই অনুভব থেকেই আমাদের অন্তরে সেই সর্বশক্তিমানের কাছে আত্মসমর্পণের ইচ্ছা জাগ্রত হয়। তখনই আমরা তাঁর কাছে কৃত অপরাধের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী হই এবং আমাদের পরিচালনার জন্য তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা করি।
আয়াতঃ 002.285
রসূল বিশ্বাস রাখেন ঐ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি এবং তাঁর পয়গম্বরগণের প্রতি। তারা বলে আমরা তাঁর পয়গম্বরদের মধ্যে কোন তারতম্য করিনা। তারা বলে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা তোমার ক্ষমা চাই, হে আমাদের পালনকর্তা। তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।
. The Messenger (Muhammad SAW) believes in what has been sent down to him from his Lord, and (so do) the believers. Each one believes in Allâh, His Angels, His Books, and His Messengers. They say, ”We make no distinction between one another of His Messengers” – and they say, ”We hear, and we obey. (We seek) Your Forgiveness, our Lord, and to You is the return (of all).”
آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْهِ مِن رَّبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللّهِ وَمَلآئِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لاَ نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّن رُّسُلِهِ وَقَالُواْ سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ
Amana alrrasoolu bima onzila ilayhi min rabbihi waalmu/minoona kullun amana biAllahi wamala-ikatihi wakutubihi warusulihi la nufarriqu bayna ahadin min rusulihi waqaloo samiAAna waataAAna ghufranaka rabbana wa-ilayka almaseeru
YUSUFALI: The Messenger believeth in what hath been revealed to him from his Lord, as do the men of faith. Each one (of them) believeth in Allah, His angels, His books, and His messengers. “We make no distinction (they say) between one and another of His messengers.” And they say: “We hear, and we obey: (We seek) Thy forgiveness, our Lord, and to Thee is the end of all journeys.”
PICKTHAL: The messenger believeth in that which hath been revealed unto him from his Lord and (so do) believers. Each one believeth in Allah and His angels and His scriptures and His messengers – We make no distinction between any of His messengers – and they say: We hear, and we obey. (Grant us) Thy forgiveness, our Lord. Unto Thee is the journeying.
SHAKIR: The messenger believes in what has been revealed to him from his Lord, and (so do) the believers; they all believe in Allah and His angels and His books and His messengers; We make no difference between any of His messengers; and they say: We hear and obey, our Lord! Thy forgiveness (do we crave), and to Thee is the eventual course.
KHALIFA: The messenger has believed in what was sent down to him from his Lord, and so did the believers. They believe in GOD, His angels, His scripture, and His messengers: “We make no distinction among any of His messengers.” They say, “We hear, and we obey. Forgive us, our Lord. To You is the ultimate destiny.”
রুকু – ৪০
২৮৪। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর মধ্য যা কিছু আছে সব আল্লাহ্রই অধিকারে। তোমাদের মনে যা আছে তা প্রকাশ কর অথবা গোপন কর, আল্লাহ্ সে সবের হিসাব গ্রহণ করবেন। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দান করেন। আল্লাহ্ সকল বিষয়ের উপরে সর্বশক্তিমান।
