• আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি
শনিবার, জুলাই 5, 2025
  • Login
BnBoi.Com
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
BnBoi.Com
No Result
View All Result

সেইসব অন্ধকার – তসলিমা নাসরিন

Sei Sob Ondhokar by Taslima Nasrin

প্যারিসের দিনগুলির কিছু কিছু কথা জানি না কি কারণে লিখে রেখেছিলাম। কলকাতার দিনগুলির গল্প লিখে রাখলে সে গল্প শেষ হত না সহজে। কলকাতা প্যারিস নয়, কলকাতা আমাকে চেনে বেশি, প্যারিসের চেয়ে অনেক আপন এই কলকাতা, কলকাতা আমাকে নির্ভুল অনুবাদ করে। সবচেয়ে বড় কথা কলকাতাকে কখনও আমার বিদেশ বলে মনে হয় না। কলকাতায় পৌঁছে দেশে ফেরার মত আনন্দ হয় আমার। হোটেলে পৌঁছে সুটকেসটা রেখে বেরিয়ে যাবো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে এরকম ইচ্ছে নিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকতে গিয়ে দেখি ঘরের দরজায় লোহা লককর লাগানো, দরজার কাছে পুলিশ বসা।

–এ কী রে বাবা, এসব কেন?

–মেটাল ডিটেকটর লাগানো হয়েছে। এ তোমার নিরাপত্তার জন্য।

–কলকাতায় আমাকে কে কি করবে? কলকাতার মত নিরাপদ জায়গা পৃথিবীর আর কোথায় আছে?

–কলকাতায় মুসলমান মৌলবাদীর সংখ্যা কম নয়, তাদের মনে কী আছে কে জানে, সাবধানে থাকা ভাল।

মেটাল ডিটেকটর, পুলিশ পাহারা এসব আমাকে এমন লজ্জায় ফেলে যে মুখ গুঁজে বসে থাকি ঘরে। যেদিকে দু চোখ যায় সেদিকে যাবার, টই টই করে বাইরে ঘুরে বেড়াবার ইচ্ছেজ্ঞটর পায়ে একটি রূপোর শেকল পরানো হয়েছে। কিন্তু শেকল আমার ভাল লাগবে কেন! পুলিশের দরকার নেই আমার, এ কথাটি জোর গলায় বলার পরও কেউ আমার কথা মানলেন না। দরজার পুলিশদের আমি চাইলেও বিদেয় করতে পারি না।

আমার কলকাতায় থাকার আয়োজনটি আনন্দবাজার থেকে করা হয়েছে। যেদিন পত্রিকা আপিসে যাই চেনা পরিচিতদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য, অভীক সরকারের সঙ্গে দেখা হয়। খুব ব্যস্ত মানুষ তিনি। গণ্ডা গণ্ডা পত্রিকার মালিক হলে ব্যস্ততা থাকেই। অভীক সরকারের সঙ্গে প্রাণ খুলে কথা কখনও হয় না, সম্ভব নয়। তাঁর সময় নেই। দুমিনিট কী তিনমিনিটের জন্য তাঁর সঙ্গে কথা বলার সময় পাওয়াটাই সৌভাগ্য, সেটিরই ব্যবস্থা করতে অনেকদিন লেগে যায়। অভীক সরকার আমাকে একটি পরামর্শ দেন, কোনও সাংবাদিকের সঙ্গে যেন কথা না বলি। এদিকে কিন্তু সাংবাদিকরা হুমড়ি খেয়ে পড়েছে, যেন আর কোনও কাজ নেই জগত সংসারে, এক আমার সঙ্গে কথা বলাই এ মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি। আমার ওপর এমন আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ার মূল কারণটি হল ফতোয়া। পবিত্র কোরান ও মহানবী হযরত মুহম্মদ সম্পর্কে আমার বইগুলোতে যেসব কথা আছে, সেসব পছন্দ হয়নি বলে সিলেটের হাবীবুর রহমান আমার মাথার মূল্য ঘোষণা করেছেন। এছাড়া কলকাতায় আমি এখন জনপ্রিয় এক লেখক, আমার লজ্জা বইটি নিয়ে বিতর্ক চলেছে বছর ভর। এত সব কারণের পর সাংবাদিকরা আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে না এ ভাবাই যায় না। বেশি কিছু নয়, একটি সাক্ষাৎকার চায় তারা, আধ ঘন্টা না হলে কুড়ি মিনিট, তা না হলেও অন্তত পাঁচ মিনিট। কিন্তু গণহারে সকলকে বিদেয় করা হল। কী বলতে আবার কী বলে ফেলি, কী লিখতে তারা আবার কী লিখে ফেলে, ওদিকে বাংলাদেশের হাওয়া তেতে আছে আগে থেকেই, সুতরাং মৌলবাদী থেকে তো সাবধান থাকতেই হবে, সাংবাদিক থেকেও সাবধান।

