খুবই সম্ভব ছিল, কেননা সেই সর্বশেষ মিঃ সর কারকে জীবিত দেখে। তাছাড়া যদি ধরে নেওয়া যায় যে Poison করে মিঃ সরকারকে খুন করা হয়েছে, তাহলে অশোক ডাক্তারি পড়ে, তার পক্ষেই বেশী সম্ভব খুন করা।
১০
তেমন বিশেষ কিছু নয় কেননা সে জানত টাকা সে পাবেই। তাছাড়া মিঃ সরকার তাকে ভালবাসতেনও খুব।
০
কোন কিছুই ছিল না তাছাড়া অনেক রাত্রি জেগে সে পড়াশুনা করত।
৯
দেখতে সেরকম
কিছুই নয়।
০
২৯
৩। গণেন্দ্র সরকার পিতার সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় সে তিন বছর আগে পৃথক হয়ে যায়। দুর্ঘটনার দিন রাত্রে এগারোটার সময়ে ঐ বাড়িতে ও এসেছিল। কিন্তু সিনেমা গিয়েছিল বলে মিথ্যা কথা বললে কেন? এবং কেনই বা সে অত রাত্রে বাপের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। সন্দেহজনক খুবই।
৯
সম্ভব ছিল। কেননা রাত্রি দেড়টায় ও বাড়ি ফেরে। অথচ সিনেমাতেও যায়নি,
কোথায় ছিল রাত্রি দেড়টা পর্যন্ত?
১০
কিছু নেই।
০
কোন কিছুই নেই।
৯
না
না
২৮
৪। ছোট ভাই
বিনয়েন্দ্র
ভাই তাকে যথেষ্টই ভালবাসত। নির্বিরোধী মানুষ। তাছাড়া রাত্রে সে বাড়িই ছিল না।
০
সম্ভব ছিল না কেননা রাত্রে সে বাড়ি ছিল না।
০
টাকা
১০
পুরোপুরি ছিল।
০
না
০
১০
৫। মিঃ সরকারের অনায়াসেই সন্দেহ করা যেতে পারে। তাছাড়া সে-ই প্রথমে মৃতদেহ আবিষ্কার করে। সুব্রত যে চিঠিখানা পেয়েছিল তার হাতের লেখা অবিকল সুবিমলের হাতের লেখার মতই। তাছাড়া লেখার কালি? সে অস্বীকার করলে কেন যে লেখা তার নয়।
৯
Rainbow club থেকে সে অনায়াসেই ফিরে এসে খুন করতে পারত। তাছাড়া এ বাড়ির সব তার কাছে খুবই পরিচিত ছিল। হঠাৎ কেউ দেখলেও তাকে সন্দেহ করতে পারত না।
৯
তার অর্থের অভাব খুবই ছিল, কেননা সে ছিল অসংযমী, বেহিসাবী। মাঝে মাঝে মিঃ সরকারের কাছে টাকাও চাইত, জুয়া খেলত।
৯
কিছুই বলতে গেলে নেই।
৯
তার দেহের আকৃতি দেখে মনে হয় তার পক্ষে খুন করা এতটুকুও অসম্ভব নয়।
৯
৪৫
৬। ভৃত্য রামচরণ না
০
সম্ভব ছিল
৯
টাকা
৫
কিছুই নেই
১০
না
০
২৪
ইতিমধ্যে এক সময় ভৃত্য এসে চা দিয়ে গিয়েছিল।
চা পান করতে করতে সুব্রত মোটামুটি একটা খসড়া বানিয়ে ফেললে। এবং পরে মনে মনে আলোচনা করতে লাগল এখন তার প্রধান কর্তব্য কী?
সর্বপ্রথম : মিঃ সরকারের অ্যাটর্নী রামলাল মিত্র মহাশয়ের সঙ্গে দেখা করে উইল সম্পর্কে সমস্ত অবগত হওয়া।
দ্বিতীয় : গণেন্দ্র সরকারের এই রাত্রে মুভমেন্টস ভাল করে পর্যালোচনা করা। কেন তিনি সব কথা গোপন করলেন?
