এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে সেসব বিষয়ের উপর যা কিছু তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেসব বিষয়ের উপর যা তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে। আর আখেরাতকে যারা নিশ্চিত বলে বিশ্বাস করে।
And who believe in (the Qur’ân and the Sunnah) which has been sent down (revealed) to you (Muhammad Peace be upon him ) and in [the Taurât (Torah) and the Injeel (Gospel), etc.] which were sent down before you and they believe with certainty in the Hereafter. (Resurrection, recompense of their good and bad deeds, Paradise and Hell, etc.).
والَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنزِلَ مِن قَبْلِكَ وَبِالآخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ
Waallatheena yu/minoona bima onzila ilayka wama onzila min qablika wabial-akhirati hum yooqinoona
YUSUFALI: And who believe in the Revelation sent to thee, and sent before thy time, and (in their hearts) have the assurance of the Hereafter.
PICKTHAL: And who believe in that which is revealed unto thee (Muhammad) and that which was revealed before thee, and are certain of the Hereafter.
SHAKIR: And who believe in that which has been revealed to you and that which was revealed before you and they are sure of the hereafter.
KHALIFA: And they believe in what was revealed to you, and in what was revealed before you, and with regard to the Hereafter, they are absolutely certain.
২৮। ঈমান বা আল্লাহ্তে বিশ্বাস শুধুমাত্র একটি মৌখিক স্বীকারোক্তি মাত্র নয়। এটি এমন এক বিশ্বাস যা উৎসারিত হয় গভীর বোধ, অবিচল আস্থা, সেই আস্থা ও বিশ্বাসে পরিপূর্ণ নির্ভরশীলতা থেকে-যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র আদেশ-নির্দেশের প্রতি পরিপূর্ণ আত্মসমর্পনের বাস্তব চর্চা এবং নিঃস্বার্থ মানবসেবার মাধ্যমে।
আয়াতঃ 002.005
তারাই নিজেদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে সুপথ প্রাপ্ত, আর তারাই যথার্থ সফলকাম।
They are on (true) guidance from their Lord, and they are the successful.
أُوْلَـئِكَ عَلَى هُدًى مِّن رَّبِّهِمْ وَأُوْلَـئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
Ola-ika AAala hudan min rabbihim waola-ika humu almuflihoona
YUSUFALI: They are on (true) guidance, from their Lord, and it is these who will prosper.
PICKTHAL: These depend on guidance from their Lord. These are the successful.
SHAKIR: These are on a right course from their Lord and these it is that shall be successful.
KHALIFA: These are guided by their Lord; these are the winners.
২৯। ‘সফলকাম’ হবে বা ‘উন্নতি’ লাভ করবে অর্থাৎ আল্লাহ্র নেয়ামতের অধিকারী হবে। এগুলি সেইসব দুর্লভ চারিত্রিক গুণাবলী যার উল্লেখ পূর্বে করা হয়েছে। অর্থাৎ বান্দা যদি আল্লাহ্র হুকুম বা আল্লাহ্র আইন মেনে চলে (যথা-সত্য কথা বলে, ন্যায়ের জন্য জিহাদ করে, মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করে ইত্যাদি) তবে তার চরিত্রে দুর্লভ গুণাবলীর জন্ম নেবে। বোঝানোর জন্য একটি ছোট উদাহরণ দেয়া গেলো। সত্য কথা বলার অভ্যাস করা আল্লাহ্র হুকুম। আমাদের রাসূল (সাঃ) জীবনে কোনওদিন এমনকি নবুয়তের পূর্বেও একটিও মিথ্যা কথা বলেন নাই। এটাই হচ্ছে আমাদের সর্বপ্রথম এবং প্রধান সুন্নত এবং ফরজ। সত্যবাদীতা এক ধরণের অভ্যাস। এর থেকে যে চারিত্রিক গুণাবলীর জন্ম নেয় তা হচ্ছে সততা, বিশ্বস্ততা, ন্যায়পরায়ণতা ইত্যাদি। আবার মিথ্যা বলাও একধরণের অভ্যাস। এর থেকে চরিত্রে যে সব দোষের সৃষ্টি হয়-তা হচ্ছে দূর্নীতিপরায়ণতা, অবিশ্বস্ততা, স্বার্থপরতা, অন্যকে ঠকানোর প্রবণতা ইত্যাদি। আত্মার উন্নতি লাভই হচ্ছে আধ্যাত্মিক সফলতার মূল কথা। সুতরাং যারা আল্লাহ্র কেতাবে বিশ্বাসী এবং সেই অনুযায়ী জীবন যাপন করেন আল্লাহ্ তাদের আত্মিক উন্নতি দান করেন। এর ফলে যে সমাজ আল্লাহ্র আইন মেনে চলে সে সমাজ শ্রীবৃদ্ধি লাভ করে। কারণ একটি পাপ অপর একটি পাপকে আকর্ষণ করে, অনুরূপভাবে একটি নেকীর (অর্থাৎ চারিত্রিক গুণাবলীর) বদলায় অপর নেকী বা (চারিত্রিক গুণাবলী) সৃষ্ট হয়।
‘নেকী” একটি বিমূর্ত অর্থজ্ঞাপক শব্দ। কিন্তু আমাদের সমাজে নেকী শব্দটিকে বস্তুগতভাবে উপস্থাপন করা হয়। যেমন-কোন কোন মৌলভী সাহেবেরা বলে থাকেন-অমুক কাজটি করলে আল্লাহ্ ৭০টি নেকী দান করবেন। নেকীকে এরকম বস্তুগতভাবে উপস্থাপন করা যায় না। নেকী হচ্ছে আল্লাহ্র সেই বিশেষ নেয়ামত যা আত্মাকে সমৃদ্ধ করে, ফলে আত্মা দুঃখ-কষ্ট ভরা পৃথিবীতে থেকেও দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্তি পায়; আত্মা অপার শান্তির পরশ অনুভব করে। সেই হিসেবে নেকী হচ্ছে চারিত্রিক গুণাবলী কারণ একমাত্র শুদ্ধ চারিত্রিক গুণাবলীই মানব সন্তানকে লোভ-লালসা ভরা পৃথিবীর উর্ধ্বে স্থাপন করতে পারে। আর ব্যক্তি যখন লোভ-লালসা ভরা পৃথিবীতে থেকেও তার উর্ধ্বে অবস্থান করতে পারে, শুধু তখনই সে বেহেশতি শান্তির স্বাদ আস্বাদন করতে পারবে। লোভ-লালসা, হিংসা-দ্বেষ, ঈর্ষা-নীচতা আত্মার ভিতরে যন্ত্রণার সৃষ্টি করে। এই আয়াতে যে তিন শ্রেণীর লোকের কথা বলা হয়েছে, এরা হচ্ছে প্রথম শ্রেণীর।