২৮৫। রাসূল তাঁর প্রভুর নিকট থেকে তাঁর প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তাতে ঈমান এনেছে এবং মুমিনগণও ! এরা প্রত্যেকে আল্লাহতে, তাঁর ফিরিশতাগণে, তাঁর কিতাবে, তাঁর রাসূলগণে বিশ্বাস স্থাপন করে ৩৩৭। [তারা বলে] “আমরা তাঁর রাসূলগণের মধ্যে কোন তারতম্য করি না ৩৩৮।” এবং তারা বলে, “আমরা শুনলাম এবং আমরা মান্য করলাম। হে আমাদের প্রভু, [আমরা] তোমার ক্ষমা চাই ৩৩৯। [জীবনের] সকল যাত্রা পথের সমাপ্তি তো তোমার কাছে এসে।”
৩৩৭। এই সূরার আরম্ভ বিশ্বাস (faith) বা ঈমান এর পূর্ণ বিবরণ দিয়ে [২ : ৩-৪] ঈমান বলতে কি বুঝায় তাই বর্ণনা করা হয়েছে উপরিউক্ত আয়াতে। সূরা বাকারা কুরআন শরীফের সর্বাপেক্ষা বড় ও গুরুত্বপূর্ণ সূরা। আল্লাহ্র বিধি বিধানের বিরাট অংশ এতে বিবৃত হয়েছে। এ সূরায় গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক ও আনুষাঙ্গিক এবং ইহলৌকিক ও পারলৌকিক নির্দেশাবলী যথা- নামাজ, যাকাত, রোজা, হজ্ব, জিহাদ, পবিত্রতা, তালাক, ইদ্দত, খুলা তামাক এবং শিশুকে দুগ্ধ পান করানো, মদ ও সুদের অবৈধতা, ঋণ, লেনদেনের বৈধ পন্থা ইত্যাদি বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। এখন আমরা এই সূরায় শেষ অংশে এসে পৌঁছেছি। ঈমানের প্রতি মোমেন বান্দাদের স্বীকারোক্তি এবং জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে আল্লাহ্র আইন মানার অঙ্গীকারের মধ্যে দিয়ে সূরাটি শেষ হতে যাচ্ছে। শেষ অংশের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আল্লাহ্র হুকুম মানার অঙ্গীকারের সাথে সাথে বান্দা তার জানা, অজানা কৃত সব পাপের জন্য আল্লাহ্র কাছে বিনয়ের সাথে ক্ষমা প্রার্থী। অর্থাৎ মোমেন বান্দার চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হবে বিনয়। আমাদের পৃথিবীর যাত্রাপথে, জীবনের যাত্রাপথ শেষ করবো সেই সর্বশক্তিমানের কাছে পৌঁছে। তিনিই আমাদের শেষ গন্তব্যস্থল। এই শেষ গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর জন্য আমাদের আল্লাহ্র সাহায্য প্রয়োজন, আমরা বিনয়ের সাথে তার সাহায্য ও ক্ষমাপ্রার্থী। সূরাটি শুরু করা হয়েছে ঈমানের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা দ্বারা, শেষ করা হয়েছে ঈমান মানার অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে।
৩৩৮। দেখুন আয়াত [২ : ২৫৩ ও টিকা ২৮৯]। আল্লাহ্র দূতদের মধ্যে (রাসূল) কোনও প্রকার ভেদাভেদ করা নিষিদ্ধ। আমরা তাদের সকলকে সমানভাবে সম্মান করবো। যদিও আল্লাহ্ কর্তৃক নির্দিষ্ট কাজের জন্য তাদেরকে প্রেরণ করা হয় বিভিন্ন যুগের প্রেক্ষাপটে। যুগের প্রেক্ষিতে তাদের কাজে ছিল বিভিন্নতা এবং আল্লাহ্ তাদের সমমর্যাদা দান করেন নাই। আল্লাহ্র কাছে তাদের মর্যাদাক্রমও ছিল বিভিন্ন। কিন্তু আমাদের উপর মুসলিম হিসেবে হুকুম হচ্ছে সকলকে সমভাবে সম্মান করা।
৩৩৯। যখন আমাদের ঈমান বা বিশ্বাস এবং আচরণ হয় আন্তরিক শুধু তখনই আমরা আমাদের চরিত্রের দোষত্রুটি অনুধাবন করতে সক্ষম হব। এই অনুধাবনের ফলে আমরা বিনয়ের সাথে, অনুনয়ের সাথে আমাদের কৃত অপরাধ, দোষত্রুটির জন্য ক্ষমাপ্রার্থী হব মহান আল্লাহ্র দরবারে। আমরা জানি আমরা সাধারণ মানুষ। প্রতি মূহুর্তে অন্যায় ও ভুলের দ্বারা বিপথে চালিত হই। আল্লাহ্ পরম করুণাময় ও ক্ষমাশালী। যত দোষই করা হোক না কেন প্রকৃত অনুতাপকারীকে আল্লাহ্ ক্ষমা করে দেবেন কারণ আমাদের ক্ষমতা অত্যন্ত সীমিত। যা আমাদের ক্ষমতার বাইরে আল্লাহ্ সে ভারে আমাদের ভারাক্রান্ত করেন না। আমাদের হৃদয়ের এই অনুভব থেকেই আমাদের অন্তরে সেই সর্বশক্তিমানের কাছে আত্মসমর্পণের ইচ্ছা জাগ্রত হয়। তখনই আমরা তাঁর কাছে কৃত অপরাধের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী হই এবং আমাদের পরিচালনার জন্য তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা ।
আয়াতঃ 002.286
আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে। হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছ, হে আমাদের প্রভূ! এবং আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কে সাহায্যে কর।