একদিন টেলিভিশনের লোক এল, সঙ্গে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আমার সাক্ষাৎকার নেবেন। তাঁকে না বলে দিই কী করে! আনন্দবাজারের কর্তারাও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম শুনলে না বলতে পারেন না। আমি শরমে মরে যাই, আমি তো এত বড় হইনি যে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আমার সাক্ষাৎকার নেবেন! কিন্তু তিনি যখন নেবেনই, এবং আমার সাধ্য নেই তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া, অতএব প্রশ্নোত্তর (আমি কি জানি নাকি সব প্রশ্নের উত্তর!) বা সাক্ষাৎকারের মত না হয়ে আমিই প্রস্তাব করলাম এটি একটি আড্ডা হতে পারে। হল। দুই লেখকের আলাপচারিতা, এভাবেই ব্যাপারটিকে ধরে নেওয়া হল। কেবল তো সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ই বন্ধু নন, সাংবাদিকদের মধ্যেও তো বন্ধু আছেন, তাঁদের যখন একের পর এক তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল, বড় অপ্রতিভ বোধ করছিলাম। কতদিন পর দেখা, সাক্ষাৎকার না হোক, দুটো কথা হোক না! কবি গৌতম ঘোষ দস্তিদার প্রতিদিন পত্রিকায় সাংবাদিকতা করছেন, চোখের সামনে তাঁকেও তাড়ানো হল। বাহারউদ্দিনকে তো নিচ তলা থেকে ওপরে উঠতেই দেওয়া হয় নি। এ কি কাণ্ড। বন্ধুরাই তো তবে শষনু হয়ে যাবে! এভাবে গণহারে তাড়ানো হচ্ছে সাংবাদিকদের! গৌতম ঘোষ দস্তিদার, যে আমার বিষম প্রশংসা করে লজ্জা বইটির সমালোচনা লিখেছিলেন, তিনিই কিন্তু এরপর চোখ উল্টে দিলেন। এ নিতান্তই ভুল বোঝাবুঝি। সাক্ষাৎকার না দিলে পত্রিকায় আমার সম্পর্কে লেখালেখি বন্ধ থাকবে, তা তো নয়, বরং বানিয়ে লেখা হবে। কথা বললে বরং বানানো গল্প থেকে নিস্তার পাওয়া যায়। নিখিল সরকারকে জানাই ঘটনা। তিনি বললেন, দুএকটি ভাল পত্রিকায় তাহলে দাও সাক্ষাৎকার। টাইমস অব ইণ্ডিয়া, টেলিগ্রাফ। স্টেটসম্যানও যোগ হল। ফোন আসছে মিনিট পর পর, অন্যান্য সাংবাদিকরা পাগল হয়ে যাচ্ছেন। দিল্লি বোম্বে থেকে এসে বসে আছেন। মায়া তাঁদের জন্যও হয়। হাতে গোনা জিনিস আর হাতে গোনার মধ্যে থাকে না। সাংবাদিকদের সঙ্গে একই রকম আলোচনা আর তাঁদের প্রায় একই ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে পড়ি। ক্লান্তি কাটে বন্ধুদের সঙ্গে সাহিত্যিক আলোচনা আর আড্ডায়। হোসেনুর রহমান কলকাতা ক্লাবে নিয়ে গেলেন একদিন, ওখানে তাঁর লেখক বুদ্ধিজীবী বন্ধুদের সঙ্গে আলাপ হল। হোসেনুর রহমান ঢাকায় আমার বাড়ি গিয়েছিলেন একবার, তখনই তাঁর সঙ্গে পরিচয়। ঢাকা শহরে দিব্যি তিনি ধুতি পরে ঘুরে বেরিয়েছেন। কলকাতার যে কজন মুসলমান নামের মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে আমার, সকলকেই দেখেছি জাত ধর্ম না মানা মানুষ, বড় গৌরব বোধ করি তাঁদের নিয়ে। যে ইলা মিত্রকে কোনওদিন দূর থেকে দেখারও আমার সৌভাগ্য হবে বলে ভাবিনি, সেই ইলা মিত্র হঠাৎ একদিন হোটেলে এলেন আমার সঙ্গে দেখা করতে, অনেকক্ষণ ছিলেন, মন খুলে কথা বলতে পারিনি, একের পর এক সাক্ষাৎপ্রার্থী এসে ভিড় করলে কথা কারও সঙ্গে ঠিক হয় না। দশ রকম মানুষের সঙ্গে একই সঙ্গে কথা বলা যায় কি! রাজনীতিবিদ, সাহিত্যিক, নারীবাদী, শিল্পী, অনুরাগী পাঠক, এই পাঠকদের মধ্যে ব্যবসায়ী থেকে বিজ্ঞানী সকলেই আছেন– একজনের সঙ্গে কিছু কথা হল তো আরেকজনের সঙ্গে হল না। আমার ইচ্ছে করে সবার সঙ্গে কথা বলতে। কাউকে আমার ফিরিয়ে দিতে ইচ্ছে করে না। কত কিছু জানার আছে শেখার আছে ওঁদের থেকে। ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতাগুলো, জীবনদর্শনগুলো শুনতে ইচ্ছে করে। নারীবাদী লেখিকা মৈষেনয়ী চট্টোপাধ্যায় আমাকে অবাক করলেন আমাকে জড়িয়ে ধরে, ভেবেছিলাম তিনি বুঝি আমার মুখদর্শন কোনওদিন করবেন না। বললেন তিনিও পথে নেমেছেন আমার সমর্থনে। অন্নদাশংকর রায়ের বাড়িতে গেলাম এক সন্ধেয়, ওখানে অপেক্ষা করছিলেন অপরাজিতা গোপ্পীসহ তাঁর দল। সকলেই দেখা করতে চান, সকলেই কথা বলতে চান। কিন্তু সময়ের অভাবে কারও সঙ্গে খুব বেশি কথা বলা হয় না। এক রাতে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতে নেমন্তন্ন, সৌমিত্র মিত্র, মুনমুন মিত্র, বাদল বসু, কুমকুম বসু সহ খানা পানা গানা ভানায় রাত গভীর হয়। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় মদ খেতে খেতে হাত মাথা নেড়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে থাকেন একের পর এক। গলাটা যেমন তেমন, সুর ভাল। স্বাতী, সুনীলের স্ত্রী বলেন, সুনীল তো রবীন্দ্রসঙ্গীত বানায়, কেউ ধরতেও পারে না। তা ঠিক, কত আর মুখস্ত থাকে সব গানের সব কলি, কোথাও ভুলে গেলে গান থামিয়ে না দিয়ে তিনি বানিয়ে গেয়ে যান। রবীন্দ্রনাথ তাঁর গানে কী ধরনের শব্দ ব্যবহার করতেন, তা তো খুব অজানা নয়! ঘটে রবিজ্ঞান কিছু থাকলে য়চ্ছন্দে চালিয়ে নেওয়া যায়। কলেজের পরীক্ষার খাতাতেও রবীন্দ্রনাথ এই লিখেছেন সেই লিখেছেন বলে পাতার পর পাতা নিজের কথা লিখে যেতেন। কোন পরীক্ষকের সময় আছে খুঁজে দেখার রবীন্দ্রনাথ তাঁর কোন বইয়ে কোন কথাটি লিখেছিলেন! কেবল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্য সময় খরচ করে ফেললেই তো চলে না। সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাড়িতে একবার যেতেই হয়। যাই। নিখিল সরকারের বাড়িতে নেমন্তন্ন, ওখানে শান্ত হয়ে বসো, ধীরে সুস্থে কথা বলো, লেখালেখি কেমন হচ্ছে বলো, দেশের অবস্থা বলো, দেশের বন্ধুরা এই দুঃসময়ে পাশে আছে কী না বলো। জীবনের সব কথা খুলে বলি নিখিল সরকারকে। তিনি আপন। খুব আপন। এত আপন আমার আর কাউকে মনে হয় না। আসলে আপন হতে গেলে আত্মীয় হতে হয় না। না হয়েও নিজের বাবার চেয়ে ভাইয়ের চেয়ে আপন হতে পারে কেউ কেউ। নিখিল সরকারের একটি ছেলে ছিল, পাপু নাম। পাপু যখন তার মাত্র আট বছর বয়স, রাস্তায় খেলতে গিয়ে গাড়ি চাপা পড়ে মারা গেছে। অসম্ভব প্রতিভাবান ছেলে ছিল পাপু। ওই বাচ্চা বয়সেই ছবি আঁকত, ছড়া লিখত। আজও মীরা সরকার, নিখিল সরকারের স্ত্রী পাপুর কথা ভেবে চোখের জল ফেলেন, প্রতিদিন। প্রতিদিন তিনি দেয়ালে পাপুর ছবি আর পাপুর