وَإِذَا لَقُواْ الَّذِينَ آمَنُواْ قَالُواْ آمَنَّا وَإِذَا خَلَوْاْ إِلَى شَيَاطِينِهِمْ قَالُواْ إِنَّا مَعَكْمْ إِنَّمَا نَحْنُ مُسْتَهْزِؤُونَ
Wa-itha laqoo allatheena amanoo qaloo amanna wa-itha khalaw ila shayateenihim qaloo inna maAAakum innama nahnu mustahzi-oona
YUSUFALI: When they meet those who believe, they say: “We believe;” but when they are alone with their evil ones, they say: “We are really with you: We (were) only jesting.”
PICKTHAL: And when they fall in with those who believe, they say: We believe; but when they go apart to their devils they declare: Lo! we are with you; verily we did but mock.
SHAKIR: And when they meet those who believe, they say: We believe; and when they are alone with their Shaitans, they say: Surely we are with you, we were only mocking.
KHALIFA: When they meet the believers, they say, “We believe,” but when alone with their devils, they say, “We are with you; we were only mocking.”
৩৭। মুনাফেকী যখন অন্তরের অন্তঃস্থলে গভীরভাবে তার শিকড় বিস্তার করে, তখন তারা হয়ে উঠে অত্যন্ত কপট ও ভণ্ড। মুখে মধু ঢেলে তারা ধার্মিক লোকদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে যেনো তাদের প্রকৃতরূপ বিশ্ববাসীরা অনুধাবন করতে না পারে। কিন্তু যখন তারা স্বগোত্রে প্রত্যাবর্তন করে তখন নিজমূর্তি ধারণ করে। কিন্তু কপটতা, ভণ্ডামীর পরিণতি কখনও ভালো হয় না। একে আল্লাহ্ তুলনা করেছেন সেই লোকের সাথে যে তার বাণিজ্যে মুনাফা লাভের পরিবর্তে লোকসান দিয়েছে। কারণ এই পৃথিবীতে আমাদের অবস্থান খুবই ক্ষণস্থায়ী। এই ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে আমরা এসেছি বেহেশ্ত লাভের বাণিজ্যে। আত্মা তার মূলধন। এই মূলধনকে যে উন্নত করতে পারবে তারই আছে মুনাফা। অন্যথায় যে আত্মাকে লোভ-লালসা, অন্যায়, অসত্যের কাছে বিক্রি করে সে ঐ ব্যক্তির মত যে বাণিজ্যে লোকসান দেয়।
আয়াতঃ 002.015
বরং আল্লাহই তাদের সাথে উপহাস করেন। আর তাদেরকে তিনি ছেড়ে দিয়েছেন যেন তারা নিজেদের অহংকার ও কুমতলবে হয়রান ও পেরেশান থাকে।
Allâh mocks at them and gives them increase in their wrong-doings to wander blindly.
اللّهُ يَسْتَهْزِىءُ بِهِمْ وَيَمُدُّهُمْ فِي طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُونَ
Allahu yastahzi-o bihim wayamudduhum fee tughyanihim yaAAmahoona
YUSUFALI: Allah will throw back their mockery on them, and give them rope in their trespasses; so they will wander like blind ones (To and fro).
PICKTHAL: Allah (Himself) doth mock them, leaving them to wander blindly on in their contumacy.
SHAKIR: Allah shall pay them back their mockery, and He leaves them alone in their inordinacy, blindly wandering on.
KHALIFA: GOD mocks them, and leads them on in their transgressions, blundering.
