২৮৫। রাসূল তাঁর প্রভুর নিকট থেকে তাঁর প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তাতে ঈমান এনেছে এবং মুমিনগণও ! এরা প্রত্যেকে আল্লাহতে, তাঁর ফিরিশতাগণে, তাঁর কিতাবে, তাঁর রাসূলগণে বিশ্বাস স্থাপন করে ৩৩৭। [তারা বলে] “আমরা তাঁর রাসূলগণের মধ্যে কোন তারতম্য করি না ৩৩৮।” এবং তারা বলে, “আমরা শুনলাম এবং আমরা মান্য করলাম। হে আমাদের প্রভু, [আমরা] তোমার ক্ষমা চাই ৩৩৯। [জীবনের] সকল যাত্রা পথের সমাপ্তি তো তোমার কাছে এসে।”
৩৩৭। এই সূরার আরম্ভ বিশ্বাস (faith) বা ঈমান এর পূর্ণ বিবরণ দিয়ে [২ : ৩-৪] ঈমান বলতে কি বুঝায় তাই বর্ণনা করা হয়েছে উপরিউক্ত আয়াতে। সূরা বাকারা কুরআন শরীফের সর্বাপেক্ষা বড় ও গুরুত্বপূর্ণ সূরা। আল্লাহ্র বিধি বিধানের বিরাট অংশ এতে বিবৃত হয়েছে। এ সূরায় গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক ও আনুষাঙ্গিক এবং ইহলৌকিক ও পারলৌকিক নির্দেশাবলী যথা- নামাজ, যাকাত, রোজা, হজ্ব, জিহাদ, পবিত্রতা, তালাক, ইদ্দত, খুলা তামাক এবং শিশুকে দুগ্ধ পান করানো, মদ ও সুদের অবৈধতা, ঋণ, লেনদেনের বৈধ পন্থা ইত্যাদি বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। এখন আমরা এই সূরায় শেষ অংশে এসে পৌঁছেছি। ঈমানের প্রতি মোমেন বান্দাদের স্বীকারোক্তি এবং জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে আল্লাহ্র আইন মানার অঙ্গীকারের মধ্যে দিয়ে সূরাটি শেষ হতে যাচ্ছে। শেষ অংশের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আল্লাহ্র হুকুম মানার অঙ্গীকারের সাথে সাথে বান্দা তার জানা, অজানা কৃত সব পাপের জন্য আল্লাহ্র কাছে বিনয়ের সাথে ক্ষমা প্রার্থী। অর্থাৎ মোমেন বান্দার চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হবে বিনয়। আমাদের পৃথিবীর যাত্রাপথে, জীবনের যাত্রাপথ শেষ করবো সেই সর্বশক্তিমানের কাছে পৌঁছে। তিনিই আমাদের শেষ গন্তব্যস্থল। এই শেষ গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর জন্য আমাদের আল্লাহ্র সাহায্য প্রয়োজন, আমরা বিনয়ের সাথে তার সাহায্য ও ক্ষমাপ্রার্থী। সূরাটি শুরু করা হয়েছে ঈমানের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা দ্বারা, শেষ করা হয়েছে ঈমান মানার অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে।
৩৩৮। দেখুন আয়াত [২ : ২৫৩ ও টিকা ২৮৯]। আল্লাহ্র দূতদের মধ্যে (রাসূল) কোনও প্রকার ভেদাভেদ করা নিষিদ্ধ। আমরা তাদের সকলকে সমানভাবে সম্মান করবো। যদিও আল্লাহ্ কর্তৃক নির্দিষ্ট কাজের জন্য তাদেরকে প্রেরণ করা হয় বিভিন্ন যুগের প্রেক্ষাপটে। যুগের প্রেক্ষিতে তাদের কাজে ছিল বিভিন্নতা এবং আল্লাহ্ তাদের সমমর্যাদা দান করেন নাই। আল্লাহ্র কাছে তাদের মর্যাদাক্রমও ছিল বিভিন্ন। কিন্তু আমাদের উপর মুসলিম হিসেবে হুকুম হচ্ছে সকলকে সমভাবে সম্মান করা।
৩৩৯। যখন আমাদের ঈমান বা বিশ্বাস এবং আচরণ হয় আন্তরিক শুধু তখনই আমরা আমাদের চরিত্রের দোষত্রুটি অনুধাবন করতে সক্ষম হব। এই অনুধাবনের ফলে আমরা বিনয়ের সাথে, অনুনয়ের সাথে আমাদের কৃত অপরাধ, দোষত্রুটির জন্য ক্ষমাপ্রার্থী হব মহান আল্লাহ্র দরবারে। আমরা জানি আমরা সাধারণ মানুষ। প্রতি মূহুর্তে অন্যায় ও ভুলের দ্বারা বিপথে চালিত হই। আল্লাহ্ পরম করুণাময় ও ক্ষমাশালী। যত দোষই করা হোক না কেন প্রকৃত অনুতাপকারীকে আল্লাহ্ ক্ষমা করে দেবেন কারণ আমাদের ক্ষমতা অত্যন্ত সীমিত। যা আমাদের ক্ষমতার বাইরে আল্লাহ্ সে ভারে আমাদের ভারাক্রান্ত করেন না। আমাদের হৃদয়ের এই অনুভব থেকেই আমাদের অন্তরে সেই সর্বশক্তিমানের কাছে আত্মসমর্পণের ইচ্ছা জাগ্রত হয়। তখনই আমরা তাঁর কাছে কৃত অপরাধের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী হই এবং আমাদের পরিচালনার জন্য তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা ।
আয়াতঃ 002.286
আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে। হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছ, হে আমাদের প্রভূ! এবং আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কে সাহায্যে কর।
Allâh burdens not a person beyond his scope. He gets reward for that (good) which he has earned, and he is punished for that (evil) which he has earned. ”Our Lord! Punish us not if we forget or fall into error, our Lord! Lay not on us a burden like that which You did lay on those before us (Jews and Christians); our Lord! Put not on us a burden greater than we have strength to bear. Pardon us and grant us Forgiveness. Have mercy on us. You are our Maulâ (Patron, Suppor-ter and Protector, etc.) and give us victory over the disbelieving people.”
لاَ يُكَلِّفُ اللّهُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لاَ تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلاَ تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا لاَ طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَآ أَنتَ مَوْلاَنَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
La yukallifu Allahu nafsan illa wusAAaha laha ma kasabat waAAalayha ma iktasabat rabbana la tu-akhithna in naseena aw akhta/na rabbana wala tahmil AAalayna isran kama hamaltahu AAala allatheena min qablina rabbana wala tuhammilna ma la taqata lana bihi waoAAfu AAanna waighfir lana wairhamna anta mawlana faonsurna AAala alqawmi alkafireena