আরো কথা আছে। অতীতের সেই বরুণ, সেই সত্য ও ন্যায়ের রক্ষক বরুণ—তাঁর নিয়ম ছিলো অত্যন্ত কঠোর।
Varuna’s ordinances are constantly said to be fixed the epithet dhrita-vrata (ToS) being preeminently applicable to him…the gods themselves follow Warun$ ordinance. Even the immortal gods cannot obstruct the ordinances of Mitra and Varuna…Mitra and Varuna are lords of order (ঋত) and light, who by means of order are the upholders of order…(৮৩)
ঋগ্বেদে বারবার বরুণের পাশ-এর উল্লেখ দেখা যায়,—এই পাশ দিয়ে তিনি অন্যায় আচরণকারিদের বন্ধন করেন (৬.৭৪.৪; ১০.৮৫.২৪, ইত্যাদি)।
মনে রাখা দরকার, বরুণের এই যে কঠোরতা তা ন্যায়ের খাতিরে, সত্যের খাতিরে, প্রাচীন জ্ঞাতি-ভিত্তিক সমাজের সহজাত নীতিনিষ্ঠার খাতিরে। ফলে, লোভ, লিঙ্গা, লালসার প্রভাবে বরুণের চরিত্র থেকে ওই নীতিনিষ্ঠার প্রেরণাটুকু অস্পষ্ট হয়ে এলে বাকি থাকে শুধু কঠোরতা। দেবতাটি তখন ভয়ঙ্কর, বিভীষিকার উৎসমাত্র। উত্তরকালের সাহিত্যে আমরা বরুণকে সেই ভয়ঙ্কর মূর্তিতেই দেখি—দুঃস্বপ্নের মতো। অধ্যাপক কীথ্(৮৪) বলছেন,
It must be admitted that the figure of Varuna does not increase in moral value in the course of the development of the Vedic religion…Varuna is remembered as the god who has fetters and becomes in the Brahmanas a dreaded god, whose ritual in some measure is assimilated to that of the demons and the dead. After the performance of the bath, which ends the Agnistoma sacrifice, the performer turns away and does not look back to escape from Varuna’s notice”, and in the ceremony of that bath when performed after the horse sacrifice, a man of peculiar appearance is driven into the water and an offering made on his head, as being a representative of Varuna”: this form of the expulsion of evils, which is a common idea throughout the world, shows Varuna reduced to a somewhat humble level, and degraded from his Rigvedic eminence.
১। তৈক্তিরীয় সংহিতা : ৬.৬.৩৫; মৈত্রায়নীয় সংহিতা : ৪.৮.৫.