আঁকা ছবিগুলোর ধুলো নিজের আঁচল দিয়ে মোছেন। এখনও। এখনও প্রদীপ জ্বেলে দেন প্রতি সন্ধেবেলা পাপুর ছবির সামনে। হ্যাঁ এখনও। মীরা সরকারের বেদনা আমাকে এমনই স্পর্শ করেছিল যে একদিন বলেছিলাম, ধরে নিন আমিই আপনাদের পাপু, পাপু তো বেঁচে থাকলে আমার বয়সীই হত। পাপুর লেখা ছড়া আর ছবির একটি বই জ্ঞানকোষ প্রকাশনীকে দিয়ে বাংলাদেশে বের করেছি। বইটি নিখিল সরকারের হাতে দিয়ে আমার আনন্দ হয় খুব। নিখিল সরকার, ময়মনসিংহের ধোবাউড়ার ছেলে এখন কলকাতা বিশেষজ্ঞ, অনেকগুলো বই লিখেছেন কেবল কলকাতা নিয়েই। যত নিখিল সরকারকে দেখি, তত আমি মুগ্ধ হই। বাড়িভর্তি বই, পড়ছেন, কেবল পড়ছেন। নানা বিষয়ে আগ্রহ তাঁর। দেশি বিদেশি ইতিহাস ভূগোল সাহিত্য শিল্পকলার কোনও ভাল বইএর নাম শুনলেই তিনি তা যে করেই হোক যোগাড় করে পড়ে নেন। তাঁর এই একটিই নেশা, পড়া। নিখিল সরকারের কাছে এলে নিজের অজ্ঞানতা মূর্খতা দাঁত মেলে প্রকাশিত হয়, তবু তিনি আমাকে ছুঁড়ে ফেলে দেন না। মহীরূহর পাশে তুচ্ছ তৃণ, তবু আমি ভালবাসা পাই তাঁর। ভালবাসা পেয়েছি অন্নদাশংকর রায়ের, শিবনারায়ণ রায়ের, সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের। নিজের সৌভাগ্যের দিকে মাঝে মাঝে বড় বিস্ময়-চোখে তাকাই। সবই অলীক বলে মনে হয়, যেন সত্যি নয়, যেন এ ঘটছে না, যেন এ কেবলই একটি স্বপ্ন। জেগে দেখব আমি সেই আমি, লোকের থু থু খাচ্ছি, লাথি খাচ্ছি, ঘৃণা আর নিন্দার কাদার তলে অর্ধেক ডুবে আছি। বাংলাদেশের জন্য নিখিল সরকারের অদ্ভুত এক ভালবাসা কাজ করে। বাংলাদেশের ভাল সাহিত্যিকরা যেন আনন্দ পুরস্কার পান, সে ব্যবস্থা তিনি তৈরি করে দিতে চান। ডক্টর আনিসুজ্জামানকে পুরস্কার কমিটির সদস্য করার পেছনে তিনিই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ঐতিহ্যের অঙ্গীকার নামে অনেকগুলো অসাধারণ ক্যাসেট করার জন্য যে বছর নরেন বিশ্বাস এবং আনিসুজ্জামানকে আনন্দ পুরস্কার দেবার সিদ্ধান্ত হল, এক ঝড়জলের রাতে বহু কষ্টে বাড়ি খুঁজে খুঁজে সুখবরটি দিয়ে এসেছিলাম নরেন বিশ্বাসকে। যেবার শামসুর রাহমান পেলেন, সেবার যে কী ভীষণ আনন্দ হয়েছিল! দৌড়োদৌড়ি লেগে গেল আমার,খবর নিচ্ছি, দিচ্ছি। শামসুর রাহমানের পাসপোর্ট নাও, ভিসা কর। বিমান বন্দরে পৌঁছে দিয়ে এসো। তখন নিজের পাসপোর্টটি থাকলে আনন্দ পুরস্কার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঠিকই চলে আসতাম কলকাতায়। তিনি যোগ্য এই পুরস্কার পাওয়ার। আমি যে এ পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য ছিলাম না, সে আমি জানি। আনন্দ পুরস্কার পাওয়ার আনন্দ যত ছিল, এটি পাওয়ার লজ্জা আমার কিছু কম ছিল না। আনন্দ পুরস্কার নয়, এই পশ্চিমবঙ্গে আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া কিছু অসামান্য মানুষের স্নেহ আর ভালবাসা। এটি অমূল্য সম্পদ। আনন্দ পুরস্কারের টাকা খরচ হয়ে যাবে হাবিজাবিতে, পুরস্কারের সনদ ধূসর হতে থাকবে দিন দিন, কিন্তু ভালবাসা থেকে যাবে, বন্ধুত্ব উজ্জ্বল হতে থাকবে যত দিন যাবে।

