æথাকা সত্তেও পাওয়া যায় না?”
একবার চুম্বন, পরে আলিঙ্গন বা এক রাতের শয্যাসঙ্গনী করার পর খোনে হাজার হাজার তরুণীকে অন্তঃপুরের বন্দিনী করে রাখা হয়, সেখানে কলাকুশলী তরুণী পাওয়া যাবে কেমন করে।?”
æঠিকই বলেছ, আচার্য! আমিও অনুভব করছি, কিন্তু একবার অন্তঃপুরের গ্রহণ করার পর এদের আমি বের করে ুদই কি করে?”
তারপর আমি তাদের পথ বাতলে দিতাম । রাজকন্যা , সামন্তকন্যা ও রাজান্তঃপুরিকাগণের জন্য নাচগান অপরিহার্য। আহার ও পানীয়ের তমো এ সব তাদের প্রয়োজন। আমার দলেন চতুর নারীদের আমি পাঠিয়ে দিতাম রাজা নিজেই কলাশিক্ষার জন্য আপন অন্তঃপুরকাদের উৎসাহিত করতেন। যাকে গ্রহণ করা আমার পয়োজন মনে হত তার কাছে অন্তঃপুরের দুঃখকষ্ট এবং কলাবিদের জীবনের আনন্দের বিশদভাবে বর্ণনা করা হত। সঙ্গে সঙ্গে এ কথাও শোনানো হত যে, নাটাদের সম্মান রাজান্তঃপুরে কত বেশী, তারা কুশলী নটা হতে পারলে ভবিষ্যতে সুযোগও আছে! এ সব বলার পর অনেক তরণীর পক্ষেই সম্মত হওয়া স্বাভাবিক ছিল যদিও আমি তাদের ভেতর থেকে যোগ্যতমাকেই বাছাই করে নিতাম। জীবনে মাত্র একটি রাত সম্ভোগের জন্য যেখানে রাজারা হাজার হাজার তরূণীকে অবরোধ করে রাখে, সেখানে অন্তঃপুরে পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ করেও কিছু বন্ধ করা যায় নাÍবুড়ো কষ্ণুকী ব্রাহ্মণ তাদের তারণ্যের আনন্দ রোধ করতেও পারে না।
আমি যখন বিধবাদের ‘সতী’ হওয়ার বিরোধিতা করলাম তখন ভণ্ড শিরোমণি ব্রাহ্মণ এবং রাজারা মহা সোরগোল তুলল। তারা প্রচার করতে লাগল, আমি ভ্রূণ-হত্যা আমি একবারেই সমর্থন করি না কিন্তু এখানে এ কথা স্বীকার করতে আমার এইটুকু দ্বিধা নেই যে, আমি বিধবা-বিবাহ সম্পূর্ণ সমর্থন করি। প্রাক গুপ্তশাসনে আমাদের শ্রোত্রিয়গণ যেখানে গোমাংস বিনা কোনো আতিথ্যকে স্বীকার করতে চাইতেন না, সেখানে এখন গোমাংস ভক্ষণকে ধর্মবিরুদ্ধ বলে গণ্য করা হয়। যেখানে আমাদের ঋষিগণ বিধবাদের জন্য দেবরÍদ্বিতীয় বর, সম্পূর্ণ ধর্মসঙ্গত বলে মনে করতেন এবং কোনো ব্রাহ্মণী বা ক্ষত্রিয়া বিধবা-তরুণী ছয় মাস বা এক বছরের অধিক পতিবিধুরা থাকতে পারত না, সেখানে বিধবা-বিবাহকে এখন ধর্মবিরুদ্ধ বলে গণ্য হচ্ছে! গুপ্তরাজবংশের যুগেই এই জঞ্জালেরÍএই নতুন (হিন্দু) ধর্মের গোড়াপত্তন হয়, আর এর প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রগুপ্ত বিক্রমাদিত্য আপন পাটরাণী করে রেখেছিলেন নিজেরই বড় ভাই রামগুপ্তর সধবা স্ত্রীকে।