২। আপস্তম্ব শ্রৌত সূত্র : ১৩.১৯.১ ইত্যাদি।
—————
৭২. F. Engels OFPPS 268.
৭৩. ঐতরেয় ব্রাহ্মণ (ত্রিবেদী) ৪৪১-৪।
৭৪. A. A. Macdonell VM-27.
৭৫. Ibid. 23-4.
৭৬. Ibid 26.
৭৭. A. B. Keith RPVU 1:97.
৭৮. Ibid.
৭৯. A. A. Macdonell op. cit. 65.
৮০. Ibid.
৮১. F. Engels OFPPS 267.
৮২. Ibid. 261.
৮৩. A. A. Macdonell op, cit. 26.
৮৪. A. B. Keith op. cit. 1247-8.
১৪. “নিঃঋতি হইতে আমাদের দূরে রাখ”
a fall from the simple moral grandeur of the ancient gentile society(৮৫) : Engles
ঐতরেয় ব্রাহ্মণের উপাখ্যান অনুসারে, যুপকাষ্ঠে বদ্ধ হয়ে শুনঃশেপ বরুণের—অতীতের সেই বরুণের—স্মৃতি উদ্বুদ্ধ করতে চেয়েছিলেন, কামনা জানিয়েছিলেন—
বাধস্য দূরে নির্ঋতিং পরাচৈঃ
কৃতং চিদেনঃ প্র মুমুগ্ধ্যস্মৎ।।
অর্থাৎ,—নিঃঋতি হইতে আমাদিগকে দূরে রাখ, কৃত পাপের মোহ হইতে আমাদিগকে মুক্ত করে।। ঋগ্বেদ : ১.২৪.৯ ৷৷
ঋতের যা বিপরীত তারই নাম নিঃঋতি। ঋতহীনত্ব। পিতা যখন অর্থের প্রলোভনে মেধ্য পশুর মতো পুত্রকে বধ করতে অগ্রসর হয় তখন স্বভাবতই ঋতহীনতার আশঙ্কা জাগে। আর তখন অতীতের সেই প্রিয় ও নিত্যবন্ধুর কথাও মনে পড়ে। কেননা, অতীতে এই বরুণই ছিলেন ঋতের পালক, ঋতের রক্ষক।
আ রাজানা মহ ঋতস্ত গোপা
সিন্ধুপতী ক্ষত্রিয়া যাতমৰ্বাক্।
ইলাং নো মিত্রা বরুণোত বৃষ্টিমব দিব ইন্বতং জীরদানূ।৷
অর্থাৎ, হে রাজন, হে মহান ঋতের পালকদ্বয়, হে নদীগুলির পতি, হে ক্ষত্রিয়দ্বয়, তোমরা দুই জন আমাদের অভিমুখে আগমন কর; হে মিত্রাবরুণ, হে শীঘ্রদানকারী, তোমরা আমাদিগকে অন্ন ও বৃষ্টি অন্তরীক্ষ হইতে প্রেরণ কর।। ঋগ্বেদ : ৭.৬৪.২।।
ঋতেন যাবৃতাবৃধাৰ্বতস্য জ্যোতিষস্পতী।
তা মিত্রাবরুণা হুবে।।
অর্থাত,–যাঁহারা ঋত দ্বারা ঋতকে বর্ধিত করেন, যাহার ঋতের প্রকাশকর্তা, সেই মিত্রাবরুনকে আহ্বান করি। ঋগ্বেদ : ১.২৩.৫ ৷৷
ঋতেন মিত্রাবরুণাবৃতাবৃধাবৃতস্পৃশা।
ক্রতুং বৃহন্তমাশাখে।।
অর্থাৎ, —হে মিত্রাবত্রুণ, তোমরা ঋতের দ্বারা ঋতকে বর্ধিত কর ও ঋতকে স্পর্শ কর, যজ্ঞকে বর্ধিত করিবার জন্য পরিব্যাপ্ত হও।। ঋগ্বেদ : ১.২.৮।।
ঋতেন ঋতমপিহিতং ধ্রুবং বাং সূর্যস্য যত্র বিমূচন্ত্যশ্বাণ্।
দশ শতা সহ তন্থূস্তদেকং
দেবানাং শ্রেষ্ঠং বপু্ষামপশ্যম্।।
অর্থাৎ,—যে স্থানে সূর্যের অশ্বগুলি মোচন করা হয়, সেই ঋত ঋতের দ্বারা আবৃত; সেই স্থানে দশশতের সহিত অবস্থানকারী সেই এক (মিত্রাবরুণ)-কে, দেবতাশরীরের মধ্যে শ্রেষ্ঠকে, দেখিয়াছিলাম।। ঋগ্বেদ : ৫.৬২.১ ৷।
ঋত মানে কী? আমাদের পক্ষে এ-প্রশ্নের সহজ উত্তর দেওয়া কঠিন। কেননা ঋগ্বেদের কবিদের কাছে এই ঋতই ছিলো সেই প্রাচীন অবিভক্ত সমাজের আদিম নীতিবোধ। নীতিবোধের চেতনার দিক থেকে প্রাচীন সমাজের সঙ্গে আধুনিক সমাজের অনেক পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। আমাদের আধুনিক চেতনায় প্রাকৃতিক নিয়ম, জীবন সংগ্রাম, কর্তব্য, দায়িত্ব প্রভৃতির ধারণা পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন ও স্বতন্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে; আদিম সমাজে তা ছিলো না। নৈতিক জীবনের নিয়মও প্রাকৃতিক নিয়মের মতোই স্বাভাবিক, প্রাকৃতিক নিয়মের মতোই অমোঘ। এঙ্গেলস্(৮৬) যেমন বললেন,