Allâh burdens not a person beyond his scope. He gets reward for that (good) which he has earned, and he is punished for that (evil) which he has earned. ”Our Lord! Punish us not if we forget or fall into error, our Lord! Lay not on us a burden like that which You did lay on those before us (Jews and Christians); our Lord! Put not on us a burden greater than we have strength to bear. Pardon us and grant us Forgiveness. Have mercy on us. You are our Maulâ (Patron, Suppor-ter and Protector, etc.) and give us victory over the disbelieving people.”
لاَ يُكَلِّفُ اللّهُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لاَ تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلاَ تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا لاَ طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَآ أَنتَ مَوْلاَنَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
La yukallifu Allahu nafsan illa wusAAaha laha ma kasabat waAAalayha ma iktasabat rabbana la tu-akhithna in naseena aw akhta/na rabbana wala tahmil AAalayna isran kama hamaltahu AAala allatheena min qablina rabbana wala tuhammilna ma la taqata lana bihi waoAAfu AAanna waighfir lana wairhamna anta mawlana faonsurna AAala alqawmi alkafireena
YUSUFALI: On no soul doth Allah Place a burden greater than it can bear. It gets every good that it earns, and it suffers every ill that it earns. (Pray:) “Our Lord! Condemn us not if we forget or fall into error; our Lord! Lay not on us a burden Like that which Thou didst lay on those before us; Our Lord! Lay not on us a burden greater than we have strength to bear. Blot out our sins, and grant us forgiveness. Have mercy on us. Thou art our Protector; Help us against those who stand against faith.”
PICKTHAL: Allah tasketh not a soul beyond its scope. For it (is only) that which it hath earned, and against it (only) that which it hath deserved. Our Lord! Condemn us not if we forget, or miss the mark! Our Lord! Lay not on us such a burden as thou didst lay on those before us! Our Lord! Impose not on us that which we have not the strength to bear! Pardon us, absolve us and have mercy on us, Thou, our Protector, and give us victory over the disbelieving folk.
SHAKIR: Allah does not impose upon any soul a duty but to the extent of its ability; for it is (the benefit of) what it has earned and upon it (the evil of) what it has wrought: Our Lord! do not punish us if we forget or make a mistake; Our Lord! do not lay on us a burden as Thou didst lay on those before us, Our Lord do not impose upon us that which we have not the strength to bear; and pardon us and grant us protection and have mercy on us, Thou art our Patron, so help us against the unbelieving people.
KHALIFA: GOD never burdens a soul beyond its means: to its credit is what it earns, and against it is what it commits. “Our Lord, do not condemn us if we forget or make mistakes. Our Lord, and protect us from blaspheming against You, like those before us have done. Our Lord, protect us from sinning until it becomes too late for us to repent. Pardon us and forgive us. You are our Lord and Master. Grant us victory over the disbelieving people.”