তরুণী বিধবাদের স্ত্রী হিসাবে রাখতে চাইলে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরও আটকাতে পারেন না আর কোন মুখেই বা আটকাবেন যখন স্ব-স্ব পত্নী বর্তমান থাকতেও তাঁরা নিজেরাই পরস্ত্রীর পিছনে ছুটতে দ্বিধা করনেনি! তরুণীদের বিধবা করে রাখার অবশ্যম্ভাবী পরিণাম ভ্রুণ-হত্যা, কারণ সন্তান সৃষ্টি করে তাকে পালন করার অর্থেই হল বিধবা-বিবাহ স্বীকার করে নেওয়াÍযা থেকে লোকে রেহাই পেতে চায়। এই ভয়ে এখন ব্রাহ্মণ এবং সামন্তরা কৌলীন্য সিগ্ধ করার এক নতুন কৌশল আবিষ্কার করেছে। সে হল বিধবাদের জীবন্ত দগ্ধ করা। স্ত্রীলোকদের এইভাবে জীবন্ত পুড়িয়ে মারাকে এই সব লোক মহাপুণ্য বলে প্রচার কর। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ তরুণীকে বলপূর্বক অগ্নিসাৎ করতে দেখেও যে দেবতাদের হৃদয় বিগলিত হয় না, তারা পাথরের গড়া, নয়ত তাদের অস্তিত্বই নেই। এরা বলে বেড়ায় স্ত্রীলোকেরা সেচ্ছায় সতী হয়। র্ধূত, ভণ্ড, নরাধম! এত মিথ্যা কেন? এই সব রাজান্তঃপুরের শত শত স্ত্রীলোক, যারা পুরুষের সঙ্গ হয়ত সারা জীবনে একবার পেয়েছেÍযাদের তোমরা আগুনে পুড়িয়ে সতী বানাচ্ছ, তাদের মধ্যে- ক’জন আছে যাদের ঐ নরপশুদের সঙ্গে এতটুকু পণয় ছিল? আজীবনের জন্য যারা বন্দী করে রেখেছিলÍতাদের সঙ্গে প্রেম! আর ওদের বিয়োগে পাগল হয়ে আগুনে ঝাঁপ দেবার যে এক-আধটি দৃষ্টান্ত রয়েছে, সে পাগলামীরও দু’চার দিনে প্রশমিত করা যেতে পারে। আত্মহত্যা ধর্ম! রসাতলে যাক ভণ্ড পুরোহিত আর রাজাদের ধর্ম। প্রয়াগের-অক্ষয়বট থেকে যমুনার ঝাঁপিয়ে পড়ে মৃত্যুবরণ করাকে এরা ধর্ম আখ্যা দিয়েছে, যার ফলে প্রতি বছর এমনি হাজার হাজার পাগল মৃত্যুবরণ করে ‘স্বর্গ’Íএ উপস্থিত হচ্ছে। দোরখণ্ডের সৎপথে গিয়ে তুষারে জমে যাওয়াকে এরা ধর্ম আখ্যা দিয়েছে, যার ফলে প্রতি বছর শত সহস্র মানুষ সৎপথের শৈত্য ‘স্বর্গ’-যাত্রা করছে! এ সমস্ত অনাচারের বিরুদ্ধে আমি ঠিকমতো প্রতিবাদ করতে পারিনি কারণ আমাকে ব্রাহ্মণদের মধ্যে, রাজার আশ্রয়ে থাকতে হত। রাজার আশ্রিত হয়েছি, কিন্তু নিজে থেকে এই আশ্রয় গ্রহণ করিনি। আমার নিজের যে সম্পত্তি ছিল তাতে সংযত ভোগপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারতাম। আমার সময়ের রাজা এবং ব্রাহ্মণদের চেয়ে আমি অনেক বেশী সংযমী হতে পারতাম। হর্ষ এবং অপর রাজগণের মতো আমি লক্ষ সুন্দরী উপভোগকারী হওয়ার আকাঙ্কা পোষণ করিনি। খুব বেশী হলে একশ’ সুন্দরী আছে যাদের সঙ্গে কোনো না কোনো সময়ে আমার প্রণয় হয়েছিল। কিন্তু আমার বাড়িঘর, সম্পত্তি সব কিছুই হর্ষের রাজ্যে অস্থিত। যখন তার কাছ থেকে দূতের পর দূত আসতে লাগল, তখন কি করে আমি তার দরবারে যেতে অস্বীকার করি? হ্যাঁ, আমিও যদি অশ্বঘোষ হতাম, সংসার সম্বন্ধে উদাসীন থাকতাম তা’হলে হর্ষের কোনো পরোয়া করতাম না।