১৫। তাদের ঠাট্টা-তামাশা আল্লাহ্ তাদের উপরে ছুড়ে দেবেন এবং তাদের সীমালংঘনের জন্য [অবাধ্যতার] রশিকে লম্বা করে দেবেন, যেনো তারা অন্ধের ন্যায় [সামনে পিছনে] পথভ্রষ্ট ভাবে ঘুরে বেড়ায়।১৬। এরাই তারা যারা হেদায়েতের বিনিময়ে ভ্রান্তি কিনে নিয়েছে। কিন্তু তাদের ব্যবসা বাণিজ্য লাভজনক নয়, এবং তারা সত্য পথের নির্দেশ হারিয়ে ফেলেছে।
১৭। তাদের উপমা সেই ব্যক্তির ন্যায় ৩৮, যে আগুন জ্বালালো। যখন তা তার চতুর্দিক আলোকিত করলো, আল্লাহ্ তাদের আলো সরিয়ে নিলেন এবং তাদের ঘোর অন্ধকারে পরিত্যাগ করলেন, যেনো তারা দেখতে না পায়।
১৮। তারা বধির, মূক এবং অন্ধ, তারা [সঠিক পথে] ফিরবে না।
৩৮। মুনাফিকের আত্মা ভণ্ডামী, জুয়াচুরি, অসত্য, অন্যায়ে পরিপূর্ণ। এগুলির সাহায্যে সে খুব সহজেই কোনও কাজে জয়লাভ করে এবং প্রশংসার পাত্রে পরিণত হয়, সেই লোকটির মত যে ক্ষণস্থায়ী আগুন জ্বালাতে সক্ষম হয়ে চারিদিকের গাঢ় অন্ধকার দূর করতে সক্ষম হয়েছিলো এবং সকলের প্রশংসার পাত্রে পরিণত হয়েছিলো। কিন্তু তার জ্বালানো আগুন অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। এক সময় তা নিভে যায়। ফলে চারিদিক আবার গাঢ় অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে যায়। হঠাৎ আলোর ঝলকানির পরে এ গাঢ়তা পূর্বের গাঢ়তার থেকে আরও বেশি প্রতীয়মান হয়। এই উপমার সাহায্যে আল্লাহ বোঝাতে চাচ্ছেন যে, যেসব কাজের ভিত্তি অন্যায়, অসত্য, অবিশ্বাস, ভণ্ডামীর উপর প্রতিষ্ঠিত, তার ফল কখনও স্থায়ী হয় না। ঐ কাজের সাফল্য অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী, আগুণের ক্ষণস্থায়ী আলোর মত। যে আলো অন্ধকারকে চিরতরে দূর করতে অপারগ। মুনাফিকেরা ভণ্ডামীর সাহায্যে জয়ী হতে চায়। ফলে তার কাজের নিয়তে আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস, সত্যের প্রতি বিশ্বস্ততা, প্রতিপালকের রহমতের আশা সবই থাকে অনুপস্থিত। মুনাফিকের কাজের নিয়ত কখনই মহৎ হয় না। কখনই ভালো হয় না। ফলে সময়ের বৃহত্তর পরিসরে মুনাফিকের কাজের নিয়ত বা অন্তরের উদ্দেশ্য সকলের নিকট পরিস্ফুটিত হয়ে যায়। সত্য প্রকাশিত হয়। ফলে কাজের সব পরিণতি হয় বিফল। সত্যের উদ্ভাসিত আলোতে মুনাফিকের অন্তর ভয়ে ত্রাসে আতঙ্কিত হয়ে উঠে। অন্তরের ভয় ত্রাস, মুনাফিকদের সুস্থ চিন্তাধারাকে বাধাগ্রস্থ করে, ফলে তারা সত্যকে জানতে, সত্যকে অনুধাবন করতে, শুনতে বা দেখতে অক্ষম হয়। মুনাফিকের আত্মার চারিদিক প্রাচীর বেষ্টিত হয়ে যায়। প্রাচীর বেষ্টিত স্থান যেমন সূর্যের ঝলমলে আলোর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ঠিক সেইরূপ মুনাফিকের অন্তরের মিথ্যার আবরণ সত্যের আলোর প্রবেশে বাঁধা সৃষ্টি করে। তাদের আত্মা সত্যের আলো বা আল্লাহ্র হেদায়েতের জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে, কিন্তু মিথ্যার আবরণ তাদের আত্মায় সত্যের আলো প্রবেশে বাঁধা দেয়। ফলে তারা অন্ধকারে অন্ধের মত পথ হাতড়ে বেড়ায়। তাদের আত্মা চায় মুক্তির আলো, মুক্তির বাতাস। কিন্তু তারা তা পায় না। তারা মিথ্যার অন্ধকারে অন্ধ ও বধির। সত্যকে খুঁজে নেবার ক্ষমতাও তাদের নাই। সুতরাং তারা আর ফিরবে না। অর্থাৎ তাদের অনুভূতিতে সত্য ও ন্যায় বোঝার মত যোগ্যতা রইল না। কারণ তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঈমানকে প্রতিহত করছে।