তৃতীয় : চিঠিটা ও কালিটা সম্পর্কে আর একটু বেশীরকম বিবেচনা করা।
চতুর্থ : কিরীটীর সঙ্গে দেখা করে আগাগোড়া সমগ্র ব্যাপারটার একটা বিশদ আলোচনা করা প্রয়োজন।
পঞ্চম : ময়না তদন্তের রিপোর্টটা জানা।
কিন্তু মানুষ ভাবে এক, ঘটে আর এক।
সেই রাত্রেই ঘটনার স্রোত সুব্রতকে সম্পূর্ণ অন্যদিকে টেনে নিয়ে গেল।
হঠাৎ বিকেলের দিকে লালবাজার থেকে এক ফোন পেয়ে সুব্রতকে অফিসে যেতে হল। সেখানে অফিসের কাজ শেষ হতে রাত্রি প্রায় সাড়ে সাতটা বেজে গেল।
রাস্তায় বের হয়ে সুব্রত আমহার্স্ট স্ট্রীটে আর্টিস্ট সুবোধ দত্তর ওখানে গেল।
আমহার্স্ট স্ট্রীট থেকে একটা সরু গলিপথ বের হয়ে গেছে। সেই গলির মধ্যেই ৭ নং বাড়ি আর্টিস্ট সুবোধ দত্তের!
দরজার গায়ে পিতলের প্লেটে লেখা শিল্পী সুবোধ দত্ত।
দরজাটা খোলাই ছিল। সামনেই একটি আলোকিত গলিপথ থেকে ঘরখানা বেশ পরিষ্কার দেখা যায়।
উজ্জ্বল পাওয়ারের বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলছে ঘরের মধ্যে!
ঘরের দেওয়ালে অসংখ্য ছবি ঝুলছে। কোনটা পেনসিল স্কেচ, কোনটা ওয়াটার কলার, কোনটা ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট, কোনটা অয়েল পেনটিং।
ঘরের মধ্যে একজন আধ্যবয়সী সুশ্রী যুবক পরিধানে ঢোলা পায়জামা ও ঢোলাহাতা পাঞ্জাবি। ইজেলের সামনে দাঁড়িয়ে ইজেলের ওপরে রক্ষিত অর্ধসমাপ্ত একটা ছবিতে পেনসিল দিয়ে টাচ দিচ্ছে।
সুব্রত কড়াটা নাড়লে!
কে? ভিতর হতে প্রশ্ন এল।
এটা কি সুবোধবাবুর বাড়ি?
হ্যাঁ, আপনি?
সুব্রত চমকে পিছনের দিকে তাকাল। একটি চব্বিশ পঁচিশ বৎসরের স্ত্রীলোক সুব্রতর পাশে দাঁড়িয়ে তাকে প্রশ্ন করছেন। অদূরে গলির মধ্যেকার গ্যাস পোস্টের খানিকটা আলো ভদ্রমহিলার মুখের ওপরে এসে পড়ছে। কি সুন্দর মুখখানি!
টানা-টানা দুটি চোখ। উন্নত নাসা। কয়েকগাছি চূর্ণ কুন্তল কপোল ও কপালে এসে পড়ছে।
মাথার ওপরে আধ-ঘোমটা টানা, নিরাভরণা হাত দুটি। কিন্তু সিঁথিতে সিঁদুর রেখা, কপালে গোল একটি সিঁদুরের টিপ।
পরিধানে কালোপাড়ের শাড়ি। নিরাভরণা সামান্য এই বেশভূষাতেও যেন ভদ্রমহিলাকে ভারি চমৎকার দেখাচ্ছিল।
ইতিমধ্যে একটু আগে ঘরের মধ্যে দেখা যুবকটিও দরজার ওপরে এসে দাঁড়িয়েছে, এ কি রাণী? কখন এলি?
এই আসছি দাদা। এই ভদ্রলোক বোধ হয় তোমাকে খুঁজছেন—বলতে বলতে ভদ্রমহিলা ওদের পাশ কাটিয়ে বাড়ির মধ্যে চলে গেলেন।
কাকে চান আপনি?
সুবোধবাবু আছেন?
হ্যাঁ, আমারই নাম সুবোধ দত্ত। আপনি?
আমার নাম সুব্রত রায়। আপনার সঙ্গে গোটাকতক কথা ছিল। ভিতরে আসতে পারি কী?
ভদ্রলোক কুঞ্চিত করে কী যেন এক মুহূর্ত ভাবলেন। তারপর বললেন, আসুন।
সুব্রত ভদ্রলোকের পিছনে পিছনে গিয়ে পাশের একটি ছোট ঘরে প্রবেশ করল।
ছোট ঘরটি। খানকতক চেয়ার পাতা, ছোট্ট একটি টীপয়। সুবোধবাবু নিজে একখানি চেয়ারে বসে অন্য একটি চেয়ারে সুব্রতকে নির্দেশ করে বললে, বসুন।