Page 24 of 170
Prev1...232425...170Next
Previous Post

অতলে অন্তরীণ – তসলিমা নাসরিন

Next Post

নেই, কিছু নেই – তসলিমা নাসরিন

Next Post

নেই, কিছু নেই - তসলিমা নাসরিন

নির্বাসন - তসলিমা নাসরিন

মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সাম্প্রতিক প্রকাশনাসমূহ

  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৫: ভূমিকম্প – শামসুদ্দীন নওয়াব
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৮: বিভীষিকার প্রহর – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: বড়দিনের ছুটি – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আলাস্কা অভিযান – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আমিই কিশোর – রকিব হাসান

বিভাগসমূহ

  • আত্মজীবনী
  • ইতিহাস
  • উপন্যাস
  • কবিতা
  • কাব্যগ্রন্থ
  • গল্পের বই
  • গোয়েন্দা কাহিনী
  • ছোট গল্প
  • জীবনী
  • দর্শন
  • ধর্মীয় বই
  • নাটকের বই
  • প্রবন্ধ
  • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
  • বৈজ্ঞানিক বই
  • ভূতের গল্প
  • রহস্যময় গল্পের বই
  • রোমাঞ্চকর গল্প
  • রোম্যান্টিক গল্পের বই
  • শিক্ষামূলক বই
  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In