২৮৬। আল্লাহ্ কোন আত্মাকে তার সাধ্যের অতীত ভার অর্পন করেন না ৩৪০। প্রতিটি সৌভাগ্য যা সে লাভ করে তা তারই অর্জন, এবং প্রতিটি দুর্ভাগ্য যা সে ভোগ করে তা তারই অর্জন। [প্রার্থনা], “হে আমাদের প্রভু ! যদি আমরা ভুলে যাই অথবা বিভ্রান্ত হই তুমি আমাদের দোষ নিও না। হে প্রভু ! আমাদের উপর সেরূপ ভার অর্পণ করো না, যেরূপ তুমি আমাদের পূর্ববর্তীগণের উপরে অর্পণ করেছিলে ৩৪১। হে আমাদের প্রভু ! এমন ভার আমাদের উপর অর্পণ করো না যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন করে দাও, এবং আমাদের ক্ষমা কর, আমাদের প্রতি অনুগ্রহ কর। তুমিই আমাদের রক্ষাকর্তা। যারা ঈমানের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় তাদের বিরুদ্ধে তুমি আমাদের সাহায্য কর।”
৩৪০। দেখুন [২ : ২৩৩] “আল্লাহ্ কোন আত্মাকে তার সাধ্যের অতীত ভার অর্পণ করেন না।” [২ : ২৮৬] আয়াতের এই লাইনটি আয়াত [২ : ২৩৩] এর পুনরাবৃত্তি। [২ : ২৩৩] আয়াতে এই কার্যাভারকে আর্থিক সঙ্গতির প্রেক্ষিতে উপস্থাপন করা হয় এবং এখানে আধ্যাত্মিক শক্তির প্রেক্ষিতে উপস্থাপন করা হয়েছে। এখানে আল্লাহ্ আমাদের আশ্বস্ত করছেন যে, আমাদের আত্মার যার যতটুকু ক্ষমতা, আল্লাহ্ তার কাছে ততটুকুই আনুগত্য দাবী করবেন। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, আমাদের ক্ষমতার যেনো পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে পারি, এই প্রার্থনা আল্লাহ্র কাছে করা।
৩৪১। “আমাদের উপরে সেরূপ ভার অর্পণ করে না, যেরূপ তুমি আমাদের পূর্ববর্তীদের উপরে অর্পণ করেছিলে।” এর অর্থ বনী ইসরাঈলের উপর যে সেব কঠিন কাজ-কর্ম আরোপিত ছিল। আমাদের মনে যেনো কোনও উদ্ধতপনা বা অহংকার থেকে নিজেদের শ্রেষ্ঠ মনে করার প্রবণতা না জন্মে। বরং আমাদের এই কথা মনে রাখতে হবে যে, তারা তাদের বোঝা বা ভার (আল্লাহ্ কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব) বহনে অক্ষম হয়েছিল। আল্লাহ্ আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য অনেক হালকা করে দিয়েছেন। সুতরাং এই বোধ থেকে আমরা আল্লাহ্র কাছে আত্মসমর্পণের জন্য এবং তার ক্ষমা পাওয়ার জন্য আকুতি প্রকাশ করবো। আল্লাহ্র রাস্তায় চলার জন্য একমাত্র সম্বল হচ্ছে আল্লাহ্র ক্ষমা ও সাহায্য প্রার্থনা।
এখানেই সূরা বাকারার শেষ। এই সূরায় সামাজিক বিধি-বিধান বিস্তারিতভাবে উল্লিখিত হয়েছে। শেষ করা হয়েছে আল্লাহ্র সাহায্য প্রার্থনার মাধ্যমে। এই সাহায্য ব্যক্তিস্বার্থে নয় বরং সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে। এই সাহায্য চাওয়া হয়েছে কাফিরদের বিরুদ্ধে বিশ্বাসীদের জয়ের মাধ্যমে অর্থাৎ অন্যায় অসত্যের বিরুদ্ধে সত্যের ও বিশ্বাসের জয়ের মাধ্যমে।